মানিকজোড় মাছের বড়ার খুব প্রশংসা করতে লাগল। সতীশ রায়েরও বেশ ভালো লাগল। হরিপদ চলে গিয়েছিল ঘর থেকে, এবার ফিরে এল চতুর্থ প্লেটটি নিয়ে। তাতে সদ্য-ভাজা দুটো বড়া আছে। ঘটকমশাইকে বলল সে, নিন। আপনি আর বলবেন না শুনে পাঠিয়ে দিল।
হাসিমুখে হাত বাড়ালেন ঘটকমশাই।
বড়া খেতে খেতে নাগেশ্বর জিজ্ঞাসা করল, বড়বাবু, ম্যাদামারা কথাটার মানে এখনও বললেন না–।
তাই নাকি। আমাকে বলতে হবে না। তোমরা স্বচক্ষে দেখে নাও। হরিপদ, তোমাদের ছোটবাবুকে এঘরে আসতে বললো। হুকুম করলেন সতীশ রায়।
হরিপদ মাথা নাড়ল, ছোটবাবু বাড়িতে নেই।
অ্যাঁ! এতরাত্রে সে বাড়িতে নেই। দিনের বেলায় যাকে বাইরে পাঠানো যায় না সে এসময় কোথায় গেল? যাও, খুঁজে বের করা তাকে?
হরিপদ চলে যেতেই দরজায় শব্দ হল। সতীশ রায় কে জিজ্ঞাসা করতে আড়ালে থাকা মতির মায়ের গলা পাওয়া গেল, খোকাবাবুকে কিছু বলবেন না বড়বাবু।
উঃ। যাও, ভেতরে যাও। এসময়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছ?
গোরক্ষ বলল, ছোটবাবু বোধহয় বিয়ের খবরে খুশি হয়ে বন্ধুদের জানাতে গেছে।
ওর কোনও বন্ধু নেই। থাকতে পারে না।
এইসময় বাইরে খুব চিৎকার চেঁচামেচি শোনা গেল, নেহি যায়েগা। হাম কিসিসে কম নেহি হ্যায়। হঠ যাও।
সতীশ রায় অবাক হয়ে সোজা হয়ে বসলেন, কে? আমার বাড়িতে এসে চেঁচাচ্ছে এত সাহস হল কার? গোরক্ষ দ্যাখো তো–।
গোরক্ষকে উঠতে হল না। হরিপদ ধরাধরি করে নিয়ে এল, ছোটখোকার পা টলছে, দাঁড়াতে পারছে না। সতীশ রায় চমকে উঠলেন, একি! তুমি মদ খেয়েছ?
ইয়েস। খেয়েছি।
কোথায় পেলে মদ?
হরেকৃষ্ণের ভাটিখানায়। জিজ্ঞাসা করল, বেকার কিনা? বললাম, নো। জিজ্ঞাসা করল, অ্যাডাল্ট কিনা? বললাম, ইয়েস। দিয়ে দিল।
ছি ছি ছি। তুমি চোলাই খেয়ে এসেছ? বাট হোয়াই? কেন? চেঁচালেন সতীশ রায়।
আমি, আমি দেবদাস হতে চাই। টলল সত্যচরণ।
দেবদাস? জুতিয়ে মুখ ছিঁড়ে দেব?
নাগেশ্বর জিজ্ঞাসা করল, কেন তুমি দেবদাস হবে ছোটখোকা?
কেন হব না? পাখিরা কথা বলে না এখানে, পাখি নেই বলে। আজ রাত্রে আমার পাখির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কেঁদে ফেলল সত্যচরণ।
পাখির বিয়ে? তোমার পাখি মানে? কে পাখি?
গোরক্ষ মাথা নাড়ল, বুঝতে পেরেছি। ছোটখোকা, তুমি কি পোস্টমাস্টারের মেয়ে পাখির কথা বলছ?
মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল সত্যচরণ।
গোরক্ষ বলল, ওই যে বড়বাবু, মেয়েকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছে মাস্টার বিয়ে দিতে। এ হে হে। তোমাদের মধ্যে এত ইয়ে ছিল তার খবর এই নাগেশ্বর পর্যন্ত যখন জানত না তখন বলতেই হবে বড্ড চেপে রেখেছিলে।
সতীশ রায় ছেলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। এবার জিজ্ঞাসা করলেন, বাড়ি থেকে বেরুতে না, বাড়িতে কেউ আসততা না, তবু এসব হল কী করে?
জবাব দিল না সত্যচরণ। সে দাঁড়াতে পারছিল না, হরিপদ ধরে রেখেছিল তাকে।
জবাব দাও।
আজ্ঞে, মনে মনে।
এখন তুমি দেবদাস হতে চাও?
হুঁ,
আচমকা খুব জোরে হেসে উঠলেন সতীশ রায়। হাসতে হাসতে বললেন, তোমাদের আমি ম্যাদামারা দেখাতে চেয়েছিলাম হে, পারলাম না। তার বদলে ঢ্যামনা কাকে বলে দেখে নাও।
ঘটকমশাই হঠাৎ উত্তেজিত হলেন, ও হো, তাই–।
চুপ। একদম চুপ। তাকে ধমকালেন সতীশ রায়। তারপর বললেন, ওকে ভেতরে নিয়ে যা। ঘটকবাবু, মহাদেব সেনকে বলো, বিয়ের তারিখ তাড়াতাড়ি ঠিক করতে। ওর মা ওপরে চলে গিয়ে আমাকে অনেক শেকলে আটকে গেছেন।
আমি পারছি না। যে পারবে তার তাড়াতাড়ি আসা দরকার।
নাগেশ্বর বলল, কী পারবে বড়বাবু?
আমি সোজা আঙুলে ঘি তুলছি। উঠছে না। শুধু আঙুলে লেগে থাকছে। সে এসে বাঁকা আঙুলে ঘি তুলবে। নাও, শেষ করো। আমার রাতের খাওয়ার সময় হল। সতীশ রায় গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে উঠে পড়লেন। ঘড়িতে নটা বাজল।
*
হাসিমুখে হাত বাড়ালেন ঘটকমশাই।
বড়া খেতে খেতে নাগেশ্বর জিজ্ঞাসা করল, বড়বাবু, ম্যাদামারা কথাটার মানে এখনও বললেন না–।
তাই নাকি। আমাকে বলতে হবে না। তোমরা স্বচক্ষে দেখে নাও। হরিপদ, তোমাদের ছোটবাবুকে এঘরে আসতে বললো। হুকুম করলেন সতীশ রায়।
হরিপদ মাথা নাড়ল, ছোটবাবু বাড়িতে নেই।
অ্যাঁ! এতরাত্রে সে বাড়িতে নেই। দিনের বেলায় যাকে বাইরে পাঠানো যায় না সে এসময় কোথায় গেল? যাও, খুঁজে বের করা তাকে?
হরিপদ চলে যেতেই দরজায় শব্দ হল। সতীশ রায় কে জিজ্ঞাসা করতে আড়ালে থাকা মতির মায়ের গলা পাওয়া গেল, খোকাবাবুকে কিছু বলবেন না বড়বাবু।
উঃ। যাও, ভেতরে যাও। এসময়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে এসেছ?
গোরক্ষ বলল, ছোটবাবু বোধহয় বিয়ের খবরে খুশি হয়ে বন্ধুদের জানাতে গেছে।
ওর কোনও বন্ধু নেই। থাকতে পারে না।
এইসময় বাইরে খুব চিৎকার চেঁচামেচি শোনা গেল, নেহি যায়েগা। হাম কিসিসে কম নেহি হ্যায়। হঠ যাও।
সতীশ রায় অবাক হয়ে সোজা হয়ে বসলেন, কে? আমার বাড়িতে এসে চেঁচাচ্ছে এত সাহস হল কার? গোরক্ষ দ্যাখো তো–।
গোরক্ষকে উঠতে হল না। হরিপদ ধরাধরি করে নিয়ে এল, ছোটখোকার পা টলছে, দাঁড়াতে পারছে না। সতীশ রায় চমকে উঠলেন, একি! তুমি মদ খেয়েছ?
ইয়েস। খেয়েছি।
কোথায় পেলে মদ?
হরেকৃষ্ণের ভাটিখানায়। জিজ্ঞাসা করল, বেকার কিনা? বললাম, নো। জিজ্ঞাসা করল, অ্যাডাল্ট কিনা? বললাম, ইয়েস। দিয়ে দিল।
ছি ছি ছি। তুমি চোলাই খেয়ে এসেছ? বাট হোয়াই? কেন? চেঁচালেন সতীশ রায়।
আমি, আমি দেবদাস হতে চাই। টলল সত্যচরণ।
দেবদাস? জুতিয়ে মুখ ছিঁড়ে দেব?
নাগেশ্বর জিজ্ঞাসা করল, কেন তুমি দেবদাস হবে ছোটখোকা?
কেন হব না? পাখিরা কথা বলে না এখানে, পাখি নেই বলে। আজ রাত্রে আমার পাখির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কেঁদে ফেলল সত্যচরণ।
পাখির বিয়ে? তোমার পাখি মানে? কে পাখি?
গোরক্ষ মাথা নাড়ল, বুঝতে পেরেছি। ছোটখোকা, তুমি কি পোস্টমাস্টারের মেয়ে পাখির কথা বলছ?
মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল সত্যচরণ।
গোরক্ষ বলল, ওই যে বড়বাবু, মেয়েকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছে মাস্টার বিয়ে দিতে। এ হে হে। তোমাদের মধ্যে এত ইয়ে ছিল তার খবর এই নাগেশ্বর পর্যন্ত যখন জানত না তখন বলতেই হবে বড্ড চেপে রেখেছিলে।
সতীশ রায় ছেলের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন। এবার জিজ্ঞাসা করলেন, বাড়ি থেকে বেরুতে না, বাড়িতে কেউ আসততা না, তবু এসব হল কী করে?
জবাব দিল না সত্যচরণ। সে দাঁড়াতে পারছিল না, হরিপদ ধরে রেখেছিল তাকে।
জবাব দাও।
আজ্ঞে, মনে মনে।
এখন তুমি দেবদাস হতে চাও?
হুঁ,
আচমকা খুব জোরে হেসে উঠলেন সতীশ রায়। হাসতে হাসতে বললেন, তোমাদের আমি ম্যাদামারা দেখাতে চেয়েছিলাম হে, পারলাম না। তার বদলে ঢ্যামনা কাকে বলে দেখে নাও।
ঘটকমশাই হঠাৎ উত্তেজিত হলেন, ও হো, তাই–।
চুপ। একদম চুপ। তাকে ধমকালেন সতীশ রায়। তারপর বললেন, ওকে ভেতরে নিয়ে যা। ঘটকবাবু, মহাদেব সেনকে বলো, বিয়ের তারিখ তাড়াতাড়ি ঠিক করতে। ওর মা ওপরে চলে গিয়ে আমাকে অনেক শেকলে আটকে গেছেন।
আমি পারছি না। যে পারবে তার তাড়াতাড়ি আসা দরকার।
নাগেশ্বর বলল, কী পারবে বড়বাবু?
আমি সোজা আঙুলে ঘি তুলছি। উঠছে না। শুধু আঙুলে লেগে থাকছে। সে এসে বাঁকা আঙুলে ঘি তুলবে। নাও, শেষ করো। আমার রাতের খাওয়ার সময় হল। সতীশ রায় গ্লাসে শেষ চুমুক দিয়ে উঠে পড়লেন। ঘড়িতে নটা বাজল।
*