কোনো লাভ নেই। কথা, যুক্তি যে এ মুহূর্তে অচল ভরত বুঝতে পারছিল। তার কেবলই কৌতূহল হচ্ছিল, কী কী কারণে বাবা এবং মায়ের সম্পর্ক এইরকম হল তা জানা যাচ্ছে না। দুজনের কেউ বলছে না। ওরা আর নিজেদের মধ্যে ঝগড়াও করছে না। এত বছর এই বাড়িতে একসঙ্গে থেকেও সে নিজে কখনও জানতে পারেনি। তাকে ওরা এমন শিশু করে রেখেছিল যে এসব ব্যাপারে আগ্রহ হয়নি।
হঠাৎ পুরিয়াটার কথা খেয়াল হল ভরতের। সে সন্তর্পণে মোড়কটা বের করল। দুটো ট্যাবলেট। একেই কি ড্রাগ বলে? ড্রাগ তো পুড়িয়ে খায়! তা হলে? ভরত উঠে দরজা বন্ধ করল। সঙ্গে সঙ্গে দরজায় আওয়াজ হল, খেতে দিচ্ছি।
মায়ের গলা। ভরত গলা তুলল, আমারটা ঢেকে রেখে দাও।
মা দ্বিতীয়বার অনুরোধ করল না। সেটাই স্বাভাবিক। এখন যা বলার তা বলা হয়ে গিয়েছে। খাওয়ার টেবিলে একসঙ্গে বসে নাটক করার আর কোনো প্রয়োজন নেই। প্রচণ্ড রাগ হয়ে গেল। ভরতের। ঘরে বাইরে এইসব দুশ্চিন্তা থেকে যেন মুক্তি নেই। সমস্ত পৃথিবীটা জুড়ে যেন ক্যান্সারের বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। কে যেন বলেছিল ক্যান্সার রোগীর শেষ সময়ে যে যন্ত্রণা তা সহ্য করার চেয়ে তাকে আত্মহত্যা করার অধিকার দেওয়া উচিত। আমি একার চেষ্টা এই দেশের চেহারাটা পাল্টাতে পারব না। আমার মতো অনেকে কবে একত্রিত হয়ে সেই করবে তার ঈশ্বর জানেন। আমি একা এই বাড়ির চেহারাটাও বদলে দিতে পারব না। আমি অর্থহীন, দুর্বল একটি প্রাণীমাত্র। আমার চারপাশে ক্যান্সারের বিষ আর তার মধ্যে আমাকে বাস করতে হবে। আমি কেন সেটা মেনে নেব? আমি আত্মহত্যা করব। এই অধিকার আমাকে দেওয়া হয়েছে কি না তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাবো না। লোকটা বলেছিল এসব থেকে ভুলে থাকার একমাত্র উপায় ড্রাগ খাওয়া। সারা পৃথিবী জুড়ে ড্রাগের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে কিন্তু যারা ড্রাগ খায় তাদের কথা শোনার কোনও চেষ্টা হয়েছে? কেন তারা ড্রাগ খায়? যে পৃথিবীতে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করার জন্যে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে সেই পৃথিবীতেই সিগারেট বিক্রি হচ্ছে প্যাকেটের ওপর সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর বাক্যটি লিখে। যদি ক্ষতিকর হয় তা হলে সরকার সেটা বিক্রি করতে দিচ্ছে কেন? সব ব্যাপারে এই ভাওতাবাজি। চারপাশে এখন দু নম্বরীদের মুখ আর মুখোশ একাকার।
ড্রাগ খেলেই মানুষ মরে যায় না চট করে। খেতে খেতে একসময় হয়তো মরে যায়। একটা বাচ্চা ছেলে যেমন কলকাতা শহরে টানা বাস করলে পলিউশনের কারণে ফুসফুস নংরা হয়ে মরে যেতে পারে। একটা মদ্যপ যেমন লিভার পচিয়ে মরে যায় অথবা একজন মাস্তান নেতাদের আশ্রয়ে মাস্তানি করতে করতে গুলি খেয়ে মরে। কিন্তু মাত্র একবার একটা ট্যাবলেট খেলে কিরকম প্রতিক্রিয়া হয় তা তার জানা নেই।
ক্রমশ সেটা জানার ইচ্ছে প্রবল হতে লাগল। একটা ট্যাবলেট খেলে কিরকম অনুভূতি হয়? কিন্তু কৌতূহল বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও কোথাও যেন কি একটা বাধা দিচ্ছিল তাকে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার তুলে ধরা জলের গ্লাসের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠল। ভরত উঠে ঢাকা দেওয়া জলের গ্লাসটা তুলে এক ঢোঁক গলায় ঢালল। তারপর একটা ট্যাবলেট মুখে ফেলে দিল। ওটা কিভাবে খায় সে জানে না। ওষুধ যেমনভাবে খেতে হয় সেইটেই সহজ উপায়। অসুখ হলে এভাবে ওষুধ খেতে হয় তাই এতকাল জেনে এসেছে।
প্রথমে কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। সে সব কিছু সহজ সরলভাবে দেখতে পাচ্ছে। কোনও কিছু ভাবতে অসুবিধে হচ্ছে না। তারপরেই শরীর ঝিমঝিম করতে লাগল। বিছানায় শুয়ে পড়ল ভরত। সমস্ত শরীর জুড়ে অদ্ভুত অস্বস্তি। ঘরের টিউবলাইটটা যেন একডজন হয়ে গেছে আচমকা। চোখের সামনে নীল লাল হরেক রকম আলো।
হঠাৎ পুরিয়াটার কথা খেয়াল হল ভরতের। সে সন্তর্পণে মোড়কটা বের করল। দুটো ট্যাবলেট। একেই কি ড্রাগ বলে? ড্রাগ তো পুড়িয়ে খায়! তা হলে? ভরত উঠে দরজা বন্ধ করল। সঙ্গে সঙ্গে দরজায় আওয়াজ হল, খেতে দিচ্ছি।
মায়ের গলা। ভরত গলা তুলল, আমারটা ঢেকে রেখে দাও।
মা দ্বিতীয়বার অনুরোধ করল না। সেটাই স্বাভাবিক। এখন যা বলার তা বলা হয়ে গিয়েছে। খাওয়ার টেবিলে একসঙ্গে বসে নাটক করার আর কোনো প্রয়োজন নেই। প্রচণ্ড রাগ হয়ে গেল। ভরতের। ঘরে বাইরে এইসব দুশ্চিন্তা থেকে যেন মুক্তি নেই। সমস্ত পৃথিবীটা জুড়ে যেন ক্যান্সারের বিষ ছড়িয়ে পড়েছে। কে যেন বলেছিল ক্যান্সার রোগীর শেষ সময়ে যে যন্ত্রণা তা সহ্য করার চেয়ে তাকে আত্মহত্যা করার অধিকার দেওয়া উচিত। আমি একার চেষ্টা এই দেশের চেহারাটা পাল্টাতে পারব না। আমার মতো অনেকে কবে একত্রিত হয়ে সেই করবে তার ঈশ্বর জানেন। আমি একা এই বাড়ির চেহারাটাও বদলে দিতে পারব না। আমি অর্থহীন, দুর্বল একটি প্রাণীমাত্র। আমার চারপাশে ক্যান্সারের বিষ আর তার মধ্যে আমাকে বাস করতে হবে। আমি কেন সেটা মেনে নেব? আমি আত্মহত্যা করব। এই অধিকার আমাকে দেওয়া হয়েছে কি না তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাবো না। লোকটা বলেছিল এসব থেকে ভুলে থাকার একমাত্র উপায় ড্রাগ খাওয়া। সারা পৃথিবী জুড়ে ড্রাগের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে কিন্তু যারা ড্রাগ খায় তাদের কথা শোনার কোনও চেষ্টা হয়েছে? কেন তারা ড্রাগ খায়? যে পৃথিবীতে সিগারেট খাওয়া বন্ধ করার জন্যে ব্যস্ততা শুরু হয়েছে সেই পৃথিবীতেই সিগারেট বিক্রি হচ্ছে প্যাকেটের ওপর সিগারেট খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর বাক্যটি লিখে। যদি ক্ষতিকর হয় তা হলে সরকার সেটা বিক্রি করতে দিচ্ছে কেন? সব ব্যাপারে এই ভাওতাবাজি। চারপাশে এখন দু নম্বরীদের মুখ আর মুখোশ একাকার।
ড্রাগ খেলেই মানুষ মরে যায় না চট করে। খেতে খেতে একসময় হয়তো মরে যায়। একটা বাচ্চা ছেলে যেমন কলকাতা শহরে টানা বাস করলে পলিউশনের কারণে ফুসফুস নংরা হয়ে মরে যেতে পারে। একটা মদ্যপ যেমন লিভার পচিয়ে মরে যায় অথবা একজন মাস্তান নেতাদের আশ্রয়ে মাস্তানি করতে করতে গুলি খেয়ে মরে। কিন্তু মাত্র একবার একটা ট্যাবলেট খেলে কিরকম প্রতিক্রিয়া হয় তা তার জানা নেই।
ক্রমশ সেটা জানার ইচ্ছে প্রবল হতে লাগল। একটা ট্যাবলেট খেলে কিরকম অনুভূতি হয়? কিন্তু কৌতূহল বেড়ে যাওয়া সত্ত্বেও কোথাও যেন কি একটা বাধা দিচ্ছিল তাকে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার তুলে ধরা জলের গ্লাসের ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠল। ভরত উঠে ঢাকা দেওয়া জলের গ্লাসটা তুলে এক ঢোঁক গলায় ঢালল। তারপর একটা ট্যাবলেট মুখে ফেলে দিল। ওটা কিভাবে খায় সে জানে না। ওষুধ যেমনভাবে খেতে হয় সেইটেই সহজ উপায়। অসুখ হলে এভাবে ওষুধ খেতে হয় তাই এতকাল জেনে এসেছে।
প্রথমে কোনো প্রতিক্রিয়া ছিল না। সে সব কিছু সহজ সরলভাবে দেখতে পাচ্ছে। কোনও কিছু ভাবতে অসুবিধে হচ্ছে না। তারপরেই শরীর ঝিমঝিম করতে লাগল। বিছানায় শুয়ে পড়ল ভরত। সমস্ত শরীর জুড়ে অদ্ভুত অস্বস্তি। ঘরের টিউবলাইটটা যেন একডজন হয়ে গেছে আচমকা। চোখের সামনে নীল লাল হরেক রকম আলো।