আমাকে নিয়ে আর কোনও সমস্যা রইল না! ভরত বাকিটা বলে দিল।
হ্যাঁ। কথাটা সত্যি। যতদিন তুই আমাদের ওপর নির্ভর করেছিলি ততদিন আমাদের দায় ছিল। অসহ্য হলেও আমরা সেটা মানিয়ে নিতে চাইতাম।
তুমি যা বলছ বাবারও একই সিদ্ধান্ত?
আপত্তি থাকলে ও প্রতিবাদ করত।
তোমরা কী করবে?
আমরা আলাদা হয়ে যাব। সুখ পাইনি কিন্তু স্বস্তি পেতে দোষ কী।
এই ফ্ল্যাটে–?
আমি থাকব। তোর বাবা আর একটা প্রমোশন পাচ্ছে। কোম্পানি ওকে সানি পার্কে ভাল ফ্ল্যাট দেবে। কোনও অসুবিধে হবে না।
তুমি তো হাউসওয়াইফ। তোমার চলবে কী করে?
কাল যেখানে গিয়েছিলাম সেখানে একটা ব্যবস্থা হয়েছে। একটা নামী ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি নিচ্ছি আমি। তোর বাবার কোনও দায় নেই।
এসব কথা তোমরা খুব ঠাণ্ডা মাথায় ভেবেছ?
মা হাসল, হ্যাঁ রে।
এবার বাবা কথা বলল, তোর মা যা বলল এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা চাই তুই যতদিন পড়াশুনা করতে চাইবি ততদিন আমরা তোর পাশে থাকব। তুই কার কাছে থাকবি, আমার কাছে না তোর মায়ের কাছে সেটা তুই ঠিক করবি।
আমি থাকলে কার অসুবিধে হবে না?
মা বলল, আমার অসুবিধে হবে কেন?
বাবা বলল, অসুবিধে হবার কোনও কারণ নেই।
আমি যদি তোমাদের দুজনের কারও কাছে না থাকি?
তুই কি হোস্টেলে থাকতে চাইছিস? বাবা জিজ্ঞাসা করল।
আমি এখনও কিছু ভাবিনি।
দ্যাখ ভেবে দ্যাখ। আমরা সামনের মাস থেকে আলাদা হব।
তোমরা কি ডিভোর্স চাইছ?
সেটা চাইতে গেলে অনেকটা সময় আলাদা থাকতে হয়। এটা সেই প্রথম স্টেপ। বাবা উঠে গেল। বেসিনে হাতমুখ ধুয়ে নিজের ঘরে ঢুকে গেল। ভরত মায়ের দিকে তাকাল, এতদিনের সম্পর্ক ছিঁড়ে ফেলতে তোমার কষ্ট হচ্ছে না?
মা নিষ্পলক তাকাল, হচ্ছে নিশ্চয়ই কিন্তু আমি টের পাচ্ছি না।
বুঝতে পারলাম না।
যে সমস্ত মোষ গাড়ি টানে তাদের কাঁধে দেখবি মস্ত কড়া পড়ে যায়। ঘাটা পড়া বলে। সেখানে কোনও অনুভূতি থাকে না। ওটা শক্ত হয় যাওয়ার পর গাড়ি টানার সময় মোষের একটুও ব্যথা লাগে না। আমারও তাই অবস্থা। সংঘাত হতে হতে মনের সব নরম ব্যাপারগুলো উধাও হয়ে গিয়েছে। এখন সমস্ত মন জুড়ে ওই ঘাটা পড়ে গেছে। তাই ব্যথা লাগলেও টের পাচ্ছি না। মা বলল।
ভরত উঠল। হাতমুখ ধুয়ে নিজের ঘরে ফিরল। বিছানায় শুয়ে সে অপলক তাকিয়ে থাকল ছাদের দিকে। একসময় সে ভাবত এই খেয়োখেয়ি করে ওরা একসঙ্গে আছে কী করে? কেন আলাদা হয়ে যায় না? রাত্রে যুদ্ধ করে আবার সকালে বন্ধুত্ব করে কী করে? কিন্তু এখন ওরা আলাদা হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শোনার পর তার একটুও ভাল লাগছে না। এটা কি তার মধ্যবিত্ত মানসিকতার কারণে? মধ্যবিত্তরা ভাল বা মন্দ কোনোকিছুকেই চূড়ান্ত অবস্থায় মেনে নিতে পারে না।
হ্যাঁ। কথাটা সত্যি। যতদিন তুই আমাদের ওপর নির্ভর করেছিলি ততদিন আমাদের দায় ছিল। অসহ্য হলেও আমরা সেটা মানিয়ে নিতে চাইতাম।
তুমি যা বলছ বাবারও একই সিদ্ধান্ত?
আপত্তি থাকলে ও প্রতিবাদ করত।
তোমরা কী করবে?
আমরা আলাদা হয়ে যাব। সুখ পাইনি কিন্তু স্বস্তি পেতে দোষ কী।
এই ফ্ল্যাটে–?
আমি থাকব। তোর বাবা আর একটা প্রমোশন পাচ্ছে। কোম্পানি ওকে সানি পার্কে ভাল ফ্ল্যাট দেবে। কোনও অসুবিধে হবে না।
তুমি তো হাউসওয়াইফ। তোমার চলবে কী করে?
কাল যেখানে গিয়েছিলাম সেখানে একটা ব্যবস্থা হয়েছে। একটা নামী ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি নিচ্ছি আমি। তোর বাবার কোনও দায় নেই।
এসব কথা তোমরা খুব ঠাণ্ডা মাথায় ভেবেছ?
মা হাসল, হ্যাঁ রে।
এবার বাবা কথা বলল, তোর মা যা বলল এটা আমাদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা চাই তুই যতদিন পড়াশুনা করতে চাইবি ততদিন আমরা তোর পাশে থাকব। তুই কার কাছে থাকবি, আমার কাছে না তোর মায়ের কাছে সেটা তুই ঠিক করবি।
আমি থাকলে কার অসুবিধে হবে না?
মা বলল, আমার অসুবিধে হবে কেন?
বাবা বলল, অসুবিধে হবার কোনও কারণ নেই।
আমি যদি তোমাদের দুজনের কারও কাছে না থাকি?
তুই কি হোস্টেলে থাকতে চাইছিস? বাবা জিজ্ঞাসা করল।
আমি এখনও কিছু ভাবিনি।
দ্যাখ ভেবে দ্যাখ। আমরা সামনের মাস থেকে আলাদা হব।
তোমরা কি ডিভোর্স চাইছ?
সেটা চাইতে গেলে অনেকটা সময় আলাদা থাকতে হয়। এটা সেই প্রথম স্টেপ। বাবা উঠে গেল। বেসিনে হাতমুখ ধুয়ে নিজের ঘরে ঢুকে গেল। ভরত মায়ের দিকে তাকাল, এতদিনের সম্পর্ক ছিঁড়ে ফেলতে তোমার কষ্ট হচ্ছে না?
মা নিষ্পলক তাকাল, হচ্ছে নিশ্চয়ই কিন্তু আমি টের পাচ্ছি না।
বুঝতে পারলাম না।
যে সমস্ত মোষ গাড়ি টানে তাদের কাঁধে দেখবি মস্ত কড়া পড়ে যায়। ঘাটা পড়া বলে। সেখানে কোনও অনুভূতি থাকে না। ওটা শক্ত হয় যাওয়ার পর গাড়ি টানার সময় মোষের একটুও ব্যথা লাগে না। আমারও তাই অবস্থা। সংঘাত হতে হতে মনের সব নরম ব্যাপারগুলো উধাও হয়ে গিয়েছে। এখন সমস্ত মন জুড়ে ওই ঘাটা পড়ে গেছে। তাই ব্যথা লাগলেও টের পাচ্ছি না। মা বলল।
ভরত উঠল। হাতমুখ ধুয়ে নিজের ঘরে ফিরল। বিছানায় শুয়ে সে অপলক তাকিয়ে থাকল ছাদের দিকে। একসময় সে ভাবত এই খেয়োখেয়ি করে ওরা একসঙ্গে আছে কী করে? কেন আলাদা হয়ে যায় না? রাত্রে যুদ্ধ করে আবার সকালে বন্ধুত্ব করে কী করে? কিন্তু এখন ওরা আলাদা হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শোনার পর তার একটুও ভাল লাগছে না। এটা কি তার মধ্যবিত্ত মানসিকতার কারণে? মধ্যবিত্তরা ভাল বা মন্দ কোনোকিছুকেই চূড়ান্ত অবস্থায় মেনে নিতে পারে না।