অভিজিৎ জিজ্ঞাসা করল, অপারেশন করে ওটা সরানো যাবে না!
যাবে। কিন্তু ওই বাচ্চাকে অপারেট করা অসম্ভব ব্যাপার। ওই শরীর সেটা সহ্য করতে পারবে না। শরীরে কোনও শক্তি নেই রক্তাল্পতার জন্যে। কিন্তু এ অবস্থা চললে ও কালকের মধ্যেই মারা যাবে জেনে আজ রাত্রে ডক্টর দত্ত মরিয়া হয়ে অপারেশন করবেন। যদি সহ্য করতে পারে তাহলে বেঁচে যেতে পারে। তার সম্ভাবনা খুবই কম।
ওর মা ব্যাপারটা জনেন?
হ্যাঁ। ওর বাবা শোনার পর ওপরে উঠছেন না।
মন খুব খারাপ হয়ে গেল ওদের। নিচে নামতেই একজন এসে বলল ডক্টর দত্ত ডাকছেন। অভিজিতরা সঙ্গে এল। ডক্টর দত্ত তাদের বসতে বললেন। ওঁকে খুব বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। অভিজিতরা সঙ্গে এল। প্রথমে জানতে চাইলেন। শ্রাবণী পড়াশুনায় কীরকম?
ভরত মাথা নাড়ল, আমি ঠিক জানি না। তবে ভাল রেজাল্ট না হলে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হওয়া যায় না। একথা জিজ্ঞাসা করছেন কেন?
ডক্টর দত্ত শব্দ করলেন ঠোঁট দিয়ে। খুব আফসোসে মানুষের মুখে এমন শব্দ বের হয়। তারপর বললেন, আমার সন্দেহটা ভুল হলে সবচেয়ে খুশি আমিই হতাম। কিন্তু আমাকে খুশি করার কোনো ইচ্ছে ভগবানের নেই। ওর রিপোর্ট পেয়েছি। তবে হাল ছেড়ে দেবার মতো। লিউকোমিয়া নয়। আমরা লড়তে পারব। তারপর তোমরা তো আছ। সহজে হার মানার কথাই ওঠে না।
অভিজিৎ ঝুঁকে পড়ল, ডাক্তারবাবু, আপনি যত রক্ত চান আমি এনে দেব। দরকার হলে অন্য কলেজের ছেলেমেয়েদের কাছে অ্যাপিল করব। একটু আগে আমরা একটা বাচ্চার মুখে মৃত্যুর ছায়া এসেছি। ওকে কি বাঁচানো যায় না?
কার কথা বলছ?
ওপরে রয়েছে বাচ্চাটা। হেমারেজ হওয়ার যার পায়খানা হচ্ছে না।
হঠাৎ ডক্টর দত্ত উত্তেজিত হয়ে উঠলেন, দে কিলড হার। আমি পই পই করে বলে দিয়েছিলাম কীভাবে রক্ত দিতে হবে। ওরা সেটা গ্রাহ্য করেনি। এম বি বি এস করলেই ডাক্তার হওয়া যায় না। অভিজ্ঞতা না থাকলে সিনিয়ারদের কথা শুনতে হয়। এত কষ্ট করে বাচ্চাটাকে দাঁড় করিয়েছিলাম, ওরা অবহেলায় সেটা নষ্ট করল। হ্যাঁ, রাত নটায় আমি অপারেশন করব বলে। ঠিক করেছি। কিন্তু ওর যা অবস্থা পেট কাটামাত্র প্রাণ বেরিয়ে যেতে পারে। যদি সেটা নিশ্চিত বুঝতে পারি তাহলে আমি সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব। হয়তো তার মধ্যেই ও চলে যাবে। যাওয়ার আগে খামোকা শরীর কাটাছেঁড়া করি কেন। ডক্টর দত্ত বললেন।
ভরত বলল, কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ কি আশা করা উচিত না। শুনেছি ডাক্তাররা রোগীর মৃত্যুর পরও অপেক্ষা করেন খানিকক্ষণ যদি প্রাণ ফিরে আসে।
ইয়েস মাই বয়। তাই করা উচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে!–ডক্টর দত্ত উঠে দাঁড়ালেন। তাকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল, যা হোক শ্রাবণীকে এখন কতগুলো প্রসেসের মধ্যে যেতে হবে। ইটস রিয়েলি পেইনফুল। ওর শরীর কতটা রক্ত নিতে পারছে সেটা আগে দেখা যাক।
ওরা বেরিয়ে এল। নিচে ছেলেমেয়েরা অপেক্ষা করছিল। তখন সন্ধে হয়ে এসেছে। প্রত্যেকেরই বাড়ি ফেরার তাড়া। ভরত আবিষ্কার করল তার দিকে যাওয়ার কেউ নেই। এবং তখনই খেয়াল হল পকেটের কথা। একটা টাকাও নেই তার কাছে। টাকার কথা মনে পড়তেই প্রচণ্ড খিদে পেয়ে গেল। সেই সাতসকালে বাড়ি থেকে বের হবার আগে খেয়েছিল, গোটা দিনে খাওয়ার সুযোগ হয়নি, মনেও আসেনি। এলেও ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে দেবার পর খাবার কোনও উপায় ছিল না। পকেটে টাকা থাকলে খিদে পেলে সেটাকে উপেক্ষা করে কিছুক্ষণ সময় কাটানো যায় কিন্তু এখন টাকা নেই বলেই মনে হচ্ছে, না খেলে আর হাঁটতে পারবে না। জিভ শুকিয়ে আসছে। মাথা ঘুরছে অথচ ওইসব উপসর্গ খানিক আগে বিন্দুমাত্র ছিল না।
যাবে। কিন্তু ওই বাচ্চাকে অপারেট করা অসম্ভব ব্যাপার। ওই শরীর সেটা সহ্য করতে পারবে না। শরীরে কোনও শক্তি নেই রক্তাল্পতার জন্যে। কিন্তু এ অবস্থা চললে ও কালকের মধ্যেই মারা যাবে জেনে আজ রাত্রে ডক্টর দত্ত মরিয়া হয়ে অপারেশন করবেন। যদি সহ্য করতে পারে তাহলে বেঁচে যেতে পারে। তার সম্ভাবনা খুবই কম।
ওর মা ব্যাপারটা জনেন?
হ্যাঁ। ওর বাবা শোনার পর ওপরে উঠছেন না।
মন খুব খারাপ হয়ে গেল ওদের। নিচে নামতেই একজন এসে বলল ডক্টর দত্ত ডাকছেন। অভিজিতরা সঙ্গে এল। ডক্টর দত্ত তাদের বসতে বললেন। ওঁকে খুব বিমর্ষ দেখাচ্ছিল। অভিজিতরা সঙ্গে এল। প্রথমে জানতে চাইলেন। শ্রাবণী পড়াশুনায় কীরকম?
ভরত মাথা নাড়ল, আমি ঠিক জানি না। তবে ভাল রেজাল্ট না হলে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হওয়া যায় না। একথা জিজ্ঞাসা করছেন কেন?
ডক্টর দত্ত শব্দ করলেন ঠোঁট দিয়ে। খুব আফসোসে মানুষের মুখে এমন শব্দ বের হয়। তারপর বললেন, আমার সন্দেহটা ভুল হলে সবচেয়ে খুশি আমিই হতাম। কিন্তু আমাকে খুশি করার কোনো ইচ্ছে ভগবানের নেই। ওর রিপোর্ট পেয়েছি। তবে হাল ছেড়ে দেবার মতো। লিউকোমিয়া নয়। আমরা লড়তে পারব। তারপর তোমরা তো আছ। সহজে হার মানার কথাই ওঠে না।
অভিজিৎ ঝুঁকে পড়ল, ডাক্তারবাবু, আপনি যত রক্ত চান আমি এনে দেব। দরকার হলে অন্য কলেজের ছেলেমেয়েদের কাছে অ্যাপিল করব। একটু আগে আমরা একটা বাচ্চার মুখে মৃত্যুর ছায়া এসেছি। ওকে কি বাঁচানো যায় না?
কার কথা বলছ?
ওপরে রয়েছে বাচ্চাটা। হেমারেজ হওয়ার যার পায়খানা হচ্ছে না।
হঠাৎ ডক্টর দত্ত উত্তেজিত হয়ে উঠলেন, দে কিলড হার। আমি পই পই করে বলে দিয়েছিলাম কীভাবে রক্ত দিতে হবে। ওরা সেটা গ্রাহ্য করেনি। এম বি বি এস করলেই ডাক্তার হওয়া যায় না। অভিজ্ঞতা না থাকলে সিনিয়ারদের কথা শুনতে হয়। এত কষ্ট করে বাচ্চাটাকে দাঁড় করিয়েছিলাম, ওরা অবহেলায় সেটা নষ্ট করল। হ্যাঁ, রাত নটায় আমি অপারেশন করব বলে। ঠিক করেছি। কিন্তু ওর যা অবস্থা পেট কাটামাত্র প্রাণ বেরিয়ে যেতে পারে। যদি সেটা নিশ্চিত বুঝতে পারি তাহলে আমি সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করব। হয়তো তার মধ্যেই ও চলে যাবে। যাওয়ার আগে খামোকা শরীর কাটাছেঁড়া করি কেন। ডক্টর দত্ত বললেন।
ভরত বলল, কিন্তু যতক্ষণ শ্বাস ততক্ষণ কি আশা করা উচিত না। শুনেছি ডাক্তাররা রোগীর মৃত্যুর পরও অপেক্ষা করেন খানিকক্ষণ যদি প্রাণ ফিরে আসে।
ইয়েস মাই বয়। তাই করা উচিত। কিন্তু এক্ষেত্রে!–ডক্টর দত্ত উঠে দাঁড়ালেন। তাকে খুব চিন্তিত দেখাচ্ছিল, যা হোক শ্রাবণীকে এখন কতগুলো প্রসেসের মধ্যে যেতে হবে। ইটস রিয়েলি পেইনফুল। ওর শরীর কতটা রক্ত নিতে পারছে সেটা আগে দেখা যাক।
ওরা বেরিয়ে এল। নিচে ছেলেমেয়েরা অপেক্ষা করছিল। তখন সন্ধে হয়ে এসেছে। প্রত্যেকেরই বাড়ি ফেরার তাড়া। ভরত আবিষ্কার করল তার দিকে যাওয়ার কেউ নেই। এবং তখনই খেয়াল হল পকেটের কথা। একটা টাকাও নেই তার কাছে। টাকার কথা মনে পড়তেই প্রচণ্ড খিদে পেয়ে গেল। সেই সাতসকালে বাড়ি থেকে বের হবার আগে খেয়েছিল, গোটা দিনে খাওয়ার সুযোগ হয়নি, মনেও আসেনি। এলেও ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে দেবার পর খাবার কোনও উপায় ছিল না। পকেটে টাকা থাকলে খিদে পেলে সেটাকে উপেক্ষা করে কিছুক্ষণ সময় কাটানো যায় কিন্তু এখন টাকা নেই বলেই মনে হচ্ছে, না খেলে আর হাঁটতে পারবে না। জিভ শুকিয়ে আসছে। মাথা ঘুরছে অথচ ওইসব উপসর্গ খানিক আগে বিন্দুমাত্র ছিল না।