এতক্ষণে যেন একটু জোর পেয়েছে ছেলেটি পায়ের তলায়, দুহাত দিয়ে মণ্টুর মুঠো থেকে নিজের জামাটা ছাড়িয়ে বলল, এসব ব্যাপারে কি কোনো ড্রশান থাকে। তবে যদি বিশ্বাস না কর ওকে ডেকে আনন, আমি তোমাদের সামনে জিজ্ঞাসা করব।
সঙ্গে সঙ্গে মণ্টু একটা ঘুসি মারল ছেলেটরি মুখে, কিন্তু দ্রুত মুখটা সরিয়ে নেওয়ায় ঘুসিটা কাঁধে গিয়ে লাগল। যন্ত্রণায় ছেলেটা দুহাতে কাঁধ চেপে ধরল। মণ্টু বলছিল, শালা, ভদ্রলোকের মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভজাতে চাও? কোনো প্রমাণ-ফ্রমাণ নেই। আমি একদম বিশ্বাস করি না।
হঠাৎ ছেলেটা রুখে দাঁড়াল, আমি এখানে আসি না-আসি তা তোমাদের কী? তোমরী ওর কেউ ওর?
মণ্টু বলল, আবার কথা হচ্ছে। আমি কেউ হই না-হই সে-জবাব তোকে দেব? আজ প্রথম দিন বলে ছেড়ে দিলাম, আবার যদি কোনোদিন দেখি এইখানে টাকি মারতে তা হলে ছাল ছাড়িয়ে নেব। যাঃ।
ছেলেটা ঘুরে সাইকেলটা ধরতে যেতে তপন বলল, লেগেছে তোর?
একটু অবাক হয়ে কী বলবে বুঝতে না পেরে ছেলেটা বলল, না। বোধহয় নিজের কষ্টের কথা স্বীকার করতে চাইছিল না।
তপন হাসল, গুড। তা হরে ক্ষমা চা, বল, আর কোনোদিন এসব করব না।
ছেলেটা বলল, তোমরা আজ সুযোগ পেয়ে যা ইচ্ছে করে নিচ্ছ। বেশ, আমি ক্ষমা চাইছি। তপন ওকে সাইকেলটা দিয়ে দিতে সে দৌড়ে লাফিয়ে তাতে উঠে পড়ে একটু নাগালের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল, এই শালারা, শোন, এর বদলা আমি নেব। পাপাড়ার সাধন মৃধার পার্টিকে আজই বলছি। কথা শেষ করেই জোরে প্যাডেল চালিয়ে বেরিয়ে গেল।
কয়েক পা ফুটে থমকে দাঁড়াল মটু, যা যা, বল শালা সাধনকে। আমি যদি রায়কতপাড়ার আশেকদাকে বলি তোর সাধন লেজ গুটিয়ে নেবে।
কিন্তু কথাগুলো ছেলেটার কোন অবধি পেীছাল না। আর কোনো মজার দৃশ্য দেখা যাবে না বুঝে ভিড়টা পলকে হালকা হয়ে গেল। অনিমেষ ওদের কাছে এগিয়ে গেল। তপন প্রথমে দেখতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠল, এতক্ষণ কোথায় ছিলি?
অনিমেষ বলল, এখানে কী হয়েছে রে?
মণ্টু বলল, আরে তোকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে দেখি এই মালটা সাইকেলে পাক খাচ্ছে আর বেল বাজাচ্ছে। টাঙ্কি মারার আর জায়গা পায়নি! আবার সাধন মৃধার ভয় দেখাচ্ছে। মণ্টু যেন তখনও ফুসছিল।
অনিমেষ বলল, মারতে গেলি কেন মিছিমিছি।
মণ্টু বলল, বেশ করেছি মেরেছি। প্রেমের জন্য জীবন দেয় সবাই, তা জানিস?
তারপর টেনে টেনে বলর, আই লাভ রম্ভা।
হঠাৎ মুখ ফসকে অনিমেষ বলে ফেলল, রা তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল।
সঙ্গে সঙ্গে হাঁ হয়ে গেল মণ্টু। ও যেন বিশ্বাস করতেই পারছে না কথাটা। তারপর কোনোরকমে বলল, তোকে জিজ্ঞাসা করেছে।
অনিমেষ ঘাড় নাড়ল।
তোর সঙ্গে আলাপ আছে বলিসনি তো! গুল মারবি না একদম। মণ্টু ওর সামনে এসে দাঁড়াল।
অনিমেষ বলল, আগে আলাপ ছিল না, একটু আগে হল। এখানে আসতে নতুন স্যার আমাকে ওদের বাড়িতে নিয়ে গেলেন।
কথাটা শেষ করতেই তপন দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল, তোর কী লাক মাইরি, একই দিনে বেদিং বিউটি থেকে লাভিং বিউটি সব দেখলি। তোকে একটু হেঁদে দে।
তিস্তার পাড়ে হাঁটাত হাঁটতে ওদের সব ব্যাপারটা বলতে হল। শুধু উর্বশী যে কথাটা ওকে সবশেষে বলেছে সেটা বন্ধুদের ভাঙল না। শোনা হয়ে গেলে মটু বলল, না রে অনি, অ অক্ষরটা যে-ই লিখুক এবার আমি ধরবই! র যখন আমাকে লাইক করে তখন এটা আমার প্রেস্টিজ ইমু। তুই মুভিং ক্যাসেলকে নিশ্চিন্ত থাকতে বলিস। আসামি ধরা পড়লে আমাকে ভাই ও বাড়িতে নিয়ে যাস।
তপন বলল, আমার কথা কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। অনিমেষ ঘাড় নেড়ে না বলল। হতাশ গলায় তপন নিজের মনে বলল, আমাকে শালা মেয়েরা পছন্দ করে না। এইখ্রনগুলো যতদিন না যাবেনিজের গাল থেকে হাত সরিয়ে ও মণ্টুর দিকে তাকিয়ে বলল, মাইরি, নিশীথবাবুটা হেভি হারামি। গাছেরও খাচ্ছে তলারও কুড়োচ্ছে!
গালাগালি শুনে প্রচণ্ড রাগ হয়ে গেল অনিমেষের। ও চিষ্কার করে উঠল, খুব খারাপ হচ্ছে তপন। না জেনেশুনে একটা অনেস্ট লোককে গালাগালি দিবি না! কিন্তু অনেস্ট শব্দটা বলার সময় ওর কেন জানি না বিরামবাবুর মুখটা মনে পড়ে গেল।
মণ্টু হাসল, তুই কিছুই জানিস না অনি, আগে মুভিং ক্যাসেলের সঙ্গে নিশীথবাবুকে সব জায়গায় দেখা যেত। কলকাতায় কতবার নাকি ওরা দুজনে গিয়েছে। তখন মেয়েরা ছোট ছিল। মেনকার সঙ্গে লাইন হয়েছে, তা সবাই অনুমান করতাম, কিন্তু শিওর ছিলাম না। তুই আজ ঠিক খবরটা দিলি।
একই দিনে একটা মানুষের এতরকম ছবি দেখতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ল অনিমেষ। নতুন স্যার দেশকে ভালোবাসেন, মেনকাদিকেও. ভালোবাসতে পারেন, মেনকাদির বাবা অসৎ হলেও মেনকাদি তো সৎ হতে পারে। কিন্তু তার মেনকাদির মাকে-এই ব্যাপারটা সব গোলমাল করে দিচ্ছিল।
হঠাৎ তপন মণ্টুকে বলল, তুই শালা এবার থেকে বাংলা হেভি নম্বর পাবি।
মণ্টু অবাক হয়ে বলল, কেন?
কেন আবার! ভায়রাভাইকে কেউ কম নম্বর দেয়? কথাটা বলে ও চোঁচোঁ করে দৌড় মারল।
মানে বুঝতে পেরে মণ্টু ওকে দৌড়ে ধরতে যেতে যখন বুঝতে পারল ও নাগালের বাইরে চলে গেছে, তখন দাঁড়িয়ে পড়ে অনিমেষকে বলল, বন্ধু হোক আর যা-ই হোক, মেয়েদের ব্যাপারে সবাই খুব জেলাস, না রে!
অনিমেষের কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছিল না। ও চুপচাপ মাটির দিকে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। যত বড় হচ্ছে তত যেন সবকিছু অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে। একটা মানুষের কতরকম চেহারা থাকে!
সঙ্গে সঙ্গে মণ্টু একটা ঘুসি মারল ছেলেটরি মুখে, কিন্তু দ্রুত মুখটা সরিয়ে নেওয়ায় ঘুসিটা কাঁধে গিয়ে লাগল। যন্ত্রণায় ছেলেটা দুহাতে কাঁধ চেপে ধরল। মণ্টু বলছিল, শালা, ভদ্রলোকের মেয়েকে নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভজাতে চাও? কোনো প্রমাণ-ফ্রমাণ নেই। আমি একদম বিশ্বাস করি না।
হঠাৎ ছেলেটা রুখে দাঁড়াল, আমি এখানে আসি না-আসি তা তোমাদের কী? তোমরী ওর কেউ ওর?
মণ্টু বলল, আবার কথা হচ্ছে। আমি কেউ হই না-হই সে-জবাব তোকে দেব? আজ প্রথম দিন বলে ছেড়ে দিলাম, আবার যদি কোনোদিন দেখি এইখানে টাকি মারতে তা হলে ছাল ছাড়িয়ে নেব। যাঃ।
ছেলেটা ঘুরে সাইকেলটা ধরতে যেতে তপন বলল, লেগেছে তোর?
একটু অবাক হয়ে কী বলবে বুঝতে না পেরে ছেলেটা বলল, না। বোধহয় নিজের কষ্টের কথা স্বীকার করতে চাইছিল না।
তপন হাসল, গুড। তা হরে ক্ষমা চা, বল, আর কোনোদিন এসব করব না।
ছেলেটা বলল, তোমরা আজ সুযোগ পেয়ে যা ইচ্ছে করে নিচ্ছ। বেশ, আমি ক্ষমা চাইছি। তপন ওকে সাইকেলটা দিয়ে দিতে সে দৌড়ে লাফিয়ে তাতে উঠে পড়ে একটু নাগালের বাইরে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল, এই শালারা, শোন, এর বদলা আমি নেব। পাপাড়ার সাধন মৃধার পার্টিকে আজই বলছি। কথা শেষ করেই জোরে প্যাডেল চালিয়ে বেরিয়ে গেল।
কয়েক পা ফুটে থমকে দাঁড়াল মটু, যা যা, বল শালা সাধনকে। আমি যদি রায়কতপাড়ার আশেকদাকে বলি তোর সাধন লেজ গুটিয়ে নেবে।
কিন্তু কথাগুলো ছেলেটার কোন অবধি পেীছাল না। আর কোনো মজার দৃশ্য দেখা যাবে না বুঝে ভিড়টা পলকে হালকা হয়ে গেল। অনিমেষ ওদের কাছে এগিয়ে গেল। তপন প্রথমে দেখতে পেয়ে চেঁচিয়ে উঠল, এতক্ষণ কোথায় ছিলি?
অনিমেষ বলল, এখানে কী হয়েছে রে?
মণ্টু বলল, আরে তোকে খুঁজতে খুঁজতে এখানে এসে দেখি এই মালটা সাইকেলে পাক খাচ্ছে আর বেল বাজাচ্ছে। টাঙ্কি মারার আর জায়গা পায়নি! আবার সাধন মৃধার ভয় দেখাচ্ছে। মণ্টু যেন তখনও ফুসছিল।
অনিমেষ বলল, মারতে গেলি কেন মিছিমিছি।
মণ্টু বলল, বেশ করেছি মেরেছি। প্রেমের জন্য জীবন দেয় সবাই, তা জানিস?
তারপর টেনে টেনে বলর, আই লাভ রম্ভা।
হঠাৎ মুখ ফসকে অনিমেষ বলে ফেলল, রা তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল।
সঙ্গে সঙ্গে হাঁ হয়ে গেল মণ্টু। ও যেন বিশ্বাস করতেই পারছে না কথাটা। তারপর কোনোরকমে বলল, তোকে জিজ্ঞাসা করেছে।
অনিমেষ ঘাড় নাড়ল।
তোর সঙ্গে আলাপ আছে বলিসনি তো! গুল মারবি না একদম। মণ্টু ওর সামনে এসে দাঁড়াল।
অনিমেষ বলল, আগে আলাপ ছিল না, একটু আগে হল। এখানে আসতে নতুন স্যার আমাকে ওদের বাড়িতে নিয়ে গেলেন।
কথাটা শেষ করতেই তপন দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল, তোর কী লাক মাইরি, একই দিনে বেদিং বিউটি থেকে লাভিং বিউটি সব দেখলি। তোকে একটু হেঁদে দে।
তিস্তার পাড়ে হাঁটাত হাঁটতে ওদের সব ব্যাপারটা বলতে হল। শুধু উর্বশী যে কথাটা ওকে সবশেষে বলেছে সেটা বন্ধুদের ভাঙল না। শোনা হয়ে গেলে মটু বলল, না রে অনি, অ অক্ষরটা যে-ই লিখুক এবার আমি ধরবই! র যখন আমাকে লাইক করে তখন এটা আমার প্রেস্টিজ ইমু। তুই মুভিং ক্যাসেলকে নিশ্চিন্ত থাকতে বলিস। আসামি ধরা পড়লে আমাকে ভাই ও বাড়িতে নিয়ে যাস।
তপন বলল, আমার কথা কিছু জিজ্ঞাসা করেনি। অনিমেষ ঘাড় নেড়ে না বলল। হতাশ গলায় তপন নিজের মনে বলল, আমাকে শালা মেয়েরা পছন্দ করে না। এইখ্রনগুলো যতদিন না যাবেনিজের গাল থেকে হাত সরিয়ে ও মণ্টুর দিকে তাকিয়ে বলল, মাইরি, নিশীথবাবুটা হেভি হারামি। গাছেরও খাচ্ছে তলারও কুড়োচ্ছে!
গালাগালি শুনে প্রচণ্ড রাগ হয়ে গেল অনিমেষের। ও চিষ্কার করে উঠল, খুব খারাপ হচ্ছে তপন। না জেনেশুনে একটা অনেস্ট লোককে গালাগালি দিবি না! কিন্তু অনেস্ট শব্দটা বলার সময় ওর কেন জানি না বিরামবাবুর মুখটা মনে পড়ে গেল।
মণ্টু হাসল, তুই কিছুই জানিস না অনি, আগে মুভিং ক্যাসেলের সঙ্গে নিশীথবাবুকে সব জায়গায় দেখা যেত। কলকাতায় কতবার নাকি ওরা দুজনে গিয়েছে। তখন মেয়েরা ছোট ছিল। মেনকার সঙ্গে লাইন হয়েছে, তা সবাই অনুমান করতাম, কিন্তু শিওর ছিলাম না। তুই আজ ঠিক খবরটা দিলি।
একই দিনে একটা মানুষের এতরকম ছবি দেখতে পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ল অনিমেষ। নতুন স্যার দেশকে ভালোবাসেন, মেনকাদিকেও. ভালোবাসতে পারেন, মেনকাদির বাবা অসৎ হলেও মেনকাদি তো সৎ হতে পারে। কিন্তু তার মেনকাদির মাকে-এই ব্যাপারটা সব গোলমাল করে দিচ্ছিল।
হঠাৎ তপন মণ্টুকে বলল, তুই শালা এবার থেকে বাংলা হেভি নম্বর পাবি।
মণ্টু অবাক হয়ে বলল, কেন?
কেন আবার! ভায়রাভাইকে কেউ কম নম্বর দেয়? কথাটা বলে ও চোঁচোঁ করে দৌড় মারল।
মানে বুঝতে পেরে মণ্টু ওকে দৌড়ে ধরতে যেতে যখন বুঝতে পারল ও নাগালের বাইরে চলে গেছে, তখন দাঁড়িয়ে পড়ে অনিমেষকে বলল, বন্ধু হোক আর যা-ই হোক, মেয়েদের ব্যাপারে সবাই খুব জেলাস, না রে!
অনিমেষের কোনো কথা বলতে ইচ্ছে করছিল না। ও চুপচাপ মাটির দিকে তাকিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। যত বড় হচ্ছে তত যেন সবকিছু অন্যরকম হয়ে যাচ্ছে। একটা মানুষের কতরকম চেহারা থাকে!