এটা অবশ্যই কংগ্রেসিদের পোশাক। এই তো মন্ত্রীকে সে এইরকমই দেখল, তবু সবাই তো এরকম নয়। নিশীথবাবু, নবীনবাবু শশধরবাবু, তো একদম অন্যরকম। আবার মুভিং ক্যাসেল-তিনিও তো কংগ্রেস করেন।
ওর দিকে তাকিয়ে প্রিয়তোষ বলল, তা আমার পোশাক দেখে নিশ্চয়ই কমিস্ট মনে হচ্ছে না, কিন্তু কংগ্রেসিও মনে হচ্ছে না তো? তা হলে আমি কী? হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে প্রিয়তোষ ড্রাইভারকে বলল, একটু বাজারের দকিটায় যাব ভাই, দিনবাজারের পুলটা দিয়ে না হয় ঘুরে যাবেন।
তারপর জানলার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি আর কোনো পার্টি করি না।
একথাটাই এতক্ষণ মনে হচ্ছিল অনিমেষের, সে অবাক-গলায় জিজ্ঞাস করল, তুমি বুঝি অফিসার?
মাথা নাড়ল প্রিয়তোষ, না রে! আমি চাকরি করি, কিন্তু ঠিক সেরকম চাকরি নয়। তগুই এখন এসব কথা বুঝবি না। বাঃ, শহরটার তো অনেক উন্নতি হয়েছে। ওটা কী সিনেমা হল, আলোছায়া? দীপ্তি টকিজ আছে না?
প্রসঙ্গটা এমন সহজে ঘুরে গেল যে অনিমেষ ধরতে পারল না, হ্যাঁ। আর-একটা সিনেমা হল হয়েছে। ও মুখ বের করে দেখল আলোছায়াতে দস্যু মোহন হচ্ছে। এই সিনেমাটার কথা মণ্টু খুব বলছিল। ও চট করে পকেটে পড়ে-থাকা আধুলিকে স্পর্শ করে নিল।
তুই সিগারেট খাস?
প্রশ্নটা শুনে চমকে ছোটকাকার দিকে তাকিয়ে দ্রুত মাথা নাড়ল অনিমেষ। এরকম প্রশ্ন বড়রা কেউ করবে ও ভাবেনি। ছোটকাকা নির্বিকার-ওদের ক্লাসের অনেকেই এখন সিগারেট খায়। মণ্টু ওকে একবার জোর করে সিগারেট টানিয়েছিল, কী বিচ্ছিরি তেতো-তোতো! কি আরাম যে লোকে পায়।
তুই পার্টি করিস?
এই প্রশ্নটার অর্থ এখন অনিমেষের জানা হয়ে গেছে। পার্টি করা বলতে এখন সবাই কমিউনিস্ট পার্টি করার কথাই বোঝায়। যেন কংগ্রেসি পার্টি করে না। নিশীথবাবু ওকে নিয়ে কংগ্রেস অফিসে কয়েকবার গিয়েছিলেন। সামনের নির্বাচনে ওকে কংসের হয়ে যে কাজ করতে হবে সেটা নিশ্চিত। সেদিন একটা মজার বক্তৃতা শুনেছিল ও। জেলা থেকে নির্বাচিত একজন কংগ্রেসি বলছিলেন, ওরা বলে আমরা চোর, ভালো কথা। কিন্তু গদিতে যে-ই যাবে সে সাধু থাকতে পারে না। এখন কথা হল আমরা খেয়ে-খেয়ে এমন অবস্থায় এসেছি যে আর খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এখন ইচ্ছে না থাকলেও আমরা সাধারণ মানুষের জন্য দুএকটা কাজ করব। কিন্তু ওরা তো উপোসী ছারপোকা হয়ে আছে, গদিতে গেলে তো দশ বছর লুটেপুটে খাবে! তার বেলা? কথাটা অনিমেষের ঠিক মনঃপুত না হলেও বিকল্প কোনো চিন্তা মাথায় আসেনি। তাই ঘাড় নেড়ে এখন সে বলল, আমি কংগ্রেসকে সার্পোট করি।
একটু অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে প্রিয়তোষ মনে করতে পারল, ও, তুই সেই বন্দেমাতরম্ বলতিস, না? স্বাধীনতা দিবসে ফ্ল্যাগ তুলেছিলি, না?
ঘাড় নাড়ল অনিমেষ। এটা ওর গর্ব!
হঠাৎ অনিমেষের জ্যাঠামশাই-এর কথা মনে পড়ে গেল, জান, জ্যাঠামশাই একদিন জেঠিমা আর ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে এসেছিল। দাদু ছিল না তখন।
তাই নাকি? তারপর?
খাওয়াদাওয়া করে দাদু আসার আগেই চলে গেল। এ-খবর তুমি জান?
অনিমেষ সন্দেহের চোখে ছোটকাকার দিকে তাকাল। প্রিয়তোষ হেসে ঘাড় নাড়ল, না।
জ্যাঠামশাই তোমাকে কমিউনিস্ট পার্টি কর বলে বোকা বলছিল। আখের গোছাতে হলে নাকি কংগ্রেসি হতে হয়। আমার খুব রাগ হয়েছিল। বলে কথাটা কি ঠিক? হাতের সব আঙুল কি সমান? অনিমেষ বেশ উত্তেজিত গলায় বলল।
ওর দিকে তাকিয়ে প্রিয়তোষ বলল, তা আমার পোশাক দেখে নিশ্চয়ই কমিস্ট মনে হচ্ছে না, কিন্তু কংগ্রেসিও মনে হচ্ছে না তো? তা হলে আমি কী? হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে প্রিয়তোষ ড্রাইভারকে বলল, একটু বাজারের দকিটায় যাব ভাই, দিনবাজারের পুলটা দিয়ে না হয় ঘুরে যাবেন।
তারপর জানলার দিকে তাকিয়ে বলল, আমি আর কোনো পার্টি করি না।
একথাটাই এতক্ষণ মনে হচ্ছিল অনিমেষের, সে অবাক-গলায় জিজ্ঞাস করল, তুমি বুঝি অফিসার?
মাথা নাড়ল প্রিয়তোষ, না রে! আমি চাকরি করি, কিন্তু ঠিক সেরকম চাকরি নয়। তগুই এখন এসব কথা বুঝবি না। বাঃ, শহরটার তো অনেক উন্নতি হয়েছে। ওটা কী সিনেমা হল, আলোছায়া? দীপ্তি টকিজ আছে না?
প্রসঙ্গটা এমন সহজে ঘুরে গেল যে অনিমেষ ধরতে পারল না, হ্যাঁ। আর-একটা সিনেমা হল হয়েছে। ও মুখ বের করে দেখল আলোছায়াতে দস্যু মোহন হচ্ছে। এই সিনেমাটার কথা মণ্টু খুব বলছিল। ও চট করে পকেটে পড়ে-থাকা আধুলিকে স্পর্শ করে নিল।
তুই সিগারেট খাস?
প্রশ্নটা শুনে চমকে ছোটকাকার দিকে তাকিয়ে দ্রুত মাথা নাড়ল অনিমেষ। এরকম প্রশ্ন বড়রা কেউ করবে ও ভাবেনি। ছোটকাকা নির্বিকার-ওদের ক্লাসের অনেকেই এখন সিগারেট খায়। মণ্টু ওকে একবার জোর করে সিগারেট টানিয়েছিল, কী বিচ্ছিরি তেতো-তোতো! কি আরাম যে লোকে পায়।
তুই পার্টি করিস?
এই প্রশ্নটার অর্থ এখন অনিমেষের জানা হয়ে গেছে। পার্টি করা বলতে এখন সবাই কমিউনিস্ট পার্টি করার কথাই বোঝায়। যেন কংগ্রেসি পার্টি করে না। নিশীথবাবু ওকে নিয়ে কংগ্রেস অফিসে কয়েকবার গিয়েছিলেন। সামনের নির্বাচনে ওকে কংসের হয়ে যে কাজ করতে হবে সেটা নিশ্চিত। সেদিন একটা মজার বক্তৃতা শুনেছিল ও। জেলা থেকে নির্বাচিত একজন কংগ্রেসি বলছিলেন, ওরা বলে আমরা চোর, ভালো কথা। কিন্তু গদিতে যে-ই যাবে সে সাধু থাকতে পারে না। এখন কথা হল আমরা খেয়ে-খেয়ে এমন অবস্থায় এসেছি যে আর খাওয়ার ক্ষমতা নেই। এখন ইচ্ছে না থাকলেও আমরা সাধারণ মানুষের জন্য দুএকটা কাজ করব। কিন্তু ওরা তো উপোসী ছারপোকা হয়ে আছে, গদিতে গেলে তো দশ বছর লুটেপুটে খাবে! তার বেলা? কথাটা অনিমেষের ঠিক মনঃপুত না হলেও বিকল্প কোনো চিন্তা মাথায় আসেনি। তাই ঘাড় নেড়ে এখন সে বলল, আমি কংগ্রেসকে সার্পোট করি।
একটু অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে প্রিয়তোষ মনে করতে পারল, ও, তুই সেই বন্দেমাতরম্ বলতিস, না? স্বাধীনতা দিবসে ফ্ল্যাগ তুলেছিলি, না?
ঘাড় নাড়ল অনিমেষ। এটা ওর গর্ব!
হঠাৎ অনিমেষের জ্যাঠামশাই-এর কথা মনে পড়ে গেল, জান, জ্যাঠামশাই একদিন জেঠিমা আর ছেলেকে নিয়ে বাড়িতে এসেছিল। দাদু ছিল না তখন।
তাই নাকি? তারপর?
খাওয়াদাওয়া করে দাদু আসার আগেই চলে গেল। এ-খবর তুমি জান?
অনিমেষ সন্দেহের চোখে ছোটকাকার দিকে তাকাল। প্রিয়তোষ হেসে ঘাড় নাড়ল, না।
জ্যাঠামশাই তোমাকে কমিউনিস্ট পার্টি কর বলে বোকা বলছিল। আখের গোছাতে হলে নাকি কংগ্রেসি হতে হয়। আমার খুব রাগ হয়েছিল। বলে কথাটা কি ঠিক? হাতের সব আঙুল কি সমান? অনিমেষ বেশ উত্তেজিত গলায় বলল।