বাইরের ঘরে ঢুকতে ঢুকতে জয়তী বলল, কি লজ্জায় ফেললে! এই সময় মলি ও সরলা নেমে এলেন। পরিচয় করিয়ে দেবার পর জয়তী সরলাকে প্রণাম করে উঠে দাঁড়াতেই সরলা কাঁপা গলায় বলে উঠলেন, তুমি এত নিষ্ঠুর কেন মা? এইভাবে সব যোগাযোগ ছিন্ন করে ফেলতে হয়?
জয়তী কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু পারল না। গৌরব আর সেখানে দাঁড়াল না। তার এবার স্নান করা দরকার। খিদেও কম পায়নি। খুব ভালো বলেছে টনি। মেয়ে ইন্দ্রজিত। সমস্যাগুলোকে সামনে রেখে শুধু নিজেকে আড়াল করে যাচ্ছে জয়তী, দেখা যাক, আজ ওঁর কি প্রতিক্রিয়া হয়।
জলই যদি মাছের জীবন তবে নদীর মাছ কি সমুদ্রের গিয়ে স্বস্তি পায়? কিন্তু অনেক সামুদ্রিক মাছ স্বচ্ছন্দে উজান বেয়ে ঢুকে যায় নদীর ভেতরে। তাদের জীবনের অন্যতম কর্তব্য ডিম উৎপাদন করে ফিরে যায় সমুদ্রে। কোনো কোনো মাছ যারা নুনে মানুষ, তাদের মিঠে জলে অসুবিধে হয় না কিন্তু মিঠে জলের মাছেরা নুনজল সহ্য করতে পারে না। সেই বিকেলে বাড়ি ফিরে একথা মনে হয়েছিল জয়তীর। সে নিজে কি নুনজলের মাছ? নইলে অতক্ষণ একটা পরিবার সবার আদরের মধ্যে থেকে একটু অস্বস্তি হলো না তো তার? এ তো তার অভ্যেস ছিল না। গৌরবের মা যে ভাবে কথা বলেছেন সেইভাবে কেউ কখনও কোনোদিন কথা বলেনি। বস্তুত লজ্জাই করছিল তার। তিনি যে ধরেই নিয়েছেন জয়তী তার ছোটবউ। এবং সে যেন ইচ্ছে করেই তাকে এবং তার ছেলেকে কষ্টের মধ্যে রেখেছে। গৌরবের বউদি বলেছেন তিনি একা আর কতদিন সংসারের ভার বইবেন? জয়তী এলে সেটা ভাগ করে নেওয়া যেত। এমন কি টনি বনি পর্যন্ত তার সঙ্গে আঠার মতো লেগেছিল। চলে আসার আগে সবাই বলেছিল, ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে না। গৌরবের মা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন তিনি আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে পারবেন না। এইসব কথা শুনতে এমন আন্তরিক ব্যবহার পেতে কোন্ মেয়ের না আনন্দ হয়? কিন্তু জয়তীর যে একই সঙ্গে অস্বস্তি হচ্ছে সেকথা ওখানে বলার উপায় ছিল না। তার কেবলই মনে হচ্ছিল যোগ্যতা ছাড়াই তাকে সম্মান দেখানো হচ্ছে। এবং সেই সঙ্গে আর একটা ভাবনা মাথায় এল। গৌরব ইচ্ছে করেই তাকে এই পরিবেশে এনে ফেলেছে। নিজে কয়েকবার বলে যখন জয়তীর কাছ থেকে ঠিকঠাক সাড়া পায়নি তখন বাড়ির লোকের মধ্যে তাকে এনে কথা বের করার চেষ্টা করেছে। ব্যাপারটা ভাবতেই মাথা গরম হয়েছিল জয়তীর। কিন্তু পরিবেশটা এমন কিছু সে সব কিছু মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। ফেরার সময় ট্যাক্সিতে বসে গৌরব চুপচাপ ছিল। জয়তী জিজ্ঞাসা করেছিল, এটা কী হলো? নির্বিকার মুখে গৌরব জানতে চাইল, কোনটা?
বাড়িতে নিয়ে এসে তুমি আলাদা সরে রইলে। আর এঁরা আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করলেন যেন এ বাড়ির বউ হয়ে আসাটা আমার ইচ্ছের ওপর নির্ভর করছে এবং সেই ইচ্ছেটা করছি না বলেই এরা অসুখে রয়েছেন। জয়তী সোজাসুজি তাকাল।
তোমার কী মনে হলো? এ বাড়ির লোক চাইলেই তুমি আসতে পার না?
দ্যাখো গৌরব। এঁরা খুব ভালো। আমি কিন্তু এঁদের বিয়ে করছি না।
মানে?
বিয়ে হবে তোমার সঙ্গে আমার। এঁরা সম্পর্কে সম্পর্কিত।
নিশ্চয়ই।
তোমার আমার সমস্যাটাকে সমাধান না করে আমাকে এঁদের মধ্যে এনে খুব অন্যায় করেছ। এখন নিজেকে খুব অপরাধী বলে মনে হচ্ছে।
জয়তী কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু পারল না। গৌরব আর সেখানে দাঁড়াল না। তার এবার স্নান করা দরকার। খিদেও কম পায়নি। খুব ভালো বলেছে টনি। মেয়ে ইন্দ্রজিত। সমস্যাগুলোকে সামনে রেখে শুধু নিজেকে আড়াল করে যাচ্ছে জয়তী, দেখা যাক, আজ ওঁর কি প্রতিক্রিয়া হয়।
জলই যদি মাছের জীবন তবে নদীর মাছ কি সমুদ্রের গিয়ে স্বস্তি পায়? কিন্তু অনেক সামুদ্রিক মাছ স্বচ্ছন্দে উজান বেয়ে ঢুকে যায় নদীর ভেতরে। তাদের জীবনের অন্যতম কর্তব্য ডিম উৎপাদন করে ফিরে যায় সমুদ্রে। কোনো কোনো মাছ যারা নুনে মানুষ, তাদের মিঠে জলে অসুবিধে হয় না কিন্তু মিঠে জলের মাছেরা নুনজল সহ্য করতে পারে না। সেই বিকেলে বাড়ি ফিরে একথা মনে হয়েছিল জয়তীর। সে নিজে কি নুনজলের মাছ? নইলে অতক্ষণ একটা পরিবার সবার আদরের মধ্যে থেকে একটু অস্বস্তি হলো না তো তার? এ তো তার অভ্যেস ছিল না। গৌরবের মা যে ভাবে কথা বলেছেন সেইভাবে কেউ কখনও কোনোদিন কথা বলেনি। বস্তুত লজ্জাই করছিল তার। তিনি যে ধরেই নিয়েছেন জয়তী তার ছোটবউ। এবং সে যেন ইচ্ছে করেই তাকে এবং তার ছেলেকে কষ্টের মধ্যে রেখেছে। গৌরবের বউদি বলেছেন তিনি একা আর কতদিন সংসারের ভার বইবেন? জয়তী এলে সেটা ভাগ করে নেওয়া যেত। এমন কি টনি বনি পর্যন্ত তার সঙ্গে আঠার মতো লেগেছিল। চলে আসার আগে সবাই বলেছিল, ছেড়ে দিতে ইচ্ছে করছে না। গৌরবের মা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন তিনি আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে পারবেন না। এইসব কথা শুনতে এমন আন্তরিক ব্যবহার পেতে কোন্ মেয়ের না আনন্দ হয়? কিন্তু জয়তীর যে একই সঙ্গে অস্বস্তি হচ্ছে সেকথা ওখানে বলার উপায় ছিল না। তার কেবলই মনে হচ্ছিল যোগ্যতা ছাড়াই তাকে সম্মান দেখানো হচ্ছে। এবং সেই সঙ্গে আর একটা ভাবনা মাথায় এল। গৌরব ইচ্ছে করেই তাকে এই পরিবেশে এনে ফেলেছে। নিজে কয়েকবার বলে যখন জয়তীর কাছ থেকে ঠিকঠাক সাড়া পায়নি তখন বাড়ির লোকের মধ্যে তাকে এনে কথা বের করার চেষ্টা করেছে। ব্যাপারটা ভাবতেই মাথা গরম হয়েছিল জয়তীর। কিন্তু পরিবেশটা এমন কিছু সে সব কিছু মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। ফেরার সময় ট্যাক্সিতে বসে গৌরব চুপচাপ ছিল। জয়তী জিজ্ঞাসা করেছিল, এটা কী হলো? নির্বিকার মুখে গৌরব জানতে চাইল, কোনটা?
বাড়িতে নিয়ে এসে তুমি আলাদা সরে রইলে। আর এঁরা আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করলেন যেন এ বাড়ির বউ হয়ে আসাটা আমার ইচ্ছের ওপর নির্ভর করছে এবং সেই ইচ্ছেটা করছি না বলেই এরা অসুখে রয়েছেন। জয়তী সোজাসুজি তাকাল।
তোমার কী মনে হলো? এ বাড়ির লোক চাইলেই তুমি আসতে পার না?
দ্যাখো গৌরব। এঁরা খুব ভালো। আমি কিন্তু এঁদের বিয়ে করছি না।
মানে?
বিয়ে হবে তোমার সঙ্গে আমার। এঁরা সম্পর্কে সম্পর্কিত।
নিশ্চয়ই।
তোমার আমার সমস্যাটাকে সমাধান না করে আমাকে এঁদের মধ্যে এনে খুব অন্যায় করেছ। এখন নিজেকে খুব অপরাধী বলে মনে হচ্ছে।