ছোট বউদি ঘরে ঢুকে গৌরবের সামনে একটা চায়ের কাপ আর প্যাস্ট্রি সমেত ডিশ এগিয়ে ধরলেন, আমেরিকায় থেকে সময়টা রাখতে শেখা উচিত ছিল। আমি চা বানিয়ে বসে আছি আর–। হ্যাঁ, ও এসে গেছে। তাড়াতাড়ি নিচে আসা হোক।
গৌরব বলল, কি ব্যাপার, এত চা খাবে কে? তার চেয়ে ছোটদাকেও এখানে ডাক, সবাই মিলে খেতে খেতে গল্প করা যাবে।
ছোট বউদি বললেন, না ভাই, সে নিচে চা খাচ্ছে। একটু বাদেই আমরা বের হব। এসো কিন্তু।
ছোট বউদি চলে গেলে ঘরে একটা নিস্তব্ধতা নেমে এল। শেষ পর্যন্ত গৌরব কথা বলার চেষ্টা করল, একেই বলে কম্যুনিকেশন গ্যাপ। আমি ওদের বলে আসিনি চা খাব না। দোষ আমার। ঠিক আছে, তিন কাপ চা আমরা তিনজনেই খাই। পিসীমা, তুমি বড় বউদিরটা নাও, পিসেমশাইকে ছোট বউদির চা আর আমি পিসীমার। দুটো কাপ দুজনের দিকে বাড়িয়ে দিলো সে। পিসেমশাই খুশি হলেন। এই সময় বোধহয় পিসীমা তাকে চা দিতেন না। বাড়তি পাওয়াটুকু বেশ উপভোগ করতে করতে তিনি বললেন, আমার একবার সৌরভের কাছে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমি শুধু পেন্সন আনার দিন বাইরে যাই। দেখি। তাকে বলো, কিছু মনে না করতে।
পিসেমশাই যে কথাটা বলতে পারছে না সেটা স্পষ্ট হোক গৌরব চাইল না। তিনশো টাকার জন্যে কোনো সম্পর্ক যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা নষ্ট হওয়াই উচিত।
পিসীমা জিজ্ঞাসা করলেন, হ্যাঁরে, কদিন থাকবি?
গৌরব হাসল, ইচ্ছে আছে একটা ভালো চাকরি জুটিয়ে এখানে থেকে যাই। না জুটলে ফিরে যেতে হবে। ছুটি আছে তেরো সপ্তাহের।
পিসেমশাইম আচমকা জিজ্ঞাসা করলেন, কত মাইনে পাও ওখানে?
গৌরব জবাব দিলো, বছরে ষাট হাজার ডলার।
পিসেমশাই বিড়বিড় করলেন, তার মানে মাসে পাঁচ হাজার। এক ডলার বারো টাকা। ওরে বাব্বা, মাসে ষাট হাজার টাকা মাইনে? কী বলছ কী?
না পিসেমশাই, ডলারকে টাকায় ট্রান্সফার করবেন না। ওরা মাইনে দিচ্ছে ওখানে খরচ করার জন্যে। ওখানে এক ডলার মানে একটাকাই।
আমি ভাবতে পারছি না। এত টাকা। উফ। চোখ বড় হয়ে গেল পিসেমশাই-এর।
তা কবে বিয়ে করবি? নাকি করে ফেলেছিস? পিসিমা অন্তরঙ্গ হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
ফেললে তো বাড়িতে একটা কার্ড আসত, তাই না?
গোপনে গোপনে কোনো মেমসাহেবকে ঘরে আনিসনি তো?
সে ভাগ্য হলো না আমার। বিয়ে করলে আমি দেশের মেয়েকেই করব।
করবি? তাহলে আমি সম্বন্ধ দেখি।
এই সময় পিসীমাকে থামিয়ে দিলেন পিসেমশাই, থাম তো। তুমি যেসব চেন তাদের বাপ দুআড়াই হাজার মাইনে পায়। ষাট হাজারি ছেলের যোগ্য মেয়ের সঙ্গে তোমার আর এ জন্মে আলাপ হবে না।
গৌরব মাথা নাড়ল, না পিসীমা, পিসেমশাই ঠিক বললেন না। বিমর্ষ পিসীমার মুখের দিকে তাকিয়ে গৌরব বলল, ছেলেবেলায় যাঁর বুকের দুধ খেয়েছি তিনি নিশ্চয়ই আমার জন্যে ভালো কাজ করবেন। হাজারের ব্যাপারটা কোনো বাধাই নয়। যখন সময় হবে তখন ঠিক বলব তোমাকে। গৌরব উঠে দাঁড়াল।
পিসীমা জিজ্ঞাসা করলেন, চলে যাচ্ছিস?
না, নিচে এল গৌরব। বড়দার ঘরে সে ঢুকল প্রথমে। খাটের ওপর বইপত্র নিয়ে পড়তে বসেছে রাজা। বড়দা খালি গায়ে লুঙি পরে তার পড়া দেখছেন। বড় বউদি এক চিলতে ফাঁকা জায়গায় তরকারি নিয়ে বসেছেন। তাকে দেখে বললেন, শেষ পর্যন্ত ছাড়া পেলে? এসো। গৌরব দেখল ছোট ঘরটা জিনিসপত্র ঠাসা। একটুও নড়বার উপায় নেই। আর আসবাব যা আছে তা আদ্যিকালের পুরনো। বড়দা একপাশে সরে ওকে খাটে বসার জায়গা করে দিলেন। স্বভাবতই রাজার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটল। গৌরব বলল, আমি আসার জন্যে ওর পড়ায় ডিস্টার্ব হলো।
গৌরব বলল, কি ব্যাপার, এত চা খাবে কে? তার চেয়ে ছোটদাকেও এখানে ডাক, সবাই মিলে খেতে খেতে গল্প করা যাবে।
ছোট বউদি বললেন, না ভাই, সে নিচে চা খাচ্ছে। একটু বাদেই আমরা বের হব। এসো কিন্তু।
ছোট বউদি চলে গেলে ঘরে একটা নিস্তব্ধতা নেমে এল। শেষ পর্যন্ত গৌরব কথা বলার চেষ্টা করল, একেই বলে কম্যুনিকেশন গ্যাপ। আমি ওদের বলে আসিনি চা খাব না। দোষ আমার। ঠিক আছে, তিন কাপ চা আমরা তিনজনেই খাই। পিসীমা, তুমি বড় বউদিরটা নাও, পিসেমশাইকে ছোট বউদির চা আর আমি পিসীমার। দুটো কাপ দুজনের দিকে বাড়িয়ে দিলো সে। পিসেমশাই খুশি হলেন। এই সময় বোধহয় পিসীমা তাকে চা দিতেন না। বাড়তি পাওয়াটুকু বেশ উপভোগ করতে করতে তিনি বললেন, আমার একবার সৌরভের কাছে যাওয়া উচিত। কিন্তু আমি শুধু পেন্সন আনার দিন বাইরে যাই। দেখি। তাকে বলো, কিছু মনে না করতে।
পিসেমশাই যে কথাটা বলতে পারছে না সেটা স্পষ্ট হোক গৌরব চাইল না। তিনশো টাকার জন্যে কোনো সম্পর্ক যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে তা নষ্ট হওয়াই উচিত।
পিসীমা জিজ্ঞাসা করলেন, হ্যাঁরে, কদিন থাকবি?
গৌরব হাসল, ইচ্ছে আছে একটা ভালো চাকরি জুটিয়ে এখানে থেকে যাই। না জুটলে ফিরে যেতে হবে। ছুটি আছে তেরো সপ্তাহের।
পিসেমশাইম আচমকা জিজ্ঞাসা করলেন, কত মাইনে পাও ওখানে?
গৌরব জবাব দিলো, বছরে ষাট হাজার ডলার।
পিসেমশাই বিড়বিড় করলেন, তার মানে মাসে পাঁচ হাজার। এক ডলার বারো টাকা। ওরে বাব্বা, মাসে ষাট হাজার টাকা মাইনে? কী বলছ কী?
না পিসেমশাই, ডলারকে টাকায় ট্রান্সফার করবেন না। ওরা মাইনে দিচ্ছে ওখানে খরচ করার জন্যে। ওখানে এক ডলার মানে একটাকাই।
আমি ভাবতে পারছি না। এত টাকা। উফ। চোখ বড় হয়ে গেল পিসেমশাই-এর।
তা কবে বিয়ে করবি? নাকি করে ফেলেছিস? পিসিমা অন্তরঙ্গ হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
ফেললে তো বাড়িতে একটা কার্ড আসত, তাই না?
গোপনে গোপনে কোনো মেমসাহেবকে ঘরে আনিসনি তো?
সে ভাগ্য হলো না আমার। বিয়ে করলে আমি দেশের মেয়েকেই করব।
করবি? তাহলে আমি সম্বন্ধ দেখি।
এই সময় পিসীমাকে থামিয়ে দিলেন পিসেমশাই, থাম তো। তুমি যেসব চেন তাদের বাপ দুআড়াই হাজার মাইনে পায়। ষাট হাজারি ছেলের যোগ্য মেয়ের সঙ্গে তোমার আর এ জন্মে আলাপ হবে না।
গৌরব মাথা নাড়ল, না পিসীমা, পিসেমশাই ঠিক বললেন না। বিমর্ষ পিসীমার মুখের দিকে তাকিয়ে গৌরব বলল, ছেলেবেলায় যাঁর বুকের দুধ খেয়েছি তিনি নিশ্চয়ই আমার জন্যে ভালো কাজ করবেন। হাজারের ব্যাপারটা কোনো বাধাই নয়। যখন সময় হবে তখন ঠিক বলব তোমাকে। গৌরব উঠে দাঁড়াল।
পিসীমা জিজ্ঞাসা করলেন, চলে যাচ্ছিস?
না, নিচে এল গৌরব। বড়দার ঘরে সে ঢুকল প্রথমে। খাটের ওপর বইপত্র নিয়ে পড়তে বসেছে রাজা। বড়দা খালি গায়ে লুঙি পরে তার পড়া দেখছেন। বড় বউদি এক চিলতে ফাঁকা জায়গায় তরকারি নিয়ে বসেছেন। তাকে দেখে বললেন, শেষ পর্যন্ত ছাড়া পেলে? এসো। গৌরব দেখল ছোট ঘরটা জিনিসপত্র ঠাসা। একটুও নড়বার উপায় নেই। আর আসবাব যা আছে তা আদ্যিকালের পুরনো। বড়দা একপাশে সরে ওকে খাটে বসার জায়গা করে দিলেন। স্বভাবতই রাজার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটল। গৌরব বলল, আমি আসার জন্যে ওর পড়ায় ডিস্টার্ব হলো।