রাত্রে ভাল ঘুম হয়নি দুজনের। মাধবীলতা রাত সাড়ে এগারোটায় শেষবার ফোন করেছে অর্ককে, ওর মোবাইলের সুইচ অফ করে রেখেছে। এরকমটা কখনও হয় না। নানান দুশ্চিন্তা ভিড় করছিল মনে। অনিমেষ বলেছিল ওর ওই বন্ধু আসার পর সব উলটো পালটা হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় না মেয়েবন্ধু, তা হলে ওখানে নিয়ে যেতে সাহস পেত না।
মাধবীলতা চুপ করে ছিল। অনিমেষের স্বভাব হল আগ বাড়িয়ে অনেক কিছু ভেবে ফেলা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যার সঙ্গে বাস্তব মেলে না।
সকালের চা-পর্ব শেষ হলে মাধবীলতা আবার অর্ককে ফোন করল। এবারে রিং হচ্ছে, একটু বাদেই অর্কর গলা কানে এল, বলো মা।
কী রে? কাল ফোন সুইচ অফ করে রেখেছিলি কেন? মাধবীলতা জিজ্ঞাসা করল।
চার্জে বসিয়েছিলাম মোবাইল।
ও। শোন, এখানে তোকে খুব দরকার। কালই তোকে রওনা হতে হবে।
কী দরকার সেটা বলবে তো?
ফোনে অত বলা যাবে না। আমি রাখছি। কথা বাড়াতে চাইল না মাধবীলতা।
দাঁড়াও, দাঁড়াও। হঠাৎ আমাকে এরকমভাবে দরকার পড়ল কেন?
আমি তো তোকে বললাম, এখানে এলে জানতে পারবি।
তুমি আমাকে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছ মা!
কোনও সমস্যায় ফেলছি না। তোর বাবা জানতে চাইছিল, যাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছিস তার সঙ্গে কী করে আলাপ হল?
আমার সঙ্গে যত লোকের পরিচয় হয়, বন্ধুত্ব হয়, তাদের প্রত্যেককে কি বাবা বা তুমি চেনো? ও খুব ভদ্র এবং শান্ত। তোমাদের ঘরে একবারও ঢোকেনি। বাবাকে চিন্তা করতে নিষেধ কোরো। অর্ক কথাগুলো বলতেই মাধবীলতা ফোনের লাইন কেটে দিল।
অনিমেষ তাকিয়ে ছিল। এবার জিজ্ঞাসা করল, কেন ফোন বন্ধ ছিল?
তুমি তো সাতপাঁচ ভেবে নিয়েছিলে। ওর মোবাইলের ব্যাটারি ডাউন হয়ে গিয়েছিল বলে চার্জে বসিয়েছিল। আগ বাড়িয়ে ভাবাটা এবার বন্ধ করো। বেশ জোরে পা ফেলে মাধবীলতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। অনিমেষ নয়, অর্ক তাকে কিছুতেই স্বস্তি দিচ্ছে না।
বেলা সাড়ে নটার সময় গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল। অনিমেষ একটু কৌতূহলী হয়ে বারান্দা থেকে নেমে আসতেই স্বপ্নেন্দু দত্তকে দেখতে পেল। সঙ্গে দুজন মধ্যবয়সি মানুষ। স্বপ্নেন্দু বললেন, নমস্কার। আপনাদের বাড়িটাকে এঁদের দেখাতে চাই। আপত্তি নেই তো?
এঁরা?
আমার কোম্পানির লোক। সমস্ত কাজকর্ম এঁরাই করেন।
ও ঠিক আছে।
স্বপ্নেন্দু লোক দুজনকে বললেন, এই যে বাগান, ওই ওপাশের বাড়ি আর এই দিকের বড় বাড়িটা, ভালভাবে ঘুরে দেখুন। ওপাশের গলির রাস্তাটা কুড়ি ফুটের বেশি নয়। ফলে আমাদের জায়গা ছাড়তে হবে। সব দেখে শুনে নিন।
লোকগুলো মাথা নেড়ে বাগানের ভেতর চলে গেল। স্বপ্নেন্দু জিজ্ঞাসা করলেন, জগদীশবাবু আর কাউকে আনেননি তো?
অনিমেষ হাসল। স্বপ্নেন্দু বললেন, আরে বাব্বা, আমি এই জমির দালালদের বিশ্বাস করি না। যত দাম বাড়াতে পারবে তত তো ওদের লাভ। আপনাদের আইনি ব্যবস্থা ঠিক করে নিতে কত দেরি হবে?
উকিলবাবু বলছেন বেশি দেরি হবে না। অনিমেষ বলল।
বেশ। আমার খুব তাড়া নেই। বর্ষা চলে না গেলে তো কাজে হাত দেব না। স্বপ্নেন্দুর কথা শেষ হওয়ামাত্রই ওরে বাবা রে বলে চেঁচিয়ে উঠল বাগানে ঢোকা লোক দুটোর একজন। তারপর দুজনই প্রায় দৌড়ে চলে এল কাছে।
স্বপ্নেন্দু বললেন, কী হল? বাঘ দেখেছেন নাকি?
না। শেয়াল। আমাকে দেখে মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে আসছিল।
উঃ। একটা শেয়াল দেখেই এত ভয় পেয়ে গেলেন? অনিমেষবাবু, বাগানটাকে আগে পরিষ্কার করতে হবে। স্বপ্নেন্দু বললেন।
আপনি যদি কিনে নেন তা হলে যাতে সুবিধে হয়, তাই তো করবেন। অনিমেষ বলতে বলতে দেখল, মাধবীলতা একটা কিছু কাগজে মুড়ে বারান্দা থেকে ঘুরে বাগানের ভেতর ঢুকে গেল।
স্বপ্নেন্দু বললেন, উনি জানেন না বোধহয় ওখানে শেয়াল আছে।
অনিমেষ মাথা নাড়ল, ও নিজের চোখে দেখে এসেছে।
মাধবীলতা চুপ করে ছিল। অনিমেষের স্বভাব হল আগ বাড়িয়ে অনেক কিছু ভেবে ফেলা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যার সঙ্গে বাস্তব মেলে না।
সকালের চা-পর্ব শেষ হলে মাধবীলতা আবার অর্ককে ফোন করল। এবারে রিং হচ্ছে, একটু বাদেই অর্কর গলা কানে এল, বলো মা।
কী রে? কাল ফোন সুইচ অফ করে রেখেছিলি কেন? মাধবীলতা জিজ্ঞাসা করল।
চার্জে বসিয়েছিলাম মোবাইল।
ও। শোন, এখানে তোকে খুব দরকার। কালই তোকে রওনা হতে হবে।
কী দরকার সেটা বলবে তো?
ফোনে অত বলা যাবে না। আমি রাখছি। কথা বাড়াতে চাইল না মাধবীলতা।
দাঁড়াও, দাঁড়াও। হঠাৎ আমাকে এরকমভাবে দরকার পড়ল কেন?
আমি তো তোকে বললাম, এখানে এলে জানতে পারবি।
তুমি আমাকে সমস্যায় ফেলে দিচ্ছ মা!
কোনও সমস্যায় ফেলছি না। তোর বাবা জানতে চাইছিল, যাকে বাড়িতে থাকতে দিয়েছিস তার সঙ্গে কী করে আলাপ হল?
আমার সঙ্গে যত লোকের পরিচয় হয়, বন্ধুত্ব হয়, তাদের প্রত্যেককে কি বাবা বা তুমি চেনো? ও খুব ভদ্র এবং শান্ত। তোমাদের ঘরে একবারও ঢোকেনি। বাবাকে চিন্তা করতে নিষেধ কোরো। অর্ক কথাগুলো বলতেই মাধবীলতা ফোনের লাইন কেটে দিল।
অনিমেষ তাকিয়ে ছিল। এবার জিজ্ঞাসা করল, কেন ফোন বন্ধ ছিল?
তুমি তো সাতপাঁচ ভেবে নিয়েছিলে। ওর মোবাইলের ব্যাটারি ডাউন হয়ে গিয়েছিল বলে চার্জে বসিয়েছিল। আগ বাড়িয়ে ভাবাটা এবার বন্ধ করো। বেশ জোরে পা ফেলে মাধবীলতা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। অনিমেষ নয়, অর্ক তাকে কিছুতেই স্বস্তি দিচ্ছে না।
বেলা সাড়ে নটার সময় গাড়ির আওয়াজ শোনা গেল। অনিমেষ একটু কৌতূহলী হয়ে বারান্দা থেকে নেমে আসতেই স্বপ্নেন্দু দত্তকে দেখতে পেল। সঙ্গে দুজন মধ্যবয়সি মানুষ। স্বপ্নেন্দু বললেন, নমস্কার। আপনাদের বাড়িটাকে এঁদের দেখাতে চাই। আপত্তি নেই তো?
এঁরা?
আমার কোম্পানির লোক। সমস্ত কাজকর্ম এঁরাই করেন।
ও ঠিক আছে।
স্বপ্নেন্দু লোক দুজনকে বললেন, এই যে বাগান, ওই ওপাশের বাড়ি আর এই দিকের বড় বাড়িটা, ভালভাবে ঘুরে দেখুন। ওপাশের গলির রাস্তাটা কুড়ি ফুটের বেশি নয়। ফলে আমাদের জায়গা ছাড়তে হবে। সব দেখে শুনে নিন।
লোকগুলো মাথা নেড়ে বাগানের ভেতর চলে গেল। স্বপ্নেন্দু জিজ্ঞাসা করলেন, জগদীশবাবু আর কাউকে আনেননি তো?
অনিমেষ হাসল। স্বপ্নেন্দু বললেন, আরে বাব্বা, আমি এই জমির দালালদের বিশ্বাস করি না। যত দাম বাড়াতে পারবে তত তো ওদের লাভ। আপনাদের আইনি ব্যবস্থা ঠিক করে নিতে কত দেরি হবে?
উকিলবাবু বলছেন বেশি দেরি হবে না। অনিমেষ বলল।
বেশ। আমার খুব তাড়া নেই। বর্ষা চলে না গেলে তো কাজে হাত দেব না। স্বপ্নেন্দুর কথা শেষ হওয়ামাত্রই ওরে বাবা রে বলে চেঁচিয়ে উঠল বাগানে ঢোকা লোক দুটোর একজন। তারপর দুজনই প্রায় দৌড়ে চলে এল কাছে।
স্বপ্নেন্দু বললেন, কী হল? বাঘ দেখেছেন নাকি?
না। শেয়াল। আমাকে দেখে মুখ খিঁচিয়ে তেড়ে আসছিল।
উঃ। একটা শেয়াল দেখেই এত ভয় পেয়ে গেলেন? অনিমেষবাবু, বাগানটাকে আগে পরিষ্কার করতে হবে। স্বপ্নেন্দু বললেন।
আপনি যদি কিনে নেন তা হলে যাতে সুবিধে হয়, তাই তো করবেন। অনিমেষ বলতে বলতে দেখল, মাধবীলতা একটা কিছু কাগজে মুড়ে বারান্দা থেকে ঘুরে বাগানের ভেতর ঢুকে গেল।
স্বপ্নেন্দু বললেন, উনি জানেন না বোধহয় ওখানে শেয়াল আছে।
অনিমেষ মাথা নাড়ল, ও নিজের চোখে দেখে এসেছে।