পেপারে পড়েছিস নিশ্চয়ই। তুই এতদিনে জানলি না যে পেপার খবর তৈরি করে, পাবলিককে খ্যাপাতে হলে তৈরি খবর চাই। প্রথমজন মোবাইলে সময় দেখল, তিনটে নাগাদ স্টেশনের বাইরে যেতে হবে। বাস আসবে।
কতক্ষণ লাগবে?
যতক্ষণ লাগুক তোর তাতে কী? সেই সন্ধে থেকে বীরভূম জেলার ক্যাডারদের তুলে নিয়ে বাসে করে নন্দীগ্রামে। ওঠ। প্রথমজন উঠে দাঁড়াল।
কোথায় যাবে?
চল, দেখি, ঠেকটা এখনও ভোলা আছে কি না।
বলমাত্র হাসিমুখে উঠে দাঁড়াল দ্বিতীয়জন। ওরা ওয়েটিং রুম থেকে বেরিয়ে গেলে অর্ক রামজির দিকে তাকাল। রামজির চোখ বন্ধ। ওইসব সংলাপ ওর কানে ঢুকেছে বলে মনে হয় না। ঢুকলেও মানে বোঝা সম্ভব নয়।
কিন্তু এই ছেলেদের নন্দীগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? সেখানে ভূমি সংরক্ষণ সমিতির সঙ্গে সিপিএমের লড়াই চলছে। সিপিএমকে তাড়িয়ে গ্রামের মানুষ এখন দলবদ্ধভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। রাস্তা কেটে দিয়েছে যাতে পুলিশের গাড়ি ঢুকতে না পারে। বলা হচ্ছে, ওইসব গ্রামগুলোতে প্রশাসনিক কাজকর্ম একদম বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুরাবস্থায় পড়া সত্ত্বেও মানুষ তাদের পৈতৃক জমি ছাড়তে রাজি নয়। তৃণমূল পার্টি তাদের সাহস জোগাচ্ছে। এই ঘটনাগুলো তো খবরের কাগজের দৌলতে সবাই জানে। কিন্তু এই যে বীরভূমের মতো জেলা থেকে নিচুতলার কর্মীদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওখানে, এই খবর এখনও প্রকাশিত নয়। বোঝাই যাচ্ছে ওখানকার শক্তিহীন দলের শক্তি বাড়াতেই এই ব্যবস্থা। যারা যাচ্ছে তারা অবশ্যই কিছু পাওয়ার আশায় বাড়ি ছাড়ছে। এই দেশের রাজনীতি মানেই পাওয়ার আশায় হাঁটা।
ভোর চারটে নাগাদ রামজিকে ডেকে বাইরে বেরিয়ে এল অর্ক। এখনও পৃথিবীতে অন্ধকার চেপে আছে। কিন্তু এর মধ্যেই লোকজন জেগে উঠেছে, রিকশায় যাত্রীরা স্টেশনে আসছে। একটু হাঁটতেই সদ্য খোলা চায়ের দোকান থেকে ওরা চা কিনে খেয়ে জেনে নিল বাস টার্মিনাস কত দূরে।
খানিকটা যেতেই রামজির মোবাইলে রিং শুরু হল। রামজি দ্রুত সেটা বড় করে দেখে নিয়ে চাপা গলায় বলল, রামপ্রসাদ। তারপর দেহাতি হিন্দিতে কথা বলে যেতে লাগল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কিছু কিছু শব্দ বুঝতে পারল অর্ক। ফোন বন্ধ করে কাছে এসে রামজি বলল, রামপ্রসাদ ফোন করেছিল। রামগঙ্গা জায়গাটা কোথায়?
কোন রামগঙ্গা?
সুন্দরবনের কাছে। বলল, নদীর একদিকে রামগঙ্গা, অন্যদিকে পাথর, পাথর, –যাঃ ভুলে গেলাম নামটা। রামজি বলল।
পাথরপ্রতিমা?
হ্যাঁ, হ্যাঁ।
কলকাতা থেকে ঘণ্টা চারেক লাগবে যেতে? কেন?
ঠিক চারদিনের মাথায় ওই রামগঙ্গায় যেতে হবে আমাকে। রামজি বলল, কীভাবে যাব তা দয়া করে বলে দেবেন।
এর জন্যে দয়া করার কী আছে? কিন্তু চারদিনের জন্য আশ্রমে যাবেন, এখানকার কোনও হোটেলে থাকবেন? অর্ক জিজ্ঞাসা করল।
আমার কাছে তো বেশি টাকা নেই। আর হোটেলে উঠলে তো মানুষের নজর পড়বে। রামজি বলল।
কথাটা ঠিক।
.
কতক্ষণ লাগবে?
যতক্ষণ লাগুক তোর তাতে কী? সেই সন্ধে থেকে বীরভূম জেলার ক্যাডারদের তুলে নিয়ে বাসে করে নন্দীগ্রামে। ওঠ। প্রথমজন উঠে দাঁড়াল।
কোথায় যাবে?
চল, দেখি, ঠেকটা এখনও ভোলা আছে কি না।
বলমাত্র হাসিমুখে উঠে দাঁড়াল দ্বিতীয়জন। ওরা ওয়েটিং রুম থেকে বেরিয়ে গেলে অর্ক রামজির দিকে তাকাল। রামজির চোখ বন্ধ। ওইসব সংলাপ ওর কানে ঢুকেছে বলে মনে হয় না। ঢুকলেও মানে বোঝা সম্ভব নয়।
কিন্তু এই ছেলেদের নন্দীগ্রামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কেন? সেখানে ভূমি সংরক্ষণ সমিতির সঙ্গে সিপিএমের লড়াই চলছে। সিপিএমকে তাড়িয়ে গ্রামের মানুষ এখন দলবদ্ধভাবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। রাস্তা কেটে দিয়েছে যাতে পুলিশের গাড়ি ঢুকতে না পারে। বলা হচ্ছে, ওইসব গ্রামগুলোতে প্রশাসনিক কাজকর্ম একদম বন্ধ হয়ে গেছে। চরম দুরাবস্থায় পড়া সত্ত্বেও মানুষ তাদের পৈতৃক জমি ছাড়তে রাজি নয়। তৃণমূল পার্টি তাদের সাহস জোগাচ্ছে। এই ঘটনাগুলো তো খবরের কাগজের দৌলতে সবাই জানে। কিন্তু এই যে বীরভূমের মতো জেলা থেকে নিচুতলার কর্মীদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ওখানে, এই খবর এখনও প্রকাশিত নয়। বোঝাই যাচ্ছে ওখানকার শক্তিহীন দলের শক্তি বাড়াতেই এই ব্যবস্থা। যারা যাচ্ছে তারা অবশ্যই কিছু পাওয়ার আশায় বাড়ি ছাড়ছে। এই দেশের রাজনীতি মানেই পাওয়ার আশায় হাঁটা।
ভোর চারটে নাগাদ রামজিকে ডেকে বাইরে বেরিয়ে এল অর্ক। এখনও পৃথিবীতে অন্ধকার চেপে আছে। কিন্তু এর মধ্যেই লোকজন জেগে উঠেছে, রিকশায় যাত্রীরা স্টেশনে আসছে। একটু হাঁটতেই সদ্য খোলা চায়ের দোকান থেকে ওরা চা কিনে খেয়ে জেনে নিল বাস টার্মিনাস কত দূরে।
খানিকটা যেতেই রামজির মোবাইলে রিং শুরু হল। রামজি দ্রুত সেটা বড় করে দেখে নিয়ে চাপা গলায় বলল, রামপ্রসাদ। তারপর দেহাতি হিন্দিতে কথা বলে যেতে লাগল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কিছু কিছু শব্দ বুঝতে পারল অর্ক। ফোন বন্ধ করে কাছে এসে রামজি বলল, রামপ্রসাদ ফোন করেছিল। রামগঙ্গা জায়গাটা কোথায়?
কোন রামগঙ্গা?
সুন্দরবনের কাছে। বলল, নদীর একদিকে রামগঙ্গা, অন্যদিকে পাথর, পাথর, –যাঃ ভুলে গেলাম নামটা। রামজি বলল।
পাথরপ্রতিমা?
হ্যাঁ, হ্যাঁ।
কলকাতা থেকে ঘণ্টা চারেক লাগবে যেতে? কেন?
ঠিক চারদিনের মাথায় ওই রামগঙ্গায় যেতে হবে আমাকে। রামজি বলল, কীভাবে যাব তা দয়া করে বলে দেবেন।
এর জন্যে দয়া করার কী আছে? কিন্তু চারদিনের জন্য আশ্রমে যাবেন, এখানকার কোনও হোটেলে থাকবেন? অর্ক জিজ্ঞাসা করল।
আমার কাছে তো বেশি টাকা নেই। আর হোটেলে উঠলে তো মানুষের নজর পড়বে। রামজি বলল।
কথাটা ঠিক।
.