ছেলেরা সবাই সরে গেলেও ছোটখাটো জটলা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। অনেকেই দূর থেকে মেয়েটিকে লক্ষ্য করে বেশ মজা পাচ্ছে। অনিমেষ সেই ছেলেটিকে খুঁজছিল যে মেয়েটিকে আপনি বলে সম্মান দিতে নিষেধ করেছে এবং বারোটা বাজানোর কথা বলেছিল। ছেলেটির সঙ্গে ওর তেমন আলাপ নেই কিন্তু মুখে চেনা। চট করে তাকে খুঁজে না পেয়ে অনিমেষ গোবিন্দকে মৃদু স্বরে ছেলেটিকে ডেকে আনতে বলে সহজ গলায় জিজ্ঞাসা করল, আপনি কোথায় থাকেন?
দ্রুত একটা হাসির আলতো ঢেউ উঠল মেয়েটির ঠোঁটে, বলল, কেন বলুন তো?
এত রাতে যেতে অসুবিধে হবে কিনা জানতে চাইছি।
তাই বলে আমি সারা রাত এখানে থাকতে পারি না।
অনিমেষ মনে মনে বলল, এতক্ষণ তো ছিলেন সামনামানি ঘাড় নাড়ল, তা নিশ্চয়ই নয় । বেশি দূর হলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতাম।
আপনি যাবেন?
না, আমি খুব ক্লান্ত!
সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি অদ্ভুত চোখে ওর দিকে তাকাল। মেয়েটির রূপে যে ধারালো চমক আছে সেটা এত প্রখর যে কোন স্নিগ্ধতা সেখানে ছায়া ফেলে না। এই তাকানোর ভঙ্গী তাই শুধু কটাক্ষই হয়ে রইল। হাসল মেয়েটি, এত সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন আপনি! না, আমি একাই যেতে পারব।
ঠাট্টা করার লোভ সামলাতে পারল না অনিমেষ, অবশ্য আপনি যার কাছে এসেছিলেন তাঁরই উচিত ছিল আপনাকে পৌঁছে দেওয়া।
উচিত? ছেলেরা যখন দেখে বদনামের নোংরা গায়ে লাগবে না তখন তারা আকাশ ছুঁতে পারে, একটু সেরকম অবস্থায় পড়লে গুটিয়ে কেন্নো হয়ে যায় । আমি ঋণ শোধ করতে এসেছিলাম, অনেক হয়েছে। কথাগুলো বলতে বলতে মেয়েটি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল, ঠিক সে সময় গোবিন্দ ছেলেটিকে নিয়ে ফিরে এল।
অনিমেষ এগিয়ে গিয়ে ছেলেটিকে বলল, শোন ভাই, তোমাকে একটা কাজ করতে হবে। উনি তো তোমাদের ক্লাসমেট, তুমি তাই ওঁকে একটু বাস-স্টপ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে এস। রাত হয়েছে, ওঁর একা যাওয়া ঠিক নয়।
এরকম প্রস্তাবের জন্য প্রস্তুত ছিল না ছেলেটি, বলল, কিন্তু হোস্টেলের গেট বন্ধ হয়ে গেছে, এখন যাওয়া অসম্ভব।
অনিমেষ হাসল, আমি সুপারের পারমিশন নিয়ে নেব। স্পেশাল কেস হিসেবে যেতে পার। তোমরা একসঙ্গে পড়, তাই বলছি।
ছেলেটি খুব বিব্রত বোধ করছে দেখে অনিমেষের মজা লাগছিল। সে বলল, মেয়েদের সম্মান রাখা আমাদের কর্তব্য। যান, আপনি ওর সঙ্গে চলে যান।
ধন্যবাদ। মেয়েটা বলেই দ্রুত নামতে শুরু করল। একান্ত অনিচ্ছায় ছেলেটি ওর সঙ্গ নিল।
ওরা চলে গেলে গোবিন্দ চাপা গলায় বলল, নির্ঘাত যেতে যেতে ভাব হয়ে যাবে।
অনিমেষ বলল, তুমি একবার সুপারকে ওর কথা বলে এসো, ভাই। আমার শরীরটা ভাল লাগছে না, আমি ঘরে যাচ্ছি।
নিজের ঘরের দরজায় তালা নেই। তার মানে ত্রিদিব ফিরে এসেছে। এতক্ষণে অনিমেষের খেয়াল হল যে ওপরের ভিড়ে ত্রিদিবকে সে দেখেনি। সবাই গিয়েছে আর ও ঘরে বসে রইল। ঘরে ঢুকে আলোটা জ্বালতে যেতেই ত্রিদিবের জড়ানো গলা কানে এল, নো লাইট, প্লিজ।
অনিমেষ হেসে বলল, আজকেও খেয়েছ?
ত্রিদিব প্রথমে কিছু বলল না। অনিমেষ নিজের খাটে গিয়ে বসলে ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞাসা করল, তোমার বিপ্লব হয়ে গেল?
বিপ্লব? অনিমেষ বিস্মিত।
কাজকর্মগুলো নাকি বাড়ি থেকেই শুরু করতে হয়। তুমি তোমার বিপ্লব হোস্টেল থেকেই আরম্ভ করলে। ব্রাভো ব্রাদার। যখন ফিরলাম তখন শুনছিলাম তুমি বক্তৃতা দিচ্ছ। এই প্রথম নেতা হয়ে গেলে, গুড সামনে খোলা ময়দান, এগিয়ে যাও, ফরোয়ার্ড মার্চ। সম্ভাবনার ঢেউ আছে তোমার মধ্যে, তোমার হবে। নাটুকে গলায় বলল ত্রিদিব।
কি যা–তা বকছ অনিমেষ বিরক্ত হল।
যা-তা নয়, বন্ধু। এ ঘটনা কাল অন্য ছেলেরা জানবে। অটোমেটিক্যালি তুমি হিরো হয়ে যাবে। নেক্সট স্টেপ য়ুনিভার্সিটির ইলেকসনে জেতা, তারপর ইউনিয়নের সেক্রেটারী, তারপর এম এল এ মন্ত্রী। স্বর্গের সিঁড়ি–উঠে যাও।
তুমি মাতাল হয়ে গেছ। অনিমেষ সহজ করার চেষ্টা করল । একটা মেয়েকে নিয়ে তুমি যা করলে তার চেয়ে মাতাল হওয়া ঢের ভাল।
দ্রুত একটা হাসির আলতো ঢেউ উঠল মেয়েটির ঠোঁটে, বলল, কেন বলুন তো?
এত রাতে যেতে অসুবিধে হবে কিনা জানতে চাইছি।
তাই বলে আমি সারা রাত এখানে থাকতে পারি না।
অনিমেষ মনে মনে বলল, এতক্ষণ তো ছিলেন সামনামানি ঘাড় নাড়ল, তা নিশ্চয়ই নয় । বেশি দূর হলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতাম।
আপনি যাবেন?
না, আমি খুব ক্লান্ত!
সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি অদ্ভুত চোখে ওর দিকে তাকাল। মেয়েটির রূপে যে ধারালো চমক আছে সেটা এত প্রখর যে কোন স্নিগ্ধতা সেখানে ছায়া ফেলে না। এই তাকানোর ভঙ্গী তাই শুধু কটাক্ষই হয়ে রইল। হাসল মেয়েটি, এত সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়েন আপনি! না, আমি একাই যেতে পারব।
ঠাট্টা করার লোভ সামলাতে পারল না অনিমেষ, অবশ্য আপনি যার কাছে এসেছিলেন তাঁরই উচিত ছিল আপনাকে পৌঁছে দেওয়া।
উচিত? ছেলেরা যখন দেখে বদনামের নোংরা গায়ে লাগবে না তখন তারা আকাশ ছুঁতে পারে, একটু সেরকম অবস্থায় পড়লে গুটিয়ে কেন্নো হয়ে যায় । আমি ঋণ শোধ করতে এসেছিলাম, অনেক হয়েছে। কথাগুলো বলতে বলতে মেয়েটি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল, ঠিক সে সময় গোবিন্দ ছেলেটিকে নিয়ে ফিরে এল।
অনিমেষ এগিয়ে গিয়ে ছেলেটিকে বলল, শোন ভাই, তোমাকে একটা কাজ করতে হবে। উনি তো তোমাদের ক্লাসমেট, তুমি তাই ওঁকে একটু বাস-স্টপ পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে এস। রাত হয়েছে, ওঁর একা যাওয়া ঠিক নয়।
এরকম প্রস্তাবের জন্য প্রস্তুত ছিল না ছেলেটি, বলল, কিন্তু হোস্টেলের গেট বন্ধ হয়ে গেছে, এখন যাওয়া অসম্ভব।
অনিমেষ হাসল, আমি সুপারের পারমিশন নিয়ে নেব। স্পেশাল কেস হিসেবে যেতে পার। তোমরা একসঙ্গে পড়, তাই বলছি।
ছেলেটি খুব বিব্রত বোধ করছে দেখে অনিমেষের মজা লাগছিল। সে বলল, মেয়েদের সম্মান রাখা আমাদের কর্তব্য। যান, আপনি ওর সঙ্গে চলে যান।
ধন্যবাদ। মেয়েটা বলেই দ্রুত নামতে শুরু করল। একান্ত অনিচ্ছায় ছেলেটি ওর সঙ্গ নিল।
ওরা চলে গেলে গোবিন্দ চাপা গলায় বলল, নির্ঘাত যেতে যেতে ভাব হয়ে যাবে।
অনিমেষ বলল, তুমি একবার সুপারকে ওর কথা বলে এসো, ভাই। আমার শরীরটা ভাল লাগছে না, আমি ঘরে যাচ্ছি।
নিজের ঘরের দরজায় তালা নেই। তার মানে ত্রিদিব ফিরে এসেছে। এতক্ষণে অনিমেষের খেয়াল হল যে ওপরের ভিড়ে ত্রিদিবকে সে দেখেনি। সবাই গিয়েছে আর ও ঘরে বসে রইল। ঘরে ঢুকে আলোটা জ্বালতে যেতেই ত্রিদিবের জড়ানো গলা কানে এল, নো লাইট, প্লিজ।
অনিমেষ হেসে বলল, আজকেও খেয়েছ?
ত্রিদিব প্রথমে কিছু বলল না। অনিমেষ নিজের খাটে গিয়ে বসলে ঠান্ডা গলায় জিজ্ঞাসা করল, তোমার বিপ্লব হয়ে গেল?
বিপ্লব? অনিমেষ বিস্মিত।
কাজকর্মগুলো নাকি বাড়ি থেকেই শুরু করতে হয়। তুমি তোমার বিপ্লব হোস্টেল থেকেই আরম্ভ করলে। ব্রাভো ব্রাদার। যখন ফিরলাম তখন শুনছিলাম তুমি বক্তৃতা দিচ্ছ। এই প্রথম নেতা হয়ে গেলে, গুড সামনে খোলা ময়দান, এগিয়ে যাও, ফরোয়ার্ড মার্চ। সম্ভাবনার ঢেউ আছে তোমার মধ্যে, তোমার হবে। নাটুকে গলায় বলল ত্রিদিব।
কি যা–তা বকছ অনিমেষ বিরক্ত হল।
যা-তা নয়, বন্ধু। এ ঘটনা কাল অন্য ছেলেরা জানবে। অটোমেটিক্যালি তুমি হিরো হয়ে যাবে। নেক্সট স্টেপ য়ুনিভার্সিটির ইলেকসনে জেতা, তারপর ইউনিয়নের সেক্রেটারী, তারপর এম এল এ মন্ত্রী। স্বর্গের সিঁড়ি–উঠে যাও।
তুমি মাতাল হয়ে গেছ। অনিমেষ সহজ করার চেষ্টা করল । একটা মেয়েকে নিয়ে তুমি যা করলে তার চেয়ে মাতাল হওয়া ঢের ভাল।