ধীরে ধীরে নীচে নেমে এল অনিমেষ। দারোয়ানের সাহায্য লাগল না। কিন্তু নীচে নামার পর থাই টনটন করেত লাগল। অনিমেষ আশঙ্কা করছিল এই বুঝি আবার যন্ত্রণাটা শরু হল । সিঁড়ির মুখে একটু সময় নিল সে। ওপর থেকে নীচে নামার চেয়ে নীচে থেকে ওপরে ওঠায় কষ্ট বেশী হবে। এই হোস্টেলের খুব কড়া নিয়ম কোন মেয়েকে কারো ঘরে গিয়ে দেখা করতে দেওয়া হবে না। এমন কি, তিনি যদি কোন আবাসিকের মা হন তবুও নয়। নিয়মটা হয়তো ভালো কিন্তু বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম হওয়া উচিত–এই মুহূর্তে অনিমেষ অনুভব করল, পরক্ষণেই থম্বোটার বন্ধুর কথা মনে পড়ায় হেসে ফেলল সে। তারপর আস্তে আস্তে দরজার দিকে এগিয়ে গেল । আধভেজানো গেটের সামনে কেউ নেই। মেঘের ছায়ামাখা রোদ সেখানে নেতিয়ে আছে। এই ভরদুপুরে কলকাতা ভীষণ নির্জন হয়ে যায়, কেমন ভার হয়ে থাকে চারধার। অনিমেষ দারোয়ানের দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকাতেই সে গেস্টরুমটা দেখিয়ে দিল। কয়েক পা এগিয়ে ডান দিকে ঘুরতেই গেস্টরুমের খোলা দরজা দিয়ে যাকে অনিমেষ দেখতে পেল ক্ষীণতম কল্পনাতেও তাকে আশা করেনি সে। হতভম্ব হয়ে যাওয়ার ভাবটা লুকোতে পারল না অনিমেষ। তারপর সন্তর্পণে পা ফেলে গেস্টরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে সে জিজ্ঞাসা করল, আপনি?
উঠে দাঁড়ালেন মহিলা, দেখতে এলাম, পা কেমন আছে?
অনিমেষের সব গোলমাল হয়ে গেল। শীলা সেনের দিকে সে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। গতকাল সন্ধ্যায় ট্যাক্সিতে সামান্য আলাপ আর সেইটুকুনিতেই তিনি ছুটে এসেছেন তার শরীরের খবর নিতে। কলকাতার মানুষ মাত্রই যে স্বার্থপর নয় এটা বোধ হয় তার একটা নজির। ওঁর মতন সুন্দরী মহিলা, যিনি নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে অত্যন্ত ওয়াকিবহাল, এতটা করবেন ভাবা যায় না । স্লিভলেস জামার বাইরে মাখনের মত দুটো স্বপ্নের ডানার দিকে তাকাল অনিমেষ। ভেতরে ভেতরে যখন আলোড়ন ওঠে তখন মুখে কথাগুলো মিলিয়ে যায়। চেষ্টা করলেও সে সময় শব্দ আসে না। আবেগটা কমাতে লাগল তার।
মহিলা একটু বিস্মিত হলেন, আমি কি এসে অন্যায় করলাম কিছু?
দ্রুত ঘাড় নাড়ল অনিমেষ, না, না, এ কথা ভাবছেন কেন? আপনি বসুন। গেস্টরুমটা মোটেই সাজানো নয়। কিছু চেয়ার–টেবল এদিক–ওদিকে ছড়ানো। অনিমেষ চৌকো টেবিলের গা ঘেঁষে থাকা চেয়ারটা দিয়ে নিজে আর একটায় বসল। বসে বলল, আপনি সত্যি আমাকে অবাক করে দিয়েছেন।
শীলা সেনের দুই ভ্রুর মাঝখানে চট করে কয়েকটা আঁচড় জাগল, কেন? আমি এলাম তাই? আশ্চর্য! কালকে যাকে অমন অসুস্থ দেখে গেলাম তার খোঁজ নেব না?
অনিমেষ আপ্লুত গলায় বলল, সচরাচর তো দেখা যায় না এমন!
শীলা সেন তাঁর টান-টান খোলা চুলের রাশটাতে সামান্য ঢেউ তুলে বললেন, আমি অন্যরকম। তা আমার প্রশ্নটার উত্তর পেলাম না কিন্তু?
এখন ভাল আছি। এই তো ওপর থেকে হেঁটে নীচে এলাম। অনিমেষ জানাল। নিজের শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করতে সঙ্কোচ হচ্ছিল ওর।
কিন্তু কালকে কি হয়েছিল, একা হাঁটতে পারা যাচ্ছিল না দেখলাম। শীলা সেনের মুখের প্রতিটি রেখায় আন্তরিকতার ছাপ।
শিরায় টান পড়েছিল, প্রথমে বুঝতে পারিনি। এমন কিছু নয়।
সামান্যও নয়, নইলে আজ কলেজ যাওয়া হতো। শীলা সেন ভ্রূভঙ্গীতে সন্দেহটা জানিয়ে দিলেন, যাক বাবা, নিশ্চিন্ত হলাম। কালকে বাড়িতে ফেরার পর বারবার করে মনে হচ্ছিল বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকা হয় জেনেও আমি কিছু করলাম না। কারো কষ্ট হলে এত খারাপ লাগে, মনটা কেমন হয়ে যায়।
উঠে দাঁড়ালেন মহিলা, দেখতে এলাম, পা কেমন আছে?
অনিমেষের সব গোলমাল হয়ে গেল। শীলা সেনের দিকে সে একদৃষ্টে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল। গতকাল সন্ধ্যায় ট্যাক্সিতে সামান্য আলাপ আর সেইটুকুনিতেই তিনি ছুটে এসেছেন তার শরীরের খবর নিতে। কলকাতার মানুষ মাত্রই যে স্বার্থপর নয় এটা বোধ হয় তার একটা নজির। ওঁর মতন সুন্দরী মহিলা, যিনি নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে অত্যন্ত ওয়াকিবহাল, এতটা করবেন ভাবা যায় না । স্লিভলেস জামার বাইরে মাখনের মত দুটো স্বপ্নের ডানার দিকে তাকাল অনিমেষ। ভেতরে ভেতরে যখন আলোড়ন ওঠে তখন মুখে কথাগুলো মিলিয়ে যায়। চেষ্টা করলেও সে সময় শব্দ আসে না। আবেগটা কমাতে লাগল তার।
মহিলা একটু বিস্মিত হলেন, আমি কি এসে অন্যায় করলাম কিছু?
দ্রুত ঘাড় নাড়ল অনিমেষ, না, না, এ কথা ভাবছেন কেন? আপনি বসুন। গেস্টরুমটা মোটেই সাজানো নয়। কিছু চেয়ার–টেবল এদিক–ওদিকে ছড়ানো। অনিমেষ চৌকো টেবিলের গা ঘেঁষে থাকা চেয়ারটা দিয়ে নিজে আর একটায় বসল। বসে বলল, আপনি সত্যি আমাকে অবাক করে দিয়েছেন।
শীলা সেনের দুই ভ্রুর মাঝখানে চট করে কয়েকটা আঁচড় জাগল, কেন? আমি এলাম তাই? আশ্চর্য! কালকে যাকে অমন অসুস্থ দেখে গেলাম তার খোঁজ নেব না?
অনিমেষ আপ্লুত গলায় বলল, সচরাচর তো দেখা যায় না এমন!
শীলা সেন তাঁর টান-টান খোলা চুলের রাশটাতে সামান্য ঢেউ তুলে বললেন, আমি অন্যরকম। তা আমার প্রশ্নটার উত্তর পেলাম না কিন্তু?
এখন ভাল আছি। এই তো ওপর থেকে হেঁটে নীচে এলাম। অনিমেষ জানাল। নিজের শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করতে সঙ্কোচ হচ্ছিল ওর।
কিন্তু কালকে কি হয়েছিল, একা হাঁটতে পারা যাচ্ছিল না দেখলাম। শীলা সেনের মুখের প্রতিটি রেখায় আন্তরিকতার ছাপ।
শিরায় টান পড়েছিল, প্রথমে বুঝতে পারিনি। এমন কিছু নয়।
সামান্যও নয়, নইলে আজ কলেজ যাওয়া হতো। শীলা সেন ভ্রূভঙ্গীতে সন্দেহটা জানিয়ে দিলেন, যাক বাবা, নিশ্চিন্ত হলাম। কালকে বাড়িতে ফেরার পর বারবার করে মনে হচ্ছিল বিদেশ বিভূঁইয়ে থাকা হয় জেনেও আমি কিছু করলাম না। কারো কষ্ট হলে এত খারাপ লাগে, মনটা কেমন হয়ে যায়।