ব্যথার পা মাটি থেকে সামান্য ওপরে রেখে থম্বোটার বন্ধুর কাঁধে ভর রেখে অনিমেষ অন্য পায়ে লাফাতে লাফাতে ট্যাক্সির দিকে এগোল। অনিমেষ লক্ষ্য করল এতে আর ব্যথাটা লাগছে না। শুধু থাই-এর কাছটায় সিরসির করছে। হঠাৎ ওর খেয়াল হল এই ছেলেটির সঙ্গে গতকাল রাত্রে থম্বোটোর ঘরে তার প্রায় মারামারি হবার উপক্রম হয়েছিল। ভারতীয়দের সম্পর্কে একটা হীন মন্তব্য এর মুখ থেকে বেরিয়েছিল। সেই মুহূর্তে এই ছেলেটিকে ওর খুব বাজে টাইপের মনে হয়েছিল। কিন্তু এইরকম পরিস্থিতিতে ও যেভাবে ট্যাক্সি থেকে নেমে এসে অযাচিত ভাবে তাকে সাহায্য করছে গত কালের ঘটনার পর তা কি আশা করা যায়? মানুষের চরিত্র চট করে বোঝা মুশকিল এই সত্য আর একবার প্রমাণিত হল। হাঁটতে হাঁটতে অনিমেষ টের পেল, থম্বোটার বন্ধুর শরীর থেকে অদ্ভূত নেশাধরানো একটা অচেনা গন্ধ বের হচ্ছে। এরকম সচরাচর কোন চেনা মানুষের শরীরে অনিমেষ পায়নি। ট্যাক্সিতে উঠে কোনরকমে বসতে না বসতেই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। আচমকা গুলীবর্ষণ শুরু হলে যেমন বিশৃঙ্খল অবস্থা শুরু হয়ে যায় তেমনি বাসস্টপে দাঁড়ানো মানুষেরা এলোমেলো দৌড়ে একটা ছাউনি খুঁজতে লাগল । থম্বোটোর বন্ধু দরজা বন্ধ করে সামনের সিটে গিয়ে বসতেই অনিমেষ ট্যাক্সির অন্য যাত্রীর দিকে তাকাল। পেছনের সিটের ওপাশের জানলা ঘেঁষে ভদ্রমহিল্লা বসে আছেন। এরকম আধুনিক বেশবাসের মহিলাদের উত্তর কলকাতায় দেখা যায় না। অনেক সময় ব্যয় করলে এই রকম প্রসাধন করা যায়। মাথার চুল কোমরের সামান্য নীচে, ফুলে ফেঁপে মেঘের মত হয়ে রয়েছে । হাতকাটা জামা শঙখরঙা বাহুকে এমন সুঠাম সৌন্দর্য দিয়েছে যে চোখ সরানো দায় হয়ে ওঠে। চোখ চোখি হতেই ওর রক্তাক্ত ঠোঁট দুটো সামান্য ফাঁক হয়ে চিকচিকে দাঁতের প্রান্ত দেখা গেল। অনিমেষ অনুমান করল মহিলা হাসছেন।
থম্বোটোর বন্ধু ড্রাইভারের পাশে বসে এদিকে শরীরটাকে ঘোরাল, এনি, অ্যাক্সিডেন্ট? সব কথা সব জায়গায় বলতে ইচ্ছে করে না, অনিমেষ ঘাড় নাড়ল, হ্যাঁ। নো ব্লিডিং? আবার প্রশ্ন করে থম্বোটার বন্ধু উত্তর শুনে নিশ্চিন্ত হল। বৃষ্টির মধ্যে ট্যাক্সিটা কিছু দূর যেতেই দাঁড়িয়ে গেল। সামনে জ্যাম। ঠাসাঠাসি হয়ে রয়েছে গাড়িগুলো। বৃষ্টির ছাঁট থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনিমেষ ওর দিকে জানলার কাঁচ তুলে দিতে দিতে খেয়াল করল থম্বোটোর বন্ধুর নামটাই তার জানা হয়নি অথচ এর ট্যাক্সিতে সে সিফট নিচ্ছে।
থম্বোটোর বন্ধু বিরক্ত গলায় বলল, ভেরি ব্যাড ট্রাফিক সিস্টেম, ভেরি ব্যাড। এই মুহূর্তে অনিমেষেরও সেটাই মনে হচ্ছে। যেরকম বৃষ্টি চলছে তাতে আর কিছুক্ষণ বাদেই ঠনঠনে কালীবাড়ির সামনে এক কোমর জল দাঁড়িয়ে যাবে। তখন হবে আর এক মুশকিল। ট্যাক্সিওয়ালা বেশ বৃদ্ধ, বোধ হয় উত্তর প্রদেশের লোক, তেমন জল জমে গেলে যদি যেতে রাজী না হয় তা হলেই সোনায় সোহাগা। এই সময় বেশ শব্দ করে কোথায় বাজ পড়তেই মহিলা আঁতকে উঠলেন, ও গড, আমার ভয় করছে। মুখ ফিরিয়ে অনিমেষ দেখল ভদ্রমহিলা সত্যিই ভয় পেয়েছেন। দুটো হাতে কান চাপা দিয়েছে, চোখ আধবোজা। খুব সুন্দরী মেয়েদের ভয় পাওয়া চেহারাটা আদৌ সুন্দর হয় না এটা জানা ছিল না।
থাম্বোটোর বন্ধু ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করল, হাউ ইজ ইওর পেইন?
না, এখন আর ব্যথাটা লাগছে না। হেলান দিয়ে বসতে পেরে শরীরে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনিমেষ ঘাড় নেড়ে হাসতেই ছেলেটা বলল, দেন, মিট মাই ফ্রেন্ড, শিলা সেন। ভেরি হোমলি, রিয়েল সুইট।
এইভাবে কারো সঙ্গে কখনো পরিচিত হয়নি অনিমেষ, মহিলার দিকে তাকিয়ে সে দুটো হাত জোড় করল, আমার নাম অনিমেষ।
সামান্য মাথা দুলিয়ে মহিলা অভিবাদন গ্রহণ করলেন। তারপর কপালে দুটো রেখা ফুটিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি অসুস্থ?
অনিমেষ না বলতে গিয়েও পারল না, পায়ে একটু আঘাত লেগেছে।
পায়ে? কোথায়? মহিলা এতক্ষণে যেন সিরিয়াস হলেন।
অনিমেষ প্যান্টের ওপর দিয়ে জায়গাটা দেখাল।
ওখানে, ওখানে আঘাত লাগল কি করে? ওখানে তো কোন জয়েন্ট নেই।
লাগল, লেগে গেল। অনিমেষ হাসল।
হঠাৎ থম্বোটোর বন্ধু বলে উঠল, আই কান্ট ফলো ইউ। ইংলিশ প্লিজ।
সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভূত মেকী গলায় মহিলা বলে উঠলো, ইস, সব যেন ওকে বুঝতে হবে! আমরা ভাই বাংলায় কথা বলব, না? কেলে ভুতটা ইংরেজিও ভাল জানে না!
থম্বোটোর বন্ধু ড্রাইভারের পাশে বসে এদিকে শরীরটাকে ঘোরাল, এনি, অ্যাক্সিডেন্ট? সব কথা সব জায়গায় বলতে ইচ্ছে করে না, অনিমেষ ঘাড় নাড়ল, হ্যাঁ। নো ব্লিডিং? আবার প্রশ্ন করে থম্বোটার বন্ধু উত্তর শুনে নিশ্চিন্ত হল। বৃষ্টির মধ্যে ট্যাক্সিটা কিছু দূর যেতেই দাঁড়িয়ে গেল। সামনে জ্যাম। ঠাসাঠাসি হয়ে রয়েছে গাড়িগুলো। বৃষ্টির ছাঁট থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনিমেষ ওর দিকে জানলার কাঁচ তুলে দিতে দিতে খেয়াল করল থম্বোটোর বন্ধুর নামটাই তার জানা হয়নি অথচ এর ট্যাক্সিতে সে সিফট নিচ্ছে।
থম্বোটোর বন্ধু বিরক্ত গলায় বলল, ভেরি ব্যাড ট্রাফিক সিস্টেম, ভেরি ব্যাড। এই মুহূর্তে অনিমেষেরও সেটাই মনে হচ্ছে। যেরকম বৃষ্টি চলছে তাতে আর কিছুক্ষণ বাদেই ঠনঠনে কালীবাড়ির সামনে এক কোমর জল দাঁড়িয়ে যাবে। তখন হবে আর এক মুশকিল। ট্যাক্সিওয়ালা বেশ বৃদ্ধ, বোধ হয় উত্তর প্রদেশের লোক, তেমন জল জমে গেলে যদি যেতে রাজী না হয় তা হলেই সোনায় সোহাগা। এই সময় বেশ শব্দ করে কোথায় বাজ পড়তেই মহিলা আঁতকে উঠলেন, ও গড, আমার ভয় করছে। মুখ ফিরিয়ে অনিমেষ দেখল ভদ্রমহিলা সত্যিই ভয় পেয়েছেন। দুটো হাতে কান চাপা দিয়েছে, চোখ আধবোজা। খুব সুন্দরী মেয়েদের ভয় পাওয়া চেহারাটা আদৌ সুন্দর হয় না এটা জানা ছিল না।
থাম্বোটোর বন্ধু ঘাড় ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করল, হাউ ইজ ইওর পেইন?
না, এখন আর ব্যথাটা লাগছে না। হেলান দিয়ে বসতে পেরে শরীরে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনিমেষ ঘাড় নেড়ে হাসতেই ছেলেটা বলল, দেন, মিট মাই ফ্রেন্ড, শিলা সেন। ভেরি হোমলি, রিয়েল সুইট।
এইভাবে কারো সঙ্গে কখনো পরিচিত হয়নি অনিমেষ, মহিলার দিকে তাকিয়ে সে দুটো হাত জোড় করল, আমার নাম অনিমেষ।
সামান্য মাথা দুলিয়ে মহিলা অভিবাদন গ্রহণ করলেন। তারপর কপালে দুটো রেখা ফুটিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি অসুস্থ?
অনিমেষ না বলতে গিয়েও পারল না, পায়ে একটু আঘাত লেগেছে।
পায়ে? কোথায়? মহিলা এতক্ষণে যেন সিরিয়াস হলেন।
অনিমেষ প্যান্টের ওপর দিয়ে জায়গাটা দেখাল।
ওখানে, ওখানে আঘাত লাগল কি করে? ওখানে তো কোন জয়েন্ট নেই।
লাগল, লেগে গেল। অনিমেষ হাসল।
হঠাৎ থম্বোটোর বন্ধু বলে উঠল, আই কান্ট ফলো ইউ। ইংলিশ প্লিজ।
সঙ্গে সঙ্গে অদ্ভূত মেকী গলায় মহিলা বলে উঠলো, ইস, সব যেন ওকে বুঝতে হবে! আমরা ভাই বাংলায় কথা বলব, না? কেলে ভুতটা ইংরেজিও ভাল জানে না!