এই সময় আরো কয়েকজন ছেলে ক্যান্টিনে ঢুকল। ওদের দেখে বিমান একটু গম্ভীর হয়ে গেল। সুবাসদাও একটু উসখুস করছিলেন। দলটা থেকে একজন এগিয়ে এল, বিমান, তোমার সঙ্গে কথা আছে।
কি ব্যাপার! বিমান ওদের দিকে তাকাল।
আমাদের ছেলেদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অনিমেষ দেখল যে ছেলেটি কথা বলছে তার মধ্যে কোন জড়তা নেই খদ্দরের পাঞ্জাবি আর ধুতি পরনে।
কে বাধা দিচ্ছে, আমরা?
অমাদের কাছে তাই খবর।
কি রকম?
নবাগত ছাত্রদের অভ্যর্থনা জানিয়ে যে সব পোস্টার দেওয়া হয়েছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ছাত্র পরিষদের একটাও পোস্টার চোখে পড়ছে না।
তুমি কি বলতে চাইছ ওগুরো আমরা ছিঁড়েছি। কেন ছিঁড়ব? ওই সব পোষ্টার পড়লে কি নতুন ছেলেমেয়েরা সব আমাদের বিরোধী হয়ে যাবে? দ্যাখ্যো মুকুলেশ, আমি চাই না কারো সঙ্গে গায়ে পড়ে বিরোধ করতে। তোমাদের যদি সত্যি কোন নালিশ থাকে তা হলে ডি-সির কাছে যাও, আমার কাছে এসেছ কেন?
আমার কি করব সেটা আমাদের বিবেচ্য। যেহেতু তুমি জি এস, আর বাম ছাত্র ফেডারেশন এই কাজ করছে তাই তোমাকে জানিয়ে রাখা হল। যদি একই রকম আচরণ চলতে থাকে তা হলে পরবর্তীকালে আমরা অন্য রকম ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
কথা শেষ করে ছেলেটি চলে যাচ্ছিল, বিমান তাকে ডাকল। মুকুলেশ পেছন ফিরে তাকাতে বিমান বলল, তুমি আমাকে জান, এই রকম ভয় দেখিয়ে কোন কাজ হবে না। তোমাদের পোষ্টার কারা ছিঁড়ছে আমি জানি না, তবে ওইসব পোষ্টার লেখার আগে তোমাদের চিন্তা করা উচিত ছিল। নতুন ছেলেমেয়েদের ওয়েলকাম করতে আমাদের গালা-গালি করতেই হবে–এটা কি ধরনের ভদ্রতা? কই আমাদের পোস্টরে তো তোমাদের সম্পর্কে কোন কথা বলিনি। রাজনীতির প্রথম কথাই কি অভদ্রতা?
মুকলেশ হেসে উঠল, রাজনীতির পাট তোমার কাছ থেকে নেবার আগে আমার আত্মহত্যা করা উচিত। নতুন যে সব মুরগী ঢুকছে তাদের ব্রেন-ওয়াশ করতে পারো, আমাকে জ্ঞান দিতে এসো না। তোমরা কতটা ভদ্র তার বিরাট লিস্ট আমার কাছে আছে। যথাসময়ে ছেলেমেয়েদের কাছে সেটা রাখব।
বিমান একটু গলা চড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি আমাকে চোখ রাঙাতে এসেছ?
মুকুলেশ দরজায় দাঁড়িয়ে বলল, তুমি জেনারেল সেক্রেটারী, তোমাকে চোখ রাঙানোর সাধ্য কি! কিন্তু মনে রেখ, এই দেশটা ভারতবর্ষ, চীনের দালানদের আমরা ক্ষমা করব না। যেমন এসেছিল তেমনি চলে গেল ওরা।
অনিমেষ দেখল সমস্ত ক্যান্টিনঘর এখন চুপচাপ। যারা ওপাশে ভাত খাচ্ছিল তারা তো বটেই, এমন কি ক্যান্টিনের বয়গুলো পর্যন্ত কাজ ভুলে বিমানের দিকে তাকিয়ে আছে। একটা নৈঃশব্দ কিছুক্ষণ সুতোর মুখে ঝুলতে থাকল। এতক্ষণ সুবাস সেন চুপচাপ শুনছিল, এবার নিচু গলায় জিজ্ঞাসা করল, ব্যাপারটা কি?
সে নিজে হলে কি হতো কে জানে, কিন্তু অনিমেষ অবাক হয়ে দেখল বিমান খুব সহজেই স্বাভাবিক হয়ে গেল। মাথা নেড়ে হেসে বলল, সেই পুরনো চাল, পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করা। দিনরাত গালাগাল দেবে কিন্তু প্রতিবাদ করলেই ছাত্র ফেডারেশনের আক্রমণ বলে পোষ্টার পড়বে।
সুবাস জিজ্ঞাসা করল, পোস্টার ছেঁড়ার ব্যাপারটা কি?
বিমান কাঁধ ঝাঁকালো, আরো যাচ্ছে তাই কথা লিখছে! নবীন ছাত্ররা চীনের দালালদের চিনে রাখুন। একজন দেশদ্রোহী আপনার পাশেই আছেন, যার গেঞ্জি চীন থেকে আসছে। এইসব পোষ্টার দেখেতে দেখতে কোন ছেলে যদি মাথা গরম করে ফেলে এক-আধটা ছিঁড়ে ফেলে তা হলে আমি কি করতে পারি! ওদের চরিত্র সেই টিপিক্যাল গ্রাম্য ঝগড়াটে বুড়ীর মত হয়ে গেছে।
বিমল বলল, দক্ষিণীরা?
বিমান হেসে ফেলল, ভাল বলেছ। তাদের মতিগতি বোঝা যাচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওদের সংখ্যা সামান্য, শুনছি ছাত্র পরিষদের সঙ্গে একটা আঁতাত হচ্ছে ওদের। এক সময় সবার চরিত্র প্রকাশ পাবেই।
কি ব্যাপার! বিমান ওদের দিকে তাকাল।
আমাদের ছেলেদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অনিমেষ দেখল যে ছেলেটি কথা বলছে তার মধ্যে কোন জড়তা নেই খদ্দরের পাঞ্জাবি আর ধুতি পরনে।
কে বাধা দিচ্ছে, আমরা?
অমাদের কাছে তাই খবর।
কি রকম?
নবাগত ছাত্রদের অভ্যর্থনা জানিয়ে যে সব পোস্টার দেওয়া হয়েছিল সেগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ছাত্র পরিষদের একটাও পোস্টার চোখে পড়ছে না।
তুমি কি বলতে চাইছ ওগুরো আমরা ছিঁড়েছি। কেন ছিঁড়ব? ওই সব পোষ্টার পড়লে কি নতুন ছেলেমেয়েরা সব আমাদের বিরোধী হয়ে যাবে? দ্যাখ্যো মুকুলেশ, আমি চাই না কারো সঙ্গে গায়ে পড়ে বিরোধ করতে। তোমাদের যদি সত্যি কোন নালিশ থাকে তা হলে ডি-সির কাছে যাও, আমার কাছে এসেছ কেন?
আমার কি করব সেটা আমাদের বিবেচ্য। যেহেতু তুমি জি এস, আর বাম ছাত্র ফেডারেশন এই কাজ করছে তাই তোমাকে জানিয়ে রাখা হল। যদি একই রকম আচরণ চলতে থাকে তা হলে পরবর্তীকালে আমরা অন্য রকম ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।
কথা শেষ করে ছেলেটি চলে যাচ্ছিল, বিমান তাকে ডাকল। মুকুলেশ পেছন ফিরে তাকাতে বিমান বলল, তুমি আমাকে জান, এই রকম ভয় দেখিয়ে কোন কাজ হবে না। তোমাদের পোষ্টার কারা ছিঁড়ছে আমি জানি না, তবে ওইসব পোষ্টার লেখার আগে তোমাদের চিন্তা করা উচিত ছিল। নতুন ছেলেমেয়েদের ওয়েলকাম করতে আমাদের গালা-গালি করতেই হবে–এটা কি ধরনের ভদ্রতা? কই আমাদের পোস্টরে তো তোমাদের সম্পর্কে কোন কথা বলিনি। রাজনীতির প্রথম কথাই কি অভদ্রতা?
মুকলেশ হেসে উঠল, রাজনীতির পাট তোমার কাছ থেকে নেবার আগে আমার আত্মহত্যা করা উচিত। নতুন যে সব মুরগী ঢুকছে তাদের ব্রেন-ওয়াশ করতে পারো, আমাকে জ্ঞান দিতে এসো না। তোমরা কতটা ভদ্র তার বিরাট লিস্ট আমার কাছে আছে। যথাসময়ে ছেলেমেয়েদের কাছে সেটা রাখব।
বিমান একটু গলা চড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, তুমি কি আমাকে চোখ রাঙাতে এসেছ?
মুকুলেশ দরজায় দাঁড়িয়ে বলল, তুমি জেনারেল সেক্রেটারী, তোমাকে চোখ রাঙানোর সাধ্য কি! কিন্তু মনে রেখ, এই দেশটা ভারতবর্ষ, চীনের দালানদের আমরা ক্ষমা করব না। যেমন এসেছিল তেমনি চলে গেল ওরা।
অনিমেষ দেখল সমস্ত ক্যান্টিনঘর এখন চুপচাপ। যারা ওপাশে ভাত খাচ্ছিল তারা তো বটেই, এমন কি ক্যান্টিনের বয়গুলো পর্যন্ত কাজ ভুলে বিমানের দিকে তাকিয়ে আছে। একটা নৈঃশব্দ কিছুক্ষণ সুতোর মুখে ঝুলতে থাকল। এতক্ষণ সুবাস সেন চুপচাপ শুনছিল, এবার নিচু গলায় জিজ্ঞাসা করল, ব্যাপারটা কি?
সে নিজে হলে কি হতো কে জানে, কিন্তু অনিমেষ অবাক হয়ে দেখল বিমান খুব সহজেই স্বাভাবিক হয়ে গেল। মাথা নেড়ে হেসে বলল, সেই পুরনো চাল, পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করা। দিনরাত গালাগাল দেবে কিন্তু প্রতিবাদ করলেই ছাত্র ফেডারেশনের আক্রমণ বলে পোষ্টার পড়বে।
সুবাস জিজ্ঞাসা করল, পোস্টার ছেঁড়ার ব্যাপারটা কি?
বিমান কাঁধ ঝাঁকালো, আরো যাচ্ছে তাই কথা লিখছে! নবীন ছাত্ররা চীনের দালালদের চিনে রাখুন। একজন দেশদ্রোহী আপনার পাশেই আছেন, যার গেঞ্জি চীন থেকে আসছে। এইসব পোষ্টার দেখেতে দেখতে কোন ছেলে যদি মাথা গরম করে ফেলে এক-আধটা ছিঁড়ে ফেলে তা হলে আমি কি করতে পারি! ওদের চরিত্র সেই টিপিক্যাল গ্রাম্য ঝগড়াটে বুড়ীর মত হয়ে গেছে।
বিমল বলল, দক্ষিণীরা?
বিমান হেসে ফেলল, ভাল বলেছ। তাদের মতিগতি বোঝা যাচ্ছে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ওদের সংখ্যা সামান্য, শুনছি ছাত্র পরিষদের সঙ্গে একটা আঁতাত হচ্ছে ওদের। এক সময় সবার চরিত্র প্রকাশ পাবেই।