মিছিলটা ট্রাম লইন অবধি গিয়ে একটু থমকে দাঁড়াল। অবশ্য শ্লোগান চলছে সমানে। উত্তেজনায় সবাই অস্থির। অনিমেষ ডাইনে বাঁয়ে তাকিয়ে কোন পুলিশ দেখতে পেল না। সুদীপ মিছিলটাকে নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজ পর্যন্ত যেতেই কফি হাউসের গলি দিয়ে ভ্যানগুলো এগিয়ে এল। সামনে একটা জিপ, তাতে কয়েকজন অফিসার বসে আছে।
পুলিটা দেখে আরো জোরদার হল শ্লোগান। অনিমেষ লাইনের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে হাত তুলে শ্লোগান দিচ্ছিল, সাম্রাজ্যবাদীদের দালালদের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও, ভেঙে দাও। সরবে তার সমর্থন বাজছিল গলায় গলায়। মার্কিন–দালাল কংগ্রেস সরকার নিপাত যাক নিপাত যাক, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন ভাঙা যায় না, যাবে না, ভিয়েতাম লাল সেলাম লাল সেলাম, তোমার নাম আমার নাম ভিয়েনাম ভিয়েনাম।
চারপাশে ঝটপট দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফুটপাতে সেকেন্ড হ্যাণ্ড বইওয়ালারা ছুটোছুটি করে নিরাপদে রাখছে তাদের বইপত্তর। বৃষ্টি আসার আগে যেমন আচমকা দমকা হাওয়ায় চারদিক আলোড়িত হয় এখন সেই অবস্থা।
সুদীপ বলল, মেইন মিছিলটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে সেন্ট্রাল এভিন্যুতে চলে গেছে। আমরা আবার কলেজ স্কোয়ারের সামনে ফিরে যাই চল।
মিছিলের মুখ ফেরাতেই চোখে পড়ল কলুটোলা মির্জাপুর স্ট্রীটের মুখটার অজস্র পুলিশ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এখন অবস্থা হল এই যে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে হবে। কারণ দুদিকের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাম–বাস চলছে না, একটা ট্রাম হিন্দু স্কুলের সামনে আটক হয়ে রয়েছে। কয়েকজন নাছোড়বান্দা যাত্রী ছাড়া সেটা প্রায় ফাঁকাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে যেন সবাই আরো মুখর হয়ে উঠল। অনিমেষ শ্লোগান দিল, ছাত্র ঐক্য জিন্দাবাদ। গলায় গলায় সমর্থন ছড়াল জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।
ঠিক সেই সময় জিপটা কাছাকাছি এগিয়ে এল । জিপের সামনে একজন অফিসার পোর্টেবল মাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করল, এই এলাকায় একশ চুয়াল্লিশ ধারা জারি আছে। আপনাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে রাস্তা ছেড়ে চলে যান। একশ চুয়াল্লিশ ধারা বলবৎ থাকলে মিছিল করা আইনত অপরাধ।
পুলিশ তোমার হুকুম আমরা মানি না, মানব না।
জুলুমবাজ পুলিশকে চিনে নিন–এই মাটিতে কবর দিন।
ভিয়েৎনাম লাল সেলাম–লাল সেলাম।
উত্তেজনা এখন এমন একটা জায়গায় যেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব। সুদীপ চিৎকার করে বলল, কমরেড, কংগ্রেস সরকারের দালাল ওই পুলিশরা আমাদের ওপর জুলুমবাজি করতে চাইছে। কিন্তু আমরা প্রথমে এমন কিছু করব না যাতে ওরা সুযোগ পায়। মনে রাখবেন, রক্তে রাঙা ভিয়েনাম বাংলাদেশের আর এক নাম।
ঠিক সেই সময় দুম দুম করে আওয়াজ উঠল। পায়ের তলার রাস্তা কাঁপিয়ে দুটো বোমা ফাটল কুলুটোলার দিকে। অনিমেষ দেখল, একটা পুলিশ মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। দুতিনটে ছিটকে ওপাশে পড়ে গেল। মুহূর্তে ওদিকটা ফাঁকা হয়ে গেল, পুলিশগুলো পড়িমরি করে মীর্জাপুরে রাখা ভ্যানগুলোর দিকে ছুটে গেলে।
ব্যাপারটার জন্যে একদম প্রস্তুত ছিল না অনিমেষ। হঠাৎ কান্ডটা হওয়ায় মিছিলের সবাই হকচকিয়ে গেছে। সুদীপ সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে সজাগ করিয়ে গলা তুলল, ইনকিলাব জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।
সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্সী কলেজের দিকে পুলিশ বাহিনীর সামনে দুমদাম বোমা এসে পড়ল। ধোয়ায় চারদিক এখন ঢাকা। ওদিকের পুলিশ পিছু হঠেছে। সমস্ত এলাকা এখন জনশূন্য। প্রদীপ চিৎকার করে বলল, কমরেডস, আপনারা গেটের সামনে চলে আসুন। ওরা যদি আক্রমণ করে তাহলে ভেতরে ঢুকে যাবেন। অনুমতি ছাড়া কোন শিক্ষাকেন্দ্রে পুলিশ ঢুকতে পারে না।
পুলিটা দেখে আরো জোরদার হল শ্লোগান। অনিমেষ লাইনের বাইরে এসে দাঁড়িয়ে হাত তুলে শ্লোগান দিচ্ছিল, সাম্রাজ্যবাদীদের দালালদের কালো হাত গুঁড়িয়ে দাও, ভেঙে দাও। সরবে তার সমর্থন বাজছিল গলায় গলায়। মার্কিন–দালাল কংগ্রেস সরকার নিপাত যাক নিপাত যাক, পুলিশ দিয়ে আন্দোলন ভাঙা যায় না, যাবে না, ভিয়েতাম লাল সেলাম লাল সেলাম, তোমার নাম আমার নাম ভিয়েনাম ভিয়েনাম।
চারপাশে ঝটপট দোকানপাট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফুটপাতে সেকেন্ড হ্যাণ্ড বইওয়ালারা ছুটোছুটি করে নিরাপদে রাখছে তাদের বইপত্তর। বৃষ্টি আসার আগে যেমন আচমকা দমকা হাওয়ায় চারদিক আলোড়িত হয় এখন সেই অবস্থা।
সুদীপ বলল, মেইন মিছিলটা নিশ্চয়ই এতক্ষণে সেন্ট্রাল এভিন্যুতে চলে গেছে। আমরা আবার কলেজ স্কোয়ারের সামনে ফিরে যাই চল।
মিছিলের মুখ ফেরাতেই চোখে পড়ল কলুটোলা মির্জাপুর স্ট্রীটের মুখটার অজস্র পুলিশ লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। এখন অবস্থা হল এই যে ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে হবে। কারণ দুদিকের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাম–বাস চলছে না, একটা ট্রাম হিন্দু স্কুলের সামনে আটক হয়ে রয়েছে। কয়েকজন নাছোড়বান্দা যাত্রী ছাড়া সেটা প্রায় ফাঁকাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে যেন সবাই আরো মুখর হয়ে উঠল। অনিমেষ শ্লোগান দিল, ছাত্র ঐক্য জিন্দাবাদ। গলায় গলায় সমর্থন ছড়াল জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।
ঠিক সেই সময় জিপটা কাছাকাছি এগিয়ে এল । জিপের সামনে একজন অফিসার পোর্টেবল মাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করল, এই এলাকায় একশ চুয়াল্লিশ ধারা জারি আছে। আপনাদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে রাস্তা ছেড়ে চলে যান। একশ চুয়াল্লিশ ধারা বলবৎ থাকলে মিছিল করা আইনত অপরাধ।
পুলিশ তোমার হুকুম আমরা মানি না, মানব না।
জুলুমবাজ পুলিশকে চিনে নিন–এই মাটিতে কবর দিন।
ভিয়েৎনাম লাল সেলাম–লাল সেলাম।
উত্তেজনা এখন এমন একটা জায়গায় যেখান থেকে ফিরে আসা অসম্ভব। সুদীপ চিৎকার করে বলল, কমরেড, কংগ্রেস সরকারের দালাল ওই পুলিশরা আমাদের ওপর জুলুমবাজি করতে চাইছে। কিন্তু আমরা প্রথমে এমন কিছু করব না যাতে ওরা সুযোগ পায়। মনে রাখবেন, রক্তে রাঙা ভিয়েনাম বাংলাদেশের আর এক নাম।
ঠিক সেই সময় দুম দুম করে আওয়াজ উঠল। পায়ের তলার রাস্তা কাঁপিয়ে দুটো বোমা ফাটল কুলুটোলার দিকে। অনিমেষ দেখল, একটা পুলিশ মাটিতে পড়ে ছটফট করছে। দুতিনটে ছিটকে ওপাশে পড়ে গেল। মুহূর্তে ওদিকটা ফাঁকা হয়ে গেল, পুলিশগুলো পড়িমরি করে মীর্জাপুরে রাখা ভ্যানগুলোর দিকে ছুটে গেলে।
ব্যাপারটার জন্যে একদম প্রস্তুত ছিল না অনিমেষ। হঠাৎ কান্ডটা হওয়ায় মিছিলের সবাই হকচকিয়ে গেছে। সুদীপ সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে সজাগ করিয়ে গলা তুলল, ইনকিলাব জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।
সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্সী কলেজের দিকে পুলিশ বাহিনীর সামনে দুমদাম বোমা এসে পড়ল। ধোয়ায় চারদিক এখন ঢাকা। ওদিকের পুলিশ পিছু হঠেছে। সমস্ত এলাকা এখন জনশূন্য। প্রদীপ চিৎকার করে বলল, কমরেডস, আপনারা গেটের সামনে চলে আসুন। ওরা যদি আক্রমণ করে তাহলে ভেতরে ঢুকে যাবেন। অনুমতি ছাড়া কোন শিক্ষাকেন্দ্রে পুলিশ ঢুকতে পারে না।