কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করলেন মহিলা। তারপর বাঁ দিকের ড্রয়ার খুলে একটা ফর্ম বের করে অনিমেষের দিকে এগিয়ে দিলেন, আপনি সত্যি কথা স্পষ্ট বলতে পেরেছেন বলে আমার কোন আপত্তি থাকছে না। আই লাইক ইট। কিন্তু কোন রকম বাজে ঝামেলা আমি চাইব না, সেটুকু মনে রাখবেন।
একটা রূঢ় কথা বলতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে অনিমেষ ফর্মটা ভরতি করতে গেল। সঙ্গে কোন কলম নেই। ভদ্রমহিলা সেটা বুঝতে পেরে একটা কলম এগিয়ে দিলেন। নাম, বয়স, কি পড়ে অথবা অন্য কিছু করে কিনা, বাড়ির ঠিকানা, গার্জেনের নাম পর পর জানতে চাওয়া হয়েছে। সেগুলোর জবাব লিখতে লিখতে গার্জেনের নামের বেলায় অনিমেষ ইতস্তত করতে লাগল। ভদ্রমহিলা এতক্ষন লক্ষ্য রাখছিলেন। এবার হেসে বললেন, আপনার নাম ঠিকানা লিখুন।
ব্যাপারটা খুবই সামান্য কিন্তু নিজের নাম লিখতে গিয়ে অনিমেষ বুকের মধ্যে সিসিরানি অনুভব করল। এই প্রথম কাগজে-কলমে মাধবীলতার সঙ্গে তার নাম জড়িত হল। মাধবীলতা কোন অন্যায় করলে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ তাকে জানাবে। যেন অত্যন্ত গুরুদায়িত্ব নিল সে আজ থেকে এইরকম বোধ হচ্ছিল।
ফর্ম ভরতি করে অনিমেষ জিজ্ঞাসা করল, এখন কত দিতে হবে? এ
ক মাসের চার্জ, আর আনুষঙ্গিক কিছু।
পকেটে একশটা টাকা আছে। অনিমেষ ইতস্তত করল। এতে অবশ্যই কুলোবে না। সে বলল, এক কাজ করুন, এখনই রসিদ লিখবেন না। আমার কাছে একশ টাকা রয়েছে। ওটা আমি দিয়ে যাচ্ছি। আগামীকাল কিংবা পরশু বাকী টাকাটা দিয়ে দেব। ও সামনের মাসের পয়লা তারিখ থেকেই থাকবে। অসুবিধা হবে?
মহিলা বললেন, আপনার উচিত ছিল সঙ্গে টাকাটা আনা। যা হোক, এখন কিছু দিতে হবে না। দুদিনের মধ্যে টাকা দিয়ে যাবেন।
অনিমেষ উঠে দাঁড়াল, আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ।
ভদ্রমহিলা কোন কথা বললেন না। কিন্তু অনিমেষ দেখল উনি ঠোঁট টিপে হাসছেন।
বাইরে বেরিয়ে আসতেই একটা হইচই শব্দ উঠল। কেশব সেন স্ট্রীট থেকে একদল ছেলে ছুটে আসছে। এপাশের লোকজন পালাচ্ছে। তারপরই দুম দুম করে কয়েকটা বোমা ফাটল চৌমাথায়। চারধারে লোক আতঙ্কে আড়ালে যচ্ছে। অনিমেষ ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটা দেখল। একটা ছেলে, রোগা, ঢ্যাঙা, হাতে দুটো বোম নিয়ে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে, শাসাচ্ছে কাউকে। তার ভয়ে জায়গাটা এখন মধ্যরাতের মত নির্জন।
অনিমেষের ইচ্ছে হল ওকে জিজ্ঞাসা করে কেন সে এমন করছে! কিন্তু তখনই ছেলেটা আবার দৌড়ে কেশব সেন স্ট্রীটে গেলে। কয়েক পা হাঁটতে হাঁটতে অনিমেষের খেয়াল হল এই জায়গাটা ভাল নয়। কাগজে দেখেছে প্রায়ই গোলমাল লেগে থাকে এখানে। বোমাবাজি হয়। এই রকম জায়গায় মাধবীলতাকে থাকতে হবে। ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত হতে গিয়েই হেসে ফেলল সে। আজ নয় কাল সারা বাংলাদেশেই যদি এরকম যায়, তাহলে?
একটা রূঢ় কথা বলতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে অনিমেষ ফর্মটা ভরতি করতে গেল। সঙ্গে কোন কলম নেই। ভদ্রমহিলা সেটা বুঝতে পেরে একটা কলম এগিয়ে দিলেন। নাম, বয়স, কি পড়ে অথবা অন্য কিছু করে কিনা, বাড়ির ঠিকানা, গার্জেনের নাম পর পর জানতে চাওয়া হয়েছে। সেগুলোর জবাব লিখতে লিখতে গার্জেনের নামের বেলায় অনিমেষ ইতস্তত করতে লাগল। ভদ্রমহিলা এতক্ষন লক্ষ্য রাখছিলেন। এবার হেসে বললেন, আপনার নাম ঠিকানা লিখুন।
ব্যাপারটা খুবই সামান্য কিন্তু নিজের নাম লিখতে গিয়ে অনিমেষ বুকের মধ্যে সিসিরানি অনুভব করল। এই প্রথম কাগজে-কলমে মাধবীলতার সঙ্গে তার নাম জড়িত হল। মাধবীলতা কোন অন্যায় করলে হোস্টেল কর্তৃপক্ষ তাকে জানাবে। যেন অত্যন্ত গুরুদায়িত্ব নিল সে আজ থেকে এইরকম বোধ হচ্ছিল।
ফর্ম ভরতি করে অনিমেষ জিজ্ঞাসা করল, এখন কত দিতে হবে? এ
ক মাসের চার্জ, আর আনুষঙ্গিক কিছু।
পকেটে একশটা টাকা আছে। অনিমেষ ইতস্তত করল। এতে অবশ্যই কুলোবে না। সে বলল, এক কাজ করুন, এখনই রসিদ লিখবেন না। আমার কাছে একশ টাকা রয়েছে। ওটা আমি দিয়ে যাচ্ছি। আগামীকাল কিংবা পরশু বাকী টাকাটা দিয়ে দেব। ও সামনের মাসের পয়লা তারিখ থেকেই থাকবে। অসুবিধা হবে?
মহিলা বললেন, আপনার উচিত ছিল সঙ্গে টাকাটা আনা। যা হোক, এখন কিছু দিতে হবে না। দুদিনের মধ্যে টাকা দিয়ে যাবেন।
অনিমেষ উঠে দাঁড়াল, আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ।
ভদ্রমহিলা কোন কথা বললেন না। কিন্তু অনিমেষ দেখল উনি ঠোঁট টিপে হাসছেন।
বাইরে বেরিয়ে আসতেই একটা হইচই শব্দ উঠল। কেশব সেন স্ট্রীট থেকে একদল ছেলে ছুটে আসছে। এপাশের লোকজন পালাচ্ছে। তারপরই দুম দুম করে কয়েকটা বোমা ফাটল চৌমাথায়। চারধারে লোক আতঙ্কে আড়ালে যচ্ছে। অনিমেষ ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ব্যাপারটা দেখল। একটা ছেলে, রোগা, ঢ্যাঙা, হাতে দুটো বোম নিয়ে মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে, শাসাচ্ছে কাউকে। তার ভয়ে জায়গাটা এখন মধ্যরাতের মত নির্জন।
অনিমেষের ইচ্ছে হল ওকে জিজ্ঞাসা করে কেন সে এমন করছে! কিন্তু তখনই ছেলেটা আবার দৌড়ে কেশব সেন স্ট্রীটে গেলে। কয়েক পা হাঁটতে হাঁটতে অনিমেষের খেয়াল হল এই জায়গাটা ভাল নয়। কাগজে দেখেছে প্রায়ই গোলমাল লেগে থাকে এখানে। বোমাবাজি হয়। এই রকম জায়গায় মাধবীলতাকে থাকতে হবে। ব্যাপারটা নিয়ে চিন্তিত হতে গিয়েই হেসে ফেলল সে। আজ নয় কাল সারা বাংলাদেশেই যদি এরকম যায়, তাহলে?