মাধবীলতা বলল, কত বড় হৃদয় থাকলে তবেই এভাবে তোমাকে আপন করে নেওয়া যায় সেটা তুমি বুঝবে না। তোমার ছোট মার নিজস্ব দুঃখ কিংবা কষ্টের কথা তোমরা কোনদিন জানতে পারোনি, পেরেছ?
কি দুঃখ নিজের সন্তান নেই বলে বলছ?
সে তো আছেই । কিন্তু সে কষ্ট ভুলে থাকা যায় যদি স্বামীর ভালবাসা কেউ বুক ভরে পায়। তোমার ছোট মা সেটা পাননি। তোমার বাবা কখনোই তাকে ভালবাসেননি। মাধবীলতার গলায় আত্মপ্রত্যয়।
কি বলছ। ওঁরা এতদিন একসঙ্গে আছেন।
অনিমেষকে থামিয়ে দিল মাধবীলতা, একসঙেগ অনেকদিন থাকলেই বুঝি ভালবাসা যায়। এই শহরে তো একসঙ্গে এতগুলো মানুষ চিরকাল আছে তবু মানুষে মানুষে ভালবাসাবাসি হল না কেন?
কি আশ্চর্য, এ দুটো ব্যাপার এক হল? দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকলে পরস্পরকে গভীর ভাবে জানতে পারে, নিজেদের ত্রুটিগুলো সংশোধন করে নিতে পারে, পরস্পরের জন্যে তখন টান জন্মায় আর হাজার হাজার মানুষ যতই একসঙ্গে থাকুক এই নৈকট্য কখনোই গড়ে ওঠে না, দুটোকে এক করছ কেন?
বেশ, ওই ভাবে থাকতে থাকতে তুমি যেটাকে টান বললে সেটা এলেই তাহলে ভালবাসা পাওয়া গেল কি বল? মাধবীলতার মুখে দুষ্টুমি।
আমি কি ভুল বলছি। অনিমেষ একটু বিব্ৰত হল ।
নিশ্চয়ই। দুটো মানুষ সারা জীবন শুধু প্রয়োজনের জন্যে পরস্পরের ওপর নির্ভর করে কাটিয়ে দিতে পারে। দুজনে কেউ কাউকে একটুও ভালবাসল না হয়তো। শুধু প্রয়োজনই কাছাকাছি ওদের ধরে রাখল। আবার দুজন দুই বিপরীত মেরুতে বাস করেও পরস্পরকে ভালবাসতে পারে সারাজীবন। বুঝলে মশাই। কথাটা শেষ করে টেবিলে রাখা অনিমেষের হাতে আলতো করে চিমটি কাটলো মাধবীলতা।
বুঝলাম। অনিমেষ গম্ভীর হবার চেষ্টা করল, এবার বল ভালবাসা কি জিনিস? মানুষ মানুষকে কেন ভালবাসে?
কথাটা শোনামাত্র চোখ বড় হয়ে গেল মাধবীলতার। তারপরেই প্রচণ্ড শব্দে সে হেসে উঠল। সমস্ত শরীর কাঁপছে তার হাসির দমকে, দুহাতের চেটোয় নিজের মুখ ঢেকেও সামলাতে পারছে না। এ রকম দৃশ্য এবং শব্দ আশেপাশের অনেক টেবিলকে সচকিত করেছিল, তারা বেশ মজা দেখার মুখ করে এদিকে তাকিয়ে আছে এখন। অনিমেষ চাপা গলায় বলল, এই কি হচ্ছে। এভাবে হাসিতে ফেটে পড়ার কি কারণ সে বুঝতে পারছিল না।
কোন রকম নিজেকে সামলে মাধবীলতা বলল, অনেকদিন এত প্রাণ খুলে হাসিনি, তোমার জন্য সেটা পারলাম। বলেই আবার হাসতে লাগল, অবশ্য নিঃশব্দে।
তোমাকে কোন কথা সরল মনে জিজ্ঞাসা করা যায় না। অনিমেষ গম্ভীর হল ।
আমি তোমাকে এখন ভালবাসা শেখাবো?
শেখাতে কে বলেছে, আমি জাস্ট আলোচনা করছিলাম।
বেশ, তাহলে সরাসরি কথা হোক। তুমি রোজ আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য এত ব্যস্ত হও কেন? দুটো বড় চোখ অনিমেষের মুখের ওপর স্থির দৃষ্টি ফেলল। সেই চাহনির দিকে তাকিয়ে অনিমেষ ভেতর ভেতরে একটা কাঁপন অনুভব করল। সে কোন রকমে বলল, তুমি জানো?
কথা এড়িয়ে যাচ্ছ।
বেশ, তোমাকে না দেখতে পেলে আমার ভাল লাগে না, খুব কষ্ট হয়। ঘুম ভাঙ্গার পরই তোমার মুখটাকে দেখতে পাই আর ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত ও মুখ চোখের সামনে থেকে সরে না।
মারাত্মক ব্যাপার।
কেন?
যে কোন মুহূর্তে এ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে কিন্তু হচ্ছে না।
মানে?
চোখের সামনে যদি আমি ছাড়া কিছু না থাকে তাহলে তুমি হাঁটাচলা পড়াশুনা করছ কি করে? সে সবই করছ অথচ
কি আশ্চর্য । এতো মোটা কথা বলছ কেন? চোখ কি শুধু রক্ত মাংষেরই? মনের যে চোখ আছে কান আছে সেটা অস্বীকার করতে পারো?
কি দুঃখ নিজের সন্তান নেই বলে বলছ?
সে তো আছেই । কিন্তু সে কষ্ট ভুলে থাকা যায় যদি স্বামীর ভালবাসা কেউ বুক ভরে পায়। তোমার ছোট মা সেটা পাননি। তোমার বাবা কখনোই তাকে ভালবাসেননি। মাধবীলতার গলায় আত্মপ্রত্যয়।
কি বলছ। ওঁরা এতদিন একসঙ্গে আছেন।
অনিমেষকে থামিয়ে দিল মাধবীলতা, একসঙেগ অনেকদিন থাকলেই বুঝি ভালবাসা যায়। এই শহরে তো একসঙ্গে এতগুলো মানুষ চিরকাল আছে তবু মানুষে মানুষে ভালবাসাবাসি হল না কেন?
কি আশ্চর্য, এ দুটো ব্যাপার এক হল? দুজন মানুষ একসঙ্গে থাকলে পরস্পরকে গভীর ভাবে জানতে পারে, নিজেদের ত্রুটিগুলো সংশোধন করে নিতে পারে, পরস্পরের জন্যে তখন টান জন্মায় আর হাজার হাজার মানুষ যতই একসঙ্গে থাকুক এই নৈকট্য কখনোই গড়ে ওঠে না, দুটোকে এক করছ কেন?
বেশ, ওই ভাবে থাকতে থাকতে তুমি যেটাকে টান বললে সেটা এলেই তাহলে ভালবাসা পাওয়া গেল কি বল? মাধবীলতার মুখে দুষ্টুমি।
আমি কি ভুল বলছি। অনিমেষ একটু বিব্ৰত হল ।
নিশ্চয়ই। দুটো মানুষ সারা জীবন শুধু প্রয়োজনের জন্যে পরস্পরের ওপর নির্ভর করে কাটিয়ে দিতে পারে। দুজনে কেউ কাউকে একটুও ভালবাসল না হয়তো। শুধু প্রয়োজনই কাছাকাছি ওদের ধরে রাখল। আবার দুজন দুই বিপরীত মেরুতে বাস করেও পরস্পরকে ভালবাসতে পারে সারাজীবন। বুঝলে মশাই। কথাটা শেষ করে টেবিলে রাখা অনিমেষের হাতে আলতো করে চিমটি কাটলো মাধবীলতা।
বুঝলাম। অনিমেষ গম্ভীর হবার চেষ্টা করল, এবার বল ভালবাসা কি জিনিস? মানুষ মানুষকে কেন ভালবাসে?
কথাটা শোনামাত্র চোখ বড় হয়ে গেল মাধবীলতার। তারপরেই প্রচণ্ড শব্দে সে হেসে উঠল। সমস্ত শরীর কাঁপছে তার হাসির দমকে, দুহাতের চেটোয় নিজের মুখ ঢেকেও সামলাতে পারছে না। এ রকম দৃশ্য এবং শব্দ আশেপাশের অনেক টেবিলকে সচকিত করেছিল, তারা বেশ মজা দেখার মুখ করে এদিকে তাকিয়ে আছে এখন। অনিমেষ চাপা গলায় বলল, এই কি হচ্ছে। এভাবে হাসিতে ফেটে পড়ার কি কারণ সে বুঝতে পারছিল না।
কোন রকম নিজেকে সামলে মাধবীলতা বলল, অনেকদিন এত প্রাণ খুলে হাসিনি, তোমার জন্য সেটা পারলাম। বলেই আবার হাসতে লাগল, অবশ্য নিঃশব্দে।
তোমাকে কোন কথা সরল মনে জিজ্ঞাসা করা যায় না। অনিমেষ গম্ভীর হল ।
আমি তোমাকে এখন ভালবাসা শেখাবো?
শেখাতে কে বলেছে, আমি জাস্ট আলোচনা করছিলাম।
বেশ, তাহলে সরাসরি কথা হোক। তুমি রোজ আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য এত ব্যস্ত হও কেন? দুটো বড় চোখ অনিমেষের মুখের ওপর স্থির দৃষ্টি ফেলল। সেই চাহনির দিকে তাকিয়ে অনিমেষ ভেতর ভেতরে একটা কাঁপন অনুভব করল। সে কোন রকমে বলল, তুমি জানো?
কথা এড়িয়ে যাচ্ছ।
বেশ, তোমাকে না দেখতে পেলে আমার ভাল লাগে না, খুব কষ্ট হয়। ঘুম ভাঙ্গার পরই তোমার মুখটাকে দেখতে পাই আর ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত ও মুখ চোখের সামনে থেকে সরে না।
মারাত্মক ব্যাপার।
কেন?
যে কোন মুহূর্তে এ্যাক্সিডেন্ট হয়ে যেতে পারে কিন্তু হচ্ছে না।
মানে?
চোখের সামনে যদি আমি ছাড়া কিছু না থাকে তাহলে তুমি হাঁটাচলা পড়াশুনা করছ কি করে? সে সবই করছ অথচ
কি আশ্চর্য । এতো মোটা কথা বলছ কেন? চোখ কি শুধু রক্ত মাংষেরই? মনের যে চোখ আছে কান আছে সেটা অস্বীকার করতে পারো?