ডিমের তরকারি দিয়ে ভাত খেলাম। তিনি পাশে বসে খাওয়ালেন এবং সারাক্ষণই পিঠে হাত দিয়ে রাখলেন। এত মমতায় তিনি কি তার নিজের ছেলেমেয়েকে কোনোদিন খাইয়েছেন? এই সুযোগ তাঁর পাওয়ার কথা না।
লীলা।
জি?
মাগো, খেয়ে মজা পাইতেছ?
পাচ্ছি।
চালতা দিয়ে ছোট মাছের তরকারি। আমি খুব ভালো রাঁধতে পারি। তোমারে রাইন্ধা খাওয়াব। ইনশাল্লাহ।
আচ্ছা।
আমার আরেকটা শখ আছে মা। পাগল-মাইনষের শখ। শখটা তুমি পূরণ করবা?
অবশ্যই করব। আপনি বলুন কী শখ?
একটা রাইত আমার সঙ্গে থাকবা। দু’জনে বিছানায় শুইয়া সারারাত গফসাফ করব।
অবশ্যই। আপনি যদি বলেন আমি আজই আপনার সঙ্গে ঘুমুতে পারি।
ভয় লাগবে না?
ভয় লাগবে কেন?
আমি পাগল-মানুষ। ঘুমের মধ্যে আমি যদি তোমার গলা চাইপ্যা ধরি?
না, আমার ভয় লাগবে না।
মহিলা খিলখিল করে হাসতে শুরু করলেন। হাসি আর থামেই না।
এই মহিলা প্রায়ই সিমাসা বলেন। সিমাসা হলো ধাঁধা। যেমন–
ভোলা মিয়ার শয়তানি
বাইরে লোহা ভিতরে পানি।
এর অর্থ হলো নারিকেল। আমার মা হলেন সিমাসা রানি। তিনি অসংখ্য সিমাসা জানেন। আবার সিমাসা মুখে মুখে তৈরিও করতে পারেন।
যাই হোক, রাতে আমি আমার নিজের ঘরে ঘুমুতে এলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা এসে উপস্থিত হলেন। তার সঙ্গে ফিরে আসার পর আমার কোনো কথা হয় নি। তবে একটা ব্যাপার বুঝতে পেরেছি, তিনি আমাকে দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছেন। তিনি হয়তো ভেবেছেন আমি নিজেই তার কাছে যাব। আমি যাই নি। তিনিও আমাকে ডাকেন নি। হয়তো আমাকে ডাকতে তাঁর অহঙ্কারে বেধেছে। এখন সমস্ত অহঙ্কার একপাশে ফেলে নিজেই এসেছেন। আমি বললাম, বাবা, কিছু বলবেন? তিনি বললেন, না। তিনি আমার ঘরে রাখা চেয়ারে বসলেন। আমি বললাম, বাবা আপনি খেয়েছেন? তিনি না-সূচক মাথা নাড়লেন। আমি বললাম, আমি তো জানি না যে আপনি এখনো খান নি। তিনি বললেন, জানলে কী করতে?
জানলে আপনাকেও সঙ্গে নিয়ে খেতে বসতাম।
তিনি বললেন, আমার একা একা খাওয়ার অভ্যাস।
আমি বললাম, আমি যে-কয়দিন আপনার সঙ্গে থাকব আপনি আমার সঙ্গে খাবেন। বাবা কিছু বললেন না। কিন্তু তাকে দেখে মনে হলো তিনি খুশি হয়েছেন। খুশির ভাবটা চাপতে চেষ্টা করছেন। চাপতে পারছেন না। আমি বললাম, রাত অনেক হয়েছে, খেতে চলুন। বলেই আমি উঠে দাঁড়ালাম। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, তুমি ঘুমাও। আমি বললাম, আপনার খাওয়া হোক, তারপর ঘুমাব। আপনি যখন খাবেন আমি সামনে বসে থাকব।
লীলা।
জি?
মাগো, খেয়ে মজা পাইতেছ?
পাচ্ছি।
চালতা দিয়ে ছোট মাছের তরকারি। আমি খুব ভালো রাঁধতে পারি। তোমারে রাইন্ধা খাওয়াব। ইনশাল্লাহ।
আচ্ছা।
আমার আরেকটা শখ আছে মা। পাগল-মাইনষের শখ। শখটা তুমি পূরণ করবা?
অবশ্যই করব। আপনি বলুন কী শখ?
একটা রাইত আমার সঙ্গে থাকবা। দু’জনে বিছানায় শুইয়া সারারাত গফসাফ করব।
অবশ্যই। আপনি যদি বলেন আমি আজই আপনার সঙ্গে ঘুমুতে পারি।
ভয় লাগবে না?
ভয় লাগবে কেন?
আমি পাগল-মানুষ। ঘুমের মধ্যে আমি যদি তোমার গলা চাইপ্যা ধরি?
না, আমার ভয় লাগবে না।
মহিলা খিলখিল করে হাসতে শুরু করলেন। হাসি আর থামেই না।
এই মহিলা প্রায়ই সিমাসা বলেন। সিমাসা হলো ধাঁধা। যেমন–
ভোলা মিয়ার শয়তানি
বাইরে লোহা ভিতরে পানি।
এর অর্থ হলো নারিকেল। আমার মা হলেন সিমাসা রানি। তিনি অসংখ্য সিমাসা জানেন। আবার সিমাসা মুখে মুখে তৈরিও করতে পারেন।
যাই হোক, রাতে আমি আমার নিজের ঘরে ঘুমুতে এলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাবা এসে উপস্থিত হলেন। তার সঙ্গে ফিরে আসার পর আমার কোনো কথা হয় নি। তবে একটা ব্যাপার বুঝতে পেরেছি, তিনি আমাকে দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছেন। তিনি হয়তো ভেবেছেন আমি নিজেই তার কাছে যাব। আমি যাই নি। তিনিও আমাকে ডাকেন নি। হয়তো আমাকে ডাকতে তাঁর অহঙ্কারে বেধেছে। এখন সমস্ত অহঙ্কার একপাশে ফেলে নিজেই এসেছেন। আমি বললাম, বাবা, কিছু বলবেন? তিনি বললেন, না। তিনি আমার ঘরে রাখা চেয়ারে বসলেন। আমি বললাম, বাবা আপনি খেয়েছেন? তিনি না-সূচক মাথা নাড়লেন। আমি বললাম, আমি তো জানি না যে আপনি এখনো খান নি। তিনি বললেন, জানলে কী করতে?
জানলে আপনাকেও সঙ্গে নিয়ে খেতে বসতাম।
তিনি বললেন, আমার একা একা খাওয়ার অভ্যাস।
আমি বললাম, আমি যে-কয়দিন আপনার সঙ্গে থাকব আপনি আমার সঙ্গে খাবেন। বাবা কিছু বললেন না। কিন্তু তাকে দেখে মনে হলো তিনি খুশি হয়েছেন। খুশির ভাবটা চাপতে চেষ্টা করছেন। চাপতে পারছেন না। আমি বললাম, রাত অনেক হয়েছে, খেতে চলুন। বলেই আমি উঠে দাঁড়ালাম। তিনি বিস্মিত হয়ে বললেন, তুমি ঘুমাও। আমি বললাম, আপনার খাওয়া হোক, তারপর ঘুমাব। আপনি যখন খাবেন আমি সামনে বসে থাকব।