ওরা যখন সত্যনারায়ণ পার্কের সামনে আবার এসে দাঁড়াল তখন আর কোন দ্বিধা নেই। টিমার কোম্পানি যে ওষুধ তৈরি করে তার চাহিদা বাজারে নেই। সরকারের কাছে লাইসেন্স পাওয়া মাথাধরার ট্যাবলেট এবং জ্বরের ইঞ্জেকশন মোটেই চালু নয়। আনন্দর স্পষ্ট ধারণা, এরই আড়ালে ওই দুটো ওষুধ তৈরি করে। কারণ দ্বিতীয় যে টেম্পো ওখান থেকে একটু আগে বের হল তার ওপরে ভোলা ওষুধের বাক্সের নম্বর আলাদা। একটু আগে শোনা নামের খোঁজে ওরা কারখানায় ঢুকেছিল। তাদের বসবার ঘরে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। সেইসময় একটা বেয়ারা গোছের লোকের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে আনন্দ জেনেছিল এখানে জ্বর, মাথাধরা, পেটব্যথা এবং বমির ওষুধ তৈরি হয়। লোকটা খুব গর্বের সঙ্গে জানিয়েছিল এখানে কোন শ্রমিকবিক্ষোভ নেই। মালিক খুব ভাল লোক। মোট সওয়া দুশ মানুষ এই কোম্পানির সঙ্গে জড়িত। কিছুক্ষণ বাদে যে খবর নিয়ে গিয়েছিল সে এসে জানাল আপনাদের ভেতরে ডাকছে। মোহনলালবাবু নামক লোকটির কাছে পৌঁছে গেল ওরা। ফিনফিনে ধুতি আর টেরিকটের পাঞ্জাবি-পরা সেই ভদ্রলোকটি জিজ্ঞাসা করলেন, কোত্থেকে আসছেন আপনারা? কি দরকার?
আনন্দ বলল, আমি চণ্ডীগড়ে থাকি। এদের বাড়িতে উঠেছি। চণ্ডীগড়ে আমাদের ওষুধের বিজনেস আছে। সেখানে আপনার এক বন্ধু প্রায়ই আসেন আমার বাবার কাছে। উনি বলেছিলেন এখানে এলে আপনার সঙ্গে দেখা করে যেতে। আনন্দর কথা বলার ভঙ্গি এত স্বাভাবিক যে কল্যাণ পর্যন্ত পাথর হয়ে গেল।
মোহনলালের মুখে এবার কৌতূহল, তোমরা চণ্ডীগড়ে থাকো?
ও না, আমি।
ওষুধের ব্যবসা? তোমার বাবার ওষুধের ব্যবসা আছে?
হ্যাঁ। এস কে রায় অ্যান্ড কোম্পানি।
হ্যাঁ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। রামনিবাস বলেছিল বটে। খুব ভারী ব্যবসা তোমাদের। এবার খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে তাকালেন মোহনলাল।
খুব বড় নয়, এই আর কি!
রামনিবাস কেমন আছে?
ভালই।
আরে তোমরা দাঁড়িয়ে রইলে কেন? বসো বসো। কি খাবে বল? চা না কোল্ড ড্রিঙ্কস্?
আনন্দ মাথা নাড়ল, না না, এখন কিছু খাব না। বাবা বলেছিলেন আপনার কাছে এলে ফ্যাক্টরিটা দেখে যেতে। ব্যবসা কি করে বড় হয় তা জানতে।
ব্যবসা? ব্যবসা হল আগুনের মত। তাকে যত খাবার দেবে তত বেড়ে যাবে। সব সময় সাপ্লাই দিয়ে যেতে হয়। এই কোম্পানি একটা লিমিটেড কোম্পানি। আমি একজন ডিরেকটার, ব্যস। আজ একটু অসুবিধে আছে। আমারও সময় নেই। যাওয়ার আগে একদিন এসো দেখিয়ে দেব ঘুরিয়ে।
ঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় ওরা ফ্যাক্টরির কিছু অংশ দেখতে পেল। ওই অঞ্চলে প্যাকিং চলছে। প্রায় সদর পর্যন্ত পৌঁছে দিলেন মোহনলাল। বললেন, রামনিবাসকে বললো আমাকে ফোন করতে। আমি দিল্লি যাব নেক্সট মানথে। তখন দেখা হবে।
যে বেয়ারা দুটো দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল তারা সসম্ভ্রমে তাকাল। বাইরে বেরিয়ে আনন্দ উলটো দিকের রাস্তায় হাঁটতে লাগল। কল্যাণ জিজ্ঞাসা করল, এদিকে কোথায় যাচ্ছিস?
আনন্দ বলল, আয় না।
বাড়িটার গায়েই আর একটা সরু গলি। এ দিকটায় ছোটখাটো দোকান বেশি। ঠিক দোকান না বলে গদি বলাই ভাল। খুবই ঘিঞ্জি এলাকা। হাঁটতে হাঁটতে ওরা বাড়িটার পিছনে চলে এসে একটা বিশাল গেট দেখতে পেল। গেটটা বন্ধ। ভেতরে একটা দারোয়ান টুলের উপর বসে আছে। গেটের ভিতরে দুটো টেম্পো দাঁড়িয়ে। এদিকের পথটা অপেক্ষাকৃত চওড়া। খানিকটা বেঁকে আবার জে এন বাজাজ স্ট্রিটে পৌঁছে গেছে। টিমার কোম্পানির প্রধান প্রবেশপথ সত্যনারায়ণ পার্কের দিকে না হয়ে এদিকটায় হওয়াই স্বাভাবিক ছিল।
কল্যাণ বলল, তোর বুকের পাটা আছে। কি ঝটপট মিথ্যে কথা বলতে পারলি!
আনন্দ বলল, আমি ভাবছি মোহনলালের কথা। লোকটা অনেক বড় অভিনেতা।
কল্যাণ বলল, মানে?
আনন্দ বলল, আমি চণ্ডীগড়ে থাকি। এদের বাড়িতে উঠেছি। চণ্ডীগড়ে আমাদের ওষুধের বিজনেস আছে। সেখানে আপনার এক বন্ধু প্রায়ই আসেন আমার বাবার কাছে। উনি বলেছিলেন এখানে এলে আপনার সঙ্গে দেখা করে যেতে। আনন্দর কথা বলার ভঙ্গি এত স্বাভাবিক যে কল্যাণ পর্যন্ত পাথর হয়ে গেল।
মোহনলালের মুখে এবার কৌতূহল, তোমরা চণ্ডীগড়ে থাকো?
ও না, আমি।
ওষুধের ব্যবসা? তোমার বাবার ওষুধের ব্যবসা আছে?
হ্যাঁ। এস কে রায় অ্যান্ড কোম্পানি।
হ্যাঁ হ্যাঁ, মনে পড়েছে। রামনিবাস বলেছিল বটে। খুব ভারী ব্যবসা তোমাদের। এবার খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে তাকালেন মোহনলাল।
খুব বড় নয়, এই আর কি!
রামনিবাস কেমন আছে?
ভালই।
আরে তোমরা দাঁড়িয়ে রইলে কেন? বসো বসো। কি খাবে বল? চা না কোল্ড ড্রিঙ্কস্?
আনন্দ মাথা নাড়ল, না না, এখন কিছু খাব না। বাবা বলেছিলেন আপনার কাছে এলে ফ্যাক্টরিটা দেখে যেতে। ব্যবসা কি করে বড় হয় তা জানতে।
ব্যবসা? ব্যবসা হল আগুনের মত। তাকে যত খাবার দেবে তত বেড়ে যাবে। সব সময় সাপ্লাই দিয়ে যেতে হয়। এই কোম্পানি একটা লিমিটেড কোম্পানি। আমি একজন ডিরেকটার, ব্যস। আজ একটু অসুবিধে আছে। আমারও সময় নেই। যাওয়ার আগে একদিন এসো দেখিয়ে দেব ঘুরিয়ে।
ঘর থেকে বেরিয়ে আসার সময় ওরা ফ্যাক্টরির কিছু অংশ দেখতে পেল। ওই অঞ্চলে প্যাকিং চলছে। প্রায় সদর পর্যন্ত পৌঁছে দিলেন মোহনলাল। বললেন, রামনিবাসকে বললো আমাকে ফোন করতে। আমি দিল্লি যাব নেক্সট মানথে। তখন দেখা হবে।
যে বেয়ারা দুটো দরজায় দাঁড়িয়ে ছিল তারা সসম্ভ্রমে তাকাল। বাইরে বেরিয়ে আনন্দ উলটো দিকের রাস্তায় হাঁটতে লাগল। কল্যাণ জিজ্ঞাসা করল, এদিকে কোথায় যাচ্ছিস?
আনন্দ বলল, আয় না।
বাড়িটার গায়েই আর একটা সরু গলি। এ দিকটায় ছোটখাটো দোকান বেশি। ঠিক দোকান না বলে গদি বলাই ভাল। খুবই ঘিঞ্জি এলাকা। হাঁটতে হাঁটতে ওরা বাড়িটার পিছনে চলে এসে একটা বিশাল গেট দেখতে পেল। গেটটা বন্ধ। ভেতরে একটা দারোয়ান টুলের উপর বসে আছে। গেটের ভিতরে দুটো টেম্পো দাঁড়িয়ে। এদিকের পথটা অপেক্ষাকৃত চওড়া। খানিকটা বেঁকে আবার জে এন বাজাজ স্ট্রিটে পৌঁছে গেছে। টিমার কোম্পানির প্রধান প্রবেশপথ সত্যনারায়ণ পার্কের দিকে না হয়ে এদিকটায় হওয়াই স্বাভাবিক ছিল।
কল্যাণ বলল, তোর বুকের পাটা আছে। কি ঝটপট মিথ্যে কথা বলতে পারলি!
আনন্দ বলল, আমি ভাবছি মোহনলালের কথা। লোকটা অনেক বড় অভিনেতা।
কল্যাণ বলল, মানে?