[HIDE]
যুদ্ধ জয়ের পর সবাই হর্ষধ্বনি করে উঠলো কেউ সিটি দিচ্ছে, কেউ তালি মারছে শুধু আমির বাদে, সে দ্রুত বাড়ির দিকে গেল পিছু পিছু বশির এবং আরও কয়েকজন গেল। গেট ঠেলে ঢুকেই তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল "সর্বনাশ হয়ে গেছে" কারণ সেখানে রয়ের গাড়িটা নেই, আর সে খুব ভালো করেই জানে রয় বেরোলে গাড়ি নিয়েই বেরোয় গাড়ি নেই মানে রয় নেই আমির মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো, কিন্তু বেশিক্ষণ না আম্মির কথা মনে পড়তেই সে ছুটে বাড়ির ভিতরে গেল কেউ নেই সে জানে এখানে একটা দ্বিতীয় দরজা আছে এমার্জেন্সীতে বেরোনোর জন্য, সে তৎক্ষণাৎ ওটা দিয়ে বেরিয়ে ছুট লাগালো, বাড়ির পিছনের দিকে ওদিক দিয়ে একটা রাস্তা আছে সেটা দিয়ে কিছুদূর গিয়ে বস্তির একেবারে উল্টোদিকে বেরোনোর রাস্তা আছে সেখান থেকে বেরোলে একটা খাল পড়বে সেটা পার করার একটা ছোট্ট কাঠের সাঁকো আছে সেটা পার করলেই আরেকটা কলোনি আছে সেটার ভিতর দিয়ে সোজা অনেকটা গেলে কলোনি ছাড়িয়ে কিছুটা দূরে একটা হাইওয়ে পরে, আমির ওই রাস্তা দিয়েই ছুটে চলে পিছনে বশির আর কয়েকজন আসছে, বস্তিটা পেরিয়ে খাল পার হয়ে কলোনির ভিতর দিয়ে দৌড়ে হাইওয়ের সামনে আসে কিন্তু সেখানে কাউকে দেখতে পায় না, একটু এদিক ওদিক খুঁজতেই দেখে রাস্তার একদম উল্টোদিকে কিছুটা ডানদিকে একটা বাসস্টপে কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে চিনতে অসুবিধা হয়না আমিরের এক দৌড়ে রাস্তাটা কোনোমতে পার করে সেখানে পৌঁছে দুই হাঁটতে ভর দিয়ে ঝুঁকে হাঁফাতে থাকে, আম্মি, বিন্দু মাসি আর বিদিশা ঠিক আছে, ঠিক সময়ে তাদের বাইরে বার করে আনা হয়েছে।
কতক্ষণ পরে অজ্ঞান হয়ে ছিল বুঝতে পারে না অভয় এখন রাত না দিন সেটাও বুঝতে পারে না, ঠিক আগের বারের মতোই তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে নিজের চেতনা সম্পূর্ণ জাগ্রত হবার অপেক্ষা করতে থাকে, বুঝতে পারে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে তাকে সারা গায়ে ব্যাথা কিন্তু গুপ্ত মেডিটেশনের জন্য সেগুলো সহ্য করে নেয়, আরেকটা জিনিস খেয়াল করে এখন তাকে মেঝেতে উবুড় করে শুইয়ে রাখা হয়েছেহ শেষ বার যখন জ্ঞান ছিল তখন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়ে ছিল, যদিও এখনো তার হাতপা বাঁধা আরেকটা জিনিস তার প্রচণ্ড পিপাসা পেয়েছে গলা শুকিয়ে কাঠ এবং ক্ষিদেও পেয়েছে সেই মাহমুদের কথা শুনে বেরোনোর আগে খেয়েছিল তারপর কতক্ষণ যে পেটে কিছু পড়েনি তা আন্দাজ করা কঠিন।
এখান থেকে পালাতে গেলে আগে গায়ে কিছুটা শক্তি দরকার তার থেকেও বড়ো কথা অন্তত হাতদুটো মুক্ত করতে হবে, কিন্তু কিভাবে? সে চুপ করে পরে রইলো আবার মেডিটেশনে ডুবে গেল দেহে যতটুকু শক্তি আছে তা একত্রিত করার চেষ্টা করতে থাকে, সাথে মানসিক শক্তিকেও কিন্তু সমস্যা হলো মন তারবশীভূত কিন্তু এইমুহূর্তে শরীরের উপর যা অত্যাচার হয়েছে তাতে তাকে বশে আনা কিছুটা কঠিন তার উপরে অভুক্ত তৃষ্ণার্ত অবস্থায় আছে সে।
হাতপা বাধা অবস্থাতেই উবুড় হয়ে ছিল অভয় এবার একটু নড়ার চেষ্টা করতেই বুঝলেন শরীরের অবস্থা যতটা ভেবেছিল তার থেকেও খারাপ মারের যন্ত্রণা তো আছেই তার উপর প্রচণ্ড দুর্বল লাগছে, অভয় আরও কিছুক্ষণ অসাড় হয়ে পড়ে রইলো, একসময় আবার গাঢ় ঘুমে ডুবে গেল যখন ঘুম ভাঙলো তখন নিজেকে কিছুটা চাঙ্গা লাগছে যদিও পেটে ক্ষিদে ,গলায় তৃষ্ণা আর শরীরে ব্যাথা তিনটেই আছে, সে আস্তে আস্তে নিজের হাতদুটো মুক্ত করতে চেষ্টা করে এখান থেকে পালাতে হলে আগে হাতপা বাঁধন মুক্ত করতে হবে। দুটো হাত একসাথে কবজির কাছে দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে বাধা ছিল ধীরে ধীরে অনেকক্ষণ ধরে দুটো কবজি নাড়িয়ে দাঁত দিয়ে চেষ্টা করে কয়েকটা প্যাচ থেকে মুক্ত করলো কিন্তু এখনো কিছুটা বাকী এদিকে তার বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস পড়ছে আরও কিছুক্ষণ পরে দুটো হাতই বন্ধন মুক্ত করতে সক্ষম হলো, এখানকার গুণ্ডাদের ঘটে তেমন কিছু নেই হ এই দড়িটাই যদি নাইলনের সরু অথচ শক্ত দড়ি হতো তাহলে খুলতে পারতো না কারণ সেক্ষেত্রে দড়িটা চামড়া কেটে মাংসে বসে যেত
অভয় দুহাতে ভর দিয়ে উঠে বসতে চাইলো কিন্তু পারলো না সারা গায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা সে আবার চেষ্টা করলো কিন্তু এবারও ব্যার্থ হলো, তৃতীয় বারে ব্যাথা সহ্য করে কোনোমতে উঠে বসলো, তারপর আস্তে আস্তে পায়ের বাঁধনটা খুলে নিল এখন সে সম্পূর্ণ বন্ধন মুক্ত, আস্তে আস্তে উঠে ঘরের ভিতরেই পায়চারি করতে থাকে কিন্তু প্রতিটা পদক্ষেপেই মনে হচ্ছে য়যেন কেউ শরীরে বিদ্যুৎ শক্ দিচ্ছে, বেশীক্ষণ থাকতে পারলো না, আবার মেঝেতে বসে হাঁফাতে লাগলো, এখান থেকে পালাতে হলে এখানের গার্ড যারা আছে তাদের মোকাবেলা করতেই হবে আর তার জন্য আগে শরীরের ব্যাথাটার সাথে যুঝতে হবে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পরে বন্ধ দরজার ওপাশে পায়ের আওয়াজ শুনতে পায় বেশি না একজনের, অভয় বোঝে এটাই সুযোগ সে মেঝেতে পরে থাকা যে দুটো দড়ি দিয়ে তাকে বাধা হয়েছিল সেই দুটো নিয়ে দরজার আড়ালে লুকিয়ে থাকে দুহাতে দড়ির দুটো প্রান্ত ধরে, একটু পরেই দরজা খুলে একজন ভিতরে ঢুকলো কিন্তু সে কিছু করা বা বোঝার আগেই পিছন থেকে তার গলায় দড়িটা পেঁচিয়ে ধরে অভয়, লোকটা ছটফট করতে থাকে অভয় জানে এইভাবে সে বেশীক্ষণ ধরে থাকতে পারবে না তার শরীর এখন দুর্বল যতটুকু শক্তি সে সঞ্চয় করতে পেরেছে তা মেপে ব্যবহার করতে হবে।
এবার দড়ির দুটো প্রান্ত বাহাতে ধরে ডানহাতের তালুর কোনা দিয়ে লোকটার মাথার পিছনে আঘাত করে, প্রথম আঘাতে কিছু হয় না, লোকটা তখনও নিজেকে মুক্ত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে এবার অভয় দ্বিতীয়বার আবার আঘাত করে এবার আগেরবারের থেকে একটু বেশি জোড়ে সঙ্গে সঙ্গে লোকটা অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। অভয় এবার দ্রুত লোকটার গা থেকে জামা প্যান্ট খুলে পরে নেয় ঠিকঠাক ফিটিং হয় না কিন্তু আপাতত এতেই কাজ চালাতে হবে। এবার ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে যাবে এমন সময় বাইরে আরো একজনের পায়ের আওয়াজ পায় সে তৎক্ষণাৎ আবার দরজার আড়ালে চলে যায়, আরেকটা লোক টলতে টলতে তার সঙ্গীকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢোকে এবং ঢুকেই মেঝেতে একজনকে পরে থাকতে দেখে ভালো করে দেখার জন্য একটু ঝুঁকতেই অভয় পিছন থেকে একেও মাথায় আঘাত করে সঙ্গে সঙ্গে এও লুটিয়ে পরে এবার এর পকেট সার্চ করে নিজের মোবাইলটা পেয়ে যায় যদিও সেটা সুইচড অফ হয়ে গেছে সাথে কিছু টাকা আর একটা পিস্তল পায়।
এবার আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় আসে, দেখে এক কোনে একটা টেবিলে মুখোমুখি বসে বাকি দুজন মদ খাচ্ছে, নেশার জন্যই বোধহয় ওরা অভয়ের উপস্থিতি এখনো টের পায়নি, অভয় জানে সুস্থ থাকলে এই দুজনকে একসাথে ঝেড়ে ফেলা তার কাছে কিছুই নয়, কিন্তু শরীরের এই দুর্বলতায় সেটা যথেষ্ট কঠিন কিন্তু উপায় নেই একদিকে সুবিধা ওরা নেশা করে আছে। অভয় প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে একজনের পিছনে গেল তারপর আচমকাই পিস্তলের বাট দিয়ে ওর মাথায় মারলো সঙ্গে সঙ্গে তার মাথাটা টেবিলের উপর পরে গেল আঘাতের জায়গা থেকে রক্ত বেরোতে থাকে, প্রথমেই গুলি চালালো না কারণ গুলির আওয়াজে যদি বাইরে কেউ থাকে সে ভিতরে চলে আসবে তখন অভয়ের পালানো আটকে যেতে পারে, এই হটাৎ আক্রমণে অপরজন হতভম্ব হয়ে যায় সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই অভয় তার দিকে পিস্তল তাক করে ইশারায় দুহাত মাথার উপর তুলতে বলে লোকটা তাই করে, অভয় জিজ্ঞেস করে: বাইরে কেউ আছে?
লোকটা ঘাড় নেড়ে না জানায়, অভয় আবার জিজ্ঞেস করে আমার ঘড়ি কোথায়?, লোকটা নিজের পকেট থেকে অভয়ের হাতঘড়িটা বার করে টেবিলের উপর রাখে, "আমার জুতো?" শুনে লোকটা চোখ দিয়ে একটা জায়গায় দেখায়।
[/HIDE]
যুদ্ধ জয়ের পর সবাই হর্ষধ্বনি করে উঠলো কেউ সিটি দিচ্ছে, কেউ তালি মারছে শুধু আমির বাদে, সে দ্রুত বাড়ির দিকে গেল পিছু পিছু বশির এবং আরও কয়েকজন গেল। গেট ঠেলে ঢুকেই তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল "সর্বনাশ হয়ে গেছে" কারণ সেখানে রয়ের গাড়িটা নেই, আর সে খুব ভালো করেই জানে রয় বেরোলে গাড়ি নিয়েই বেরোয় গাড়ি নেই মানে রয় নেই আমির মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো, কিন্তু বেশিক্ষণ না আম্মির কথা মনে পড়তেই সে ছুটে বাড়ির ভিতরে গেল কেউ নেই সে জানে এখানে একটা দ্বিতীয় দরজা আছে এমার্জেন্সীতে বেরোনোর জন্য, সে তৎক্ষণাৎ ওটা দিয়ে বেরিয়ে ছুট লাগালো, বাড়ির পিছনের দিকে ওদিক দিয়ে একটা রাস্তা আছে সেটা দিয়ে কিছুদূর গিয়ে বস্তির একেবারে উল্টোদিকে বেরোনোর রাস্তা আছে সেখান থেকে বেরোলে একটা খাল পড়বে সেটা পার করার একটা ছোট্ট কাঠের সাঁকো আছে সেটা পার করলেই আরেকটা কলোনি আছে সেটার ভিতর দিয়ে সোজা অনেকটা গেলে কলোনি ছাড়িয়ে কিছুটা দূরে একটা হাইওয়ে পরে, আমির ওই রাস্তা দিয়েই ছুটে চলে পিছনে বশির আর কয়েকজন আসছে, বস্তিটা পেরিয়ে খাল পার হয়ে কলোনির ভিতর দিয়ে দৌড়ে হাইওয়ের সামনে আসে কিন্তু সেখানে কাউকে দেখতে পায় না, একটু এদিক ওদিক খুঁজতেই দেখে রাস্তার একদম উল্টোদিকে কিছুটা ডানদিকে একটা বাসস্টপে কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছে চিনতে অসুবিধা হয়না আমিরের এক দৌড়ে রাস্তাটা কোনোমতে পার করে সেখানে পৌঁছে দুই হাঁটতে ভর দিয়ে ঝুঁকে হাঁফাতে থাকে, আম্মি, বিন্দু মাসি আর বিদিশা ঠিক আছে, ঠিক সময়ে তাদের বাইরে বার করে আনা হয়েছে।
কতক্ষণ পরে অজ্ঞান হয়ে ছিল বুঝতে পারে না অভয় এখন রাত না দিন সেটাও বুঝতে পারে না, ঠিক আগের বারের মতোই তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে নিজের চেতনা সম্পূর্ণ জাগ্রত হবার অপেক্ষা করতে থাকে, বুঝতে পারে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে তাকে সারা গায়ে ব্যাথা কিন্তু গুপ্ত মেডিটেশনের জন্য সেগুলো সহ্য করে নেয়, আরেকটা জিনিস খেয়াল করে এখন তাকে মেঝেতে উবুড় করে শুইয়ে রাখা হয়েছেহ শেষ বার যখন জ্ঞান ছিল তখন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়ে ছিল, যদিও এখনো তার হাতপা বাঁধা আরেকটা জিনিস তার প্রচণ্ড পিপাসা পেয়েছে গলা শুকিয়ে কাঠ এবং ক্ষিদেও পেয়েছে সেই মাহমুদের কথা শুনে বেরোনোর আগে খেয়েছিল তারপর কতক্ষণ যে পেটে কিছু পড়েনি তা আন্দাজ করা কঠিন।
এখান থেকে পালাতে গেলে আগে গায়ে কিছুটা শক্তি দরকার তার থেকেও বড়ো কথা অন্তত হাতদুটো মুক্ত করতে হবে, কিন্তু কিভাবে? সে চুপ করে পরে রইলো আবার মেডিটেশনে ডুবে গেল দেহে যতটুকু শক্তি আছে তা একত্রিত করার চেষ্টা করতে থাকে, সাথে মানসিক শক্তিকেও কিন্তু সমস্যা হলো মন তারবশীভূত কিন্তু এইমুহূর্তে শরীরের উপর যা অত্যাচার হয়েছে তাতে তাকে বশে আনা কিছুটা কঠিন তার উপরে অভুক্ত তৃষ্ণার্ত অবস্থায় আছে সে।
হাতপা বাধা অবস্থাতেই উবুড় হয়ে ছিল অভয় এবার একটু নড়ার চেষ্টা করতেই বুঝলেন শরীরের অবস্থা যতটা ভেবেছিল তার থেকেও খারাপ মারের যন্ত্রণা তো আছেই তার উপর প্রচণ্ড দুর্বল লাগছে, অভয় আরও কিছুক্ষণ অসাড় হয়ে পড়ে রইলো, একসময় আবার গাঢ় ঘুমে ডুবে গেল যখন ঘুম ভাঙলো তখন নিজেকে কিছুটা চাঙ্গা লাগছে যদিও পেটে ক্ষিদে ,গলায় তৃষ্ণা আর শরীরে ব্যাথা তিনটেই আছে, সে আস্তে আস্তে নিজের হাতদুটো মুক্ত করতে চেষ্টা করে এখান থেকে পালাতে হলে আগে হাতপা বাঁধন মুক্ত করতে হবে। দুটো হাত একসাথে কবজির কাছে দড়ি দিয়ে পেঁচিয়ে বাধা ছিল ধীরে ধীরে অনেকক্ষণ ধরে দুটো কবজি নাড়িয়ে দাঁত দিয়ে চেষ্টা করে কয়েকটা প্যাচ থেকে মুক্ত করলো কিন্তু এখনো কিছুটা বাকী এদিকে তার বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস পড়ছে আরও কিছুক্ষণ পরে দুটো হাতই বন্ধন মুক্ত করতে সক্ষম হলো, এখানকার গুণ্ডাদের ঘটে তেমন কিছু নেই হ এই দড়িটাই যদি নাইলনের সরু অথচ শক্ত দড়ি হতো তাহলে খুলতে পারতো না কারণ সেক্ষেত্রে দড়িটা চামড়া কেটে মাংসে বসে যেত
অভয় দুহাতে ভর দিয়ে উঠে বসতে চাইলো কিন্তু পারলো না সারা গায়ে প্রচণ্ড ব্যাথা সে আবার চেষ্টা করলো কিন্তু এবারও ব্যার্থ হলো, তৃতীয় বারে ব্যাথা সহ্য করে কোনোমতে উঠে বসলো, তারপর আস্তে আস্তে পায়ের বাঁধনটা খুলে নিল এখন সে সম্পূর্ণ বন্ধন মুক্ত, আস্তে আস্তে উঠে ঘরের ভিতরেই পায়চারি করতে থাকে কিন্তু প্রতিটা পদক্ষেপেই মনে হচ্ছে য়যেন কেউ শরীরে বিদ্যুৎ শক্ দিচ্ছে, বেশীক্ষণ থাকতে পারলো না, আবার মেঝেতে বসে হাঁফাতে লাগলো, এখান থেকে পালাতে হলে এখানের গার্ড যারা আছে তাদের মোকাবেলা করতেই হবে আর তার জন্য আগে শরীরের ব্যাথাটার সাথে যুঝতে হবে। অনেকক্ষণ বসে থাকার পরে বন্ধ দরজার ওপাশে পায়ের আওয়াজ শুনতে পায় বেশি না একজনের, অভয় বোঝে এটাই সুযোগ সে মেঝেতে পরে থাকা যে দুটো দড়ি দিয়ে তাকে বাধা হয়েছিল সেই দুটো নিয়ে দরজার আড়ালে লুকিয়ে থাকে দুহাতে দড়ির দুটো প্রান্ত ধরে, একটু পরেই দরজা খুলে একজন ভিতরে ঢুকলো কিন্তু সে কিছু করা বা বোঝার আগেই পিছন থেকে তার গলায় দড়িটা পেঁচিয়ে ধরে অভয়, লোকটা ছটফট করতে থাকে অভয় জানে এইভাবে সে বেশীক্ষণ ধরে থাকতে পারবে না তার শরীর এখন দুর্বল যতটুকু শক্তি সে সঞ্চয় করতে পেরেছে তা মেপে ব্যবহার করতে হবে।
এবার দড়ির দুটো প্রান্ত বাহাতে ধরে ডানহাতের তালুর কোনা দিয়ে লোকটার মাথার পিছনে আঘাত করে, প্রথম আঘাতে কিছু হয় না, লোকটা তখনও নিজেকে মুক্ত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে এবার অভয় দ্বিতীয়বার আবার আঘাত করে এবার আগেরবারের থেকে একটু বেশি জোড়ে সঙ্গে সঙ্গে লোকটা অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরে। অভয় এবার দ্রুত লোকটার গা থেকে জামা প্যান্ট খুলে পরে নেয় ঠিকঠাক ফিটিং হয় না কিন্তু আপাতত এতেই কাজ চালাতে হবে। এবার ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে যাবে এমন সময় বাইরে আরো একজনের পায়ের আওয়াজ পায় সে তৎক্ষণাৎ আবার দরজার আড়ালে চলে যায়, আরেকটা লোক টলতে টলতে তার সঙ্গীকে ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢোকে এবং ঢুকেই মেঝেতে একজনকে পরে থাকতে দেখে ভালো করে দেখার জন্য একটু ঝুঁকতেই অভয় পিছন থেকে একেও মাথায় আঘাত করে সঙ্গে সঙ্গে এও লুটিয়ে পরে এবার এর পকেট সার্চ করে নিজের মোবাইলটা পেয়ে যায় যদিও সেটা সুইচড অফ হয়ে গেছে সাথে কিছু টাকা আর একটা পিস্তল পায়।
এবার আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় আসে, দেখে এক কোনে একটা টেবিলে মুখোমুখি বসে বাকি দুজন মদ খাচ্ছে, নেশার জন্যই বোধহয় ওরা অভয়ের উপস্থিতি এখনো টের পায়নি, অভয় জানে সুস্থ থাকলে এই দুজনকে একসাথে ঝেড়ে ফেলা তার কাছে কিছুই নয়, কিন্তু শরীরের এই দুর্বলতায় সেটা যথেষ্ট কঠিন কিন্তু উপায় নেই একদিকে সুবিধা ওরা নেশা করে আছে। অভয় প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে একজনের পিছনে গেল তারপর আচমকাই পিস্তলের বাট দিয়ে ওর মাথায় মারলো সঙ্গে সঙ্গে তার মাথাটা টেবিলের উপর পরে গেল আঘাতের জায়গা থেকে রক্ত বেরোতে থাকে, প্রথমেই গুলি চালালো না কারণ গুলির আওয়াজে যদি বাইরে কেউ থাকে সে ভিতরে চলে আসবে তখন অভয়ের পালানো আটকে যেতে পারে, এই হটাৎ আক্রমণে অপরজন হতভম্ব হয়ে যায় সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতেই অভয় তার দিকে পিস্তল তাক করে ইশারায় দুহাত মাথার উপর তুলতে বলে লোকটা তাই করে, অভয় জিজ্ঞেস করে: বাইরে কেউ আছে?
লোকটা ঘাড় নেড়ে না জানায়, অভয় আবার জিজ্ঞেস করে আমার ঘড়ি কোথায়?, লোকটা নিজের পকেট থেকে অভয়ের হাতঘড়িটা বার করে টেবিলের উপর রাখে, "আমার জুতো?" শুনে লোকটা চোখ দিয়ে একটা জায়গায় দেখায়।
[/HIDE]