[HIDE]
নিজের অফিসে একা বসে ছিলেন বীরেন ভট্টাচার্য একটু পর বাইরে থেকে ভাই ধীরেন বাবুর গলার আওয়াজ এল "দাদা বাড়ি চলো রাত হয়েছে"।
তুমি যাও আমি একটু পর আসছি, এখন একটু একা থাকতে চাই।
আসলে বাইরে যতই নিজেকে শক্ত দেখান ভেতর অনেকটাই ভেঙে পরেছেন বীরেন বাবু, তার এতবছরের সঞ্চিত ধন কেউ এভাবে সাফ করে দিয়ে যাবে এটা কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না তার কিন্তু সেটা তো হয়েছে, এখন কথা হচ্ছে কে করেছে?। গত কয়েকমাস ধরেই বুঝতে পারছিলেন কেউ বা কারা যেন তার পিছনে লেগেছে, তার কন্সট্রাকশন সাইটে তারই দলের লোকদের মেরে পুড়িয়ে দিয়েছে, তার রক্ষিতাকে কেউ সাথে নিয়ে গেছে সেখানেও তার দলের কিছু লোককে শেষ করেছে, তার সঞ্চিত ধন সাফ করেছে এবং তারপরেও খবর পেয়েছেন যে শহর জুড়ে তার যে কটা চোলাই মদের ঠেক ছিল সবকটায় হামলা হয়েছে সব শেষ করে দিয়েছে। বীরেন বাবু ভেবেছিলেন এসব সরকারের কাজ তাই তাকে শেষ করেছেন কিন্তু তারপরেও...... কে করেছে সেটা কিছুতেই ধরতে পারছেন না।
ছোটো থেকেই মস্তান গোছের ছিলেন বীরেন ভট্টাচার্য, স্কুলে উচ্চশিক্ষা পাঠের সময়ই ভাই এবং ক্লাসের আরও কয়েকজন ছেলে নিয়ে দল গড়েছিলেন তারপর কলেজে উঠে দলে আরও ছেলে যোগ দেয়। কলেজ ছাড়ার পরে প্রমোটিংএর ব্যাবসা শুরু করেন বাপেরও অনেক টাকা ছিল দুনম্বরি টাকা তাই ব্যাবসা শুরু করতে অসুবিধা হয় নি, এই প্রোমোটিংএর ব্যাবসার সাথে এলাকায় নিজের ক্ষমতা দেখাতে শুরু করেন, দলে যারা ছিল তারাও তো খুব সুবিধার ছিল না তারই মতো ছিল, কত লোকের জমি কেড়ে নিয়েছেন কত লোককে স্রেফ গায়েব করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই, কত মেয়ে-বউদের সর্বনাশ করেছেন তার হিসাব নেই, বাপের টাকা আর কিছু ক্ষমতাশালী লোকের সাথে পরিচয় থাকার জন্য কয়েকবার জেলে গিয়েও ছাড়া পেয়েছিলেন তার বেশি কিছু হয়নি, ধীরে ধীরে তার দাপট এত বাড়তে থাকে যে সবাই তার নাম শুনলেই ভয়ে কাঁপতে থাকতো। এই আতঙ্কটার জন্যেই এতদিন কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি ,একজন ছাড়া... রুদ্র, রুদ্র রায় চৌধুরী।
বীরেন ভট্টাচার্য অতীতের কোনো এক স্মৃতির অতলে তলিয়ে যান, এই রুদ্র রায় চৌধুরীকে ছোটো থেকেই চিনতেন তিনি, দুজনে আলাদা স্কুলে পড়তেন একবার ইন্টার স্কুল কম্পিটিশনে দেখা হয়েছিল, দুজনের স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছিল কিন্তু ফাইনালে রুদ্রবাবু নাচিয়ে ছেড়েছিলেন বীরেন ভট্টাচার্যকে বলাইবাহুল্য রুদ্রবাবুর স্কুল জিতেছিল এবং সেরার পুরষ্কার উঠেছিল রুদ্রবাবুর হাতে। তারপর দুজনের মোলাকাত হয় কলেজে, একই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন যদিও স্ট্রিম আলাদা, বীরেন বাবুর কমার্স আর রুদ্রবাবুর সায়েন্স, দুজনের বিল্ডিং আলাদা কিন্তু ক্যাম্পাসে, ক্যান্টিনে বা কমনরুমে মাঝে মাঝেই সাক্ষাৎ হতো। আর তারপর তো রুদ্রবাবু তারই এলাকায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে থাকতে এলেন স্ত্রী আর একরত্তি ছেলেকে নিয়ে।
দুজনের সামাজিক ব্যাবধান অনেকটাই ছিল, বীরেন ভট্টাচার্য আর্থিক দিক থেকে অনেকটাই ধনী ছিলেন রুদ্রবাবুর তুলনায়, রুদ্রবাবু কোনোমতে কিছুটা জমি কিনে তাতে একটা একতলা বাড়ি করেছিলেন, এলাকায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রুদ্র বাবু, ভীষণ পরোপকারী ছিলেন তিনি এবং তার স্ত্রী, তার উপর নির্ভিক স্পষ্টবাদী। এইভাবেই সময় কাটতে থাকে ধীরে ধীরে বীরেন ভট্টাচার্য বুঝতে পারছিলেন যে এলাকায় তার আধিপত্য বিস্তারের প্রধান কাঁটা হয়ে উঠছেন রুদ্রবাবু, এলাকার প্রায় বেশিরভাগ মানুষই তার সাথে থাকে, তাকে ভালোবাসে। ধীরে ধীরে রুদ্রবাবুর প্রভাব এতটাই বিস্তৃত হয় যে বীরেন ভট্টাচার্য প্রমাদ গোনেন, দুজনের বেশ কয়েকবার ঝামেলাও হয়, বীরেন ভট্টাচার্য ই ঝামেলা করেন হুমকিও দেন কিন্তু রুদ্রবাবু তাতে বিশেষ বদলান না, তারপর শেষে যখন তিনি জানতে পারেন যে এলাকা থেকে ভোটে দাঁড়ানোর জন্য তাকে বাদ দিয়ে রুদ্রবাবুর ধাম চিন্তা করছে পার্টি তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারেন না, এরমধ্যেই তিনি জানতে পারেন যে রুদ্রবাবুর ছেলে কিশোর অভয়ের সাথে তার কিশোরী ভাইঝি তাথৈএর একটা সম্পর্কের গুজব ছড়াচ্ছে, রাগে পুরো শরীর জ্বলতে থাকে তার ব্যাটার বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার শখ হয়েছে, এবং শিক্ষা দিতেই হবে, তখন তিনি স্থির করেন যে এই রুদ্র রায় চৌধুরীকে সপরিবারে শেষ করবেন তিনি।
প্রথমটায় ভাইকেই দায়িত্ব দেন তিনি কাজটা করার কিন্তু পরে বুঝতে পারেন কাজটা শুধু করলেই হবে না এমন ভাবে করতে হবে যাতে লোকজন ক্ষেপে না যায়, তাই একরাতে দলবল সহ হামলা করেন রুদ্রবাবুর বাড়িতে যদিও তার একটু আগেই রুদ্রবাবুর এক দূর সম্পর্কের বোনের স্বামী মদন যে তার হয়ে কাজ করে সে খবর দেয় কাজ হয়ে গেছে, তার স্ত্রী ধীরেন বাবুর কথামতো বিষটা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
কিন্তু তাও নিশ্চিন্ত হন না বীরেন ভট্টাচার্য, রাতের অন্ধকারে দলবল নিয়ে গিয়ে রুদ্রবাবুর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন, পরদিন এলাকায় বিশ্বস্ত লোক দিয়ে রটিয়ে দেন যে কারেন্টেথ লাইনে শর্টসার্কিট করে আগুন লেগে গেছে।, এলাকার কয়েকজন তার নামে পুলিশে কমপ্লেইন জানিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে যোগাযোগ থাকায় খুব একটা ঝামেলায় জড়াননি বীরেন ভট্টাচার্য, যদিও পরে যেকজন তার বিরুদ্ধে পুলিশে গিয়েছিল সবকটাকে সাবাড় করেছিলেন।
এও আজ প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন তাদের কথা এই সেদিন ভাই ধীরেন আবার রুদ্রের নামটা নেওয়ায় মনে পরে তার,তারপর আজ হটাৎ আবার মনে পরলো, এই যে অফিসে বসে আছেন তিনি এই অফিসটা যে জমিতে সেখানেই বাড়ি ছিল রুদ্রবাবুর, রুদ্রবাবু আর তার পরিবার মারা যাবার পরে অধিকার করেন তিনি, কিন্তু সেদিন যেকোনো ভাবেই হোক আগুন থেকে বেঁচে যায় রুদ্র আর তার পরিবার এটা একটু পরেই বুঝতে পারেন তিনি, বাড়ির পিছন দিক থেকে পালাতে দেখে ধাওয়া করেন , বীরেন ভট্টাচার্যের করা একটা বুলেট লাগে রুদ্রবাবুর পিঠে কিন্তু তাও নাগাল পান না তাদের, পুরো দলকে চারিদিকে ছড়িয়ে খুঁজতে পাঠান তিনি, শেষে তার বিশ্বস্ত জগা এসে উৎফুল্ল গলায় জানায় দাদা, শেষ করে দিয়েছি... তিনজনকে মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছি, আশেপাশে আনেকটা জায়গা ফাঁকা ছিল ফলে পতিবেশীরা কিছু জানতে পারেনি, শুধু তাই নয় আগুনে তো রুদ্রবাবুরা মারা যাননি কিন্তু সবার কাছে আগুনে মরাটাই প্রমাণিত করতে রাতারাতি তিনটে লাশ মর্গ থেকে সরিয়ে এনে এই আগুন লাগা বাড়ির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন, ওদের আত্মীয় বলতে ওই বোন আর তার স্বামী মদন ছিল শুধু সুতরাং ওদের দিয়েই মিথ্যা শনাক্ত করিয়েছিলেন যে আগুনে পোড়া তিধটে বডি রুদ্রবাবু তাঁর স্ত্রী আর ছেলের।
হটাৎ করে সম্বিত ফিরে জেগে উঠলেন বীরেন ভট্টাচার্য এতবছর পরে না জানি কেন পুরনো কথা মনে পরলো তার সাথে কিছুদিন আগে তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা কটা কথা মনে পরলো "তোমারও পতনের সময় এসে গেছে সপরিবারে বিনাশ হবে, আর তোমার বিনাশ করবে যে সে আসছে... মৃত্যুর কোল থেকে মৃত্যুঞ্জয় হয়ে আসছে সে তোমার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে, সমূলে বিনাশ হবে তুমি", বীরেন ভট্টাচার্য বুঝলেন অজানা ভয়ে তার পা আড়ষ্ট, কাঁপছে, কে আসছে তার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে?
[/HIDE]
নিজের অফিসে একা বসে ছিলেন বীরেন ভট্টাচার্য একটু পর বাইরে থেকে ভাই ধীরেন বাবুর গলার আওয়াজ এল "দাদা বাড়ি চলো রাত হয়েছে"।
তুমি যাও আমি একটু পর আসছি, এখন একটু একা থাকতে চাই।
আসলে বাইরে যতই নিজেকে শক্ত দেখান ভেতর অনেকটাই ভেঙে পরেছেন বীরেন বাবু, তার এতবছরের সঞ্চিত ধন কেউ এভাবে সাফ করে দিয়ে যাবে এটা কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না তার কিন্তু সেটা তো হয়েছে, এখন কথা হচ্ছে কে করেছে?। গত কয়েকমাস ধরেই বুঝতে পারছিলেন কেউ বা কারা যেন তার পিছনে লেগেছে, তার কন্সট্রাকশন সাইটে তারই দলের লোকদের মেরে পুড়িয়ে দিয়েছে, তার রক্ষিতাকে কেউ সাথে নিয়ে গেছে সেখানেও তার দলের কিছু লোককে শেষ করেছে, তার সঞ্চিত ধন সাফ করেছে এবং তারপরেও খবর পেয়েছেন যে শহর জুড়ে তার যে কটা চোলাই মদের ঠেক ছিল সবকটায় হামলা হয়েছে সব শেষ করে দিয়েছে। বীরেন বাবু ভেবেছিলেন এসব সরকারের কাজ তাই তাকে শেষ করেছেন কিন্তু তারপরেও...... কে করেছে সেটা কিছুতেই ধরতে পারছেন না।
ছোটো থেকেই মস্তান গোছের ছিলেন বীরেন ভট্টাচার্য, স্কুলে উচ্চশিক্ষা পাঠের সময়ই ভাই এবং ক্লাসের আরও কয়েকজন ছেলে নিয়ে দল গড়েছিলেন তারপর কলেজে উঠে দলে আরও ছেলে যোগ দেয়। কলেজ ছাড়ার পরে প্রমোটিংএর ব্যাবসা শুরু করেন বাপেরও অনেক টাকা ছিল দুনম্বরি টাকা তাই ব্যাবসা শুরু করতে অসুবিধা হয় নি, এই প্রোমোটিংএর ব্যাবসার সাথে এলাকায় নিজের ক্ষমতা দেখাতে শুরু করেন, দলে যারা ছিল তারাও তো খুব সুবিধার ছিল না তারই মতো ছিল, কত লোকের জমি কেড়ে নিয়েছেন কত লোককে স্রেফ গায়েব করে দিয়েছেন তার ইয়ত্তা নেই, কত মেয়ে-বউদের সর্বনাশ করেছেন তার হিসাব নেই, বাপের টাকা আর কিছু ক্ষমতাশালী লোকের সাথে পরিচয় থাকার জন্য কয়েকবার জেলে গিয়েও ছাড়া পেয়েছিলেন তার বেশি কিছু হয়নি, ধীরে ধীরে তার দাপট এত বাড়তে থাকে যে সবাই তার নাম শুনলেই ভয়ে কাঁপতে থাকতো। এই আতঙ্কটার জন্যেই এতদিন কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি ,একজন ছাড়া... রুদ্র, রুদ্র রায় চৌধুরী।
বীরেন ভট্টাচার্য অতীতের কোনো এক স্মৃতির অতলে তলিয়ে যান, এই রুদ্র রায় চৌধুরীকে ছোটো থেকেই চিনতেন তিনি, দুজনে আলাদা স্কুলে পড়তেন একবার ইন্টার স্কুল কম্পিটিশনে দেখা হয়েছিল, দুজনের স্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেছিল কিন্তু ফাইনালে রুদ্রবাবু নাচিয়ে ছেড়েছিলেন বীরেন ভট্টাচার্যকে বলাইবাহুল্য রুদ্রবাবুর স্কুল জিতেছিল এবং সেরার পুরষ্কার উঠেছিল রুদ্রবাবুর হাতে। তারপর দুজনের মোলাকাত হয় কলেজে, একই কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন যদিও স্ট্রিম আলাদা, বীরেন বাবুর কমার্স আর রুদ্রবাবুর সায়েন্স, দুজনের বিল্ডিং আলাদা কিন্তু ক্যাম্পাসে, ক্যান্টিনে বা কমনরুমে মাঝে মাঝেই সাক্ষাৎ হতো। আর তারপর তো রুদ্রবাবু তারই এলাকায় জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে থাকতে এলেন স্ত্রী আর একরত্তি ছেলেকে নিয়ে।
দুজনের সামাজিক ব্যাবধান অনেকটাই ছিল, বীরেন ভট্টাচার্য আর্থিক দিক থেকে অনেকটাই ধনী ছিলেন রুদ্রবাবুর তুলনায়, রুদ্রবাবু কোনোমতে কিছুটা জমি কিনে তাতে একটা একতলা বাড়ি করেছিলেন, এলাকায় আসার কিছুদিনের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন রুদ্র বাবু, ভীষণ পরোপকারী ছিলেন তিনি এবং তার স্ত্রী, তার উপর নির্ভিক স্পষ্টবাদী। এইভাবেই সময় কাটতে থাকে ধীরে ধীরে বীরেন ভট্টাচার্য বুঝতে পারছিলেন যে এলাকায় তার আধিপত্য বিস্তারের প্রধান কাঁটা হয়ে উঠছেন রুদ্রবাবু, এলাকার প্রায় বেশিরভাগ মানুষই তার সাথে থাকে, তাকে ভালোবাসে। ধীরে ধীরে রুদ্রবাবুর প্রভাব এতটাই বিস্তৃত হয় যে বীরেন ভট্টাচার্য প্রমাদ গোনেন, দুজনের বেশ কয়েকবার ঝামেলাও হয়, বীরেন ভট্টাচার্য ই ঝামেলা করেন হুমকিও দেন কিন্তু রুদ্রবাবু তাতে বিশেষ বদলান না, তারপর শেষে যখন তিনি জানতে পারেন যে এলাকা থেকে ভোটে দাঁড়ানোর জন্য তাকে বাদ দিয়ে রুদ্রবাবুর ধাম চিন্তা করছে পার্টি তখন আর চুপ করে বসে থাকতে পারেন না, এরমধ্যেই তিনি জানতে পারেন যে রুদ্রবাবুর ছেলে কিশোর অভয়ের সাথে তার কিশোরী ভাইঝি তাথৈএর একটা সম্পর্কের গুজব ছড়াচ্ছে, রাগে পুরো শরীর জ্বলতে থাকে তার ব্যাটার বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার শখ হয়েছে, এবং শিক্ষা দিতেই হবে, তখন তিনি স্থির করেন যে এই রুদ্র রায় চৌধুরীকে সপরিবারে শেষ করবেন তিনি।
প্রথমটায় ভাইকেই দায়িত্ব দেন তিনি কাজটা করার কিন্তু পরে বুঝতে পারেন কাজটা শুধু করলেই হবে না এমন ভাবে করতে হবে যাতে লোকজন ক্ষেপে না যায়, তাই একরাতে দলবল সহ হামলা করেন রুদ্রবাবুর বাড়িতে যদিও তার একটু আগেই রুদ্রবাবুর এক দূর সম্পর্কের বোনের স্বামী মদন যে তার হয়ে কাজ করে সে খবর দেয় কাজ হয়ে গেছে, তার স্ত্রী ধীরেন বাবুর কথামতো বিষটা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
কিন্তু তাও নিশ্চিন্ত হন না বীরেন ভট্টাচার্য, রাতের অন্ধকারে দলবল নিয়ে গিয়ে রুদ্রবাবুর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন, পরদিন এলাকায় বিশ্বস্ত লোক দিয়ে রটিয়ে দেন যে কারেন্টেথ লাইনে শর্টসার্কিট করে আগুন লেগে গেছে।, এলাকার কয়েকজন তার নামে পুলিশে কমপ্লেইন জানিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে যোগাযোগ থাকায় খুব একটা ঝামেলায় জড়াননি বীরেন ভট্টাচার্য, যদিও পরে যেকজন তার বিরুদ্ধে পুলিশে গিয়েছিল সবকটাকে সাবাড় করেছিলেন।
এও আজ প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন তাদের কথা এই সেদিন ভাই ধীরেন আবার রুদ্রের নামটা নেওয়ায় মনে পরে তার,তারপর আজ হটাৎ আবার মনে পরলো, এই যে অফিসে বসে আছেন তিনি এই অফিসটা যে জমিতে সেখানেই বাড়ি ছিল রুদ্রবাবুর, রুদ্রবাবু আর তার পরিবার মারা যাবার পরে অধিকার করেন তিনি, কিন্তু সেদিন যেকোনো ভাবেই হোক আগুন থেকে বেঁচে যায় রুদ্র আর তার পরিবার এটা একটু পরেই বুঝতে পারেন তিনি, বাড়ির পিছন দিক থেকে পালাতে দেখে ধাওয়া করেন , বীরেন ভট্টাচার্যের করা একটা বুলেট লাগে রুদ্রবাবুর পিঠে কিন্তু তাও নাগাল পান না তাদের, পুরো দলকে চারিদিকে ছড়িয়ে খুঁজতে পাঠান তিনি, শেষে তার বিশ্বস্ত জগা এসে উৎফুল্ল গলায় জানায় দাদা, শেষ করে দিয়েছি... তিনজনকে মেরে জ্বালিয়ে দিয়েছি, আশেপাশে আনেকটা জায়গা ফাঁকা ছিল ফলে পতিবেশীরা কিছু জানতে পারেনি, শুধু তাই নয় আগুনে তো রুদ্রবাবুরা মারা যাননি কিন্তু সবার কাছে আগুনে মরাটাই প্রমাণিত করতে রাতারাতি তিনটে লাশ মর্গ থেকে সরিয়ে এনে এই আগুন লাগা বাড়ির মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন, ওদের আত্মীয় বলতে ওই বোন আর তার স্বামী মদন ছিল শুধু সুতরাং ওদের দিয়েই মিথ্যা শনাক্ত করিয়েছিলেন যে আগুনে পোড়া তিধটে বডি রুদ্রবাবু তাঁর স্ত্রী আর ছেলের।
হটাৎ করে সম্বিত ফিরে জেগে উঠলেন বীরেন ভট্টাচার্য এতবছর পরে না জানি কেন পুরনো কথা মনে পরলো তার সাথে কিছুদিন আগে তাকেই উদ্দেশ্য করে বলা কটা কথা মনে পরলো "তোমারও পতনের সময় এসে গেছে সপরিবারে বিনাশ হবে, আর তোমার বিনাশ করবে যে সে আসছে... মৃত্যুর কোল থেকে মৃত্যুঞ্জয় হয়ে আসছে সে তোমার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে, সমূলে বিনাশ হবে তুমি", বীরেন ভট্টাচার্য বুঝলেন অজানা ভয়ে তার পা আড়ষ্ট, কাঁপছে, কে আসছে তার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে?
[/HIDE]