What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ by Monen2000 (2 Viewers)

[HIDE]

কিচ্ছু হবে না আপনাদের দ্বারা, সবকটা অকর্মার ঢেঁকি" হাতের পেপারটা সজোরে টেবিলে ফেলে বললেন বীরেন ভট্টাচার্য, সামনে ধীরেন ভট্টাচার্য ও পুলিশের বড়কর্তা চুপ করে মাথা নিচু করে র‌ইলেন।

বীরেন ভট্টাচার্য আবার চিৎকার করে উঠলেন "সেদিন ছজন আর কাল রাতে চারজনকে কারা মেরে ফেললো? কি করছে আপনার পুলিশ ফোর্স?
"আমরা পুরো দমে খোঁজ চালাচ্ছি" তোতলাতে তোতলাতে কোনোমতে উত্তর দিলেন পুলিশের বড়োকর্তা।
কি খোঁজ করছেন? খোঁজ করে কি পেলেন?
স্যার, আমাদের স্পাই একটা খবর দিয়েছে
খবর? কি খবর?
আপনার মিস্টার সরকার কে মনে আছে?
কোন মিস্টার সরকার? দাদার বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি? বললেন ধীরেন বাবু।
"হ্যাঁ, স্যার তিনিই" বললেন পুলিশের বড়কর্তা একটা ঢোঁক গিলে আবার বললেন "ওনার উপর আমরা নজর রেখেছি, খবর পেয়েছি তার বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে রাতের দিকে কিছু লোকজনের যাতায়াত চলছে, গত পরশু‌ও লোকগুলো এসেছিল।
"ওর কথা তো আমার মনেই আসেনি" চিবিয়ে চিবিয়ে বললেন বীরেন ভট্টাচার্য, তারপর আবার বললেন "ঠিক আছে আপনি আসুন"
পুলিশের বড়কর্তা চলে গেলেন।
এতক্ষণে ধীরেন বাবু মুখ খুললেন "চিন্তা কোরো না দাদা ,ওই সরকারকে আজকেই.."
না, একদম না একটু অপেক্ষা করো ধীরেন এবার ওই সরকারকে এমন শিক্ষা দেবো যে ভবিষ্যতে ও আর আমার সাথে লাগতে আসবে না।
আচ্ছা দাদা এই চারজনেই তো তোমার ওই..
হ্যাঁ, ওকে আনছিল ওর সাথে নাকি একটা লোক দেখা করেছে, রেস্টুরেন্টে বসে কফি খেতে খেতে কথা বলছিল।
কে সে জানতে পেরেছো?
"সেটা জানার জন্যই তো নিয়ে আনছিলাম, কিন্তু এখন পাখি পালিয়েছে" তারপর কিছুটা স্বগোতোক্তির মতো বললেন "ভুলটা আমার‌ই মাগীকে এতদিন বাঁচিয়ে রাখাই উচিত হয়নি"
সেটা ঠিক দাদা।
কিন্তু এবার একবার হাতে পেলে আর ভুল হবে না, পুরো শহরে নিজের লোক ছড়িয়ে দাও ধীরেন ওর খোঁজ করো
অলরেডি করে দিয়েছি দাদা।

"তোমার কি মনে হয় ওই শিউলী দেবী কোনো সাহায্য করতে পারবেন?" ড্রাইভারের সিটে বসা আমির তার পাশে বসা রয়কে প্রশ্নটা করলো।
পারবে, অবশ্য যদি ওনার বিশ্বাস জিততে পারি তবেই
কিন্তু বীরেন ভট্টাচার্যের সব খবর‌ই তো আমরা পাচ্ছি তাহলে ওনাকে কেন দরকার?
একটা দরকার তো তুমিও জানো, নাম রোহিত।
ওকে নিয়ে তোমার কোনো প্ল্যান আছে মনে হচ্ছে।
আছে, তবে সেটা এখন নয়, আর সেটা নিতান্ত দরকার পরলেই ব্যবহার করবো নচেৎ নয়।
কিন্তু আর কিছু?
তোমার লোকজন বীরেন ভট্টাচার্যের বাইরের সব খবর জোগাড় করছে কিন্তু কিছু কিছু খবর সবসময়ই থাকে যেটা এতটাই গভীরে থাকে যে আত্মীয়-পরিজন ছাড়া কেউ জানেনা, আর তাদের মধ্যে কেউ যদি রক্ষিতা হন তাহলে তো কথাই নেই।
কিন্তু শিউলী দেবী এখন ভট্টাচার্য পরিবারের বাইরে তাহলে?
কিন্তু উনি ভট্টাচার্য পরিবারের ভিতরের সবাইকে চেনেন, সবার নারী নক্ষত্র জানেন, তিনি যদি মুখ খোলেন তাহলে তার খবর আমাদের লোকেদের খবরের থেকে আরো পোক্ত হবে, কিন্তু একটা জিনিস কিছুতেই আমার বিশ্বাস হচ্ছে না।
কি সেটা?
বীরেন ভট্টাচার্যের মতো লোক এতদিন ওনাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন কেন?
শিউলী দেবীকে জিজ্ঞেস করেছিলে? কি বললেন?
উনি যা বললেন সেটা সত্যি হতে পারে কিন্তু পুরো সত্যি নয়, কিছু একটা লুকিয়ে যাচ্ছেন উনি।
কি হতে পারে
খুব সম্ভবত উনি এমন কিছু জানেন যেটা বীরেন ভট্টাচার্য জানে না অথচ জানতে চায়, আর সেটাই শিউলী দেবীকে এতদিন বাঁচিয়ে রেখেছে।
কিন্তু কথাটা বীরেন ভট্টাচার্য জেনে গেলে..
ওর কাছে শিউলী দেবীকে বাঁচিয়ে রাখার দরকার পরবে না।
উনি কি তোমাকে বলবেন?
বিশ্বাস অর্জন করতে পারলে বলতেও পারেন, তবে না বললেও ওনাকে দেওয়া কথা আমি রাখবো ওনাকে আর ওনার ছেলেকে প্রোটেক্ট করবো।
আমির আর কোনো কথা না বলে গাড়ি চালাতে থাকে, একবার পাশে তাকিয়ে দেখে রয় জানালা দিয়ে গাড়ির বাইরে দেখছে, এই ছেলেটাকে মাঝে মাঝে বড়ো অদ্ভুত লাগে আমিরের বয়সে আমির ১-২ বছরের বড়ো হয়তো কিন্তু ক্ষমতায়, প্রতিপত্তিতে সে এই রয়ের ধারেকাছেও আসে না অথচ এই দূরত্ব কে রয়‌ই ঘুচিয়ে দিয়েছে শুধু আমির নয় ওর মতো বহু লোক আছে যাদের এই ছেলেটা নির্দিধায় কাছে টেনে নিয়েছে কোনো স্বার্থ ছাড়াই এ তার নিজের চোখে দেখা আজ থেকে তো দেখছে না তাকে সেই কবে থেকে চেনে, আজ‌ও প্রথম পরিচয়ের দিনটার কথা মনে পরলে লজ্জায় এতটুকু হয়ে যায় আমির।





[/HIDE]




[HIDE]


কিছু বছর আগে....


দেশের একটা শহর যার রাতের অন্ধকার আরো ভয়ানক কালো আর সেই কালো অন্ধকারে বাস করে অজস্র অন্ধকারের বাসিন্দা তাদের কারো কারো কাজকর্ম কালো আবার কারো ভাগ্যটাও কালো।
এই দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক ছিল আমির, এক বস্তি সংলগ্ন এলাকায় থাকতো আমিরের ঘরে সে এবং তার অসুস্থ আম্মি, পড়াশোনা বেশীদূর হয়নি ফলে অনেক চেষ্টা করেও কোনো ভালো চাকরি জোগাড় করতে পারেনি তখন বাধ্য হয়ে নাম লেখায় অপরাধ জগতে, কখনো রাজনৈতিক নেতাদের হয়ে আবার কখনো কোনো বড়লোক ব্যাবসায়ীর হয়ে কাজ করতো, আমিরের সাথেই থাকতো সেই বস্তির আরো কিছু ছেলে, তাদের নিয়ে একটা দল গড়েছিল আমির সেই দল নিয়েই কাজ করতো, কিন্তু তারা জানতো না যে দরকার ফুরিয়ে গেলে এইসব বড়োলোকেরা আমিরদের মতো লোকদের ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলে দিতে দু-বার ভাবে না, ঠিক যেমন আমিরকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল দরকার ফুরোনোর পরে, তখন তার আম্মির ভীষণ অসুখ কিন্তু চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা লাগবে যেটা আমিরের ছিল না এতদিন যাদের হয়ে কাজ করেছে যাদের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছে তারা আর তাকে চিনলো‌ই না। শেষে আমির আর ওর দলের কয়েকজন ঠিক করলো শহরের রাতের দিকে একা চলাফেরা করে এমন লোকদের লুঠ করবে, রাতের দিকে অনেক বড়োলোক মহিলা আর পুরুষেরাই নাইট ক্লাব থেকে পার্টি করে বাড়ি ফেরে আর বেশিরভাগই মাতাল অবস্থায় থাকে সুতরাং সুযোগ বুঝে ঝাঁপিয়ে পরে কাজ হাসিল করতে খুব একটা কষ্ট হবে না অনেক সময় এইসব লোক বা মহিলাদের কাছে টাকা ছাড়াও বিভিন্ন দামী জিনিস থাকে যেগুলো চোর বাজারে বিক্রি করে কিছু এক্সট্রা টাকা হাতে আসে।
সেইমতো সব ঠিক করে এক রাতে এক নাইট ক্লাবের বাইরে ওঁত পেতে ছিল আমিররা, একটু রাতের দিকে লক্ষ্য করলো একটা ইয়ং ছেলে নাইট ক্লাব থেকে বেরিয়ে পার্কিং এরিয়ার দিকে যাচ্ছে, আমিররা নিঃশব্দে পিছু নিল কিন্তু পার্কিং এরিয়ায় গিয়ে আর দেখতে পেলো না, আমিররা এদিক ওদিক দেখতে লাগলো একজন বললো "ভাইজান মালটা পালিয়েছে মনে হচ্ছে?"
"তোমাদের আমার পিছনে কে লাগিয়েছে?" অপ্রত্যাশিত প্রশ্নটা শুনে আমির ও বাকীরা চমকে উঠলো তারপর একটু এদিক সেদিক তাকাতেই দেখতে পেলো একটু দূরে অন্ধকারে একটা মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে, মূর্তিটা একটু এগিয়ে আলোর গণ্ডির মধ্যে এলে ওরা দেখলো এটা সেই ছেলেটা যার পিছু নিয়েছিল ওরা, "কি হলো তোমাদের আমার পিছনে কে লাগিয়েছে?" প্রশ্নটা আবার করে ছেলেটা, উত্তর দেওয়ার বদলে আমিরের একজন সঙ্গী বললো "এর তো হেব্বি সাহস, যাইহোক আমাদের কাজ হয়ে যাবে"। আমিরের দলের সবাই এগিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে, আর আমির ছেলেটার সামনে এসে একটা কাট্টা নামক বন্দুক উঁচিয়ে ধরে বলে "আমাদের কেউ পাঠায়নি, নিজেরাই এসেছি"
ছেলেটা: কেন?
আমির: মাল্লু কামাতে, এখন পকেট খালি কর তাড়াতাড়ি পকেটে যা মালকড়ি আছে সব দিয়ে দে।
আর না দিলে? বেপরোয়া উত্তর দেয় ছেলেটা। ছেলেটার পিছন থেকে একজন একটু হেসে উত্তর দেয় "না দিলে ভাইজানের কাট্টা তোর ভেজা উড়িয়ে দেবে"।


[/HIDE]
 
[HIDE]

ছেলেটার মধ্যে ভয়ের কোনো লক্ষণ দেখা গেল না সে বললো "তোমরা জানো তোমরা এই মুহূর্তে কার সামনে দাঁড়িয়ে আছো?"
আমির: বেশি জানার দরকার নেই কি বললাম কানে গেল না? তাড়াতাড়ি ক্যাশ ছাড়।
হটাৎ বিদ্যুৎগতিতে ছেলেটা আমিরের হাতে ধরা কাট্টার নলের মুখ থেকে পাশে সরে যায়, তারপর কেউ কিছু বোঝার আগেই অদ্ভুত উপায়ে আমিরের হাতটা ধরে মুড়িয়ে পিছনে নিয়ে যায় নিজেও আমিরের পিছনে যায় আমির হাতের ব্যাথায় আঃ করে ওঠে, অতর্কিত আক্রমণে প্রথমটা হতচকিত হয়ে গেলেও আমিরের দলের সঙ্গীরা তাদের দলপতির গতি দেখে তারা ছেলেটাকে আক্রমণ করে কিন্তু ছেলেটা প্রথমে একটা ধাক্কায় আমিরকে একসাইডে ঠেলে ফেলে তারপর বাকীদের উপর চড়াও হয়, আমিরের দলের ছেলেগুলোর প্রতিটা আঘাত থেকে অদ্ভুত ভাবে নিজেকে কাটিয়ে নিচ্ছিল এবং তারপর‌ই এত দ্রুত গতিতে পাল্টা আঘাত করছিল যে ওরা সামলাতে পারছিল না খুব শীঘ্রই ওরা প্রত্যেকে কেউ কিক কেউ পাঞ্চ খেয়ে এখানে সেখানে ছিটকে পরে আর্তনাদ করতে থাকলো,কিন্তু ছেলেটার গায়ে একটা আঁচড়‌ও লাগেনি।
এবার ছেলেটা ওদের সামনে দাঁড়িয়ে বললো "আমার পিছনে কেন?"
কেউ কোনো উত্তর দিচ্ছে না দেখে আবার বললো "উত্তর দাও নাহলে তোমাদের সবকটাকে পুলিশ ডেকে এনকাউন্টার করিয়ে দেবো"।
এবার আমির আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো তারপর বললো "আমার টাকার দরকার ছিল, আমার আম্মির খুব শরীর খারাপ, চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার, কিন্তু অনেক চেষ্টার পরেও জোগাড় করতে পারিনি তাই"
তুমি কোথায় থাকো?
বস্তিতে
ঠিক আছে চলো, আমিও যাবো যদি দেখি মিথ্যা বলছো তাহলে ওখানেই পুঁতে রেখে আসবো।
বস্তির সবার ঘরেই অভাব সবারই ঘরে কোনো না কোনো সমস্যা, আমিররা যখন বস্তিতে ফিরে এলো তখন রাত অনেক, আমির ছেলেটাকে নিজের ছোট্ট ঘরে নিয়ে গেল তারপর নিজের আম্মিকে দেখিয়ে বললো "এই আমার আম্মি যার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার কিন্তু..."
ছেলেটা বাইরে বেরিয়ে এল তার পিছন পিছন আমির‌ও বেরিয়ে এল তারপর ছেলেটার পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসে বললো "মাফ করে দিন, পুলিশকে কিছু বলবেন না আমার আম্মির আমি ছাড়া আর কেউ নেই, আর আমার জন্য‌ই আমার বন্ধুরা গিয়েছিল, আমার জন্য ওরা বিপদে পরুক এটা আমি চাই না"
আমির ভেবেছিল যে ছেলেটা হয়তো তার অনুরোধ শুনবে না কিন্তু আমিরকে অবাক করে দিয়ে ছেলেটা বললো "নিজের আম্মিকে নিয়ে আমার সাথে চলো, একা নিতে পারবে? নাহলে আরো কয়েকজনকে ডেকে নাও"
আমির অবাক হয়ে বললো: কোথায়?
হাসপাতালে।
আমিরের যেন নিজের কানকে বিশ্বাস হচ্ছে না যে ছেলেটাকে খানিকক্ষণ আগে লুট করতে চাইছিল সেই এখন তার আম্মিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইছে, ছেলেটা আবার বললো "কি হলো, কথা কানে যাচ্ছে না?"
সেইরাতেই আমিরের আম্মি হাসপাতালে ভর্তি হলো চিকিৎসা শুরু হলো যদিও খুব একটা লাভ হলো না, কিছুদিনের মধ্যেই আমিরের আম্মি মারা গিয়েছিল ছেলেটা চিকিৎসার ত্রুটি রাখেনি সব খরচ সে দিয়েছে কিন্তু কোনো লাভ হলো না, আম্মিকে গোর দেওয়ার পরে সবাই চলে গেলেও ছেলেটা গেলনা সে আমিরের কাঁধে হাত রেখে তাকে সান্ত্বনা দিতে থাকলো, এরপর আমিরকে একটা কাজ‌ও জোগাড় করে দিল, শুধু আমির নয় বস্তির অনেককেই অনেক সাহায্য করে।

প্রথমে ছেলেটির জোগাড় করে দেওয়া কাজ করলেও খুব তাড়াতাড়ি ছেলেটার ঘনিষ্ঠ অনুচর হয়ে ওঠে আমির, ধীরে ধীরে সেই ঘনিষ্টতা বন্ধুত্বে পরিবর্তিত হয়, স্যার ছেড়ে ধীরে ধীরে নাম ধরে ডাকতে থাকে, অদ্ভুত চরিত্র এই রয়‌-এর একাধারে শক্ত আবার অপরদিকে নরম, জুডো-ক্যারাটে-বক্সিং ছাড়াও মার্শাল আর্টের হ্যাণ্ড কমব্যাটের অনেক টেকনিক জানে শুধু জানে বলা ভুল একেবারে এক্সপার্ট, খালি হাতে একাধিক সশস্ত্রশত্রুকে ঘায়েল করতে বহুবার নিজের চোখে দেখেছে আমির, আর কিছুটা নমুনা তো প্রথম পরিচয়ের রাতে নিজের উপরেই পেয়েছিল, শহরের অন্ধকার জগতে অবাধে বিচরণ করে, অনেক বড়ো বড়ো নামের লোক তার হুকুম তামিল করার জন্য সবসময় তৈরি থাকে, আমির নিজেও রয়ের সব হুকুম বিনা প্রশ্নে তামিল করে, আর কেউ জানুক বা না জানুক কিন্তু আল্লাহ জানে যে আমির নেমকহারাম নয়,রয়ের জন্য নিজের শেষ রক্তবিন্দু দিতেও কসুর করবে না আমির।



[/HIDE]
[HIDE]

বর্তমান সময়


গাড়ি চালাতে চালাতে আমির কিছুক্ষণের জন্য কিছু বছর আগের সময়ে চলে গিয়েছিল এখন আবার বর্তমানে ফিরে আসে।
বীরেন ভট্টাচার্যের সাথে কিসের শত্রুতা সেটা কোনোদিন বলেনি, আমির জানতেও চায়নি সে শুধু জানে রয়ের হেফাজত করতে হবে আর রয়ের সব হুকুম পালন করতে হবে, শুধু কি সেই রয়ের জন্য বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ে? রয়‌ও কি তার জন্য বিপদের মুখে ঝাঁপিয়ে পড়েনি? পড়েছে তো বহুবার পড়েছে, তাদের সম্পর্ক টাকে মালিক চাকরের চোখে কোনোদিন দেখেনি বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে, প্রথম প্রথম আমির একটু সংকোচ বোধ করলে ধমকেছে, এরকম বন্ধুর জন্য জীবন বাজি রাখবে না তো কার জন্য রাখবে?
গাড়িটা একটা অ্যাপার্টমেন্টের ভিতরে ঢুকে গেল, পার্কিং এরিয়াতে গাড়ি রেখে দুজনে লিফটে ঢুকে গেল।

একটা ফাঁকা গোডাউনের ভিতর থেকে একজনের আর্তনাদের শব্দ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে কিন্তু শোনার কেউ নেই ,শুধু যে গোডাউনটা ফাঁকা তাই নয় আশেপাশের অনেকটা অঞ্চল ফাঁকা নির্জন। গোডাউনের ভীতর থেকে যার আর্তনাদ আসছে তিনি আর কেউ নন বীরেন বাবুর বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ানো সমর সরকার, পুলিশের ইনফর্মেশন অনুযায়ী যার বাড়িতে রাতের দিকে বেশ কিছু লোকের যাতায়াত চলছে তাই বীরেন বাবু ওনাকে তুলে নিয়ে এসেছেন এবং মারধর করছেন, সমর বাবুর মুখ নাক থেকে রক্ত ঝড়ছে, শরীরের অনেক জায়গায় কালশিটে দাগ পরে গেছে, কিন্তু তাও মার থামছে না, সামনে চেয়ারে বসে উপভোগ করছেন স্বয়ং বীরেন ভট্টাচার্য।
বীরেন ভট্টাচার্য এবার হাত তুলে থামতে বলায় প্রহার থামলো, সমর বাবু তখন গোঙাচ্ছেন নেতিয়ে পড়েছেন ওনার দুহাত দুদিকে টেনে বেঁধে রাখা হয়েছে মার থামতেই মাথাটা বুকের উপর ঝুঁকে পড়লো হটাৎ পিছন থেকে একজন সমর বাবুর চুল টেনে মাথাটা সোজা করে বীরেন বাবুর দিকে ধরলো,
বীরেন বাবু: কি সমর? তুমি তো জানো আমার বিরুদ্ধে যাবার পরিণাম কি হয় তারপরেও আমার বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস পেলে? আমার দশজন লোককে মেরে আমার মালকে তুলে নিয়ে গেলে?
বীরেন বাবু ইশারা করতে আরো কয়েকটা ডাণ্ডার আঘাত সমর বাবুর শরীরের উপর পরলো একটু পরে সমর সরকার কোনোমতে বললো : আ আ আপনাকে কতবার তো বললাম যে আ আ আমি আপনার কোনো লোককে মারিনি, আর আর মাল? কোন মাল?
বীরেন বাবু: তোমার বাড়িতে বেশ কিছুদিন ধরে যে লোকজনের যাতায়াত চলছে তারা কারা?
সমর সরকার উত্তর দিচ্ছে না দেখে আবার মারার হুকুম হলো এবং আবার আর্তনাদ শুরু হলো এবারে বেশীক্ষণ সহ্য করতে পারলেন না অজ্ঞান হয়ে গেলেন সমর বাবু, বীরেন ভট্টাচার্য গোডাউনের বাইরে এসে পায়চারি করতে লাগলেন সাথে ধীরেন বাবুও ছিলেন তিনি বললেন: কি মনে হয় দাদা ওই সমর সরকার সত্যি বলছে?
বীরেন বাবু: কিন্তু ও যদি সত্যি বলে তাহলে কে হতে পারে? ওর উপর আরো কিছুক্ষণ দাওয়াই চলুক তারপর দেখা যাবে।



[/HIDE]
 
[HIDE]

"শিউলী দেবী কোনো ইনফরমেশন দিলেন যা কাজে আসতে পারে? " প্রশ্নটা করে আমির
"এখনও পর্যন্ত না, বোধহয় এখনো আমাকে বিশ্বাস করতে পারছেন না" উত্তর দেয় রয়
আমির: বলো কি ওনাকে বীরেন ভট্টাচার্যের কবল থেকে উদ্ধার করলে,নতুন জায়গায় সুরক্ষিত রাখলে ওনার ছেলের জন্য অন্য শহরে স্কুলের বন্দোবস্ত করলে তার পরেও বিশ্বাস হচ্ছে না?
রয়: সেটা অস্বাভাবিক নয়, ওনার অবিশ্বাস থাকতেই পারে
উনি আদৌ সাহায্য করবেন তো?
দেখা যাক
"আর যদি না করেন তখন কি করবে?" আমির আবার প্রশ্ন করে
রয় উত্তর দেয় "আমরা যখন এখানে আসি তখন কি ওনার কথা জানতাম? জানতাম না তো? তাহলে? উনি যদি হেল্প করেন তাহলে সেটা উপরি হবে না করলে আমি আমার প্ল্যান মতোই চলবো"।
মহিলা কিন্তু তোমার উপর বেশ নজর দিচ্ছে খেয়াল করেছো?
তোমার হিংসে হচ্ছে?
কিকরে করো বলোতো?
কি?
এই যে এত সহজে মেয়ে বা মহিলাদের নিজের প্রতি আকর্ষণ করতে, আজ থেকে তো দেখছি না তোমাকে।
আমি কিছুই করিনা
তাহলে মেয়েরা তোমার প্রতি এত আকৃষ্ট কেন? এমনকি অনেক বিবাহিত বা ডিভোর্সি মহিলারাও, আর এখন এই শিউলী দেবীও।
বিশ্বাস করো আমি ওনাদের জোর করিনা
আমি জানি তুমি জোর করো না, ওরা নিজে থেকেই ধরা দেয়।
দুজনেই হাসতে শুরু করে। একটু পরে রয় বলে "কি ব্যাপার বলোতো আমার প্রতি আকৃষ্ট মহিলা বা মেয়েদের সম্পর্কে একটু বেশীই খোঁজখবর নিচ্ছো?"।
নোট করে রাখছি
কেন?
একদিন যখন ভাবিজান আসবেন আর আমাকে তোমার এক্সদের কথা জিজ্ঞেস করবেন তখন ডিটেইলস এ বলতে হবেনা?
আমির আবার হাসতে লাগলো তারপর বললো: এবার কিন্তু তোমার বিয়ে করা উচিত, নাহয় এখন মেয়ে ঠিক করে রাখো এই বীরেন ভট্টাচার্যের কেসটা সালটে দিয়েই বিয়ে করে নেবে, নাকি দেখা আছে?
রয়: তুমি যেটার কথা বলছো তার জন্য মন দরকার হিন্দিতে যাকে দিল বলে, আমার সেটা নেই
আমির: আর কেউ না জানুক কিন্তু আমি জানি তোমার মতো বড়ো মন খুব কম লোকর‌ই থাকে, আমি নিজেই সাক্ষী।
রয় ঈষৎ গম্ভীর হয়ে যায় তারপর বলে: আমার বিয়ে হবে না, তার থেকে তুমি করে নাও, দেখা আছে কেউ নাকি দেখবো?।
এবার আমির যেন একটু লজ্জা পায় বলে: কি যে বলো তুমি। আমিরকে লজ্জা পেতে দেখে রয় হাসতে থাকে।
একটা রাস্তার উপরে গাড়ি চলাচলের ওভারব্রিজে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল দুজনে রাতের আকাশ পরিষ্কার একটুও মেঘ নেই অজস্র তারা দেখা যাচ্ছে আর চাঁদ, রয় সেদিকে তাকিয়ে র‌ইলো, একটু পরে আমির বললো "এখন কোথায় যাবে? বাড়ি?"
"এখনই কি, আরেকটু রাত হোক চলো আজ ক্লাব থেকে ঘুরে আসি অনেকদিন যাওয়া হয় না" বললো রয়। দুজনে গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট করলো।
নাইট ক্লাবের ভিতরে উদ্দাম নাচানাচি চলছে সাথে মদ্যপান, ছেলে-মেয়ে কোনো বিভেদ নেই। রয় আর আমির ক্লাবের ভিতরে ঢুকে বার কাউন্টারে গিয়ে বসলো, রয় আর আমির কেউই অ্যালকোহল খায় না তাই দুজনেই সফট ড্রিংক নিল। দুজনে নৃত্যরত ছেলে মেয়েদের দেখতে লাগলো, আমির হটাৎ বললো: সব জায়গাতেই নাইট ক্লাবের পরিবেশ এক।
রয়: তো তুমি কি চাও জায়গা বদলে নাইট ক্লাবে পূজো হবে?
আমির: কিন্তু এই যারা নেশা করে নাচছে এদের মধ্যে অনেকের‌ই বয়স এখনো কাঁচা।
"আপনি এমন বলছেন যেন আপনি পেকে বুড়ো হয়ে গেছেন" এক তৃতীয় ব্যক্তি বলে উঠলো আর এই তৃতীয় ব্যাক্তি হলো বারটেণ্ডার ছেলেটা, আর এমনভাবে কথাটা বললো তাতে বোঝা যায় যে রয় আর আমিরকে বেশ ভালো করেই চেনে।
রয় তাকে জিজ্ঞেস করলো: কেমন আছো রাজেন?
রাজেন নামের বারটেণ্ডার ছেলেটা একটু হেসে বললো: আপনার দয়ায় ভালোই চলছে স্যার
রয়: আমার দয়া নয় মোটেই যাইহোক কোনো খবর আছে?
রাজেন নামের এই ছেলেটা আসলে রয়ের দলের লোক, নাইট ক্লাবে অনেক বড়ো ঘরের ছেলে মেয়ের আসে আবার অনেক বড়ো বড়ো লোক‌ও আসে অনেকেই বারে বসে মদ খেতে খেতে গল্প করে এতে অনেক সময় গোপন কথা জানা যায়, সেই খবরগুলো প্রয়োজন মতো রয়কে সরবরাহ করে রাজেন।
আজ বললো: না স্যার, তবে একজন আছেন যার সাথে হয়তো আপনি আলাপ করতে চাইবেন।
আমির বললো: কে? কার কথা বলছো?
রাজেন তখন ইশারায় একটা মেয়েকে দেখিয়ে বললো: ওই দেখুন বৃষ্টি ভট্টাচার্য, বীরেন ভট্টাচার্যের মেয়ে।
রয় এবং আমির দুজনেই যেদিকে রাজেন ইশারা করলো সেদিকে তাকালো নীল রঙের ড্রেস পরে আর নীল হিল জুতো পরে একটা মেয়ে নাচছে, হিল জুতো পরেও অনায়াসে নেচে চলেছে বোঝাই যাচ্ছে মেয়েটির অভ্যাস আছে মেয়েটা সুন্দরী বয়স রয়ের সমবয়সী, ফর্সা, ঠোঁটে ড্রেসের সাথে ম্যাচিং করে নীল লিপস্টিক, রয় বাইরে থাকলে বেশিরভাগ সময় চোখে গগলস্ পরে থাকে সে দিন হোক বা রাত, আজকেও নাইট ক্লাবে রয় গগলস্ পরেই আছে এবং গগলসের ভিতর থেকেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে বৃষ্টিকে দেখতে লাগলো, বৃষ্টির যদিও অন্য কোনো দিকে হুশ নেই সে একমনে নেচে চলেছে মাঝে মাঝে বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে ওরা বোধহয় ওর সাথেই এসেছে।
রয়কে ওভাবে তাকিয়ে দেখতে দেখে আমির বললো: কি ভাবছো বলোতো?
রয়: আপাতত কিছু না, শুধু অবজার্ভ করছি।
আমির: চলো, এবার ফিরি।
রয়: তুমি যাও আমি পরে যাচ্ছি।
আমির: কেন? ওকে এখন দেখবে?
হুমম
তুমি একা এখানে থাকবে? তাহলে আমিও থাকবো তোমার সাথে কিছু হলে.
দরকার নেই তুমি যাও, আর গাড়ি নিয়ে যাও আমি ক্যাব নিয়ে নেবো, আমার কিচ্ছু হবে না।
কিন্তু...
কোনো কিন্তু না, তুমি গিয়ে রেস্ট নাও যাও আর সাবধানে যেও।
তুমি শিওর
হাণ্ড্রেড পার্শেন্ট, যাও।
আমির উঠে ক্লাব থেকে বেরিয়ে যায়, রয় এক‌ই জায়গায় বসে বৃষ্টিকে অবজার্ভ করতে থাকে।

রাতের দিকে ছেলে ঘুমিয়ে পরার পরে একটু শাওয়ার নিচ্ছিলেন শিউলী দেবী, তার মনটা আজ কদিন থেকে খুব অস্থির, তার চোখের সামনে বারবার একটা দৃশ্য ভেসে আসছে, রয়ের দেহসৌষ্ঠবের দৃশ্য।
ছেলেটা এই কদিনে অনেক কিছু করেছে তার আর রোহিতের জন্য, তাদের বীরেন ভট্টাচার্যের কবল থেকে উদ্ধার করে এনেছে, এই বাড়িটায় থাকতে দিয়েছে খাবারদাবার আর অন্যান্য দরকারি জিনিস এনে দিচ্ছে বাড়ির আশেপাশে সুরক্ষার জন্য লোক‌ও আছে যদিও শিউলী দেবী তাদের কাউকেই দেখতে পাচ্ছেন না কিন্তু রয় বলেছে "এখানে আপনার বিপদ হবার চান্স কম কিন্তু তাও যদি হয় তখন আপনার সুরক্ষার জন্য যারা আছে তারা বেরিয়ে আসবে", আবার এখন রোহিতের জন্য অন্য শহরে একটা বোর্ডিং স্কুলের ব্যবস্থা করেছে, প্রথমটায় শিউলী দেবী রাজী হননি কিন্তু পরে বুঝেছেন রোহিতকে এখান থেকে দূরে পাঠালেই ওর জন্য ভালো হবে।
এর মধ্যে বেশ কয়েকবার রয় এসে দেখা করে গেছে ছেলেটা এত কিছু করেছে কিন্তু এখনো বিনিময়ে কিছু চায়নি সেই প্রথম আলাপের দিন বলেছিল যে ওর সাহায্যের দরকার কিন্তু তারপর আর ও নিয়ে কোনো কথা বলেনি। কদিন আগে দুপুরের দিকে এসেছিল রয় রোহিতের স্কুলের অ্যাডমিশনের খবর দিতে চলে যাচ্ছিল কিন্তু শিউলী দেবী জোর করেন দুপুরে স্নান খাওয়া ওখানেই করতে অনেকবার বলার পরে রাজী হয়, স্নান শেষে কোমরে টাওয়েল জড়িয়ে খালি গায়ে বাথরুম থেকে বেরিয়ে ভিতরের রুমে যাওয়ার সময় একঝলক দেখছিলেন শিউলী দেবী, দেখে চোখ আটকে যায় তার নিজেকে সামলাতে পারেননি একটু পরে রুমের সামনে গিয়ে দেখেন দরজা আটকানো নেই ভেজানো আছে ফাঁক দিয়ে উঁকি মেরে দেখতে থাকেন রয়ের ড্রেস পরা, প্যান্ট পরা হয়ে গেলেও তখনও গায়ে কিছু পরেনি রয় পিছন থেকে রয়কে দেখতে থাকেন শিউলী দেবী ওইরকম চমৎকার দেহসৌষ্ঠব খুব বেশি দেখা যায় না শরীরে পালোয়ানের মতো ফোলানো পেশীর আধিক্য নেই কিন্তু যা আছে সেটাও অসাধারণ, ছেলেটার গায়ের রঙ একদম সাদা নয় কিন্তু ফর্সাই বলা চলে, ফর্সা শরীরে বিন্দু বিন্দু জল আছে, ঘাড়ের উপর ভেজা চুলগুলো ছড়ানো, রয়ের চুল ওর ঘাড় পর্যন্ত লম্বা তাতে তাকে আরও সুন্দর লাগে দেখতে দেখে চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গিয়েছিল তার, যদিও একটু পরেই গায়ে শার্ট চাপিয়ে নেয় রয় তারপর হটাৎ বলে ওঠে "কিছু বলবেন?"
প্রথমটায় থতমত খেয়ে যান শিউলী দেবী তারপর নিজেকে সামলে বলেন "না আসলে খাবার রেডি তাই ডাকতে এসেছিলাম"। তারপর রয় তোয়ালেটা নিয়ে বাইরে যাচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ি ওটা নিয়ে নেন বলেন "আমি শুকোতে দিয়ে দেবো, আপনি খেতে আসুন"। তোয়ালেটা হাতে ধরে যেন রয়ের দেহটা অনুভব করার চেষ্টা করেন তিনি। পরে অবশ্য নিজের উপরেই লজ্জা পান রয় তার থেকে অনেক ছোটো কিন্তু এখন শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে আর নিজেকেঔ সামলাতে পারেন না, শাওয়ারের নীচে দাঁড়ানো শিউলী দেবীর সম্পূর্ণ নগ্ন শরীরের উপর দিয়ে যখন জল বয়ে চলেছে শিউলী দেবীর মনে হয় রয় তার শরীরের উপরে খেলা করছে, আনমনেই তার একটা হাত চলে আসে তার দু-পায়ের মাঝে আর অপর হাত তার উদ্ধত স্তনদ্বয়ের উপর চলতে থাকে চোখ বুজে শিউলী দেবী অনুভব করেন ওটা তার নিজের হাত নয় রয়ের হাত, জল যখন তার ঠোঁটের উপর দিয়ে বয়ে যায় তিনি রয়ের চুম্বন অনুভব করেন।



[/HIDE]
 
[HIDE]
বেশকিছুক্ষণ পরে হটাৎ তার মুখ থেকে আরামদায়ক শব্দ বেরিয়ে আসে তারপর তিনি শাওয়ার টা বন্ধ করে কিছুক্ষণ জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে থাকেন তার মুখ দেখে বোঝা যায় যে তার শরীর আপাতত শান্ত হলেও মন শান্ত হয়নি, তোয়ালে টা হাতে তুলে শরীর মুছতে থাকেন তারপর একটা গাউন পরে বেরিয়ে আসেন, ড্রয়িং রুমে সোফার উপর আরো একটা তোয়ালে রাখা আছে এটাই রয় ব্যবহার করেছিল তারপর এটা তিনি ব্যবহার করেননি সোফায় বসে তোয়ালেটা নিয়ে নিজের মুখের উপর ধরেন যেন রয়ের গায়ের গন্ধ নিচ্ছেন তার স্পষ্ট অনুভব করছেন মাঝে মাঝে তোয়ালেটাকে আরো খামচিয়ে ধরছেন যেন রয়কেই আঁকড়ে ধরছেন এমনভাবে। তারপর নিজের মনেই বলেন "তোমাকে আমার চাই, দেখি কতদিন নিজেকে আমার থেকে দূরে রাখো তুমি, তোমাকে আমার কাছে ধরা দিতেই হবে রয় দিতেই হবে"।

সোলহ বরস কী বালী উমর কো সলাম
এয় প্যার তেরী পহলী নজ়র কো সলাম

নিজের ঘরে বিছানায় বসে পিছনে হেলান দিয়ে, কোলে বালিশ নিয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে এই গানটা শুনছে তাথৈ, পরনে একটা হলুদ টপ আর ঘাগড়া, চোখ হাতে ধরা একটা ছবির দিকে যে ছবিটা মিস্টার গুপ্ত জোগাড় করে দিয়েছিলেন, একমনে ছবিটার দিকে তাকিয়ে আছে তাথৈ হঠাৎ দরজার কাছে "তাথৈ" শুনে তাড়াতাড়ি ছবিটা লুকিয়ে ফেললো। যিনি ঢুকলেন তার বয়স ৫০ এর আশেপাশে, গায়ের রঙ প্রচণ্ড ফর্সা, শুধু ফর্সা তাই নয় এই বয়সেও রীতিমতো সুন্দরী কিন্তু মুখে কেমন যেন বিষাদের ছায়া, ইনি‌ই তাথৈ মা সরমা ভট্টাচার্য, তাথৈ যে তার দুধে-আলতা গায়ের রঙ আর সৌন্দর্য এনার থেকেই পেয়েছে সেটা আর বলে দিতে হয় না।
সরমা দেবী: তাথৈ
আসো মা।
কি রে ঘরে একা একা কি করছিস?
কিছুনা এই গান শুনছিলাম
কি লুকোলি বলতো?
ক‌ই কিছু লুকোইনি তো?
সরমা দেবী কিন্তু ঠিকই দেখেছিলেন তিনি লুকানো জায়গা থেকে ছবিটা বার করে কিছুক্ষণ দেখলেন তারপর তাথৈএর দিকে তাকালেন তাথৈ তখন মাথা নীচু করে আছে কান থেকে হেডফোন খুলে ফেলেছে।
সরমা দেবী: অভয়?
তাথৈ মায়ের দিকে তাকিয়ে মাথাটা উপর-নীচ করে সম্মতি জানায় মুখে কিছু বললো না। সরমা দেবী মেয়ের মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে বললেন: আর কতদিন? ও আর ফিরবে না ও আর বেঁচে নেই।
তাথৈ: জানিনা আমার মন কিছুতেই মানতে চায় না যে ও বেঁচে নেই আমার বিশ্বাস ও একদিন ঠিক ফিরবে আমার কাছে।
সরমা দেবী: কিন্তু ও যদি বেঁচেও থাকে তাহলেও যদি তোকে ভুলে গিয়ে থাকে? বা যদি ওর জীবনে অন্য কেউ এসে থাকে?
তাথৈ: অভয় আমাকে কথা দিয়েছিল যে ওর জীবনে তাথৈ ছাড়া আর কারো জায়গা নেই আর আমি জানি আমার অভয় নিজের কথা রাখে, ওকে আমার কাছে ফিরতেই হবে, আমি অপেক্ষা করে থাকবো।
সরমা দেবী: কিন্তু তোর বাবা আর জ্যেঠুমণি তোকে সেই সুযোগ দেবেন না ওরা তোর জন্য ছেলে দেখছেন
তাথৈ: দেখেও কোনো লাভ নেই, তাথৈ অভয় ছাড়া আর কারো নয়, তাথৈএর উপর তাথৈএর আত্মা,মন এমনকি শরীরের উপর অভয় ছাড়া আর কারো অধিকার নেই।
সরমা দেবী মেয়ের মাথায় একটা চুমু দিলেন তারপর বললেন: সামনে শিবরাত্রি বৃষ্টি উপোস রাখে না তুই কি করবি?
তাথৈ: আমি তো প্রতিবছর উপোস রাখি মা তুমি তো জানো এবার‌ও রাখবো, অভয় যেখানেই থাকুক ওর সুস্থ দীর্ঘায়ু জীবনের জন্যই রাখবো।
সরমা দেবী আর কিছু না বলে উঠে চলে গেলেন, তাথৈএর ঘর থেকে বেরোতে গিয়েও থমকে দাঁড়ালেন দরজায় দাঁড়িয়ে ফিরে মেয়ের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললেন: আমি মনে প্রাণে প্রার্থনা করবো মা যেন তোর ভালোবাসার মানুষটা তোর কাছে ফিরে আসে, কিন্তু তোকে কিভাবে বলি যে তোর বাবা তোর জ্যেঠু আর তোর পিসি ওর আর ওর পরিবারের সাথে যা করেছে তাতে ও যদি ফিরে আসেও তাহলে আসবে প্রতিশোধ নিতে তোর ভালোবাসার মর্যাদা দিতে নয়। সরমা দেবী আঁচল দিয়ে চোখের কোন মুছে চলে গেলেন।


তাথৈ বিছানা ছেড়ে ঘরের ব্যালকনিতে এল, তারপর আকাশে চাঁদের দিকে তাকিয়ে কিছুটা নিজের মনেই বললো: আমি তোমার জন্য এবারও উপোস রাখবো অভয়, তুমি যেখানেই থাকো সুস্থ থাকো,ভালো থাকো আর তাড়াতাড়ি তোমার তাথৈএর কাছে ফিরে এসো, তোমার তাথৈ তোমার জন্য অপেক্ষা করে আছে যতদিন না তুমি ফিরছো ততদিন অপেক্ষা করেই থাকবে, চিন্তা কোরো না তোমার তাথৈ তোমার‌ই থাকবে, তুমিও মনে রেখো তুমি আমাকে কথা দিয়েছিলে তোমার জীবনে তাথৈ ছাড়া আর কারো জায়গা নেই।
অন্ধকার ঘর আলো আছে তবে সেটা একটা ছবির উপর ফোকাস করা ছবিটা পুরো দেওয়াল জুড়ে আছে, ছবিটার সামনে একটা কালো ছেলের মূর্তি প্যান্টের দু পকেটে দুহাত ঢুকিয়ে সোজা দাঁড়িয়ে ছবিটির দিকে তাকিয়ে আছে, এই অন্ধকার ঘরেও ছেলেটির চোখে কালো গগলস্, গায়ে কালো শার্ট গলায় টকটকে লাল টাই কালো ফরমাল প্যান্ট, চশমার উপর সামনের ছবির প্রতিচ্ছবি পরেছে, ছবিটি বীরেন ভট্টাচার্যের ভাইঝি তাথৈ ভট্টাচার্যের বর্তমান সময়ের ছবি।
একটু পরে ছেলেটা যেন ছবিটাকেই শোনানোর জন্য বলে "১৫ বছর, ১৫ বছর অপেক্ষা করেছি এবার অপেক্ষার অবসান করার সময় এসে গেছে, একটা সময় ছিল যখন আমার বাবা-মার পরে তোমাকে সবথেকে বেশী ভালোবাসতাম আর আজ এই পৃথিবীতে যদি কাউকে সবথেকে বেশী কাউকে ঘেন্না করে থাকি তাহলে সেটা তুমি আর তোমার পরিবার, তোমাকে ভালোবাসার জন্য যে এমন মূল্য চোকাতে হবে কোনোদিন ভাবিনি, ভুল করেছিলাম ভেবেছিলাম তুমিও আমাকে ভালোবাসো কিন্তু না তুমি তো খেলা করছিলে আমার সাথে আমার বিশ্বাস আমার ভালোবাসা নিয়ে, আমি ভুলে গিয়েছিলাম তোমার মতো বড়োলোকের মেয়েরা আমার মতো মধ্যবিত্ত ছেলেদের ভালোবাসতেই পারে না, সেটাও ঠিক ছিল কিন্তু আমার পরিবার? তারা তো কিছু করেনি কিন্তু তোমরা তাদেরকেও ছাড়োনি। ১৫ বছর আমি জ্বালায় জ্বলেছি এবার তোমার আর তোমার পরিবারের জ্বলার পালা মিস তাথৈ ভট্টাচার্য, জানি তোমার জীবনে এখন আমার কোনো অস্তিত্বই নেই, তোমার সামনে দাঁড়ালে চিনতেই পারবে না ভুলে গেছো আমাকে কিন্তু আমি ভুলিনি, নিজের পরিবারের অর্থ প্রতিপত্তি মান-সম্মান নিয়ে খুব অহংকার তোমার তাই না তাথৈ? আমি সবকিছু কেড়ে নেবো তোমাদের থেকে, অভয় নয় আগুন ফিরে এসেছে ভট্টাচার্য পরিবারের চিতা জ্বালানোর জন্য"
তারপর একটু থেমে আবার একই ভাবে বললো "খুব তাড়াতাড়িই দেখা হচ্ছে মিস্ তাথৈ ভট্টাচার্য"।

এআরসির বাণিজ্যনগরীর বিলাসবহুল বাংলোয় আজ একটু বেশীই লোকের ভিড়, এআরসির মা ছেলের মঙ্গলের জন্য পূজো রেখেছেন সেই পূজোতেই আশেপাশের প্রতিবেশীরা এসেছেন, পূজো শেষে সবাই প্রসাদ নিচ্ছে বেশিরভাগ মহিলারা নিজেদের মধ্যে গল্প করছেন, এমন সময় পূজোর যিনি পুরোহিত ছিলেন তার দিকে এগিয়ে এলেন পূজোর আয়োজক এই বাংলোর মালিক এআরসির মা তিনি পুরোহিত মশাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন "ঠাকুরমশাই আপনাকে বলেছিলাম আমার ছেলের জন্য মেয়ে দেখতে, দেখেছেন?
পুরোহিত মশাই একটু ঢোঁক গিলে বললেন : মা, তুমি বলো মেয়ে দেখতে এদিকে তোমার ছেলে বলে দেখতে হবে না কোনদিকে যাই বলো তো?
এআরসির মা: আপনাকে তো আমি বলেছি দেখতে, আর ওকে বলার দরকার‌ই বা কি?
পুরোহিত মশাই: তুমি তোমার ছেলেকে তো চেনোই মা, সবদিকে নজর থাকে ওর।
এমন সময় অপর একজন মহিলা এসে বললেন: তোমার ছেলের যা রাগ কোন মেয়ে ওকে সামলাতে পারবে জানিনা
আরেক মহিলাও এইসময় চলে এলেন বললেন: ঠিকই বলেছেন ছেলেটার সব ভালো কিন্তু ওই এক সবসময় মুখ গম্ভীর সবসময় রাগী মুখ ,মুখে হাসি নেই।
এআরসির মা: তোমরা সবাই আমার ছেলের রাগটাই দেখলে, ওর ভিতরের আসল ছেলেটাকে কেউ দেখলো না।




[/HIDE]
 
[HIDE]

একজন মহিলা বললেন: কিছু মনে কোরো না বোন তোমার ছেলে খারাপ নয় এত উঁচুতে উঠেছে তাও পা সবসময় মাটিতে থাকে, সবার সাথে মেশে সবার জন্য কত কিছু করে কিন্তু ওই ওর সামনে গেলেই ভয় লাগে।
আরেকজন মহিলা বললেন: ও কি ছোটো থেকেই এরকম?
এআরসির মা: না, ছোটোবেলায় ও খুব হাসি-খুশি থাকতো খুব আনন্দ করতো কিন্তু ওর বাবা মারা যাওয়ার পরে ও কেমন যেন পাল্টে গেল ওর মুখ থেকে হাসিটাও মিলিয়ে গেল।
কিছুক্ষণের জন্য যেন কোন সুদূর অতীতে হারিয়ে গেলেন তিনি যখন তার ছেলে ছোট ছিল হাসিখুশি ছিল তার বাবার সাথে আনন্দ করে কাটাতো।
"কি হয়েছিল বোন" হটাৎ প্রশ্নে সম্বিত ফিরে পান এআরসির মা বলেন: কি বললেন দিদি?
একজন মহিলা বলেন: কি হয়েছিল যে ওরকম একটা ভালো ছেলের মূখ থেকে হাসি উধাও হয়ে গেল?
শয়তানের নজর পরেছিল সেই আমার ছেলেকে এরকম বানিয়েছে।
এবার আরও একজন নতুন মহিলার কণ্ঠস্বর শোনা গেল ইনি এই বাংলোতেই থাকেন একা মহিলা, এই বাড়ির কর্ত্রীর দেখাশোনা করেন, তিনি বললেন: এখন শুধু নিজের মায়ের কোলে শুয়েই যা একটু হেসে কথা বলে।
পুরোহিত মশাই এবার বললেন: তাহলে মা কেমন মেয়ে দেখবো?
এআরসির মা: এমন কেউ যে আমার ছেলের রাগকে সামলাতে পারবে পারলে ওর মুখে হাসি ফেরাবে।



[/HIDE]
[HIDE]

"কি রে তোর পূজো হলো?" প্রশ্নটা করলো বৃষ্টি উদ্দেশ্য তাথৈ, তাথৈ তখন শিবলিঙ্গের মাথায় দুধ ঢেলে পূজো দিয়ে হাতজোড় করে চোখ বুজে প্রণাম করছে, প্রণামটা একটু বেশি সময় ধরে চলছে দেখে প্রশ্নটা করে বৃষ্টি।
আরও একটুক্ষণ পরে চোখ খোলে তাথৈ বলে "তোর সবকিছুতে এত অধৈর্য কেন?"
আমার ক্ষিদে পেয়েছে
তাহলে উপোস রাখতে গেলি কেন?
মা জোর করছিল তাই এখন চল।
এমন সময় মন্দিরের পুরোহিত বললেন: তুমি একটুও বদলাওনি তাথৈ মা সেই ছোট্ট থেকেই দেখছি ভেবেছিলাম বাইরে পড়তে গিয়ে পাল্টে গেছো কিন্তু আজ বুঝলাম আমি ভুল ছিলাম।
তাথৈ: আর আমি পাল্টাবো‌ও না ঠাকুরমশাই। বলে তাথৈ প্রণাম করতে গেলো
পুরোহিত মশাই তাথৈকে বাধা দিয়ে বললেন: ঠাকুরের সামনে অন্য কাউকে প্রণাম করতে নেই, কিন্তু আমি আশীর্বাদ করছি তুমি সুখী হ‌ও মা।
এসময় বৃষ্টি আবার তাড়া দিল "তুই আসছিস কিনা বল?"
তাথৈ: তুই এগো আমি আসছি। বৃষ্টি চলে গেল
তারপর তাথৈ বললো: ঠাকুরমশাই একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?
ঠাকুরমশাই: বলো মা
তাথৈ: অভয়ের কোনো খবর জানেন?
পুরোহিত মশাই যেন একটু চমকে উঠলো তারপর বললো: তাকে তো বহুবছর দেখিনি, কিন্তু শুনেছি..
তাথৈ: সেটা আমিও শুনেছি যে একটা দুর্ঘটনায় অভয় আর ওর পরিবার মারা গেছে কিন্তু..
"কিন্তু তোর মন কি বলে?" হটাৎ তৃতীয় কণ্ঠস্বর শোনা গেল তাথৈ যেদিক থেকে আওয়াজ আসছে সেদিকে তাকিয়ে দেখলো একজন সাধু প্রশ্নটা করেছেন, একটু ভালো করে দেখতেই তাথৈএর মনে পরলো এই সাধু‌ই কিছুদিন আগে তার জ্যেঠুমণিকে শাপ-শাপান্ত করেছিল।
"কি রে তোর মন কি বলে?" আবার প্রশ্ন করেন সাধু।
"আমার বিশ্বাস ও বেঁচে আছে, একদিন ও ফিরবেই" উত্তর দেয় তাথৈ।
আর যদি না ফেরে? যদি সত্যিই ও মারা গিয়ে থাকে?
তবুও আমি ওর জন্য অপেক্ষা করবো, দরকার পরলে পরজন্মেও করবো।
সাধু একটু স্মিত হেসে বলেন: তাহলে নিজের বিশ্বাসের ভিত দুর্বল হতে দিস না, এই বিশ্বাসের জন্যই একদিন তাকে তোর কাছে ফিরতেই হবে, কিন্তু তার আগে যে তোকে পরীক্ষা দিতে হবে।
তাথৈ একটু অবাক হয় বলে: কিসের পরীক্ষা?
সাধু: সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারিস কি না?
তাথৈ: মানে? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না
সাধু: সময় হলেই বুঝতে পারবি তবে একটা কথা মনে রাখবি কখনো অন্যায়ের সাথে আপোস করবি না, অন্যায় যেই করুক যত আপন জন‌ই করুক যদি অন্যায়ের সাথ দিস তাহলে সব হারাবি আর যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করিস তাহলে যা খুঁজছিস তা পাবি। বলে সাধু চলে গেল তাথৈ কিছুক্ষণ হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে রইলো।

"আপনার ছেলের অ্যাডমিশন হয়ে গেছে, ওকে ওখানে যেতে হবে" শিউলী দেবীকে খবরটা দিল রয়
শিউলী দেবী: কিন্তু ওখানে ওর দেখাশোনা কে করবে?
ওখানে আরও অনেক বাচ্চারা পড়াশোনা করে, তাদের দেখাশোনা করার জন্য লোক থাকে তারাই করবে।
কিন্তু..
আর কোনো কিন্তু নয়, বীরেন ভট্টাচার্য কিন্তু আপনাদের পাগলা কুকুরের মতো খুঁজছে, তাই আগে আপনার ছেলেকে এখান থেকে সুরক্ষিত জায়গায় সরিয়ে ফেলা দরকার।
শিউলী দেবী আর দ্বিরুক্তি করলেন না তিনি জানেন রয় যেটা বলেছে সেটা ভীষণ সত্যি। রাতে শিউলী দেবী রয়কে ওখানেই খেয়ে যেতে বললেন রয় বারণ করলো না, সে লক্ষ্য করেছে এই কদিনে তির প্রতি শিউলী দেবীর ব্যবহার একটু পাল্টে গেছে একটু গা ঘেঁষে বসা, জল দেবার সময় বুক থেকে আঁচল পরে যায় ইত্যাদি মনে মনে হাসে রয় শিউলী দেবী যে তাকে সিডিউস করার চেষ্টা করছেন এটা সে ভালোভাবেই বুঝতে পারে,কম মহিলা তো দেখেনি সে প্রায় সবাই শিউলী দেবীর মতো এরা প্রত্যেকেই যৌনপিপাসু, এদের যৌন ক্ষিদে প্রবল আর যদি এদের সেই ক্ষিদে মেটানো যায় তাহলে তাদের মুখ থেকে অনেক কথাই বেরিয়ে আসে। ডিনার করার সময় বাইরে হটাৎ বজ্রপাতসহ জোরে বৃষ্টি শুরু হলো, ডিনার কমপ্লিট করে দুজনে অনেকক্ষণ গল্প করলো মূলত শিউলী দেবী‌ই বলছিল রয় শুনছিল কিন্তু এমন কোনো কথা মুখ থেকে বেরোলো না যা রয়ের কাজে আসতে পারে তবুও সে মন দিয়ে শুনতে লাগলো, রোহিত মানে শিউলী দেবীর ছেলে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে পড়েছে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও যখন বৃষ্টি থামলো না তখন রয় শিউলী দেবী বললেন: আজ আর আপনার যাওয়া হবে না, এই বৃষ্টি থামবে না।
রয়: অসুবিধা নেই, আমার গাড়ি আছে আমি চলে যাবো।
কিন্তু কেন? এখানেই থেকে যান আজ রাতটা, বেকার বেকার ভিজবেন কেন?
দুজনে জানলার কাছে এসে দাঁড়ায়।
রয়: কি ব্যাপার বলুন তো? আপনি আমাকে এখানে আটকাতে চাইছেন?
শিউলী দেবী: না মানে ঠিক তা নয় আসলে..
রয় জানে শিউলী দেবী কি চান সে মনে মনে হাসলো বেশ তবে তাই হোক, সে বললো: আসলে কি? আমি কিছু বুঝিনি ভেবেছেন? আমার গা ঘেঁষে বসা, আমার সামনে আঁচল ফেলে দেওয়া, লুকিয়ে লুকিয়ে আমার ড্রেস চেঞ্জ করা দেখা এসবই লক্ষ্য করেছি আমি।
শিউলী দেবী কিছুক্ষণ রয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে র‌ইলেন, রয় আস্তে আস্তে তার দিকে এগিয়ে যায়, শিউলী দেবীর কোমর ধরে একটানে নিজের কাছে টেনে আনে, তারপর আস্তে আস্তে শিউলী দেবীর ঠোঁট লক্ষ্য করে নিজের ঠোঁট এগিয়ে আনে, শিউলী দেবী বলেন "আমার ছেলে ওঘরে শুয়ে আছে আর আমি তোমার থেকে বয়সে অনেক বড়ো"।

[/HIDE]
 
[HIDE]

রয় শিউলী দেবীর কোমর ছেড়ে পিছনে সরে গেল বললো: অলরাইট হয়তো আমার‌ই ভুল।
শিউলী দেবী সোজা রয়ের আস্তে আস্তে পিছনে সরে যাওয়া দেখছেন। রয় জানে শিউলী দেবী তাকে যেতে দেবেন না আর ঠিক সেটাই হলো
"দাঁড়াও" বলে উঠলেন শিউলী দেবী তারপর দ্রুতপায়ে রয়ের দিকে এগিয়ে গিয়ে রয়ের দুকাঁধ ধরে নিজের দিকে টেনে এনে নিজের ঠোঁট রয়ের ঠোঁটে লাগিয়ে দেন।
বেশ কিছুক্ষণ দুজনেই চুম্বনে লিপ্ত থাকে তারপর শিউলী দেবী একটু পিছনে সরে বুক থেকে আঁচলটা সরিয়ে সেটা রয়ের দিকে বাড়িয়ে দেন রয় আঁচলটা ধরে আস্তে আস্তে টানতে থাকে আর শিউলী দেবী ঘুরতে থাকেন ফলে খুব তাড়াতাড়ি তার শরীর থেকে পুরো শাড়িটা খুলে যায়, এরপর দুজনেই ড্রয়িংরুমে মেঝেতেই শুয়ে পরে নীচে শিউলী দেবী আর তার উপরে রয়, সে তখন শিউলী দেবীর শরীরের বাকি কাপড়গুলো এক এক করে খুলছে আর শিউলী দেবীর পুরো শরীরে চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছে।
শিউলী দেবী ভাবছেন "অবশেষে রয় তার কাছে ধরা দিল", তিনি চোখ বুঝে তার শরীরের উপর রয়কে উপভোগ করতে থাকেন, তার দুটো উদ্ধত স্তনের উপর রয়ের হাতের চাপ তাকে ব্যাথা দিচ্ছে না, সুখের আরও গভীরে নিয়ে যাচ্ছে।
একটু পরেই দুটো সম্পূর্ণ নগ্ন মানুষকে একে অপরের সাথে জড়িয়ে থাকতে দেখা গেল, প্রতিবার শিউলী দেবীর দুপায়ের মাঝের গহ্বরে রয়ের পুরুষাঙ্গ যখন ঢুকছে তার মুখ থেকে শিৎকার বেরোচ্ছে, তিনি রয়কে দুহাতে আরো আঁকড়ে ধরছেন নিজের উপর, দুপা দিয়ে রয়ের কোমর জড়িয়ে ধরেছেন, রয় যখন তার স্তনবৃন্ততে মুখ দিচ্ছে জিভ দিচ্ছে শিউলী দেবী বুঝছেন এত সুখ তিনি এর আগে কোনোদিন পাননি ,দুজনেই ঘেমে একসার হয়ে গেছে কিন্তু তাও তাদের কামক্রীড়া শেষ হয়নি কতক্ষণ এভাবে তারা ছিল দুজনের কারোরই হুশ নেই শেষে একসময় শেষ হলো দুজনের মুখ থেকেই আরামদায়ক শিৎকার বেরিয়ে এল, রয় এবার শিউলী দেবীর শরীরের উপর থেকে নেমে তারপাশেই শুয়ে পরলো, আর শিউলী দেবী.. তিনি চোখ বন্ধ করে এতক্ষণ ধরে কাটানো মুহুর্তগুলো উপভোগ করতে থাকলেন।

বীরেন ভট্টাচার্যের নিজস্ব অফিস ঘরে মুখোমুখি বসে বীরেন এবং ধীরেন ভট্টাচার্য দুজনের মুখেই চিন্তার ছাপ কিছুতেই তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না যে তার দশজন লোককে মেরে ফেলেছে তার শিউলীকে নিয়ে গেছে, ওদিকে সমর সরকার কে এমন মারধর করেছেন যে লোকটা মারাই গেছে, যদিও অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে বলে ধামাচাপা দিয়ে দিয়েছেন কিন্তু মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত তার মুখে একটাই কথা ছিল যে তিনি বীরেন ভট্টাচার্যের লোকদের মারেননি।
"এবার কি করবে দাদা?" জিজ্ঞেস করলেন ধীরেন বাবু।
সেটাই তো ভাবছি, মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না, সরকার যদি এটা না করে থাকে তাহলে কে?
আমাদের পুরনো কেউ কি যাকে আমরা ভাবছি মেরে ফেলেছি কিন্তু সে বেঁচে আছে?
যদি সেটা হয় তাহলে কে হতে পারে?
রুদ্র রায়চৌধুরী আর তার ব‌উ আর ছেলে?
চমকে ওঠেন বীরেন ভট্টাচার্য যেন বহু পুরনো কোনো কথা মনে পরে যায়।
ধীরেন বাবু আবার বলেন: ওদের তিনজনের কারো লাশ‌ই কিন্তু আমরা দেখিনি শুধু জগার কথায় বিশ্বাস করেছিলাম।
বীরেন বাবু তৎক্ষণাৎ বেল বাজান, ঘরে একজন লোক ঢুকলো তাকে বললেন: জগা কোথায়? তাকে ভিতরে পাঠা।
একটু পরে জগা ভিতরে ঢুকলো লোকটার পালোয়ানের মতো চেহারা মাথায় খুব ছোট করে ছাটা চুল, পুরুষ্ট গোঁফ, গালে হাল্কা দাঁড়ি তবে যেটা দেখার সেটা হলো চোখ, একদম খুনে চোখ যে কেউ দেখলে ভয় পাবে, এই লোকটা বীরেন বাবুর বশংবদ, তার হুকুমে করতে পারেন না এমন কাজ নেই কতলোকের যে লাশ ফেলেছেন তার ইয়ত্তা নেই।
"ডাকছিলেন দাদা?" ভিতরে ঢুকে বলেন জগা।
হ্যাঁ, তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করছি সত্যি কথা বলবি
কি দাদা?
তোর রুদ্র রায়চৌধুরী কে মনে আছে?
একটু ক্ষণ ভুরু কুঁচকে মনে করার চেষ্টা করলো তারপর বললো ওই মদনের ব‌উএর দাদা?
হ্যাঁ সেই, ওর সাথে ওর ব‌উ অমৃতা ছিল আর একটা ছেলে ছিল, মনে আছে?
আছে দাদা, ছেলেটার তো আবার বামন হয়ে চাঁদে হাত দেওয়ার শখ হয়েছিল তাথৈ দিদিমণির সাথে ঘুরতো, কি যেন নাম ছিল হ্যাঁ মনে পরেছে অভয় কিন্তু এতবছর পরে ওদের কথা কেন দাদা?
তুই বলেছিলি তুই নিজের হাতে ওদের তিনজনকে মেরে লাশ পুড়িয়ে ফেলেছিস।
একটু ঢোঁক গিলে জগা বললো: হ্যাঁ দাদা, সেটাই করেছিলাম।
"তুই সত্যি বলছিস?" এবার প্রশ্নটা করলেন ধীরেন ভট্টাচার্য।
জগা উত্তর দেয়: মিথ্যা বলবো কেন? যেটা করেছিলাম সেটাই বলেছিলাম কিন্তু কেন দাদা?

বীরেন বাবু গম্ভীর গলায় বলেন "জগা কেউ একজন আমার পিছনে লেগেছে, শিউলীকে নিয়ে গেছে যদি শিউলী মুখ খোলে ভেবে দেখেছিস কি হবে? কি করছিস তুই আর তোর লোকেরা? এখনো ওর কোনো খোঁজ পেলি না, হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে নাকি?
দাদা, আমার লোকেরা এখনো পুরো শহর জুড়ে খুঁজেই চলেছে।
খুঁজে বের করতেই হবে জগা, খুঁজে বের করতেই হবে, যা এখন।
জগা ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বীরেন ভট্টাচার্য ভাইকে বললেন: আরেকটা খবর এসেছে ধীরেন
কি দাদা?
কেউ বৃষ্টি আর তাথৈএর ব্যাপারে খোঁজখবর করছে
সে কি? কে?
সেটা জানলে তো হয়েই যেতো যদি খুব ভুল না করি তাহলে আমাদের এই নতুন বা পুরনো শত্রু।
রকিকে ডেকে নেবো?
এখনই ডাকার দরকার নেই, তুই ওর কাছে আরও কজন বডিগার্ড পাঠিয়ে দাও আর বাড়ির দুই মেয়ের সুরক্ষা বাড়িয়ে দে।

"তুমি নিশ্চিত ওখানে বীরেন রোহিতের ক্ষতি করতে পারবে না?" শিউলী দেবী রয়কে প্রশ্নটা করেন, দুজনেই তখন নগ্ন হয়ে পাশাপাশি শুয়ে আছে ড্রয়িংরুমে মেঝেতে, কিছুক্ষণ আগেই তারা ইন্টিমেট হয়েছিল ,তারপরেই এই প্রশ্ন।
"ওখানে খোঁজ‌ই পাবে না আর যদি পায়‌ও যদিও সেটার চান্স প্রায় নেই কিন্তু যদি পায় তাহলেও ওর ক্ষতি করতে পারবে না কারণ ওর সুরক্ষার জন্য লোক থাকবে" বললো রয়।
শিউলী দেবী: বীরেন ভট্টাচার্যের সাথে তোমার কিসের শত্রুতা?
রয়: উনি আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছেন শুধু তাই নয়, আমার পরিবারের‌ও।
শিউলী দেবী: ওকে শেষ করতে হলে আগে ওর ক্ষমতাকে শেষ করতে হবে, আর সেটার জন্য ওর ব্যাবসাগুলোকে কারণ ওখান থেকেই ও অঢেল টাকা ইনকাম করে।
রয়: সেটা আমিও জানি, কিন্তু লিগ্যাল বিজনেস ছাড়াও তো ইল্লিগ্যাল বিজনেস আছে।
শিউলী দেবী: আছে কিন্তু সেগুলোর খবর আমি জানিনা তাই.. আমি বলতে পারবো না।
রয়: সেটা জানা তোমার পক্ষে সম্ভব‌ও নয়, ওগুলোর খবর প্রধানত খুব বিশ্বস্ত লোকের কাছেই থাকে, আর নতুবা থাকে পরিবারের লোকের কাছে, কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ওর পরিবারের কেউ সে খবর বাইরের কাউকে দেবে না।
দুজনেই বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকলো তারপর শিউলী দেবী হটাৎ বললেন: আছে, একজন আছে যে তোমাকে সবটা না হলেও কিছু খবর দিতেই পারে
রয় একটু অবাক হয় বলে: কে?
শিউলী দেবী: বিদিশা
রয়: বিদিশা মানে বীরেন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে রকির ব‌উ?
শিউলী দেবী: হ্যাঁ,ওই
রয়: কিন্তু উনি কেন আমাকে সাহায্য করবেন?
কারণ ও নিজেও ওই পরিবারকে খুব একটা পছন্দ করে না, তোমাকে সাহায্য করতে পারলে ওই পারবে।



[/HIDE]
 
[HIDE]

"রকি, রকি ভট্টাচার্য" দেওয়ালের পর্দায় একজনের ছবি ফুটে উঠেছে সেটা দেখিয়েই কথাটা বললো উসমান "বীরেন ভট্টাচার্যের দিদি বৈশালী ভট্টাচার্যের ছেলে মহিলা স্বামী মারা যাওয়ার পরে ভাইয়ের বাড়িতে থাকেন এবং বাপের বাড়ির নামটাই ব্যবহার করেন তাই রকির নামের পরে ভট্টাচার্য"।
তা এই রকি করেটা কি?
বীরেন আর ধীরেন ভট্টাচার্যের মতো এটাও শয়তানের আরেকটা অবতার, নেশা, মারামারি মেয়ে এসব ছাড়া কিছুই জানেনা, তবে এখন নাকি মামার অবৈধ ব্যাবসাগুলো সামলায়, কিছু বছর আগে বীরেন ভট্টাচার্য এর বিয়ে দেন কিন্তু তারপরেও এর বাইরের মেয়েদের দিকেই নজর বেশি।
কি ধরনের ব্যাবসা? আর সেগুলো অপারেট করে কোথা থেকে?
এক্সটর্শান, কিডন্যাপিং তো আছেই এছাড়া মদের ঠেক চালায় তার পরে ইমপোর্ট এক্সপোর্টের ব্যাবসাও চালায়, আর অফিস তো একটা নয় তবে মেইন অফিসে সে কম আসে ওখানে বীরেন ভট্টাচার্য বসেন।
কোথায় সেটা?
আপনার মনে আছে স্যার তাথৈ ভট্টাচার্যের এক প্রেমিকের কথা বলেছিলাম অভয়।
হ্যাঁ, তো তাতে কি?
যে জমিটায় ওই অভয়দের বাড়ি ছিল ওটা এখন বীরেন ভট্টাচার্যের, ওখানেই ওনার অফিস, ওখান থেকেই বীরেন ভট্টাচার্য সব কন্ট্রোল করেন।
আর বিদিশা ভট্টাচার্য?
এরপর পর্দায় একটা মেয়ের ছবি ভেসে আসে বয়স রয়ের থেকে একটু ছোটো ২৯-৩০এর মধ্যে, স্লিম চেহারা, পরিষ্কার রঙ, মাথায় লম্বা কোকড়ানো চুল।
ইনি বিদিশা ভট্টাচার্য নেতা অনিমেষ ব্যানার্জীর মেয়ে, কিছু বছর আগে অনিমেষ ব্যানার্জী একটা কেসে ফেঁসে যান তার চেয়ার তো যাবেই এমনকি তিনি জেলেও যেতে পারেন এমন অবস্থায় বীরেন ভট্টাচার্য তাকে বাঁচিয়ে দেন এবং বিনিময়ে..
বিনিময়ে বীরেন ভট্টাচার্য ভাগ্নে রকির জন্য এই ব্যানার্জীর মেয়েকে ব‌উ করে নিয়ে আসেন।

"তাহলে অবশেষে তোমার শিউলী দেবী মুখ খুললেন?" প্রশ্নটা এল আমিরের মুখ দিয়ে।
আমার শিউলী দেবী?
তাছাড়া আর কার?
যার‌ই হোক আমার নয়।
তোমাদের মধ্যে যা হয়েছে তার পরেও বলছো?
বলছি।
সত্যি মহিলা পারেন বটে, পাশের ঘরে ছেলে ঘুমিয়ে আছে আর এদিকে উনি বয়সে অনেকটা ছোটো ছেলের সাথে ইন্টিমেট হচ্ছেন।
যে মহিলা নিজের দিদির স্বামীর সাথে দিদি বেঁচে থাকতে সম্পর্কে জড়াতে পারেন তার থেকে আর কি আশা করো তুমি?
তোমার কি মনে হয়? বিদিশার সম্পর্কে যা বললেন সেটা সত্যি? মানে ওই মেয়ে কি আমাদের হেল্প করবে?
দেখা যাক তবে যদি এটা সত্যি হয় যে রকি ওকে মারধর করে, আর ওনার বিয়েটা যদি একটা ব্যাবসা হয় তাহলে করতেও পারেন।
আর সেটা কিভাবে বুঝবে?
বীরেন ভট্টাচার্যের বাড়িতে তোমার লোক আছে বলছিলে না? তাকে বলো নজর রাখতে।
তাতে হবেটা কি?
কোন খবর কখন কাজে লেগে যায় সেটা কে বলতে পারে?


একটা রেললাইনের উপরের গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরী ওভারব্রিজের ধারে একাকী দাঁড়িয়ে নীচের দিকে দেখছিলেন বিদিশা ভট্টাচার্য, হাতে একটা ছোট পকেট ফ্লাস্ক, বলাইবাহুল্য সেটা অ্যালকোহলের সেটা মাঝে মাঝে মুখে দিয়ে একটু একটু করে পান করছিলেন তিনি, পরনে একটা সিল্কের ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি, স্লিভলেস ব্লাউজ যার পিঠ অনেকটা খোলা, মাথায় চুলটা খোপা করে রেখেছে, ঠোঁটে লিপস্টিক, গলায় একটা মঙ্গলসূত্র, সিঁথিতে অল্প একটু সিঁদুর, দুহাতে ভর্তি চুড়ি, নিজের মনে ড্রিংক করছিলেন আর আনমনে কি যেন ভাবছিলেন এমন সময় কাছেই একটা ছেলের "হ্যালো বিউটিফুল" শুনে না তাকিয়েই "গেট লস্ট" বলে এক‌ই ভাবে নীচে রেললাইনের দিকে তাকিয়ে র‌ইলেন আর ক্রমাগত ফ্লাস্ক থেকে ড্রিংক করতে লাগলেন, ছেলেটা কিন্তু গেলোনা তার পাশে এসে বললো "নীচে ঝাঁপ দেওয়ার প্ল্যান করছেন? তা পঞ্জিকা দেখে এসেছেন?"
এবার বিদিশা একটু চেঁচিয়ে উঠলো "আই সে গেট লস্ট"।
আর যদি না যাই?
জুতিয়ে গাল ছিঁড়ে নেবো ইউ স্কাউন্ড্রেল।
এইভাবে একা করে ড্রিংক করে কোন ব্যাথাটা ভুলতে চাইছেন মনের না শরীরের?
এবার বিদিশা পাশে তাকালো দেখলো প্রায় তার‌ই বয়সী একটা ছেলে, মাথায় ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল, বেশ হ্যাণ্ডসাম চেহারা, পরনে একটা জ্যাকেট আর জিন্স। কিছুক্ষণ ছেলেটাকে নিরীক্ষণ করে বললেন: আপনি কি বলতে চাইছেন?
"আপনি যে ব্লাউজটা পরেছেন সেটা পিঠের দিকে অনেকটাই ডিপ করে খোলা আর একটু ভালো করে দেখলেই সেখানে লম্বা দাগগুলো বোঝা যাচ্ছে আর এখন স্পষ্ট বুঝতে পারছি আপনার চোখের পাতা ভেজা অত‌এব.." চুপ করলো ছেলেটা।
বিদিশা: আমাকে একটু একা থাকতে দিন, প্লিজ আপনি চলে যান।
ছেলেটা: কেউ একজন বলেছিল দুঃখ শেয়ার করলে কমে আর আনন্দ শেয়ার করলে বাড়ে।
বিদিশা: আমি কোনোকিছু শেয়ার করতে চাই না।
ছেলেটা: আচ্ছা বেশ, আপনাকে শেয়ার করতে হবে না কিন্তু আমি তো এখানে থাকতে পারি।
বিদিশা: বেশ, আপনি থাকুন আমি চললাম।
বলে বিদিশা চলে যাচ্ছিল কিন্তু ছেলেটা বললো: অন্য কোথাও যাচ্ছেন সুইসাইড পয়েন্ট দেখতে?
বিদিশা ঘুরে দাঁড়িয়ে বললো: আমি সুইসাইড করতে যাচ্ছি এটা আপনার মনে হলো কেন?
ছেলেটা: অনুমান, ঠিক নাও হতে পারে।
বিদিশা: না ঠিক নয়, আমি সুইসাইড করতে যাচ্ছি না আমার সে উপায় নেই।
ছেলেটা: যদি কিছু মনে না করেন কেন একথা বলছেন জানতে পারি?
বিদিশা: সবকথা আপনাকে বলতে যাবোই বা কেন? কে আপনি?
ছেলেটা: আমার নাম রয়, আর আমি আপনার বন্ধু বা পরিচিত না হতে পারি কিন্তু শত্রু ন‌ই।
বিদিশা রয়ের মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে র‌ইলো সুদর্শন দেখতে তাতে সন্দেহ নেই কি মনে হতে সে।আবার এসে রয়ের পাশে দাঁড়ালো বললো: আমি বিদিশা, বিদিশা ভট্টাচার্য, বীরেন ভট্টাচার্যের ভাগ্নে রকির ব‌উ।
রয়: আচ্ছা তা বীরেন ভট্টাচার্যের ঘরের ব‌উ এইভাবে এখানে একা কেন?
বিদিশা: ভাবছি যে আমি কি অপরাধ করেছি যে আমাকে...
বিদিশা চুপ করে গেল
রয়: আপনাকে একা বেরোতে দিয়েছে? স্ট্রেঞ্জ।
বিদিশা একটু বিষন্ন হেসে বললো: আমার প্রতি নজর দেওয়ার প্রয়োজননেই ওদের, আমাদের বিয়েটা শুধু একটা বিজনেস, রকি কোনোদিনই আমার প্রতি মনোযোগ দেয়নি ভালোবাসা তো কোন ছাড়
রয়: আর আপনি? আপনি ওকে ভালোবেসেছিলেন?
বিদিশা: ওরকম শয়তান কে ভালোবাসা যায় না, ও শুধু জানে অত্যাচার করতে মারধর করতে। বলতে বলতে বিদিশার মুখে একটু রাগ ফুটে উঠেই মিলিয়ে গেল, তারপর দ্রুত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো:মাপ করবেন আপনাকে এসব বলা ঠিক হয়নি, আমি যাই বলে চলে যাচ্ছিল।

রয় বললো: যাবেন কিভাবে? গাড়ি আছে?
বিদিশা: না, দেখি ক্যাব নিয়ে নেবো।
রয়: যদি আমাকে বিশ্বাস করেন তাহলে আমি লিফট দিতে পারি।
বিদিশা: আপনি বীরেন ভট্টাচার্য আর রকিকে ভয় করেন না? ওরা যদি জানতে পারে যে আপনি ওদের ঘরের ব‌উএর সাথে ফ্লার্ট করছেন তাহলে আপনাকে খুন করতে দু-বার ভাববে না।
রয়: আমার কাউকে ভয় করে না আর তাছাড়া আপাতত আমার চিন্তা না করলেও চলবে আপনার।
বিদিশা: আপনি কে বলুন তো? কি চান আপনি?
রয়: বললাম তো আমি রয়, আর ধরে নিন আপাতত আপনার একাকীত্বে সঙ্গ দিতে চাই।

[/HIDE]
 
[HIDE]

বিদিশা: আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি যার ভয়ে পুরো শহরের লোক তটস্থ হয়ে থাকে আপনি সেই বীরেন ভট্টাচার্যের বাড়ির ব‌উএর সাথে ক্রমাগত ফ্লার্ট করে যাচ্ছেন।
রয়: আর আপনি সেটা এনজয়‌ও করছেন, তাইতো?
বিদিশা কিছু বললো না রয়ের দিকে তাকিয়ে র‌ইলো, আবার ফ্লাস্কটা মুখে দিতে যাবে এমন সময় রয় বললো: ওটা রেখে দিন, ওটা খেয়ে কিছু হয় না।
বিদিশা: আপনি জানেন না, এটা ব্যাথা কমাবার অব্যর্থ ওষুধ।
রয়: না, ওটা ব্যাথার ওষুধ নয়, ওটা কোনো কিছুরই ওষুধ নয়।
বিদিশা: আপনি কেন আমার সাথে লেগে আছেন?
রয়: বললাম তো আমি আপনার একাকীত্বের সঙ্গী।
বিদিশা: এটা মনের আর শরীরের দুজায়গার‌ই ব্যাথার ওষুধ।
রয়: আপনার ব্যাথা কমে?
বিদিশা চুপ করে র‌ইলো।
রয়: চলুন আপনাকে বাড়ি পৌঁছে দি‌ই
বিদিশা: আমি তো এখন বাড়ি যাবো না।
তাহলে কি করবেন?
জানিনা, এখন এভাবেই থাকবো।
আপনার হাজবেন্ড এবং বাড়ির লোক চিন্তা করবে।
বললাম না আমার জন্য চিন্তা করার সময় ওদের নেই।
বিদিশা আবার ফ্লাস্কটা মুখে দিতে যেতেই রয় সেটা কেড়ে নিল।
কি হলো ওটা ফেরত দিন।
না।
আপনার মর্জি নাকি?
হ্যাঁ।
কে আপনি, যে আপনার মর্জি মতো চলতে হবে আমাকে?
আপাতত বন্ধু ভেবে নিন।
আমার কোনো বন্ধু নেই।
আমি আছি তো।
আপনার নাম ছাড়া কিছু জানিনা আর বলছেন বন্ধু?
এইবলে বিদিশা ব্রিজের ধারে ঘুরে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো এবং তক্ষুনি ব্যাথায় একটু চোখ বন্ধ করে সরে এলো, রয়ের বুঝতে বাকি র‌ইলো না যে ওর পিঠে মারের জায়গায় ব্যাথাটা আছে এখনো।
সে বললো: চলুন।
কোথায়? বললাম না আমি এখন বাড়িতে ফিরবো না।
আপনার বাড়িতে না, আমার বাড়িতে।
বিদিশার মুখে আবার একটু রাগের আভাস দেখা গেল, বললো: আপনার সাহস তো কম নয়?
আপনার পিঠে এখনো ব্যাথা আছে, ওখানে মলম লাগাবেন, তাহলে ব্যাথাটা কমবে, আপনি যখন নিজের বাড়ি যেতে চান না তখন আমার বাড়ি চলুন রাস্তায় ওখানে মলম লাগানো যাবে না।
আমার দরকার নেই আমি ঠিক আছি, আপনি চলে যান।
আপনার এখনো ব্যাথা আছে, তাই কথাটা বললাম।
বিদিশা আবার রয়ের দিকে তাকালো।
রয় বললো: আমি কাউকে জোর করিনা বেশ আমি চলে যাচ্ছি, গুড বাই। বলে সে চলে গেল একটু দূরে তার গাড়ি দাঁড় করানো ছিল গাড়িতে উঠে সবে চাবি লাগিয়ে স্টার্ট দিতে যাবে এমন সময় জানালায় ঠকঠক আওয়াজ হলো তাকিয়ে দেখে বাইরে দাঁড়িয়ে বিদিশা, রয় একটু অবাক‌ই হলো কারণ সে ভেবেছিল বিদিশা আসবে না। সে দরজার লক খুলে দিলে বিদিশা গাড়িতে উঠে সামনে তার পাশে বসলো।
রয়: কোথায় যাবেন?
বিদিশা: কেন? আপনি‌ই তো আপনার বাড়িতে ইনভাইট করলেন।
আপনার বাড়িতে খুঁজবে না?
ওরা জানে আমি আমার এক বান্ধবীর বাড়িতে আছি।
শহরের একটু বাইরের দিকে রয়ের নিজস্ব একটা বাড়ি আছে, মানে ওই বাগানবাড়ি টাইপের, একতলা একটা বাড়ি দেখতে খুবই সাধারণ কিন্তু আশেপাশে অনেকটা এরিয়া জুড়ে এলাকার সাধারন বাসিন্দাদের সাথে মিশে তার দলের লোক বাস করে তারা সশস্ত্র খালি চোখে দেখে তাদের সাধারণ লোক‌ই মনে হয় কিন্তু তাদের রাখা হয়েছে রয়ের বডিগার্ড হিসেবে যাতে কোনো শত্রু আচমকা আক্রমণ না করতে পারে।
"এখানে আপনি একা থাকেন?" রুমে ঢুকে বিদিশা জিজ্ঞেস করলো।
হ্যাঁ, তবে আপনার ভয়ের কিছু নেই আমি রেপিস্ট ন‌ই, আপনি ফ্রেশ হয়ে নিন, ডিনারে কি খাবেন?
আপনার চাহিদা তো বেড়েই চলেছে এখন আবার আমাকে ডিনারে ইনভাইট করছেন?


আপনি আমার গেস্ট গেস্টকে তো খালি পেটে রাখা যায় না, বলুন কি খাবেন?
আপনি যা খাওয়াবেন। বলে রয়ের দেখানো ওয়াশরুমে চলে গেল বিদিশা, যেতে যেতে শুনলো রয় কাকে যেন ফোন করে রুমালি রুটি, ডিম তরকা আর মাটন কষা অর্ডার করলো।
একটু পরে ওয়াশরুম থেকে জিজ্ঞেস করলো বিদিশা: আপনার কাছে আমার পরার জন্য কিছু আছে?
রয় একটা গাউন ওয়াশরুমে এগিয়ে দিল, একটু পরে সেটা পরেই বেরিয়ে এল বিদিশা ভিজে চুলগুলো পিঠের উপর এলানো, বললো: নতুন গাউন কার জন্য কিনেছিলেন?
ধরে নিন আপনার জন্য।
মলমটা কি আমাকেই লাগাতে হবে কারণ সেটা সম্ভব নয়।
আপনি বিছানায় উবুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন আর গাউনটা পিঠের উপর থেকে একটু নামিয়ে নিন, আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।
আমি নিজেও বুঝতে পারছি না কেন আপনার সব কথা আমি মেনে চলেছি।
মেনে এখনো পর্যন্ত তো আপনার ক্ষতি হচ্ছে না।
বিদিশা বেডরুমে গিয়ে নরম বিছানায় উবুড় হয়ে শুয়ে পরলো তারপর গাউনটা সামনের দিক থেকে খুলে পিঠের উপর থেকে কিছুটা নামিয়ে দিল যদিও কোমর থেকে বাকি নিম্নাঙ্গ ঢাকা, আর উবুড় হয়ে থাকার জন্য সামনের দিকটাও চাপা পরে গেছে, পিঠের উপর থেকে ভেজা চুলগুলো সরিয়ে ফেললো, এতে রয়ের সামনে বিদিশার খোলা পিঠের উপর আঘাতের দাগগুলো স্পষ্ট উন্মুক্ত হলো।
রয় প্রথমে একটা আইসপ্যাকে কিছুটা বরফ নিয়ে আঘাতের জায়গাগুলোয় লাগাতে লাগলো, মাঝে মাঝে বিদিশা ব্যাথায় আঃ করতে থাকে, একটু পরে মলম লাগিয়ে দিল। তারপর বললো "আপনি কিছুক্ষণ এইভাবে শুয়ে থাকুন, আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি"।
কিন্তু বিদিশা একটু পরেই উঠে পরলো ঘরের ভিতরে ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো।
"কি দেখছেন?" রয় ফ্রেশ হয়ে চেঞ্জ করে এসে বললো।
আপনার ঘরটা।
আরো একটু পরে অর্ডার দেওয়া খাবার চলে এল। রয় বললো: আসুন ডিনার রেডি।
বিদিশা ডাইনিং টেবিলে বসতে রয় বললো: আপনি কখনো ক্যাণ্ডেল লাইট ডিনার করেছেন?
না, আমার হাজবেন্ডের মধ্যে এতটুকুও রোমান্টিকতা নেই।
যদি আপত্তি না থাকে তাহলে আজ আমি ব্যবস্থা করতে পারি।
আপনি কি চাইছেন বলুন তো?আমার জন্য এতকিছু কেন করছেন?
আমি শুধু আপনার মুখে হাসি ফোটাতে চাইছি, তো আপত্তি আছে?
না, নেই।
রয় তখন রুমের লাইট নিভিয়ে ডাইনিং টেবিলে কয়েকটা মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখলো, দুজনে চুপচাপ ডিনার করতে থাকলো মাঝে মাঝেই একে অপরের দিকে তাকিয়ে দেখছিল। ডিনারের পরে কিছুক্ষণ বসে দুজনে গল্প করলো দুজনেই নিজেদের কিছু কিছু কথা বললো যেমন পছন্দের হিরোইন কে, কেমন সিনেমা পছন্দ এইসব।
একসময় বিদিশা জিজ্ঞেস করলো: এই যে কয়েক মিনিটের আলাপে আমাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এলেন, এবং প্রায় অর্ধনগ্ন করেও ফেললেন এরকম কটা মেয়েকে করেছেন?
রয়: বাড়িতে আপনিই প্রথম।
আর বাইরে?
না, বাইরেও খুব বেশি না তবে বিশ্বাস করুন আমি কাউকেই জোর করিনা, আমার কথা তো শুনলেন এবার আপনি বলুন।
আমি পড়তে চেয়েছিলাম, লয়্যার হতে চেয়েছিলাম কিন্তু...
তা এখন পড়ছেন না কেন? আপনিই তো বললেন ও বাড়িতে আপনার প্রতি নজর দেওয়ার কেউ নেই।
কি হবে? আমি একজন বন্দী, লয়্যার হলেও সেটা পাল্টাবে না।
আমি মুক্ত হতে চাইছেন না কেন? আপনার হাজবেন্ডের কাছে মুক্তি চান।
সেটা সম্ভব নয়, বীরেন ভট্টাচার্য হতে দেবেন না।
তার মানে সারাজীবন এইভাবেই থাকবেন? অত্যাচার সহ্য করবেন?
এছাড়া আর উপায় নেই।
আছে, উপায় আছে।
মানে?
আমি আপনাকে মুক্ত করতে পারি।

[/HIDE]
 
[HIDE]

বিদিশা যেন হতবাক হয়ে গেল এই কথা শুনে বললো: আপনি জানেন আপনি কি বলছেন?
জানি।
আর তারপর কি আপনার কাছে আসবো?
না, নিজের মতো করে বাঁচবেন লয়্যারের পড়াশোনা কমপ্লিট করবেন।
বিদিশা হো হো করে হেসে উঠলো, বেশ কিছুক্ষণ হেসে বললো: আপনি কি বলুন তো? আমার সাথে যে ফ্লার্টিং করছেন সেটা এবার থামান, আপনি বোধহয় এই শহরে নতুন তাই জানেন না যে বীরেন ভট্টাচার্য কে? তার ক্ষমতা কত? তাই এসব কথা বলেছেন।
"আমি সিরিয়াস" গম্ভীরভাবে বললো রয়। বিদিশা ও কিছুক্ষণ গম্ভীর হয়ে বললো: আমার মনে হয় এবার আমার যাওয়া উচিত। বলে উঠতে যেতেই রয় বললো "রাত অনেক হয়েছে শুয়ে পড়ুন"। বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
বিদিশা ভেবে পেলনা যে রয় ওকে যেটা বললো সেটা সত্যি না ও মশকরা করছে, কিন্তু বীরেন ভট্টাচার্য নিজের স্বার্থে ওকে নিজের বাড়ির ব‌উ করে এনেছেন তাই উনি কিছুতেই চাইবেন না যে বিদিশা ওনার কবল থেকে মুক্তি পাক তাহলে বিদিশার বাবাও বীরেন ভট্টাচার্যের কবলে থাকবে না আর এই শহরে বীরেন বাবুর বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস কার‌ও নেই, কিন্তু বিদিশা যে আর সত্যিই পারছে না শুধু যে রকির অত্যাচার তা তো নয় ওর মা বৈশালী দেবীও এক‌ই রকম। এইসব ভাবতে ভাবতেই বিদিশা ঘুমিয়ে পড়লো।
ওদিকে ড্রয়িংরুমে একটা সোফায় শুয়ে রয় ভাবছে, বিদিশার উপর বাজী খেলে ও ভুল করলো না তো, শিউলী বলেছে বিদিশা সাহায্য করতে পারে, কিন্তু যদি না করে? বা আদৌ ওর সাহায্য করার মতো কোনো ক্ষমতা আছে কিনা সেটারই তো ঠিক নেই, বিদিশা যদি সাহায্য না করে তাহলে আবার নতুন করে ঘুঁটি সাজাতে হবে, আবার নতুন করে প্ল্যানিং করতে হবে, শেষটায় নিজের মনেই বললো রয়: যাই হয়ে যাক সে বীরেন ভট্টাচার্যের শেষ দেখে ছাড়বে।

"এখন তো মনে হচ্ছে ওই সরকার‌ই সব করেছিল" বললেন ধীরেন বাবু উদ্দেশ্য দাদা বীরেন ভট্টাচার্য। অফিসে বসে কথা বলছিলেন দুজনে।
বীরেন বাবু: কিন্তু খটকাটা কিছুতেই যাচ্ছে না।
কিসের খটকা?
মরার আগে কেউ মিথ্যা বলে না, আর তাছাড়া শিউলীর‌ও তো কোনো খোঁজ পেলাম না, ওর ছেলের স্কুলে খোঁজ নিয়েছিলাম।
কি বললো?
টিসি নিয়ে গেছে।
তার মানে নিজেই পালিয়েছে।
ওকে খুঁজতেই হবে ধীরেন, নাহলে ফাঁড়াটা রয়েই যাবে কখন যে কি করে বোঝা মুশকিল।
আমাদের লোক খুঁজেই চলেছে, কতদিন আর লুকোবে?
কিন্তু ধর যদি কেউ সাহায্য করে তখন?
কে হতে পারে?
তোর বৌদি, হাজার হোক বোন তো, আর তাছাড়া...
তাছাড়া কি?
কে বৃষ্টি আর তাথৈএর সম্বন্ধে খোঁজখবর করছিল?
হয়তো সে এই সরকারের লোক?
তাহলে তো বলতে হয় বিপদ এখনো কাটেনি।
তাহলে এখন কি করতে বলছো?
সরকারের অনুগত যারা ছিল তাদের সাথে কথা বল, হয় তারা আমাদের সাথ দেবে আর নাহয়...
বুঝেছি, ঠিক আছে তাই হবে।

সকালে ঘুম ভেঙ্গে বিদিশা কিছুক্ষণ সময় নিল কোথায় আছে সেটা বুঝতে, তারপর মনে পরলো গতরাতের সমস্ত ঘটনা এমনকি রয়ের প্রস্তাবটাও মনে পরলো। রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে এসে কয়েকবার ডাক দিল "রয়.. রয়"।
"গুড মর্ণিং.... ঘুম হলো?" জিজ্ঞেস করলো রয়, সে তখন কিচেনে।
বিদিশা প্রত্তুত্তরে বললো: গুড মর্ণিং, বেশ ভালো ঘুম হয়েছে।
পিঠের ব্যাথা কমেছে?
অনেকটা।
চা না কফি?
কফিই হোক।
রয় একটা ট্রে তে দু-কাপের মতো গরম জল, দুধ, কফি আর সুগার কিউব নিয়ে এল তারপর কফি তৈরি করতে করতে জিজ্ঞেস করলো: সুগার কিউব কটা?
তিনটে।
রয় কফির পেয়ালা বিদিশার হাতে তুলে দিল, বিদিশা একটা চুমুক দিয়ে বললো: উমমম নাইস... আপনার তো অনেক ট্যালেন্ট, এরকম কফি বানাতে পারেন, কয়েক মিনিটের আলাপে একজন মেয়ে যে আবার একজনের বউ তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে এলেন এবং নিজের বেডরুমে থাকতে দিলেন কিন্তু সেই মেয়েটার বাধা দেওয়ার প্রয়োজনটুকু মনে হলো না।
রয়: কফিটা ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
বিদিশা হটাৎ গম্ভীর হয়ে গেল বললো: আপনি কাল রাতে যা বলেছিলেন মনে আছে?
কোনটা?
ওই আমার মুক্তির ব্যাপারে
হ্যাঁ, মনে আছে।
আপনি সিরিয়াস?
একদম।
বীরেন ভট্টাচার্যকে ভয় পান না?
বলেছি তো আমি কাউকে ভয় পাইনা।
বিনিময়ে আপনি কি চান?
তার মানে আপনি রাজী?
আগে জানতে চাই আপনি কি চান?
আপাতত আপনার মুক্তি
ফ্লার্টিং বন্ধ করুন, সিরিয়াসলি বলুন কে আপনি? আমার পিছনে পরেছেন কেন? আর আমার এরকম উপকার করতে চাইছেন কেন?
কেউ তখনই বন্দী থেকে মুক্তি পায় যখন সে নিজে মুক্ত হতে চায়, আপনি যদি মুক্তি চান তাহলে আপনাকে যা করতে হবে তাতে আমারও উপকার হবে।
কিরকম উপকার?
সেটা না হয় এখন নাই শুনলেন।
আপনি বলছেন আপনাকে বিশ্বাস করতে অথচ আপনি আমাকে বিশ্বাস করছেন না।
আমি বীরেন ভট্টাচার্যের সর্বনাশ চাই।
স্তম্ভিত হয়ে গেল বিদিশা, কিন্তু রয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই বুঝলো রয় সিরিয়াস বললো: কিন্তু আপনি যে মাঝপথে আমাকে বিট্রে করবেন না তার প্রমাণ কি?
রয়: আমি তো আপনাকে বিশ্বাস করছি।
দুজনে বেশ কিছুক্ষণ পরস্পরের দিকে তাকিয়ে থাকলো তারপর বিদিশা বললো: আমার মুক্তি শুধু মাত্র ওদের মৃত্যুতে সম্ভব, বলুন আপনার সাহস আছে? বলুন?
আমার সাহসের কি প্রমাণ চান?
যদি কাউকে মারতে বলি মারবেন?
আমি নির্দোষ, নিরপরাধ দের মারি না।
বীরেন ভট্টাচার্য বা রকি ভট্টাচার্যের দলের কেউ নির্দোষ নিরপরাধ নয়। বিদিশা চেঁচিয়ে উঠলো।
রয়: কাকে মারতে হবে?
সত্যি পারবেন তো?
কাকে?

"কিসব মেয়ের ছবি দেখাচ্ছেন ঠাকুরমশাই ধূর একজনকেও আমার ছেলের পাশে মানাবে না" বেশ কয়েকটা মেয়ের ছবি দেখতে দেখতে বললেন এআরসির মা।
ঠাকুরমশাই: মানাবে না? আচ্ছা তাহলে একে দেখুন। বলে আরো একটা ছবি বের করেন তিনি তারপর বলেন: অনেক বড়োলোকের মেয়ে,এর পরিবার এর জন্য খরচ‌ও করবে অনেক, অনেক কিছু দেবে।
কেন আমার ছেলে ভিখারী নাকি? ওর নিজের অনেক আছে তার পরে কারো থেকে কিছু দরকার নেই আমার টাকাপয়সা চাই না, কিন্তু মেয়েটি যেন ভালো হয় আমার ছেলেকে সুখী রাখে সে গরীব হলেও চলবে আমাদের আর কিছু চাই না।
এমন সময় এবাড়িতে যে মহিলা সবসময়ের জন্য থাকেন তিনি হাতে একটা ফোন নিয়ে এলেন বললেন: বোন নাও তোমার ছেলে ফোন করেছে।
হ্যালো,
তুমি আবার ওই পুরোহিতকে ডেকেছো মেয়েদের ছবি নিয়ে?
এই তোকে কে বললো বলতো? দিদি তুমি বলেছো?
আমি ওখানে নেই ঠিকই কিন্তু তোমার উপর সবসময় আমার নজর আছে।
মায়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে কেন?
মা, তোমাকে বলেছি না আমার বিয়ের চিন্তা ছাড়ো।
কেন ছাড়বো? আমার কোনো শখ-আহ্লাদ নেই?
কি শখ আহ্লাদ?
নাতি-নাতনীর মুখ দেখবো না?
মা, এসব ছাড়ো আর ঠাকুরমশাইকে ফোনটা দাও।
না, তুই ওনাকে কিছু বলবি না উনি আমার কথায় এসেছেন,বেচারী ভয়ে ভয়ে আছেন।
মা..
তুই আসবি কবে?
খুব তাড়াতাড়ি আসবো, আরো কয়েকটা মিটিং আছে সেগুলো শেষ করেই আসবো, আর এইসব ফালতু চিন্তা ছাড়ো।
তোর কথাতে নাকি?
হ্যাঁ
তুই কোথায় এখন? আমাকেও নিয়ে চল তোর কাছে
না মা আর তো কটা দিন তারপরেই আমি ফিরে আসবো ততদিন তুমি কিন্তু সাবধানে থাকবে সব ওষুধ ঠিকঠাক খাবে, আচ্ছা মাসিকে ফোনটা দাও।
তুই ভালো আছিস তো, ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করছিস তো?
হ্যাঁ, আমি ঠিক আছি
তোর গলাটা যেন কেমন লাগছে?
ও কিছুনা, মা।
তুই তাড়াতাড়ি ফিরে আয়, তারপর তোর একটা বিয়ে দিয়ে আমি নিশ্চিন্ত।
মা... মাসিকে ফোনটা দাও।
হ্যাঁ বাবু বল।
মায়ের যেন কোনোরকম অযত্ন না হয়, ওষুধ যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে আনিয়ে নেবে, ঠিক আছে?
ঠিক আছে বাবু।
আর নিজের‌ও খেয়াল রেখো, ছাড়ছি।
ঠিক আছে।
[/HIDE]
 
[HIDE]

দাদা দাদা রঘু আর লাল্টুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ওদের ফোন‌ও সুইচড অফ" হাঁফাতে হাঁফাতে একজন এসে খবরটা রকিকে দিল, রকি তখন ফোনে মামা বীরেন ভট্টাচার্যের সাথে কথা বলছিল। গলার স্বর নামিয়ে বললো: খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না মানেটা কি?
দাদা ওরা তো ওখানে গিয়েছিল অনেকক্ষণ আগে তারপর থেকে ওদের আর খোঁজ নেই ফোন করছি বন্ধ আছে।
কথাটা যে রকির ফোনের ওপারে থাকা বীরেন বাবুর কানেও গেছে সেটা এবার বোঝা গেল ফোনের থেকে তার গলা ভেসে এল: কি হয়েছে রকি? কাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না?
রঘু আর লাল্টুকে।
ওই যে দুজন সবসময় তোর সাথে থাকে? কোথায় গিয়েছিল ওরা?
আসলে ওরা গিয়েছিল... ওই একটু মেয়ে নিয়ে ফূর্তি করতে।
ওরা বিশ্বস্ত?
এতদিন আমার সাথে আছে কখনো অবিশ্বাস করার মতো কিছু করেনি।
ওদের খুঁজে বের কর, যদি অন্য কারো কাছে মুখ খোলে তখন...
খুলবে না ওরা জানে মুখ খুললে ওদের কি দশা হবে।
তবুও ওদের খুঁজে বার কর।
ঠিক আছে মামা।

"কোনোদিন মেয়ে দেখোনি?" আচমকা প্রশ্নে হতচকিত হয়ে যায় অভয়, সামনে দাঁড়িয়ে যে কিশোরীটি রাগী মুখে প্রশ্নটা করেছে সে এই বছরেই স্কুলে এসেছে, যবে থেকে ওকে দেখেছে অভয়ের খালি ওকে দেখতে ইচ্ছা করে মাঝে মাঝেই তাকিয়ে থাকে ওর দিকে তার বেশি কিছু নয় কয়েকবার চোখাচোখিও হয়েছে আর আজ এই প্রশ্ন।
"কি হলো কোনোদিন মেয়ে দেখোনি?" আবার প্রশ্ন করে মেয়েটি, কি উত্তর দেবে ভেবে পায় না অভয় তাই চুপ করে থাকে। স্কুলে টিফিনের সময় ক্যান্টিনে বসে ছিল অভয় তখনই তার কাছে এসে প্রশ্নটা করে মেয়েটা, ক্যান্টিনে বেশি কেউ ছিল না যারা ছিল তারা ওই মেয়েটার সাথেই থাকে সবসময় এবার তারা এগিয়ে এলো এদের মধ্যে একটা মেয়ে বললো: অই হয়েছে রে তাথৈ? কোনো প্রবলেম?
তাথৈ: না,তোরা যা আমি আসছি।
মেয়েটি: ঠিক তো?
তাথৈ: হ্যাঁ বৃষ্টি ঠিক।
ওই গ্ৰুপে আরো একটা ছেলে ছিল নাম সাম্য সে বললো: কিছু হলে বলো তাথৈ।
তাথৈ: না, সাম্য তুই যা। সবাই চলে গেলে তাথৈ আবার অভয়কে জিজ্ঞেস করলো: কি হলো উত্তর দাও।
অভয়: সরি, আমি বুঝতে পারিনি এতে তোমার সমস্যা হয় আর তাকাবো না।
তাথৈ কিছুক্ষণ রাগী চোখে অভয়কে দেখে চলে যায় এরপর থেকে তাথৈ লক্ষ্য করে সত্যিই অভয় আর তার দিকে তাকায় না, এমনিতে অভয় তার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করেনি, কোনোদিন নিজে থেকে এসে কথাও বলেনি শুধু দূর থেকে তাকিয়ে দেখতো কিন্তু এখন সেটাও বন্ধ। আরও কিছুদিন লক্ষ্য করলো তাথৈ সত্যিই ছেলেটার কথার দাম আছে, আরেকটা জিনিস লক্ষ্য করলো তাথৈ, অভয় পড়াশোনায় যথেষ্ট মেধাবী, ক্লাসের শিক্ষকরাও তাকে পছন্দ করেন।
কিন্তু ক্লাসের যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনায় ভালো বা শিক্ষকদের প্রিয় তারা মূলত ক্লাসের সামনের দিকে বেঞ্চগুলোতে বসে ব্যতিক্রম অভয় তাকে কোনোদিন সামনের দিকে বসতে দেখা যায় না সে বসে পিছনের দিকের বেঞ্চগুলোতে আর তার সাথে যারা বসে তাদের ভালো ছাত্র যাকে বলে তাদের মধ্যে ধরা যায় না, ওই সোজা ভাষায় 'ব্যাকবেঞ্চার', কিন্তু অভয় ওদের সাথে কেন মেশে, ওদের সাথেই কেন ক্লাসে বসে সেটা শিক্ষকরা ভেবে পান না অনেক চেষ্টা করেন অভয়কে সরিয়ে আনতে, কখনো যদি ওদের পাশ থেকে উঠিয়ে অন্য জায়গায় বসান তো ক্লাস শেষে আবার অভয় ফিরে যায় নিজের বন্ধুদের কাছে, কিন্তু অভয়কে কিছু বললেই সে শুধু সুন্দরভাবে একটা হাসি দেয়।
শিক্ষকরা অভয়কে যেমন ভালোবাসেন তেমন মাঝে মাঝে রেগেও যান রাগের কারন আর কিছুই না ক্লাসের পরীক্ষার খাতায় লেখা উত্তর, সেটা অভয়সহ আরো চার থেকে পাঁচ জন ছেলের পুরো এক‌ই হয় কয়েকজন বানান ভুল করে এই যা, আর শিক্ষকেরা ভালো করেই জানেন যে উত্তরের মূল উৎস অভয়ের খাতা তার থেকেই বাকীদের উত্তর সরবরাহ হয় অভয়ের যেখানে ভুল হয় তাদের‌ও সেখানে ভুল হয়।


তাথৈ এবার সত্যিই কৌতূহলী হলো অভয়কে মতো মেধাবী ছেলে ব্যাকবেঞ্চার কেন? এব্যাপারে একদিন ক্লাসের একটা মেয়েকে জিজ্ঞেস করায় মেয়েটা বললো "ও ওইরকম, যাদের সাথে কেউ মেশেনা ও তাদের সাথেই থাকে মেশে, এমনকি পরীক্ষাতেও ওর জন্যই ওই ছেলেগুলো পাশ করে"।
একদিন পরীক্ষা হলে অঙ্ক পরীক্ষার দিন যথারীতি অভয় লিখে যাচ্ছে এবং তার বন্ধুদের সরবরাহ করে যাচ্ছে, একসময় অ্যাটেণ্ডেন্ট ধরে ফেললেন এবং অভয়কেই সরিয়ে দিলেন বসালেন তাথৈএর পাশে, তাথৈ লেখার সাথে মাঝে মাঝেই দেখছিল যে অভয় ওর বন্ধুদের সাহায্য করছে লিখতে, কিন্তু ওকে সরিয়ে দেওয়ায় ওর বন্ধুদের মুখ কালো হলেও অ্যাটেণ্ডেন্টের মুখে একটু হাসি দেখা গেল।
বললেন: এবার মন দিয়ে পরীক্ষা দে অভয়।
অভয় একবার বন্ধুদের দিকে তাকিয়ে আবার পরীক্ষায় মন দিল, একটু পরে পিছন থেকে আওয়াজ এল "অভয় অভয়"
অভয় বুঝলো তার পিছনে বসা মেয়েটা ডাকছে, ও একটু পিছনে সরে গেল। তাথৈএর কানেও গেল ডাকটা সে ঘাড়টা একটু ঘুড়িয়ে দেখলো সুস্মিতা ডাকছে অভয়কে, অবাক হলো তাথৈ সুস্মিতা কোনোদিন অভয়ের সাথে কথা বলেনি সে থাকে তাথৈদের সাথে মাঝে মাঝে তো সাম্যর সাথে মিলে অভয়কে ব্যঙ্গ করতে ছাড়ে না।
সুস্মিতা বললো: কটা অঙ্ক দেখা না অভয় নাহলে ফেল করে যাবো, প্লিজ দেখা।
অভয়: আমি চাপা দি‌ইনি পাশে রাখছি দেখে দেখে লিখে নাও। দুজনেই ফিসফিসিয়ে কথা বলছে, বলাইবাহুল্য যে সুস্মিতার পরীক্ষা ভালোই হলো এবং সেটা অভয়ের জন্যই, কিন্তু পরীক্ষার পরে অভয় আবার ওর বন্ধুদের কাছে, সুস্মিতাকে সে চেনেই না।
তাথৈ এবার বাস্তবিকই আকৃষ্ট হলো অভয়ের প্রতি এখন সেই মাঝে মাঝে অভয়কে দেখে কিন্তু অভয় তাথৈএর দিকে আর তাকায় না এমনকি তাথৈকে এড়িয়ে চলে ওর থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলে।
একদিন ক্যান্টিনে তাথৈ, বৃষ্টি আর তাদের বন্ধুরা বসে গল্প করছে, তাথৈ কিছু বলছে না সে অভয়ের কথা চিন্তা করছে এমন সময় সাম্য বললো: কাল বিকেলে কি করছো তাথৈ? কাল তো রবিবার বিকেলে ফ্রী আছো তো?
তাথৈ: কেন?
সাম্য: কাল বিকেলে আমাদের পাড়ার মাঠে এসো একটা ফুটবল ম্যাচ আছে, ওই অভয়দের পাড়ার টীমের সাথে।
বৃষ্টি: তুই খেলতে পারিস? হারাতে পারবি?
সুস্মিতা: কি যে বলিস বৃষ্টি সাম্য খেলবে ফুটবল?
বৃষ্টি আর সুস্মিতা হাসছে দেখে সাম্য যেন রেগে গেল বললো: ঠিক আছে তোরাও আয় দেখবি, আসবে তো তাথৈ?
তাথৈ যেন অন্যমনস্ক ভাবটা কাটিয়ে বললো: কি কি বলছিস?
বৃষ্টি: সাম্য খেলা দেখতে আমণ্ত্রন করছে, ওদের পাড়ার টীমের সাথে অভয়দের পাড়ার টীমের খেলা।
তাথৈ: অভয় খেলবে?
সাম্য: এখনো জানিনা, খেলতে পারে, আসবে তো?
বৃষ্টি: ঠিক আছে আমরা আসবো।


[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top