What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রতিশোধ: দ্যা রিভেঞ্জ by Monen2000 (3 Viewers)

[HIDE]

পরদিন বিকেলে ফুটবল ম্যাচ দেখতে তাথৈ, বৃষ্টি, সুস্মিতা এবং আরো কয়েকজন মেয়ে খেলা দেখতে এসেছিল, মাঠে অনেক দর্শক হয়েছে এবং তাদের মধ্যে আরো অনেক মেয়েও আছে যাদের কেউ সাম্যদের জন্য হাততালি দিচ্ছে তো কেউ অভয়দের জন্য, অভয় খেলছে। দুটো দল‌ই ভালো খেলছে বৃষ্টি, সুস্মিতা সহ আরো অনেকেই সাম্যর জন্য চিয়ার করছে শুধু তাথৈ বাদে সে অভয়কে একদৃষ্টে লক্ষ্য করছে।
খেলায় কিন্তু সাম্যর দল হেরে গেল অভয়ের দল জিতলো বটে কিন্তু সাম্যর একটা ট্যাকেলে পায়ে চোট পেল অভয়, একটু খেলা শেষে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটতে লাগলো অভয়কে ওভাবে দেখে তাথৈএর যেন কি একটা হয়ে গেল কিন্তু কেন হচ্ছে বুঝতে পারছিল না তার ইচ্ছা করছিল অভয়ের কাছে যেতে অথচ অভয়ের কাছে যেতেও পারছে না কারন সে তখন তার দলের ছেলেদের সাথে আছে, এদিকে বৃষ্টি ক্রমাগত সাম্যকে টিটকারী দিয়ে যাচ্ছে সাম্য মাথা নীচু করে আছে, যদিও তাথৈএর ভীষণ রাগ হচ্ছিল অভয়কে ওভাবে মারার জন্য।
এমন সময় পাশ থেকে একজন অচেনা মেয়ে কাকে যেন বললো: আরিব্বাস ছেলেটাকে দেখ কি হ্যাণ্ডসাম রে।
তাথৈ ওদের দৃষ্টিকে অনুসরণ করে দেখলো ওরা অভয়কে দেখে কথাটা বলছে, সে এখন জার্সি খুলে ফেলেছে খালি গা বেয়ে ঘাম গড়িয়ে পরছে, এবার একজন জলের বোতল এগিয়ে দিল অভয় সেটা উঁচু করে জল খেতে লাগলো কিছুটা জল মুখ থেকে বেরিয়ে গলা বেয়ে পরতে লাগলো, তাথৈ লক্ষ্য করলো শুধু সেই মেয়েটা না আরও কয়েকটা মেয়ে অভয়ের দিকে একদৃষ্টিতে হা করে তাকিয়ে আছে এমনকি সুস্মিতাও..
একটু পরে অভয় সাম্যর দিকে এগিয়ে এল হ্যাণ্ডশেকের জন্য হাতটা বাড়িয়ে বললো: তুইও ভালো খেলেছিস সাম্য, খেলায় হারজিত আছেই সো মাইণ্ড করিস না। সাম্য কিন্তু হাত মেলালো না রাগী চোখে অভয়কে যেন মাপতে লাগলো। অভয় এখনো খালি গায়ে, তাথৈ দেখলো আশেপাশের মেয়েগুলো তখনও অভয়ের দিকে তাকিয়ে আছে ,তাথৈএর মাথায় কেন যেন রাগ উঠে গেল সেটা সে নিজেও বুঝলো না অভয়কে বললো: তোমার মতো অসভ্য ছোটোলোকের সিমপ্যাথির দরকার নেই সাম্যর, ও নীচু মনের ছেলে নয় যে এরকম একটা ম্যাচে হেরে মনখারাপ করে বসে থাকবে।
এই অতর্কিত আক্রমণ এবং অপমানে অভয় হতভম্ব হয়ে গেল সে বললো: আমি তো জাস্ট...
তাথৈ: দরকার নেই বললাম তো, এখন এখান থেকে বিদায় হ‌ও।
অভয় আর কিছু না বলে মাথা নীচু করে যেতে যেতে শুনলো পিছনে তাথৈ বলছে: নির্লজ্জ ছোটোলোক ছেলে কোথাকার?
পরদিন স্কুলে যথারীতি তাথৈ ক্লাসের প্রথমদিকে ওর গ্ৰুপের সাথে বসেছে, একটু পরেই অভয় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে এসে পিছনের দিকে চলে গেল বোঝাই যাচ্ছে ওর পায়ের ব্যাথাটা এখনো কমেনি। ছুটির পরে কিন্তু তাথৈ অভয়কে খুঁজতে লাগলো, অভয়ের বন্ধুদের জিজ্ঞেস করে জানলো যে ওকে স্কুলের মাঠের দিকে যেতে দেখা গেছে তাথৈ ওইদিকে দ্রুত পায়ে চলে গেল।
মাঠে গিয়ে একটু এদিক ওদিক খুঁজতেই অভয়কে দেখতে পেল তাথৈ, অভয় তখন কাছেই একটা বড়ো গাছের ছায়ায় বসে আঘাত প্রাপ্ত পা থেকে বুট মোজা খুলে তাতে বরফ ঘষছে, ওর ব্যথাটা যে এখনো বেশ ভালো মতোই আছে সেটা মাঝে মাঝে ওর চোখ-মুখ কুঁচকে যাওয়া থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
তাথৈ জানতো স্কুলের পাশের এক দোকানে ছোটো পাউচে করে ঠান্ডা জল কিনতে পাওয়া যায় সে তাড়াতাড়ি ওই দোকানের দিকে গেল।
পায়ের ব্যাথাটা যে এত সহজে কমবে না বুঝতে পারছিল অভয়, সাম্য যে ওকে কাল ইচ্ছা করে মেরেছে সেটাও বুঝেছিল কিন্তু সবথেকে যেটা খারাপ লাগছিল সেটা তাথৈএর ব্যবহার কিন্তু কেন খারাপ লাগছিল সেটা বুঝতে পারছিল না। আজ স্কুলে ঢোকার আগে পাশের দোকানে বরফের কথা বলে রেখেছিল ছুটির পর ওখান থেকেই বরফ নিয়ে গাছের ছায়ায় বসে পায়ে ঘষছিল আর তাথৈএর খারাপ ব্যবহারের কথা ভাবতে লাগলো কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পরেছিল এমন সময় পায়ে একটা নতুন স্পর্শ পেয়ে চমকে তাকিয়ে দেখে তাথৈ ওর সামনে বসে ওর পায়ে বরফ ঘষছে।
তাড়াতাড়ি বলে উঠলো: কি করছো পা ছাড়ো।
তাথৈ উত্তর না দিয়ে অভয়ের পায়ে বরফ ঘষতে লাগলো অভয় এবার একটু রাগের সঙ্গেই বললো: দেখো আমার আর অপমানিত হবার শখ নেই, প্লিজ তুমি এখান থেকে যাও... ছাড়ো আমি‌ই চলে যাচ্ছি। বলে উঠতে যেতেই তাথৈ ধমকে উঠলো: চুপচাপ বসো এখানে, ওঠার চেষ্টা করলে খুব খারাপ হয়ে যাবে।

অভয়: পা থেকে হাত সরাও। অভয় তাথৈএর হাত সরাতে গেল, তাতে তাথৈ যেন আরো রেগে গেল আবার ধমক দিল: চুপ করে বসতে পারছো না?
তারপর আবার নিজে নিজেই গজরাতে লাগলো: অসভ্য অভদ্র ছেলে..
এবার অভয়‌ও রেগে গেল বললো; তুমি ছাড়ো, যা করেছো তারজন্য ধন্যবাদ। বলে আবার উঠতে গেল অমনি তাথৈ বললো: প্লিজ বসো। কিন্তু এবারে তাথৈএর গলায় ধমক নেই উল্টে তার গলা কাঁপছে অভয় অবাক হয়ে দেখলো তাথৈ হাতের উল্টোপিঠে নিজের চোখদুটো মুছে নিল, তাথৈ কাঁদছে..
অভয় বললো: বাঃ চোট লেগেছে আমার, আবার আমাকেই বারবার অপমান করছো সেটাও মেনে নিলাম কিন্তু তুমি কাঁদছো কেন?? কেউ দেখলে ভাববে আমি তোমাকে কাঁদিয়েছি। তাথৈ আবার নিজের চোখ মুছলো, অভয় তাথৈএর হাত থেকে বরফ নিতে গেল কিন্তু তাথৈ দিল না নিজেই চেপে ধরে থাকলো, অভয় বললো: তুমি কাঁদছো কেন সেটা তো বলবে?
তাথৈ: তোমার খুব ব্যথা করছে না?
অভয় একটু অবাক হলো এই মেয়েটার হয়েছে টা কি? কাল এত অপমান করলো আজ আবার নিজে এসে বরফ লাগাচ্ছে, একটু পরে তাথৈ বললো: তুমি বসো আমি আরেকটু বরফ নিয়ে আসি। বলে তাথৈ উঠতে যেতেই অভয় বাধা দিল "এই না তার দরকার নেই আমি ক্রেপ বেধে নিচ্ছি, কিন্তু তুমি কাঁদছিলে কেন?"
তাথৈ আবার বসে বললো: দাও আমি বেধে দিচ্ছি। বলে অভয়ের হাত থেকে ক্রেপটা নিয়ে নিল, অভয় বললো: সত্যি বলোতো কি হয়েছে তোমার? কাল আমাকে কত অপমান করলে আর আজ আমার চোটে বরফ লাগালে এখন ক্রেপ বাঁধছো, ব্যাপারটা কি?
তাথৈ এবার আবার ঝাঁঝিয়ে উঠলো: বেশ করেছি, পায়ে চোট লেগেছে হাঁটতে পারছে না সেদিকে হুঁশ নেই উনি জার্সি খুলে বডি দেখাচ্ছেন.. আর ওদেরও লজ্জা নেই একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
অভয়: আমি জার্সি খুলেছি বলে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন? আমার গরম লাগছিল তাই খুলেছি আর কারা দেখছিল?
দেখোনি? ওই মেয়েগুলো।
তাতে তুমি রেগে যাচ্ছো কেন?
না দেখবে না।
অভয় কিছুটা বুঝতে পারলো মনে মনে হাসলো তারপর বললো: কেন? দেখবে না কেন?
অভয়ের পায়ে ক্রেপ বাঁধা হয়ে গিয়েছিল, তাথৈ এবার অভয়ের পাশে ওর গা ঘেঁষে বসে বললো: না দেখবে না আমার ভালো লাগে না।
অভয় হেসে উঠলো সেটা দেখে তাথৈ একটু রেগে গেল বললো: তুমি হাসছো কেন?
কিছুনা, এমনি।



[/HIDE]
 
[HIDE]

এইভাবেই তাথৈ আর অভয়ের বন্ধুত্ব হলো, এরপর দিন তাথৈ ক্লাসে সামনের দিকে না বসে পিছনে চলে এল, যে বেঞ্চে অভয় বসেছিল সেখানে, অভয়ের পাশে একটা ছেলে বসে ছিল তাকে বললো: এই তুই অন্য জায়গায় বস, আমি এখানে বসবো।
শুনে অভয় ও তার বন্ধুরা অবাক হলো, তাথৈএর বন্ধুরাও অবাক হলো সাম্য তো এসে বললো: তুমি এখানে বসবে কেন? আমাদের সাথে বসবে চলো।
তাথৈ বললো "না, আমি এখানে বসবো" তারপর আবার অভয়ের পাশে বসা ছেলেটাকে বললো: কি হলো? বললাম যে অন্য জায়গায় বসতে। ছেলেটা একবার অভয়ের দিকে তাকালো অভয় ইশারা করতে সে উঠে পিছনের বেঞ্চে গেল এবং তাথৈ সেখানে বসলো, সাম্য অভয়ের দিকে অগ্নিদৃষ্টি দিয়ে চলে গেল।
অভয় বললো: ও কিন্তু রেগে গেল।
রাগুক...তোমার পায়ের ব্যথা কমেছে?
হ্যাঁ, অনেকটা কম।
এরপর তাথৈ আর অভয়ের ঘনিষ্ঠতা ক্লাসের প্রায় সবাই লক্ষ্য করলো, সে এখন অভয়ের পাশে ছাড়া বসে না, দিনে দিনে দুজনেই বুঝলো তাদের মধ্যে যেটা আছে সেটা শুধু বন্ধুত্ব না, সেটা তার থেকে বেশী কিছু, দুজনে পরের ক্লাসে উঠলো, স্কুল ছুটির পরে দুজনে একসাথে ঘোরে ,বেশিরভাগ সময় পাড়ার শিবমন্দিরের পিছনের বাগানে একটা বটগাছের তলায় বসে গল্প করে। তাথৈ এর অভয়ের আরেকটা স্বভাব ভালো লাগে সেটা হলো অভয় কিন্তু কখনো তাদের সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে তাথৈকে স্পর্শ করে না বা এমন কিছু দাবী করে না যেটাতে তাথৈ অস্বস্তি বোধ করবে এমনকি কখনো নিজে থেকে তাথৈএর হাত‌ও ধরে না একটা শালীনতার দূরত্ব বজায় রাখে, তাথৈ‌ই বেশিরভাগ সময় অভয়ের পাশে হাঁটতে হাঁটতে ওর হাতটা জড়িয়ে ধরে। একদিন অভয় তাথৈএর সাথে ঘুরছিল আরেকটু হলেই মায়ের মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছিল, তাড়াতাড়ি পাশে আড়ালে তাথৈকে নিয়ে লুকিয়ে পরে, তাথৈ জিজ্ঞেস করে: কি হলো?
অভয়: আমার মা
তাথৈ এবার দুষ্টুমি শুরু করলো "আমি আলাপ করবো"বলে অমৃতা দেবীর দিকে যেতেই অভয় পথ আটকে দাঁড়ালো বললো "দেখা করবে মানে?"
তাথৈ: কথা আছে
কি কথা?
আছে
কোনো কথা নেই, এখানে লুকিয়ে থাকো
না আমি দেখা করবো আন্টির সাথে, কথা আছে
আবার.. কি কথা?
আমাদের সম্পর্কের কথা বলবো, ওনাকে জানিয়ে রাখতে হবে তো নাকি?
কি জানাবে?
তোমার জন্য যাতে মেয়ে না দেখে
মানেটা কি? আমাকে আজ বাড়ি থেকে তাড়ানোর প্ল্যান করছো নাকি? প্লিজ এরকম কোরো না
তাথৈ হো হো করে হাসতে লাগলো, অমৃতা দেবী আশেপাশে নেই এটা নিশ্চিত হবার পর আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে দুজন তাথৈএর হাসি তখনও থামেনি দেখে অভয় গম্ভীরমুখে বলে: এবার কিন্তু আমিও আন্টির সামনে গিয়ে বলবো...
তাথৈ: আমার মা সব জানে
কি? কিভাবে?
আমাদের একসাথে দেখে ফেলেছিল, বাড়ি যেতেই চেপে ধরেন।
কি বললেন?
সব শুনে বললেন এখন এসবের সময় নয় মন দিয়ে পড়াশোনা করো, আমি তোমার কথা বললাম যে তুমিও সবসময় এই কথাই বলো।
তোমার সেটাই করা উচিত।
মনে আছে তো দুদিন পর শিবরাত্রি?
কি? শিবরাত্রি তো কি হয়েছে?
আমি উপোস রাখবো তোমার জন্য।
কেন কি দরকার?
দরকার আছে তোমাকে কিন্তু ওইদিন দেখা করতে হবে।
কি? কেন?
ওইদিন সন্ধ্যায় মন্দিরের পিছনের বাগানে আসবে, আমি তোমার হাতে জল খেয়ে উপোস ভাঙবো।
তাথৈ ওসব সিনেমায় ভালো লাগে, তোমার উপোস রাখার দরকার নেই।
ঠিক আছে তোমাকে আসতে হবে না। বলে অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে থাকে।
তাথৈ শোনো তুমি এর আগে উপোস করেছো? করোনি তো তাহলে?
তাথৈ কোনো কথা বলছে না দেখে শেষে বলে: ঠিক আছে আমি আসবো।
তবুও তাথৈ কথা বলছে না দেখে বললো: আবার কি হলো? বললাম তো আমি আসবো।
তাথৈ এবার মুখ ফেরায় বলে: সত্যি বলছো?
তোমাকে মিথ্যা বলেছি কখনো?
শিবরাত্রির সন্ধ্যায় পূজোর পরে অভয়কে মন্দিরের পিছনে আসতে ম্যাসেজ করে নিজে যায় কিন্তু অন্ধকারে বরাবরই ভয় তাথৈএর, মন্দিরের সামনেটা আলোয় ঝলমল করছে কিন্তু পিছনে বাগানে আলো নেই তাই বেশ অন্ধকার, তাথৈ ভয় পেলেও চলে যায় না হটাৎ পিছনে পায়ের শব্দ শুনে চমকে ঘুরে দাঁড়ায়, অভয় এসেছে সে এসে এই প্রথম নিজে থেকে তাথৈএর একটা হাত ধরে বলে "ভয় নেই আমি আছি তো"।

একটা জিনিস তাথৈর সহ্য হয় না সেটা হলো অন্য কোনো মেয়ের অভয়ের ঘনিষ্ঠ হবার চেষ্টা করা যদি কেউ করে তাহলে প্রচণ্ড রেগে যায় আর ঝালটা মেটায় অভয়ের উপর। একদিন ক্লাসে তাথৈ আসার আগে অভয়ের পাশে এসে বসেছিল সুস্মিতা তাথৈ এসে ওকে বারবার সরতে বলার পরেও সে সরলো না অভয়‌ও কিছু বললো না দেখে সে পিছনের বেঞ্চে ঠিক অভয়ের পিছনে বসলো, এবং পুরো দিনটা পিছন থেকে অভয়কে খোঁচা দল আর চিমটি কাটতে থাকে, সুস্মিতা যতবার অভয়ের গা ঘেঁষে আসে ততবার অভয় হয় খোঁচা নয়তো চিমটি অনুভব করে, একবার তো সুস্মিতা কি একটা কথায় হাসতে হাসতে অভয়ের হাত ধরতেই একটা জোড়ে চিমটি খেল অভয়।
ছুটির পরে তাথৈ রেগে কোনো কথা না বলে হনহন করে বেরিয়ে গেল, অভয়‌ও কোনোমতে ব্যাগ গুছিয়ে ছুট লাগালো। "তাথৈ এই তাথৈ শোনো" অভয় ডাকতে লাগলো কিন্তু তাথৈ কোনো কথা না বলে জোরে জোরে হাঁটতে লাগলো, অভয় এবার তাথৈএর কাছে গিয়ে বললো: কি হয়েছে বলবে তো? তুমি কথা বলছো না কেন?
তাথৈ ঝংকার দিয়ে উঠলো: কেন যার সাথে বসেছিলে তার কাছে যাও, আমার কাছে কেন?
অভয়: আমি কোথায় বসেছিলাম? ওই তো এসে বসলো।
তাথৈ তেমনি তেজের সঙ্গে বললো: ও এসে বসলো আর তুমি বসতে দিলে?
কি করবো বলো? বেঞ্চটা তো আমার একার নয়..
তুমি ওকে ওঠালে না কেন?
ও তোমার কথা শুনলো? তোমারই তো বন্ধু।
তুমি উঠে এলে না কেন? তুমি জানোনা তোমার পাশে আমি বসি?
এবার অভয় ফাঁপড়ে পরলো বললো: আচ্ছা নেক্সট টাইম যদি বসে তাহলে উঠে আসবো।
ঠিক তো?
ঠিক।
এবার তাথৈ অভয়ের একটা হাত জড়িয়ে ধরলো অভয় একটা হাঁফ ছেড়ে বললো: যাক রাগ কমলো।
তাথৈ: তুমি জানোনা তোমার পাশে অন্য মেয়েকে আমার সহ্য হয় না, তুমি শুধু আমার, শুধু আমার।

নিজের রুমের ব্যালকনিতে একটা আরামকেদারায় বসে অভয়ের সাথে পরিচয় থেকে ওর সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্তের কথা ভাবছিল তাথৈ হাতে অভয়ের সেই ছবিটা যেটা মিস্টার গুপ্তকে দিয়ে জোগাড় করিয়েছিল, এবার অভয়ের ছবিটার দিকে তাকিয়ে যেন অভয়কেই বলছে এমনভাবে বলতে থাকে "কাল আমার জন্মদিন অভয়, এরকমই এক জন্মদিনের ঠিক আগের দিন তোমার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল তারপর আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি, তোমার ফিরে আসার অপেক্ষা করে যাচ্ছি, জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো সেদিন বাইরে যাওয়ার আগে তোমাকে বলে যেতে পারিনি, কিন্তু তার কারণ ছিল সেটা তুমি ফিরে এলেই বলবো কিন্তু এবার তোমাকে ফিরতেই হবে আমার কাছে, আমি আর তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না। আমার উপর তোমার রাগ অভিমান সব আমি মেনে নেবো তোমার অধিকার আছে সেটার কিন্তু আমাকে ছেড়ে যাওয়ার অধিকার নেই। আজ আমি তোমাকে বলছি এই জন্মদিনে যদি তুমি না আসো বা তোমার বেঁচে থাকার কোনো চিহ্ন না পাই তবে বুঝবো তুমি আর বেঁচে নেই আর তাহলে আমারও বেঁচে থাকার কোনো মানে থাকবে না তাই এই জন্মদিনে যদি তোমাকে বা তোমার উপস্থিতির কোনো প্রমাণ না পাই তাহলে এই জন্মদিন‌ই আমার মৃত্যুদিন হবে,আমি নিজেকে শেষ করে দেবো... আমার ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে তোমাকে ফিরতেই হবে...প্লিজ অভয় এবার ফিরে এসো, ফিরে এসো আমার কাছে"। তারপর যেন অভয়কেই চুম্বন দিচ্ছে এমনভাবে ছবিটা নিজের ঠোঁটে ছোঁয়ালো তাথৈ।



[/HIDE]
 
[HIDE]

তাথৈ এই তাথৈ" ডাকতে ডাকতে ঘরে ঢুকলো বৃষ্টি, তাথৈ তৎক্ষণাৎ ফটোটা লুকিয়ে ফেলে।
"কি রে তুই এখনো রেডি হোসনি? জিজ্ঞেস করে বৃষ্টি।
কেন? রেডি হবো কেন? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে তাথৈ।
তোকে বললাম যে আজ বেরোবো, বাইরে ডিনারে যাবো।
তুই যা, আমার ইচ্ছা নেই।
উঁহু ইচ্ছা নেই বললে তো হবে না, যেতেই হবে, চল চল।
বৃষ্টিতে জোরাজুরিতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও গিয়ে একটা চুরীদার আর পাজামা পরলো, গলায় ওড়না নিয়ে কপালে ছোট্ট একটা টিপ পড়লো আর চুলটা একটু আঁচড়িয়ে পিঠের উপর খোলা রাখলো। এর বেশি সাজলো না তাথৈ, এমনিতেও খুব বেশি সাজে না তাথৈ একে তো না সাজলেও তাকে দেখতে বেশ ভালোই লাগে আর সে যাকে দেখানোর জন্য সাজবে সেই অভয়‌ই তো কাছে নেই এইসব ভেবেই সে বেশি সাজে না, বৃষ্টি অবাক হলো বললো: হয়ে গেল, এইভাবে বাইরে যাবি?
তাথৈ: হ্যাঁ, এতেই যথেষ্ট।
কিন্তু...
কোনো কিন্তু নয় আমি গেলে এভাবেই যাবো, নাহলে তুই একাই যা।
বৃষ্টি আর কিছু বললো না, দুজনে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখে একটা মারুতি স্যুমো দাঁড়িয়ে আছে এবং তার ভিতরে বসে আছে ওদের স্কুলের বন্ধু-বান্ধবী যাদের মধ্যে সুস্মিতা এবং সাম্য ছাড়াও আরও কয়েকজন আছে।
সাম্য তাথৈকে দেখে বললো: কেমন আছো তাথৈ? অনেক বছর পরে দেখা হলো, চিনতে পারছো?
তাথৈ: তুই সাম্য তো?
যাক চিনতে পেরেছো তাহলে।
গাড়িতে একজন নতুন ছেলে ও মেয়ে ছিল বৃষ্টি ওদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল।
সাম্য ড্রাইভার সিটে বসে আছে সে বললো: তাথৈ এসো সামনে বসো। তাথৈ মানা করতে যাবে কিন্তু বৃষ্টি জোর করায় বসতেই হলো। সবাই একটা রেস্টুরেন্টে এলো।
রেস্টুরেন্টে সবাই ঢুকে দেখে প্রতিটা টেবিল জুড়ে অনেকটা ৮-৯ বছরের বাচ্চা ছেলেমেয়েরা য়ভর্তি,বাচ্চারা প্রত্যেকেই নতুন পোশাক আশাক পরে আছে, তবে ওরা যে খুবই গরীব ঘরের ছেলেমেয়ে সেটা বোঝা যাচ্ছে, ওদের সবার মুখে হাসি সবার সামনে খাবার-দাবার ভর্তি।
সুস্মিতা বললো: এ মা এখানে তো সব টেবিল ভর্তি, চল অন্য কোথাও যাই
সাম্য: না, কেন এখানেই থাকবো, দাঁড়া ম্যানেজারের সাথে কথা বলি। বলে সাম্য একজন ওয়েটারকে বললো ম্যানেজারকে ডাকতে।
ম্যানেজার এসে বললো: সরি স্যার, আজ সবকটা টেবিল বুকড হয়ে গেছে।
সাম্য: এই ভিখারীদের জন্য টেবিল বুকড? কে করেছে?
ম্যানেজার আঙুল দিয়ে কফি কাউন্টারের দিকে দেখালো ,সাম্য তাকিয়ে দেখে সেখানে একটা তাদেরই বয়সী ছেলে দাঁড়িয়ে কফি খাচ্ছে আর মোবাইলে কি যেন করছে ছেলেটাকে দেখে সুস্মিতা এবং আরেকটা মেয়ে বললো: ওয়াও কি হট রে, দেখ তাথৈ।
তাথৈ: তোদের সব ছেলেই হট লাগে। বলে আড়চোখে ছেলেটার দিকে তাকিয়েই চোখ আটকে গেল তাই দেখে দুটো মেয়ে বললো: কি রে এখন নিজে দেখছিস কেন?
কিন্তু তাথৈএর কানে এখন কোনো কথা ঢুকছে না সে একদৃষ্টে ছেলেটাকে দেখছে, ছেলেটা একটা কালো শার্ট ইন করে পরে আছে যার বুকের কাছে একটা বোতাম খোলা, ফুলস্লিভ শার্ট কিন্তু স্লিভ দুটো হাতের কব্জির একটু উপর পর্যন্ত গোটানো, নীচে কালো জিনস, পায়ে পাওয়ার শ্যু চোখে গগলস্ মাথায় ঘাড় পর্যন্ত লম্বা চুল, সামনের দিকে মাঝখানে সিথি কাটা তারপর দুসাইডে আলাদা ভাবে ব্যাকব্রাশ করা কপালের উপরে চুলটা ঢেউ এর মতো উঁচু হয়ে দুদিকে নেমে পিছনে চলে গেছে, সাথে একেবারে ক্লিন শেভড মুখ ছেলেটার।
এরমধ্যেই বৃষ্টি ছেলেটার দিকে এগিয়ে গেছে বললো: এই যে মিস্টার, শুনুন।
ছেলেটি এবার মুখ তুলে বৃষ্টিকে দেখলো তারপর বললো: ইয়েস।
এই ভিখিরির বাচ্চাদের জন্য আপনি টেবিল বুক করেছেন?
ছেলেটা একটুক্ষণ চুপ থেকে বললো: হ্যাঁ, আর ওরা ভিখিরি নয়।
ওদের সরিয়ে নিন, আমরা বসবো।
এখনো ওদের খাওয়া হয়নি, হলেই সরে যাবো।
উঁহু এখনই ছাড়ুন
সেটা সম্ভব নয়।
আপনি জানেন আমি কে?
এইসময় ম্যানেজার হন্তদন্ত হয়ে এগিয়ে এসে ছেলেটাকে বললো: স্যার প্লিজ, আপনি...


ছেলেটা কথা শেষ করতে না দিয়ে বললো: আমি যখন টেবিল বুক করেছিলাম তখন কি আপনি ক্লজ দিয়েছিলেন যে যদি কোনো বড়োলোকের অশিক্ষিত অহংকারী আদরের দুলালী এলে আমাকে টেবিল ছাড়তে হবে? দেননি তো? দিলে আমি টেবিল বুক করতাম‌ই না, কিন্তু এখন যতক্ষণ না ওদের খাওয়া শেষ হচ্ছে ততক্ষণ আমি টেবিল ছাড়বো না।
"ইউ আর ইনসাল্টিং মি" দাঁত কড়মড় করে বললো বৃষ্টি।
এবার সাম্য এগিয়ে গেল বললো: এই শুনুন, অনেকক্ষণ থেকে আপনার বকবক সহ্য করছি, এখন চুপচাপ ওই ভিখিরিগুলোকে নিয়ে কেটে পরুন নাহলে আপনার কোনো আইডিয়া নেই আমি কি করতে পারি?
"আপাতত তিনটে কাজ করতে পারেন, খাবার প্লেট হাতে নিয়ে খেতে পারেন, অপেক্ষা করতে পারেন, অন্য কোথাও যেতে পারেন, কোনটা করবেন সেটা আপনাদের ডিসিশন।
সুস্মিতা বললো: সাম্য, বৃষ্টি ছাড় অন্য কোথাও চল।
না, এখানেই থাকবো এরা যখন সরবে না তখন এদের প্লেটগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেবো। বলে সাম্য পাশের একটা টেবিল থেকে বাচ্চাদের সামনে থেকে একটা প্লেট তুলে ফেলতে গেল কিন্তু প্লেট ধরার আগেই ছেলেটা বা-হাতে সাম্যর কবজি ধরে হাতটা একটু তুলে একটু চাপ দিল ফলে কব্জিটা বাকি হাতের থেকে নীচের দিকে বেঁকে গেল, এবার ডানহাতে চশমাটা খুলে এক পা এগিয়ে সাম্যর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো: আর কখনো যদি কারো মুখের সামনে থেকে খাবার তুলে ফেলার চেষ্টা করতে দেখি তাহলে হাতটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেবো।বলে একটা হাল্কা ধাক্কা দিল যার ফলে সাম্য কয়েক পা পিছিয়ে এল, ছেলেটার চোখ মুখে রাগ আর ঘৃণার অভিব্যক্তি স্পষ্ট।
ছেলেটার গলার আওয়াজ শুনে তাথৈ আরও অবাক হয়, এই আওয়াজ সে কদিন আগেই শুনেছে, মন্দিরের পিছনে বটগাছের তলায়, নিজেকে বিপদ বলে পরিচয় দিয়েছিল, এটা সেই ছেলেটা... কিন্তু গলার স্বরের থেকেও তাথৈএর যেটা দৃষ্টি আকর্ষণ করছে সেটা হলো ছেলেটার মুখ, চশমা খোলার পরে ছেলেটার পুরো মুখটা দেখতে পাচ্ছে আর মুখের আদলটার তার অতি প্রিয় একজনের সাথে মিল আছে তার থেকেও যেটা তাথৈকে ভাবাচ্ছে সেটা হলো ছেলেটার পোশাক পরার ধরন, বুকের কাছে শার্টের একটা বোতাম খোলা, স্লিভদুটো কব্জির একটু উপর পর্যন্ত গোটানো এগুলো সব‌ই তার অতি পরিচিত অন্যান্যদের চোখে খুবই সাধারণ এগুলো, কিন্তু তাথৈএর চোখে এগুলো কোথাও যেন আলাদা, তার পরে ছেলেটার চশমা খোলার স্টাইল, মাথাটা একটু ঝুঁকিয়ে ডান হাতের তর্জনী ভাঁজ করে মধ্যমা এবং বুড়ো আঙুল দিয়ে চশমার ফ্রেমটা ধরে খুললো এভাবেই আরেকজনকে বহুবার চশমা খুলতে দেখেছে তাথৈ যার জন্য এতবছর সে অপেক্ষা করে আছে ,যাকে সবাই মৃত বললেও তার মন মৃত মানতে রাজী নয় তার অভয়।
সাম্য আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু ওদের গ্ৰুপের আরও একটা ছেলে এসে ওকে টেনে বাইরে নিয়ে গেল, বৃষ্টি আগুনে দৃষ্টি দিয়ে বেরিয়ে গেল, শুধু তাথৈ যেতে যেতেও ছেলেটাকে দেখতে থাকে, ছেলেটা তখন এক‌ই ভাবে চশমার ফ্রেমটা ধরে চোখে পরে নিল। বাইরে এসে সাম্য গজরাতে লাগলো "আজ শালাকে ছাড়বো না, মেরেই ফেলবো, আমার গায়ে হাত দেওয়া" যে ছেলেটা সাম্যকে ধরে বাইরে নিয়ে এসেছিল সে বললো : দাঁড়া আরও ছেলে ডাকছি।


[/HIDE]
 
[HIDE]

গ্ৰুপে আরো একটা মেয়ে ছিল সে বললো: কি দরকার, চল না অন্য কোথাও যাই।
সাম্য: না, ওকে শিক্ষা না দিয়ে যাবো না, কাল তাথৈএর জন্মদিন, এই রেস্টুরেন্টটা শহরের নামী রেস্টুরেন্ট তাই ওর জন্যই এখানে আসা, আর এখানেই ও খাবে।
তাথৈএর অবশ্য এসব কথা কানেও ঢুকছে না সে তখন অন্যমনস্ক হয়ে ওই অচেনা ছেলেটার কথা ভাবছে... কিন্তু ছেলেটা সত্যিই অচেনা কি?
একটু পরেই লাইন দিয়ে বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো বেরিয়ে এল সাথে দুজন স্যুট-বুট পরা, চোখে কালো চশমা দেওয়া লোক লোকদুটোর যে ভীষণ মাসল্ সেটা বোঝা যাচ্ছে আর সবার পিছনে ছেলেটা, আর তখনই চারটে বাইকে ৭-৮ জন মস্তান টাইপের ছেলে রেস্টুরেন্টের সামনে এলো ওদের দেখে সাম্য আর অপর ছেলেটা এগিয়ে গেল কিছু কথা হলো ওদের মধ্যে তারপর ওরা এগিয়ে এল। বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলো তখন দুটো স্যুমো গাড়িতে উঠতে শুরু করেছে।
সাম্য হুংকার দিল: কি রে আমার হাত নাকি ভেঙে গুঁড়িয়ে দিবি? তা এখন পালাচ্ছিস কেন? দম শেষ?
ছেলেটা একবার ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখলো কিন্তু ওর সাথে যে দুজন লোক এগিয়ে আসতে গেল, হাত তুলে ওদের থামিয়ে বললো: তোমরা প্রতিটা বাচ্চাকে সেফলি ওদের বাড়িতে পৌঁছে দাও।
কিন্তু বস্
যা বললাম করো, ওদের আমি হ্যান্ডেল করে নেবো, যাও।
ইয়েস বস। বলে বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোকে গাড়িতে তুলে চলে গেল, এবার ছেলেটা সাম্যদের দিকে ফিরলো একই ভাবে চোখ থেকে আবার চশমাটা খুলে শার্টের পকেটে রেখে বললো: আপনারা সত্যিই লড়াই চান?
লড়াই নয় বে আজ তোর হাত-পা ভেঙে এখানেই ফেলে রাখবো।
রেস্টুরেন্ট কিন্তু এখন খালি আছে আপনারা গিয়ে নিজেদের টাইম এনজয় করতে পারেন।
মস্তান ছেলেদের একজন বললো: কেন বে? ভয় লাগছে?
না, কিন্তু আমি লড়াই চাইছি না তাই।
এবার সাম্য তাথৈকে দেখিয়ে বললো: ওই মেয়েটাকে দেখছিস? ও আমার গার্লফ্রেন্ড তাথৈ, ওকে আমি খুব ভালোবাসি ওকে ট্রিট দিতে এনেছিলাম কিন্তু তুই ওর ইভিনিংটা নষ্ট করেছিস, এর শাস্তি তো তোকে পেতেই হবে। বলে সাম্য আক্রমণ করলো কিন্তু সাম্যর ঘুষিটা ছেলেটা এড়িয়ে গেল, এবার বাকি ছেলেগুলো‌ও একসাথে আক্রমণ করলো। বৃষ্টি, তাথৈ, সুস্মিতা এবং ওদের সাথে থাকা অপর মেয়েটা দেখতে থাকলো এই অসম লড়াই একদিকে সাম্য আর ওর ৭-৮ জন বন্ধু আর অপরদিকে একা ওই অচেনা ছেলেটা, সাম্য আর ওর বন্ধুরা যেটা করছে সেটাকে লড়ার চেষ্টা বলা গেলেও ছেলেটা যেটা করছে সেটাকে খেলা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না সে অনায়াসে প্রতিটা প্রতিদ্বন্দ্বীর প্রতিটা আঘাত এড়িয়ে যাচ্ছে নয়তো হিত দিয়ে প্রতিহত করছে বদলে কারো হাত ধরে একটু মোচড় দিয়ে গালে থাপ্পড় মারছে বা কাউকে পিঠে ধাক্কা মেরে ফেলে দিচ্ছে তো কাউকে ঠেলে আরেক ছেলের গায়ে ফেলে দিচ্ছে, কিন্তু কাউকেই গুরুতর আঘাত করছে না একটু পরেই সাম্য আর ওর বন্ধুরা এখানে ওখানে ছিটকে পরে গেল, ছেলেটা তখন সবাইকে বললো: আশা করি এবার শখ মিটেছে?

উত্তরে সাম্য উঠে দাঁড়িয়ে বললো: তোকে আজ খুন করবো। বলে ছেলেটার দিকে এগিয়ে গেল কিন্তু ছেলেটা সাম্যর ঘুষিটা হাত দিয়ে প্রতিহত করে সাম্যর মুখে প্রথমবার ঘুষি মারার জন্য উদ্যত হতেই তাথৈ বলে উঠলো: না... তারপর ছেলেটার সামনে এসে হাত জোড় করে বললো: প্লিজ ওকে আর ওর বন্ধুদের ছেড়ে দিন, এখানে রক্তারক্তি করবেন না, আমি ওদের হয়ে ক্ষমা চাইছি, আসলে কাল আমার জন্মদিন তাই ওরা আমার জন্য একটা ট্রিটের ব্যবস্থা করেছিল, আর সেটা ব্যাহত হ‌ওয়ায় একটু বেশি রিয়্যাক্ট করে ফেলেছে, প্লিজ ওকে আঘাত করবেন না।
ছেলেটা এবার সাম্যকে ছেড়ে বললো: মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস অফ দ্যা ডে। তারপর আবার পকেট থেকে চশমা নিয়ে চোখে পরে নিজের গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল, তাথৈ একটু পিছনে গিয়ে বললো: আপনি কে? মানে আপনার নামটা?
প্রশ্নটা শুনে ছেলেটা গাড়ির দরজা খুলতে যাচ্ছিল প্রশ্ন শুনে ঘুরে দাঁড়ালো, তাথৈ আবার বললো: প্লিজ এখন এটা বলবেন না যে আপনার নাম বিপদ, আপনার আওয়াজ শুনে চিনলাম, সেদিন মন্দিরের পিছনে এই পরিচয় দিয়েছিলেন, আজ আসল নামটা বলবেন কি?
ছেলেটা বললো: বিপদ পরিচয়টাই থাকুক না, সেদিন আপনি আমার জন্য বিপদে পড়েছিলেন আর আজ আপনার বয়ফ্রেন্ড ও তার বন্ধুরা বিপদে পড়লো, কাজেই আপনাদের জন্য ওই পরিচয়টাই থাকুক।
তাথৈ: প্লিজ আপনার আসল নামটা বলুন।
ছেলেটা: আপনার বয়ফ্রেন্ড হয়তো পছন্দ করছে না যে আপনি তাকে ছেড়ে আমার সাথে কথা বলছেন, আর তাছাড়া আমার পরিচয় জেনে আপনার কোনো লাভ‌ও নেই কাজেই আপনার বয়ফ্রেন্ডের কাছে যান।
তাথৈ বলতে যাচ্ছিল যে সাম্য ওর বয়ফ্রেন্ড নয় কিন্তু তার আগেই ছেলেটা গাড়িতে উঠে দরজার বন্ধ করে দিয়েছে, তাথৈ আর কিছু বলতে পারলো না, ছেলেটা চলে গেল, তাথৈএর মুখ থেকে একটা নাম উচ্চারিত হলো.... অভয়।
রাতে সাম্যর গাড়ি করেই তাথৈ আর বৃষ্টি বাড়ি ফিরলো, গাড়ি গেটে থামতেই তাথৈ গাড়ি থেকে নেমে হনহন করে ভিতরের দিকে হাঁটা দিল, সাম্য একটু অবাক হলো,একটু ক্ষুন্ন‌ও হলো, কিন্তু বৃষ্টি এক ছুটে গিয়ে তাথৈকে ধরে বললো: কি রে তুই সাম্যকে ইগনোর করে চলে এলি কেন? ও বেচারা তোর সাথে একটু কথা বলবে বলে দাঁড়িয়ে আছে।
ওর সাথে আবার কি কথা বলবো?
কেন? কাপলস্‌রা যা বলে
তাথৈ অবাক হয়ে বলে: মানে? এসব কি বলছিস তুই?
আচ্ছা বাবা ঠিক আছে তুই একা গিয়ে কথা বল, আমি ভিতরে যাচ্ছি।
এবার তাথৈ জোর গলায় বললো: তোর যা ইচ্ছা তাই কর, কিন্তু ওর সাথে আমার কোনো কথা নেই আর আমরা কাপলস্ ন‌ই। বলে বাড়ির ভিতরে চলে গেল, বৃষ্টি ঘুরে দেখে সাম্য এগিয়ে এসে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে তার মুখে জিজ্ঞাসা, বৃষ্টি ওকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভঙ্গিতে বললো: ও বোধহয় তোর আজকের হারটা সহ্য করতে পারেনি তাই রেগে আছে।
তাথৈ নিজের রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দিল তারপর অভয়ের ছবিটা বার করে বলতে লাগলো: আমি জানতাম তুমি বেঁচে আছো ,আজকে ওটা তুমিই ছিলে আমি জানি, তোমাকে চিনতে আমার ভুল হবে না... কিন্তু তুমি নিজের পরিচয় দিলেনা কেন? তাহলে কি তুমি আমাকে চিনতে পারোনি? না, সেটা নয় আমি যখন তোমাকে চিনতে পেরেছি তখন তুমিও আমাকে চিনতে পেরেছো তাহলে? তাহলে কেন নিজের পরিচয় না দিয়ে এড়িয়ে গেলে আমাকে?
হঠাৎ তাথৈএর মনে পরলো ছেলেটা সাম্যকে তাথৈএর বয়ফ্রেন্ড বলছিল তাথৈ আবার ছবিটাকে বলতে শুরু করলো: তুমি কি এটা ভেবেছো যে আমি তোমাকে ভুলে সাম্যকে.. সেই জন্যেই নিজের পরিচয় দিলে না, সেদিন‌ও নিজের পরিচয় লুকিয়েছিলে... তুমি এটা কি করে ভাবলে যে আমি তোমাকে ভুলে যাবো? না.. তুমি যদি আমাকে ভুল বুঝেও থাকো তাহলে সেটা ভাঙাবো আমি, তার আগে তোমাকে খুঁজে বার করতে হবে।


[/HIDE]
 
[HIDE]

তাথৈ ফোন তুলে একটা নাম্বারে কল করলো: হ্যালো মিস্টার গুপ্ত?
বলুন ম্যাডাম।
আপনাকে একজনের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে হবে।
কে?
সে এখন কি নাম ব্যবহার করে জানিনা, তাকে একটা রেস্টুরেন্টে দেখেছি।
কিন্তু..
আমি রেস্টুরেন্টের অ্যাড্রেস আপনাকে টেক্সট করছি আপনি যান আমি ম্যানেজারকে বলে দেবো সে আপনাকে ফুটেজ দেখিয়ে দেবে, তার সাথে অনেক বাচ্চা ছেলেমেয়েও এসেছিল।
ঠিক আছে ম্যাডাম।
ফোন রেখে আবার ছবিটা হাতে নেয় তাথৈ, বলতে থাকে: এবার আমি তোমাকে খুঁজে বার করবোই অভয়, যতই নিজেকে লুকিয়ে রাখো.. আর তারপর আর তুমি আমার থেকে দূরে যেতে পারবে না।

আবছা অন্ধকার ঘরে একটা ছেলে সামনে ঝোলানো পাঞ্চিং ব্যাগে অবিরাম পাঞ্চ মেরে যাচ্ছে, একটু দূরে দেয়ালে একটা ছবি লাগানো আছে যার উপর একটা লাইট ফোকাস করা আছে তাথৈএর ছবি। ছেলেটা বেশ খানিকক্ষণ ধরে পাঞ্চ করে গেল এবং সেটা বক্সিং গ্লাভস ছাড়াই মারছে, একটু পরে থেমে পাঞ্চিং ব্যাগটা ধরে তাতে মাথা ঠেকিয়ে হাঁফাতে লাগলো।
খানিকক্ষণ এইভাবে থেকে ছবিটার সামনে গেল এবং ছবিটাকেই উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো: কাল তোমার জন্মদিন, আরও একটা বছর কেটে গেল, তুমি আর তোমার পরিবার সবকিছু ভুলে অনেক এগিয়ে গেছো কিন্তু আমি পারিনি ১৬ বছর ধরে প্রতিশোধের জ্বালায় জ্বলছি, আজ তোমাকে আবার দেখলাম তোমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে, তখন ছোটো ছিলাম বুঝিনি তোমাকে আলাদা ভেবেছিলাম তাই আমার বিশ্বাস আমার ভালোবাসা নিয়ে খুব সহজেই খেলা করেছিলে, এখন বুঝি তুমিও তো ওই ভট্টাচার্য পরিবারের‌ই মেয়ে, আলাদা হবেই বা কি করে?
কিন্তু আমি কেন তোমার কথা ভাবছি? তুমি তো বেশ সুখেই আছো সাম্যর সাথে তাই থাকো অভয় আর কোনোদিন তোমার জীবনে তোমার আর সাম্যর মাঝে আসবে না, কিন্তু যেটার জন্য আমি এসেছি সেই প্রতিশোধ আমি নেবোই।
হটাৎ ফোন বেজে উঠলো, কালো মূর্তিটা ফোনটা কানে ধরে ছোট্ট "হুম" শব্দ করলো, তারপর ওদিকের কথা শুনে ফোনটা রেখে আবার ছবির সামনে এলো,বললো: কাল তোমার জন্মদিন আমার তরফ থেকেও গিফ্ট থাকবে তবে সেটা বোধহয় তোমাদের কারোর‌ই পছন্দ হবে না বিশেষ করে বীরেন ভট্টাচার্যের।

কপালে একটা চুম্বনের স্পর্শে ঘুম ভাঙলো তাথৈএর, চোখ মেলে দেখে সামনে তার মা সরমা দেবী বসে আছেন এবং একটু আগে তিনিই তাথৈএর কপালে স্নেহচুম্বন দিয়েছেন।
সরমা দেবী: শুভ জন্মদিন তাথৈ।
থ্যাংক ইউ মা।
ভালো থাক, সুস্থ থাক তোর সব মনোবাসনা পূর্ণ হোক।
এবার হবে, হবেই।
পুরো ভট্টাচার্য পরিবারে সাজো সাজো রব, বাড়ির সবার প্রিয় মেয়ে তাথৈএর জন্মদিন আজ,আত্মীয়রা আসতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই, সবাই তাথৈকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছে সন্ধ্যা হতেই অন্যান্য অতিথিরা আসছে, তাথৈ আর বৃষ্টির বন্ধুরাও আসছে, বিরাট বড়ো কেক আনা হয়েছে, তাথৈ নতুন চুরীদার পাজামা পরেছে অসাধারণ সুন্দর লাগছে তাকে, কিন্তু তার মুখে হাসি নেই, কেউ জন্মদিনের অভিনন্দন জানালে একটা শুকনো হাসি হাসছে শুধু।


হ্যাপি বার্থডে টু ইউ" একটু অন্যমনস্ক হয়ে ছিল তাথৈ, অভিনন্দন টা পেয়ে তাকিয়ে দেখে সামনে ৬ ফুটের উপরে লম্বা এক মাসলম্যান দাঁড়িয়ে আছে। সে উত্তর দিল: থ্যাংক ইউ।
পাশ থেকে বৃষ্টি বললো: তোর এখন আসার সময় হলো দাদা?
সরি, একটা কাজে আটকে গিয়েছিলাম তাই আসতে পারিনি।
ওদিকে দেখ বৌদি কেমন একা হয়ে আছে।
রকি একবার আড়চোখে বিদিশাকে দেখে নিল কিছু বললো না। কেক কাটার পরে একসময় বৃষ্টি তাথৈকে টেনে বাড়ির ছাদে নিয়ে গেল, তাথৈ কি দরকার জিজ্ঞেস করায় বললো "চল না গিয়েই দেখ"। ছাদে গিয়ে দেখে সেখানে সাম্য দাঁড়িয়ে আছে, বৃষ্টি বললো: সাম্য এই নে কি বলবি বলছিলি, তোর কাছে কিন্তু ধার র‌ইলো। বলে বৃষ্টি নীচে নেমে গেল।
"রঘু আর লাল্টুকে খুঁজে পেলি রকি?" তাথৈএর জন্মদিনের পার্টির মাঝেই ভাগ্নেকে প্রশ্ন করেন বীরেন ভট্টাচার্য।
না মামা, এখনো পাইনি তবে খোঁজ চলছে।
ওদের খুঁজে বার করা দরকার, ওরা কারো কাছে মুখ খুললে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
কিন্তু ওরা যদি নিজেরাই পালিয়ে যায়? শেষের প্রশ্নটা করেন ধীরেন ভট্টাচার্য।
হুমমম, এখন সেটাই মনে হচ্ছে সরকার মরার পরে অনেকদিন আর কিছু হয়নি,এখন আবার। গম্ভীর মুখে বলেন বীরেন বাবু।
কিন্তু ওরা পালাবে কেন দাদা?
কারণ ওরা যা চাইছিল তা পেয়ে গেছে হয়তো...
কি মামা?
তুমি জানোনা? চাপা ধমক লাগান বীরেন বাবু, তারপর একটু থেমে বলেন: ওগুলো ওখান থেকে সরাতে হবে, ওরা ওগুলোর খবর জানে, খুব সম্ভবত ওগুলোর জন্যই পালিয়েছে।
তাইতো, ওগুলোর কথা মাথাতেই আসেনি।
কিন্তু মামা ওরা অনেক বছর ধরে আছে এর আগে কখনো এমন কিছু করেনি যাতে ওদের...
কখনো করেনি বলে কি এখনো করবে না? ওরা শুধু ওটার খবর জানে তাই নয় অনেক বছর থাকার দরুন আরও অনেক খবর জানে সেগুলো যদি কারো কাছে ফাঁস করে দেয় কি হবে ভেবিছিস রকি? না, আর সময় নষ্ট করা যাবে না এক্ষুনি যেতে হবে ধীরেন, আজ রাতেই ওগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে, ড্রাইভারকে গাড়ি বার করতে বল, আগে ওগুলো সরাই তারপর কাল বাকী কাজ সারবো।
একটু পরেই তিনজন বেরিয়ে গেল, কিন্তু তিনজনের কেউ লক্ষ্য করলো না যে তিনজনের এই কথোপকথন আরেকজন শুনছিল...... বিদিশা।
তিনজন বেরিয়ে যেতেই বিদিশা একটু আড়ালে গিয়ে একটা ফোন করে একদম আস্তে আস্তে বলে.... "হ্যাঁ, শোনো বীরেন ভট্টাচার্য, তার ভাই আর রকি কোথায় যেন গেল, কিছু একটা জিনিস লুকোনো জায়গা থেকে সরানোর জন্য, যেটার খোঁজ জানে ওই দুজন"।
ছাদে তাথৈকে সাম্যর সাথে রেখে বৃষ্টি নীচে চলে গেল, তাথৈ এবার একটু রাগী স্বরে বললো: এসবের মানে কি সাম্য?
আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
কি? আর এখানে এভাবে কেন?
আসলে যেটা বলতে চাই সেটা..
কি বলতে চাস তাড়াতাড়ি বল।
আই লাভ ইউ।
কি? কি বললি? সাম্যর কথাটা ঠিকমতো অনুধাবন করতে পারে না তাথৈ।
আই লাভ ইউ তাথৈ।
একটুক্ষণ সময় নিল তাথৈ উত্তরটা মনে মনে সাজিয়ে নিল বোধহয়। তাথৈকে চুপ থাকতে দেখে সাম্য আবার বললো: কিছু বলছো না? তবে কি তোমার দিক থেকেও সম্মতি বলে ধরে নেবো?
না, গম্ভীর স্বরে উত্তর দেয় তাথৈ তারপর আবার বলে: আমি তোকে কোনোদিন সেভাবে দেখিনি ভাবিওনি, তোকে আমি বন্ধু হিসেবেই দেখেছি তার বেশি কিছু নয়।
কিন্তু কেন? আমার মধ্যে কি খারাপ আছে তাথৈ? আমি সেই ছোটোবেলা থেকেই তোমাকে ভালোবাসি।
কিন্তু আমি বাসি না, আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি।
কে সে? এবার সাম্যর গলাতেও রাগের আভাস।
[/HIDE]
 
[HIDE]

তোকে বলার কোনো প্রয়োজন বা বাধ্যবাধকতা কোনোটাই নেই আমার। বলে ঘুরে চলে যাচ্ছিল তাথৈ কিন্তু সাম্য দৌড়ে তাথৈএর সামনে এসে ওর পথ আটকায়, ওর মুখে এখন জিঘাংসার ছাপ সে বললো: কেন? কেন তুমি বারবার আমাকে রিফিউজ করো, কেন? স্কুলে থাকতেও তুমি আমাকে ছেড়ে ওই ভিখিরির কাছে যেতে.. কি যেন নাম ছিল হ্যাঁ অভয়, ওই ভিখিরি অভয়ের কাছে যেতে আর আজ‌ও তুমি আমাকে..
চুপ.. গর্জে ওঠে তাথৈ তারপর সমান তেজের সাথে বলে "অভয়ের নামে আর একটা বাজে কথা বললে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না"
সাম্য কিছুক্ষণ চুপ করে তাথৈএর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে তারপর বলে: অভয়... তুমি এখনো ওই ভিখিরিকে ভালোবাসো? ওই ভিখিরির জন্য তুমি আমাকে রিফিউজ করছো?.... তারপর তাথৈএর একটা হাত ধরে তাথৈকে কিছু বোঝানোর স্বরে বলে: তাথৈ তাথৈ ওই অভয় তোমার যোগ্য কোনোদিন ছিল না, আর তাছাড়া ও এখন আর বেঁচে নেই.. তুমি একবার আমাকে বোঝার চেষ্টা করো আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, ওই অভয় তোমাকে কি দিয়েছে যার জন্য ও মরে যাওয়ার পরেও তুমি ওকে ভালোবাসছো? প্লিজ তাথৈ প্লিজ আই লাভ ইউ।
তাথৈ গম্ভীর স্বরে নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকে বলে: আমার হাত ছাড় সাম্য, দেখ এইসব চিন্তা বাদ দে, তুই অন্য কোনো মেয়ে দেখ..
আমার অন্য মেয়ে চাই না, আমার তোমাকে চাই.. তাথৈ বিশ্বাস করো আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি খুব...।
সাম্য হাত ছাড়, আমার হাতটা ছাড়।
না ছাড়বো না আগে বলো তুমিও আমাকে ভালোবাসো, বলো..।
সাম্য... এক ঝটকায় নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নেয় তাথৈ তারপর সাম্যর গালে কষিয়ে একটা থাপ্পড় মারে তারপর বাঘিনীর মতো ফুঁসতে ফুঁসতে বলে: পরের বার আমার হাত ধরা তো দূর, ধরার কথা ভাবার আগে এই থাপ্পড়টা মনে রাখবি, আমি তোকে কোনোদিন‌ও ভালোবাসবো না কারণ আমি তোর থেকে অনেক অনেক ভালো ছেলেকে ভালোবাসি...এবং সেটা অভয়, আর আমি চিরকাল ওকেই ভালোবেসে যাবো, তা ও বেঁচে থাকুক কি না থাকুক।
থাপ্পড়টা শুধু গালে না পুরো শরীরে জ্বালা ধরায় সাম্যর এবার সে চিবিয়ে চিবিয়ে বলে: কিন্তু কোথায় অভয়? ও এখন কোথায়? মরে গেছে... আর ওকে কে মেরেছে জানো?
তাথৈ অবাক হয়, জিজ্ঞেস করে: কে মেরেছে?
তোমার পরিবারের লোকেরা, তোমার আদরের জ্যেঠুমণি ও তোমার বাপি.... হিংস্র কণ্ঠে উত্তর দেয় সাম্য।
মাথায় বজ্রপাত হলো যেন তাথৈএর, হতবুদ্ধি হয়ে যায় কোনোমতে বলে: মিথ্যে কথা, মিথ্যে কথা বলছিস তুই...
তুমি না মানতে চাও মেনো না কিন্তু এটাই সত্যি তোমার পরিবার ওর আর ওর পরিবারের সাথে যা করেছে তাতে যদি ও বেঁচেও থাকতো তাহলেও তোমাকে ঘেন্না করতো, তোমার মুখ পর্যন্ত দেখতে চাইতো না। বলে হনহন করে চলে গেল, আর তাথৈ হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে র‌ইলো।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে বীরেন ভট্টাচার্য ,ধীরেন ভট্টাচার্য আর রকিকে নিয়ে একটা নীল গাড়ি তীব্র গতিতে এগিয়ে চলেছে রাতের বেলা এমনিতেও রাস্তায় গাড়ি চলাচল কম কাজেই গাড়ির স্পিড একটু বেশীই চড়েছে, একটা অন্ধকার গোরস্থানের গেটের সামনে এসে গাড়ি দাঁড়ালো, তিনজন গাড়ি থেকে নামলেন পিছনে আরেকটা গাড়ি এসে দাঁড়াতে সেটা থেকে জগা আরও কয়েকজন নামলো, গোরস্থানের আশপাশটা বেশ ফাঁকা লোকজন তেমন নেই আর এই রাতে তো থাকার কথাও নয়।
গোরস্থানের গেটে লোক নেই দেখে অবাক হন বীরেন বাবু এখানে নিজে প্রভাব খাটিয়ে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পাহারার বন্দোবস্ত করেছেন, অবশ্যই নিজের বিশ্বস্ত লোকদের রেখেছেন তারা জানেনা এখানে কি আছে বা কেন এখানে পাহারা দিতে হবে,কিন্তু তারা এখন নেই অগত্যা নিজেরাই গেট খুলে এগিয়ে যান, কিছুদূর এগিয়ে বামে তারপর কিছুটা গিয়ে আবার ডানে বেঁকে যেখানটায় আসেন সেখানে সারিবদ্ধ ভাবে কবর... প্রত্যেকের হাতে হাই পাওয়ারের টর্চ জায়গাটা থেকে অন্ধকার দূর করেছে... কিন্তু সেই আলোতে সামনে যা দেখলেন বীরেন ভট্টাচার্য তাতে তার মুখের অন্ধকার কোনো কিছুতেই দূর হবে বলে মনে হয় না, চেনার জন্য কয়েকটা কবরে চিহ্ন দিয়ে রেখেছিলেন এবং চিহ্ন দেওয়া প্রতিটা কবর খোঁড়া হয়েছে আর সেগুলোর মধ্যে যা রাখা ছিল সেগুলো নেই কে বা কারা অলরেডি সাফ করে দিয়েছে, তার বদলে তার বিশ্বস্ত পাহারাদার দের লাশ পরে আছে।
হটাৎ দলের গুণ্ডাগোছের লোক আরো একজনকে ধরে আনলো "দাদা দাদা, এই দেখুন একে হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখেছিল"
কে করেছে এসব? জিজ্ঞেস করে জগা
লোকটা মিনমিন করে উত্তর দেয়: কজন লোক, মুখ দেখিনি কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল তবে ওরা রঘু আর লাল্টুর নাম নিচ্ছিল,আমার হাত-পা বেঁধে মুখে একটা কাপড় ঢুকিয়ে বেঁধে দেয় যাতে আওয়াজ না করতে পারি, আমাকেও মেরে ফেলতো কিন্তু..
কিন্তু কি?
ওদের মধ্যে একজন আপনাকে একটা কথা বলতে বলে গেছে, বলেছে এইজন্যই আমাকে ছেড়ে দিচ্ছে।

কি কথা?
না মানে.. ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললো লোকটা।
কি কথা? আবার গর্জে উঠলেন বীরেন ভট্টাচার্য
বলেছে যে "বীরেন ভট্টাচার্য এলে বলবি ওর দিন শেষ হয়ে আসছে, খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যু ওর সামনে এসে দাঁড়াবে ক্ষমতা থাকলে আটকে দেখাক"।
গম্ভীর আর রাগী মুখে বললেন: যেভাবেই হোক ওদের দুজনকে আমার চাই... ওদের পরিবারের প্রত্যেককে ধরে আন... ওরা কোথায় আছে জিজ্ঞেস কর না বললে সবকটাকে শেষ করে দে।

ধীরে ধীরে চোখ মেলার চেষ্টা করে রঘু, সারা শরীরে অসম্ভব যণ্ত্রনা প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে বর্তমানে ওদের দুটো হাত একসাথে উপরে করে বেঁধে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে কিন্তু শরীরটা আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না সামনে ঝুঁকে পড়েছে, একটা হাল্কা গোঙানির শব্দ পেয়ে পাশে তাকানোর চেষ্টা করে ঘাড়টা অল্প ঘুড়িয়ে দেখে এক‌ইভাবে লাল্টুকেও বেঁধে রাখা হয়েছে এবং ওর মুখ থেকেই গোঙানির শব্দ আসছে, দুজনের কারো শরীরেই পোষাক নেই। একটু একটু করে কদিন আগের রাতের ঘটনা মনে পরে রঘুর।

একদিন আগের রাতে
রঘু আর লাল্টু দুজনেই গিয়েছিল শহরের একটা বেশ্যাপল্লীতে,ওখানে বিজলীর গভীর ক্লিভেজ, প্রায় পুরো উন্মুক্ত পিঠ, চর্বিযুক্ত পেট আর সুগভীর নাভির প্রদর্শনের নাচ দেখছিল ,নেশাটাও হয়েছে জব্বর এমন সময় লাল্টু একটু উঠে বাইরে যায় ইয়ে করতে,কিছুক্ষণ পরে প্রায় ছুটতে ছুটতে আসে বলে: রঘুদা রঘুদা বাইরে একটা জব্বর মাল দেখলাম, বিরাট বড়ো বড়ো দুটো জাম্বুরা বুকে, পাছার দাবনাদুটো‌ও বড়ো।
কি বলছিস বে?
ঠিকই বলছি দাদা চলো তুমি দেখবে, এর আগে দেখিনি মাগীকে...
দুজনে বাইরে আসে, বড়ো দুধ‌আলা মাগীদের প্রতি দুজনেরই লোভ। বাইরে এসে লাল্টু যার দিকে ইশারা করে তাকে দেখে রঘু বুঝতে পারে যে লাল্টু বাড়িয়ে বলেনি, বছর ৩৫ হবে হয়তো মাগীর, একটা কালো স্লিভলেস ব্লাউজ, একটা কালো রঙের পেটিকোট পরে দাঁড়িয়ে আছে খদ্দেরের আশায়, ব্লাউজটা কোনোমতে ধরে রেখেছে জাম্বুরাদুটো যে কোনো সময়ে ব্লাউজ ছিঁড়ে বেরিয়ে আসবে, চর্বিযুক্ত তুলতুলে পেট,একটু মেদ আছে, গভীর নাভি হ ওরা দুজন একদৃষ্টিতে তাকিয়ে র‌ইলো কিছুক্ষণ।কিন্তু এ কি ওরা দুজন এগোতেই মাগীটা যেন কোথায় হাঁটা লাগালো।
"না আজ এই মাগীকে ছাড়া যাবে না চল আজকে এই মাগীকেই চুদবো" বলে টলতে টলতে পিছু নিল রঘু সাথে লাল্টুও গেল।


[/HIDE]
 
[HIDE]
এই মাগী দাঁড়া... এই ছিনাল কোথায় যাচ্ছিস? টলতে টলতে দুজনে পিছু নেয় খানিক আগে দেখা মহিলার, কিন্তু মহিলা দাঁড়ানোর বা ফিরে দেখার প্রয়োজনটুকুও মনে করে না, কথা বলা তো দূরস্ত, সে সমানে হাঁটতে থাকে ক্রমে সে বেশ্যাপল্লী থেকে কিছুটা দূরে একটা নির্জন অন্ধকার জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে পরে আর তার পিছু পিছু আসে মাতাল রঘু আর লাল্টু।
"এই তো মাগী দাঁড়িয়েছে, এত ছিনালি কেন মাগী? খুব রস না? আজ তোর সব রস বার করবো।" কথাগুলো জড়ানো কণ্ঠে বলে রঘু, ঠাণ্ডা কণ্ঠে উত্তর দেয় মহিলা: আয় তবে... দেখি তোদের দম।
রঘু আর লাল্টু টলতে টলতে এগোতে যেতেই পিছন থেকে দুজন লোক ওদের ধরে ঘাড়ের কাছে ইঞ্জেকশন দিয়ে একটা তরল পুশ করে সঙ্গে সঙ্গে দুজন এলিয়ে পরে। মোটর গাড়ি এগিয়ে আসে তার থেকে কটা লোক নেমে এসে পিছনে ডিক্কি খোলে তাতে দুটো অজ্ঞান বডি তোলা হয়। মহিলা এতক্ষণ দেখছিল এবার একজনকে বলে: আমি আমার কাজ করেছি এবার আপনাদের পালা.. আশা করি আপনাদের বস নিজের কথা রাখবে?
উত্তরে লোকটা কাউকে ফোন করে তারপর বলে: বস্ উসমান বলছি, কাজ হয়ে গেছে আর..
এটুকু বলে ফোনটা মহিলার হাতে দিয়ে বলে বস্ কথা বলতে চায়, মহিলা ফোনটা কানে দিয়ে "হ্যালো" বলতেই ফোনের ওপার থেকে কথা আসে "গুড জব"।
এবার আপনি আপনার কথা রাখুন।
আপনি ওদের সাথে গাড়িতে উঠুন, চিন্তা নেই ওরা আপনাকে যেখানে নামাবে সেখানে আমার লোক থাকবে বাকি রাস্তা সে নিয়ে যাবে।
আমি কোথায় যাচ্ছি?
এই শহর থেকে দূরে একটা অনাথ আশ্রমে, যেখানে কিছু প্রতিবন্ধী বাচ্চা ছেলে-মেয়ে থাকে তাদের দেখাশোনা করবেন আশা করি এতে আপনার আপত্তি নেই।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ফোন কেটে উসমানকে ফেরত দিলে উসমান একটা শাড়ি দেয় মহিলাকে, সেটা পরে গাড়িতে উঠলে গাড়ি স্টার্ট নেয়।


কতক্ষণ পরে জানে না মুখে জলের ঝাপটা পেয়ে জ্ঞান ফেরে রঘু আর লাল্টুর, মদের নেশার অভ্যাস আছে বলেই হয়তো মাথাটা পরিষ্কার থাকে চারিদিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে কি হচ্ছে, ওরা কোথায়? সাথে এটাও অনুভব করে যে ওরা বন্দী ওদের দুটো হাত মাথার উপর বেঁধে রাখা হয়েছে, কিন্তু কেন সেটা জানেনা কিছু বলার আগেই ওদের চারিপাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু লোক ওদের দুজনকে পাঞ্চিং ব্যাগ ভেবে নেয়... ঘুষিগুলো এলোপাথাড়ি বুকে পেটে তলপেটে, পিঠে, কাঁধেহ কোমরে, পরতে থাকে কয়েকটা ঘুষিতো চোয়ালে আর থুতনিতে এসে লাগে, বেশকিছুক্ষণ একটা দল হাতের সুখ করে নেয় ওদের পিটিয়ে তারপর ওরা সরে গেলে আরেকদল এসে এক‌ইভাবে পেটানো শুরু করে কতক্ষণ ঠিক জানেনা কিন্তু একসময় দুজনেই আবার জ্ঞান হারায়, কতক্ষণ পরে ওরা জানেনা একসময় আবার জ্ঞান ফেরে, এবার পুরো শরীরে অসম্ভব যণ্ত্রনা অনুভব করে, চোখে আবছা ভাব কিছুক্ষণ পরে স্পষ্ট না।দেখতে পেলেও বুঝতে পারে সামনে কিছুটা দূরে চেয়ারে একজন বসে আছে তার উদ্দেশ্যেই কোনোমতে গোঙাতে গোঙাতে রঘু বলে: তোরা কারা... আমাদের এখানে এনেছিস কেন?? আমরা.. আমরা কে জানিস?
উত্তরে আরও একটা ঘুষি সজোরে এসে রঘুর চোয়ালে লাগে, এত কিছুর পরেও তেজ কমে না রঘুর বলে: কি চাস তোরা? বল কি চাস?
তুই কি দিতে পারবি? গম্ভীর গলায় কছ যেন বলে কথাটা ঠিক ঠাহর করতে পারে না রঘু।
আমি কিছু জানিনা, কিছু জানিনা।
তোর কাছে তো কিছু জানতে চাইনি..... আসলে তোকে টর্চার করে মারতেই এনেছি কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তুই কিছু জানিস....
আমি কিছু জানিনা, কিছু জানিনা। আবার গোঙাতে গোঙাতে বলে রঘু,পাশে তখন চুপচাপ হাঁফাচ্ছিল লাল্টু, কোনোমতে চোখদুটো টিপে ভালো করে আশেপাশে দেখার চেষ্টা করে লাল্টু, তখনই একটা জিনিস লক্ষ্য করে আর করতেই ভয়ে ওর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়, ওরা দুজনেই সম্পূর্ণ উলঙ্গ আর দুজনের পেনিসে একটা তার লাগানো আছে এতক্ষণ পুরো শরীরের ব্যাথার জন্য আলাদা করে কোনো কিছু অনুভব করেনি কিন্তু এখন দেখলো পেনিসে লাগানো তারটা একত্রে একটা কারেন্টের কানেকশনের সখথে যুক্ত মাঝে কিছুদূর চেয়ারে একজন বসে আছে তার পায়ের কাছে সুইচ জাতীয় একটা জিনিস বুঝতে বাকি র‌ইলো না যে ওই সুইচে চাপ দিলেই ইলেকট্রিক শক লাগবে ওদের.....
তো সোজাসুজি বলবি নাকি......? আবার গম্ভীর গলায় প্রশ্ন আসে।
বললাম না আমি কিছু জানিনা, আমাকে মেরে ফেলতে এনেছিস তো, মেরে ফেল।
তোদের এত সহজে মারবো বলে তো আনিনি। এইসময় একজন এগিয়ে এসে রঘুর পায়ের কাছে বসলো তারপর একটা সাঁড়াশি নিয়ে রঘুর দু পায়ের দুটো বুড়ো আঙুলের নখ এক হ্যাঁচকা টানে উপড়ে নিল, যণ্ত্রনায় চিৎকার করে উঠলো রঘু।
এবার বলবি? গম্ভীর গলায় আবার প্রশ্ন আসে।
না, কোনোমতে যণ্ত্রনাটা সহ্য করে বলে রঘু।
এবার উপরে বাঁধা দুহাতের দুই বুড়ো আঙুলের নখ‌ও উপড়ে নিল, আবারও একটা চিৎকার শোনা গেল।
এবার?
না, কিছু জানিনা।
রঘু যতটা সাহসী আর শক্ত লাল্টু ততটা নয়, এতদিন তারা অন্যকে টর্চার করেছে কিন্তু কেউ তাদের স্পর্শ পর্যন্ত করেনি আর আজ.... রঘুর অবস্থা দেখে সে অর্ধেক ভয়ে আধমরা হয়ে গেছে, এবার সভয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে চেয়ারে বসা লোকটা আর কিছু না বলে পায়ের কাছে সুইচটায় চাপ দিল আর সঙ্গে সঙ্গেই দুজনে পুরুষাঙ্গে তীব্র ইলেকট্রিক শক্ অনুভব করলো, যা ক্রমে তাদের পুরো শরীরে ছড়িয়ে গেল, কয়েক সেকেন্ড তারপর থেমে গেল, এরপর কয়েকমিনিট কোনো কিছু হলো না, তারপর আবার সুইচে চাপ এবং আবার শক্, এবার আগের থেকে কয়েকসেকেণ্ড বেশি তারপর আবার থেমে গেল।
শক খেয়ে রঘু আর লাল্টু দুজনেই আনেকটা নিষ্প্রাণ হয়ে গেল, এবার গম্ভীর গলায় ব্যাঙ্গাত্মক আওয়াজ এল: আমি এটা অনেকক্ষণ করতে পারি কিন্তু তোরা কি সহ্য করতে পারবি?
কোনোরকমে গোঙাতে গোঙাতে রঘু বললো: তোর যা খুশি কর কিন্তু...
কথাটা শেষ করতে পারলো না কারণ আবার শক্ শুরু হয়েছে, কয়েক সেকেন্ড তারপর আবার বন্ধ, লাল্টু বুঝতে পারলো, লোকটা তাদের এখন মারবে না, এইভাবেই টর্চার করবে.. কিন্তু সে আর বেশিক্ষণ টর্চার সহ্য করতে পারবে না, গম্ভীর স্বরে লোকটা আবার জিজ্ঞেস করলো: এবার বলবি?
বলার সাথেই একজন এসে রঘুর হাতের একটা আঙুলের নখে সাঁড়াশি লাগিয়ে টান মারতে উদ্যত হলো, প্রশ্ন শেষ হতেই হ্যাঁচকা টান এল আর আবার রঘুর চিৎকার, এবার আর লাল্টু সহ্য করতে পারলো না, কান্নায় ভেঙে পড়ে বললো: বলছি বলছি।
রঘু যন্ত্রনায় গোঙাতে গোঙাতে কোনোমতে বললো: এ... এ তুই কি বলছিস লাল্টু? দাদা.... দাদা জানতে পারলে...
বাকি কথাটা শেষ করার আগেই রঘুর মুখে একটা ঘুষি এসে লাগলো, এবার যে লোকটা রঘুর নখ উপড়ে ফেলছিল সে লাল্টুর দিকে গিয়ে ওর হাতের একটা নখ চেপে ধরলো,লাল্টু কোনোমতে বললো: না.. কিছু করবেন না আমি বলছি।
[/HIDE]
 
[HIDE]

এরপর লাল্টু একনাগাড়ে বলে গেল সে যা জানতো, রঘু মাঝে মাঝে যখনই বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করছে তখনই একটা ঘুষি হয় রঘুর চোয়ালে নতুবা থুতনিতে লাগতে লাগলো। লাল্টু একে একে বললো শহরের কোন গোরস্থানের কোন কোন কবরে বীরেন ভট্টাচার্যের কোটি কোটি টাকা লুকোনো আছে, যেগুলো রকির সাথে গিয়ে লুকিয়ে রেখেছিল তারা, সাথে অবশ্যই থাকতেন ধীরেন ভট্টাচার্য এবং জগা সেখানে কতজন লোক আছে পাহারার জন্য। আরও বললো কোথা থেকে মেয়েদের তুলে এনে রাখা হয় ও তারপর পাচার করা হয়, কোন কোন জায়গায় চোলাই মদের ঠেক আছে, তবে বীরেন ভট্টাচার্যের আরও অনেক ব্যাবসা থাকলেও সেগুলোর ব্যাপারে জানে না সে।

বর্তমান সময়

সাম্যর কথাটা শুনে বেশ কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে ছাদে দাঁড়িয়ে র‌ইলো তাথৈ তার কানে সাম্যর একটা কথাই শুধু বাজছে "অভয় তোমাকে ঘেন্না করতো, তোমার মুখ পর্যন্ত দেখতে চাইতো না। তারপর একছুটে নীচে নিজের রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়, বেডসাইড টেবিলের একটা ড্রয়ার থেকে অভয়ের ছবিটা বার করে সামনে ধরে অপ্রকৃতিস্থের মতো বলতে থাকে: তুমি আমাকে ঘেন্না করো অভয়? সেইজন্যই কি দুবার সামনে এসেও পরিচয় দাওনি আমাকে এড়িয়ে গেছো... বলো না তুমি আমাকে ঘেন্না করো? না, তুমি আমাকে ঘেন্না করতে পারো না আমার উপর তোমার রাগ অভিমান থাকতে পারে কিন্তু তুমি ঘেন্না করতে পারো না, দুচোখ থেকে অঝোড়ে জল পরতে থাকে, পা কাঁপতে থাকে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না একসময় মেঝেতে বসে পরে তাথৈ, প্রেমিকের ছবিটা বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে, কতক্ষণ ছিল খেয়াল নেই হটাৎ দরজায় মায়ের আওয়াজ শুনে সম্বিত ফেরে, তাড়াতাড়ি চোখ মুছে উত্তর দেয় "আমি ঠিক আছি, একটু একা থাকতে চাই মা, প্লিজ এখন যাও"।
সরমা দেবী অবাক হন কিন্তু আর কোনো কথা বলেন না জানেন তার মেয়ে এখন দরজা খুলবে না তাই তিনি চলে যান, ঘরের ভিতর তখন তাথৈ চোখের জল মুছে আবার ছবিটা সামনে ধরে তার মুখ এখন কঠিন হয়ে গেছে তারপর ছবিটাকে উদ্দেশ্য করে বললো: আমি জানিনা সাম্য যা বলে গেল সেটা সত্যি কিনা, কিন্তু সত্যিটা আমি খুঁজে বার করবোই, যদি সাম্য মিথ্যা বলে থাকে তাহলে ওকে আমি ছাড়বো না আর যদি এটা সত্য হয় যে আমার বাপি আর জ্যেঠুমণি তোমার আর তোমার পরিবারের ক্ষতি করেছে তাহলে আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে ওনাদেরকেও শাস্তি পেতে হবে, পেতেই হবে, আমি কোনোদিন কারো সাথেই অন্যায় মেনে নি‌ইনি আর এখানে তো তোমার সাথে অন্যায়ের প্রশ্ন এটা ছাড়ার তো প্রশ্নই ওঠে না, কিন্তু আগে আমাকে সত্যিটা জানতে হবে।
এরপর আবার ফোনটা হাতে নিয়ে একটা কল করে: হ্যালো মিস্টার গুপ্ত।
আমি চেষ্টা করছি ম্যাডাম ওই ছেলেটার খোঁজ পাওয়ার, পেলেই আপনাকে জানাবো।
ঠিক আছে কিন্তু আপনাকে এর সাথে আরেকটা কাজ করতে হবে।
কি ম্যাডাম?
আপনার মনে আছে কিছুদিন আগে অভয় নামে একজনের খোঁজ করতে বলেছিলাম, আপনি বলেছিলেন ওরা দুর্ঘটনায় মারা গেছে?
মনে আছে ম্যাডাম।
আপনাকে ওই দুর্ঘটনা সম্বন্ধে জানতে হবে, কি হয়েছিল, আদৌ দুর্ঘটনা কি না? নাকি কারো হাত ছিল এর পিছনে থাকলে কে?
এটা তো অনেক বছর আগের কথা।
জানি এটা অনেক বছর আগের কথা কিন্তু কেউ তো থাকবে যিনি অভয়দের চিনতেন এবং জানেন ওদের সাথে আদতে কি হয়েছিল।
ঠিক আছে ম্যাডাম আমি চেষ্টা করছি।

ওরা কি এখনো বেঁচে আছে?" প্রশ্নটা করে বিদিশা, সে তখন রয়ের বাড়িতে ওর বেডরুমে আগের দিনের মতো অর্ধনগ্ন হয়ে উবুড় হয়ে শুয়ে আছে, পরনের যেটুকু আবৃত আছে সেটা রয়ের দেওয়া গাউন দিয়ে, হাতে একটা মোবাইলে ভিডিও চলছে যেখানে রঘু আর লাল্টুকে টর্চার করার ভিডিও চলছে।
"না, এখনো বেঁচে আছে" বিদিশার পিঠের খোলা স্থানে কয়েকটা আঘাতের দাগ স্পষ্ট তাতে বরফ ঘষছে, এই আঘাতগুলো সদ্য হয়েছে।
ওদের তুললে কিভাবে?
ওদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে।
মানে?
ওদের উপর নজর রেখেছিলাম, খবর পেলাম যে ওরা নারীদেহের প্রতি একটু বেশীই লোভী ব্যস ওটাকেই টোপ হিসেবে ব্যবহার করলাম।
কোনো মেয়েকে ইউজ করেছো?
একজন এসকর্ট পোশাকী নাম জুলি, একবার বিয়ে ভেঙে লগ্নভ্রষ্ঠা হন তারপর আর বিয়ে হয়নি, বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধা মা আছেন, চাকরি খুঁজছিলেন তোমার মামাশ্বশুর চাকরি দেবার নাম করে ওকে ভোগ করেন তারপর ওই নিষিদ্ধপল্লীতে পাঠিয়ে দেন, উনি পরিস্থিতির চাপে বাধ্য হয়ে এই লাইনে এসেছিলো কিন্তু এখান থেকে মুক্তি চাইছিল।
তারপর?
তারপর আর কি? আমার লোক জুলির কথা বলে, ওর সাথে দেখা করি, ওনাকে বলেছিলাম কোনোভাবে ওদের সিডিউস করে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে আসতে,বিনিময়ে তাকে একটা ভালো সুস্থ জীবন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, ব্যাস।
ওই মহিলাকে কিন্তু বীরেন ভট্টাচার্য খুঁজবে।
ওই মহিলাকে আমি একটা নতুন জীবনের সন্ধান দিয়েছি এখন উনি বীরেন ভট্টাচার্যের আয়ত্তের বাইরে, যদি না আবার যেঁচে ফিরে আসেন।
জিজ্ঞেস করবে না ওদের কেন মারতে বলেছিলাম? বিদিশা প্রশ্ন করলো।
না। ছোট্ট উত্তর দেয় রয়।
কিন্তু বিদিশা বলতে থাকে: আমাদের বাড়িতে মানে আমার বাপের বাড়িতে এক মাসি কাজ করতো, তার স্বামী মারা গিয়েছিল শুধু একটা মেয়ে ছিল বয়স ১৭ কি ১৮ হবে নাম পিঙ্কি, প্রায়ই আমার কাছে আসতো দিদি দিদি বলে, পড়াশোনায় খুব আগ্ৰহ, কিন্তু টিউশনি রাখার সাধ্য ছিল না, তাই আমি দেখিয়ে দিতাম, আমার আর রকির আশীর্বাদের দিন রাতে হটাৎ ও কাঁদতে কাঁদতে আমার কাছে আসে, আমি জিজ্ঞেস করলে বলে ওই জানোয়ারদুটো ওর সাথে অসভ্যতামি করেছে, কিন্তু যেকোনো কারনেই হোক সেদিন কিছু করতে পারেনি, আমার সাথে রকির বিয়ের দিন রাতে হঠাৎই ও কোথায় যেন হারিয়ে যায়, অনেক খোঁজা হয় পুলিশেও খবর দেওয়া হয় কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, দুদিন পর পুলিশ আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে একটা মাঠের ধারে ওর নগ্ন, রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায় বোঝাই যায় যে ওকে......। বাকিটা শেষ করতে পারে না বিদিশা।
রয় বলে: কিন্তু সেটা ওরা দুজন করেছে বুঝলে কিভাবে?
রকির সাথে ওদের কথাবার্তা লুকিয়ে শুনে ফেলেছিলাম, রকি‌ই পিঙ্কিকে ওদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এখনো পিঙ্কির দিদি ডাকটা কানে ভাসে জানো, সেদিন থেকে অপেক্ষা করছি যদি কোনোভাবে ওদের শাস্তি দেওয়া যায়, কারণ রকির ঘনিষ্ঠ হবার জন্য ওদের আইনি পথে কোনো শাস্তি হয়নি, ওই মাসিও মেয়ের শোক সহ্য করতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিল।
বিদিশার বা কানের উপর চুল এসে পড়েছিল সেটা আঙুল দিয়ে সরিয়ে রয় বলে: ওদের এখনো অনেক টর্চার সহ্য করতে হবে, তারপর মারবো, কিন্তু এবার রকির‌ও ব্যবস্থা করতে হবে, ওর হাতটা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে।
কিন্তু কাল যখন ও আমাকে মারছিল তখন আমার ব্যথার চেয়ে আনন্দ হচ্ছিল বেশি,বুঝতে পারছিলাম কোনো কারনে ও প্রচণ্ড অস্থির কিন্তু কেন জানিনা।
অস্থির নয় অপমানিত।
কেন?
তুমি আমাকে বলেছিলে মনে আছে যে ওরা কি একটা খুঁজতে বেরিয়েছে।
হ্যাঁ, মনে আছে কিন্তু
শহরের একটা গোরস্থানে কয়েকটা কবরের মধ্যে বীরেন ভট্টাচার্যের কালো টাকা লুকোনো ছিল..



[/HIDE]
 
[HIDE]

বিদিশা হেসে উঠলো: তার মানে তো..
রয়: বীরেন ভট্টাচার্যের কোমর ভেঙে গেছে, কিন্তু তবুও উনি উঠে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবেন, এবার ও আবার উঠে দাঁড়ানোর আগে আবার আঘাত করবো, এবার ভট্টাচার্য পরিবারের সর্বনাশের শুরু।
বিদিশার পিঠের আঘাতে বরফ ঘষে জায়গাটা পরিষ্কার করে মলম লাগিয়ে দিচ্ছিল রয়, কাজটা হতেই বললো: নাও এবার তুমি রেস্ট নাও আমি বাইরে আছি। বলে উঠতে যেতেই বিদিশা রয়ের একটা হাত চেপে ধরলো বললো: তুমি রোজ রোজ বাইরে যাবে কেন?
তা নয়তো কি তোমার সাথে এক রুমে থাকবো?
কেন আমি অচ্ছুৎ নাকি?
অচ্ছুৎ হতে যাবে কেন?
তোমাকে আজ বাইরে যেতে হবে না।
তোমার আজ কি হয়েছে বলোতো?
আমি আজ খুব খুশি, ওই দুজনকে আরও টর্চার করো।
সে তো করবোই, নাও এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
আমার এখন ঘুম না অন্য একটা কিছু চাই।
কি চাই?
উত্তরে বিদিশা উবুড় থেকে সোজা হয়ে শুয়ে রয়ের ধরে থাকা হাতটাতে এক টান মারলো, হটাৎ এই টানে টাল সামলাতে না পেরে রয় বিদিশার উপর হুমড়ি খেয়ে পরলো, এবার বিদিশা দুহাতে রয়ের গলা জড়িয়ে বললো: আই ওয়ান্ট আ গুড এণ্ড হার্ড সেক্স, রাইট নাও... ফাক মি রয়।
হোয়াট.. আর ইউ ক্রেজি?
নো, আয়্যাম সিরিয়াস... কেন আমার মধ্যে কোনো প্রবলেম আছে নাকি?
বিদিশা আমি তোমাকে আগেই বলেছি তুমি আমার থেকে অনেক ভালো ছেলে ডিসার্ভ করো।
আমি তো আমাকে বিয়ে করতে বলছি না, ধরে নাও এটা ওয়ান নাইট স্ট্যান্ড।
আই ডোন্ট থিংক দিস ইজ আ গুড আইডিয়া।
নো, দিস ইজ আ ভেরী গুড আইডিয়া।
বাট.... কথা বন্ধ হয়ে গেল রয়ের, কারন ততক্ষণে বিদিশা রয়ের মাথার পিছনে একটু চেপে নিজের দিকে নিয়ে নিজের ঠোঁটদ্বয় রয়ের ঠোঁটদ্বয়ে আটকে দিয়েছে, রয় আর দ্বিরুক্তি করলো না বা বাধা দিল না, বিদিশার ডাকে সারা দিল। দুজনেই এক অপরের ঠোঁটদ্বয় চুষতে শুরু করলো, বিদিশা তো নিয়ণ্ত্রন হারিয়ে ফেললো সে পাগলের মতো রয়ের ঠোঁটদুটো চুষতে লাগলো তুলনায় রয় সংযত কিন্তু সেও বিদিশার ঠোঁট চুষে খেতে লাগলো, একটু পরে রয় নিজের জিভটা বিদিশার মুখের মধ্যে ওর জিভের সাথে টাচ করলো দুটো জিভ এবার একসাথে খেলতে শুরু করলো, বিদিশা হটাৎ নিজের ঠোঁট দিয়ে রয়ের জিভ টেনে ধরে চুষতে ল গলো যেন ওখানে মধুর স্বাদ পেয়েছে। বেশকিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর বিদিশা হাত দিয়ে রয়ের গায়ের কালো রঙের স্যান্ডো গেঞ্জিটা মাথা গলিয়ে খুলে ফেললো, তারপর আবার দুজনে ফেঞ্চ-কিসে মনোনিবেশ করলো, অনেকক্ষণ পরে রয় বিদিশার ঘাড়ে গলায় নিজের নাক মুখ ঘষতে শুরু করলো এবং মাঝে মাঝে চুমু দিতে থাকে।
বিদিশা চোখ বুজে মুহূর্তটা উপভোগ করতে থাকে, এর আগে নিজের স্বামী রকির সাথে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে কিন্তু সেইসময় না বিদিশার মন ছিল, না শারীরিক আকাঙ্খা ফলে সেটা স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক যৌনমিলনের বদলে হয়ে গেছে ধর্ষণ, সেখানে রকি নির্মমভাবে শুধু বিদিশার শরীরটাকে খুবলে খেয়ে নিজের যৌন ক্ষিদের নিবৃত্তি করেছে, কিন্তু রয় সেরকম নয়,সে বিদিশার শরীরের প্রতিটা বিন্দুকে কামোত্তেজনায় উদ্দীপিত করছে, ঘাড়- গলা ছেড়ে রয় এখন একটু নীচে বিদিশার বুকে নেমে এসেছে, বিদিশার স্লিম ফিগারে স্তনদুটো খুব বড়ো নয় বরং সাধারণ মিডিয়াম সাইজের স্টিলের উল্টানো বাটির মতো, আর তার মাঝখানে বাদামী রঙের বোঁটা এবং বোঁটাকে ঘিরে একটা বাদামি রঙের বৃত্ত।


রয় দু-হাতে দুটো স্তন চেপে ধরে তারপর প্রথমে বাঁদিকের স্তনটার বোঁটা সহ অনেকটা অংশ মুখে পুরে নেয়, সঙ্গে সঙ্গে বিদিশা নিজের নীচের ঠোঁটটা কামড়ে ধরে ওর মুখ থেকে "উমম" শব্দ বেরিয়ে আসে, মুখের ভিতরে রয় জিভ দিয়ে বিদিশার বোঁটাটা নাড়াতে থাকে, এবং নিজের বা হাত দিয়ে বিদিশার ডান স্তনের উপরে বোলাতে থাকে, বিদিশা এবার রয়ের মাথার চুলে বিলি কাটতে শুরু করে, এইভাবে কিছুক্ষণ বিদিশার বাদিকের স্তনটা চোষার পরে ডানদিকের স্তনটা মুখে পুরে চোষা শুরু করে। এইভাবে অনেকক্ষণ ধরে পালা করে বিদিশার দুটো স্তন ভালো করে চুষে সেগুলো ছেড়ে আরো নীচে নামে, এবার পেট হয়ে নাভীর গর্তে জিভ ঢোকায়, সঙ্গে সঙ্গে বিদিশার পুরো শরীরটা কেঁপে উঠলো। বিদিশার সাথে রকির মনের মিল কোনোদিন‌ই হয়নি, ভালোবাসা তো দূরের কথা আসলে রকির মতো পাষণ্ডকে বিদিশা ভালোবাসতে পারেনি, ওর সাথে বিয়েটাকে নিজের ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছিল। তারপর যখন রয়ের সাথে আলাপ হলো তখন মুখে না বললেও বিদিশা মনে মনে এই সুগঠিত চেহারার সুদর্শন ছেলেটির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল, রয়ের কথায় সে ইমপ্রেস তো হয়েছিল‌ই তার উপর কেন যেন প্রথম থেকেই ওর প্রতি বিশ্বাস জেগে উঠেছিল, তাই খুব সহজেই রয়ের সাথে ওর বাড়িতে এমনকি ওর বেডরুম পর্যন্ত চলে এসেছিল, আগের দিন যদি রয় চাইতো তাহলে হয়তো বিদিশা তখনই ওর সাথে....
কিন্তু সেদিন হয়নি তো কি হয়েছে, আজ হচ্ছে। প্রথমে রয় রাজী না হ‌ওয়ায় বিদিশা ভেবেছিল আজ সে রয়কে যেভাবে হোক উত্তেজিত করে কন্ট্রোলহীন করবে কিন্তু এখন বিদিশা বুঝলো রয়‌ যা শুরু করেছে তাতে সে নিজেই কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলেছে। রয় এখন বিদিশার দুটো পা দুদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে বিদিশা উঠে বসলো পরনের গাউনটা পুরো খুলে ফেললো, এখন পুরো নগ্ন সে, গাউনের নীচে কোনো অন্ত‌র্বাস ছিল না, হাতে শাখা-পলা তো কোনোদিন‌ই পরে না আর মাথায় সিঁদুর যা থাকে সেটা এখন নেই, রয়ের বাড়িতে এসে শাওয়ার নিয়ে ছিল তখন ধুয়ে গেছে, রয় এবার বিদিশার পরিষ্কার করে ছাটা যোনীপথের মুখে নিজের মধ্যমা আঙুলটা ঘষতে লাগলো তারপর আস্তে আস্তে সে আঙুলটা যোনীপথের ভিতরে ঢোকালো, বিদিশা আহহ করে উঠলো, রয় আবার নিজের ঠোঁটদ্বয় বিদিশার ঠোঁটদ্বয়ে মেলালো কিন্তু এর সাথে বিদিশার যোনীর ভিতরে অঙ্গুলি করতে শুরু করে, ধীরে ধীরে গতি বাড়াতে থাকে, এবার কিস ছেড়ে বিদিশা শিৎকার করে ওঠে "আহহহহ ওহহহহ উম্মম্ম আহহ" এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বিদিশার যোনিতে অঙ্গুলি করতে করতে রয় আঙুলটা বার করে নিল, বিদিশা তখন যৌন‌উত্তেজনার টপ গিয়ারে উঠতে শুরু করেছে, ওর মনে হলো রয় আর কিছুক্ষণ অঙ্গুলি করলেই তার রাগমোচন হতো, এবার রয় যেটা করলো সেটার অনুভব বিদিশা এর আগে কখনো পায়নি আঙুল বার করে রয় বিদিশার যোনিতে নিজের মুখ নিয়ে গেল এবং পাঁপড়ি দুটোয় আলতো করে জিভের ছোঁয়া দিল, একটু পরেই সে নিজের জিভটা বিদিশার যোনি গহ্বরে ঢুকিয়ে দিল, বিদিশার পুরো শরীর অজানা অনুভূতিতে শিহরিত হয়ে আবার কেঁপে উঠলো, তার মুখ দিয়ে তখন "আহহহহ উমমমমমম সসসসসসসস আহঃ"শিৎকার বেরোতে থাকে সে একহাতে নিজের একটা স্তন মর্দন শুরু করেছে এবং অপর হাতে রয়ের মাথার চুলে বিলি কাটতে শুরু করেছে, একটু পরেই বিদিশা বুঝলো সে আর থাকতে পারছে না তার রাগমোচন হবে, কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে রয় মুখটা সরিয়ে নিল, কিন্তু তাতে কিছু আটকালো না, প্রথমবারের মতো বিদিশা "আহহহ আহহহহ ওহহহহ" শিৎকার করতে করতে জল খসালো।



[/HIDE]
 
[HIDE]

এবার বিদিশা এক হাতে রয়ের গলা জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে আবার কিস শুরু করলো অপর হাতে রয়ের পাজামার ভিতরে হাত ঢুকিয়ে ওর জাঙ্গিয়ার উপর দিয়ে পেনিসের উপর হাত দিল, হাত দিয়েই বুঝলো সেটা যথেষ্ট বড়ো এবং একদম মুগুরের মতো না হলেও মোটা সে জাঙ্গিয়ার ভিতরে হাত দিয়ে নির্লোম, পরিষ্কার পেনিসটা বাইরে বার করে আনলো এবং আস্তে আস্তে উপর নীচে করে খেঁচা শুরু করলো ফলে এবার সেটার বাস্তবিক সাইজ বুঝলো বিদিশা রকিরটাও প্রায় এক‌ইরকম, একটু আগে রয় বিদিশার ঘাড়ে গলায় মুখ ঘষছিল চুম্বনে ভরিয়ে দিচ্ছিল, এখন বিদিশা সেটা শুরু করলো রয়ের ঠোঁট ছেড়ে সে গলায় ঘাড়ে চুমু দিতে থাকে রয়‌ও কম যায় না সে বিদিশার একটা কানের লতি আস্তে কামড়ে ধরলো সাথে বিদিশার নরম মোলায়েম নগ্ন পিঠে নিজের দুটো হাত বোলাতে থাকে, বিদিশা এবার তার সঙ্গীর পুরুষাঙ্গ খেঁচা ছেড়ে মুখটা বুকে এনে চুমু খেতে থাকে, নারীদের মতো পুরুষদের‌ও বুকের দুসাইডে দুটো ছোট্ট নিপল থাকে যদিও সেদুটো নিষ্ক্রিয় অঙ্গ, বিদিশা এবার হটাৎ করেই রয়ের এই দুটো নিষ্ক্রিয় নিপলে জিভের স্পর্শ করলো রয় একটু হেসে বললো: কোথা থেকে শিখলে এটা?
কেন? সঙ্গীকে কি তুমি একাই উত্তেজিত করতে পারো?
রয় এবার বিদিশার ঠোঁটে স্মুচ করলো।
বিদিশা: আর সহ্য হচ্ছে না এবার আমার ভিতরে আসো।
রয় বিদিশাকে হাল্কা ঠেলে বেডে নরম ম্যাট্রেসের উপর ফেলে দিল তারপর নিজের পাজামা আর জাঙ্গিয়া খুলে বিদিশার দুপা ধরে নিজের দিকে একটু টেনে ডানপাটা নিজের বাকাঁধে তুলে নিল অপর পা টা নিজের কোমরের সাইডে আনতেই বিদিশার যোনিমুখ উন্মোচিত হলো কিন্তু রয় সোজাসুজি সেখানে নিজের পেনিস ঢোকালো না যোনির মুখে ঘষতে লাগলো কয়েকবার শুধু মুণ্ডিটা ঢোকাতেই বিদিশা "আঃ"করে উঠতেই আবার বার করে নিল বলাইবাহুল্য এইরকম টিজ করার ফলে বিদিশা আরো উত্তেজিত হয়ে উঠছিল, কামুক স্বরে বলতে থাকে: প্লিজ আঃ এভাবে আমাকে টিজ কোরো না, প্লিজ।
রয়: আর ইউ এনজয়িং ইট?
বিদিশা: প্লিজ এন্টার নাও ইনসাইড মি।
কিন্তু রয় তাও এক‌ইভাবে বিদিশাকে টিজ করে যেতে লাগলো। এবার হটাৎ যে পাটা রয়ের কোমরের পাশে ছিল সেটা দিয়ে রয়ের কোমরের একটা দিক পেঁচিয়ে ধরে উত্তেজিত কণ্ঠে বললো: গিভ ইওর কক্ ইনসাইড মি রাইট নাও অর আই উইল কিল ইউ।
এবার রয় আর টিজ করলো না একটু জোরে একটা চাপ দিল তাতে তার পেনিসের অনেকটাই বিদিশার ভিজে যোনিগহ্বরে ঢুকে গেল, বিদিশা "আঃআহহহ আউচচ" করে উঠলো, ওর একটা হাত মাথার উপরে ছড়ানো অপর হাতে নিজের একটা স্তনের উপরে। রয় আস্তে আস্তে মিডিয়াম লয়ে ঠাপ মারা শুরু করলো।
বিদিশা: আহহহ আহহহ ওহ শিট শিট আহহহ উম্মম্মম্ম আঃ শিৎকার করতে থাকলো। রয় ঠাপের সাথে একটা হাত বাড়িয়ে বিদিশার উন্মুক্ত স্তনটা ধরে টিপতে থাকে, এভাবে কিছুক্ষণ ঠাপের পরে কাঁধ থেকে বিদিশার পাটা নামিয়ে দুইপায়ের ফাঁকে নিজের কোমরটা নিয়ে গিয়ে বিদিশার উপর চলে যায় রয় এবং মিশনারি পোজে ঠাপানো শুরু করে, বিদিশার মুখ থেকে শিৎকার বেরোতে পারে না কারন তখন রয় আবার নিজের ঠোঁটদ্বয় বিদিশার ঠোঁটজোড়ায় লক করেছে, বিদিশা দুহাতে রয়ের পিঠ নিজের বুকে আঁকড়ে ধরে, কিসের পরে রয় আবার বিদিশার ঘাড়ে গলায় মুখ ঘষতে থাকে, চুম্বন দিতে থাকে এর সাথে সমানে ঠাপ তো চলছেই, সারা ঘরময় থপথপ আওয়াজ হচ্ছে সাথে বিদিশার শিৎকার "আহ্হ্হ্হ্হ্.... আঃআহহহ... উহ্হ্হ্হ্হ্.... রয় আহহহ ইওর কক্ ফিলস্ সো গুড আহহহহহহহহহ
একটু পরে বিদিশা রয়কে ঠেলে নিজের উপর থেকে সরিয়ে পাশে ফেলে তারপর উঠে রয়ের পায়ের কাছে গিয়ে পেনিসটা হাত দিয়ে ধরে আস্তে আস্তে উপর নীচে করতে থাকে, তারপর আস্তে আস্তে প্রথমে মুণ্ডিটা তারপর পুরো পেনিসটা মুখে নিয়ে নেয় এবং চোষা শুরু করে, ভালো করে থুতু দিয়ে মাখায় রয়ের পেনিসটা তারপর আবার মুখে পুরে চোষা শুরু করে ওর মুখ থেকে এখন "ওক্‌ওক্‌ওক্‌ওক্‌ওক্" শব্দ বেরোতে থাকে। পুরো পেনিসটা ভালো করে নিজের থুতু দিয়ে মাখিয়ে বিদিশা থামে, থামে বললে ভুল বলা হবে, এবার সে তার সঙ্গীর কোমরের উপরে উঠে বসে এবং হাত দিয়ে রয়ের পেনিসটা নিজের যোনীমুখে ধরে ঢুকিয়ে নেয়, "আহহহহহ" মুখ থেকে একটা শিৎকার বেরিয়ে আসে তার তারপর নিজেই কোমরটা উপরনীচ করতে থাকে, একটু পরে রয় দুহাতে বিদিশার কোমরটা ধরে তলঠাপ দেওয়া শুরু করে, "আহহহ উহহহহহহহ ওহ ফাক ওহ ফাক আঃআহহহ" শিৎকার বেরোতে থাকে বিদিশার মুখ থেকে, এবার কোমর ছেড়ে দুহাতে বিদিশার দুলতে থাকা দুটো স্তন চেপে ধরে রয়, এতে যেন বিদিশার কামোত্তজনা চরমে পৌঁছায় সে বুঝতে পারে আবার রাগমোচন হবে তার। দুজনে পজিশন চেঞ্জ করে,বিদিশা নীচে আর রয় তার উপরে আবার মিশনারি পোজে দুটি নরনারী আদিম খেলায় মেতে থাকে, "ডোন্ট স্টপ ডোন্ট স্টপ আয়্যাম কামিং এগেইন, ডোন্ট স্টপ" বলতে বলতে দুপা দিয়ে রয়ের নগ্ন কোমর পেঁচিয়ে ধরে, আহহহহহহ ওহ মাই গড ওহহহহ ফাককক আঃ করতে করতে বিদিশা বোঝে রয়ের‌ও বেরোবে কারণ সে ঠাপের গতি একটু বাড়িয়েছে, একটা সময় দুজনেই আর থাকতে পারে না প্রথমে বিদিশা দ্বিতীয়বারের মতো রাগমোচন করে এবং একটু পরে রয়ের কোমরটাও স্থির হয়ে যায়, বিদিশা অনুভব করে তার যোনীগহ্বর রয়ের লিঙ্গ নিঃসৃত বীর্যে ভরে যাচ্ছে, দুজনেই কিছুক্ষন জড়িয়ে শুয়ে হাঁফাতে থাকে, একটু পরে বিদিশা উঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে তারপর আবার রয়ের পাশে শুয়ে পরে।





[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top