প্রশ্ন : সর্বনিম্ন কতজন মুছল্লী হলে জুম‘আ কায়েম করা যায়?
উত্তর: সর্বনিম্ন দু’জন অর্থাৎ ইমামের সাথে মাত্র একজন মুছল্লী থাকলে জুম‘আর ছালাত কায়েম করা যাবে (মির‘আত ৪/৪৪৯-৫০)।কারণ জুম‘আর ছালাত অন্যান্য ফরয ছালাতের ন্যায় একটি ফরয ছালাত। আর ইমামের সাথে সর্বনিম্ন একজন থাকলেই জামা‘আতের ছওয়াব অর্জিত হয়। মূলত: সংখ্যা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে কোন দলীল নেই। অতএব যদি দু’জন থাকেন, তাহ’লে একজন খুৎবা দিবেন আর অন্যজন হবেন শ্রোতা। অত:পর দু’জনে জামা‘আত কায়েম করবেন। কা‘ব ইবনু মালেক বলেন, সর্বপ্রথম যিনি আমাদের নিয়ে জুম‘আর ছালাত আদায় করেন তিনি হ’লেন আস‘আদ বিন যুরারাহ্ ...। জিজ্ঞেস করা হ’ল, সে সময় আপনারা কতজন ছিলেন? তিনি উত্তরে বলেন, চল্লিশ জন ছিলাম (ছহীহ্ আবুদাউদ হা/১০৬৯; ইরওয়াউল গালীল হা/৬০০)। উক্ত বর্ণনায় ঐ জুম‘আর ছালাতে কতজন উপস্থিত ছিলেন তা বুঝানো হয়েছে। সর্বদা চল্লিশ জনই হ’তে হবে তা বলা হয়নি। উল্লেখ্য, ‘চল্লিশ জন অথবা এর চেয়ে বেশী সংখ্যক মুছল্লী উপস্থিত হলে জুম‘আ, ঈদুল আযহা বা ঈদুল ফিৎর আদায় করতে হবে’ মর্মে জাবের (রা বর্ণিত আছারটি অত্যন্ত যঈফ (দারাকুৎনী, ইরওয়াউল গালীল হা/৬০৩)।
আমাদের গ্রামের পাশের গ্রামের একটা ঘটনা বলি... বেশ কিছুদিন আগে কোনো এক জুম্মাবারে নামাযের প্রায় ঘন্টাখানেক আগে হঠাত করেই চারিদিক অন্ধকার করে বজ্রপাত শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ বজ্রের সেই ভয়াবহ গর্জন শেষে শুরু হয় ঝড়। সেই সাথে মুশলধারে বৃস্টি। নামযের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেরোনোর উপায় থাকে না বেশীরভাগ মুসল্লীদেরই। মসজিদের একেবারে আশেপাশে যাদের বাড়ি তাদের কেউ কেউ ঝড় আর বৃস্টি উপেক্ষা করে মসজিদে আসতে পেরেছিলো। কিন্তু তাদের সংখ্যা ছিলো খুবই নগণ্য। সব মিলিয়ে জনা পনের হবে সংখ্যাটি। নামযের নির্দ্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও প্রাকৃতিক এই দূর্যোগের কারনে তখনও ইমাম সাহেব এসে পৌঁছতে পারেননি মসজিদে। এমতাবস্থায় মুসল্লিদের মাঝে গুঞ্জন উঠে- কি করা যায় ? মুসল্লিদের মাঝে একাধিক লোক ছিলেন যারা খুৎবা দেয়ার যোগ্যতা রাখেন। কিন্তু তারা খুৎবা দিয়ে জুম্মা আদায় করবেন কিনা সেটা নিয়ে বেশ সংশয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ঐদিন আর মসজিদে জুম্মার নামায আদায় হয়নি। যারা উপস্থিত হয়েছিলেন তাদের আলোচনার ভিত্তিতে ঐক্যমত্ত হয় যে সংখ্যা (৪০ জন) পুরা না হওয়ার প্রেক্ষিতে জুম্মা আদায় করা যাবেনা। যোহর আদায় করতে হবে... সেদিন তাদের ঐ সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিলো না। সহিহ হাদিস অনুযায়ী তারা ওইদিন জুম্মা আদায় করতে পারতেন।