What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রশ্নোত্তরে ইসলাম (1 Viewer)

QA-029

প্রশ্ন : আমার পিতা মারা গেলে কাফন পরানোর সময় আমাদের মসজিদের ইমাম পিতার কপালে সুগন্ধি দ্বারা আল্লাহ ও মুহাম্মাদ লিখে দেন। এর পক্ষে কোন দলীল আছে কি?

উত্তর : মাইয়েতের কপালে সুগন্ধি দ্বারা আল্লাহ ও মুহাম্মাদ লেখার শারঈ কোন ভিত্তি নেই। এগুলো বিদ‘আত বা কুসংস্কার। মৃতকে কেন্দ্র করে এ ধরনের অসংখ্য বিদ‘আত সমাজে চালু আছে। এগুলো থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য (বিস্তারিত দ্র: ছালাতুর রাসূল (সাঃ ) পৃ: ১২৭-১২৯)।
 
মাইয়্যেতের কপালে সুগন্ধি দিয়ে আল্লাহ এবং রাসুলের নামাঙ্কনই শুধু নয়, মাইয়্যেতকে নিয়ে আমাদের সমাজে আরো বেশ কিছু বিদআত প্রচলীত আছে। যার কোনোটাই হাদীস তথা নবী (সাঃ ) এর সুন্নত দ্ধারা প্রমাণিত নয়। যেমন, মৃত ব্যাক্তিকে উদ্দেশ্য করে মৃত্যুর আগে পরে বিশাল খাবার দাবাড়ের আয়জন করা। এটা আগে শুধু ধনী শ্রেনীদের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো। কালক্রমে সেটা এখন সমাজের সর্বস্তরের লোকেদের মাঝেই বিস্তার লাভ করেছে। এটাকে অনেকেই বেশ পূন্যের একটা কাজ বলে মনে করে। বিশেষ করে মাইয়্যেতের ওয়ারিশ যারা আছেন, তারা এটাকে তাদের উপর অর্পিত দায়ীত্ব বলেও মনে করেন। যেনো এটা না করলে তারা সমাজে ছোট হয়ে যাবেন কিংবা তাদেরকে লোকেরা কৃপণ মনে করবে। আর সেই বোধ থেকেই তারা যতোটুকু বড় করে সম্ভব সেটা পালনে সচেষ্ঠ হন। অথচ, এই ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের ব্যাপারে ধর্মে নিষেধ করা আছে।
মৃত ব্যাক্তির নামে ছদকা হিসাবে খাওয়ানো হলে তাতে সমাজের সবাইকে দাওয়াত দেয়া আর সে দাওয়াতে সবার ভুড়িভোজের ব্যবস্থা করা। এখানে মূল যে বিষয়টা সবাই এড়িয়ে যায়, সেটি হলো- ছদকা খাওয়ার উপযুক্ত সমাজের সবাই কখনো হতে পারেন না। শুধুমাত্র যাকাত যারা গ্রহণ করতে পারেন তারাই সেই ছদক্বা খেতে পারবেন। অন্যান্যদের সেই ছদক্বা উপলক্ষে তৈরী করা খাবার খাওয়া যায়েয হবে না। অথচ সমাজের উঁচু শ্রেনী থেকে নিয়ে নিচু শ্রেনীর সবাই সে খাবারে অংশগ্রহণ করে থাকেন। যদিও উঁচুশ্রেনীর লোকদের খাবার পরিবেশন একটু ভিন্নভাবে করা হয়ে থাকে।
মৃত ব্যাক্তিকে জানাযা স্থানে নিয়ে যাবার সময় এবং জানাজা অন্তে কবর স্থানে নিয়ে যাবার সময় খাটিয়া বহনকারী সহ পিছু পিছু যারা যায় তাদের সবাই উচ্চস্বরে তাকবীর ও বিভিন্ন দোয়া পাঠ করা। মাঝে মধ্যে এমন অবস্থা হয় যে মনে হয় কার থেকে কে জোরে সেসব দোয়া পাঠ করতে পারবে তার যেনো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এটা একটা বিদআত।
কবর দেয়া শেষ হয়ে গেলে কবরের উপর গোলাপজল ছিটিয়ে দেয়ারও একটা রেওয়াজ আমাদের সমাজে আছে। কবরে গোলাপ জল ছিটিয়ে দেয়ার পাশাপাশি উপস্থিত লোকেদের প্রতিও গোলাপ জল ছিটানো হয়ে থাকে। এটাতে পূন্য আছে বলে অনেকের ধারনা থেকেই এই বিদআতের উদ্ভব ঘটেছে। আসলে এই ব্যাপারে পূন্য পাবার ব্যাপারে কোন দলীল প্রমান নেই। সেই অর্থে এটা বর্জন করাই বাঞ্চনীয় !
লাশ খাটিয়ায় রাখার পর খাটিয়া ঢেকে রাখার জন্য যে কাপড়টা ব্যবহার করা হয় তাতে আয়াতুল কুরসী সহ বিভিন্ন দোয়া খচিত হয়ে থাকে। কোরান শরীফের কোনো আয়াত বা দোয়া সম্বলিত এই ধরনের কাপড় দিয়ে মৃত ব্যাক্তির লাশকে ঢেকে রাখার ব্যাপারেও অনেকের অভিমত যে এতে মৃত ব্যাক্তি শান্তি পেয়ে থাকেন। আসলে এটি একটি ভুল ধারনা। কেননা এই ব্যাপারে হাদিস বা সুন্নাহতে কোন ধরনের দলীল প্রমান নেই। তাই এটাও পরিত্যাজ্য !
মাইয়্যেতের ব্যাপারে এরকম আরো অনেক কুসংস্কার আর বিদাআত আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে। যেগুলো সম্মন্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে আর বিদআত থেকে নিজে এবং সমাজকে দূরে রাখতে হবে।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বিদআত থেকে মুক্ত থাকার তৌফিক দান করুন !
 
QA-030

প্রশ্ন : তোমরা তোমাদের প্রভুর নিকট যাবতীয় কিছু প্রার্থনা কর। এমনকি জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে সেটাও চাও। উক্ত হাদীছটি কি ছহীহ।

উত্তর: উক্ত হাদীছটি যঈফ (যঈফ তিরমিযী হা/৩৬০৪; যঈফাহ হা/১৩৬২)। তবে আল্লাহর কাছে সর্বদা চাইতে হবে অন্যথা তিনি বান্দার উপর রাগান্বিত হন। আর আল্লাহর কাছে চাওয়া অধিক মর্যাদাকর বিষয় (তিরমিযী হা/৩৩৩৬, ৩৩৭০; মিশকাত হা/২২৩২)।
 
মহান আল্লাহ্পাক আমাদের সবাইকে বুঝ দিক I আমাদেরকে ক্ষমা করুন I আমীন I
 
মহান আল্লাহ্পাক আমাদের সবাইকে বুঝ দিক I আমাদেরকে ক্ষমা করুন I আমীন I

রিপ্লাইয়ের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, মামা।
 
আজকে এই কিছুক্ষণ আগে আমার এক অধীনস্থকে একটা তথ্য জানার জন্য বেশ কয়েকবার ফোন করতে হয়েছে। তার জবাব দেয়ার ভঙ্গিতে এটা স্পস্ট ছিলো যে সে আমার বার কয়েক ফোনে বেশ বিরক্ত। করোনা কালীন এই সময়ে স্বাভাবিক যোগাযোগের চাইতে ভার্চুয়াল যোগাযোগের পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে গেছে বলে যারা এই ধরনের পেশায় আছে যে বারবার মোবাইলের স্ক্রীনে তাকিয়ে থাকতে হয়, তাদের এই বিরক্তির ব্যাপারটা কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি। কারন এর কিছুটা আঁচ যে আমার শরীরেও লেগে যায়... সেই অধীনস্থ কিন্তু ক্ষেপে না গেলেও বিরক্ত প্রকাশে কোনো কার্পন্য করেনি। আর এটা একজন মাখলুকাত হিসাবে ঠিকই ছিলো। কিন্তু যিনি খালিক্ব তিনি কিন্তু এর বিপরীত। ওনার কাছে তথ্য নয়, বরং সাহায্য চেয়ে চেয়ে যতোবার প্রার্থনা করা হবে, ওনি ততোবেশী খুশী হবেন। মানুষ যেটাতে বিরক্ত, প্রভূ সেটাতে আনন্দিত... একারনেই আল্লাহর কাছে যে বান্দা যতোবেশী প্রার্থনা করবে আল্লাহ সে বান্দাকে ততো বেশী পছন্দ করবেন। তবে শুধু চাইলেই হবে না, মনে রাখতে হবে প্রত্যেকটা চাওয়া যখন পূর্ণ হবে তখন নিশ্চয়ই শুকরিয়া আদায় করে নিতে হবে। তবেই তো সেই চাওয়া পরিপূর্ণ হবে...
 
QA-031
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তার কফিনকে ঘিরে সরকারিভাবে যে শ্রদ্ধা জানানো হয় এবং যে সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয় তা-কি শরী‘আত সম্মত?

উত্তর: জানাযা ব্যতীত অন্য যা কিছু করা হবে, তা বিদ‘আত হিসাবে গণ্য হবে। জাহেলী যুগে মৃতের জন্য শোক প্রকাশ ও বেশী করে কান্নাকাটির জন্য ভাড়াটিয়া লোক পাওয়া যেত। যে মৃতের জন্য যতবেশী লোক কাঁদতো, সে মৃত ব্যক্তি তত বেশী সম্মানিত বলে গণ্য হ’ত। ইসলাম এসে এগুলি নিষিদ্ধ করে এবং বলা হয় যে, মৃতের জন্য পরিবারের কান্নাকাটির জন্য মৃতের কবরে আযাব হবে’ (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/১৭৪১) যদি সে মৃত্যুর আগে এ থেকে নিষেধ না করে যায়। অতএব মুসলিম মুক্তিযোদ্ধাদের উচিত হবে মৃত্যুর পূর্বে এ বিষয়ে অছিয়ত করে যাওয়া যেন তার মৃত্যুর পরে জানাযা ব্যতীত অন্য কোন আনুষ্ঠানিকতা না করা হয়। নইলে উপরোক্ত হাদীছের আলোকে তার কবরে আযাব হ’তে পারে।
 
আমাদের সমাজে অনেক জায়গায়ই দেখা যায় জানাযার জন্য মুসল্লীগন যখন লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে যান তার আগে বা পরে লাশ সামনে রেখে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত একের পর এক লোকজন বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে সেটা ঘন্টা ব্যাপী বা তারও বেশী সময় ধরে চলে। এটা কোনো মতেই শরীয়ত সাপোর্ট করে না। বরং জানাযার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে লাশ বের হয়ে যাবার পর যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব জানাযা অন্তে লাশ দাফন করে দেয়াই উত্তম। অনেক জায়গায় এমনও দেখা যায়, জানাযা দেয়ার পর সামাজিক কিংবা রাস্ট্রীয় কিছু কর্মকান্ডের জন্য লাশ দাফনে বিলম্ব করে লাশ পাশে রেখে বিভিন্ন ধরনের ক্রিয়া কর্ম চালানো হয়। যেটা ধর্মীয় বিধান মতে খুবই গর্হিত একটা কাজ। এরকম অবস্থায় সেই মৃত ব্যাক্তি কস্ট পায় বলেও ধর্মীয় বিধানে কথিত আছে। মৃত ব্যাক্তির জন্য হাহাকার করে উচ্চস্বরে কান্না করলে মৃত ব্যক্তির কবরের আযাব বৃদ্ধি পায় বলে যে হাদীস আছে তারই আলোকে আমাদের উচিৎ প্রত্যেকে তার নিজ পরিবারের কাছে তার জীবদ্দশায় অছিয়ত করে যাওয়া উচিৎ যেনো তার মৃত্যুতে কেউ এরকম আচরণ না করে। অছিয়ত করে যাবার পরও যদি তার পরিবারের লোকজন এরূপ আচরণ করে, তবে সেক্ষত্রে মৃত ব্যাক্তি হয়তো পরিত্রাণ পেয়ে যাবেন। অন্যথায় হাদিস অনু্যায়ী এর জন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top