মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছিল ডাক্তারের বুকে কখনো বুক দিয়ে শুস নি। খুব জোড় সামলে নিলাম। হাসলাম। মিত্রা আমার বুকে নেমে এলো।
এবার বল।
কি ?
কেন প্রবীরদাকে ছাড়িয়ে আনলি। তাও নিজের বন্ডে।
আমার স্বার্থ আছে। তাই।
সে তো বুঝলাম, কিসের স্বার্থ, বল।
তোর কাগজটাকে আরও বড়ো করে তুলতে হবে। পয়সা থাকলেই বড়ো হওয়া যাবে না। সরকারী ক্ষমতাও তার সঙ্গে কিছুটা দরকার।
প্রবীরদার কনো ক্ষমতা নেই!
কে বললো নেই।
তুই এমন লাগলি মন্ত্রীত্ব থেকে রিজাইন দিল।
ওটা সাময়িক।
তবে কালকের কেশটা যদি উইথড্র না করতাম তাহলে পার্টিতে একটা বড়ো-সড়ো গন্ডগোল হতো। বিধানদা, অনিমেষদা দু’জনেরি বিপদ বারতো। টালমাটাল পজিসন তৈরি হয়ে যেত।
কেন ?
তোর মাথায় ঢুকবে না।
তুই ঢোকালেই ঢুকবে।
দেখ আমাদের শরীরে যেমন হাত-পা-মাথা আছে, এরা পাঁচজন পার্টির হাত-পা-মাথা। পাঁচজনে মিলে একটা শরীর। বিধানদা প্রবীরদা, অনুপদাকে তৈরি করেছেন। রূপায়ণদা অনিমেষদার হাতে তৈরি। কিন্তু প্রবীরদা খুব তাড়াতারি ক্ষমতা পেয়েগেছে। ফলে কিছুটা পদস্খলন হয়েছে।
আজ রাজনাথকে (সন্তর্পণে ডাক্তারের ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম) ঘাঁটতে গিয়ে অনেক কিছু ভেতরের ব্যাপার সামনে চলে আসছে। হয়তো অনিমেষদা, বিধানদা জানে আবার হয়তো জানে না। ওরা ধরতে পারে নি, আমার সোর্সটা ওদের থেকে স্ট্রং।
বৌদির মুখ থেকে শুনেছে। কিন্তু অতটা গেইজ করতে পারে নি। তবে এই কয়দিনে ওরা আমাকে পায়ের নোখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত মেপে নিল। আজ রাতের মিটিংয়ে একে অপরকে বুঝলাম।
আমার তরফ থেকে এই বার্তাও ওদের কাছে পৌঁছে দিলাম, তোমরা আমাকে প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে আটকে রাখতে পারবে না। তবে তুই যদি আমার কাছ থেকে সরে যাস আলাদা ব্যাপার।
কেন এ কথা বলছিস ?
আজ পর্যন্ত যা কিছু করতে পেরেছি, তোর জন্য, তুই আমাকে ক্ষমতটা দিয়েছিলি তাই। সত্যিকারের আমার পেছনে যদি মালিকের তকমাটা না থাকতো, তাহলে আমি কিছু করতে পারতাম না।
আমি সেটা ফিল করি। আজ তোকে একটা কথা বলছি, আর কোনদিন বলবো না, তুই আমাকে এভাবে আর কোনদিন বলবিনা। আমি তোকে কোনোদিন আমার জীবন থকে সরাব না। বরং তুই আমাকে সরিয়ে দিতে পারিস, তোর জীবন থেকে।
আমি মিত্রাকে কাছে টেনে নিলাম। ওর কপালে চুমু খেলাম।
রাগ করিসনা, মাঝে মাঝে আমার কেমন যেন মনে হয়। নিজের প্রতি নিজে আস্থা হারিয়ে ফেলি। সব কেমন গোলমাল পাকিয়ে যায়। আমি চাই আমার ভুলগুলো তোর চোখ দিয়ে দেখব।
কাল রাতে টনা মনাকে বৌদি নিজে হাতে খেতে দিয়েছে, বসে বসে খাইয়েছে।
ওই ছেলেগুলোর কথা একবার ভাব। মুখ দুটো চোখের সামনে ভেসে উঠলেই, বার বার শিউরে উঠছি।
তোকে ওরা অন্ধের মতো ভালবাসে।
আমি কোনদিন ওদের কাছে কিছু চাই নি। কিন্তু প্রবীরদা মিস ইউটিলাইজ করলো। এখানে আসার আগে যদি একবার জানতে পরতো ওরা আমার বাড়িতে আসছে। তাহলে প্রবীরদার ক্ষতি করে দিত।
কেন।
ওইযে তুই বললি ভালবাসা।
সেই জন্য মালতীর সঙ্গে অনিমেষদা বিধানদা আলাদা করে কথা বলেছে। সে কি জেরা রে।
তুই ছিলি না।
তখন সবে মাত্র ওই অবস্থা থেকে উঠেছি। ইচ্ছে করেনি শুনতে।
ছাগল।
তুই আমাকে ছাগল বললি ?
তাহলে কি বলবো। কষ্ট হলেও শুনতে হয়। তাহলেই শিখবি। না হলে কাঁচকলা।
বুবুন তুই কিন্তু মুখে যা আসছে বলে যাচ্ছিস। আমি এখন তোর বিয়ে করা বউ।
ঘুমিয়ে পর। আমিও একটু ঘুমিয়ে বাঁচি।
দাঁড়া পেটে টান লাগছে। নীচে নেমে শুই।
কিরে কোন সমস্যা!
এই সময় এরকম একটু হবে, ডাক্তারদাদা বলছিল। গাদাখানেক ওষুধ দিয়েছে। খেতে হবে। বড়মা বলে দিয়েছে। এখন আর কোথাও যাওয়া হবে না। অফিসে তিনঘন্টার বেশি থাকা যাবে না। প্রয়োজনে অফিসকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসতে।
তুই আমার বিপদ বাড়ালি।
তুই কিন্তু এখনো বললি না। কেন প্রবীরদাকে ছাড়িয়ে আনলি।
এতো কথা বলার পরও খোলসা করে বলতে হবে, কেন ছাড়ালাম।
ওই জন্য ডাক্তারদাদা বললো, বুঝলে বান্ধবী ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো ধোঁয়াসা। তবে ও এই ক্ষেত্রে সর্ট-টার্ম গেম খেললো না। লং-টার্ম গেম খেললো।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে।
কিরে তোর চোখ দুটো স্থির কেন। আবার কি প্ল্যান ভাঁজছিস।
কিছু না।
জানিস বুবুন জ্যেঠিমনি দিদিভাই যতো তোর কথা শুনছে, ততো অবাক হয়ে যাচ্ছে।
কেন।
সেই রাতে অতো লোক জন এসেছে, এটা ওরা ভাবতেই পারে নি।
তার ওপর তোর ওই কীর্তি। জ্যেঠিমনি ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিল। প্রেসার হাই। নীরু ওষুধ দিল। তারপরই ঘুম। ব্যাশ সব ঠিক।
ইসি তখন অনিমেষদাকে বলেছে।
প্রথমে বলতে চায় নি। লজ্জা পাচ্ছিল। অনিমেষদা বললো, তুই বলনা, তোর কোন ভয় নেই। তখন ও অনিমেষদাকে সব বলেছে।
কি বললো অনিমেষদা।
প্রথমে গম্ভীর হয়ে গেল। প্রবীরদাকে বললো, এই সমস্যার সমাধান তুমি করবে। আমি অনুপকে দায়িত্ব দিতে পারতাম। কিন্তু দেব না।
প্রবীরদা শুনে কি বললো।
কালকেই ওখানে যাবে। আমাদের ও বাড়ির এ্যাড্রেস নিয়ে নিল। জানিস দিদিভাইকে ওরা খুব অপমান করেছে। তোকে ও সব কথা বলে নি। শুনলে তুই যদি কিছু করে বসিস।
জানি।
তুই জানিস।
আমি খবর নিয়ে নিয়েছি।
কখন নিলি ?
তোকে জানতে হবে না। আর কি বললো।
প্রবীরদাকে এক সপ্তাহের মধ্যে সব ব্যবস্থা করে দিতে বলেছে। এও বলেছে অনি যেন এর মধ্যে ইন্টারফেয়ার না করে। সেটা তুমি দেখবে।
তাই জন্য যাওয়ার সময় প্রবীরদা বললো কাল বিকেলে একবার আসব তুই থাকিস।
তোকে বলেছে!
হ্যাঁ।
তখন প্রবীরদার কথা শুনে মনে হচ্ছিল তোকে ভীষণ ভয় পাচ্ছে।
ছাড় ও সব কথা, বরুণদা কি বললো ?
দিদিভাইকে বলেছে, তুমি এই ছেলেটাকে সকালে বাড়ি থেকে বার করে দিচ্ছিলে। আচ্ছা সত্যি করে বলো, সারাজীবন তুমি যদি চেষ্টা করতে এই সব লোকের সান্নিধ্যে আসতে পারতে ?
কি বললো ইসি।
খুব লজ্জা পেয়ে গেল। চোখদুটো ছল ছল করে উঠলো।
জানিস ইসিরটা বেশ টাইট।
কি টাইট।
কিছু না।
ওরে শয়তান, কোন কথা থেকে কোন কথায় চলে এলি।
আমি হো হো কেরে হাসছি। মিত্রা আমার ঠোঁটে কামড় দিল। দুবার কোমড় নাচিয়ে নিল।
আমার পেট ফেটে যাবে। আমি হাসতে হাসতে বললাম।
যাক না যাক।
আমি হাসছি।
আমি জানতাম তুই নীরুর পেট থেকে কথা বার করবি।
তবে তোর থেকে নয়।
দিলো আমার বুকে গুম গুম করে কিল।
মিত্রা আমার বুকে নেমে এলো। আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। আমি ওর কথা রাখলাম। শরীর থেকে সুতোর নাইটিটা খসিয়ে দিলাম। মিত্রা আমার আরও কাছে গভীর ভাবে এগিয়ে এলো। চোখে চোখ। ঠোঁটে ঠোঁটে কথা। দুজনে শরীরী খেলায় মেতে উঠলাম। আজ সেই ভাবে না খালি ছোঁয়া ছোঁয়া। কতোক্ষণ খেলা করলাম জানি না। শরীর আর টানছে না। একথা সেকথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আমি ঘরে একা শুয়ে আছি। চারিদিকের দরজা জানলা হাট করে খোলা। এমনকি বাইরের দরজাটাও খোলা। আমাগাছের পাতায় বাতাসের ছোঁয়ায় শির শির করে একটা মিষ্টি আওয়াজ ঘরের চারদিকে ম ম করছে। ভালো করে বোঝার চেষ্টা করলাম এখন কটা বাজে। জানলা দিয়ে সূর্যের চেহারা দেখে বুঝলাম, বেশ বেলা হয়ে গেছে। বিছানা ছেড়ে উঠে বসলাম। কিছুক্ষণ অলস দৃষ্টি নিয়ে জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
তারপর নেমে এসে ব্রাসে মাজন লাগিয়ে জানলার সামনে এসে দাঁড়ালাম। আমগাছটায় ছোট ছোট আম হয়েছে। আপন মনে যে যার ঝুলে আছে। সেই কাক দুটোকে আর দেখতে পাচ্ছি না। তাদের পরিত্যক্ত বাসাটা এখনো আমগাছের একটা ডালে ঝুলে আছে। নিচের দিকে তাকালাম। পেয়ারা গাছটায় দুটো শালিক বসে ঠোঁটে ঠোঁট ঘসছে।
একটু দূরে পাঁচিলের গায়ে চোখ পরলো। অনেক গুলো বেল ফুলের গাছ, মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ নিশ্চই ভজুরামের কাজ। ভজুরাম সারাদিন বড়মা ছোটমার পেছন পেছন ঘুর ঘুর করে, আর বাগান পরিচর্যা করে। বেশ আছে। গণিকা পল্লীর বয়ের থেকে ভালো আছে। জানলা থেকে সরে এসে বাথরুমে ঢুকলাম। ভালো করে ফ্রেস হয়ে বাথরুমের বাইরে এলাম। ইজি চেয়ারে বড়মা। হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। আমার দিকে তাকাল।
কখন উঠলি।
আমি মুচকি হাসলাম।
বড়মা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
আমি মুখ মুছে টাওয়েলটা কাঁধে ফেললাম, আলনা থেকে টেনে একটা পাজামা পাঞ্জাবী বার করলাম। বড়মা আমার দিকে স্থির দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
তুই উঠে পরেছিস! ছোটমা বলতে বলতে ঘরের ভেতর এলো।
দিদি এখানে নিয়ে চলে আসি ?
কেন, আমি নিচে যাচ্ছি।
বড়মার দিকে তাকিয়ে।
জানি তোমাদের অনেক প্রশ্ন আছে। আজ তার সঠিক উত্তর আমায় দিতেই হবে।
বড়মা, ছোটমা আমার দিকে তাকিয়ে, আমাকে বোঝার চেষ্টা করছে।
কিগো তাই তো ?
বড়মা এমন ভাবে মুখ টিপে হাসলো, আমি হেসেফেললাম।
খালি ফিচলেমি। দেবনা কান মূলে। ছোটমা তেড়ে এলো।
আজ কোথাও বেরবনা বুঝলে বড়মা। আজ খালি তুমি আমি ছোটমা। খাব আর গল্প করবো। কি মজা বলো।
দেখছিস দেখছিস ছোট। ও কিরকম এখন থেকে প্ল্যান ভাঁজছে দ্যাখ।
তুমি দেখো, ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনেছি। খাবার নিচে খাবে না ওপরে নিয়ে আসবো ?
এই দ্যাখো, বললাম আমি নিচে যাচ্ছি। তোমরা নিচে গিয়ে টেবিলে বসো, আমি চেঞ্জ করেই চলে যাচ্ছি।
বড়মা ছোটমা দুজনেই বেরিয়ে গেল। ভাবলাম চেঞ্জকরে নিচে চলে যাই, তারপর ভাবলাম না, স্নানটা একেবারে সেরে নিই। ভাবামাত্রই আর অপেক্ষা করলাম না। বাথরুমে ঢুকে স্নান সেরে নিলাম। তারপর নিচে এলাম। দুজনে তখনো গুছিয়ে উঠতে পারে নি। বুঝলাম আরও কিছু কাজ এর মধ্যে সেরে ফেলেছে। আমি টেবিলে এসে বসলাম।
কিগো আমি মাঝখানে দুজনে দুপাশে, না মুখো মুখি।
এবার বল।
কি ?
কেন প্রবীরদাকে ছাড়িয়ে আনলি। তাও নিজের বন্ডে।
আমার স্বার্থ আছে। তাই।
সে তো বুঝলাম, কিসের স্বার্থ, বল।
তোর কাগজটাকে আরও বড়ো করে তুলতে হবে। পয়সা থাকলেই বড়ো হওয়া যাবে না। সরকারী ক্ষমতাও তার সঙ্গে কিছুটা দরকার।
প্রবীরদার কনো ক্ষমতা নেই!
কে বললো নেই।
তুই এমন লাগলি মন্ত্রীত্ব থেকে রিজাইন দিল।
ওটা সাময়িক।
তবে কালকের কেশটা যদি উইথড্র না করতাম তাহলে পার্টিতে একটা বড়ো-সড়ো গন্ডগোল হতো। বিধানদা, অনিমেষদা দু’জনেরি বিপদ বারতো। টালমাটাল পজিসন তৈরি হয়ে যেত।
কেন ?
তোর মাথায় ঢুকবে না।
তুই ঢোকালেই ঢুকবে।
দেখ আমাদের শরীরে যেমন হাত-পা-মাথা আছে, এরা পাঁচজন পার্টির হাত-পা-মাথা। পাঁচজনে মিলে একটা শরীর। বিধানদা প্রবীরদা, অনুপদাকে তৈরি করেছেন। রূপায়ণদা অনিমেষদার হাতে তৈরি। কিন্তু প্রবীরদা খুব তাড়াতারি ক্ষমতা পেয়েগেছে। ফলে কিছুটা পদস্খলন হয়েছে।
আজ রাজনাথকে (সন্তর্পণে ডাক্তারের ব্যাপারটা এড়িয়ে গেলাম) ঘাঁটতে গিয়ে অনেক কিছু ভেতরের ব্যাপার সামনে চলে আসছে। হয়তো অনিমেষদা, বিধানদা জানে আবার হয়তো জানে না। ওরা ধরতে পারে নি, আমার সোর্সটা ওদের থেকে স্ট্রং।
বৌদির মুখ থেকে শুনেছে। কিন্তু অতটা গেইজ করতে পারে নি। তবে এই কয়দিনে ওরা আমাকে পায়ের নোখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত মেপে নিল। আজ রাতের মিটিংয়ে একে অপরকে বুঝলাম।
আমার তরফ থেকে এই বার্তাও ওদের কাছে পৌঁছে দিলাম, তোমরা আমাকে প্রশাসনিক ক্ষমতা দিয়ে আটকে রাখতে পারবে না। তবে তুই যদি আমার কাছ থেকে সরে যাস আলাদা ব্যাপার।
কেন এ কথা বলছিস ?
আজ পর্যন্ত যা কিছু করতে পেরেছি, তোর জন্য, তুই আমাকে ক্ষমতটা দিয়েছিলি তাই। সত্যিকারের আমার পেছনে যদি মালিকের তকমাটা না থাকতো, তাহলে আমি কিছু করতে পারতাম না।
আমি সেটা ফিল করি। আজ তোকে একটা কথা বলছি, আর কোনদিন বলবো না, তুই আমাকে এভাবে আর কোনদিন বলবিনা। আমি তোকে কোনোদিন আমার জীবন থকে সরাব না। বরং তুই আমাকে সরিয়ে দিতে পারিস, তোর জীবন থেকে।
আমি মিত্রাকে কাছে টেনে নিলাম। ওর কপালে চুমু খেলাম।
রাগ করিসনা, মাঝে মাঝে আমার কেমন যেন মনে হয়। নিজের প্রতি নিজে আস্থা হারিয়ে ফেলি। সব কেমন গোলমাল পাকিয়ে যায়। আমি চাই আমার ভুলগুলো তোর চোখ দিয়ে দেখব।
কাল রাতে টনা মনাকে বৌদি নিজে হাতে খেতে দিয়েছে, বসে বসে খাইয়েছে।
ওই ছেলেগুলোর কথা একবার ভাব। মুখ দুটো চোখের সামনে ভেসে উঠলেই, বার বার শিউরে উঠছি।
তোকে ওরা অন্ধের মতো ভালবাসে।
আমি কোনদিন ওদের কাছে কিছু চাই নি। কিন্তু প্রবীরদা মিস ইউটিলাইজ করলো। এখানে আসার আগে যদি একবার জানতে পরতো ওরা আমার বাড়িতে আসছে। তাহলে প্রবীরদার ক্ষতি করে দিত।
কেন।
ওইযে তুই বললি ভালবাসা।
সেই জন্য মালতীর সঙ্গে অনিমেষদা বিধানদা আলাদা করে কথা বলেছে। সে কি জেরা রে।
তুই ছিলি না।
তখন সবে মাত্র ওই অবস্থা থেকে উঠেছি। ইচ্ছে করেনি শুনতে।
ছাগল।
তুই আমাকে ছাগল বললি ?
তাহলে কি বলবো। কষ্ট হলেও শুনতে হয়। তাহলেই শিখবি। না হলে কাঁচকলা।
বুবুন তুই কিন্তু মুখে যা আসছে বলে যাচ্ছিস। আমি এখন তোর বিয়ে করা বউ।
ঘুমিয়ে পর। আমিও একটু ঘুমিয়ে বাঁচি।
দাঁড়া পেটে টান লাগছে। নীচে নেমে শুই।
কিরে কোন সমস্যা!
এই সময় এরকম একটু হবে, ডাক্তারদাদা বলছিল। গাদাখানেক ওষুধ দিয়েছে। খেতে হবে। বড়মা বলে দিয়েছে। এখন আর কোথাও যাওয়া হবে না। অফিসে তিনঘন্টার বেশি থাকা যাবে না। প্রয়োজনে অফিসকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসতে।
তুই আমার বিপদ বাড়ালি।
তুই কিন্তু এখনো বললি না। কেন প্রবীরদাকে ছাড়িয়ে আনলি।
এতো কথা বলার পরও খোলসা করে বলতে হবে, কেন ছাড়ালাম।
ওই জন্য ডাক্তারদাদা বললো, বুঝলে বান্ধবী ব্যাপারটা আমার কাছে এখনো ধোঁয়াসা। তবে ও এই ক্ষেত্রে সর্ট-টার্ম গেম খেললো না। লং-টার্ম গেম খেললো।
আমি মিত্রার দিকে তাকিয়ে।
কিরে তোর চোখ দুটো স্থির কেন। আবার কি প্ল্যান ভাঁজছিস।
কিছু না।
জানিস বুবুন জ্যেঠিমনি দিদিভাই যতো তোর কথা শুনছে, ততো অবাক হয়ে যাচ্ছে।
কেন।
সেই রাতে অতো লোক জন এসেছে, এটা ওরা ভাবতেই পারে নি।
তার ওপর তোর ওই কীর্তি। জ্যেঠিমনি ভীষণ ভয় পেয়ে গেছিল। প্রেসার হাই। নীরু ওষুধ দিল। তারপরই ঘুম। ব্যাশ সব ঠিক।
ইসি তখন অনিমেষদাকে বলেছে।
প্রথমে বলতে চায় নি। লজ্জা পাচ্ছিল। অনিমেষদা বললো, তুই বলনা, তোর কোন ভয় নেই। তখন ও অনিমেষদাকে সব বলেছে।
কি বললো অনিমেষদা।
প্রথমে গম্ভীর হয়ে গেল। প্রবীরদাকে বললো, এই সমস্যার সমাধান তুমি করবে। আমি অনুপকে দায়িত্ব দিতে পারতাম। কিন্তু দেব না।
প্রবীরদা শুনে কি বললো।
কালকেই ওখানে যাবে। আমাদের ও বাড়ির এ্যাড্রেস নিয়ে নিল। জানিস দিদিভাইকে ওরা খুব অপমান করেছে। তোকে ও সব কথা বলে নি। শুনলে তুই যদি কিছু করে বসিস।
জানি।
তুই জানিস।
আমি খবর নিয়ে নিয়েছি।
কখন নিলি ?
তোকে জানতে হবে না। আর কি বললো।
প্রবীরদাকে এক সপ্তাহের মধ্যে সব ব্যবস্থা করে দিতে বলেছে। এও বলেছে অনি যেন এর মধ্যে ইন্টারফেয়ার না করে। সেটা তুমি দেখবে।
তাই জন্য যাওয়ার সময় প্রবীরদা বললো কাল বিকেলে একবার আসব তুই থাকিস।
তোকে বলেছে!
হ্যাঁ।
তখন প্রবীরদার কথা শুনে মনে হচ্ছিল তোকে ভীষণ ভয় পাচ্ছে।
ছাড় ও সব কথা, বরুণদা কি বললো ?
দিদিভাইকে বলেছে, তুমি এই ছেলেটাকে সকালে বাড়ি থেকে বার করে দিচ্ছিলে। আচ্ছা সত্যি করে বলো, সারাজীবন তুমি যদি চেষ্টা করতে এই সব লোকের সান্নিধ্যে আসতে পারতে ?
কি বললো ইসি।
খুব লজ্জা পেয়ে গেল। চোখদুটো ছল ছল করে উঠলো।
জানিস ইসিরটা বেশ টাইট।
কি টাইট।
কিছু না।
ওরে শয়তান, কোন কথা থেকে কোন কথায় চলে এলি।
আমি হো হো কেরে হাসছি। মিত্রা আমার ঠোঁটে কামড় দিল। দুবার কোমড় নাচিয়ে নিল।
আমার পেট ফেটে যাবে। আমি হাসতে হাসতে বললাম।
যাক না যাক।
আমি হাসছি।
আমি জানতাম তুই নীরুর পেট থেকে কথা বার করবি।
তবে তোর থেকে নয়।
দিলো আমার বুকে গুম গুম করে কিল।
মিত্রা আমার বুকে নেমে এলো। আমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। আমি ওর কথা রাখলাম। শরীর থেকে সুতোর নাইটিটা খসিয়ে দিলাম। মিত্রা আমার আরও কাছে গভীর ভাবে এগিয়ে এলো। চোখে চোখ। ঠোঁটে ঠোঁটে কথা। দুজনে শরীরী খেলায় মেতে উঠলাম। আজ সেই ভাবে না খালি ছোঁয়া ছোঁয়া। কতোক্ষণ খেলা করলাম জানি না। শরীর আর টানছে না। একথা সেকথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পরলাম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম আমি ঘরে একা শুয়ে আছি। চারিদিকের দরজা জানলা হাট করে খোলা। এমনকি বাইরের দরজাটাও খোলা। আমাগাছের পাতায় বাতাসের ছোঁয়ায় শির শির করে একটা মিষ্টি আওয়াজ ঘরের চারদিকে ম ম করছে। ভালো করে বোঝার চেষ্টা করলাম এখন কটা বাজে। জানলা দিয়ে সূর্যের চেহারা দেখে বুঝলাম, বেশ বেলা হয়ে গেছে। বিছানা ছেড়ে উঠে বসলাম। কিছুক্ষণ অলস দৃষ্টি নিয়ে জানলা দিয়ে তাকিয়ে থাকলাম।
তারপর নেমে এসে ব্রাসে মাজন লাগিয়ে জানলার সামনে এসে দাঁড়ালাম। আমগাছটায় ছোট ছোট আম হয়েছে। আপন মনে যে যার ঝুলে আছে। সেই কাক দুটোকে আর দেখতে পাচ্ছি না। তাদের পরিত্যক্ত বাসাটা এখনো আমগাছের একটা ডালে ঝুলে আছে। নিচের দিকে তাকালাম। পেয়ারা গাছটায় দুটো শালিক বসে ঠোঁটে ঠোঁট ঘসছে।
একটু দূরে পাঁচিলের গায়ে চোখ পরলো। অনেক গুলো বেল ফুলের গাছ, মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। এ নিশ্চই ভজুরামের কাজ। ভজুরাম সারাদিন বড়মা ছোটমার পেছন পেছন ঘুর ঘুর করে, আর বাগান পরিচর্যা করে। বেশ আছে। গণিকা পল্লীর বয়ের থেকে ভালো আছে। জানলা থেকে সরে এসে বাথরুমে ঢুকলাম। ভালো করে ফ্রেস হয়ে বাথরুমের বাইরে এলাম। ইজি চেয়ারে বড়মা। হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। আমার দিকে তাকাল।
কখন উঠলি।
আমি মুচকি হাসলাম।
বড়মা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।
আমি মুখ মুছে টাওয়েলটা কাঁধে ফেললাম, আলনা থেকে টেনে একটা পাজামা পাঞ্জাবী বার করলাম। বড়মা আমার দিকে স্থির দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
তুই উঠে পরেছিস! ছোটমা বলতে বলতে ঘরের ভেতর এলো।
দিদি এখানে নিয়ে চলে আসি ?
কেন, আমি নিচে যাচ্ছি।
বড়মার দিকে তাকিয়ে।
জানি তোমাদের অনেক প্রশ্ন আছে। আজ তার সঠিক উত্তর আমায় দিতেই হবে।
বড়মা, ছোটমা আমার দিকে তাকিয়ে, আমাকে বোঝার চেষ্টা করছে।
কিগো তাই তো ?
বড়মা এমন ভাবে মুখ টিপে হাসলো, আমি হেসেফেললাম।
খালি ফিচলেমি। দেবনা কান মূলে। ছোটমা তেড়ে এলো।
আজ কোথাও বেরবনা বুঝলে বড়মা। আজ খালি তুমি আমি ছোটমা। খাব আর গল্প করবো। কি মজা বলো।
দেখছিস দেখছিস ছোট। ও কিরকম এখন থেকে প্ল্যান ভাঁজছে দ্যাখ।
তুমি দেখো, ওকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনেছি। খাবার নিচে খাবে না ওপরে নিয়ে আসবো ?
এই দ্যাখো, বললাম আমি নিচে যাচ্ছি। তোমরা নিচে গিয়ে টেবিলে বসো, আমি চেঞ্জ করেই চলে যাচ্ছি।
বড়মা ছোটমা দুজনেই বেরিয়ে গেল। ভাবলাম চেঞ্জকরে নিচে চলে যাই, তারপর ভাবলাম না, স্নানটা একেবারে সেরে নিই। ভাবামাত্রই আর অপেক্ষা করলাম না। বাথরুমে ঢুকে স্নান সেরে নিলাম। তারপর নিচে এলাম। দুজনে তখনো গুছিয়ে উঠতে পারে নি। বুঝলাম আরও কিছু কাজ এর মধ্যে সেরে ফেলেছে। আমি টেবিলে এসে বসলাম।
কিগো আমি মাঝখানে দুজনে দুপাশে, না মুখো মুখি।