আমি কোনদিন যাই নি আপনাদের ক্লাবে। মিত্রা নিয়ে গেলেই যাব।
যাসনি মানে! তাহলে আমাদের ক্লাবের এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজার তোর কে হয় ?
ঠিক আছে ঠিক আছে, আগামী সপ্তাহে অনিন্দিতার বার্থডে, তুই ওনাকে নিয়ে আয়।
গেলেই নিয়ে যাব।
আমি হাসলাম। সময় পেলে অবশ্যই যাব।
গেট পর্যন্ত আমি মিত্রা এগিয়ে দিলাম।
ওরা চলে গেল। দেখি একটা ট্যাক্সি থেকে হিমাংশু রেবা নামলো।
ওদরকে ভতরে নিয়ে এলাম। কবিষ্কদের সঙ্গ জমে গেল।
মনটা ঠিক নেই বার বার খচ খচ করছে।
একে একে নিমন্ত্রিত যারা ছিল সবাই কম বেশি চলে গেল। এখনো কিছু আছে। তারা অফিসের লোকজন। দাদা যে এতো জনকে বলবে আশা করিনি। কাকা কাকীমা সুরো মাসি খেয়ে নিয়েছে। ওরা এই রান্না খাবে না, তার জন্য সুরো মাসি আলাদা রান্না করছে, ওরা তাই খেয়েছে। ওরা ডাক্তারদাদার বাড়িতে শুতে গেল। নীপা সব দেখিয়ে দিয়ে এলো। আমি রান্নার জায়গায় এলাম। ইসলামভাই-এগিয়ে এলো।
দারুন সার্ভিস দিলে।
জীবনে প্রথম, বিশ্বাস কর। ভয় করছিল।
কেন।
এতো যে সে লোকের বিয়ে নয়। অনির বিয়ে বলে কথা। গেস্ট কারা দেখতে হবে।
এই আবার শুরু করলে।
কিরে মামনি আমি ভুল কথা বলেছি।
একেবারে না। আমরা সব চুনপুঁটি। ও বাবু বলে কথা।
ইসি হাসছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। মাথায় রাখিস কথাটা।
তুই একটুতেই কেমন আজ রাগ করছিস। এরকম তো ছিলি না। তোর কিছু হয়েছে ?
ওর চোখের দিকে তাকালাম। মিত্রা এখন অনেক বেশি পরিণত। হয়তো ছিল। আমাকে এতদিন বুঝে নিল। এবার খোলস থেকে নিজেকে আস্তে আস্তে বার করছে।
দেখ ইসলামভাই আমার দিকে কেমনভাবে তাকিয়ে আছে, যেন আজ প্রথম দেখছে।
ঠিকি তো। তোকে আজ ও প্রথম দেখছে। ইসলামভাই হাসছে।
আমি হাসলাম।
পকেটে মোবাইলাটা ভাইব্রেট করছে। রিং অফ করে ভাইব্রেসন মুডে দিয়ে রেখেছি। বুঝছি কেউ ফোন করছে। বার করতে পারছি না। মিত্রা ধরে ফেলবে। এদিক ওদিক তাকালাম রতন ধারে কাছে নেই।
তোমার মামনিকে একটা ঠ্যাং এনে দাও বসে বসে চিবোক।
তুই কোথায় যাবি ?
বাবু বলে কথা, লোকজনদের দেখা শোনা করতে হবে না। ঠিক মতো খাচ্ছে কিনা।
মিত্রা হেসে ফেললো। আমাকে জড়িয়ে ধরে গাল ফুলিয়ে বললো, কি রাগ তোর।
দেখলে ইসলামভাই কোথায় রাগ করলাম বলো।
ইসলামভাই হাসছে।
সাগির দুটো প্লেটে করে মুরগীর ঠ্যাং এনে দিল। সবাই একটা একটা করে তুলে নিল। আমিও একটা তুলে নিয়ে হাঁটা দিলাম। ওরা সবাই ওখানে দাঁড়িয়ে রইল। মিত্রা একবার আমাকে খালি আড়চোখে দেখলো। সোজা গেটের বাইরে চলে এলাম। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে কিনা। আমি মিত্রার চোখের আড়ালে চলে এসেছি। ঠ্যাং খাওয়া মাথায়। ফোনটা পকেট থেকে বার করে দেখলাম আবিদের ফোন। রিং ব্যাক করলাম।
আবিদ ধরলো।
বল।
আমি আসার আগেই ওম গ্যারেজ করে দিয়েছে।
কজন ছিল ?
চারজন ছিল।
বসির কোথায় ?
আমার পাশে।
ও আমাকে চেনে ?
না। তোমার নাম শুনেছে। ও তোমার নম্বর জানলে ওখানেই পুঁতে দিত।
এখন কোথায় ?
বসিরের ডেরায়।
ওখানে রাখিস না। তুলে এনে তোদের ডেরায় ঢুকিয়ে দে।
ঠিক আছে।
কি বুঝলি কথা বলে।
নিপাট ছেলে পুলে বলে মনে হচ্ছে। সঙ্গে কোন মালপত্র নেই।
তাহলে!
এদের মধ্যে একজন বলছে রাজনাথের ভাইপো।
আমার নম্বর পেল কি করে ?
প্রবীরদা এসেছিল বিকেলে। ওরা তাই বলছে।
প্রবীরদা!
হ্যাঁ।
শোন তুই এখুনি চলে আয় ওদের রেখে। তুই এলে খেতে বসবো। চারদিকটা বেঁধে আসিস।
আচ্ছা।
সঙ্গে সঙ্গে তিনটে ফোন করলাম। অরিত্র অর্ককে ম্যাসেজ করে বললাম সজাগ থাকবি।
ভেতরে চলে এলাম। দেখলাম মিত্রা গেটের মুখে একলা। আমাকে দেখেই এগিয়ে এলো।
প্লিজ বুবুন তুই বল কি হয়েছে। ফোনটা আসার পর থেকে দেখছি তুই তোর মধ্যে নেই। আজ এই আনন্দের দিনে কেন তুই ঝামেলা করছিস। আমার একটুও ভাল লাগছে না।
তোর কি আমাকে দেখে তাই মনে হচ্ছে।
তাহলে তুই আমাকে লুকচ্ছিস কেন।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে।
চিকনা সব শুনেছে। ওকে জিজ্ঞাসা করলেই পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে। কি সব বিচ্চু তৈরি করেছিস সকলকে। আমি ইসলামভাইকে গিয়ে এখুনি বলবো।
কি হবে। একটা কেওশ হবে, তুই সেটা চাস।
তাহলে বলছিস না কেন।
সারারাত পরে আছে। আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি।
কোন খারপ খবর।
ভালো খবর থাকলে আমাকে উতলা দেখায়।
গলা নামিয়ে বললাম।
একমাত্র তুই ধরতে পেরেছিস। আর কেউ ধরতে পারে নি।
কনিষ্ক কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে।
ও বহুত শেয়ানা ছেলে।
শেয়ানা মানে। আমি এতদিন তোর পাশে শুয়ে যা বুঝতে পারি না ও বুঝে যায়।
মিত্রার গালটা ধরে একটু নেড়ে দিলাম।
এই যে স্যার আমরা এসে গেছি।
পেছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম মুখার্জীদা তার গ্যাং।
অর্ক অরিত্ররা ছুটে এলো। আমার দিকে তাকিয়ে একবার সিগন্যাল করলো পেয়েছি।
আবার হৈ হৈ শুরু হয়ে গেল। সবাই আজ সাধারণ পোষাকে। কিন্তু দেখে বোঝা যাচ্ছে কোমরে সাঁটান আছে সবকটার, দলে প্রায় পনেরো জন।
আমাদের হৈ হৈ শুনে বিধানদা, অনিমেষদা, অনুপদা, রূপায়ণদা বাইরে বেরিয়ে এলেন। সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় হলো।
ওরা চারটে বড়ো বড়ো ফুলের বুকে নিয়ে এসেছে। আর একটা ব্যাগ। সবাই এখন বাগানে। আমি আলাপ করিয়ে দিলাম মিত্রার সঙ্গে। ওরা ফুলের বুকে গুলো মিত্রার হাতে দিল। ব্যাগটা আমার হাতে দিল।
এটা কি মুখার্জীবাবু।
আপনার এনজিওর জন্য আগাম ডোনেসন। আমার ছেলেপুলেদের আপনার এনজিওর ব্যাপারে সব বলেছি, ওরা বলেছে, অনিবাবু ভালো কাজ করছেন, আমাদের যদি সাহায্য লাগে আমরা সাহায্য করবো। পারলে সপ্তাহে একদিন ফ্রি সার্ভিস দেব।
অনুপ, মুখার্জীবাবুর কথা শুনলে। ডোনেসন চলে এলো। তোমার বাড়ি এখনো ঠিক হলো না। অনিমেষদা বললেন।
হয়েগেছে। ঝামেলাটা শেষ হলেই অনিকে নিয়ে যাব। দামিনীমাসিকে দেখিয়েছি। ওনার পছন্দ।
তাহলে আমার দেখার কি আছে। কাজ তো ওরা করবে। আমি খালি জোগাড় যন্ত্র করে দেব।
সে বললে হয় বাবা, খালি গা বাঁচিয়ে চললে চলবে।
একচোট হাঁসা হাঁসি হলো।
মুখার্জীবাবু তার দল বল অনুরোধ করলো দামিনীমাসিকে দেখবে কথা বলবে। ওদের অনুরোধ রাখলাম। মিত্রা সমস্ত ব্যাপারটা সামলালো।
সন্দীপ এলো ওর বউকে নিয়ে, সেতো মিত্রার সামনে কিছুতেই দাঁড়িয়ে কথা বলবে না। মিত্রা আমার স্ত্রী নয় ওর মালকিন। শেষমেষ দাদা এসে রফা করলো।
বেশ হাসা হাসি হলো।
ওরা সবাই বেশ হৈ হৈ করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়া দাওয়া করলেন। তারপর একে একে সবাই বিদায় নিলেন। আমি মিত্রা মাঝে মাঝে গেট পর্যন্ত যাই আর এগিয়ে দিই।
এখন লনটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা। চারিদিকে আলোর রোশনাই। বসার ঘরে এলাম।
সবাই গা এলিয়ে দিয়েছে। বৌদি অনিমেষদা পাশাপাশি বসে গল্প করছে।
আর একদিকে বিধানদা, অনুপদা, রূপায়ণদা, নিরঞ্জনদা।
এইযে ড্যাবা ডেবী, বাইরের দিকে কোথায় যাওয়া হয়েছিল। অনিমেষদা বললেন।
আমি হাসলাম।
অনিমেষদা হাসছে।
ফটোটা দেখেছিস।
দারুণ গিফ্ট। আমার জীবনের সেরা।
আমি গিয়ে অনিমেষদা বৌদির মাঝখানে বসলাম।
দেখলে দেখলে ছেলের কান্ড। উনি আর কোথাও জায়গা পেলেন না। বৌদি বলে উঠলো।
তোমরা তো কিছু খাও নি। খিদে পায় নি ?
বুঝেছি তোর খিদে লেগেছে। ও ছোট দেখ তোর পোলা কি বলে। বৌদি চেঁচিয়ে উঠলো।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে একবার মুখ বার করলো।
দেখ বেচারার মুখটা খিদেয় একেবারে আমসি হয়েগেছে।
অনিমেষদার দিকে তাকালাম।
ব্যাগটা নিয়ে গেছিলে সেদিন।
ঠিক মনে করিয়েছিস। তুই কতো দিয়েছিলি।
জানিনা। মিত্রাকে বলেছিলাম, তোমাকে ব্যাগটা দিতে।
গুনিস নি।
না।
অনেক বেশি ছিল।
ফেরত দাও।
দিয়েগেছি, তোকে মিত্রা বলে নি ?
মিত্রা আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
কিরে তুই বলিস নি ? অনিমেষদা বললো।
তুই সব বলিস।
দেখলে দেখলে বৌদি।
বেশ করেছে, তোর বেশি আছে একটু যাওয়া ভাল।
না গো কাজের জন্য সুজিতদা ওটা দিয়েছে।
মিত্রা হাসছে।
আমি ওকে বলেছিলাম, অনিমেষদারটা দিয়ে বাকিটা তুই রেখে দিস।
দেখলাম অনুপদার ফোনটা বেজে উঠলো অনুপদা উঠে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো। তারপর বিধানদাকে বাইরে ডেকে নিল। মুখটা গম্ভীর।
ছোটমা একটা প্লেটে করে মিষ্টি নিয়ে এসে আমার মুখে একটা দিল একটা মিত্রার মুখে দিল।
এখন মিষ্টি খাওয়াচ্ছিস খেতে দিবিনা ? বৌদি বললো।
তুমি একটা খাও।
বৌদি হাঁ করলো। ছোটমা মুখে দিয়ে দিল।
দাদা আপনি একটা তুলে নিন।
নাগো অনেক মিষ্টি খেয়ে ফেলেছি, আর না।
ছোটমা নিরঞ্জনদাকে দিল, রূপায়নদাকে দিল।
ছোটমা অনিমেষদার দিকে তাকাল।
দাদা, বিধানদা অনুপ গেলো কোথায়।
বাইরে।
যাসনি মানে! তাহলে আমাদের ক্লাবের এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজার তোর কে হয় ?
ঠিক আছে ঠিক আছে, আগামী সপ্তাহে অনিন্দিতার বার্থডে, তুই ওনাকে নিয়ে আয়।
গেলেই নিয়ে যাব।
আমি হাসলাম। সময় পেলে অবশ্যই যাব।
গেট পর্যন্ত আমি মিত্রা এগিয়ে দিলাম।
ওরা চলে গেল। দেখি একটা ট্যাক্সি থেকে হিমাংশু রেবা নামলো।
ওদরকে ভতরে নিয়ে এলাম। কবিষ্কদের সঙ্গ জমে গেল।
মনটা ঠিক নেই বার বার খচ খচ করছে।
একে একে নিমন্ত্রিত যারা ছিল সবাই কম বেশি চলে গেল। এখনো কিছু আছে। তারা অফিসের লোকজন। দাদা যে এতো জনকে বলবে আশা করিনি। কাকা কাকীমা সুরো মাসি খেয়ে নিয়েছে। ওরা এই রান্না খাবে না, তার জন্য সুরো মাসি আলাদা রান্না করছে, ওরা তাই খেয়েছে। ওরা ডাক্তারদাদার বাড়িতে শুতে গেল। নীপা সব দেখিয়ে দিয়ে এলো। আমি রান্নার জায়গায় এলাম। ইসলামভাই-এগিয়ে এলো।
দারুন সার্ভিস দিলে।
জীবনে প্রথম, বিশ্বাস কর। ভয় করছিল।
কেন।
এতো যে সে লোকের বিয়ে নয়। অনির বিয়ে বলে কথা। গেস্ট কারা দেখতে হবে।
এই আবার শুরু করলে।
কিরে মামনি আমি ভুল কথা বলেছি।
একেবারে না। আমরা সব চুনপুঁটি। ও বাবু বলে কথা।
ইসি হাসছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম। মাথায় রাখিস কথাটা।
তুই একটুতেই কেমন আজ রাগ করছিস। এরকম তো ছিলি না। তোর কিছু হয়েছে ?
ওর চোখের দিকে তাকালাম। মিত্রা এখন অনেক বেশি পরিণত। হয়তো ছিল। আমাকে এতদিন বুঝে নিল। এবার খোলস থেকে নিজেকে আস্তে আস্তে বার করছে।
দেখ ইসলামভাই আমার দিকে কেমনভাবে তাকিয়ে আছে, যেন আজ প্রথম দেখছে।
ঠিকি তো। তোকে আজ ও প্রথম দেখছে। ইসলামভাই হাসছে।
আমি হাসলাম।
পকেটে মোবাইলাটা ভাইব্রেট করছে। রিং অফ করে ভাইব্রেসন মুডে দিয়ে রেখেছি। বুঝছি কেউ ফোন করছে। বার করতে পারছি না। মিত্রা ধরে ফেলবে। এদিক ওদিক তাকালাম রতন ধারে কাছে নেই।
তোমার মামনিকে একটা ঠ্যাং এনে দাও বসে বসে চিবোক।
তুই কোথায় যাবি ?
বাবু বলে কথা, লোকজনদের দেখা শোনা করতে হবে না। ঠিক মতো খাচ্ছে কিনা।
মিত্রা হেসে ফেললো। আমাকে জড়িয়ে ধরে গাল ফুলিয়ে বললো, কি রাগ তোর।
দেখলে ইসলামভাই কোথায় রাগ করলাম বলো।
ইসলামভাই হাসছে।
সাগির দুটো প্লেটে করে মুরগীর ঠ্যাং এনে দিল। সবাই একটা একটা করে তুলে নিল। আমিও একটা তুলে নিয়ে হাঁটা দিলাম। ওরা সবাই ওখানে দাঁড়িয়ে রইল। মিত্রা একবার আমাকে খালি আড়চোখে দেখলো। সোজা গেটের বাইরে চলে এলাম। এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম কেউ দেখছে কিনা। আমি মিত্রার চোখের আড়ালে চলে এসেছি। ঠ্যাং খাওয়া মাথায়। ফোনটা পকেট থেকে বার করে দেখলাম আবিদের ফোন। রিং ব্যাক করলাম।
আবিদ ধরলো।
বল।
আমি আসার আগেই ওম গ্যারেজ করে দিয়েছে।
কজন ছিল ?
চারজন ছিল।
বসির কোথায় ?
আমার পাশে।
ও আমাকে চেনে ?
না। তোমার নাম শুনেছে। ও তোমার নম্বর জানলে ওখানেই পুঁতে দিত।
এখন কোথায় ?
বসিরের ডেরায়।
ওখানে রাখিস না। তুলে এনে তোদের ডেরায় ঢুকিয়ে দে।
ঠিক আছে।
কি বুঝলি কথা বলে।
নিপাট ছেলে পুলে বলে মনে হচ্ছে। সঙ্গে কোন মালপত্র নেই।
তাহলে!
এদের মধ্যে একজন বলছে রাজনাথের ভাইপো।
আমার নম্বর পেল কি করে ?
প্রবীরদা এসেছিল বিকেলে। ওরা তাই বলছে।
প্রবীরদা!
হ্যাঁ।
শোন তুই এখুনি চলে আয় ওদের রেখে। তুই এলে খেতে বসবো। চারদিকটা বেঁধে আসিস।
আচ্ছা।
সঙ্গে সঙ্গে তিনটে ফোন করলাম। অরিত্র অর্ককে ম্যাসেজ করে বললাম সজাগ থাকবি।
ভেতরে চলে এলাম। দেখলাম মিত্রা গেটের মুখে একলা। আমাকে দেখেই এগিয়ে এলো।
প্লিজ বুবুন তুই বল কি হয়েছে। ফোনটা আসার পর থেকে দেখছি তুই তোর মধ্যে নেই। আজ এই আনন্দের দিনে কেন তুই ঝামেলা করছিস। আমার একটুও ভাল লাগছে না।
তোর কি আমাকে দেখে তাই মনে হচ্ছে।
তাহলে তুই আমাকে লুকচ্ছিস কেন।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে।
চিকনা সব শুনেছে। ওকে জিজ্ঞাসা করলেই পিছলে বেরিয়ে যাচ্ছে। কি সব বিচ্চু তৈরি করেছিস সকলকে। আমি ইসলামভাইকে গিয়ে এখুনি বলবো।
কি হবে। একটা কেওশ হবে, তুই সেটা চাস।
তাহলে বলছিস না কেন।
সারারাত পরে আছে। আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি।
কোন খারপ খবর।
ভালো খবর থাকলে আমাকে উতলা দেখায়।
গলা নামিয়ে বললাম।
একমাত্র তুই ধরতে পেরেছিস। আর কেউ ধরতে পারে নি।
কনিষ্ক কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছে।
ও বহুত শেয়ানা ছেলে।
শেয়ানা মানে। আমি এতদিন তোর পাশে শুয়ে যা বুঝতে পারি না ও বুঝে যায়।
মিত্রার গালটা ধরে একটু নেড়ে দিলাম।
এই যে স্যার আমরা এসে গেছি।
পেছন ফিরে তাকালাম। দেখলাম মুখার্জীদা তার গ্যাং।
অর্ক অরিত্ররা ছুটে এলো। আমার দিকে তাকিয়ে একবার সিগন্যাল করলো পেয়েছি।
আবার হৈ হৈ শুরু হয়ে গেল। সবাই আজ সাধারণ পোষাকে। কিন্তু দেখে বোঝা যাচ্ছে কোমরে সাঁটান আছে সবকটার, দলে প্রায় পনেরো জন।
আমাদের হৈ হৈ শুনে বিধানদা, অনিমেষদা, অনুপদা, রূপায়ণদা বাইরে বেরিয়ে এলেন। সকলের সঙ্গে কুশল বিনিময় হলো।
ওরা চারটে বড়ো বড়ো ফুলের বুকে নিয়ে এসেছে। আর একটা ব্যাগ। সবাই এখন বাগানে। আমি আলাপ করিয়ে দিলাম মিত্রার সঙ্গে। ওরা ফুলের বুকে গুলো মিত্রার হাতে দিল। ব্যাগটা আমার হাতে দিল।
এটা কি মুখার্জীবাবু।
আপনার এনজিওর জন্য আগাম ডোনেসন। আমার ছেলেপুলেদের আপনার এনজিওর ব্যাপারে সব বলেছি, ওরা বলেছে, অনিবাবু ভালো কাজ করছেন, আমাদের যদি সাহায্য লাগে আমরা সাহায্য করবো। পারলে সপ্তাহে একদিন ফ্রি সার্ভিস দেব।
অনুপ, মুখার্জীবাবুর কথা শুনলে। ডোনেসন চলে এলো। তোমার বাড়ি এখনো ঠিক হলো না। অনিমেষদা বললেন।
হয়েগেছে। ঝামেলাটা শেষ হলেই অনিকে নিয়ে যাব। দামিনীমাসিকে দেখিয়েছি। ওনার পছন্দ।
তাহলে আমার দেখার কি আছে। কাজ তো ওরা করবে। আমি খালি জোগাড় যন্ত্র করে দেব।
সে বললে হয় বাবা, খালি গা বাঁচিয়ে চললে চলবে।
একচোট হাঁসা হাঁসি হলো।
মুখার্জীবাবু তার দল বল অনুরোধ করলো দামিনীমাসিকে দেখবে কথা বলবে। ওদের অনুরোধ রাখলাম। মিত্রা সমস্ত ব্যাপারটা সামলালো।
সন্দীপ এলো ওর বউকে নিয়ে, সেতো মিত্রার সামনে কিছুতেই দাঁড়িয়ে কথা বলবে না। মিত্রা আমার স্ত্রী নয় ওর মালকিন। শেষমেষ দাদা এসে রফা করলো।
বেশ হাসা হাসি হলো।
ওরা সবাই বেশ হৈ হৈ করে তৃপ্তি সহকারে খাওয়া দাওয়া করলেন। তারপর একে একে সবাই বিদায় নিলেন। আমি মিত্রা মাঝে মাঝে গেট পর্যন্ত যাই আর এগিয়ে দিই।
এখন লনটা বেশ ফাঁকা ফাঁকা। চারিদিকে আলোর রোশনাই। বসার ঘরে এলাম।
সবাই গা এলিয়ে দিয়েছে। বৌদি অনিমেষদা পাশাপাশি বসে গল্প করছে।
আর একদিকে বিধানদা, অনুপদা, রূপায়ণদা, নিরঞ্জনদা।
এইযে ড্যাবা ডেবী, বাইরের দিকে কোথায় যাওয়া হয়েছিল। অনিমেষদা বললেন।
আমি হাসলাম।
অনিমেষদা হাসছে।
ফটোটা দেখেছিস।
দারুণ গিফ্ট। আমার জীবনের সেরা।
আমি গিয়ে অনিমেষদা বৌদির মাঝখানে বসলাম।
দেখলে দেখলে ছেলের কান্ড। উনি আর কোথাও জায়গা পেলেন না। বৌদি বলে উঠলো।
তোমরা তো কিছু খাও নি। খিদে পায় নি ?
বুঝেছি তোর খিদে লেগেছে। ও ছোট দেখ তোর পোলা কি বলে। বৌদি চেঁচিয়ে উঠলো।
মিত্রা খিল খিল করে হেসে উঠলো।
ছোটমা রান্নাঘর থেকে একবার মুখ বার করলো।
দেখ বেচারার মুখটা খিদেয় একেবারে আমসি হয়েগেছে।
অনিমেষদার দিকে তাকালাম।
ব্যাগটা নিয়ে গেছিলে সেদিন।
ঠিক মনে করিয়েছিস। তুই কতো দিয়েছিলি।
জানিনা। মিত্রাকে বলেছিলাম, তোমাকে ব্যাগটা দিতে।
গুনিস নি।
না।
অনেক বেশি ছিল।
ফেরত দাও।
দিয়েগেছি, তোকে মিত্রা বলে নি ?
মিত্রা আমাদের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
কিরে তুই বলিস নি ? অনিমেষদা বললো।
তুই সব বলিস।
দেখলে দেখলে বৌদি।
বেশ করেছে, তোর বেশি আছে একটু যাওয়া ভাল।
না গো কাজের জন্য সুজিতদা ওটা দিয়েছে।
মিত্রা হাসছে।
আমি ওকে বলেছিলাম, অনিমেষদারটা দিয়ে বাকিটা তুই রেখে দিস।
দেখলাম অনুপদার ফোনটা বেজে উঠলো অনুপদা উঠে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো। তারপর বিধানদাকে বাইরে ডেকে নিল। মুখটা গম্ভীর।
ছোটমা একটা প্লেটে করে মিষ্টি নিয়ে এসে আমার মুখে একটা দিল একটা মিত্রার মুখে দিল।
এখন মিষ্টি খাওয়াচ্ছিস খেতে দিবিনা ? বৌদি বললো।
তুমি একটা খাও।
বৌদি হাঁ করলো। ছোটমা মুখে দিয়ে দিল।
দাদা আপনি একটা তুলে নিন।
নাগো অনেক মিষ্টি খেয়ে ফেলেছি, আর না।
ছোটমা নিরঞ্জনদাকে দিল, রূপায়নদাকে দিল।
ছোটমা অনিমেষদার দিকে তাকাল।
দাদা, বিধানদা অনুপ গেলো কোথায়।
বাইরে।