[HIDE]ত্রিশ পর্ব-[/HIDE][HIDE][/hide]
[HIDE]
জ্বরটা এল ভোররাতের দিকে। কাঁপুনি আর তীব্র মাথাযন্ত্রণা। সুমিত যখন ব্যাপারটা বুঝতে পারল তখন সকাল হয়ে গেছে। ওর ঘুম ভাঙতে সাধারণত আটটা-সাড়ে আটটা বেজে যায়। ওর অনেক আগেই নীলিমা ঘুম থেকে উঠে পড়ে। ফ্রেশ হয়ে স্নান সেরে নেয়। তারপর ঘরের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সুমিতকে ঘুম থেকে প্রতিদিন ওই-ই তোলে। কিন্তু সুমিতের ঘুমটা আজ নিজে থেকেই ভাঙল। দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল সময় ন’টা ছুঁই ছুঁই। একি এতবেলা হয়ে গেল, নীলিমা ওকে এখনও ঘুম থেকে তোলেনি!? অফিস যেতে তো আজ বেশ দেরী হয়ে যাবে। ও ধড়ফড় করে বিছানায় উঠে বসল। তখনই ওর দৃষ্টি পড়ল পাশে শুয়ে থাকা নীলিমার দিকে। একি নীলিমাও এত বেলা পর্যন্ত ঘুমাচ্ছে! এ তো সত্যি করেই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। ও তো এত বেলা পর্যন্ত ঘুমায় না। শরীর-টরীর খারাপ নয়তো? ওর গায়ে হাত ঠেকাতেই আশঙ্কাটা সত্যি হয়ে দাঁড়াল। গাটা জ্বরে একদম পুড়ে যাচ্ছে। প্রথমে কী করবে বুঝে উঠতে পারল না। তারপর চটপট মোবাইলটা নিয়ে ড. দেশাইকে ফোন লাগাল। ড. দেশাই ওর বাবার বন্ধু ছিলেন। এবং ওদের গৃহ চিকিৎসকও বটে। এই মুহুর্তে ওনাকে ছাড়া অন্য কারোর কথা মনে পড়ল না। কিছুক্ষণ রিং বাজার পর ড. দেশাই ফোন তুললেন।
“হ্যালো?”
“হ্যালো, দেশাই আঙ্কল, ম্যায় সুমিত বোল রহা হুঁ।”
“সুমিত!”
“আপকে দোস্ত অমিত, অমিত সেন কা বেটা।”
“হাঁ, হাঁ। ইয়াদ আয়া। বোলো, ইতনে দিনোঁ কে বাদ ইস আঙ্কলকো ইয়াদ ক্যায়সে কিয়া? আপনা তবিয়ত্ তো ঠিক হ্যায় না?”
“জ্বি আঙ্কল, মেরী তবিয়ত্ তো ঠিক হ্যায়। মগর্ নীলিমা, ইয়ানী মেরী পত্নী কো জোর বুখার হ্যায়। ঔর বো বেহোঁশ ভী হো গঈ হ্যায়। ক্যায় আপ্ আভী একবার ইঁহা আ সকতে হ্যায়?”
“জরুর। ম্যায় আভী নিকলতা হুঁ। জল্দী পহুঁচ জাউঙ্গা। তুম চিন্তা মত্ করো।”
“ম্যায় আপকো হামারী নঈ ঘর কী পতাহ্ SMS কর দেতা হুঁ। আপ জল্দী আইয়ে।“
ফোনটা কাটার সুমিত এই ফ্ল্যাটের ঠিকানাটা ড. দেশাইকে SMS করে দিল। তারপর জল আর কাপড় এনে নীলিমার মাথায় জলপটি দিতে লাগল। গায়ে ধুম জ্বর। হাত ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রায় আধঘন্টা পর ড. দেশাই এসে পৌঁছলেন। সুমিতকে প্যানিক করতে বারণ করে ধীরেসুস্থে নীলিমাকে চেক্-আপ করতে লাগলেন। সত্যি করেই ওর গায়ে বেশ জ্বর। প্রায় ১০৫°। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চেক্-আপ করার পর ড. দেশাই সুমিতকে বললেন, “সুমিত বেটা, মুঝে কুছ ঠিক নেহী লগ্ রহা হ্যায়। বুখার বহুত জ্বাদা হ্যায়। ঔর বেহোঁশ ভী হ্যায়। অ্যায়সা লগ রহা হ্যায় কী নিউমোনিয়া হো গঈ হ্যায়। লেকিন অ্যায়সে বিনা কোই জাঁচ কে বোলনা ঠিক নেহী হোগা। তুম এক কাম করো। আভী কে আভী অ্যাম্বুলেন্স কো ফোন লগাও। বেটী কো নার্সিংহোম লে যানা পড়েগা।”
“লেকিন কুছ ঔর তো নেহী হ্যায় না?”
“তুম ডরো মত্। কোই খাস বাত নেহী হ্যায়। অগর্ ইয়ে নিউমোনিয়া নিকলতি হ্যায়, তব ভী ঘাবড়ানে কী বাত্ নেহী হোগী। নার্সিংহোম মে জল্দী ইলাজ় শুরু হো জায়েগা। অব তুম জল্দী সে অ্যাম্বুলেন্স কো ফোন করো। জিতনি জল্দী উসে নার্সিংহোম মে লে যায়া জায়েগা, উতনি জল্দী সে ইলাজ শুরু হো জায়েগা।”
সুমিত আর দেরী না করে অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করে এই ঠিকানায় চলে আসতে বলল। সুমিত ফোন ছাড়ার পর ড. দেশাই জিজ্ঞাসা করলেন, “ইয়ে সব্ হুয়া ক্যায়সে?”
“দরাঅসল কাল্ নীলিমা কুছদের্ বারিষ মে ভিগী থী। সায়দ ইসলিয়ে ইয়ে সব হুয়া।“
কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাম্বুলেন্স এসে গেল। সবাই ধরাধরি করে অচৈতন্য নীলিমাকে নামালো নীচে। তারপর ওকে তোলা হল অ্যাম্বুলেন্সে। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়ার আগে ড. দেশাই বললেন, “সুমিত বেটা, অগর্ তুমারে সাথ কোই নার্সিংহোম চলতা তো আচ্ছা হোতা।” সুমিত বুঝতে পারছিল না এই অপরিচিত মুখগুলোর মাঝে কাকে অনুরোধ করবে আর কে-ই বা ওর সাথে নার্সিংহোম যেতে রাজী হবে। ঠিক সেই সময়ই ওর মুশকিল আসান হয়ে এগিয়ে এলেন মি. মেহরা। উনি সুমিতকে বললেন, “তুম চিন্তা মত্ করো। ম্যায় চলতা হুঁ তুমারে সাথ।” সুমিত ওনার হাত দুটোকে ধরে বলল, “Many many thanks, Mr. Mehra.” মি. মেহরা বললেন, “ইয়ে সব্ বাতে বাদ মে হোগী। অব সবসে জরুরী বাত হ্যায় নীলিমা কো বেটী জল্দ সে জল্দ নার্সিংহোম লে যানা। অব জ্বাদা ওয়াক্ত জায়া মত্ করো। চলো।” তারপর নীলিমা, সুমিত, মি. মেহরা এবং ড. দেশাইকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স রওনা দিল নার্সিংহোমের দিকে।
[/HIDE]