[HIDE]সাঁইত্রিশ পর্ব-[/HIDE][HIDE][/hide][HIDE]
আজ দিন তিনেক হল সুমিত দিল্লী গেছে। সেই যে প্রথম দিন পৌঁছে ওকে ফোন করেছিল, তারপর আর ফোন করেনি। নীলিমা যতবারই ওকে ফোন করেছে, প্রতিবারই হয় সুইচড্ অফ্ আর নয়তো এনগেজড্। মাঝেমাঝে নট্ রিচেবল্। গত দু’দিনে একবারের জন্যও সুমিতের সঙ্গে ওর কথা হয়নি। সুমিতেরও দোষ নেই। ও তো আর দিল্লী বেড়াতে যায়নি বরং অফিসের কাজে গেছে। হয়তো কাজের চাপে ফোন করার সময় পায়নি। আর রাত্রিবেলা? কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ছে। নিজের মনকে প্রবোধ দিয়ে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যায় ও। ও বিশ্বাস করে সুমিত জেনেশুনে এভাবে ওকে ফোন না করে থাকবে না। কিন্তু আজ সকাল থেকেই মনটা উচাটন হয়ে আছে। কিছুই যেন ভাল লাগছে না। কোন কাজেই মন বসছে না। বারবার চোখ চলে যাচ্ছে মোবাইলটার দিকে, এই আশায় যদি একবার সুমিত ফোন করে। ওর সঙ্গে কথা বলার জন্য মনটা উতলা হয়ে উঠেছে। কিন্তু ওর আশাকে ব্যর্থ প্রমাণ করে একবারও ফোনটা বাজল না। ও নিজেও কয়েকবার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু যথারীতি হয় এনগেজড্ আর নয়তো নট্ রিচেবল্। মনটা খুব খারাপ লাগছে। হঠাৎ করে নিজেকে কেমন যেন একা বোধ হচ্ছে। যদি ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলে কিছু থাকে, তবে সেটা বলছে আজ কিছু ঘটতে চলেছে। বড় কিছু একটা। তবে সেটা ভালো নাকী খারাপ সেটা বুঝতে পারছে না। ফোনটা এল দুপুরের একটু পরে। ও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটু শুয়েছে। অন্যদিন শুলেই তন্দ্রা মত এসে যায়। কিন্তু আজকে সেসব কিচ্ছু আসছে। ও বিছানায় চুপচাপ শুয়ে ছিল। হঠাৎ ফোনে সেতারের সুর মধুর কণ্ঠে বেজে উঠল। ও ভাবল সুমিত হয়তো ফোনটা করেছে। ও তাড়াতাড়ি উঠে ফোনটা ধরতে গেল। কিন্তু মোবাইলের নীলচে স্ক্রিনে ওর পরিচিত নম্বরটার বদলে ফুটে উঠছে Private Number লেখাটা। একটা হতাশা আর ঘৃণা মিশ্রিত ভাব ফুটে উঠল ওর মনে। ও ফোনটা ধরল না। লাইনটা কেটে গেল। কয়েক মুহুর্ত পড়েই আবার বাজতে লাগল ফোনটা। এবার আর পারল না নীলিমা। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ্ করল।
“H…hello.”
“How dare you, not to take my call?” ও পাশের গলাটা যে রেগে গেছে, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
“I was late. It has been cut already.” শান্ত স্বরে জবাব দিল নীলিমা।
“Ok. Now listen. There’s good news for you.” ও পাশের গলাটা বলল।
“What good news?” জিজ্ঞাসা করল নীলিমা।
“You have finished the game properly. And you follow my every instruction passionately. So I’ve to give you a reward.”
“I don’t want any. Please leave me alone.”
“Oh, don’t worry. Surely I will. This final time you have to obey my instruction. After then I’ll never bother you. I promise.” বলল ও পাশের গলা।
“What I have to do?”
“Nothing. I know that, you like the sea very much. So today afternoon, you have to come to sea-beach to collect your reward.”
“And, what is that?”
“I know very well, you eagerly want to see me. So let it be happened. Come to sea-beach at sharp 5.30 pm and see me. This will your most precious reward of all.”
“And what’s the guaranty that you will not force me to do anything wrong.”
“I promised you earlier that, I won’t touch you. I want to see you from face to face. That’s all.”
“Ok. I’ll come. But you’ve to keep your promise. You’ll not bother me anymore.”
“I’ll obviously keep my promise. Believe me.”
“But how can I recognize you?”
“It’s not a problem. I’ll recognize you. And by the way, please wear your most favorite saree. I love to see you in saree.”
লাইনটা কেটে গেল। নীলিমা গিয়ে বিছানায় বসল। ওর কাঁদতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু কান্না পাচ্ছেনা। অন্য একটা অনুভূতি জাগছে মনের মধ্যে। এই শেষবার। তার পরেই সে মেঘনাদের ছায়া থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। না জানি মানুষটা কোন অলৌকিক শক্তিবলে নীলিমার মনের ইচ্ছাগুলোকে টের পেয়ে যায়। ও সত্যি করেই মেঘনাদকে দেখতে চায়। দাঁড়াতে চায় তার মুখোমুখি। তাকে প্রশ্ন করতে চায়, সে কেন ওর সঙ্গেই এই খেলাটা খেলল? নিজেকে বড্ড ছোট মনে হচ্ছে। সে যেন অন্য কারোর হাতের পুতুল। তার অদৃশ্য সুতোর টানে সে নেচে চলেছে। ব্যাস। আর নয়। এখানেই এর ইতি। আজকেই এই নাটকের যবনিকা পতন ঘটবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল চারটে বেজে সতেরো মিনিট। তার মানে হাতে আর এক ঘন্টা সময়। তার মধ্যে ওকে তৈরী হতে হবে। মনের সমস্ত সাহসকে সঞ্চয় করে ও উঠে দাঁড়াল।
ড্রেসিংটেবিলের আয়নায় প্রতিফলিত হওয়া নারী মূর্তিটা কে? নিজেকে প্রশ্ন করল ও। নীলিমা? নীলিমা সেন? সুমিত সেনের অর্ধাঙ্গিনী? না, আজ ও কেবলই এক নারী। নামগোত্রহীনা। যে আজ মুখোমুখি হতে চলেছে তার প্রতিপক্ষের। এমন এক প্রতিপক্ষ, যে ওর জীবনটাকে পরিণত করেছে নিছকই এক খেলায়। ওর কোন পুরষ্কার চাইনা। ওর কেবলই চাই প্রতিশোধ। চরম শাস্তি। যার পরে ও নিজের স্বামীর কাছে, পরিচিতদের কাছে, এই সমাজের কাছে মাথা তুলে বলতে পারবে, যে আমার লজ্জা, আমার সম্ভ্রম নিয়ে এভাবে খেলা করবে, তাকে আমি এইভাবেই উপযুক্ত শাস্তি দেবো। ধীরে ধীরে নিজেকে পরণের কাপড় থেকে বের করে আনল। তারপর পরে নিল ওর সবথেকে প্রিয় শাড়িটা। সেই নীল শাড়ীটা। এই শাড়ীটা ওকে সুমিত গিফ্ট দিয়েছিল। ওর সবথেকে পছন্দের শাড়ি। প্রথম যেদিন ও এই শাড়িটা পরেছিল, সেদিনই কাকতালীয়ভাবে শুরু হয়েছিল এই খেলার। আর আজ ও আবার এই শাড়ীটাই পরেছে। কারণ ও চায় আজকেই এই খেলার শেষ হোক। তৈরী হবার পর ও আরেকবার সুমিতকে ফোন করার চেষ্টা করল। কিন্তু বারবার সুইচড্ অফ্ বলছে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। না, এখন দূর্বলতার সময় নয়। শেষ মুহুর্তে এভাবে হেরে গেলে চলবে না। ওকে মেঘনাদের মুখোমুখি হতেই হবে। ওর নিজের জন্য। ওর সুমিতের জন্য। ওদের দুজনের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য। যাওয়ার আগে ও শেষবার নিজেকে আয়নায় দেখল। হ্যাঁ, ও তৈরী। মোবাইলটা হাতে তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়ার জন্য তৈরী হল। তবে তার আগে আর একটা জিনিস ও নিজের সাথে নিয়ে নিল। ওটার আজকে দরকার লাগবে। রান্নাঘর থেকে তরকারী কাটার ধারালো ছুরিটা শাড়ীর আঁচলের ভাঁজে লুকিয়ে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে পড়ল নীলিমা। মেঘনাদের খোঁজে। [/HIDE]
আজ দিন তিনেক হল সুমিত দিল্লী গেছে। সেই যে প্রথম দিন পৌঁছে ওকে ফোন করেছিল, তারপর আর ফোন করেনি। নীলিমা যতবারই ওকে ফোন করেছে, প্রতিবারই হয় সুইচড্ অফ্ আর নয়তো এনগেজড্। মাঝেমাঝে নট্ রিচেবল্। গত দু’দিনে একবারের জন্যও সুমিতের সঙ্গে ওর কথা হয়নি। সুমিতেরও দোষ নেই। ও তো আর দিল্লী বেড়াতে যায়নি বরং অফিসের কাজে গেছে। হয়তো কাজের চাপে ফোন করার সময় পায়নি। আর রাত্রিবেলা? কাজের চাপে ক্লান্ত হয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ছে। নিজের মনকে প্রবোধ দিয়ে শান্ত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে যায় ও। ও বিশ্বাস করে সুমিত জেনেশুনে এভাবে ওকে ফোন না করে থাকবে না। কিন্তু আজ সকাল থেকেই মনটা উচাটন হয়ে আছে। কিছুই যেন ভাল লাগছে না। কোন কাজেই মন বসছে না। বারবার চোখ চলে যাচ্ছে মোবাইলটার দিকে, এই আশায় যদি একবার সুমিত ফোন করে। ওর সঙ্গে কথা বলার জন্য মনটা উতলা হয়ে উঠেছে। কিন্তু ওর আশাকে ব্যর্থ প্রমাণ করে একবারও ফোনটা বাজল না। ও নিজেও কয়েকবার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু যথারীতি হয় এনগেজড্ আর নয়তো নট্ রিচেবল্। মনটা খুব খারাপ লাগছে। হঠাৎ করে নিজেকে কেমন যেন একা বোধ হচ্ছে। যদি ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলে কিছু থাকে, তবে সেটা বলছে আজ কিছু ঘটতে চলেছে। বড় কিছু একটা। তবে সেটা ভালো নাকী খারাপ সেটা বুঝতে পারছে না। ফোনটা এল দুপুরের একটু পরে। ও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটু শুয়েছে। অন্যদিন শুলেই তন্দ্রা মত এসে যায়। কিন্তু আজকে সেসব কিচ্ছু আসছে। ও বিছানায় চুপচাপ শুয়ে ছিল। হঠাৎ ফোনে সেতারের সুর মধুর কণ্ঠে বেজে উঠল। ও ভাবল সুমিত হয়তো ফোনটা করেছে। ও তাড়াতাড়ি উঠে ফোনটা ধরতে গেল। কিন্তু মোবাইলের নীলচে স্ক্রিনে ওর পরিচিত নম্বরটার বদলে ফুটে উঠছে Private Number লেখাটা। একটা হতাশা আর ঘৃণা মিশ্রিত ভাব ফুটে উঠল ওর মনে। ও ফোনটা ধরল না। লাইনটা কেটে গেল। কয়েক মুহুর্ত পড়েই আবার বাজতে লাগল ফোনটা। এবার আর পারল না নীলিমা। কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা রিসিভ্ করল।
“H…hello.”
“How dare you, not to take my call?” ও পাশের গলাটা যে রেগে গেছে, তা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
“I was late. It has been cut already.” শান্ত স্বরে জবাব দিল নীলিমা।
“Ok. Now listen. There’s good news for you.” ও পাশের গলাটা বলল।
“What good news?” জিজ্ঞাসা করল নীলিমা।
“You have finished the game properly. And you follow my every instruction passionately. So I’ve to give you a reward.”
“I don’t want any. Please leave me alone.”
“Oh, don’t worry. Surely I will. This final time you have to obey my instruction. After then I’ll never bother you. I promise.” বলল ও পাশের গলা।
“What I have to do?”
“Nothing. I know that, you like the sea very much. So today afternoon, you have to come to sea-beach to collect your reward.”
“And, what is that?”
“I know very well, you eagerly want to see me. So let it be happened. Come to sea-beach at sharp 5.30 pm and see me. This will your most precious reward of all.”
“And what’s the guaranty that you will not force me to do anything wrong.”
“I promised you earlier that, I won’t touch you. I want to see you from face to face. That’s all.”
“Ok. I’ll come. But you’ve to keep your promise. You’ll not bother me anymore.”
“I’ll obviously keep my promise. Believe me.”
“But how can I recognize you?”
“It’s not a problem. I’ll recognize you. And by the way, please wear your most favorite saree. I love to see you in saree.”
লাইনটা কেটে গেল। নীলিমা গিয়ে বিছানায় বসল। ওর কাঁদতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু কান্না পাচ্ছেনা। অন্য একটা অনুভূতি জাগছে মনের মধ্যে। এই শেষবার। তার পরেই সে মেঘনাদের ছায়া থেকে মুক্ত হয়ে যাবে। না জানি মানুষটা কোন অলৌকিক শক্তিবলে নীলিমার মনের ইচ্ছাগুলোকে টের পেয়ে যায়। ও সত্যি করেই মেঘনাদকে দেখতে চায়। দাঁড়াতে চায় তার মুখোমুখি। তাকে প্রশ্ন করতে চায়, সে কেন ওর সঙ্গেই এই খেলাটা খেলল? নিজেকে বড্ড ছোট মনে হচ্ছে। সে যেন অন্য কারোর হাতের পুতুল। তার অদৃশ্য সুতোর টানে সে নেচে চলেছে। ব্যাস। আর নয়। এখানেই এর ইতি। আজকেই এই নাটকের যবনিকা পতন ঘটবে। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল চারটে বেজে সতেরো মিনিট। তার মানে হাতে আর এক ঘন্টা সময়। তার মধ্যে ওকে তৈরী হতে হবে। মনের সমস্ত সাহসকে সঞ্চয় করে ও উঠে দাঁড়াল।
ড্রেসিংটেবিলের আয়নায় প্রতিফলিত হওয়া নারী মূর্তিটা কে? নিজেকে প্রশ্ন করল ও। নীলিমা? নীলিমা সেন? সুমিত সেনের অর্ধাঙ্গিনী? না, আজ ও কেবলই এক নারী। নামগোত্রহীনা। যে আজ মুখোমুখি হতে চলেছে তার প্রতিপক্ষের। এমন এক প্রতিপক্ষ, যে ওর জীবনটাকে পরিণত করেছে নিছকই এক খেলায়। ওর কোন পুরষ্কার চাইনা। ওর কেবলই চাই প্রতিশোধ। চরম শাস্তি। যার পরে ও নিজের স্বামীর কাছে, পরিচিতদের কাছে, এই সমাজের কাছে মাথা তুলে বলতে পারবে, যে আমার লজ্জা, আমার সম্ভ্রম নিয়ে এভাবে খেলা করবে, তাকে আমি এইভাবেই উপযুক্ত শাস্তি দেবো। ধীরে ধীরে নিজেকে পরণের কাপড় থেকে বের করে আনল। তারপর পরে নিল ওর সবথেকে প্রিয় শাড়িটা। সেই নীল শাড়ীটা। এই শাড়ীটা ওকে সুমিত গিফ্ট দিয়েছিল। ওর সবথেকে পছন্দের শাড়ি। প্রথম যেদিন ও এই শাড়িটা পরেছিল, সেদিনই কাকতালীয়ভাবে শুরু হয়েছিল এই খেলার। আর আজ ও আবার এই শাড়ীটাই পরেছে। কারণ ও চায় আজকেই এই খেলার শেষ হোক। তৈরী হবার পর ও আরেকবার সুমিতকে ফোন করার চেষ্টা করল। কিন্তু বারবার সুইচড্ অফ্ বলছে। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। না, এখন দূর্বলতার সময় নয়। শেষ মুহুর্তে এভাবে হেরে গেলে চলবে না। ওকে মেঘনাদের মুখোমুখি হতেই হবে। ওর নিজের জন্য। ওর সুমিতের জন্য। ওদের দুজনের সুরক্ষিত ভবিষ্যতের জন্য। যাওয়ার আগে ও শেষবার নিজেকে আয়নায় দেখল। হ্যাঁ, ও তৈরী। মোবাইলটা হাতে তুলে নিয়ে বেরিয়ে পড়ার জন্য তৈরী হল। তবে তার আগে আর একটা জিনিস ও নিজের সাথে নিয়ে নিল। ওটার আজকে দরকার লাগবে। রান্নাঘর থেকে তরকারী কাটার ধারালো ছুরিটা শাড়ীর আঁচলের ভাঁজে লুকিয়ে নিয়ে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে পড়ল নীলিমা। মেঘনাদের খোঁজে। [/HIDE]