[HIDE]একাদশ পর্ব-[/HIDE][HIDE][/hide][HIDE][/hide]
[HIDE]
অফিসে এসেও শান্তি নেই। চেয়ারে বসতে না বসতেই পিয়ন মনীশ এসে খবর দিল বস্ তাকে ডাকছে। খবরটা শুনেই বুকের মধ্যে হৃৎকম্প শুরু হয়ে গেল রাহুলের। কাজের শুরুতেই যদি বসের বকুনি খেতে হয় তবে সারাদিনটাই নষ্ট। কি জানি কী ভুল করেছি। ভাবতে ভাবতে বসের কেবিনের সামনে এসে দাঁড়াল। দরজায় টোকা দিয়ে বলল, “May I come in, sir?” ভিতর থেকে উত্তর এল, “Yes, come in.” দুরু দুরু বক্ষে দরজা ঠেলে কেবিনে ঢুকল ও। দেখল বস্ মনোযোগ দিয়ে একটা ফাইল দেখছেন। ওর দিকে না তাকিয়েই বললেন, “Sit down.” ভয়ে ভয়ে সামনের চেয়ারে বসল রাহুল।
বস্ একমনে ফাইলটা পড়ে যাচ্ছেন আর সামনে জবুথবু হয়ে বসে আছে ও। এমন সময় না চাইতেও ওর চোখটা আবার চলে গেল বসের টেবিলে রাখা ছবিটার দিকে। মনের সঙ্গে যুদ্ধ করে চোখটা অন্যদিকে ঘোরাল। কিন্তু ছবিটা চুম্বকের মত ওর মনকে টানছে। তাই চোখটা নিজের অজান্তেই চলে গেল ছবিটার দিকে। ফুসফুস নিংড়ে দীর্ঘশ্বাস পড়তে চাইল। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলাল ও। ভগবানের অশেষ দয়া। ভাগ্যিস বসের খেয়াল নেই। নাহলে আজই বসের সুন্দরী স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে থাকার অপরাধে হয়তো গলাধাক্কা খেতে হত। ঠিক তখনই বস্ ফাইল থেকে মুখ তুলে ওর দিকে তাকালো। চমকে উঠে বসের দিকে চাইল রাহুল।
- “Are you fine, Mr. Rahul?”
- “Yes…yes sir, I’m fine.”
- “Good. শুনুন যে কারণে আপনাকে ডাকলাম।“ রাহুলের হৃৎস্পন্দন কয়েকশো গুণ বাড়িয়ে দিয়ে মোক্ষম সময়ে কথা থামালেন বস্।
কয়েক মুহুর্ত ওর টেনশনটাকে উপভোগ করার পর বস্ আবার বলতে শুরু করলেন, “গত কয়েক মাসে মুম্বাই ব্রাঞ্চে জয়েন করার পর থেকে আপনি সেলসের কাজগুলো দেখছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য করে দেখছিলাম কাজে আপনার বিস্তর ভুল। এভাবে তো চলতে পারে না।“ আবার এক নাটকীয় পজ্। অসহ্য টেনশনে নিজেকে পাগল মনে হচ্ছে রাহুলের। অল্পক্ষণ চুপ থেকে আবার কথা শুরু হল। সেইজন্য কয়েকদিন আগে আমাদের কলকাতা ব্রাঞ্চে ফোন করছিলাম। ওরা জানাল সেলসে আপনি উইক হলেও ইংরাজীতে আপনি খুব স্ট্রং।“ সত্যিই মাত্র উচ্চমাধ্যমিক পাশ হলেও ইংরেজীতে দারুন পোক্ত রাহুল। “তাই আজ থেকে আর আপনাকে সেলসের কাজ করতে হবে না। ওটা অনীতা সামলে নেবে। আপনি বরং লেখালেখির দিকে চলে যান। এই ক্লায়েন্টদের চিঠি তৈরী করা, চিঠির উত্তর তৈরী, অ্যানুয়াল রিপোর্ট তৈরী ইত্যাদী। হালকা কাজ। আপনার অসুবিধা হবে না। তা হলেও কিছু প্রবলেম হলে আমাকে জানাবেন।“ রাহুল কোন উত্তর দিলনা। কেবল ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ জানাল।
- “Good. তাহলে যান। মনীশ আপনাকে কিছু ফাইল দিয়ে আসবে। ওগুলো পড়ে রেডি করে একটা অ্যানুয়াল রিপোর্ট তৈরী করে আমাকে সাবমিট করবেন।“
কথা বলা শেষ করে বস্ আবার ফাইলে মন দিলেন। রাহুল কেবলমাত্র “Thanks” জানিয়ে বসের কেবিন থেকে বেরিয়ে এল। এই প্রথম ও বসের কাছ থেকে বকুনি না খেয়ে বের হল। চেয়ারে বসে একঢোঁকে পুরো জলের গ্লাসটা শেষ করে দম নিল ও। মনটা ভাল হয়ে গেল। সত্যিই আজ কার মুখ দেখে উঠেছিল কে জানে। নাকি বসের টেবিলে রাখা ছবিটার কারণেই এই অকস্মাৎ ভাগ্যবদল? ভাবনার অতলে তলিয়ে গেল রাহুল।
[/HIDE]