আমাদের দেশে আসা ভ্যাকসিন সম্পর্কে আগের মন্তব্যে কিছু বলেছি...
সংক্রামক রোগের টিকা উদ্ভাবন, পরীক্ষা ও উৎপাদনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাধারণত কয়েক বছর লেগে যায়। আবার সবসময় সব উদ্যোগ সফলতা পায় না়। গবেষণা থেকে সরবরাহ - একটা কার্যকর টিকা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সচরাচর সময় লাগে ৫ থেকে ১০ বছর। সেটা এখন করার চেষ্টা হচ্ছে কয়েক মাসের মধ্যে। এরই মাঝে উৎপাদনের কাজও তড়িৎ গতিতে চালানো হচ্ছে। বিনিয়োগকারী এবং ওষুধ প্রস্তুতকারকরা কার্যকর একটা টিকা তৈরি করতে কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থ খরচের বিশাল ঝুঁকি নিয়েছে...
গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং ওষুধ প্রস্তুতকারকরা করোনাভাইরাসের একটা সফল টিকার উদ্ভাবন, পরীক্ষা এবং উৎপাদনের জন্য এখন তাই নতুন করে একটা বাস্তব সময়সূচি তৈরি করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সারা বিশ্বে এই সফল টিকার সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য নজিরবিহীন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তবে উদ্বেগ বাড়ছে যে করোনার ঝুঁকিতে থাকা দরিদ্র দেশগুলোর প্রয়োজনকে আমলে না নিয়েই হয়ত এই প্রতিযোগিতায় এগিয়ে যাবে ধনী দেশগুলো...
বলা হচ্ছে বিজ্ঞানীরা কার্যকর টিকা উদ্ভাবনে সফল হলে এবং তার সফল উৎপাদন সম্ভব হলেও তা বিশ্বের সব মানুষকে সরবরাহের জন্য যথেষ্ট হবে না। ব্রিটেনের মেডিকেল জার্নালের এক নিবন্ধ অনুযায়ী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য ১৯৪টি দেশে করোনার দুটি টিকার জন্য ১৫০০ কোটিরও বেশি ডোজের প্রয়োজন। এই হিসেবটা করা হয়েছে কে আগে কে পরে পাবে সেই বিবেচনা না করে...
বিশ্ব জুড়ে করোনার ২৭৩টি ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চললেও মোট ১২টি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গবেষণার তৃতীয় ধাপ পার হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি ভ্যাকসিনে ৭০% থেকে ৯৫% কার্যকারিতা লক্ষ্য করা গেছে...
এর মধ্যে ছয়টি ভ্যাকসিনকে বিভিন্ন দেশের সরকার ব্যবহারের জন্য অনুমতি দিয়েছে । এগুলো হলো:
ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি টোজিনামেরান, - কার্যকারিতা ৯৫%
মডার্না কোম্পানির এমআরএনএ-১২৭৩, - কার্যকারিতা ৯৫%
চীনা কোম্পানি সিনোফার্ম ও সিনোভ্যাকের দুটি ভ্যাকসিন,
রুশ কোম্পানি গামালিয়া রিসার্চ ইন্সটিটিউটের তৈরি একটি,
এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি একটি ভ্যাকসিন, - কার্যকারিতা ৯০%...
অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকাটি 'কোভিশিল্ড' নামে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট তৈরি করছে। বাংলাদেশ ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য চুক্তি করেছে...