What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

এবড়োখেবড়ো ডেউয়ার পুষ্টিগুণ (1 Viewer)

এমন অনেক দেশি ফল আছে, যেগুলো খুব বেশি পরিচিত না হলেও যাদের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। তেমন একটি ফল ডেউয়া। গ্রামাঞ্চলে বেশ পরিচিত হলেও শহরাঞ্চলে ততটাই অপ্রচলিত ফল ডেউয়া। অঞ্চলভেদে এই ফল মানুষের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত। ঢেউয়া, ডেলোমাদার, ডেউফল, ঢেউফল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। দেখতে এবড়োখেবড়ো এবং কিছুটা কাঁঠালের মতো এ ফলের ভেতরে হলুদ রঙের কোষ থাকে। পাকলে ফলটি অতি মোলায়েম হয়। কাঁচা ফল সবুজ, পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। ভেতরের শাঁস লালচে হলুদ। কাঁচা টক টক স্বাদ। রান্না করেও খাওয়া যায়। কিন্তু পাকলে আবার অন্য স্বাদ। সেটা টকও নয়, আবার মিষ্টিও নয়। চাহিদা কমে যাওয়ায় গ্রামে এই ফলের চাষও কমে গেছে। সঙ্গে কমছে দেশীয় এই ফলের কদর। কাঁঠাল ও ডেউয়ার পুষ্টিগুণ অনেকটা একই।

পরিচিতি

বিশাল আকৃতির ডেউয়াগাছ চিরসবুজ বৃক্ষ। পাতাগুলো বড় ও খসখসে, অনেকটা ডুমুরের পাতার মতো। একেকটি গাছ ২০-২৫ ফুট উঁচু হয়। এর কাঠ বেশ উন্নত মানের, বড় বড় জিনিসের কাঠামো তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গাছে মার্চের দিকে ফুল আসে এবং আগস্টে ফল পাকে। ডেউয়া ফলটি গোলাকৃতির, ২ থেকে ৫ ইঞ্চি চওড়া, পাকলে হলুদ রং ধারণ করে। প্রতিটি ফলের মধ্যে ২০ থেকে ৩০টি বীজ থাকে। বীজের গায়ের 'মাংসল' অংশটাই খাওয়া হয়। প্রতিটি ফল ২০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম হতে পারে। এই ফল অনেক ভেষজ গুণসম্পন্ন ও উপকারী, যা অনেকেরই অজানা।

8l1E0c9.jpg


পাকা ডেউয়া, ছবি: উইকিপিডিয়া

পুষ্টিগুণ

ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়ামের ভান্ডার বলা হয় ডেউয়া ফলকে। এ ছাড়া ডেউয়া ফলে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম ডেউয়া ফলে রয়েছে খনিজ ০.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬৬ কিলোক্যালরি, আমিষ ০.৭ গ্রাম, শর্করা ১৩.৩ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৫০ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি১ ০.০২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি২ ০.১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি ১৩৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৩৪৮.৩৩ মিলিগ্রাম।

উপকারিতা

ওজন কমাতে: অনিয়ন্ত্রিত ওজন একটি বড় সমস্যা। ঠান্ডা পানিতে ডেউয়া ফলের রস মিশিয়ে নিয়মিত পান করলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এমনকি ডেউয়া ফল রোদে শুকিয়ে নিয়ে অফ সিজনেও খাওয়া যায়।

বমিভাব দূর করতে: বমির ভাব দূর করতে ডেউয়া খান, এর টক মিষ্টি স্বাদ অচিরেই বমি বমি ভাব দূর করবে।

1xPSeZR.jpg


পাকা ডেউয়ার মাঝে ২০ থেকে ৩০টি বীজ থাকে, ছবি: উইকিপিডিয়া

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে: অনেকের ক্ষেত্রই কোষ্ঠকাঠিন্য একটি বড় সমস্যা। বিভিন্ন প্রকার খাবার খেলেও পেট পরিষ্কার হয় না। অস্বস্তিতে ভোগে। ৮ থেকে ১০ গ্রামের মতো কাঁচা ডেউয়া বেটে গরম পানিতে মিশিয়ে কিছুক্ষণ রেখে সেই পানি পান করলে পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। এটা সকালে খালি পেটে খেতে হবে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে: ডেউয়ায় থাকা ভিটামিন সি ত্বক, চুল, নখ, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা দাঁত ও হাড়ের ক্ষয়রোগ প্রতিরোধ করে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: ডেউয়াতে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্ত চলাচলে সহায়তা করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

মুখে রুচি আনতে: মুখের রুচি ফেরাতে খেতে পারেন এই ফল। ডেউয়ার রসের সঙ্গে সামান্য লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া মিশিয়ে খাওয়ার আগে খেতে হবে। এতে কয়েক দিনের মধ্যেই মুখে রুচি ফিরে আসবে।

পেটে বায়ু জমলে: পেটে বায়ু জমলে পাকা ডেউয়ার রস দেড় চামচ আধা কাপ পানিতে মিশিয়ে অল্প চিনি দিয়ে প্রতিদিন একবার করে এক সপ্তাহ খেলে সমস্যা পুরোপুরি দূর হবে।

LTudk5q.jpg


কাঁচা ডেউয়া, ছবি: উইকিপিডিয়া

ত্বকের সমস্যা দূর করে: ত্বকের রুক্ষতা দূর করতে ডেউয়াগাছের ছালের গুঁড়া অনেক উপকারী এবং এই গুঁড়া ব্রণের দূষিত পুঁজ বের করে দেয়।

সানস্ট্রোক রোধ: মরিচ, লবণ, চিনি দিয়ে ডেউয়ার ভর্তা খেলে সানস্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

ডেউয়া খেলে স্মৃতিশক্তিও বাড়ে। অত্যধিক তৃষ্ণা নিবারণে কাজ করে টকজাতীয় এই ফল। কাঁচা ডেউয়া টক, যা ক্ষুধা দূর করে। পাকা ফল ক্ষুধাবর্ধক হয়। আবার পাকা ডেউয়া পিত্ত ও যকৃতের জন্য উপকারী। যকৃতের নানা রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে ডেউয়া।

লেখক: ইসমত আরা ঈশা
 

Users who are viewing this thread

Back
Top