ঈদের রাতের খাওয়া হতে পারে তুলনামূলক ভারী। চেনা স্বাদ, গন্ধেই জমে উঠতে পারে খাবার টেবিলের গল্প। পোলাও-কাবাবের পর ঘরে তৈরি মিষ্টান্ন দিয়েই শেষ করতে পারেন রাতের ভূরিভোজ। রেসিপি দিয়েছেন দিল আফরোজ।
জাফরানি পোলাও
উপকরণ: বাসমতী চাল ১ কেজি, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, মাখন ১৫০ গ্রাম, জাফরান আধা চা-চামচ, পানি ৮ কাপ ও লবণ প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: চাল ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখুন। অল্প পানিতে জাফরান ভিজিয়ে রাখুন। পানি গরম করে তাতে মাখন, আদা ও লবণ দিয়ে দিন। তারপর চাল দিন। পানি কিছুটা শুকিয়ে এলে জাফরান ভেজানো পানি দিয়ে দিন এতে। চুলা কমিয়ে দমে রাখুন। চাল ভালো করে সেদ্ধ হয়ে এলে নামিয়ে বাদাম ও জাফরান দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
শামি কাবাব
উপকরণ: মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম, ছোলা ১ কাপ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, আদাকুচি দেড় চা-চামচ, রসুনকুচি ১ চা-চামচ, শুকনা মরিচ ৩-৪টি, এলাচি ৪টি, দারুচিনি ৩-৪টি, লবঙ্গ ৩-৪টি, তেজপাতা ১টি, জিরা ২ চা-চামচ, ডিম ২টি, চিনি ২ চা-চামচ, পুদিনাপাতার কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ২-৩টি, লবণ স্বাদমতো ও তেল ভাজার জন্য প্রয়োজনমতো।
প্রণালি: ডিম, পুদিনাপাতা, কাঁচা মরিচ ও লেবু ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে পানি দিয়ে ঢেকে চুলায় দিন। অল্প আঁচে সেদ্ধ করুন। পেঁয়াজকুচি ডুবো তেলে ভেজে উঠিয়ে রাখুন। মাংস সেদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে নিন। তেজপাতাগুলো ফেলে মেশিনে পেস্ট করে নিন। এবার মাংসে পেঁয়াজ বেরেস্তা, ডিম, কাঁচা মরিচ, পুদিনাপাতার কুচি মিশিয়ে ১০-১৫টি ভাগ করে নিন। হাতে অল্প তেল লাগিয়ে গোল কাবাব তৈরি করে নিন। তেল ভালো করে গরম করে ডুবো তেলে ভাজুন। সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
পনির বেগুন
উপকরণ: বেগুন ১টি বড়, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজবাটা ১ টেবিল চামচ, ব্রেড ক্রাম্ব ৩ টেবিল চামচ, গ্রেট করা চিজ ৩ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, তেল ৪ টেবিল চামচ, টমেটো ১টি ও লবণ পরিমাণমতো।
প্রণালি: প্রথমে বেগুন ধুয়ে গোল করে কেটে দাগ কেটে দিন। পেঁয়াজবাটা, মরিচগুঁড়া, লবণ, তেল ও ডিম একসঙ্গে মিশিয়ে দিন। এবার বেগুনের দুই পিঠেই ভালোভাবে মিশিয়ে লাগান। তেল মাখানো ট্রেতে বেগুন রেখে দিন। ওপরে চিজকুচি, টমেটো ও ব্রেড ক্রাম্ব ছড়িয়ে দিন। মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ৬ মিনিট মাইক্রোতে রান্না করুন। এরপর ৪ মিনিট গ্রিল করুন। সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
তন্দুরি মুরগি
উপকরণ: মুরগি ১টি, টক দই আধা কাপ, আদাবাটা ২ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, গরমমসলার গুঁড়া আধা চা-চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, শর্ষের তেল ৪ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ ও লেবুর রস ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: মুরগি ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। লম্বালম্বি অর্ধেক করে কেটে নিন। মুরগির গায়ে দাগ কেটে দিন। সব মসলা একসঙ্গে মিশিয়ে মুরগিতে লাগিয়ে মেখে রাখুন ১-২ ঘণ্টা। এবার মুরগি কাঠকয়লায় বা গ্রিলারে দুই পাশ গ্রিল করে নিন। সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
টমেটোয় রুপচাঁদা
উপকরণ: রুপচাঁদা মাছ বড় ১টি, টমেটো ৪টি, মরিচগুঁড়া ১ চা-চামচ, পেঁয়াজকুচি ২ টেবিল চামচ, রসুনকুচি ১ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ২-৩টি ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: রুপচাঁদা মাছ ভালো করে ধুয়ে ছুরি দিয়ে দাগ কেটে নিন। এবার ১ চা-চামচ মরিচগুঁড়া, লবণ ও অল্প পানি দিয়ে মিশিয়ে মিশ্রণটা মাছে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। অল্প তেল দিয়ে দুই পাশ ভেজে নিন। টমেটো কেটে বিচি ফেলে ব্লেন্ড করে নিন। হাঁড়িতে বাকি তেল দিয়ে প্রথমে রসুন ও পেঁয়াজকুচি দিয়ে নেড়ে দিন। তারপর কিছুক্ষণ নেড়ে টমেটো পেস্ট দিয়ে দিন। এবার লবণ, চিনি, টমেটো সস দিয়ে কিছুক্ষণ রান্না করুন। তারপর ভাজা মাছ দিয়ে লেবুর রস ও কাঁচা মরিচ দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।
কুনাফাহ
উপকরণ: লাচ্ছা সেমাই ৪০০ গ্রাম, মাখন গলানো আধা কাপ, মোজারেলা চিজ বা রিকোটা চিজ ১ কাপ, পেস্তা বাদাম ৩ টেবিল চামচ, কাঠবাদাম ১ টেবিল চামচ, পানি ৩ কাপ, চিনি দেড় কাপ, মাখন ৩ টেবিল চামচ, ডিমের কুসুম ৪টি, কর্নফ্লাওয়ার ৪ টেবিল চামচ, তরল দুধ দেড় কাপ, লবণ সামান্য, ভ্যানিলা ১ চা-চামচ, খাওয়ার রং অল্প ও মাখন ২ টেবিল চামচ (গলানো)।
প্রণালি: ডিমের কুসুমের সঙ্গে কর্নফ্লাওয়ার ভালো করে মিশিয়ে নিন। চুলায় দুধ গরম হতে দিন। দুধ হালকা গরম হলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন, এখন অল্প করে দুধ ডিমের মিশ্রণের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মেশানো হলে আবার চুলায় দিয়ে জ্বাল দিন, অনবরত নাড়ুন, ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এখন ভ্যানিলা ও ৩ টেবিল চামচ মাখনের সঙ্গে মিশিয়ে নামিয়ে ঠান্ডা করে নিন। এবার চিজ খুব ভালো করে মিশিয়ে রাখুন। ২ টেবিল চামচ গলানো মাখনের সঙ্গে খাওয়ার রং মিশিয়ে নিন। প্রথমে লাচ্ছা সেমাই হাত দিয়ে ছাড়িয়ে একটু গুঁড়া করে নিন। এই গুঁড়ার সঙ্গে আধা কাপ মাখন দিয়ে মাখিয়ে নিন। রং মিশিয়ে মিশ্রণটি প্যানে ঢেলে নিন, সম্পূর্ণ প্যানে ব্রাশ দিয়ে মাখন লাগিয়ে নিন। ১ ভাগ গুঁড়া লাচ্ছা সেমাই প্যানে বিছিয়ে দিন, হাত দিয়ে চেপে চেপে সমান করে বিছিয়ে দিন। এবার চিজ মেশানো মিশ্রণটা লাচ্ছা সেমাইয়ের ওপরে সমান করে দিয়ে দিন। এখন বাকি অর্ধেক লাচ্ছা সেমাইয়ের ওপর দিয়ে দিন। ওভেন প্রিহিট করুন, ১৭০ ডিগ্রিতে বেক করুন ৪০-৫০ মিনিট। পানির সঙ্গে দেড় কাপ চিনি মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে দেড় কাপ শিরা তৈরি করে রাখুন। ওভেন থেকে বের করে গরম অবস্থায় চিনির শিরা অল্প অল্প করে কুনাফাহর ওপরে চারদিকে ঢালুন। পরিবেশন পাত্রে কুনাফাহ নিন, ওপরে চিনির শিরা ঢেলে পেস্তা বাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন।
আম খেজুরের শরবত
উপকরণ: পাকা আম ২টি, খেজুর ৬টি, চিনি ৩ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ ও লেবুপাতা ৬টি।
প্রণালি: খেজুর বিচি ফেলে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। নরম হলে পানি ও চিনি দিয়ে সেদ্ধ করে ছেঁকে সিরাপ বানিয়ে রাখুন। আম ছিলে কেটে পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এবার গ্লাসে বরফকুচি ও লেবুপাতা দিয়ে খেজুরের সিরাপ ঢেলে দিন। লেবুর রস দিন, সবশেষে ব্লেন্ড করা আমের জুস দিন। চিনি আপনার স্বাদ অনুযায়ী কমাতে-বাড়াতে পারেন।