What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পালংশাকে জাদু আছে (1 Viewer)

rK1FaLq.jpg


আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর আগে প্রাচীন পার্সিয়ায় জন্ম হয়েছিল পালংশাকের। তথ্য সে রকমই বলছে। এরপর এটি ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন জনপদে। ৬৪৭ সালের দিকে এটি 'পার্সিয়ান সবজি' নামে ছড়িয়ে পড়ে ভারত এবং প্রাচীন চীনে নেপালের মাধ্যমে। মূলত সিল্ক রোড ধরেই ছড়িয়ে পড়ে এটি।

uUtKn0e.jpg


পালংশাকের আর এক নাম পার্সিয়ান সবজি

সেই থেকে মানুষ এটি খেয়েই চলেছে পনির দিয়ে, আলু দিয়ে, মাছ দিয়ে, মাংস দিয়ে কিংবা এমনি এমনি। আর ইদানীং পালংশাকের জুসও খাওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য। কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন, সুদীর্ঘকাল ধরে কেন পালংশাক খেয়েই চলেছে? কারণ, এর মধ্যে রয়েছে এমন কিছু গুণ, যেগুলো মানুষকে পৃথিবীতে টিকে থাকতে সাহায্য করে চলেছে।

পালংশাকের ৫টি গুণ

১. হাড় মজবুত ও গঠন: পালংশাক ভিটামিন কে–এর বড় উৎস। এই ভিটামিন অস্টিওক্যালক নামের একটি প্রোটিন উৎপাদন করে থাকে। অস্টিওক্যালক হাড়ে ক্যালসিয়ামকে স্থিতিশীল রাখে। এ ছাড়া পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন সি, আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এসবই হাড়ের গঠন ও মজবুত করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়।

২. দৃষ্টিশক্তি এবং রোগপ্রতিরোধ বাড়ানো: পালংশাকে থাকা জেক্সানথিন, লুটিন ও ক্লোরোফিল মানুষের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।

Q1UPkwl.jpg


পালংশাক ভিটামিন কে–এর বড় উৎস

৩. ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া: পালংশাকে থাকে প্রচুর ভিটামিন এ। এটি মানুষের ত্বক ও শ্লেষ্মা ঝিল্লি থেকে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ভিটামিন এ সিবাম উৎপন্ন করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সিবাম চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখে।

৪. ভিটামিন সি–এর বড় ক্ষেত্র: পালংশাকে থাকে প্রচুর ভিটামিন সি। বলা হয়ে থাকে, এটি ভিটামিন সি–এর বড় আধার। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে কী করে, তার বিস্তারিত বিবরণ মনে হয় প্রয়োজন নেই। তারপরও বলে রাখি, ভিটামিন সি মানুষের চোখের রোগ এবং কপালের বলিরেখা দূর করতে পারে, প্রসবপূর্ব সময়ে মায়েদের স্বাস্থ্যের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ভিটামিন সি কার্ডিওভাসকুলার রোগ দূর করতে সক্ষম। ভিটামিন সি-তে লুটিন থাকে। এটি ধমনির গা মোটা হওয়া ঠেকিয়ে মানুষের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।

৫. তরতাজা করে: পালংশাকে থাকে ম্যাগনেশিয়াম। এটি শরীরের শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে নিয়মিত পালংশাক খেলে তরতাজা থাকা যায়।

কয়েকটি রেসিপি

মুরগি-পালং সালাদ

UKR7wRA.jpg


কয়েকটি রেসিপি

উপকরণ:

পালংশাক ২ আঁটি (ছোট পালং হলে ভালো), কর্ন (ভুট্টার দানা) আধা কাপ, সেদ্ধ মুরগি অথবা চিকেন সসেজ আধা কাপ, আনার সিকি কাপ, জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১ চা-চামচ, চিলি ফ্লেক্স ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদমতো, তেল ১ চা-চামচ, চিনি আধা চা-চামচ।

fiPrZJP.jpg


কয়েকটি রেসিপি

প্রণালি

ডাঁটা বাদ দিয়ে পালংশাক বেছে নিয়ে ফুটন্ত পানিতে ছেড়ে দিয়ে এক মিনিট রেখে তুলে নিন। এবার বরফ পানিতে কিছুক্ষণ রেখে তুলে নিয়ে কিচেন টিস্যুতে ভালো করে মুছে হাত দিয়ে ছিঁড়ে রাখুন। কচি ভুট্টার দানা অল্প লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। মুরগি ব্যবহার করলে হাড় ছাড়ানো মুরগি ছোট টুকরা করে অল্প লবণ-হলুদ দিয়ে তেলে হালকা করে ভেজে নিন। চাইলে গ্রিল করা মুরগিও ব্যবহার করা যাবে। আর চিকেন সসেজ ব্যবহার করলে তা–ও ছোট ছোট টুকরা করে তেলে হালকা ভেজে নিন।

এবার ড্রেসিং তৈরির পালা। একটা পাত্রে অলিভ অয়েল, চিলি ফ্লেক্স, লেবুর রস, চিনি ও স্বাদমতো লবণ খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। তারপর এতে ভুট্টার দানা, মুরগি অথবা চিকেন সসেজ মিশিয়ে নিন। হালকা হাতে পালংশাক আর আনার দানা ছড়িয়ে মিলিয়ে নিলেই সালাদ তৈরি। সেদ্ধ ডিম বা খোসা ছাড়ানো কমলা ওপরে ছড়িয়ে পরিবেশন করলে দেখতে ভালো দেখাবে। সালাদ সব সময় পরিবেশনের একদম আগে তৈরি করা উচিত। নাহলে পানি ছেড়ে দিয়ে নরম হয়ে যায়। এ ছাড়া মুরগি বা সসেজের পরিবর্তে চিংড়িও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ওটস-পালং পাকোড়া

5g8OAp8.jpg


ওটস-পালং পাকোড়া

উপকরণ:

পালংশাক ১ কাপ (মিহি কুচি), ওটস ৪ টেবিল চামচ (প্রয়োজনে কমবেশি করা যেতে পারে), কর্নফ্লাওয়ার ৪ টেবিল চামচ, ডিম ১টি, চিকেন স্টকের কিউব ১টি, পেঁয়াজ ১টি (কুচি), আদা ১ চা-চামচ (কুচি), কাঁচা মরিচ ৩-৪টি (কুচি), লবণ স্বাদমতো, তেল ভাজার জন্য।

rtC5epk.jpg


ওটস-পালং পাকোড়া

প্রণালি

একটা পাত্রে সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে ঘন গোলা তৈরি করে নিন। প্যানে গরম তেলে প্রয়োজনমতো গোলা ঢেলে কম আঁচে দুই দিক সোনালি করে ভেজে নিন। পছন্দমতো সস বা চাটনির সঙ্গে গরম–গরম পরিবেশন করুন।

পালং পায়েস

Ys5aNNr.jpg


পালং পায়েস

উপকরণ:

ডাঁটা ছাড়া পালংশাক ১ কাপ, গাজর ২টি, পোলাওয়ের চাল ৩ টেবিল চামচ, তরল দুধ ১ লিটার, কনডেনসড মিল্ক ১ টিন, ঘি ২ টেবিল চামচ, এলাচিগুঁড়া চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, গোলাপজল ১ চা-চামচ, বাদাম-আমন্ড-চেরি ৮-১০টি (সাজানোর জন্য)।

প্রণালি

K7f0tvk.jpg


পালং পায়েস

পোলাওয়ের চাল ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন দুই ঘণ্টা। পালংশাক সেদ্ধ করে ব্লেন্ডারে দিয়ে পিউরি করে নিন। গাজর মিহি করে গ্রেট করে নিন। দুধ জ্বাল দিয়ে একটা বলক উঠলে পানি ঝরানো পোলাওয়ের চাল হালকা ভেঙে দুধে দিয়ে দিন। অন্য একটি পাত্রে ঘি গরম করে গাজর দিয়ে বেশি আঁচে হালকা ভেজে (গাজরের কাঁচা গন্ধটা চলে গেলেই হবে) দুধের মধ্যে দিয়ে দিন। গাজর ভাজার সেই পাত্রে অল্প ঘি দিয়ে পালং পিউরি দিয়ে হালকা ভেজে নামিয়ে নিন। দুধের মধ্যে দেওয়া চাল আর গাজর ভালোভাবে সেদ্ধ হয়ে থকথকে হয়ে এলে প্রয়োজনমতো কনডেনসড মিল্ক আর এলাচিগুঁড়া মিশিয়ে দিন। গোলাপজলটাও এ সময় মিশিয়ে দিতে হবে। চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে তারপর অল্প অল্প করে পালং পিউরি মেশান। পিউরি সবটা না-ও লাগতে পারে। হালকা সবুজ ভাব এলে পরিবেশন পাত্রে ঢেলে বাদামকুচি, লাল চেরি বা ভাজা গাজরকুচি দিয়ে সাজিয়ে ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করে তারপর পরিবেশন করুন।

সূত্র:

১. ফুড এনডিটিভি

২. উইকিপিডিয়া
 

Users who are viewing this thread

Back
Top