১৯
অধরা কদিন ধরে আমার পেছনে এমন করে লেগেছিলো কেনো, সেদিনই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম। আসলে স্কুল ম্যাগাজিনে আমার লেখা গলপোটার জন্যেই। স্রেফ একটা ভুল বুঝাবুঝি।
স্কুল ছুটির পর আমি খুব সহজভাবেই স্কুল গেইট দিয়ে বেড় হচ্ছিলাম। হঠাৎই মেয়েলী কন্ঠে একটা কবিতা কানে এলো,
রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি।
মূর্তি ভাবে আমিই দেব, হাসেন অন্তর্যামী।
আমি পেছন ফিরে তাঁকালাম। দেখলাম বড় গেইটটার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুনা। মুচকি হেসেই বললো, তাহলে অধরার সাথেই যাচ্ছো? যাও!
মুনাও কি আমাকে ভুল বুঝছে নাকি? আমি স্কুল ম্যাগাজিনে যে গলপোটা লিখেছিলাম, তাতো আমার ছোট খালাকে কল্পনা করে। মুনার দাঁতও গেঁজো। মুনরা গেঁজো দাঁতও আমার প্রচণ্ড ভালো লাগে। কিন্তু গেঁজো দাঁত নিয়ে লেখা গলপোটা মুনাকে নিয়ে লিখিনি। আমি মুনার দিকেই এগিয়ে গেলাম। মুনার কথাটা আমি মুনাকেই ফিরিয়ে দিলাম। বললাম,
হেনা ভাবে আমি দেবী, মুনা ভাবে আমি,
অধরা ভাবে আমিই দেবী, হাসে জেলে কন্যি।
মুনা আমার দিকে দু পা বাড়িয়ে বললো, জেলে কন্যি? ওটা আবার কে?
আমি বললাম, গলপোটা কোন জেলে কন্যিকে নিয়েও ছিলো না। স্রেফ কল্পনা থেকে লেখা। তবে, নিশ্চিত থাকো যে, তোমাকে নিয়েও লিখিনি।
মুনা ক্ষিপ্ত হয়েই বললো, বলো কি? আমি তো অধরাকে একটা মজা দেখানোর জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম। তুমি আমার সাথে ঠাট্টা করছো না তো?
অধরা সত্যিই খুব সাধারন পরিবার এর সাদারন মেয়ে। লেখা পড়াটাই তার পূঁজি। ক্লাশের ফার্ষ্ট গার্ল। সবার মধ্যমণি তার সুন্দর আচার ব্যবহার এর জন্যেই। মুনা রেফারীর মেয়ে, মানুষ নিয়েও সে খেলে। আমাকে নিয়েও অনেক খেলেছে। এমন কি রেখা দিদিকে নিয়েও। রেখা দিদি পরাজিত হয়েই, আমার কথা ভুলতে চলেছিলো। মুনা অধরাকে নিয়ে খেলুক, তা আমি চাই না। আমি মুচকি হেসেই বললাম, একটু ঠাট্টা করলাম। গলপোটা আসলে তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম।
মুনা খুব খুশী হয়েই বললো, আমি জানতাম, গলপোটা পড়েই বুঝেছিলাম। অথচ, বোকা মেয়ে অধরা কি খুশীটাই না হলো। তুমি দেখো, ওকে আমি কেমন মজা দেখাই।
আমি বললাম, কেমন মজা দেখাবে?
মুনা বললো, তুমি যখন বললে, গলপোটা অধরাকে নিয়ে লিখোনি, তখন অধরা খুব মন খারাপ করেছে। তুমি আবারো অধরার কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, স্যরি অধরা। গলপোটা আসলে তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম। কি পারবে না?
আমি বললাম, কেনো?
মুনা এগুতে এগুতে ওপাশের সিঁড়িটার উপর গিয়েই বসলো। বললো, দরকার আছে। মেয়েটার দেমাগ একটু বেশী। ক্লাশের ফার্ষ্ট গার্ল বলে ভেবে নিয়েছে সবার মাথা কিনে নিয়েছে। কি আছে ওর? শুনেছি বাবা নাকি মিস্ত্রী। একটা মিস্ত্রীর মেয়ের এত দেমাগ?
আমি বললাম, অধরার বাবা মিস্ত্রী হলেও, খুব ভালো মেয়ে। লেখা পড়া ছাড়া কিছু বুঝে না। জানো, মাঝে মাঝে আমারও খুব তদারকী করে। ঠিক মতো বাড়ীর কাজ করতে বলে।
মুনা চোখ গোল গোল করে বললো, তাই নাকি? তাহলে তো আরো কঠিন সমস্যা! আর দেরী করা উচিৎ হবে না। ওই যে, ওই যে অধরা যাচ্ছে। তুমি গিয়ে বলো, অধরা, গলপোটা আমি তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম। সবাই বুঝে ফেলবে বলে, দাঁতে গেঁজো আছে বলে লিখেছিলাম।
আমি বললাম, মুনা, তুমি মানুষ নিয়ে খেলতে খুব পছন্দ করো। আমি পারি না।
মুনা বললো, আহা হা, পারো না, না? পারবে পারবে! আমি যখন তোমাকে নিয়ে খেলবো, তখন ঠিকই পারবে। স্কুল ম্যাগাজিনের গলপোটা অর্ধেক ছাত্রছাত্রীদের অনুমান অধরাকে নিয়েই লেখা। বাকী অর্ধেক ছাত্রছাত্রীদের অনুমান আমাকে নিয়েই লেখা। তাহলে বুঝতে পারছো বুদ্ধু! ফলাফলটা কেমন হবে?
আমি মুনার চোখে চোখেই তাঁকালাম। বললাম, পারবো।
মুনা বললো, তাহলে যাও। এমন ভাব করবে যে, অধরা যেনো মনে করে, সত্যি সত্যিই তুমি ওকে ভালোবাসো।
অধরা কদিন ধরে আমার পেছনে এমন করে লেগেছিলো কেনো, সেদিনই প্রথম বুঝতে পেরেছিলাম। আসলে স্কুল ম্যাগাজিনে আমার লেখা গলপোটার জন্যেই। স্রেফ একটা ভুল বুঝাবুঝি।
স্কুল ছুটির পর আমি খুব সহজভাবেই স্কুল গেইট দিয়ে বেড় হচ্ছিলাম। হঠাৎই মেয়েলী কন্ঠে একটা কবিতা কানে এলো,
রথ ভাবে আমি দেব, পথ ভাবে আমি।
মূর্তি ভাবে আমিই দেব, হাসেন অন্তর্যামী।
আমি পেছন ফিরে তাঁকালাম। দেখলাম বড় গেইটটার সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুনা। মুচকি হেসেই বললো, তাহলে অধরার সাথেই যাচ্ছো? যাও!
মুনাও কি আমাকে ভুল বুঝছে নাকি? আমি স্কুল ম্যাগাজিনে যে গলপোটা লিখেছিলাম, তাতো আমার ছোট খালাকে কল্পনা করে। মুনার দাঁতও গেঁজো। মুনরা গেঁজো দাঁতও আমার প্রচণ্ড ভালো লাগে। কিন্তু গেঁজো দাঁত নিয়ে লেখা গলপোটা মুনাকে নিয়ে লিখিনি। আমি মুনার দিকেই এগিয়ে গেলাম। মুনার কথাটা আমি মুনাকেই ফিরিয়ে দিলাম। বললাম,
হেনা ভাবে আমি দেবী, মুনা ভাবে আমি,
অধরা ভাবে আমিই দেবী, হাসে জেলে কন্যি।
মুনা আমার দিকে দু পা বাড়িয়ে বললো, জেলে কন্যি? ওটা আবার কে?
আমি বললাম, গলপোটা কোন জেলে কন্যিকে নিয়েও ছিলো না। স্রেফ কল্পনা থেকে লেখা। তবে, নিশ্চিত থাকো যে, তোমাকে নিয়েও লিখিনি।
মুনা ক্ষিপ্ত হয়েই বললো, বলো কি? আমি তো অধরাকে একটা মজা দেখানোর জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম। তুমি আমার সাথে ঠাট্টা করছো না তো?
অধরা সত্যিই খুব সাধারন পরিবার এর সাদারন মেয়ে। লেখা পড়াটাই তার পূঁজি। ক্লাশের ফার্ষ্ট গার্ল। সবার মধ্যমণি তার সুন্দর আচার ব্যবহার এর জন্যেই। মুনা রেফারীর মেয়ে, মানুষ নিয়েও সে খেলে। আমাকে নিয়েও অনেক খেলেছে। এমন কি রেখা দিদিকে নিয়েও। রেখা দিদি পরাজিত হয়েই, আমার কথা ভুলতে চলেছিলো। মুনা অধরাকে নিয়ে খেলুক, তা আমি চাই না। আমি মুচকি হেসেই বললাম, একটু ঠাট্টা করলাম। গলপোটা আসলে তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম।
মুনা খুব খুশী হয়েই বললো, আমি জানতাম, গলপোটা পড়েই বুঝেছিলাম। অথচ, বোকা মেয়ে অধরা কি খুশীটাই না হলো। তুমি দেখো, ওকে আমি কেমন মজা দেখাই।
আমি বললাম, কেমন মজা দেখাবে?
মুনা বললো, তুমি যখন বললে, গলপোটা অধরাকে নিয়ে লিখোনি, তখন অধরা খুব মন খারাপ করেছে। তুমি আবারো অধরার কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, স্যরি অধরা। গলপোটা আসলে তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম। কি পারবে না?
আমি বললাম, কেনো?
মুনা এগুতে এগুতে ওপাশের সিঁড়িটার উপর গিয়েই বসলো। বললো, দরকার আছে। মেয়েটার দেমাগ একটু বেশী। ক্লাশের ফার্ষ্ট গার্ল বলে ভেবে নিয়েছে সবার মাথা কিনে নিয়েছে। কি আছে ওর? শুনেছি বাবা নাকি মিস্ত্রী। একটা মিস্ত্রীর মেয়ের এত দেমাগ?
আমি বললাম, অধরার বাবা মিস্ত্রী হলেও, খুব ভালো মেয়ে। লেখা পড়া ছাড়া কিছু বুঝে না। জানো, মাঝে মাঝে আমারও খুব তদারকী করে। ঠিক মতো বাড়ীর কাজ করতে বলে।
মুনা চোখ গোল গোল করে বললো, তাই নাকি? তাহলে তো আরো কঠিন সমস্যা! আর দেরী করা উচিৎ হবে না। ওই যে, ওই যে অধরা যাচ্ছে। তুমি গিয়ে বলো, অধরা, গলপোটা আমি তোমাকে নিয়েই লিখেছিলাম। সবাই বুঝে ফেলবে বলে, দাঁতে গেঁজো আছে বলে লিখেছিলাম।
আমি বললাম, মুনা, তুমি মানুষ নিয়ে খেলতে খুব পছন্দ করো। আমি পারি না।
মুনা বললো, আহা হা, পারো না, না? পারবে পারবে! আমি যখন তোমাকে নিয়ে খেলবো, তখন ঠিকই পারবে। স্কুল ম্যাগাজিনের গলপোটা অর্ধেক ছাত্রছাত্রীদের অনুমান অধরাকে নিয়েই লেখা। বাকী অর্ধেক ছাত্রছাত্রীদের অনুমান আমাকে নিয়েই লেখা। তাহলে বুঝতে পারছো বুদ্ধু! ফলাফলটা কেমন হবে?
আমি মুনার চোখে চোখেই তাঁকালাম। বললাম, পারবো।
মুনা বললো, তাহলে যাও। এমন ভাব করবে যে, অধরা যেনো মনে করে, সত্যি সত্যিই তুমি ওকে ভালোবাসো।