What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সিরিজা - একটি উপন্যাস (3 Viewers)

।। ছাব্বিশ ।।

রজত বসেছিল বিছানার ওপরে। পাশে রাখা মোবাইলটা হঠাৎ বাজতে শুরু করেছে। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো ওটা দিবাকরের ফোন। বিকেলে তো আসার কথা দিবাকরের। তাহলে হঠাৎ ফোন করেছে কেন এখন?

রজত ফোনটা ধরেই বললো, "হ্যালো। বলো, কখন আসছো তাহলে?"

ও প্রান্ত থেকে দিবাকর বললো, "আমি আসছি না আজকে।"

রজত অবাক হয়ে বললো, "সেকী? কেন?"

- "আমার পেট খারাপ হয়েছে। বারে বারে বাথরুমে যেতে হচ্ছে। ভীষন অস্বস্তি। মনে হচ্ছে যেতে পারবো না।"

একটু বিরক্ত হলো রজত। বললো, "ওফঃ পেট খারাপটা তোমার আজকেই হল। আর সময় পেল না। এত দরকারী কথা রয়েছে, মেয়েটাকে তোমার ওখানে পাঠাব বলে ঠিক করলাম। আর তুমি সব মাটি করে দিলে।"

দিবাকর বললো, "কি করবো? কাল রাত্রি থেকেই গন্ডগোলটা হয়েছে। চুপচাপ বসে থাকতেও পারছি না। ওষুধ তো খেয়েছি। দেখি শরীরটা একটু ভালো থাকলে যাবো।"

-- "বুঝেছি, তার মানে তুমি আর আসছ না।"

একটু রাগ দেখিয়েই দিবাকরকে ও বললো, "ওফ মাঝে মাঝে তোমার যে কি হয়?"

সিরিজা এই মাত্র ঢুকেছে ঘরে। বেশ চিন্তিত মুখ। রজত ওকে বললো, "দিবাকর আর আসছে না আজকে। ওর পেট খারাপ হয়েছে।"

সিরিজা রজতের দিকে ভুরু কূচকে তাকাল। রজতকে বললো, "এলেই বা কি হত? দোলন তো যাবে না ঐ বাড়ীতে। এসেও কোন লাভ নেই।"

রজত বেশ রাগান্বিত হয়ে বললো, "যাবে না মানে? ও কি এখানেই চিরকাল থাকবে নাকি? যত সব ন্যাকামি। বেয়াদপিপনার একটা তো শেষ আছে। আর কত সহ্য করা যায়? সিরিজা তুমিই কিছু একটা করো না। আমার আর ভালো লাগছে না।"

রজতের ঠোঁটের ওপর হাত রেখে সিরিজা ওকে চুপ করতে বললো, রজতকে ইশারা করে বললো, "আস্তে। ও শুনতে পাবে। তুমি অধৈর্য হয়ো না। আমি দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ওকে মানানোর চেষ্টা করছি। তুমি বেশি জেদ দেখালেই ও বিগড়ে বসবে। তখন আর নড়তেই চাইবে না এখান থেকে। সব চেষ্টা মাটি হয়ে যাবে।"

রজত কিছু বলার আগেই সিরিজা বললো, "দেখছো না হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে এখন। আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্কটা ওর সহ্য হচ্ছে না এখন। কথায় কথায় ঠেস মারছে। আমাকেও ও বলতে ছাড়েনি।"

রজত বিরক্তির সঙ্গেই সিরিজাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কেন কিছু বলছিল তোমাকে?"

সিরিজা বললো, "সেই থেকে এখানে আসার পর থেকেই তো বলছে। মাঝে মাঝে এমন হাবভাব দেখাচ্ছে, যেন আমার জায়গায় তোমার সাথে ও থাকলেই বোধহয় ভালো হতো। কিচ্ছু বিশ্বাস নেই। দোলনকে এখন চটালে চলবে না। ও সব জানে। আমাদের ক্ষতি করে দিলে মুশকিল।"

রজত বুঝতে পারছিল তুরুপের তাসটা এখন দোলনের হাতেই ধরা আছে। সিরিজার কথাই ঠিক। ক্রোধের বশে রজতের বউকেও লাগিয়ে দিতে পারে সিরিজা আর ওর সম্পর্কের কথা বলে। ওদিকে মাতাল স্বামীটাকেও যদি পথ দেখিয়ে এ বাড়ীতে নিয়ে আসে তাহলে তুমুল কান্ড বেঁধে যাবে। একদিকে সিরিজার পুরোন সমস্যা আর একদিকে রজতের স্ত্রী কে নিয়েও চরম ভোগান্তি। মাঝখানে দাঁড়িয়ে দোলন। ঠিক যেন বোড়ের চালটা চেলেছে যথা সময়ে।

দিবাকরও ডুবিয়ে দিল। এখন দোলনকে সিরিজা কিভাবে ম্যানেজ করবে সেটাই দেখার।

রজতকে একটু সতর্ক করে সিরিজা বললো, "আর ওভাবে আমাকে চুমু খেতে যেও না ওর সামনে। ও সহ্য করতে পারছে না এসব।"

যত বিপত্তি চুমু খাওয়াকে ঘিরেই। বেশি সাহসি হতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনল নিজেই। এখন এর ফল ওকে ভোগ করতে হবে। জ্বালা হয়েছে সিরিজারও। বেচারী সেই থেকে যে ঝামেলা সহ্য করে যাচ্ছে, তার জন্য কোন বিরক্তি নেই ওর মুখেও। অনবদ্য সুখের শরীরটা নির্দিধায় তুলে দিয়েছিল রজতের হাতে, এর এখন দেখো, চেনাজানা লোকগুলোই এমন ভাবে এসে ঘাড়ে ভর করছে, যেন এখানে সিরিজাকে নিয়ে টেকাটাই দায় হয়ে পড়েছে। কবে যে এগুলো ঘাড় থেকে নামবে কে জানে? আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে।

বিরক্তির চোটে ভর্তি সিগারেটের প্যাকেটটা তুলে আছাড় মারলো রজত মেঝেতে। মুখে বললো, "দূর আর ভালো লাগে না সিরিজা। চলো তো আমরা কোথাও পালিয়ে যাই।"

সিরিজা হেসে বললো, "পালিয়ে যাবে? কোথায়?"

-- "যেখানে কেউ আমাদের নাগাল পাবে না। শুধু তুমি আর আমি, মাঝখানে আর কেউ নেই। এ বাড়ীতে থেকে তুমি আর আমি সুখ করবো, তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে সিরিজা। আমি চাই মজা ষোলআনা। তোমার এই শরীরটা থাকবে আমার হাতের নাগালে বিনা ঝামেলায়। তবেই তো স্বস্তি। তা না কিনা যত উটকো ঝামেলা পরপর।"

সিরিজা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, "কিন্তু তোমার এই ফ্ল্যাটটার?"

-- "নিকুচি করেছে ফ্ল্যাটের। এটাতো আমার কেনা ফ্ল্যাট নয়। ভাড়ায় রয়েছি। মালিকও থাকে না এখানে। তালা লাগিয়ে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো। কেউ টেরও পাবে না। তারপর মালিককে জানিয়ে দেব, আমি অন্য জায়গায় ফ্ল্যাট নিয়ে নিয়েছি। তাহলেও হল।"

সিরিজা কৌতূহল মুখ নিয়ে বললো, "তুমি সত্যি বলছো?"

রজত বললো, "সত্যিই তো বলছি। চলো যাবে তুমি? কালকেই রওনা দেব আমরা।"

- "কিন্তু দিবাকরদার কি হবে?"

-- "কেন দিবাকরের আবার কি হল?"

- "ঐ যে রেশমি?"

-- "ওফঃ আবার রেশমি? আর পারি না। আমি চাইছি এসব ঝামেলা ঝঞ্জাট এড়াতে। আর তুমি কিনা পড়ে রয়েছ ঐ রেশমি কে নিয়ে। অত পরের উপকার করার মত এখন সময় নেই। নিজেদের সুখটা আগে দেখবো? না পরের কথা আগে চিন্তা করবো।"

সিরিজা কিছুক্ষণ ভেবে বললো, "সবই তো বুঝলাম। কিন্তু দোলনকে না ভাগিয়ে আমাদের তো কিছু করার উপায় নেই।"

রজত সিরিজার ঘাড়ে দোলনের ব্যাপারটা ছেড়ে দিয়ে বললো, "ঐ বদ ছুঁড়ীটাকে তুমি সামলাও। এখান থেকে অন্য জায়গায় যাবার ব্যাপারটা আমি সামলাচ্ছি।"

সিরিজাকে নিজেই ঝামেলা ঘাড়ে নিতে বলে আবার একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন সিগারেটটা টানতে লাগলো রজত। দোলনকে নিয়ে ও নিজেও চিন্তা করছে। শেষ পর্যন্ত সিরিজা যদি ওকে পটাতে না পারে, তাহলে দোলনকে নিয়ে রজত কি বা করতে পারে? মেয়েটার সাথে মিছি মিছি একটা মন দেওয়া নেওয়ার অভিনয় করা যেতে পারে। অথবা দোলনের সাথে শারীরিক মিলনে আবদ্ধ হওয়ার আগে, শর্ত আরোপ করতে পারে দোলনকে। ঠিক আছে সিরিজার জন্য তোমার যখন এত হিংসে হচ্ছে, আমি রাজী আছি তোমার সঙ্গে ভালোবাসাবাসির খেলা খেলতে। কিন্তু সেটা কেবল একদিনের জন্যই। তুমি তোমার সাধ পূরণ করে নাও। তারপরেই কিন্তু তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাদের এ বাড়ী থেকে। আর কোনদিনই এ পথ তুমি মাড়াবে না। সিরিজাকে চিরতরে পাওয়ার জন্য একদিনের এই স্যাক্রিফাইস করতে আমি রাজী হলাম। জীবনের বাকী যেকটা দিন আছে, তার থেকে কেবল একদিনই তোমার জন্য আমি তোমাকে দিতে পারি। বাকী জীবনে সিরিজাই আমার মন প্রান জুড়ে থাকবে সবসময়। ওখানে তোমাকে আমি কোনদিনই বসাতে পারবো না।

সিরিজা রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "কি ভাবছো?"

রজত বললো, "কিচ্ছু না। শুধু ওপরওয়ালাকে ডাকছি, তিনি যদি দয়ালু হয়ে এই ঝামেলাটা কোনমতে মিটিয়ে দেন,তাহলে তোমাকে নিয়ে আমি বাকী জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটাতে পারি।"

রান্নাঘরে দোলন একা রয়েছে। কখন আবার হূট করে এই ঘরে চলে আসতে পারে। সিরিজা বললো, "আমি যাই। দেখি ও কড়াইতে খুন্তী নাড়ছে কিনা? এ ঘরে বেশিক্ষণ থাকলে ওর আবার হিংসে হবে।"

সিরিজা রজতের জীবনে আসার আগে অবধি রজত ছিল একরকম। আর সিরিজা আসার পরে রজত হয়ে গেল অন্যরকম। এক নারীতে রজতের মন কোনদিনই টেকেনি। বহু নারীতে আসক্তি। একাধিক নারীর সাথে মিলন, শরীরি সুখে ভেসে যাওয়া এসব অহরহ চলছিলই। কাউকে বেশিদিনের জন্য মনে ধরত না রজতের। মেয়েছেলে যেন শুধু এক রাত্তিরেরই খোরাক, এই নিয়ে ওর কামুক জীবন অতিবাহিত হচ্ছিলো। রীতা রজতকে বিয়ে করে রজতের স্বভাবের জন্য অতীষ্ঠ হয়ে ওর সঙ্গ ছেড়েছে। ভেবেছিল রজত কোনদিনই শুধরোবে না। সুতরাং ওর সাথে ঘর করা বৃথা। বউ ছেড়ে চলে যাবার পরই ও সিরিজাকে পেয়েছে। শরীরে যার এত ঐশ্বর্য ভান্ডারে ভর্তি তাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রতি আবার আসক্তি? শুধু রজত কেন, পৃথিবীর কোন পুরুষই এই মুর্খামি করবে না। সিরিজার সঙ্গে সেক্সুয়াল লাইফে মাতোয়ারা হবার পর থেকে ওর আর কোন চাহিদা নেই জীবনে। বাকী জীবনটা এখন শুধু সিরিজা আর সিরিজাই।

সিরিজার উদ্ধত নগ্ন স্বাস্থ্য, রজতের খোলা বুকে মাথা রেখে ও যখন শুয়ে থাকে, রজত মনে মনে চিন্তা করে বউ নেই বলেই এখন কত সুখ। বউ থাকলে কি সিরিজার সাথে মাখামাখিটা করতে পারত? রাগে দূঃখে বউ তখন ক্ষোভে ফেটে পড়তো। যে সুখটা ও বউ এর অনুপস্থিতিতে সিরিজার সাথে করতে পারছে। সেটা সিরিজার সামনেই দোলনের সাথে করবে কি করে? হলেই বা একরাত্রিরের শর্ত। সিরিজা এক ঘরে, দোলন ও সেই ঘরে। চোখের সামনে সেই শর্ত পালন করা কি সম্ভব? সিরিজার চোখে ও তো খারাপ হয়ে যেতে পারে? যাকে পাওয়ার জন্য এমন কান্ড ঘটালো, সেই কিনা চলে গেল ওর জীবন থেকে। তারপর বাকী জীবনটা ও শুধু দোলনকে নিয়ে? অসম্ভব। কিছুতেই সম্ভব হবে না সেটা।

রজত মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো খামচে ধরেছে। যেন মনে হবে নিজেরই চুল ছিঁড়ছে কপালের দোষে। শেষ পর্যন্ত এমন একটা দূঃসাহসিক ঝুকি নেওয়াটা কিছুতেই ঠিক হবে না। সিরিজা যদি ভুল বুঝে ওকে ছেড়ে চলে যায়? ওর এমন চোখ ধাধানো শরীর। রজতের মত আর একটা মেয়ে পাগল লোককে অনায়াসেই জুটিয়ে নিতে পারে সিরিজা। তখন আফসোসের আর শেষ থাকবে না। সুখের বাতি নিভে যাবে চিরকালের মতন। ঐ হতচ্ছাড়া বদমায়েশ মেয়েটাকে নিয়েই কাটাবে নাকি তখন বাকী জীবন? রজত কিছুতেই তা পারবে না। মরে যাবে তবু পারবে না। তার চেয়ে সিরিজার ওপরই ছেড়ে দেওয়া ঠিক। ও যা করবে, সেটা কখনই মন্দ হবে না।

যেন একটা বিপদ থেকে বেঁচে গেল রজত। মাথা খারাপ হলে লোকে উল্টোপাল্টা ভাবতে শুরু করে, ওরও তাই এমন অবস্থা হয়েছিল একটু আগে। নিজের আপন মনেই বিড় বিড় করে বলতে লাগলো, "নাহ, এটা কখনই ঠিক হবে না। কিছুতেই ঠিক হবে না।"

হঠাৎই সিরিজার বদলে এবার দোলন ঢুকল শোবার ঘরে। রজতের সামনে এসে বললো, "কি ঠিক হবে না দাদাবাবু? কি ঠিক হবে না?"

রজত রীতিমতন চমকে গেছে দোলনের হঠাৎ এই আগমন দেখে। ওকে বললো, "তুমি?"

দোলন ন্যাকামো করে বললো, "হ্যাঁ আমিই। কি হয়েছে বলো? সিরিজাই তো আমাকে পাঠালো তোমার ঘরে।"

- "সিরিজা পাঠালো?"

-- হ্যাঁ।"

- "মানে?"

-- "বললো, দাদাবাবু একা ঘরে রয়েছে। তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল। যা একবার দেখা করে আয়।"

রজত মনে মনে ভাবল, সিরিজার কি ভীমরতি হয়েছে? নিজে না এসে দোলনকে পাঠিয়েছে। আমি আবার কি জিজ্ঞাসা করবো? একে আবার এ ঘরে পাঠালো কেন?

-- "কি ভাবছিলে দাদাবাবু? মনে মনে বিড়বিড় করছিলে?"

রজত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, "কই, কিছু না তো?"

একটু কাছে এসে রজতের একেবারে সামনেই বসে পড়লো দোলন। বললো, "বলো না তুমি আমার কথা ভাবছিলে? আমাকে এখান থেকে ভাগিয়ে দেবে, সেটা ঠিক হবে না, সেটাই মনে মনে বলছিলে?"

রীতিমতন গা জ্বলে যাচ্ছে রজতের। দোলন একেবারে যেচে গায়ে পড়তে চাইছে। লজ্জ্বা শরমের বালাই নেই। হঠাৎই এমন ভাবে এগিয়ে আসছে রজতের দিকে যেন এখুনি কিছু একটা করে বসবে মেয়েটা। হলও তাই। রজত দেখলো দোলন ওর বুকের আঁচলটা সরিয়ে দিয়েছে। মধ্যেখানের খাঁজ উন্মুক্ত। একেবারে বেহায়ার মতন

আবার ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিয়েছে রজতের দিকে। যেন সিরিজার মতই জোয়ার ভাসা নদীর উথাল পাতাল ঘন শরীরটাকে নিয়ে এখুনি আছড়ে পড়বে রজতের বুকে।

একেবারে চক্ষু চড়ক গাছ। রজত রীতিমতন বিরক্ত হয়ে বললো, "কি হচ্ছেটা কি দোলন? যাও দূরে গিয়ে বসো। একি? এটা কি হচ্ছে?"

-- "যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে। সিরিজাই আমাকে অনুমতিটা দিয়েছে তোমার ঠোঁটে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তুমি যদি না খাও, আমিই তোমাকে চুমু খেতে পারি।"

অযথা বাঘটাকে খ্যাপানোর চেষ্টা করছে দোলন। এই বাঘটা এখন শুধু সিরিজার কাছেই পোষ মেনেছে। যাকে ছাড়া ও কারুর কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে না, অথচ সিরিজার নাম দোলনের মুখে শুনে বেশ অবাক হয়ে গেল রজত। কি বলছে কি মেয়েটা? সিরিজার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি? দোলনকে সিরিজা বলেছে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে। এর মানে?

বেশ ক্ষেপে গিয়ে বললো, "তোমার কোন লজ্জা নেই দোলন? এটা কি অসভ্যতামি হচ্ছে?"

লজ্জা নারীর ভূষণ। দোলনের সেই লজ্জা একেবারেই নেই। রজতের বুকের ওপর আছড়ে পড়ে, দোলন এবার ওর দুই স্তনের ছোঁয়া দিল রজতের শরীরে। রজতকে প্রবল ভাবে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দোলন ওর ঠোঁট দুটো নামিয়ে আনল রজতের মুখের ওপরে। প্রবল আশ্লেষে চুম্বনের উত্তাপ দিয়ে একবার.. দুবার.. তিনবার, চুষতে লাগলো রজতের দুই ঠোঁট। রজতের বুকের ওপর তখন খোঁচা মারছে দোলনের দুই স্তন। রজত ঠোঁট সরাবার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ঐভাবে গাঢ় চুমু খেয়েও দোলনের যেন মন ভরছে না। একেবারে আক্রমণাত্মক চুমু, সেই সাথে রজত পড়েছে এক কুলকিনারাহীন নদীতে। ঘুর্নীস্রোতে ভাসছে, নাকানি চোবানি খেয়ে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। রজতের সঙ্গে গাঢ় চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে দোলনের তখন শরীরে অনন্ত সুখ। রীতিমতন দাপাচ্ছে ও রজতের ঠোঁটে, চুষতে চুষতে ফুলিয়ে দিল ও রজতের ঠোঁট। সিরিজার চেয়ে কোন অংশে কম যায় না। রজতের কানের পাশে দুহাত রেখে ঠোঁটদুটোকে রজতের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ রেখে দুচোখ বুজে ফেললো দোলন। যেন অনেক দিনের না পাওয়া কোন তৃপ্তিকে মনের সুখে উপভোগ করছে দোলন।
 
চোখ বন্ধ অবস্থায় রজতকে বললো, "সিরিজাকে তুমি যখন চুমুটা খাচ্ছিলে, আমি জ্বলে পুড়ে মরছিলাম গো। এত কপাল করে ওকে পেয়েছ, আমার কি কপালে সিরিজার মত সুখ জুটবে না গো? তোমার ঠোঁটে হামলে পড়ে চুমু খাচ্ছি, দেখো আমারও কেমন শরীর মন জুড়িয়ে যাচ্ছে। আরও একটু চুমুটা খেতে দাও না গো আমাকে।"

গায়ে পড়ে সান্নিধ্যে আসার চেষ্টা? রজতের গা ঘিন ঘিন করছে। দোলনের আগ বাড়িয়ে অমন একটা দামাল চুমুও রজতের মন ভরাতে পারেনি। তীব্র ঘেন্নায় ও দোলনকে দুই হাত দিয়ে ঠেলা মারলো এমন জোরে দোলন ছিটকে গিয়ে পড়লো বিছানার একপাশে। খাটের কোনাটা লেগে গেল ওর মাথায়।

তীব্র যন্ত্রণায় দোলন চিৎকার করে উঠলো, "উহুঁহুঁহুঁ। ও মা মরে গেলাম। কি জোরে লাগলো গো, উহুঁ রে।"

রজতের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যা হয়েছে, ঠিক হয়েছে। বেশ হয়েছে। এই হিংসুটে মাগীটার এমনই হওয়া উচিত। চুমু খেতে এসেছে আমাকে। কত বড় সাহস। আস্পর্ধা কম নয়। ভেবেছে সিরিজার মতন দোলনের সঙ্গেও মাখামাখিতে জড়িয়ে পড়বে রজত। তারপরই ওর অভিসন্ধি পূরণ হবে। একেবারে যেন মাথায় চড়ে গেছে এই বাড়ীতে এসে। বদমায়েশের হাড়ি। আবার কিনা বলে সিরিজাই ওকে পাঠিয়েছে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তাচ্ছিল্য করে ওর দিকে না তাকিয়ে রজত হাবভাবে বোঝাতে চাইল ও কতটা অসুন্তুষ্ট হয়েছে দোলনের এমন নির্লজ্জ আচরণে।

রান্নাঘর থেকে দোলনের চিৎকার শুনে ছুটে এসেছে সিরিজা। খাটের এক পাশে বসে কপালে হাত দিয়ে তখন কাতরাচ্ছে দোলন। রজতের মুখ গম্ভীর। একবার ওর দিকে তাকিয়ে সিরিজা দোলনকে জিজ্ঞাসা করলো, "কি হয়েছে তোর? লাগলো নাকি? অমন চেঁচিয়ে উঠলি কেন?"

দোলনের মুখে প্রথমে কোন কথা নেই। মাথাটা নিচু করে কপালটা হাত দিয়ে ডলতে ডলতে অনেক কষ্ট করে সিরিজাকে বললো, "খাটের কোনাটায় গিয়ে মাথাটা লাগলো। দাদাবাবু আমাকে ছুঁড়ে ফেললো। বললাম, তুমিই আমাকে দাদাবাবুর কাছে পাঠিয়েছ। চুমুটা খেতে গেলাম, দাদাবাবু আমাকে বিশ্বাস করলো না। তাই আমাকে ঠেলে ফেলে দিল। দেখো এখন কি অবস্থা।"

বলিহারি, তোমার সিরিজা। এই বদ মেয়েটাকে তুমি পাঠিয়েছ, আমাকে চুমু খাওয়ার জন্য? তোমার কি আক্কেল বলে কিছু নেই? রজত কি এখনও সেই মেয়েমানুষ লোভী হয়ে রয়ে গেছে? কোথাকার একটা মেয়ে, সে আমাকে এসে চুমু খাবে আর আমি সেটা সাদরে গ্রহন করবো? আমি কি এতটাই নিচে নেমে গিয়েছি? যাকে নিয়ে আমি এত দুশ্চিন্তায় মরছি, সে এত দূঃসাহসিক কাজ করে বসবে আর আমি সেটা চুপচাপ মেনে নেব? এ তুমি কি করলে সিরিজা? ওর ফাঁদে পড়ে ওকে এমন অন্যায় প্রশ্রয়টা তুমি দিলে? কেন দিলে তুমি?

রজত সিরিজাকে সামনে পেয়ে এমনই কথাটা বলতে যাচ্ছিলো মুখ দিয়ে। ওকে অবাক করে সিরিজা দোলনের দিকে তাকিয়ে বললো, "তোকে নিয়ে আমি কি করি বলো তো দোলন? দাদাবাবুকে তুই চটিয়ে দিলি। আমি কি তোকে এই জন্যই এই ঘরে পাঠালাম? তুই এ ঘরে এসে এসব কি করেছিস? জোর করে দাদাবাবুর গায়ে পড়েছিস? ছিঃ।"

দোলন ঐ অবস্থায় মাথায় হাত দিয়ে ডলতে ডলতে ফিক ফিক করে হাসছে। রজত ক্রমশ রেগে গুম হয়ে যাচ্ছে। সিরিজাকে ন্যাকামি করে দোলন বললো, "ফ্রীজে বরফ আছে? একটু দাও না গো। কপালের কাছটা ক্রমশ ফুলে ঢোল হয়ে যাচ্ছে।"

তাহলে কি সিরিজা দোলনকে চুমু খেতে বলেনি? তার মানে সিরিজার নাম করে জোর করে আমার ঠোঁটে চুমুটা খেল। কি সাংঘাতিক মেয়ে। রান্নাঘরে যেটা করতে চেয়েছিল, সেটা ঘরে এসে সারল। তলে তলে এমন বদমায়েশি বুদ্ধি। রজতের ইচ্ছে করছিল জোর করে দোলনের মাথাটা আর একবার দেয়ালে ঠুকে দিতে। এক্ষুনি ওর গলা টিপে ওকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে। আসতে না আসতেই সিরিজার জায়গাটা নেবার চেষ্টা করছে, ওর আস্পর্ধা কম নয়।

রাগ কমা তো দূর। রজত বুঝেই নিল খুব পরিকল্পিত ভাবেই সিরিজার নাম করে চুমু খাওয়ার ব্যাপারটা ঘটিয়েছে দোলন। এমন মেয়েকে এ বাড়ীতে রাখাটা এরপরে বাড়াবাড়ি ছাড়া আর কিছুই হবে না। অমন মেয়ের মুখ দেখাটাও পাপ। তক্ষুনি বিছানা থেকে নেমে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল রজত। সিরিজাকে বললো, "আমি একটু ঘুরে আসছি বাইরে থেকে। আমার এখন ঘরে থাকতে কিছুতেই আর ভালো লাগছে না।"

হতবাক সিরিজাও। দোলনের ওপর চটে আগুন অথচ মুখে কিছু বলতে পারছে না। কি থেকে কি যেন হয়ে গেছে। রজতের রাগ কমানোর কোন ভাষাও নেই ওর কাছে। জামা প্যান্ট পড়ে রজতকে বেরোতে দেখে ও জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি বাইরে যাচ্ছো? খেতে আসবে না? রান্না তো একটু পরেই সব হয়ে যাবে।"

রজত বিরক্তি মুখ নিয়ে বললো, "তোমরা খেয়ে নাও। আমার কিছু ভালো লাগছে না।"

সদর দরজাটা দড়াম করে বন্ধ করে রজত বেরিয়ে গেল বাইরে। দোলন, সিরিজা তখন নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। কিছু একটা কথা হয়েছে ওদের মধ্যে একটু আগে, যেটা রজতও জানে না। রাগটা মনে মনে হলেও সিরিজা পুরোপুরি ওটা দেখাতে পারছে না দোলনকে। কিছু একটা বলেছে সিরিজা দোলনকে, একটু আগে ঐ রান্নাঘরেই। দোলন তারপরে যেটুকু করেছে সেটা অতিরিক্ত। পরিনাম যে এত বেশি পরিমানে হবে সেটা আশাও করেনি দুজনে। কি করবে সিরিজা কিছুই বুঝতে পারছে না। দোলনের মুখেও কোন কথা নেই। বোকার মতন চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। বুঝতে পারছে চুমুর প্রকোপটা খুব খারাপই দাগ কেটেছে রজতের মনে। গায়ে পড়ে হামলি খেয়ে জোর করে চুমু খাওয়াটা কিছুতেই উচিত হয় নি দোলনের।

রজত বেরিয়ে যেতেই সিরিজা বললো, "তুই আমার উপকার করেছিস, তারমানে এই নয় তোর মনের ইচ্ছেটা দাদাবাবুও মেনে নেবে। ভাব জমাতে চাইছিস বলে হুমড়ি খেয়ে দাদাবাবুর গায়ের ওপর পড়লি কেন? আমি কি তোকে তাই বলেছিলাম?"

দোলন বললো, "বারে, তুমিই তো বললে, দাদাবাবু মেয়েমানুষ পছন্দ করে। কিন্তু তুমি আসার পর থেকে দাদাবাবু নাকি একেবারে অন্যরকম হয়ে গেছে। আমার সাথে ভাব জমাতে তাই দাদাবাবুর সময় লাগবে।"

- "হ্যাঁ তাই তো বলেছি। আর তুই কি বললি তার উত্তরে?"

-- "আমি বললাম, তোমার জন্য পাগল ঐ লোকটাকে পটাতে আমারও বেশি সময় লাগবে না। তুমি যদি বলো, এখনি ঘরে গিয়ে আমি দাদাবাবুকে পটিয়ে নেব।"

সিরিজা বললো, "এই তার ছিরি? পটানোর নাম করে তুই দাদাবাবুর ঠোঁটে চুমু খেয়েছিস? আমি কি তোকে তাই বলেছিলাম?"

মাথাটা নিচু করে ফেলেছে দোলন। সিরিজার এবার প্রচন্ড রাগ হচ্ছে ওর ওপর। সোফায় বাচ্চাটা ঘুমোচ্ছিল। হঠাৎই ঘুম ভেঙে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে। দোলন দেখছে সিরিজা বাচ্চাটার কাছে যায় কিনা? ভাবখানা এমন অনেক তো পরপুরুষের সাথে পীরিত করেছো। এবার নিজের বাচ্চা নিজে সামলাও। দেখবে মজা কেমন লাগে।

দোলন কে একেবারেই পাত্তা না দিয়ে সিরিজা নিজেই এগিয়ে গেল বাচ্চাটার দিকে। কি ভীমরতিতে যে তখন বাচ্চাটাকে তুলে দিয়েছিল দোলনের হাতে। আজ তার খেসারত ওকে দিতে হচ্ছে। এখানে এসে এখন ওর সুখে ভাগ বসাতে চাইছে দোলন, সবই প্রতিদানে কিছু চাওয়ার মতন। বাচ্চাটা সিরিজার কাছে থাকলে আজ এই কান্ড ওকে কিছুতেই পোয়াতে হত না।

বাচ্চাটাকে বুকে ধরে নিজের বুকের দুধ খাওয়াতে শুরু করলো সিরিজা। হঠাৎই শিশুটার ওপর খুব মায়া পড়ে গেছে। কপালে চুমু খেতে খেতে বাচ্চাটাকে আদর করে বললো, "তুই এরপরে আমার কাছেই থাকবি। আর তোকে কোথাও যেতে হবে না। আমি দেখব এবার আমার ক্ষতি কে করে?"

দোলন শোবার ঘর থেকেই মুখ বাড়িয়ে সিরিজাকে দেখছে। বাচ্চাটাকে বুকে আঁকড়ে ধরে স্তন্যপান করাচ্ছে সিরিজা। বাচ্চাটাও খুশ। অনেক দিনের না পাওয়া স্বাদ এবার নিয়ম করে পাবে তার জন্য সিরিজার ছেলের খুশি ধরে না।

ন্যাকামো করে একটু অপরাধ গোছের মুখ নিয়ে শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে এল দোলন। সিরিজারও ওর চালাকি বুঝতে আর বাকী নেই। বাচ্চাটাকে বুকে ধরে আপন মনে স্তন বিলোতে লাগলো। দোলনকে দেখেও যেন দেখলো না সিরিজা।

সিরিজার সামনে বসে হাত দিয়ে দুকান ধরে দোলন বললো, "খুব ভুল হয়ে গেছে গো। আর কখনও এমন হবে না, আমি কথা দিচ্ছি।"

সিরিজা অত সহজে গলে যাবার পাত্র নয়। দোলনকে পাত্তা না দিয়েই ও বাচ্চাটাকেই আদর করতে লাগলো। দোলনের অভিসন্ধি বুঝে গেছে ও। এবার দোলনকে কি করে জব্দ করতে হয় দেখাবে সিরিজা।

মুখে কোন কথা নেই, সিরিজা মুখ গম্ভীর করে বসে আছে বাচ্চাটাকে বুকে ধরে। অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর দোলনকে বললো, "তোর মতলবটা কি বলো তো দোলন? এখানে কি উদ্দেশ্যে এসেছিস তুই? তোর ইচ্ছেটা কি? আমাকে খুলে বলতে পারিস। দাদাবাবু এখন ঘরে নেই, এই সুযোগে তোর মনে কি আছে খুলে বল। ও ফিরে এলে কিন্তু একমূহূর্ত দেরী করবে না তোকে বিদায় করতে।"

এবার একটু গলার স্বর উঁচু করে দোলন বললো, "তুমি করলে কোন দোষ নয়। আর আমি করলেই যত দোষ। দাদাবাবুর শরীরে অনেক কাম আছে, আমি ভালোই বুঝি। তোমাকে পেয়ে তোমার শরীরটা তাই উপভোগ করছে, আমি যদি একটু ভাগ নিতে চাই ক্ষতি কি? ওসব পুরুষমানুষের ন্যাকামো আমি সব বুঝি। দুদিন এখানে থাকলেই তখন আবার আমার প্রতি পীরিত আসবে। তুমি চাও না দাদাবাবু তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে পীরিত করুক, সেটাই বলো না।"

দোলনের কথা শুনে সিরিজার প্রায় চোখ কপালে উঠে গেছে। কি বলছে কি মেয়েটা? তাহলে কি দূঃসময় ঘনিয়ে আসছে?

রজত ফ্ল্যাট থেকে রেগেমেগে বেরিয়ে চলে এল বড় রাস্তার মোড়ে। সামনেই একটা সিগারেট পান বিড়ির দোকান। পকেটে হাত ঢুকিয়ে দেখলো সিগারেট প্যাকেটটা ফেলে এসেছে ঘরে। মেঝেতে আছাড় মারা প্যাকেটটা এখনও বোধহয় ঘরেই গড়াগড়ি খাচ্ছে। একটু আগে মাথার মধ্যে আগুনটা যেভাবে জ্বলে উঠেছিল রাগের চোটে, সহজে নিভতে চাইছে না। এখনও চোয়াল শক্ত হয়ে রয়েছে। ভেবে পাচ্ছে না ও কি করবে?

একটু খানি এগিয়ে গিয়ে ও একটা নতুন সিগারেটের প্যাকেট কিনল দোকানটা থেকে। সিগারেট টা ধরিয়ে ঘনঘন কয়েকটা টান মেরেও মাথা দিয়ে কোন উপায় বেরোচ্ছে না। মনে হচ্ছে শক্তিশালী চুমুটাতেই দোলন পুরো কাত করে দিয়েছে রজতকে। এখন ওকে বুদ্ধি করে উপায় বের করতে হবে। দোলনকে বাগে আনতে গেলে রাগ দেখালে মোটেই চলবে না।

নিজেকে ভীষন অসহায় মনে হচ্ছিল রজতের। এই প্রথম কোন মেয়েমানুষ ওকে নাকানি চোবানি খাওয়াচ্ছে, সিরিজার সঙ্গে অবাধ যৌনসুখের বিচরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করার জন্যই দোলনের পদার্পন ঘটেছে এই ফ্ল্যাটে। একে একপ্রকার হিংসে ছাড়া আর কি বলা যেতে পারে। সিরিজাকে অসম্ভব হিংসে করছে দোলন। রজতের সাথে সিরিজার যৌনসম্পর্ক, সিরিজার প্রতি রজতের দূর্বলতা, কোনকিছুই সহজ ভাবে মেনে নিতে পারছে না। এবং দোলন নিজেও জানে, এই অবস্থায় সিরিজা রজতের দুজনেরই কিছু করার নেই। এত সাহস যে মেয়েটা পাচ্ছে তার কারন তো দুটোই, একদিকে রজতের স্ত্রী, আর একদিকে সিরিজার স্বামী। এমন অবস্থায় একটাই উপায়, যদি.....

রজত ভাবতে ভাবতেই আপন মনে হঠাৎ বলে উঠলো, "দূর, আবার সেই মাথা দিয়ে উদ্ভট চিন্তা। মেয়েমানুষকে একরাতের যৌনসুখ দিলেই কি সে বশ মেনে যায়? একবার রজতের স্বাদ পেলেই তখন নেশা ধরে যাবে দোলনের। রজতের ফ্ল্যাট থেকে তো নড়তে চাইবেই না। উপরন্তু বারবার শরীরি সুখ আদায় করার চেষ্টা করবে রজতের কাছ থেকে। তখন উপায়? সিরিজাকে ভালোবাসে, ওর শরীরটাকে বারবার চায়, তাই বলে কি দোলনের সাথেও দিনরাত চোদাচুদি করা যায় নাকি? দুটো মেয়েকে ঘাড়ে করে সারাজীবন? অসম্ভব। কিছুতেই তা সম্ভব নয়।"

একটু দূরে একটা রোগা প্যাটকা লোক রজতকে তাকিয়ে লক্ষ্য করছে কিছুক্ষণ ধরে। রজত সিগারেট টানতে টানতে হঠাৎই খেয়াল করলো সেটা। লোকটাকে রজত আগে দেখেনি কোনদিন। মনে হচ্ছে এই চত্তরে থাকে না। নতুন এসেছে, কিন্তু রজতের দিকে ওভাবে তাকিয়ে দেখছে কেন লোকটা?

একটু কড়া ভাবে লোকটার দিকে একদৃষ্টে তাকাতেই লোকটা এবার মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিল। রজতের সন্দেহটা গেল না। বোধহয় বুঝতে পেরেছে লোকটা, তাই মুখটা ঘুরিয়ে নিল। একবার ভাবলো, লোকটা কে? এ আবার সিরিজার মাতাল স্বামী নয়তো? তাহলে তো কেলেঙ্কারী বেধে যাবে। কিন্তু ঐ বা রজতকে চিনবে কি করে? দোলন তো সেভাবে কিছু বলে নি।

রজত ওভাবে তখনও কড়া চোখে তাকিয়ে আছে বলে, লোকটা এবার সামনের দিকে হাঁটা দিল। রজতও নাছড়বান্দা, লোকটা কোথায় যায় দেখি। রজতও পিছু পিছু ধাওয়া করার মতন হাঁটা দিল।

ওভাবে রজতকে অনুসরণ করতে দেখে একটু বেশ নার্ভাস হয়ে পড়েছে লোকটা। রজত তাড়াতাড়ি পা চালাচ্ছে, দেখছে লোকটা ভয় পেয়ে দৌড়োয় কিনা। যদি ওর শ্বশুড়মশাইয়ের কোন চর হয়, এক্ষুনি ঘুসি মেরে ফেলে দেবে রাস্তার ওপর। বলা যায় না, ঐ বুড়োই বোধহয় কাউকে ফিট করে রেখেছে, আমার গতিবিধি নজর করার জন্য। একবার বাগে পাই, তারপর দেখাচ্ছি মজা।

লোকটা দৌড়তে পারছে না। রজত ঠিক ওকে ধরে ফেললো। একটু পেছন থেকে চেঁচিয়ে বললো, "এই যে দাদা, শুনুন........

রজতের ডাক শুনে দাঁড়িয়ে পড়েছে ঐ রোগা লোকটা। বেশ নার্ভাস, বুঝতে পারেনি রজত ওভাবে ধাওয়া করে আসবে। মুখ ঘুরিয়ে বললো, "আমাকে ডাকছেন?"

- "হ্যাঁ আপনাকে।"

-- "বলুন।"

- "আপনি আমাকে ওয়াচ করছিলেন। কে পাঠিয়েছে আপনাকে? এক্ষুনি বলুন, নইলে আমি ছাড়বো না আপনাকে।"

অসম্ভব ভয় পেয়ে গেছে লোকটা রজতের ওরকম রুদ্রমূর্তী দেখে। পেছন পেছন ওকে ধাওয়া করে চলে আসবে বুঝতে পারেনি। একটু থতমত খেয়ে বললো, "কই, আমি তো আপনাকে দেখিনি। আমি এমনি এমনি তাকিয়ে ছিলাম।"

মাথায় যেন খুন চেপে যাচ্ছে রজতের। হাতের জামাটা গোটাতে গোটাতে বললো, "আপনাকে গোয়েন্দাগিরি করতে পাঠিয়েছে এখানে? ন্যাকামো মারছেন? বলুন এক্ষুনি, নইলে আমি কিন্তু রাস্তায় লোক জড়ো করে দেব। নাম বলুন শিগগীর। নইলে কিন্তু ভালো হবে না।"

ঢোক গিলে লোকটা রীতিমতন আমতা আমতা করতে লাগলো। রজত বুঝেই গেছে, লোকটার সেরকম দূঃসাহস নেই, একটা ভেড়াকে শ্বশুড়মশাই পাঠিয়েছে, রজতের ওপর নজরদারী করার জন্য। একেবারে হাতে নাতে লোকটাকে ধরতে পেরেছে রজত। এবার একটা হেনস্থা করেই ছাড়বে।

রজত ওর কলারটা চেপে ধরতে যাচ্ছিলো। রীতিমতন ভয় পেয়ে লোকটা বললো, "আরে করছেন টা কি? আমি তো বলছিই আপনার দিকে তাকায়নি। শুধু শুধু আপনি রোয়াব দেখাচ্ছেন।"

- "শুধু শুধু? মারবো না, তোমার মুখ ফাটিয়ে দেব। কে পাঠিয়েছে তোকে বল। নইলে শালা মুখ ফাটিয়ে দেব।"

হাত তুলে মারতেই যাচ্ছিলো লোকটাকে। আশে পাশে দু একজন দাঁড়িয়ে গেছে ঐ দৃশ্য দেখে। রজত ওদেরকেও চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, "এই দেখুন, এই লোকটা কেমন চোর সেজে এসেছে এখানে। এখন ধরেছি, শালা পালাতে পারলে বাঁচে।"

লোকগুলো এই এলাকার লোক নয়। পথচারী পথ চলতে চলতে যেরকম দাঁড়িয়ে পড়ে। সেরকমই দাঁড়িয়ে পড়েছিল তামাশা দেখার জন্য।

রজত তখনও চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো, "কে পাঠিয়েছে তোকে? আমার শ্বশুড়মশাই না আমার বউ?"

ব্যক্তিগত কোন সমস্যা। লোকগুলো ঐ শুনে আর দাঁড়ালো না ওখানে। রজত এবার রীতিমতন কোনঠাসা করে ফেললো ঐ রোগাপ্যাটকা লোকটাকে।

গালে ঠাস করে একটা চড়। লোকটাও মাথা নিচু করে ফেলেছে। মেজাজ হারিয়ে রজত তখন রীতিমতন ক্ষিপ্ত।

মারের চোটে লোকটা বলেই ফেললো আসল কথাগুলো। রজত নইলে আরও তেড়ে যেত। লোকটা বললো, "আমাকে ছেড়ে দিন। আমি আপনার শ্বশুড় মশাই আর আপনার বউ, দুজনের কথাতেই এখানে এসেছি।"

- "কেন?"

-- "আমাকে বলা হয়েছে, কোন মহিলাকে নিয়ে আপনি রয়েছেন এখন ফ্ল্যাটে। সেইটা খোঁজ করার জন্য।"

- "তাতে তোর বাপের কি?" এবার কর্কশ গলায় রজত বললো, "ঐ বুড়োটাকে বলে দিস, একটা নয়, এখন দুটো মহিলা রয়েছে আমার সাথে। ওরা যা পারে করে নিক। ভয় পাই নাকি? শালা!"
 
।। আঠাশ ।।

দিবাকর চলে এল এর ঠিক আধঘন্টা পরেই। এসে যখন কলিংবেলটা বাজালো, তখন দরজা খুলল সিরিজা। দিবাকরকে দেখে বললো, "আরে দিবাকরদা, তুমি এসেছ তাহলে, শুনলাম তোমার শরীর খারাপ হয়েছে, ও বললো, তুমি না কি আসতে পারবে না?"

দিবাকর ঘরে ঢুকেই দোলনকে এক ঝলক দেখলো, বললো, "রজত ডেকেছে আমাকে, আর আমি না এসে থাকতে পারি? ও তো যখনই আমাকে তলব করেছে এক ডাকেই ছুটে এসেছি আমি।"

একেবারে সামনেই বসে আছে দোলন। দিবাকরকে এমন ভাবে দেখছিল, যেন পারলে এখুনি রাগ উগড়ে দেয়। দুই বন্ধুর সব পরিকল্পনা বানচাল করে দেবে ও। একেবারে প্রস্তুত।

দিবাকর দোলনকে দেখছে। দোলনও তাই। রজত শোবার ঘর থেকেই দিবাকরকে ডাক দিল, "দিবাকর, এদিকে এসো। এই যে আমি, এইখানে ভেতরের ঘরে।"

সিরিজা দিবাকরকে বললো, "ওর নাম দোলন। বিয়ের আগে একসঙ্গে আমরা গ্রামে থাকতাম। এখন ও একটু অসহায় হয়ে পড়েছে। তাই এখানে চলে এসেছে।"

দিবাকর সবই জানে, অথচ এই প্রথমবার যেন শুনছে, না জানার ভান করে বললো, "ও তাই তাই। তাই বুঝি?"

দাদাবাবুর বন্ধুটার সব ন্যাকামোই ধরে ফেলেছে দোলন। কিছু আর বুঝতে বাকী নেই। একটু পরেই ওকে এখান থেকে ভাগানোর নাটক শুরু হবে। এই লোকটাকে এখানে এই জন্যই নিয়ে আসা হয়েছে।

রজতের পরিকল্পনা সার্থক করার দায়িত্ব এখন দিবাকরের হাতে। ভেতর থেকে রজতের ডাক শুনে দিবাকর আর বেশিক্ষণ দাঁড়ালো না। ভেতরের ঘরে ঢোকার পরে রজত বললো, "দিবাকর দরজাটা ভেজিয়ে দাও। আমি চাই না ও বাইরে থেকে আমাদের কথা শোনে।"

দিবাকর দরজা ভেজিয়ে খাটের ওপর বসল। রজতকে বললো, "কি ব্যাপার বলো তো? মেয়েটাকে তো দেখলাম। একে নিয়েই সমস্যা নাকি?"

রজত বললো, "হ্যাঁ। সমস্যাটা ওকে নিয়েই। হয় মাথায় গন্ডগোল আছে, নয়তো একেবারে সেক্স পাগলা হয়ে গেছে এখানে এসে। আমি না পারছি ওকে ভাগাতে। না পারছি, চুদতে। সিরিজা আমার জীবনে না এলে ওকে চুদে শেষই করে দিতাম। ফড়ফড়ানি বেরিয়ে যেত। আমাকে তো চেনে না। আমার নাম রজত মল্লিক। মেয়েদের দেখলে রজত মল্লিক কখনও পালাই পালাই করে না। আরে বাবা জীবনে সেক্সটাকে এত এনজয় করলাম, আর এই দোলন মাগীটাকে আমি এত ভয় পাব? তুমি বুঝতে পারছ না? আমার সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে।"

দিবাকর খুব চিন্তিত এখন। মাথাটা নীচু করে বললো, "সবই বুঝতে পারছি। এতদিন একটাতে তোমার মন টিকছিলো না। মেয়েমানুষকে ঘনঘন পাল্টেছ জীবনে। আর এখন যখন নিজেকে পাল্টাতে চাইছো, তখনই তোমাকে এসে পাল্টাতে বাধা দিচ্ছে দোলন। ও গায়ে পড়ে তোমার মন পাওয়ার চেষ্টা করছে। সমস্যাটা গুরুতর।"

রজত বললো, "আমি পারি জানো তো দিবাকর। ইচ্ছে করলেই পারি। ও যেটা চাইছে, সেটাই করে দেখিয়ে দিতে পারি ওকে। কিন্তু মন সায় দিচ্ছে না। সিরিজার কাছে আমি ছোট হতে পারবো না। ও কি ভাববে।"

দিবাকর ওর মুখের দিকে এমন ভাবে তাকালো, যেন বুঝতেই পারে নি কথাটা। রজতকে বললো, "পারো মানে ? কি পারো তুমি?"

রজত বললো, "কিছুই নয়। ওর শরীরটাকে একদিন চটকা চটকি করে ছেড়ে দিলাম, আর কি?"

দিবাকর বললো, "তাতে লাভ কি হবে?"

রজত বললো, "তাতে লাভ তো কিছুই হবে না। সেইজন্যই তো পিছিয়ে গেলাম। নইলে আমি তো ভেবেছিলাম, যদি এরকম একটা প্ল্যান খাটানো যায়।"

- "প্ল্যান মানে কাকে? ওই দোলন মেয়েটাকে নিয়ে?"

-- "হ্যাঁ। ভেবেছিলাম। কিন্তু পরে দেখলাম সেটা করা ঠিক হবে না।"

- "তুমি দোলনকে নিয়ে সোহাগ করবে এই বাড়ীতে? তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে?"

রজত বললো, "পুরো কথাটা তো শোনো? আগে থেকে মাথা খারাপ মাথা খারাপ করে চ্যাঁচালে হবে? আমি তো আমার নিজের যৌন চাহিদার জন্য এটা মাথা খাটাই নি। খাটিয়েছিলাম ওকে একবার শর্ত দিয়ে চুদে ছেড়ে দেব বলে।"

দিবাকর হাঁ করে তাকিয়ে আছে রজতের দিকে। রজত বললো, "আমি জানি ও রাজী হত না। সেই জন্যই পিছিয়ে গেলাম।"

ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না। দিবাকর বললো, "কি রকম?"

রজত বললো, "ও তো ঢলানি করছে এখানে এসে। সিরিজাকে হিংসে করছে। ভাবছে আমাকে যদি সিরিজার মত ও লটকে নিতে পারে। পরপুরুষের সাথে সম্পর্ক পাতানোর এত সাধ। যদি আমি গলে গিয়ে ওর শরীটাকে খেতে আরম্ভ করে দিই। তাহলে আর পায় কে? কিন্তু আমি তো তা করবো না। কারন আমার বাকী জীবনে শুধু সিরিজা আছে। তাই একটা চাল চেলে ওকে রাজী করিয়ে নিতাম। ওকে বলতাম, ঠিক আছে আমি তোমার সঙ্গ দিচ্ছি। কিন্তু সেটা কেবল একরাতের জন্যই। তারপর তুমি কিন্তু এ বাড়ী ছেড়ে চলে যাবে। মানে একসাথে দুটো কাজই হল। দোলনের কামনা মিটল, আর আমারও পথের কাঁটা সরে গেল।"

দিবাকর ওর মুখের দিকে তাকিয়ে অবাক স্বরে বললো, "কিন্তু সেটা সিরিজা থাকতে কি করে সম্ভব? আর তা ছাড়া ও যদি এরপরেও এখান থেকে যেতে রাজী না হয়? তখন কি করবে তুমি?"

রজত বললো, "সেই জন্যই তো পিছিয়ে গেলাম মাই ডিয়ার। বন্ধুকে আপন মনে করে সব উগড়ে বলে দিলাম তোমার কাছে। কিন্তু এর ভালো আর খারাপ দিকটাও তো আমাকে দেখতে হবে। সমস্যা এতে কমবে না। বাড়বে বেশি।"

দিবাকর কিছু বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় দরজা ঠেলে ঘরের ভেতরে ঢুকলো সিরিজা। ওদের কে বললো, "কি করছো তোমরা? দরজাটা ভেজানো রয়েছে?"

রজত সিরিজাকে বললো, "দরজা আবার ভেজিয়ে দাও সিরিজা। নইলে ও সব শুনতে পাবে। আমি এই দোলনের কথাই দিবাকরের সাথে আলোচনা করছিলাম।"

সিরিজা বললো, "রান্না তো হয়ে গেছে। এবার তাহলে তোমাদের ভাতটা বাড়ি।"

রজত বললো, "দিবাকর কিছু খাবে না। ওর পেট খারাপ হয়েছে। একদিন উপোষ দেবে। কারন রাতে তো ওকে আবার দোলনকে সামলাতে হবে।"

রজত সিরিজাকে বললো, "তুমি আমার খাবারটা এখানেই দিয়ে যাও। বিছানায় বসেই খাবো আমি। ও ঘরে যেতে এখন ইচ্ছে করছে না।"

সিরিজা বললো, "ঠিক আছে।" বলে আবার চলে গেল।

দিবাকর বেশ চিন্তিত এখন। রজত বললো, "কি গো, তোমার আবার টেনশন শুরু হয়ে গেল না কি? দোলনকে নিয়ে চিন্তা করছো? রাত্রে ওকে কি করে সামাল দেবে?"

দিবাকর বললো, "না, ঠিক তা নয়। আমি আসলে চিন্তা করছি। মেয়েটা কি শেষ পর্যন্ত আমার কাছে যাবে?"

রজত বললো, "ও যাবে না মানে? ওর ঘাড় যাবে! জোর করে হাত পা বেঁধে নিয়ে যাবো। নইলে চ্যাংদোলা করে। তুমি একদিক দিয়ে ধরবে, আমি আর এক দিয়ে।"

দিবাকর বললো, "তুমি না, বড্ড ডেসপারেট হয়ে যাও মাঝে মাঝে। মেয়েমানুষের সঙ্গে ওভাবে জোরজবস্তি করা যায় নাকি? ও কি বাচ্চা মেয়ে? দামড়া একটা মেয়েকে ওভাবে শিক্ষা দেওয়া যায়?"

রজত বললো, "তুমি দেখতে চাও? ঠিক আছে। তাহলে ওকে নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই। তুমি সিরিজাকে নিয়েই চলে যাও। ও শালীকে চুদে আজই বারোটা বাজিয়ে দেব আমি। আজ ওর একদিন কি আমার একদিন।"

দিবাকর বললো, "রজত তুমি উত্তেজিত হয়ো না। উত্তেজিত হয়েও না। আমি দেখছি কি করা যায় ব্যাপারটা।"

কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর বললো, "তোমার শ্বশুড় তাহলে আসছে কালকে?"

রজত বললো, "বলে তো দিয়েছি। এখন এলে হয়? ঐ এক জ্বালা। শালা জ্বালিয়ে মারছে তখন থেকে। কাপড় নেবার তাগিদ দেখাচ্ছিল, এখন সিরিজাকে দেখে ওদের পিলে চমকে গেছে। ভাবছে কি চরম মস্তিটাই না করছি আমি। আরে আমি হলাম রোমিও। বউয়ের দূঃখে কি চোখের জলে ভাসাব নাকি? ওসব আগেকার দিনে হত। এখন হয় না। কেউ কারুর জন্য বসে নেই। দেখছ না এখন কেমন টাইট টা খাচ্ছে। ভেবেছিল স্বামীকে ছেড়ে সুখে থাকবে। এখন নিজেদেরই এমন জ্বলন হচ্ছে, যে ভেবে কোন কূলকিনারা পাচ্ছে না। ভাবছে এখন ডিভোর্সটাও দেবে কিনা?"

দিবাকর বললো, "ডিভোর্স যদি সত্যি না দেয়, তুমি কি করবে?"

রজত হাসতে লাগলো। বললো, "শ্বশুড়বাড়ী গিয়ে বউয়ের পায়ে পড়ব। আর বলবো, আমাকে দয়া করে ডিভোর্সটা তুমি দিয়ে দাও। আমি এ কষ্ট আর সহ্য করতে পারছি না।"

দিবাকর যেন কিছুই বুঝতে পারিনি। ভোলাভালার মতন তাকিয়ে রইলো রজতের দিকে। রজত বললো, "ওর নাকের ডগায় আমি সিরিজাকে নিয়ে যা খুশি তাই করবো। ওর চোখের সামনে দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে যাবো সিরিজাকে। ও কিচ্ছু করতে পারবে না। ডিভোর্স দেবে না আমাকে? ও ঘরও করতে পারবে না। এদিক ওদিক দুদিকই যাবে। নিজের পাঁকে নিজেই পড়ে যাবে। বুঝবে তখন রজত মল্লিক পারলে কি করতে পারে। কত ধানে কত চাল বুঝতে পারবে।"

সিরিজা খাবার নিয়ে এসে শোবার ঘরে ঢুকল। রজতকে বললো, "দোলন চুপচাপ বসে আছে। সেই থেকে কোন কথা বলছে না। আমার কেমন জানি লাগছে। কি হবে কে জানে। খুব বকা দিয়েছি ওকে।"

রজত একটু খেঁকিয়ে উঠলো। সিরিজাকে বললো, "কেন আবার বসে ফন্দী আঁটছে বুঝি? আর কোন চালাকি ওর কাজে লাগবে না। কিছুক্ষণ পরেই দিবাকর ওকে নিয়ে চলে যাবে। সব কেরামতির আজই শেষ।"

সিরিজা একবার দিবাকরের দিকে তাকালো। ভাবখানা এমন, সত্যি এ লোকটার সাথে গেলে হয়? দোলনকে নিয়ে চিন্তা করছে দেখে রজত বললো, "তুমিও তো যাবে দিবাকরের সঙ্গে। তাহলে আর চিন্তা কি?"

সিরিজা কিছু বুঝতে পারছে না। বললো, "আমিও?"

রজত বললো, "হ্যাঁ তুমিও। তবে শুধু আজ রাতটার জন্য। কালকেই আবার তোমাকে ওখান থেকে আমি গিয়ে নিয়ে আসবো।"

দোলনের সাথে সিরিজাও যাবে দিবাকরের বাড়ীতে। সিরিজা কিছু বুঝতে পারছে না। রজত কে বললো, "কেন, আমি কেন?"

রজত এবার একমুঠো ভাত মুখের মধ্যে চালান করে বললো, "মনে নেই? সেই বুড়োটা এসেছিল। তোমাকে দিবাকরের বউ সাজিয়ে দিয়েছিলাম। সে আসছে কালকে আবার শেষ বারের মতন। তাকে যতক্ষণ সামাল দেব আমি, তুমি ততক্ষণ এই ফ্ল্যাটে থাকবে না। মেয়ে কাপড় চোপড় নিয়ে বুড়ো আবার যেই কেটে পড়বে। তুমি আবার এখানে। আমার সাথে ওর টেলিফোনে কথা হয়ে গেছে।"

সিরিজা যেন একটু নিশ্চিন্ত হল এবার। ও যদি সাথে যায়, তাহলে দোলন না করবে না।

দিবাকর কি যেন ভাবছে। রজত বললো, "কি দিবাকর? তোমার সমস্যা নেই তো? এক রাত্রিরে দু-দুটো মেয়েকে রাখতে পারবে তো? তোমার আবার পিরীত জেগে উঠলে মুশকিল। আমাকে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত তোমাকেই না ছোবল বসিয়ে দিতে পারে।"

সিরিজা সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। ও ঘর থেকে বেরিয়ে চলে যেতেই দিবাকর বললো, "রজত, তুমি না যেন কি? আমি এসব করতে পারি? সবাই কি আর তোমার মত? আমি শুধু ওকে কদিনের জন্য রাখবো। তোমার একটা হিল্লে হলেই ওকে ছেড়ে দেব। তারপর ও তোমাকে খুঁজে বেড়াক না। কোথাও পাবে না।"

বসার ঘরটায় সিরিজা আর দোলন বসে খাচ্ছে। সিরিজা একবার তাকালো দোলনের মুখের দিকে। বোঝার চেষ্টা করলো, দোলনের হাবভাবটা। তারপর নিজেই বললো, "একটা সমস্যা হয়েছে দোলন, জানিস?

দোলন মাথা নীচু করে খাবারের থালা থেকে ভাত উঠিয়ে নিয়ে খাচ্ছে। সিরিজার কথা যেন শুনেও শোনে নি। সিরিজা বললো, কালকে তোর দাদাবাবুর শ্বশুড়বাড়ী থেকে লোকজন আসতে পারে। আমাকে আর তোকে সেইজন্য তোর দাদাবাবুর বন্ধুর বাড়ীতে চলে যেতে হবে। তোর দাদাবাবু চাইছে না আমরা এখানে থাকি। বললো, দোলনকে নিয়ে তুমি চলে যাও। আমি কাল সকালে তোমাদের মুখ ওদের কে দেখাতে চাই না। এখানে তোমাদের দুজনকে দেখলে বিব্রত করতে পারে।"

দোলন মুখে আবার খাবার তুলে নিয়ে খুব গম্ভীর স্বরেই বললো, "আমি এখান থেকে কোথাও যাবো না। আমি এখানেই থাকবো।"

এ কোন পাগল মেয়ের পাল্লায় পড়া গেছে? এমন জেদী মেয়ে তো দেখা যায় না। সিরিজা বললো, "তুই কি জোর করেই থাকবি এখানে? নড়বি না কোথাও? পরের অসুবিধাটার কথাটাও বুঝবি না? দাদাবাবু চাইছে না আমরা দুজনেই এখানে থাকি। তোর এই সমস্ত জেদ দেখানোর কোন মানে হয়? কিছু একটা হয়ে গেলে তখন কে সামাল দেবে?"

দোলন বললো, "আমাকে নিয়ে সমস্যা তো কিছু নেই। সমস্যাটা তো তোমাকে নিয়ে। দাদাবাবুর বউ যদি এখানে আসে, আমাকে দেখে কিছু মনে করবে না। বরঞ্চ তুমি থাকলেই অসুবিধে। ওরা সন্দেহ করতে পারে। আমি তো রীতা বৌদিকে চিনতাম। যখন বাড়ীর কাজের লোকের ব্যাপারে আমাকে বলেছিল, তখন যদি তোমায় না পাঠিয়ে নিজেই চলে আসতাম, তাহলে বোধহয় ভালো হত।"

সাংঘাতিক একটা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। সিরিজা রাগের চোটে খাবার টা পুরো না খেয়েই উঠে পড়লো। বেসিনে মুখটা ধুয়ে দোলনকে বললো, "ঠিক আছে, তুই থাক এখানে। আমিই চলে যাচ্ছি দাদাবাবুর বন্ধুর বাড়ীতে।"

মুখে একটা উৎকন্ঠার ছাপ। আজ সিরিজার অনুপস্থিতিতে দোলন যে রজতের সাথে কি করে বসবে, সেটাই সিরিজাকে ভীষন চিন্তায় ফেলে দিচ্ছে। ভয় নেই, শুধু রজত ঠিক আছে বলে। দোলনের এই ফন্দী বানচাল করে দিতে রজতের এক সেকেন্ড লাগবে। ও তবু ঠিক করলো, রজত কে বোঝানোর চেষ্টা করবে। আপাতত দোলনের ইচ্ছেটাকেই মেনে নেওয়া হোক। পরে এর ব্যাবস্থা করা যাবে। আর তাছাড়া কাল সকালে শ্বশুড় আর বউ যদি আসে, দোলনকে দেখে ওরা কিছুই সন্দেহ করবে না। সিরিজাও ফের চলে আসবে এখানে, ওরা চলে যাবার পরে।

রজতের খাওয়া শেষ, সিরিজা ভেতরের ঘরে ঢুকে রজতকে বললো, "দোলন যাবে না দিবাকরদার সাথে। বলছে, এখানেই থাকবে। আমাকে একা যেতে বলছে।"

দিবাকর কথাটা শুনে একবার তাকালো সিরিজার দিকে। রজতের চোয়ালটা আবার তখন শক্ত। যেন এখুনি চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে দেবে। থেকে থেকে একবার করে ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে দোলন, রজতের আর বুঝতে বাকী নেই।

সিরিজা বললো, "তুমি মাথা গরম কোরো না। আজকের রাত্রিটা যদি ওকে ম্যানেজ করে নিতে পারো, তাহলে আর অসুবিধে নেই। এখান থেকে ও এই মূহূর্তে নড়বে না। আমি বরঞ্চ একাই ঘুরে আসি দিবাকরদার ওখান থেকে।"

সিরিজা ঘর থেকে বেরিয়ে যাবার পর দিবাকর বললো, "তোমার প্ল্যান আর কোন কাজে এল না। অতএব এই মেয়েটাকে এখন কদিন তোমায় সামলাতে হবে। কিচ্ছু করার নেই।"

রজত বললো, "বিশ্বাস করো দিবাকর। তাও যদি ব্যাপারটা শুধু আমার শ্বশুড়বাড়ীর লোকজনকে নিয়ে হত, তাহলে নয় একটা কথা ছিল। ওতো সিরিজার দিকেও চালটা খাটাচ্ছে।"

দিবাকর বললো, "সেটা কিরকম?"

-- "সিরিজার একটা স্বামী আছে, তোমায় বলেছিলাম, জানো তো?"

- "হ্যাঁ ওতো বিবাহিত। শুনেছিলাম।"

রজত বললো, "বিবাহিতর নিকুচি করেছে। মেয়েরা এখন ইচ্ছে করলে যা খুশি তাই করতে পারে, ওদের কোন বাঁধন নেই। আমার সাথে সিরিজা যে দৈহিক সম্পর্ক তৈরী করেছে, সেটা জেনেই করেছে, ওকে কেউ আটকাতে পারবে না বলে। সমস্যা তৈরী হয়েছে, ওর পুরোন স্বামীটাকে নিয়ে। ব্যাটা জাতে মাতাল, কোন ঠিক ঠিকানা নেই। এখন গ্রাম ছেড়ে এখানেও এসে পড়েছে।"

দিবাকর চমকে উঠে বললো, "তাই নাকি? কোথায়?"

-- "ও দোলনের কাছে দু একবার এসেছিল, সিরিজার খোঁজ করতে। দোলন এখানকার ব্যাপারে কিছু বলেনি ওকে। এখন ও জানে আমি যতই জেদ দেখাই, এরা কিছুই করতে পারবে না আমাকে। বেশি কিছু করলে ওই সিরিজার স্বামীকে বলে দেবে। লোকটা তখন এখানে এসে ঝেমেলা করবে।"

- "কি বুদ্ধি!"

-- "বুদ্ধি মানে একেবারে পাকা বুদ্ধি। এমনি এমনি কি আর গায়ের জোর দেখাচ্ছে! ও মেয়ে সব জানে। একেবারে চক্রান্ত করেই এসেছে এখানে।"

দিবাকর এবার একটু বাইরের ঘরের দিকটায় লক্ষ্য করে রজতকে আসতে আসতে বললো, "তুমি তাহলে কি করবে? মেয়েটা যদি আজ রাতে তোমাকে একা পেয়ে উল্টোপাল্টা কিছু করে বসে? একবার তো চুমু খেয়েছে তোমার ঠোঁটে। এবার?"

রজত বললো, "ধরে নাও, ও যেচে কিছু করতে এলেও আমি কিছু করবো না। কারণ আমি এখন সভ্য হয়ে গেছি। অসভ্যতামিটা আর যাই হোক সিরিজা ছাড়া আর কারুর সাথে করতে পারবো না। আমার বিবেক আমাকে বাঁধা দেবে।"

দিবাকর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো, "যাই বলো, মেয়েটাকে তো ও ঘরে দেখলাম। কোথায় সিরিজা আর কোথাও ও। সিরিজার সাথে কোন তুলনাই চলে না। পুরুষমানুষের কাছে হুমড়ী খেয়ে পড়লেই হয়? শরীরটাও তো আকর্ষনীয় হওয়া চাই।"

দিবাকরের মুখে সিরিজার প্রশংসা। রজত বললো, "তুমিও তো দিওয়ানা হয়ে গিয়েছিলে। মনে নেই?"

দিবাকর একটু লজ্জা পেল, বললো, "কেন সিরিজা কি তোমায় কিছু বলেছে?"

রজত প্রসঙ্গটা ঘুরিয়ে নিয়ে বললো, "এই জিনিষ কখনও বলতে হয় না। সব বোঝা যায় দিবাকর। যাকগে ছাড়ো এসব কথা। আমি এমনি বলছিলাম। তোমার ওপর বিশ্বাস না থাকলে কি সিরিজাকে তোমার সাথে ছাড়তাম? আমার কঠিন পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সবাই মজা লুটছে এখন থেকে। তোমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলে সেও সিরিজাকে নিয়ে ছেলেখেলা করত। আমি তখন বুড়ো আঙুল চুষতাম।"

দিবাকর বললো, "যাকগে, এটা নিয়ে আর টেনশন কোরো না। মাত্র তো এক রাতের ব্যাপার। আমি সিরিজাকে নিয়ে যাচ্ছি, কালকে ওরা চলে গেলেই আমি আবার সিরিজাকে দিয়ে যাবো তোমার এখানে। তুমি শুধু দোলনকে কি করে ম্যানেজ করবে, সেটা দেখ।"

একটু হতাশ হয়েই রজত বললো, "কত প্ল্যান করেছিলাম জানো? ভাবলাম, সিরিজাকে নিয়ে কদিন বাইরে কোথাও গায়ে হাওয়া লাগিয়ে আসবো, তুমিও যেতে আমাদের সঙ্গে। অফিস থেকে ছুটিও নিলাম। যখন ঠিক করলাম, বাইরে কোথাও ঘুরে আসবো। তখনই এসব বিপত্তি। মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল। কবে যে আমার বাইরে যাওয়াটা সার্থক হবে কে জানে? এই দোলন, অপদার্থ ছুঁড়ী, এসে সব গন্ডগোলটা পাকিয়ে দিল।"

দিবাকর বললো, "সব হবে। সব হবে রজত। তুমি মন খারাপ কোরো না। তোমার সিরিজাকে নিয়ে দেখা স্বপ্ন বিফলে যাবে না।"

রজত একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে বললো, "তাই যেন হয়। তোমার কথা যেন সত্যি হয়।"

একটা সিগারেট ধরালো দিবাকর। রজতকে বললো, "এই কদিনে কত পাল্টে গেছ তুমি, আমার দেখা রজত, আর এখনকার যে রজতকে আমি দেখছি, আকাশ পাতাল তফাত। সত্যি সিরিজার কোন জবাব নেই। একবারে মানুষ করে দিল আমার বন্ধুটাকে। মেয়েটা যে জাদু দিয়ে বশ করেছে তোমাকে, অনেক মেয়েই তা পারবে না।"

রজত বললো, "সিরিজাকে পাওয়া মানে একরাশ তৃপ্তি। ওর সঙ্গে কারুর তুলনা চলে না। আমি কেন ওর জন্য এত পাগল সেটা নিশ্চয়ই বোঝাতে হবে না তোমাকে। নইলে থেকে থেকেই মেয়েমানুষের সঙ্গ পাল্টানো যার মতিগতি। তার এই অভাবনীয় পরিবর্তন শুধুমাত্র সিরিজার জন্যই। ও ছাড়া এটা সম্ভব হত না।"

বেশিনের সামনে গিয়ে এবার এঁটো হাতটা ধুয়ে নিল রজত। একবার তাকালো দোলনের দিকে। যেন ভাবখানা এইরকম, "তোমার মোকাবিলা করার জন্য আমি এখন তৈরী দোলন, এসো দেখি, এবার কটা চুমু তুমি খেতে পারো আমাকে!"

দোলন মুখটা তুলে রজতের দিকে একবার তাকালো। রজত হাত ধুয়ে আবার চলে এল দিবাকরের কাছে।

একটা সিগারেট ধরিয়ে দিবাকরকে বললো, "সিরিজার মনটা খুব নরম, এই দোলন মেয়েটার মত এত হিংসুটে নয়। দেখলে না রেশমিকে খোঁজার জন্য এককথায় বেরিয়ে পড়লো আমার সাথে। অন্যের জন্য দরদ দেখাতে ও কখনও পিছপা হয় না। এবার রেশমিকে ও রাজী করিয়ে আবার ঠিক তোমার সাথে মিলন ঘটিয়ে দেবে। দেখো, আমার কথা কেমন মিলে যায়।"

দিবাকর বললো, "আমারও তাই মনে হচ্ছে। এতটা কনফিডেন্স কারুর মধ্যে এমন দেখিনি। আমার খুব অবাক লেগেছিল, যখন শুনলাম....."

রজত বললো, "শুধু রুপ আর শরীর নয়। সিরিজার গুনটাও তুলনাহীন। সাধে কি এমনি এমনি ওর জন্য পাগল হয়েছি। আমি বোধহয় অনেক তপস্যা করেছিলাম, তাই ওর মতন কেউ এসে আমার কাছে জুটলো।"

সিরিজা আবার ঘরে ঢুকলো, রজত আর দিবাকরকে উদ্দেশ্য করে বললো, "আমরা কখন বেরোবো তাহলে? এখন তো সবে তিনটে বেজেছে। তোমরা বসে গল্প করছো, তাই একবার জিজ্ঞেস করতে এলাম।"

রজত বললো, "তাড়া কিসের এত আমার জান? সন্ধে সন্ধে গেলেই হবে। ততক্ষণ এসো, তুমিও বসো। তোমাকে একটু আদর করি।"

দিবাকরের একটু ক্ষনিকের অস্বস্তি। রজতকে বললো, "তুমি একটু সিরিজার সাথে কথা বলো, আমি বরং ওঘরে গিয়ে দোলনের সঙ্গে ভাব জমাই।"

রজত বললো, "দেখো দেখো, আমার বন্ধুটা কেমন লজ্জা পাচ্ছে। যেই আদর করার কথা বললাম, অমনি দোলনের নাম করে কেটে পড়তে চাইছে। দিবাকরের আর লজ্জা কিছুতেই গেল না।"

পাশের ঘরে তৎক্ষনাৎ চলে গেল দিবাকর। সিরিজার হাতটা ধরে টেনে ওকে নিজের পাশে বসালো রজত। একটা হাত সিরিজার বুকের ওপরে রেখে, ভারী স্তন দুটোর ওপরে মৃদু চাপ দিয়ে নিজের অধিকার প্রয়োগ করে রজত বললো, "কি, আমার জন্য চিন্তা হচ্ছে? ভাবছ, আমার কি হবে? তাই তো?"

সিরিজা বললো, "কই না তো। সেরকম কিছু তো ভাবিনি।"

রজত মুখটা নিয়ে গেল সিরিজার ঠোঁটের খুব কাছে। ওকে বললো, "সত্যি বলছো?"

আস্তে আস্তে সিরিজার বুকের ওপরে হাতের চাপটা আরও বাড়াচ্ছে। স্তন হাতে নিয়ে টিপতে যেন কত ভালো লাগে। একবার দুবার একটু মোলায়েম করে হাতের সুখে টিপতেই সিরিজা বলে উঠলো, "এই ছাড়ো, ও ঘরে দিবাকরদা আর দোলন রয়েছে। এক্ষুনি আবার নয়তো সমস্যা তৈরী হবে।"

রজত বললো, "দিবাকরকে তো ঐজন্যই ও ঘরে পাঠিয়েছি, যাতে দোলনকে ততক্ষণ সামাল দিয়ে রাখে, আর এই ঘরে আমি তোমাকে একটু আদর করি। দাও না গো, তোমার বুক দুটোকে হাত দিয়ে একটু টিপতে।"

সিরিজার দামাল বুক দুটো রজত হাত দিয়ে টিপতে টিপতে একেবারে অস্থির। চোখে চোখ রেখে একটাই কথা, "কি আছে গো তোমার মধ্যে? গভীরে ডুব দিয়ে আর উঠে আসা যায় না। ডুবে মরতে হয়। আমি এ মরা মরতে রাজী সিরিজা। দাও না একটু বুকভরা আদর করতে।"

দুটো মাই হাত দিয়ে টিপতে টিপতে রজত যে এবার একটা কিছু বাড়াবাড়ি রকমের আদর করে বসবে সিরিজা বুঝতে পারছিল। ও অশান্ত হয়ে ওঠার আগেই সিরিজা বললো, "এ সব তোমার পাওনা থাকবে, কালকের দিনটা পার হলেই। আমি কাল ফিরে আসি, তারপর তুমি যত খুশি আমার বুক টিপো।"

সিরিজার ব্লাউজের মধ্যে রজতের হাত অবাধে বিচরণ করছে। মুডটা যেন ভালো হয়েছে, আগের থেকে। ওর ঠোঁটে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে বললো, দোলনের ওপর সত্যি তোমার খুব রাগ হচ্ছে, না? "এসে থেকে খালি জ্বালিয়ে খাচ্ছে।"

সিরিজা বললো, "কেন, তোমার রাগ হচ্ছে না? খুব তো রাগ দেখিয়ে বেরিয়ে গেলে তখন ঘর থেকে। এখন বুঝি রাগ পড়ে গেল?"

রজত সিরিজার ঠোঁটে আবার একটা চুমু খেয়ে বললো, "আমার সিরিজা আমার পাশে থাকলে আমার সব রাগ পড়ে যায়। বুঝতে পারছ না? আমার মুডটা কেমন ভালো হচ্ছে আস্তে আস্তে।"

মুখটা ক্রমশই সিরিজার বুকের মধ্যে ডুবিয়ে দিচ্ছিল রজত। সিরিজা বললো, "ওদিকে ওনারও মেজাজ এখন খুব ভালো। আমাকে তোমার এখান থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে ছুঁড়ি। ও কে এখন পায় কে?"

রজত মুখটা তুলে বললো, "কার কথা বলছো তুমি? দোলন? কে তোমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছে?"

সিরিজা দোলনের কথাই বলতে যাচ্ছিলো, রজত বাধা দিয়ে বললো, "দূর, তুমি ক্ষেপেছো? অতই সস্তা? তোমাকে তাড়াবে এখান থেকে কার এত সাধ্যি? ওর ঘাড়ে কটা মাথা আছে? আমি তো তোমার জন্যই সব চুপ করে হজম করছি সিরিজা। নইলে?"

সিরিজা রজতের মুখের ওপর হাত চাপা দিয়ে বললো, "না না। থাক। তোমাকে কিচ্ছু করতে হবে না। ওই নিজের ভুল বুঝতে পারবে একসময়। শুধু আমার জন্যই আজকের রাতটা ওকে শুধু মানিয়ে নিও। আমি অনুরোধ রাখছি তোমার কাছে।"

সিরিজাকে নিবিঢ় আলিঙ্গন করে উষ্ণ পরশে রজত একটু যৌনসুখের ঝঙ্কার তুলতে চাইছিল। ওর ঠোঁট ক্ষনিকের জন্য সিরিজার ঠোঁটের সাথে মিশে গেছে, এমন সময় পাশের ঘর থেকে দিবাকরে গলার আওয়াজ এলো। দিবাকর দোলনকে বলছে, "তুমিও তো যেতে পারতে আমার বাড়ীতে। অসুবিধে কি ছিল? অসুবিধে না থাকলে চলোই না। কাল আবার তোমাকে দিয়ে যাবো, এ বাড়ীতে।"

রজত আর সিরিজা দুজনেই খেয়াল করলো, দিবাকরের কথায় কোন উত্তর দিচ্ছে না দোলন। অনেকক্ষণ চুপচাপ।

দিবাকর উত্তর না পেয়ে আবার বললো, "কি যাবে? ইচ্ছে করছে? না করছে না?"

এবারে একদম সটান জবাব দিল দোলন। দিবাকরকে বললো, "আপনি সিরিজাকে নিয়েই যান না। আবার আমাকে ধরে টানাটানি কেন? সমস্যা দূর করার জন্য একজনকে নিয়ে গেলেই তো হবে।"

- "তুমি যাবে না তাহলে?"

দোলন বললো, "আপনারা সবাই এরকম উঠে পড়ে লেগেছেন কেন বলুনতো আমার পেছনে? বললাম তো যাবো না। কত বার বলব? একবার সিরিজাকে, একবার আপনাকে। এবার দাদাবাবুও এসে জিজ্ঞেস করবেন। তাকেও বলতে হবে এই একই কথা। আমি তো কোথাও যেতে চাই না। বলছি তো একচুল নড়বো না এখান থেকে।"

দোলনের কাছে ধ্যাতানি খেয়ে দিবাকর গেল চুপ করে। রজত, সিরিজা দুজনেই এবার বেরিয়ে এল ভেতরের ঘর থেকে। বাচ্চাটার হঠাৎই ঘুম ভেঙে গেছে। আবার কান্নাও শুরু করে দিয়েছে। সিরিজা বাচ্চাটার কান্না থামানোর জন্য ওর দিকে এগিয়ে গেল। রজত দিবাকরকে উদ্দেশ্য করে বললো, "ওকে কিছু বোলো না দিবাকর। ওর যাওয়ার দরকার নেই। আমি বুঝে নিচ্ছি ব্যাপারটা। তোমরা বরঞ্চ এবার যাবার জন্য রেডী হও।"

দোলন একবার তাকালো রজতের দিকে। মুখে কিছু বললো না। কিন্তু দোলনের চোখের দিকে তাকিয়ে রজত অনুভব করলো কোন এক অভিসন্ধি ঘটানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সে। মুখমন্ডলীর মধ্যে কামের আভাস। ঝড় ওঠার পূর্ব লক্ষণ। দিবাকর আর সিরিজা এ ফ্ল্যাট ছেড়ে গেলেই যেন আছড়ে পড়বে সে।


পঞ্চম পর্ব সমাপ্ত
 
ষষ্ঠ অধ্যায়
।। উনত্রিশ ।।


সন্ধে হওয়ার একটু আগেই দিবাকর চলে গেছে সিরিজাকে নিয়ে। দুজনকে এগিয়ে দিতে রজত চলে এসেছিল রাস্তার মোড়ে। সিরিজাকে ছাড়ার আগে রজত আর উপভোগ্য আদরটুকু করতে পারেনি ওকে। মনের মধ্যে আফশোসটা নেই, কিন্তু দোলনকে নিয়ে দুশ্চিন্তা একটা রয়ে গেছে রজতের মনে মনে। সিরিজা থাকাকালীনই যে স্পর্ধা দেখিয়েছিল দোলন, ওর অনুপস্থিতিতে সেটা যে কোন পর্যায়ে যাবে, তা এখনও রজতের অজানা। মুখে যতই বলুক, রজতের কিছুটা হলেও একটা আশঙ্কা রয়েছে দোলনকে নিয়ে। দিবাকরকে যতই ও বোঝাক, দোলনকে ও ভয় পায় না। বলে দেখানো ব্যাপারটা যতটা সহজ, করে দেখানো কাজটা মোটেই সহজ নয়।

ঘরে ফিরেই দেখলো, দোলন একটা ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখছে। টেবিলের তলায়, কোথায় জানি ওটা রাখা ছিল। দোলন ম্যগাজিনটা টেনে হাতড়ে বার করেছে। যৌন ম্যাগাজিনটা দোলন চোখ বড় বড় করে দেখছে, রজত একটু অস্বস্তি বোধ করলো। দোলনকে বললো, "ওটা কি বার করেছো? রেখে দাও। সব কিছু ওভাবে দেখতে নেই।"

দোলন যেন ভ্রুক্ষেপ করলো না রজতের কথাটায়। ওর হাত থেকে ম্যাগাজিনটা কেড়ে নিয়ে রজত বললো, "এসব কে দেখতে বলেছে তোমাকে? আমাকে জিজ্ঞেস না করে কোন কিছুতে হাত দেবে না বুঝেছো?"

ম্যাগাজিনটা হাতে নিয়ে চলে এল শোবার ঘরে। দোলনও চলে এল রজতের পিছু পিছু।

পেছনে ফিরে ওর দিকে তাকিয়ে রজত বললো, "কি ব্যাপার? কি চাই তোমার?"

দোলন বললো, "সিরিজা কি কালকে সকালেই চলে আসবে আবার?"

রজত একটু বিরক্ত। মুখে বললো, "হ্যাঁ কালই তো আসবে। তবে সকালে নয়। একটু বিকেলের দিকে। কেন তোমার কি অসুবিধা? বলো আমাকে।"

-- "না তেমন কিচ্ছু নয়। এমনি জিজ্ঞেস করলাম।"

আলনাতে রজতের গেঞ্জী পায়জামা, সব ঝুলছে। প্যান্টটা ছেড়ে ড্রেসটা চেঞ্জ করতে হবে। দোলনকে মুখের ওপরেই বললো, "তুমি একটু ও ঘরে যাও দোলন, আমি জামাকাপড় ছাড়বো।"

বলা সত্ত্বেও অসভ্যের মতন দাঁড়িয়ে রইলো দোলন। রজত বেশ বিরক্ত হয়েই বললো, "কি হলো? বললাম না ও ঘরে যেতে। আমি ড্রেস চেঞ্জ করবো।"

-- "আমি কি এখন চা করবো?"

রজত বললো, "না, দরকার নেই।"

দোলন মাথায় একটা হাত দিয়ে চুলকোতে লাগলো। রজত বললো, "কি হলো?"

-- "না মানে আমার খেতে ইচ্ছে করছে। তাই ভাবলাম, তোমার জন্যও বানিয়ে দিই কিনা....."

রজত বললো, "তোমার খেতে ইচ্ছে করলে, তুমি বানিয়ে খাও। আমার জন্য তোমাকে চা বানাতে হবে না।"

-- "চা বানিয়ে আমি একা খাবো? সিরিজা থাকলে তো তখন তুমিও খেতে।"

- "ওফ আবার সেই এক কথা। সিরিজার ভূত চেপেছে তোমার মাথায়। বলছি তো খাবো না। শুধু শুধু আমায় বিরক্ত করছো।"

একটু রাগ দেখিয়ে দোলন বললো, "ঠিক আছে, আমিও খাবো না তাহলে। সিরিজা না আসা অবধি এ বাড়ীতে আর চা হবে না।"

রাগ দেখিয়ে আবার পাশের ঘরে চলে এল দোলন। রজত দরজাটা আলতো করে ভেজিয়ে প্যান্টটা ছেড়ে এবার পাজামা গলাতে লাগলো আসতে আসতে। সবে মাত্র পাজামাটা গলিয়েছে। প্রায় দু তিন সেকেন্ডের ব্যবধানেই দোলন আবার ভেজানো দরজাটা ঠেলে ঢুকে পড়লো রজতের শোবার ঘরে।

প্রায় চমকে উঠেছে রজত। আর একটু হলেই ওর দৃঢ় আকারের লিঙ্গটা দোলন দেখতে পেত সচক্ষে এই ঘরের মধ্যেই। কুটকুটানির কি শেষ নেই? সিরিজা যাওয়ার পরেই খেলা শুরু করে দিয়েছে এখন থেকেই।

- "কি হলো? তোমাকে বললাম না ও ঘরে যেতে। আমাকে জিজ্ঞেস না করে যখন তখন এ ঘরে ঢুকছো কেন? ঢুকবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি।"

রজতের বকানিকে কোনরকম গ্রাহ্য না করেই দোলন বললো, "সিরিজা তো রান্না করেই গেছে, রাতের রুটিটা খালি করতে হবে। আমি কি করে দেব? তুমি কটা রুটি খাও গো রাত্রে?"

রজত বললো, "আমি কিছু খাবো না। তুমি খেয়ে দেয়ে শুয়ে পড়ো।"

দোলনের যেন পছন্দ হয় নি রজতের উত্তরটা। মুখখানা একটু ব্যাজার মত করে ও বললো, "মানে? খাবে না কেন?"

- "খাবো না। তাতে তোমার কি? তোমার এত কি অসুবিধে হচ্ছে দোলন? আমি কি খাবো না খাবো, সেটাও কি তোমাকে কৈফিয়ত দিতে হবে না কি দোলন? সেই থেকে আমাকে বিরক্ত করছো। বলছি তো খাবো না। তুমি রাত্রে যেকটা রুটি খাও। নিজে বানিয়ে নিয়ে খেয়ে শুয়ে পড়ো। আমাকে বিরক্ত করতে এসো না। আর হ্যাঁ এখন ও ঘরে গিয়ে বসো। আমাকে ডিস্টার্ব কোরো না। আমি কিছুক্ষণ এখন ঘুমোবো। কেউ এলে আমাকে জিজ্ঞেস না করে দরজা খুলবে না। রাতে তোমার খাওয়া হয়ে গেলে আমাকে একবার জাগিয়ে তুলবে। ও ঘরে তোমার শোবার ব্যবস্থাটা করে দেব। তারপর আমি এসে আবার এ ঘরে শোব।"

একটু বেশ করুন মত করে মুখটা, দোলন বললো, "তুমি কি এ ঘরে একা শোবে?"

রজত বললো, "হ্যাঁ। একাই তো শোব। কেন?"

-- "আমি ও ঘরে আলাদা শোব?"

- "তা ছাড়া কি? তোমাকে কি রাত্রে আমি পাশে নিয়ে শোব দোলন? কি বলতে চাও তুমি দোলন?"

রজতের কথার উপযুক্ত কোন জবাব না দিতে পেরে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো দোলন। বুঝতেই পারছিল, সিরিজা নেই, কিন্তু রজত যেন মানসিক ভাবে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দোলনের চক্করে পা ফাঁসাতে ও একেবারেই নারাজ। কিছুতেই ওর মায়াবী ছলনার জালে পড়তে রাজী নয়। সিরিজাকে যেন রজত কথা দিয়েছে, আমি দোলনকে যতটা সম্ভব দূরে সরিয়ে রাখব, আজকের রাতটুকুর জন্য। কিছুতেই ওকে নিজের কাছে ভীড়তে দেব না। তুমি নিশ্চিন্ত হয়ে দিবাকরের বাড়ী যেতে পারো এবার। তোমার আর কোন চিন্তা নেই।

ট্যাক্সি থেকে দিবাকর নামল সিরিজাকে নিয়ে। ভাড়াটা মিটিয়ে সিরিজাকে বললো, "এসো সিরিজা, এবার আমার কুটীরে পদার্পন করো।"

বাচ্চাটাকে সাথে নিয়ে এসেছে সিরিজা, দোলনের ওপর ভরসা না করেই। দিবাকরের পিছন পিছন ও ঢুকলো দিবাকরের একতলার বাড়ীতে। দরজার তালা খুলল দিবাকর। সিরিজাকে বললো, "এসো ঢোকো। কাল সকাল অবধি তুমি এখন আমার জিম্মায়। এখানে তোমার আর কোন চিন্তা নেই।"

বাচ্চাটাকে একজায়গায় শুইয়ে সিরিজা দিবাকরের ঘরের ভেতরটা ভালো করে দেখতে লাগলো। একা থাকে লোকটা। অথচ নিজের ঘর দোর কেমন সাজানো গোছানো অবস্থায় রেখেছে। কোথাও কোন জায়গা অগোছালো নয়। একেবারে পরিপাটি সুন্দর করে সাজানো।

সিরিজা বললো, "তুমি একা থাকো, তোমাকে দেখে মনেই হচ্ছে না। এত সাজানো গোছানো ঘরটা। বউ এসে দেখলে তো অবাক হয়ে যাবে।"

দিবাকর একটু হাসল। বললো, "আগে বউ তো আসুক। তারপর দেখা যাবে। আমার কপালে সেরকম আর কেউ জুটলো কোথায়?"

সিরিজা বললো, "তোমার এ বাড়ীতে কোন মেয়েমানুষ আসে নি আগে?"

দিবাকর বললো, "মেয়েমানুষ?"

- "রেশমী এসেছিলো কোনদিন?"

সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে দিবাকর বললো, "একদিনই এসেছিল। তাও প্রথম দিকে। তারপর যখন রজতের সাথে মেলামেশা শুরু করলো, আর আসেনি আমার এখানে।"

একটু হেসে সিরিজা বললো, "আর এখন যদি আবার আসে?"

-- "সবই তোমার ওপর নির্ভর করছে সিরিজা। তুমি কিভাবে ওকে রাজী করাবে, তার ওপর। হলে সব তোমার কৃপায় হবে।"

সিরিজা বললো, "সেদিন আসতে খুব বেশি দেরী নেই। আর তো কিছুদিন বাদেই আমাদের দেখা হচ্ছে। এবার রেশমী তোমার বউ হবে। দিবাকরদার তখন আর কোন চিন্তা থাকবে না।"

মুখটা একটু নীচু করে নিল দিবাকর। যেন ক্ষনিকের একটা লজ্জা। শহরের একটা পোড় খাওয়া লোককে গ্রামের মেয়েটা লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে, প্রেম ভালোবাসার অনুভূতিগুলো সব এরকমই হয়। ও বললো, "আমি আশায় দিন গুনছি, দেখি কি হয়?"

বাচ্চাটাকে যেখানে শুয়েছিল, সিরিজা ওর পাশেই বসতে যাচ্ছিলো, দিবাকর ওর শোবার বিছানাটা দেখিয়ে বললো, "ওখানে নয়, তুমি এখানে বসো সিরিজা। এখানে। রাত্রে বাচ্চাটাকে নিয়ে এখানেই শোবে তুমি।"

সিরিজা বললো, "বারে, তুমি কোথায় শোবে তাহলে?"

দিবাকর বললো, "আমার শোবার ব্যাপারে তোমাকে চিন্তা হবে নাকি? দূর। আমি ঠিক কোথাও শুয়ে রাতটা কাটিয়ে দেব।"

একটু হেসে সিরিজা বললো, "এক সাথে শুলে কি হয়? তোমার লজ্জা করছে এখনও?"

দিবাকর মাথাটা চুলকে বললো, "তুমি এখন রজতের আমানত। তোমার পাশে আমি শুলে ওর সাথে বেইমানি করা হবে। ব্যাচারা দোলনকে নিয়ে এত টেনশনে পড়ে গেছে আমি যেচে আবার ওর টেনশন বাড়াই?"

বলেই একটু হেসে ফেললো দিবাকর।

- "বন্ধুকে তো খুব ভালোবাসো। তোমার বন্ধুও তোমাকে খুব বিশ্বাস করে। নইলে আমাকে কি তোমার সাথে পাঠাতো?"

-- "আমি জানি সিরিজা। রজত আমাকে কত বিশ্বাস করে। তার মর্যাদা দিতে জানি আমি। একবারই ভুল হয়ে গিয়েছিল, আর ভুল হবে না আমার।"

সিরিজা বললো, "তোমাকে নিয়ে তো ওর চিন্তা নেই। চিন্তাটা দোলনকে নিয়ে। কি যে কান্ডকারখানা শুরু করেছে। আজ রাতে না আবার উল্টোপাল্টা কিছু করে না বসে।"

দিবাকর বললো, "তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো সিরিজা। রজত যেভাবে আমাকে আশ্বাস দিয়েছে, ও কিছুই করতে পারবে না। দোলনকে রজত ভীড়তেই দেবে না আজকে। আমি বলছি, দেখে নিও, আমার কথা মিলিয়ে নিও, তাই হবে।"

সিরিজা তবু যেন একটু চিন্তিত, মনের ভাবটা গোপন না করে বললো, "আমাকেও ভরসা দিয়েছে রজত এ ব্যাপারে। আমি তো ওকে নিয়ে ভাবছি না। ভাবছি দোলনকে নিয়ে।"

দিবাকর সিরিজাকে সান্তনা দিয়ে বললো, "দূর কিচ্ছু হবে না। তুমি খামোকা উতলা হচ্ছো। কালকে আমার সাথে আবার ও বাড়ী যাবে, দেখবে সব ঠিক আছে আবার আগের মতন।"

সিরিজা বললো, "আমরা এখানে এসে গেছি, ওকে একবার ফোন করে দেখ না, কি করছে এখন?"

দিবাকর রজতকে লাইনটা মেলাতেই যাচ্ছিলো। সিরিজা বাধা দিয়ে বললো, "না না, থাক থাক। এখন নয়। ফোনটা বরং একটু পরের দিকে কোরো। রাত্রে শোবার সময়।"

দিবাকর বললো, "আমি না করলেও, ও ঠিক করবে। একটু দেখে নিই। তারপরে না হয় করবো।"

সিরিজার দিবাকরের বিছানায় এবার একটু গড়াতে ইচ্ছে করছে। ওকে দিবাকর বললো, "আমার অবস্থাটা জানো তো? অনেকটা রজতের মতই। রান্নাটা ঘরে সবসময় করতে পারি না। হোটেল থেকে খাবার এনে খেতে হয়। কাল ঐ খাবার খেয়েই যত বিপত্তি। এখন ভাবছি অল্প করে কিছু রাতের খাবার কিনে নিয়ে আসি সামনের হোটেলটা থেকে। তুমিও তো খাবে। আমি আসা না পর্যন্ত তুমি ততক্ষণ না হয় খাটে শুয়ে একটু বিশ্রাম করো। আমি এক্ষুনি আসছি। আর হ্যাঁ। আমার মোবাইল ফোনটাও রেখে গেলাম, তোমার কাছে। রজত ফোন করলে, ওর সাথে কথা বোলো।"

দরজাটা খুলে দিবাকর বেরোতেই যাচ্ছিলো,সিরিজা পেছন থেকে হঠাৎ ওকে ডাক দিল। - "শোন দিবাকরদা।"

দিবাকর দাঁড়াল, বললো, "বলো কি বলছো?"

সিরিজা বললো, "তুমি কিন্তু আমার পাশেই শোবে দিবাকরদা। তোমার অত ভয় নেই। বিশ্বাস করে একা একা তোমার বাড়ীতে চলে এলাম। আর এইটুকু বিশ্বাস করতে পারবো না তোমাকে?"

সিরিজার কথা শুনে লজ্জা পেয়ে আর দাঁড়াতে পারলো না দিবাকর। বললো, "ঠিক আছে, ঠিক আছে, ও দেখা যাবে পরে। আমি খাবার টা তাড়াতাড়ি নিয়ে আসি বরং দোকান থেকে। তোমাকে অভূক্ত রেখে দিলে রজত আমার ওপর রাগ করবে আবার।"

ঘর থেকে বেরিয়েই খুব কাছেই খাবারের দোকান। দিবাকর পা চালিয়ে জলদি হেঁটে দোকানটার কাছে গিয়ে পৌঁছল। একটা বউ চাটু তে গরম গরম রুটি সেঁকছে বাইরের দিকটায় বসে। ভেতরে একটা জোয়ান লোক খদ্দেরদের তদারকি করছে। বাচ্চা দুটো ছেলে খাবার পরিবেশন করছে কাস্টমারদের ফরমাইশ অনুযায়ী। সামনে বসা বউটা দিবাকরকে বললো, "কি দিবাদা? কি লাগবে বলো? রুটি মাংস?"

স্বামী স্ত্রী দুজনে মিলে খাবারের হোটেলটা চালায়। এই মহল্লাতে অনেক পুরোন বাসিন্দা। দিবাকরকে অনেক দিন ধরেই চেনে। মাঝে মাঝে এখান থেকে খাবার নিয়ে যায় দিবাকর। বউটা দিবাকরকে বললো, "রুটির সাথে মাছ নেবে? না মাংস নেবে?"

দিবাকর বললো, "যেটা ভালো হয় দাও। মাছ ভালো থাকলে মাছই দাও। নয়তো মাংসের কারী। সাথে তরকারী কিছু আছে?"

বউটা বললো, "হ্যাঁ ভালো আলু পটলের তরকারী হয়েছে। নেবে?"

দিবাকর বললো, "দাও তাহলে। কত তোমার রুটি তরকারী আর মাংস?"

বউটা বললো, "রুটি কটা নেবে তো বললে না?"

- "আমার একার আর কটা লাগবে? দাও ঐ পাঁচটা মতন।"

বউটা দিবাকরের মুখের দিকে একটু অবাক চোখে তাকালো। বললো, "সেকি, তোমার সাথে যে এক মহিলাকে দেখলাম। বিয়ে করেছো বুঝি? দুজনের জন্য কেবল পাঁচটা?"

একটু হকচকিয়ে গেল দিবাকর। বললো, "তুমি আবার কখন দেখলে?"

-- "ঐ যে ট্যাক্সি থেকে যখন তোমরা নামলে। সাথে তো একটা বাচ্চাও দেখলাম। কবে তুমি বিয়ে করলে? আর কবে তোমার বাচ্চা হল গো? আগে তো দেখিনি কোনদিন।"

বউটার নাম অনীমা। দিবাকর বললো, "অনীমা তুমি পারো বটে। মেয়েছেলে সাথে থাকলেই কি আর বউ হয়ে যায় নাকি? আরে ও তো আমার বন্ধুর বউ। বন্ধুও অফিস ডিউটি করে আসবে আজকে। একটু বেশি রাত হবে। বউ তাই একটু আগে চলে এসেছে।"

বউটা শুনে বললো, "ও তাই? আমি বুঝতে পারিনি। ভাবলাম, তোমার তাহলে এতদিনে একটা হিল্লে হল। যা বাবা। বন্ধুর বউ যখন তাহলে আর শুনে কি হবে?"

দিবাকর হাসছিল অনীমার কথা শুনে। বললো, "না তোমার ঠেলায় আমাকে এবার বিয়েটা করতেই হবে দেখছি। নইলে রেহাই নেই।"

ভেতরে তদারকি করা জোয়ান লোকটা তখন অনীমা আর দিবাকরের কথা শুনে বেরিয়ে এসেছে। দিবাকরকে বললো, "আমার বউ তোমার কথা সবসময়ই বলে। তুমি এখান থেকে খাবার কিনে নিয়ে যাও। ও প্রায়ই বলে, দিবাকরদার জন্য আমার খুব চিন্তা হয়। একটা যদি বিয়ে করে ফেলত? কষ্ট করে দোকান থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া। বউ না জুটলে ব্যাচারীর বড় কষ্ট। নিজের খদ্দেরকে এভাবে হাতছাড়া করতে কে চায়? আমরা দুজনেই তোমার কথা খুব ভাবি। দোকানদারি চালাই কিন্তু অপরের দূঃখ কষ্ট আমরাও বুঝি।"

অনীমার হাত থেকে মাংস রুটি আর তরকারীর প্যাকেটটা নিয়ে দিবাকর বললো, "কত হয়েছে বলো তো? আরে আমার যেন বিয়ে করলেই সব সমস্যা মিটে যাবে। এখানে তোমার দোকানের এত ভালো রান্না। অত সহজে আমি ছেড়ে দেব? বিয়ে করেও রোজ খাবার নিয়ে যাবো এখান থেকে। অত সহজে এখানে আসা আমি ছাড়ছি না।"

খাবারের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে দিবাকর এবার রওনা দিল ঘরে ফেরার দিকে। বাড়ী ফিরে সিরিজাকে এবার জিজ্ঞেস করতে হবে, রজত ফোনটা করেছিল কিনা?

দিবাকর বেরিয়ে যাবার পর সিরিজা কিছুক্ষণ মোবাইলটা হাতে ধরে বসে রইলো যদি রজত এখুনি ওকে ফোন করে। মিনিট দশেক পরেও ফোন এল না। সিরিজা ভাবল, হয়তো পরে করবে রজত। দোলনকে নিয়ে স্বাভবিক ভাবেই খুব দুশ্চিন্তায় আছে। কি করে মেয়েটাকে সামাল দেবে, সেটাই হয়তো ভাবছে। সিরিজা ভাবল, ঠিক মনে করে ওকে ফোন করবে রজত। ওর ভুল হবে না।

ঘরে বসে ওর মনে পড়ছিল, দোলনের সেই দূঃসাহসিক, বেহায়াপনা কথাগুলো। কি অবলীলায় নির্লজ্জ্বের মতন সিরিজাকে বলে যাচ্ছিলো রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। একবারও ভাবছিল না, যা বলছে, সেটা কখনই সম্ভব নয়। এক পুরুষ, দুজন মেয়েমানুষকে একসাথে প্রেম ভালোবাসা আর শরীরি খেলা খেলবে, সেটা কখনই সম্ভব নয়।

কামের জ্বলুনিতে এতটাই পাগল হয়ে গেছে ছুঁড়ীটা। বলে কিনা দাদাবাবুর ভাগ আমাকেও দাও।

রেগে মেগে উঠেছিল সিরিজা। দোলনকে বলেছিল, "ভাগ মানে? কিসের ভাগ?"

-- "তুমি যে দাদাবাবুকে নিয়ে সোহাগ করছো, তার ভাগ চাই আমার।"

গা পিত্তি জ্বলে উঠেছিল সিরিজার। দোলনকে বলেছিল, "কি বলতে চাস তুই? ভাগ দেবো মানে?"

বদ ছুঁড়ী দোলন, অত সহজে ভালো হবার মেয়ে নয়। সিরিজাকে নির্লজ্জ্বের মতন বললো, "কিছুই বুঝতে পারছো না? তুমি যেন ন্যাকা। বিবাহিত লোকটার সাথে এত পীরিত তোমার। আর আমি ভাগ বসাতে চাইলেই আপত্তি? কেন? সব রসনা কি তোমার একারই আছে নাকি? ইচ্ছে তো আমারও জাগতে পারে। নিজের কাম মেটাচ্ছ এ বাড়ীতে এসে। আজ থেকে আমিও তোমার ভাগীদার। দেখি তুমি কেমন করে আটকাও আমাকে।"

সিরিজা ভেবেছিল হয়তো মজা করছে দোলন। তারপরেই দোলন নির্লজ্জ্বের মতন বলে উঠলো, "ক্ষতি কি আছে? দাদাবাবু নয়, তোমাকেও একটু আদর করলো, আমাকেও একটু। দুজন কে পালা করে। এক সাথে দুজনে মিলে একটু দাদাবাবুর সোহাগ খাই না? ক্ষতি কি?"

যেন স্বামী খুইয়ে মাথাটা একেবারেই গেছে দোলনের। সিরিজা যে রজতের সাথে শুধু দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেনি। সম্পর্কটা অন্য দিকেও মোড় নিয়েছে, সেটা কে বোঝাবে ওকে?

বিরক্ত হয়েই সিরিজা ওকে বলেছিল, "দেখ দোলন, এসব খারাপ খারাপ কথা আমাকে বলবি না। তোর দাদাবাবু আমাকে যতটা পছন্দ করে, অন্য কাউকে কখনই করবে না। তুই চাইলেও সেটা হবে না। তোর এই মনের বাসনা তুই নিজের কাছেই রাখ। আমাকে বলতে আসিস না।"

মানতে চাই নি দোলন, বলেছিল, "দেখো দাদাবাবুকে আমি ঠিক পটিয়ে নেব। তখন তোমারই আফসোস হবে। আমাকেই তুমি ভাগ দিতে চাইবে না।"

পটানোর নাম করে শোবার ঘরে ঢুকে রজতের ঠোঁটে চুমু খেয়েছে দোলন। সিরিজা এখনও ভুলতে পারছে না ব্যাপারটা। মেয়েটার যেন অত্যাধিক বাড় বেড়েছে। আজ ওর জেদাজেদীর জন্যই ওকে ও বাড়ী ছেড়ে চলে আসতে হল।

রজতের ফোনের জন্য একটু অপেক্ষা করে থেকে থেকে সিরিজা শেষপর্যন্ত ঠিক করলো, দিবাকর ফিরলেই দোলনের এই কথাগুলো বলবে দিবাকরকে। লোকটা রজতের প্রিয়বন্ধু। এখন সিরিজার কাছেও অনেক বন্ধুর মত হয়ে গেছে। কাছের লোককে পরিস্থিতির কথা বলতে পারলে মনটা অনেক হালকা হয়। দোলনের ঝেমেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এখন এই লোকটার সাহায্যও একান্ত ভাবে দরকার। যখনই প্রয়োজন পড়েছে, রজতের পাশে দাঁড়িয়েছে দিবাকর। এখন সিরিজার এই কঠিন পরিস্থিতিতে দিবাকর ঠিক ওর পাশেও দাঁড়াবে। লোকটার মনটা তো খুব ভালো। খুব নরম আর দয়ালু টাইপের। রেশমীর জন্য সিরিজার প্রতি ও এমনিতেই কৃতজ্ঞ। সিরিজা যদি মন খুলে ওকে সব কথা বলে, বলা যায় না দিবাকরই কোন উপায় ওকে বাতলে দিতে পারে।

বিছানায় কিছুক্ষণ বসে থেকে সিরিজা এবার উঠে পড়লো। দিবাকর আসার আগে চোখে মুখে জল দিয়ে, গা হাত পা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। শাড়ীটাও বদলে নিতে হবে দিবাকর আসার আগে। ঘরের এক কোনায় বাথরুমটা খুঁজে বার করে ব্যাগে করে আনা আর একটা শাড়ী হাতে নিয়ে বাথরুমে ঢুকল সিরিজা। বাচ্চাটা অঘোরে ঘুমোচ্ছে। ওর দিকে তাকিয়ে একবার হাসল সিরিজা। মনে মনে বললো, "তোর জন্য নতুন একটা বাবা খুঁজে নিয়েছি আমি। এবার আর তোকে কিছু চিন্তা করতে হবে না। কাল থেকে আমি ছাড়াও, নতুন বাবাও তোকে খুব আদর করবে। দেখে নিস।"
 
বাইরের ঘরে একা একা বসে দোলন বেশ গুমড়ে উঠছিল। রজত শোবার ঘরের দরজাটা ভেজিয়ে রেখেছে। মনে হচ্ছে পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে এখন। কাল সকাল হওয়া অবধি এমনি করেই দোলনকে শায়েস্তা করবে। কিছুক্ষণ বসে থাকার পর, দোলনও অধৈর্য হয়ে এবার উঠে পড়লো। ওর মনের মধ্যে এবার একটা শেষ চেষ্টা করার মরীয়া প্রয়াস। একবার যদি নিজের নগ্ন শরীরটা দেখিয়ে রজতকে আকৃষ্ট করা যায়। সিরিজা তো নেই, সুতরাং ঘরের মধ্যে নগ্ন হতে অসুবিধা কি?

শাড়ী, ব্লাউজ আর শায়া খুলে পুরোপুরি উলঙ্গ হল দোলন। আসতে আসতে পা টিপে এগিয়ে যেতে লাগলো রজতের শোবার ঘরের দিকে। ভেজানো দরজাটা ঠেলে ঢুকবে, তারপর রজতকে দেখাবে ওর শরীরি সম্পদ। বলা যায় না সিরিজার মতন দোলনের ঐ নগ্নরুপ দেখে যদি রজতের হৃদয়টা শেষ পর্যন্ত ওর দিকে দুলে যায়।

কপালটা সত্যিই খারাপ দোলনের। উলঙ্গ শরীরি প্রদর্শন একেবারেই ব্যার্থ হল। ভেজানোর নাম করে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে রেখেছে রজত। যাতে ভেতরে ও ঢুকতে না পারে। বৃথাই উলঙ্গ হয়ে রজতকে আকর্ষন করার চেষ্টা। সব বেকার গেল। দুতিনবার ঠেলে ও দেখলো, শোবার ঘরের দরজাটা ভেতর থেকে কিছুতেই খুলছে না। ও যাতে ভেতরে ঢুকতে না পারে, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা করে রেখেছে রজত। মনটা উদাস করে আবার সোফার ওপর গিয়ে বসে পড়লো দোলন। ওর যেন কিছুই তখন আর ভালো লাগছে না।

মিনিট দশেক চুপচাপ ঐভাবেই বসে রইলো দোলন। রাগে আর হিংসায় জ্বলছে শরীর। মনে মনে বললো, "কতক্ষণ তুমি এভাবে এড়িয়ে চলতে পারো, আমিও দেখব দাদাবাবু। আমার নাম দোলন। অত সহজে তোমাকে আমি ছাড়ছি না।"

হোটেল থেকে রুটি, তরকারী আর মাংস নিয়ে এসেছে দিবাকর। দরজার বাইরে থেকে কলিংবেল টিপে সিরিজাকে বললো, "সিরিজা আমি এসে গেছি। দরজাটা খুলবে?"

বাথরুমের মধ্যে সিরিজা। বালতি থেকে জল নিয়ে মুখ হাত ধুচ্ছিল। দিবাকরকে ভেতর থেকেই একটু চেঁচিয়ে বললো, "আমি বাথরুমে দিবাকরদা। তুমি একটু দাঁড়াতে পারবে? আমি এক্ষুনি আসছি।"

দিবাকর বাইরে থেকে বললো, "হ্যাঁ হ্যাঁ, ঠিক আছে। আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি। তুমি রয়ে সয়ে এসো।"

গায়ের কাপড়টা এর মধ্যে আর বদলানো হয় নি। তারমধ্যেই দিবাকর চলে এসেছে। সিরিজা ঠিক করলো, শুধু শুধু লোকটাকে দাঁড় করিয়ে রেখে লাভ নেই। তার থেকে দরজাটা খুলে নিয়ে ভেতরে ডেকে নেওয়া দরকার। কাপড়টা বরং পড়ে ছাড়বে, রাত্রে শোবার আগে।

বাথরুম থেকে বেরিয়েই দরজা খুলল সিরিজা। দিবাকর খাবারের প্যাকেটটা নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে। সিরিজাকে বললো, "তোমার জন্য গরম গরম রুটি আর ফার্স্ট ক্লাস মাংসের কারী এনেছি। চটপট খেয়ে নাও।"

দরজা খুলে সিরিজা বললো, "এত তাড়াতাড়ি খাবো? সবে তো আটটাও বাজেনি বোধহয়।"

দিবাকর বললো, "না খেলে খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে সিরিজা। তখন আর খেতে ভালো লাগবে না।"

সিরিজা বললো, "পরে নয় গরম করে খেয়ে নেব। এত তাড়াতাড়ি খাবো? তাই বলছিলাম....."

খাবারের প্যাকেটটা দিবাকরের হাতে রয়েছে। সিরিজা বললো, "ওটা আমাকে দাও তো। তোমাকে আর কষ্ট করতে হবে না।"

প্যাকেটটা হাত থেকে নিয়ে ও বললো, "এটা রান্নাঘরে রেখে দিই বরং। রাতে একটু গরম করে নিলেই হবে। আর তুমিও খাবে তো?"

-- "না না, আমি খাবো না। ও শুধু তোমার জন্যই এনেছি।"

- "সে কি তুমি খাবে না? এ শুধু আমার একার?"

দিবাকর বললো, "আমার শরীরটা খুব খারাপ সিরিজা। আজ তাই পুরোপুরি উপোস দিচ্ছি। একদিন না খেলে কিচ্ছু হবে না। "

বাথরুমের জলে সামান্য ভিজে যাওয়া শাড়ীটা একটু সামলে নিয়ে সিরিজা প্যাকেট টা রান্নাঘরে রেখে এল।

ওর দিকে তাকিয়ে পেছন থেকে দেখছিল দিবাকর। উন্নত স্তনযুগল সিরিজার শরীরের সব আকর্ষনকে সবসময় চাগিয়ে রাখে। এমন একটা শরীর, যার জেল্লা কোনদিন কমবে না। পুরুষমানুষ ফিকে হয়ে যাবে, কিন্তু সিরিজা জ্বলজ্বল করবে সবসময়।

সেদিনের ঐ ঘটনার দিন দিবাকরের প্রতি সিরিজার যে ক্ষোভটা জন্মেছিল, সেটা এখন আর নেই। রজতের এই বন্ধুটা ওর কাছে অনেক সহজ হয়ে গেছে।

দিবাকরের দিকে চোখে চোখ রেখে সিরিজা বললো, "কি দেখছো?"

দিবাকর বললো, "না কিছু না, এমনি....."

হাসতে হাসতে সিরিজা বললো, "আরে বাবা আমি রেশমীর মত অত সুন্দরী নই। তোমার রেশমী আমার থেকেও বেশী সুন্দর। বললে হবে? আমি সব জানি।"

কিছু বলতেই যাচ্ছিলো দিবাকর, সিরিজা বললো, "তোমার বন্ধুও সবসময় আমার গুনগান করে। আরে আমার মধ্যে কি এমন আছে বলো তো? খালি পাগল হয়ে যায় আমার জন্য?"

দিবাকর মুখটা নীচু করে ফেললো। সিরিজা এবার বললো, "মনে হচ্ছে তুমি এবার কিছু বলবে....."

দিবাকর বললো, "সবসময় সব কথার উত্তর তো দেওয়া যায় না সিরিজা। আমি শুধু এইটুকু বলতে পারি, তোমার দিকে বেশীক্ষণ তাকিয়ে থাকাই যায় না। তুমি এমনই। আর বেশী তারিফ তো করতে পারি না। বন্ধুটার আমার কপাল সত্যিই ভালো। আমি রেশমীকে ভালোবেসেছিলাম ঠিকই। কিন্তু ও তোমার মত নয়।"

উত্তরটা পেয়ে সিরিজা কিছুক্ষণ প্রানবন্ত দৃষ্টিতে চেয়ে থাকল দিবাকরের দিকে। প্রশংসা আর কদরে ওর মুখের মধ্যেও একটা আনন্দের রেশ ছড়িয়ে পড়ছে। দিবাকর ওর সুখ্যাতি করছে, ওর রুপের তারিফ করছে, এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে? তবুও সান্তনা দেবার জন্য ওকে বললো, "আমি তোমার রেশমীর থেকেও বেশী সুন্দরী? হতেই পারে না। তুমি আমার মন রাখার জন্য বলছো।"

দিবাকর বললো, "না না, আমি সত্যি বলছি। বিশ্বাস করো। তোমার সাথে কারুর তুলনা হয় নাকি? রজত কি এমনিই পাগল তোমার জন্য? আমি এতটুকু বাড়িয়ে বলছি না। স্বয়ং রেশমীও যখন তোমাকে দেখবে। ও নিজেই আশ্চর্য হয়ে যাবে। কেউ আছে এই পৃথিবীতে, যে রুপের চমৎকারীত্বে ওকেও হারিয়ে দিতে পারে অনায়াসে।"

সিরিজা বললো, "সে তো আমার থেকেও অনেক সুন্দরী আছে এই পৃথিবীতে। আমি কি একাই সুন্দরী নাকি? আরও কত রূপসী আছে, তারা তো আমার থেকেও সুন্দর।"

কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে দিবাকর বললো, "নাহ, তোমাকে আমি আর বোঝানোর চেষ্টা করবো না। যাকে ভালো লাগলো, তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সুন্দরী হিসেবে আমি মেনে নেব? এ কিছুতেই সম্ভব নয়।"

সিরিজা বললো, "সত্যি দিবাকরদা। তোমার জন্য ভেবে আমার কষ্ট হয়। তোমার কপালটা সত্যিই মন্দ ছিল এতদিন। আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, তোমাকে সত্যিই ভুল বুঝেছিলাম সেদিন। কাউকে পাওয়ার জন্য তুমি এত ছটফট করে মরছ, অথচ তোমার কথাটা কেউ একবার ভাবছে না।"

দিবাকর বললো, "কেউ তো আছে, যে আমার জন্য ভাবছে। কেউ ভাববে না তাকি হয়? একজন তো আমার জন্য ভাবছে। তুমি আমার জন্য ভাবছো সিরিজা, আমার আর চিন্তা কি আছে?"

একটু খানি দিবাকরের কাছে এগিয়ে এল সিরিজা। বললো, "আমি এখন তোমাদের কাছে যতটা ভালো, ততটাই খারাপ আবার ওদের কাছে। ওরা আমার শত্রু। আমাকে ওরা সুখে থাকতে দেবে না।"

-- "কাদের কথা বলছো তুমি সিরিজা?"

একটু চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে সিরিজা বললো, "ঐ আমার অপদার্থ স্বামীটা। মাতাল লম্পট। এসেছে আবার জ্বালাতে। কি যে পীরিত জেগে উঠেছে আবার কে জানে? আমার শরীরটার প্রতি লোভ যে ওর ষোল আনা। যখন বিয়ে করেছিলাম, ঘুরেও তাকাতো না। মদ খেয়ে রাত বিরেতে হূজ্জুতি করত এসে। ছেড়ে চলে এলাম, অন্য কারুর সাথে সম্পর্ক তৈরী করবো বলে, আর এখন আবার চলে এসেছে আমার পিছু পিছু। বদমায়েশ দোলনকেও বিশ্বাস নেই। আমার ক্ষতি করার জন্য একেবারে তৈরী হয়ে আছে। সুযোগ পেলেই আমার বুকে ছুরী বসাবে।"

দিবাকর বললো, "আমি আছি না? তোমার আর রজতের জন্য জান লাগিয়ে দেব। এই দিবাকরকে সব সময়ই পাশে পাবে তুমি।"

চোখে মুখে উদ্বেগ। যেন বড়ই চিন্তিত সিরিজা। দিবাকর বললো, "তোমাকে বড়ই টেনসড লাগছে সিরিজা। এত চিন্তা কেন করছো তুমি? কাকে ভয় পাচ্ছ? দোলনকে? না অন্য কাউকে?"

একটু করুন মুখ নিয়ে সিরিজা দাঁড়িয়ে রইলো চুপচাপ। দিবাকরকে বললো, "যদি ও কিছু করে বসে?"

-- "কি করবে?"

- "যদি আজ রাতে?"

-- "আজ রাতে কি করবে? রজতের সাথে? তোমার রজতের ওপর বিশ্বাস আছে তো সিরিজা?"

- "বিশ্বাস করি আমি ওকে। সেইজন্যই তো....."

-- "তাহলে একেবারে নিশ্চিন্ত থাকো। দোলন কিছুই করতে পারবে না।"

মুখটা একটু উদাস করে সিরিজা এবার বসে পড়লো বাচ্চাটার পাশে। দিবাকর ওকে দেখছে। সিরিজার মন ভালো করে দেওয়ার জন্য ও এবার বললো, "দাঁড়াও, আমি রজতকে এক্ষুনি ফোন লাগাচ্ছি। ও তালে গোলে ফোন করতে ভুলে গেছে বোধহয়।"

ফোনটা সিরিজার পাশেই রাখা ছিল। ওটা হাতে নিয়ে রজতের নাম্বার সার্চ করে ডায়াল করতে শুরু করলো দিবাকর।

ফোন বাজতে শুরু করেছে। একবার নয় বারবার। বেজেই চলেছে। রজত কেন জানি ফোনটা রিসিভ করছে না। দিবাকর আবার কল করলো। একবার নয় পরপর বেশ কয়েক বার। বুঝতে পারছে না ও রজত কেন ফোনটা রিসিভ করছে না।

সিরিজা জিজ্ঞাসা করলো দিবাকরকে, "কি হলো? "

দিবাকর হতবাকের মতন চেয়ে সিরিজাকে বললো, "বুঝতে পারছি না। ফোনটা অনেকক্ষণ ধরে বেজে চলেছে, ধরছে না। তাহলে কি ও ঘরে নেই এখন?"

ফোনটা ধরছে না রজত, অথচ দিবাকর বারবার ডায়াল করেই যাচ্ছে। সিরিজাকে খুশি করার আপ্রান চেষ্টাটা বারবার যেন বিফলে যাচ্ছিলো। দেখলো সিরিজা ওর দিকে তাকিয়েই রয়েছে, দেখছে এভাবে কতক্ষণ রজতের জন্য ধৈর্য্যের পরীক্ষা দেয় দিবাকর। সিরিজাকে সান্তনা দেবার জন্য শুধু বললো, "তুমি চিন্তা কোরো না, ও ঠিক ফোন ধরবে। হয়তো বাথরুমে ঢুকেছে বোধহয়। এতক্ষণ ধরে ফোন বাজছে, অথচ ও ফোন ধরবে না এটা হয় না।"

দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে রজত কথা দিয়েছিল দিবাকরকে। অথচ কেমন যেন অজানা এক আশঙ্কায় আসতে আসতে ঘিরে ফেলছে দিবাকরের মনের চারপাশটা। রাতারাতি লোকটা পাল্টে যাবে? এও কি সম্ভব? তাহলে কি ও এখনই দোলনের সাথে?

সিরিজাকে কিছু বুঝতে না দিয়ে দিবাকর বললো, "তুমি বরং ততক্ষণে খেয়ে নাও না সিরিজা। আমি দেখছি খানিক পরে রজতকে আর একবার চেষ্টা করে।"

সিরিজা বললো, "তুমি আর ফোন করে কি করবে? ও যদি ফোনই না ধরে, বেকার করে লাভ আছে কি? নিজে থেকে যখন করলো না তখন....."

দিবাকর বললো, "তুমি বৃথাই মন খারাপ করছো সিরিজা। কিছুই হয়নি হয়তো দেখো গিয়ে। হয় ফোনটা ওর কাছে নেই। নয়তো সাইলেন্ট মোড হয়ে গেছে রজত বুঝতে পারছে না।"

সিরিজার মুখে কোন কথা নেই। একেবারেই চুপচাপ।

বিশ্বাসটাকে কারুর মনে ফিরে আনানোর জন্য মানুষ যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে আপ্রান চেষ্টা করে, ঠিক সেভাবেই সিরিজার খুব কাছে গিয়ে ওর হাত দুটো ধরে দিবাকর বললো, "তাকাও আমার দিকে। এই যে দেখ। কিছুই হয় নি। আমি বলছি তো? সব ঠিক আছে। রজতও ঠিক আছে, ঐ বাড়ীতেও সব ঠিক ঠাক আছে। কিছু হয় নি।"

সিরিজা বললো, "যদি না ঠিক থাকে?"

-- "কারুর ভাগ্যে তোমার মতন মেয়ে দুবার কখনও জোটে না সিরিজা। যদি রজত ঠিক না থাকে, তাহলে আমি বলব, ওর কপাল মন্দ। কিন্তু তবুও আমি বলছি, ও ঠিক আছে। রজতের কোন ভীমরতি হয় নি।"

একটু বেশ রেগে গিয়েই দিবাকর বললো, "কালই আমি যাচ্ছি ও বাড়ীতে, তোমাকে নিয়ে। তারপর দোলনকে ওখান থেকে আমি তাড়াব। তুমি দেখে নিও। ওকে ঠিক ভাগাবো এখান থেকে।"

সিরিজা দিবাকরকে অবাক করে বললো, "যদি আমিই না যাই? আর না ফিরি ও বাড়ীতে?"

চমকে উঠলো দিবাকর। সিরিজাকে চোখ দুটো গোল গোল করে বললো, "কি বলছো তুমি? কেন যাবে না? কি হয়েছে তোমার?"

যে মেয়েটা রজতের মনে কামনার আগুন জ্বালিয়েছে। সেই এখন আগুন থেকে দূরে থাকতে চাইছে। সিরিজার রজতের প্রতি এই উদাসীনতা কেন? দিবাকর বেশ ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেল।

সিরিজা বললো, "আমি চলে যাবো এখান থেকে।"

-- "কেন? কোথায়?"

- "দূরে কোথাও। কি হবে এখানে থেকে? এই বাচ্চাটাকে নিয়েই কোথাও চলে যাবো। এখানে থাকলেই দোলন জ্বালাবে। সবাই বিরক্ত করবে। আমার আর এখানে থাকা চলবে না।"

দিবাকর বেশ আতঙ্কিত হয়ে বললো, "রজত যদি ফোন না ধরে, আমি এক্ষুনি যাচ্ছি ঐ বাড়ীতে। গিয়ে দেখছি। কি হয়েছে ওখানে। তোমার সব আশঙ্কা দূর হয়ে যাবে, মনের অবস্থাটা আমি বুঝতে পারছি সিরিজা। তুমি মন খারাপ কোরো না।"

- "তুমি কোথাও যাবে না। বসো এখানে।"

এবার দিবাকরেরই হাত দুটো ধরে ওর পাশে বসিয়ে দিল সিরিজা। কিছুক্ষণ এমন ভাবে চেয়ে রইলো ওর দিকে যে দিবাকর ধরেই নিল, সিরিজা কিছু চিন্তা করছে। একটু ভেবে নিয়ে সিরিজা বললো, "আমি যদি এখানেই থাকি? তোমার এখানে? তোমার আপত্তি আছে?"

একি বলছে সিরিজা? আমার এখানে থাকবে? এর মানে কি?

মনে পড়ছিল, এই দুদিন আগেকার কথা। সিরিজাকে রজতের বাড়ীতে দেখে হঠাৎ ওর মনের মধ্যে উদ্দীপনা। সেই উদ্দীপনাটা হঠাৎই যেন নিভে গেল। রজতের এক রঙ্গীন পৃথিবী। সিরিজার স্পর্ষে রজতের কথায়, আচরনে শিহরণ। আনন্দকে উপভোগ করার শক্তিকে মুঠোয় নিয়ে রজত তখন পাগল, উন্মাদ। এমন এক নারীরত্নকে জয় করে নিয়েছে রজত, অহঙ্কার ওর মধ্যে থেকে ফেটে পড়ছে। নিজের দূর্বলতাকে সামাল দিতে পারেনি দিবাকর। সিরিজাকে দেখে টলে গিয়েছিল ও। প্রেমে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বুঝতে পেরেছিল কি মারাত্মক ভুল করে ফেলেছে ও। রেশমীর কথা বলে সিরিজার মন বিষিয়ে ও যেন সিরিজারই কাছে আসতে চেয়েছিল। আজ সিরিজাই হতাশ হয়ে ওর কাছে থাকতে চাইছে, এ কি অবস্থা হল?

দিবাকরের কাছ থেকে উত্তর না পেয়ে সিরিজা বললো, "কি হলো? আমাকে বললে না? আমি যদি তোমার এখানেই থাকি? তোমার আপত্তি আছে?"

কঠিন একটা পরিস্থিতি। অনেকটা সেই আগের মতন। রেশমীর কথা শুনে রজতের প্রতি কিছুটা হলেও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল সিরিজা। আবার একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এবার দোলনের জন্য। যে সিরিজাকে হিংসা করছে। কিন্তু দোলনকে সিরিজা কেন এত ভয় পাচ্ছে?

দিবাকর বললো, "তুমি কেন এত ভয় পাচ্ছ সিরিজা? কিছুতো এমন হয় নি। রজত তো তোমাকে ছাড়া আর কারুর কথা ভাবতেই পারে না। তুমি ও বাড়ীতে না গেলে ওর চলবে কি করে? শ্বশুড়বাড়ী নিয়ে এত ঝামেলা পোয়াচ্ছে। তুমি ও বাড়ীতে না ফিরলে ও আরও ভেঙে পড়বে। কি করবে ব্যাচারা? তোমাকে ছেড়ে ও তো পাগল হয়ে যাবে।"

সিরিজা একটুও মন বদলাচ্ছিল না দিবাকরের কথা শুনে। ওকে বললো, "আমি যাবো না। তুমি আমাকে শুধু শুধু জোর কোরো না।"

পুরুষমানুষকে মোহিত করার যে স্বাভাবিক দক্ষতা নারীর মধ্যে আছে, রজতকে নিজের রুপ সৌন্দর্য দিয়ে সেভাবেই মোহিত করে দিয়েছে সিরিজা। অথচ একটা সামান্য মেয়ের জন্য রজতকে নিজের জীবন থেকে মুছে দিতে চাইছে। নিজেই তো একদিন রজতের কাছে গিয়ে ধরা দিয়েছিল, রজত ওর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো ঐ দোলন মেয়েটার জন্য এমন তো নয়। সিরিজা কি এখনও সেটা বুঝতে পারছে না?

দিবাকরকে অবাক করে সিরিজা বললো, "তোমার কি রেশমীর চেয়ে আমাকে বেশী ভালো লাগে? আমাকে ওর বদলে ভালোবাসতে পারবে তুমি? বলো না? যদি আমি এই কথাতেই থেকে যাই তোমার এখানে। তাহলে আর কোথাও যাবো না। বাচ্চাটাকে নিয়ে তোমার এখানেই থেকে যাবো।"

সিরিজা যেন স্তব্ধ করে দিয়েছে দিবাকরকে। ও ওভাবেই সিরিজার দিকে তাকালো। মনের মধ্যে একটাই প্রশ্ন, যে নারী একবার বিপথগামিনী হয়েছে, সে যে আবার তা হবে না তার স্থিরতা কি? তার কেবল অবৈধ আনন্দই ভালো লাগতে পারে। কোনো কর্তব্যের বাঁধন এদের নেই। খুব সহজেই মতি পরিবর্তন করতে পারে। সিরিজা রজতের প্রতি একেবারেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ও কেন বুঝতে চাইছে না? রজতের এখানে কোন দোষ নেই। দোষ যদি কারুর থাকে, সে দোলনেরই। ঐ সমস্ত ঝামেলার সৃষ্টি করছে।

এবার দুজনকেই অবাক করে রজতের ফোনটা এল। দিবাকরের মোবাইল বাজছে, একবার নয়, দু-দুবার। সিরিজার দিকে তাকিয়ে দিবাকর বললো, "দেখলে তো? আমার মন বলছিল ও ঠিক ফোন করবে? রজত মনে হয় ঘরে ছিল না। আমি খুব অস্থির হয়ে পড়েছিলাম। এবার মনটা হালকা হল। নাও কথা বলো। ও তো তোমার জন্যই ফোন করেছে।"

সিরিজা বললো, "তুমি কথা বলো। আমি তারপর বলছি।"

দিবাকর যখন ফোনটা ধরে হ্যালো হ্যালো বলতে লাগলো, তখন ও প্রান্ত থেকে রজত খুব আস্তে আস্তে কথা বলছে। এত আস্তে যে শোনাই যাচ্ছে না। দিবাকর বললো, "একটু জোরে বলো না। কিছু শুনতে পাচ্ছি না। তুমি কোথায় ছিলে? আমি তো ফোন করেছিলাম।"

ও প্রান্ত থেকে রজত বললো, "হ্যাঁ আমি জানি। তোমার ফোনটা ইচ্ছা করেই ধরিনি। ফোনের আওয়াজ শুনে দোলন দুবার এসে দরজা ধাক্কা দিয়েছে। আমি শোবার ঘরে রয়েছি। দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিয়েছি। ও ঢুকতে পাচ্ছে না। শোনো, সিরিজা কোথায় আছে? তোমরা পৌঁছলে কখন?"

দিবাকর বললো, "সিরিজা পাশেই আছে। কথা বলবে? আমরা তো অনেকক্ষণ এসেছি এখানে।"

রজত বললো, "না, এখন দরকার নেই। আমি যা বলছি শুধু চুপ করে শোন। কিছু বলবে না। শুধু শুনে যাও।"

দিবাকর কানে ফোনটা চেপে ধরে রজতের কথা শোনার চেষ্টা করছে। সিরিজা দেখলো দিবাকর বলার পরও রজত কথা বলতে চাইল না সিরিজার সাথে। খুব স্মার্টলি দিবাকরের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে ও শোনার চেষ্টা করতে লাগলো রজত কি বলছে।

কিছুটা অস্বস্তি আর টেনশনে পড়ে গেছে দিবাকর। রজত কি বলছে ও শুনতে পাচ্ছে না। অথচ সিরিজা দিব্যি কানে ফোনটা ধরে ওর কথা শুনছে।

ও প্রান্ত থেকে রজত বললো, "আমি সিরিজাকে ব্যাপারটা জানাতে চাই না। তাই তোমাকে বলছি। দোলন একেবারে উলঙ্গ হয়ে বসে আছে ঘরের মধ্যে। দুবার এসে দরজা ধাক্কা দিয়েছে, আমি খুলিনি। একবার দরজাটা ফাঁক করে দেখলাম, এখনও ঐ অবস্থাতেই বসে রয়েছে বসার ঘরে। তোমার ফোনটা এসেছিল, তখন ইচ্ছে করেই ধরিনি। যাতে ও ভাবে আমি ঘুমোচ্ছি। দিবাকর, মেয়েটা পুরো ক্ষেপে উঠেছে এখন। সিরিজা নেই, ওর আরও সুবিধে। আমার সঙ্গে কিছু একটা ও করবেই। আজ আমাকে রেহাই দেবে না। কতক্ষণ এভাবে ঘরের মধ্যে বসে থাকবো? আমাকে তো একবার না একবার বেরোতেই হবে। বাথরুমে যেতে হবে। আর বেরোলেই ওর নগ্ন শরীরটা দেখব, একদম সামনে থেকে। আমাকে এত মারাত্মক ভাবে কামনা করছে যে সম্পূর্ণ দিশাহারা হয়ে যাচ্ছি আমি। দোলনের সাথে এক রাতের যৌনমিলন করে যদি ওকে সন্তুষ্ট করা যায়, তাহলেই চেষ্টা করে দেখি। আমার তো এছাড়া আর কোন উপায় নেই। সিরিজা যেমন আছে, থাকবে। আমি শুধু ওকে বশে আনার চেষ্টা করবো। কিছু করার নেই। তুমি শুনতে পাচ্ছো তো? কি বললাম বুঝতে পারলে তো?"

তাড়াতাড়ি ফোনটা দিবাকরের হাতে ফেরত দিয়ে সিরিজা বললো, "আমি যে কানে দিয়ে শুনেছি ফোনটা, ওকে বলবে না। নাও, কথা বলো এবার।"

দিবাকর কিছুই জানে না। সেভাবেই ফোনটা ধরে বললো, "হ্যাঁ, বলো এবার?"

রজত বললো, "যা বললাম, বুঝতে পারলে না?"

দিবাকর যেন বলার চেষ্টা করছে। ফোনটা সিরিজার হাতে ছিল, ওর কাছে ছিল না। দিবাকরকে মুখে আঙুল দিয়ে এমনভাবে ইশারা করলো সিরিজা, দিবাকর বলতেই পারলো না। রজতকে শুধু বললো, "হ্যাঁ শুনেছি। তুমি দোলনকে....."

রজত বললো, "হ্যাঁ, দোলনকে নিয়ে বিছানায় নিয়ে শুতে হবে এখন। আমি যাচ্ছি। ও মনে হচ্ছে দরজায় কান লাগিয়ে আমার কথা শোনার চেষ্টা করছে। তুমি সিরিজাকে কিছু বোলো না। আমি রাখছি এখন।"

ফোনটা কেটে যাবার পর দিবাকর হতভম্বের মতন দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিরিজাকে শুধু একবার বললো, "কি বললো ও। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না।"

সিরিজা বললো, "আমার মন বলছিল এরকমই কিছু একটা ঘটবে। তুমি অনেকক্ষণ ধরে আমাকে মানানোর চেষ্টা করছিলে। কিন্তু আমি মানতে চাইছিলাম না।"

দিবাকর বললো, "কেন, কি হলো বলবে তো?"

দিবাকরের একটু কাছে এগিয়ে এল সিরিজা। বললো, "আমি তাহলে চলে যাই?"

দিবাকর বললো, "কোথায়?"

- "এখান থেকে। অনেক দূরে। তোমাদেরকে ছেড়ে।"

দিবাকর বললো, "কেন, তুমি ও বাড়ীতে আর যাবে না?"

একটু চুপ করে রইলো সিরিজা। একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো, "আর কি হবে গিয়ে? ও তো দোলনকে নিয়ে বিছানায় শুচ্ছে।"

দিবাকরের মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না। একেবারে স্তব্ধ। কি বলবে সিরিজাকে ভেবে পাচ্ছে না। জীবনে এমন অস্বস্তিতে কোনদিন পড়ে নি। শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে রয়েছে সিরিজার দিকে। রজত যে কি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো, ওরও মাথায় ঢুকছে না।

সিরিজা বললো, "দোলন এখন শাড়ী শায়া সব ছেড়ে খালি গায়ে বসে আছে। তোমার বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছে। ও দোলনের কাছে গেলই বলে..... এতক্ষণে হয়তো....."
 
।। ত্রিশ ।।

দেহমন উজাড় করে রজতকে দিল সিরিজা। আর এখন প্রতিদ্বন্দ্বিনী কোন নারীর নাম সহ্য করতে না পারাটাই স্বাভাবিক। দোলনকে নিয়ে আর আলোচনটাই করতে চাইছিল না সিরিজা। দিবাকরকে বললো, "ছাড়ো না দিবাকরদা, তুমি অন্য কথা বলো। এসো বসো। একটু তোমার কথা শুনি। কি আমাকে রাখবে তো তোমার কাছে?"

দিবাকর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিল, কি ঘটে গেল রজতের জীবনে। যাকে ও পেল, সেই এখন চলে এল আমার কাছে। এখন কি হবে তাহলে?

মুখখানা খুব চিন্তিত ভাবে করে দিবাকর বললো, "কিন্তু রজত? ও তো জানতেই পারবে, তুমি এখানে রয়েছ। তাহলে?"

সিরিজা যেন অনেক স্বাভাবিক আগের থেকে। একটু হেসে বললো, "ওর ভালোবাসার মানুষ এখন তোমার কাছে চলে এসেছে। যখন জানতেই পারবে, আমি তোমার কাছে রয়েছি, তখন আর কি হবে? ও নিজেও মেনে নেবে। তুমি তোমার বন্ধুকে সামলাতে না পারো, আমি তো রয়েছি। ওটা আমার ওপরই ছেড়ে দাও। তোমার বন্ধুকে আমি বুঝিয়ে দেব।"

দিবাকর হতবাকের মতন চেয়ে রয়েছে সিরিজার দিকে। ওর দিকে একটা আকুতি দৃষ্টি নিয়ে সিরিজা বললো, "জীবনে সুখ তো তুমি পাওনি দিবাকরদা। আমি যদি সুখ দিই? নেবে না আমার কাছ থেকে?"

কি বলছে সিরিজা? উত্তেজনার উথাল পাতালকে সামাল দেবার ক্ষমতা দিবাকরের অত নেই রজতের মতন। বুকের মধ্যে একরাশ ইচ্ছে নিয়ে দিবাকরকেও কামনার সুখ দেবার জন্য সিরিজা ইচ্ছা প্রকাশ করছে অথচ এই সিরিজাকে পেয়েই রজত ওকে বলেছিল, "দিবাকর আমি জীবনে কারুর পরোয়া কোনদিন করবো না। সিরিজাকে যখন পেয়েছি, তখন ওকেই আমি ভোগ করবো। ইচ্ছেমতন আমার কামতাগিদের আঁশ মেটাবো। প্রবল উচ্ছ্বাসে শুষে নেব ওর ভরাট যৌবন। আমার সিরিজাকে চাই। সিরিজাকে ছাড়া আমার চলবে না দিবাকর।"

পৃথিবীর কোন নারীই যে সুখ কোনদিন পুরুষমানুষকে দিতে পারবে না। জীবনকে যে মধুর করে তুলতে পারে সেই আশ্চর্য নারী সিরিজা কেমন আকাঙ্খার চোখে চেয়ে আছে দিবাকরের দিকে। ওর যেন সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে।

-- "না না এ হতে পারে না। রজতকে আমি ঠকাতে পারবো না। তুমি আমায় ভুল বুঝো না সিরিজা। এ আমি পারবো না।"

উঠে এসে দিবাকরের খুব কাছে চলে এল সিরিজা। ওর বুকের আঁচল সরিয়ে দিবাকরকে যখন তীব্র খাঁজটা দেখানোর চেষ্টা করলো, দিবাকর বুঝতেই পারলো, খুবই বাড়াবাড়ি শুরু করেছে সিরিজা। এ হতে দেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়।

-- "কি করছো সিরিজা? ছিঃ। এসব আমাকে দেখিও না।"

- "তোমাকে যদি আমার বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরি? পারবে না এখানে মুখটা রাখতে?"

-- "না সিরিজা। তুমি ভুল করছো।"

- "আজ থেকে শরীরটা তোমাকে দিতে চাইছি। তুমি আমায় নেবে না?"

-- "কাকে আমি নেব সিরিজা? কাকে? শরীর মন সবকিছু উজাড় করে দিয়ে তুমি বসে আছ রজতকে। আর আজ কিনা সব একেবারেই আমি পেয়ে যাবো তোমার কাছ থেকে? যে অধিকার তোমার ওপর জন্মেছিল রজতের। অধিকার কি এভাবে ছিনিয়ে নেওয়া যায়? রজতের এই মূহূর্তে তোমাকে কতটা প্রয়োজন তুমি জানো না। ও পারবে না তোমাকে ছেড়ে থাকতে। মরে যাবে। বন্ধুটার মৃত্যুর জন্য কি শেষ পর্যন্ত আমিই দায়ী হব বলতে চাও?"

কথা বলতে বলতে মুখটা নীচু করে ফেলেছিল দিবাকর। এবার মুখ তুলে দেখলো, সিরিজার শাড়ীর আঁচল মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে, আর ওর ব্লাউজের ভেতর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে, উন্নত বর্তুল স্তন জোড়া। সিরিজা যেন কিছুতেই মনটা আর গলাতে চাইছে না রজতের প্রতি। যাবতীয় আকর্ষন আর কেন্দ্রবিন্দু ওর দিবাকরকে ঘিরেই।

একেবারে নির্লজ্জ্বের মতন বলে বসল দিবাকরকে, "তুমি মেয়েমানুষকে নগ্ন দেখেছো কখনও?"

কি অসহায় পরিস্থিতি। শিহরণ জাগানোর চেষ্টা করেও জাগাতে পারছে না সিরিজা। দিবাকরের মন পড়ে আছে, সেই বন্ধুর প্রতি কর্তব্যপরায়ণতাকে ঘিরেই। এমন ঐশ্বর্য ভান্ডারী সিরিজা দিবাকরের মনে যখন কামনার উদ্রেক ঘটাতে পারছে না তখন আর কি হবে? নিজের কথা চিন্তা না করে যারা শুধু পরের কথাই চিন্তা করে তাদের কপালে নারী সুখ জোটেনা সহজে।

- "না, তুমি পারবে না দিবাকরদা। পারবে না আমাকে রাখতে। এ তোমার কাজ নয়। একটা মেয়ে নিরুপায় হয়ে তোমার মন পেতে চাইছে, অথচ তুমি তাকে বুঝতে চাইছো না। থাক, আমি চাই না তোমাকে জোড়াজুড়ি করতে। যেচে কারুর মন পাওয়া যায় না। সে যেই হোক। অত সহজে আমি তোমাকে নিজের করে নিতে পারবো না। আমার ভুল হয়ে গেছে। আমাকে তুমি ক্ষমা করো দিবাকরদা। কালই আমি চলে যাবো এখান থেকে।"

শাড়ীর আঁচলটা তুলে নিয়ে সিরিজা বুকের আবরণটা ঢেকে নিল তাড়াতাড়ি। দিবাকর একটা মরা মানুষের মতন কাঠ হয়ে বসে পড়েছে সামনের চেয়ারটার ওপর। না পারছে সিরিজার দিকে তাকাতে। না পারছে ওকে কিছু বলতে।

সিরিজা বললো, "তোমাকে একটা সত্যি কথা বলব দিবাকরদা। আমার কথা বিশ্বাস করবে?"

দিবাকর এমন ভাবে মাথাটা তুললো, যেন অনুভূতি, নারীকে পাওয়ার আনন্দ সবকিছু খুইয়ে বসে আছে শরীর থেকে। একেবারে লোভশূন্য চোখে সিরিজার দিকে তাকিয়ে বললো," বলো। আমি বিশ্বাস করবো সিরিজা। কেন করবো না?"

সিরিজা বললো, "তোমার বন্ধু দোলনকে পছন্দ করে না আমিও জানি সেকথা। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে ও দোলনের জেদ ভাঙাতে চাইছে, তাতে ও একদমই সফল হবে না তুমি দেখে নিও। শরীরটাকে নিয়ে দেওয়া নেওয়ার এই বেকার ছেলেখেলা সব নষ্ট হবে আজ রাতে। এতে দোলনের জিত তো শুধু হবেই না, ও আরও পেয়ে বসবে। আমাকেও তাড়াতে চাইবে ওখান থেকে। ঘন ঘন ওর সাথে মাখামাখির করার চেষ্টা করবে, তখন জোর করেও কিছু হবে না। দোলন ও বাড়ী থেকে আর কোনদিনই যাবে না।"

একেবারে মন থেকে কথাগুলো বলছে সিরিজা। বুকের মধ্যে কষ্টটা যেন এখনও রয়ে গেছে।

দিবাকর খুব হতাশ গলায় বললো, "হ্যাঁ, কি যে করলো রজত। আজ ও খুব ভুল কাজ করে বসলো।"

এমন একটা পরিস্থিতি, নিজের মনেও সাহস জোগাতে পারছে না দিবাকর, সিরিজার মনকে তো নয়ই। দুটো যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চরিত্র। এক দিকে রজত আর একদিকে দিবাকর। কারুর সাথে কারুর মিল খাবে না কোনদিনই।

সিরিজা একটু হেসে বললো, "আমার সাথে একসঙ্গে শুতেও বুঝি লজ্জা করছে তোমার? ভাবছ সিরিজা যদি ঘুমের ঘোরে তোমাকে জড়িয়ে ধরে?"

দিবাকর আমতা আমতা করে কি বলবে বুঝতে পারছিল না। ওর কথা জিভে এসেও আটকে যাচ্ছে। বেরোতে চাইছে না সহজে মুখ দিয়ে। অনেক কষ্ট করে বোকার মতন বললো, "না, তা নয়। তুমি যদি কিছু মনে না করো, তাহলে শোবার ঘরে তুমি শোও। আমি না হয় এঘরে।"

সিরিজা আবার একটু হাসল। বললো, "ঠিক আছে। আমি না হয় বাচ্চাটাকে নিয়ে এ ঘরে শুচ্ছি। তুমি নিজের ঘরে শোও আরাম করে।"

দিবাকর বললো, "না তোমার কষ্ট হবে সিরিজা। বাচ্চা নিয়ে তুমি এঘরে শুতে পারবে না। তার চেয়ে আমিই কষ্ট করে নিচ্ছি আজ রাতটা। কালকে নয় অন্য কিছুর ব্যবস্থা করবো।"

সিরিজা অবাক হয়ে বললো, "কাল আমি থাকবো তোমার কাছে? তুমি সাহস করে বলছো?"

দিবাকরের মনের মধ্যে কোন লোভ নেই। সিরিজার প্রতি সহানুভূতিটা দেখাতে কোন কার্পন্য নেই। খুব অন্তর থেকে বললো, "আমি চাই না বাচ্চাটাকে নিয়ে তুমি কোথাও চলে যাও সিরিজা। আমি হয়তো নিরুপায়। ভুল করছি রজতের জন্য। কিন্তু তুমি কষ্ট পাও, সেটা আমি চাই না। তোমার যতদিন মন চায় তুমি এখানে থাক। আমি তোমাকে না করবো না।"

মনে পড়ছিল সিরিজার। এই লোকটাই সেদিন রজতের ফ্ল্যাটে কি কান্ডটাই না ঘটিয়েছিল। সিরিজার সঙ্গে পরের দিন কথা বলার পর, নিজের কাম ইচ্ছাটাকে একেবারেই দমন করে ফেলেছে দিবাকর। এত কষ্ট করছে সিরিজা। কিন্তু দিবাকরের সেই ইচ্ছাটাকে ফিরিয়ে আনতে পারছে না কিছুতেই। ও যেন সব জেনেও কিছু বুঝতে চেষ্টা করছে না এখনও।

সিরিজা বললো, "আমি একটা কাপড় এনেছি সঙ্গে। শাড়ীটা পাল্টাবো। তুমি বসো। আমি তাহলে ও ঘরে একটু যাই।"

দিবাকর বললো, "হ্যাঁ, তুমি পাল্টে এসো। আমি বসে আছি ততক্ষণ এ ঘরে।"

বাচ্চটার কাছে গিয়ে ঘুমোচ্ছে কিনা ওকে একটু নজর করে সিরিজা কাপড়ের প্যাকেট টা নিয়ে ঢুকল দিবাকরের শোবার ঘরে।

চেয়ারে একা বসে রইলো দিবাকর। জীবনে অনেকগুলো করা ভুলের সাথে আর একটা ভুল যোগ হল আজ। যাকে প্রত্যাক্ষান করলো, তাকে কি মুখ ফুটে বলতে পারবে আর? ভালো লাগার কথা বলতে পারবে আর? সিরিজাকে ভালো লাগবে না। এমন মানুষ পৃথিবীতে কমই খুঁজে পাওয়া যাবে। বন্ধুর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে জীবনের মোক্ষম সুযোগটা হাত ছাড়া করতে চলেছে দিবাকর। আর হয়তো এ সুযোগ কোনদিন পাবেই না জীবনে। চেয়ারে বসে একটা সিগারেট ধরালো দিবাকর। ওর মনের মধ্যে ভালো মন্দ অনেক কিছুই ঘুরপাক খাচ্ছে। মনটা আসতে আসতে বদলাতেও শুরু করেছে, কিন্তু পারছে না নিজের মধ্যে কামনার আকাঙ্খাটাকে জাগ্রত করতে। ভাবছে কি করবে ও? তাহলে কি বলেই দেবে সিরিজাকে? আজ রাতে ও রাজী আছে সিরিজার পাশে শুতে।

মনের মধ্যে ইচ্ছাটা নিয়ে হতভাগার মতন বসে আছে। সিগারেটে টান দিচ্ছে, আর ধোঁয়া ছাড়ছে। কিন্তু মনটা এখনও সিরিজাকে নিয়েই পড়ে আছে। দিবাকর যেন জীবনে আর সিরিজার সান্নিধ্য পাবে না কখনও, এটাই ধরে নিল মনে মনে। সারাজীবন ধরে একটা আফশোস করার মতই কাজ করেছে ও। এখন পস্তানো ছাড়া আর কোন উপায় নেই। সিরিজাকে মত পরিবর্তন করে ইচ্ছার কথাটা বলবে, সে সৎসাহস ওর নেই।

সেই রুটির দোকানের বউটাও ওকে বললো একটু আগে। - "আর কবে কাউকে ঘরে আনবে দিবাকরদা? তোমার কথা ভেবে ভেবে, আমরাও তো মাঝে মধ্যে একটু উতলা হই। তুমি নিজে কি সেটা বুঝবে না?"

এত মেয়েকে ও দেখলো, আলাপ করলো, কিন্তু রেশমী ছাড়া আর তো কাউকে মনে ধরলো না। সিরিজা রজতের জীবনে এল, সে আবার দিবাকরের ভালোলাগাকে নতুন স্বাদ দিল। সিরিজা, রেশমীকেও ছাড়িয়ে গেল। যাও বা সিরিজাকে মন প্রান দিয়ে চাইল, সেটাও পিছিয়ে গেল রজতের জন্য। বন্ধুপ্রীতি আর কতদিন? রজতের সব ঝেমেলা মিটে গেলে, ও সিরিজাকে নিয়েই পড়ে থাকবে সারাজীবন। তখন আর এই বোকাভোলা, সাদাসিধে বন্ধুটার কথা মনেও পড়বে না। এখন শুধু শুধু রজতের কথা ভেবে হাত কামড়ানো কেন? দয়া দাক্ষিন্য দেখানোর এর কি কোনো প্রয়োজন ছিল?

সিরিজার রাখা প্রস্তাবটা মেনে নিলেই হতো।

এক নাগাড়ে টানতে টানতে সিগারেটটা পুরো শেষ। দিবাকরের মনে হল, আর একটা ধরায় এক্ষুনি। চিন্তাটা ওকে পুরো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিচ্ছে। কি করবে এখন ও? কিছুই বুঝতে পারছে না।

কাপড়টা পাল্টে শোবার ঘর থেকে বেরোলো সিরিজা। দিবাকর দেখলো, ও নতুন একটা শাড়ী পড়েছে। মনে হচ্ছে রজতই ওকে কিনে দিয়েছে।

সিরিজা বললো, "বসে বসে কি ভাবছো? ভাবছো আমি খুব খারাপ, তাই না?"

দিবাকর বললো, "কেন তুমি খারাপ কেন হবে? আমি তো এমনি এমনিই....."

সিরিজা বললো, "জানি, আমি খুব খারাপ। সবাই তো এই জন্যই আমাকে খারাপ বলে।"

দিবাকর বললো, "সবাই মানে? কে কে?"

- "ঐ যে আমার গ্রামের লোকেরা আমার আড়ালে বলতো। আমার পেছনে বলতো। আমি আমার স্বামীকে ছেড়ে চলে এসেছি। ওরা কি এখনও বলছে না। নিশ্চয়ই বলছে। নইলে ও ব্যাটা এত সাহস পায় কি করে?"

দিবাকর বুঝতে পারছিল না। সিরিজা কার কথা বলছে? ওকে বললো, "কার কথা বলছো তুমি সিরিজা?"

- "কেন? আমি আমার স্বামীটার কথা বলছি। তুমি বুঝতে পারছো না?"

দিবাকর একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো, "ও। তাই। তারপর আবার বললো, তাতে কি? এ তো তোমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। তুমি কোথায় থাকবে। কার সাথে থাকবে। সবই তোমার ইচ্ছার ওপর। তোমার ইচ্ছাতে তো কেউ বাদ সাধতে পারবে না সিরিজা। সে যেই হোক। তোমার স্বামী হলেও পারবে না। এখন ছেলেদের সব রাইট কেড়ে নিয়েছে সরকার।"

সিরিজা বললো, "তা ঠিক। আমি ঔ জন্যই আর চিন্তা করি না জান? শুধু....."

-- "শুধু কি?"

বলে, সিরিজার মুখের দিকে চেয়ে রইলো দিবাকর।

- "শুধু মনের মতন কাউকে যদি পেতাম। মনের আশাটা জুড়িয়ে যেত। কি যে হয়ে গেল।"

মনের মত তুমি তো রজতকে পেয়েছিলে সিরিজা। শুধু দোলনটা না এলে এত কান্ড হত না। সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে, মনে মনে এই কথাটাই বললো দিবাকর। সিরিজা, আজ তোমার আমার, দুজনেরই খুব অপয়া দিন। খুব খারাপ লাগছে তাই তোমাকে দেখে।

সিরিজা বললো, "চলো এবার খেয়ে নিই। শুতে হবে তো?"

দিবাকর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো প্রায় বারোটার কাছাকাছি বাজে এখন। কথায় কথায় যে রাত হয়ে যায়, সেটা খেয়াল করেনি এতক্ষণ।

ও্দিকে রজত মনে হয় দোলনকে নিয়ে কিছু একটা করছে। মনটা ওদিকে করে কোনো লাভ নেই। রান্নাঘর থেকে নিজেই একটা বড় থালা আর দুটো ঝোলের বাটি নিয়ে এসে বললো, "এসো খাও। আমি খাবারের প্যাকেটটা আবার গিয়ে নিয়ে আসছি।"

- "সেকি? তুমি খাবে না।"

-- "না সিরিজা। আজ নয়। শরীরটা ঠিক হোক। কালকে খাবো আবার।"

- "একটুও খাবে না? একটু অন্তত খাও।"

খাবারের প্যাকেটটা রান্নাঘর থেকে নিয়ে আসার পর সিরিজা এমন পীড়াপীড়ি করতে লাগলো, দিবাকর বললো, "আচ্ছা, আচ্ছা, আমি শুধু একটা রুটি খাবো। তোমার কথা রাখার জন্য।"

- "তাহলে প্লেট?"

দিবাকর বললো, "প্লেট লাগবে না। তুমি হাতেই দাও। আমি ঝোল মাখিয়ে খেয়ে নিচ্ছি রুটিটা।"

সিরিজা খাবারের প্যাকেটটা খুলে ফেলে বললো, "ওমা, কত এনেছো? এতো কে খাবে? আমি তো এতো খেতেই পারবো না।"

-- "কত আর এনেছি? ওতো সামান্য। তোমার একারই রুটি আছে ওখানে। আমাকে শুধু একটা রুটি দাও। নইলে তোমার আবার কম পড়ে যাবে।"

- "কিচ্ছু কম পড়বে না। খাও তো।"

সিরিজা নিজেই ঝোল মাখিয়ে রুটিটা তুলে দিল দিবাকরের মুখে। ঠোঁটের ওপর সিরিজার হাতের স্পর্শ পেয়ে দিবাকরের ভেতরটা কেমন ছটফট করে উঠলো। রুটিটা গলায় নিয়ে একদৃষ্টে দেখছে ওকে।

সিরিজাও দেখছে দিবাকরকে। খেতে খেতে হঠাৎই বিষম লেগে গেল গলাতে। প্রচন্ড কাশি নিয়ে কুকড়ে গেছে দিবাকর। দম প্রায় বার করে দিচ্ছে। সিরিজা বললো, "ওমা কি হলো বলো তো? দাঁড়াও আমি এক্ষুনি জল নিয়ে আসছি।

বুকে মাথায় হাত দিয়ে নিজের বিষমকে সামলাচ্ছে দিবাকর। সিরিজা এক গ্লাস ভর্তি জল নিয়ে এসে দিবাকরকে বললো, "তুমি হাঁ করো তো। আমি খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে। নইলে তাড়াহুড়োতে আবার বিষম খাবে তুমি।"

নিজের হাতে দিবাকরের হায়ের মুখে জল ঢেলে দিচ্ছে সিরিজা। মনের মধ্যে কি দারুন পুলক জাগছে একটা। কাশি রোধ করার জন্য দিবাকরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সিরিজা। এত দরদী প্রান। সিরিজার মনটা যেন উদারতায় ভর্তি। সত্যি যদি এরকম কাউকে সারাজীবনের মত পাওয়া যেত? তাহলে জীবনটা ওরও পাল্টে যেত ঠিক রজতের মতন।

পোড়া কপালের দোহাই দিয়ে এরপরে লোককে বললেও সবাই হাসবে। ওহে দিবাকর, নারী চরিত্রকে যদি বুঝতেই না পারো, তাহলে সোহাগ আদরের মর্ম তুমি বুঝবে কি করে? সবাই কি আর সিরিজার মতন? কাছে যে আসতে চায়, তাকেই যদি দূরে সরিয়ে রাখো, তাহলে এই পৃথিবীতে একাই কাটাতে হবে তোমাকে চিরকাল। কেউ তোমাকে পাশে চাইবে না, কাছে ডাকবে না। ভালোবাসবে না। শরীর মন কিছুই তো দেবে না। একাকীত্ম আর যন্ত্রনায় কাটাতে হবে বাকী জীবন। কে তোমাকে তখন এত দরদ দেখাবে সিরিজার মতন? রেশমী? ও তো এখনও সাক্ষাতই করেনি সিরিজার সাথে। তারপরে যদি মন দিতে না চায়? একুল ওকুল দুকুলই গেল।

ভাবনা চিন্তায় দিবাকরের কন্ঠরোধ হয়ে গিয়েছিল একটু আগে। সিরিজা মাথায় হাত বুলিয়ে দেবার পর এখন যেন অনেকটা স্বস্তি লাগছে। বাকী রুটির টুকরোটা আস্তে আস্তে খেল। সিরিজা একটু হেসে বললো, "রেশমীকে তোমার সত্যিই দরকার। নইলে তোমার চলবে কি করে?"

কথাটা শুনে দিবাকর কেমন যেন মনমরার মতন হয়ে গেল। বারবার রেশমীর কথা তুলে দিবাকরকে গোলকধাঁধায় ফেলে দিচ্ছে সিরিজা। কখনও নিজের মনের কথাটা বলছে, আবার কখনও দিবাকরের কষ্ট চিন্তা করে রেশমীকে নিয়ে আসছে আলোচনার মাঝে। সিরিজা আসলে তাহলে কি বোঝাতে চাইছে? ও কি হাল ছেড়ে দিয়েছে দিবাকরের প্রতি? না এখনও দিবাকরকে পরীক্ষা করছে?

খাওয়া শেষ করে সিরিজা বললো, "আমি তো এঘরেই শুতে পারতাম দিবাকরদা? তোমার শুধু শুধু কষ্ট হবে।"

দিবাকর বললো, "না না। তুমি ওঘরেই শোও সিরিজা। বাচ্চা নিয়ে তোমারই বরং কষ্ট হবে।"

এখনও যেন বলতে পারছে না মুখ দিয়ে, চলো তুমি আমি সিরিজা, দুজনেই একসাথে শুই। আবার আলাদা আলাদা ঘরে কেন?

সাহস টুকু না দেখিয়ে সেই চাপা হয়েই রইলো দিবাকর। সিরিজা একটু করুন ভাবে তাকালো দিবাকরের দিকে। বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিয়ে ওকে বললো, "আমি তাহলে যাই। কাল সকালে উঠে বোলো। আমি তোমার চা করে দেব। যদি তোমার আগে ঘুম ভাঙে আমাকে ডাকতে ভুলো না।"

যাই বলে সেই যে চলে গেল সিরিজা। আর এঘরে এলো না। মনের দরজায় কড়া নেড়ে সুযোগটা এসেও আবার সাড়া না পেয়ে ফিরে গেল। সিরিজার প্রস্তাবে দিবাকর যখন সাড়াই দিল না। তখন সিরিজাই বা আর কি করবে? দোলনের মত গায়ে পড়ে বেশি ঢলানি তো করতে পারবে না সিরিজা? হতে পারে ওর শরীরে যৌনতা প্রচন্ড। পুরুষমানুষের প্রতি আসক্তি আছে। কিন্তু দিবাকর ইচ্ছেটা না দেখালে সিরিজারও কিছু করার নেই। একবার রজতকে যেভাবে শরীরি চুম্বক দিয়ে কাছে টেনেছিল। দিবাকরের সঙ্গে সেটার আর পুনরাবৃত্তি করতে চায় না সিরিজা। ও তাই দূরেই মনে হয় চলে গেল। মন থেকে দিবাকরকে মুছে ফেললো। আর হয়তো মুখ ফুটে বলবেও না কোনদিন দিবাকরকে।

-- "ইশ। আমি যে কি করলাম?"

চেয়ারে বসে আপন মনেই বলে উঠলো দিবাকর। তখন রাত্রি অনেক। সিরিজা এতক্ষনে ঘুমিয়ে পড়েছে। অথচ দিবাকরের ঘুম আসছে না। বিনিদ্র রাত্রি যাপন করে ও সিরিজার কথাই ভেবে মরছে তখন থেকে।
 
।। একত্রিশ ।।

দেওয়ালের ওপর দুটো টিকটিকি জড়াজড়ি করে সঙ্গম মৈথুন করছে। চোখের সামনে টিকটিকির রতিক্রিয়ার দৃশ্য। প্রবল উত্তেজনায়, টিকটিকি দুটো দেওয়াল ছেড়ে ধপ করে পড়লো মাটিতে। দিবাকর ঐ দৃশ্য দেখলো। ওর বুকের ভেতরটা কেমন ছ্যাঁকা দিয়ে উঠলো।

রাত জেগে কীট পতঙ্গের রতিক্রিয়াই দেখবে বসে? ওর কি ঘুম আর আসবে না? ইচ্ছে তো করছে, পাশের ঘরে গিয়ে সিরিজাকে একবার দেখতে। কিন্তু সিরিজা যদি ওকে দেখে ফেলে? সেদিনকার ঘটনার পুনরাবৃত্তি? চোরের মতন চুপি চুপি আড়াল থেকে দেখার ইচ্ছাটা যেন কিছুতেই গেল না দিবাকরের।

বাচ্চাটা মায়ের কাছে শুয়ে আছে। একবারও চেঁচায় নি। কাঁদেও নি। হারানো মাকে খুজে পেয়ে ও যেন নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে সিরিজার পাশে। কিন্তু দিবাকর আর ঘুমোতে পারছে না।

একটা সিগারেট ধরানোর আগে হাত দিয়ে ঠোঁটটা মুছে নিল দিবাকর। চেয়ারে বসে এই নিয়ে পরপর চারটে সিগারেট হল। সিরিজার কথা চিন্তা করে, এত সিগারেট খেয়েও মুখের লালা যেন শুকোচ্ছে না।

মনে পড়ছিল দিবাকরের। সেই সিরিজা একবার চুমু খেয়েছিল ওর ঠোঁটে। রজতের কথা চিন্তা করেও দিবাকরের ঠোঁটে চুমুটা খেতে ইতস্তত করেনি সিরিজা। দিবাকরের মন রাখতেই বোধহয় খেয়েছিল চুমুটা। কিন্তু তারপর থেকেই সম্পর্কটা কেমন ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গেল। সিরিজা সেই যে রজতেরই থেকে গেল। সম্পর্ক সেভাবে গাঢ় আর হল না কিছুতেই। কেন যে চুমুটা সেদিন বিষাদ লেগেছিল, ভেবে খুব আফসোস হয় দিবাকরের। ওর মধ্যে প্রাণটা হয়তো ছিল না সেভাবে। মন থেকে চুমু তো নয়, কারুর প্রত্যাশা মেটানোর জন্য লোক দেখানো যান্ত্রিক চুমু। রজতের বন্ধুকে সেদিন পরীক্ষা করতে চেয়েছিল সিরিজা। কিন্তু আজ? আজ তো কোনো পরীক্ষা নয়। একেবারে নির্দ্ধিদায় সিরিজা বলে ফেলেছে মনের কথাটা। রজতের সঙ্গ ছেড়ে এখন দিবাকরের সাথে থাকতেই ও বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করবে। সিরিজার নতুন ঠিকানা এখন এ বাড়ী। ক্যান্টনমেন্টের রজতের সেই টু রুম ফ্ল্যাট নয়। যেখানে শত্রু পক্ষের ঘনঘন আনাগোনা। নিশ্চিন্তে পুরুষমানুষকে নিয়ে সোহাগ করার উপায় নেই। সিরিজা তাই চায় একটু নিরিবিলিতে থাকতে। রজতের টুরুম ফ্ল্যাট ছেড়ে দিবাকরের এই ছোট্ট ঘরে। যদি ওকে থাকতে দেয় এখানে দিবাকর।

টিকটিকি দুটো মাটিতে পড়ে গিয়ে কোথায় যে গেল দিবাকর আর দেখতে পাচ্ছে না। সিগারেট আবার একটা ধরালো। কিন্তু খেতে যেন ইচ্ছে করছে না আর। দুরন্ত আবেগ মানুষের মনকে যেমন উত্তাল করে তোলে। দিবাকরের সেরকমই হচ্ছিল। অভাবনীয় একটা পরিস্থিতি। উদ্দাম মনকে কিছুতেই সান্তনা দিতে পারছে না ও। চেয়ার ছেড়ে উঠে চলাফেরা শুরু করে দিয়েছে, ঘরের মধ্যে। কেমন যেন দিশাহারা এখন। সিরিজার ঘরে একবার যাবে কিনা তাই ভাবছে। ঘরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে পায়চারী করে একবার সিরিজার ঘরের দিকে পা টা একবার বাড়ালো দিবাকর। পরমূহূর্তেই ইতস্থত করে পিছিয়ে গেল আবার।

খুব দেখতে ইচ্ছে করছে সিরিজাকে। ও কি বাচ্চাটা নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে? হয়তো তাই। ঘুমন্ত অবস্থায় সিরিজাকে একবার দেখতে পারলেই যেন পরম শান্তি। কাল সকালে সিরিজা উঠলেই দিবাকর বলে দেবে ওকে। আর তোমাকে কোথাও যেতে হবে না সিরিজা। রজতের কাছেও নয়। এখানে সেখানে কোথাও নয়। তুমি এখানেই থাকবে সিরিজা। শুধু আমার কাছে।

সাহস করে এবার শোবার ঘরের দিকে একটু পা বাড়ালো দিবাকর। মনের মধ্যে হতাশার জাল বিস্তার করেছে, তবুও যেন তার মধ্যে একটু আশার আলো খুঁজতে চাইছে দিবাকর।

সিরিজা যদি কাল ওর প্রস্তাবটা মেনে নেয়। এখন শুধু এক পলক দেখে নিয়েই নিশ্চিন্তে ঘুম। নইলে বিনিদ্র রাত্রি এভাবেই কেটে যাবে। দিবাকর পারবে না কিছুতেই নিজের মনকে আর সান্তনা দিতে।

কাল সূর্যের আলো উদয় হবার পর হয়তো নতুন কিছু অপেক্ষা করছে দিবাকরের জীবনে। একেবারে মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে মেয়েটা। এখন আর রজত নয়, দিবাকরকেই করতে চাইছে ওর একান্ত ভালোবাসার মানুষ।

দরজাটা খোলাই রয়েছে। মুখটা একটু ভেতরের দিকে করে অল্প আলোতে সিরিজাকে দেখার চেষ্টা করলো দিবাকর। বাচ্চাটাকে পাশে নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। দরজার দিকেই পাশ ফিরে শুয়ে রয়েছে সিরিজা। শোবার মধ্যে অন্যমনস্কে, অসংলগ্ন শাড়ীতে সিরিজার নিটোল দুটি বুক। ব্লাউজ থেকে একটু বেরিয়ে পড়েছে খাঁজটা। কি দুরন্ত শরীর, অসামান্য রূপ। ঘুমের মধ্যে নরম, কোমলের মত লাগছে ওর মুখমন্ডলটা। ঠোঁট থেকে গ্রীবা, স্তন থেকে কোমর পেরিয়ে নিখুত শরীরটা যেন হৃদয় দুলিয়ে দেয়।

রজত বলেছিল দিবাকরকে, সিরিজা হল আমার হৃদয়েশ্বরী। এমন এক নারী, যা পুরুষমানুষের অকল্পনীয় আকাঙ্খার সবকিছুই যোগান দিতে পারে অনায়াসে। বুকের মধ্যে বুকের ধনকে ধরে না রাখতে পারলে, সব আকাঙ্খাই যে মাটি।

যাকে দেখে এত পাগল হওয়া যায়, তাকে কি এত সহজে ছেড়ে দেওয়া যায়? এতো তীরে এসেও তরী ডুবতে চলেছে দিবাকরের। কেন ও তখন বললো না সিরিজাকে? তোমার প্রতি কিছুটা হলেও দূর্বলতা এখনও রয়ে গেছে সিরিজা। আমি হয়তো নিজের মনের জোরটাকে বাড়াতে পারছি না। কিন্তু তোমার এই প্রস্তাবকে প্রত্যাক্ষাণ করবো, এমন মূর্খামিও আমি দেখাতে পারছি না তোমাকে। অতএব তুমি আমার। আজ থেকে আমার। আর কারো নও।

সিরিজার শরীরটা ঘুমের মধ্যে একটু নড়াচড়া করছে। দরজা থেকে চটকরে সরে গিয়ে পাশের ঘরে চলে এল দিবাকর। দেওয়ালে পিঠটা ঠেকিয়ে অনুশোচনা করছে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। মুখে বলতে দ্বিধা করি, অথচ চোরের মত লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার চেষ্টা করি ওকে। আমি যেন একটা কি?

মাথাটা নীচু করে চুলের মুঠিটা হাত দিয়ে ধরলো দিবাকর। যেভাবে মানুষ ভুল করেছে ভেবে, মাথা ঠোকে। সেভাবেই হাত দিয়ে কপালটাকে একটু চাপড়াতে লাগলো দিবাকর। রাগে আফশোসে নিজেরই গলার টুটিটা চেপে ধরতে ইচ্ছে করছে।

ইচ্ছা হল, আর একবার সিরিজাকে শেষ দেখাটা দেখতে, শুধু আজকের রাতটুকুর জন্য। দরজা দিয়ে মুখ বাড়ালো দিবাকর। দেখলো সিরিজা বিছানায় উঠে বসে আছে। অন্ধকারে একটা ছায়ামুর্তী ওকে দেখছে। সিরিজা ওখান থেকেই বলে উঠলো, "কি হল দিবাকরদা? এসো আমার কাছে। ওখানে দাঁড়িয়ে রয়েছ কেন?"

সিরিজাকে ওভাবে বিছানায় উঠে বসতে দেখে বেশ থতমত খেয়ে গেল দিবাকর। কি জানি মেয়েটা কি ভাবলো? দিবাকরও কি করবে বুঝতে পারছে না। অল্প আলোতেও সিরিজার মুখটা এখন বেশ স্পষ্ট। ওর দিকে তাকিয়ে আছে একদৃষ্টে। যেন নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দিবাকরকে নিয়ে।

দিবাকর ভাবল, সিরিজা এত রাত্রেও জেগে আছে শুধু কি ওরই জন্য? না কি কোন গাঢ় শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেছে সিরিজার? এত সাবধানে পা টিপে টিপে ঘরের মধ্যে মুখ বাড়ালো দিবাকর। তাও টের পেয়ে গেল সিরিজা? ও তো শুয়েছিল। উঠলো কখন? নাকি চোখ খুলেই শুয়েছিল দিবাকরের আশায়? ওকে ডাকছে কাছে। তাহলে এখন?

একটু আগে বুকের কাপড় সরিয়ে ফেলেছিল সিরিজা। এখনও তাই। বিছানায় উঠে বসেছে। আঁচলটা ঢাকা নেই। কে জানে? মনে কি আছে মেয়েটার।

দূর্বলতাকে ঢাকার জন্য দিবাকরও একটা ছুঁতো খুঁজছে। ঘর থেকে বেরোতেও পারছে না। ভাবছে কিছু একটা বলে সিরিজাকে যদি ঠেকানো যায়। লজ্জা থেকে রেহাই পাবে কি করে ও বুঝতে পারছে না।

সিরিজা বিছানায় বসেই বললো, "আসতে লজ্জা পাচ্ছো দিবাকরদা? এসো কাছে। এত লজ্জা কিসের? কি হবে আমার কাছে এলে? তুমি খারাপ হবে? ভয় পাচ্ছো? এসো কাছে?"

এত আবেগ দিয়ে দিবাকরকে কেউ কোনদিন ডাকেনি। ডাককে উপেক্ষাও করতে পারছে না। অথচ ওর কাছে যেতে কেমন যেন ইতস্তত করছে। আড়ষ্টতায় শরীরটা নড়াচড়া করছে না। ভেতরটা কেমন যেন করছে। চমকে গেছে, হঠাৎই জেগে ওঠা সিরিজাকে দেখে। কিন্তু সিরিজার অমন বিহ্বল মূর্তী কেন? চোখে মুখে কোনো বিরক্তি নেই। যেন খুশি হয়েছে দিবাকরকে দেখে।

আবার সিরিজা বললো, "এতো করে বলছি তোমায়, তুমি কাছে আসতে পারছ না? আমি কি উঠে আসবো তোমার কাছে?"

দিবাকরের মনে হল, ও তো রজত নয়। কিন্তু সিরিজা যেন রজতের মতই খুব কাছে পেতে চাইছে দিবাকরকে। চোরের মতন মুখ বাড়িয়ে ধরা পড়ে গেছে। অথচ সিরিজা এমন ভাবে ওকে ডাকছে, যেন একটুও বিচলিত হয়নি দিবাকরকে দেখে।

কোনরকমে আড়ষ্ট ভাবটা কাটিয়ে আরও একটু ঘরের ভেতরে প্রবেশ করলো দিবাকর। বিছানার দিকে এগোতে মন চাইছে না, তবু যেতে হচ্ছে সিরিজার ডাকে। মনের মধ্যে লালসা নেই, অথচ ওকে হারানোর ভয়ে একটু আগেই ভীষন চঞ্চল হয়ে পড়েছিল দিবাকর। সাধ করে মেয়েটা তখন মনের ইচ্ছেটা জানিয়েছিল। মুখের ওপর হ্যাঁ বলে দিলে এই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হতো না।

একটু কাছে গিয়ে দিবাকর বললো, "আসলে আমি দেখতে এলাম, তোমার কোনো অসুবিধে হচ্ছে কিনা? তুমি জেগে আছো বুঝতে পারিনি।"

অন্ধকারেও সিরিজার চোখ দুটো বেশ স্বচ্ছ। আকুতি দৃষ্টি নিয়ে দেখছে দিবাকরকে। কথাটা বিশ্বাস হয় নি। শুধুই ওর অসুবিধের কথা চিন্তা করে দিবাকর এসেছে এ ঘরে? মনকে যেন সায় দিতে পারছে না সিরিজাও। বুকের আঁচলটা তবুও সরালো না ও। দিবাকরকে বললো,তুমি এখনও ঘুমোও নি? চিন্তায় ঘুম আসছে না বুঝি?

কথাটা শুনে সামনেই দাঁড়িয়ে রইলো দিবাকর। খাঁজকাটা বুকের দিকে তাকাতেও পারছে না ভালোভাবে।

সিরিজা বললো, "বসো এখানে। কি, কোন দুশ্চিন্তা হচ্ছে আমাকে নিয়ে?"

দিবাকর বললো, "না সিরিজা। তোমাকে নিয়ে দুশ্চিন্তা কেন করবো আমি? আমি আসলে একটু নিজের কথাই চিন্তা করছিলাম অনেকদিন পরে।"

সিরিজা বললো, "কি চিন্তা করছিলে? আমাকে বলবে তুমি?"

তবু ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দেখে সিরিজা এবার নিজেই হাতটা বাড়ালো ওর দিকে। দিবাকরের হাতের ওপর সিরিজার হাতের স্পর্শ। একটু চাপ দিচ্ছে হাতটা দিয়ে। দিবাকর বসে পড়লো সিরিজার পাশে।

- "কি চিন্তা করছিলে? আমাকে বলবে না?"

এখনও তাকিয়ে রয়েছে দিবাকরের দিকে একদৃষ্টে। যেন মনের মধ্যে গভীর আশা নিয়ে কিছু প্রত্যাশা করছে ইতিবাচক, দিবাকরের মুখ থেকে শোনার জন্য।

দিবাকর মুখটা নীচু করে বললো, "এতোদিন শুধু অন্যের কথাই ভেবে এসেছি। বন্ধুটার কথা চিন্তা করে তোমাকে কি উত্তর দেব? তাই সংশয়ে ভুগছিলাম। মনে হল, তোমাকে বুঝতে ভুল করেছি আমি। তোমার তো কোনো দোষ নেই সিরিজা। দোষটা রজতের। ভুলটা ওই করেছে। এখন আমি পড়ে গেছি তোমার আর রজতের মাঝে। দোটনায় পড়ে নিজে কি করবো, বুঝে উঠতে পারছিলাম না।"

সিরিজা এবার একটু আবেগ দিয়ে বললো, "আমিও তোমাকে বুঝতে ভুল করেছিলাম দিবাকরদা। তুমি ভালো লোক। তোমার বন্ধুও ভালো। কিন্তু আমার কিছু করার নেই। আমি তো আর ওখানে ফিরে যেতে পারবো না।"

দিবাকর দেখছিল, সিরিজা ওর হাতটা ধরে রয়েছে এখনও। ছাড়তে চাইছে না সহজে। এই শেষবারের মতন দিবাকরের কাছ থেকে যেন প্রবল সন্মতিটা পাবার আশায় আকূল হয়ে চেয়ে রয়েছে ওর দিকে। হাতটা ধরেই সিরিজা বললো, "আমার জন্য নিজের বন্ধুকে ভুলে যেতে পারবে না দিবাকরদা? আমি যদি ওর কাছে আর ফিরে যেতে না চাই? তুমি তোমার বন্ধুর জায়গাটা নিতে পারবে না?"

একটা উষ্ণ অনুভূতি আসতে আসতে ঘিরে ধরছিল দিবাকরকে। অবাক চোখে চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। ও কি তাহলে শেষ পর্যন্ত রজতকে ভুলেই গেল? আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চায় না ওর সাথে?

মনে মনে বললো, "হতাশায় যাকে তুমি ভুলে যেতে চাইছো সিরিজা, সে তো, তুমি ভুলে গেলেও, তোমাকে ভুলবে না সহজে। আমি রজতকে নিয়ে আর চিন্তা করি না। কিন্তু তুমি পারবে তো ওকে ঠেকাতে? কাল রজত এসে জোর করে তোমাকে নিয়ে যেত চাইবে এখান থেকে। আমি তোমার জন্য ওকে বাঁধা দেব। আর বাঁধা দিলেই নষ্ট হবে, চিরকালের মতন আমার সাথে ওর সম্পর্ক। প্রবল ভাবে যে তোমাকে চায়, তাকে আটকালে আমি হবো তার চরম শত্রু। ও তোমার কোনো দোষ দেখবে না সিরিজা। নিজের তো নয়ই। বুঝবে এই সাধের বন্ধুটাই তাল বুঝে ছুরী বসিয়ে দিয়েছে ওর বুকে। তোমার মনটা যদি তখন বদলে যায়? তুমি যদি তখন ফিরে যাও?"

সিরিজা দেখছে, দিবাকর মুখে কিছু বলছে না। কিছু একটা চিন্তা করছে, হয়তো ওকে নিয়েই।

আস্তে আস্তে দিবাকরের হাতটা ধরে ওকে একটু কাছে টানার চেষ্টা করছে সিরিজা। দিবাকর বুঝতে পারছিল, সিরিজার সেই প্রকট যৌন আবেদন, রজতের রক্তে যা ম্যারাথন ছুটিয়ে দিয়েছিল, এবার সেটাকেই মেলে ধরার চেষ্টা করছে সিরিজা। ওর যেন অবলম্বন হিসেবে একজন পুরুষকে সত্যিই দরকার। তাহলে কি এতক্ষণ শুধুই উদ্বেগে ছটফট করছিল বিছানায়?

হাতটা ধরে দু-মুঠোর মধ্যে চেপে ধরার চেষ্টা করছিল সিরিজা। হঠাৎই দিবাকরকে বলে বসলো, "আমি পারি না দিবাকরদা। আমার বুকের ভেতরটা চিনচিন করে। দেখো আমার বুকের এখানে হাত দিয়ে।"

যার শরীরে এত দাবদাহ, সে কি করে পারবে পুরুষসঙ্গ ছাড়া থাকতে? চকিত হরিনীর মতন কাঁপতে শুরু করেছে সিরিজা। দিবাকর এমন রূপ আগে কখনও দেখেনি সিরিজার।

ওর হাতটা এবার মুঠোয় ধরে নিজের বুকে ঠেকানোর চেষ্টা করছিল সিরিজা। দিবাকর ছাড়াতেও পারছে না।

ওর দিকে তাকিয়ে দিবাকর বলে উঠলো, "কি করছো তুমি সিরিজা? কি হয়েছে তোমার? ছাড়ো আমার হাতটাকে।"

সিরিজা বললো, "তুমি আমার বুকে হাত রাখতে লজ্জা পাও? আমি যদি লজ্জা কাটিয়ে দিই তোমার? পারবে না এখানে মুখটা রাখতে?"

তপ্ত শরীরে যেন প্রবল আকাঙ্খায় থরথর করে কাঁপছে সিরিজা। ওর ঘনঘন দীর্ঘশ্বাস পড়ছে। এই প্রথম মুখ থেকে স্বাকারোক্তিটা বেরিয়ে এলো। - "আমি পারি না দিবাকরদা। আমি পারি না। এতো কামজ্বর শরীরে। কেউ আমাকে ভালোবাসুক, আমার শরীরটাকে আদর করুক। আমাকে কেউ উজাড় করে দিক। এই শরীরটাই শুধু আমাকে ছটফট করিয়ে পাগল করে মারায়। কাকে দেব এই শরীর? আমার শরীরে যে শুধুই তাপ দিবাকরদা। তুমি যদি আমাকে বুঝতে না পারো আর যে কেউ বুঝতে পারবে না।"

দিবাকরের একটা হাত দুহাতে ধরে এবার নিজের বুকের খাঁজে ঠেকিয়ে দিল সিরিজা। ও চোখ বুজে ফেলেছে। যেন বুকের ওপর দিবাকরের হাত চেপে রেখে কষ্টটা লাঘব করতে চাইছে। গোলাকার দুটো পৃথিবী, সিরিজার অমূল্য বক্ষ সম্পদ। যা চোখে পড়লেই হাই ভোল্টেজ কারেন্ট বয়ে যায়, সেখানে পড়েছে দিবাকরের হাত।

নিজের মধ্যে সেই শক্তিটা আনতে পারছে না রজতের মতন। হাতটা কাঁপছে। সিরিজা মুঠোয় ওটা চেপে ধরে শক্তিটা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।

চোখটা বুজেই সিরিজা বললো, "আমি জানি তুমি ওর মত নও। নিজে থেকে কখনও কাউকে কিছু করোনি। একবার অনুভব করো দিবাকরদা। সাহসটা বাড়াও। কামপাগলিনী এই মেয়েটা কি সুখ দিতে পারবে না তুমি?"

দিবাকর অল্প কিছু সময়ের জন্য চোখ দুটো বুজে ফেললো উত্তেজনায়। হাত দিয়ে তরঙ্গটা বয়ে এসে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে নিমেষে। মেয়েমানুষের বুক ছোঁয়ার কি অপূর্ব অনুভূতি। সিরিজা ক্রমশ হাতটাকে আরও ছড়িয়ে দিতে চাইছে সারা বুকের ওপরে। ও নিজে থেকে দিবাকরের হাতটা ধরে সঞ্চালন করাতে চাইছে, কিন্তু দিবাকর পারছে না সক্রিয় হতে।

এই প্রথম কোনো মেয়েমানুষের বুকের ওপর হাত পড়েছে দিবাকরের। মনে পড়ছিল রজতের কথা। রজত ওকে বলেছিল, "সিরিজা একটা নেশার মতন। যে নেশা বড়ই মধুর। তোমার কপালে এরকম কেউ যদি জোটে, তাহলে তুমি হবে খুব ভাগ্যবান। কিন্তু সিরিজার মতন তুমি কাউকেই পাবে না দিবাকর। ও পাওয়া বড়ই কঠিন। পৃথিবীর এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। শুধু খুঁজে ফিরেই একসার। এই পৃথিবীতে সিরিজার কোনো বিকল্পই নেই। শত চেষ্টা করেও আর একটা দ্বিতীয় সিরিজা তুমি খুঁজে আর পাবে না।"

শেষ পর্যন্ত কিনা নিজের সিরিজাকেই তুলে দিল ওর হাতে? দিবাকরের ভেতরটা তোলপাড় হতে শুরু করেছে।

চোখটা খুলল দিবাকর। সিরিজা বললো, "আমার ঠোঁটে একটা চুমু খাবে দিবাকরদা? একবার তো আমি খেয়েছিলাম। তুমি কিন্তু নিজে থেকে এখনও খাওনি আমাকে। খেতে ইচ্ছে করছে না?"

পাথরের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে দিবাকর। ওর গলার স্বর আটকে গেছে। সিরিজা যেন আজই বাসনার জ্বালাকে পূরণ করে নিতে চাইছে। পুরুষমানুষের সঙ্গ পাবার জন্য এতটাই উদগ্রীব থাকে মেয়েটা, দিবাকর আগে বোঝেনি।

ঠোঁট দুটো কাঁপছিল সিরিজার। দিবাকরের হাতটাকে বুকের ওপর থেকে তুলে নিজের ঠোঁটে ছোঁয়ালো সিরিজা। বুঝতে পারছিল দিবাকর, এ এক নতুন পৌরুষের আগুনে ঝাঁপ দিতে চাইছে সিরিজা। ঠোঁটে ঠোঁটে মিলন ঘটলে নাকি দারুন খেলা শুরু হয়। ভালোবাসা লাট্টুর মত ঘুরপাক খেতে থাকে সারা শরীরে। ও যেন সেই খেলাই শুরু করতে চাইছে দিবাকরের সাথে।

ওকে অবাক করে সিরিজা বললো, "তুমি ভাবছো? আমি আবার যদি কাল তোমার বন্ধুর কাছে ফিরে যাই? আমাকে বিশ্বাস করতে পারছো না? ও আমাকে জোর করলেও আমি যাবো না। তুমি দেখে নিও। শুধু একটু তোমাকে সাহস দিতে চাইছি দিবাকরদা। আমাকে একটু বোঝার চেষ্টা করো। শরীরে যে আমার ভীষন কামনা। এই কামনা নিয়েই চলে এসেছিলাম ওখান থেকে। একটা মনের মানুষ জুটিয়েও নিয়েছিলাম। কিন্তু আজ সেই মানুষটা আমার মনের মধ্যে আর নেই। কোথায় হারিয়ে গেছে। এখন শুধু তোমাকেই আবার নতুন করে পেতে চাইছি।"

সন্মতি না নিয়েই দিবাকরের হাতের এক একটা করে আঙুল মুখে পুরে চুষতে শুরু করলো সিরিজা। অবাক চোখে দিবাকর তাকিয়ে আছে ওর দিকে। মুখে কিছু বলতে পারছে না। চোখ বন্ধ করে সিরিজা প্রবল তৃপ্তিতে ওর হাতের আঙুল চুষে যাচ্ছে। চাইছে দিবাকর একটু রজতের মতই হয়ে যাক। শরীরি ভান্ডারে মুগ্ধ হয়ে রজত যেভাবে কামনার ঝড় তুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সিরিজার ওপর। সেভাবে দিবাকরও যদি.....

আবেগটা চেপে রাখতে না পেরে সিরিজা এবার আষ্ঠেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো দিবাকরকে। গলা জড়িয়ে দিবাকরের গালে একটা চুমু খেয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে। প্রতিরোধ করতে পারেনি দিবাকর। শুধু মুখে বললো, "সিরিজা তুমি?"

ওকে জড়িয়ে ধরে গালে অনবরত চুমু খেয়ে চলেছে সিরিজা। এবার ঠোঁটটাকে দিবাকরের ঠোঁটের খুব কাছে নিয়ে গিয়ে বললো, "পারবে না তুমি তোমার বন্ধুর মতন হতে? পারবে না দিবাকরদা? কি বলো?"

শরীরের ভেতরটায় এমন একটা তোলপাড় হয়ে যাওয়ার মূহুর্ত আগে কখনও আসেনি। সিরিজার ঠোঁট ওর ঠোঁটের কত কাছে, অথচ কামড়ে ধরে জিভের লালা দিয়ে তীব্র আস্বাদনে ভরিয়ে দিতে পারছে না সিরিজাকে। চুম্বনের অনুভূতিটা গাঢ় চুম্বনে সবচেয়ে প্রানবন্ত হয়। দিবাকরের মনে হচ্ছে একটু ছুঁয়ে স্পর্শ করলেই ও যেন পৃথিবীর সেরা ঠোঁটের স্বাদটা পাবে। একটু একটু করে ঠোঁটটাকে খুব কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, অথচ জড়তাই ওকে কেমন ঠোঁটের স্পর্শ থেকে দূরে করে দিচ্ছে।

নিজে থেকে দিবাকরের চেষ্টাটাকে বিফলে যেতে দিল না সিরিজা। গলা থেকে উঠে গিয়ে ওর দুটো হাত তখন জড়িয়ে ধরেছে দিবাকরের মাথাটাকে। ঠোঁটের সুধাকে উজাড় করে বিলিয়ে দেবার জন্য ও বললো, "কি হয়েছে তোমার দিবাকরদা? এখনও লজ্জা পাচ্ছো? এই যে তাকাও, আমার দিকে তাকাও।"

দিবাকর তাকালো। কিন্তু এখনও যেন পুরোপুরি রজত হতে পারেনি। সিরিজা বললো, "আমি ছোঁয়াচ্ছি তোমার ঠোঁটে আমার ঠোঁটটা। এবার তো তুমি আমায় ভালোবাসতে পারবে দিবাকরদা?"

চোখটা বন্ধ করে দিবাকর অনুভব করলো, সিরিজার ঠোঁট ওর ঠোঁটকে স্পর্শ করেছে। আস্তে আস্তে চুমুটা গভীর করার চেষ্টা করছে সিরিজা, দেখছে দিবাকর নিজে থেকে ওকে কিছু করে কিনা?

শারীরিক সম্পর্কস্থাপনের যোগসূত্র। চুমু খাওয়াটা একবার সেরে নিলেই যেন রপ্ত হয়ে যায় ব্যাপারটা। বারবার এমন ঠোঁটে চুমু খেতে ইচ্ছে কার না করে?

ঠোঁট ছোঁয়ানোর নাম করে সিরিজা নিজেই কি সুন্দর জিভটা প্রবিষ্ট করে দিচ্ছে দিবাকরের মুখের ভেতরে। যেন চুমু দিয়ে ভালোবাসা উজাড় করে দেওয়ার তাগিদে সিরিজা ঠোঁট দুটো পুরো ছড়িয়ে দিতে চাইছিল দিবাকরের ঠোঁটের ওপরে।

দু হাতে আষ্ঠেপৃষ্ঠে সিরিজা জড়িয়ে ধরলো দিবাকরকে। ঠোঁটটা চেপে বসেছে দিবাকরের ঠোঁটের ওপরে। দিবাকর না চুষলেও সিরিজা চুষতে চাইছিল ওর ঠোঁট। এত আবেগ মাখানো চুমু দিয়ে সিরিজা উজাড় করে বিলিয়ে দিতে চাইছে ওর ঠোঁট, অথচ দিবাকর পারছে না দক্ষতাটাকে সেভাবে দেখাতে।

উৎসাহটা বিন্দুমাত্র হারিয়ে না ফেলে সিরিজা আবার উৎসাহ দেবার চেষ্টা করলো দিবাকরকে।

- "আমি বুঝতে পারছি, তোমার ভেতরটা কি হচ্ছে দিবাকরদা। একবার এই ঠোঁট নিজের ঠোঁটের মধ্যে নিয়ে দেখ, আর জীবনে কোন কষ্ট থাকবে না তোমার। আমি ঘুমোইনি। তোমার জন্যই জেগে শুয়েছিলাম। যদি তুমি একবার অন্তত আসো।"

সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে ভেতরটা কেমন যেন হয়ে গেল দিবাকরের। এটা কি পাপ না স্বপ্ন? নাকি কাউকে ঠকিয়ে কার্যসিদ্ধি? না নিজের সুখ না পাওয়ার যন্ত্রনাটাকে মেরে ফেলে আজ নতুন এক জীবনের সূচনা হতে চলেছে ওর কাছে। ভেতরে ভেতরে জ্বালা রয়েছে। অথচ পরিষ্কার মন ওকে মিলিয়ে দিতে চাইছে না সিরিজার ঠোঁটের সাথে। একটা গভীর চুম্বনের প্রত্যাশা নিয়ে মেয়েটা কাতরে অপেক্ষা করছে দিবাকরের জন্য অথচ প্রতিদান দিতে শুধুই দূর্বল হয়ে পড়ছে দিবাকর।

একটু ঠেলা দিয়ে সিরিজাকে সরিয়ে দিয়ে বিছানা থেকে উঠে পড়লো দিবাকর। সিরিজা হতবাকের মতন তাকিয়ে আছে ওর দিকে। বুঝতেই পারছে দিবাকর শেষ মূহূর্তে প্রত্যাখ্যান করেছে ওকে। আর কোন আশা আর নেই। অমন প্রাণবন্ত চুমুর স্বাদ নেবার আনন্দটাই যেন নষ্ট করে ফেলেছে দিবাকর। ও কি তাহলে ঘর থেকে এখন বেরিয়ে যাবে? আর আসবে না এ ঘরে?

ঠিক যেমন দাঁতে দাঁত চেপে পুরুষমানুষ মনে মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে, এবার আমি নিজের মনকে শক্ত করবোই। আমি কি পারিনা? আমার নিজের আশাকে পূরণ করতে? নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে অন্যের কথা শুধু চিন্তা করা, এ হল পৃথিবীর সব থেকে মূর্খামির কাজ। আজ দিবাকর সম্পূর্ন অন্যরূপে আত্মপ্রকাশ ঘটাবে, এই সুন্দর রঙীন পৃথিবীতে। পৃথিবীটা আজ ওর কাছে বড়ই রঙীন, কারণ না চাইতেই পাওয়ার মতন সিরিজা এসে গেছে ওর জীবনে।

বিছানা থেকে উঠে গিয়ে প্রায় দরজার কাছে চলে গিয়েছিল দিবাকর। সিরিজা নিরাশ মনটা নিয়ে বসে আছে খাটের ওপরে। একবার মনে মনে বললো দিবাকর, "শালা রজত। যা, আর তোকে মনেও রাখি না আমি। আজ থেকে দিবাকর তোর কেউ নয়।"

বিছানার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো দিবাকর। সিরিজা ওর দিকে তাকিয়ে দেখছে একদৃষ্টে। আসতে আসতে পা দুটো বাড়িয়ে বিছানার দিকে এগিয়ে এল দিবাকর। যেন ভেতরের শক্তিটা এবার অদম্য। ছেড়ে যাওয়া দিবাকর এবার নতুন ভাবে ফিরে এসেছে।

বিছানায় বসে ও দুহাত দিয়ে সিরিজার মুখটাকে ধরলো। সিরিজা ওকে দেখছে। দিবাকরের বদলে এবার কাঁপছে সিরিজার ঠোঁট। দিবাকর ওদুটোকে আঁকড়ে ধরে এবার প্রবল চোষার তাগিদ অনুভব করছে। আসতে আসতে নিজের ঠোঁটটাকে সিরিজার ঠোঁটের ওপরে নিয়ে গেল দিবাকর। একবার হাঁ করেছে ওটাকে কামড়ে ধরার জন্য। তারপর নিজেই সিরিজার মাখনের মতন শরীরটাকে হাতে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিল আসতে আসতে। বুকে কাপড় নেই, সিরিজার। বাচ্চাটা পাশে ঘুমোচ্ছে শান্তভাবে। সিরিজা দেখছে দিবাকরকে। দিবাকর দেখছে সিরিজার তাক লাগানো শরীরটাকে। দুরন্ত একটা দৃশ্য। দিবাকরের দুচোখ এখন বিস্ফোরিত। জীবনের যেন শ্রেষ্ঠ মূহূর্ত।

ওর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো দিবাকর, "আজ তুমি আমায় ছারখার করে দিতে পারলে সিরিজা। এ শুধু তুমি বলেই সম্ভব হল। তোমার এই শরীর,যৌবনের চাবুক, আমার ভেতরটা দগ্ধ ক্ষতবিক্ষত করে দিল। নাও আজ থেকে তুমি আমারই, আর কারোর নও।"

রজত যেখানে শেষ করেছিল, দিবাকর যেন সেখান থেকেই শুরু করলো। বুকের ওপর দিবাকরের হাতটা একটু আগে চেপে ধরেছিল সিরিজা। এখনও হাতটা গরম হয়ে আছে। সিরিজা ঠোঁট ছুঁইয়েছিল ওর ঠোঁটে। এখনও সিরিজার জিভের লালা লেগে আছে সেই তৃষ্ণার্ত ঠোঁটে। ফুলের মতন এক নারী। এক্ষুনি দিবাকর যদি মুখটা শরীরের ওপর রেখে ঘসতে শুরু করে দেয়। কচলাতে শুরু করে সিরিজার দেহটাকে, এমন মিষ্টতা প্রদান করতে শুরু করবে, যা জীবনে কোনদিন পায়নি দিবাকর।

ঠোঁটটা প্রথমে সিরিজার ঠোঁটের ওপরই রাখলো দিবাকর। মিষ্টি ঠোঁটটা এবার রাতটাকে কত মিষ্টি করে দিতে শুরু করেছে। দিবাকর সিরিজার ঠোঁটটাকে আঁকড়ে ধরে আসতে আসতে চুষছে। বালিশের ওপর সিরিজার মাথাটা আর নেই। দিবাকরের একটা হাতটাই এখন বালিশের কাছ করছে। সিরিজার কামরাঙা ঠোঁট থেকে লালা বেরিয়ে মাখিয়ে দিচ্ছে দিবাকরের ঠোঁট। ফাঁকে ফাঁকে চলছে তীব্র ভালোবাসার চুম্বন। মুখগহ্বরের অসীম আনন্দ। মন প্রাণ ঠিক জুড়িয়ে যাবার মতন। এত ভালোভাবে ঠোঁট চুষতে যেন সিরিজাই ওকে শিখিয়ে দিয়েছে একটু আগে।

আনন্দ জোয়ারে মাততে মাততে দিবাকরের হাতটা উঠে আসছিল সিরিজার বুকের ওপর।

সিরিজার ঠোঁট চুষতে চুষতে এবার হাতটাকেও একটু সচল করতে চাইল দিবাকর। পরিপূর্ণ দুই স্তনের একটা টিপতে ইচ্ছে করছে চুমুর সাথে তাল মিলিয়ে। বুকের বল টিপতে টিপতে জিভের লালা মিশিয়ে একাকার করা, এর মত আনন্দ যেন আর কিছুতে নেই। দুটো পর্বত শৃঙ্গকে নিয়ে ছেলেখেলা করতে যেন আরও মনপ্রাণ চাইছে। মৃদু চাপ, সঞ্চালন, তারপরেই আবার গোটা স্তনের ওপর হাত বুলিয়ে টিপতে টিপতে সুখের আবেশে ভেসে যাওয়া, পাহাড়সম বুক দুটো যেন ধরা দিয়েছে দিবাকরের হাতের মুঠোর মধ্যে।
 
মুখটা একটু তুলল দিবাকর। সিরিজা হাতটা দিয়ে মুছিয়ে দেবার চেষ্টা করছিল ওর ঠোঁটটাকে। পুলক আনন্দে এতক্ষণ সিরিজার ঠোঁট চুষে দিবাকরের ঠোঁটের আশেপাশেও লেগে গেছে সিরিজার জিভের লালা। কুঁকড়ে থাকা লোকটাকে অনেক কষ্টে জাগাতে পেরেছে, সিরিজা ঐভাবেই আনন্দ দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল দিবাকরের দিকে।

একবার চুমু খেয়েই যেন মন ভরে গেছে দিবাকরের। সিরিজাকে ঐভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে, ও বুঝতেই পারছিল কি সাংঘাতিক ভাবে চুমুটা খেয়েছে ও সিরিজার ঠোঁটে। আগুন ঝরানো ঠোঁটে নিজেকে মিশিয়ে দিয়েছিল একটু আগে। এই চুমুর চিহ্ন সারাজীবন ওর ঠোঁটে লেগে থাকবে।

শরীরের রক্ত চলাচল অসম্ভব পরিমানে বেড়ে গেছে। শুয়ে শুয়েই দিবাকরের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সিরিজা। দিবাকরকে বললো, "কি? কিছু ভাবছো?"

-- "না।"

- "চলে গিয়েও, হঠাৎ তুমি ফিরে এলে? আমি বোধহয়, তোমাকে জোর করলাম, তাই না দিবাকরদা?"

দিবাকর মন্ত্রমুগ্ধের মত চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। সিরিজা বললো, "তুমি থামলে কেন? আর ভালো লাগছে না বুঝি আমাকে চুমু খেতে?"

দিবাকর তবু চেয়ে আছে সিরিজার দিকে।

মাথাটা ধরে আসতে আসতে ওর মুখটাকে আবার নীচে নামানোর চেষ্টা করছিল সিরিজা। সুরভিত স্বাদ যেন শরীরের আরও অনেক জায়গায় লুকিয়ে আছে।

মধ্যপ্রদেশের জায়গাটা আরও অন্যরকম। কি যেন তাগিদ অনুভব করত রজত, এখানে মুখ রেখে। সিরিজার এই বুকদুটোই ভীষন তাতায় ওকে। মুখটা আস্তে আস্তে সিরিজার বুকের ওপরে চলে যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "আমার এখানে মুখটা রাখো না দিবাকরদা। তোমার ভালো লাগবে।"

শরীরে প্রবল শিহরণ। উত্তেজনার অনুভূতিটা যেন আগের থেকে আরও জোড়ালো। মুখ রাখতে গিয়েও এবার একটু কেঁপে কেঁপে যাচ্ছিলো দিবাকর।

সিরিজা বললো, "আমি আমার বুকের ব্লাউজটা খুলে ফেলি দিবাকরদা। তুমি একবারের জন্যও মুখটা অন্তত রাখো। কি ভয় তোমার? আমি তো সাড়া দিয়েছি তোমার ডাকে।"

দিবাকর ভাবছিল, মুখ রেখে তারপর?

বুকের ব্লাউজটা আস্তে আস্তে খুলছিল সিরিজা, একটা শরীরের মধ্যে ঝড়, বিদ্যুত, উন্মাদনা, লাভা যেন সবকিছুই বিরাজমান। শরীরের মানচিত্রটা এবার উন্মুক্ত হচ্ছে, আর কিছু পরেই মানচিত্র নখদর্পনে হয়ে যাবে দিবাকরের। সিরিজার উপত্যকা, কোথায় বাগান, কোথায় নদী, কোথায় বাঁকে বাঁকে ছড়িয়ে আছে ইশারা, কোথায় আমন্ত্রণ। এই সঙ্গটাই যেন আজ থেকে দিবাকরের রঙিন বসন্ত।

ওর বুকের দিকে তাকিয়ে শরীরের ভেতরে উত্তেজনাটা দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। দিবাকর দেখলো ব্লাউজের একপাশটা খুলেছে সিরিজা। এবার ওর দিকে তাকিয়ে দেখছে, দিবাকর ওখানে মুখটা রাখে কিনা? ওর ঠোঁটটা যদি সিরিজার স্তনের বোঁটার সাথে একবার মিশে যায়, জিভটা ছুঁয়ে বোঁটাটা মুখের মধ্যে নিয়ে প্রথমে একটু ধীরে, পরে দ্রুত এবং জোরে। স্তন নিয়ে দিবাকর কি খেলতে পারবে? ঠোঁট দিয়ে সামনে পিছনে টানা, তারপরে দাঁত দিয়ে একটু কেটে দেওয়া। স্তনচুম্বন, দংশন ও আস্বাদন, সিরিজা যেন উদগ্রীব হয়ে অপেক্ষা করছিল দিবাকরের জন্য।

মুখের ভেতরে জিভটা অল্প অল্প কাঁপছে দিবাকরের, অথচ ঠোঁটটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারছে না সিরিজার স্তনের ওপর। ব্লাউজের আড়াল থেকে স্তনের বোঁটাটা বেরিয়ে এসে মধুর আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, দিবাকর বুঝতে পারছে, ফুলের কুড়ির মতন মনে করে জিভের সাহায্যে চারপাশে গোল করে ঘুরিয়ে ওটাকে এখন আদর করা যায়, বোঁটাটা শক্ত হয়ে উঠলে, সেটা মুখের মধ্যে পুরে নেওয়া ভালো, তারপর দুই ঠোঁট দিয়ে সেটাকে চেপে ঘুরপাক দেওয়া সুখকর। এরমধ্যে একটু মৃদু দংশনও চলতে পারে। কিন্তু ওকি সে ভাবে সিরিজার বিশাল স্তনকে আদর করতে পারবে? কেমন যেন উত্তেজনার তুঙ্গ মূহূর্ত। বেঁচে থাকার সব কষ্ট হালকা হয়ে যায় এমন একটা স্তনকে মুখের সামনে পেলে।

গরম লাভার মতই ফুটতে শুরু করেছে সিরিজা। দিবাকর বুঝতে পারছিল, মেয়েটার শরীরে প্রবল কামনা বাসনা আছে, ও কেন রজতকে আপন করে নিয়েছিল, তারই জ্বলজ্যান্ত প্রমান এখন দিবাকরের চোখের সামনে। প্রেম আর তাড়না দুটোই যেন মিলে মিশে এখন এক বিন্দুতে।

- "কি হল? আমার এখানে মুখ রাখবে না দিবাকরদা?"

দিবাকর অস্ফুট স্বরে বললো, "সিরিজা....."

সিরিজা দুটো হাত দিয়ে ওর গলাটা জড়িয়ে ধরেছে। ঠোঁট বাড়িয়ে নিজেই দিবাকরের ঠোঁটটা কামড়ে ধরে চুষতে লাগলো নিজের মতন করে। - "কেন এত ইতস্তত করছো? আমি তোমাকে আর ছটফট করাতে চাই না দিবাকরদা। এসো আমার বুকে মুখ রাখো।"

আবেগে স্তনাগ্রটা নিজে থেকেই দিবাকরের মুখের মধ্যে চেপে ধরার ইচ্ছা প্রকাশ করলো সিরিজা। আসতে আসতে ওর মাথাটা ধরে নামানোর চেষ্টা করছে বুকের ওপর। সিরিজা বললো, "কোনো মেয়ের বুকে মুখ তো রাখোনি এতদিন?"

-- "না সিরিজা।"

- "আমার স্তন মুখে নিতে চাও না দিবাকরদা?"

-- "সিরিজা আমি?"

- "ভাবছ এই মেয়েটা তোমাকে কিছু জোর করে খাওয়াতে চাইছে? তাই না?"

-- "সিরিজা, আমি আসলে....."

- "আসলে কি?"

-- "আসলে....."

- "এর মধ্যে তো কোন অন্যায় নেই দিবাকরদা, তুমি সহজ হতে পারছো না, তাই - আমি তোমাকে সাহস দিচ্ছি দিবাকরদা, এসো আমার বুকে। চোখ বন্ধ করে মুখে নিয়ে পড়ে থাকো ততক্ষণ, যতক্ষণ শুধু তোমার মন প্রাণ চায়।"

এই প্রথম চোখটাকে বন্ধ করে মুখটাকে অল্প ফাঁক করে সিরিজার স্তনের বোঁটা মুখবন্দী করতে যাচ্ছিলো দিবাকর। সিরিজাও চোখটা বুজে ফেলেছে দিবাকরের ঠোঁটটাকে নিজের স্তনাগ্রের সাথে মিশিয়ে দেবার জন্য। জীবনের সেরা মূহূর্ত। একদিনেই জীবনটা যেন কত পাল্টে গেল। বোঁটাটায় সবে মাত্র স্পর্শ করেছে দিবাকরের ঠোঁট। জিভটা একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আস্বাদনটা নিতেই যাবে, এমন সময় পাশে শোয়া বাচ্চাটা হঠাৎই কেঁদে উঠলো তারস্বরে।

বেশ তো ঘুমোচ্ছিল নিশ্চিন্তে, কাঁদার আর সময় পেল না?

সিরিজার বুকের ওপর থেকে মুখ তুলে ধড়মড় করে উঠে বসলো দিবাকর। সিরিজাও উঠে পড়েছে বাচ্চাটার কান্না শুনে। বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে এবার ওকে পুনরায় ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো সিরিজা। অনেকবার চেষ্টা করেও কোন লাভ হল না। বুঝলো এখুনি ঘুম পাড়াতে একটাই উপায়, নিজের মাতৃস্তনকে ছেলের মুখে তুলে দেওয়া।

আধখোলা ব্লাউজটাকে এবার পুরো খুলে বাচ্চাটাকে কোলে শুইয়ে স্তনের বোঁটাটাকে এবার ঢুকিয়ে দিল বাচ্চাটার মুখে। বাচ্চাটা পান করতে লাগলো মায়ের বুকের দুধ। দিবাকর হাঁ করে দেখছে, গায়ে কেমন কাঁপুনি দিচ্ছে বেশ জোরে জোরে। একটু আগে ঐ কিনা মুখ রাখতে চলেছিল ঐ জায়গায়, যেখানে বাচ্চাটা নিশ্চিন্তে মুখ রেখে এখন অঝোড়ে পান করছে স্তনদুগ্ধ।

বিছানা ছেড়ে উঠতেই যাচ্ছিলো দিবাকর। সিরিজার ওর হাতটা টেনে ধরলো। ইশারা করলো ওকে, মুখের ভাষায় মিনতি করলো, ছেড়ে যেও না আমাকে।

একদিকে দিবাকরের হাতটা টেনে ধরে রেখেছে সিরিজা, ওকে উঠতে দিচ্ছে না। ওদিকে বাচ্চাটাকেও শান্ত করছে উজাড় করা মাতৃ ভালোবাসা দিয়ে। ড্যাবড্যাবে চোখ দিয়ে খুব সামনে থেকেই দিবাকর দেখতে লাগলো, ভরাট স্তনকে আঁকড়ে ধরে শিশু কেমন নিশ্চিন্তে দুধ খেতে খেতে ঘুমিয়ে পড়ছে এখন। সিরিজা বললো, দেখলেতো কেমন চেঁচিয়ে উঠলো? মাকে পেয়ে বায়নাক্কাগুলো সব জুড়ে দিয়েছে একদিনেই।

-- "তুমি শুয়ে পড়ো সিরিজা, আমি তাহলে এবার ওঘরে যাই।"

ঘুমিয়ে পড়া বাচ্চাটাকে এবার কোল থেকে নামিয়ে বিছানায় শুইয়ে সিরিজা বললো, "ওঘরে কেন যাবে? আমার কাছে এলে, এখন আমার পাশেই শোও।"

সিরিজার বিশাল নগ্ন স্তনদুটো কাছ থেকে উপভোগ করার মতই হচ্ছিল। দিবাকরের চোখদুটো দাঁড়িয়ে গেছে এখন বিস্ময়ে, নড়াচড়া বন্ধ। ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ কীর্তিকে দুচোখ ভরে দেখছে। দুর্দান্ত বুক, আলোড়ন, শিহরণে ভরপুর, বিস্ময় যেন শেষ হয় না। বুকের মধ্যে মুখ রেখে স্তন চোষার মত পরিস্থিতি তৈরী হয়েছিল একটু আগে। কিন্তু এখনও কি সিরিজা সেটাই চাইবে?

চুম্বক বুক দুটোর ওপর তীব্র টানে কিছুক্ষণ চোখদুটো বুকের ওপর আবদ্ধ রেখে দিবাকর চোখটা এবার নামিয়ে নিল। একনাগাড়ে তাকিয়ে থাকলে শরীরের আগুন নেভানো কষ্টকর ব্যাপার হয়ে যায়। আসতে আসতে রজতের মতন হতে চেষ্টা করছে দিবাকর, সিরিজা এই কয়েকঘন্টায় ওকে যেন অনেকখানি পাল্টে দিয়েছে।

- "দিবাকরদা?"

দিবাকর তাকালো সিরিজার দিকে।

- "এসো....."

আবার ডাকছে সিরিজা, ওর বুকে স্থান দেবার জন্য।

একটা মনমাতানো দৃষ্টি দিয়ে সিরিজা বললো, "আসবে না আমার বুকে? কি হল?"

দিবাকর মুখটা তুললো, সিরিজাকে বললো, "তোমাকে দেখে আমার লোভ হয় সিরিজা। জীবনে এত অস্থির কখনও হইনি আগে।"

- "সারারাত এমনি ভাবেই তাকিয়ে থাকবে আমার দিকে? নিজের ভালোবাসাটাকে চেপে না রেখে আমার জন্য কি উজাড় করে দেবে না? এত সঙ্কোচ কেন করছো দিবাকরদা? এসো যেটা শুরু করেছিলে, সেটা এবার শেষ করো। দেখো, বাচ্চাটাও এখন ঘুমিয়ে পড়েছে, আর কোন অসুবিধাই হবে না। তুমি এসো দিবাকরদা।"

দুটো হাত বাড়িয়ে সিরিজা এমন ভাবে ওর বুকে ঠাই দেবার জন্য দিবাকরকে আহ্বান করলো, দিবাকরের মনে হল, এই আবেগ জড়ানো ভঙ্গিমার কাছে, কোথায় লাগে পৃথিবীর বাকী নারীর যৌন আবেদন? এ যেন সর্বশ্রেষ্ঠ নারীর দেহভালোবাসার আহ্বান। একে প্রত্যাক্ষান করাটা মূর্খামি ছাড়া আর কিছুই নয়।

দিবাকরকে কাছে টেনে নিজের কোলে ওপর শুইয়ে দিল সিরিজা। চোখের ওপরে পর্বতচূড়া দুটো ঝুলছে। আসতে আসতে দিবাকরের বুকে হাত দিয়ে বিলি কাটতে শুরু করেছে সিরিজা। সুখপ্রদ মূহূর্ত। কিন্তু এরপরেও আরও স্বতপ্রবৃত্ত হয়ে দিবাকরকে নিজের বুক দুটোকে বাচ্চাটার মতন দিয়ে বসে কিনা দিবাকর সেটাই ভাবছে।

উত্তাল আনন্দের তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছিলো দিবাকরের সাড়া শরীর জুড়ে। সিরিজা বললো, "আজ যদি তোমার বাড়ীতেই প্রথম আসতাম, তাহলে তো কবে তোমার হয়ে যেতাম দিবাকরদা। এখানে তখন কেউ আসতো না। শুধু তুমি আর আমি। তোমার তো বউও নেই, শ্বশুড়ও নেই। দোলনের মত মেয়েও কোন সুবিধে করতে পারত না এখানে এসে। আজ থেকে মনে করো সেটাই। এখানে কেউ নেই, শুধু তুমি আর আমি।"

দিবাকর দেখলো আবার সেই প্রবল আকুতি দৃষ্টি নিয়ে সিরিজা দেখছে ওকে। স্তনের বোঁটাটাকে ঠোঁটের খুব কাছে নিয়ে এসেছে। শুধু দিবাকর সন্মতি দিলেই ওটা মুখে পুরে দেবার অপেক্ষায়। দিবাকরের ঠোঁটের নীচে আঙুল দিয়ে সুরসুরি দিতে দিতে সিরিজা বললো, "আমার স্তন এখনও কি মুখে নিতে চাও না দিবাকরদা? নাও এবার মুখে নাও।"

মুখটা একটু ফাঁক করেছে দিবাকর। দেখলো সিরিজা ওর স্তনের একটা বোঁটা আস্তে আস্তে প্রবেশ করাচ্ছে ওর ঠোঁটের ফাঁকে কি অদম্য উৎসাহ নিয়ে।

দিবাকর চোখ খুলে রাখবে না বুজে ফেলবে বুঝতে পারছে না, সিরিজার বিশাল আয়তনের বুকটা স্ফীতকায় হয়ে পুরো ছড়িয়ে পড়েছে ওর ঠোঁটের ওপরে। স্তনের বোঁটাটা মুখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছে সিরিজা। একদৃষ্টে তাকিয়ে দেখছিল দিবাকরকে। লোকটা যেন ইচ্ছেটাকে দমিয়ে রেখেছে মনের মধ্যে, এখনও মনের মতন করে সিরিজার স্তনের বোঁটাটাকে নিংড়ে চুষে নিতে পারছে না। স্তনের বোঁটা দিবাকরের জিভকে স্পর্শ দিয়ে কিছু দেওয়ার আশায় অপেক্ষা করছে, অথচ বাকী কাজটুকু করতে পারছে না দিবাকর। একটু নাড়িয়ে, জিভটাকে উল্টেপাল্টে সক্রিয় করলেই বুকের মধু ঝড়ে পড়বে, সেই কাজটুকুই করতে পারছে না দিবাকর। ও যেন স্তম্ভিত হয়ে রয়েছে। বিস্ময়ে শুধু নিরীক্ষণ করে যাচ্ছে সিরিজার প্রাচুর্যময় বুক দুটোকে।

একটু উতলা হয়েই সিরিজা ঘনঘন ওর চুলে হাত বোলাতে লাগলো এবার। প্রবল ভাবে উদ্দীপ্ত করতে চাইছে দিবাকরকে। মুখ নিচু করে দিবাকরের কপালে চুমু খেল সিরিজা, বললো, "আমি যে শেষ পর্যন্ত তোমার হয়ে যাবো, আমি নিজেও ভাবিনি দিবাকরদা। এই সিরিজার ওপর একটু কি জোর তুমি খাটাতে পারো না দিবাকরদা? দেখো না একবার তোমার ইচ্ছাটাকে পূরণ করে। সিরিজাকে তুমি জোর করলে সে কখনও না বলবে না তোমাকে।"

স্তনের বোঁটাটাকে দিবাকরের জিভের মধ্যে আস্তে আস্তে নাড়াতে শুরু করলো সিরিজা। ওর কানের কাছে মুখটা নিয়ে গিয়ে বললো, "আদর করো দিবাকরদা একবার, আদর করো তোমার জিভটা দিয়ে। তুমি পারবে আমি জানি দিবাকরদা, তুমি পারবে।"

চোখ দুটো বোঁজা অবস্থায় দিবাকর জিভটা নাড়াতে শুরু করেছে এবার বোঁটার ওপরে, মুখ নীচু করে তৃপ্তির হাসি দিয়ে সিরিজা দেখছে দিবাকরকে। পেরেছে শেষপর্যন্ত লোকটার সব দ্বিধা কাটিয়ে ওকে নিজের বুকের মধ্যে আবদ্ধ করে নিতে।

জিভের আলতো প্রলেপ, অল্প আদরেই যেন জোয়ারটা এসে গেছে শরীরে। জোয়ারে আরও গা ভাসিয়ে দেবার জন্যই সিরিজা ওকে বললো, "চুষবে না? খালি জিভ ছুঁয়ে আদর করছো আমায়? চোষো এবার।"

একটু চোখটা খুললো দিবাকর। দেখলো, সিরিজা যেন ছটফট করে উঠছে, নিজের স্তন ভীষন ভাবে চোষাতে চাইছে দিবাকরকে। উপচে পড়া বুককে যেন উজাড় করে ঢেলে দিতে চায়, সিরিজার সারা শরীরে ঠিকরে পড়ছে এক উদ্দাম যৌনতা। কামের আসক্তিতে ওর স্তন বিলোতে কোনো সঙ্কোচ নেই। পৃথিবীর আশ্চর্য যৌনতাময় এক নারীর মতন, যেন দিবাকরকে মিশিয়ে দিতে চাইছে নিজের বুকের সাথে, এই কামের তৃষ্ণার্ত ভরা দৃষ্টি যেন বাড়িয়ে দেয় সমস্ত উত্তেজনাকে। শিহরণ জাগানো নারী সিরিজা ওর সবকিছু দিবাকরকে সঁপে দিতে চায়।

সিরিজার কোলে শুয়ে, চোখ বুজে বাচ্চাটার মতন সিরিজার বুকের বোঁটা চুষতে শুরু করলো দিবাকর। ওর ঠোঁট চুষে একটু আগে যে তাপটা লেগেছিল শরীরে, সেটা বেড়ে যেন টগবগ করে ফুটতে শুরু করেছে বোঁটা চোষার সাথে সাথে। টসটসে বোঁটাটা জিভের আদরে কি অভূতপূর্ব ভাবে সাড়া দিতে শুরু করেছে এখন, দিবাকর চুষছে, মনে হচ্ছে এ যেন না চাইতেই কিছু পাওয়ার মতন। ও তো কোনদিন স্বপ্নে দেখেনি সিরিজাকে? তাও সিরিজা এসেছে ওর জীবনে। বাকী জীবনে উজাড় করা দেহ ভালোবাসা দিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখানোর মতন। সিরিজাকে নিয়ে বাস্তব যৌনজীবন, স্বপ্ন থেকেও অনেক রঙীন, সেটাই অনুভব করছে দিবাকর মনে মনে।

চোখ বুজে একেবারে কচি শিশুর মতই দিবাকর চুষতে লাগলো বোঁটাটাকে। সিরিজা দুহাত দিয়ে জাপটে ধরেছে ওর মাথাটাকে, যেন পাগল এক সোহাগিনীর মতন। মনের আনন্দে লোকটা যে সিরিজার স্তন মুখে নিতে পেরেছে শেষপর্যন্ত এতেই ওর স্বস্তি। মাথাটা দুহাতে ধরে ওরও আদরে ভরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে দিবাকরকে। পাগল হয়ে রজত যেমন চুষতো ওর বোঁটা দুটোকে, সিরিজা দেখছে, দিবাকরও ওরকমই চোষে কিনা সিরিজার স্তনটাকে।

দ্রুতবেগে শরীরে প্রবাহিত হচ্ছে বিদ্যুত, উপচে পড়া সিরিজার সেক্স, যেন একটা বিস্ফোরণ ঘটার মতন। এমন যৌন অনুভূতি শরীরে রক্তচলাচল, শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত বাড়িয়ে দেয়। বোঁটাটাকে ঠোঁটের মধ্যে রেখেই দিবাকর শুধু বললো, "আনাড়ী লোকটাকে তুমি মানুষ করে দিলে সিরিজা, আজ থেকে দিবাকর সব ভুলে গেল, এই পৃথিবীতে তুমি ছাড়া আমার জীবনে আর কেউ নেই।"

দিবাকরের চুলে হাত বোলাতে বোলাতে সিরিজা যেন সেইভাবেই আস্বস্ত করলো ওকে। বোঁটা মুখে নিয়ে দিবাকর অনেক তীব্রতা মিশিয়ে চুষছে এখন, বুক থেকে ফিনকি দিয়ে বেরোতেই শুরু করেছে সিরিজার বুকের দুধ, এমন সময় সিরিজা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দুবার বললো, "দিবাকরদা..... এই দিবাকরদা....."

যেন কামনার উত্তেজনাকে সিরিজাও মিশিয়ে দিতে চাইছে দিবাকরের পাগল হওয়ার রূপটার সাথে। বোঁটাটা চুষতে চুষতে দিবাকরের চোখদুটো এবার ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছিল উত্তেজনায়, সিরিজা আবার ওকে বললো, "দিবাকরদা..... তোমায় আমি সত্যি ভালোবেসে ফেলেছি..... দিবাকরদা..... সত্যি।"

সুখ যেন দাপিয়ে এসেছে দিবাকরের জীবনে, সিরিজাকে এভাবে পাওয়ার আনন্দ, দিবাকর যেন সত্যি পাগল হয়ে যাচ্ছে এবার। ও এবার দুটো হাত দিয়ে ধরলো সিরিজার স্তনটাকে, ঠোঁট লাগিয়ে বোঁটাটা একটা আমেজ নিয়ে চুষছে, শরীরের ছটফটানিতে সিরিজাও প্রবল ভাবে আঁকড়ে ধরেছে দিবাকরকে। ঘনঘন ওর কপালে চুমু খেতে খেতে উচ্ছ্বাসে ভেসে যাচ্ছে সিরিজা, চোখ বন্ধ করে সিরিজার বোঁটাটায় একটা জোরে টান দিল দিবাকর, বেশ কিছুটা দুধ বেরিয়ে এসে ভিজিয়ে দিল দিবাকরের ঠোঁটটা।

স্তনটা ছেড়ে দিয়ে অবাক হয়ে ও তাকিয়ে রইলো সিরিজার দিকে। এ কি সুখ? না তার চেয়েও অনেক বেশী? সুখকে উজাড় করে সিরিজা ওর সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতে চাইছে, আর ও কিনা সুখটাকে বরণ করে নিতে পারছিল না এতক্ষণ ধরে?

সিরিজার স্তন চোষাটাই যেন একটা চমকের সৃষ্টি দিবাকরের জীবনে, ও সেভাবেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো সিরিজার দিকে। দিবাকরেরও এই অনুভূতিটাকে বোঝার চেষ্টা করছিল সিরিজা, বেশ কিছুক্ষণ ও নিজেও তাকিয়ে রইলো দিবাকরের দিকে। স্তনের বোঁটাটা চুষতে চুষতে মাঝপথেই ছেড়ে দিয়েছে দিবাকর, এদিকে ওর মোবাইল ফোনটা বাজতে শুরু করেছে হঠাৎ পাজামার পকেটের মধ্যে থেকে।

ফোনটা ও ধরবে কিনা ভাবছিল, সিরিজাই ওকে ইশারা করলো, ফোনটা ধরার জন্য।

সিরিজার কোল ছেড়ে বিছানার ওপর উঠে বসে পাজামার পকেটের মধ্যে হাত ঢোকালো দিবাকর। ফোনটা বের করে দেখলো, যা আশঙ্কা করেছিল তাই ই। রজতই ওকে এতো রাত্রে আবার ফোন করেছে।

হঠাৎই এমন সুখের মূহূর্তটা ভঙ্গ হল, দিবাকরের চোখে মুখে একরাশ বিরক্তি, বিরক্তি সিরিজার চোখে মুখেও। ফোনটা তবুও দিবাকরকে ধরতে বললো সিরিজা। দিবাকর ভাবল, সিরিজার কি তাহলে এখনই মায়া কেটে গেল দিবাকরের ওপর থেকে? না কি ও শুনতে চাইছে রজত কি বলে?

ফোনের স্পীকারটা লাউড করে দিয়ে দিবাকর বললো, "হ্যালো..... বলো....."

ও প্রান্ত থেকে রজতও বললো, "হ্যালো।"

সিরিজা সবই শুনছে পাশ থেকে।

রজত বললো, "ঘুমিয়ে পড়েছিলে বোধহয়? এত রাত্রে তোমার ঘুম ভাঙালাম।"

দিবাকর শুধু বললো, "হ্যাঁ।

-- "সিরিজা কি ঘুমোচ্ছে?"

- "হ্যাঁ।"

-- "ও কিছু বুঝতে পারিনি তো?"

দিবাকর কথাটা শুনে একবার তাকালো সিরিজার দিকে। তারপরই রজতকে বললো, "না।"

-- "আমি আমার কাজটা করে দিলাম দিবাকর বুঝলে?"

দিবাকর চুপ করে রয়েছে, কোনো উত্তর দিচ্ছে না।

রজত বললো, "দোলনকে শান্ত করে দিয়েছি আজকে। এখন ও আমার পাশেই ঘুমিয়ে আছে। এ বাড়ীতে আসার পর থেকে সিরিজাকে দেখে অশান্ত হয়ে উঠেছিল ও। এখন ওর মনে অগাধ শান্তি। এই লোকটার শরীর পাওয়ার জন্য মনে মনে কামনাটা করেছিল, তার পূরণ হয়েছে ওর। দোলনকে বিছানায় নিয়ে ভরপুর সুখ দিয়েছি ওকে। সুখ পেয়েছি আমিও। এখন শুধু ওকে আমার বিদায় করার পালা। এই মূহূর্তে হয়তো যাবে না। দু তিনদিন টাইম লাগবে। ততদিন সিরিজা নয় তোমার ওখানেই থাকুক। কাল সকালে শ্বশুড়মশাই আসবেন। ঝুট ঝেমেলাটা মিটিয়ে দিয়েই আমি তোমার কাছে যাবো। সিরিজাকে এই প্রথম কাছে না পেয়ে মনটা কেমন যেন করছে আমার। কাল ওকে দেখলেই আমার মন জুড়োবে দিবাকর। সিরিজাকে ছাড়া আমি যে থাকতেই পারবো না।"

দিবাকর ফোনটা মুখের কাছে নিয়ে শুধু বললো, "হ্যাঁ।"

রজত বললো, "কাল শ্বশুড় আর বউ যদি আসে, ওরা চলে গেলেই আমি ফোন করবো তোমাকে। তারপর এখানে থেকে রওনা দেবো। সিরিজাকে তুমি কিছু বোলো না। ওর জন্য একটা সারপ্রাইজ থাক। আমি গিয়ে চমকে দেব ওকে।"

ফোনটা মুখের কাছে ধরে দিবাকর একটা চিন্তাগ্রস্ত চোখে তাকালো সিরিজার দিকে, দেখলো সিরিজাও ওকে দেখছে, কিন্তু রজতের কথা শুনে কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না ওর চোখে মুখে।

রজত আবার বললো, "সিরিজাকে আমি কোন মূল্যেই হারাতে চাই না দিবাকর। এই পৃথিবীতে সিরিজা শুধু এসেছে আমার জন্য, আর কারুর জন্য নয়। হয়তো ও মনে মনে একটু অসুন্তষ্ট হয়েছে আমার প্রতি, ভাবছে, লোকটার মতিগতির হঠাৎ এমন পরিবর্তন হল কেন? কিন্তু সত্যি বলছি দিবাকর, আমার চোখের সামনে এখনও সিরিজা ছাড়া আর কেউ নেই। দোলনকে দু ঘন্টা ধরে টানা চুদেছি আমি, কিন্তু শুধুই সিরিজার শরীরটাকে মনে মনে কল্পনা করে। সিরিজার শরীরটা আমার কাছে একটা শক্তিদায়ক প্রেরণার মতন, ও যদি দূরে চলে যায়, ওকে আমিই আবার নিয়ে আসবো নিজের কাছে। দেখছ না দোলনের শরীরটা পুরো উপভোগ করেও ভুলতে পারছি না সিরিজাকে? ও কে ছাড়া আমি কি থাকতে পারি?"

ফোনের লাউড স্পীকারটা অন থাকায়, কথাগুলো স্পষ্ট ভেসে আসছিল সিরিজারও কানে। রজত সব শেষে দিবাকরকে বললো, "তোমাকে আমার তরফ থেকে একটা স্পেশাল থ্যাঙ্ক ইউ দিবাকর। শেষ মূহূর্তে তুমি যে উপকারটা করলে ভুলব না কোনদিন। কাল একটু তোমার বাড়ীতে গিয়ে সিরিজার ঠোঁটে চুমু খাবো, ওর বুকে মুখ ঘসবো, তুমি নয় সেসময় একটু পাশের ঘরে থাকবে, নয়তো আমাদেরকে ঘরে রেখে চলে যাবে বাইরে, অন্তরঙ্গ মূহূর্তটা, শরীরি ভালোবাসার কাজটা একটু তোমার ঘরে সেরে নিলেও মন্দ হবে না দিবাকর। আমি সিরিজাকে এখন প্রবল ভাবে আকাঙ্খা করছি, ও পাশে নেই, কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে আমার।"

একনাগাড়ে কথাগুলো বলে থামলো রজত। দিবাকরের শরীরটার মধ্যে একটা ধাক্কা লাগছে জোরে জোরে, যেন রজত ওকে মনে করেছে উজবুক। গাধার মতন বন্ধুটার প্রতি কর্তব্য পালন করবে চিরকাল ধরে।

রজত সব শেষে বললো, "তোমাকে ডিস্টার্ব করলাম দিবাকর। ফোনটা তাহলে এখন রাখি। কাল তোমার ওখানে, আমাদের দেখা হচ্ছ। গুড নাইট।"

ফোনের লাইনটা রজত ছেড়ে দেবার পর দিবাকর হাঁ করে চেয়ে রইলো সিরিজার দিকে। হঠাৎই যেন সিরিজাকে পাওয়ার সুখটাকে ছিনিয়ে নিতে চেষ্টা করছে রজত। ওর শরীরের ভেতরটা রাগে জ্বলে যাচ্ছে, সহ্য করতে পারছে না রজতের কথাগুলো। সিরিজাকে রজত এসে কাল আদর করবে, ওরই সামনে? ওকে ঘর থেকে বার করে দিয়ে? ওকি আহাম্মক, নিরেট বোকার মতন মনে করে দিবাকরকে? পৃথিবীকে ওই চালাক? বাকী সবাই মূর্খ? দিবাকর একটা ভোলাবালা, আর সিরিজা রজতের বাঁধা মেয়েমানুষ, যেন তার নিজস্ব কোন স্বাধীনতা নেই? সে রজত ছাড়া অন্য কোন পুরুষ মানুষকে ভালোবাসতেই পারে না জীবনে। সারাজীবন ধরে ঐ মেয়েমানু্ষ নেওটা লোকটাকে সুখ দেবে বলে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে বসে আছে। সিরিজার যেন রজত ছাড়া আর কাউকে শরীর দেবার অধিকার নেই।

চোয়ালটা শক্ত করে রজতের ওপর রাগটাকে দমন করার চেষ্টা করছিল দিবাকর। সিরিজা কোন কথা বলতে পারছে না ওকে। জীবনে এই প্রথম হার জিতের খেলায়, হারটাকে কোনমতেই মেনে নিতে ইচ্ছে করছে না দিবাকরের। চোখের সামনে যে মেয়েটা বুক খুলে বসে আছে, ওর মনে হচ্ছে, এ শুধু এখন থেকে আমার, আর কারোর নয়।

একটু কাছে এগিয়ে এসে এবার সিরিজার মাথাটা দুহাত দিয়ে ধরলো দিবাকর। সিরিজা ওকে দেখছে এক নতুন রূপে। সিরিজার ঠোঁটের কাছে ঠোঁটটা নিয়ে গেল দিবাকর। ওর উষ্ণ নিঃশ্বাস পড়ছে সিরিজার মুখে। নারীকে পাওয়া নিয়ে এমন অদম্য জেদ দিবাকর আগে কখনও দেখাতে পারেনি জীবনে, কামনা আর সিরিজাকে পাওয়ার জেদটা যেন মিলে মিশে একাকার। ঠোঁটের সামনে ঠোঁটদুটোকে মেলে রেখে, সিরিজা এবার চোখটা বুজে ফেললো। দিবাকর ঠোঁট দিয়ে কামড়ে ধরলো সিরিজার ঠোঁটটাকে। প্রাণপনে চুষতে চুষতে জিভটা ঢুকিয়ে দিল সিরিজার মুখের মধ্যে। অবাধে বিচরণ করাতে লাগলো মুখের মধ্যে এপাশ থেকে ওপাশ। সিরিজার জিভটাও টেনে মুখের মধ্যে নিয়ে নিয়েছে দিবাকর। জিভ চুষছে, ঠোঁট চুষছে, উৎপন্ন সিরিজার জিভের লালাগুলো যেন নিমেষে চুষে পান করে নিচ্ছে দিবাকর, এই মূহূর্তে ওকে রোখার সাধ্যি কারুর নেই।

ঠোঁট চুষতে চুষতেই সিরিজার খোলা পিঠে একটা হাত রাখলো দিবাকর। আর একটা হাত দিয়ে চেপে ধরেছে সিরিজার বৃহৎ স্তনের একটাকে। উদ্ধত, মাংসল, বাতাবী লেবুর মতন বুকটাকে হাত দিয়ে চটকাতে চটকাতেই ঠোঁট চোষার খেলাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে মন প্রাণ চাইছে। দুটো স্তনকে পালা করে টিপতে টিপতে দুধ বেরোতে শুরু করলো সিরিজার স্তনের বোঁটা দিয়ে, দিবাকরের হাতের আঙুলে লেগে গেল সিরিজার বুকের দুধ। দুধে ভেজা আঙুলগুলোকে এক একটা করে সিরিজার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে ওকে চুষতে দিয়ে এবার ওর ঠোঁট ছেড়ে স্তনের বোঁটাটাকে মুখে নিল দিবাকর।
 
ঈশ্বর প্রদত্ত অসাধারণ শরীরটায় কি সুন্দর ভরাট দুটি স্তন, সিরিজার বুকের মধ্যে যেন আনন্দটাকে ধরে রেখেছে সারা জীবনের জন্য। রজতকে রাত্রিবেলা নিজের স্তন খাইয়েছিল সিরিজা, মনে পড়ে এখনও দিবাকরের, দরজার ফাঁক দিয়ে দেখতে গিয়ে সেকি বিপত্তি, আছড়ে পড়েছিল ঘরের মধ্যে, সিরিজা তখন দিবাকরকে দেখে নিজের বুক ঢাকছে। আর আজ? সিরিজা কত স্বাভাবিক, কত স্বচ্ছন্দ। দিবাকরের মাথাটা ধরে নিজের বুকদুটোই উৎসর্গ করে দিয়েছে ওকে। চোখ বন্ধ করে দিবাকর সিরিজার স্তনের বোঁটা চুষছে, শরীরে চরম উত্তেজনা, এবার যেন আয়েশে আরও পান করতে ইচ্ছে করছে ভেতরের তরল পদার্থটাকে।

সুখকে জীবনে এই প্রথম জলাঞ্জলি দিতে ইচ্ছে করছে না রজতের জন্য, কাল রজত আসুক না আসুক কিছুই এসে যায় না দিবাকরের। ও যেন এখন এক পাগল পিপাসুক, নিজের পুরুষত্বকে জাগ্রত করে কামপুরুষে পরিণত হয়েছে ও।

একটা তীব্র টানে সিরিজার বুকের ভেতর থেকে দুধটা বেরিয়ে এসে গলা ভিজিয়ে দিল দিবাকরের। সিরিজা ওর মাথাটা ধরে অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো, "আহহহহহহ"

স্তনের বোঁটা থেকে মুখ তুললো দিবাকর, তাকালো সিরিজার দিকে।

-- "সিরিজা তোমার বুকে কি আমি ভীষন জোরে টান দিয়ে দিয়েছি?"

দিবাকরের মাথাটা ধরে সিরিজা আবার বোঁটাটা নিয়ে গেল ওর ঠোঁটের খুব কাছে, চুলের মধ্যে আঙুল দিয়ে বিলি কাটতে কাটতে বললো, "না দিবাকরদা, লাগেনি আমার। তুমি থামলে কেন? নাও মুখে।"

নিজের স্তন খাওয়ানোর কি ব্যাকুল ইচ্ছা। এমন যৌনবতী নারীকে কজনে ভাগ্য করে পায়? প্রবল আকাঙ্খা নিয়ে নিজের বুকের সুধা বিলোতে চাইছে দিবাকরকে। কামের আসক্তিতে স্তন বিলোতে কোন সঙ্কোচ নেই, নিজের ইচ্ছাটাকে যেন মিলিয়ে দিতে চাইছে দিবাকরের ইচ্ছাটাকে জাগ্রত করে।

নিজের বোঁটাটাকে দিবাকরের ঠোঁটের মধ্যে পুনরায় প্রবেশ করানোর আগে সিরিজা ওর শরীরটাকে শুইয়ে দিল নিজের কোলের ওপরে। হাঁ করে দেখছে দিবাকর, সিরিজার স্তনদুগ্ধ বিলোনোর ভঙ্গীমাটাকে। যেন কোলের শিশুকে নিজের স্তন বিলোবে, সিরিজা এইভাবেই শোয়ালো দিবাকরকে। ওর ঠোঁট দুটোর ফাঁকে বোঁটা প্রবেশ করানোর আগে নিজের আঙুলটা একবার রাখলো সিরিজা দিবাকরের ঠোঁটের ওপরে। দুটো চোখে কামের সাড়াজাগানো দৃষ্টি দিয়ে দিবাকরের ঠোঁটের ওপর আঙুলটা বোলাতে লাগলো সুন্দর ভাবে।

- "তুমি চাও না? কেউ তোমাকে এভাবে আনন্দ দিক? স্তনকে মুখে নিয়ে চুপটি করে চুষবে, মাঝে মাঝে আমার বোঁটায় জিভের সুরসুরি লাগাবে, আমার বুকের দুধ তুমি তৃপ্তি করে খেতে চাইলে, আমাকে তোমার না নেই দিবাকরদা। আজ থেকে তোমার সিরিজা কখনও বিমুখ করবে না তোমাকে। নাও এবার করো পান, করো সুখ।"

স্তনের বোঁটাটাকে গভীরভাবে দিবাকরের মুখের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে সিরিজা এবার আনন্দদাত্রীর ভুমিকা পালন করতে লাগলো। চোখ বন্ধ করে সিরিজার কোলে শুয়ে দিবাকর ওর বোঁটা চুষছে, আর উৎকৃষ্ট পানীয় ঝরঝর করে প্রবেশ করছে দিবাকরের গলার মধ্যে।

অঝোরে সিরিজার বুকের দুধ খেতে খেতে দিবাকর কেমন বন্য মানুষের মতন হয়ে যাচ্ছিলো, উত্তেজনায় নিজেই খেতে খেতে একহাত দিয়ে ধরলো সিরিজার স্তনটাকে। সিরিজা ওকে বাধা দিল না। চুঁচিটাকে কামড়ে ধরে চোঁ চোঁ করে টানতে লাগলো, দেখলো সিরিজার ওর চুলটাকে ব্যাক ব্রাশের মতন হাত দিয়ে পেছনের দিকে ঠেলে দিচ্ছে দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে।

উত্তেজনার প্রবল দাপটে একটু একটু করে চওড়া আর মোটা হতে শুরু করেছে দিবাকরের লিঙ্গ। সিরিজা খাওয়াতে খাওয়াতেই ওকে প্রবল আগ্রহ নিয়ে দেখছে, স্তন মুখে নিয়ে দুধ চোষার খেলা এইভাবে কতক্ষণ খেলতে পারে দিবাকর। চুষতে চুষতে ঠোঁটের মধ্যে যেন শ্রোত ঝরে পড়ছে, সিরিজা ঝরঝর করে খাওয়াচ্ছে ওকে, অতিমধুর তৃপ্তিদায়ক অমৃতধারা দিবাকরের গলা বেয়ে নেমে শরীরে প্রবেশ করছে অনায়াসে।

দিবাকর দেখলো সিরিজা নিজেই এবার স্তনটা হাতে ধরে ওকে দুধ পান করাতে শুরু করলো। সুস্বাদু, তরল এখন ফোয়ারার মতন ছড়িয়ে যাচ্ছে, কখনও ওর ঠোঁটের মধ্যে কখনও ঠোঁটের আশেপাশে। বিস্ফোরক সিরিজা তার বিস্ফোরক যৌন আবেদন, দিবাকরের ঠোঁট ফাঁক করিয়ে রেখে স্তনকে টিপে চটকে ওপর থেকে নিজের বুকের দুধ ছিটিয়ে খাওয়ানো্, এ যেন শিহরণের পর শিহরণ।

সিরিজাকে ওভাবে হাঁয়ের ওপর দুধ ঝরাতে দেখে দিবাকর নিজেই আবার উত্তেজনায় কামড়ে ধরলো সিরিজার বোঁটাটাকে। এবার ও নিজেই প্রাণপনে চুষে উত্তেজনাকে চরম শিখরে নিয়ে যেতে চায়। এমন ভাবে কোলে শুয়ে শুয়ে সিরিজার বুক চুষতে লাগলো দিবাকর, সিরিজা দেখলো দুধপানের নেশায় বুঁদ হয়ে দিবাকর ওর মাই চুষছে, এক্ষুনি অত সহজে ও নিজেকেই রেহাই দেবে না।

চোখদুটো বুজে ফেলেছে সিরিজা। ওর সুখের কোলটা তখন দিবাকরের কাছে একটা বিছানার মতন। চোখ বন্ধ করেই ঘুম পাড়ানোর মতন হাত বোলাচ্ছিল দিবাকরের মাথায়। সিরিজার বুকের দুধ পান করে দিবাকরের চোখে এখন ঘুম নেই, সারারাত আরও অনেক অঢেল সুখের আয়োজন রেখেছে সিরিজা, হয়তো স্তন মুখে নিয়ে চুষতে চুষতেই বাকী আয়োজন গুলো সম্পন্ন হবে একটু পরেই।

লিঙ্গটাকে পাজামার মধ্যে ধরে রাখতে পারছিল না দিবাকর, তালগাছের মতন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠেছে, বিস্তৃত স্তন আঙুর ফলের মতন চুষতে চুষতে বুকের দুধ গলাধকরণ করে শরীরে যেন আরও লোভ উৎপাদন হচ্ছে বেশী করে। সিরিজা একটা হাত রেখেছে দিবাকরের মাথার নীচে, স্তন বিলিয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত ভাবে, কি প্রেরণাদায়ক অনুভূতি। যেভাবে নিজের ছেলেকে স্তন বিলোচ্ছিল একটু আগে, সেভাবেই স্তন বিলোচ্ছে এখন দিবাকরকে।

ওর চুলে হাত বুলিয়ে সিরিজা আবার ভালোবাসার আদর দিতে লাগলো, বুকের দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে দিবাকরকে কিছু বলতে চেষ্টা করলো সিরিজা। চুষতে চুষতে সিরিজার বোঁটাটাকে ছুঁচোলোর মত করে দিয়ে দিবাকর হারিয়ে ফেলেছে সমস্ত নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা। বাঁ দিকের স্তনটা ছেড়ে দিয়ে এবার ডানদিকের স্তনটা চুষতে ইচ্ছা করছে। সিরিজা নিজেই বাঁ দিকের স্তনটা দিবাকরের মুখের ভেতর থেকে বার করে এবার ডানদিকের স্তনটা প্রবেশ করাতে লাগলো আস্তে আস্তে। কপাল করে এমন নির্বিঘ্নে স্তন চোষার সুযোগ পেয়েছে দিবাকরকে এখন কে পায়?

বোঁটাটাকে ঠোঁটের মধ্যে নিবেদন করে আবার সেই দুধ পানে নিমজ্জিত হওয়ার আহ্বান। দিবাকর মুখটা অল্প হাঁ করে আবার দেখতে লাগলো সিরিজাকে। শরীরের ভেতরে তোলপাড় হয়ে যাওয়া মূহূর্তটাকে আরও দীর্ঘায়িত করতে চাইছে সিরিজা। দিবাকরের ঠোঁটের আশেপাশে লেগে থাকা দুধের ছিটেগুলো হাত দিয়ে মুছিয়ে দিচ্ছে সিরিজা। মুখটা নিচু করে সিরিজা দিবাকরকে বললো, কি দেখছ?

কথা বলতে পারছে না দিবাকর, শুধু হাঁ করে বললো, আমি ভীষন লোভী, ক্ষুধার্ত হয়ে গেছি সিরিজা।

সিরিজা বললো, কেন? এভাবে বুকের স্তন কোনদিন চোষো নি বলে? তাই?

কামনার আগুনে বিধ্বস্ত হওয়া শরীরটা থেকে কথা বেরিয়ে আসতে চাইছে না সহজে, দিবাকরের উচ্চারণ স্পষ্ট নয়। শুধু বললো, আমি-

সিরিজা বললো, আমি কি? বলো?

দিবাকরের চুলে হাত বোলাতে বোলাতে সিরিজা বললো, তুমি যেটা খাচ্ছো, সেটা খেতে গেলে এমনই পাগল হতে হয়। ঠিক এখন যেমন লাগছে তোমাকে। আমাকে পাবার জন্য পাগল হয়েছ তুমি। এটা খেলে মনে জোর আসে না? কারুর সাথে লড়াই করার মতন।

দিবাকর বুঝতে পারছিল সিরিজা কার কথা বলছে? কাল রজত এখানে এসে সিরিজাকে আর আদর করতে পারবে না, দিবাকরের কাছ থেকে কেড়ে নিতে পারবে না সিরিজাকে। ও সেভাবেই সিরিজাকে এবার জাপটে ধরলো প্রবল ভাবে। কোলের মধ্যে সিরিজাকে জাপটে ধরে ছটফট করছে দিবাকর। ডানদিকের স্তনটা মুখে পুরে তীব্র বেগে চুষতে লাগলো চুকুচুক করে। সারা শরীরে ছড়িয়ে যাওয়া সুখটা যেন জিভ থেকে উৎপন্ন হচ্ছে। একটু উঠে বসে সিরিজার দুটো স্তন দুহাতের মুঠোয় আলাদা আলাদা করে খাবোলে ধরলো দিবাকর, কখনও বামদিকেরটায়, কখনও ডানদিকেরটায় চুষতে চুষতে একেবারে স্তনখেকোতে পরিণত হয়েছে ও। দুটো বোঁটা থেকে নিংড়ে নিচ্ছে বুকের দুধ, কখনও জিভের প্রলেপ, কখনও দমবন্ধ করে এক নিঃশ্বাসে চুষতে চুষতে সুখের সাগরে ভেসে যাওয়া। চুলে ঘনঘন হাত বুলিয়েও দিবাকরের উত্তেজনাকে রোধ করতে পারছিল না সিরিজা। এমন মিষ্টি মধুর পানীয় দিবাকরের যেন আরও চাই। অঢেল সিরিজার বুকের দুধ। সারারাত চুষে খেলেও এ দুধ শেষ হবে না সকাল পর্যন্ত।

বুকের মধ্যে দিবাকরকে বারবার আঁকড়ে ধরে সিরিজার এই উদ্দীপ্ত করণ, দিবাকর দেখলো একটা বোঁটা কিছুক্ষণ চুষে ছেড়ে দিলেও তারপরেও দুধ বেরোচ্ছে অফুরন্ত ভাবে। দুটো বুককে একসাথে পাল্লা দিয়ে চোষার মতন ওর একটা মুখই যেন যথেষ্ট নয়। সিরিজার শরীরে এখন একটা অন্যরকম আমেজ, চোখ দুটো ঢুলুঢুলু। বুক দুটো পুরো দিবাকরের হাতে তুলে দিয়ে সবটুকু নিয়ন্ত্রণ ওর ওপরেই ছেড়ে দিয়েছে। এখন ও দুটোকে নিয়ে যা খুশি তাই করতে পারে দিবাকর।

বোঁটার ওপরে ঠোঁটের কতৃত্বকে সমান ভাবে বজায় রেখে, দিবাকর সিরিজাকে বললো, "কাল রজত এখানে আসুক আমি চাই না সিরিজা। ও তোমাকে কিছুতেই আমার এখান থেকে নিয়ে যেতে পারবে না। বলো তুমি আমার, আর রজতের সিরিজা নও।"

দিবাকরের মাথাটা বুকের মধ্যে আগলে রেখে সিরিজা শুধু বললো, "হুঁ।"

-- "তোমাকে এখান থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে চাই সিরিজা, তুমি যাবে আমার সাথে? রজত যেখানে আমাদের নাগাল পাবে না।"

চিৎ করে সিরিজার শরীরটাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে দিবাকর পাজামার দড়িটা খুলতে লাগলো ওরই সামনে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সিরিজার বুকের দুধ খেয়ে এখন অনেক আগ্রাসী দিবাকর। পাজামার দড়িটা খুলে সিরিজার বুকের ওপর শুয়ে পড়ে ওর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো শরীর জুড়িয়ে। বুক দুটো আবার কামড়ে ধরে চোষার মাতনে ভরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে নিজেকে।

সিরিজা বললো, "আমার শায়ার দড়িটা খুলবে না? খোলো হাত লাগিয়ে।"

দড়িতে হাত লাগিয়ে টান মারতেই পেটের নিচের কিছুটা উন্মুক্ত হল। সিরিজা নিজেই হাত লাগিয়ে শায়াটা আরও নামাতে লাগলো নিচের দিকে।

গুহার মুখ আবরণ ছেড়ে উন্মুক্ত হয়েছে, দিবাকর দেখছিল ত্রিভূজের অপরূপ সৌন্দর্যটাকে। এত যোনীমুখ নয়, নৈবিদ্যের ডালি সাজিয়ে এক পুরষকে নারীর কাতর আহ্বান। পাগলের মতন পুরষকে কামনা করলে নারীর যেমন হয়, সিরিজা তেমনই ছটফট করছিল শায়াটাকে নামিয়ে দিয়ে।

সিরিজা বললো, "দিবাকরদা, এসো, কিছু একটা করো, আমি পারছি না আর।"

বাচ্চাটা আবার একটু নড়াচড়া শুরু করেছে, দিবাকর বললো, "সিরিজা তুমি ওঘরে যাবে? বাচ্চাটা ঘুমোচ্ছে, চলো আমরা বরং ওঘরে গিয়ে..... তোমাকে যদি সোফা কাম বেডটার ওপর শুইয়ে দিই.....

- "শুয়ে দিয়ে কি করবে? আমার বুককে কামড়ে ধরে বুকের দুধ খেয়েছ তুমি, এবার আমার ভেতরে তোমাকে আসতে হবে না? নাও আমাকে তুলে নিয়ে চলো ওঘরে?"

জীবনের কত না পাওয়া সুখ আজ অপেক্ষা করছে দিবাকরের জন্য, শুধু কি সিরিজা আগ্রাসী? কামনাকে নিংড়ে নেবার মত উদ্দাম ভূখ ওরও যে আজ তৈরী হয়েছে শরীরে প্রবল উদ্দীপনা জাগিয়ে।

বিছানা থেকে সিরিজার নগ্ন শরীরটাকে দুহাতে তুলে নেবার আগে, দিবাকর সিরিজার ঠোঁটটাকে আবার কামড়ে ধরলো এক আগ্রাসী কামপুরুষের মতন। ঠোঁট কামড়ে রক্ত বের করা নয়, উলঙ্গ শরীরটাকে চিরজীবন পাওয়ার আনন্দে ওর ঘন চুম্বনের মধ্যে সেই উচ্ছ্বাসটা ফেটে পড়ছে। জড়িয়ে ধরে, এভাবেই শরীরটাকে দুহাতে তুলে নিয়ে ঠোঁটটাকে চুষতে চুষতে ওকে পাশের ঘরে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে। যেন বিচ্ছিন্ন হবে না দুটি শরীর। দেহে দেহে মিশে গিয়ে মন মাতানো সঙ্গম চলবে, সেই রাত ফুরোনো অবধি।

ঠোঁট দুটোকে ডাঁটার মতন এমন ভাবে চুষছিল দিবাকর, সিরিজা সেই আবেগকে জিইয়ে রেখেই বললো, "দিবাকরদা....."

পাগল দিবাকর, যেন সিরিজা যৌন উদ্দীপনা বাড়ানোর ওষুধটা মিশিয়ে দিয়েছে ওকে বুকের দুধের সাথে সাথে, বোঁটা থেকে এখনও যেভাবে উৎকৃষ্ট তরল পদার্থটা বেরোচ্ছে, সিরিজা চাইলে দিবাকর ওটা মুখে পুরে চুষতে পারে অনায়াসেই।

-- "কি ভাবো তুমি আমাকে? রজত শুধু একাই ভালোবাসতে পারে তোমাকে? আমি পারি না?"

- "পারো দিবাকরদা, আজ থেকে তুমি অনায়াসে পারো। সিরিজাকে তুমি ভালোবাসতে পারো, আমাকে আদর করতে পারো, আর....."

-- "আর কি?"

ঠোঁটটা চুষতে চুষতেই আবার স্তনের বোঁটাটাকে মুখে নিতে ইচ্ছে করছিল দিবাকরের।

সিরিজা বললো, "জেদটা শুধু তোমার একার নয়, এ জেদ, তোমার আমার দুজনেরই। কাল ও এখানে এসে একটুও টলাতে পারবে না আমাকে, তুমি বিশ্বাস করো।"

দিবাকরের চুমুটাকে প্রবলভাবে সাড়া দিয়ে সিরিজা যেন সেই বিশ্বাসটাই আদায় করতে চাইছিল দিবাকরের কাছ থেকে।

আদর করতে করতে সিরিজা বললো, "তলাটা ভিজে গিয়ে শুধু রস গড়াচ্ছে, ভেতর দিয়ে, না ঢোকালে আমি কি থাকতে পারি এভাবে শুধু ছটফট করে?"

জীবনটা যেন ভালোবাসার আদর, সঙ্গম সুখ আর স্তন্যপানেই কেটে যাক অবাধ সুখের মতন, এ শরীরটা শুধুই এক তীব্র আকাঙ্খায় উন্মাদ হয়ে যাওয়ার মতন। অশান্ত উন্মাদনা, শরীরকে কামনার সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে গিয়ে সেই যৌনসাগরে ডুব দেওয়া, একটা নারী শরীরের প্রেমে পড়ে গিয়ে, ঘন আবিষ্ট, দিবাকর। ওকে এখন পুরুষত্বটা দেখাতে না পারলে দিবাকরেরই বা মন ভরবে কি করে?

সিরিজার ঠোঁট চুষতে চুষতেই ওর শরীরটাকে বিছানা থেকে দু হাতে তুলে নিয়ে ওকে পাশের ঘরে নিয়ে এলো দিবাকর। এখন আর বাচ্চাটার ঘুম ভাঙানো নিয়ে ওদের আর চিন্তার কোন কারন নেই।

সিরিজার নগ্ন শরীরটাকে সোফা কামবেডের ওপর শুইয়ে দিয়ে, দিবাকর ওপর থেকে নিচ অবধি ভালো করে দেখতে লাগলো। ঈশ্বর তার অকৃপণ হাতে, সমস্ত রূপ ও সৌন্দর্য দিয়ে, ঢেলে সাজিয়েছেন নিখুঁত শরীরটাকে। মুগ্ধ চোখে শরীরটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে কেন মনে হয়? নারী তো একটাই, তাহলে আবার আমি ছাড়াও অন্যপুরুষের এখনও তার প্রতি এত মোহ কেন?

মাখনের মত সিরিজার শরীরটাকে চটকাতে চটকাতে দিবাকর আজ সারারাত ধরে ওকে ভোগ করবে। সিরিজা, দিবাকরকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওর গোপনীয় জায়গাটায় হাত বোলাচ্ছিল। ত্রিকোণ ক্ষেত্রটা লোমশ আবরণের তলা দিয়ে উঁকি মারছে, সিরিজার হাতের স্পর্শ পেয়ে এখন অনেকটাই উদ্ভাসিত, সাদা ধবধবে ধনুকের মতো গোল, তার কেন্দ্রবিন্দুতে লালের আভা উত্তপ্ত করে দিচ্ছে দিবাকরকে।

দিবাকরের মনে হচ্ছিল, সিরিজার যোনি-গহ্বর যথেষ্টই বড় মাপের, দৈর্ঘে, প্রস্থে ও গভীরতায় দুই উরুর সন্ধিস্থলে ফুলে-ফেঁপে থাকা, একটা কামনা-মদির গোপণাঙ্গ। যোনি-গহ্বরের ওষ্ঠদ্বয়, দিবাকরের লিঙ্গকে কামড়ে ধরবে বলে অপেক্ষা করছে, যেন ফুলদানি তার হাতলকে ধরার অপেক্ষায়। দিবাকরই এখন সিরিজার হাতল আর সিরিজা ওর ফুলদানি।

দিবাকরকে নিজের বুকের ওপর টেনে নিয়ে সিরিজা বললো, "মুখটাকে হাত দিয়ে একটু বড় করেছি আমি, তোমার ঢোকাতে সুবিধে হবে, এবার এসো ভেতরে, আমি আস্তে আস্তে তোমাকে ভেতরে ঢুকিয়ে নিচ্ছি।"

অন্দর মহলে কি সুখ আছে,দিবাকর কোনদিন ঢুকে দেখেনি। বিস্তৃত মুখ জ্বালামুখী আগ্নেয় গিরির মতন হলে, সেখান থেকে উত্তাপে গলে গলে পড়ে যৌবন, স্পর্শে পুরুষের সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা, সুগম প্রবেশ পথে সঙ্গমসুখ তখন হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত, সারাজীবন, মনের ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখার মতন।

দিবাকরকে নিবিড় করে জড়িয়ে রেখে, সিরিজা এবার চুমোয় চুমোয় ভরিয়ে দিচ্ছিল ওর ঠোঁট। সুখের জানানটা, মিলনের প্রস্তুতি হিসেবেই প্রকাশ পাচ্ছিল, সিরিজার সোহাগের জবাব দিতে দিবাকরও চুষে চুষে ভরিয়ে দিতে লাগলো পাল্টা ঠোঁট দুটোকে।

ভেতরে ঢোকার প্রবল প্রস্তুতি নিচ্ছে দিবাকর। সিরিজা পা দুটো দুপাশে ছড়িয়ে দিবাকরের কোমরের ওপর তুলে দিল। দিবাকরের গর্বের ধন সিরিজার গর্ভে ঢোকাচ্ছে আস্তে আস্তে। প্রবিষ্ট পুরোপুরি হবার পর সিরিজা বললো, "চেয়েছো কোনদিন? এভাবে আমাকে মনের সুখে করতে?"

দিবাকর বললো, "চাইনি সিরিজা। সত্যি চাইনি কিন্তু আজ চাইছি, তোমাকে সারারাত ধরে করতে।"

সিরিজা চাইছিল, দিবাকর ওকে একটু বেশী করেই চাপ দিক,নিয়ন্ত্রিত সঙ্গম নয়, একটু বেপোরোয়ার মতন, আমূল গেঁথে দিয়ে ধাক্কা মারতে মারতে সুখের অন্তিম সীমানায় পৌঁছে যাওয়া। যেন পরোয়া নেই আর রজতের, দিবাকর সেভাবেই শুরু করলো মিথুন লগ্নটা।

চুষছে আবার সিরিজার ঠোঁট, চুষতে চুষতেই সঙ্গম আরম্ভ করেছে। দেহ আন্দোলনের মধ্যে সুন্দর ছন্দ, অবিশ্বাস্য এক সুখ, প্রকৃতির একমাত্র সুখ, যা কেবল সুখের স্বর্গকে মনে করায়।

আনন্দ প্লাবনে ভেসে গিয়ে পৃথিবীর শ্রেষ্ট সুখকে উপভোগ করছিল দিবাকর। পা দুটো দুপাশ থেকে সিরিজা ওর কোমরের ওপর তুলে দিয়েছে, লিঙ্গটাকে উত্তেজনার সাথে তাল মিলিয়ে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছে, সোফা-কাম-বেডটা কাঁপছিল, ঠাপের গতিবেগটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে দিবাকর বললো, "ওহ্ সিরিজা, তোমার মধ্যে এত সুখ?"

দিবাকরকে দুহাত দিয়ে বারবার জড়িয়ে ধরছে সিরিজা, দ্বার খুলে ভেতরে ওকে প্রবেশ করাতে করাতে বললো, "আমি চাই এবার থেকে তোমাকে এসুখ দিতে দিবাকরদা, সারাজীবন, আমাকে তুমি করবে, ছাড়বে না আমাকে, বলো বলো....."

ঠোঁটে ঠোঁটে চুমু খেয়ে সিরিজাকে ঠাপানোর তাগিদটা আরও অনুভব করছিল দিবাকর। একটু পাগলের মতন হয়ে সিরিজার চুলের মুঠিটা আলতো করে ধরে, প্রগাঢ় একটা চুমু খেয়ে, ধাক্কা দিতে লাগলো কোমর দুলিয়ে। লিঙ্গটা ক্রমাগত ভেতরে ঢুকছে আর বেরোচ্ছে, মধুর আওয়াজে মুখরিত হয়ে যাচ্ছে ঘরটা, রসে টইটম্বুর জরায়ুর মধ্যে দাপিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে লিঙ্গ, সঙ্গমে এত আরাম, এ যেন সিরিজার শরীর বলেই যৌনসুখ চরম হচ্ছে।

দিবাকর সিরিজার পিঠের নিচে এক হাত রেখে সোফা থেকে ওর শরীরটা একটু ওপরের দিকে তুলে, ভেতরে হড়হড় করে লিঙ্গটাকে ঢোকাতে ঢোকাতে তোলপাড় করতে লাগলো সিরিজাকে। ঠোঁট থেকে বারে বারে মধুরস চুষে নিতে নিতে, দৃঢ় ভাবে লিঙ্গ চালনা করে, সুখকর মূহূর্তটাকে ধরে রাখতে দিবাকরের অক্লান্ত প্রয়াস।

যৌনবতী নারী সিরিজাকে সময় নিয়ে ভোগ করতে দিবাকর আজ বদ্ধপরিকর। লিঙ্গযে এত সহজ ভাবে সিরিজার যোনী গর্ভে ঢুকে গিয়ে পুরুষমানুষকে আরাম দেয় ওর জানা ছিল না।

ওপর থেকে লিঙ্গটাকে নিঃক্ষেপ করতে করতে ও তাকালো সিরিজার দিকে। যন্ত্রণা নেই, এ কেমন আনন্দের অনূভুতি, এত বড় গুহার মধ্যে লিঙ্গ যতই বড় হোক, তাকে স্থান দেওয়া সিরিজার কোন ব্যাপারই নয়।

সিরিজা তবু একবার চুমু খেল দিবাকরের ঠোঁটে, মুখটাকে তুলে ওর পিঠটাকে দুহাতে জড়িয়ে।

- "আরাম হচ্ছে দিবাকরদা?"

-- "তোমার হচ্ছে সিরিজা?"

লিঙ্গ আর জরায়ুর প্রবল মিলন, জৈবিক আনন্দে ভেসে যাওয়ার মহামিলন সঙ্গীত। এর থেকে সুখের আরাম আর কিছু আছে নাকি?

চোখ দুটো বুজে সিরিজা বললো, "করো দিবাকরদা, তুমি আরামে করো, আমারও খুব আরাম হচ্ছে।"

দুটো হাত দিবাকরের পিঠটাকে ছেড়ে এবার দুপাশে ছড়িয়ে দিয়েছে সিরিজা, যেন আত্মসমর্পনের ভুমিকায়। ওপর থেকে লিঙ্গের আঘাত হানতে হানতে, মনের মত সুখে চুদছে দিবাকর, সিরিজাকে। আরাম এবার যেন শরীরে একেবারে জাঁকিয়ে হচ্ছে। কানায় কানায় ভরে যাচ্ছে কামনা। শুধু যাওয়া আসা, সত্যিকারের সুখ, দুটি দেহের ঘর্ষনে এক রোমাঞ্চ অনুভূতি।

হাত দুটো দুপাশে ছড়িয়ে একটা গোঙানির মতন শব্দ করলো সিরিজা, "উহহহহহহহ"

দিবাকর তাকালো ওর দিকে, আধবোঁজা চোখে সিরিজা বললো, "আমার শরীরের তাপ যে তুমি নিভিয়ে দেবে দিবাকরদা। দেখো এবার সঁপে দিয়েছি পুরো তোমাকে, আমাকে ইচ্ছেমতন করো তুমি।"

সিরিজার ভেতরের রাজপথ এক উষ্ণ প্রস্রবণ নদীর মতন। নরম শরীরটাকে নিয়ে বেহিসাবী ছিনিমেলা খেলতে সিরিজাই আহ্বাণ করছে ওকে। একি সুখ না তার থেকেও অনেক বেশী কিছু।

দিবাকর ঠাপ দিতে দিতে এবার সিরিজার স্তনের বোঁটাটাকে কামড়ে ধরতে লাগলো বারবার, কয়েক মূহুর্ত লিঙ্গ চলাচলটাকে স্তব্ধ রেখে বুকের দুধটাকে চুষতে লাগলো প্রাণপনে। সঞ্চিত বুকের দুধ অবিরত আনন্দ দান করে যাচ্ছে দিবাকরকে। রক্ত উত্তাল, চরম উত্তেজনা, এ সুখের যেন শেষ নেই।

ভোগ করার মতই নারী তুমি সিরিজা, তুমি অনন্যা, তোমার সত্যি কোন বিকল্প নেই।

বোঁটাটা কামড়ে ধরে তৃপ্তিতে পান করে যাচ্ছে দিবাকর, সিরিজা বললো, "তুমি থামলে কেন দিবাকরদা, করো আবার চুষতে চুষতে।"

অহংকারী বুক দুটো সারারাতই দিবাকরের ঠোঁটের দখলে থাকবে, দিবাকর ঐভাবেই স্তন চুষতে চুষতে ঠাপ দিতে শুরু করলো আগের মতন। সিরিজা হাতদুটোকে রেখেছে এবার ওর চুলের ওপর।

- "তোমাকে খুব কসরত করতে হচ্ছে না দিবাকরদা?"

-- "না সিরিজা, কোথায় কষ্ট? এত আরাম, এত সুখ তোমার ভেতরে। তুমি কত শক্তিশালী, সিরিজা, কত সহজে আমাকে ভেতরে নিয়ে নিচ্ছ বারে বারে।"

দিবাকরের দুধ মাখানো ঠোঁটে এমন একটা প্রাণবন্ত চুমু খেল সিরিজা, দিবাকরের মনে হল এই প্রেরণাটা ওকে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানোর জন্যই উৎসাহ দিচ্ছে সিরিজা। ওপর থেকে লিঙ্গটাকে ঝড়ের গতিতে ঢোকাতে লাগলো, নিজের ঠোঁটটা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরেছে দিবাকর। এক একটা স্ট্রোক সম্পূর্ণ হচ্ছে আর চিনচিন অনুভুতিতে কেঁপে যাচ্ছে সারা শরীরটা। দিবাকরের কোমরটা দুহাতে ধরে ওকে ওঠানামাতে সহযোগীতা করতে লাগলো সিরিজা। দুটো ঠোঁট এই মুহূর্ত পরষ্পরের সাথে আবার আবদ্ধ। সিরিজা নিজেই শরীরটাকে শূণ্যে তুলে ধরে রেখেছে দিবাকরের সাথে তাল মিলিয়ে, আগ্রাসী সিরিজার সুখ অনুভুতি, শেষ মূহূর্তে দিবাকরের জেগে ওঠা কামনার আনন্দ, সব আজ মিলে মিশে একাকার।

-- "সুখকে তুমি কোথায় নিয়ে যেতে চাইছো সিরিজা..... আহ্....."

- "ছাড়বে না তুমি আমাকে দিবাকরদা, করো আহ্....."

-- "সিরিজা আমি যে....."

- "তুমি পারবে দিবাকরদা, সিরিজা তোমাকে সব কিছু উজাড় করে দেবে আজ থেকে, করো এইভাবে।"

দিবাকরের আগুনটাকে যেন সারাজীবন জ্বালিয়ে রাখবে, সিরিজা এইভাবেই ওকে বুকে ধরে আবার দুধটা চোষাতে লাগলো, আর ঠাপ দেওয়ার শক্তি জোগাতে লাগলো প্রবলভাবে।

দুধ চোষাটা দিবাকরের অন্যরকম হচ্ছিল। যখন ও সিরিজার কোলে শুয়ে পান করছিল, তখন একরকম। কিন্তু এখন একেবারেই অন্যরকম। চোষার সাথে সাথে ঠাপ দেওয়ার কাজটাও করে যেত হচ্ছে, অদম্য উৎসাহে।

ঠাপ দিতে দিতে এবার সিরিজার শরীরটাকে সোফাকামবেডে শুইয়ে, নিচে মাটিতে হাঁটু ভর করে নেমে এল দিবাকর। ঢেউ খেলানো সিরিজার নগ্ন শরীরটা, সোফার ওপর তখন আড়াআড়ি হয়ে গেছে। পায়ের চেটো দুটোকে মাটিতে রেখে, সোফায় হাঁটুটা ভর করে, হাত দুটো দিয়ে সিরিজার কোমরটা ধরে লিঙ্গ নিক্ষেপ করতে লাগলো জোরে জোরে।

রজনী এখনও অনেক বাকী, আরও কিছু দিতে বাকী, সিরিজা যেন ওর আজ রাত জাগা পাখী। শরীরটাকে ফুটন্ত ফুলের মতই মেলে ধরে সিরিজা ভরপুর যৌনসুখ দিচ্ছে দিবাকরকে। শূন্যে আবার ওর শরীরটা ঝুলছে, স্তনবৃন্তে ঠোঁট চুবিয়ে তীব্র শব্দ করে চোষণ, সিরিজা এক ভয়ানক সুখ উপভোগ করাচ্ছে দিবাকরকে।

পিচ্ছিল যোনিগহ্বরের মধ্যে একনাগাড়ে লিঙ্গচালনা করতে করতে দেহসুখের উন্মাদনায়, শরীরের রক্তগুলো টগবগ করে ফুটছে। দিবাকরের মনে হল, সিরিজা ওর শরীরটাকে যেভাবে সঁপে দিয়ে যা খুশীতাই করতে দিচ্ছে দিবাকরকে, এ যেন এক বিরাট পাওনা।

-- "আরও করবো তোমাকে সিরিজা? আহহহহহহহ....."

ভী্যন উত্তেজিত দিবাকর, মনে হচ্ছে এই বুঝি ওর বীর্য বেরিয়ে এল বলে। অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার মতন।

পুলক আনন্দে ভেসে যাচ্ছে সিরিজাও। চোখ দুটো বুজে কেমন আচ্ছন্নের মত হয়ে গিয়ে আঘাত গুলোকে সহ্য করে যাচ্ছে মধুর আঘাতের মতন।

শেষ শক্তিটাকে সম্বল করে দিবাকর এবার ভীষন আবেগে ভরে গেল। শূণ্যে ঝোলা সিরিজার চুলের গোছাটা এক হাতে ধরে ওর ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো রসিয়ে রসিয়ে। আবেগ উত্তেজনা মিশিয়ে তখন দুজনেই দুজনের কথার উত্তর দিচ্ছে। দিবাকর ঠাপ দিতে দিতেই বললো, "তুমি আমাকে আর ছেড়ে যাবে না তো সিরিজা? "

- "না দিবাকরদা।"

-- "আর যদি চলে যাও, তাহলে কিন্তু আমি মরে যাবো সিরিজা।"

- "পাগল তুমি, কেন মরে যাবে? আমি আছি না তোমার সাথে।"

-- "আর রজত যদি তোমাকে জোর করে নিয়ে যেতে চায়?"

- "তুমিও জোর করে আটকে রাখবে আমাকে।"

-- "আর তুমি?"

- "আমি তোমাকে শুধু ভালোবাসবো, আর সুখ দেব এইভাবে।"

দিবাকরের মনে হল, ও যেন সুখের সমুদ্রে ভাসতে ভাসতে, এইভাবেই সিরিজাকে নিয়ে পাড়ি দেবে কোন অজানা দ্বীপে। সেখানে ছোট্ট একটা বাসা বাঁধবে, তারপর ওদের অন্তহীন ভালোবাসা আর দৈহিক মিলনের জীবন শুরু হবে।

শেষবারের মতন সিরিজার ঠোঁট, জিভ সব চুষে দিবাকর উত্তেজনায় বলে উঠলো, "আহ্ সিরিজা, দাও সুখ, আমি নিতে চাই আরও।"

দিবাকরকে নিজের মধ্যে ধরে রাথার জন্য সিরিজা ওর কাঁধ দুটো শক্ত করে চেপে ধরলো দুহাত দিয়ে। দিবাকর এই প্রথম বীর্য উৎসারিত করছে সিরিজার অভ্যন্তরে।

ছলাক ছলাক করে বেশ কিছুটা, তারপরে আরও কিছুটা, সব শেষে বাকীটুকুটা।

সিরিজা দিবাকরকে এবার জড়িয়ে নিয়ে বললো, "আস্তে আস্তে ফেল, ভয় নেই, আমি ধরে রেখেছি তোমাকে, কিছুতেই পড়তে দেবো না বাইরে।"
 
।। বত্রিশ ।।


দিবাকরকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে নিয়ে শুয়েছিল সিরিজা। দুই খাঁজের মধ্যে মুখটা রেখে দিবাকর লম্বা লম্বা শ্বাস নিচ্ছিল। মুখটা বুকের মাঝে ঘষতে ঘষতেই স্তনের বোঁটটা আবার ঠোঁটের খুব কাছে চলে এল দিবাকরের। ও সিরিজার স্তন মুখে নিল, বুকের দুধটা চুষতে লাগলো। যোনী দিয়ে দিবাকরের লিঙ্গটাকে তখনও আঁকড়ে ধরে রেখেছে সিরিজা। ভেতরটা অজস্র বীর্যপাতে মাখামাখি, পুরো ভেসে যাচ্ছে, অথচ ওর কপালে চুমু খেতে খেতেই বললো, "থাক না একটু। তুমি শুয়ে থাকো এখানে, আর ওটা আমার ভেতরেই থাক।"

প্রচুর পরিশ্রমের পর যোনীগর্ভ বীর্যরসে ভাসছে। অসাঢ় দিবাকরের শরীরটাকে বুকে ধরে, সিরিজা আবার ওর মধ্যে শক্তিটাকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। উত্তেজনাটা ঝড়ের বেগে এসেছিল, আবার ঝড়ের বেগেই স্তিমিত হয়ে গেছে। তবু বোঁটাটাকে চোখ বুজে চুষতে চুষতে অবশিষ্ট সুখটাকে দিবাকর ঐভাবেই উপভোগ করছিল। দিবাকরের চুলে হাত বুলিয়ে সিরিজা বললো, "তোমার বন্ধু তোমাকে ফোন করেছিল না একটু আগে? এবার তুমি ওকে একটা ফোন করবে না?"

বুক থেকে মুখটা তুলে অবাক চোখে দিবাকর তাকালো সিরিজার দিকে। কি বলছে সিরিজা?

দিবাকরের গালের দুপাশে দুহাত রেখে সিরিজা বললো, "রজতকে একটা ফোন করো। বলো সিরিজার বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছো তুমি। আমার এই স্তন এখন সারারাত তৃপ্তি দেবে তোমাকে। ওকে বলতে পারবে না? ও যেমন একটু আগে ফোন করে বলছিল তোমাকে? দোলনের কথা, তুমিও তেমন বলো রজতকে তোমার সিরিজার কথা।"

দিবাকরকে নিজের শরীর সমর্পণ করে, যেন মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে রজতের প্রতি। এবার সেই রাগটাই উগড়ে দিতে চায়, ওকে উচিৎ জবাব দিয়ে। ও যদি দোলনকে সন্তুষ্ট করার জন্য যৌনসম্ভোগে মেতে থাকতে পারে, তাহলে সিরিজাই বা কেন পারবে না, দিবাকরের সঙ্গে অনন্ত সঙ্গম সুখ উপভোগ করতে?

সিরিজার দিকে তাকিয়ে দিবাকর ভাবছিল, সুখ সান্নিধ্য কখনও কখনও এমনি ভাবেই জুটে যায় পুরুষমানুষের কপালে। আজ ও বেপোরোয়া, রজতের জন্য একটুও তার মাথাব্যাথা নেই। কোনমূল্যেই যে সিরিজাকে ছাড়তে রাজী নয়। সেই সিরিজাই এখন ওকে দিয়ে আসল কথাটা বলিয়ে ছটফট করাতে চাইছে রজতের মনটাকে। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে পেয়ে গেছে সিরিজা, আর ওরও রজতকে তাই দরকার নেই।

দিবাকরের ঠোটেঁ পাগলের মতন চুমু খেতে লাগলো সিরিজা। চুমু খেতে খেতে পীড়াপীড়ি করতে লাগলো ভীষন।

- "কি, বলবে না? বলো শীগগীর ওকে, আজ থেকে সিরিজা তোমার। ও যেন ভুলেও এখানে কোনদিন আর না আসে। আর বলে দাও তোমার বন্ধুকে, কাল ওর শ্বশুড় বাড়ীর লোক চলে গেলে ও যেন দোলনকে নিয়েই পড়ে থাকে, এখানে আসার ওর কোন দরকার নেই।"

পাগলের মতন দিবাকরের ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে সিরিজার যেন শরীরে তখনও কামনা। দিবাকর বুঝতে পারছিল, এমন একটা মেয়ে, যে উষ্ণতার জন্য ছটফট করে মরে, রজতের মত সিরিজাও চায় এই যৌনতাকে আঁকড়ে ধরেই বেঁচে থাকতে।

ওর শরীরটা এক কামনার পাহাড়, যে পাহাড়ে অসংখ্য তৃষ্ণা, অসংখ্য জ্বালা, দিবাকরকে দিয়ে বাকী জীবনের কামনার আকাঙ্খাগুলো সিরিজা মেটাতে চায়। দিবাকর ওকে সঙ্গ দিলে, সিরিজা হাড়ে হাড়ে রজতকে বুঝিয়ে দিতে চায়, এই শরীরি জ্বালা মেটাতে, ওর আর রজতকে দরকার নেই, রজত থাকুক ওই দোলন ছুঁড়ীটাকে নিয়ে। এখানে ওকে আর কোনদিন আসতে হবে না।

ঠোঁট দুটো দিবাকরের ঠোঁটের সাথে লেপ্টে দিয়ে একনাগাড়ে চুষে যাচ্ছিলো সিরিজা, আর দিবাকরকে থেকে থেকে বলছিল, "আমার শরীরে ভীষন কামনা দিবাকরদা। এই শরীরটাকে তুমি যা সুখ দিয়েছ, আমার এই সুখই চিরকাল চাই দিবাকরদা, তুমিও চাইবে আমাকে, আর আমিও এইভাবে তোমাকে।"

সিরিজা শুধু সুখ পায়েনি, সুখ সমান তালে দিয়েছে দিবাকরকেও। ঠোঁটটা একটু ওপরে তুলে দিবাকর বললো, "রজতকে কি ফোন করবো তাহলে?"

সিরিজা এবার যোনীর মধ্যে আবদ্ধে থাকা দিবাকরের লিঙ্গটাকে একটু আলগা করে দিল। দিবাকর লিঙ্গটা ভেতর থেকে বের করে নেওয়া মাত্রই ওকে বললো, "করো না? দেখো ও কি বলে?"

শোবার ঘরে বিছানার ওপর মোবাইল ফোনটা রেখে এসেছে দিবাকর। সিরিজার নগ্ন শরীরটা থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে শোবার ঘরে নগ্ন অবস্থায় গেল ও। ফোনটা ঠিক বাচ্চাটার পাশেই পড়ে রয়েছে। দিবাকর ফোনটা তুলে রজতকে ধরার চেষ্টা করতে লাগলো, দুবার চেষ্টা করলো, তারপর ছেড়ে দিল। পাশের ঘরে এসে সিরিজাকে বললো, রজতের ফোন বন্ধ। মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে এখন।

সিরিজা সোফা-কাম-বেডের ওপর পা দুটো দুপাশে ছড়িয়ে যোনীদ্বারকে মেলে রেখেছে। দিবাকরকে দেখছিল, সেই কামনার দৃষ্টিতে। সিরিজার যোনীদ্বারকে খুব সামনে থেকে দেখলো দিবাকর। সাদা বীর্যটা গহ্বরের মুখে জ্যাবজ্যাবে হয়ে লেগে রয়েছে, আসতে আসতে কিছুটা গড়িয়ে নেমে আসছে নিচের দিকে। আঙুল দিয়ে জায়গাটায় মোলায়েম করে ডলার চেষ্টা করছে সিরিজা, দেখছে দিবাকর শেষ পর্যন্ত মুখটা রাখে কিনা ওখানে।

আর একটু কাছে এগিয়ে এল দিবাকর, সিরিজা বললো, "সব শক্তি নিঃশ্বেস করে দিলে, আর তাহলে করবে না আমাকে?"

এখনও যেন কামনার তাগিদটাকে জিইয়ে রেখেছে সিরিজা। অফুরন্ত ওর শরীরে এক উন্মাদনা, এই উন্মাদনা শেষ পর্যন্ত কোথায় নিয়ে যায় দিবাকরকে, সেটাই ও ভাবছে। আবার আর এক প্রস্থ যৌনসঙ্গমে মাততে হলে লিঙ্গটাকে পুনরায় সজাগ করতে হবে দিবাকরকে। সিরিজার উন্মুক্ত যোনীর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে নিজেকে চাগানোর আবার চেষ্টা করছিল দিবাকর।

ও এগিয়ে আসার পর সিরিজা বললো, "কাল ও যখন আসবে, আসার পরেই তুমি চুমু খাবে আমার ঠোঁটে। রজতেরই সামনে, দেখবো ও কি বলে তখন তোমাকে?"

দিবাকর ভাবছিল, এই চুমু খাওয়ার ব্যাপারটাই সিরিজা ওকে বলেছিল কদিন আগে। রজতের সামনে সিরিজার ঠোঁটে দিবাকরের চুমু। সেদিন মনে হয়েছিল, সিরিজা বুঝি পরীক্ষা নিচ্ছে ওকে। আজ দিবাকরের সিরিজার ঠোঁটে চুমুটা খেতে কোন দ্বিধা নেই।

সিরিজার সামনে এসে, হাঁটু গেড়ে মেঝেতে বসে, যোনীদ্বারটাকে একদৃষ্টে দেখছিল দিবাকর। সিরিজা উঠে বসে দিবাকরের মাথাটা ধরলো এবার এক হাত দিয়ে। যোনীদ্বারের মুখে দিবাকরের ঠোঁট দুটোকে স্থাপন করতে চাইছে, কামরস আর বীর্যরসের মিলনকে চেখে অনুভব করার মতন সাহসটা একবার দেখাবে দিবাকর, সিরিজা যেন তারই প্রতীক্ষায়।

চেয়ে চেয়ে সিরিজার যোনীমুখটা বেশ কিছুক্ষণ দেখলো দিবাকর। যোনীর মুখে জমা ওরই বীর্য ঢেকে দিয়েছে সিরিজার চেরা জায়গাটা। কামরসে মিশ্রিত তৃষ্না নিবারণের যেন এক অদ্ভুত সুধা। এই সুধাকে পান করতে হলে নিজেরই বীর্যকে চেটে চুষে নিতে হবে সিরিজার যোনীদ্বারে জিভ ঠেকিয়ে। ওর মধ্যে এখন এক অদম্য শক্তি, স্পৃহা, সাহস সবকিছুই বর্তমান। পাগলের মতন সিরিজার ঠোঁটে বারবার চুমু খেতে লাগলো দিবাকর। একহাত দিয়ে সিরিজার স্তন টিপে ঠোঁট চুষে এবার মুখটা নামাতে লাগলো আসতে আসতে নিচের দিকে। সিরিজা ওর মাথাটা একহাত দিয়ে তখনও ধরে রেখেছে আর সেবক দিবাকর যেন উপভোগ্য এক খাদ্যকে গ্রহণ করবে বলে ক্রমশ এগিয়ে আসছে।

চোখটা বুজে ফেলেছে সিরিজা, তবু দিবাকরকে বললো, "পারবে দিবাকরদা? এখানে মুখ রেখে, জিভ ছোঁয়াতে? তোমার খারাপ লাগবে না?"

প্রথমে আলতো একটা স্পর্শ ত্রিভুজের ঠিক ওপরে। দিবাকর বললো, "পারবো সিরিজা, আজ আমায় কিছুই আটকাতে পারবে না।"

চোখটা বন্ধ করে জিভটা বোলাতে লাগলো আসতে আসতে। তখনও বীর্য লেহন শুরু হয় নি। সিরিজা পা দুটো একটু ফাঁক করে শরীরটা এবার হেলিয়ে দিল পেছন দিকে। দিবাকরের মাথাটাও সাথে সাথে ধরে রেখেছে এক হাত দিয়ে। জিভ দিয়ে ওর ত্রিভুজের ওপরে অনবরত কারুকার্য মেশানো লেহন করছে দিবাকর। এবার ওপর থেকে জিভটা নামিয়ে ফাটলে ছোঁয়ালো দিবাকর। সিরিজা হাত দিয়ে শক্ত করে আঁকড়ে ধরেছে দিবাকরের মাথাটা। কামরস আর বীর্যরসের মিশ্রন দিবাকর জিভ দিয়ে আস্বাদন শুরু করতেই, জিভের ওপর ঘষ্টাঘষ্টিতে লেপ্টে গেল সাদা রসটা। সিরিজা একটা অস্ফুট শব্দে বলে উঠলো আঃ।

হাত দুটো দিয়ে সিরিজার দুই উরু দুপাশ থেকে ধরে ওর নিম্নাঙ্গ পরিচ্ছদ চেটে চুষে পরিষ্কার করছে দিবাকর। চাটতে চাটতেই জিভের গতিটা ক্রমশ এবার বাড়াতে লাগলো ও। শরীরের ভেতরে উদ্দামতা আরও তীব্র করে তুলেছে চোষণটাকে। বীর্য ক্রমশই দিবাকরের মুখের ভেতরে চলে যাচ্ছে। মুখটা তুলে একবার দেখলো সিরিজাকে, কেমন অদ্ভূত দৃষ্টিতে সিরিজা তাকিয়ে আছে ওর দিকে। সুখ বিলাসের চরম আনন্দদাত্রী, সেও দেখছে দিবাকর কেমন সুখকে আদায় করে নিচ্ছে নিজের মতন করে।

ভেতরে উন্মাদনাটা টগবগ করে ফুটছে, এক পলক সিরিজাকে দেখে নিয়েই দিবাকর চোষণে আবার নিমজ্জিত করালো নিজেকে। বীর্য চোষণ সম্পূর্ণ করে এবার কামরসে ভেজা ক্লিটোরিসটাকে চাটতে লাগলো একনাগাড়ে। যৌন পাপড়ির সাথে খেলতে খেলতেই উত্তেজনায় জিভটা কিছুটা ঢুকে গেল পাপড়ির ভেতরে। চরচর করে একবার ঢুকছে আর বেরোচ্ছে, অস্থির সিরিজা এবার নিজেও কেঁপে উঠছে বারে বারে। দিবাকর তখন পারদর্শী চোষকের মতন চুষছে।

"আঃ আঃ।" অস্ফুট স্বরে সিরিজা এবার বলে উঠলো, "আমার ভেতর থেকে রস আবার বেরিয়ে আসছে দিবাকরদা, তোমার মুখের ওপর পড়বে।"

হলও তাই। দিবাকরের চুলের মুঠিটা ধরে যোনীরস নির্গত করতে লাগলো সিরিজা। ফোয়ারা ছিটিয়ে ঝর্ণার মতন কামরস ঝরে পড়ছে, জিভ দিয়ে সেই মধু রসকে শুষে নিচ্ছে দিবাকর। সিরিজাকে বললো, "আমার মুখ তুলতে ইচ্ছে করছে না সিরিজা। মনে হচ্ছে শুধু চুষেই যাই আর চুষেই যাই।"

সিরিজা চোখ বুজে বললো, "জানি দিবাকরদা জানি। তুমি চোষো।"

যেন বেঁচে থাকার এই না হল মানে। সুখ যেন থরে থরে সাজানো। ফাটলটা তীব্র ভাবে চুষতে চুষতে দিবাকর সিরিজার কামরস পান করছে, রজত এই দৃশ্য দেখলে নিশ্চয়ই হার্টফেল করে মরবে।

দিবাকরের চুলের মুঠিটা শক্ত করে ধরে, ছটফট করে উঠছিল সিরিজা। মুখে গোঙানির উঃ আঃ শব্দ। জিভটা চরকীর মত ঘোরাতে ঘোরাতে, দিবাকর একনাগাড়ে লেহন করে যাচ্ছে রসসিক্ত যোনীদ্বারটাকে। নিখুঁত ত্রিভূজ, সুন্দর মাংসল, পদ্মফুলের পাপড়ির মতন লাল ভগাঙ্কুরটি এখন পাগল করা সুখ দিচ্ছে। সিরিজার যোনীরস পান করে দিবাকর যেন সম্পূর্ণ আলাদা একটি মানুষ। নিষিদ্ধ স্বাদের উজাড় করা তৃপ্তি সিরিজার কাছ থেকে পেয়ে ও যেন লোভকে কিছুতেই সামাল দিতে পারছে না।

প্রায় মিনিট দশেক ঐভাবেই চোষার পর দিবাকর যখন মাথাটা তুলল, তখন ও পৃথিবীর একমাত্র সৌভাগ্যমান পুরুষ। উত্তেজনায় কামরস চুষতে চুষতে জিভের থুতুটাও প্রবলভাবে মিশে গিয়েছিল সিরিজার রসক্ষরণের সাথে সাথে। হাত দিয়ে ঠোঁট দুটো মুছতে মুছতেই সিরিজা দু হাত বাড়িয়ে দিবাকরকে আবার ডেকে নিল নিজের বুকের মধ্যে।

ওকে বুকে জড়িয়ে রেখে সিরিজা বললো, "কি হল? মুখ তুলে নিলে? আর চুষবে না?"

বুকের মধ্যে মুখ রেখে বড় বড় শ্বাস নিচ্ছিল দিবাকর। সিরিজাকে বললো, "না সিরিজা, আর নয়। তোমার শরীরের ওপর এত লোভ জমে গেছে আমার, এবার তো নিজেকে একটু সামাল দিতেই হবে। খালি পাগলের মতন তোমার শরীরকে নিয়ে সেই থেকে ঘাঁটাঘাঁটি করছি। এবার তুমিই আমাকে আটকাও সিরিজা, নইলে আরও পাগল হয়ে যাবো আমি।"

দিবাকরকে বুকে ধরে চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো সিরিজা। তীব্র যোনীচোষনের পর দিবাকরের শরীরটা আবারও উত্তপ্ত। লিঙ্গত্থান হয়েছে পুনরায়। সিরিজা মুখ নামিয়ে আলতো করে একটা চুমু খেল দিবাকরের ঠোঁটে। বললো "আর করবে না আমাকে?"

বুক থেকে মুখ তুলে দিবাকর দেখছিল সিরিজাকে। এমনই এক নারী, পুরুষমানুষকে বারে বারে গ্রহণ করে নিতে যার মধ্যে কোন দ্বিধা নেই। নেই কোন অনীহা বোধ। সিরিজার শরীরে সেক্স এর মাত্রা অতিরিক্ত পরিমাণে বেশী। কথায় বলে যে নারীর মধ্যে যৌন জড়তা নেই, নেই কোন শিথিতলা, তাদের পুলক পাবারও নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। বারে বারে সেই নারী আকাঙ্খা করে পুরুষমানুষকে।

দিবাকর বললো, "তুমি চাও? আমি তোমাকে আরও করি? রজতের কাছ থেকে তোমাকে নিজের কাছে পেলাম, সবটুকু একদিনেই পাওয়া হয়ে গেলে বাকী জীবনটায় পাওয়ার তো আর কিছু থাকবে না সিরিজা? আমাকে একটু একটু করে পেতে দাও, সবটুকু একদিনে....."

দিবাকরকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে সিরিজা বললো, "কাল রজত এলে তুমি কিন্তু একদম রেগে যাবে না, ওর সাথে বোঝাপড়া যা করার আমিই করবো। আমি চাই না, তোমার বন্ধু তোমাকে বাজে কথা বলুক।"

দিবাকর বললো, "কিন্তু তুমিই তো বলছিলে, সিরিজা ওকে এখনই ফোনটা করতে। যদি ওকে সত্যি ফোনে পেয়ে যেতুম। তাহলে তো বলেই দিতাম কথাটা।"

সিরিজা কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো কথাটা শুনে। দিবাকরকে বললো, "না দিবাকরদা, তোমার তো কোন দোষ নেই। ভেবে দেখলাম, তুমিই বা আগ বাড়িয়ে কেন খারাপ হবে? এ তো আমারই তোমাকে মনপ্রাণ দিয়ে কামনা করা। তোমার বাড়ীতে এসে তোমাকে আমি উত্তপ্ত করলাম, ওকি একবারই ভেবেছিল সেকথা? সিরিজা ওকে চিরজীবনের মত ভুলে যাবে। দোলন থাকলেও ও তখন আসতে দিত না আমাকে।"

দিবাকর বললো, "তুমি খুব ভেঙে পরেছিলে না? রজতের ওরকম কান্ড কারখানা দেখে। দোলন এসে রজতের মনটাকে বিষিয়ে দিল। ভাবলে যা সব বোধহয় হাতছাড়া হয়ে গেল।"

- "সত্যিই তাই। যে জালে জড়িয়েছে ও। ওখান থেকে বেরোনো ওর পক্ষে খুব মুশকিল। দোলনকে মানানো এখন আর অত সহজ হবে না।"

দিবাকর বললো, "ধরো দোলন শেষ পর্যন্ত রাজী হয়ে গেল, ঐ বাড়ী ছেড়ে যেতে। তখন কি করবে?"

সিরিজা দিবাকরের গাল দুটো দুহাতে ধরে বললো, "পরীক্ষা নিচ্ছ আমাকে? তোমাকে সত্যিই ছেড়ে আবার চলে যাবো কিনা?"

বলেই ওর ঠোঁটে আবার চুমু খেল সিরিজা। দিবাকরের ঠোঁট কামড়ে ভালোবাসার জানান দিয়ে বোঝাতে চাইল, দিবাকর এখনও যা সিরিজাকে নিয়ে আশঙ্কা করছে, তা একেবারেই সত্যি নয়।

শরীরটা এমনি এমনি বিনা দ্বিধায় তুলে দেয় নি দিবাকরকে। একটা গাঢ় শক্তিশালী চুমু দিয়ে ভেতর থেকে সেই ইচ্ছাটাই আবার প্রকাশ করলো সিরিজা। দিবাকরকে বললো, "আমি যখন মনে প্রাণে কাউকে কামনা করি, তখন তাকে এইভাবেই চাই দিবাকরদা। আমার এই দেওয়ার মধ্যে কোন খাদ নেই। তোমার বন্ধুকে যেমন দিয়েছিলাম, তেমন তোমাকেও দিলাম আজকে। শুধু তুমি যদি আবার আমাকে ভুলে কারুর কাছে চলে যাও। তাহলেই সিরিজা আবার ছেড়ে চলে যাবে তোমার কাছ থেকে।"

দিবাকর এবার একটু হাসছিল। বললো, "আমি আর কার কাছে যাবো? আমার তো দোলনের মত বিরক্ত করার কেউ নেই। কেই বা আমার কাছে আসবে? দিবাকরকে কেউ কোনদিন এমন ভাবে চায় নি, একমাত্র তুমি ছাড়া।"

সিরিজা বললো, "আমি কি রেশমীর জায়গাটা নিতে পারলাম? তোমার জন্য যার কাছে ছুটে গেলাম, এখন তো তারই জায়গা আমি নিজে নিয়ে বসলাম। কি ভাববে মেয়েটা কে জানে? বলেছিলাম রবিবার ওর সাথে দেখা করবো, আর তো মাঝে দুটো মাত্র দিন। ভাববে কোথা থেকে এই মেয়েটা এসেছিল কে জানে? হঠাৎ বাড়ী খুঁজে ফোন করলো ওকে। কোন কারণ ছাড়াই, রেশমী নিশ্চয়ই অবাক হবে।"

দিবাকর দেখলো সিরিজা তাকিয়ে আছে ওর দিকে। রেশমীর জায়গাটা নিয়ে নিয়েছে বলে অনুশোচনা একটু হচ্ছে, কিন্তু দিবাকরও কি বলে, সেটা জানার জন্যও অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

ওকে দিবাকর বললো, "রেশমীর কাছে এবার আমিই যাবো তোমাকে নিয়ে। ও আমার ভালোবাসাটা তো বুঝতে পারেনি সেদিন, এবার আমিই রেশমীকে বলব, এই দেখ কাকে এনেছি, তোমার সাথে দেখা করাবো বলে। এ আমার জান প্রাণ, মন প্রাণ সবকিছু। সিরিজাই তোমার সাথে কথা বলেছিল আগের দিন টেলিফোনে। আমিই পাঠিয়েছিলাম ওকে, আজ নিজেই সাথে করে নিয়ে এসেছি, তোমার সঙ্গে দেখা করাবো বলে।"

দিবাকর যেন পুরোনো দূঃখ কষ্ট গুলো ভুলে এবার এক একটা করে শোধ নিতে চাইছে সিরিজাকে সঙ্গী করে।

সিরিজা বললো, "আমার আর রেশমীর কাছে যেতে ইচ্ছে করছে না দিবাকরদা। কি হবে গিয়ে? সব তো কেমন ওলোট পালট হয়ে গেল। আমি তোমার কাছে চলে এলাম, দোলন তোমার বন্ধুর কাছে রয়ে গেল। আর রেশমী সেই রেশমীর জায়গাতেই রয়ে গেল। তোমার জন্য যেটা ভেবেছিলাম, সেটা করাতো হলই না, উল্টে এই ছটফটে শরীরটাকে শান্ত করতে গিয়ে তোমার কাছেই কামনা ভিক্ষা করলাম।"

দিবাকর আবেগ মিশিয়ে সিরিজার ঠোঁটে প্রবল ভাবে চুমু খাচ্ছিল এবার। ওকে বললো, "যেতে হবে না তোমাকে। আমি কি জোর করেছি তোমাকে? রেশমীকে আমার চাই না, যাকে পেয়েছি সেই তো আমার সব।"

সিরিজার নগ্ন শরীরটার সাথে দিবাকরের নগ্ন শরীরটা লেপ্টে যাচ্ছিলো আবার। কিছুক্ষণ দুজনে জড়াজড়ি করে সোফার ওপর বসে থাকার পর, সিরিজা বললো, "আমার এখন স্নান করতে ইচ্ছে করছে, দিবাকরদা বাথরুমে যাবে?"

-- "এতো রাতে স্নান করবে সিরিজা?"

সিরিজা বললো, "চলো গা টা অন্তত ধুয়ে নিই। তুমি তো ঘেমে গেছ অনেক। সেই সাথে আমিও। দেখে বুঝতে পারছো না?"

সিরিজাকে সোফা থেকে তুলে নিয়ে বাথরুমে ঢুকলো দিবাকর। শাওয়ারটা খুলে দিয়ে সিরিজা শুধু গা আর পিঠটা ভেজানোর চেষ্টা করছিল, জলের ছিটে এসে ওর চুলগুলোকেও ভিজিয়ে দিল। একটু দূরে দাঁড়িয়ে দিবাকর। সিরিজা বললো, "একি, তুমি দুরে কেন? এসো আমার কাছে।"

দূরে দাঁড়িয়ে থাকাটা একরকম, কাছে এসে গেলে সিরিজাকে আবার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। ওর শরীরটাই যে একেবারে অন্যরকম।

দুজনের শরীরটা ঝর্ণার জলে ধুয়ে যাবার পরও শান্ত হচ্ছিল না। সিরিজা ঠোঁটটা বাড়িয়ে দিয়েছে আর দিবাকর ওর ঠোঁটে চুমু খাচ্ছে। সিরিজাও সমানে টক্কর দিচ্ছে দিবাকরের সাথে। সময় নিয়ে বাথরুমে শরীর ভেজানোর পর দুজনেই এবার একসাথে বেরিয়ে এল ভেতর থেকে। গামছা দিয়ে নিজের নগ্ন শরীরটা মুছে, দিবাকরকেও ভালো করে মুছিয়ে দিয়ে সিরিজা। বললো, "শোবে এবার? নাকি শুতে ইচ্ছে করছে না?"

বাচ্চাটা ভেতরের ঘরে একা শুয়ে অঘোরে ঘুমোচ্ছে। দিবাকর বললো, দুজনে মিলে ওঘরে শুলে যদি বাচ্চাটার ঘুম ভেঙে যায়?

সিরিজা বললো, "কিছু হবে না। ও ঘুমোবে ওর মতন, আর তুমি আমি আমাদের নিজেদের মতন।"


ষষ্ঠ অধ্যায় সমাপ্ত
 

Users who are viewing this thread

Back
Top