।। ছাব্বিশ ।।
রজত বসেছিল বিছানার ওপরে। পাশে রাখা মোবাইলটা হঠাৎ বাজতে শুরু করেছে। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো ওটা দিবাকরের ফোন। বিকেলে তো আসার কথা দিবাকরের। তাহলে হঠাৎ ফোন করেছে কেন এখন?
রজত ফোনটা ধরেই বললো, "হ্যালো। বলো, কখন আসছো তাহলে?"
ও প্রান্ত থেকে দিবাকর বললো, "আমি আসছি না আজকে।"
রজত অবাক হয়ে বললো, "সেকী? কেন?"
- "আমার পেট খারাপ হয়েছে। বারে বারে বাথরুমে যেতে হচ্ছে। ভীষন অস্বস্তি। মনে হচ্ছে যেতে পারবো না।"
একটু বিরক্ত হলো রজত। বললো, "ওফঃ পেট খারাপটা তোমার আজকেই হল। আর সময় পেল না। এত দরকারী কথা রয়েছে, মেয়েটাকে তোমার ওখানে পাঠাব বলে ঠিক করলাম। আর তুমি সব মাটি করে দিলে।"
দিবাকর বললো, "কি করবো? কাল রাত্রি থেকেই গন্ডগোলটা হয়েছে। চুপচাপ বসে থাকতেও পারছি না। ওষুধ তো খেয়েছি। দেখি শরীরটা একটু ভালো থাকলে যাবো।"
-- "বুঝেছি, তার মানে তুমি আর আসছ না।"
একটু রাগ দেখিয়েই দিবাকরকে ও বললো, "ওফ মাঝে মাঝে তোমার যে কি হয়?"
সিরিজা এই মাত্র ঢুকেছে ঘরে। বেশ চিন্তিত মুখ। রজত ওকে বললো, "দিবাকর আর আসছে না আজকে। ওর পেট খারাপ হয়েছে।"
সিরিজা রজতের দিকে ভুরু কূচকে তাকাল। রজতকে বললো, "এলেই বা কি হত? দোলন তো যাবে না ঐ বাড়ীতে। এসেও কোন লাভ নেই।"
রজত বেশ রাগান্বিত হয়ে বললো, "যাবে না মানে? ও কি এখানেই চিরকাল থাকবে নাকি? যত সব ন্যাকামি। বেয়াদপিপনার একটা তো শেষ আছে। আর কত সহ্য করা যায়? সিরিজা তুমিই কিছু একটা করো না। আমার আর ভালো লাগছে না।"
রজতের ঠোঁটের ওপর হাত রেখে সিরিজা ওকে চুপ করতে বললো, রজতকে ইশারা করে বললো, "আস্তে। ও শুনতে পাবে। তুমি অধৈর্য হয়ো না। আমি দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ওকে মানানোর চেষ্টা করছি। তুমি বেশি জেদ দেখালেই ও বিগড়ে বসবে। তখন আর নড়তেই চাইবে না এখান থেকে। সব চেষ্টা মাটি হয়ে যাবে।"
রজত কিছু বলার আগেই সিরিজা বললো, "দেখছো না হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে এখন। আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্কটা ওর সহ্য হচ্ছে না এখন। কথায় কথায় ঠেস মারছে। আমাকেও ও বলতে ছাড়েনি।"
রজত বিরক্তির সঙ্গেই সিরিজাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কেন কিছু বলছিল তোমাকে?"
সিরিজা বললো, "সেই থেকে এখানে আসার পর থেকেই তো বলছে। মাঝে মাঝে এমন হাবভাব দেখাচ্ছে, যেন আমার জায়গায় তোমার সাথে ও থাকলেই বোধহয় ভালো হতো। কিচ্ছু বিশ্বাস নেই। দোলনকে এখন চটালে চলবে না। ও সব জানে। আমাদের ক্ষতি করে দিলে মুশকিল।"
রজত বুঝতে পারছিল তুরুপের তাসটা এখন দোলনের হাতেই ধরা আছে। সিরিজার কথাই ঠিক। ক্রোধের বশে রজতের বউকেও লাগিয়ে দিতে পারে সিরিজা আর ওর সম্পর্কের কথা বলে। ওদিকে মাতাল স্বামীটাকেও যদি পথ দেখিয়ে এ বাড়ীতে নিয়ে আসে তাহলে তুমুল কান্ড বেঁধে যাবে। একদিকে সিরিজার পুরোন সমস্যা আর একদিকে রজতের স্ত্রী কে নিয়েও চরম ভোগান্তি। মাঝখানে দাঁড়িয়ে দোলন। ঠিক যেন বোড়ের চালটা চেলেছে যথা সময়ে।
দিবাকরও ডুবিয়ে দিল। এখন দোলনকে সিরিজা কিভাবে ম্যানেজ করবে সেটাই দেখার।
রজতকে একটু সতর্ক করে সিরিজা বললো, "আর ওভাবে আমাকে চুমু খেতে যেও না ওর সামনে। ও সহ্য করতে পারছে না এসব।"
যত বিপত্তি চুমু খাওয়াকে ঘিরেই। বেশি সাহসি হতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনল নিজেই। এখন এর ফল ওকে ভোগ করতে হবে। জ্বালা হয়েছে সিরিজারও। বেচারী সেই থেকে যে ঝামেলা সহ্য করে যাচ্ছে, তার জন্য কোন বিরক্তি নেই ওর মুখেও। অনবদ্য সুখের শরীরটা নির্দিধায় তুলে দিয়েছিল রজতের হাতে, এর এখন দেখো, চেনাজানা লোকগুলোই এমন ভাবে এসে ঘাড়ে ভর করছে, যেন এখানে সিরিজাকে নিয়ে টেকাটাই দায় হয়ে পড়েছে। কবে যে এগুলো ঘাড় থেকে নামবে কে জানে? আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে।
বিরক্তির চোটে ভর্তি সিগারেটের প্যাকেটটা তুলে আছাড় মারলো রজত মেঝেতে। মুখে বললো, "দূর আর ভালো লাগে না সিরিজা। চলো তো আমরা কোথাও পালিয়ে যাই।"
সিরিজা হেসে বললো, "পালিয়ে যাবে? কোথায়?"
-- "যেখানে কেউ আমাদের নাগাল পাবে না। শুধু তুমি আর আমি, মাঝখানে আর কেউ নেই। এ বাড়ীতে থেকে তুমি আর আমি সুখ করবো, তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে সিরিজা। আমি চাই মজা ষোলআনা। তোমার এই শরীরটা থাকবে আমার হাতের নাগালে বিনা ঝামেলায়। তবেই তো স্বস্তি। তা না কিনা যত উটকো ঝামেলা পরপর।"
সিরিজা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, "কিন্তু তোমার এই ফ্ল্যাটটার?"
-- "নিকুচি করেছে ফ্ল্যাটের। এটাতো আমার কেনা ফ্ল্যাট নয়। ভাড়ায় রয়েছি। মালিকও থাকে না এখানে। তালা লাগিয়ে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো। কেউ টেরও পাবে না। তারপর মালিককে জানিয়ে দেব, আমি অন্য জায়গায় ফ্ল্যাট নিয়ে নিয়েছি। তাহলেও হল।"
সিরিজা কৌতূহল মুখ নিয়ে বললো, "তুমি সত্যি বলছো?"
রজত বললো, "সত্যিই তো বলছি। চলো যাবে তুমি? কালকেই রওনা দেব আমরা।"
- "কিন্তু দিবাকরদার কি হবে?"
-- "কেন দিবাকরের আবার কি হল?"
- "ঐ যে রেশমি?"
-- "ওফঃ আবার রেশমি? আর পারি না। আমি চাইছি এসব ঝামেলা ঝঞ্জাট এড়াতে। আর তুমি কিনা পড়ে রয়েছ ঐ রেশমি কে নিয়ে। অত পরের উপকার করার মত এখন সময় নেই। নিজেদের সুখটা আগে দেখবো? না পরের কথা আগে চিন্তা করবো।"
সিরিজা কিছুক্ষণ ভেবে বললো, "সবই তো বুঝলাম। কিন্তু দোলনকে না ভাগিয়ে আমাদের তো কিছু করার উপায় নেই।"
রজত সিরিজার ঘাড়ে দোলনের ব্যাপারটা ছেড়ে দিয়ে বললো, "ঐ বদ ছুঁড়ীটাকে তুমি সামলাও। এখান থেকে অন্য জায়গায় যাবার ব্যাপারটা আমি সামলাচ্ছি।"
সিরিজাকে নিজেই ঝামেলা ঘাড়ে নিতে বলে আবার একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন সিগারেটটা টানতে লাগলো রজত। দোলনকে নিয়ে ও নিজেও চিন্তা করছে। শেষ পর্যন্ত সিরিজা যদি ওকে পটাতে না পারে, তাহলে দোলনকে নিয়ে রজত কি বা করতে পারে? মেয়েটার সাথে মিছি মিছি একটা মন দেওয়া নেওয়ার অভিনয় করা যেতে পারে। অথবা দোলনের সাথে শারীরিক মিলনে আবদ্ধ হওয়ার আগে, শর্ত আরোপ করতে পারে দোলনকে। ঠিক আছে সিরিজার জন্য তোমার যখন এত হিংসে হচ্ছে, আমি রাজী আছি তোমার সঙ্গে ভালোবাসাবাসির খেলা খেলতে। কিন্তু সেটা কেবল একদিনের জন্যই। তুমি তোমার সাধ পূরণ করে নাও। তারপরেই কিন্তু তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাদের এ বাড়ী থেকে। আর কোনদিনই এ পথ তুমি মাড়াবে না। সিরিজাকে চিরতরে পাওয়ার জন্য একদিনের এই স্যাক্রিফাইস করতে আমি রাজী হলাম। জীবনের বাকী যেকটা দিন আছে, তার থেকে কেবল একদিনই তোমার জন্য আমি তোমাকে দিতে পারি। বাকী জীবনে সিরিজাই আমার মন প্রান জুড়ে থাকবে সবসময়। ওখানে তোমাকে আমি কোনদিনই বসাতে পারবো না।
সিরিজা রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "কি ভাবছো?"
রজত বললো, "কিচ্ছু না। শুধু ওপরওয়ালাকে ডাকছি, তিনি যদি দয়ালু হয়ে এই ঝামেলাটা কোনমতে মিটিয়ে দেন,তাহলে তোমাকে নিয়ে আমি বাকী জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটাতে পারি।"
রান্নাঘরে দোলন একা রয়েছে। কখন আবার হূট করে এই ঘরে চলে আসতে পারে। সিরিজা বললো, "আমি যাই। দেখি ও কড়াইতে খুন্তী নাড়ছে কিনা? এ ঘরে বেশিক্ষণ থাকলে ওর আবার হিংসে হবে।"
সিরিজা রজতের জীবনে আসার আগে অবধি রজত ছিল একরকম। আর সিরিজা আসার পরে রজত হয়ে গেল অন্যরকম। এক নারীতে রজতের মন কোনদিনই টেকেনি। বহু নারীতে আসক্তি। একাধিক নারীর সাথে মিলন, শরীরি সুখে ভেসে যাওয়া এসব অহরহ চলছিলই। কাউকে বেশিদিনের জন্য মনে ধরত না রজতের। মেয়েছেলে যেন শুধু এক রাত্তিরেরই খোরাক, এই নিয়ে ওর কামুক জীবন অতিবাহিত হচ্ছিলো। রীতা রজতকে বিয়ে করে রজতের স্বভাবের জন্য অতীষ্ঠ হয়ে ওর সঙ্গ ছেড়েছে। ভেবেছিল রজত কোনদিনই শুধরোবে না। সুতরাং ওর সাথে ঘর করা বৃথা। বউ ছেড়ে চলে যাবার পরই ও সিরিজাকে পেয়েছে। শরীরে যার এত ঐশ্বর্য ভান্ডারে ভর্তি তাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রতি আবার আসক্তি? শুধু রজত কেন, পৃথিবীর কোন পুরুষই এই মুর্খামি করবে না। সিরিজার সঙ্গে সেক্সুয়াল লাইফে মাতোয়ারা হবার পর থেকে ওর আর কোন চাহিদা নেই জীবনে। বাকী জীবনটা এখন শুধু সিরিজা আর সিরিজাই।
সিরিজার উদ্ধত নগ্ন স্বাস্থ্য, রজতের খোলা বুকে মাথা রেখে ও যখন শুয়ে থাকে, রজত মনে মনে চিন্তা করে বউ নেই বলেই এখন কত সুখ। বউ থাকলে কি সিরিজার সাথে মাখামাখিটা করতে পারত? রাগে দূঃখে বউ তখন ক্ষোভে ফেটে পড়তো। যে সুখটা ও বউ এর অনুপস্থিতিতে সিরিজার সাথে করতে পারছে। সেটা সিরিজার সামনেই দোলনের সাথে করবে কি করে? হলেই বা একরাত্রিরের শর্ত। সিরিজা এক ঘরে, দোলন ও সেই ঘরে। চোখের সামনে সেই শর্ত পালন করা কি সম্ভব? সিরিজার চোখে ও তো খারাপ হয়ে যেতে পারে? যাকে পাওয়ার জন্য এমন কান্ড ঘটালো, সেই কিনা চলে গেল ওর জীবন থেকে। তারপর বাকী জীবনটা ও শুধু দোলনকে নিয়ে? অসম্ভব। কিছুতেই সম্ভব হবে না সেটা।
রজত মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো খামচে ধরেছে। যেন মনে হবে নিজেরই চুল ছিঁড়ছে কপালের দোষে। শেষ পর্যন্ত এমন একটা দূঃসাহসিক ঝুকি নেওয়াটা কিছুতেই ঠিক হবে না। সিরিজা যদি ভুল বুঝে ওকে ছেড়ে চলে যায়? ওর এমন চোখ ধাধানো শরীর। রজতের মত আর একটা মেয়ে পাগল লোককে অনায়াসেই জুটিয়ে নিতে পারে সিরিজা। তখন আফসোসের আর শেষ থাকবে না। সুখের বাতি নিভে যাবে চিরকালের মতন। ঐ হতচ্ছাড়া বদমায়েশ মেয়েটাকে নিয়েই কাটাবে নাকি তখন বাকী জীবন? রজত কিছুতেই তা পারবে না। মরে যাবে তবু পারবে না। তার চেয়ে সিরিজার ওপরই ছেড়ে দেওয়া ঠিক। ও যা করবে, সেটা কখনই মন্দ হবে না।
যেন একটা বিপদ থেকে বেঁচে গেল রজত। মাথা খারাপ হলে লোকে উল্টোপাল্টা ভাবতে শুরু করে, ওরও তাই এমন অবস্থা হয়েছিল একটু আগে। নিজের আপন মনেই বিড় বিড় করে বলতে লাগলো, "নাহ, এটা কখনই ঠিক হবে না। কিছুতেই ঠিক হবে না।"
হঠাৎই সিরিজার বদলে এবার দোলন ঢুকল শোবার ঘরে। রজতের সামনে এসে বললো, "কি ঠিক হবে না দাদাবাবু? কি ঠিক হবে না?"
রজত রীতিমতন চমকে গেছে দোলনের হঠাৎ এই আগমন দেখে। ওকে বললো, "তুমি?"
দোলন ন্যাকামো করে বললো, "হ্যাঁ আমিই। কি হয়েছে বলো? সিরিজাই তো আমাকে পাঠালো তোমার ঘরে।"
- "সিরিজা পাঠালো?"
-- হ্যাঁ।"
- "মানে?"
-- "বললো, দাদাবাবু একা ঘরে রয়েছে। তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল। যা একবার দেখা করে আয়।"
রজত মনে মনে ভাবল, সিরিজার কি ভীমরতি হয়েছে? নিজে না এসে দোলনকে পাঠিয়েছে। আমি আবার কি জিজ্ঞাসা করবো? একে আবার এ ঘরে পাঠালো কেন?
-- "কি ভাবছিলে দাদাবাবু? মনে মনে বিড়বিড় করছিলে?"
রজত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, "কই, কিছু না তো?"
একটু কাছে এসে রজতের একেবারে সামনেই বসে পড়লো দোলন। বললো, "বলো না তুমি আমার কথা ভাবছিলে? আমাকে এখান থেকে ভাগিয়ে দেবে, সেটা ঠিক হবে না, সেটাই মনে মনে বলছিলে?"
রীতিমতন গা জ্বলে যাচ্ছে রজতের। দোলন একেবারে যেচে গায়ে পড়তে চাইছে। লজ্জ্বা শরমের বালাই নেই। হঠাৎই এমন ভাবে এগিয়ে আসছে রজতের দিকে যেন এখুনি কিছু একটা করে বসবে মেয়েটা। হলও তাই। রজত দেখলো দোলন ওর বুকের আঁচলটা সরিয়ে দিয়েছে। মধ্যেখানের খাঁজ উন্মুক্ত। একেবারে বেহায়ার মতন
আবার ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিয়েছে রজতের দিকে। যেন সিরিজার মতই জোয়ার ভাসা নদীর উথাল পাতাল ঘন শরীরটাকে নিয়ে এখুনি আছড়ে পড়বে রজতের বুকে।
একেবারে চক্ষু চড়ক গাছ। রজত রীতিমতন বিরক্ত হয়ে বললো, "কি হচ্ছেটা কি দোলন? যাও দূরে গিয়ে বসো। একি? এটা কি হচ্ছে?"
-- "যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে। সিরিজাই আমাকে অনুমতিটা দিয়েছে তোমার ঠোঁটে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তুমি যদি না খাও, আমিই তোমাকে চুমু খেতে পারি।"
অযথা বাঘটাকে খ্যাপানোর চেষ্টা করছে দোলন। এই বাঘটা এখন শুধু সিরিজার কাছেই পোষ মেনেছে। যাকে ছাড়া ও কারুর কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে না, অথচ সিরিজার নাম দোলনের মুখে শুনে বেশ অবাক হয়ে গেল রজত। কি বলছে কি মেয়েটা? সিরিজার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি? দোলনকে সিরিজা বলেছে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে। এর মানে?
বেশ ক্ষেপে গিয়ে বললো, "তোমার কোন লজ্জা নেই দোলন? এটা কি অসভ্যতামি হচ্ছে?"
লজ্জা নারীর ভূষণ। দোলনের সেই লজ্জা একেবারেই নেই। রজতের বুকের ওপর আছড়ে পড়ে, দোলন এবার ওর দুই স্তনের ছোঁয়া দিল রজতের শরীরে। রজতকে প্রবল ভাবে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দোলন ওর ঠোঁট দুটো নামিয়ে আনল রজতের মুখের ওপরে। প্রবল আশ্লেষে চুম্বনের উত্তাপ দিয়ে একবার.. দুবার.. তিনবার, চুষতে লাগলো রজতের দুই ঠোঁট। রজতের বুকের ওপর তখন খোঁচা মারছে দোলনের দুই স্তন। রজত ঠোঁট সরাবার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ঐভাবে গাঢ় চুমু খেয়েও দোলনের যেন মন ভরছে না। একেবারে আক্রমণাত্মক চুমু, সেই সাথে রজত পড়েছে এক কুলকিনারাহীন নদীতে। ঘুর্নীস্রোতে ভাসছে, নাকানি চোবানি খেয়ে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। রজতের সঙ্গে গাঢ় চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে দোলনের তখন শরীরে অনন্ত সুখ। রীতিমতন দাপাচ্ছে ও রজতের ঠোঁটে, চুষতে চুষতে ফুলিয়ে দিল ও রজতের ঠোঁট। সিরিজার চেয়ে কোন অংশে কম যায় না। রজতের কানের পাশে দুহাত রেখে ঠোঁটদুটোকে রজতের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ রেখে দুচোখ বুজে ফেললো দোলন। যেন অনেক দিনের না পাওয়া কোন তৃপ্তিকে মনের সুখে উপভোগ করছে দোলন।
রজত বসেছিল বিছানার ওপরে। পাশে রাখা মোবাইলটা হঠাৎ বাজতে শুরু করেছে। চোখ ঘুরিয়ে দেখলো ওটা দিবাকরের ফোন। বিকেলে তো আসার কথা দিবাকরের। তাহলে হঠাৎ ফোন করেছে কেন এখন?
রজত ফোনটা ধরেই বললো, "হ্যালো। বলো, কখন আসছো তাহলে?"
ও প্রান্ত থেকে দিবাকর বললো, "আমি আসছি না আজকে।"
রজত অবাক হয়ে বললো, "সেকী? কেন?"
- "আমার পেট খারাপ হয়েছে। বারে বারে বাথরুমে যেতে হচ্ছে। ভীষন অস্বস্তি। মনে হচ্ছে যেতে পারবো না।"
একটু বিরক্ত হলো রজত। বললো, "ওফঃ পেট খারাপটা তোমার আজকেই হল। আর সময় পেল না। এত দরকারী কথা রয়েছে, মেয়েটাকে তোমার ওখানে পাঠাব বলে ঠিক করলাম। আর তুমি সব মাটি করে দিলে।"
দিবাকর বললো, "কি করবো? কাল রাত্রি থেকেই গন্ডগোলটা হয়েছে। চুপচাপ বসে থাকতেও পারছি না। ওষুধ তো খেয়েছি। দেখি শরীরটা একটু ভালো থাকলে যাবো।"
-- "বুঝেছি, তার মানে তুমি আর আসছ না।"
একটু রাগ দেখিয়েই দিবাকরকে ও বললো, "ওফ মাঝে মাঝে তোমার যে কি হয়?"
সিরিজা এই মাত্র ঢুকেছে ঘরে। বেশ চিন্তিত মুখ। রজত ওকে বললো, "দিবাকর আর আসছে না আজকে। ওর পেট খারাপ হয়েছে।"
সিরিজা রজতের দিকে ভুরু কূচকে তাকাল। রজতকে বললো, "এলেই বা কি হত? দোলন তো যাবে না ঐ বাড়ীতে। এসেও কোন লাভ নেই।"
রজত বেশ রাগান্বিত হয়ে বললো, "যাবে না মানে? ও কি এখানেই চিরকাল থাকবে নাকি? যত সব ন্যাকামি। বেয়াদপিপনার একটা তো শেষ আছে। আর কত সহ্য করা যায়? সিরিজা তুমিই কিছু একটা করো না। আমার আর ভালো লাগছে না।"
রজতের ঠোঁটের ওপর হাত রেখে সিরিজা ওকে চুপ করতে বললো, রজতকে ইশারা করে বললো, "আস্তে। ও শুনতে পাবে। তুমি অধৈর্য হয়ো না। আমি দুপুরে খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে ওকে মানানোর চেষ্টা করছি। তুমি বেশি জেদ দেখালেই ও বিগড়ে বসবে। তখন আর নড়তেই চাইবে না এখান থেকে। সব চেষ্টা মাটি হয়ে যাবে।"
রজত কিছু বলার আগেই সিরিজা বললো, "দেখছো না হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরছে এখন। আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্কটা ওর সহ্য হচ্ছে না এখন। কথায় কথায় ঠেস মারছে। আমাকেও ও বলতে ছাড়েনি।"
রজত বিরক্তির সঙ্গেই সিরিজাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কেন কিছু বলছিল তোমাকে?"
সিরিজা বললো, "সেই থেকে এখানে আসার পর থেকেই তো বলছে। মাঝে মাঝে এমন হাবভাব দেখাচ্ছে, যেন আমার জায়গায় তোমার সাথে ও থাকলেই বোধহয় ভালো হতো। কিচ্ছু বিশ্বাস নেই। দোলনকে এখন চটালে চলবে না। ও সব জানে। আমাদের ক্ষতি করে দিলে মুশকিল।"
রজত বুঝতে পারছিল তুরুপের তাসটা এখন দোলনের হাতেই ধরা আছে। সিরিজার কথাই ঠিক। ক্রোধের বশে রজতের বউকেও লাগিয়ে দিতে পারে সিরিজা আর ওর সম্পর্কের কথা বলে। ওদিকে মাতাল স্বামীটাকেও যদি পথ দেখিয়ে এ বাড়ীতে নিয়ে আসে তাহলে তুমুল কান্ড বেঁধে যাবে। একদিকে সিরিজার পুরোন সমস্যা আর একদিকে রজতের স্ত্রী কে নিয়েও চরম ভোগান্তি। মাঝখানে দাঁড়িয়ে দোলন। ঠিক যেন বোড়ের চালটা চেলেছে যথা সময়ে।
দিবাকরও ডুবিয়ে দিল। এখন দোলনকে সিরিজা কিভাবে ম্যানেজ করবে সেটাই দেখার।
রজতকে একটু সতর্ক করে সিরিজা বললো, "আর ওভাবে আমাকে চুমু খেতে যেও না ওর সামনে। ও সহ্য করতে পারছে না এসব।"
যত বিপত্তি চুমু খাওয়াকে ঘিরেই। বেশি সাহসি হতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনল নিজেই। এখন এর ফল ওকে ভোগ করতে হবে। জ্বালা হয়েছে সিরিজারও। বেচারী সেই থেকে যে ঝামেলা সহ্য করে যাচ্ছে, তার জন্য কোন বিরক্তি নেই ওর মুখেও। অনবদ্য সুখের শরীরটা নির্দিধায় তুলে দিয়েছিল রজতের হাতে, এর এখন দেখো, চেনাজানা লোকগুলোই এমন ভাবে এসে ঘাড়ে ভর করছে, যেন এখানে সিরিজাকে নিয়ে টেকাটাই দায় হয়ে পড়েছে। কবে যে এগুলো ঘাড় থেকে নামবে কে জানে? আনন্দটাই মাটি হয়ে গেছে।
বিরক্তির চোটে ভর্তি সিগারেটের প্যাকেটটা তুলে আছাড় মারলো রজত মেঝেতে। মুখে বললো, "দূর আর ভালো লাগে না সিরিজা। চলো তো আমরা কোথাও পালিয়ে যাই।"
সিরিজা হেসে বললো, "পালিয়ে যাবে? কোথায়?"
-- "যেখানে কেউ আমাদের নাগাল পাবে না। শুধু তুমি আর আমি, মাঝখানে আর কেউ নেই। এ বাড়ীতে থেকে তুমি আর আমি সুখ করবো, তা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে সিরিজা। আমি চাই মজা ষোলআনা। তোমার এই শরীরটা থাকবে আমার হাতের নাগালে বিনা ঝামেলায়। তবেই তো স্বস্তি। তা না কিনা যত উটকো ঝামেলা পরপর।"
সিরিজা অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো, "কিন্তু তোমার এই ফ্ল্যাটটার?"
-- "নিকুচি করেছে ফ্ল্যাটের। এটাতো আমার কেনা ফ্ল্যাট নয়। ভাড়ায় রয়েছি। মালিকও থাকে না এখানে। তালা লাগিয়ে তোমাকে নিয়ে চলে যাবো। কেউ টেরও পাবে না। তারপর মালিককে জানিয়ে দেব, আমি অন্য জায়গায় ফ্ল্যাট নিয়ে নিয়েছি। তাহলেও হল।"
সিরিজা কৌতূহল মুখ নিয়ে বললো, "তুমি সত্যি বলছো?"
রজত বললো, "সত্যিই তো বলছি। চলো যাবে তুমি? কালকেই রওনা দেব আমরা।"
- "কিন্তু দিবাকরদার কি হবে?"
-- "কেন দিবাকরের আবার কি হল?"
- "ঐ যে রেশমি?"
-- "ওফঃ আবার রেশমি? আর পারি না। আমি চাইছি এসব ঝামেলা ঝঞ্জাট এড়াতে। আর তুমি কিনা পড়ে রয়েছ ঐ রেশমি কে নিয়ে। অত পরের উপকার করার মত এখন সময় নেই। নিজেদের সুখটা আগে দেখবো? না পরের কথা আগে চিন্তা করবো।"
সিরিজা কিছুক্ষণ ভেবে বললো, "সবই তো বুঝলাম। কিন্তু দোলনকে না ভাগিয়ে আমাদের তো কিছু করার উপায় নেই।"
রজত সিরিজার ঘাড়ে দোলনের ব্যাপারটা ছেড়ে দিয়ে বললো, "ঐ বদ ছুঁড়ীটাকে তুমি সামলাও। এখান থেকে অন্য জায়গায় যাবার ব্যাপারটা আমি সামলাচ্ছি।"
সিরিজাকে নিজেই ঝামেলা ঘাড়ে নিতে বলে আবার একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন সিগারেটটা টানতে লাগলো রজত। দোলনকে নিয়ে ও নিজেও চিন্তা করছে। শেষ পর্যন্ত সিরিজা যদি ওকে পটাতে না পারে, তাহলে দোলনকে নিয়ে রজত কি বা করতে পারে? মেয়েটার সাথে মিছি মিছি একটা মন দেওয়া নেওয়ার অভিনয় করা যেতে পারে। অথবা দোলনের সাথে শারীরিক মিলনে আবদ্ধ হওয়ার আগে, শর্ত আরোপ করতে পারে দোলনকে। ঠিক আছে সিরিজার জন্য তোমার যখন এত হিংসে হচ্ছে, আমি রাজী আছি তোমার সঙ্গে ভালোবাসাবাসির খেলা খেলতে। কিন্তু সেটা কেবল একদিনের জন্যই। তুমি তোমার সাধ পূরণ করে নাও। তারপরেই কিন্তু তোমাকে ছেড়ে চলে যেতে হবে আমাদের এ বাড়ী থেকে। আর কোনদিনই এ পথ তুমি মাড়াবে না। সিরিজাকে চিরতরে পাওয়ার জন্য একদিনের এই স্যাক্রিফাইস করতে আমি রাজী হলাম। জীবনের বাকী যেকটা দিন আছে, তার থেকে কেবল একদিনই তোমার জন্য আমি তোমাকে দিতে পারি। বাকী জীবনে সিরিজাই আমার মন প্রান জুড়ে থাকবে সবসময়। ওখানে তোমাকে আমি কোনদিনই বসাতে পারবো না।
সিরিজা রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "কি ভাবছো?"
রজত বললো, "কিচ্ছু না। শুধু ওপরওয়ালাকে ডাকছি, তিনি যদি দয়ালু হয়ে এই ঝামেলাটা কোনমতে মিটিয়ে দেন,তাহলে তোমাকে নিয়ে আমি বাকী জীবনটা নিশ্চিন্তে কাটাতে পারি।"
রান্নাঘরে দোলন একা রয়েছে। কখন আবার হূট করে এই ঘরে চলে আসতে পারে। সিরিজা বললো, "আমি যাই। দেখি ও কড়াইতে খুন্তী নাড়ছে কিনা? এ ঘরে বেশিক্ষণ থাকলে ওর আবার হিংসে হবে।"
সিরিজা রজতের জীবনে আসার আগে অবধি রজত ছিল একরকম। আর সিরিজা আসার পরে রজত হয়ে গেল অন্যরকম। এক নারীতে রজতের মন কোনদিনই টেকেনি। বহু নারীতে আসক্তি। একাধিক নারীর সাথে মিলন, শরীরি সুখে ভেসে যাওয়া এসব অহরহ চলছিলই। কাউকে বেশিদিনের জন্য মনে ধরত না রজতের। মেয়েছেলে যেন শুধু এক রাত্তিরেরই খোরাক, এই নিয়ে ওর কামুক জীবন অতিবাহিত হচ্ছিলো। রীতা রজতকে বিয়ে করে রজতের স্বভাবের জন্য অতীষ্ঠ হয়ে ওর সঙ্গ ছেড়েছে। ভেবেছিল রজত কোনদিনই শুধরোবে না। সুতরাং ওর সাথে ঘর করা বৃথা। বউ ছেড়ে চলে যাবার পরই ও সিরিজাকে পেয়েছে। শরীরে যার এত ঐশ্বর্য ভান্ডারে ভর্তি তাকে ছেড়ে অন্য নারীর প্রতি আবার আসক্তি? শুধু রজত কেন, পৃথিবীর কোন পুরুষই এই মুর্খামি করবে না। সিরিজার সঙ্গে সেক্সুয়াল লাইফে মাতোয়ারা হবার পর থেকে ওর আর কোন চাহিদা নেই জীবনে। বাকী জীবনটা এখন শুধু সিরিজা আর সিরিজাই।
সিরিজার উদ্ধত নগ্ন স্বাস্থ্য, রজতের খোলা বুকে মাথা রেখে ও যখন শুয়ে থাকে, রজত মনে মনে চিন্তা করে বউ নেই বলেই এখন কত সুখ। বউ থাকলে কি সিরিজার সাথে মাখামাখিটা করতে পারত? রাগে দূঃখে বউ তখন ক্ষোভে ফেটে পড়তো। যে সুখটা ও বউ এর অনুপস্থিতিতে সিরিজার সাথে করতে পারছে। সেটা সিরিজার সামনেই দোলনের সাথে করবে কি করে? হলেই বা একরাত্রিরের শর্ত। সিরিজা এক ঘরে, দোলন ও সেই ঘরে। চোখের সামনে সেই শর্ত পালন করা কি সম্ভব? সিরিজার চোখে ও তো খারাপ হয়ে যেতে পারে? যাকে পাওয়ার জন্য এমন কান্ড ঘটালো, সেই কিনা চলে গেল ওর জীবন থেকে। তারপর বাকী জীবনটা ও শুধু দোলনকে নিয়ে? অসম্ভব। কিছুতেই সম্ভব হবে না সেটা।
রজত মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলো খামচে ধরেছে। যেন মনে হবে নিজেরই চুল ছিঁড়ছে কপালের দোষে। শেষ পর্যন্ত এমন একটা দূঃসাহসিক ঝুকি নেওয়াটা কিছুতেই ঠিক হবে না। সিরিজা যদি ভুল বুঝে ওকে ছেড়ে চলে যায়? ওর এমন চোখ ধাধানো শরীর। রজতের মত আর একটা মেয়ে পাগল লোককে অনায়াসেই জুটিয়ে নিতে পারে সিরিজা। তখন আফসোসের আর শেষ থাকবে না। সুখের বাতি নিভে যাবে চিরকালের মতন। ঐ হতচ্ছাড়া বদমায়েশ মেয়েটাকে নিয়েই কাটাবে নাকি তখন বাকী জীবন? রজত কিছুতেই তা পারবে না। মরে যাবে তবু পারবে না। তার চেয়ে সিরিজার ওপরই ছেড়ে দেওয়া ঠিক। ও যা করবে, সেটা কখনই মন্দ হবে না।
যেন একটা বিপদ থেকে বেঁচে গেল রজত। মাথা খারাপ হলে লোকে উল্টোপাল্টা ভাবতে শুরু করে, ওরও তাই এমন অবস্থা হয়েছিল একটু আগে। নিজের আপন মনেই বিড় বিড় করে বলতে লাগলো, "নাহ, এটা কখনই ঠিক হবে না। কিছুতেই ঠিক হবে না।"
হঠাৎই সিরিজার বদলে এবার দোলন ঢুকল শোবার ঘরে। রজতের সামনে এসে বললো, "কি ঠিক হবে না দাদাবাবু? কি ঠিক হবে না?"
রজত রীতিমতন চমকে গেছে দোলনের হঠাৎ এই আগমন দেখে। ওকে বললো, "তুমি?"
দোলন ন্যাকামো করে বললো, "হ্যাঁ আমিই। কি হয়েছে বলো? সিরিজাই তো আমাকে পাঠালো তোমার ঘরে।"
- "সিরিজা পাঠালো?"
-- হ্যাঁ।"
- "মানে?"
-- "বললো, দাদাবাবু একা ঘরে রয়েছে। তোর কথা জিজ্ঞাসা করছিল। যা একবার দেখা করে আয়।"
রজত মনে মনে ভাবল, সিরিজার কি ভীমরতি হয়েছে? নিজে না এসে দোলনকে পাঠিয়েছে। আমি আবার কি জিজ্ঞাসা করবো? একে আবার এ ঘরে পাঠালো কেন?
-- "কি ভাবছিলে দাদাবাবু? মনে মনে বিড়বিড় করছিলে?"
রজত নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, "কই, কিছু না তো?"
একটু কাছে এসে রজতের একেবারে সামনেই বসে পড়লো দোলন। বললো, "বলো না তুমি আমার কথা ভাবছিলে? আমাকে এখান থেকে ভাগিয়ে দেবে, সেটা ঠিক হবে না, সেটাই মনে মনে বলছিলে?"
রীতিমতন গা জ্বলে যাচ্ছে রজতের। দোলন একেবারে যেচে গায়ে পড়তে চাইছে। লজ্জ্বা শরমের বালাই নেই। হঠাৎই এমন ভাবে এগিয়ে আসছে রজতের দিকে যেন এখুনি কিছু একটা করে বসবে মেয়েটা। হলও তাই। রজত দেখলো দোলন ওর বুকের আঁচলটা সরিয়ে দিয়েছে। মধ্যেখানের খাঁজ উন্মুক্ত। একেবারে বেহায়ার মতন
আবার ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দিয়েছে রজতের দিকে। যেন সিরিজার মতই জোয়ার ভাসা নদীর উথাল পাতাল ঘন শরীরটাকে নিয়ে এখুনি আছড়ে পড়বে রজতের বুকে।
একেবারে চক্ষু চড়ক গাছ। রজত রীতিমতন বিরক্ত হয়ে বললো, "কি হচ্ছেটা কি দোলন? যাও দূরে গিয়ে বসো। একি? এটা কি হচ্ছে?"
-- "যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে। সিরিজাই আমাকে অনুমতিটা দিয়েছে তোমার ঠোঁটে চুমুটা খাওয়ার জন্য। তুমি যদি না খাও, আমিই তোমাকে চুমু খেতে পারি।"
অযথা বাঘটাকে খ্যাপানোর চেষ্টা করছে দোলন। এই বাঘটা এখন শুধু সিরিজার কাছেই পোষ মেনেছে। যাকে ছাড়া ও কারুর কাছে বশ্যতা স্বীকার করবে না, অথচ সিরিজার নাম দোলনের মুখে শুনে বেশ অবাক হয়ে গেল রজত। কি বলছে কি মেয়েটা? সিরিজার কি মাথা খারাপ হয়ে গেল নাকি? দোলনকে সিরিজা বলেছে আমার ঠোঁটে চুমু খেতে। এর মানে?
বেশ ক্ষেপে গিয়ে বললো, "তোমার কোন লজ্জা নেই দোলন? এটা কি অসভ্যতামি হচ্ছে?"
লজ্জা নারীর ভূষণ। দোলনের সেই লজ্জা একেবারেই নেই। রজতের বুকের ওপর আছড়ে পড়ে, দোলন এবার ওর দুই স্তনের ছোঁয়া দিল রজতের শরীরে। রজতকে প্রবল ভাবে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে দোলন ওর ঠোঁট দুটো নামিয়ে আনল রজতের মুখের ওপরে। প্রবল আশ্লেষে চুম্বনের উত্তাপ দিয়ে একবার.. দুবার.. তিনবার, চুষতে লাগলো রজতের দুই ঠোঁট। রজতের বুকের ওপর তখন খোঁচা মারছে দোলনের দুই স্তন। রজত ঠোঁট সরাবার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ঐভাবে গাঢ় চুমু খেয়েও দোলনের যেন মন ভরছে না। একেবারে আক্রমণাত্মক চুমু, সেই সাথে রজত পড়েছে এক কুলকিনারাহীন নদীতে। ঘুর্নীস্রোতে ভাসছে, নাকানি চোবানি খেয়ে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে। রজতের সঙ্গে গাঢ় চুম্বনে আবদ্ধ হয়ে দোলনের তখন শরীরে অনন্ত সুখ। রীতিমতন দাপাচ্ছে ও রজতের ঠোঁটে, চুষতে চুষতে ফুলিয়ে দিল ও রজতের ঠোঁট। সিরিজার চেয়ে কোন অংশে কম যায় না। রজতের কানের পাশে দুহাত রেখে ঠোঁটদুটোকে রজতের ঠোঁটের মধ্যে আবদ্ধ রেখে দুচোখ বুজে ফেললো দোলন। যেন অনেক দিনের না পাওয়া কোন তৃপ্তিকে মনের সুখে উপভোগ করছে দোলন।