What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সিরিজা - একটি উপন্যাস (2 Viewers)

।। চল্লিশ ।।

রজত মনে হয় স্বপ্নেও ভাবেনি ওর বানানো কথাগুলো সিরিজা আর দিবাকর একেবারে অক্ষরে অক্ষরে ফলিয়ে ছাড়বে। স্নান সেরে তৈরী হবার জন্য বাথরুমে ঢুকতে যাচ্ছিলো দিবাকর। সিরিজা এগিয়ে এসে ওর হাতে গামছাটা দিল। দিবাকরের মনে হচ্ছিল, শুধু গামছাটা হাতে দিচ্ছে সিরিজা, যদি ওর ভিজে গা টাও একটু কোমল হাতের স্পর্শ দিয়ে মুছিয়ে দিত। বাথরুমের মধ্যে সিরিজাকে নিয়ে স্নান করতে করতেই একটু জলকেলির আনন্দে মেতে উঠতো। একা একা বাথরুমে ঢুকবে? সিরিজাকে বলতেও পারছে না, কিন্তু বুক জুড়ে আশায় বেঁধে রয়েছে।

দিবাকর বললো, "তোমার তো স্নান হয়ে গেছে না?"

সিরিজা বললো, "হ্যাঁ একটু আগে করলাম যে আমি।"

ওকে বুকে টেনে নিল দিবাকর। জড়িয়ে ঠোঁটে চুমু খেতে লাগলো। বললো, "আর একবার করতে কি আপত্তি আছে? আমার সঙ্গে?"

সিরিজা ভেবে পাচ্ছিল না দিবাকরের কথার কি উত্তর দেবে? ওর ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে বিচিত্র খেলা খেলতে শুরু করে দিয়েছে দিবাকর। কখনো ওর বুকের ওপর হাতটা রাখছে, কখনো ঠোঁট কামড়ে চুমু খাচ্ছে, নিষ্পেষিত করছে সিরিজাকে। যেন জোর করেই সিরিজাকে টেনে নিয়ে যাবে বাথরুমে।

-- "চলো না আর একবার দুজনে মিলে স্নানটা করি?"

দিবাকরের আবদার রাখতে সিরিজা বাথরুমে ঢোকার আগেই শাড়ীটা খুলে ফেললো এবার। উলঙ্গ অবস্থাতেই দাঁড়ালো কামনামদির ভঙ্গীতে। সিরিজার শরীরের নিম্নভাগে চোখটা আসতে আসতে নামিয়ে আনলো দিবাকর। নিতম্বদেশের শোভা প্রদর্শন হচ্ছে এখুনি, বাথরুমে না জানি এরপরে কি হবে?

পুরুষের রক্তচাপ যেন কত সহজে বাড়িয়ে দিতে পারে সিরিজা। এমন একটা শরীর, যেন গোটা শরীরটাই একটা শিল্প। এমন শরীরের কোন বিকল্প নেই।

দিবাকরের মধ্যে শিহরণ জাগিয়ে দিয়ে শরীরি ফোয়ারাটা সিরিজা এতটাই ছোটাতে শুরু করলো, ওর উলঙ্গ শরীর, নগ্ন পাছাটাকে জাপটে ধরলো দিবাকর। নাভিতে চুমু খেতে লাগলো, আস্তে আস্তে নিচে নামতে নামতে একেবারে যৌনদেশে, যোনীমুখে জিভ ঠেকিয়ে বসল দিবাকর।

গোপণ অঙ্গে মুখ রেখে গতকালই শরীরের বাসনা মিটিয়েছে দিবাকর। পুনরায় ওখানে জিভটা ঠেকাতেই ওর যেন মনের কষ্ট দূঃখ নিমেষে আবার দূর হয়ে গেল। আসতে আসতে ওখানে চরকির মতন জিভ ঘোরাতে শুরু করে দিয়েছে দিবাকর। সিরিজা বললো, "তুমি বললে, স্নানে যাবে। আর এখানেই শুরু করেছো?"

-- "স্নানে তো যাবোই সিরিজা, কিন্তু আমার উত্তেজনা যে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজেকে কি করে সামাল দেবো?"

দিবাকর যেন সিরিজাকে ছাড়তে চাইছিল না। ওই অবস্থায় এক প্রকার জোর করেই সিরিজার যোনীর ফুটোতে জিভ ঢুকিয়ে দিল দিবাকর। সিরিজার নরম পাছাদুটো দিবাকরের হাতের চাপে আন্দোলিত হচ্ছে। গহ্বরের মধ্যে জিভটা ঢুকতে ঢুকতে এতোটাই ভেতরে ঢুকে গেল, সিরিজা অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো, "তোমার যেটা যেটা পছন্দ ওটা তোমাকে আমি স্নান সেরে ওঠার পর দেবো। চলো, এখন তো বাথরুমে চলো।"

দিবাকরের এক হাতে গামছা, আর এক বাহুতে সিরিজাকে জড়িয়ে। স্নানটান সব মাথায় উঠে যাচ্ছিলো নগ্ন সিরিজাকে পেয়ে। মাথায় এখন কামনা বাসনা ভর করেছে রজতের মতন। সিরিজার নগ্ন শরীরটাকে দু’হাতে তুলে নিয়ে দিবাকর বললো, "তোমাকে এইভাবে আমি বাথরুমে নিয়ে যাবো। আমার আদর খেতে খেতে যাবে তুমি।"

সিরিজা বললো, "কেন এভাবে তো তুমি আগেও দেখেছো আমাকে? আমি যেই শাড়ীটা ছেড়ে ফেললাম, অমনি আমাকে আদর করতে ইচ্ছে করছে?"

দিবাকর বললো, "তুমি নিজেকে কোনদিন নগ্ন অবস্থায় আয়নায় দেখেছো? এই শরীরটা কিভাবে অন্যের ঝড় তুলে দিতে পারে, অনুভব করে দেখেছো? তোমাকে কি দিয়ে বানিয়েছে ভগবান? এত যৌবনময় শরীর। শুধু খেলতে ইচ্ছে করে।"

বাথরুমের দরজাটা সরু। সিরিজা বললো, "তুমি আমাকে নামাও। নয়তো ভেতরে ঢুকতে পারবে না।"

দিবাকর বললো, "আজ তো এই বাড়ীতেই আমার শেষ দিন। তোমাকে নিয়ে এবার অন্য কোথাও চলে যাবো। যেখানে নিয়ে তোমায় আমি থাকবো। সব কিছু মনের মতন হবে। বাড়ী, ঘর, বাথরুম। আমার এই বাড়ীটা কি বাড়ী নাকি?"

বাথরুমে ঢোকার মূহূর্তে সিরিজাকে আবার নামিয়ে মেঝেতে দাঁড় করিয়ে দিল দিবাকর। ক্ষুধার্ত দৃষ্টি দিয়ে সিরিজাকে একনাগাড়ে দেখে যাচ্ছে। নিজের ডানহাতের পাঁচটা আঙুল রাখলো সিরিজার ভারী স্তনের একটার ওপরে। আঙুলগুলোকে প্রথমে একটু ছড়িয়ে দিল। স্তনকে করায়ত্ত্ব নয়। শুধু ওর বুকের ওপর হাত বোলাতে বোলাতে যেন সিরিজার শরীরের উত্তাপটাকে নিতে লাগলো প্রবল ভাবে। সিরিজার সারা বুকে দিবাকরের হাত খেলে বেড়াচ্ছে। হাতের তালুর মৃদু মৃদু চাপ সিরিজার বুকের ওপর পড়ছে। বুকটা মাঝে মাঝে দিবাকরের হাতে ঘসে যাচ্ছে। সিরিজা এবার চোখটা বন্ধ করলো। দিবাকর বুক থেকে হাত সরিয়ে এবার সিরিজার স্তনের ওপর মুখটা রাখলো।

মুখের মধ্যে স্তনের একটা বোঁটা পুরে চুষতে আরম্ভ করলো। কিছুক্ষণ পরে ঠোঁট তুলে আর একটা স্তনের বোঁটাও মুখে পুরে নিল। দাঁত দিয়ে দংশন নয়, আলতো আলতো কামড় দিতে লাগলো সিরিজার বুকের বোঁটায়। অল্প একটু দুধ বেরুলো। অমনি দিবাকরের ঠোঁটে সিরিজার বুকের দুধের চিহ্ন এঁকে গেল।

ঠায় বাথরুমের মুখটায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সিরিজা। দিবাকর মুখ তুললো বোঁটা থেকে। নাভির তুলতুলে জায়গাটায় কিছুক্ষণ জিভ বুলিয়ে আবার জিভটাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল ফাটলের মধ্যে। সিরিজার দুই পায়ের ফাঁকে মুখটা স্থাপন করতেই যাচ্ছিলো, সিরিজা বললো, "কি শুরু করলে বলো তো? স্নানটা তো সেরে নাও। আমাদের বেরোতে হবে না? কোথায় যাবে কিছু তো একটা ভাবা দরকার।"

দিবাকরের এখন কোন হুঁশ নেই। সিরিজাকে নিয়ে বাথরুমে অবশ্য ঢুকলো। কিন্তু শাওয়ার খুলেই সিরিজার নগ্ন বুকে আবার মুখ দিয়ে বসল। ভিজে যাচ্ছে সিরিজার স্তন। দিবাকরের জিভটা ওর সারা বুকটায় যেন পরিক্রমা করছে। সিক্ত ভারী বুকে একবার করে জিভের ছোঁয়া লাগছে, আর দিবাকরের সারা শরীরে আনন্দের কম্পন হচ্ছে।

ঝর্ণার জলে দুজনের মাথা ভিজে গেল। ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দুজনে একাকার করলো। সিরিজার সারা শরীরটাই তখন মিষ্টি মধুর ভেজা অঙ্গ। দিবাকর যেখানেই জিভ ছোঁয়াচ্ছিল, সেখানেই সিক্ততা প্রাণভরে পান করছিল। গলা থেকে কাঁধ, পিঠ। কোমর আবার পেট, পেট থেকে উপরে উঠতে উঠতে বুক। সব শেষে সিরিজার ঠোঁটের সাথে জিভ মিলিয়ে সেই পরিক্রমা সমাপ্ত হচ্ছে।

নগ্ন হয়ে সিরিজাকে জড়িয়ে ধরে চান করছে দিবাকর। ক্রমাগত চুমু দিয়ে আর ভিজে শরীরটাকে লেহন করতে করতে নিজের উত্তেজনাকে ধরে রাখতে পারছে না দিবাকর। দেখলো লিঙ্গটা বেশ ফুলে উঠেছে। ওটা আপনা আপনিই ঠেকে যাচ্ছে, সিরিজার দুই উরুর মাঝখানটায়। ঠিক সেই মূহূর্তে লিঙ্গটাকে একবার হাতে নিয়ে আবার ছেড়ে দিল সিরিজা।

স্নান করতে করতেই দিবাকর বললো, "ছাড়লে কেন? ওটাকে তুমি হাতে ধরে রাখো সিরিজা। ভীষন নড়াচড়া শুরু করেছে। তোমার হাতেই ওটা ঠিক থাকবে।"

সিরিজা এবার এক হাত দিয়ে দিবাকরের লিঙ্গটাকে ধরলো। দিবাকর রসিয়ে রসিয়ে সিরিজাকে তখন চুমু খেতে লাগলো। ক্রমশ দিবাকরের ঠোঁট নেমে এল সিরিজার বুকে। ঠিক যখুনি ওর স্তনটাকে আবার মুখে পুরতে যাবে, সিরিজা মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসে দিবাকরের শক্ত লিঙ্গটাকে মুখে নিয়ে নিল গোগ্রাসে।

কেউ পারবে না সিরিজার মতন। দিবাকর দেখছিলো ভিজে চুল সিরিজার কাঁধের দুই পাশে ছড়িয়ে পড়ছে। উদ্ধত লিঙ্গ মুখের ভেতরে পুরে সিরিজা এক যৌন বিশারদ নারীর মতন চুষছে। এত স্বচ্ছন্দে চুষতে শুরু করেছে সিরিজা, দিবাকরের সারা শরীরে বিদ্যুত খেলে যাচ্ছে। মরীয়া হয়ে দিবাকরও নিজের পুরুষাঙ্গটা সঙ্গমের মুদ্রায় একবার ঠেলতে লাগলো, একবার সরাতে লাগলো। জিভ ঠেকিয়ে, লিঙ্গ চুষে দিয়ে সিরিজা তখন দিবাকরকে স্বর্গসুখ দিচ্ছে।

মাথাটা পুরো ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে চুষতে লাগলো সিরিজা। থলথলে বুক দুটো ক্রমশই কেঁপে কেঁপে উঠছে। শ্বাস প্রশ্বাস বেড়ে গেছে দিবাকরের। সিরিজা চোষার দাপটটাও এবার বাড়তে লাগলো।

দিবাকর ভাবছিল, কে কাকে নিয়ে এবার খেলবে? সিরিজাই ওকে নিয়ে এবার খেলা শুরু করে দিয়েছে। মারাত্মক চোষণ ক্ষমতা সিরিজার। দিবাকর ওর এই রূপ দেখে পুরো মোহিত হয়ে যাচ্ছে।

জিভ দিয়ে দিবাকরের লিঙ্গতে দাগ কাটা শুরু করলো সিরিজা। উপর নিচ করতে করতে লিঙ্গটাকে পুরো খেলাতে লাগলো। মুখ দিয়ে একটা পুচুক করে শব্দ মতন করলো। দিবাকর দেখলো সিরিজা আবার ওর লিঙ্গ মুখে পুরে নিয়েছে। লিঙ্গ এবার সিরিজার গলা অবধি পুরো ঠেকে গেছে।

- "সিরিজা আমি....."

চুষতে চুষতে মুখ তুলে দিবাকরের মুখের দিকে তাকালো সিরিজা।

দিবাকর বললো, "তুমি কি জাদু জানো সিরিজা? এভাবে পুরোটাকে গলা অবধি নিয়ে ফেললে, কি করে পারলে এটা?"

সিরিজা দিবাকরের মুখের দিকে তাকিয়ে এবার একটু হাসলো। পুনরায় লিঙ্গটাকে চালান করে দিল মুখের ভেতরে। প্রবল বেগে চুষতে লাগলো। যাকে বলে পারদর্শীতার মতন লিঙ্গ চোষন। তীব্র উত্তেজনায় দিবাকর এবার চোখটা বুজে ফেললো। অনুভব করলো, সিরিজাকে নিয়ে ও যেন প্রেম আর যৌনতার কল্পরাজ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে। যখন তখন যৌন উদ্যোগ নিয়ে সিরিজা ওকে শতকরা একশ ভাগ খুশী করছে। অতল যৌনসাগরে তলিয়ে যাচ্ছে দিবাকর। চোখ বুজে ও দেখছে সিরিজাকে ও সম্ভোগ করছে গতিদানের চরম আনন্দ পুলকিত মূহূর্তে, সিরিজা ওর ঠোঁটে চুমু খাচ্ছে আর বলছে, "ভয় কি? এখন তো আমরা রজতকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে এসেছি।"

চোখ খুলতেই চাইছিল না দিবাকর। ভাবছিল, চোখ বুজেই আমি এই চোষার তীব্রটাকে অনুভব করি। লিঙ্গটাকে পুরোপুরি ছেড়ে দিই, সিরিজার দখলে। এটাকে নিয়ে ও যা খুশি তাই করুক। লিঙ্গ চুষুক, বল দুটোকে কামড়াক। লিঙ্গের ওপর যে ভয়ানক চোষন খেলাটা চলছে, আরো কিছুক্ষণ সময় নিয়ে এটা চলুক। পুরুষাঙ্গ যত দেরীতে অবনমিত হবে ততই দিবাকরের কাছে তা ভালো। যেন অসম্ভব ভালো লাগাটাকে ও কিছুতেই অগ্রাহ্য করতে পারছিল না।

মিনিট দশেক দিবাকরের লিঙ্গকে একনাগাড়ে চুষলো সিরিজা। যখন ও আবার উপরে উঠে এল। তখনো দিবাকর চোখ বুজে। যেন কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল এতক্ষণ। বাথরুমের মধ্যেই সিরিজা দিবাকরের লিঙ্গটাকে হাতে নিল। দিবাকরের কোমরের ওপর পা তুলে লিঙ্গটাকে স্থাপন করতে লাগলো নিজের যৌন গহ্বরে। দিবাকর সেই সময় সিরিজার কোমরটা দুহাতে জড়িয়ে রেখেছে, ওর ঠোঁটে চুমু খাচ্ছে। আর সিরিজা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই দিবাকরকে রতিসুখ দেবার।

ঠিক যেই মূহূর্তে লিঙ্গটা পচাৎ করে ভেতরে ঢুকে গেল। দিবাকরের সারা শরীরটা যেন ঝনঝন করে বেজে উঠলো। সমস্ত শরীর দিয়ে একটা তরঙ্গ বয়ে যাচ্ছে। দিবাকরের মনে হল, সিরিজাকে যে পাবে, সে পৃথিবীর সব দিক দিয়ে সুখী।

মধুর অঙ্গের মধুর সেক্সের উস্কানি। লিঙ্গটা যোনীর ভেতরে আর্ধেকটা ঢুকে গেছে। সিরিজা এক পায়ে দাঁড়িয়ে আর এক পা দিবাকরের কোমরে তুলে ওর লিঙ্গটা আরো ভেতরে ঢোকাতে সহযোগীতা করছে। মুখে বললো, "আমি তোমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরছি। তুমি এই অবস্থায় আমার ভেতরে তোমার ওটাকে আরো ঠেলা দাও।"

দিবাকরও সিরিজাকে জাপটে ধরে লিঙ্গটাকে ক্রমশ ভেতরের দিকে ঠেলা দিতে লাগলো। শাওয়ারটা একহাতে বন্ধ করে দিল। সিরিজার ঠোঁট চুষতে লাগলো। আর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রতি সঙ্গম করতে লাগলো।

গতিদানের আপ্রাণ চেষ্টা। একটু পরেই সফল হল দিবাকর। লিঙ্গটা সজোরে ভেতরে গিয়ে আঘাত করছে, আর দিবাকরকে জড়িয়ে ধরে গোড়ালির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে সেই আঘাত সহ্য করে যাচ্ছে সিরিজা।

কামনার বহ্নিপ্রবাহ। উপচে পড়া যৌনতা দিয়ে সিরিজা দিবাকরকে সঙ্গমের সুখ দিচ্ছে। ভিজে যৌনাঙ্গে লিঙ্গ ঢোকাতে ঢোকাতে বারবার আছড়ে পড়ছিল দিবাকর। উন্মত্ত দুটো শরীরের মিলনের আনন্দে তোলপাড় হতে লাগলো মূহূর্তটা। ভোগবাসনা অন্তহীন। দিবাকরের মনে হল, কোন মেয়েছেলের মধ্যে সেক্সের এত প্রাচুর্য থাকতে পারে। এটা ওর আগে জানা ছিল না।

-- "ভীষন ভালো লাগছে সিরিজা। এভাবে যে তুমি আমাকে যৌনসুখ দেবে আমি আগে ভাবিনি।"

সিরিজা একটা পা উপরেই শুধু তুলে রেখে মুখ দিয়ে আওয়াজ করলো উহ!

দিবাকর আরো জোরে জোরে সিরিজাকে ঠাপ দিতে লাগলো।

পুষ্ট দুটি বল, দিবাকরের হাতের চাপে পিষ্ট হচ্ছে। টুপ করে আঙুর ফল খাওয়ার মতন সিরিজার একটা স্তনের বোঁটা মুখে পুরে নিল দিবাকর। চুষতে চুষতে কামের জোয়ারে একেবারে গা ভাসিয়ে দিল দিবাকর। একদিকে দ্রুতগতিতে দিবাকরের লিঙ্গ, সিরিজার যোনীফাটলে ঢুকে যাচ্ছে, অন্যদিকে বুক চুষে স্তন অমৃতপান করছে দিবাকর। মনে হল, ওর জীবন বুঝি সার্থক হয়ে গেল এবার।

লাভা যে ভেতরে গড়িয়ে পড়বে, জানাই ছিল। সিরিজার শরীরটাকে ভোগ করতে করতে, স্তনবৃন্তদ্বয় চেটেপুটে খেতে খেতে দিবাকর বীর্যপাত ঘটালো সিরিজার অভ্যন্তরে। তখনো সিরিজা গোড়ালিতে ভর করে পা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। দিবাকর অনুভব করলো বীর্যটা আসতে আসতে ভেতরে গিয়ে পড়ছে। কিন্তু শরীরে স্নান করার পরে যে স্নিগ্ধ ভাবটা থাকে, সেটা এখন আর নেই। সমস্ত শরীরটা ভরে গেছে উষ্ণতায়। এই মূহূর্তে সিরিজাকে ছাড়তে ওরও ইচ্ছে করছে না। কিন্তু ছাড়তে তো হবেই। সিরিজাকে নিয়ে এই মূহূর্তে ওকে চলে যেতে হবে এখান থেকে। অনেক দূরে। না পাওয়া অনেক যৌনতা এবার দিবাকরের জন্য অপেক্ষা করছে। শুধু সিরিজাকে নিয়ে সরে পড়তে হবে। রজত কিছু বুঝে ফেলার আগেই।

দিবাকর বললো, "এবার আমাদের বেরোতে হবে। তাই না সিরিজা? নইলে ও বাড়ী থেকে যদি আবার লোকজন চলে আসে তাহলেই মুশকিল। রজত কি ওদের আদৌ সামলাতে পারলো? ঠিক বুঝতে পারছি না।"

সিরিজা ওর নগ্ন ভিজে শরীরটা তোয়ালে দিয়ে মুছছিল। চোখের আকুতি দৃষ্টি নিয়ে দিবাকরের দিকে তাকিয়ে। রজত কি করবে, তাই নিয়ে ওর কোন ভাবনা নেই। শুধু দিবাকরকে বললো, "আমি জানি, সবাইকে ও বোকা বানালেও একজনকে ও কিছুতেই পারবে না। তোমার বন্ধু রজতকে সে ছাড়বে না।"

দিবাকর বললো, "কে সে?"

সিরিজা বললো, "বুঝতে পারছো না? আমি দোলনের কথা বলছি।"

দিবাকর বললো, "দোলন খুব জেদী মেয়ে। তাই না?"

সিরিজা বললো, "শুধু জেদী নয়। ও একেবারে ভয়ঙ্করী। এমন অভিনয় করবে, রজতের সাথে। তোমার বন্ধু টেরও পাবে না।"

কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো দিবাকর। মুখ তুলে সিরিজাকে বললো, "তুমি বোধহয় এইজন্যই....."

সিরিজা বললো, "আমি দোলনের কাছে হার মেনে গেছি গো। আমি জানি, তোমার বন্ধুর আর কিছু করার নেই। ও ভীষন বদ। প্রথমে ভেবেছিলাম, স্বামীটা ওকে ছেড়ে চলে গেছে। একটা আশ্রয় দরকার। তারপর সুখেনও ওকে ভীষন জ্বালাচ্ছিল মাঝে মাঝে এসে। যেই আমি রাজী হলাম, ও যেন আস্কারা পেয়ে মাথায় চড়ে বসল। আমাকে হিংসা করতে শুরু করলো। সেদিক দিয়ে আমি বলব, তোমার বন্ধু কিন্তু রাজী ছিল না প্রথমে। দোলনকে ও সন্দেহ করেছিল শুরুতে। কিন্তু তারপর ওই জড়িয়ে পড়লো দোলনের জালে। এখন ওখান থেকে কি করে বেরুবে? ভীষন মুশকিল।"

দিবাকর যেন আবারো একটু দোটনায় পড়ে যাচ্ছে সিরিজাকে নিয়ে। ওর দিকে এগিয়ে এল সিরিজা। তোয়ালেটা বুকের ওপর থেকে সরিয়ে দিল। উন্মুক্ত বুকের খাঁজে দিবাকর মাথা রাখবে কি, সিরিজা নিজেই দিবাকরের মুখটা ওখানে চেপে ধরলো। দিবাকরের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললো, "যা হয়েছে ভালোই হয়েছে। অন্তত আমি তো তোমার অনেক কাছে আসতে পারলাম। এই বা কম কি?"

সিরিজার নগ্ন বুকের খাঁজে মুখ ঘষে যাচ্ছে দিবাকর। বেশ কয়েকবার সিরিজার বুকের বোঁটায় চুমু দিয়ে নিজেকে অস্থির করে প্রবল ভাবে নিঃশ্বাস নিতে নিতে দিবাকর বললো, "যাই ঘটে থাক। আমারো এই নিয়ে আর মাথা ব্যাথা নেই। আমি শুধু তোমাকে চাই। আমার বাকী জীবনে শুধু সিরিজাকে পেতে চাই। কে রজত আর কে দোলন। আমি কাউকে আর চিনি না। আমি শুধু জানি কেউ আমাকে সুখ দেবে, আমাকে ভালোবাসবে। আমাকে কষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তি দেবে। সে মেয়ে সিরিজা ছাড়া আর কেউ নয়। যাকে আমি একটু আগে আবার....."

সিরিজা এবার মুখ নিচু করে দিবাকরের ঠোঁটে চুমু খেল। দিবাকর দেখছে কামকলার কত ধরণ জানে সিরিজা। যৌনক্রীড়ায় পারদর্শী ওর মত মেয়ে পাওয়া খুব দুস্কর। ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে কখনো দিবাকরের গালটা কামড়ে ধরছে আলতো ভাবে। কখনো কানের লতিতে জিভ দিয়ে সুড়সুড়ি। অদ্ভূত একটা সুখ অনুভূতি বরফের কণা হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দিবাকরের শরীরে। আর কি কখনো জড়োসড়ো থাকবে ও?

সিরিজার সাথে যৌনসঙ্গমের পর এখন তো এগুলো জলভাত দিবাকরের কাছে। রজত কি দূঃসাহস দেখিয়েছে? এখন তো বুনো উন্মাদনা দিবাকরেরই সারা শরীরে বিরাজ করছে। পারলে আবার সিরিজাকে টেনে নিয়ে যায় ভেতরের ঘরে। সেখানে শুধু উল্লাস, উন্মাদনা আর যৌনতার ঝংকার।

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সিরিজার যৌনফাটলে দুটো আঙুল ঢুকিয়ে দিল দিবাকর। সিরিজা হেসে বললো, "দেখেছো আবার? শুরু করলে তো তুমি? কি করছো?"

সিরিজার যৌনগহ্বরে নিঃসরণ শুরু হয়ে গেছে আবার। যেন একটা সুখী পায়রার মতন দিবাকরের প্রশস্ত বুকে মাথাটা হেলিয়ে দিল সিরিজা। দিবাকর আঙুল দিয়ে ভেতরটা আস্তে আস্তে নাড়াচাড়া শুরু করেছে। দিবাকরের বুকে মাথা রেখে তখন যেন স্বপ্ন দেখছে সিরিজা।

সিরিজার ঠোঁটে টপাটপ কয়েকটা চুমু খেয়ে দিবাকর বললো, "বিশ্বাস করো সিরিজা। তোমার এই আদরের ভঙ্গীমা আমাকে শুধুই উন্মাদ করে দেয়। তোমার এই পুরো শরীরটা প্রাণভরে শুধু দেখি, আর ভাবি, তোমার শরীরের কোন জায়গাটা সবচেয়ে বেশী লোভনীয়। তোমার এই মুখ থেকে শুরু করে ঠোঁট। দুই বুকের উত্তাল ঢেউ। স্তনযুগলের ঢেউ। তোমার নাভী, তোমার কোমর, তোমার পিঠ, তোমার উরু, তোমার পাছা, আর এখানটা?"

আঙুল দিয়ে সিরিজার যোনীর ভেতরে বেশ কিছুটা ঝড় তুলে দিবাকর যেন বোঝাতে চাইল, এখানটা বলতে ও কোন জায়গাটার কথা বলছে।

সিরিজা দিবাকরের বুকে মাথা রেখে চোখ বুজে রয়েছে। দিবাকর বললো, "এবার থেকে আমি কিন্তু মাঝে মাঝেই দস্যু হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ব তোমার বুকের ওপরে। তুমি মেনে নেবে তো?"

সত্যি সিরিজাকে নিয়ে যেভাবে ছেলেখেলা করছিল দিবাকর, ও নিজেও বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। সিরিজা যেন এখন দিবাকরের ইচ্ছের তুলো। ওর স্বপ্নের একতাল কাদা। দিবাকরের ভাবনায় এক বসন্ত বাতাস। চুপটি করে দাঁড়িয়ে রয়েছে সিরিজা। শুধু নিজের শরীরটাকে মেলে ধরে। ওর নগ্ন শরীরটাকে দলামলার এক অসভ্য খেলা খেলতে খেলতে দিবাকর কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে, এক আগ্রাসী পুরুষ আর সঙ্গে তার মোহিনী প্রেমিকা। আদরে আদরে ভাসিয়ে দিচ্ছে। ভেসে যাচ্ছে সিরিজা। একটা শরীর থেকে আর একটা শরীরে ছুটে যাচ্ছে বিদ্যুত চমক। দিবাকর ভাবছে একেই তো বলে জীবন। ভাগ্যিস রজত সিরিজাকে টলাতে পারেনি। নইলে সূর্যোদয়ের প্রতীক্ষায় দিবাকরের বাকী জীবনটা হয়তো কেটে যেত এক হতাশার অন্ধকারে। এ জীবনে সিরিজাকে আর পাওয়াই হত না শেষ পর্যন্ত।

প্রবল উত্তেজনার মধ্যেও সিরিজা আবার দিবাকরকে স্মরণ করালো। - "এই, এবার ছাড়ো। দেরী হয়ে গেলে কিন্তু সব পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে।"

এক নাগাড়ে যোনীর ভেতরে আঙুলের সুখ করে দিবাকর এবার শান্ত হল। মন চাইছে না। তবু সিরিজাকে নিয়ে ওকে বেরোতে হবে। সিরিজার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে দিবাকর বললো, "শিমূলতলায় যাবে তো?"

সিরিজা হাঁ করে তাকালো দিবাকরের দিকে। - "শিমূলতলা?"

-- "হ্যাঁ। তোমাকে যে তখন বলেছিলাম। আমার ওখানে পিসি আছে। পিসির বাড়ীতে গিয়ে থাকবো। চিন্তা কি? তোমাকে সারাদিন ধরে শুধু আদর করবো। আর তুমিও।"

সিরিজা একটু বোকা বোকা হয়ে তাকালো দিবাকরের দিকে। সত্যি ও একটা বোকার মতন কাজ করে ফেলেছে। একটু আমতা আমতা করেই দিবাকরকে বললো, "আমি একটা ভুল করে ফেলেছি।"

দিবাকর একটু অবাক। সিরিজাকে জিজ্ঞাসা করলো, "কি?"

- "আমি রজতকে বলে ফেলেছি এই শিমূলতলার কথা।"

-- "কখন বললে?"

- "ভুল করে বলে ফেলেছি গো। এখন কি হবে তাহলে?"

দিবাকর ভেবে পাচ্ছে না, সিরিজা হঠাৎ গোপণ পরিকল্পনার কথাটা রজতকে ফাঁস করতে গেল কেন? ও তো রজতকে কাটাতেই চাইছে।

-- "কেন বললে তুমি এ কথা?"

- "আসলে আমি বুঝতে পারিনি। তুমি যদি রেশমীর জন্য আবার....."

দিবাকর একটু উত্তক্ত হয়ে গেল এবার। সিরিজাকে বললো, কেন সিরিজা কেন? রেশমীকে নিয়ে আমার আর মাথা ব্যাথা নেই। ওটাতো রজতেরও চাল। রেশমীর কথা বলে আমাকে ধন্দে ফেলতে চায়। কোথায় ছিল রেশমী? এতদিন সে আসেনি কেন? দিবাকরকে একবারও তার মনে পড়েনি। আজ যখন তুমিই ওকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করলে, তখনই ওর টনক নড়লো?

সিরিজা চুপ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। দিবাকর এবার একটু জোর গলায় বললো, "আমি তোমাকে শিমূলতলাতেই নিয়ে যাবো। দেখি রজত ওখানে আসে কিনা? কি হম্বীতম্বী করে ও। আমিও একবার দেখে নিতে চাই।"

সিরিজা দিবাকরের দিকে চেয়ে বললো, "তুমি তাহলে শিমূলতলাতেই যাবে?"

দিবাকর বললো, "অফকোর্স। অমন সুন্দর পিসির দোতলা বাড়ী। আর ওই বাড়ীটা তো আসলেই আমারই পাওনা সম্পত্তি। পিসির কোন ছেলেপুলে নেই। আমি তোমাকে বলেছিলাম না?"

সিরিজার মুখে কোন কথা নেই। শুধু বললো, "হ্যাঁ।"

দিবাকর বললো, "তাহলে আর কি? চলো তাহলে। হাওড়া থেকে ট্রেন ধরলে ৫-৬ ঘন্টায় পৌঁছে যাবো। স্টেশন থেকে অটো করে মিনিট পনেরো মতন লাগবে পিসির বাড়ীতে পৌঁছোতে। দেখবে পিসি কত খাতির আর যত্ন আত্নি করে। তোমাকে দেখলে পিসির মন ভরে যাবে।"

সিরিজা বললো, "পিসি যদি আমার কথা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে? কি বলবে?"

দিবাকর কি বলতেই যাচ্ছিলো। এমন সময় ভেতরের ঘর থেকে বাচ্চাটা চেঁচিয়ে উঠলো। মনে হয় ঘুম ভেঙে গেছে। দিবাকর সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "বলবো তুমি আমার বউ। আর ওই বাচ্চাটা আমাদের ছেলে।"

সিরিজা অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে আছে দিবাকরের দিকে। সত্যি তো বাচ্চাটার কি পরিচয় হবে, নিজে একবারও ভাবেনি সিরিজা। অথচ দিবাকর সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বউ হয়ে যখন ওর সাথে যাচ্ছে। তখন বাচ্চাটার পিতৃপরিচয় দিবাকর ছাড়া আর কেই বা হতে পারে?

আনন্দের চোটে সিরিজা নিজেই এবার চুমু খেলো দিবাকরের ঠোঁটে। চুমু দিয়ে শুধু আবেগ নয়, একেবারে খুশির প্রলেপ লাগিয়ে দিচ্ছিল দিবাকরের ঠোঁটে। পাল্টা চুমু খেয়ে, প্রত্যুত্তর দিয়ে দিবাকর বললো, "কি, খুশি তো এবার?"

সিরিজা বললো, "হ্যাঁ অনেক খুশি।"

ওকে আবার একটা চুমু খেতে যাচ্ছিলো সিরিজা। দিবাকর হেসে বললো, "এবার কিন্তু দেরীটা তুমি করছো সিরিজা। ওখানে পৌঁছোতে দেরী হয়ে গেলে। তখন কিন্তু আমাকে দোষ দিও না।"

সিরিজা এবার নিজেও হেসে দিবাকরের ঠোঁটটাকে মুক্তি দিল।
 
ওদিকে রজতের ফ্ল্যাটে তখন জবুথবু হয়ে বসে আছে দোলন। মুখখানা কাচুমুচু। রজত ওকে লক্ষ্য করছে, কিন্তু চোখে মুখে দরদ দেখানোর কোন লক্ষণ নেই। একপাশে তখন থেকে ঠায় মেরে বসে আছে দেখে রজত বললো, "যা বলার তো বলেই দিলাম। অত চিন্তার কি আছে? নিজের ব্যাপারে তো এবার থেকে তোমাকেই চিন্তা করতে হবে। তাই না। সারাজীবন আমার ঘাড়ের ওপর চেপে বসে থাকবে। তা তো হতে দেওয়া যায় না। তাই নয় কি?"

মুখখানা একটু নিচু করে আফসোস গলায় দোলন বললো, "হ্যাঁ তাতো ঠিক। আমি তো আর সিরিজা নই, যে তুমি আমাকে দয়া করবে!"

রজত বিরক্ত হয়ে বললো, "আবার সেই একই কথা। সিরিজা তো এখন নেই। সে আমার বন্ধুর সাথে ভেগে গেছে। তাহলে আবার একথা আসছে কেন?"

দোলন মুখটা এবার তুলে বললো, "ভেগে গেছে ঠিকই। কিন্তু ও আবার দেখবে, তোমার কাছেই ঠিক ফিরে আসবে। ওকে কিছু বিশ্বাস নেই। তোমাকে যেমন বোকা বানিয়েছে। তোমার বন্ধু ওই দিবাকরদাকেও দেখবে বোকা বানাবে আর কিছু দিন পর।"

রজত মনে মনে বললো, "সিরিজা তো আসছেই। সে বিষয়ে আমি একশভাগ নিশ্চিত। কিন্ত তা বলে তোমার আর কোন সুবিধা হচ্ছে না দোলন ঢোঙ্গী। তুমি আর রি এন্ট্রি পাচ্ছো না এখানে। এই এক সপ্তাহই তোমার জন্য বরাদ্দ। জানি তার মধ্যে আজ আর কাল তুমি আমাকে খুব জালাবে। আবার আমার মাথাটা খাওয়ার চেষ্টা করবে। বলা যায় না উদোম নগ্ন হয়েও আমার মন গলানোর চেষ্টা করবে। কিন্তু আমি আর ওইদিকে পা মাড়াচ্ছি না। যথেষ্ট হয়েছে। আর তোমার ফাঁদে আমি নিজেকে জড়াতে চাই না নেকী। এবার আস্তে আস্তে নিজেকে এখান থেকে গোটানোর তোড়জোড় শুরু করে দাও।"

দোলন বললো, "তুমি কিছু বলছো আমাকে?"

রজত বললো, "কি বলবো আবার? যা বলার তো বলেই দিয়েছি। তা ওইভাবে হাত পা ছড়িয়ে বসে থাকলে চলবে? খাওয়া দাওয়ার কিছু ব্যবস্থা করতে হবে তো। পেটে তো ক্ষিধেয় মোচড় দেওয়া শুরু করেছে।"

দোলন যেন একটা ছুতো পেয়ে গেল। রজতকে বললো, "এইজন্যই তো আমি বলছিলাম, আমি এখানে থাকি। তোমাকে রান্না করে খাওয়াতাম। তোমারও তাহলে সুবিধে হত। একা একা থাকলে ব্যাটাছেলেদের যে অসুবিধে হয়, সেটা আমরা বুঝি।"

রজত বললো, "থাক। আর অত বুঝতে হবে না। আমার একারটা আমি ভালোই করে নিতে পারবো। আমি যেন একা রান্না করে খাইনি। সিরিজা যখন ছিল না। তখন কে আমাকে রান্না করে খাওয়াতো? তুমি সব জেনে বসে আছো।"

দোলন রজতকে একটু ম্যানেজ করার মতন করে বললো, "না, আমি আসলে তা বলিনি। বলছিলাম, তোমার জন্য রান্নাটা করে দিলে আর আমার অসুবিধা কি? আমি তো এ বাড়ীতে গায়ে হাওয়া লাগাবো বলে আসিনি। ঘরের কাজ, তোমার রান্নাবান্না এসব করে দিলে তোমার একটু সুবিধা হত। এই আর কি....."

রজত ওকে বাধা দিয়ে বললো, "কি কি কি? আরেকবার বলো তো দেখি? তুমি এ বাড়ীতে এসেছিলে এই কারণে? তুমি বলবে। আর সেটা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে? এখন সিরিজা নেই, তাই তুমি এসব বড় বড় কথা বলছো। কি কারণে তুমি এ বাড়ীতে এসেছিলে। সেটা কি আমি আর বুঝি না? এখান থেকে সিরিজাকে যেতে তুমিই বাধ্য করছো। কে বলতে পারে? তুমি যদি ঠিক থাকতে তাহলে হয়তো সিরিজা দিবাকরের সাথে পালিয়ে যেত না। তুমিই তো গন্ডগোলটা পাকালে। যত নষ্টের মূলে তুমিই। ছিঃ আর কথা বোলো না।"

দোলন অবাক চোখে তাকিয়ে আছে রজতের দিকে। আর মনে মনে ভাবছে। গতকাল রাতে প্রায় ঘন্টাখানেক ধরে কি সুন্দর ঠাপুনি খেয়েছিল রজতের কাছ থেকে। উত্তেজনার থরথর মূহূর্ত। যদিও সিরিজার মতন দোলনের বুকে দুধ নেই, তাও সারারাত দোলনের বুক চুষে স্বর্গলোকের বাসিন্দা হয়ে গিয়েছিল রজত। তারপরেই কি যে হল। সকালটা হলো। সেই যে দিবাকরদার বাড়ী গেল। আর তারপরেই তুমূল কান্ড ঘটে গেল এখানে। এখন এই লোকটা যে ভাবে তাচ্ছিল্য আর অবজ্ঞা করছে ওকে। এত তাড়াতাড়ি কি হাল ছেড়ে দেবে দোলন। শেষ একবার চেষ্টা করে দেখবে না? মরীয়া চেষ্টা। যদি রজতকে আবার একটু নিজের বুক দুটোকে চোষানো যায়।

বাবা আর মেয়ে ট্যাক্সি করে অনেকদূর চলে এসেছে। গাড়ীতে যেতে যেতেই রজতের শ্বশুড় মশাই মেয়ে রীতাকে বললেন, "সত্যি রজত যেভাবে আমাকে আর তোকে অপমান করলো আজকে, ভোলা যায় না। এতবড় একটা অন্যায় করেও কি হাবভাব ওর। লক্ষ্য করেছিস তুই? কি কপাল করেই যে ওকে তুই বিয়ে করেছিলিস। এখন তাই ভাবছি।"

মেয়ে রীতা বাবাকে বললো, "বোঝো তাহলে? ওই লোকের সাথে ঘর করা যে কত দূঃসাধ্য সেটা আর কে বুঝবে? আমার মতন পোড়াকপাল আর ওই পোড়ামুখো স্বামী যেন আর কারুর কপালে না জোটে।"

শ্বশুড় মশাই বললেন, "কিরকম বুদ্ধি খাটিয়ে এসেছে। ওর বন্ধুটা সিরিজাকে নিয়ে ভেগেছে না ছাই। রজতই ওদের শিখিয়ে পড়িয়ে এসেছে।"

রীতা বললো, "বাবা তোমার মনে পড়ে? এর আগের দিনও ও কিরকম বোকা বানিয়েছিল আমাদের। মেয়েটাকে ঘরেই রেখে দিয়েছিল ওই দিবাকরের বউ সাজিয়ে। তুমি আমি অতক্ষণ বসেছিলাম। একবারও কিন্তু আমরা ধরতে পারিনি। ওই মেয়েটাও কম যায় না। দেখেছে তো ফাঁকা বাড়ী। রজত একা। তার বউও তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আর পায় কে? সব কিছু বিসর্জন দিয়ে। ইস কি নির্লজ্জ মেয়ে রে বাবা। ছিঃ।"

শ্বশুড় মশাই বললেন, "থাক ওসব কথা আর তুলিস না তো। আমার আর শুনতে ভালো লাগছে না।"

মেয়ে বললো, "তুমিই তো ভুল করলে। চলেই এলে যখন, আমার শাড়ীগুলো নিয়ে এলে না কেন? সম্পর্ক তো চুলোয় গেছে। সব ল্যাটা চুকে যেতো তাহলে।"

বাবা বললেন, "কি করবো? রজত যেভাবে কথা বলছিল, মনে হলো তোকে আর আমাকে গলা ধাক্কা দিয়ে বার করে দেবে। ওরকম একটা সিন ক্রিয়েটের পর কি বসে থাকা যায়? দুটো অচেনা লোক। তারমধ্যে একটা মাতাল আর দ্বিতীয়টা ওই দোলন। সেও তো আমার খুব একটা সুবিধার বলে মনে হল না। ওদের দুজনের সামনে আমাকে আর তোকে যা তা বলছে। সহ্য করা যায়? ওই জন্যই তো উঠে চলে এলুম।"

রীতা বললো, "ও ঠিক সুখেনকে পটিয়ে নেবে দেখবে। আমার মন বলছে।"

বাবা মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলেন, "কিভাবে?"

- "কিভাবে আবার? দু বোতল মদ খাওয়ার পয়সা দিয়ে দেবে। তুমি রজতকে চেনো না? ও সব পারে।"

-- "তা তুই ঠিক বলেছিস।"

রীতা বেশ উদাস হয়ে পড়েছে। বাবা মেয়েকে বললেন, "আমাদের আর কি আর করার আছে বল? এই হয়তো ছিল তোর কপালে। দূঃখ করিস না। আমি তোর আবার বিয়ে দেবো। ডিভোর্সটা হয়ে যাক। আর তো কদিনের মাত্র অপেক্ষা। তবে তুই কিন্তু এবারে আর জেদ ধরবি না। অনেক নিজের ক্ষতি করেছিস। আর নয়। রজতের জন্য তোকেও নিজের জীবনটা নষ্ট করতে হবে। কে মাথার দিব্যি দিয়েছে? ওর থেকে হাজার গুনে ভালো অনেক ভালো ছেলে জুটবে তোর কপালে।"

রীতা বললো, "সে ঠিক আছে বাবা। আমি আর ও বাড়ী মুখো হতে চাই না। পারো যদি বিকেল বেলা আর একবার এসে, আমার শাড়ীগুলো ফেরত নিয়ে যেও। আমি বাড়ী ফিরে দুটো বড় সুটকেস তোমাকে দিয়ে দেবো। শাড়ী আর কাপড়চোপড় গুলো ওর মধ্যে ভর্তি করে তুমি নিয়ে আসবে। আমি আর কিছু চাই না।"

মেয়ের ওপর এবার একটু রেগে গেলেন বাবা। বললেন, "তুই নিজেই মন স্থির করতে পারিস না। একবার বলছিস ওগুলোর দরকার নেই, আবার বলছিস ওগুলো নিয়ে এসো। দোনামনো করলে কি হয়? তখনই তো বুদ্ধি করে ওগুলো নিয়ে নিলে হত। তুই ভাবলি রজতকে শায়েস্তা করবি। সুখেন এলে রজত জব্দ হবে। উল্টে দেখলি তো ওই আমাদের কেমন নাস্তানাবুদ করে ছাড়লো।"

রীতা আর কোন কথা বলতে পারছে না। ট্যাক্সির জানালা দিয়ে মুখটা বাইরে বার করে আপন মনে নিজের পরিণতির কথা ভেবে যাচ্ছে। পথচলতি লোক, লোকগুলোকে দেখছে আর ভাবছে, এত সহজে হারটা মেনে নেবে ও? শেষ পর্যন্ত ওই সিরিজাই রজতকে ওর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে? কোথাকার কে একটা জুড়ে এসে ঘাড়ে চেপে বসা মেয়ে, তার জন্য রজত ওকে চিরকালের মত ত্যাগ করবে?

কিছু একটা ভাবতে ভাবতে হঠাৎই ও নিজের বাপকে বলে বসলো, "বাবা এক কাজ করলে হয় না? এই কটা দিন রজতকে একটু চোখে চোখে রাখলে হয় না? মানে ও আসলে কি করতে চাইছে, মেয়েটাকেই বা কোথায় লুকিয়ে রেখেছে সব পরিষ্কার হয়ে যেত তাহলে।"

ভীষন একটা বিরক্তি মুখে নিয়ে রীতার বাবা মেয়েকে বলে উঠলেন, "তুই আবার ক্ষেপেছিস? কি হবে এসব করে? ভুলে যা না ওকে। এখনো ভুলতে পারছিস না? তোর কি মাথায় ভূত চেপেছে? আমায় পরিষ্কার করে বলো তো?"

রীতা বললো, "না বাবা, অঘটন কিছু একটা ঘটবে। আমার মন তাই বলছে। তুমি মিলিয়ে নিও। আমি রজতের শেষ পরিনতিটা নিজের চোখে দেখার জন্য শুধু একটু অপেক্ষা করতে চাইছি। দেখি না কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। এমনও তো হল, ওর বানানো কথাটাই সত্যি হয়ে গেল। সিরিজা শেষ পর্যন্ত ওই দিবাকরের সাথেই অন্য কোথাও পালিয়ে গেল।"

-- "তাতে তোরই বা হল কি? লাভ কি কিছু হবে তাতে?"

- "অবশ্যই লাভ হবে বাবা। আমি রজতকে চোখের সামনেই শেষ হতে দেখতে চাই। তারজন্যই তো শুধু অপেক্ষা করতে চাইছি।"

মেয়ের বাবা এবার ভুরু কূঁচকে তাকালেন মেয়ের দিকে। রীতা ওর বাবার হাতের ওপর হাতটা রেখে বললো, "প্লীজ বাবা প্লীজ। এই কটা দিন তুমি রজতকে একটু নজর রাখার চেষ্টা কর। আমি এভাবে আর কখনও বলবো না তোমাকে। শুধু কয়েকটা দিন। তারপরেই দেখবে খেলা কেমন শেষ হবে যবনিকা পতনের মতন। না থাকবে সিরিজা, না থাকবে রজতের হুঙ্কার। সব শেষ হবে চোখের নিমেষে। আমার মন তাই বলছে।"

কি আর করবেন শ্বশুড়মশাই? শেষ পর্যন্ত মেয়েকে শেষবারের মতন কথা দিয়ে বসলেন, আর সাথে এটাও বললেন, "এই কিন্তু শেষবার। এরপরে আর জেদ ধরবি না। তাহলে কিন্তু চরম ক্ষতিটা হবে আমাদেরই।"

রীতা ট্যাক্সির মধ্যেই কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো বাবার দিকে। ঘন ঘন কি অত চিন্তা করছে মেয়ের বাবাও বুঝতে পারছে না। শেষকালে রজতের কথা ভেবে ভেবে মেয়েটা পাগল না হয়ে যায়। মেয়েকে বললেন, "কি হলো, আবার তোর মত চেঞ্জ হল না কি? "

রীতা বললো, "বাবা তুমি একটা জিনিষ লক্ষ্য করেছো?"

বাবা মেয়েকে বললেন, "কি?"

- "রজত কেমন ওই দোলন বলে মেয়েটার দিকে কটমট করে তাকাচ্ছিলো। একবার তো ধমকও দিয়ে বসলো।"

শ্বশুড় মশাই বললেন, "তাতে কি?"

রীতা বললো, "ওইখানেই তো তোমাকে মারপ্যাঁচটা বুঝে নিতে হবে।"

শ্বশুড় মশাই বললেন, "আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।"

রীতা বললো, "তুমি এখনও বুঝলে না?"

বাবা এবারে পুরো ক্ষেপে উঠেছেন, এবারে উনারই মাথা খারাপ। - "আরে কি তখন থেকে মারপ্যাঁচ মারপ্যাঁচ করে যাচ্ছিস। আসল কথাটা বলবি তো?"

- "ওফঃ বাবা তুমি এখনও কত অবুঝ। আরে বাবা এসব তো রজতেরই চাল।"

-- "সে তো জানি।"

- "ওই দিবাকরের সাথে সিরিজা পালায়নি। আমি হান্ড্রেড পার্সেন্ট শিওর।"

-- "কোথায় আছে তাহলে?"

- "আছে কোথাও। রজত ইচ্ছে করেই ওটা করেছে। ও জানে দোলন ভয়ের চোটে আমাদের সব বলে দেবে। মাঝখান থেকে তুমি মোবাইলটা থেকে ওকে তখন ফোনটা করে ভুলটা করেছো। নিমেষের মধ্যে প্ল্যান খাটিয়ে নিয়েছে রজত। আর দেখলে না? দোলনের ওপর ও কেমন হম্বি তম্বি করছিল।"

-- "কিন্তু!"

- "কি কিন্তু?"

-- "তোকে নিয়ে যখন সকাল বেলা আসলাম, তখনও দেখলাম দোলনকে ও সেভাবে পাত্তা দিচ্ছে না। আমরা আসবো জেনে সিরিজাকে ও আগে থেকেই ওখান থেকে সরিয়ে দিয়েছে সেটা তো জানি, কিন্তু দোলনের ওপর ও কোনো ভাবেই সন্তুষ্ট নয়।"

রীতা কিছুক্ষণ চিন্তা করলো, তারপর ওর বাবাকে বললো, "আমারও মাথায় কিছু ঢুকছে না। আমি নেই, আর সবাই আমার বরটাকে নিয়ে পড়লো না কি? মেয়েগুলো সব নিজের স্বামীকে ছেড়ে আমার স্বামীটাকে নিয়ে পড়েছে।"

-- "ওকে আর স্বামী বলিস না। রজত একটা ছেলে, সে আবার তোর স্বামী। এক হাতে তালি বাজে না কি রে? রজতের প্রশ্রয় না থাকলে দোলনই বা সাহস পায় কি করে? যত নষ্টের মূলে ওই হতচ্ছাড়াটা। ও কি কুক্ষণে যে ওর সাথে তোর বিয়েটা দিয়েছিলাম রে? কত ভালো ভালো সেই সময় সন্মন্ধ এসেছিল, তা না কি না একটা ফুর্তীবাজ ছেলের সঙ্গে বিয়েটা দিয়ে তোর জীবনটা নষ্ট করলাম।"

রীতা এবার বাবার হাতের ওপর নিজের হাতটা রাখলো। বাবাকে বললো, "বাবা আমি তো এখনও শক্ত রয়েছি, তুমি অত ভেঙে পড়ছো কেন?"

রীতার বাবা বললেন, "ভেঙে পড়িনি রে মা, ভেঙে পড়িনি। আমার বয়সটা যদি আর একটু কম থাকতো, দেখতিস রজতের কি হালটা করে আমি ছাড়তাম। আমাদেরকে নাকানি চোবানি খাওয়া? হাড়ে হাড়ে ওর মজাটা তখন টের পাইয়ে দিতাম।"

ট্যাক্সিটা রীতাদের বাড়ীর কাছে এসে পড়েছে। রীতা বললো, "বাবা এই কটা দিন কিন্তু তোমার শেষ পরীক্ষা। শেষ হাসিটা আমাদেরই হাসতে হবে। এই কিন্তু তোমাকে আমি বলে রাখলাম।"

শ্বশুড় মশাই হঠাৎ মেয়েকে বলে বসলেন, "দাঁড়া, আমিও রজতকে এবার দেখাচ্ছি কত ধানে কত চাল। ওর হালত খারাপ করে ছেড়ে দেবো আমি।"

মেয়ে দেখছে বাবা পকেট থেকে মোবাইল বার করে, কাকে যেন ফোন করছে।

রীতা বললো, "কাকে ফোন করছো তুমি বাবা?"

শ্বশুড় মশাই প্রথমে মেয়ের কথার কোন উত্তর দিলেন না। মোবাইল থেকে কাকে যেন নম্বর মিলিয়ে ট্রাই করতে লাগলেন।

রীতা আবার বললো, "কাকে ফোন করছো বলবে তো?"

মেয়েকে বাবার তবু কোন উত্তর নেই। দু একবার নম্বরটা ট্রাই করার পরে মোবাইলটা কানের সামনে ধরলেন।

ও প্রান্ত থেকে আওয়াজ এলো, "হ্যালো!"

- "হ্যাঁ হ্যালো! কে রতন?"

-- "হ্যাঁ রতন বলছি।"

- "আমি মেসোমশাই বলছি।"

-- "কে মেসোমশাই?"

- "আরে রীতার বাবা। চিনতে পারছো না?"

-- "ও হো। এবারে বুঝেছি। তা মেসোমশাই আছেন কেমন? অনেক দিন পর তো।"

- "হ্যাঁ অনেক দিন পর। আর বোলো না। খুব খারাপ সময় যাচ্ছে আমার।"

-- "কি হলো আবার?"

- "আরে আমার মেয়েকে নিয়ে। বড় কষ্টে ভুগছি গো। মেয়েও আমার খুব কষ্টে আছে।"

-- "কেন? রীতাদির তো বিয়ে হয়ে গিয়েছিল না?"

- "হ্যাঁ। তারপরেই তো যত গন্ডগোল।"

--"কেন কি হলো মেসোমশাই?"

- "আর বোলো না। আমার মেয়ের বরটা হল বড় বজ্জাত। মেয়েকে খালি কষ্ট দিচ্ছে। নতুন নতুন মেয়েমানুষ নিয়ে ফুর্তী করছে। এই আর কি? তোমাকে আর কষ্টের কথা কি বলব। তুমি তো আমার ছেলের মতন বাবা।"

-- "মেসোমশাই। আপনি যা বললেন, তাতে তো খুব খারাপ লাগলো শুনে। আমাকে কি করতে হবে? ওর হাত পা দুটো কেটে দেবো?"

- "না বাবা, কাটতে হবে না কাটতে হবে না। আমি চাই, তুমি একটু আমার জামাইয়ের ওপরে নজরদারী করো। ও কোথায় কি করে বেড়াচ্ছে। তোমাকে একটু নজর রাখতে হবে। তুমি এটুকু করলেই আমার কাজ চলে যাবে। বড় জ্বালাচ্ছে ওর স্বামীটা। ওকে একটু শিক্ষা দেওয়া দরকার।"

ও প্রান্ত থেকে রতন বললো, মেসোমশাই, আপনি তো জানেন, আমি কি রকম। মাথা গরম হয়ে গেলে আমি কাউকে ছাড়ি না। আপনি বললে, ওর ধড় থেকে মাথাটাকেও আলাদা করে দিতে পারি। এসব আমার কাছে জলভাত। সাধে কি আর ছ বছর জেলে কাটিয়েছি, এমনি এমনি?"

- "আমি সব জানি রতন। আমি সব জানি। সেইজন্যই তো তোমার ওপর আমার একটু বেশী ভরসা। এতদিন নিজেই চেষ্টা করে দেখছিলাম। দেখলাম কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। তাই ভাবলাম, তোমার স্মরনাপান্ন হই আর কি? এছাড়া আমার আর কোন গতি নেই।"

-- "না না মেসোমশাই, এভাবে বলবেন না। আপনি বলবেন, আর আমি না করতে পারি? আপনার জামাইকে আমি ঠিক শিক্ষা দিয়ে দেবো। শুধু আমাকে কলকাতায় আসতে দিন।"

- "কেন? তুমি এখন এখানে নেই?"

-- "না আমি তো শিমূলতলায়।"

- "শিমূলতলায়?"

-- "হ্যাঁ, শিমূলতলায়। এখানে আমার শ্বশুড় বাড়ী। আপনি তো জানেন না। আমি বিয়ে করেছি।"

- "তাই?"

-- "হ্যাঁ। আপনার বৌমাকে নিয়ে এসেছি। এই আর তিন চারটে দিন থাকবো। তারপরেই কলকাতায় ফিরবো। আমি গিয়ে সব সামলে নিচ্ছি, আপনাকে কিচ্ছু চিন্তা করতে হবে না।"

রীতার বাবা যেন এবার আস্বস্ত হলেন। রতনকে বললেন, "আমি এবারে নিশ্চিন্ত হলাম। আর তুমি ফিরেই কিন্তু আমাকে ফোন কোরো। এটা আমার নম্বর। সেভ করা আছে নিশ্চয়ই?"

রতন বললো, "সেভ করা না থাকলেও আমি সেভ করে নিচ্ছি। আপনাকে আর চিন্তা করতে হবে না।"

তারপরে আবার ও বললো, "তা রীতাদি এখন কোথায়?"

- "এই তো আমার কাছেই আছে। আমার পাশে বসে আছে।"

-- "আচ্ছা। আচ্ছা। গিয়ে কথা হবেখন।"

রতন ফোনটা ছেড়ে দিল। রীতা থতমত খেয়ে চেয়ে আছে তখন ওর বাবার দিকে। এতোক্ষণ ধরে ফোনে কথা বলেছে, মেয়ের আর বুঝতে বাকী নেই। তাও বাবাকে প্রশ্ন করে বসলো, "বাবা এ তুমি কাকে ফোন করেছো?"

রীতার বাবা বললেন, "এ হচ্ছে রতন। মনে নেই? এলাকায় সব কাঁপতো রতনের নাম শুনে। তুই সবই জানিস। অথচ রজত রজত করে এখন সব ভুলে গেছিস।"

মেয়ে যেন আকাশ থেকে পড়েছে। বাবাকে বললো, "তা রতন এখানে কি করবে? ও তো একটা নামকরা গুন্ডা।"

-- "ওই তো রজতকে জব্দ করবে। এ ছাড়া আর উপায় কি বল? রতনকে একবার আসতে দে। তারপর দেখ, রজতকে ও কেমন উচিৎ শিক্ষা দেয়।"

- "কিন্তু বাবা!"

-- "কি?"

- "ও যদি রাগের মাথায় রজতকে সত্যি সত্যি মেরে দেয়।"

-- "আরে তুই পাগল হয়েছিস? শুধু একটু চমকে দেবে, তাতেই দেখবি সব কাজ হয়ে যাবে। ওই সিরিজাও তখন থাকবে না। আর দোলন তো নয়ই।"

রীতা ভেবে পাচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত রতন আবার এসে জুড়ে বসবে। কি করতে কি করে বসবে, তারপর সব কিছু আবার চৌপাট না হয়ে যায়।

বাবা মেয়েকে বললেন, "কি ভাবছিস?"

- "না ভাবছি, ওকে ডাকাটা কি ঠিক হল?"

-- "একদম ঠিক। এই বয়সে আমি কি আর অত দৌড় ঝাঁপ করতে পারি। বুঝিস তো সব।"

- "বাবা রতন কিছু করে বসবে না? তুমি জোর দিয়ে বলছো তো?"

মেয়ের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে শ্বশুড়মশাই বললেন, "কিচ্ছু করবে না। আমি বলছি তো। তুই অত চিন্তা করছিস কেন? শুধু ওকে একবার আসতে দে। এখন বললো, শিমূলতলায় ওর শ্বশুড় বাড়ীতে আছে। তিন চারদিন পরেই না কি ফিরবে।"

- "শিমূলতলা?"

-- "হ্যাঁ তাই তো বললো।"

কোনরকমে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রীতা বললো, "দেখা যাক, তোমার এই রতন এসে আমার কি উপকারটা করতে পারে। আমার খুব ভয় করছে। যা মাথাগরম ছেলে।"

মেয়ের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বাবা বললেন, "তুই কি এখনো রজতকে ভালোবাসিস নাকি রে? এত চিন্তা করছিস?"

রীতা বললো, "না না, ওতো আমি এমনি বলছি।"

মেয়ের রকম দেখে রীতার বাবা এবার সত্যি একটু অবাক হয়ে গেলেন।
 
।। একচল্লিশ ।।


বাড়ী থেকে সিরিজাকে সাথে করে নিয়ে বেরিয়েই একটা ট্যাক্সি ধরলো দিবাকর। হাওড়ায় পোঁছোতে মোটামুটি মিনিট চল্লিশেক লাগবে। একটা সুটকেশ গুছিয়ে নিয়েছে তাতে কিছু জামাকাপড়। সিরিজার জন্য আলাদা একটা ব্যাগ। দিবাকর বললো, "হাওড়ায় পৌঁছোনোর আগে আমরা বসে কোথাও খেয়ে নেবো। আর তোমার জন্য দু তিনটে শাড়ী কিনবো। ওখানে যখন যাচ্ছি, একেবারে নতুন বউয়ের মতন তুমি আমার সাথে থাকবে।"

সিরিজার কোলে বাচ্চাটা পিটপিট করে দিবাকরের দিকে তাকাচ্ছে। সিরিজা বললো, "আমি আর নতুন কই?"

বলে বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে ওকে একটু আদর করে বললো, "এই ছেলেটা তো এখন তোমার। আমরা পুরোনো হয়ে গেছি না?"

দিবাকর বললো, "পিসি কিন্তু একটু বকা দেবে। বিয়ের খবর দিই নি বলে, হয়তো একটু অভিমান করবে। তোমাকে কিন্তু পিসিকে ভালো ম্যানেজ করতে হবে। জানি পিসিরও তোমাকে ভালো লাগবে। একবার যদি ঠিকঠাক মত সব পার হয়ে যায়, ভাবছি শিমূলতলাতেই আমি থেকে যাবো। তোমাকে নিয়ে আর ফিরব না।"

সিরিজা বললো, "পিসি তোমাকে ওই বাড়ীটা লিখে দেবে?"

দিবাকর বললো, "ওই বাড়ীটা তো আমারই। নেহাত কলকাতায় থাকি বলে পিসির সাথে ফোনে কথা হয় মাঝে মাঝে। তবে কদিন ধরেই পিসির ফোনটা মনে হয় খারাপ। কথা হচ্ছে না, খবরটাও দিতে পারলাম না। না হলে পিসি দেখতে, আমার জন্য স্টেশনেও চলে আসতো।"

সিরিজা কেমন একটু চিন্তায় পড়ে গেল। বললো, "পিসি ওখানে থাকবে তো?"

দিবাকর হাসলো। বললো, "চিন্তা করছো? পিসি ওই বাড়ী ছেড়ে কোথাও যায় না। বাড়ী আগলে পড়ে থাকে। আজ পর্যন্ত শিমূলতলা থেকে কলকাতাতেও আসেনি সেই লাস্ট দশবছর।"

ট্যাক্সিটাকে একটা বড় শাড়ীর দোকানের সামনে দাঁড় করালো দিবাকর। ট্যাক্সিওয়ালাকে বললো, "একটু দাঁড়ান কষ্ট করে। আমি আপনাকে কুড়ি টাকা এক্স্ট্রা দেবো। এখান থেকে হাওড়া। কিছু কেনাকেটা আছে। বড় জোর দশ মিনিট মত লাগবে।"

ট্যাক্সিওয়ালা বললো, "বেশি দেরী করবেন না স্যার। এখানে আবার গাড়ী দাঁড়ালে পুলিস এসে ঝেমেলা করে।"

দিবাকর ট্যাক্সিওয়ালাকে ভরসা দিয়ে গাড়ী থেকে নামল। সিরিজার হাত ধরে ওকেও ট্যাক্সি থেকে নামাল। বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে ওরা কাপড়ের দোকানে ঢুকছে। কে বলবে ওরা সত্যি স্বামী স্ত্রী নয়।

সিরিজার জন্য তিনটে রংচঙে দারুন শাড়ী কিনে দিল দিবাকর। এক একটার দাম কম করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা। সিরিজা বেশ অবাক। দিবাকর বললো, "মানিব্যাগে আরও কিছু টাকা থাকলে, তোমার জন্য আরো দুটো শাড়ী আমি কিনতে পারতাম। আপাতত এই তিনটেই থাক। এরপরে যা যা দরকার, সব ওখান থেকেই কিনবো।"

সিরিজা মুখটা কেমন অবাক করে তাকালো দিবাকরের দিকে। ওর উদার মন দেখে সিরিজা সত্যি অবাক। বললো, "তিনটে কেন? একটা শাড়ী কিনলেও তো হত।"

দোকানদার লোকটা আবার বেশ রসিক আছে। সিরিজাকে একপলক আড়চোখে দেখে নিয়ে দিবাকরকে বললো, "ম্যাডাম, আপনার পয়সা সেভ করতে চাইছেন। এরকমটা আজকাল সত্যি দেখা যায় না।"

দিবাকর হাসলো। দোকানদার কে পেমেন্ট করে সিরিজাকে নিয়ে আবার ট্যাক্সিতে উঠলো। সিরিজাকে বললো, "খাওয়া দাওয়াটা হাওড়ায় নেমেও সারা যাবে। ওখানে তো অনেক হোটেল। তাছাড়া স্টেশনের ভেতরেও ভালো ভালো রেষ্টুরেন্ট হয়েছে এখন। ওখানেই না হয়, আমরা বসে কোথাও খেয়ে নেবো।"

সিরিজা ঘাড় নাড়লো।

দিবাকর ঘড়ি দেখলো, "ঠিক দু ঘন্টা পরেই একটা ট্রেন আছে। সিরিজাকে বললো, মোবাইলটা অফ করে দিয়েছি, রজত চেষ্টা করেও আমাকে আর যোগাযোগ করতে পারবে না।"

সিরিজা অল্প অল্প হাসছে। দিবাকর বললো, "তুমি খুশি?"

সিরিজা ঘাড় নাড়লো।

দিবাকর বললো, "এইবারে মনে হচ্ছে, আমি যেন সত্যি তোমাকে চিরকালের জন্য পেলাম।"

গাড়ীর মধ্যে রজত হলে সিরিজাকে এতক্ষনে একটা চুমু খেয়ে বসতো। দিবাকর তা করলো না। শুধু বাচ্চাটা শুদ্ধু সিরিজাকে একবার বুকে টেনে নিল। বললো, "আমার বুকে মাথাটা রেখে একবার দেখো, আমার সারা শরীরে কেমন শান্তি বিরাজ করছে। মনে শান্তি, বুকে শান্তি, সব জায়গাতেই শান্তি। কারণ তুমি আমার সঙ্গে শিমূলতলাতে যাচ্ছো।"

হাওড়ায় পৌঁছে চটপট করে কিছু খাওয়া দাওয়া করে নেওয়া। দিবাকর বললো, "হাতে এখনো এক ঘন্টা সময় আছে, এর মধ্যেই চলো দুপুরের খাওয়াটা সেরে নিই। ওখানে পৌঁছোতে সন্ধে হবে। সারাদিন নয়তো অভূক্ত থাকতে হবে তখন।"

সিরিজাকে নিয়ে স্টেশনের ভেতরেই একটা ভালো রেস্টুরেন্টে ঢুকলো দিবাকর। সিরিজা খালি এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। দিবাকর বললো, "কি এতো দেখছো? আগে দেখোনি বুঝি?"

সিরিজার ভেতরে যেন একটা চাপা ভয়। কোন উদ্বেগ। দিবাকর বললো, "কি হয়েছে সিরিজা? কিছু সমস্যা?"

সিরিজা বললো, "না ভাবছি, ওই মাতালটা যদি আবার এখানে এসে বসে থাকে।"

দিবাকর হাসতে লাগলো। বললো, "তুমি ক্ষেপেছো? এত ভীড়ের মধ্যে ও কোথায় তোমাকে নজর করবে? স্টেশন ভর্তি গাদা গাদা লোক। সুখেন তোমার হদিশও পাবে না। তাছাড়া ও যে এখন এখানে, সেটা তুমিই বা বুঝলে কি করে?"

সিরিজার তাও যেন একটু দুশ্চিন্তা। ওর হাতটা ধরে দিবাকর বললো, "তুমি এসো তো আমার সঙ্গে। খামোকা ভয় পাচ্ছো। কিছু হবে না। এসো বলছি।"

সিরিজা দিবাকরের সাথে রেস্টুরেন্টে পাশাপাশি বসল। বাচ্চাটা কোলে, দিবাকর বললো, "ওখানে গিয়ে ওকে পিসির হাতে ছেড়ে দেবে। দেখবে পিসি সারাদিন ওকে নিয়েই পড়ে আছে। চান করিয়ে দেবে, খাইয়ে দেবে, ঘুম পাড়িয়ে দেবে। সব পিসিই করবে।"

সিরিজা বললো, "আর আমি?"

দিবাকর বললো, "তুমি ওইগুলো সব আমাকে করবে।"

লজ্জ্বা আর তাতে মেশানো মুক্তোর মত হাসি। সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে দিবাকর ভাবছিল, এই মেয়েটাই এখন কত ইনোসেন্ট। সরল, সাধাসিধে একটা গ্রামের মেয়ে। অথচ বিছানায় শোবার সময়, শাড়ীর তলায় বক্ষ দেশের বিস্ফোরণ। নগ্ন শরীরের উদ্দাম তার যৌন চাহিদা। সেই সিরিজার সাথে এই সিরিজাকে তখন মেলানো যায় না। এই সিরিজা যেন কত আলাদা। সেই সিরিজার সাথে এই সিরিজার সত্যি কোন মিল নেই।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top