What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সিরিজা - একটি উপন্যাস (2 Viewers)

দ্বিতীয় অধ্যায়
।। নয় ।।


সিরিজার কোলে মাথা রেখে শুয়ে ছিল রজত। দিবাকর চলে যাওয়ার পর একটু আগে রজতের দেওয়া শাড়ীটা খুলে ফেলেছে সিরিজা। রজতের কিনে দেওয়া নতুন ব্লাউজটা পড়েছে। প্রশস্ত বুকে দারুন ফিট করেছে ব্লাউজটা। উষ্ণতার ছোঁয়া ওর ঐ বুকের মধ্যে থেকেই টের পাচ্ছিল রজত। সিরিজা যত সুন্দর করে রজতের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে ততই যেন আরো আদর পেতে ইচ্ছে করছে রজতের। মনটা আনচান করছে। কিন্তু তবু যেন তাড়াহুড়ো করতে ইচ্ছে করছে না রজতের। আসল মূহুর্তটা সিরিজার উপরই ছেড়ে দিয়েছে ও।

রজতের করাটা আর সিরিজার নিজে থেকে উদ্যোগ নেওয়াটার মধ্যে যেন বিস্তর ফারাক। সিরিজা যেচে উদ্যোগ নিলে ওটা বেশী আকৃষ্ট করে রজতকে। এখন অবধি নিজে যতবার সিরিজার বুকে মুখ রেখেছে আর সিরিজা যতবার ওর নিজের বুক রজতের মুখে তুলে দিয়েছে দুটোর মধ্যে রতিসুখের আনন্দ বেশী করে পেয়েছে দ্বিতীয়টাতেই। উত্তেজনার পারদটা আরো বেশী করে বেড়ে যায়। সিরিজা যেচে আহবান করলে তার স্বাদ হয় আরো তীব্র। যেন রজতকে তুষ্ট করার সব কৌশল জানা আছে সিরিজার। এমন একটা সুখময় মূহূর্ত রজতের জীবনে আসেনি কোনদিন আগে। ওকে কাছে পেলে সুখের দিনগুলো কখনও গুণে গুণে শেষ করতে পারবে না রজত।

মনে মনে বললো রজত, "এমন একাত্ব নারী আগে কোনদিন দেখিনি।"

রজত শুয়ে শুয়ে সিরিজাকে দেখছিল আর ভাবছিল, দিবাকরের কথাও তাহলে মিথ্যে হয়ে গেল। ও বলেছিল, "তুমি যা চাইছো তা পাওয়া খুব কঠিন বাস্তবে!"

কিন্তু সিরিজা এসে সবকিছুই ওলটপালট করে দিল। কপালের উপর সিরিজার নরম হাত। আর ব্লাউজের খোদল থেকে বেরিয়ে আসতে চাওয়া সিরিজার বুকের উপরের অংশ। এক নাগাড়ে চোখের দেখায় মজিয়ে দিচ্ছিল রজতকে। ও নিজেই বললো, "তোমাকে দেখে দিবাকর পুরো পাগল হয়ে গেছে। আর আমি ওকে যা বলেছি সব বিশ্বাস করে নিয়েছে। ভেবেছে আমি যা বলেছি সেটাই ঠিক।"

- "কি বলেছো?"

-- "বলেছি তোমাকে আমি আমার দেশের বাড়ী থেকে নিয়ে এসেছি। তুমি আমার গ্রামের মেয়ে। গ্রাম থেকে সুখের সাথীকে তুলে নিয়ে এসেছি। দেখলে না তোমার দিকে কেমন লজ্জায় তাকাতে পারছিল না। প্রথমবারই ঘরে ঢুকে ও হকচকিয়ে গেছে। ভাবেনি এমন ললনাময়ী দরজা খুলে অভ্যর্থনা করবে ওকে।"

রজতকে অবাক করে সিরিজা বললো, "তারপরে আমাকে একা পেয়ে যদি কিছু করে বসত?"

-- "না না। দিবাকর কিছু করত না। ও ভালো ছেলে। আসলে তোমার হঠাত আবির্ভাবটাই ওকে অবাক করে দিয়েছে। দুদিন আগেও ও আমার কাছে এসেছিল। বললো, "তোমার তো কাউকে খুব দরকার। এখন একা রয়েছ। এভাবে আর কতদিন কাটাবে?"

- "তারপর?"

-- "তারপর আর কি? তুমি এলে, আর আমার একাকীত্বটা ঘুচে গেল। আজ তো দিবাকর এসেও এটা টের পেয়েছে।"

হঠাত রজত দেখলো সিরিজা ওর ব্লাউজের খোদলে হাত ঢুকিয়েছে। রজত আশায় চেয়ে রইলো। ব্লাউজটা বুঝি খুলবে বোধহয়।

তা না করে সিরিজা ওর বিশাল বুক দুটোকে ব্লাউজের খোদলে আরো বেশী করে ঢোকানোর চেষ্টা করতে লাগলো। ব্লাউজটা টেনে টেনে দেখছিল ফিট হয়েছে কিনা? ঐ অবস্থাতেই রজতকে বললো, "আমাকে তোমার সাথে দেখে যদি কেউ হিংসে করে?"

-- "করুক না। অন্যেরা জ্বলে পুড়ে মরবে, আর আমি তোমার সুখটুকু প্রাণভরে উপভোগ করবো।"

- "তোমার ভয় করবে না?"

-- "কিসের ভয়? স্বাধীন জীবনে হস্তক্ষেপ করবে এমন বুকের পাটা কার আছে?"

- "তোমার বউ যদি ফিরে আসে এখানে? সব জানতে পারে? আমি কিন্তু দেখেছিলাম দোলনের কাছে তোমার বউ এর মোবাইল নম্বরটা আছে। ধর ও যদি সব বলে দেয়?"

-- "তাতে ভারী বয়েই গেল। সে এ বাড়ী ছেড়ে চলে গেছে। সে আর কোনদিন এখানে আসবে না।"

- "তাহলেও যদি আসে কি করবে তখন?"

-- "তোমায় তখন অন্য জায়গায় রাখব। একটা অন্য ফ্ল্যাটে। ঘুরব, বেড়াব, এ শহরটায় কত কি করবো। শহর দেখেছো কোনদিন?"

- "আমি তো গ্রামের মেয়ে। শহর দেখব কি করে? তুমি দেখাবে?"

-- "দেখাবো। বাইরের প্রতিটি জায়গায় তোমায় নিয়ে যাবো। ট্যাক্সী করে ঘুরব, আরো কত কি করবো, তোমায় নিয়ে আনন্দ করবো।"

রজত দেখছে সিরিজা বুকের ব্লাউজটা খুলছে ধীরে ধীরে। রাতটাকে রঙীন করে তোলার যেন তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে আসতে আসতে। ভীষন একটা অদম্য কামনা জেগে উঠছে রজতের মনে। ও সিরিজাকে একদৃষ্টে দেখছে। রজতকে না দেখার ভান করে বুকের আবরণ খুলছে সিরিজা। কি হয় তাহলে এরপর। সেটাই দেখা যাক।

শরীরটাকে একটু সামনে ঝুঁকিয়ে দিয়ে রজতের মুখের খুব কাছে মুখটাকে নিয়ে এসে ওর চোখে চোখ রেখে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো সিরিজা। ওর আর একটা হাত তখনও বুকে। পুরো খোলেনি ব্লাউজটা। শুধু রজতের মাথায় হাত দিয়ে মোলায়েম স্পর্শ। রজত ওকে দেখছে।

- "এই, আমি খুব খারাপ মেয়ে তাই না? স্বামী ছেড়ে তোমার সঙ্গে সাথ দিচ্ছি। কেউ যদি কিছু বলে তুমি মেনে নিতে পারবে?"

-- "এতে দোষের কি আছে সিরিজা? স্বামীকে তোমার পছন্দ হয় নি। তুমি তাই ঘর ছেড়ে এসেছ। এত হতেই পারে। দেখ না আমি কেমন নিশ্চিন্তে রয়েছি বউ ছাড়া। তোমার আর আমার জায়গাটা তো এক। এই জন্যই তো তুমি আমার এত কাছে সিরিজা।"

সিরিজা যেন মূহূর্তের জন্য ভাবতে পারছে না ওরও আশা কতটা পূরণ হয়েছে। পুরুষমানুষকে মন জয় করার সবরকম অস্ত্র রয়েছে ওর মধ্যে। অথচ ওর মনে হয়েছিল ও অসুন্দরী হয়ে যাচ্ছে। ঐ মাতাল লোকটার সাথে থাকতে থাকতে একতাল মাংসের লাশ হয়ে যাবে। কোন পুরুষ আর মুগ্ধ চোখে তাকাবে না ওর দিকে। অনেকদিন ধরে গুমড়ে গুমড়ে থেকে তারপরে একটা সাহসী পদক্ষেপ। এই এতদিন পর। কারুর সাথে শরীর ছোঁয়া আর ভালোবাসার খেলা খেলতে না পারলে জীবন অসহ্য।

আজ রজত যখন তার অহংকারের দন্ডটা ঢুকিয়ে দিয়েছে সিরিজার যোনীর অভ্যন্তরে, ফলকে ফলকে উৎসারিত হয়েছে ওর রস। সিরিজা নিষিক্তা হয়েছে। খুশি খুশিয়াল অনুভুতি ছড়িয়ে পড়েছে ওর কোষ থেকে কোষান্তরে। রজতের প্রতিটি পদক্ষেপ ওকে অস্থির করে দিয়েছে। রজতের ডাকে সাড়া না দিয়ে উপায় নেই সিরিজার। ও তো এটাই চেয়েছিল। এমন একটা পুরুষ ওর গর্তে পা হড়কাবে, যেখান থেকে কোনদিন সে আর বেরোতে পারবে না। জীবনটাকে পুষিয়ে নেবে সিরিজা। কারন জীবনটা তো ওর। এই যৌবন একান্ত সিরিজার। কাকে কিভাবে ও কতটা সুখ দেবে, কতটা সুখ পাবে তার সাহচর্যে এসে, এসব হিসেব নিকেশ এখন ওকেই করতে হবে।

সিরিজা এবার সত্যি সত্যিই সদ্যজাত শিশুর মতন রজতকে বুকে তুলে নিল। স্তনের বোঁটাটা ঠোঁটে তুলে দেবার আগে একবার শুধু বললো, "সবার কাছে আমি খারাপ। তোমার কাছে আমি ভালো হলে আমার কোন চিন্তা নেই।"

বড়ই অশ্লীল, বড়ই বিসদৃশ্য। কিন্তু রজতের কাছে যৌনতার আলাদা মাত্রা যোগ করেছে সিরিজার বুকের দুধ পান। ওর বাচ্চাটা হয়তো কোনসময়ে ওটা মুখে নিয়ে চুষেছে। কিন্তু রজতকে ওটা সুখ দিচ্ছে কামসুধার মতন।

কি সাংঘাতিক যৌনবাসনা রজতের। সিরিজাকে শেষ অবধি নিঃশ্বেস করে না দেওয়া পর্যন্ত ওর শান্তি নেই। রাত্রিবেলা তীব্র যৌনতা দিয়ে শুরু হোল সঙ্গম। একেবারে সুখকে শেষ সীমানায় নিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত। রজত তখন বারবার নিজেকে নিঃক্ষেপ করছে সিরিজার অভ্যন্তরে। ভেতরটা করতে করতে টুকরো টুকরো করে দেবে। প্রবল সুখে চরম তৃপ্তিটা নিজেও পাচ্ছিল সিরিজাকেও পাইয়ে দিচ্ছিল। সুখ যেন ওকে বারবার নিংড়োতে দিচ্ছে সিরিজার কামনাভরা যৌনতার শরীর। মেশিনের মতন লিঙ্গচালনা করে সিরিজার সারা শরীরে ঝড় বইয়ে দিচ্ছিল রজত। লিঙ্গের গতিবেগকে স্তব্ধ করা যাচ্ছে না। একনাগাড়ে সুখটাকে উপলব্ধি করে ও সিরিজার দেহটাকে খন্ড দ্বিখন্ডিত করে দিতে চাইছিল। উন্মাদের মতন ভোগ করছে। তৃপ্তির শীর্ষবিন্দুটা খুঁজে বার করার চেষ্টা করছে রজত। যে সুখটা সঞ্চয় করে রেখেছে সিরিজা ওর শরীরের ভেতরে। সেখান থেকে রজত ভেঙে ভেঙে খাচ্ছে। এত ভালো বোঝাপড়ার সুখ সিরিজার সাথে যে এর থেকে সাফল্যের সঙ্গম কারুর কাছ থেকে আশাই করা যায় না কোনমতে।

রজত যেন আরো চিরে দু ফাঁক করে দিতে চাইছিল সিরিজাকে। এক প্রস্থ সঙ্গমের পরও তখনও সিরিজা ক্লান্ত বা অনিচ্ছুক নয়। তবুও যেন রজতকে একটু অন্য সুখ দিয়ে বুকের মধ্যে চেপে ধরে রাখার প্রচেষ্টা। যদি তখনকার মতন একটু শান্ত করে রাখা যায় রজতকে। একটু যদি ঘুমোয়, একটু যদি থামে। এবার না হয় একটা বিশ্রাম। আবার তো কালকের দিনটা পড়ে আছে।

রজত শান্ত হোল, ঘুমিয়েও পড়লো। সিরিজা ওকে জড়িয়ে নিল বুকের মধ্যে। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরই আবার শুরু হয়ে গেল রতিসঙ্গের খেলা।

ভোরবেলা সূর্য উঠতে না উঠতেই নগ্ন অবস্থায় সিরিজার যোনীতে লিঙ্গ ঢোকানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলো রজত। কি সাংঘাতিক কামে আচ্ছন্ন ও এখনও। সিরিজা তখন আবছা ঘুমের মধ্যেই রজতকে ওর শরীরের উপর উঠতে দিচ্ছে। চোখ দুটো বোজা অবস্থাতেই একবার শুধু বলে উঠলো, "এই, কি করছো তুমি?"

-- "পারছি না সিরিজা, পারছি না। বারে বারে তোমার শরীরের মধ্যে প্রবেশ না করলে নিজেকে কিছুতেই ঠান্ডা রাখতে পারছি না। আমি পারছি না সিরিজা, আমি পারছি না।"

পা দুটো দুপাশে ছড়িয়ে দিয়ে আবার সুরভিত উদ্যানে রজতকে বরণ করে নেওয়ার চেষ্টা। নিজেই হাত লাগিয়ে শক্ত লিঙ্গটাকে যোনীর মুখে স্থাপন করার চেষ্টা করতে লাগলো সিরিজা। ঘুম চোখেই রজতের লিঙ্গ চালনাকে সহযোগীতা করতে শুরু করেছে। শরীটাকে একটু উপরে শূণ্যে তুলে ধরে শক্ত চাপ দিয়ে বারে বারে লিঙ্গের অর্ধেকটা যোনীর মধ্যে প্রবেশ করাতে সুখ পাচ্ছে রজত। ভোরবেলাই দুধে ভরা স্তন দুটো মুখে নিয়ে প্রবল উৎসাহে সিরিজাকে ঠাপ দিয়ে চলেছে রজত।

ঘুম আসেনি বা হয়তো ঘুমের মধ্যেই সিরিজাকে ঠাপুনি দিয়েছে এইভাবে স্বপ্নের মধ্যে। হঠাত চোখ খুলে অসমাপ্ত কাজটা পূরণ করা শুরু করেছে রজত। ধাক্কার আঘাতে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করছে সিরিজা। শরীরটাকে আটাচাকীর মতন ঘোরাতে চাইছে কিন্তু পারছে না। ঘুমের জড়তা, ঢুলু ঢুলু আচ্ছন্নভাব ওর শরীরটাকে একটু নিস্তেজ করে রেখেছে তবুও রজতের পাছার উপর পা দুটো তুলে দিয়ে ও চেষ্টা করছে সেরা সুখটুকু দিতে। রজত এই ভোরবেলাতেও সুখ পাচ্ছে। ইচ্ছেমতন শরীরটাকে টেনে হিচড়ে অবাধ সঙ্গম করছে আর কি সুখ চাই?

ও ঠাপাচ্ছে ভীষন ভাবে। রজতের বলশালী বীর্যবান শরীরের দাপটটাকে মেনে নিতে হচ্ছে সিরিজাকে। সিরিজার কামার্ত যৌবন চেটেপুটে খাচ্ছে রজত। স্তন কামড়াচ্ছে, বোঁটা চুষছে আরো কত কি করছে।

ফ্রিকোয়েন্সীটা কখনও নষ্ট হতে দেবে না সিরিজা। রজতের উত্তেজনাকে কখনও কমতে দেবে না ও।

ঠিকমতন নিজেকে সমর্পণ করে এইভাবেই আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছিল সিরিজা। রজত যাতে ভালোমতন ওকে করতে পারে।

রজত স্পীড বাড়িয়ে দিয়েছে। মেলট্রেনের স্পীডের মতন ওকে গুতোচ্ছে। সুখটাকে জিইয়ে রেখে ও সিরিজার মুখটাকে ধরে বললো, "এবার বুঝতে পারছ তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব কি করে?"

সিরিজার জবাবের আশা না করেই ওর রসালো ঠোঁট দুটো চুষতে চুষতে রজত বললো, "এই সুখ আমি কোথায় পাব সিরিজা?"

সিরিজার শরীরটা বারবার নিথর হয়ে রজতের শরীরের সাথে মিশে যাচ্ছে। এতক্ষণ ধরে ওকে করছে রজত।

উত্তেজনাকে ধরে রাখার কি প্রচন্ড ক্ষমতা রজতের। তাহলে কি বীর্যপাত এখনও করবে না ও?

সিরিজা রজতের ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে এবার ওকে চরম পুলকে নিয়ে এসেছে। সময় হয়েছে। রজত আসতে আসতে বীর্যধারা নিঃসৃত করছে। চুমুতে চুমুতে আটকে গেছে ওর আর সিরিজার দুই ঠোঁট। বীর্যরসটাকে ফুলকির মতন ছেটাতে ছেটাতে রজত নিজেও দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছে। সিরিজা ওকে জড়িয়ে রেখেছে শরীরের ওপর।

-- "আঃ আঃ। তোমাকে চোদার সুখ এমন। আঃ আঃ। আমাকে জড়িয়ে রাখো সিরিজা। ছেড়ো না আমাকে।"

সিরিজাকে ওকে জড়িয়ে রেখেছে। স্খলণের এই মূহূর্তটাই তো আসল। শরীটাকে এ সময় শরীর থেকে কিছুতেই বিচ্ছিন্ন করতে নেই।

বেশ কিছুক্ষণ রজতকে বুকে ধরে জড়িয়ে রাখার পর সিরিজা উঠে বসেছে। রজতও তাই। ওর পুরুষাঙ্গ শিথিল। কিন্তু তখনও তা সিরিজার যোনীর ভেতরে। প্রবল আবেগে চুম্বিত হচ্ছে দুটি ঠোঁট। রজত সিরিজার মাথাটা দুপাশ দিয়ে ধরে ওর ঠোঁটদুটোকে আঙুর চোষার মতন চুষছে। কি সাংঘাতিক আনন্দ হয়েছে ওর। ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে বারবার মিশিয়ে দিচ্ছে আরো গভীরে। দুজনে দুজনের দুদিকে পা ছড়িয়ে বসে আছে। শুধু রজত নীচে, সিরিজা উপরে। দূর থেকে দেখে মনে হবে কোন নারী আর পুরুষ মিলে মিশে অর্ধনারীশ্বর হয়ে গেছে।

- "উম। ঘুম থেকে তুলে করলে আমাকে। এবার ছাড়ো আমাকে। বাথরুমে যাই।"

-- "ছাড়ব না। এভাবেই জড়িয়ে রাখব তোমাকে। আর বেলা না হওয়া অবধি তোমার ঠোঁটে চুমু খাবো। তারপর আবার করবো তোমাকে।"

- "উম, তারপর আমার পেটে যদি তোমার বাচ্চা চলে আসে?"

-- "বাচ্চা থাকবে। আমিও থাকব। আর আমি খেতে দেব না ওকে এটাকে।"

বলেই সিরিজার স্তনটা আবার মুখে নিতে যাচ্ছিলো রজত। যেন শিথিল হওয়ার পরেও এতটুকু জোশ কমেনি ওর।

- "এই ছাড়ো না। আমি এবার বাথরুমে যাবো। একটু যেতে দাও আমাকে।"

-- "আমিও যাবো।"

- "উম।" (আবার ঠোঁটে চুমু)

-- "তুমি যেখানেই যাবে, আমি সেখানেই তোমার সাথে সাথে যাবো। ছাড়ব না তোমাকে।"

সিরিজা এবার রজতের গলাটা জড়িয়ে ধরলো। ওর ঠোঁট দুটোকে অসম্ভব আবেগে চুমু খেতে খেতে রজত সিরিজাকে পাঁজাকোলা করে বাথরুমে নিয়ে এল।

সিরিজার নগ্ন শরীরটাকে যেন ছাড়তেই চাইছে না রজত।

- "ছাড়ো না, ছাড়ো না। দেখ তোমার রসটা লেগে আছে এখানে। ধুয়ে নি।"

সিরিজাকে নিজের হাতে জায়গাটা পরিষ্কার করতে দিচ্ছে না রজত। কি সাংঘাতিক অধিকার বোধ ওর সিরিজার প্রতি। মোলায়েম আঙুলের আদরে নিজেই মগ থেকে জল ঢেলে ধুয়ে দিচ্ছে জায়গাটা।

রক্তস্রোতে তখনও আগুন। কমোডের উপর সিরিজাকে বসিয়ে আসতে আসতে জিভ ছুয়ে দিয়েছে স্পর্শকাতর জায়গাটায়। বেঁচে থাকার কি অবাধ লাইসেন্স। যৌনতার এমনই আবেগ। যেন কিছুতেই চট করে ছিটকে আসা যায় না।

- "এই তুমি আর কোর না।"

কে কার কথা শোনে? তীব্র দাহ শরীরের ভেতরে ও বাইরে। জিভ ওঠানামা শুরু করেছে ঐ স্পর্শ কাতর স্থানে। রজত সিরিজার দুটো পা ধরে মুখ নীচু করে আগ্রাসী চোষনে সব রস চেটেপুটে খাচ্ছে। সিরিজা রজতকে দেখছে, মুখে কথা নেই। অপলক দৃষ্টিতে। যেন জেদী রজতকে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না।

যৌনতার খোলামেলা সম্পর্ক যেন এমনই হবে। শরীরটাকে বারে বারে মেলে ধরতে হবে। এক অপরের স্বাদ আস্বাদন করবে। সিরিজার যৌনভান্ডারের স্বাদ রজত এমন ভাবেই নেবে। যোনীনালীটা চুষতে চুষতে রজত পাগলাটের মতন হয়ে যাচ্ছিলো।ও প্রায় জিভ দিয়ে খুটে খুটে খেতে লাগলো ভিতরটা।

হঠাতই মূত্রবেগ। রজতের মাথাটা এক ঝটকায় সরিয়ে দিতে চেয়েও যেন পারলো না সিরিজা। ও কি দেখছে ও নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছে না। রজতের মুখে ঝড়ে পড়ছে পেচ্ছাপের ধারা। মুখে কোন বিরক্তির ভাব নেই। নেই কোন ঘেন্না। প্রবল কামজ্বরে সিরিজার নিঃসৃত পেচ্ছাপ কে পান করছে রজত। যেন মানসিকভাবে তৈরী রজত। শিহরণ, রোমাঞ্চে নিজেকে নতুন ভাবে চিনছে সিরিজা। যৌনতার কামলালসায় এও কি হয়? অসম্ভব বলে কিছু নেই। কথায় বলে নিজের মূত্র পান করলে নাকি আয়ু বাড়ে। কিন্ত যৌনসঙ্গিনীর মূত্র পান করলে? এর সঙ্গে আয়ু বাড়ার কোন সম্পর্ক নেই। পুরোটাই বিকৃত। যৌনতার লালসায় পুরষ তার সঙ্গিনীর মূত্র পান করতে পারে। এমন অনেকবারই দেখা গেছে।

সিরিজাকে বাথরুম থেকে তুলে নিয়ে এসে আর শোবার ঘরে গেল না রজত। ওকে নিয়ে বাইরের ঘরের সোফাটার উপরই বসে পড়লো। সিরিজা রজতের বুকে মাথা রেখেছে। এখন এ অবস্থায় ঘন্টা দুয়েক ঘুম। তারপর যদি মন চায় তাহলে আবার......
 
।। দশ ।।

সকালবেলা সোফায় শুয়ে বেশ কিছুক্ষণ থাকার পর চোখ মেলে চেয়ে সিরিজাকে খুব করে আদর করতে ইচ্ছে করছিল রজতের। খুব করে চুমু খাচ্ছিল সিরিজাকে। রাত্রিবেলার যৌনসুখের প্রতিদান দিচ্ছিল।

রজতের বুকেই মুখ রেখে শুয়েছিল সিরিজা। রজত ওর মুখটা বুকের উপর থেকে তুলল। দুহাতে মুখটা ধরে চুমু খেয়ে বললো, "আজ তোমার কাছে থেকে আরো সুখ পাব তো? মোট কতবার করতে দেবে বল আমাকে?"

সিরিজা বললো, "ভোরবেলা আমার উপর কেমন উঠে গেছিলে খেয়াল আছে? বাথরুমে আমার নোংরা জিনিষটা খেলে? আমি কত করে আটকাতে চাইলাম, পারলাম না তোমাকে।"

সিরিজার ঠোঁটে একটা গাঢ় চুমু খেয়ে রজত বললো, "এরপরে আমি যখন আবার খাবো তখন চোখ বন্ধ করে নেবে। তাহলে আর খারাপ লাগবে না তোমার।"

- "ধ্যাত। দুষ্টু কোথাকার। খালি দুষ্টুমি করে। আমি আর খেতেই দেবো না তোমাকে। দেখে নিও। ইস।"

-- "ঠিক আছে, ঠিক আছে, আমার সিরিজার ঐ ঢোকানোর জায়গাটা চুষতে পেলেই আমার যথেষ্ট। আমার আর কিছু চাই না। তুমি যেচে আমায় চুষতে দেবে তাহলেই হবে ব্যাস। খুশী তো?"

সিরিজা রজতের বুকেই মুখটা রেখে পেছন থেকে দুটো হাত দিয়ে পিঠটা জড়িয়ে বললো, "কেউ আমার ঐ জায়গাটায় মুখ রাখুক। জিভ ছোঁয়াক। আমি এটাই দেখতে চেয়েছিলাম, কেমন লাগে। তুমি ওটা মুখে দিয়েছ, আমার আর কিছু চাই না।"

খুশীতে ওর চুম্বনরেখা আলতো ছুয়ে যাচ্ছিলো রজতের বুকের উপর। মুখটা নীচু করে রজত বললো, "তোমার খুব সেক্স, তাই না সিরিজা?"

- "তোমারও কি কম?"

-- "তাহলেও তোমার ব্যাপারটা আমার ভীষন ভাবে নাড়া দিয়েছে সিরিজা। এই সুখানুভূতি কোনদিন পাব আশা করিনি। তুমি তো এখানকার মেয়ে নও। একলা পেয়ে তোমার শরীর ছুঁলে যদি আমার বদনাম হয়। তাই প্রথম দিকে একটু ইতস্তত ছিলাম। তারপর তুমি যখন আমাকে সাহস দিলে আমি ভরসা পেলাম। এখন মনে হয় আর অফিসে না গিয়ে সারাদিন বাড়ীতেই বসে থাকি। কাজকর্ম্মটা শিকেয় তুলে দিতে চাই।"

- "তুমি চাকরী কর?"

-- "করি। তবে রোজ যাই না। ভাবছি ছুটি নেব। তোমাকে নিয়ে কদিন বাইরে ঘুরতে যাবো। একটু মজা করে আসবো তোমায় নিয়ে।"

সিরিজা রজতের বুকে মাথা রেখে কথাগুলো শুনছিল। একটা আঙুল দিয়ে রজতের বুকে কি যেন লিখতে লাগলো আনমনে। খোলা বুকে দাগ কাটছে। যেন স্লেটের উপর কোন লেখা লিখছে।

রজত বললো, "কি ভাবছ?"

- "কিছু না।"

-- "বলো না? আমার কোন মাথাব্যাথা নেই কাউকে নিয়ে। ভাবছ কোথায় যাবো তোমাকে নিয়ে? কেউ যদি তোমায় দেখে ফেলে?"

- "না তা না।"

-- "তবে কি ভাবছ?"

- "ভাবছি তুমি যা বলেছো সেটাই কতটা ঠিক?"

-- "কোনটা?"

- "এই আমার সেক্সটা নিয়ে তুমি বলছিলে?"

-- "ভালোই তো। তোমার এত সেক্স। ঐ উজবুক স্বামীটার সাথে তুমি থাকতে কি করে? বাচ্চা, স্বামী আর কি কোনদিন তোমার সমস্যা হিসেবে দেখা দেবে কোনদিন?"

- "না তা দেবে না। তুমি তো আমায় নিয়ে নিয়েছ। তোমার কাছে এলাম। মনে হোল তুমি যা চাও আমি তাই দেব।"

-- "আমি এই সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি সিরিজা। আমারও মনে হয়েছিল তোমাকে কেউ পেলে বর্তে যাবে। তুমিও তো অনেকদিন কোন সুখ পাও নি পুরুষ মানুষের কাছ থেকে। অমন স্বামী থাকলে সুখ পাওয়া যায় সহজে?"

- "যায় না গো। আমাকেও বলেছিল আমার গ্রামের মেয়ে রোহিনী। বিয়ে করার সময় বললো, "তোর যা সেক্স এই লোকটার সাথে বিয়ে করে সুখী হবি তুই?" তখন তো বুঝিনি। বিয়ে করার সময় তখন কি ভালো। তারপরেই দেখলাম ও একটা জঘন্য। বাচ্চাটা এক রাতে ভুল করে পেটে চলে এল। তারপরই ভাবলাম খুব ভুল করে ফেললাম। শহরে পালিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। যদি একটা মনের মানুষ খুজে পাওয়া যায়? এখন ভাবি এখানে এসে কত উপকার হয়েছে আমার।"

-- "ও তোমায় কোনদিন সুখ দিত না সিরিজা?"

- "ও মদ খেয়ে আসতো। আর আমার পাশে নাক ডাকিয়ে ঘুমোত। আমি যন্ত্রণায় কাতর হতাম। দেহের জ্বালা দেহে রেখেই শুয়ে পড়তাম। আর ভাবতাম আমারও কি সুখ পাওয়ার অধিকার নেই?"

রজত অনেকক্ষণ বাদে একটা চুমু খেল সিরিজাকে। যেন ঐ সুখটা দেওয়ার জন্য ও কত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সিরিজার ঠোঁটে জিভের প্রলেপ লাগাতে লাগাতে বললো, "আজ থেকে রানী করে রাখব তোমাকে। কেউ বলবেই না তুমি আমার বাড়ীতে কাজ নিয়ে এসেছিলে। তোমার যেমন আমাকে দরকার, আমারও তোমাকে ভীষনভাবে দরকার সিরিজা। তুমি যেমন সুখ পেতে জানো তেমন সুখ দিতেও পার তুমি। তোমার জায়গা কেউ নিতে পারবে না।"

সিরিজার বুকের মধ্যে মাথা গুঁজে বেশ কিছুক্ষণ বসে রইলো রজত। সিরিজা ওকে হাত দিয়ে জড়িয়ে রেখেছে। রজত মুখটা একটু তুলে বললো, "আমার সন্মন্ধে কিছু জানতে ইচ্ছে করে না তোমার?"

- "তুমি তো ভীষন কামুক আর কি?"

-- "আমি অনেকটা তোমার মতই সিরিজা। যৌনতা আমার কাছে স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে একটু উগ্র হয়ে যাই আর কি। আসলে তোমার শরীরটা পেলে তখন মনে হয় আমার সত্যিকারের সাধ এতদিনে পূর্ণ হোল। ব্যাটা ছেলে হয়ে জন্মেছি। মেয়েছেলেদের স্বাদ পাবো না তা কি হয় না কি?"

- "তোমার বউ তোমাকে সুখ দেয় নি?"

-- "সুখ দিতে জানলে তবে তো দেবে?"

- "কেন?"

-- "সবাই তো আর তোমার মতন নয়। কিছু কিছু মেয়েমানুষ আছে, তারা জানে সুখটা শুধু পুরুষমানুষের একার।"

একটু থেমে রজত আবার বললো, "ওখানে মেয়েদের আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই। জড়পদার্থের মতন কিছুক্ষণ শুয়ে কাটিয়ে দিল। ভাবল ঐটুকু দিয়েছে, ওতেই অনেক। এদিকে স্বামী যে সন্তুষ্ট হয় নি সেদিকে খেয়াল আছে তার? বিয়ে করতে গেল কেন? আমি যে নেগলেক্টেড হচ্ছি সেদিকে খেয়ালই নেই তার।"

সিরিজা রজতকে ধরে ওর কোলে শুইয়ে দিল। চুলে বিলি কাটতে লাগলো। বললো, "আমি তোমার পুরোন কথা আর মনে করতে দেব না। আমার কাছে তুমি মুক্ত। তোমার ইচ্ছেটাই শেষ কথা।"

রজতের মনে হোল ও যেন আনন্দের আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। চোখটা আবার একটু বুঁজে ফেলেছে। ঘুম ঘুম আসছে। সিরিজা চুলে হাত বোলাচ্ছে ওর ভালো লাগছে।

কিন্তু ও কি এটা ভাবছে? এই সিরিজা। গনগনে আগুনের মতন তার যৌবন। যে কোন দামাল পুরুষকে সে চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারে। যৌবনের জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে অনেক সেয়ানা সাঁতারুকেও। এক নদীতে কতদিন সাঁতার কাটবে? তারপর মনপ্রাণ যদি তার না ভরে?

একটু পরে সিরিজাকে নিয়ে রজত বাথরুমে ঢুকল চান করতে। সোফা থেকে ওঠার সময় দুজনেই উলঙ্গ। সিরিজা বললো, "এই তাড়াতাড়ি কিছু একটা পড়ে নাও। তারপরে যদি ঘরে হঠাত লোক চলে আসে।"

-- "এখন আর কে আসবে? তার থেকে দুজনে মিলে চল একসাথে চানটা সেরেনি।"

রজতই সিরিজাকে জোর করলো। দু জোড়া তোয়ালে গাযে জড়িয়ে ওরা তখন বাথরুমে জলে গা ভাসিয়ে দেওয়ার অপেক্ষায়। সিরিজা আগে ঢুকল। রজত ঢুকল ওর পেছনে পেছনে। ঢুকেই বাথরুমের দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দিল রজত।

সোফার সামনে টপ টেবিলটার উপরে পড়ে রজতের মোবাইলটা। অনেকক্ষণ ধরে ওটা বাজছে। রিং হচ্ছে। একবার, দুবার নয়, অনেকবার। চার পাঁচ বার ধরে ওটা বেজে তারপরে থেমে গেল। ভেতরে জলে ভিজে জোড়ায় সিক্ত হচ্ছে রজত। ওর আর তখন খেয়াল নেই যে মোবাইলটা বাজছে।

চান করে অবশ্য বেরিয়ে এল। তোয়ালেটা গায়ে জড়িয়ে টেবিলটার কাছে এসে মোবাইলটা হাতে নিল রজত।

সিরিজা শোবার ঘরে ঢুকে তোয়ালেটা দিয়ে গা মুছছে। ওর পরণে তখনও কিছু নেই। চান করে ব্লাউজ শায়া চাপানোর আগে ভিজে গা টা মুছছিল ভালো করে। রজতকে ভেতরের ঘরে ডাকল। বললো, "কার ফোন গো?"

-- "অনেকক্ষণ ধরে বাজছিল। আমিও শুনছিলাম।"

মোবাইলটা হাতে নিয়ে রজত বললো, "দিবাকরের।"

- "ও তোমার সেই বন্ধু। যে কাল এসেছিল। কথা বললে? কি বলছে?"

রজত মোবাইলটা কানের কাছে লাগিয়ে বললো, "না কথা বলিনি। দেখি ও কি বলতে চায়।"

রজত দিবাকরকে ধরার চেষ্টা করলো। সিরিজা তখন একটু রজতের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। রজতকে দিবাকর কি বলতে চাইছে সেটা শোনার চেষ্টা করছে।

ওকে লাইনে পেয়ে যাওয়ার পর রজত বললো, "কি ব্যাপার, ফোন করেছিলে নাকি?"

সিরিজা আরো এগিয়ে এসে হাতের তোয়ালেটা দিয়ে রজতের মাথা ঘাড় সব মুছে দিতে লাগলো। ঐ অবস্থাতেই রজত বললো, "তারপর? কি খবর আর বল।"

- "গুরু আমার কাছে তুমি খবর জিজ্ঞাসা করছো? খবর তো এখন সব তোমার কাছে। নিউজ পেপারের সব হেডলাইন এখন তোমাকে নিয়ে।"

-- "হেঁয়ালি করছো? কিসের খবর?" (রজত যেন জানে না কিছুই।)

- "তোমার ধারে কাছে কেউ নেই তো?" (দিবাকর যেন ফোনের মধ্যেই রজতের খুব কাছে সিরিজার উপস্থিতি টের পাচ্ছে।)

-- "না নেই। বলো।" (মজা করছে। দেখছে দিবাকর কি বলে? সিরিজাও একদম ফোনের দিকে মুখ বাড়িয়ে।)

- "ঐ যে কাল গিয়ে তোমার ফ্ল্যাটে দেখে এলাম।"

-- "কি দেখলে এসে?"

- "ঐ যে তোমার নতুন পার্টনার। পুরো তাজ্জব বনে গেছি মাইরি।"

-- "কথা বলবে না কি একবার?"

রজত দিবাকরকে পুরো চমকে দিল। উল্টোদিক দিয়ে দিবাকর রজতের কথা শুনে পুরো ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেছে।

- "মানে?"

-- "মানে মানে আমার পাশেই আছে। চাও তো কথা বল একবার।"

এই বলে রজত সিরিজার কানে মোবাইলটা দেওয়া মাত্রই উল্টোদিক খেকে দিবাকর লাইনটা ছেড়ে দিল।

সিরিজা হেসে বললো, "ও তোমার পিছু ছাড়বে না দেখছি।"

রজতও হাসছে। বললো, "না না ও খুব ভালো। আমি একটু মজা করছিলাম।"

বুকে ব্লাউজ লাগাচ্ছিল সিরিজা। মুখ নীচু করে ব্লাউজের বোতামগুলো লাগাতে লাগাতে রজতকে বললো, "তোমার এখানকার লোকগুলো তো তাও ভালো। আর আমার গ্রামের ছেলেগুলো ছিল ভীষন বদমাইশ। খালি তাকাতো আমার দিকে।"

রজত বললো, "কি রকম?"

- "ঐ যে, ঘর থেকে যখনই বেরোতাম, চোখ পড়ত আমার শরীরের দিকে। খোলা হাওয়ায় কি আর সব সময় বুকের বাঁধন ঠিক রাখা যায়? একটু যেই অন্যমনস্ক হয়েছি অমনি দেখি তাকাচ্ছে আমার বুকের দিকে। তারপর যেই ঘাড় ঘুরিয়েছি অমনি সাইকেলে চড়ে চম্পট।"

-- "সাইকেল?"

- "হ্যাঁ গো সাইকেল। আমি মাঝে মাঝে টিউকলে চান করতাম। আমার বুকের উপর ভিজে কাপড়টা লিপ্টে থাকত। পিঠ দেখা যেত, পেট দেখা যেত। ঐ ছোঁড়াগুলো সাইকেলে চড়ে ওখান দিয়ে যেত। আমাকে দেখেই একটু দূরে দাঁড়িয়ে পড়ত। তারপর গাছের ফাঁক দিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখত আমায়। আমি চোখ রাঙালে পালিয়ে যেত। আবার অন্যদিন ঘুরে ফিরে আসতো। খালি নজর করত আমায়।"

-- "কেন তোমার ভালো লাগত না?"

- "কেন? ভালো লাগবে কেন? আমার এই শরীরটা কি সবার জন্য নাকি? আমারও কি পছন্দ অপছন্দের দাম নেই? আমি বুঝি মেনে নেব? কেউ আমাকে ফ্যাল ফ্যাল করে দেখবে। আর আমি বুঝি তাকে কিছু বলব না?"

-- "আচ্ছা বেশ। তারপরে আর?"

- "তারপরে আর কি? পালিয়ে এলাম। ঐ চালাঘরের মধ্যে থেকে আমি তাহলে দমবন্ধ হয়ে মরে যেতাম।"

রজত সিরিজার কথাগুলো মন দিয়ে শুনছিল। বললো, "তোমার একটা পাকাপাকি আশ্রয়ের খুব দরকার ছিল। যেখানে তুমি খুব শান্তিতে থাকতে পারবে। আমার এখানে তোমাকে আর কেউ নজর করবে না।"

- "আর একটা কথা বলব। তুমি কিছু মনে করবে না।"

-- "করবো না বলো।"

- "আমাকে না আর একজন খুব জোর করেছিল।"

-- "কে?"

- "আমি বাধা দিয়েও তাকে আটকাতে পারিনি।"

-- "কে সে?"

- "তুমি চিনবে না। আমি ঝড়ের রাতে তার বাড়ীতেও একদিন চলে গেছিলাম। তারপর।"

-- "তারপর কি? রজতের মুখে যেন কৌতূহল, উদ্দীপনা, শোনার আগ্রহ ফেটে পড়ছে। তারপর?"

- "লোকটা আমাকে নিয়ে শুতে চেয়েছিল। ভীষন পাজী। খালি মনে মনে ফন্দী আঁটত। কখন আমাকে জড়িয়ে ধরবে। ওকে বুঝতে পারিনি। বেটা তলে তলে এত বদমাইশ। তারপরে একদিন জোর করে করলো।"

-- "কি করেছে?"

- "আমি বুঝতে পারিনি বুড়োটার এত কাম। ও শুধু জিভ বার করে তাকিয়ে থাকত আমার এই বুকের দিকে।"

রজত শুনছে। সিরিজা বলছে, "ওর পঞ্চান্ন বছর বয়স। এই বয়সেও বিয়ের মালা গলায় দেয় নি। চোরাকারবারীর ব্যাবসা করে ভালো একটা পয়সা করেছে। তিনতলা বাড়ী। সেখানেই থাকত। মেয়েমানুষের প্রতি লোভ প্রচুর। ঐ অঞ্চলে ভাড়াটে মেয়ে তো বিশেষ পাওয়া যায় না। ফুর্তী করার জন্য আমিই জুটে গেলাম।"

-- "তুমি ওখানে গেলে কেন?"

- "যাই নি। সেদিনের ঐ দূর্যোগ, ঝড়বৃষ্টিই আমাকে টেনে নিয়ে গেল ওর বাসাতে। ও রোজ বাইক চালিয়ে ফিরত নির্জন রাতে। ওখানে বহূ বছর থেকেছে। একসময় মাস্তানী করত এলাকায়। হঠাত কেউ এসে ওকে রাস্তা আগলে ভয় দেখাবে সেরকম বুকের পাটা কারুর নেই। বাইক চালিয়ে আসতো, আর এদিক ওদিক তাকাত যদি কিছু চোখে পড়ে যায়। যদি চোখে পড়ে যায় আমাকে।"

-- "তুমি? অতরাত্রে? ওখানে কি করে?"

- "আমি তখন ওদের অঞ্চলে নতুন গেছি। স্বামীর ঘর ছেড়ে দিয়েছি। ওর কোন সাকরেদ ছিল। নাম যতীন। ঐ ওকে খবরটা দিয়েছিল - "তোমার অঞ্চলে নতুন একটা সুন্দরী মেয়ে এসেছে গো। এদিকেই আশে পাশে কোথাও থাকে। ওর কোন মরদ নেই। অন্য কোথাও থেকে এসে এখানে একটা ছোট্ট চালাঘরে বাস করছে। একটা কোলের বাচ্চাকে সাথে নিয়ে থাকে।" আমাকে পুকুরপাড়ে দেখে ফেলেছিল ওর সাকরেদটা।"

- "আমি তখন আলগা কাপড় জড়িয়ে চান করছি। ঐ গিয়ে বদমাইশটকে বলেছিল - "তোমার তো ভালো একটা মাগী দরকার। এখানে নতুন এসেছে। তাড়াতাড়ি কব্জা করে নাও। নইলে পাখী ফুরুত করে পালিয়ে যাবে।"

রজত অবাক হয়ে শুনছে। বললো, "কিন্তু ঐ ঝড়বৃ্ষ্টির রাতটা?"

- "হ্যাঁ প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি। রাত বিরেতে আকাশে তান্ডব শুরু হয়ে গেছে। আমার ঘরে জল ঢুকছে। আমি তখন ভাবছি কি করবো। দেখি বাইক চালিয়ে সটান চলে এসেছে আমার কাছে। ঐ ঝড়বৃষ্টিতেও। কিরকম ভালো মানুষের মতন বললো - তোমার কথা শুনেছি। এখানে নতুন এসেছ। কিন্তু এই বৃষ্টিতে তো টিকতে পারবে না। তার থেকে আমার কাছে চল। আমার বাসায় থাকবে। ওখানে কোন অসুবিধে হবে না। আমি লোকটাকে চিনি না। বিপদে পড়ে ভাবছি কি করবো। তখনই আবার বললো - "ভয় নেই। আমাকে এখানে সবাই চেনে। তুমি যার বাড়ীতে থাকবে তার নাম মোহন।" মোহনকে এক ডাকে সবাই চেনে। লোকটাকে বয়স্ক দেখে একটু ভরসা হোল। ভাবলাম দেখি না একটু পরখ করে। বেগতিক দেখলে পালিয়ে যাবো। আসলে ঐ বাচ্চাটার জন্যই আমাকে ওর সাথে যেতে হলো।"

-- "তারপর?"

- "তারপর দেখলাম খালি আমার পেছনে ঘুরঘুর করছে। আমাকে চোখের সামনে দেখতে না পেলেই মাথা খারাপ। ভয় হচ্ছিল হঠাতই না একটা কান্ড ঘটিয়ে ফেলে। ও প্রচন্ড ব্যাকুল হতে শুরু করেছে। মাথার মধ্যে পোকাগুলো কিলবিল করছে। তারপরই হঠাৎ।"

-- "কি?"

- "আমাকে কাছে পেয়ে দুম করে জড়িয়ে ধরলো। বেশ গজরাতে গজরাতে বললো - "যথেষ্ট হয়েছে। আমি আর ধৈর্য রাখতে পারছি না। তোমার যখন মরদ নেই তখন আমি কি কাউকে ভালোবাসতে পারি না? তাকে একটু আদর করতে পারি না? দাও আমাকে একটু আদর।" বলেই আমাকে আরো পেঁচিয়ে ধরলো। আমি তখন নিজেকে ছাড়াতে পারছি না। ঐ দস্যুটার মুখটা তখন আমার বুকের দিকে ধেয়ে আসছে রাক্ষসের মতন। আমাকে ভীষন ঘস্টাঘস্টি করলো।"

রজত মুখ দিয়ে কোন কথা বলতে পারছে না। সিরিজা ওকে ভীষন আকুল হয়ে জড়িয়ে ধরলো এবার। ওর মাথাটা ভরাট বুকের উপর নিয়ে গিয়ে বললো, "আমার এই বুকটাতে মুখ রাখতে চেয়েছিল। আমি রাখতে দিই নি। পালিয়ে এসেছি তারপর।"

-- "পালিয়ে এলে?"

- "হ্যাঁ পালিয়ে গেলাম। ওর গালটায় জোরে নখ দিয়ে আঁচড় দিয়ে পালিয়ে গেলাম।"

রজতের মুখটাকে বুকের মধ্যে শক্ত করে চেপে ধরেছে সিরিজা। বললো, "দেখ - এখানে মুখ রেখে। তুমি ছাড়া আর কারুর স্পর্শ নেই এখানে। এই বুকটাকে এখনও কেউ ছুতে পারেনি তুমি ছাড়া।"

রজত যেন আস্বস্ত হলো এবার।

সিরিজা চুমু খাচ্ছে রজতকে। ওর শরীরটাকে যেন আবার নতুন করে পেতে ইচ্ছে করছে রজতের। সিরিজাকে চুমুর সাড়া দিতে দিতে রজত বললো, "এই দিবাকরকে একটা ফোন করবো? ও তো তখন লজ্জায় ফোনটা ছেড়ে দিল। ওকে ডাকি। সন্ধেবেলা। খুব মজা হবে। তোমার সঙ্গে খুনসুটি করবো। ও দেখবে। খুব মজা হবে আর কি?"

সিরিজা রজতকে জড়িয়ে রেখেছে। ওর ভিজে চুলটা চিরুনী দিয়ে আঁচড়ে দিতে দিতে বললো, "আমায় কি করতে হবে?"

-- "তুমি? তুমি শুধু আমার পাশে বসে থাকবে। আমরা গল্প করবো। টিভি দেখব। আর তুমি মাঝে মাঝে আমায় আদর করবে।"

- "না না। তোমার বন্ধুর তাহলে লজ্জায় মুখ লাল হয়ে যাবে। আমি তোমাকে ওর সামনে কেন আদর করবো?"

রজতের গলা জড়িয়ে ধরে বললো, "আমার আদর কি অত সস্তা না কি? আমি তোমাকে সবার আড়ালে করবো। এই এখন যেমন করছি।" বলেই আবার একটা কপালে চুমু খেল রজতের।

রজত সিরিজাকে একটা নতুন স্বপ্ন নিয়ে দেখছে। ওকে জড়িয়ে ধরে বললো, "আমি ওকে আসতে বলছি। তোমাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাবো কাল। ওকে বলব টিকিট কাটতে। ঐ সব ব্যবস্থা করে দেবে। তারপর তুমি আর আমি। এই শহরের থেকে অনেকটা দুরে। কোথাও।"

- "কোথায় যাবে?"

-- "ধরো কোন সমুদ্রের কাছে। ভীষন ভালো লাগবে।"

- "দিবাকর যাবে না কি আমাদের সাথে?"

-- "দেখি বলে।"

রজত দিবাকরকে লাইনে পেয়ে গেল। - "কোথায় আছ তুমি?"

- "কেন?"

-- "লাইনটা ছেড়ে দিলে কেন তখন?"

- "দূর, তুমি আমাকে বলোনি।"

-- "কি?"

- "ঐ মেয়েটা তোমার পাশেই ছিল। আমি কি সব বলছিলাম।"

-- "না না আমি ইয়ার্কী মারছিলাম। সিরিজা তখন ওঘরে ছিলই না।"

- "যাই বল। তোমার কপালটা কিন্তু খুব ভালো মাইরী। তুমি জোটালে কি করে ভেবেই অবাক হচ্ছি।"

-- "মাঝে মাঝে আপনা আপনিই কখনও সখনও জুটে যায় এভাবে।"

- "আর কেউ জানে?"

-- "আর কেউ মানে? তুমি ছাড়া আর কাউকে জানানোর দরকার আছে কি? একান্ত প্রাইভেসি ব্যাপার জানিয়ে লাভ কি?"

- "ওর বাড়ীতে আর কে কে আছে?"

রজত কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে বললো, "ওর স্বামী আছে। কিন্তু স্বামীর সাথে ও ঘর করবে না।"

- তুমি পরস্ত্রী হরণ করেছো! শালা!"

রজত ফোনেই হাসতে লাগলো। বললো, "তুমি ঠিক ধরেছ।"

উল্টোদিক থেকে দিবাকর বলতে লাগলো, "একটা কথা বলব। কিছু মাইন্ড করবে না তো?"

-- "না করবো না বলো।"

- "ওর বর যদি কোনদিন এসে হাজির হয়?"

-- "বর আসবে না। সে সুযোগ নেই। সিরিজা কোনদিনই আর ওখানে ফিরে যাবে না।"

- "বাঃ বাঃ। এতো উপরি লাভ।"

-- "তা এতই যখন ওকে মনে ধরেছে তোমার। সন্ধেবেলা এস না? একটু জম্পেশ আড্ডা মারা যাবে।"

- "আমি? যাবো?"

-- "কেন এখানে তুমি যখন তখন আসতে পারো। তোমার প্রবেশ অবাধ। কে তোমায় মানা করেছে?"
 
দিবাকর উল্টোদিক থেকে কি বলবে ভাবছে। রজত বললো, "আর শোন। আজ কিন্তু লিকার চলবে সাথে। ভরপুর গ্যাঁজাবো, আর সেই সাথে জমিয়ে আড্ডা মারবো একসাথে। তুমি ঠিক সন্ধে ছটার মধ্যে চলে এস। আরো কিছু দরকারী কথা আছে তোমার সাথে। সেগুলো তুমি এলে বলব। আর হ্যাঁ, আসবার সময় হুইস্কিটা আনতে ভুলো না।"

রজত ফোনটা ছেড়েছে সবে। দেখলো সিরিজা এসে দাঁড়িয়েছে সামনে। ওকে কিছু বলতে চাইছে।

রজত ওকে বললো, "তুমি কিছু বলবে?"

- "না ভাবছিলাম, তোমার বন্ধু আসবে। ওকি রাত্রিতে এখানে থাকবে?"

-- "কেন তোমার অসুবিধা হবে?"

- "না, অসুবিধা নয়। যদি.....?"

রজত হঠাতই এগিয়ে এসে সিরিজার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। ওর কোমরটা দুহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে শায়া আর ব্লাউজের মাঝখানে নাভির কাছটায় মুখ রাখলো। নাভিটাকে ভীষন আদর করতে ইচ্ছে করছিল ওর।

-- "কেন? আমার সিরিজাকে আমি আদর করতে পারবো না বলে?"

রজতের মাথাটা তখন দুহাত দিয়ে ধরেছে সিরিজা।

- "এই ছাড়ো আমার সুরসুরি লাগছে।"

রজত সিরিজার নাভীতে জিভ ছোঁয়াচ্ছিল। শায়ার তলায় হাত ঢুকিয়ে পাছাটাকে খাবোলে ধরলো এক হাতে। সিরিজার নাভীতে জিভের প্রলেপ লাগাতে লাগাতে বললো, "আমার সিরিজাকে আমি কিভাবে আদর করি দিবাকর কি জানে? কিভাবে চুমু খাই? এই শরীরটার উপর আমার কতটা টান আছে ও কি জানে? আমার সিরিজা শুধু আমার। এখানে আমি কাউকে ভাগ বসাতে দেব কেন?"

শায়ার তলায় দুটো হাতই ঢুকিয়ে রজত ওর নাভীটকে জিভ দিয়ে চাটার সাথে সাথে ওর পাছা দুটোকেও সমানে মনের সুখে চটকাচ্ছিল। একটা সময় মনে হচ্ছিল সিরিজার শায়াটাই না খুলে পড়ে যায়।

- "এই ছাড়ো। ছাড়ো না।"

সিরিজাকে আদর করতে করতে রজতের এমন অবস্থা হচ্ছিল যে সিরিজা আশঙ্কা করছিল রজত এবার হাত দুটোর সাথে সাথে মাথাটাও না শায়ার মধ্যে গলিয়ে না দেয়।

মুখটা একটু অল্প তুলে মাথাটা ওপরের দিকে করে সিরিজাকে বললো, "সন্ধেবেলা দিবাকর আসার আগে আমাকে একটু সুখের মানুষ করো না? দেখ কাল রাত্রিরের পর তোমার দেওয়া কিন্তু পাইনি।"

রজতের জাপটে রাখা শরীরটাকে আগলে ধরে একনাগাড়ে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে। সিরিজা ঐ অবস্থাতেই বললো, "আমাকে নিয়ে বাইরে যাওয়ার পরও এরকম করবে তুমি। তখন দেখবে দিবাকর তোমায় আমায় দেখতে পেয়ে ঠিক খারাপ মনে করবে তখন।"

রজত বললো, "ও দেখবে ঠিক জুটিয়ে নেবে তখন এরকম। আমার সিরিজার মতন। আমি সিরিজাকে আদর করবো। আর ও ওর প্রেয়সীকে আদর করবে। আমরা দুজনে মিলে সুখের সাগরে ভেসে ভেসে বেড়াব তখন।"

সিরিজার মনে হোল রজত বুঝি ওকে ন্যাংটোই করে দেবে আবার। কোনরকমে ওকে শান্ত করে আসতে আসতে রজতকে আবার দাঁড় করাল সিরিজা। ওর চোখের দিকে তাকালো। দুটো তাড়ায় যেন ভীষন বড় একটা আকুতি। রজতের বুকে মুখ রেখে স্পষ্ট স্বীকারোক্তি।

- "থাক না কাউকে নেওয়ার। আমি তোমাকে একা পাই, তোমার ভালো লাগে না। এই সুখটা একান্তে পেলেই তো ভালো লাগে। যার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছিলাম। নইলে কি সবকিছু ছেড়েছুড়ে তোমার কাছে আসতাম?"

রজতের হঠাত মনে হোল শারীরিক আনন্দটুকুর সাথে এই রকম একটা মনের টান আগে কখনও অনুভব করেনি আগে। যৌনতার সাথে মনের টানের অসম্ভব মিল থাকলে সেই যৌনতা হয় অত্যন্ত সুখ দায়ক। তখন তার মধ্যে কোন এক ঘেঁয়েমি আসে না। স্বাভাবিক ভাবেই পুরোন ছন্দে ফিরে আসে বার বার। সিরিজার মধ্যেই একটা আলাদা সিরিজাকে দেখেছে রজত। এই অনুভূতিটা আগে কখনও আসেনি এভাবে। ও সিরিজাকে ধরে সোফার দিকে নিয়ে গেল। ভীষন একটা টানের সুখ আবদার করছে সিরিজার কাছে। আশা করছে সিরিজা ওর প্রত্যাশা পূরণ করবে। সিরিজা ওকে না করলো না। রজতকে একান্তে সুখ দেবার জন্য ও শুধু চোখের ভাষায় জানান দিল। গলাটা জড়িয়ে এমনভাবে রজতের আবদার রেখে সোফার কাছটায় এল, রজত বুঝেই গেল সিরিজা ওকে কিছু না করার জন্য ওর জীবনে আসেনি।

- "আমাকে আগে কেউ এভাবে কোনদিন কিছু বলেনি।"

রজত স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সিরিজার দিকে।

-- "কেউ এভাবে বললে তুমি খুশী হতে?"

- "হয়তো হতাম। কিন্তু সেই টানটা পেতাম না যেটা তুমি আমায় দিয়েছ।"

-- "কি?"

- "এই যে একটু আগে যে কথাটা বললে।"

-- "তুমি আমার কাছ থেকে মনের সাড়া চাও না?"

- "আমি কি চাই সেটা তোমার থেকে ভালো আর কেউ বোঝে না সিরিজা। আমার মধ্যে শরী্রি সুখ ছাড়া একটা আলাদা কাউকে ভালোলাগার ইচ্ছা আবিষ্কার করেছো তুমি। হঠাত মনে হচ্ছে কাউকে পেতে পেতে আমি বোধহয় পাগল হয়ে যাবো একদিন।"

সিরিজা রজতকে দেখছিল। ওর একটা হাত রজতের গালে রেখে বললো, "এই তুমি কি এমন পেয়েছ আমার কাছ থেকে?"

রজত কথা বলতে পারছে না। প্রবল আসক্তিতে ওর শরীরে কেমন কাঁপুনি আসছে। শরীরের টান মনের টান মিলেমিশে একাকার হয়ে কেমন ছটফট করতে শুরু করেছে বুকের ভেতরটা। সিরিজার ঠোঁটে চুমু দিয়ে পূরণ করে নিতে চাইছে হঠাত কাউকে নতুন করে ভালোলাগার মূহূর্তটাকে। কিন্তু পারছে না। তবুও ইচ্ছাটাকে চাগিয়ে রাখতে চাইছে ও।

রজত বুঝতে পারছে সিরিজার শরীরটা চুম্বকের মতন টানছে ওকে। একটানা কোন নারীর সুখ সান্নিধ্যের সুযোগ কোন মানুষ কিভাবে এমন পেতে পারে। রজতের চাওয়া আর পাওয়া এই দুটোর সামঞ্জস্য দেখে ইর্ষান্বিত হতে পারে অনেকেই। ও মনে করছে এই পৃথিবীতে ঐ আসল সুখী। বাকীরা সবাই সুখের আশায় মরে যাওয়া কোন অতৃপ্ত রোগী।

নিষিদ্ধ সম্পর্ক অনেক সময় গলে জল হয়ে যায়। যদি এটাকে কেউ এভাবে না দেখে। অনেকটা শরীরের উপর জড়ানো কুয়াশার আবরণের মতন। রোদ উঠলেই সব ঝকঝকে পরিষ্কার। রজত আর সিরিজার এত উন্মাদনার ইতিহাস। এটাকে সাদামাটা গল্প আখ্যা দিলে চলবে কি করে?

কেউ না কেউ হয়তো দেখে বলবে সত্যিকারের সুখ এভাবেও তাহলে পাওয়া যায়। হাজার হোক যৌন ফাঁকিবাজ মেয়েদের তো রজতের পছন্দ নয়। প্রেমের মুখোশ পরে শরীরের কামনা করতে না পারলে জীবনটাই ব্যর্থ। শেষ অবধি কিছু পাওয়ার আশায় বসে থাকার কোন মানেই হয় না। তীব্র-তীব্রতম শরীর তিয়াসটা তখন চাই ই চাই।

যেন শির-শিরানি অনুভূতি। কারুর প্রেম সোহাগী বউও এভাবে দিতে পারবে না। সিরিজা রজতকে কোলের উপর শুইয়ে ওর বুকের লোমগুলো আঙুল দিয়ে টানছিল। রজতের চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ও বললো, "আমি এই সুখ দিতে না পারলে তুমি আমায় রাখবে কেন? তখন তুমি আমার দিকে তাকাবেই না।"

যেন চুপটী করে বোবার মতন শুয়ে শুয়ে সিরিজার কথা শুনছে রজত। ওর সান্নিধ্যের পূজারী। চোখের সামনে ঝুলন্ত দুটি আপেল রয়েছে। বলছে খাও। কিন্তু খেতে পারছে না।

ও যাকে দেখছে সে ওর সাধের সোহাগিনী। যেমন ভাবে ভালোবাসার আপেল খাওয়াবে, তেমন ভাবেই খাবে। রজতকে যেচে কিছু চাইতে হবে না। ঐ রজতকে যেচে পাইয়ে দেবে।

রজত সিরিজার ভারী বুক দুটো দেখছে। যেন ভগবান কি দিয়েছে মাইরি মেয়েদের শরী্রে। এগুলো আছে বলেই পুরুষ করে কম্মে খেতে পারছে। নইলে কবে ফুটুস করে হারিয়ে যেত।

রজতের ঠোঁটের উপর একটা আঙুল রেখেছে সিরিজা। - "এই তুমি কখনও কাউকে মন থেকে চেয়েছ? সত্যি করে বলো দেখি এই আমাকে তুমি মন থেকে কতটা চাও?"

রজত কথা বলতে পারছিল না। অনেক কষ্ট করে বললো, "আমার মনের মধ্যে এখন সিরিজা ছাড়া আর কেউ নেই।"

এক দৃষ্টে চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। রজতকে দেখিয়ে দেখিয়ে বুকের ব্লাউজটা খুলতে খুলতে সিরিজা বললো, "ফ্যাল ফ্যাল করে শুধু চেয়ে থাকো। আর আমি না দিলে যেচে চাইতে ইচ্ছে করে না তোমার? আমার কাছে?"

রজতকে কোলে নিয়ে সিরিজা ওর ভারী স্তনের বোঁটাটা রজতের ঠোঁটে তুলে দিয়ে নির্দ্ধিদায় পান করাতে চাইছিল। ওর চুলে হাত বুলিয়ে বৃন্তটা ঠোঁটের উপরে চেপে ধরে অকপটে বললো, "আমার দিকে একদম তাকাবে না এখন। চোখটা বোজ বোজ। দেখি কতক্ষণ এই বুকের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে পারো।"

সিরিজার বুকের দুধ খাওয়াটা রজতের কাছে অনেকটা গিফ্ট অব লাভের মতন। ও মাঝে মাঝে নিজেও অনেকবার ভেবেছে। বোঁটায় যদি মেয়েদের বুকের দুধই না থাকে তাহলে মিছে মিছে টানাটানি করে লাভ কি? জোর করে তো আর শুকনো বুক থেকে টেনে হিচড়ে দুধ বার করা যায় না। তার থেকে সিরিজাই ওর ভালো। যে বুকে দুধ আছে, চুষেও আরাম, পান করেও আরাম।

যেন নিষিদ্ধ প্রণয়ের নিষিদ্ধ স্বাদ। এমন অসাধারণ প্রাপ্তিকে কখনও তুচ্ছ করতে নেই। নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।

সিরিজাও রজতকে বুকের দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে ওর বুকের কাছটায় আঙুল দিয়ে সুরসুরি দিচ্ছিল। যেন জানে ছেলেদের স্তনবৃন্তও কত সেনসেটিভ। শুধু ঠিকমত টিজ্ করা জানতে হবে। ও নিজেও উপভোগ করছিল সেই সাথে উপভোগটাও দান করছিল।

রজত বোঁটাটাকে জিভ দিয়ে চাটছে। যেন মধুর চেয়েও মিষ্টি। সুইটার দ্যান হানি। ওর কাছে বিকৃত বলে কিছু নেই। মন যা চাইবে, দেহকে তাতেই সাড়া দিতে হবে। এই ধরনের চাওয়া বা কামনা অদ্ভূত হতে পারে আনকমন হতে পারে কিন্তু আ্যাবসার্ড হতে পারে না। রজত একটা স্বাভাবিক নিয়ম ভেঙেছে। এই নিয়মভাঙাটাই ওর কাছে সুখপ্রদ মনে হচ্ছিল।

রজতের কামনাটাকে একেবারে তুঙ্গে তুলে দিয়ে সিরিজা বললো, "এই, কামের জোয়ার আসছে তোমার?"

রজতকে বুকের দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে নিজেও চোখটা বুজে ফেলেছে সিরিজা। ফোলা মাই এর বোঁটা চুম্বকের মতন আটকে গেছে রজতের ঠোঁটে। ওটা থেকে এখুনি মুখ সরিয়ে নেবে না রজত। সিরিজাও নিজে থেকে সরাবে না তৃপ্তির কোন শেষ নেই।

ব্লাউজের মধ্যে থেকে একটা স্তনবার করে ও রজতের মুখে ধরে রেখেছিল। মুখ নীচু করে রজতকে বললো, "এই, শোবার ঘরটায় চল না। এখানে হঠাৎ করে কেউ এসে গেলে?"

শুয়ে শুয়ে শিশুর ভূমিকা পালন করা ছাড়া রজতের আর কিছু ইচ্ছা নেই। তবুও ও মুখটা তুলে সিরিজার দিকে তাকাল। সিরিজা ওর চুলে হাত বুলিয়ে ওকে বললো, "চলো না ও ঘরে। আমি বিছানায় আবার তোমাকে তুলে দেব এটা।"

অনুরাগে যেন কোন খামতি নেই। বুকের দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে রজতের চুলে বিলি কেটে যাওয়া। এ যেন অদ্ভূত এক আরামের পরশ। এর থেকে সুখের আরাম কিছু নেই।

সিরিজার মাথার চুলটা তখন রজতের মাথার উপর এসে পড়েছে। রজত অনুভব করলো এটা ওর লাগাম ছাড়া উদ্দামতা। বোঁটা মুখে নিয়ে রোজ রোজ স্বাদবোধ যখন পেয়ে যাচ্ছে তখন বসার ঘরের বদলে শোবার ঘরে যেতে আপত্তি কি? ও সিরিজার হাত ধরলো না। সিরিজাই ওর হাত ধরে ওকে শোবার ঘরে নিয়ে এল।

বিছানায় রজতকে শুইয়ে এবার পুরো ব্লাউজটাই খুলে ফেললো সিরিজা। ওর মাথার ভারটা কোল থেকে তুলে এক হাতের উপর নিল সিরিজা। স্তনের বোঁটাটাকে চিমটির মতন ধরে অবিরল ধারায় ঝরিয়ে দিতে লাগলো ওর বুকের দুধটা। রজতের চোখের পর্দা সরছে না। চোঙার মতন হয়ে গেছে তখন সিরিজার বুকের বোঁটাটা। মুখখানা গোলমতন করে রজত দুধগুলো সাক করছে।

ব্রেষ্টটা তখন মনে হচ্ছে একটা শক্তিশালী চুম্বক। যেন অঢেল দুধ। আহা কত যে সুখ।

বুকের ভেতর থেকে দুধটা বেরিয়ে এসে ওর জিভ ভরিয়ে দিচ্ছিল। রজত বুঝতে পারছিল না সিরিজা এ কায়দা শিখল কোত্থেকে। এতো আ্যাডাল্ট ব্রেষ্ট ফিডিং মুভীগুলোতে দেখতে পাওয়া যায়। ও হঠাত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে সিরিজার দিকে। সিরিজা ওর স্তনের বোঁটাটা পুনরায় রজতের ঠোঁটে তুলে দিয়ে ওকে সোহাগ করে বললো, "রোজ রোজ আমার বুকের দুধ খাচ্ছো। পৃথিবীর সুখী মানুষ হতে গেলে অত ইতস্তত করলে চলে না খাও।"

আবার রজত ওটাকে খাওয়া আরম্ভ করেছে। এই দু দিনে বুকের দুধ খাওয়াটাকে বেশ রপ্ত করে ফেলেছে ও।

সিরিজা দুপুরে খাওয়ার সময়ও একটা কান্ড করলো। রজত তখন ভাত মুখে নিয়ে খাচ্ছে। সিরিজাও মাঝে মাঝে ওর মুখে বেগুন ভাজা আলু ভাজা এসব পুরে দিচ্ছিল। রজত তখন খাওয়া সবে শেষ করেছে। সিরিজা হঠাৎ ওর বুকের ব্লাউজটা ফাঁক করে ওর স্তনের বোঁটার উপর রজতের এঁটো মুখটা চেপে ধরলো। যেন পাতের শেষে দই এর বদলে সিরিজার বুকের দুধ খাচ্ছে রজত।

এটাই কি রজতের জীবনের আসল অধ্যায়? সিরিজার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরী করে সাগরের জলে দুজনেরই লজ্জা বিসর্জন। দেখা যাক এখনও তো অনেক কিছু ঘটা বাকী আছে।

সিরিজাকে জড়িয়ে ধরে রজতও তখন ছাড়তে চাইছিল না ওকে। দুরন্ত বেগে স্তনটা মুখে নিয়ে চুষছে। যেন দাবী করছে সিরিজা তোমার এই দেহ, এই ভালোবাসা, এই মন, এই বুকের দুধ আমি যেন জীবনের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পেতে পারি। স্তনটা হাতে ধরে চুষতে চুষতে ওর চোখে মুখে প্রবল লালসার ছাপ ফুটে উঠছে।

শরীরের রং বদলে যাচ্ছে। প্রবল উচ্ছাস ফেটে পড়ছে রজতের চোখে এবং মুখে। যেন পৃথিবীর কোন শক্তি নেই সিরিজাকে রজতের কাছ থেকে ছিটকিয়ে দিতে পারে। ওভাবে চেয়ারে বসে বসেই রজত গভীর আবেশে পান করছে সিরিজার স্তনের দুধ।

চট করে ওর মাথাটা বুকের উপর থেকে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে একটু ছাড়িয়ে নিয়ে অল্প দূরে দাঁড়িয়ে মিচকী মিচকী হাসছে সিরিজা। যেন হঠাতই সুখ প্রাপ্তির ব্যাঘাত ঘটে গেছে তখন। রজত চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়েছে সিরিজাকে ধরবে বলে। মুখে বিরক্তি নেই। তবুও এমন সুখ প্রাপ্তির আশাটাকে ভঙ্গ হতে দিতে ও চাইছে না। সিরিজা আবার এক ঝটকায় টেবিলের আর এক প্রান্তে সরে গিয়ে রজতের দিকে তাকিয়ে হাসছে। ওকে ধরার প্রাণপন চেষ্টা চালাচ্ছে রজত। টেবিলের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। দুজনের ছোটাছুটি চলছে। সিরিজাকে ধরার প্রবল আকাঙ্খা। কিন্তু ধরতে পারছে না রজত।

একবার শুধু ধরে ফেলে সিরিজাকে তীব্র আশ্লেষে চুমু খেতে শুরু করেছে রজত। যেন এইবার কোন শক্তিই ওকে আটকাতে পারবে না।

সিরিজা আবার ওর হাত ছাড়িয়ে রজতের শোবার ঘরে বিছানার উপর। এবার যেন এঘর থেকে ওঘরে কাউকে ধরার লুকোচুরী চলছে। রজত বিছানায় উঠে পড়েছে সিরিজার শরীরের উপর ঝাপাবে বলে।

- "এই মুখ ধুয়ে নাও। ছাড়ো বলছি।"

কে কার কথা শোনে। সিরিজাকে জাপটে ধরে ওর পায়ের উপর থেকে শায়াটা তোলার চেষ্টা করছে রজত। যেন বিছানায় ওকে এইভাবেই নিঃশ্বেষিত করবে। সিরিজা এবার রজতকে ছাড়িয়ে নিয়ে আবার রজতের বসার ঘরে।

ওকে শেষবারের মতন জাপটে ধরে সোফার উপর দুজনে পড়েছে হুমড়ী খেয়ে। রজত আগে। সিরিজা ওর শরীরের উপরে।

সহচারিনীকে যেন এত সহজে ছাড়া যায় না কিছুতেই। রজত সিরিজার ঠোঁটের মধ্যে নিমজ্জ করেছে ওর ঠোঁট। এ চুম্বন একদম অন্যরকম। প্রাপ্তিলাভের চুম্বন। কাউকে শেষ পর্যন্ত পাওয়ার আনন্দের চুম্বন।

সিরিজার ঠোঁট দুটো ঠোঁটে নিয়ে চুষতে চুষতে এ যেন পরম সুখ। কাউকে পাওয়ার আনন্দে ঠিক সময়ের সঠিক প্রয়োগ। গভীর ভাবে চুমু খেতে খেতে ও বলছিল, "আর ছাড়ব বল এবার? হুঁ? আর ছাড়ব?"

সিরিজাও রজতকে ওর ঠোঁটের লালা থেকে কি যে মধু ছড়িয়ে দিচ্ছিল রজত সেটা নিয়েই গভীর আনন্দে চুষছিল। ওর যৌবনা শরীর রজতের বুকের উপর আন্দোলিত হচ্ছে। সিরিজার ভারী স্তন, বুক, পেট সবই যেন রজতের শরীরি ছোঁয়ায় আবদ্ধ। শুধু মুখটাকে আধারের মতন করে ধরে রজত অনুভব করছে সিরিজার মিষ্টি ঠোঁটের সুধা। ঠোঁট দুটো একনাগাড়ে চুষতে চুষতে সুধাপান ওকে প্রবল আনন্দ দিচ্ছিল।

আসতে আসতে ও এবার সিরিজার শায়াটা তুলতে থাকল ওপরের দিকে। একেবারে ভাঁজ করে গুটিয়ে নিয়ে আরো উপরে ওঠাচ্ছে। পাছা সহ যৌনদ্বার উন্মুক্ত হয়ে গেছে তখন। রজত বারমুডার ভেতরে ক্ষেপে ওঠা লিঙ্গটাকে বার করে ওটার উপরে সিরিজাকে বসাতে চাইছে। সিরিজা ওপর থেকে ঘোড়া ছোটাবে আর রজত নীচে থেকে তাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ওর ঠোঁটটাকে ঠোঁটের মধ্যে রেখেই সুধারস পান করতে করতে লম্বা পেনিসটাকে আসতে আসতে সিরিজার যৌনদ্বারে স্থাপন করার চেষ্টা করতে লাগলো রজত। যেন রোমাঞ্চকর উত্তেজনা, চরম সুখ তৃপ্তিতে গা ভাসিয়ে দিতে চাইছিল নিজের।

ঠোঁটের মধ্যে চুম্বনটাকে অব্যাহত রেখে ও সিরিজাকে বললো, "আমাকে একটু করতে দাও সিরিজা। প্লীজ।"

আকাঙ্খাটাকে এককার করে নিতে চাইছিল রজত। সর্বোতভাবে উপভোগ করতে চাইছিল সিরিজাকে। ওর কাছ থেকে সহযোগীতাটা তখন প্রবলভাবে চাইছিল রজত।

আস্তে আস্তে লিঙ্গটাকে নিজেই হাতে ধরে সিরিজার যোনীগর্ভে প্রবেশ করাল রজত। সিরিজা পা দুটো একটু ফাঁক করে উপুর হয়ে বসে রজতকে সহযোগীতা করছে। রজত বুঝতে পারছে সিরিজার জরায়ু ওর লিঙ্গটাকে সজোড়ে আঁকড়ে ধরেছে এবার।

ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে রজত ঐভাবেই ঠাপাতে চাইছিল সিরিজাকে। ও জানে ঘর্ষনে ঘর্ষনে এবার সুখের চরম মূহূর্তে নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে ও।

রজত সিরিজার পিঠের উপর একটা হাত রেখে হাতটা আসতে আসতে নিচের দিকে নামাতে লাগলো। একটা হাত দিয়ে ওকে শরীরের সাথে জড়িয়ে রেখেছে। পিঠে রাখা হাতটা সিরিজার কোমরের সাথে জড়িয়ে রাখা শায়ার দড়িটাকে টান মেরে খুলতে চাইছে। কিছুক্ষণ চেষ্টা করে ও দড়ি খুলতে না পেরে সোজা হাতটাই চালান করে দিল শায়া ভেদ করে আরো নীচে। হাত দিয়ে খামচে ধরলো সিরিজার পাছা দুটোকে পালা করে। ঠোঁটে ঠোঁট আবদ্ধ করে রেখে তলা থেকে লিঙ্গটাকে যোনীগর্ভের মধ্যে গাঁথন দিচ্ছে আসতে আসতে। এক একটা ধাক্কা চরম তৃপ্তিতে রজতের মুখ থেকে উত্তেজনার সংলাপ বেরিয়ে আসছে বারে বারে।

ও এবার নিজেকে ভাসানো শুরু করেছে চরম উত্তেজনায়।

-- "এই সিরিজা, সত্যিই তুমি আমার বাচ্চার মা হবে? বল তুমি। সিরিজা। উহ্"

-- "তুমি পারো না এটাকে সবসময় তোমার ভেতরে নিয়ে রাখতে? উহ্ সিরিজা।"

-- "আমাকে আর ফাঁকি দেবে বল? উহ্ সিরিজা।"

-- "ঠোঁটটা রাখ। ঠোঁটটা রাখ।"

সিরিজা যেই ঠোঁটটা রেখেছে।

-- "আঃ কি আরাম।"

-- "আমার সিরিজাকে আমি সারাজীবন চুদব তো এইভাবে? আহ্"

লিঙ্গটাকে রজত এবার একটু জোড়ে জোড়ে ধাক্কা দিতে লাগলো। আঘাত করতে করতে বললো, "তুমি কখনো আমাকে বঞ্চিত করবে না তো সিরিজা? কথা দাও। উহ্।"

সিরিজা ঐ অবস্থায় রজতের ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে আবার আবদ্ধ হোল। যেন কথা দিল।

-- "ওহ্ সিরিজা একদম নিঃশ্বেষিত করতে দাও আমাকে।"

-- "আজ যেন থামতে না পারি সিরিজা। ওহ্।"

-- "স্বর্গসুখ কোথায় আছে সিরিজা? তোমার মধ্যে?"

সিরিজার ভেতরটা এবার ছিঁড়ে যাচ্ছিলো। আঘাতটাকে সহ্য করতে করতে ও এবার রজতের সাথে তাল মেলাতে লাগলো। সেই সাথে পরষ্পরের ঠোঁটে চুমু। সিরিজা ওর হাত দুটোকে ওপরে রেখে সোফার গাঁটটাকে ধরে রেখেছিল। এক একটা ধাক্কায় ও পুরোদস্তুর পরাজীত হচ্ছিল। কিন্তু দমছিল না।

-- "আমাকে এমনি করে ভালোবাসবে তো সিরিজা?"

- "বাসবো। উম্" (চুমুর শব্দ)

-- "তোমার ভালো লাগছে তো সিরিজা?"

- "হ্যাঁ লাগছে। ওঃ মাঃ।" (ব্যাথায় একটু কঁকিয়ে উঠলো। তারপরেই ব্যাথাটাকে ভোলার জন্য রজতের ঠোঁটে সজোরে চুমু।)

-- "এবার তুমি একটু আমার ওপরে ওঠানামা করো সিরিজা।"

- "করছি।"

সিরিজা রজতের কথা মতন এবার ওর লিঙ্গের উপর ওঠানামা করতে লাগলো। লিঙ্গটাকে নিমেষে গ্রাস করে নিচ্ছিল নিজের যৌনফাটলে।

-- "পারছ তো সিরিজা?"

- "পারছি। উহ্।"

-- "পারবে তো সিরিজা?"

- "পারবো। উহ্।"

-- "এবার আমাকে চুমু খাও সিরিজা।"

- "খাচ্ছি।" বলে আবার সজোরে ঠোঁটে আঁকড়ে ধরলো রজতের ঠোঁটটা।

দুজনের সংলাপটা ওঠানামার সাথে সাথে বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল। পড়ে মনে হবে কোন সাংঘাতিক যৌনদৃশ্যের সংলাপ বলছে দুজনে।

-- "আহ্ আহ্। কি আরাম।"

রজতের লিঙ্গ তখন স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রবল ভাবে উপর থেকে দেহের অভ্যন্তরে ঢুকিয়ে নিচ্ছে সিরিজা। তীব্র ঘষা মেশানো ধাক্কা যেন জ্বালিয়ে দিচ্ছে যৌনাঙ্গের মাংস কোমল পেশী ত্বক। সিরিজা উঠছে নামছে। রজতের সঙ্গে সঙ্গে যেন বিদ্যুত শক্ লাগছে শরীরে। সিরিজারও যেন কি আরাম। ব্যাথাতেও চরম আনন্দ। প্রতিটি ধাক্কা যেন চরম থেকে চরমতর সুখে নিয়ে যাচ্ছে সিরিজাকে।

রজত এবার ওর পাছা দুটোকে তলা দিয়ে ধরে অস্ত্রটাকে প্রয়োগ করে সিরিজাকে ফালি ফালি করতে শুরু করেছে। রজতের উত্থিত লিঙ্গশিরা সিরিজার কামরসে ভিজে যাচ্ছে। পিচ্ছিল হয়ে যাচ্ছে ওর দন্ডটি। মধু মাখা ছুরিকাঘাতে সিরিজা বেদনা, পুলক, জ্বালা, মধুরতা সবই পাচ্ছিল। ওর মুখে হাসি।

-- "জানি না তোমাকে না পেলে পরজন্মে এই সুখ পাব কিনা। ভীষন সুখ সিরিজা ভীষন সুখ। তুমি কোথায় আমায় নিয়ে চলেছ তুমি জানো সিরিজা?"

রজত ওর বুকের ব্লাউজ টান মেরে খুলে দিয়ে ওটা মেঝেতে ফেলে দিয়েছে। দুধেল স্তন। পরিপূর্ণ স্তন। দুটোই উন্মুক্ত। স্তনের একটা বোঁটাকে নিজের মনের মতন করে মুখে নিয়েছে রজত। ওর ভেতরের তৈরী উত্তেজনাটাকে বুঝতে পারছিল সিরিজা। লিঙ্গের ওপর ওঠানামার সাথে সাথে রজতকে এবার গর্বের স্তন পান করতে দিল। রজত তীব্র আবেগে বোঁটাটা চুষতে চুষতে লিঙ্গচালনা করতে লাগলো দ্রুত গতিতে।

-- "তোমার অমৃতধারা আরও গলে গলে পড়তে দাও সিরিজা। আমি এই সুখ আর কতক্ষণ ধরে রাখতে পারবো কিনা জানি না। কিন্তু আমার ভালো লাগছে।"

সাদা ফটফটে ইউক্যালিপটাস গাছের মতন। যেমন সাদা দুধ ঝড়ে পড়ে যায়। সিরিজার স্তনের বোঁটা দিয়ে তেমনি সাদা দুধ ঝড়ে পড়তে লাগলো রজতের ঠোঁটে। ভেতরে সেই সাথে বাইরেও। রজত তখনও নিজের লিঙ্গ সঞ্চালন ঠিক রেখেছে। এই সুখটাকে ও বাঁধিয়ে রাখবে চিরকালের মতন।

রজত বুঝতে পারছে না আর পারবে না আর পারবে না। স্খলণের চরম মূহূর্ত। সিরিজাকে উঠিয়ে ও দাঁড়িয়ে পড়েছে সোফা ছেড়ে।

আঃ। হাতের ঘর্ষনে যেন কচলে যাচ্ছে লিঙ্গটা। সিরিজা বসে পড়েছে রজতের সামনে। মুখের সামনে বীর্যপাতের উপভোগ্য দৃশ্য। কি অসীম বীর্যভান্ডার রজতের। হাত দিয়ে সিরিজার চুলের মুঠিটা ধরে ওর মুখেই স্থাপন করেছে লিঙ্গ। সিরিজা মুখেই দৈত্য গ্রহণ করেছে।

দৈত্য এবার নিবীর্য হয়ে আসছে। আঠালো বীর্য ছলকে ছলকে পড়ছে সিরিজার মুখে। যেন সাদা রক্ত। সিরিজা প্রবল শক্তিতে পান করছে। এও তো এক ধরনের স্বর্গসুখ। ঈশ্বর প্রদত্ত কোন অমৃত বিশেষ, অদৃশ্যশক্তির আধারের মতন। এতো প্রাণ সঞ্চারের বীজ। সিরিজা ঐ সাদা রক্ত পান করতে করতে চোখ খুলে তাকিয়ে রয়েছে রজতের দিকে। রজত বুঝতে পারছে সিরিজাকে কত প্রাণভরে উপভোগ করেছে আজ। ও রজতের বীর্যপান করে শেষমেষে তৃপ্তি দিয়েছে রজতকে। এখন একটু বিশ্রাম। বিকেল হতে বেশী দেরী নেই। দুজনে জড়াজড়ি করে একটু নিশ্চিন্তে ঘুম কারন ওদিকে আবার দিবাকরের আসার টাইম হলো বলে।
 
।। এগারো ।।

দিবাকরের আসার কথা সন্ধে ৬টার সময়। এখনও দুঘন্টা বাকী। রজতের এই সময় সিরিজাকে জড়িয়ে একটু ঘুম না দিলে চলবে কেন? পাশ ফিরে শুয়ে ওর স্তনটা মুখে নিয়ে চোখটা আসতে আসতে বোজার চেষ্টা করছিল রজত। প্রথমে ওর বুকের মাঝখানটায় মুখ রেখেছিল। সিরিজা নিজেই ব্লাউজের একপাশটা খুলে স্তনের একটা বোঁটা ওর মুখে তুলে দিল। যেন কোলের ছেলেকে ঘুম পাড়াচ্ছে। রজতের মাথায় আসতে আসতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিল ও। নিজেরও চোখটা বুজে আসছে।

রজত মাঝখানে একবার খুনসুটি করার চেষ্টা করলো। সিরিজা বললো, "এই, এখন আর খেয়ো না। একটু ঘুমিয়ে নাও। এরপরে তো তোমার বন্ধু এলে আর ঘুমোতেই পারবে না।"

রজত কখন ঘুমিয়ে পড়েছে খেয়াল নেই। সিরিজা আস্তে আস্তে ওর মুখের ভেতর থেকে স্তনের বোঁটাটা বার করে ব্লাউজটা লাগিয়ে রজতের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো। সেই ভোরবেলা থেকে সঙ্গমসুখের লড়াই চলছে। বিশ্রামের তাগিদে দুজনেই এখন ক্লান্ত।

অঘোরে ঘুমোচ্ছে দুজনে। ঠিক তখন বাজে ৬টা বেজে ১০ মিনিট। দিবাকর এসে দুজনেরই ঘুমটা ভাঙিয়ে দিল।

প্রথমে উঠলো সিরিজা। রজত তখনও ওঠেনি। ডানহাতটা বাড়িয়ে সিরিজার ব্লাউজশুদ্ধু বুকটাকে ধরে ওকে উঠতে দিচ্ছিল না। এমন ভাবে বুকের মাঝখানে আঙুল ঢুকিয়ে সিরিজাকে আটকে রাখছিল যে আবার সেই চোখের সামনে ওর গভীর খাঁজটা উদ্ভাসিত হয়ে উঠছিল।

- "ছাড়ো আমাকে। দেখ তোমার বন্ধু এসেছে বোধহ্য়।"

রজত তবু ছাড়ছিল না। সিরিজা বললো, "এই ছাড়ো। ও বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।"

-- "দাঁড়িয়ে থাকুক।

রজত এবার সিরিজার সঙ্গে ঠোঁটের চুম্বনে আবদ্ধ হোল। দু তিনবার ওর ঠোঁটের সাথে ঠোঁট লিপ্ত করে বললো, "তোমাকে ওর সামনে তো চুমু খেতে পারবো না। তাই খেয়ে নি একটু। ও দাঁড়িয়ে থাক।"

দিবাকর আবার বেল বাজাল। রজত শোবার ঘর থেকেই চেঁচিয়ে বললো, "দাঁড়াও আসছি।"

বলে নিজে উঠে না দিয়ে সিরিজাকেও উঠতে না দিয়ে ওর বুকে সমানে মুখ রেখে মুখটা ঘসাঘসি করতে লাগলো একনাগাড়ে। এত বড় স্তনের মাপ! এই বুকে মুখ রেখেও আরাম!

সিরিজা এবার রজতের মাথাটা চেপে ধরে বুক থেকে তুলে দিয়ে ওকে বললো, "যাও। খুলে দিয়ে এস। খালি আমাকে এমনি করে ধরে রাখবে, তাহলে ওকে আসতে বললে কেন? দাঁড়িয়ে আছে। খারাপ ভাববে এবার।"

রজত এবার সিরিজাকে ছেড়ে বিছানা থেকে উঠলো। বারমুডাটা নেমে গেছে অনেকখানি। ওটা ঠিক করলো। সিরিজাও নিজের বুকের আবরণটাকে তখন ঠিকঠাক করছে। রজত আসতে আসতে এগিয়ে গেল দরজার দিকে।

দরজাটা খুলল রজত। দিবাকর বললো, "মনে হচ্ছে আর একটু পরে এলেই ভালো হোত মনে হয়। ঘুমিয়ে ছিলে নাকি?"

-- "সরি তোমাকে দাঁড় করিয়ে রাখলাম। এই একটু ঘুম এসে গেছিল চোখে আর কি। এসো এসো।"

দিবাকর ঘরের ভেতরে ঢুকে রজতকে ওর হাতের প্যাকেটটা দেখিয়ে বললো, "তোমার জন্য ম্যাকডোয়েল এনেছি চলবে তো?"

-- "হুইস্কি না রাম?"

- "হুইস্কি হুইস্কি। ম্যাকডোয়েল নম্বর ওয়ান।"

দিবাকর রজতকে ভালো করে দেখছিল। এই কদিনে ও কেমন অন্যমানুষ হয়ে গেছে। যেন একটা অত্যাধিক সুখের জীবনযাত্রা নির্বাহ করছে। রজতের চোখে মুখে সেই ভাবটাই ফুটে উঠছিল। এ যেন এক নারীকে সুখের সাথে পাওয়ার আর তাকে ভোগের তৃপ্তির লক্ষণ।

হঠাৎ সিরিজার ব্যাপারে এক্ষুনি কোন মন্তব্য করতে দিবাকরের সাহসে কুলোচ্ছিল না। তাও ও বললো, "মনে হচ্ছে দারুন মৌজে আছ।"

-- "সে তো আছিই।"

রজত মনে মনে ভাবছিল এই চার দেওয়ালের মধ্যে টু-রুম ফ্ল্যাটে সিরিজাতো ওকে বেপরোয়াই করে দিয়েছে। হঠাৎ কোন নারীর শরীর পাওয়া। অবলীলায় সুখ। ওকে করে তুলেছে বেহিসাবী। মাত্রা জ্ঞান ভুলে গিয়ে কোথায় যে থামতে হয় সেটাই ভুলে গেছে রজত। সিরিজাই এখন ওর ধ্যানজ্ঞান। ওর ক্ষুধা নিবৃত্তির একমাত্র খোরাক।

দিবাকরকে ও শুধু বললো, "আসলে ও আসার পর থেকে কিভাবে সময়গুলো কেটে যাচ্ছে বুঝতেই পারছি না।"

- "আমি কি অসময়ে এলাম?"

-- "না না তোমাকে তো আমিই আসতে বলেছি।"

- "তুমি বললে বলেই এলাম। নয়তো....."

-- "না না আমি না বললেও তুমি আসবে। তোমার সঙ্গে খোলাখুলি যতটা কথা বলতে পারবো। সেটা কি আর কারুর সাথে পারবো?"

রজত একটা সিগারেট ধরালো।

-- "চা খাবে না কি একটু। বস তোমার জন্য চা করতে বলি সিরিজাকে।"

রজত চেয়ারে বসে বসেই সিরিজাকে ডাক দিল। - "এই শোন আমাদের জন্য একটু চা করবে?"

সিরিজা ভেতর থেকেই জবাব দিল, "হ্যাঁ করছি।"

-- "আসলে ও ঘুমোচ্ছিল। একটু আগেই ঘুম থেকে উঠেছে। তোমার কথা আগেই বলে রেখেছিলাম। তুমি আসবে ও জানে। দেখছ না শোবার ঘরে রয়েছে। এখনও ঢোকেনি এই ঘরে। এক্ষুনি ঢুকবে।"

বলতে বলতেই সিরিজা ঘরে এসে ঢুকল। দিবাকর ঘাড় ঘুরিয়ে সিরিজাকে দেখলো। যেন এক যৌনতাময়ী নারীর দর্শন পেল আবার। যেমনই উচ্চ তেমনই প্রশস্ত দুটি বুক। প্রথমেই বুক দুটোর দিকেই নজর পরে। এর আগের দিন সিরিজাকে ভালো করে দেখা হয় নি। আজ যেন মন ভরে দেখতে লাগলো দিবাকর সিরিজাকে।

চোখ মেলে ভালো করে তাকাতে গিয়ে একটু সঙ্কোচও হোল। সামনে রজত বসে আছে কি ভাববে।

তবুও মনে হোল পত্র পত্রিকায় যেমন নগ্ন নারীর দেহবল্লবীর উগ্র সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায়, তার থেকেও এ যেন আরো সুন্দর। এই অপরূপ দেহের লাবণ্যের সন্ধান এখনও অবধি পাওয়া যায়নি কোথাও। উদ্ধত বুকদুটো যেন যে কোন সৌন্দর্য গর্বিতাকেও হার মানিয়ে দেবে।

সিরিজা এসে ওর উল্টোদিকেই বসল। রজতের পাশে।

সিরিজা জানতে চাইলো, "আপনার হাতে ওটা কি?"

দিবাকর প্যাকেটটা দেখে বললো, "এটা?"

দিবাকর হুইস্কির বোতলটা প্যাকেট শুদ্ধু তখনও ওটা হাতে ধরে রেখেছে।

সিরিজা মাথা ঝাঁকালো, "হ্যাঁ ওটা?"

উত্তরটা রজতই দিয়ে দিল। - "ওটা হুইস্কি। বিলেতী মদ। খাবে না কি তুমিও?"

সিরিজা একটু হেসে উঠে চলে গেল রজতের কথার কোন উত্তর দিল না। রান্নাঘরে গিয়ে চায়ের জল বসিয়ে আবার রজতের শোবার ঘরে গেল। ওখান থেকে রজতকে ডাক দিল, "এই শোনো একটু এদিকে।"

রজত শোবার ঘরে গেল। সিরিজা ওকে জড়িয়ে ধরলো। ওর ঠোঁটে চুমু খেল।

-- "আমাকে চুমু খাবে বলে এই ঘরে ডাকলে?"

- "না শোন। আমি না তোমরা যখন খাবে তখন ঐ ঘরে যাবো না।"

-- "কেন?"

- "লোকটা কেমন আমার বুকের দিকে তাকাচ্ছিল। যখন নেশা হয়ে যাবে। আরো মুশকিল হবে।"

-- "দূর। ওতো এমনি দেখছিল তোমাকে।"

- "তাহলেও।"

-- "আচ্ছা তোমাকে যেতে হবে না। তুমি খালি চা টা করে আমাদের দিয়ে আসবে। খুশী তো?"

- "এই তুমি কিন্তু বেশী খাবে না। ঐ গুলোই খেয়ে পচে মরতো আমার মরদ। দেখনা আমি ছেড়ে চলে এলাম।"

-- "আমি তো মদ খাওয়া ছেড়েই দিয়েছি সিরিজা। তুমি এসে গেছ। আমার কি নতুন করে নেশার দরকার পরে? তুমিই তো আমার তৃষ্ণার পেয়ালা। এ পেয়ালা ছেড়ে আমি কোথায় যাবো? আমার কি যাওয়ার জায়গা আছে আর?"

এইবার রজত সিরিজাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেল।

সিরিজা বললো, "ঠিক আছে আমি চা টা দিয়ে আসছি তোমাদের ঘরে। একটু বসো আমি আসছি।" এই বলে রজতকে আবার ওঘরে পাঠিয়ে দিল।

দিবাকর বুঝতে পারছে না। ভেতরের ঘরে কি হচ্ছে। ও একটা ম্যাগাজিন হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখছিল।

রজত ঢুকে বললো, "ভাবছি সিরিজাকে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরে আসবো কদিন। কোথায় যাওয়া যায় বলো তো?"

- "এখনও অবধি ওকে নিয়ে বেরোও নি কোথাও?"

-- "না না, এই তো এলো সবে দুদিন। ভাবছি তাই।"

- "খুব দূরে যাবে না কাছাকাছি?"

-- "খুব দূরেও নয়। আবার খুব কাছেও নয়। এমন জায়গা যেখানে নিরিবিলিতে একটু ফুর্তি করতে পারবো।"

দিবাকর হেসে বললো, "তোমার তো পরকীয়ায় মন বসে গেছে দেখছি। ঘরের আনন্দ বাইরে নিয়ে গেলে কি ওটা আর ঘরের মতন সমান যুৎসই হবে?"

রজত দিবাকরের মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "এটা তো পরকীয়া নয়। এটা হোল মুক্তির সুখ। সিরিজাও মুক্তি পেয়ে গেছে। আমিও মুক্তি পেয়ে গেছি। বলতে পারো বিয়ে না করলেই ভালো থাকা যায়। এই বেশ আছি। এখন বল কোথায় যাওয়া যায়?"

- "তোমার সেই দেশের বাড়ীর কথা বলছিলে? সেটাও তো মন্দ নয়।"

রজত একটু ভেবে নিয়ে বললো, "পাগল নাকি? এই তো ওকে ওখান থেকে নিয়ে এলাম। আবার? না না আমি নতুন কোন জায়গার কথা চিন্তা করছি।"

- "একটা জায়গা আছে। বুঝলে?"

-- "কোথায়?"

- "খুব কাছেই। এই শহর যেখানে শেষ হয়েছে। শহরতলীর শেষে। কত রিসোর্ট। কত আরাম কুটির। তার একটাতেই যদি দু একদিন?"

-- "কোথায়? ডায়মন্ডহারবারে?"

- "হ্যাঁ।"

-- "জায়গাটা মন্দ নয়। তবে আরো যদি কিছু থাকে। ভেবে দেখো না।"

- "ভাবছি।"

রজতের সিগারেটের প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বার করে খেতে খেতে দিবাকর ভাবছিল। হঠাৎই দুজনকে চমকে দিয়ে বাইরের কলিংবেলটা একবার বেজে উঠলো। রজতের কপালে এবার একটার চিন্তার ভাঁজ পড়লো। ও দিবাকরের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে এই ভরসন্ধেবেলা এখন আবার কে এল? এখন তো কারুর আসার কথা নয়।

দিবাকর রজতকে বললো, "অত কি ভাবছ? দরজাটা খুলেই দেখ না। এই ভরসন্ধেবেলা এখন নিশ্চয়ই কোন উটকো লোক এসেছে। তাছাড়া আর কেই বা হবে।"

রজত দেখলো সিরিজাও ঘরে এসে ঢুকেছে। কলিংবেলের আওয়াজ শুনে। ও সিরিজাকে একটু ইশারা করলো। সিরিজা ভেতরের ঘরে চলে গেল। রজত দরজাটা খুলল। সামনে দাঁড়িয়ে যিনি। তাকে বললো, "কে আপনি?"

- "আমি পোষ্টম্যান। চিঠি আছে। এইখানে সই করুন।"

-- "ও হরি এই সন্ধেবেলা পোষ্টম্যান। আমি ভাবলাম কে না কে।"

- "আপনিই রজত মল্লিক?"

-- "হ্যাঁ।"

- "এইখানে সই করুন।"

বেশ বড় একটা খাম এসেছে। রজত খামটা হাতে নিল। সইও করলো। কলমটা পোষ্টম্যানের হাতে দিয়ে দরজাটা যথারীতি বন্ধ করলো আবার।

এটা আবার কার চিঠি? মনে হচ্ছে কোন নোটিশ।

ঘরে ঢুকে রজত খামটা খুলতে লাগলো। দিবাকর ওকে দেখছে।

যেন বুকভরা স্বস্তি। রজতের চোখে মুখে ফুটে উঠতে লাগলো আনন্দটা। ওর বউ ডিভোর্সের চিঠি পাঠিয়েছে। সাথে উকিলের ৬পাতা ড্রাফটিং।

মুক্তি মুক্তি মুক্তি! গলার কাঁটা থেকে মুক্তি। এটাই তো চেয়েছিলাম এতদিন। রজত চিঠিটা পড়ে পুরো লাফাতে লাগলো।

দিবাকর বললো, "কি হয়েছে? কার চিঠি পেলে?"

-- "আমার ভাগ্যে শিকে ছিড়েছে। আমি ভোগের লাইসেন্স পেয়ে গেছি। আর কোন বাধা নেই।"

দিবাকর কিছু বুঝে ওঠার আগেই রজত আবার বললো, "এখন শুধু ফাটিয়ে মস্তি। আর কেউ রুখতে পারবে না আমাকে! বুঝলে?

- "আমি আসার পরেই এমন সুখবর। কি ব্যাপারটা বলো।"

-- "আমার বউ আমাকে চিরকালের জন্য মুক্তি দিয়েছে। এবার আইনমাফিক ডিভোর্স। ও ডিভোর্স চায়। এই দেখ চিঠি পাঠিয়েছে।"

দিবাকর হাসছিল। বললো, "এবার তো তাহলে তোমার বিরামহীন সুখের জীবন শুরু হোল বলে। আমি আসার পরই এমন সুখবর। তাহলে বল আমি খুব লাকি ম্যান তোমার কাছে।"

-- "সে কি আর বলতে। দাঁড়াও একজনকে একটু খবরটা দিয়ে আসি। ওয়েট ফর জাস্ট ওয়ান মিনিট। আমি যাচ্ছি আর আসছি।"

দিবাকর বুঝতে পারলো রজত আবার ভেতরের ঘরে ঢুকেছে সিরিজাকে খবরটা দেওয়ার জন্য। ও উল্টে পাল্টে রজতের বউ এর পাঠানো খামটা দেখতে লাগলো।

ভেতরে একটা চিঠি রয়েছে। রজত একটু আগেই ওটা পড়ছিল। রজতের বউ এর পাঠানো চিঠি। চিঠিটা দু লাইনের।



রজত,

তোমাকে নোটিশটা পাঠালাম। সিদ্ধান্তটা আগেই নিয়েছিলাম। শুধু আইন মাফিক কাজটা হওয়া বাকী ছিল। হাজার চেষ্টা করেও তোমার মত লোকের সাথে ঘর করা আর সম্ভব নয়। যেদিন থেকে তোমার বাসা ছেড়ে আমি চলে এসেছি। সেদিন থেকে এটা আমি হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছি। বাবা মায়ের কাছে আছি। এই বেশ ভালো আছি। তোমার যখন ঘরের বউ এর থেকে অন্য নারীর প্রতি আসক্তি বেশী তখন আমার আবার শুধু শুধু পড়ে থাকা কেন? মুক্তি চাইছি তোমার কাছে। এবার ডিভোর্স এবং সঙ্গে ক্ষতিপূরন।


ইতি,

রীতা


পুনঃ- দু একদিনের মধ্যে বাবাকে পাঠাচ্ছি তোমার বাসায়। আমার নিজস্ব কিছু জিনিষ ওখানে পড়ে রয়েছে। আলমারীর চাবি আমি নিয়ে এসেছিলাম। বাব যাবে আলমারী থেকে ওগুলো বার করে আনতে। তোমার কাছ থেকে এই সহযোগীতাটা আমি পাব আশা করি।



সর্বনাশ করেছে। লাস্টের দুটো লাইন কি রজত পড়েছে? ওর বাবাতো যেকেন মুহূর্তে এসে পড়তে পারে এখানে। তাহলে কি হবে? রজতকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য ও না বলেই ঢুকে পড়লো রজতের শোবার ঘরে।

দেখলো রজত সিরিজাকে জড়িয়ে ধরে আশ্লেষে ওর ঠোঁটে চুমু খাছে। মেঝেতে গড়াচ্ছে সিরিজার শাড়ীর আঁচল। রজতের একটা হাত ধরা রয়েছে সিরিজার উদ্ধত বুকে। বুক টিপে হাতের সুখ করতে করতে সিরিজার ঠোঁটটা প্রবল আবেগে চুষতে রজত।

- "ওহ সরি।"

সিরিজা তখন দিবাকরকে দেখে ফেলেছে। রজতকে সরিয়ে দিয়ে খাটের কোনাটায় এসে দাড়িয়েছে মুখটা পিছন করে। হঠাত দিবাকর ঘরে ঢুকে যাবে রজত আঁচ করতে পারেনি। একটু বিরক্তি স্বরেই দিবাকরকে বলছে, "ও তুমি? কি ব্যাপার বলো?"

- "না মানে বলছিলাম। তুমি কি চিঠিটা ভালো করে পড়েছ? আমি এইটা বলার জন্যই......"

-- "কেন কি হয়েছে?"

দিবাকর তাড়াতাড়ি আবার বসার ঘরে ফিরে এসে রজতের হাতে চিঠিটা ধরিয়ে সোফার উপর বসে পড়েছে সটান হয়ে।

- "তোমার বউ তো আবার তোমার শ্বশুরমশাইকে পাঠাচ্ছে। আলমারীতে কিসব রয়েছে, ওগুলো ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য।"

-- "ঐ হবে শাড়ীটারী নেওয়ার জন্য। আলমারীতে কি আছে আমি নিজেই তো জানি না। চাবি তো ওর কাছে। গয়নাগুলো তো তখনই নিয়ে গেছে।"

রজত তাও একবার চিঠিটা খুলে আবার পড়তে লাগলো। রাগ রাগ গলায় বললো, "ন্যাকা। তখনই তো নিয়ে যেতে পারত। এখন আবার বাবাকে পাঠাচ্ছে ন্যাকামি করে।"

- "না মানে বলছিলাম। তোমার শ্বশুর মশাই। উনি হঠাতই আসবেন। আচমকা এসে পড়লে তোমার প্রবলেম হবে।

-- "কিসের প্রবলেম?"

দিবাকর একবার শোবার ঘরের দিকটা তাকালো। তারপর আসতে আসতে বললো, "সিরিজা!"

-- "আরে দূর। তুমিও অত চিন্তা কর। সিরিজা আছে তো কি হয়েছে? আই ডোন্ট বদার। এর জন্য তুমি এত খামোকা টেনশন নিচ্ছ? আরে দূর।"

দিবাকর পুরো অবাক হয়ে গেল। রজতের এই বেপোরোয়া মনোভাব দেখে। তখনও আপন মনে রজত বলে যাছে আর দিবাকর মনোযোগ সহকারে শুনছে।

-- "আমি কি করবো না করবো এটা আমার সম্পূর্ন ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি থোরাই কারুর কেয়ার করি। বিয়ে করেছিল বলে কি মাথা কিনে নিয়েছিল নাকি? অতই যদি না পছন্দ তাহলে অন্য বর জুটিয়ে নিক না। কে বারণ করেছে? আমি ওসবের ধার ধারিনা। এখন আমার অন্য জগত। বলতে পারো সিরিজাকে নিয়ে একটা আলাদা জগৎ। এখানে এসে মাথা গলাতে আমি কাউকে দেব না। যদি আসে, দেখুক না সিরিজাকে। ওর মেয়েকে গিয়ে বলুক। আমার কিচ্ছু এসে যায় না।"

দিবাকর বুঝতে পারছিল রজত বেশ আনন্দে মেতেছে। ও বললো, "তোমাকে দেখে তো হিংসে করতে পারি না। তাও তোমার কথা শুনতে খুব ইচ্ছে করছে। একেবারে খাস দিবানা বনে গেছ তুমি। আরও শুনি তোমার নতুন জগতের কথা।"

রজত বললো, "তার আগে একটু খানা পিনা হোক। সব ভুলে গিয়ে এখন চল সুরার স্বাদ গ্রহন করি। লেটস এনজয়।"

দিবাকর বললো, "এখনই? চা খাবে বলছিলে?"

-- "ও যাঃ। আমি তো ভুলেই গেছি। রজত সিরিজাকে এবার ডাক দিল। এই শোন চা টা দেবে? সিরিজা, ও সিরিজা-"

সিরিজা ঐ ঘরে আর আসছে না। দিবাকর ভাবল লজ্জা পেয়েছে বোধহয়। ও বোকার মতন মুখটা করে রজতকে বললো, "এই, আমি না সরি। একদম বুঝতে পারিনি। ভুল করে চলে গেছিলাম ওঘরে।"

রজত তখন অনেকটা স্বাভাবিক। হেসে দিবাকরকে বললো, "তাও তুমি ছিলে তাই রক্ষে। রীতার বাবা এসে যদি দেখতো?"

বলেই আবার হাসতে লাগলো।

সিরিজাকে একবার দুবার ডাকার পরেও সিরিজা এল না। রজত আবার ভেতরের ঘরে গেল। দিবাকর ভাবলো, ঐ চুমুটুমু দিয়ে আবার বশ করবে বোধহয়। আর ভুলেও ওঘরে ঢোকা নয়। যা ভুল হয়েছে। বাব্বাহ। আর নয়। ও আপন মনে বসে রইলো। দেখলো শোবার ঘরের ছিটকিনিটা ভেতর থেকে কে এবার লাগিয়ে দিয়েছে। মনে হচ্ছে বন্ধ ঘরে এবার চুম্বন খেলা চলছে জোর কদমে। হাঁদার মতন বসে রইলো দিবাকর।

রজত যখন ভেতর থেকে বেরোল, তখন ও দেখলো রজতের ঠোঁটটা ভিজে চপচপ করছে। কে যেন জিভের লালা দিয়ে প্রবল ভাবে মাখিয়ে দিয়েছে রজতের ঠোঁটটাকে। সিরিজাও পেছন পেছন বেরোল। ওর বুক দুটোর উপর চোখ চলে যেতেই মনে হোল কে যেন ওর বুক দুটোর উপর মুখ রেখে ধস্তাধস্তি করেছে একটু আগে। দিবাকর মুখ নামিয়ে নিজেকে একটু সংযম করলো। শালা যা দেখছি, এরপরে নিজেই না আউট হয়ে যাই। এ মাইরি মনে হচ্ছে কুকীর্তি চলছে। পেটে মাল পড়লেই সব গোপনীয়তা ফাঁস করে দেবে রজত। দিবাকর তাই প্রবল আগ্রহে অপেক্ষা করতে লাগলো। রজত যদি এবার নতুন জগতের কথা উজাড় করে বলে।

রজত ঘরে ঢুকে বললো, "ও আসলে লজ্জায় আসতে পারছিল না। মানিয়ে নিয়ে এলাম।"

দিবাকর বোকার মতন বললো, "ও তাই!"

মনে মনে আবার এও ভাবল বাবা মানানোর কি স্টাইল। এ যে দেখছি দুজনের রঙ্গলীলা চলছে বেশ জোর কদমে।

সিরিজা রান্নাঘর থেকে চা টা নিয়ে এল একটু পরেই। ওদের দুজনের মাঝে সেন্টার টেবিলটার উপর চা এর কাপ দুটো রাখলো। দিবাকর কি বলবে বুঝতে পারছিল না। হঠাত রজত ওর দিকে তাকিয়ে বললো, "সিরিজা জিজ্ঞাসা করছিল তুমি বিয়ে করেছো কিনা?"

দিবাকর জবাবে কি বলবে? ও হঠাত দেখলো সিরিজা ওর দিকে তাকিয়ে ওকে দেখছে এক দৃষ্টে। চা এর কাপটা মুখে নিয়ে ও একটু বিষম খেল। বোধহয় জীবনে এই প্রথম।

-- "আস্তে আস্তে। বিয়ের কথা শুনেই বিষম খেয়ে গেলে?"

রজত হাসছিল দিবাকরকে দেখে। নিজেই বললো, "সিরিজাকে আমি তোমার সন্মন্ধে বললাম-যতদূর আমি জানি ও বিয়ে করে নি। কিন্তু সম্পর্ক কারুর সাথে থাকলেও থাকতে পারে। ওটা তুমি বরঞ্চ ফাঁস করে দাও।"

দিবাকর চা খেতে খেতে বললো, "না না আমি বিয়ে করিনি। আর আমার সেরকম কারুর সাথে সম্পর্কও নেই। এই আছি বেশ আছি। আবার শুধু শুধু গলায় মালা দেওয়া কেন?"

সিরিজা চা টা রেখে চলে যাচ্ছিলো। রজত ওকে যেতে না দিয়ে হাতটা ধরে বসিয়ে দিল নিজের পাশে। পেছন থেকে সিরিজার কাঁধটা ধরে ওকে একটু কাছে টানার চেষ্টা করলো। দিবাকরের সামনেই গালে আলতো করে একটা চুমু খেয়ে বললো, "ও আমার সিরিজা। বসো না একটু কাছে।"

কি হারে বেলেল্লাপনা করছে রজত! দিবাকরের চোখমুখ লাল হয়ে উঠছে আস্তে আস্তে। রজত এবার সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "আরে দিবাকর আমাদের কাছে ফ্রী। তুমি অত সঙ্কোচ করছো কেন? বসো তো একটু এখানে। কিচ্ছু হবে না।"

রজত এবার দিবাকরের মুখের দিকে তাকিয়ে সিরিজা সন্মন্ধে বলতে লাগলো, "এই যে মেয়েটাকে দেখছ না? এ হচ্ছে আমার ডার্লিং। ও আসাতেই তো নতুন জীবনের স্বাদ পেয়েছি। আমার রানীকে নিয়ে আমি এখন আনন্দ করবো, আর সবাই তাড়িয়ে তাড়িয়ে দেখবে। কি বল?" বলেই আবার সিরিজার গালে চুমু খেতে লাগলো।

সিরিজা একটু লজ্জা পাচ্ছিল। হাজার হোক ব্যাপারটা খুল্লম খুল্লাম হচ্ছে। রজতের হরকত দেখে দিবাকরই নিজেকে ঠিক রাখতে পারছে না। তা ওতো লজ্জা পাবেই। মাল এখনও পেটে পড়েনি। তাতেই এই অবস্থা। পড়লে না জানি এরপরে কি হবে।

সিরিজা এরপরে লজ্জায় সত্যি উঠে চলে গেল। রজত চায়ের কাপটা মুখে নিয়ে বললো, "প্রথম যেদিন ওকে দেখেছিলাম। ও আমার কাছে এক অপার রহস্য ছিল বুঝলে। আসতে আসতে আমি ওর সবটুকু রহস্যই ভেদ করে ফেলেছি। আমার কাছে এখন আর কিছু আর ধোঁয়াশা নেই। সব জলের মতন পরিষ্কার হয়ে গেছে।"

দিবাকর চা খেতে খেতে বললো, "আমার কাছে কিন্তু এখনও বেশ কিছু ধোঁয়াশা রয়েছে যেন। এখনও ভেবে পাচ্ছি না তুমি কি করে এই অসাধ্য সাধনটাকে সম্ভব করলে? ও কি আদৌ তোমার দেশের বাড়ীর মেয়ে?"

রজত হেসে বললো, "কেন তোমার সন্দেহ হচ্ছে?"

- "সন্দেহ হচ্ছে না। সত্যিটা জানার জন্য ভেতরটা হাঁকপাঁক করছে। বল না আসল ব্যাপারটা কি?"

তারপর একটু থেমে নিয়ে আবার বললো, "না বলতে চাইলে বোলো না। তবে আমার একটু কৌতূহল হচ্ছিল এই আর কি।"

-- "বলব বলব। সব বলব। গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে সব বলব। আগে তো সান্ধআসরটা শুরু হোক। দাঁড়াও আমি আগে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা জলের বোতলটা নিয়ে আসি।"

রজত একটা জলের বোতল বার করে নিয়ে এল। টেবিলের উপর দুটো গ্লাস রেখে বোতল খুলে মদটা ঢালতে লাগলো।

-- "চিয়ার্স।"

- "চিয়ার্স।"

-- "আজ কি সাম, সিরিজা কে নাম। কি?"

- "তাই।"

রজত ছোট ছোট চুমুক দিতে দিতে এবার দিবাকরকে বললো, "জানতে চাইছিলে না রহস্যটা কি?"

- "হ্যাঁ, কি?"

-- "তোমার বিশ্বাস হবে তো?"

- "কেন?"

-- "এর আগে যা বলেছি বিশ্বাস তো হয় নি।"

- "তুমি আগে যা বলেছিলে সব মিথ্যে ছিল?"

-- "এটাও যদি সত্যি না হয়?"

- "কিছু তো একটা হবে। সবটুকু কি আর মিথ্যে হয়?"

-- "তাহলে শোনো?"

- "বলো।"

-- "সিরিজা আমার গ্রামের বাড়ীর মেয়ে নয়।"

- "তবে?"

-- "ও কোথা থেকে এসেছে। ওর পরিচয় কি আমি কিছুই জানি না। শুধু একদিন সকালে হঠাত অচেনা একটি মেয়ে আমার দোড়গোড়ায় আবির্ভাব। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারিনি। মনে হয়েছিল আমি বোধহয় স্বপ্ন দেখছি মনে হয়। কে যেন আমার শরীরের ভেতরটাকে নাড়িয়ে দিল।"

- "কি বলছো?"

-- "হ্যাঁ ঠিকই বলছি। একটা আলাদা থ্রিল, আলাদা উত্তেজনা। আমি যেন এক অচেনা নারীর সান্নিধ্যে জড়িয়ে পড়ছি। কেউ যেন ওকে আমার কাছে পাঠিয়েছে আমার একান্ত সঙ্গিনী করে। এমন অবধারিত সুযোগ আমি পায়ে ঠেলব। মিস্টার দিবাকর দত্ত, রজত মল্লিক আর যাই হোক এই ভুলটি কখনো করবে না।"

- "তারপর কি হলো?"

-- "তারপর? হা হা হা। তারপর যা হওয়ার তাই হলো। মানে মানে আমি কাজটা সেরে ফেললুম আর কি।"

- "তুমি?" (অবাক হয়ে)

-- "হ্যাঁ আমি। আমি এখন শুধুই মিলন পিয়াসী হয়ে উঠেছি। সিরিজা আমার সমস্ত প্রত্যাশা পূরণ করেছে। আমাকে উজাড় করে নিজের ভালোবাসা বিলিয়ে দিয়েছে সিরিজা। আমি যে ওকে শেষ পর্যন্ত পেতে চাই সেটা যে বুঝতে কোন অসুবিধা হয় নি সিরিজার তার জন্য আমি ধন্য। আমার বাকী জীবনটা এবার ওকে নিয়েই কাটবে।"

- "কিন্তু।"

-- "কিন্তু কি?"

- "মানে আমি বলছিলাম।"

-- "তোমার হিংসে হচ্ছে?"

- "না না তোমার জিনিষ তোমারই থাক। আমি শুধু বলছিলাম....."

রজত এবার একটু নেশার মতন করে বললো, "তুমি কি বলবে আমি জানি।"

- "কি?"

-- "বলবে ও অচেনা মেয়ে। তুমি কি করে এতটা রিস্ক নিলে তাই তো?"

- "হ্যাঁ মানে।"

-- "সব জানি দোস্ত। সব জানি। এদিকে এসো, তোমার কানে কানে একটা কথা বলবো।"

দিবাকর কানটা বাড়িয়ে দিতেই রজত বললো, "ওর বুক দুটোকে দেখেছো?"

দিবাকর মাথাটা নীচু করলো। উত্তর দিতে পারলো না। রজত বললো, "ঐ বুক দেখলে না সব ভুলে যাবে। এই আমার মত রোমিও সব ভুলে যাবে। তখন মনেই থাকবে না ও কোথা থেকে এসেছে? ওর পরিচয় কি? সব ভুলে যাবে। নাও নাও এবার মদটা আয়েশ করে খাও দেখি। টেনশন নিও না।"

দিবাকর দেখলো রজতের চোখটা লাল হচ্ছে আস্তে আস্তে।

- "এই তোমার নেশা হচ্ছে।"

-- "সবে তো ৩ পেগ মারলাম। এরমধ্যেই নেশা হবে কি করে? দাঁড়াও আগে ৭-৮ পেগ মারি, তবে তো নেশা।"

- "তোমার কথা যে জড়িয়ে যাচ্ছে।"

-- "কিচ্ছু জড়িয়ে যাচ্ছে না। ওটা তোমার ভুল। আমি ঠিক আছি। রজত গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে বললো-এর আগে এমন কোন মেয়ে দেখেছো?"

- "না না তুমিই যখন দেখোনি, আমি আর দেখব কি করে?"

-- "ইয়েস। এই তো এবার বুঝেছ, তাহলে বল, আমার জায়গায় তুমি থাকলে কি করতে?"

দিবাকর পুরো হতভম্ব হয়ে যাচ্ছে। কি বলবে বুঝতে পারছে না।

রজত বলছে, "তুমি কি করতে আমি জানি না। কিন্তু আমি সব করে ফেলেছি।"

- "সব?"

-- "হ্যাঁ কিচ্ছু বাকী নেই। সব।"

দিবাকর চোখ দুটো গোল গোল করে তাকিয়ে রয়েছে। রজত বলে যাচ্ছে, "আমার এই শরীরটা না এখন ওর গোলাম হয়ে গেছে। ও যা বলবে তাই করবে। আর আমি? ওকে যা বলব ও তাই করবে। দেখতে চাও?"

- "না না। এই তুমি ধৈর্য হয়ে বস। আমি সব বিশ্বাস করছি তোমার কথা। দিবাকর একটু ঘাবড়ে গেছে।"

-- "হ্যাঁ। বিশ্বাস তো করতেই হবে। বিশ্বাস না করলে চলবে?"
 
কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে রজত আবার দিবাকরকে বলতে লাগলো, "অশ্লীল, নোংরা, পাপ, এসব বলে না অনেকে? ব্যাটাদের জিঞ্জেস করে দেখত অজন্তা, ইলোরা এসব মূর্তী কোনদিন দেখেছে নাকি। তাহলে তো ওগুলোকেও অশ্লীল বলতে হয়। সুন্দরী মেয়ে যদি কেউ হয়, তাহলে তার স্বল্পবাস, নগ্নতা কোনকিছুই অশ্লীল নয়। সিরিজাকে আমি নগ্ন ছাড়া কিছু ভাবতেই পারি না। ওকে আমি ২৪ ঘন্টায় ১৬ ঘন্টাই নগ্ন দেখতে পারি। রাতের শোবার সময় টুকু ছাড়া। বিশ্বাস হচ্ছে না?"

দিবাকরের হঠাত মনে হোল, ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে কোন নগ্ন নারী। হ্যাঁ নগ্ন। বোধহয় সিরিজাই। সোফা থেকে অল্প দূরে। রজত আর দিবাকরের সামনে। উদ্ধত দুটি বুক, পাগল করা শরীর। খোলা চুল পিঠের উপর বিন্যস্ত। দিবাকরের দিকে তাকিয়ে মুচকী মুচকী হাসছে। এই সেই নগ্ন নারী? যার কথা রজত বলছিল। যা দেখছে তা কি সত্যি? চোখের মণি দুটো আটকে গেছে ওর। নড়াচড়া করছে না। এতো আগুনের স্ফুলিঙ্গ। রীতিমতন ভূকম্পন। রজত একেই ভোগ করছে স্বাধীন ভাবে। মানতে হবে। এতো নারী নয় এ হোল শরীরের রক্তসঞ্চালন বেড়ে যাওয়ার সুখানুভূতি। এক দৃষ্টে শুধু মুগ্ধ সহকারে দেখে যেতে হয়।

-- "তোমার আবার কি হোল? কথা বলছো না? নেশা হয়ে গেল নাকি? কি চিন্তা করছো?"

দিবাকর তাও শুনছে না, রজত আবার ডাকলো, "দিবাকর, এই দিবাকর।"

হঠাত রজত ওকে কোন কিছু দেখার থেকে বিঘ্ন ঘটিয়ে দিয়েছে। গ্লাসটা হাতে নিয়ে দিবাকরের যবনীকা ঘটেছে সেই দেখা থেকে। ও রজতের দিকে মুখ ফিরে মুখটা একটু গোমড়া করে ফেলেছে তখন। বেশ ভালোই দেখছিল, তা না শুধু শুধু ব্যাঘাত ঘটালো।

-- "কি হলো? কি ভাবছিলে?"

- "না একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলাম।"

-- "বুঝেছি বুঝেছি। হাওয়া লেগে গেছে তোমার। তবে? কেমন? বল এবার?" রজত হাসতে হাসতে বলছে দিবাকরকে, "কি ভাবছিলে আমি জানি।"

দিবাকর বুঝতে পারছে, রজত ধরে ফেলেছে ব্যাপারটা। মদের নেশায় রয়েছে বলে সহজ ভাবে নিয়েছে বিষয়টা। নইলে, দিবাকর বুঝতে পারছে, রজত ধরে ফেলেছে ব্যাপারটা।

- "আরে না না। দূর ওসব কিছু নয়। বেশ তো বলছিলে সিরিজার কথা। শুনি আর একটু।"

-- "কি করলে দিবাকর সারাজীবন? এরকম একটা জোটাতে পারলে না? না তোমার জন্য আমার দূঃখ হচ্ছে।"

- "আমাকে সান্তনা দিচ্ছ?"

-- "না তোমার মধ্যে যৌনতার উদ্রেক ঘটাচ্ছি দিবাকর। যদি আমায় দেখে কিছু শিখতে পারো।"

- "শেখাও না একটু। তুমি তো এ ব্যাপারে খুব এক্সপার্ট। আমি জানি।"

-- "শেখাতে পারি। প্রয়োগটা কার উপর করবে ভেবে রেখেছ?"

- "ভাবিনি। আগে বলো, তারপর চিন্তা করে দেখছি।"

-- "দেখো আবার। একটু ভেবেচিন্তে হ্যাঁ....."

রজত রসিকতা করছে দিবাকরের সাথে। দিবাকর কিন্তু খুব সিরিয়াস। মন দিয়ে শুনছে রজতের কথা।

-- "প্রথমেই বলি লেসন নম্বর ওয়ান - কিভাবে চুমুটা খাবে?"

দিবাকরকে চমকে দিয়ে রজত এবার মুখটা সোজা দিবাকরের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশ চমকে গেছে দিবাকর। ও একটু পিছিয়ে এসেছে। ঠাট্টার সুরে রজতকে বলছে, "আরে আরে কি করছো? হোমো হয়ে গেলে নাকি। চুমু যদি খেতে হয় সিরিজাকেই খাও।"

রজত একটু থমকে গেছে। ঠিক বুঝতে পারছে না কি করবে? সিরিজাকে বেশ জোড়ে ডাক দিয়েছে তখন, "সিরিজা....."

দিবাকর একটু থতমত খেয়ে গেছে। খেয়েছে! আমার সামনেই চুমুটা খাবে নাকি?

- "এই না না। কি করছো? আমি লজ্জায় পড়ে যাবো।"

-- "যৌনতার পাঠ শিখবে। তাতেও লজ্জা? তুমি কোন জগতে পড়ে আছ? এই কি সেই দিবাকর? যাকে কদ্দিন আগেও দেখেছিলাম।"

- "তাহলেও সিরিজা খারাপ ভাবতে পারে।"

-- "চুপ। একদম চুপ।" রজত আঙুলটা সোজা করে ধরেছে ঠোঁটের উপর। - "গুরু যখন শেখাবে, তখন কোন ইনটারাপ নয়। সিরিজা- এই সিরিজা। এসো তো একবার এ ঘরে।"

বলতে বলতে সিরিজা এসে ঢুকেছে ঘরে।

রজত ভালো করে তাকাতে পারছে না সিরিজার দিকে। ও পুরো মদের নেশায় চূড়। সিরিজা বুঝতে পারছে রজত একটু জড়িয়ে কথা বলছে। দিবাকরও একদম থ মেরে গেছে।

কাছে এসে রজতের পাশে বসেছে সিরিজা। শান্ত ভাবেই বললো, "কি হোল, আমাকে ডাকছিলে?"

দিবাকর ভাবছিল রজত না ওকে ধরে এক্ষুনি চটকাতে শুরু করে দিবাকরের সামনে। বুকের মধ্যে দামামা বেজে যাচ্ছে। এক্ষুনি মনে হচ্ছে একটা কান্ড ঘটবে। রজত ঠোঁটটা নিয়ে গেছে সিরিজার ঠোঁটের খুব কাছে। দিবাকরের বুকের মধ্যে এবার ঢিপ ঢিপ করছে।

-- "দিবাকরটা না বড্ড ছেলেমানুষ। বল আমি কি চুমু খেতে পারি না তোমাকে? ওর সামনে।"

সিরিজা মুখটা একটু সরিয়ে ফেলেছে এবার। রজত ওর হাত দুটো দুহাত দিয়ে ধরেছে।

-- "আচ্ছা না হয় এখানেই চুমু খেলাম।"

সিরিজার হাতের পাতার উল্টোপিঠে আলতো করে ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে ফেলেছে রজত।

- "এই যাঃ। তুমি না।" সিরিজা ছুট্টে উঠে চলে গেছে আবার শোবার ঘরে।

রজত তখন হাসছে। দিবাকরের মুখে কথা নেই।

ডেমনস্ট্রেশনটা পুরো দিতে পারে নি। তার জন্য আফসোস নেই। হঠাত দিবাকরকে বলছে, "আমি তোমাকে একটু পরখ করছিলাম, ডোন্ড মাইন্ড। ইচ্ছা করলে তোমার সামনেই আমি ওকে চুমুটা খেতে পারতাম। ইট ইস ইজি ফর মি।"

চোখটা লাল হয়ে গেছে দিবাকরের। এটা কোন রজত? একটু আগে যে মালের ঘোরে উল্টোপাল্টা বকছিল সেই রজত? না হঠাত সিরিজার মতন মেয়ে পেয়ে ধরাকে সরা মনে করছে সেই রজত? যৌনতার পাঠশালা কি আমি জানি না? না আমাকেও মুখ বুজে সব কিছু সহ্য করতে হবে। জীবনে যখন কোনকিছুই পারমানেন্ট নয়। তখন এটাও যে পারমানেন্ট থাকবে তার কি কোন গ্যারান্টি আছে? হঠাতই কেমন উল্টোপাল্টা ভাবতে শুরু করেছে দিবাকর। মনে মনে বললো, "দেখিয়ে দেব না কি একবার মুন্সিয়ানাটা। ইচ্ছে করলে এই দিবাকর সব পারে। তুমি তো কিছুই নয় আমার কাছে। তুচ্ছ তুচ্ছ তুচ্ছ!"

হঠাতই লাস্ট পেগটা হাতে নিয়ে রীতিমতন ঢোলে পড়েছে রজত। ও সোফার উপর এলিয়ে পড়েছে নেশার ভারে। চোখদুটো বুজে আসছে। গ্লাসটা কোনরকমে টেবিলের উপর রেখে আর কথাও বলছে না, নড়াচড়াও করছে না। দিবাকর শোবার ঘরের দরজাটার দিকে তাকিয়ে আছে। দরজাটা খোলা। ভাবছে ঢুকবে কিনা এবার? রজত তো ঢলে পড়েছে। এবার যদি ও সিরিজাকে.....?

ঘরে ঢুকলেই যদি চেঁচিয়ে ওঠে সিরিজা। - "কি ব্যাপার আপনি? আচমকা ঘরে ঢুকেছেন কি উদ্দেশ্যে? কি মতলব আপনার?এখানে এসেছেন কেন? নিশ্চয়ই ও বোধহয় বেহূশ হয়ে পড়েছে, আর সেই সুযোগ নিয়ে আপনি? আপনার সাহস তো কম নয়। ডাকবো নাকি ওকে। দেখুক এসে, পেয়ারের বন্ধু কেমন নিঃশব্দে চলে এসেছে চুপিচুপি। আর এগোবেন না বলে দিচ্ছি। এবার কিন্তু এগোলেই আমি চ্যাঁচাব। বেরিয়ে যান বলছি। বেরিয়ে যান।"

দিবাকরের কানে যেন কথাগুলো বাজছে। কে যেন সাহসটাকে দমিয়ে দিয়েছে হঠাত। একবার ও রজতের মুখের দিকে তাকাচ্ছে, একবার শোবার ঘরের দিকে। নিজেকেই দোনামোনোর জায়গায় নিয়ে ফেলেছে। ইচ্ছাটা তবু বিলীন হয়ে যাচ্ছে না। এ সুযোগ যদি আবার ফিরে না আসে? রোজ রোজ মদ খেয়ে তো রজত বেহেড হবে না। তাহলে? তাহলে কি? - এখনিই। শুভ কাজের এটাই তো সুবর্ণ সুযোগ। রজতের হুঁশ ফিরতে ফিরতে কাজটা সেরে নিতে হবে। আর করা যাবে নাকো দেরী। রজত ইউ ডোন্ট মাইন্ড। আই অ্যাম ভেরী ভেরী সরি।

দিবাকর আসতে করে উঠে শোবার ঘরের দরজার দিকে পা টা বাড়িয়েছে। এমন সময় কে যেন মেয়ের গলায় শোবার ঘরের ভেতর থেকেই বলে উঠলো, "দিবাকরদা আপনি আসুন তো ভেতরে। ও পড়ে থাক ওখানে। তখনই বলেছিলাম বেশী খেয়ো না নেশা হয়ে যাবে। শুনলো না আমার কথা। এখন থাক পড়ে। আপনি আসুন ভেতরে।"

দিবাকর নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছে না। গলাটাতো সিরিজার। ওকে ভেতরে ডাকছে? এ কি হলো? তাহলে পাশা উল্টে গেল নাকি?

ঘরটা বেশ অন্ধকার। সিরিজা লাইটটা নিভিয়ে দিয়েছে। দরজাটার সামনেটায় দাড়িয়ে দিবাকর ভেতরটা ভালো করে দেখতেই পাচ্ছিল না। একে নেশার ঘোর, তারউপর আবার বাতি নিভিয়ে রেখেছে। এ আবার কি ধরনের আমন্ত্রণ? একি অন্ধকারে ফাঁদ পাতার পরিকল্পনা? না অন্য কোন উদ্দেশ্য?

দিবাকর ইতস্তত করছিল। সিরিজা নিজেই বললো, "আপনার দরজার পাশেই সুইচবোর্ডটা রয়েছে। প্রথম সুইচটা টিপুন, আলো জ্বলে উঠবে। আমি আসলে অন্ধকারেই বসেছিলাম। আসুন আসুন কোন চিন্তা নেই।"

অনেক কষ্টে সুইচবোর্ড হাতরে লাইটটা জ্বালল দিবাকর। ঘরটা তখন আবার আলোময়। বিছানার উপর বসে আছে সিরিজা। ওর দিকে তাকিয়ে দেখছে একদৃষ্টে। এ যেন অন্য সিরিজা। চোখের মণিতে কোন আমন্ত্রন নেই, নেই কোন ইশারা। সিরিজা সহজ, সরল, সাবলীল। খুব স্বাভাবিক ভাবেই ওকে বললো, "আপনিও তো বসে খাচ্ছিলেন ওর সাথে। আপনার নেশা হয় নি?"

দিবাকর কায়দা করে ওকে বললো, "না, রজত আসলে একটু বেশী খেয়ে ফেলেছে। ও কেমন অসাড় হয়ে পড়ে রয়েছে। তাই ভাবলুম আপনাকে ডাকি।"

- "আমাকে আপনি বলবেন না। আমি তো সামান্য অচেনা গ্রামের মেয়ে। আপনারা কোথায় আর আমি কোথায়।"

দিবাকর একবার ভাবল সিরিজার সাথে কথা চালিয়ে যাবে নাকি। তারপর আবার ভাবল সুযোগ যখন নেই তখন শুধু কথা বাড়িয়ে লাভ কি? বরঞ্চ রজত কে ডাকি, ওর আবার হুঁশ ফিরে এলে মুশকিল হবে।

- "বসুন দাঁড়িয়ে রইলেন কেন?"

-- "না রজত ওঘরে রয়েছে, ভাবছিলাম ওকে যদি ডাকা যেত।"

- "আমার সাথে একা একা কথা বলতে ইচ্ছে করছে না?"

ওঃ বাবা, এ যে দেখছি মাঝে মাঝে ঝিলিক মারে! দিবাকর বললো, "না, তা নয়। আসলে রজত....."

- "রজত কি?"

-- "আমাকে সন্দেহ করবে"

- "কেন? ও তো আপনাকে বিশ্বাস করে।"

-- "বিশ্বাস?!"

- "হ্যাঁ। দেখছিলেন না এতক্ষণ ধরে কত কথাই আপনাকে বলছিল। বিশ্বাস না করলে বলতো?"

-- "আপনি সব শুনেছেন?"

- "আবার আপনি? বললাম না-"

-- "ওহ। না মানে তুমি সব শুনেছ?"

- "অত জোরে জোরে বলছিল, সব শুনেছি। এঘর থেকে ওঘরটা কি খুব দূরে? সব শোনা যায়। আমি তো বসে বসে আপনাদের কথাই শুনছিলাম।"

-- "এ মা, কি লজ্জা!

- "কেন, লজ্জা কেন?"

-- "না..... মানে...... আমার খারাপ লাগছে।"

- "কিসের খারাপ? ভালোই তো। আমাকে নিয়ে কথা হচ্ছিল, আমি সব শুনছিলাম, আমার তো মজাই লাগছিল। আবার খারাপ কেন? বেশ তো হচ্ছিল।"

-- "আমি জানতে চাই নি। ও নিজেই।" (দিবাকর ভাবছে কি ভুল করেছে ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে।) "তুমি কিছু মনে করোনি তো?"

- "আমি মনে করিনি। আপনি কিছু মনে করেন নি তো?"

দিবাকর বুঝতে পারছে সিরিজা এবার ওকে কথার ভাঁজে ফেলছে। মেয়েটা গ্রামের মেয়ে হলে কি হবে, বেশ চালাক চতুর আছে। রজতকে পটিয়েছে এমনি এমনি। শুধু শরীর কেন, কথারও মারপ্যাঁচ আছে মেয়েটার। রজতের উপর ঝালটা নিতে পারবে না, এখন শোধটা নিচ্ছে আমার উপর। ও তবু বললো, "না না আমি কিছু মনে করিনি। আসলে ও তোমাকে খুব পছন্দ করে তো তাই মন খুলে বলছিল।"

- "আর আপনি?"

-- "আমি?"

- হ্যাঁ, আপনি আমাকে পছন্দ করেন না?"

সর্বনাশ করেছে। এ তো এমন হেঁয়ালি শুরু করে দিয়েছে যে প্রানটাই ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে। আমাকে ঘরে ডেকে এনে বেইজ্জত করছে। মেয়েটা পাজী আছে তো?

-- "আমি? মানে....."

- "হ্যাঁ আপনিই। পছন্দ করেন আমাকে?"

-- "তুমি কিসব বলছো? রজত খারাপ ভাববে।"

- "ধরুন রজত যদি না থাকতো, মানে আপনার বন্ধু। তাহলে পছন্দ করতেন?"

দিবাকর উত্তর খুজে পাচ্ছে না। মুখটা নীচু করে ফেলেছে।

- "এই, তাকান না আমার দিকে একটু। তাকান তাকান। বলুন পছন্দ করতেন?"

দিবাকর মুখ তুলে তাকিয়েছে সিরিজার দিকে। দেখছে, সিরিজা ওর বুকের আঁচলটা সরিয়ে দিয়েছে। চোখের সামনে সেই পাহাড় চূড়ার মতন দুটি বুক। ব্লাউজের আড়ালে প্রস্ফুটিত, পরিপুষ্ট উন্নত দুই স্তন। সিরিজার বডি ল্যাঙ্গুয়েজটা একটু আলাদা। চোখের মণিতে সেই মনভোলানো ইশারা। শরীরটাকে যেচে দেখানোর আহ্বান। এ যেন অন্য সিরিজা। একটু আগে যে সিরিজা কথা বলছিল, সেই সিরিজা নয়।

দিবাকর কি করবে বুঝতে পারছে না। ওর হাত পা, চোয়াল সব শক্ত হয়ে যাচ্ছে। সিরিজার এই হঠাত চমক কি কারনে? পুরোন সঙ্গীকে ঝেড়ে ফেলে নতুন সঙ্গী খুঁজে নেওয়ার প্রয়াস? না দিবাকরকে ছিবড়ে করে ফেলে দিয়ে রজতের সাথে এতদিনের বন্ধুত্বটাকে খতম করে দেওয়ার সুষ্ঠ পরিকল্পনা।

সিরিজা এবার বুকের ব্লাউজটাও খুলছে। সুঠাম, সুগঠিত বুকভরা স্তনদুটোকে আরো বিকশিত করতে চাইছে। রজতের মুখেই শোনা। ওর এই অঙ্গটি নিয়ে তো ফ্যান্টাসীর শেষ নেই। এমন বড় আকারের স্তনের অধিকারীনি, কি কাঠামো, উচ্চতা, ওজন সবের মধ্যেই সামঞ্জস্য রেখেই যেন ভগবান বানিয়েছে ওর স্তন। অনেক খুঁজে পেতে অবশেষে কাঙ্খিত, পছন্দসই বুক পেয়েছে রজত। সারা শরীরে ওটাই যেন মধ্যমণি।

এ নারীকে এড়িয়ে যাবে কোন বোকা পাঁঠা? দিবাকর ভাবছিল কি বোকা বোকা কথাগুলো বলছিল ও এতক্ষণ। সিরিজা যখন জানতেই চাইছে তখন সোজা সাপ্টা ভাবে বলে দিই না আসল উত্তরটা। - "সিরিজা..... তোমাকে না আমি....."

দিবাকর কথাটা বলতেই যাচ্ছিলো, এমন সময় ও দেখলো সিরিজা বুকের ব্লাউজ খুলে ব্রেসিয়ার শুদ্ধু জোড়া মাইদুটো ওকে দেখিয়ে আরো তাতানোর চেষ্টা করছে। এরপরে নিশ্চয়ই ব্রেসিয়ারের হুকে হাত পড়বে সিরিজার। বুক দেখে দিবাকরের চোখদুটো আতিপাতি করে ঘুরছে। যেন সিরিজা ওকে বলতে চাইছে, যত ইচ্ছা নাও, শুধু তুমি এখন আমার হও।

- "আমাকে দেখছেন? একটু আমার ব্রেসিয়ারের হূকটা খুলে দেবেন? কাছে আসুন না। এই যে এখানে। এখানে হাত দিন।"

দিবাকরের চোখে ও মনে ঘোর লেগে গেছে। ও মনে মনে ভাবলো, "এটা কি হচ্ছে? আমাকে খেলিয়ে খেলিয়ে উত্তেজিত করা হচ্ছে? সিরিজা দেখতে চাইছে আমি সাহসী পদক্ষেপটা নিতে পারি কিনা? আমাকে টেষ্ট করা হচ্ছে? বন্ধুত্বকে বিসর্জন দিয়ে ঐ সুন্দর বুকদুটোর মায়াজালে আমি আকৃষ্ট হতে পারি কিনা তার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? আর কত ধৈর্যের পরীক্ষা দেব? আমারও তো ভেতরের যন্ত্রটা ফুঁসতে আরম্ভ করেছে। তাহলে? রজতকে চুলোয় দিয়ে এবার এগিয়ে যাবো নাকি ওর দিকে আস্তে আস্তে??"

দিবাকরকে নড়তে না দিয়ে সিরিজা এবার নিজেই বিছানা থেকে উঠে এসে ওকে দুহাতে জড়িয়ে ধরলো সজোরে। দিবাকরের হাত দুটো নিজের কোমর আর পিঠের উপর ছড়িয়ে সিরিজা বললো, "খালি লজ্জা পান, আমার ব্রেসিয়ারটা খুলতে পারছেন না? এই তো, পেছনে হুকটা। খুলুন এবারে।"

ওর দুটো হাত এবার ব্রেসিয়ারের হূক খুলে পুরোপুরি সিরিজার বুক দুটো উন্মোচন ঘটানোর চেষ্টা করছে। দিবাকরকে শরীর দিয়ে পেঁচিয়ে ধরেছে সিরিজা। ওর চাবুক খাড়া খাড়া বুকদুটো দিবাকেরর বুকের সাথে লেপ্টে যাচ্ছে। ও এবার হূক খুলছে। সিরিজাও মুচকী মুচকী হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে। যেন বন্ধুত্বের মোহ শেষ পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পেরেছে এতক্ষনে।

- "এই দিবাকরদা, দেখুন এবার আমার দিকে। এই যে আমার ঠোঁট। এখানে একটা চুমু খান। আপনি পারবেন। দিবাকরদা আমি চোখ বুজছি, আমার ঠোঁটে চুমু খান।"

রজতের হাতে খুন করতে চাও আমাকে? অকালে প্রাণটা চলে যাক তুমি চাও সিরিজা? কেন তুমি করছো আমার সাথে এমন? আমি চুমু খাবো? আমার শরীরটাকে জ্বালিয়ে দিয়ে রসিকতা করছো আমার সাথে? তুমি কি করছো? ছাড়ো আমাকে!

- "যাকে পছন্দ করেন তার ঠোঁটের স্পর্শ পেতে ইচ্ছে হয় না আপনার। লাইটটা নিভিয়ে দেব? রজতের জন্য ইতস্তত করছেন? আমি আমার ঠোঁটের সাথে আপনার ঠোঁটটা মেলাতে চাইছি দিবাকরদা। আপনি যদি সাড়া দেন। পারেন না আমাকে চুমু খেতে? খান আমাকে। একবার অন্তত আমার ঠোঁটের সাথে আপনার ঠোঁটটা মিলিয়ে দিন গভীর ভাবে। পারবেন দিবাকরদা। আপনি পারবেন, প্লীজ আমাকে চুমু খান।"

সুইচ বোর্ডের লাইটটা নিভিয়ে দিয়ে সিরিজা এবার দিবাকরকে টান মেরে ধরে ওকে নিয়ে এসেছে বিছানার উপরে। ব্রেসিয়ারের বন্ধন মুক্ত হয়ে তখন উন্মোচিত হয়ে গেছে ওর দুই পাগল করা স্তন। অন্ধকারে দিবাকর সিরিজাকে ভালো করে দেখতে পাচ্ছে না। শুধু অনুভব করছে ঠোঁটের উপর সিরিজার ঠোঁটের স্পর্শ। সিরিজা এবার ওকে তুমি বলে সন্মোধন করছে।–এই আমার ঠোঁটটা ভালো করে চোষো না।

যেন ঘোরে পরা মানুষেরে মতন কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে দিবাকর। সিরিজা ওকে রোবটের মতন নিয়ন্ত্রন করছে। ওর পুড়ে যাওয়া ঠোঁট দুটোকে জিভের প্রলেপ লাগিয়ে ঠান্ডা করছে সিরিজা। দিবাকরের মাথাটা আঁকড়ে ধরেছে দুইহাতে। আঙুল চালিয়ে ওর চুলগুলোকে এলোমেলো করে দিচ্ছে সিরিজা। সেই সাথে দিবাকরের ঠোঁটে জিভ বোলাতে বোলাতে বলছে, "ভালো লাগছে তোমার?"

-- "এত ভালো আগে কোনদিন পাইনি।"

- "তাহলে এবার তুমি করো।"

দিবাকর প্রবল আবেগে সিরিজার ঠোঁটটা ঠোঁটে নিয়ে চুষছে। এ যেন বিচিত্র অভিজ্ঞতা। রজতের বাড়ীতে এসে রজতেরই রক্ষিতাকে নিয়ে চুম্বন স্বাদ উপভোগ করছে দিবাকর। একে বিচিত্র অভিজ্ঞতা ছাড়া আর কিই বা বলা যাবে? তাহলে তো খেলা এবার ভালোই জমে উঠেছে। কি ভাবছে দিবাকর? বিছানায় সিরিজার শরীরের মধ্যে প্রবিষ্ট না হয়ে উপায় কি? যতক্ষন না রজতের হুঁশ না ফেরে ততক্ষন। ঐ শরীরের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে সুখের সাগরে ভেসে যাওয়া। হতভাগা রজত। দিবাকরকে এ বাড়ীতে ডেকে এনে কি ভুলটাই না করেছে। হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে এখন। ভাগ্যিস সিরিজা ছিল। ও ডাক দিল, নইলে রজতের উপর হিংসায় জ্বলে পুড়ে শরীরটাই ছাড়খাড় হয়ে যেত এতক্ষণ। দিবাকর ভাবছে, এবার তাহলে ওর উপর যৌনইচ্ছাটা খাটানো যাক। যা করার তাড়াতাড়িই করতে হবে। কখন যে রজত উঠে পড়বে তাহলেই তো মুশকিল।

দিবাকর পুরো মাতালের মতন বললো, "এবার একটু যৌনউদ্যোগ নাও সিরিজা। আমি যে আর পারছি না। তুমি কি একটু তোমার বুকে মুখটা রাখতে দেবে না আমায়?"

- "রাখো না দিবাকরদা রাখো। আমার এইখানে মুখ রাখো। তোমার সিরিজার স্তন তুমি মুখে তুলে নাও।"

-- "ওফ কি মারাত্মক। এমন বুকের কথা যদি জানতাম, তাহলে কত আগেই তোমার কাছে ছুটে আসতাম।"

- "তুমি পারবে রজতের মত এ দুটোকে চুষতে, ভালোবাসতে? আমার স্তনকে তো যে দেখেছে সেই মজেছে। তুমিই বা কেন বাকী থাকবে দিবাকরদা, নাও আমার স্তনের বোঁটাটা মুখে নাও। চোষো।"

দিবাকর ওর দুই স্তনের উপর ঝাপিয়ে পড়ে স্তনের বোঁটা মুখে পুরে খেয়ে ফেলার চেষ্টা করছিল। বোঁটার দুপাশে কালো চামড়ার অংশটা লেহন করছিল। জিভ দিয়ে বুকের দুই গোলাকার অংশ চেটেপুটে সিক্ত করে তুলছিল।

পারছিল না আর। ভাবছিল এইবার যদি পুরুষাঙ্গটাকে সিরিজার যোনীর মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়। কামে ছলছল করে উঠছে বুকের ভেতরটা। রজত কি সুখ দিয়েছে সিরিজাকে? ও দেখিয়ে দিতে পারে সিরিজাকে আসল সুখ কাকে বলে।

-- "এই আগুনে আমার মোম তো গলে যাচ্ছে সিরিজা। তোমায় কি করতে পারবো না?"

- "কেন পারবে না? এ শরীর আজ থেকে শুধু রজতের নয়। এ শরীর তোমারও।"

-- "প্রাণভরে উপভোগ করতে ইচ্ছে করছে। সিরিজার যৌবনসাগরে সাঁতার কাটার অপরূপ এক সুযোগ। তোমাকে না করতে পারলে পুরুষ জনমটাই বৃথা।"

দিবাকর ছটফট করছিল সিরিজার যোনীতে পুরুষাঙ্গটা ঢোকানোর জন্য। ও বুক চুষতে চুষতে সিরিজাকে বিছানায় চিত করে শুইয়ে ফেললো।

- "মন থেকে চাইছো। অথচ মুখে বলতে পারছ না, না!"

সিরিজা নিজেই শায়াটা ওপরে তুলে দিবাকরকে আহ্বান করছিল ওর পুরুষাঙ্গটা সিরিজার যোনীতে ঢোকানোর জন্য।

- "কি হলো, এবার ঢোকাও"

দিবাকর ঢোকাতেই যাচ্ছিলো, এমন সময় কে যেন পেছন থেকে বলে উঠলো, "কি হলো, এবার ওঠো। অনেক তো হলো।"

গলাটা শুনে দিবাকরের মনে হোল এটা নিশ্চয়ই রজতের!

সিরিজার দেহগত ও দেহনিসৃত রসে সিক্ত হওয়া থেকে কে এমন ব্যাঘাত ঘটালো? কামজ আকাঙ্খা যখনই তীব্র হয়ে উঠেছে তখনই এমন বাধা এল। দেহের ক্ষুধা তৃপ্ত হওয়ার আগেই রজত এসে পড়লো ঘরে। এখন কী হবে? দিবাকর দেখলো এতক্ষণ ঘরটা অন্ধকার অন্ধকার ছিল, কিন্তু এখন যেন কেমন আলোময় হয়ে উঠেছে আবার। দিবাকরের দিকে ঝুকে পড়ে রজত ওকে ডাকছে, "কি হলো ওঠো। অনেক তো হলো, এবার উঠবে তুমি?"

কিন্তু একী? ও তো শোবার ঘরের বিছানায় নেই। ওতো পড়ে আছে রজতের বসার ঘরের সোফার উপরেই। একটু আগেই দুজনে মিলে ড্রিংক করছিল যেখানে, সেখানে। দেহটা তাহলে স্থানান্তরিত হয় নি? সিরিজাই বা কোথায়? ওতো নেই এখানে। তাহলে কি এতক্ষণ ধরে মদের ঘোরে স্বপ্ন দেখছিল দিবাকর? দেহমন উজাড় করে যে একটু আগে তৃপ্তি উপভোগ করতে দিচ্ছিল, সেই তো এখন নেই। মিছিমিছি দেহভোগের লালসা জাগিয়ে এ আবার কি তামাশা হলো?

রজত ওকে ডাকছে। তাহলে কি দিবাকরের বদলে ঐ এতক্ষণ ছিল সিরিজার সাথে শোবার ঘরে? একপ্রস্থ যৌনভোগ করে এসে এখন আমাকে ন্যাকামী করে ডাকা হচ্ছে। দিবাকর যেন রজতকে সহ্য করতে পারছিল না। মনে হচ্ছিল এক্ষুনি ওকে কিল, চড়, ঘুসি চালিয়ে দেয়। এমন একটা সুন্দর কল্পনার ব্যাঘাত ঘটালো। কিছু না হলে অন্তত স্বপ্নটাকেই দেখতে দিত আরো কিছুক্ষণ। জোর করে ওর স্বপ্নে ব্যাঘাত ঘটালো রজত। কেন?

হাতের নাগালে এমন একটা সুযোগ এসেও চম্পট দিয়ে চলে গেল, এটা কেমন হলো? সেক্স নিয়ে পরিহাস হলো আমার সাথে? দিবাকর যেন মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না কিছুতেই। স্বপ্ন তো স্বপ্নই। তা আবার বাস্তব হয় নাকি কখনও? রজতের বাঁদীকে যে স্বপ্নে ছুতেঁ পেরেছে, এটাই অনেক। কে ওকে বোঝাবে? আরে বাবা সত্যিটাকে তো মেনে নিতে হবেই। সিরিজার খেয়েদেয়ে কাজ নেই কেন রজতকে চটিয়ে শুধু শুধু দিবাকরের সাথে যৌনসম্পর্কে জড়াবে? এ আবার হয় নাকি?

- "আমি কখন বেহুঁশ হয়ে পড়েছিলাম? আমাকে ডাকোনি?"

-- "বেশ তো কথা বলছিলে বাবা। তারপর দেখলাম আসতে আসতে সোফার উপর ঢোলে পড়লে। আমি তোমাকে কত জাগানোর চেষ্টা করলাম পারলাম না। সিরিজাও বললো, "ও পড়ে আছে, ওকে পড়ে থাকতে দাও। তুমি বরং উঠে এসে এঘরে এসো।"

- "তারপর?"

-- "তারপর আর কি? ওঘরে চলে গেলাম। আর একটু মস্তি করে এলাম। আমার তো কোন বিধিনিষেধ নেই। যখন চাইব, তখনই পাব।" বলেই হো হো করে হাসতে লাগলো রজত।

দিবাকর রাগে জ্বলছে। এতক্ষণ ধরে ও সোফায় পড়ে রয়েছে আর ও কিনা ভেতরে গিয়ে রতিলীলা করে এল। নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। একটু আগেই তো সিরিজা কি সুন্দর নিজেকে সঁপে দিয়ে চুম্বনের আদানপ্রদান করছিল ওর সাথে। আবেগে উত্তেজনায় কেঁপে উঠছিল রজতের ঠোঁট দুটো। সক্রিয় ভূমিকাটা যেই নিতে যাচ্ছিলো আর সেই সময়ে.....

রজত বললো, "শুয়ে শুয়ে কার কথা ভাবছিলে বাবা? আমি তো ভাবলাম আমারই নেশা হয়েছে। এখন দেখছি তোমার নেশা হয়েছে আমার থেকেও বেশী। হঠাৎ এরকম হলো কেন?"

- "খাওয়াটা একটু বেশীই হয়ে গেছে। তোমার কথা শুনতে শুনতে একটু নেশার ঝিমুনি এসে গেছিল। কখন বেহুঁশ হয়ে গেছি বুঝতে পারিনি।"

-- "ঠিক আছে, নাও নাও। এবার ওঠো। ডিনারটা তো সারতে হবে। আমি ফোন করে হোটেলে খাবারের কথা বলে দিয়েছি। এক্ষুনি এসে খাবার দিয়ে যাবে। তুমি বরঞ্চ উঠে একটু চোখে মুখে জল দিয়ে নাও।"

- "না না আমি ঠিক আছি। তুমি টেনশন নিও না। এক্ষুনি ঠিক হয়ে যাবে। আমার কিছু হয় নি।"

বেশ ভালোমতনই বুঝতে পারছিল দিবাকর, কাউকে নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করলে নিস্তেজ মনে তারই প্রভাব পড়ে। সিরিজাকে নিয়ে এতক্ষণ যা ঘটছিল তা ঐ চিন্তারই প্রতিফলন। আফসোস হচ্ছিল, হতাশও লাগছিল, এমন দূর্দান্ত মূহুর্তটা ঘটল, তাও কিনা এভাবে? সত্যি সত্যি যদি হোত তাহলে না হয় একটা কথা হতো। রজতের হাম্বরি ভাব ঘুচে যেত তখন। সিরিজাকে নিয়ে বাকী জীবনটা দিবাকরই মস্তি করত রজতের নাক ঘসে দিয়ে।

যাজ্ঞে। কি আর করা যাবে? সবই যখন ওপরওয়ালার ইচ্ছা, তখন এটাকেই মেনে নিতে হবে।

রজতকে ও বললো, "আমার জন্য খাবারের অর্ডারটা শুধু শুধু কেন দিলে? আমি চলে যেতাম।"

-- "চলে যেতাম মানে? কোথায় যাবে তুমি? এ অবস্থায় বাড়ী ফিরবে, মাথা খারাপ নাকি? আজ রাত্রিটা আমার এখানেই থাকবে তুমি।"

- "তোমার এখানে থাকব মানে?"

-- "থাকবে মানে থাকবে। এক রাত্রি আমার বাসায় কাটাবে, এর জন্য আবার মানে কি আছে?"

- "কিন্তু তোমার অসুবিধা হবে না?"

-- "কিসের অসুবিধা? তুমি থাকবে। তার আবার অসুবিধা কি? এইটুকু তোমার জন্য করতে পারবো না? রজত মল্লিক কি এতই স্বার্থপর হয়ে গেল নাকি?"

দিবাকর কি যেন ভাবছিল। হঠাত কেমন একটা আশার আলো জেগেছে মনের মধ্যে। রাত্রে তাহলে স্বপ্ন না হয়ে বাস্তবটাই হবে না কি সত্যি সত্যি এবার?
 
।। বারো ।।

হোটেলের খাবারটা মুখে পুরো বিস্বাদ লাগছিল দিবাকরের। মনটা খারাপ হয়ে রয়েছে। আসল খাবারটাই যখন চেখে দেখা হোল না, তখন দোকানের খাবার তো বিস্বাদ লাগবেই। চোখের সামনে সিরিজার বড়বড় বুক দুটো এখনও ভাসছে। ওটাই মনে মনে দেখছে, কিন্তু পাতের খাবারে যেন অরুচী ধরে গেছে।

রজত লক্ষ করছিল দিবাকর খাবারটা ভালো করে মুখে নিচ্ছে না। চুপচাপ বসে এখনও যেন কিছু চিন্তা করছে।

-- "কি হোল, খাবারটা খাচ্ছ না কেন?"

- "ভালো লাগছে না, তুমি খাও।"

-- "তোমার কি হলো বলো তো? সেই থেকে দেখছি কেমন মন মরা হয়ে রয়েছ। কিছু হয়েছে নাকি তোমার?"

দিবাকর মুখ তুলে বললো, "না না তেমন কিছু নয়। আসলে প্রচুর ড্রিংক করে ফেলেছি। শরীরটায় একটু অস্বস্তি হচ্ছে।"

-- "ওটা কোন ব্যাপার নয়। কিচ্ছু হবে না। খেয়ে দেয়ে একটা লম্বা ঘুম দাও। কাল সকালে উঠে দেখেবে শরীর চাঙা হয়ে গেছে।"

দিবাকর মুখটা তুলে একবার শোবার ঘরের দিকে তাকালো।

রজত বললো, "সিরিজা ঘুমিয়ে পড়েছে। ও বললো, খাবে না। আমাদের খেয়ে নিতে।"

ঘুমিয়ে পড়েছে? দিবাকরের যেন রজতের কথাটা শুনে বিশ্বাসই হোল না। মিথ্যে কথা বলছে। ও জেগেই আছে। দিবাকর এখন ড্রাংক হয়ে রয়েছে বলে সামনে আসতে চাইছে না। যেই ও ঘুমিয়ে পড়বে, তখনই দুজনের যৌনখেলা আবার শুরু হবে। ও যেন মনে মনে একটা শপথ নিল, আজ রাতে ও কিছুতেই ঘুমোবে না। রাত জেগে দেখবে, দুজনে মিলে কেমন ফাকিং করে, শালা আমাকে ঢপ দেওয়া। চোদাচুদি করবিই যখন, সামনেই করো না। অত ন্যাকামোর কি আছে?

রজতকে ন্যাকামি করে দিবাকর বললো, "ঘুমিয়ে যখন পড়েছে, তখন আর কি হবে? ভেবেছিলাম সিরিজাকে একটা কথা বলব।"

-- "কি কথা? আমায় বলো।"

- "না থাক, কাল সকালেই বলব।"

সোফা ছেড়ে উঠে বেসিনে হাতটা ধুতে গেল দিবাকর। আয়নায় দেখলো তখনও রজত মাংসের হাড়টা চিবোচ্ছে।

মুখ ধুয়ে এসে সোফায় বসে একটা সিগারেট ধরালো দিবাকর। ও রজতকে আড়চোখে লক্ষ করছে। মনে মনে কি যেন একটা পরিকল্পনা করে রেখেছে, রজতকে বুঝতে দিচ্ছে না। রজত এখন কি করে সেটাই দেখার।

-- "কি হলো তুমি শোবে না?"

- "তুমি শুয়ে পড়লে পড়ো না। আমি একটু পরে শুচ্ছি।"

-- "না না তা কি হয়? আমি বরঞ্চ তোমার সাথে এখানে বসে একটু গল্প করি। আমারও এক্ষুনি ঘুম আসছে না। দাঁড়াও আমি আসছি।"

শোবার ঘরে ঢুকে চট করে একটা মাথার বালিশ নিয়ে এল রজত।

-- "এটা তোমার মাথায় দিয়ে শোবার জন্য। কাজ হবে তো?"

- "হ্যাঁ হ্যাঁ আলবাত হবে। তুমি শুয়ে পড় না রজত। আমার জন্য শুধু জেগে কি করবে? আমিও একটু পরে ঘুমিয়ে পড়ব।"

দিবাকরের হাতে সিগারেটের নিকোটিনটা পুড়ছে। মনটাকে আচ্ছন্ন করে একটু আগে দেখা যৌন স্বপ্নটাকে আবার জীবন্ত করে তোলার চেষ্টা করতে লাগলো ও। মনের মধ্যে এখনও শুধু সিরিজাই আর সিরিজা। রজত মাঝখানে বিড় বিড় করে কি সব বলে গেল, ওর কথাগুলো দিবাকরের ভালো করে কানেই ঢুকল না।

সিরিজাকে একটিবারের জন্য আবার কাছে পেতে চাইছে। দীপাবলির রাতের শ্যামপোকার মতন ওর শরীরটা পুড়ে যাচ্ছে এখনও। দগ্ধ বুকের উপর কে যেন হাতুড়ীর আঘাত হানতে চাইছে। দিবাকর এখনও ভুলতে পারছে না একটু আগে স্বপ্নের মধ্যে কি ঘটতে চলেছিল ওর সিরিজার সঙ্গে। অ্যালকোহলিক নেশায় ব্যাপারটা ঘটলেও, দিবাকর যেন মন থেকে ব্যাপারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। রজত যদি না থাকত, তাহলে দিবাকরই হয়তো হোত বিশ্বের একচ্ছত্র অধিপতি। যেখানে খেলাটা শেষ হয়েছিল, ওখান থেকেই খেলাটা শুরু করে দিত আবার নতুন করে।

রজত বললো, "তুমি তাহলে শোও, আমি আসি।"

- "হ্যাঁ ঠিক আছে। গুড নাইট।"

রজত চলে গেল। দিবাকর বুঝতে পারলো, ওর মনের মধ্যে এখনও শেষ না হওয়া স্বপ্নটা দিব্যি জেগে আছে শরীর তাতিয়ে। যেন এ স্বপ্ন খুব সহজে মরবে না। আজ রাত্রেই যদি বাকীটা পুরণ করা যেত স্বপ্ন সত্যি করে। মনে মনে ও একটা দুঃসাহসিক ফন্দী আটতে লাগলো। সিগারেট খেতে খেতে হঠাৎ ই লক্ষ্য করলো, রজত শোবার ঘরে ঢুকেছে, কিন্তু দরজাটা ভেতর থেকে লাগায় নি। আলতো ভেজানো রয়েছে, যেন ঠেলা মারলেই ঝট করে খুলে যাবে দরজাটা। তারপর?

মেয়েছেলেটাকে হাতে পেয়ে যে ভালোই ফুর্তি করছে, সে এত ভুল করবে? যাওয়ার আগে দরজাটা ভেতর থেকে লাগাবে না? দিবাকরকে বিশ্বাস করে এত কাঁচা কাজ করবে?

রজত মালের ঘোরে ভুলেই গেছে বোধহয়। দিবাকরের মনে হোল, রজত যে সত্যি বলেনি সেটা এবার হাতে নাতে প্রমান পাওয়া যাবে। যদি একবার দরজার ফাঁক দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখা যায়, সত্যি সত্যি সিরিজা ঘুমিয়ে পড়েছে কিনা, না দেহ খুলে বসে আছে রজতকে যৌনসুখ দেওয়ার জন্য। ওর ভেতরটা উসখুস করতে লাগলো, কখন পা টিপে টিপে শোবার ঘরে যাবে। একবার শুধু দেখে নেবে কামলীলা শুরু হয়েছে কিনা?

ভেতরে ভেতরে রাগটাও যেন ফেটে পড়ছিল দিবাকরের। শালা হাইপার সেক্সুয়ালিটি রজত! কদিন সিরিজাকে নিয়ে তুষ্ট থাকবে? ওর পক্ষে তো এক নারীকে নিয়ে বেশীদিন থাকা সম্ভব নয়। সিরিজাকে নিয়ে ভোগ করার অধিকার শুধু ওরই আছে নাকি? কেন দিবাকরের নেই? নারীপুরুষের অঙ্গ-জাগরণ ছাড়া নাকি প্রেম হয় না। সিরিজা ওর জীবনে এসে সব ওলোটপালট করে দিয়েছে। এখন আর অন্য নারীর কাছে যাওয়ার কোন দরকার নেই। বড়বড় রজতের বাত শুনতে শুনতে তো সারা সন্ধেটাই কেটে গেল। নিজের পাওনাটা আর পূরণ হলো কই?

এখন যদি ও সিরিজাকে বলে দেয়, - "যাকে সবকিছু উজাড় করে দিচ্ছ, সেই তোমার জীবনের একমাত্র পুরুষ নয়। সুযোগ সন্ধানী রজত, তোমাকে পেয়ে শুধু সুযোগের সদব্যাবহার করছে, আর কিছুই নয়!"

সিরিজা কি তাহলে পার্টনার বদল করবে? দিবাকরকে রজতের জায়গাটায় বসিয়ে দেবে? এসব ভাবতে ভাবতে ওর ঘুমের বারোটাটা বেজেই গেল ভালো ভাবেই। একটা সিগারেট শেষ না হতে হতেই ও আরেকটা সিগারেট ধরালো। ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বোঝার চেষ্টা করতে লাগলো, ভেতরে আসলে এখন কি হচ্ছে। রজতও কি সিরিজার মতন ঘুমিয়ে পড়েছে না ওকে বিছানায় নিয়ে চরম ঠাপানি শুরু করেছে? সিগারেটটা শেষ হলেই উঠে গিয়ে দেখবে। তারপর যদি ধরা পড়ে যায় কপালে তখন যা থাকার তাই হবে। আজ যে করেই হোক একটা হেস্তনেস্ত করেই ছাড়বে দিবাকর।

ওর যেন তর সইছিল না। সিগারেটটা তাড়াতাড়ি শেষ করে সোফা ছেড়ে উঠতেই যাবে, এমন সময় শোবার ঘরের ভেতর থেকে ফিসফিস শব্দ কানে ভেসে এল দিবাকরের। দুজনেই মনে হয় আস্তে আস্তে ভেতরে কথা বলছে। পা টিপে টিপে শোবার ঘরের দরজার দিকে এগিয়ে গেল দিবাকর। দরজায় কান পেতে শোনার চেষ্টা করলো, কি কথা বলছে ওরা ভেতর থেকে। দরজার অল্প ফাঁক দিয়ে ঘরের ভেতরটা দেখার চেষ্টা করলো। বিছানার উপরে ঘরের নীলাভ আলোতে যেন স্বর্গের জোৎস্না খেলা করছে। সিরিজার নগ্ন শরীরে শরীর ঠেকিয়ে রেখে রজত ক্রমশ হয়ে উঠছে অসংযমী। ঠোঁটে ঠোঁট রেখে কাম-ভালোবাসা বিনিময় করতে করতে ও সিরিজার বুকে কি যেন খোঁজার চেষ্টা করছে। রজতকে বারবার মানানোর চেষ্টা করছে সিরিজা, কিন্তু রজত কিছুতেই শুনছে না। ও বারবার সিরিজাকে বলছে, "এই, এবার আমাকে একটু পান করতে দাও। এটা আমার চাই-ই চাই।"

কি চাই? দিবাকর বুঝতে পারছে না। এবার ও যেটা দেখলো তাতে ওর চোখদুটো ছানাবড়ার মতন হয়ে গেল। দেখলো রজত রীতিমতন সিরিজার বুকের উপর হামলা শুরু করে ওর স্তনের বোঁটা থেকে টেনে টেনে কি যেন সাক করছে তৃপ্তি করে। কি খাচ্ছে রজত? চুক চুক করে চোষার আওয়াজটা কানে আসতেই দিবাকরের সারা শরীরে যেন কম্পন ধরিয়ে দিল। ও বুঝতে পারলো এ যেন কামনার হাহাকারে এক পাপের পঙ্কিল পরশ। বাসনার দগ্ধ দহনে পুড়ছে রজত। সিরিজার স্তনের পেয়ালা থেকে পান করছে ওর বুকের সঞ্চিত স্তনদুগ্ধ! আয়েশ করে মস্তিসুখে বোঁটা চুষতে চুষতে রজত এবার সিরিজার কোলের উপরই শুয়ে পড়েছে। এমন ভাবে বুকের দুধ পান করছে যেন এর থেকে ডেলিসিয়াস, সুস্বাদু পানীয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই।

দিবাকরের রক্ত ছলাক ছলাক করতে শুরু করেছে, ওর কামনার আগুন জ্বলতে আরম্ভ করেছে। কি অনায়াসে সিরিজা ওর স্তন তুলে দিয়েছে রজতের ঠোঁটে। নিষিদ্ধ আনন্দের সন্মতি দিয়েছে রজতকে। রজত পুরোপুরি স্তন্যপানে মনোযোগ দিয়েছে।

দিবাকর শুনতে পেল, সিরিজা বলছে রজতকে, "তুমি না খুব দুষ্টু। এভাবে কেউ দুধ খায়?"

মনে হয় সিরিজার স্তনের বোঁটায় কামড় লাগিয়েছে রজত। সেজন্য সিরিজা একটু আহ করে উঠলো।

-- "কিভাবে খায়?

- "দুষ্টু, তুমি সব জানো!"

দিবাকর এবার শুনতে পেল সিরিজা বলছে, "আমি খাইয়ে দিচ্ছি, ঠোঁটটা একটু ফাঁক করো।"

রজত খেতে লাগলো। সিরিজা আবার বললো, "বাচ্চাদের মতন দুধ চুষছ, এখন তুমি আর ছোটটি নেই।"

রজত খেতে খেতেই বললো, "আবার কামড়ে দিই?"

- "দুষ্টু!"

দিবাকর বুঝলো অজান্তেই ওর নিজের হাতটা এবার চলে গেছে প্যান্টের চেনের ফাঁকে। রজতের স্তন খাওয়ার দৃশ্য দেখে ওর নিজেরই আত্মরতি করতে ইচ্ছে করছে প্রবল ভাবে। পেনিসটা ফুলে সাংঘাতিক মোটা হয়ে গেছে। এখন ওটাকে ধরে না খেঁচলে নিজেকে ঠিক রাখা যাবে না।

এমন কামোত্তেজনার শিকার আগে কখনও হয়নি দিবাকর। উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে ও এখন কি করছে ও নিজেই বুঝতে পারছে। ওদিকে রজত সিরিজার স্তন চুষছে, আর এদিকে দিবাকর নিজের উপর অলীক যৌনাচার করছে। সিরিজার সঙ্গে লিপ্ত হওয়ার প্রবল ইচ্ছা অধুরা থেকে যাওয়ার জন্য এখন হাতের বিচিত্র ব্যাবহারই ওকে সুখ দিচ্ছে। রজতকে কোলে নিয়ে সিরিজা বুকের দুধ পান করাচ্ছে, তা দেখে দিবাকরকে উত্তেজনার শীর্ষসুখ দিচ্ছে। আর বিকল্প যৌনতার মগ্ন ক্রিয়ায় মত্ত-উন্মত্ত দিবাকর খেঁচতে খেঁচতে প্রায় পাগল হয়ে যাচ্ছে।

দরজার ফাঁক দিয়ে ও পুরো গিলছিল দৃশ্যটাকে। সিরিজা এবার রজতকে পান করানোর সাথে সাথে মাথায় হাত বুলিয়ে সোহাগ করছে, মদের নেশা ভুলিয়ে দিয়ে দুধের নেশায় ওকে মাতাল করছে। স্তনের বোঁটা সেই যে চুম্বকের মতন আটকে গেছে রজতের ঠোঁটের সাথে, একবারের জন্যও আলগা হচ্ছে না। দিবাকর বুঝে উঠতে পারছিল না এভাবে রজত কতক্ষন ধরে সিরিজার বুকের দুধ চুষবে? সারারাত ধরে নাকি? প্রবল উত্তেজনায় সেই কামকেলির দৃশ্য দেখতে দেখতে দিবাকরের আত্মসম্ভোগ আরো বেড়ে যাচ্ছিলো, বুঝতে পারছিল আজ রাত্রিটা রজতের ফ্ল্যাটে না থাকলে কি ভুলটাই করে ফেলত ও।

দিবাকর শুনল, সিরিজা রজতকে বলছে, "এই, তোমার বন্ধু ঘুমিয়ে পড়েছে?"

রজত কথা বলছে না, সিরিজার বুকের দুধ পান করতে করতে শুধু ঘাড়টা নাড়ছে। যেন সত্যি ও দেখে এসেছে দিবাকর ঘুমিয়ে পড়েছে। দিবাকর তো সব ঐ দরজার ফাঁক দিয়েই দেখছে।

রজতকে বাতাবী লেবুর মতো স্তন দিয়ে দুধ বিলোতে বিলোতে সিরিজা মুখ নীচু করে কিছু বলার চেষ্টা করছে, দিবাকর শুনল সিরিজা বললো, "এই, তুমি সত্যি দেখে এসেছ ও ঘুমিয়ে পড়েছে? আমার বুকের দুধ খেতে খেতে মুখ দিয়ে এতো জোরে জোরে আওয়াজ করছো, তোমার বন্ধু যদি শুনে ফেলে?"

রজত যেন ভ্রুক্ষেপ করছে না সিরিজার কথাটা। চোষার আওয়াজটা দ্বিগুন পরিমানে বাড়িয়ে তুলছে। দিবাকরের পাশের ঘরে উপস্থিতি গ্রাহ্যই করছে না। তীব্র লালসায় সিরিজার ভরটা স্তন থেকে দুধ বিকট শব্দ মিশ্রণে পান করছে। সিরিজা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলছে, "দেখেছো, কেমন করছে, আস্তে আস্তে খাও না আমি আছি তো তোমার কাছে।"

চোখমুখ লাল হয়ে যাচ্ছে দিবাকরের। এই দৃশ্য আর যেন সহ্য হচ্ছে না। আত্মরতিটাকেই সম্বল করে ও খালি ভাবছে, - "ইস ওটা যদি ও পেতো!"

রজতের দুধ খাওয়ার দৃশ্য দেখে জিভে জল চলে আসছে, ইচ্ছে করছে দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকতে। সিরিজাকে বলতে - "একবার আমাকেও সুযোগ করে দাও, এমন অবাধ স্তন্যপানের সুযোগ থেকে আমিই বা বঞ্চিত হব কেন? সেই থেকে আমাকে তৃষ্ণার্ত করে রেখেছ। এবার আমার কথাটাও একটু ভাব। রজত কি একাই পাবে আমি পাব না? দেখছ না তোমার কথা চিন্তা করে করে আমার কি অবস্থা হয়েছে। এই জ্বালা থেকে এবার একটু মুক্তি দাও। আমাকে তুমি তোমার সীমাহীন আনন্দ দাও সিরিজা। আমি যে আর পারছি না।"

দিবাকর একদৃষ্টে দেখছিল, সিরিজার বুক দুটো কেমন কামনার বহ্নিশিখা জ্বালিয়ে দিচ্ছে রজতের রক্তে। নিষিদ্ধ পিপাসা নিয়ে রজত উচ্ছ্বাসের সাথে পান করছে, অফুরন্ত সুখ যেন রজতকে একনাগাড়ে তৃপ্তি দিয়েও মন ভরাতে পারছে না। সিরিজা ওর বিশাল স্তনটা হাতের মধ্যে ধরে রেখেছে। রজতের ঠোঁটের মধ্যে স্তনের বোঁটা ঢুকিয়ে রেখে উজাড় করে পয়োধর অমৃত পান করাচ্ছে। নির্লজ্জ্বতা যেন পরিসীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। রজত একটা স্তন বেশ কিছুক্ষণ মুখে নিয়ে চোষার পর সিরিজাকে অনুরোধ করছে, আরেকটা স্তনও মুখে তুলে দেওয়ার জন্য। সিরিজা দ্বিতীয়টা তুলে দেওয়ার আগেই বোঁটার মুখ দিয়ে দুধ আপনা আপনি গড়াতে শুরু করেছে। দিবাকর দেখছে, রজত যেই ওটা মুখে নিয়ে পান করা শুরু করেছে, তখন আগের স্তন থেকেও বুকের দুধ যথারিতী গড়িয়ে পড়ছে একই ভাবে। রজত কোনটা ছেড়ে কোনটা চুষবে, ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছে না।

মেয়েটার আকর্ষনীয় শক্তি আর বুকের দৃঢ়তাই রজতকে শীর্ষ আনন্দে পৌঁছে দিচ্ছিল বারবার। সুগঠিত বক্ষসম্পন্না এক নারীকে পাওয়ার অধিকার রজত যেন তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিল। দিবাকরও চোখ দিয়ে গিলছিল, এবার দেখলো খেঁচতে খেঁচতে ওর লিঙ্গের মুখটায় বীর্য আসতে শুরু করেছে। হঠাৎই এবার ওটা বাইরে বেরিয়ে এল বলে। ও অন্যমনস্কতার দরুন বেসামাল হয়ে গেল। তখনই সাংঘাতিক একটা কান্ড ঘটে গেল।

যে দরজাটার উপর হেলান দিয়ে ও সব দেখছিল, দরজাটা হঠাৎই খুলে গেল। দিবাকর কিছু বুঝতে না পেরে শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে সজোরে ছিটকে গিয়ে খাটের পাশে মেঝেতে গিয়ে ধড়াস করে পড়লো।

এতক্ষণ ধরে হেলান দিয়ে ও রকম উত্তেজক দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে শরীরের ঠেলায় আচমকা দরজাটা খুলে যাবে দিবাকর বুঝতে পারেনি। দড়াম করে এমন জোরে আওয়াজটা হলো যে মনে হবে কেউ দরজা ভেঙে ঢুকল ঘরের ভেতরে। দিবাকর যেন কল্পনাও করতে পারেনি হঠাৎই ঘটে যাবে কান্ডটা।

কি ভাবছে এখন রজত আর সিরিজা? ওরা বোধহয় চমকে উঠেছে।

নিজেকে বাঁচানোর তাগিদে দিবাকর বুঝলো, এখন অভিনয়টাই সম্বল করতে হবে তুখোর ভাবে। নিজেকে বাঁচানোর এর থেকে ভালো রাস্তা আর নেই। ও মরার মতন মেঝেতে ঘাপটি মেরে এমন ভাবে পড়ে রইলো যে সিরিজা আর রজত দুজনেই যাতে কিছু বুঝতে না পারে।

রজতকে তাড়াতাড়ি কোল থেকে উঠিয়ে দিয়ে সিরিজা তখন ওর বুক দুটোকে হাত দিয়ে আড়াল করেছে। যতটা সম্ভব নিজেকে ঢাকার চেষ্টা করছে ঐ মূহূর্তে। কে যে ঘরে এসে হুমড়ী খেয়ে পড়েছে ওরা নিজেরাই বুঝতে পারছে না। সিরিজা দেখছে বিছানার একপাশে ব্লাউজটা রাখা রয়েছে, কিন্তু হাতটা ওর বুকের ওপর থেকে সরাতে পারছে না। কারন হাত সরালেই বুক দুটো আবার উন্মোচন হয়ে যাবে। কোন আপদ যে ঘরে এসে ঢুকে পড়লো কে জানে? এমন ভাবে কে ঢুকল ঘরে? সিরিজা পুরো হকচকিয়ে গেছে। রজত কি দরজার ছিটকিনিটা তাহলে ভেতর থেকে লাগায় নি?

রজতও সিরিজার কোল ছেড়ে হূড়মূড় করে বিছানা ছেড়ে উঠে দাড়িয়ে পড়েছে। দেখছে খাটের পাশে মেঝেতে শায়িত দিবাকরের শরীরটা। চোখ দুটো বোঁজা। শরীরে কোন সাড়াশব্দ নেই। দিবাকর চোখ বুজে ভাবছে, কি হবে এখন? লোভ করতে গিয়ে লোভের পরিনাম হাতেনাতে দিতে হচ্ছে এখন। কি দরকার ছিল উঁকি মেরে সবকিছু দেখার? এবার যদি রজত সব ধরে ফেলে? এতটা হড়বড় না করলেই বোধহয় ভালো হতো।

-- "কি ব্যাপার দিবাকর? তুমি আচমকা, এভাবে, এঘরে এখানে?"

দিবাকরের কোন সাড়া নেই।

-- "কি হয়েছে দিবাকর? সাড়া দিচ্ছ না কেন? এই দিবাকর? দিবাকর?"

রজত দেখছে তিন চারবার ডাকার পরেও দিবাকর চোখ খুলছে না। কথাও বলছে না। ওর গালে দুটো টোকা মেরে দিবাকরের সম্বিত ফেরানোর চেষ্টা করছে রজত। কিন্তু দিবাকরের কোন সাড়া নেই। এর আবার কি হলো?

এমন অভিনয় করছে দিবাকর দেখে মনে হবে সত্যি সত্যিই মূর্চ্ছা গেছে বোধহয়।

-- "কি হোল, কথা বলছো না কেন? কি হয়েছে তোমার? দিবাকর, এই দিবাকর?"

রজত ধরে নিয়েছে সাড়া যখন দিচ্ছে না, তখন নিশ্চয়ই কিছু একটা হয়েছে, নইলে এভাবে?

বেসিন থেকে এক গ্লাস জল ভরে ও তখন দিবাকরের মুখে ছেটাতে ছেটাতে ওর হুঁশ ফেরানোর চেষ্টা করছে।

-- "এই তোমার কিছু হয়েছে নাকি? এই দিবাকর চোখটা খোলো না। এই দিবাকর।"

সিরিজা এবার ব্লাউজটা হাতে নিয়ে তাড়াতাড়ি ওটা বুকে গলিয়ে নিজেকে ঢাকতে শুরু করেছে। দেখছে রজত দিবাকরকে আপ্রাণ চেষ্টা করছে জাগিয়ে তোলার। বুঝতে পারছে ও চোখ খোলার আগেই বুক দুটোকে ঢেকে ফেলতে হবে। নইলে ভীষন লজ্জায় পড়ে যাবে। আচমকা এমন বিনা অনুমতিতে দিবাকরের প্রবেশ ঘটবে ঘরে, কেই বা জানতো?

বেশ কয়েকবার চোখে মুখে জল ছেটানোর পরে চোখ খুলেছে দিবাকর। এমন ভাব করছে, যেন একটু আগে কি ঘটেছে ওর কিচ্ছু মনে নেই।

- "আমি এখানে পড়লাম কি করে? অজ্ঞান হয়ে গেছিলাম নাকি?"

-- "সেটাই তো ভাবছি। তুমি আচমকা হঠাৎ? না এবার উঠে বস তো দেখি। কি হয়েছিল তোমার?"

- "হ্যাঁ এবার মনে পড়েছে। প্রচন্ড মাথা ঘুরছিল। ভাবলাম তোমার কাছে এসে ওষুধ চাইব। দরজার কাছে এসে তোমাকে ডাকতে এলাম। তারপরই দরজাটা হঠাৎ খুলে পড়ে গেলাম। কখন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি জানি না।"

-- "তাই ভাবছি। নইলে তুমি হঠাৎ। একটু আগেও তো তুমি এরকম মরার মতন পড়েছিলে অনেকক্ষণ। আমি তখনও ডেকে তুললাম তোমাকে। আজই প্রথম দেখছি। এরকম তো তোমার কখনও হয় না।"

- "গ্যাস হয়ে গেছে বোধহয়। আমাকে একটা মাথা ঘোরানো কমানোর ট্যাবলেট দিতে পারো। এখনও বন বন করে ঘুরছে মাথাটা।"

-- "দেখছি দাঁড়াও।"

- "না আমি সত্যি তোমাদের অসুবিধা করে দিলাম আজকে। বারবার যা হচ্ছে আমার।"

-- "না না, এরকম তো হতেই পারে।"

রজত দিবাকরকে একটা ট্যাবলেট দিল। ট্যাবলেটটা মুখে নিয়ে গ্লাসের জলটা ঢকঢক করে খেয়ে নিল দিবাকর। রজত বললো, "ডাক্তার ডাকবো?"

- "না না। এত রাতে দরকার নেই। ওষুধটা খেলাম ঠিক হয়ে যাবে।"

ও আস্তে আস্তে উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। রজত ওকে সাহায্য করছে উঠে দাঁড়াতে। দিবাকর আড়চোখে একবার দেখলো সিরিজাকে। ও তখন ব্লাউজের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছে। সিরিজাও ওকে দেখছে। দিবাকর বুঝলো দুজনের কেউই সন্দেহ করছে না। তার মানে অভিনয়টা দারুন হয়েছে। আজ জোর বাঁচান বেঁচে গেছে।

এমন পরিবেশনের ভঙ্গী দেখলে মাথার ঠিক থাকে? কি বেনিফিট লাভ করছো রজত। তোমায় দেখে হিংসে হচ্ছে। সিরিজা তোমায় যা দিচ্ছে, কেউ দেখলে, আপনা আপনি বীর্য বেরিয়ে যাবে! অভীষ্ট লাভের জন্য ভালোই পথটা বেছে নিয়েছ। আমার তো স্খলনের কন্ট্রোলটাই হারিয়ে গেছিল একটু আগে। দরজাটা খুলে পড়ে গেলাম। নইলে?.....

দিবাকর যেন রজতকে এই কথাটাই বলতে চাইছিল। তখনকার মতন ও শুধু এটা মনে মনে আওড়ালো। দেখলো রজত ওকে আবার সোফার উপর শুইয়ে যথারীতি শোবার ঘরের দিকে পা বাড়ালো। এবার যে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেবে সে বিষয় আর কোন সন্দেহ নেই।

রজত চলে যাবার পর দিবাকর আবার সোফার উপর উঠে বসল। একা একাই বসে সময় কাটাতে লাগলো। সময়টাকে সাথী করার জন্য আবার আরেকটা সিগারেট ধরাল। উল্টোপাল্টা সিরিজা আর রজতের বিষয়ে বসে বসে ভাবতে লাগলো। ঘুম যে চট করে এখন আসবে না ও ভালোমতই বুঝতে পারছিল।

দরজা লাগিয়ে শোবার ঘরে উদ্দাম সেক্স করছে রজত। সিরিজার শরীর জুড়ে তখনও উদ্দাম রসদ। উপযুক্ত কামোত্তেজনা ছড়িয়ে দুজনে দুজনের রতিক্রিয়াকে সুখপ্রদ করে তুলছে। একে অপরকে তৃপ্তি দিতে তখন বিশেষ ভাবে সচেষ্ট। ঠিক তিলের সাথে চাল মিলে যাওয়ার মতন। পরষ্পরের দেহে দেহ মিশিয়ে দৃঢ়ভাবে সঙ্গম হচ্ছে। দুজনেই নির্ভয়ে করছে। কারন এখন তো দিবাকরের ঘরে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা নেই। ও তো বেচারা একা একাই সিগারেট ফুঁকছে সারা রাত ধরে।
 
।। তেরো ।।


দিবাকরের সত্যি সারারাত ধরে চোখে ঘুম এল না। ভীষন একটা পোড়া কপালের মতন অবসাদ নিয়ে সোফায় বসে রইলো ঘন্টার পর ঘন্টা। চোখ দুটো যেন পাথর হয়ে রয়েছে। সিগারেটের প্যাকেটটা আস্তে আস্তে হালকা হতে হতে একসময় খালি হয়ে গেল। দিবাকর পর পর এতগুলো সিগারেট খেয়ে ফেললো, যা জীবনে কোনদিন খায়নি। খেতে খেতে দু তিনবার বিষম খেল, পরমূহূর্তে নিজেকেও সামলে নিল। কিন্তু ওর সিগারেট খাওয়া বন্ধ হোল না। এক একটা সিগারেট শুধু সিরিজাকে নিয়ে নানারকম চিন্তা করার রসদ জুগিয়ে যেতে লাগলো সারা রাত ধরে। বারবার ঘুরে ফিরে একটা কথাই মাথায় আসতে লাগলো, আজ ও যা দেখেছে, সেটাই ওকে অন্যরকম করে দিয়েছে। স্বভাব আর চিন্তাধারার পরিবর্তন। নইলে দিবাকর তো এরকম ছিল না। ওতো রজতের কথাই ভাবত সারা সময়। যে রজতের জন্য একদিন স্যাক্রিফাইস করেছিল, সেই বা হঠাৎ সিরিজাকে দেখে ফুঁসে উঠলো কেন? শুধুই কি শরীর না সেই সাথে অন্য কিছু?

মাস তিনেক আগে রজত দিবাকরের সাথে যেটা করেছিল, সেটাতো দিবাকর ভুলতে পারেনি এখনও। রজত কি কাজটা ঠিক করেছিল তখন? কে ওকে অধিকার দিয়েছিল? দিবাকর যদি হৃষ্টপুষ্ট মেয়েটার শরীরটা রজতের হাতে তুলে না দিত, রজত তো ছুঁতেও পারত না মেয়েটাকে। ওতো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলেও টলাতে পারেনি মেয়েটাকে। অনেকবার ওকে বিছানায় শোওয়ানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হয় নি। রজতের মতিগতি আগে থেকেই বুঝে গেছিল সে। টাইট দেবার জন্য দিবাকরের সাথেই মেলামেশা স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে শুরু করে সে। তখন রজত বিয়ে করেনি। মেয়েটা দিবাকরের কাছেই আসতো। মাল হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে বলে রজত নিরুপায় হয়ে দিবাকরের পায়ে পড়তে শুরু করে। দিবাকরের যাও বা মেয়েটাকে মনে ধরেছিল, তাও রজতের জন্য চূলোয় গেল। তখন যদি সেটা অন্যায় না হয়ে থাকে, তাহলে এখন দিবাকরের সিরিজাকে পাওয়ার ইচ্ছাটাও অন্যায় নয়। ও কি সবাইকে একাই ভোগ করবে বলে পৃথিবীতে এসেছে নাকি? রসবতী নারী দেখলে ইচ্ছা তো আর কারুরও জাগতে পারে। যে এতদিন নিজের কথা চিন্তা না করে রজতের কথাই বারবার চিন্তা করে এসেছে তার এমন মনোভাবের পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক। নিশ্চয়ই এর পেছনে কোন কারন আছে। নইলে রজতকে ও প্রতিদ্বন্দী হিসেবে ভাববেই বা কেন? বেশ তো মেয়েটাকে নিয়ে ফুর্তী করছে, সেখানে হঠাৎ দিবাকর ভাগ বসাতে যাবে কেন?

সেদিন দিবাকরের ইচ্ছাতেও ভাগ বসিয়েছিল রজত। দিবাকর প্রথমে রাজী হয় নি। বলেছিল, "তোমাকে ও ঠিক পছন্দ করছে না। ছাড়ো না আমি তোমাকে অন্য মেয়ে জুটিয়ে দেব। তুমি ওর সন্মন্ধে যা ভাবছ, ও ঠিক তা নয়। ও একটু অন্য ধরনের মেয়ে। তোমার গায়ে পড়াটা ওর সহ্য হচ্ছে না।"

রজত দিবাকরকে ঠেস মেরে বলেছিল, "তাহলে ও তোমার কাছে আসছে কেন? তুমি কি ওকে ঘরনী করবে নাকি?"

দিবাকর প্রথমে গুরুত্ব দেয় নি রজতের কথাটা। এক কথায় রাগই হয়েছিল ওর ওপর। যে করতে না চায় তার সাথে জোর করে করবে না কি? তাহলে তো পু্লিস কেস হবে।

দিবাকরকে তারপরে কায়দা করে পটিয়ে পাটিয়ে মেয়েটিকে হাসিল করে রজত। দিবাকরই ওর ভয়টা কাটিয়ে দেয়। বলে, "রজত তোমাকে ভালোবাসে, তুমি ওর সন্মন্ধে যা ভাবছ, সেরকম খারাপ ও নয়।"

রজতের জন্য ওকে এমন মিথ্যে কথাটা বলতে হোল। মেয়েটাকে ওরও ভালো লেগেছিল, কিন্তু রজত একপ্রকার ওকে বোকা বানিয়ে ওর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিল। এখন ও কোথায় আছে কে জানে? নিশ্চয়ই রজতের মতন দিবাকরের প্রতিও ঘেন্না হচ্ছে মেয়েটার। ও এই উদারতাটা না দেখালে রজত তো পারতই না সারা রাত ধরে ওকে চুদতে। কেন যে সেদিন ওকে এই সুযোগটা করে দিল নইলে সেই মেয়েটি তাহলে ওরই হতো।

নামটা মনে পড়লো দিবাকরের। হ্যাঁ রেশমি। কোথায় আছে এখন রেশমি? ইস, ওর এই অবসাদ মূহূর্তে রেশমি কে যদি একটু কাছে পেত। কি ভালোটাই না হোত।

বড্ড আফসোস হচ্ছে দিবাকরের। পুরোন স্মৃতিটাকে তাজা করে শোধ তোলার পরিকল্পনাটাকে ভালোমতই করে নিল দিবাকর। এবার ওর চোখে ঘুম নেমে এল।

তখন বাজে ঠিক সকাল সাতটা। এত তাড়াতাড়ি রজতের ঘুম ভাঙবে না। দিবাকরের তো নয়ই। সোফার উপর দুহাত পা ছড়িয়ে অঘোরে ঘুমোচ্ছে দিবাকর। সিরিজা রজত কারুর কথাই তখন ওর মনের মধ্যে নেই। অবসাদ আর দূর্দান্ত অভিনয়, সেই সাথে সিরিজা আর রজতের গা গরম করা দৃশ্য দেখার আনন্দ মিলিয়ে কালকের রাত্রিটা কোনরকমে কেটেছে। এখন একটু ঘুমিয়ে সবকিছু ভুলে যেতে চায় ও। নতুন করে কিছু ভাবতে ইচ্ছে করছে না। দিবাকরকে দেখেই মনে হচ্ছিল, সারারাত জাগার পর ঘুম সহজে ভাঙবে না। অনেক বেলা অবধি শুয়ে থাকলে তবেই শরীর ঝরঝরে হবে। নতুন সকালে সিরিজাকে দেখে তারপর যা কিছু উদ্যোগ নেওয়া যাবে। রজতকে আর একা উপভোগ করতে কিছুতেই দেবে না ও। এবার ও সিরিজার নদীতে নিজেও গা ভাসাবে।

দিবাকর বুঝতে পারলো না কখন শোবার ঘরের দরজাটা আস্তে আস্তে খুলতে আরম্ভ করেছে। দরজা খুলে আর কেউ নয়, ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে সিরিজা। কারন একটু আগেই ওর রাতের ঘুম ভেঙেছে। সকালবেলা বাথরুমে যেতে হবে। দিবাকর যেখানে শুয়ে আছে, সেখান থেকে বাথরুমের দূরত্বটা খুব বেশী নয়। সিরিজাকে যেতে হবে দিবাকরের সামনে দিয়েই। শাড়ীটা কোনরকমে গায়ে জড়িয়ে সিরিজা দেখছিল দরজা ফাঁক করে দিবাকর ঘু্মোচ্ছে কিনা।

একটু আগেই ঘুম থেকে উঠে ব্লাউজ, শায়া পড়ে তারপর কোনরকমে শাড়ী অগোছালা ভাবে পড়েছে। রজত ওর বুক মুখে নিয়ে এমন ভাবে শুয়েছিল যে ওকে ছাড়াতে ছাড়াতেই বেশ খানিকটা সময় চলে গেছে। রাত্রে ওর শরীরের উপর যৌন অভিসার করতে করতে বেশ পর্যাপ্ত পরিমানে সিরিজার বুকের দুধ খেয়েছে রজত। সিরিজা সকালে উঠে দেখছিল ওর স্তনের বোঁটা দুটোয় বেশ ব্যাথা ব্যাথা। রজতের সমুদ্র সমান চাহিদা মেটাতে গিয়ে ও রজতকে বাঁধা দেয় নি। বুকের দুধ খেতে খেতে রজত বেশ কয়েকবার বোঁটাটা দাঁত দিয়ে কামড়েছে। সেইজন্যই এই ব্যাথা ব্যাথা। সঙ্গমের সাথে সাথে এটাই তো বাড়তি লাভ। সিরিজার বুক ভর্তি দুধ। রজতের কাছে যেন এক বিরল সম্পদ। পূর্ণমাত্রায় গ্রহণ করে জীবনপাত্রের শেষ তলানি পর্যন্ত আস্বাদন করা, নারী বলতে এখন এটারই মানে বোঝে রজত।

সিরিজা দেখলো দিবাকর ঘুমোচ্ছে। ও যেন নিশ্চিন্ত হলো। যাই হোক কাল রাতের ঘটনাটা একটু তো ওকে অবাক করেছেই। লোকটা ঘরে ঢুকে অমন আছাড় খেল। কিছুই কি দেখেনি? পুরো খোলা শরীরটা যদি দেখে ফেলে তাহলে তো সব গেল। সিরিজাকে এবার থেকে দিবাকরের চোখের দিকে তাকাতে একটু লজ্জা পেতে হবে। চেষ্টা করবে দিবাকরের থেকে কতখানি দূরে সরে থাকা যায়। দরকার হলে রজতকেও বলে দেবে। লোকটাকে শুধু শুধু এ বাড়ীতে টেনে আনার কোন দরকার নেই। নিজেরা এই বেশ ভালো আছি। আবার সুখে থাকতে ভুতে কিলোয় কেন? কি দরকার সঙ্গম আনন্দটাকে অন্যের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার? আনন্দটা তো নিজেদের জন্য সেখানে বাইরের লোককে ঘরে ডেকে এনে অযথা অস্বস্তি বাড়ানোর কোন দরকার আছে কি? সিরিজা যেন মনে মনে বিরক্তই হচ্ছিল কাল দিবাকর আসার পর থেকে। তারপর যখন ঐ ঘটনাটা ঘটল, ও যেন আরো তিতিবিরক্ত হয়ে গেছে। দিবাকর যতক্ষণ না এ ফ্ল্যাট থেকে না যায় ওরও ভালো লাগছে না।

দরজাটা খোলার পরে শাড়ীতে পা লেগে সিরিজা হঠাৎ হড়কে যাচ্ছিলো। কোনরকমে নিজেকে সামলে নিল। দেখলো দিবাকর সেই আগের মতনই ঘুমে অচৈতন্য। ও আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে এবার বাথরুমে ঢুকল। দিবাকরকে বুঝতে দিল না। বাথরুমের দরজাটা আস্তে করে খুলে ও ভেতরে ঢুকে গেল। শাড়ীটা খুলে শায়াটা তুলে ও কমোডে বসে শরীরের বর্জ্য তরল ত্যাগ করতে শুরু করলো। মূত্রটাকে পুরোপুরি বের করে ও মগে জল নিয়ে জায়গাটা ভালো করে পরিষ্কার করলো। শায়াটা নামিয়ে এবার শাড়ীটাকে আবার আগের মতন গায়ে জড়াতে শুরু করলো সিরিজা।

বাথরুম থেকে বেরিয়ে আবার ওকে শোবার ঘরের দিকে যেতে হবে ঐ দিবাকরের সামনে দিয়েই। কিন্তু দরজাটা খুলে এবার আর ও দিবাকরকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলো না। যা দেখলো তাতে রীতিমতন চমকে উঠলো। সোফার উপর সোজা হয়ে উঠে বসে আছে দিবাকর। দৃষ্টিটা সোজা বাথরুমের দরজার দিকেই। সিরিজার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে দেখছে লোকটা। এর মধ্যে কখন উঠে বসেছে? সাংঘাতিক ব্যাপার তো। সিরিজা রীতিমতন ভয় পেয়ে গেল।

ভাবল ওর দিকে না তাকিয়ে সোজা শোবার ঘরের দিকে চলে যাবে। কারন দিবাকরের মতলব দেখে তো সুবিধের মনে হচ্ছে না। বেশ তো অঘোরে ঘুমোচ্ছিল। হঠাৎ সোফার উপর উঠে বসল। ব্যাপারটা কি? সিরিজা মাথা নীচু করে দিবাকরের সামনে দিয়েই চলে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। বাধা পড়লো যখন দেখলো দিবাকরই উঠে দাড়িয়ে ওর পথ আগলে ফেলেছে। সিরিজাকে একচুলও নড়তে দিচ্ছে না। ঠিক সেই মূহূর্তে দিবাকরের চোখের দিকে তাকিয়ে সিরিজা শুধু আতঙ্কিত হোল না, হঠাৎ গলা ছেড়ে রজতকে ডাকবে কিনা সেটাই চিন্তা করতে লাগলো।

- "কি ব্যাপার? আপনি আমাকে যেতে দিচ্ছেন না কেন? এভাবে দাঁড়িয়ে পড়লেন? পথ ছাড়ুন, আমি যাবো।"

-- "আমি কিছু কথা বলতে চাই।"

- "এখন কি কথা? আমি ওকে ডাকবো?"

-- "আমি তোমাকেই বলতে চাই। রজতের সামনে সেটা বলা যাবে না।"

- "কেন?"

-- "সেটা তুমি শুনলে সব বুঝতে পারবে।"

- "আপনি তো ঘুমোচ্ছিলেন। হঠাৎ জেগে উঠে কি এমন কথা বলতে চাইছেন?"

-- "দরকারী কথা না হলে এভাবে তোমার পথ আগলাতাম না। সারারাত তো এমনিই ঘুমোতে পারিনি। আর আমার ঘুমোবার ইচ্ছাও নেই। রজত ওঠার আগে তোমাকে কিছু কথা বলে আমি চলে যাবো। আমার এখানে আর বিন্দুমাত্র থাকার ইচ্ছা নেই। সুযোগটা পরে আর হয়তো আর পেতাম না। তাই এভাবে দুম করে আমাকে উঠে পড়তে হোল।"

- "কাল রাতে তো আপনার শরীর খুব খারাপ হয়ে পড়েছিল। রাত্রে ঘুমোননি। সারা রাত জেগে বসছিলেন? এর মানে? ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না।"

-- "আমি যতক্ষণ না বুঝিয়ে বলছি। এর মানে পরিষ্কার হবে না। একটু মনোযোগ দিয়ে শুনলে সব জলের মতন পরিষ্কার হয়ে যাবে।"

- "আমি কিছু শুনতে চাই না। পথ ছাড়ুন।"

সিরিজা যেন দিবাকরকে একটুও বিশ্বাস করতে চাইছিল না। রাগ তো হচ্ছিলই। শুধু শেষবারের মতন দিবাকরকে সাবধান করে বললো, "আপনি যদি এভাবে পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকেন আমি কিন্তু ওকে ডাকতে বাধ্য হব। সরবেন কি না বলুন?"

দিবাকর পথ ছাড়লো না দেখে ও এবার অদ্ভুত একটা কান্ড করে ফেললো। বুকের উপর থেকে শাড়ীর আঁচলটা ফেলে দিয়ে কাটা খাঁজটা বেশ খানিকটা উন্মুক্ত করে ফেললো। দিবাকরের চোখের সামনে তখন সিরিজার তখন দুটি ঝলসানো বুক। হার্টবিট সাংঘাতিক ভাবে বাড়তে শুরু করেছে। নিজেকে সংযত রাখতে পারছে না। আবার এটাও ভাবছে, সিরিজা ওকে ভুল বুঝেছে।

- "আমাকে আদর করতে চান? নিন করুন। আমি বুক খুলে দিয়েছি। আপনি কি উদ্দেশ্যে আমার পথ চেয়ে বসেছিলেন। সে তো আমি বুঝতেই পারছি।"

অমন মন ভোলানো বুক দুটো চোখের সামনে দেখার পরও দিবাকর যেন শামুকের খোলসের মতন নিজেকে গুটিয়ে নিল। যৌনতার মোহে এভাবে অপরাধী হতে চায় না। মুখটাকে নীচু করে ফেললো লজ্জ্বায়। সিরিজাকে যেটা বলতে চাইছোলি সেটা বলাতো হোলই না, উপরন্তু ওর মনে হতে লাগলো কালকের ঘটনা থেকেই সিরিজার মনে সন্দেহ বিস্তার করতে শুরু করেছে। এখন ও রজতের সন্মন্ধে যাই ওকে বলুক ও একবর্ণও বিশ্বাস করবে না। উল্টো যেটা হবে সিরিজার বদ্ধমূল ধারনা হবে দিবাকরই ওর শরীরের লোভে পড়ে গেছে। রজতকে ছোট করে নিজে এনট্রি মারতে চাইছে সিরিজার জীবনে।

- "কি হলো? আমার দিকে তাকাতে পারছেন না? নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে? কি যেন বলতে চাইছিলেন? এবার বলুন, আমি শুনছি।"

সিরিজার থেকে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে দিবাকর এবার মুখটাকে একদম পেছন দিকে ঘুরিয়ে ফেললো। শরীরের ভেতরে যে ক্ষেপে ওঠা পশুটা কাল রাত্রি থেকে লম্ফঝম্প করছিল, সেটাকে শেকল দিয়ে বেঁধে ফেললো দিবাকর। সিরিজাকে অবাক করে এবার ও বললো, "তুমি এবার তোমার বুকের কাপড়টা তোল। আমি তোমাকে সব বলছি।"

একটু থেমে আবার বলতে লাগলো দিবাকর, "তুমি যেটা আমার সন্মন্ধে ভাবছ আমি তা নই। সামান্য একটা ভুলের বশে আমি রজতের কাছে ছোট হতে চাই না। ও তোমার আছে। তোমারই থাকবে। আমি শুধু তোমাদের বন্ধু হয়েই থাকব চিরকাল। আমি যেটা বলতে চাইছিলাম, সেটা খুবই দরকারী কথা ছিল। তুমি যদি শুনতে না চাও আমিও আর জোর করবো না তোমার কাছে। তুমি দরকার হলে আবার ভেতরের ঘরে চলে যাও। আমি একটু পরে বাড়ী চলে যাবো।"

সিরিজা কথার জবাব না দিয়ে ভেতরের ঘরে চলেই যাচ্ছিলো। এবার ওদের দুজনকে অবাক করে সদোর দরজার কলিংবেলটা বেজে উঠলো। না সিরিজা না দিবাকর। কেউ যেন ওদের নিজেদের জায়গা ছেড়ে নড়তে পারছে না। কলিংবেলের আওয়াজ শুনে সিরিজাও থমকে গেছে। ভেতরের ঘর থেকে এবার রজতের গলার স্বর ভেসে এলো, "কে?"

এবার ওর ঘুমও ভেঙে গেছে।

বাইরে থেকে একজন বয়স্ক ভদ্রলোক ভারী গলায় জবাব দিলেন, "আমি তোমার স্ত্রী রীতার বাবা। তোমার শ্বশুর মশাই। দরজাটা খোলো। তোমার সঙ্গে দরকার আছে।"

সাত সকালে এ আবার কি উপদ্রব। চিঠি অনুযায়ী লোকটার তো এত তাড়াতাড়ি আসার কথা নয়। রজতের বউ যে চিঠি লিখেছিল সেটা তো কালকেই এসেছে। রাত পেরোতেই এখানে এসে শ্বশুর মশাই হানা দিয়েছে। এখন কি করা যায়?

দিবাকর হতভম্বের মতন দাড়িয়েছিল। সিরিজাও থ মেরে গেছে। রজত আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে ঘরে ঢুকে বললো, "কে সাতসকালে এসে ঝামেলা করছে? তোমরা দুজনে দাড়িয়ে আছ। কি ব্যাপারটা বলো তো?"

বলে একবার সিরিজার মুখের দিকে তাকালো। একবার দিবাকরের দিকে।

নিজেকে ম্যানেজ করে দিবাকর বললো, "আমিও ঘুমিয়েছিলাম। কলিংবেলের আওয়াজ শুনে ঘুমটা ভেঙে গেল। এখন কি করবো তাই ভাবছি।"

-- "কেন বাইরে এসেছে কে?"

- "তোমার শ্বশুর মশাই। তাই তো বললেন বাইরে থেকে ভদ্রলোক।"

-- "অ্যাঁ?"

- "হ্যাঁ।"

দিবাকর মনে মনে বললো, "নিষিদ্ধ অভিসারের গুপ্তকথা এবার ফাঁস হলো বলে!

-- "মরেচে। দাঁড়াও দাঁড়াও এক্ষুনি দরজাটা খুলো না। আগে কিছু একটা ব্যাবস্থা করি। কি করা যায় এখন?"

- "ঐ জন্যই তো দরজাটা খুলি নি। আমিও ভাবছিলাম, কি করা যায়।"

রজত বেশ টেন্সড হয়ে একবার দরজার দিকে এগিয়ে এল। কিছু ভাবল। পরমূহূর্তে আবার পিছন দিকে চলে গেল। এইভাবে একবার দুবার করলো। দিবাকর মনে মনে বললো, "কালকে খুব তড়পাচ্ছিল রজত। আর এখন সব সাহস উবে গেছে!"

কলিংবেলটা আবার বেজে উঠলো।

দিবাকর গলার স্বরটাকে খুব আস্তে করে রজতকে বললো, "কিছু একটা বলো। দরজাটা খুলতে হবে তো।"

-- "বলে দাও - আমি বাড়ী নেই।"

- "তারপর যদি ভেতরে ঢুকে পড়ে। আমাকেও তো চেনে না। যদি বলে আপনি কে?"

-- "তাও তো সমস্যা। বুড়োটা আর আসার সময় পেল না। সকালবেলা যত ঝামেলা। এক কাজ কর। আমি সিরিজাকে নিয়ে ভেতরের ঘরে চলে যাচ্ছি। তুমি বল, আমার শরীর খারাপ। পরে ঘুরে আসতে। আমি ততক্ষণে একটা ব্যাবস্থা করে নিচ্ছি।"

- "যদি ভেতরে ঢুকে দেখে। আমি তো বাধা দিতে পারবো না।"

-- "দূর ছাই। কিছু একটা করো না। ম্যানেজ করে বুড়োটাকে তাড়াও না। আমার মাথায় কিছু আর এখন আসছে না।"

দিবাকর রজতের কথা মতন সেটাই করতে যাচ্ছিলো। রজত শেষ মূহূর্তে ওকে বাধা দিয়ে বললো, "না না। দাঁড়াও। ও বুড়ো খুব চালু। তোমার কথা বিশ্বাস করবে না। আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে।"

- "কি?"

-- "তুমি সিরিজাকে নিয়ে আমার শোবার ঘরে চলে যাও।"

দিবাকর অবাক হয়ে বললো, "মানে তুমি কি বলছো?"

-- "যা বলছি। ওটাই করো না। বিছানায় তোমরা দুজন পাশাপাশি শুয়ে পড়। আমাকে জিজ্ঞাসা করলে বলব। তোমরা স্বামী স্ত্রী। কাল রাতে এখানে বেড়াতে এসেছ। দরজা আমিই খুলছি।"

- "কি বলছো তুমি? তোমার মাথার ঠিক আছে?"

কথাটা শুনে সিরিজাও যে খুশী হয়নি, সেটা ওর মুখের হাবেভাবে ফুটে উঠছিল। ভীষন একটা বিরক্তি ভাব এলো মুখে। রজত বুঝতে পারলো সিরিজা মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। ওকে আস্বস্ত করার জন্য ওর কাছে গিয়ে ওর মাথার চুলে হাত রাখলো রজত। বললো-আরে এটাতো অভিনয়। সত্যি নাকি? বুড়োটাকে আমি তাড়াতাড়িই ভাগিয়ে দেব। ততক্ষণ তোমরা শুধু শুয়ে থাকবে।

সিরিজাকে মানানোর জন্য একপ্রকার দিবাকরের সামনেই কামআবেগটা রজত ছড়িয়ে দিল সিরিজার ঠোঁটে। ওর ঠোঁটে প্রবল ভাবে চুমু খেতে খেতে রজত বললো, "চিন্তা কোরো না সিরিজা। আমি ব্যাপারটা সামলে নিচ্ছি।"

দিবাকর আর সিরিজাকে ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজাটা আস্তে করে ভেজিয়ে দিল রজত। ও আসতে আসতে সদর দরজাটার দিকে এগিয়ে গেল। মুখে বললো, "দাঁড়ান খুলছি।"

শোবার ঘরে তখন দিবাকর আর সিরিজা। দুজনের কেউই অপরের মুখের দিকে তাকাতে পারছে না। বিছানার উপর পাশাপাশি শুলো দুজনে। সিরিজা চোখটা বুজে ফেললো। দিবাকর মাথাটা সোজা করে সিলিং ফ্যানের দিকে তাকিয়ে আছে। মনে মনে দুজনেই ভাবছিল। একটু আগে কি হচ্ছিল আর এখন কি হচ্ছে। এবার যদি রজতের শ্বশুড়ের সামনে দুজনকেই স্বামী-স্ত্রীর অভিনয়ের পরীক্ষা দিতে হয়? পারবে তো?

দিবাকর ভাবল কালকে তো ও একবার ধরা পড়ে গেছে। আজ যদি আবার ধরা পড়ে? ভালোই তো হবে।

সিরিজাকে নিয়ে রজত সব থেকে ফ্যাসাদে পড়বে। আর ওর এনট্রি মারার জায়গাটা সব থেকে বেশী পরিষ্কার হবে। ব্যাটা নারীভোগী রজত! এবার দেখ কেমন লাগে!
 
।। চোদ্দো ।।


খুব ইচ্ছে করছিল দিবাকরের খাটে শুয়ে শুয়ে রজতের মতন হয়ে যেতে। রজত যেমন সিরিজাকে আদর করে। পাশ ফিরে সিরিজার বুকে যদি একটা চুমু খাওয়া যেত। ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে করতে যদি এমনটাই বলা যেত - "চলো না আজ থেকে আমরা সত্যি সত্যি স্বামী-স্ত্রী হয়ে যাই। কি একটা বিবাহিত পুরুষকে শরীর দিয়ে বসে আছ। ও তো তোমাকে পেয়ে ফায়দা লুঠছে খালি নিজের মতন করে। তোমার সত্যিকারের দীওয়ানা যদি কেউ থাকে তাহলে এই অধম দিবাকর ছাড়া তো আর কেউ নয়। এমন একটা সাধাসিধে লোককে পেয়েও বারে বারে ভুল বুঝছ। সিরিজা কবে তোমার ভুল ভাঙবে। আমি কি সত্যি তোমার কখনও হতে পারি না? এই সিরিজা বল না একবার? সিরিজা।"

- "আপনি তখন কি আমায় বলতে চাইছিলেন?"

সিরিজার গলা শুনে দিবাকর যেন আকাশ থেকে পড়লো।

-- "আমি?

- "হ্যাঁ। তখন আমার পথ আগলে আমায় কি বলতে চাইছিলেন।"

-- "হ্যাঁ মানে।"

- "বলুন। আমি শুনছি।"

দিবাকর মুখটা ঘুরিয়ে দেখলো সিরিজা ওর দিকেই চেয়ে আছে। এবার ওর চাউনিতে যেন একটা বিশ্বাস ফিরে এসেছে। খুব আগ্রহ নিয়ে শুনতে চাইছে। একটু আগে যে তাচ্ছিল্য ভাবটা ছিল, সেটা এখন নেই। মনে হয় রজতের শ্বশুড় মশাইটা এসে সব ওলটপালট করে দিয়েছে। সিরিজার অমন মনভোলানো চাউনি দিবাকর আগে কখনও দেখেনি। ও ভালো করে সিরিজাকে দেখছিল। কাল রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মালকিনি এখন ওকে খুব সহজ করে নিয়েছে। স্তনবাহার ব্লাউজের আড়ালে ঢাকা পড়ে রয়েছে। দিবাকর ওদিকে তাকাচ্ছে না। কারন ও এখন অনেক পরিবর্তিত। কাল রাতে রক্ত যেমন টগবগ করে ফুটছিল, এখন ওর রক্ত অতটা গরম নয়।

খুব স্বাভাবিক ভাবেই দিবাকর সিরিজাকে বললো, "রজতের স্ত্রী ওর বাবাকে পাঠিয়েছে। এখন তোমার কথা জেনে গেলেই মুশকিল। ফিরে গিয়ে মেয়েকে সব বলবে। তখন আবার আর এক কান্ড হবে।"

- "কিন্তু আপনি যে বলছিলেন খুব দরকারী কথা আছে আমার সঙ্গে।"

-- "বলতে তো চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন কি সেটা বলা যাবে? লোকটা যতক্ষণ না যাচ্ছে ততক্ষণ তো এভাবেই শুয়ে থাকতে হবে। রজত বলেছে আমাকে তোমার স্বামীর ভূমিকা পালন করতে। উনার সামনে যদি শেষ পর্যন্ত যেতে হয়, তখনতো তোমাকেও ঐ একই রোল প্লে করতে হবে। তোমার কি তখন ভালো লাগবে?"

- "আমি যদি বলি আপনি সত্যিই আমার স্বামী।"

-- "না না সত্যি কেন হব? ওটাতো মিছি মিছি একটা অভিনয় মাত্র। লোকটাকে বুঝতে না দেওয়ার কৌশল। তোমাকে কিছু বলতে হবে না। আমি দেখবে নিজেই ঠিক ম্যানেজ করে নেব। আগে একটু দেখে নিই। শেষ পর্যন্ত কি হয়।"

দিবাকর কান খাড়া করে শুনতে লাগলো, পাশের ঘরে রজত ওর শ্বশুড় মশাই এর সাথে কি কথা বলছে। লোকটা মনে হয় বেশ জোরে জোরে কথা বলছে, আর রজতও সেই সাথে চেঁচাচ্ছে। আওয়াজটা যখন আরো বেশী একটু তীব্র হোল তখন দিবাকর সিরিজা দুজনেই পরিষ্কার শুনতে পেল ওরা বাইরের ঘরে বসে কি কথা রজত বলছে, "আপনাকে তো তখন থেকে বলছি। এখন যান না। সাত সকালে এসে ঝ্যামেলা পাকাচ্ছেন। আমি তো বলছি, পরে একদিন আসুন। এখন একটু অসুবিধে আছে।"

শ্বশুড় মশাই বলছে, "আমি তো ঝেমেলা পাকাচ্ছি না। তুমিই অযথা চিৎকার করছো। মেয়ের শাড়ীগুলো আলমারীতে পড়ে রয়েছে। এক কাপড়ে বেরিয়ে গেছে তোমার ফ্ল্যাট থেকে। এখন ওগুলো খালি আমাকে দিয়ে দাও। তাহলেই তো সমস্যা মিটে যায়। আমি তো চাবি নিয়েই এসেছি।"

-- "দূর মশাই। আপনাকে তো তখন থেকে বলছি। আমার বন্ধু এসেছে, কালকে। ওর স্ত্রী রয়েছে সাথে। ওরা রাত্রি থেকে আমার ফ্ল্যাটে রয়েছে। এখন আপনার জন্য ওদের ঘুম ভাঙাতে যাবো কেন শুধু শুধু? আপনি তো অন্যদিনও এসে নিয়ে যেতে পারবেন। আপনার মেয়ের শাড়ী রেখে আমার কি হবে? না ওর শাড়ী পড়ে আমি কি রাস্তায় ঘুরে বেড়াব? ফালতু ঝামেলা করছেন।"

দিবাকর বুঝতে পারছিল রজত বেশ ঝাঁঝ দিয়ে কথা বলছে ওর শ্বশুড়ের সাথে। শ্বশুড়ও ছাড়বার পাত্র নয়। মনে হয় রজতের চরিত্রটা জানে। শোবার ঘরের দরজাটা একে ভেজানো রয়েছে। ভেতরে সস্ত্রীক বন্ধু আছে না রজতের নতুন কোন বান্ধবী আছে সেটাই যাচাই করে নিতে চাইছে।

কথার ফাঁকে ফাঁকেই ও লক্ষ্য করলো বিছানায় শোওয়া অবস্থাতেই সিরিজা বেশ কিছুটা এগিয়ে এসেছে ওর দিকে। এবার একটা হাত রেখেছে ওর বুকের উপর। কেমন একটা ভয়ে ভয়ে দিবাকরকে বলছে, "দিবাকরদা কিছু হবে না তো? আমার বেশ ভয় করছে। আপনিও আমাকে একটু জড়িয়ে ধরুন না। দুম করে উনি যদি এই ঘরে ঢুকে পড়েন, তাহলে হয়তো সন্দেহ কাটবে। আমাকে একবার জড়িয়ে ধরুন। আমি কিছু মনে করবো না।"

দিবাকর অবাক হয়ে চেয়ে আছে সিরিজার দিকে। ভাবছে প্রথম আর শেষবারের মতন সিরিজাকে একবার জড়িয়ে ধরবে কিনা। ওর শরীরে শরীর ঠেকালে নাকি হাজার পাওয়ারের বিদ্যুত তরঙ্গ বয়ে যায়। অনেকটা ইলেকট্রিকের শক লাগার মতন। রজতই ওকে বলেছে। এখন সিরিজা যেচে আহবান করছে। একবার ওর শরীরের বিদ্যুতপৃষ্ঠ বা তড়িতাহত হলে ক্ষতি কি? এতে তো মরার ভয় নেই। বরং নতুন করে বাঁচার স্বাদ পাবে দিবাকর। ও ভাবছে, কিন্তু তখনও সিরিজার শরীর জড়াতে একটু ইতস্তত করছে দিবাকর। কাহিনীতে যে এমন মোচড় আসবে নিজেও তো কল্পনা করতে পারেনি। এ যেন মেঘ না চাইতেই জল পাওয়ার মতন হচ্ছে। সব যে গুলিয়ে যাচ্ছে দিবাকরের গো। সব যে গুলিয়ে যাচ্ছে।

সিরিজাকে জড়িয়ে ধরার সাথে সাথে একটা চুমুও খেতে ইচ্ছে করছিল দিবাকরের। চুমু যদি খেয়েও ফেলে কি এমন এসে যাবে তাতে? হাজারহোক ক্ষণিকের স্বামী হয়ে একটা ইচ্ছেতো পূরণ করতেই পারে দিবাকর। ওদিকে শ্বশুড় মশাই গজরাচ্ছেন। এদিকে সিরিজা নতুন রূপে ছোঁয়া দিয়েছে। রজত সিরিজাকে ওর কাছে হ্যান্ডওভার করেছে, দিবাকরও স্বামীরুপে নিজে বেশ গর্ব অনুভব করছে। চুমুটা এর সাথে দিলে বেশ মানানসই হবে। চোখদুটো বন্ধ করে একবার ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে তাহলে হয়েই যাক। সিরিজার গায়ে পড়া ভাবটা ওর যে মনে বেশ দাগ কেটে ফেলেছে। এখন এ সুযোগের সদব্যাবহার করতেই হবে ওকে। এদিক সেদিক ভাবলে আর চলবে না।

বেশ খানিকটা কাছাকাছি হয়ে ঠাসাঠাসি হয়ে যাচ্ছিলো দুজনে। দিবাকর চোখ বন্ধ করে চুমু খাওয়ার উদ্যোগটা নিতেই যাচ্ছিলো, এমন সময় সিরিজা বলে উঠলো, "আমি কি তাহলে ভুল করলাম?"

দিবাকর ভাবল যে কথাটা এতক্ষণ ও বলার চেষ্টা করছিল সেটা সিরিজাই নিজে বলে দিল, এটা কেমন হলো? শ্বশুড়মশাই এসে কি তাহলে রজতের সাথে ওর দূরত্বটা বাড়িয়ে দিল? না কি কালকের মতন আবার নতুন করে একটা স্বপ্ন দেখছে দিবাকর। একটু পরে রজত ঘরে ঢুকে ওর ঘুম ভাঙালো বলে। চিন্তা করতে করতেই ও লক্ষ্য করলো শাড়ীর আবরণটা বুকের উপর থেকে সরে গিয়ে সিরিজার বুকের খাঁচাটা বেশ খানিকটা উন্মুক্ত করে ফেলেছে। এখন ও আর স্বপ্ন দেখছে না সিরিজার বুকের খাঁচাটাই খুব কাছ থেকে দেখছে। একদম সত্যি সত্যি। যেভাবে আসল স্বামীরা বউ এর বুক দেখে নিজেদের কামভাব জাগ্রত করে, দিবাকরের এখন সেরকমই হচ্ছে।

রজতের থেকে এখন দিবাকরকেই বেশী নিরাপদ মনে হচ্ছে সিরিজার। নইলে এত ঘনিষ্ঠ হয়ে আসে কি করে? দিবাকরের সেরকমটাই মনে হলো। ও সিরিজার দিকে পাশ ফিরে ওর চোখে চোখ রেখে নরম গলায় বললও, "আমাকে কিন্তু তা বলে ভুল বুঝো না সিরিজা। আমি আসলে যেটুকু করেছিলাম, কাল মদের ঘোরেই করেছিলাম। তোমাকে দেখার পর থেকে নিজেকে উপলব্ধি করলাম, কেমন যেন যেন বদলাতে শুরু করেছি।"

একটু চুপ করে থেকে আবার বললো, দিবাকর, "আমার ভেতরে কেমন একটা ভয়ঙ্কর জেদ চেপে বসল। জানি না এটা হয়তো বাড়াবাড়িই হয়ে গেছিল। নইলে আমিই বা তোমার আর রজতের মধ্যে খামোকা দূরত্ব তৈরী করতে যাবো কেন? তোমারও রজতকে পছন্দ হয়েছে, রজতেরও তাই। এরমধ্যে আমি মাথা গলিয়ে আর কি করবো?"

- "আপনি কোন মেয়েকে কোনদিন ভালোবাসেন নি?"

-- "বেসেছিলাম একজনকে। কিন্তু সে যার হওয়ার কথা ছিল, তার তো হলো না?"

- "কার হলো?"

-- "কারুরই হলো না। এক পাখীকে দুজনে ধরতে গিয়ে পাখীই শেষ পর্যন্ত গেল উড়ে।"

- "দুজন কে কে?"

-- "একজন আমি। আরেকজন....."

- "আরেকজন?"

-- "তুমি যাকে হৃদয় দিয়ে বসে আছ সে।"

- "কে?"

-- "রজত। আমার প্রিয় বন্ধু। তোমার হবু স্বামী।"

সিরিজা কথাটা শুনল। কিছুক্ষণের জন্য চুপও করে গেল। দিবাকরের শুধু এটাই মনে হতে লাগলো পৃথিবীর সব থেকে বোকা লোকও বোধহয় ওর থেকে চালাক। না হলে এসব ফালতু বাকোয়াজ করে এমন সুবর্ণ সুযোগ কেউ হাতছাড়া করে? চুমু খেতে গিয়ে আবার পুরোনো কথাটা টেনে আনার কি দরকার ছিল? বেশ তো ঘনিষ্ঠতা হচ্ছিল, তা না রজতের কথা তুলে সিরিজার মনটাকেই ও দিল বিগড়ে। আর কি সিরিজার মন এভাবে পাবে ও আর? নিজেকে বোকার হদ্দ মনে হচ্ছে। ঠিক একই রকম ভুল করেছিল ও রেশমির ক্ষেত্রে। শেষমেষ রেশমির শরীরটা শুষে নেয় রজত। দিবাকরের জন্য আস্ত আর কিছুই পড়ে থাকে না। ছোট্ট একটা ভুলে আফসোস সারাজীবন করতে হচ্ছে। এখন যদি সিরিজাও ওকে মন না দিয়ে বসে বাকী জীবনটা আফসোসে আফসোসেই কেটে যাবে দিবাকরের। শুধু রেশমি আর সিরিজা কেন? লাইন দিয়ে একটার পর একটা মেয়ে আসবে, আর শুধু হাত নেড়ে টা টা করে চলে যাবে। সঙ্গমসুখের মজাটা অধরাই থেকে যাবে সারা জীবন। দিবাকরের আর রতিস্বাদ এ জীবনে পূরণ করাই হবে না।

ও কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না।

এমন সময় রজত দরজাটা ঠেলে ভেতরে ঢুকল। সিরিজা আর দিবাকরকে ওভাবে শুয়ে থাকতে দেখে ও বললো, "একি, তোমরা যে দেখছি সত্যিকারের স্বামী-স্ত্রী হয়ে গেছ। বুড়োটাকে ভাগিয়ে দিয়েছি। এবার তোমরা উঠে পড়।"

দিবাকর উঠে পড়লো। কিন্তু সিরিজা উঠলো না। রজত বললো, "লোকটা খুব সন্দেহ বাতিক। আমার কথা বিশ্বাস না করেই চলে গেছে। বলেছে রীতাকে সাথে নিয়ে কাল সকালে আবার আসবে। কোনরকমে চেঁচামেচি করে ভাগিয়েছি। এখন কাল সকালের আগে সিরিজাকে অন্যত্র পাঠানোর একটা ব্যবস্থা করতে হবে। ভাবছি ওকে আজ রাত্রিটার জন্য কোথাও পাঠিয়ে দেব।"

- "কোথায় পাঠাবে?"

-- "কেন, তোমার বাসায়। ওটাই তো সবথেকে নিরাপদ প্লেস আমার কাছে। কাল ওরা চলে গেলে আবার আমি সিরিজাকে তোমার বাসা থেকে ফেরত নিয়ে আসবো। ততক্ষণ তোমার স্বামীর রোলটা আরো একদিনের জন্য আমি এক্সটেন্ড করে দিলাম। এইটুকু উপকার আমার কথা ভেবে একটু করে দিলে আমি খুব কৃতজ্ঞ থাকব তোমার কাছে। আশাকরি তোমার এতে কোন অসুবিধে হবে না। কি বলো? "

কিছুটা বোকার মতন আর কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার মতন। দুটো মিলিয়ে মিশিয়ে রজতের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে দিবাকর বললো, "না অসুবিধে ঠিক হবে না। তবে সিরিজা কি রাজী হবে?"

দুজনেই তখন সিরিজার মুখের দিকে তাকিয়েছে। সিরিজাও উঠে বসেছে। রজতের দিকে না তাকিয়ে দিবাকরের দিকেই তাকিয়ে দেখছে বেশী। রজত কিন্তু বুঝতে পারছে না সিরিজা আসলে হ্যাঁ বলছে না না দিবাকর বুঝে গেছে সিরিজা ওর চোখের দিকে তাকিয়ে কি বোঝাতে চাইছে। মুখে না বললেও চোখের ভাষায় ওর বাসায় যাওয়ার সন্মতিটা জানাচ্ছে সেটা এখন পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।

এই নতুন সকালে রজত কি দারুন একটা উপহার দিল ওর জন্য। কালকের সব ব্যাথাভরা দূঃখ নিমেষের মধ্যে সব উধাও। দিবাকরকে আর কামনার জ্বালায় জ্বলে পুড়ে মরতে হবে না। রাত্রিবেলা সিরিজা ওর বাসায় থাকবে। এতো শুনেই দিবাকরের শরীরের আনন্দের নার্ভগুলো নড়াচড়া করতে শুরু করেছে। জড়সড় শরীরটা এবার টাট্টু ঘোড়ায় পরিণত হয়েছে।

দিবাকর বুঝলো সিরিজা খুব বুদ্ধিমতি। রজত সন্দেহ করবে বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেল। কিন্তু উত্তরটাও নিঃশব্দে ওকে যেন বুঝিয়ে দিয়ে গেল। আজ রাত্রিতে ও তার মানে দিবাকরের বাসায় থাকছে। দিবাকরের আর বড় পাওনা এর থেকে কি বা হতে পারে। ওকে তখনকার মতন বেশ খুশী খুশী দেখাল।

রজতকে আস্বস্ত করে দিবাকর বললো, "কলিংবেলটা তখন বেজে ওঠাতে আমিও বেশ ঘাবড়ে গেছিলাম বুঝলে। যাক বুড়ো যখন চলে গেছে তখন তোমার আর কোন চিন্তা নেই। এখন তুমি নিশ্চিন্তে থাকতে পারো।"

-- "সে তো বুঝলাম। কিন্তু কালকে যে আবার বুড়ো রীতাকে নিয়ে আসবে বলেছে।"

- "তাতে কি হলো? সিরিজা তো তখন তোমার কাছে থাকছে না। আমার বাসায় থাকলে তোমারও কোন চিন্তা নেই।"

-- "সে তো বুঝলাম। কিন্তু কাল ওরা এসে কতক্ষণ এখানে থাকবে কে জানে? আমার হয়েছে এক জালা। চলেই যখন গেল জিনিষপত্র গুলো সাথে নিয়েই তো যেতে পারত। এতদিন বাদে খেয়াল পড়েছে।"

- "জিনিষ বলতে আলমারীতে রাখা কিছু শাড়ী এই তো? ও খালি করতে আর কতক্ষণ লাগবে? এক-দু ঘন্টার মধ্যেই সব ঝেমেলা মিটে যাবে। তারপরে তুমি চিরকালের জন্য নিশ্চিন্ত।"

রজত একটা সিগারেট ধরিয়ে বললো, "আচ্ছা দিবাকর, একটা কাজ করলে হয় না?"

- "কি?"

-- "ধরো তুমি সিরিজাকে তোমার বাসায় রেখেই আবার আমার কাছে ফিরে এলে। রাতটা তুমি আমি এখানেই কাটালাম কালকের মতন। আর সিরিজা তোমার বাসায় রয়ে গেল। সকালে ঝেমেলা মিটে গেলে তারপর তোমার ওখান থেকে ওকে নিয়ে এলাম।"

খানিকখনের জন্য আবার বেশ বোকা হয়ে গেল দিবাকর। বললো, "কিন্তু সিরিজা কি আমার বাসায় একা থাকতে পারবে?"

-- "কেন পারবে না? তোমার বাড়ীতে তো কোন ঝেমেলা নেই। আমার বরঞ্চ তুমি এখানে থাকলে একটু সুবিধা হবে। রীতা আর রীতার বাপটাকে তুমি থাকলে ভালো হ্যান্ডেল করতে পারবে।"

রজতের কথার জবাব দিতে পাচ্ছিল না দিবাকর। বোকার মতন ওর মুখের দিকে তাকিয়ে কি বলবে এই ভেবে চেয়েছিল। মনে মনে একবার গালাগাল দিল রজতকে। শালা মহা ঢ্যামনা। খালি থেকে থেকে মত চেঞ্জ করে। এই একটু আগে কি বললো, আবার এখন মত পাল্টে অন্যকথা বলছে। সিরিজাকে যেন কেনা বাদী বানিয়ে ফেলেছে। সবই ওর ইচ্ছেমতন হবে। দিবাকরও ওর বিনা পয়সার গোলাম। ইচ্ছামতন ফাইফরমাস খাটবে। যা বলবে তাই করবে। ওর আর কোন ইচ্ছে আল্লাদ পূরণ হবে না ঐ ঢ্যামনাটার জন্য।

কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো, এমন সময় সিরিজা বসার ঘরে চা নিয়ে এসে ঢুকে সব সমস্যার সমাধান করে দিল। কাপ দুটো টেবিলের উপর রাখতে রাখতে মুখ নীচু করে ওদের দুজনকেই শুনিয়ে বললো, "আমিই বা একা ওখানে থাকব কেন? আমার ভয় করবে না? আমি থাকলে দিবাকরদাকেও থাকতে হবে আমার সাথে। আমি একা একা ঐ বাসায় কিছুতেই থাকব না।"

সিরিজা চা টা রেখে মুখটা তুলে এমন ভাবে দিবাকরের দিকে তাকালো, দিবাকরের মনে হোল কাল থেকে যাকে নিয়ে তপস্যা করছিল এবার সত্যি সত্যিই তার সিদ্ধিলাভ হোল। ওর দিকে এমন ভাবে কোন মেয়ে কোনদিন তাকায় নি।

রজত আর দিবাকরের থেকে একটু দূরে বসল সিরিজা। দিবাকর সিরিজাকে দেখছিল। ও যেন আর এখন রজতের সামনে দিবাকরের শরীরটাকে ছুঁতে চাইছে না। কিন্তু রাত্রে দিবাকরের বাসায় ওর সাথে যে লেপ্টে থাকবে না তার কি কোন গ্যারান্টী আছে? সিরিজার এই পরিবর্তন দেখে তো দিবাকর চিটেগুড়ের মাছি হয়ে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।

ওর সাথে রজতের মতন রতিক্রিয়ায় সক্রিয় অংশ নিতে পারলে জীবন ধন্য হয়ে যাবে। সিরিজা যেন ঐ চেয়ারে বসেই এখন থেকেই আরাধনা করছে ওকে। তুষ্ট করতে চায় দিবাকরকে।

একটা সিগারেট ধরিয়ে দিবাকরও মনে মনে বললো, "অপূর্ব! এই না হলে আমি তোমার পূজারী? এখন শুধু রজতের মতন পূজো করাটা খালি শিখতে হবে।"

সিরিজা ওর চোখের দৃষ্টিটা দিবাকরের ওপর থেকে সরাচ্ছিলই না। দিবাকর বুঝতে পারছিল ওর দৃষ্টির মধ্যে কোন ছলনা নেই। সকালবেলা ওকে দূঃখ দিয়েছিল, আর এখন নিজেই মনস্তাপে জর্জরিত হয়ে আপ্লুত হয়ে গেছে দিবাকরের উদারতার ঝর্ণা জলে।

তাল কাটল রজত। চায়ের কাপটা মুখে নিয়ে সিরিজার দিকে তাকিয়ে বললো, "চলো সিরিজা আজ তোমাকে নিয়ে একটু বাইরে বেরোই। ঘরে বসে থেকে থেকে আর ভালো লাগছে না। তোমারও ভালো লাগবে। সারাদিন তোমাকে নিয়ে ঘুরব। তারপর সন্ধেবেলা তোমাকে দিবাকরের ওখানে ড্রপ করে দেব। কালকে আবার নিয়ে আসবো।"

রজতকে অবাক করে সিরিজা বললো, "দিবাকরদা যাবে আমাদের সঙ্গে?"

উত্তরটা শুনে রজত শুধু অপ্রস্তুত হোল না। তালের সাথে সাথে এবার যে ওর সুর ল সব কেটে গেছে। সেটাই বুঝতে পারলো।

খুশী হোল দিবাকর। রজত যে ওকে এতদিন ঠুনকো ভেবে এসেছে, আজ যেন তার পরিসমাপ্তি ঘটল। অনেক শরীরপাত করে সিরিজাকে রজত হাতছাড়া করতে চলেছে। আগাম পূর্বাভাস এখন থেকেই তা পাওয়া যাচ্ছে।

রজত খুব একটা রিয়্যাক্ট করলো না সিরিজার কথা শুনে। বিরক্তি মনে এলেও সেটা মুখে প্রকাশ করলো না। একে দিবাকরের কাছ থেকে সাহায্য চাইছে। তার উপর সিরিজাও দুম করে কথাটা বলে ফেলেছে। এই অবস্থায় দিবাকরকে সাথে না নিলে দিবাকরও খারাপ ভাবতে পারে। নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বরঞ্চ কাল রাতে ও যে ইচ্ছাটা প্রকাশ করেছিল দিবাকরের কাছে সেটাই নতুন করে তুলে ধরলো।

-- "তোমাকে কাল গল্প করতে করতে বলছিলাম না। চল কোথাও ঘুরে আসি। তিনজনে মিলে দুতিনদিনের জন্য কোথাও বেরিয়ে এলে মন্দ হবে না।"

- "তিনজনে? তুমি তো বললে সিরিজাকে নিয়ে ঘুরে আসবে। আমাকে একটা জায়গা ঠিক করে দিতে বলছিলে।"

-- "না না তুমিও বাদ যাবে কেন? গেলে তোমাকে সাথে নিয়েই যাবো। সিরিজা তো আর তোমার ব্যাপারে আপত্তি করবে না। কি বল সিরিজা? দিবাকরও চলুক আমাদের সাথে। কি বল?"

রজত সিরিজার দিকে মুখ ঘুরিয়ে কথাটা জিজ্ঞাসা করলো।

সিরিজা মাথা নেড়ে বললো, "হ্যাঁ চলুক না, ক্ষতি কি?"

কথাটা শুনে দিবাকরের ভেতরটা টগবগ করে ফুটছিল। অবশ্য আনন্দে। বুঝলো সিরিজা এখন কথায় কথায় মাথা নাড়বে। দিবাকরকে বাদ দিয়ে বেড়ানো আর সুখের হবে না। রজতকেই ও এখন ফেউ মনে করছে।

রজত বললো, "আমি চাইছিলাম কাছাকাছি ভালো একটা জায়গা। তাড়াতাড়ি জায়গাটা ঠিক করো তো। কাল সব ঝ্যামেলা মিটে গেলেই আমরা বেরিয়ে পড়ব। বড্ড অস্থির হয়ে পড়েছি। ভাবছি দু একদিনের জন্য নয়। তিনজনে মিলে একটা লম্বা ড্রাইভ দেব। মোটামুটি সাত দিনের জন্য।"

- "সাত দিন? সে তো বেশ লম্বা সফর। একসাথে দু-তিনটে জায়গা ঘোরা হয়ে যাবে।" দিবাকর অবাক হয়ে বললো।

-- "ভালোই তো। আমি খালি অফিস থেকে একটা লম্বা ছুটি নিয়ে নেব। তারপর যেদিকে মন যেতে চায়। তুমি আমি আর সিরিজা।"

রজতের কথা শুনে সিরিজা এবার রজতের দিকেই তাকাচ্ছিল। কি যেন বলতে চেষ্টা করলো। রজত ওকে বাধা দিয়ে বললো, "দারুন একটা প্ল্যান এসেছে মাথায়। চট করে কাজটা সেরে নিতে হবে। তোমরা বরঞ্চ বসো। আমি টুক করে একটু ঘুরে আসছি।"

দিবাকর ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো, "কোথায়?"

-- "কোথায় আবার? অফিসে। ভাবছি ছুটিটা আজকেই নিয়ে নেব। কালকে আমরা তিনজনে বেরিয়ে পড়ব।"

সিরিজা আর দিবাকর দুজনেই এবার মুখ চাওয়া চাওয়ি করলো। রজত ওদের দুজনকে উদ্দেশ্য করে বললো, "এখন বাজে ঠিক দশটা। আমি দুটোর মধ্যে ঘুরে আসছি। ততক্ষণ তোমরা দুজনে একটু গল্পগুজব করে চানটান করে রেডী হয়ে নাও। আজকে ভালো কোন হোটেল লাঞ্চ করবো একসাথে।"

কথাটা শুনে বিশ্বাসই হচ্ছিল না দিবাকরের। রজত যে এখনই সিরিজাকে তিন-চার ঘন্টার জন্য ওর কাছে রেখে যাবে, এমন শোনাটাই অদ্ভূত। সোফাটা ছেড়ে রজত যখন তৈরী হওয়ার জন্য উঠে পড়লো দিবাকর দেখলো সিরিজা আবার ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এই তিন-চার ঘন্টা রজতের অনুপস্থিতিতে জমাটি ব্যাপার কিছু হবে নাকি এবার?

সিরিজা দিবাকরের দিকে তাকিয়ে বললো, "দিবাকরদা আর একবার চা খাবেন? তা হলে করে আনি আপনার জন্য।"
 
।। পনেরো ।।

রজতকে তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে যেতে হলো চান করে রেডী হওয়ার জন্য। সিরিজাকে নিয়ে দুটো তিনটে দিন ওর বেশ আনন্দে কেটেছে। যৌনসুখের তাগিদে অফিসে যাওয়াই ভুলে গেছিল এই কটা দিন। সবসময়ে সিরিজার গায়ে লেগে লেগে থেকে টু-রুম ফ্ল্যাটের চার দেওয়ালের মধ্যে সময়টা ভালোই কাটছিল। এখন অফিসে গিয়ে সাতদিনের ছুটিটা যে করেই হোক বাগাতে হবে। বাইরে কোথাও ঘুরতে না গেলে মন ভরছে না। সিরিজাকে নিয়ে ফুর্তীটা বেশ ভালোই হবে।

শাওয়ারের জলে চান করতে করতে রজত ভাবছিল, দিবাকর সাথে থাকলে অসুবিধের কি আছে? ও আর সিরিজা থাকবে একটা ডবল বেড রুমে। দিবাকরের জন্য আলাদা একটা সিঙ্গেল রুম ভাড়া করে নিলেই তো হলো। সবসময় দিবাকর তো আর ওদের রুমে থাকছে না। তাছাড়া রাত্রিবেলাটা তো পুরোটাই পাওয়া যাবে সিরিজা কে নিয়ে মস্তি করার জন্য। তখন তো দিবাকর ওর নিজের রুমে শোবে। সিরিজার সাথে সঙ্গম আনন্দটা ভালোই জমবে। হোটেলরুমটা তখন হয়ে উঠবে যৌন আনন্দের লীলাক্ষেত্র। স্বচ্ছন্দ যৌনবিহারের মৃগয়াভূমি।

অবাঞ্ছিত একটা ঘটনা সকালবেলা ঘটে গেছে বলে রজত নিজেকেই নিজে সান্তনা দিচ্ছিল। মনে মনে বললো, "লীলাভুমিতে চড়ে বেড়াতে গেলে, জীবনকে উপভোগ করতে গেলে নানারকম দাম তো দিতেই হয়। এটা নয় তার মধেই একটা। শ্বশুড় আর বউকে কালসকালেই ভাগিয়ে সব সমস্যার সমাধান করে নেবে। ভবিষ্যতে এরকম কোন ঘটনা দ্বিতীয়বার আর ঘটতে দেবে না।"

চান করে গা মুছে বাইরে বেরিয়ে এল রজত। দেখলো সিরিজা দিবাকরকে দ্বিতীয় বার চা করে এনে দিচ্ছে। ও শোবার ঘরে ঢুকে ভেতর থেকে সিরিজাকে একবার ডাক দিল, "সিরিজা শোনো এদিকে, একটু দরকার আছে।"

আচমকা ডাকটা শুনে সিরিজা একটু বিরক্ত হোল। দিবাকরকে চায়ের কাপটা হাতে ধরিয়ে পেছন ফিরে বললো, "আসছি।"

দিবাকর চা খেতে খেতে বুঝলো, রজত সিরিজাকে ডাকছে, তার মানে ওকে চুমু খাওয়া ছাড়া আর কাজটা কি?

ভেতরের ঘরে রজত সিরিজাকে চুমু খাচ্ছে না আদর করছে ও কিছুই বুঝতে পারলো না। শুধু বসে বসে সময় গুনতে লাগলো কখন রজত ফ্ল্যাট থেকে এবার বার হবে। তা হলেই ওর শান্তি। সিরিজাকে প্রথমবার একা পাওয়ার জন্য ওর আনন্দ যেন আর ধরছে না। ভীষন একটা রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো কখন ফ্ল্যাটটা এবার ওর স্বাধীন বিচরণের লীলাভূমি হবে। রজত এখন চুমু খাচ্ছে খাক না। এরপরে দিবাকরই সিরিজার কমলা কোয়া অধরে চুমুর দাগ এঁকে দেবে। বসে বসে ভাবছিল সিরিজার তপ্ত-কোমল ওষ্ঠস্বাদ পাওয়া তার ভাগ্যে এবার সত্যি সত্যিই জুটবে কিনা? না কি রজতের প্রভাবে ও আবার রজতের দিকেই ঝুঁকে পড়বে। শেষ পর্যন্ত সম্পর্কটা ত্রিকোণ প্রেমের জটিল আবর্তের মতন ঘিরে উঠবে না তো? ভাবতে ভাবতে চা খেয়ে এবার একটা সিগারেট ধরালো দিবাকর। দেখলো রজত ঘর থেকে বেরিয়েছে। পেছন পেছন সিরিজা।

কিন্তু দিবাকরের দিকে সিরিজার দৃষ্টিটা সেই আগের মতনই রয়েছে। মনে হচ্ছে রজতের চুমুটা কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি ওর মনে। সিরিজার মন জুড়ে এখন দিবাকরই বিরাজ করছে।

-- "আমি তাহলে আসি। তোমরা দুজনে রেডী হয়ে থেকো কিন্তু।"

ঘর থেকে বেরোনোর আগে এই কথাটাই বলে গেল রজত। দরজা দিয়ে বেরোনোর আগে একবার সিরিজার দিকে ঘুরে তাকালো, সিরিজা ওর চোখে চোখ রাখলো না। শুধু মাথাটা নীচু করে নিল। রজত বাইরে বেরিয়ে গেল।

ঘরের মধ্যে সিরিজাকে একা পেয়ে কিভাবে শুরুটা করবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছিল না দিবাকর। দেখলো সিরিজা দেয়াল ঘেসে দাড়িয়ে আছে। ও মুখে কিছু বলছে না।

নীরবতার মানেটা ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না দিবাকর। সিরিজাই ওকে অবাক করে মুখটা প্রথম খুলল। ওকে উদ্দেশ্য করে বললো, "একটা কথা বলব দিবাকরদা? কিছু মনে করবেন না। সত্যি বলুন তো। আমাকে আপনার খুব পছন্দ তাই না?"

হঠাৎ এরকম একটা প্রশ্ন করে অস্বস্তিতে ফেলে দেওয়ার মানে কি? দিবাকর ভাবল, সিরিজা বোধহয় ওকে পরীক্ষা করছে। দুম করে হ্যাঁ বলে দিলে সিরিজার কাছে ওর ভাবমূর্তিটা যদি ছোট হয়ে যায়। রজত কিভাবে ওকে পটিয়েছে সেটা ওর জানা নেই। রজতের মতন মেয়েছেলে পটাতেও দিবাকর ওস্তাদ নয়। এরপর দূর্বলতাটা প্রকাশ পেয়ে গেলে যদি সব মাটি হয়ে যায়। এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে চুপচাপ থাকাটাই বোধহয় বুদ্ধিমানের লক্ষণ। ও কিছু না বলে মাথাটা নীচু করে বসে রইলো। দেখলো সিরিজা এবার এগিয়ে এসে ওর পাশে এসে বসছে। দিবাকরের শরীরের ভেতরটা নড়েচড়ে উঠলো।

- "কি হলো, আমার দিকে তাকান না? বলুন না, আমাকে আপনার পছন্দ কিনা?"

মেয়েটা দেখছি সহজে ছাড়ার পাত্র নয়। রজতকে আর ভালো লাগছে না, তাই ওকে পটিয়ে দেখছে, বাগে আনানো যায় কিনা? অথচ এই মেয়েটাই সকালে কেমন অন্যরকম আচরণ করছিল।

দিবাকরের থুতনীতে হাত দিয়ে ওর মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে সিরিজা এবার ওকে আরো ঝামেলায় ফেলে দিল। - "কি হলো বলুন না? তাকান আমার দিকে?"

হাজার হোক, দিবাকর তো আর রজত নয়। ওর জায়গায় রজত হলে এতক্ষনে বলেই দিতো, "পছন্দ মানে? রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছ তুমি। তোমার মত মেয়েকে পছন্দ না করে আমি থাকতে পারি?"

দেখলো সিরিজা ওর দিকে কেমন একটা মন আচ্ছন্ন করে দেওয়ার মতন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। ওর চোখটা সোজা দিবাকরের দিকেই। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যে ঐ দৃষ্টির উপর থেকে চোখ ঘুরিয়ে নেওয়ার মতন ক্ষমতা কোন পুরুষ মানুষের নেই।

নিজেকে বাঁচানোর শেষ তাগিদে দিবাকর রজতের নামটিই উল্লেখ করাটা সহজ হবে বলে মনে করলো। ও বললো, "কেন, রজতের তো তোমাকে খুব পছন্দ?"

- "আমি রজতের কথা বলছি না। আমি আপনার কথা বলছি।"

-- "তুমি এমনভাবে জানতে চাইছো কেন সিরিজা? কি যাচাই করার চেষ্টা করছো আমার কাছে?"

দিবাকরকে অবাক করে সিরিজা বললো, "সত্যি বলুন তো আমার কথা চিন্তা করে কাল রাত্রি থেকে কষ্ট পাননি? আপনার শরীরটা কেন খারাপ হয়ে গেছিল আর কেউ না জানুক আমি তো জানি। আমার মতন কোন মেয়েকে এর আগে দুজনে মিলে মন দিয়ে বসেছিলেন? আপনি তো নিজেই বলেছেন। রজতের জন্য যদি আপনার পাখী উড়ে গিয়ে থাকে, তাহলে আবার রজতের জন্যই এতটা করলেন কেন? ওর এই উপকারটা করে আপনার কি লাভ হলো?"

-- "না মানে, ওর শ্বশুড়মশাই তোমাকে ওর সাথে দেখলে সাংঘাতিক কান্ড হয়ে যেত। কি হতো তখন বলা মুশকিল।"

- "হতো হতো। তাতে আপনার কি? সকালবেলা ঝেমেলা হওয়ার জন্য বন্ধুর পরোপকার করলেন। এটা কি আমার চোখে ভালো হওয়ার জন্য?"

এ মেয়ে তো দেখছি একেবারে ডেনজারাস। গ্রামের মেয়ে এত চালাক হয়? দিবাকরের চিন্তাটা মাথায় বারবার ঘুরপাক খেতে লাগলো। এনিয়ে বেনিয়ে এমন সাড়াশির মতন চেপে ধরেছে, এবার সত্যি কথাটা বলে দিতেই হবে। তারপর যা থাকে কপালে দেখা যাবে। দিবাকর দেখলো সিরিজা ওর বুকের কাপড়টাকে সরিয়ে মাঝখানের খাঁজটাকে উন্মুক্ত করেছে। ইচ্ছাকৃত ভাবে দিবাকরের ওখানে দৃষ্টি আকর্ষন করানোর চেষ্টা করছে সেটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে।

কি বলবে কি করবে ও কিছুই বুঝতে পারছিল না। রজত এখন ঘন্টা তিনেকের জন্য এ ফ্ল্যাটে নেই। সময়টা সিরিজার সাথে একান্তে কাটানোর সুযোগ পেয়ে গেছে। কিন্তু শুরুতেই ও যেভাবে শরীরের মধ্যে ঘন্টা বাজিয়ে দিচ্ছে, তাতে এরপরে যে কি হবে সেটাই তো ভেবে ও বেশ উত্তেজিত হয়ে পড়েছে।

সিরিজা কি এভাবেই রজতকে বাগে এনেছিল? দিবাকরের প্রশ্নটা একবার মাথার মধ্যে এলো। ও সিরিজাকে এক ঝলক দেখলো। বক্ষ প্রদর্শন এবার ভালো মতন স্টার্ট করে দিয়েছে ও। বুকের আঁচলটা পুরোপুরি সরিয়ে একেবারে দিবাকরের গা ঘেষে এসে বলছে, "কি হলো বলুন? চুপ করে গেলেন কেন?"

এমন শরীর লাখে বোধহয় একটাও হয় না। একমাত্র শিল্পীই গড়তে পারে পাথরে। আঁকতে পারে তুলি দিয়ে। কিন্তু রক্তমাংস দিয়ে বানাতে? নৈব নৈব চ!

নিজের স্বামীকে প্রতারণা করে রজতকে যেভাবে ফাঁসিয়ে নিয়েছে তাতে মনে হয় না এ মেয়ের লজ্জা শরম বলে কিছু আছে। অসংলগ্ন এমন বেশবাস দেখলে মাথা খারাপ হতে বাধ্য। মনে হয় ব্লাউজটা পুরো খুলে ফেললে আরো স্বচ্ছন্দ মনে করবে নিজেকে। এই ঠাসা যৌবন আর বুকের দিকে তাকালে তো চোখই ফেরানো যায় না। দিবাকর দেখলো সিরিজা এবার সত্যি সত্যিই ব্লাউজটা খুলছে। ও মাথামুন্ডু কিছু ভেবে না পেয়ে নিজের চোখটাই বন্ধ করে ফেললো।

একে একে ব্লাউজ, ব্রেসিয়ার সব খুলে সিরিজা যেভাবে ম্যাজিক দেখাতে শুরু করেছে, দিবাকর চোখ বন্ধ করে তার কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। ধমনী শিরায় রক্তসঞ্চার শুরু হয়েছে। কিন্তু চোখ বন্ধ থাকার দরুন আসল শিহরণটাই উপলব্ধি করতে পারছে না।

মেয়েটী খুব দূঃসাহসী। সম্বল যা আছে সবই উজাড় করে দেবে। নিজের শরীর চাহিদার ক্ষুধাও কম নয়। মাষ্টারবেশন এর সাহায্যে কাল উত্তেজনা অনেক কষ্টে সামাল দেওয়া গেছে। এখন এই অবস্থাটা কি করে সামাল দেওয়া যায়?

- "পুরুষ হয়ে নারীর দিকে এগিয়ে আসতে ভয় পান? আপনি না যেন কি!"

দিবাকর দেখলো সিরিজা উঠে দাঁড়িয়ে দেওয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে ওর বুকের ব্লাউজটা আবার পরে নিচ্ছে। দিবাকরের দিকে পিছন ফিরেই ও বললো, "আপনার বন্ধু আমার সাথে এক রাত কাটিয়েই পাগল হয়ে গেছে। আর আপনার তো এখনো দৃঢ় আত্মবিশ্বাসটাই আসেনি। আমাকে নিয়ে উপভোগ করবেন কি করে?"

দিবাকর এবার খুব স্বাভাবিক ভাবে উত্তর দিল সিরিজাকে, "কিন্তু তুমি যে পরীক্ষাটা নিতে চাইছো আমার কাছে, তাতে ফেল না পাশ কোনটা করলে তুমি খুশী হবে সেটাই তো দ্বিধা রেখে দিয়েছ মনে। আমার জীবনে এমন কোন পরীক্ষায় আজ অবধি কোনদিন অবতীর্ণ হইনি আমি।"

সিরিজা এবার ঘুরে ওর দিকে তাকালো। দিবাকর আবার বললো, "কি সে তুমি খুশী হবে? আমি হারলে না জিতলে?"

দেহসুখের ম্যাজিক ভান্ডারটা এতক্ষণ ধরে খুলে রেখেও দিবাকরের দৃষ্টি ফেরাতে পারলো না। সিরিজা ভালোমতই জানে জবাবটা দিবাকরকে কি দিতে হবে। উপভোগ্য খাদ্যটা মুখের সামনে তুলে ধরেও উপবাসী লোকটাকে টলানো যায় নি। আখেরে দিবাকরের কি লাভ হলো সেটা দিবাকরই জানে। চোখ বন্ধ করে সিরিজার কাছে ভালো হয়ে ও মনে করলো জিতে গেল। এতে সিরিজা খুশী। সত্যি সত্যি তারমানে ওর শরীরের উপর কোনো লোভ নেই। আর যদি ঐ শরীরের মোহে সিরিজার উপর ঝাপিয়ে পড়ত, ততক্ষনাৎ সিরিজার কাছে হয়তো হার হোতো। আসল সত্যিটা ধরা পড়ে যেত। কিন্তু সিরিজা হয়তো খুশী হতো অথবা হতো না। কারন রজতকে সিরিজার মন থেকে মুছে ফেলাটাও এর উপর অনেকটা নির্ভর করছে। যেটী দিবাকরের কাছে এখনও ধোঁয়াশার মতন।

খুব স্পষ্ট ভাষায় সিরিজা বললো দিবাকরকে, "সকালবেলা এমন একটা উটকো ঝামেলায় মনটা একটু খারাপ হয়ে গিয়েছিল অবশ্যই। আপনার বন্ধুকে তার চাহিদা মতন আমি এমন কিছু নেই যা দিইনি। সারাজীবন ওকে নিয়ে থাকতেও আমি রাজী আছি। ভেবেছিলাম এখানে এসে আর কোন নতুন ঝামেলায় পড়তে হবে না কোনদিনই। ওর যে একটা বউ আছে সেটা আমিও ভালো করে জানি। বউ এর সাথে ছাড়াছাড়ি হলেও আইনগত ছাড়াছাড়িটা হয়নি। এখন শ্বশুড় মশাই আসার দরুন নতুন কোন ঝেমেলা এলে সেটা নিয়ে আমার থেকেও ওকে ভাবতে হবে বেশী। আপনি ওর উপকার করেছেন সেটাতে আমিও খুব খুশী। কিন্ত আমার কাছে ভালো সাজতে গিয়ে আপনি নিজেই তো ধরা পড়ে গেলেন। যাকে মন থেকে চাইছেন তাকে যখন নিতেই পারলেন না। আপনার এই আচরণটা আমার কাছে ঠিক বোধগম্য হলো না। মাফ করবেন। আমি বুঝতে পারিনি। যদি না বুঝে কিছু করে থাকি, তাহলে ক্ষমা করে দেবেন।"

দিবাকর এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে সিরিজার দিকে। ওর মুখে কোনো কথা নেই। বোকা হয়ে ও তখন পুরো বোবা বনে গেছে।

সারাজীবন শুধু ভুল করে করে ভুলের খেসারত এখনো দিতে হচ্ছে। দিবাকরের মুখে যেন সেলাই করে দিয়েছে সিরিজা। আসতে আসতে কি সুন্দর নেকেড হচ্ছিল, আর এখন কথার প্যাঁচে কেমন স্তব্ধ করে দিল। সিরিজাকে নিয়ে এ জীবনে আর কোন স্বপ্নই পূরণ হলো না। রাত্রিবেলা ওর বাসায় ফাইনাল টেকের আগে এখন ওকে একটা রিহার্সাল এর সুযোগ দিয়েছিল সিরিজা। দিবাকর ভালোমানুষি দেখাতে গিয়ে সুযোগটা হাতছাড়া করলো। এমন হতভাগা পৃথিবীতে আছে আর কেউ?

মাথা নীচু করে গুম হয়ে বসেছিল দিবাকর। চোয়াল শক্ত করে ওর চুপ করে বসে থাকাটা যেন সিরিজাকে নরম করে দিল এবার। ও দিবাকরের কাছে এগিয়ে এলো। একেবারে সামনা সামনি বসে দিবাকরকে একটা কথাই বললো, "আমার কথায় কিছু মনে করলেন দিবাকরদা? আমি জানি আপনি ব্যাথা পেয়েছেন। যাক মন খারাপ করবেন না। আপনি বসুন। আমি বরঞ্চ আপনার জন্য আর এক কাপ চা করে এনে দি।"

-- "না থাক। আমি এখন চলে যাবো।"

- "চলে যাবেন? না না তা কেন? আপনি চলে গেলে ও এসে তো আপনাকে দেখতে পাবে না। তখন আবার টেনশনে পড়ে যাবে।"

-- "তাতে কি হয়েছে। আমার জায়গায় বিকল্প ব্যাবস্থা করে নেবে রজত। ওর নিশ্চয়ই আরো কোন বন্ধু আছে।"

- "কিন্তু আমাকে তো বলেছে, আপনি ছাড়া ওর তেমন কোন বন্ধু আর নেই। আপনি চলে গেলে ও সমস্যায় পড়ে যাবে।"

-- "তাতে তোমার কি? রজতের মতন তুমি নিশ্চয়ই টেনশনে পড়বে না। একটু আগে তুমি নিজেই তো বললে-সমস্যাটা ওর। এটা ওকেই মেটাতে হবে। তাহলে এই ব্যাপারে তুমি টেনশন নিচ্ছ কেন?"

দিবাকর যেন শেষ অস্ত্র ছেড়ে এবার সিরিজাকেই চুপ করিয়ে দিল। সিরিজার মুখ দিয়ে এবার কোনো কথা বেরোচ্ছে না। দিবাকর আসতে আসতে এবার ওর মুখ খুলতে লাগলো। সিরিজাকে সামনে বসিয়েই এবার বলতে লাগলো, "এবার আমি তোমাকে কিছু কথা বলি সিরিজা। আশাকরি তুমি আমার কথাগুলো শুনবে। কি, তাই তো?"

সিরিজা উত্তর দিচ্ছে না। ওর সামনে চুপ করে বসে আছে। দিবাকর বলতে লাগলো।

-- "ভেবো না তোমার প্রতি রাগে আমি এই কথাগলো বলছি। আমার কারুর প্রতি রাগ নেই। অভিমানও নেই। না রজত, না তোমার প্রতি। রজত যদি তোমাকে পেয়ে সোনার মোহর পেয়ে থাকে, তাহলে আমার কাছেও সেটা অমূল্য। আমি কৃতজ্ঞ তোমার কাছে, শুধু এই কারণেই, হঠাৎ আমার জীবনটা মনে হয়েছিল উত্তাপে ভরে গেছে। যে দিবাকর সেভাবে কোনদিন নারীর সান্নিধ্য পায়েনি, কাউকে ধরে রাখতে পারেনি, সম্পর্ক চিরস্থায়ী হয়নি, তার মধ্যে এমন আশার বাসা গড়ে উঠেছিল শুধু তোমার জন্যই। কিন্তু দোষ আমার একটাই, কোনো নারীকে ধরে রাখার নির্ভুল পদ্ধতিটা যে আমার ঠিক জানা নেই, তাই ভুলটা করে ফেলি ওখানেই। ওরা (নারী) আসে, ওরা চলে যায়। কেউ শিকড়ে বাকড়ে বাঁধে না। কেউ নোঙর ফেলে না। আর আমি নিশ্চিন্তভাবে অনুভব করি, আমি বোধহয় সত্যিই তাদের অযোগ্য। নইলে তারা কেন আমাকে ঠিক বুঝতে পারে না। বারেবারে আমাকে একাকী ফেলে চলে যায়।"

সিরিজা জানো আমার মধ্যে দুটো সত্তা কাজ করে। একটা শুধু নিজের কথাই ভাবে। যখন সে চালাক হওয়ার চেষ্টা করে। যা করছে এটাই তখন ঠিক। তখন সে ভাবে দিবাকর নামের লোকটার কি সুখ পাওয়ার অধিকার নেই। কেন শুধু শুধু পরের কথা ভেবেই জীবন নষ্ট করবে, তারও তো নারীর শরীর পাওয়ার অধিকার আছে।

আরেকটা হলো, সত্যিই সে যখন বোকা হয়ে যায়। কাউকে ঠকাতে সে চায় না। কামনা বাসনার বশে অন্যের সুখকে কেড়ে নেওয়ার আগে সে বারবার ভাবে, কাজটা বোধহয় ঠিক হচ্ছে না। তালে গোলে সেই বাসনার নারী তখন তার হাত ফস্কে বেরিয়ে যায়। তার আর সুখ ভোগ করা এ জীবনে হয় না।

এবার বল, আমার কোন সত্তাটা ঠিক? চালাক হওয়াটা না বোকা হওয়াটা? যদি বল-চালাক হওয়াটা। তাহলে এক্ষুনি তোমাকে জড়িয়ে ধরে আমি তোমার ঠোঁটে একটা চুমু খাবো। তুমি কিন্তু কিছু বলতে পারবে না। আর যদি বলো - বোকা হওয়াটা তাহলে রজতের কথা ভেবে শেষবারের মতন এই ফ্ল্যাট থেকে বিদায় নেব। তুমি কোন আপত্তি করতে পারবে না। তাহলে বল কোনটা আমি করবো? প্রথম না দ্বিতীয়টা? খুব তাড়াতাড়ি উত্তর চাই তোমার কাছ থেকে। সিরিজা দেরী করলে কিন্তু চলবে না।"

দিবাকর কথাটা বলে এমন ভাব করলো যেন বাজীমাতটা ও করেই ফেলেছে। সিরিজাকে এবার দুটোর মধ্যে যেকোন একটাকে বেছে নিতে হবে। প্রথম থেকে দ্বিতীয়টি মেনে নেওয়া বেশী সহজ? না প্রথমটা? সিরিজা তাড়াতাড়ি উত্তরটা দিতে পারছে না। আর ওদিকে দিবাকর যেন সিরিজাকে চুমু খাওয়ার জন্য ঠোঁট বাড়িয়েই রয়েছে। সিরিজা ওকে বোকা বললে পা বাড়িয়ে রেখেছে ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যাবার জন। মানসিক ভাবে দুটোতেই প্রস্তুত। রাত্রিবেলা আবার ওর পা ধরে রজতকে তো সিরিজাকে ওর ফ্ল্যাটেই নিয়ে আসতে হবে। রজতের যে দিবাকর ছাড়া কোন গতি নেই সেটা দিবাকরও জানে। সুযোগ বুঝে মোক্ষম চালটা চেলেছে। এখন কি করবে সিরিজা? দিবাকরের মগজে হঠাৎ যে এমন একটা বুদ্ধি চলে আসবে ও নিজেও বোধহয় কল্পনা করতে পারেনি। সিরিজাকে পাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। হ্যাঁ তো হ্যাঁ। নইলে না। হ্যাঁ আর না এর মাঝে কিছু নেই।

উত্তর না পেয়ে দিবাকর উঠে দাঁড়াতে চাইছিল। সিরিজাকে বললো, "তোমার উত্তর যখন পেলাম না, এবার তাহলে চলি।"

সিরিজা মুখটা তুলে দিবাকরের দিকে চোখে চোখ রেখে তাকালো। বললো, "আমি তো উত্তর দিইনি। তাহলে আপনি আমার উত্তরটা পেলেন কি করে? আমি তো আপনাকে চালাক বোকা কোনোটাই বলিনি। তাহলে?"

দিবাকর গম্ভীর মুখে বললো, "কি বলতে চাইছো বলো। আমি শুনতে চাইছি।"

সিরিজা খুব সহজ ভাবে এবার উত্তরটা দিল। বললো, "আমার কাছে আপনি বোকাই। তবে চালাক যদি হতে চান আমার কোনো আপত্তি নেই। তবে আমার কিছু শর্ত আছে।"

দিবাকর বুঝতে পারলো সিরিজা তার মানে এবার চুমু খাওয়ার শর্ত আরোপ করছে। ও তবু বললো, "কি শর্ত?"

সিরিজা বললো, "শর্ত একটাই চুমুটা আপনাকে রজতের সামনে খেতে হবে। আপনি রাজী আছেন?"

-- "রজতের সামনে?"

- "হ্যাঁ ওর সামনে। আমিও চাই আপনি আর বোকা হয়ে না থেকে ওকে বুঝিয়ে দিন যে এবার আপনার চালাক হওয়ার দিন চলে এসেছে। সিরিজাকে মনে প্রাণে আপনিও চান। ওর সামনে আমাকে চুমু খেতে আপনার কোনো ভয় নেই। কি পারবেন না?"

দিবাকর এবার যেন বোবা আর স্ট্যাচু।

সিরিজা আবার বললো, "রজত যদি আপনার সামনে আমাকে চুমু খেতে পারে, আদর করতে পারে। আপনি পারবেন না? কি হোল বলুন? আর কতদিন বোকা হয়ে থাকবেন।"

-- "কিন্তু সেটা?"

- "কিন্তু আবার কি দিবাকরদা? আমার যদি আপত্তি না থাকে আপনার তো আপত্তি থাকার কথা নয়? কাউকে পছন্দ করেন। মনে প্রাণে তাকে চাইছেন। অথচ সেটা জানিয়ে দিতে আপত্তি কোথায়? আপনি কি আপনার বন্ধুকে ভয় পান?"

-- "না মানে?"

শর্তটা যে দিবাকরকে বেশ টলিয়ে দিয়েছে সিরিজা ভালোমতন বুঝতে পারছিল। ও শুধু দিবাকরকে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিয়ে শেষবারের মতন বললো, "আপনার যদি শর্ত পছন্দ না হয় তাহলে চুমু খাবেন না ওর সামনে। আমার কিছু বলার নেই। এখন তাহলে আমাকে চুমুটা খেয়ে নিন। আমি এগিয়ে আসছি আপনার কাছে। তবে আপনার সামনে ও কিন্তু আমাকে আবার চুমু খাবেই। তখন কি করবেন? সহ্য করতে পারবেন তো? কি হলো দিবাকরদা জবাব দিচ্ছেন না। কিছু একটা বলুন। আপনি যে একেবারে চুপ করে গেলেন।"

সুখের পরশ পেতে গিয়ে পরিস্থি্তি যেন শুধুই জটিল হয়ে পড়ছে। মেয়েটা কি চায় তাই তো বোঝা যাচ্ছে না। সিরিজা যেন ক্রমশই ধোঁয়াশায় পরিণত হচ্ছে। দিবাকরকে পরিষ্কার বলে দিক না যে রজতকে এখনো মন থেকে পুরোপুরি মুছে ফেলতে পারে নি ও। শুধু শুধু সিরিজার মায়া করে লাভ নেই। কেন নিজের মান সন্মানটাও বিসর্জন দিচ্ছে বারবার। একবার যদি বলে দেয় যাই কিছু হোক আমি রজতকেই মনে প্রাণে পছন্দ করি, ভালোবাসি, তাহলেই তো ল্যাটা চুকে যায়। তা না একবার ওর পরীক্ষা নিচ্ছে, বারবার কি সব শর্ত আরোপ করে দিবাকরের মাথাটাই খারাপ করে দিচ্ছে। মেয়েটা ওর সাথেই ভীড়তে গিয়ে এসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে কেন? কই রজতের বেলায় তো সটান কাপড় চোপড় খুলে একেবারে নিজেকে বিসর্জন দিয়ে দিয়েছে। তখন তো এসব মাথায় আসেনি। তাহলে এখন কেন?

-- "কিন্তু তুমি যা বলছো সেটা তো না করলেও রজত বুঝে যাবে।"

- "কি বুঝে যাবে?"

-- "যে তুমি আর রজতের নেই। তুমি এখন আমার হয়ে গেছ।"

- "আপনি বিশ্বাস করেন? রজত সেটা মেনে নেবে?"

-- "কেন মানবে না কেন?"

- "এতদিন যার সাথে বন্ধু হিসেবে মিশলেন, তাকে চিন্তে আপনার এত ভুল হলো? আপনি এমন একজনের কথা বলছেন যে নিজে কখনও বিশ্বাস করে না সিরিজা তার না হয়ে অন্যকারুর হয়ে যেতে পারে। আপনি আমাকে নিয়ে কোথায় তুলবেন? আপনার বাসায়? সে ওখানে যাবে। আপনি তাকে বাধা দিতে পারবেন? সে তো জানে আপনি তার শুধু উপকার করছেন। নাছোড়বান্দা রজতকে কি করে সামলাবেন তখন? সাহস থাকে অকপটে তার কাছে স্বীকার করুন, আপনি আমাকে চান। এইটুকু বলতে এত ভয়? আর তা যদি না পারেন, তাহলে বলে রাখি দুজনকে একসাথে শরীর আর মন দেবার কোনো ইচ্ছে আমার আপাতত নেই।"

দিবাকর বুঝতে পারছিল সিরিজার প্রতিটা কথায় ও কেমন জব্দ হচ্ছে। সত্যিই তো। রজতকে বলার কোনো ক্ষমতা নেই, অথচ সিরিজাকে ভোগ করার জন্য হ্যাংলামো সেই কাল থেকেই দেখিয়ে চলেছে। এবার যেন এটার শেষ হওয়া দরকার। সিরিজাকে বিজয়িনী ঘোষনা করে চ্যাপ্টারটা এখানেই শেষ করতে হবে। আর একটু পরেই রজত আসবে। নিজেকে তার আগে স্বাভাবিক করে নিতে হবে। শুধু শুধু রজতের সঙ্গে টেক্কা দিয়ে কোনো লাভ নেই। তার চেয়ে বরং যে যেটা পেয়ে আনন্দ করছে, তাকে সেটাই করতে দিতে হবে। রজতের সাতে খামকা ঝেমেলা বাড়িয়ে লাভ নেই। তার চেয়ে সিরিজা যেদিন সত্যি সত্যি ওর স্বাদ বদলাবে সেদিনই ও সিরিজাকে আপন করে নেবে। এখন বিষয়টা এখানেই সমাপ্ত হোক।

সিরিজাকে আশ্বস্ত করে ও শুধু একটা কথাই বললো, "তুমি ঠিক বলেছো সিরিজা। ভুলটা আমারই হয়েছিল। এবার এটা থেকে বেরিয়ে চল আমরা অন্য কথা বলি। আমার আর এ বিষয়ে কোনো কথা শুনতে বা বলতে আর ভালো লাগছে না।"
 
।। ষোলো ।।


দিবাকরের মনে হচ্ছিল এই মূহূর্তে রজতের ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে চলে গেলেই বোধহয় ভালো হতো। যা জোর ধাক্কা দিয়েছে সিরিজা। এরপরে এখানে থাকার কোনো মানে হয় না। কি ভুল করেছিলো কাল নেশার ঘোরে রজতের ঘরে উঁকি মেরে। সব রিয়াকশন্ কালকের ঐ উজবুকের মতন কাজ করা থেকেই হচ্ছে। খারাপ কাজ করে কারুর কাছে জোর করে ভালো হওয়া যায় না। এটা ওর আগে বোঝা উচিত ছিল। মেয়েমানুষ বস্তুটাই এমনি। সব মারামারি কাটাকাটি ঐ নারীদেহর জন্য। রজত যেভাবে সিরিজাকে নিয়ে ক্ষেপেছে শেষ পর্যন্ত দিবাকরের সাথেই ওর জন্য না হাতাহাতি করে বসে, আশ্চর্যের তাহলে আর কিছু থাকবে না।

মনটা বেশ খারাপ হয়ে ওর তখন কথা বলার ইচ্ছাটাই চলেগেছে। ইতিমধ্যে সিরিজা কখন ওর পাশে এসে বসেছে ও খেয়ালই করেনি।

- "দিবাকরদা, একটু তাকান আমার দিকে।"

দিবাকর মনে মনে ভাবছে এবার যদি আবার নাটক শুরু করে সিরিজা, সোজা সোফা ছেড়ে উঠে সটান বাড়ীর দিকে রওনা দেবে। সিরিজার মায়াজালে জড়িয়ে পড়তে আর ও রাজী নয়। অনেক হয়েছে!

এবার এটার শেষ হওয়া দরকার। আজকের রাত্রিরটা শুধু বন্ধুর উপকার করবে। তারপর কাল থেকে ওর ছুটি। রজত আর সিরিজার ব্যাপারে মাথাও ঘামাবে না আর পাও মারাবে না এদিকে। সে রজত যতই ওকে কাকুতি মিনতি করুক। সিরিজাকে নিয়ে ঝ্যামেলা পোয়ানোর দায়িত্ব রজতের। ওটা দিবাকরের নয়।

- "আমি একটা কথা বলতে চাই দিবাকরদা। একটু শুনবেন আমার কথা?"

কথা শোনা মানেই তো আবার নতুন করে ফ্যাসাদে পড়া। মনটা বেশ বিষিয়ে গেছে। দিবাকর সিরিজার দিকে তাকাচ্ছিলোও না কথাও বসছিল না।

সিরিজা শুধু বলতে চেষ্টা করলো, "রজত আর আপনার....."

দিবাকর সঙ্গে সঙ্গে ওকে থামিয়ে দিয়ে বললো, "ছাড়ো না এই প্রসঙ্গটা। আমি আর কথা বলতে চাই না।"

অবুঝ মন সিরিজাকে বুঝতেও চাইছে না। ওর কথা শুনতেও চাইছে না। তেতো হয়ে গেছে পরিস্থিতিটা। এখন সিরিজা যতই মিষ্টি কথা বলুক, ওর তাতে মন ভরবে না। কিন্তু নারী হচ্ছে এমনই এক বস্তু। যাকে বোঝার সাধ্য কার। ক্ষণিক আচরণেই সিরিজাকে বুঝে যাবে দিবাকর, এমন ভাগ্য করে ও বোধহয় জন্মায় নি। কিন্তু সেই মূহূর্তে স্বয়ং ভাগ্যদেবতা বা ভাগ্যদেবী বোধহয় ওর ওপর প্রসন্ন হলেন।

সিরিজা পাশে বসেই ওর গালটা দুহাতে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে চকাম করে ওর ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে একটা চুমু খেয়ে বসলো। চুমুটা এমনই আচমকা, যে দিবাকর সিরিজার হঠাৎ এই আচরণে মাথামুন্ডু কিছুই বুঝে পেলো না। ওর এতে কোনো ঝাঁকুনি এলো না। বরং মনে মনে ভাবলো, "আমি খেতে চাইলেই আপত্তি। আর নিজে যখন মনে করছে, গাল ধরে একেবারে সজোরে চুমু খাচ্ছে। কি ভেবেছে কি মেয়েটা? আমার কি কোনো মান ইজ্জত নেই? না এটা আবার নতুন কোনো খেলা শুরু হলো?"

সিরিজা ওকে অবাক করে আবার ওর ঠোঁটে চুমু খেতে যাচ্ছিলো। দিবাকর কিন্তু এবার ওর ঠোঁটটা সরিয়ে নিলো।

হঠাৎ এমন আচরণ অবাক করে দেওয়ার মতনই। তবুও সিরিজার অত সুন্দর চুমুটা দিবাকরের মনে কোনো প্রভাব ফেললো না। বেশ বিরক্তি স্বরেই ও বলে উঠলো, "এটা কি হচ্ছে সিরিজা? তুমি হঠাৎ চুমু খেলে আমাকে? ব্যাপারটা বোধগম্য হলো না আমার কাছে।"

- "বারে, আপনিই তো চুমু খেতে চাইলেন?"

-- "সেটার মধ্যে তো তোমার শর্ত ছিলো। তাহলে এখন কেন? হঠাৎ এভাবে?"

- "কি শর্ত?"

-- "সব জেনেও এমন ভাব করছো যেন কিছুই জানো না। তুমিই তো বললে রজতের সামনে তোমাকে চুমু খেতে হবে। তাহলে এখন কেন?"

- "আপনি তো সে শর্ত পূরণ করতে রাজী নন।"

-- "কখনই সেটা সম্ভব নয়। তোমাকে তো বলেই দিলাম। রজতের সাথে আমি কোনো ঝামেলা পাকাতে রাজী নই।"

দিবাকরকে এবার পুরো হতবাক করে দিয়ে সিরিজা বললো, "আপনাকে পরীক্ষা করছিলাম। দেখছিলাম আপনি কতটা মন থেকে তৈরী আছেন।"

-- "মানে?"

- "মানে হলো, আপনি আমার কাছে একটা প্রস্তাব রেখেছিলেন, আমি আপনার প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছি। আর আমি একটা অনুরোধ রেখেছিলাম, সেটা আপনি মানেননি। এখন মানা না মানাটা আপনার ব্যাপার। আমাকে তো আর কিছু বলতে পারবেন না। আমি আমার কাজ করে দিয়েছি।"

দিবাকর পুরো আকাশ থেকে পড়লো। ওর মনে হলো এই মেয়েকে বুঝতে বোধহয় ওর জন্ম জন্ম লেগে যাবে। এক জন্ম কেন, দশ জন্মেও এ নারীকে বোঝা খুব কঠিন। দিবাকর তুলনায় অনেক শিশু। সিরিজা অনেক পোড় খাওয়া নারী। রজতের কপালে বেশ ভালোই রেখা লেখা ছিল। নইলে এমন.....

দিবাকরের খুব কাছে ঘেঁসে আবার ওর গালটা ধরে সিরিজা শুধু বলে উঠলো, "আপনাকে শুধু একটা অনুরোধ। যদি কোনোদিন আমার শর্তটা মানতে নাও পারেন। আমার এই চুমু খাওয়াটা রজতের কাছে কোনো্দিন গল্প করবেন না। ভুলেও না। আমি শুধু এটা আপনার মন রাখার জন্য করেছি। আর কিছুই নয়।"

দিবাকরকে ছেড়ে দিয়ে সিরিজা উঠে চলে গেলো। যাবার আগে বললো, "ও আসার টাইম হতে চললো। আমি বরং আপনার জন্য আর এক চাপ কা করে আনি। তারপর স্নানটা সেরে নেবেন। আমিও করবো। আমাদের নিয়ে কোথায় যেন ও যাবে বলছিলো। আসার আগে তৈরী হতে হবে। আপনি একটু বসুন, আমি এক্ষুনি আসছি।"

ঐটুকু সময়ের মধ্যে দিবাকরের মনে অনেকগুলো চিন্তাধারা একসাথে ঘুরপাক খেতে লাগলো। কয়েকটা বেশ বড়সড় প্রশ্নচিহ্নও রেখে দিলো ওর মনে। সিরিজা যা করে গেল আর যা বলে গেল এটাকে নিয়ে ভাবার যথেষ্ট কারণ আছে। এর মধ্যে কোনটা যে আসল সত্যি সেটাই এখন বিচার্য বিষয়। আগামী দিনগুলোতে কোনদিকে ঘটনা বাঁক নেবে কেউ বোধহয় আগে থেকে বলতে পারবে না। চিন্তায় চিন্তায় ওর মনটা আবার আগের মতন ছটফট করতে শুরু করলো। নিজেকে নিয়ে এই প্রথম উদিগ্ন হয়ে ও ভাবলো-বেশ জাঁতাকলে পড়ে গেছে দিবাকর। এবার এর থেকে বেরোনো এবার খুব মুশকিল। কি যে হবে শেষ পর্যন্ত ভগবান কে জানে?

চুমু খাওয়ার মধ্যে যেন অনেক মানে লুকিয়ে আছে। এক হতে পারে, সিরিজা যা বলে গেলো সেটাই হয়তো ঠিক। এর মধ্যে কোনো ভণিতা নেই। দিবাকরের মন রাখার জন্যই ও ওটা করেছে। দুই-চুমু খেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত কথা বলে দিবাকরের মনটা গলিয়ে দিল সিরিজা। যাতে রাতে ওর বাসায় যাওয়ার কোনো বাধা না থাকে। তিন-রজত যদি ভবিষ্যতে আরো বড় কোনো ঝামেলায় পড়ে তার জন্য আগাম পথটা পরিষ্কার রাখলো সিরিজা। যাতে দিবাকরকে সঙ্গী করে নিতে অসুবিধা না হয়। চার-সাহসটা জুগিয়ে দিল দিবাকরের মনে। ইচ্ছে থাকলেও বন্ধুপ্রীতি ওকে বার বার ঠকিয়েছে জীবনে। সেরকম ভাবে নারীসঙ্গ বলতে গেলে একেবারেই পায়েনি দিবাকর। এবার সিরিজার জন্য ও যদি ময়দানে নামে। পাঁচ-রজতের জন্য আর বোধহয় মন পড়ে নেই সিরিজার। এখন ওর মনে শুধু দিবাকরই আর দিবাকর। দিবাকরকে মনে ধরেছে সত্যি সত্যি। কিন্তু ওকে বুঝতে দিচ্ছে না। অনেকটা প্রেম প্রেম খেলার মতো খেলছে। এর মধ্যে কোনটা আসলে ঠিক। বলা খুব শক্ত।

একটা সিগারেট ধরিয়ে দিবাকর মনে মনে বললো, "এবার মনে হয় আমি সত্যি সত্যি পাগল হয়ে যাবো।"

সিরিজা রান্নাঘরে দিবাকরের জন্য চায়ের জল বসিয়ে শোবার ঘরে ঢুকেছে। দিবাকর দশ মিনিট হলো এসব হাবিজাবি চিন্তা করে মাথা খারাপ করছিল। ওর তখন মনে প্রাণে একটাই ইচ্ছা যাই হোক, শেষ পর্যন্ত সবই যেন ঠিকঠাক হয়। কেউ কাউকে ঠকাবে না। সব যদি স্বাভাবিক রীতি মেনে হয় তাহলে আর চিন্তার কোনো ব্যাপার থাকবে না। সুড়সুড় করে সিরিজা এসে ওর গলায় ঢলে পড়বে এটাও ঠিক নয়। রজতের কপালের ওপর এখন সবকিছু নির্ভর করছে। দিবাকর মনে প্রাণে রজতের কোন ক্ষতি হোক সেটাও চাইছে না। সারাজীবন সিরিজার চুমুটাকেই যদি বহন করে চলতে হয় ক্ষতি কিছু নেই। অনেক কষ্ট করে শেষ পর্যন্ত একটা চুমু তো পাওয়া গেছে। আর কি চাই?

ও দেখলো সিরিজা একটু পরে শোবার ঘর থেকে বেরোলো কিন্তু দিবাকরের সব কল্পনা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ওকে একটা মারাত্মক প্রশ্ন করে বসলো। উত্তরটা দেবার আগে দিবাকর এমন অপ্রস্তুতে পড়ে গেলো যে কি বলবে না বলবে এইভেবে রীতিমতন ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেল।

সিরিজা ওকে বললো, "দিবাকরদা, রাত্রে আপনার বাসায়, আপনি কি আমার সাথে শোবেন? না আলাদা শোবার কোনো ব্যাবস্থা আছে?"

দিবাকরের মনে আবার একটা প্রশ্ন জাগলো, হঠাৎ এমন কথা জিজ্ঞাসা করার মানে কি? শোবার ব্যাবস্থা যেমন আছে সেরকমই হবে। অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারলে ভালো। নইলে?

একসাথে শুতে যদি আপত্তি, তখন মুখেই বলে দিক না। অত হেঁয়ালির কি আছে? ও বললো, "আলাদা শোয়ার তো ব্যাবস্থা নেই। আমার ঘরে একটাই খাট। তবে তুমি যদি বল, আমি মাটিতে বিছানা করে শুতে পারি।"

- "না না মাটিতে বিছানা করবেন কি? আপনি আমার পাশেই শোবেন।"

খুব কাছে এসে দিবাকরের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো, "একটু আগেই তো দুজনে একসাথে শুয়েছিলাম ওঘরে। তাহলে আর অসুবিধার কি আছে? আপনার সাথে আজ থেকে একসাথে শুতে আমার কোনো অসুবিধে নেই।"

আজ থেকে মানে? এতো এক রাত্রিতে শোওয়ার গল্প। রোজ রোজ শোবার ব্যাপারটা হচ্ছে কোথায়? দিবাকর মনে মনে ভাবলো সিরিজা মাঝে মাঝে এমন সব কথা বলে ওকে বোঝা খুব মুশকিল হয়ে যায়।

চায়ের জলটা রান্নাঘরে ফুটছে। সিরিজা বললো, "দাঁড়ান, আমি চা টা নিয়ে আসি। তারপর আপনার সাথে অনেক কথা আছে।"

কোমরটা দোলাতে দোলাতে সিরিজা যখন রান্নাঘরে ঢুকলো, দিবাকর ওকে পেছন থেকে দেখছিলো। একটু আগে ওর ঠোঁটে সিরিজা চুমু খেয়েছে। অথচ ও এখন কত স্বাভাবিক। এসব যেন কোনো ব্যাপারই না ওর কাছে। গ্রামের মেয়ে হয়েও ও তুলনায় অনেক অ্যাডভান্স। সেই তুলনায় দিবাকর শহূরে হয়েও সিরিজার থেকে অনেক পিছিয়ে। মনে মনে দিবাকর একবার ভাবলো, রহস্য কিন্তু একটা থেকেই যাচ্ছে। সিরিজা এখনো সেই রহস্যটা উন্মোচণ হতে দিচ্ছে না। এর শেষ কোথায় এটাও ওকে ভালোভাবে দেখতে হবে। মনে মনে ঠিক করলো, যা ঘটে গেছে ঠিকই আছে। এরপর থেকে ওকে সিরিজার কাছে স্বাভাবিকই হতে হবে। স্বাভাবিক না হলে এ রহস্যের কূলকিনারা ও কোনোদিন করতে পারবে না।

দিবাকরের মনের মধ্যে থেকে যাওয়া রহস্যের কিছুটা উন্মোচন হলো আর কিছু পরেই। তার আগে সিরিজা চা টা কাপে করে দিবাকরের জন্য রান্নাঘর থেকে নিয়ে এলো। ওর হাতে দিয়ে দিবাকরের পাশেই বসলো সিরিজা।

চা এর কাপটা মুখে ধরে দিবাকর বললো, "তুমি বলছিলে চানে যাবে? রজতের তো আসার টাইম হয়ে গেলো।"

- "যাবো যাবো। তাড়া কিসের আছে। কেন আপনি যাবেন?"

-- "আমি?"

- "হ্যাঁ। আপনি।"

-- "তুমি যদি আগে যাও, তাহলে আমি বরং পরে......"

- "আমার যাবার এখন তাড়া নেই। চুপ করে বসুন তাহলে। দুজনে একসাথে মিলে একটু গল্প করি।"

চায়ের কাপটা দ্বিতীয়বার মুখে দেবার সময় রজতের দাঁতে একটু ঠুকে গেলো কাপের মাথাটা। সিরিজা ওর দিকে এক নয়নে তাকিয়ে বললো, "আপনি একটু আগে কেমন ছিলেন আর এখন কেমন হয়ে গেছেন।"

-- "কেন? আমি তো ঠিকই আছি।"

- "ঠিক আছি বললে হবে? আপনার তো হাত কাঁপছে।"

-- "কই কোথায়?"

সিরিজা দিবাকরের চায়ের কাপ শুদ্ধু হাতটা ধরে বললো, "কাপটা টেবিলে নামান। নামান না বলছি।"

দিবাকর সঙ্গে সঙ্গে নামালো।

- "হ্যাঁ, এবার আমার দিকে তাকান"

দিবাকর সিরিজার কথামতন তাকালো।

- "হ্যাঁ, এবার আমার দিকে চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।"

দিবাকর সিরিজাকে বোঝাতে চাইছিলো ও সহজই আছে। সিরিজার চোখের দিকে চোখ রেখেই বললো, "হ্যাঁ, বলো কি বলছো?"

- "আমি একটা কথা বলতে চাই দিবাকরদা।"

-- "কি বলো?"

- "খুব মন থেকে বলছি। এর আবার অন্য কোনো মানে ধরে নেবেন না।"

-- "ঠিক আছে বল। আমি শুনছি।"

চায়ের কাপটা আবার মুখে ধরে সিরিজার কথাগুলো শুনতে লাগলো দিবাকর। সিরিজা বললো, "আপনি যে মেয়েটির কথা বলছিলেন না তখন?"

-- "কোন মেয়ে?"

- "ঐ যে তখন বলছিলেন। একজন এসেছিলো....."

-- "কে?"

- "নামটা তো আপনিই জানেন।"

দিবাকর মনে মনে বললো, "রেশমী?"

মুখে স্বাভাবিকভাবে বললো, "হ্যাঁ হ্যাঁ কি হয়েছে বলো?"

- "সেকী আমার থেকে সুন্দর?"

সিরিজার থেকে সুন্দর আর কিছু আছে নাকি? দিবাকর জবাবে বললো, "তোমার সাথে কারুর তুলনা হয়?"

- "আমার মন রাখার জন্য বলছেন?"

-- "না না সিরিজা, তুমি সতিই সুন্দর। আমি সত্যি বলছি। তোমাকে দেখলে যে কেউ....."

দিবাকর দেখলো সিরিজা ওর দিকে তাকিয়ে ওর প্রশংসা শুনছে। নিজেকে সতর্ক করে ও রেশমীকেও খাটো করলো না। বললো, "তবে রেশমীও খুব সুন্দরী ছিলো।"

- "ওকে আবার ফিরিয়ে আনা যায় না?"

যেন অসম্ভবকে সম্ভব করার কথা বলছে সিরিজা। তবুও সিরিজার কথায় কেমন যেন নেতিয়ে থাকা দিবাকর এবার একটু চনমনে হয়ে উঠলো।

কার জন্য ফিরিয়ে আনতে বলছে সিরিজা? দিবাকর কিছু বলার আগেই সিরিজা এবার যেন এক অন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বসলো। ও দিবাকরকে বললো, "রজতের জন্য আবার ওকে ফিরিয়ে আনা যায় না?"

দিবাকর অবাক হয়ে বললো, "রজতের জন্য?"

- "হ্যাঁ ওর জন্য।"

-- "তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে। রজত তোমাকে ছেড়ে রেশমির কাছে যাবে? ও মরে যাবে, তবু যাবে না।"

- "ধরুন যদি যায়?"

দিবাকর আবার ভাবলো সিরিজা হেঁয়ালি শুরু করেছে। ওকে আরেক প্রস্থ অবাক করে সিরিজা বললো, "আমি কিন্তু আগেই বলেছি, যা বলেছি মন থেকে বলছি।"

-- "তুমি যা বলছো, সেটা একেবারেই অসম্ভব। আর তাছাড়া রেশমি এখন কোথায় রয়েছে তাই তো জানি না। ওর মোবাইল নম্বরও তো পাল্টে গেছে।"

- "বাড়ী চেনেন না?"

-- "বাড়ী? চিনতাম। আমিই ওর বাড়ী একবার গেছি একবার। কিন্তু ও ওখানে এখন থাকে না। বাসা পাল্টে ফেলেছে।"

- "দেখুন না তবু একবার চেষ্টা করে।"

চায়ের কাপটা মুখে নিয়ে পুরো শেষ করতে পারছিলো না দিবাকর। সিরিজা একি কথা বলছে? ও নিজের কথা একেবারেও চিন্তা করছে না। অবাক চোখে সিরিজাকে দেখছিলো দিবাকর। হতবাক হয়ে সিরিজাকে বললো, "কিন্তু তোমার কি হবে সিরিজা?"

- "আমার কথা ছাড়ুন। আমি যেখান থেকে এসেছি, সেখানেই চলে যাবো। আমার আবার কি?"

এই প্রথম সুযোগের সদব্যাবহারের ব্যাপারটা মাথায় একদম রাখলো না দিবাকর। নিজের কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে ওর সিরিজার প্রতি মায়াই হলো বেশী। সিরিজাকে স্বান্তনা দেবার জন্য নিজেই অপরাধী হয়ে গেলো। বললো, "এর জন্য যত দোষ আমার। সব আমার জন্যই হয়েছে। আমি এসব প্রসঙ্গ তু্লে রজতের থেকে তোমার মনটা বিষিয়ে দিয়েছি। এর জন্য আমি নিজেকে কিছুতেই ক্ষমা করতে পারবো না।"

বলেই ধ্যাত করে মুখটা নীচু করে ফেললো।

- "আপনি কোনো অন্যায় করেননি দিবাকরদা। আপনি ঠিক কাজই করেছেন। আমার প্রতি আপনার একটা দূর্বলতা তৈরী হয়েছিলো বলেই আপনি রাগে আমাকে পুরোনো কথা সব ফাঁস করে দিয়েছেন। এই দূর্বলতা তৈরী না হলে আপনি হয়তো বলতেনই না। এসব আমি জানতেও পারতাম না। কিন্তু এখন এটাও জানি রজতের জন্য আপনি স্বার্থত্যাগ করতেও রাজী আছেন। বলুন আমি ঠিক বলছি কিনা? আপনি চান না ওর আর আমার সম্পর্কটা সত্যিই ভেঙে যাক।"

দিবাকর অবাক হয়ে শুনছে ওর কথা।

সিরিজা শেষবারের মতন বললো, "রেশমি কে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করুন। তাহলে ঐ মেয়েটাও খুশী হবে।"

-- "কিন্তু সেটা তো খুবই শক্ত ব্যাপার।"

- "কিচ্ছু শক্ত না। আমি বলছি সব সোজা।"

বলেই শোবার ঘরে উঠে চলে গেলো সিরিজা।

দিবাকর তখনো বুঝে উঠতে পারছে না কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আফসোসে ওর মনটাও কি রকম অন্যরকম হয়ে গেছে। বারবার বলছে, "এ আমি কি করলাম? এভাবে সিরিজাকে পেতে চাইলাম আমি? এ যেন আমার নিজের প্রতিই ঘেন্না হচ্ছে। এমন বোকার মতন কাজটা আমি কেন করলাম?"

চুপচাপ এরপর থ মেরে বসেছিলো দিবাকর। সিরিজা শোবার ঘরে সেই যে ঢুকেছে আর বেরোচ্ছে না ঘর থেকে। ওর আবার কি হলো কে জানে? শেষবারের মতন সিরিজাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজী করতেই হবে। দরকার হলে রেশমীকে খোঁজার জন্য জান লাগিয়ে দেবে দিবাকর। কিন্তু সেটা নিতান্তই যদি দরকার হয়, শুধু মাত্র নিজের জন্য। রজতের জন্য যেন কিছুতেই নয়। সিরিজা আর রজতের সম্পর্কে ও কিছুতেই ভাঙন ধরাতে দেবে না।

মরীয়া চেষ্টায় দিবাকর শেষবারের মতন উদ্যোগী হয়ে পা বাড়ালো শোবার ঘরের দিকে। দেখলো সিরিজা বিছানার উপরই বসে আছে। কিন্তু মুখটা অন্য দিকে ঘোরানো। দিবাকর ঘরে ঢুকতেই সিরিজা মুখ ঘুরিয়ে ওর দিকেই তাকালো। তাকানোর মধ্যে একটা দূংখ ছিলো। মনমরা ভাবও ছিলো। ক্ষোভটা ফেটে উঠছিলো ওর চোখে মুখে।

ওর চোখের দিকে তাকাতে পারছি না দিবাকর। কিছু বলতে গিয়ে ওর জিভে যেন কথা আটকে গেলো। শুধু একবারই অতি কষ্ট করে সিরিজাকে বলার চেষ্টা করলো, "সিরিজা..... আমি বলছিলাম....."

সিরিজা মুখটা নীচু করে নিয়েছে। দিবাকর চেষ্টা করছে ওর থুতনীতে হাত দিয়ে মুখটা তুলে দৃষ্টিটা ওর দিকেই ফেরানোর।

-- "আমি বলছিলাম কি..... শোনোনা একবার আমার কথা....."

সিরিজার মনটাকে ঠিক করার জন্য এবার ও সিরিজার পাশেই বসে পড়লো। বিছানাতে সিরিজার পাশে। থুতনীতে হাত রাখার পরও সিরিজা মুখ তুলছিল না। খুব নরম স্বরে দিবাকর ওকে বললো, "তোমার কষ্টটা আমি বুঝি। আর নিজেকে কষ্ট দিও না সিরিজা। আমি একবার যে ভুল করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত আমাকেই করতে দাও। তুমি এরকম কোরো না সিরিজা। আমি রজতের কাছে তাহলে খুব পাপী হয়ে যাবো।"

সিরিজাকে এবার একটু হাত ধরে ওর মন ফেরানোর চেষ্টা করলো দিবাকর। সিরিজার মাথাটা ওর হাতের টানে দিবাকরের বুকের ওপর চলে এলো। মাথা নীচু করে ওকে দেখে মনে হবে যেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। কিন্তু ও বড় শক্ত মেয়ে। ওর চোখে জল নেই। দিবাকর তবু ভাবলো ওর বুকে মাথা রেখে সান্তনার আশ্রয় খুঁজছে সিরিজা। ও সিরিজার পিঠটা হাত দিয়ে ধরতে গিয়েও থমকে গেলো। মুখে শুধু বললো, "আমি আছি তো। তুমি চিন্তা করছো কেন? দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। ভুলটা তো আমার সিরিজা। একবার যে ভুল করেছি, দ্বিতীয়বার আর সে ভুল আমি করবো না।"

মাথাটা তখন দিবাকরের বুকের ওপর থেকে তুলে মুখটা ওপরের দিকে করেছে সিরিজা। একেবারে দিবাকরের মুখের থেকে এক ইঞ্চি দূরত্বে। দিবাকর ওকে দেখছে। সিরিজাও ওকে দেখছে। দিবাকর দেখছে একভাবে সিরিজা দেখছে আর এক ভাবে। দুজনের দেখার মধ্যে কোনো মিল নেই। সিরিজা যেন দিবাকরের থেকে সান্তনার চেয়েও বড় কিছু পেতে চাইছে। ওর তখন দিবাকরকে আপনি করে সন্মোধনের রকমটাই পাল্টে ফেলে কেমন তুমি তুমি তে চলে এসেছে!

- "কি বলছো দিবাকরদা? এরপরেও আবার দ্বিতীয় ভুল?"

-- "মানে?"

- "মানে তু্মি কি কিছুই বোঝ না? অন্তত আমার জন্য একবার বোঝার চেষ্টা কর।"

দিবাকর তখনো বুঝতে পারছে না মানে। সিরিজা আচম্বিতে ওর ঠোঁট ছুঁয়ে ফেলেছে ঠোঁট দিয়ে। চুমু দিয়ে রাঙিয়ে দিতে শুরু করেছে দিবাকরের ঠোঁটটাকে। দিবাকর ঠোঁট ছাড়াতে চেষ্টা করেও পারছে না। একি হচ্ছে? সিরিজা ওকে এমন আবদ্ধ করে ফেলেছে কেন? কি করবে তাহলে রজত এখন? শেষ পর্যন্ত রেশমিকে যদি না পাওয়া যায় তাহলে? তাহলে তো সিরিজাও নয় রেশমিও নয়। এখন কি করবে দিবাকর? সিরিজা পাগলের মতন ওর ঠোঁট দুটো কামড়ে ধরে চুষতে আরম্ভ করেছে।

দিবাকর কাতর হয়ে সিরিজাকে অনুরোধ করছে, "সিরিজা এমন কোরো না। রজত আমাকে ভুল বুঝবে।"

কিন্তু সিরিজা ওর কথা শুনছে না। এদিকে সদর দরজাতেও বেল বাজতে শুরু করে দিয়েছে। রজত এসে গেছে। মনে হয় বাইরে থেকে ডাকছে। সিরিজা তবুও দিবাকরের ঠোঁট ছাড়ছে না।

কোনরকমে ধাক্কা দিয়ে দিবাকর চেষ্টা করলো সিরিজাকে ওর থেকে দূরে সরিয়ে দেবার। ওর তখন থরথর করে কাঁপছে সারা গা টা। সিরিজার ঠোঁট থেকে নিজের ঠোঁটটাকে মুক্ত করে নিয়েছে ও। রাগ উঠে গেছে চরমে। এর আগে এমন ভাবে দিবাকরকে রাগতে সিরিজা কখনও দেখেনি।

বিছানার ওপর নিজের ঠোঁট দুটোকে হাত দিয়ে মুছতে মুছতে সিরিজা তবু ওকে দেখছিল। দিবাকর ক্ষেপে গেছে মারাত্মক ভাবে। রাগতে রাগতে ও সিরিজাকে দুষতে লাগলো সাংঘাতিক ভাবে।

-- "কি ভেবেছ তুমি? ভেবেছ বারবার আমাকে চুমু খেয়ে অবশ করে দেবে? শোনো সিরিজা, এইভাবে চুমু দিয়ে তুমি আমাকে টলাতে পারবে না। আমাকে দূর্বল করার চেষ্টা কোরো না। আমি সব ফাঁস করে দেব রজতের কাছে। বলে দেব তুমি কি করতে চেয়েছ আমার সাথে। আমি নিজে খারাপ হব তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু রজতের কাছ থেকেও তুমি পার পাবে না। ও ছাড়বে না তোমাকে। ব্যাচারী এত ভালোবেসেছে তোমাকে। তাকে কেন ঠকাতে চাইছো? তোমার কি একটুও মায়ামমতা হচ্ছে না ওর প্রতি। এসব কি শুরু করেছো তুমি?"

কলিংবেলটা আবার আরেকবার বেজে উঠলো বেশ জোরে। সিরিজা ভ্রুক্ষেপ করছে না। দিবাকরও ওকে ভালো করে কথা না শুনিয়ে ঘর ছেড়ে যেতে পারছে না। ওর রাগ তখনও ফেটে পড়ছিল শরীর থেকে। সিরিজাকে রীতিমতন ভৎর্সনা করতে ছাড়ছে না ও।

-- "জেনে রাখ, তোমার এই চুমু কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না আমার মনে। আমি যা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাতেই অনড় থাকব। তোমার যদি রজতকে পছন্দ না হয় তাহলে তাকে নিয়ে তুমি কি করবে না করবে সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু আমাকে অযথা টানাটানি কোরো না। এসবের মধ্যে আমি নিজেকে কোনোদিন জড়াব না। আমার শেষকথা তোমাকে বলে দিলাম সিরিজা। যা করেছো এর পুনরাবৃত্তি যেন কোনোদিন আর না হয়।"

বেলটা আবার যেই বেজে উঠলো দিবাকর চেঁচিয়ে বললো, "আসছি আসছি রজত। একটু ওয়েট কর।"

রজতকে দরজা খুলেই বলবে - "আমি বাথরুমে ছিলাম। আর সিরিজা বোধহয় শোবার ঘরে রয়েছে। তাই দরজা খুলতে দেরী হয়ে গেল।"

নিজের ঠোঁটের ওপর আঙুল তুলে সিরিজাকে সাবধান করে দিয়ে বললো, "আমি দরজা খুলতে যাচ্ছি। রজত এসেছে। তুমি স্বাভাবিক হয়ে নাও। ও যেন কিছু বুঝতে না পারে।"


দ্বিতীয় অধ্যায় সমাপ্ত
 

Users who are viewing this thread

Back
Top