What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সত্তা (4 Viewers)

দেড় ঘন্টার মধ্যে ওদের বঁড়শিতে তিনটে মাছ ধরা পড়ে, দুটি সরপুঁটি আর একটি ছোট কালবাউস।
"আজকের জন্য এটুকুই যথেষ্ট।" কবির বলে।
"কি সুন্দর টলটলে পানি। ইচ্ছে করছে ঝাঁপিয়ে পড়তে। বেশ গরম পড়েছে।" স্নিগ্ধা বলে।
"ঝাঁপিয়ে পড় না। তবে বেশি গভীরে যাস না।" কবির বলে।
"তুই নামবি না?" স্নিগ্ধা বলে।
"আমি মাছগুলো রেখে আসি। এখানে বানরের খুব উত্পাত, চুরি করে নিতে পারে।"
"ঠিক আছে, তাড়াতাড়ি ফিরে আয়।" বলে স্নিগ্ধা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরাতে থাকে।
কবির মাছের পাত্রটি নিয়ে ঘরে ফিরে যায়, মাছের পাত্রটি রেখে লেকে ফিরে আসে। কিন্তু সেখানে কেউ নেই, কবির ভীষণ চিন্তিত হয়ে পড়ে। পুরো লেক জুড়ে চোখ বুলিয়ে নেয়, কিন্তু কোথাও কেউ নেই। কবির ব্যাকুল কন্ঠে স্নিগ্ধা বলে ডাক দেয়। কিন্তু কোন সাড়া পায় না। "স্নিগ্ধা তো সাঁতার জানতো, কিন্তু জলজ লতা পেঁচিয়ে ডুবে গেলো না তো" মনে মনে আঁতকে ওঠে কবির, পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে দ্রুত সাঁতরাতে থাকে। ঠিক তখন লেকের কিনারার দিক থেকে খিলখিল হাসির শব্দ ভেসে আসে। কবির পেছনে ফিরে স্নিগ্ধাকে দেখতে পায়, হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা। ওর দেহে যেন প্রাণ ফিরে আসে, ও কিনারার দিকে সাঁতরে ফেরে।
"কোথায় গিয়েছিলি? কতোবার ডাকলাম সাড়া দিলি না কেন?" রাগত স্বরে বলে কবির।
"ঐ ঝোপটার আড়ালে, দেখছিলাম তুই কি করিস।" হাসি থামিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
"এটা মজার ব্যাপার হল? জানিস আমার কতো টেনশন হচ্ছিল?"
"তা তো তোকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু আমি তো শুধু মজা করার জন্য ঐ ঝোপের আড়ালে যাইনি।" স্নিগ্ধা বলে।
"ও, বুঝতে পেরেছি। আই'ম সরি।" কবির বলে।
"যাহ, সরি বলতে হবে না। চল পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ি।" বলে স্নিগ্ধা লেকে নেমে পড়ে। কবিরও নেমে পড়ে লেকে। তবে ওরা বেশিক্ষন পানিতে থাকেনা। কারণ খুব খিদে পেয়েছে ওদের। ভেজা শরীর নিয়ে ওরা ঘরে ফিরে আসে। এখানে আসার সময় কবির চাল, ডাল, আলু ও মসলা কিনেছিল। ওরা দুজন মিলে ভাত ও আলু দিয়ে মাছের ঝোল রেঁধে এবং তা দিয়েই দুপুরের খাবার সেরে নেয়। বিকেল বেলা ওরা ঘুরতে বের হয়। আশেপাশের সবুজ বনবনানী, পাহাড়, পাহাড়ি ঝরনা, পাহাড়ি লেক, সবকিছুই স্নিগ্ধাকে মুগ্ধ করে। সন্ধ্যা পড়তেই ওরা ওদের ঘরে ফিরে আসে। এতোক্ষন পাহাড়ি পথে ঘোরাঘুরিতে ওদের ভীষন খিদে পেয়ে যায়। দুপুরে রান্না করা ভাত তরকারি দিয়ে ওরা রাতের খাবার সেরে নেয় । রাতের খাবারের পর ওরা ঘরের বাইরে উঠোনে শীতল পাটি পেতে ওরা বসে পড়ে।

আকাশের মাঝামাঝিতে একফালি চাঁদ, বাকিটা জুড়ে অজস্র তারা। জোসনায় চারিদিক কেমন মোহময় হয়ে আছে, সামনের জলাশয়টি জোছনা চিকচিক করছে। ওরা দুজন মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারিদিক দেখছিল।

"কি সুন্দর। এত্ত সুন্দর দৃশ্য আমি কখনো দেখিনি।" মুগ্ধ কন্ঠে বলে স্নিগ্ধা।
"আমিও দেখিনি।" কবির বলে।
"তুই না এই যায়গায় আগেও এসেছিস?" স্নিগ্ধা বলে।
"তখন তো পাশে তুই ছিলি না, তাই হয়তো এতো সুন্দর মনে হয়নি।" কবির বলে।
"ভালই তো ফ্লার্ট শিখেছিস, প্রেম টেম করেছিস নাকি।" দুষ্টুমি ভরা কন্ঠে বলে স্নিগ্ধা।
"তোর প্রেমে তো সেই কবেই পড়ে গেছি। আর ফ্লার্ট করছি না একেবারেই, আজকের দিনটি আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিন!" কবির বলে।
"যাহ, আর ফ্লার্ট করতে হবে না। আচ্ছা তুই তো বললি না কোথায় কোথায় গিয়েছিলি?" স্নিগ্ধা বলে।
"গিয়েছিলাম তো অনেক যায়গায়, কোনটা থেকে কোনটা বলি!" কবির বলে।
"একেবারে শুরু থেকে বল, কেন এভাবে হঠাত হারিয়ে গেলি।"
"আমি ভেবেছিলাম তোকে ভুলে গিয়ে নতুনভাবে জীবন শুরু করব। প্রায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেন যেন সব ওলটপালট হয়ে গেল। রাতে ঘুম হারিয়ে ফেলেছিলাম, সবকিছুই অর্থহীন মনে হচ্ছিল। সারাটি সময় বুকের মাঝে চাপা বেদনা বয়ে বেড়াতাম। আমি পারছিলাম না, কখনো মনে হতো আত্মহত্যা করে ফেলি। যেদিন তোর বিয়ে হল সেদিন সন্ধ্যায় কি যেন হল, ইচ্ছে করছিল সবকিছু ছেড়ে দুরে কোথাও ছুটে পালিয়ে যাই। আমি তা-ই করলাম, মেস ছেড়ে বেরিয়ে গেলাম, ফুটপাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে কখন কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে গেছি বুঝতে পারিনি। সেখানে একটি সিলেটের ট্রেনে উঠে পড়ি, যদিও জানতাম না তখন ওটা কোথাকার ট্রেন। সেখানে গিয়ে আমার মানসিক অবস্থার কোন পরিবর্তন হল। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম। পকেটে কোন টাকা ছিল না আমার। তৃতীয় দিনের রাতের কথা, রাস্তার পাশে এক বেঞ্চে শুয়েছিলাম আমি, হঠাত বৃষ্টি শুরু হল। ওখান থেকে উঠে কোন ছাউনিতে আশ্রয় নিব যে সেই শক্তি আমার ছিল না, তিনটে দিন কাটিয়েছি শুধু পানি খেয়ে। আকাশ থেকে বরফ শীতল পানি পড়ছিল, তার মাঝে আমি নির্বিকার চিত্তে শুয়ে আছি। মনে হচ্ছিল আমি মরে যাচ্ছি, ওটা বুঝি আমার শেষ দিন। কখন জ্ঞান হারিয়েছি মনে নেই। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি এক হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। মুখে অক্সিজেন মাস্ক আর হাতে স্যালাইন। বেডের পাশে চেয়ারে মিষ্টি এক কিশোরী মেয়ে বসে আছে, আমাকে জেগে উঠতে দেখে কাউকে ফোন করে সে। কয়েক মিনিট পর একজন ডাক্তার ও সাথে একজন মধ্যবয়স্ক লোক প্রবেশ করে।

"তারপর কি হলো?" স্নিগ্ধা জিজ্ঞাসা করে।
কবির আবারও বলতে শুরু করে।
"ভদ্রলোকটির নাম মনিরুজ্জামান। তার মেয়ে ঐশিকে নিয়ে সকালবেলা স্কুলে যাওয়ার সময় আমাকে বৃষ্টির ভেতর বেঞ্চে শুয়ে থাকতে দেখেন। তিনি আমাকে কাছাকাছি একটি হসপিটালে ভর্তি করেন। আমার অবস্থা খুব খারাপ ছিল। মুখে অক্সিজেন মাস্ক থাকার পরও নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, বুকে খুব ব্যাথা করছিল। নিওমোনিয়া হয়েছিল আমার। প্রাণের আশংকা কাটতে একদিন লেগে যায়, সাতদিন পর আমাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দেয়। মনির চাচা আমাকে ওনার বাড়িতে আশ্রয় দেন। ওনাকে আমি চাচা বলেই ডাকতাম। ওনার একটি হোমিওপ্যাথির দোকান ছিল আর একটি মার্শাল আর্টের স্কুল। উনি ক্যারাটে শেখাতেন, হোমিওপ্যাথির প্র্যাক্টিস করতেন আবার কয়েকটা ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ফিজিওথেরাপিস্ট হিসাবে কাজও করতেন। উনি ডাক্তারী পড়তে চীনে গিয়েছিলেন, সেখানে মডার্ন চিকিৎসার চেয়ে বরং চাইনিস ট্রেডিশনাল চিকিৎসাতেই বেশি আগ্রহী ছিলেন। চাইনিস ট্রেডিশনাল চিকিতসা শেখার পাশাপাশি উনি ক্যারাটে শিখেছিলেন। দেশে ফিরে হোমিওপ্যাথি আর মেডিটেশনের উপরও কিছু কোর্স করেছেন। সে যাই হোক, মনির চাচাকে আমি নিজের সম্পর্কে সবকিছু খুলে বলেছিলাম। উনি সবকিছু শুনে আমার কাছে আংকেলের নাম্বার চেয়েছিল। আমি দিতে চাইনি, উনি আর চাপাচাপিও করেন নি এ ব্যাপারে। আমি উনার বাড়িতে ছয় মাস ছিলাম। মনির চাচার স্ত্রীর সাথে ডিভোর্স হয়ে গেছে দশ বছর আগে। উনার স্ত্রী ও বড় ছেলে চীনে থাকে।"
"তার মানে তিনি বিদেশী মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন? কিন্তু ডিভোর্স হল কেন?" স্নিগ্ধা জিজ্ঞাসা করে।
"সে গল্প আমি অন্য কোনদিন করব। এখন শোন-
"সেই বাড়িতে তিনজন মানুষ ছিল, মনির চাচা, ঐশি আর জোহরা খালা। জোহরা খালা মনির চাচার দুর সম্পর্কের আত্মীয়, রান্নাবান্না আর ঐশির দেখাশোনা করতো। আমি মনির চাচার হোমিওর দোকানে কম্পাউন্ডের কাজ করতাম, মার্শাল আর্টের স্কুলের হিসাব নিকাশ সামলাতাম। আর পাশাপাশি ঐশিকে পড়াতাম। খুব পাজি একটা মেয়ে, ঠিক তোর মতো। আমি ওকে পড়ানোর জন্য ঘরে এলে ও লুকিয়ে পড়তো। তারপর হঠাত করে বেরিয়ে ঘুসি অথবা লাথি বসিয়ে দিত। আমি কাতরাতে থাকলে ও খিলখিল করে হাসতে থাকতো। ওর বাবার শেখানো সবগুলো মুভ আমার উপর খাটাতো, যেন আমি ওর পাঞ্চিং ব্যাগ। এর জন্য অবশ্য ও ওর আব্বুর বকা খেয়েছিল অনেকবার। তবে তোর মতো মেধাবী ছিলনা, ওর পিছে আমার অনেক খাটতে হয়েছে। ছয়টা মাস আমার বেশ ভালই কেটে যায়, এর মাঝে মনির চাচা আমাকে কারাতের বেশ কিছু টেকনিক শিখিয়ে দেন।"
"তুই মার্শাল আর্ট শিখেছিস? তাই তো বলি অমন এক দামড়া লোকটার হাত কিভাবে অমন মড়াৎ করে ভেঙে দিলি!" স্নিগ্ধা বলে।
"ওটাকে বলে বুদ্ধাস পাম হ্যান্ডব্রেকার। যাই হোক, ছয়টা মাস বেশ ভালই কেটে গেল। এর মাঝে ঐশির এসএসসি পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। একদিন হঠাত ঐশি আমাকে লাভ লেটার দিয়ে বসে, একটি গল্পের বইয়ের পৃষ্ঠার ভাঁজে চিঠি গুঁজে রেখে বইটা আমাকে দিয়েছিল। সেদিন সারা রাত আমার ঘুম আসেনি, শুয়ে শুয়ে ভেবেছি কি করব। পরের দিন ব্যাগপত্র গুছিয়ে আমি রওনা দিয়ে দেই, চাচাকে বলেছিলাম বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।"
"যাহ তুই খুব নিষ্ঠুর, সবাইকে কষ্ট দিয়ে পালিয়ে যাস।" স্নিগ্ধা বলে।
"পালিয়ে না যেয়ে কি করতাম? ওকে বিয়ে করে সংসার করতাম?" কবির বলে।
"তাই করতি?" স্নিগ্ধা বলে।
"আমি কি তোর মতো? যে ভালবাসব একজনকে আর বিয়ে করব অন্য কাউকে?"
"যাহ, আমি কি তোকে ভালবাসি নাকি?" দুষ্টমি ভরা কন্ঠে বলে স্নিগ্ধা।
"তুইই না বললি সেদিন?" কবির বলে।
"সে তো তোকে সান্তনা দিতে বলেছিলাম।"
"তাহলে আমার সাথে এই বনে এসেছিস, সেটাও কি আমাকে সান্তনা দিতে?" অভিমানী কন্ঠে বলে কবির। তারপর ওপাশ ফিরে শোয়।
"যাহ, আমি একটু মজা করছিলাম। তোকে আমি ভীষণ ভালবাসি। যখন শুনেছিলাম যে তোকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আমার বুকের ভেতর হৃদয়টা এমন দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছিল তোকে আমি বোঝাতে পারব না।" স্নিগ্ধা ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে নেয়।
"আমি জানি।" ওর কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলে কবির।
স্নিগ্ধা ওর ঠোঁট দুটো বাড়িয়ে দেয়, কবিরের সে ইশারা বুঝতে একটুও সময় লাগেনা। মুহুর্তের মাঝে দুজনার ঠোঁটগুলো যেন এক হয়ে যায়, নিরন্তর চুষতে থাকে একে অন্যের ঠোঁট।
"কখনো সেক্স করেছিস?" ঘন নিঃশ্বাস ফেলতে ফেলতে বলে স্নিগ্ধা।
"না।" বলতে গিয়ে উত্তেজনায় গলা কেঁপে ওঠে কবিরের।
কবির স্নিগ্ধাকে বাহুডোরে বেঁধে ফেলে, ওর মুখভরে চুমু দিতে থাকে পাগলের মতো।
"এই ছাড় আমাকে, ছাড় বলছি মমম..." স্নিগ্ধার কথা শেষ হতে না দিয়েই ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে পাগলের মতো চুষতে থাকে যেন মুখের সব নির্যাস শুষে নিতে থাকে।
"তুইও কি আমাকে রেপ করবি?" জোরে নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে বলে স্নিগ্ধা।
স্নিগ্ধার কথাটা কবিরের বুকে তীরের ফলার মতো বিঁধে যায়। ও স্নিগ্ধাকে ছেড়ে দেয় তারপর অন্যদিক হয়ে শোয়।
"বুকে জড়িয়ে নিয়ে চুমু দিচ্ছিস, জিজ্ঞাসা করছিস সেক্স করেছি কিনা, আর তোকে একটু আদর করতে গেলেই আমি ধর্ষক? আমাকে কি পেয়েছিস? তোর শোকেসে সাজিয়ে রাখা পুতুল?" কবিরের কন্ঠে অভিমান ঝরে পড়ে।
"পুতুলই তো। তুই আমার সবচেয়ে প্রিয় টেডিবেয়ার।" বলতে বলতে পেছন থেকে কবিরকে জড়িয়ে নেয় স্নিগ্ধা।
"তোর সাথে এমন খেলা কত্তো খেলেছি আগে। কাঁধে চড়ার নামে ইচ্ছা করে তোর পিঠে বুক ঘষে দিতাম, কখনো তো জামার নিচে ব্রা ছাড়াই তোর সাথে সাঁতারে নেমে যেতাম। তুই আড়চোখে আমার বুকের দিকে তাকিয়ে থাকতি আর পানির ভেতরেও তোর প্যান্ট তাঁবু হয়ে যেত। আমি অনিচ্ছার ভান করে তোর নুনু পা দিয়ে ছুঁয়ে দিতাম। তখন তো তুই এমন করিসনি। কতোদিন সেই খেলা খেলিনা, আজ যদি একটু আধটু সেই খেলা খেলি তাতে দোষ হবে?"
"তবে রে শয়তান মেয়ে! তুই ওসব ইচ্ছা করেই করতি? আমি ভাবতাম...." স্নিগ্ধার দিকে পাশ ফিরে বলে কবির।
"তুই আমাকে যতোটা ইনোসেন্ট ভাবতি, আম ততোটা ছিলাম না রে।" বলে খপ করে কবিরের লিঙ্গটা ধরে ফেলে স্নিগ্ধা। "তোর তো দেখি এখনো তাঁবু হয়ে আছে।" বলে খিলখিল করে হাসতে থাকে স্নিগ্ধা।
"তুই খুব নিষ্ঠুর রে স্নিগ্ধা, খুব নিষ্ঠুর।" বলে আবারো অন্যপাশ হয়ে শোয় কবির।
 
"আহারে! আমার বাবুটার খুব রাগ হয়েছে, সেক্স করতে দেইনি বলে।" বলে পেছন থেকে আবারও কবিরকে জড়িয়ে নেয় স্নিগ্ধা।
"সেক্স করতে না পেরে মরে যাচ্ছিনা আমি, লাগবে না আমার। সারা জীবন তোর টেডিবিয়ার হয়েই থাকব, যখন যেমন খুশি খেলিস আমাকে নিয়ে।" আবারও অভিমান জড়ানো কন্ঠে বলে কবির।
"কিন্তু আমি যে মরে যাচ্ছি তোর সাথে সেক্স করতে না পেরে। খুব ইচ্ছা করছে তোর আদর পেতে, কিন্তু বিয়ে না করে সেক্স যে পাপ। চল না আমরা বিয়ে করে ফেলি।" কবিরের নগ্ন পিঠে ঠোঁট ঘষতে ঘষতে বলে স্নিগ্ধা।
"তোর স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়ে আমাদের বিয়ে হবেনা।" কবির বলে।
"ঐ পশুটাকে তো কবেই ডিভোর্স দিয়ে দিয়েছি মন থেকে।"
"পাশের গ্রামে একটি কাজি অফিস আছে, চল কাল গিয়ে বিয়ে করে নেই।" কবির বলে।
"কাল নয়, আজই এই মুহুর্তেই আমরা বিয়ে করব, শুধু চারজন সাক্ষী দরকার।" স্নিগ্ধা বলে।
"এখানে চারজন সাক্ষি পাব কিভাবে?" কবির জিজ্ঞাসা করে।
"ঐ যে চাঁদ।" আকাশের মাঝামাঝিতে এক ফালি চাঁদের দিকে দেখিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
"ঐ যে শুকতারা। আর দুটো সাক্ষী দরকার" আবারও বলে স্নিগ্ধা।
"ঐ যে ধ্রুবতারা আর ঐ যে সপ্তর্ষিমন্ডল" এবার কবির বলে।
"এই তো হয়ে গেল চারজন সাক্ষী। এবার দেনমোহর নির্ধারণ। বল দেখি তুই আমাকে কি দেনমোহর দিবি?"
"আমি তোকে এই বাড়িটা লিখে দেব, কিংবা এই পাহাড়টা, কিংবা ঐ লেকটা কিংবা আমি নিজেকেই লিখে দেব।"
"তুই তো আমারই। ঘর, পাহাড় কিংবা লেক কোনটাই আমি নেবোনা।"
"তাহলে তুই বল কি নিবি?"
"সেটা পরে বলব। এখন বিয়ে পড়ানো শুরু করা যাক।" স্নিগ্ধা বলে।
প্রথমে বিয়ে পড়ায় স্নিগ্ধা আর কবির কবুল বলে। এরপর কবির বিয়ে পড়ায় আর স্নিগ্ধা কবুল বলে।
"এই তো বিয়ে পড়ানো শেষ। এখন থেকে আমরা স্বামী স্ত্রী। এখন আমাদের বাসর হবে। যা এবার ঐ ঘরে যা, এক মিনিট পর আসবি" স্নিগ্ধা বলে।
কবির ওর কথা মতো ঘরটিতে যায়, তারপর এক মিনিট পর ফিরে আসে। ফিরে এসে দেখে স্নিগ্ধা ওর ওড়নাটা ঘোমটার মতো করে নিয়েছে। কবির ওর ঘোমটা সরায়। "আমার লজ্জাবতী বউয়ের মুখটা একটু দেখি।" বলে কবির স্নিগ্ধার থুতনিটা ধরে মুখটি তোলে। "অপরুপ!"
স্নিগ্ধা ফিক করে হেসে দেয়।
"হাসছিস কেন?" কবির জিজ্ঞাসা করে।
"এমন ভাব করছিস যেন আমাকে প্রথম দেখছিস। হাসব না তো কি করব?" হাসি থামিয়ে বলে স্নিগ্ধা।
"নে বিয়ে বিয়ে খেলা অনেক হয়েছে, এবার শুতে হবে অনেক রাত হয়েছে।" কবির বলে।
"যাহ আমরা কি খেলছি নাকি, সত্যি সত্যি তো বিয়ে করলাম। আজ আমাদের বাসর রাত।" বলে স্নিগ্ধা কবিরকে ঠেলে শুইয়ে দেয় তারপর নিজে ওর ওপর উঠে পড়ে। ওরা একে অপরের ঠোঁট নিরন্তর চুষতে থাকে।
"এবার আমার দেনমোহর চাইবার পালা।" স্নিগ্ধা বলে।
"কি চাস?"
"একটি মিষ্টি ফুটফুটে বেবি।"


সজল তার গাড়িটা ধানমন্ডির ল্যাব এইড হসপিটালের পার্কিং প্লেসে পার্ক করে লিফ্ট দিয়ে উপরে উঠে আসে। সজল কিছু দিন ধরে একটি জিনিস অনুভব করছে যে এই পৃথিবীতে কোন কিছুই খুব সহজে পাওয়া যায়না, যেকোন সাফল্যের একটি নির্দিষ্ট মুল্য থাকে সেই মুল্য কোন না কোনভাবে দিতেই হয়। নাহলে যখন সে তার সাফল্যের এতো নিকটে, স্বপ্নপুরনের দ্বারপ্রান্তে যখন ছিল তখন কি এভাবে এই বিপত্তি দেখা দেয়। সবকিছু তার প্ল্যান মোতাবেকই হচ্ছিল, স্নিগ্ধাকে ব্যাবহার করে সাইমনকে সে নিজের হাতের মুঠোয় এনে ফেলেছিল, সেখান থেকে হঠাত এ কেমন বিপত্তি। নিজের ভাগ্যকে খুব জোরসে একটা কিক দিতে ইচ্ছা করছে তার। সজল নিজেকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করে।
সাইমন আছে সিক্স ওয়ান সিক্স নাম্বার কেবিনে, সজল সেদিকে যেতে থাকে। সাইমনের কেবিনটার সামনে দাড়িয়ে নক করে একবার। সাথে সাথে দরজা খুলে যায়, একজন নার্স দরজা খুলে দেয়। ভেতরে সাইমন ছাড়াও আরো কেউ যে আছে, এবং সে যে তার প্রাক্তন বস বদিরুল আলম ভুঁইয়া তা অবশ্য সজল অনুমান করেছিল। সজল অবশ্য আজকাল সেসব কেয়ার করেনা, মুখে কাঠিন্য ভাব ধরে রেখে সজল ভেতরে ঢুকে পড়ে।
"সজল, তুই! কোথায় ছিলি? আমার ফোন ধরিস না কেন?" সজলকে ভেতরে ঢুকতে দেখে বলে সাইমন।
"তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে, আমি চাইনা তা তুই আর আমি ছাড়া আর কেউ তা শুনুক।" সজল বলে।
"মামা, একটু পরে এসো।" বদিরুলের উদ্দেশ্যে বলে সাইমন। "আর জুলি, তুমিও..." অল্পবয়সী নার্সটির উদ্দেশ্যে বলে এবার।
"আমার স্ত্রী কোথায়? তোকে বিশ্বাস করে তোর সাথে ওকে পাঠানোই ভুল হয়েছে আমার।" সজল বলে।
"তোর বউ সামান্য এক ওয়েটারের সাথে পালিয়েছে।" দাঁতে দাঁত চেপে হিসহিসিয়ে বলে সাইমন, এরপর যা ঘটে তার জন্য প্রস্তুত ছিল না সে।
হঠাত সজোরে চড় বসিয়ে দেয় সজল সাইমনের গালে, "আমার স্ত্রীর নামে একটাও বাজে কথা বলবি না।"
সাইমন অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
"কি আর করতে পারিস তুই? খুন করবি?" বলে বেডসাইড ড্রয়ার থেকে রিভালবারটি বের করে এনে সাইমনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে "নে। খুন করার তো কিছু বাকি রাখিস নি।"
"একদম নাটক করবিনা সজল। আমি সত্যি বলছি।" সাইমন বলে।
"তুই এর কথা বলছিস তো?" সজল তার হাতের ছবিটিকে দেখিয়ে বলে।
"এ স্নিগ্ধার বেস্ট ফ্রেন্ড। পাঁচ বছর আগে হঠাত হারিয়ে গিয়েছিল। ওরা যদি পালিয়ে গিয়ে থাকে তবে তার জন্য দায়ী তুই। তুই ভুল বুঝে এমন কিছু করেছিস যা ওদেরকে ভয় পাইয়ে দিয়েছে।"
"হুম। আমি বুঝতে পেরেছি, কিন্তু ঐ ছেলেটা আমার হাত ভেঙে দিয়েছে, আমি ওকে কিছুতেই ছাড়বনা।"
"পুরো একটা দিন হয়ে গেল আমার স্ত্রী কোথায় আছে কিভাবে আছে কিচ্ছু জানিনা। আমার বুকটা কিভাবে দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে জানিস?" সজল বলে।
"চিন্তা করিসনা। আমি তোর বৌকে খুঁজে বের করবই। তোর বউ মানে তো আমারও বউ। কিন্তু যদি ঐ ছেলেটাকে আর খুঁজে না পাওয়া যায় তোর কি কোন প্রবলেম আছে?" চোখ টিপে দিয়ে বলে সাইমন।
"মানে? কি করতে চাইছিস তুই?" সজল বলে।
ঠিক তখনই বুটের ঠক ঠক শব্দ পায় ওরা। সাইমন ইশারায় চুপ করতে বলে ওকে।
"কি খবর, সান, এখন কেমন ফিল করছো?" জিল্লুর রহমান বলেন।
"ভাল, ড্যাড। ও আমার ফ্রেন্ড সজল।" সাইমন বলে।
"নাইচ টু মিট ইউ ইয়াংম্যান। তোমার সম্পর্কে অবশ্য অনেক শুনেছি, ইন্টিলিজেন্ট, হার্ডওয়ার্কিং ইমপ্লয়ী।" বলে সজলের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় জিল্লুর রহমান।
"থ্যাংক ইউ স্যার।" বলে সজল মৃদু হ্যান্ডশেক করে।
"তবে তোমার বন্ধুর তোমার থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। দিন দিন ও আরো যেন দায়িত্বজ্ঞানহীন কিশোরে পরিণত হচ্ছে। কবে যে তোমার মতো দায়িত্ব নিতে শিখবে।" জিল্লুর রহমান বলে।
"ড্যাড, ইউ আর ইনসাল্টিং মি।" আপত্তি জানিয়ে বলে সাইমন।
"তোমাকে কতো দিন বলেছি বেশি ড্রিংক করবে না। না হলে কেউ এভাবে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে ফেলে!" বলে জিল্লুর রহমান কেবিন থেকে বের হয়ে যায় ।
জিল্লুর রহমানের বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পর সজলও বেরিয়ে আসে। পার্কিং জোনে যেতেই সজলের মোবাইলে রিং বেজে ওঠে। অচেনা নাম্বার, রিসিভ করতেই ভারী কন্ঠ শুনতে পায় "হ্যালো, সজল। আমি জিল্লুর রহমান, তোমার সাথে কথা বলতে চাই।"
"জি সার, বলুন।"
"এভাবে নয়। তোমার সামনে যে ব্ল্যাক এসইউভি আছে ওটাতে উঠে পড়ো।"
সজল এসইউভিটার সামনে যেতেই গেট খুলে যায়। ভেতরে জিল্লুর রহমানকে দেখতে পায় সজল। সজল গাড়িতে উঠতেই গাড়ীটা চলতে শুরু করে।
"আমি জানি আমার ছেলে আমার কাছে থেকে কিছু একটা লুকোচ্ছে। শুধু পড়ে গিয়ে এভাবে হাত ভাঙতে পারে না। আমার মনে তুমি আসল ঘটনা জানো, আমার থেকে একটুও লুকিয়ো না। লুকালে সেটা তোমার জন্য মঙ্গলজনক নাও হতে পারে।" জিল্লুর রহমান বলে।

কবিরের ঘুম ভেঙে যায় খুব ভোরে, কেবলই যখন ভোরের আলো ফুটেছে। রাতের পাগলামীর কথা মনে পড়তেই ওর মনটা আনন্দে ভরে ওঠে। ওর বাহুডোরে নগ্ন স্নিগ্ধা, ওকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে রেখেছে। এমন সুন্দর জাগরন ওর জীবনে আর আছে কিনা তা ও জানেনা, মন প্রাণ ভরে এই মুহুর্তটি অনুভব করতে চায় কবির। কবির স্নিগ্ধার দেহের নরমত্বকে অনুভব করতে করতে ওর মিষ্টি নিষ্পাপ মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর খুব ইচ্ছা করছিল ওর নগ্ন দেহটি ভোরের আলোয় ভাল করে দেখতে, কিন্তু যেভাবে আস্টেপিস্টে বাহুডোরে বেঁধে রেখেছে স্নিগ্ধা তাতে তা সম্ভব নয়। তখন ওর মনে পড়ে যায় যে আজ স্নিগ্ধার মা বাবার সাথে যোগাযোগ করার কথা ছিল, তার জন্য যতোটা সম্ভব দুরে যেতে হবে। কবিরের মনটা হঠাত করে খারাপ হয়ে যায়। ও জানে যে বাসায় যোগাযোগ করার ফলে ওদের লোকেশনটা খুব সহজেই জেনে যাবে ওরা, ওদের ধরা পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে অনেকগুন। কিন্তু কোন উপায়ও তো আর নেই। একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে কবির। স্নিগ্ধাকে জাগাতে হবে, যতো তাড়াতাড়ি রওনা দিবে ওরা ততোই ভাল। কবির স্নিগ্ধাকে জাগানোর চেষ্টা করে, স্নিগ্ধা একবার চোখ মেলে তাকায় তারপর ওকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নিয়ে আবার ঘুম। কবির তখন ওর গালে, কপালে চুমু দেয়। তারপর ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে চুষতে থাকে অনবরত, চুমুতে স্নিগ্ধার রেসপন্স পেয়ে বুঝে যায় যে ও জেগে গেছে আগেই। স্নিগ্ধা ওর হরিনী চোখ মেলে তাকায়, মিষ্টি করে হাসে ও।
"ওঠ, আজ আংকেল আন্টিদের ফোন করতে যেতে হব।" কবির বলে।
"ছি! শশুর শাশুড়িকে কেউ কি আংকেল আন্টি বলে নাকি? বাবা মা বলবি।" স্নিগ্ধা বলে।
"সে-ই হল। এখন ওঠ, সকাল সকাল রওনা দিতে হবে।"
"সে-ই হল না। আগে বল বাবা মা।"
"ওকে ওকে। মা বাবাকে ফোন করতে যেতে হবে। এবার হল তো?" কবির বলে।
"না হল না। তোর নুনুটা তো দাড়িয়ে গিয়ে আমার পেটে খোঁচা দিচ্ছে তার কি হবে?" বলে খপ করে কবিরের লিঙ্গটা ধরে ফেলে স্নিগ্ধা।
"ওটা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।" কবির বলে।
"কিন্তু আমার যে খুব ইচ্ছে করছে তোর একটু আদর পেতে। তোর ইচ্ছে করে না?"
 
"আমারও খুব ইচ্ছা করে সারাদিন তোকে আদর করতে, কিন্তু আরো কাজ তো আছে। দেরি হয়ে যাবে যে?" কবির বলে।
"আজ দেরি নাহয় হলই একটু।" বলে স্নিগ্ধা কবিরকে নিজের উপর টেনে নেয়, আবার উত্তপ্ত চুমু। একে অপরের ঠোঁটকে অনবরত চুষত থাকে ওরা, যেন কত জনমের তৃষ্ণা মিটিয়ে নিতে চায়। চুমু শেষে ওর গলায় ঠোঁট ঘষতে ঘষতে নিচে নেমে যায়, থেমে যায় ওর বুকে। কয়েক মিনিট ধরে মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে ওর বুকের শোভা।
"ইস! ওভাবে দেখিস কেন? লজ্জা লাগছে।" বলে দু' হাত দিয়ে বুক ঢাকার ব্যার্থ চেষ্টা করে। কবির ওর হাতগুলো সরিয়ে হামলে পড়ে ওর বুকে। একটি স্তনের গোলাপি বোঁটা বৃন্ত সহ যতটুকু পারা যায় মুখে নিয়ে চুষতে থাকে একটি হাত দিয়ে অন্য স্তনটি মালিশ করতে থাকে। স্নিগ্ধা আবেশে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। দুটো স্তন পালা করে চুষে কবির নিচে নেমে যায়, ওর পেটের হালকা মেয়েলী মেদে হালকা কামড় দিতে দিতে নিচে নামতে থাকে। নাভীতে এসে থেমে যায় কিছুক্ষনের জন্য, জীভ বুলাতে থাকে নাভীর কুপে। নাভীতে ওর জীভের স্পর্শ যেন পাগল করে দেয় স্নিগ্ধাকে, কবিরের মাথাটি চেপে ধরে নিজের পেটে। ইউনিভারসিটির লাইব্রেরিতে বসে পড়া সেক্স গাইডগুলোর বাস্তব প্রয়োগ করতে চায় কবির আজ। কবির ওর তলপেট বেয়ে নিচে নেমে যেতে চায়, কিন্তু স্নিগ্ধা ওর মাথা ঠেলে সরিয়ে দিতে চায় এবং নিজের পা দুটো চেপে রাখে শক্ত করে যেন কিছুতেই প্রকাশিত হতে দেবে না দেহের সবচেয়ে গোপন উপত্যকাটি। কবির ওর মুখপানে চায়, স্নিগ্ধার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি।
"একটু দেখতে দে না!" আবদারের সুরে বলে কবির।
"নাহ! একটুও না।" ন্যাকামো করে বলে স্নিগ্ধা।
"অমন করলে তোর পেটে বাচ্চা দিব কিভাবে?"
"নুনু ঢুকিয়ে দে, কিন্তু দেখতে পারবি না।"
"সে কি হয় নাকি!"
"কেন হবে না? চোখ বন্ধ করে ঢোকাবি। পারবি না?"
"সে নাহয় করব, এখন একটু আদর করতে দে তো।" বলে স্নিগ্ধার অনুমতির অপেক্ষা না করেই ওর তলপেটে চুমু দিতে দিতে নিচে নেমে আসে, ওর পা বরাবর নিচে নেমে যায়। নিটোল ফর্সা উরুর নরম মাংসে হালকা কামড় বসিয়ে দেয়। চুমু দিতে দিতে পা বরাবর নিচে নেমে যায়। ওর পায়ের পাতায় চুমু দিতে থাকে কবির।
"এই ছি! কি করছিস!" বলে স্নিগ্ধা পা সরিয়ে নেয়। কবির স্নিগ্ধার অন্য পাটি ধরে নেয়, চুমু দিতে উপর উঠে আসে।
আবারও ওর তলপেটে উঠে আসে, চুমু দিতে দিতে এবার মাঝবরাবর নেমে আসে ওর যোনীর ওপরের নরম তুলতুলে বেদিতে। স্নিগ্ধা পায়ের ওপর পা চেপে থাকে বলে ওর যোনীটা দেখতে পায়না কবির। ও চুমু দিতে দিতে জিভ বুলিয়ে দিতে থাকে। নিজের গুপ্তাংগে জীভের স্পর্শ যেন পাগল করে দেয় স্নিগ্ধাকে, ও কবিরের মাথাটি চেপে ধরতে চায় নিজের যোনিতে। কিন্তু তার আগেই মাথা সরিয়ে নেয় কবির, এই সুযোগে স্নিগ্ধার পা দুটিকে দুদিকে চেপে ধরে ওর যোনী অঞ্চলের পুর্ন দখল নিয়ে নেয় কবির। কিশোরীর মতো বোজানো যোনী, দু আঙুল দিয়ে পাপড়ী দুটিকে মেলে ধরে, ভেতরটা লাল টুকটুকে, যেন এক পরিস্ফুটিত লাল পদ্ম। কবির মুগ্ধ দৃষ্টিতে সে দিকে তাকিয়ে থাকে।
অন্যদিকে স্নিগ্ধার অবস্থা খুব সঙ্গীন, খুব করে চাইছে কবির ওর যোনিটা চুষে দিক কিংবা সঙ্গম করুক, কিন্তু মুখ ফুটে বলতে পারেনা, শুধু ছটফট করে। কবির বুঝতে পারে ওর অবস্থা, বার কয়েক চুমু দিয়ে চুষতে থাকে ওর যোনীর ছোট্ট ফুটোটি আর দু আঙুল দিয়ে নাড়িয়ে দিতে থাকে ক্লিটটি। স্নিগ্ধা গুঙিয়ে উঠে কবিরের চুলের মুঠি ধরে চেপে ধরে নিজের যোনিতে, আর মুখে শিতকার দিতে থাকে। কবির কখনো চুষতে থাকে গুদের ছোট্ট ফুটোটি, কখনো বা জীভ দিয়ে চেটে দেয় যোনীর চেরা বরাবর, কখনো জীভটাকে সরু করে ঢুকিয়ে দিতে চেষ্টা করে ছোট্ট ফুটোটিতে। ক্রমশ কামরসে ভরে ওঠে ওর যোনী, কবির বুঝতে পারে চরম পুলকের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে, কবির ওর মুখটি সরিয়ে নেয়। স্নিগ্ধা কিছুটা নিরাশ হয়। কবির উঠে নিজের ফুলে ফেঁপে ওঠা ধোনটাকে স্নিগ্ধার যোনীতে ঘষতে ঘষতে ওর মুখের দিকে চায়, ফর্সা মুখটি উত্তেজনায় লাল টকটকে হয়ে গেছে। চোখে সম্মতি পেয়ে একটি ঠাপে ঢুকিয়ে দেয় ধোনের অর্ধেকটা, স্নিগ্ধা ব্যাথায় উহ বলে শিতকার দেয়। সংকীর্ন যোনী পথের নরম মাংসের চাপে কবিরের মুখ দিয়েও শিতকার বের হয়। কবির ধিরে ধিরে সঞ্চালন শুরু করে। ধিরে ধিরে গতি বাড়াতে থাকে ঠাপে, কিছুক্ষনের মধ্যেই পুর্ন গতিতে লিঙ্গ সঞ্চালন শুরু করে। স্নিগ্ধা ব্যাথা ও প্রচন্ড সুখে গলা ছেড়ে শিতকার দিতে থাকে। স্নিগ্ধা বেশিক্ষন থাকতে পারেনা, কবিরকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে পিঠে নখ বসিয়ে দিয়ে চিতকার দিয়ে অর্গাজমে পৌঁছে যায়। ওভাবে চুপচাপ জড়াজড়ি অবস্থায় কিছুক্ষণ কেটে যায়।
"খুব ব্যাথা দিয়েছি না তোকে?" কবির বলে।
"নাহ্! অল্প ব্যাথা আর অনেক অনেক সুখ দিয়েছিস। কিন্তু তোর নুনুটা তো এখনো শক্তই আছে, আমার ভেতরেই আছে।" স্নিগ্ধা বলে।
"রাতে দুইবার করেছি না? ও সহজে শান্ত হবে না। চল উঠি, অনেক কাজ আছে।"
"নাহ, তা হবে না। আগে আমার পেটে বেবি দিবি তারপর অন্য কাজ।"
"তাই হয়! মা বাবার সাথে কথা বলবি না?"
"কালকে কথা বলব, আজ সারাদিন আমায় আদর করবি। এখন একটু ধিরে ধিরে কর না, রাতের মতো।" স্নিগ্ধা বলে।
কবিরেরও মন খুব চাইছিল ওকে আজ মন ভরে আদর করতে।
কবির ওর ঠোঁটগুলোকে চুষতে চুষতে লিঙ্গটা খুব ধিরে ধিরে সঞ্চালন করতে থাকে, এভাবেই যেন অনন্তকাল কাটিয়ে দিতে চায়।

টিনের চালে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে আর থেকে থেকে রাতের আঁধারকে চিরে বিজলি চমকাচ্ছে। কবির ওর বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। দিনটি ছিল রৌদ্রোজ্জল, কোথাও মেঘের কোন চিহ্ন ছিল না। সন্ধা বেলা হঠাত কোথা থেকে মেঘ উড়ে এসে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল, সাথে বজ্রপাত। বাড়িটা যদি পাহাড়ের পাদদেশে হত তাহলে চিন্তা ছিল পাহাড়ী ঢলের, কিন্তু যেহেতু ঘরটি পাহাড়ের ওপরে তাই এখন বড় চিন্তা বজ্রপাত। প্রত্যেকটি বজ্রপাতের সাথে সাথে কবিরের মনটা ভয়ে দুরু দুরু করে কেঁপে ওঠে। অথচ কয়েকদিন আগেও ওর মৃত্যুর ভয় ছিলনা। বছর খানেক আগেই তো যখন ও এই পাহাড়েই ছিল এক ঝড় বৃষ্টির দিন কবির চাটাই পেতে উঠোনে শুয়ে থেকে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে আকাশের বিদ্যুতের খেলা দেখেছে। স্নিগ্ধাকে পেয়ে হঠাত করে বেঁচে থাকার প্রচন্ড ইচ্ছা জেগে উঠেছে। বিধাতা নিশ্চয়ই এতোটা নির্দয় হবেন না যে সবকিছু দিয়ে আবার নিমিষেই সবকিছু শেষ করে দিবেন, মনে মনে ভাবে কবির। স্নিগ্ধার ওসব ভাবনা নেই, ও কবিরের বুকে মাথা রেখে একমনে ওর হার্টবিট শুনছে, কবির ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ততক্ষনে বৃষ্টি খানিকটা কমে গেল, কবির স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে।
"স্নিগ্ধা, ঘুমিয়ে গেলি নাকি?" কবির বলে।
"না জান, ঘুমাইনি।" স্নিগ্ধা জবাব দেয়। 'জান' শব্দটা শুনে অদ্ভুত এক ভাল লাগা কাজ করে কবিরের।
"কি অতো ভাবছিস?" কবির জিজ্ঞাসা করে।
"কাল আব্বু আম্মুকে কি বলব সেটাই ভাবছি।" স্নিগ্ধা বলে।
"আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলবি, তাতে এতো চিন্তাভাবনার কি আছে?" কবির বলে।
স্নিগ্ধা কিছু বলে না, একইভাবে কবিরের বুকে মাথা রেখে শুয়ে থাকে।
"চলনা, খেয়ে নেই।" কবির বলে।
"নাহ, খেতে ইচ্ছা করছে না।" স্নিগ্ধা বলে।
"আমার রান্না বুঝি একদম ভাল হয়নি। তবুও একটু হলেও খেয়ে নে, নাহলে শরীর খারাপ হবে।" কবির বলে।
"আমি কি তাই বলেছি নাকি? খুব ভাল হয়েছে। আমার এমনিই খেতে ইচ্ছে করছে না।" স্নিগ্ধা বলে।
"তা বললে হবে নাকি! অল্প একটু খেয়ে নে।" কবির বলে।
"তাহলে তুই আমাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিবি।" স্নিগ্ধা বলে।
"ঠিক আছে, ওঠ তাহলে।"
দুপুরে বঁড়শি দিয়ে লেকটা থেকে একটি মাঝারি আকারের মৃগেল ধরেছিল, কবির তা রেঁধেছিল আলু ও কাঁচকলা দিয়ে। ওরা তা দিয়েই রাতের খাবারটা সেরে নেয়।
বৃষ্টি হওয়াতে বেশ ঠান্ডা পড়েছে। আসার সময় কেনা দুটো বিছানার চাদরের একটিকে গায়ে মুড়ে নিয়ে ওরা জড়াজড়ি করে শুয়ে পড়ে।
কবির স্নিগ্ধাকে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে ওর গালে মুখে চুমু দিতে থাকে। ওর একটি হাত চলে যায় স্নিগ্ধার বুকে, ব্রার উপর দিয়ে আস্তে আস্তে টিপে দিতে থাকে। ওর লিঙ্গটি শক্ত হয়ে খোঁচা দিতে থাকে স্নিগ্ধার তলপেটে।
"এই কি হচ্ছে?" স্নিগ্ধা বিরক্তির ভান করে বলে।
"একটু আদর করতে দে না, জান।" কবির অনুনয়ের সুরে বলে।
"সারাদিনই তো করলি, এখন ঘুমোতে দে।" স্নিগ্ধা বলে।
"প্লিজ জান, আর একবার।" কবির বলে।
"শুধু একবারই কিন্তু।" স্নিগ্ধা বলে।
অনুমতি পেয়ে সুখের অতল সমুদ্রে আবার ডুব দিতে প্রস্তুতি নেয় কবির।

পরেরদিন ওরা ঘুম থেকে ওঠে খুব ভোরে। লেকটাতে দুজন গোসল সেরে রওনা দিয়ে দেয়। পাহাড়ি রাস্তায় প্রায় তিন কিলোমিটার হাঁটার পর ওরা একটি গ্রামে এসে পৌঁছায়। গ্রামটিতে নেটওয়ার্ক আছে, কিন্তু কবির আরো দুরে যেতে চায়। গ্রামটির একপাশ দিয়ে একটি পাহাড়ি সড়ক চলে গেছে। ওরা সড়কটির পাশে এসে দাড়ায় এবং বাসের জন্য অপেক্ষা করে। কিছুক্ষনের মাঝে একটি বাস পেয়ে যায়, বাসটিতে করে ওরা বান্দরবন শহরে চলে আসে। সেখানে একটি মোবাইলের দোকান থেকে কল করে স্নিগ্ধার মা শিরিনের মোবাইলে।

"হ্যালো, আম্মু।" স্নিগ্ধা বলে।
"স্নিগ্ধা, মা আমার, কোথায় তুই, কি হয়েছে তোর?" আবেগে আপ্লুত কন্ঠে বলে শিরিন।
স্নিগ্ধা কি বলবে বুঝে উঠতে পারে না।
"চুপ আছিস কেন? কথা বল, তুই ঠিক আছিস তো?" শিরিন বলে।
"আমি ঠিক আছি এবং খুব ভাল আছি। তোমরা আমাকে নিয়ে চিন্তা কোরো না। কবিরও আমার সাথে আছে, কথা বলবে?"
"না, আমার কারো সাথে কথা বলার ইচ্ছা নেই। ছি ছি ছি! আমি ভাবতে পারছি না, তুই আমার মেয়ে হয়ে এমন একটা কাজ করে ফেলতে পারলি।" হঠাত শিরিনের কন্ঠ পরিবর্তন হয়ে গেল, তাতে অভিমান ও ঘৃণা প্রকাশ পেল।
"তুমি আমাদের ভুল বুঝো না মা। আমি আর কবির একে অপরকে খুব ভালবাসি, ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না।" স্নিগ্ধা বলে।
"এ কথা যদি বিয়ের আগে বলতি তবে কি তোকে ওর সাথে বিয়ে দিতাম না? তোর বিয়ে কি তোর অমতে দিয়েছি? তাই বলে বিয়ের পর এমন একটা কান্ড তুই করে ফেললি!"
"অনেক কিছুই তুমি জানোনা মা, তা বলার সময় এখনো আসেনি। আমার ওপর ভরসা রাখো, আমি কোন পাপ করিনি। রাখি মা।" বলে ফোনটা কেটে দেয় স্নিগ্ধা।
 
সুর্য অস্ত গেছে কিছুক্ষণ আগে, দুর দিগন্তের কাছের মেঘগুলো কমলা, লাল ও গোলাপী রং ধারন করেছে। স্নিগ্ধা উদাস দৃষ্টিতে সেদিকেই তাকিয়ে আছে। ফোন করে শহর থেকে ফিরে আসার পর থেকে স্নিগ্ধা এভাবেই উঠোনে বসে আছে উদাস ভঙ্গিতে। এর মাঝে কবির হ্রদের ধার থেকে কিছু কলমি পাতা ও কচুর মুহী কুড়িয়ে এনে তার সাথে আলু দিয়ে একটি সবজি রেঁধে ফেলে। তারপর ভাত চড়িয়ে দিয়ে স্নিগ্ধার পাশে এসে বসে।
"মন খুব খারাপ তোর?" কবির বলে।
স্নিগ্ধা দীর্ঘস্বাস ফেলে বলে "জানিস আম্মু কখনোই আমার সাথে এভাবে কথা বলেনি। আম্মু আমাকে শাসন করতো আগেও, কিন্তু আজ যেভাবে কথাটা বলল, আমার খুব খারাপ লাগছে।"
"মা সবটা যদি জানতেন তবে কি এভাবে বলতেন? মন খারপ করিস না।" কবির বলে।
"সবটা যদি জানতো আম্মু, চুপ থাকতো না। এতে ওনারা বিপদে পড়ে যেতেন। শয়তানটাকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি, এমন কোন কাজ নেই যা ও করতে পারে না।" স্নিগ্ধা বলে।
"তুই ওকে এতো ভয় পাস!"
"সত্যিই আমি ওকে ভয় পাই। ওর মতো ভদ্রবেশী শয়তান আর আছে কিনা সন্দেহ আছে। জানিস, সোহরাব ভাইয়ের মৃত্যুটা এক্সিডেন্টে হয়নি, খুন করা হয়েছে ওনাকে। উনি আমাকে সজলের ব্যাপারে সতর্ক করেছিলেন, সেই আক্রোশে সজল তার কোম্পানির এক ড্রাইভারকে কন্ট্রাক্ট করে সোহরাব ভাইকে হত্যা করায়।"
"কি বলছিস তুই!" অবাক হয়ে বলে কবির।
"আমি ওর মুখ থেকে না শুনলে নিজেও বিশ্বাস করতাম না। শুধু সোহরাব ভাই নয়, এর আগে লিজা নামের একটি মেয়েকে ও নিজ হাতে খুন করেছিল। এমনকি তোকে খুন করার জন্যও তোর মেসে লোক ঠিক করেছিল ও, যদি সেদিন তুই তোর মেস ছেড়ে চলে না যেতি, আজ হয়তো তোকে এভাবে পেতাম না।"
কবির ওর দিকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
"বিশ্বাস হয়না? ও আমাকে হাত পা বেঁধে প্রতি রাতে ধর্ষণ করতো আর সাথে ওর কোন না কোন অপকর্মের কথা বর্ণনা করতো।" স্নিগ্ধা বলে, ওর চোখের কোনে পানি জমে গেছে।
কবির ওকে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে ওর কপালে চুমু দেয়, ওর চোখ মুছে দেয়। ঠিক সেই সময় কিছু একটা পোড়া পোড়া গন্ধ পায়।
"এই রে, ভাত পুড়ে যাচ্ছে।" বলে কবির ছুটে যায় ঘরের দিকে।

অন্যদিকে স্নিগ্ধার ফোনের কথা শুনেই সজল ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দেয় বগুড়ার উদ্দেশ্য। স্নিগ্ধাদের বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত হয়ে যায়। সজল কলিং বেল টিপতেই শিরিন দরজাটা খুলে দেয়।
"এসো বাবা, এসো।" মলিন একটি হাসি দিয়ে বলে শিরিন।
সজল বাথরুমে ঢুকে হাতমুখ ধুয়ে বেরিয়ে আসে। তখন শিরিন রান্নাঘরে রান্নার কাজ করছিল।
"মা, একটু আসবেন, একটু কথা ছিল।" সজল বলে শিরিনের উদ্দেশ্যে।
"আসছি বাবা, তুমি ড্রয়িংরুমে বসে একটু রেস্ট নাও, আমি এক্ষুনি আসছি।" শিরিন বলে।
সজল ড্রয়িংরুমে এসে জামানকে দেখতে পায়।
"বাবা, কখন পৌঁছলে?" জামান বলে।
"এইতো, এক্ষুনি।" সজল বলে।
"কোন সমস্যা হয়নি তো?"
"না বাবা।"
ততোক্ষনে শিরিন এসেছে।
"প্লিজ বসুন মা।" সজল বলে।
"বাবার কাছে থেকে শুনলাম স্নিগ্ধার সাথে আপনার ফোনে কথা হয়েছে?" শিরিনের উদ্দেশ্যে বলে সজল।
"হ্যাঁ বাবা।" শিরিন বলে।
"কি বলেছে ও?"
"ও বলেছে যে ও ভাল আছে, ওর জন্য যেন আমরা দুশ্চিন্তা না করি। আর ওর সাথে কবির আছে।" শিরিন বলে।
"কবির! মানে ঐ ছেলেটা? আই মিন স্নিগ্ধার সেই বন্ধু?"
"আমরা কখনো ভাবতেই পারিনি আমাদের মেয়ে এমন একটা কান্ড করে বসবে। ও এমন মেয়ে নয় যে এমন কিছু ঘটাবে। কিভাবে যে কি ঘটে গেল জানিনা।" শিরিন ফুঁপিয়ে বলে।
"মা, প্লিজ মন খারাপ করবেন না। এর চেয়ে তো খারাপ কিছুই হতে পারতো। ও যে ভাল আছে সেটাই তো অনেক বড় সুখবর।" সজল বলে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার বলতে শুরু করে সজল "দোষটা আসলে আমারই। আজ পর্যন্ত ও যা যা চেয়েছে সব এনে দেয়ার চেষ্টা করেছি, কিন্তু একটা জিনিস একেবারেই দিতে পারিনি তা হল সঙ্গ। অফিসের কাজে এতোটাই ব্যাস্ত আমি যে একটু সময়ও দিতে পারিনি আমি ওকে। সবসময় ও নিঃসঙ্গতা অনুভব করতো। সেই একটু একটু না পাওয়া কখন যে বড় রকমের মনোমালিন্য সৃষ্টি করে ফেলল বুঝতে পারিনি।"
আবার এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে "বাবা, মা এরপর যদি ও আপনাদের কাউকে কল করে প্লীজ ওকে বলবেন যে ওরা যেন ফিরে আসে। স্নিগ্ধা যদি আমার কাছে থেকে ডিভোর্স চায়, আমি হাসতে হাসতে ডিভোর্স পেপারে সই করে দেব। আর আপনাদের প্রতিও অনুরোধ, ওদেরকে মেনে নিবেন।"
একটু থেমে আবার বলে "আরেকটা কথা, আমার নিজের মা বাবা নেই। আপনাদেরকেই আমি মা বাবা বলে জানি। স্নিগ্ধার সাথে আমার রিলেশন থাকুক বা না থাকুক আপনারা কিন্তু চিরকাল আমার মা বাবা হয়ে থাকবেন।"
"তুমি তো আমাদের ছেলেই। মা বাবার কাছে ছেলে কি কখনো পর হয়?" শিরিন বলে।
"আমি তাহলে আসি।" সজল বলে।
"সে কি! আজকে রাতটা থেকে যাও" জামান বলে।
"না বাবা, কালকে জরুরি মিটিং আছে।"
"অন্তত খেয়ে তো যাও।" শিরিন বলে।
"না মা, আর এক ঘন্টা পরই আমার বাস।"
একটু থেমে সজল বলে "আর স্নিগ্ধা যে নাম্বার থেকে ফোন দিয়েছে সেই নাম্বারটা যদি দেন।"
শিরিন তার মোবাইলটা বাড়িয়ে দেয়, সজল নাম্বারটা লিখে নেয়।
সজল বাইরে বেরিয়ে এসে এতোক্ষনের নিখুঁত অভিনয়ের জন্য মনে মনে নিজেকেই অস্কার দিয়ে দেয়। মোবাইল নাম্বারটা দেখে আরেকবার, এর মাধ্যমে ওদের লোকেশন সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। এমনিতে সাইমন তার লোকজন নিয়ে কক্সেসবাজার এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজছে।

দেখতে দেখতে তিনটে সপ্তাহ কেটে গেল। কবির পালানোর আগেই এক মাসের বেতন ও ওভারটাইম বিল পেয়েছিল। এখন অব্দি সেই টাকা দিয়েই চলছে ওরা, তা দিয়ে আর বেশিদিন চলা সম্ভব নয়। এবার ওদের বিকল্প ভাবতে হবে।

কবির অবশ্য ভেবেই নিয়েছে, সামনের হ্রদটা থেকে মাছ ধরবে এবং পাশের গ্রামে বিক্রি করবে। সেই উদ্দেশ্যে সকাল থেকে কবির তার জালটা মেরামতে ব্যাস্ত। অন্যদিকে পুরনো একটি ঘুনে ধরা চেয়ার বারান্দায় পেতে স্নিগ্ধা বসে আছে। বাইরে রোদ্রতপ্ত দিন হলেও কোথা থেকে যেন মিহি শিতল বাতাস আসছে বারান্দায়। আজকে খুব বোরিং লাগছে স্নিগ্ধার। ঘুম থেকে উঠেই কবিরকে দেখছে, কবিরকে জালটা নিয়ে মগ্ন থাকাতে এখনো সেটা নিয়েই পড়ে আছে। স্নিগ্ধা সকালের আদরটিও পায়নি আজ, দুপুরে হ্রদে ঝাঁপাঝাপিও হয় কিনা কে জানে। স্নিগ্ধা ঘরে ফিরে যায়, কবির তখনো মেঝেতে বড়ো মনযোগ দিয়ে জাল বুনছিল। স্নিগ্ধার মাথায় তখন দুষ্টমির প্ল্যান আসে।
"খুব গরম লাগছে।" বলে স্নিগ্ধা ওর পরনের কামিজটা খুলে ফেলে, নিচে শুধু ব্রা ও সালোয়ার পরে কবিরের সামনে খাটে বসে থাকে। ওর জাল বোনা দেখার নামে ঝুঁকে বুকের খাঁজ দেখাতে থাকে কবিরকে। কবির অন্যদিকে ঘুরে বসে আবার জাল বোনায় মন দেয়। স্নিগ্ধা উঠে এসে কবিরের পিছে বসে, পেছন থেকে হালকা করে জড়িয়ে ধরে ওরে পিঠে নরম বুক চেপে ধরে।
"কি করছিস জান?" স্নিগ্ধা বলে।
"দেখতেই পারছিস, জালটা মেরামত করছি।" কবির বলে।
"বঁড়শি তো আছে, জালের কি দরকার?" স্নিগ্ধা বলে
"বঁড়শি দিয়ে মাছ ধরতে অনেক সময় লাগে। নিজেরা খাওয়ার জন্য চলে, কিন্তু বিক্রি করতে চাইলে হবেনা। এই জাল দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করব। তাছাড়া চলবে কিভাবে?"
"এই কাজ তো একটু পরেও করতে পারিস। চল না গোসল করতে যাই।" স্নিগ্ধা বলে।
"কাজটা আগে সেরে নেই।" কবির বলে।
"তুই তোর কাজ নিয়েই থাক, আমি চললাম গোসল করতে। আমার খুব গরম লাগছে।"
"খবরদার একা একা যাবিনা। আর যাষ্ট পাঁচ মিনিট।" কবির বলে।
স্নিগ্ধা আর জিদ করেনা, আবারও কবিরের সামনে এসে বসে। কিছুক্ষনের মধ্যে কবিরের জাল বোনা হয়ে যায়। ও উঠে দাড়ায়, সাথে স্নিগ্ধাও। কবির হঠাত করে পেছন থেকে স্নিগ্ধাকে জড়িয়ে নেয়, দুহাত বাড়িয়ে নিয়ে ওর স্তনদুটি মুচড়ে ধরে।
"এ্যাই কি করছিস? উহ লাগছে তো।" বিরক্তির ভান করে বলে স্নিগ্ধা।
"আগে বল এতোক্ষন আমার সাথে কি করলি!" কবির বলে।
"আমি আবার কি করলাম?" অবাক হওয়ার ভান করে বলে স্নিগ্ধা।
"কিছু করিস নি?" বলে ওকে টেনে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
"অমন করলে আমি কিন্তু কেস করব তোর নামে, ধর্ষণের কেস।"
"যা ইচ্ছা করিস, এখন একবার করতে দে।" বলে কবির ওর সেলোয়ারের ফিতাটি টান দিয়ে খুলে ফেলে, সেলোয়ারটি টেনে নামিয়ে মুখ গুঁজে দেয় ওর যোনী প্রদেশে, প্রাণপনে চুষতে থাকে যোনীর ছোট্ট ফুটোটিকে।
মুখে না না বললেও স্নিগ্ধা এমনই কিছু চাইছিল খুব করে। কবিরের চুলের মুঠি ধরে ও শীতকার দিতে থাকে। কয়েক মিনিট ওর যোনীসুধা পান করে কবির উঠে দাড়ায়। স্নিগ্ধার চোখে চোখ রেখে ওর যোনীতে নিজের লিঙ্গ ঘষতে থাকে। একটি ঠাপে পুরোপুরি সেঁধিয়ে দেয় লিঙ্গটি। দাড়িয়ে দাড়িয়ে লিঙ্গ সঞ্চালন করতে থাকে, প্রথমে ধিরে ধিরে তারপর গতি বাড়াতে থাকে। স্নিগ্ধা গলা ছেড়ে শীতকার দিতে দিতে উপভোগ করতে থাকে প্রবল বেগের ঠাপগুলো। পনেরো মিনিট ধরে সঙ্গম শেষে দুজনই জড়াজড়ি করে শুয়ে থাকে কিছুক্ষন।
"রাগ করেছিস, জান?" স্নিগ্ধার গালে মুখে চুমু দিতে দিতে বলে কবির।
"রাগ করব কেন। এই আদরটুকু তো আমার পাওনাই ছিল। আমার প্রাপ্য আদর থেকে বঞ্চিত করলেই বরং রাগ করতাম।" স্নিগ্ধা বলে।
"চল এবার যাই। গোসল করতে হবে আর জালটাও পরখ করে দেখতে হবে।" কবির বলে।
"আজকে কিন্তু ঠোঁটে চুমু পাইনি।" বলে নিজেই কবিরের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে চুষতে থাকে।
চুমু শেষে ওরা কাপড় পরে নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে হ্রদটার দিকে যায়।
হ্রদের ধারে দাঁড়িয়ে কবির ওর জালটাকে ছুঁড়ে দেয় যতো দুর সম্ভব, তারপর টেনে নিয়ে আসে। কয়েকটা ছোটমাছ ওঠে জালে। এবার স্নিগ্ধা বায়না ধরে যে সে জাল ফেলবে। কিন্তু জাল ফেলা দেখতে যতোটা সহজ মনে হয় ততোটা সহজ হয়না। কবির ওকে হাতে ধরিয়ে জাল ফেলা শেখায়। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই ওদের মাছ রাখার বাসনে বেশ খানিকটা ছোট ও মাঝারি মাছ ওঠে। এরপর ওরা গোসল করে নিজেদের ঘরের দিকে ফিরে যায়।
 
হারিকেনটি নিভে গেছে ঘন্টাখানেক আগে, কেরোসিন ফুরিয়ে গেছে। ঘরটি নিকষ অন্ধকার, বাইরে অমাবস্যা রাত, তবুও মিহি একটা আলো আসছে বাইরে থেকে। সেই আলোতে ওরা অবশ্য একে অপরকে দেখতে পাচ্ছে না। দেখতে না পেলেও সারা শরীর ও মনপ্রাণ দিয়ে অনুভব করছে একে অপরকে। বিছানায় কবির স্নিগ্ধাকে নিজের ওপর নিয়ে অনবরত চুষে চলেছে একে অপরের ঠোঁট, কখনো বা চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে একে অপরের মুখ। সাথে চলছে ধীর লয়ে সঙ্গম ছন্দ। এভাবে ধীর লয়ে সঙ্গম ও সাথে আদর স্নিগ্ধার খুব ভাল লাগে, ক্লান্তির বদলে শরীরটা যেন আরো রিল্যাক্স হয়।
"কবির?" ওর থেকে ঠোঁট ছাড়িয়ে নিয়ে স্নিগ্ধা ডাকে ওকে।
"কিছু বলবি, জান?"
"হ্যাঁ, কিন্তু এখন না।" বলে ওর ওপর থেকে উঠে আসে স্নিগ্ধা। কবিরের লিঙ্গটার কাছে নেমে আসে ও। এক হাত দিয়ে লিঙ্গটা ধরে ওপর নিচ করে ও, ওর নিজের কামরসে ভিজে আছে সেটি। সজল স্নিগ্ধাকে দিয়ে জোর করে ব্লোজব করে নিয়েছিল কয়েকবার, ভীষণ ঘেন্না করতো ওর, বমি করে ফেলেছিল একবার। কিন্তু এখন খুব ইচ্ছা করছিল কবিরের লিঙ্গটিকে আদর করতে। স্নিগ্ধা বিছানায় হাতিয়ে ওর সেলোয়ারটি দিয়ে লিঙ্গটি ভাল করে মুছে নেয়, ওর লিঙ্গের ডগায় চুমু দেয়।
"জান, ছি! কি করছিস?" কবির বলে।
"তুই চুপ করে শুয়ে থাক। আমি এখন ললিপপ খাব।" বলে ওর ধোনের মুন্ডিটা মুখে নিয়ে চুষতে থাকে। স্নিগ্ধা কখনো ওর ধোনের মুন্ডিটি মুখে নিয়ে চোষে, কখনো বা পুরো ধোনটায় জিভ বুলিয়ে দেয়।
কবির শুয়ে শুয়ে অনুভব করতে থাকে লিঙ্গে ওর প্রেয়সীর আদর।
কিছুক্ষন লিঙ্গ চোষার পর স্নিগ্ধা উঠে পা দুটি ছড়িয়ে দিয়ে ওর পেটের ওপর বসে। তারপর কবিরের লিঙ্গটি নিজের যোনী বরাবর নিয়ে নিচের দিকে চাপ দেয়। এতে শুধু মুন্ডিটা প্রবেশ করে ওর যোনীপথে। আরেকবার জোরে চাপ দেয়, এতে কবিরের লিঙ্গটি সোজা ওর জরায়ুতে আঘাত করি। "উহ মা গো" বলে কঁকিয়ে ওঠে স্নিগ্ধা।
"ব্যাথা পেলি নাকি?" কবির বলে।
"ইস, তোরটা খুব বড়। পেটে খোঁচা দিয়েছে।" স্নিগ্ধা বলে।
"আস্তে কর, নাহলে উঠে আয়, আমি করি।" কবির বলে।
স্নিগ্ধা কবিরের পেটে দু হাত রেখে ভর দিয়ে আস্তে আস্তে উঠ বোস করতে থাকে।
কবির ওর নরম দুটি স্তন মুঠো করে টিপতে টিপতে নিচ থেকে তাল মিলিয়ে তল ঠাপ দিতে থাকে। ধিরে ধিরে স্নিগ্ধা গতি বাড়িয়ে দেয়, কিছুক্ষনের মাঝে গলা ছেড়ে শীতকার দিতে দিতে কবিরের বুকে এলিয়ে পড়ে। কবির বুঝতে পারে যে ওরও সময় হয়ে এসেছে, স্নিগ্ধাকে জড়িয়ে ধরে নিচ থেকে জোরে জোরে ঠাপ দিতে দিতে নিজেও বীর্যপাত করে।
কিছুক্ষন ওভাবেই কেটে যায়, স্নিগ্ধা কবিরের বুকে মাথা রেখে ওর হৃদকম্পন শুনতে থাকে। কবির ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
"কবির।" ওর বুকে মাথা রেখেই ওকে ডাকে স্নিগ্ধা।
"হ্যাঁ, বল জান?"
"আমার এ মাসে মাসিক হওয়ার কথা ছিল গত সপ্তাহে, কিন্তু এখনো হয়নি। শিওর না, কিন্তু মনে হয় আমি প্রেগন্যান্ট।"
"সত্যি বলছিস?" উচ্ছসিত কন্ঠে বলে কবির।
"আমি শিওর না।" স্নিগ্ধা বলে।
কবির স্নিগ্ধাকে ওর পাশে শুইয়ে দেয়, নেমে আসে ওর তলপেটে। "আমার বেবিটি কোথায়? এখানে? নাকি এখানে?" বলতে বলতে ওর সারা পেটে চুমু দিতে থাকে কবির।
"এই এই কি করছিস।" স্নিগ্ধা বলে।
"চুপ, আমি আমার বেবিকে আদর করছি।" কবির বলে।
"দেখিস আবার কুতুব মিনার দাঁড় করিয়ে ফেলিস না, আজ রাতে কিন্তু আর করতে দিব না।" হাসতে হাসতে বলে স্নিগ্ধা।
কবির উঠে এসে ওর পাশে শুয়ে পড়ে, ও স্নিগ্ধাকে নিয়ে এই অবস্থায় আর পাহাড়ে থাকতে চায়না, দুরের কোন লোকালয়ে সেটেল হতে হবে। তবে তার জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। কাল খুব সকাল সকাল জাল নিয়ে বেরোতে হবে মাছ ধরতে, কবির ঘুমানোর চেষ্টা করে। স্নিগ্ধা ওকে আলতো করে জড়িয়ে নেয় ফিস ফিস করে বলে "কাল একবার আম্মুর সাথে কথা বলব।"
"ঠিক আছে, এখন ঘুমো।"

ঠিক মাথার ওপর সুর্য, আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরাচ্ছে। কবির ও স্নিগ্ধা পাহাড়ী আঁকাবাকা পথ বেয়ে হেঁটে যাচ্ছে। দর দর করে ঘেমে যাচ্ছে দুজনই।
"আর পারছি না। আর কতো দুর?" স্নিগ্ধা বলে।
"এইতো আর এক কিলো হবে। চল, একটু ঐ গাছের ছায়াতে একটু জিরিয়ে নেই", কবির বলে। তারপর একটি গাছের নিচে গিয়ে শেকড়ের উপর বসে দুজন। এর আগেরবার যখন এসেছিল ওরা তখন খুব ভোরে রওনা দিয়েছিল। রোদের তেজ বাড়ার আগেই ওরা পাশের গ্রামে পৌঁছে গিয়েছিল। যদিও আজকেও কবির খুব ভোরে উঠেছিল, কিন্তু স্নিগ্ধাকে ফাঁকি দিয়ে উঠতে পারেনি ও। স্নিগ্ধাও আদায় করে নিয়েছে ওর সকালের আদর, এরপর গোসল করার নামে লেকটাতে গিয়ে ঝাঁপাঝাপি করেছে ঘন্টা খানিক ধরে।
"চল, এবার রওনা দেই।" কিছুক্ষন ছায়ায় জিরানোর পর কবির বলে।
"আরো কিছুক্ষন থাকি না, কি সুন্দর যায়গা আর কি সুন্দর ঝিরি ঝিরি বাতাস বইছে।" স্নিগ্ধা বলে।
"ধিরে ধিরে রোদের তেজ বেড়ে যাবে। মার সাথে কথা বলতে যাবি না?"
স্নিগ্ধা ওর কথা কানে নেয়না গাছটিতে হেলান দিয়ে আনমনে বলতে থাকে "একমাস হল এখানে এসেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত যায়গাটা ভাল করে ঘুরে দেখাই হল না।"
"একদিন তোকে সাথে নিয়ে চারিদিকটা ঘুরে নিয়ে আসব, এবার চলতো।" বলে ওর হাতটি ধরে প্রায় টেনে নিয়ে যায়।
ওরা যতক্ষনে পাশের গ্রামটিতে পৌঁছে ততোক্ষনে দুপুর হয়ে গেছে। পাহাড়ের ঢালে ছোট একটি গ্রাম যার একপাশ দিয়ে পাহাড়ি সড়ক বয়ে চলেছে। ওরা একটি খাবারের দোকানে দুপুরের খাবার সেরে নেয়। তারপর সড়কটির পাশে গিয়ে দাঁড়ায় ওরা।
"এখানেই না একটা রিচার্জের দোকান দেখলাম। এখানেই তো কথা বলা যায়, অন্য কোথাও যাওয়ার কি দরকার?" স্নিগ্ধা বলে।
কবিরও ভেবে দেখে যে ওরা যদি এখন শহরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তবে ফিরতে ফিরতে ওদের রাত লেগে যাবে।
"ঠিক আছে, চল।" বলে কবির গ্রামটির দিকে ফিরে যায়, সাথে স্নিগ্ধাও।
স্নিগ্ধা ওর মায়ের নাম্বার চেপে কল দেয়, একবার রিং হওয়ার পর রিসিভ হয়।
"হ্যালো, কে?" শিরিনের উদ্বিগ্ন কণ্ঠ শুনতে পায় স্নিগ্ধা।
"মা, আমি স্নিগ্ধা।"
"স্নিগ্ধা, মা আমার, কেমন আছিস? ঠিক আছিস তো?"
"আমি ভাল আছি তোমরা আমাকে নিয়ে টেনশন কোরো না।" স্নিগ্ধা বলে।
"টেনশন না করে কি থাকা যায়? গত একমাস ধরে অপেক্ষায় আছি কখন তোর ফোন আসে। রিংটোন বেজে উঠলেই মনে হয় এই বুঝি তুই কল দিয়েছিস। আমি রাগের মাথায় কি বলে ফেলেছি আর তুই অভিমান করে আছিস, আরেকবার ফোন করতে পারলি না?" শিরিন বলে।
"না মা, তোমার প্রতি আমার কোন অভিমান নেই। আমি যেখানে থাকি সেখান থেকে যখন তখন কল করা সম্ভব না।" স্নিগ্ধা বলে।
"তুই কোথায় আছিস মা? তোরা ফিরে আয়। আমি সজলের সাথে কথা বলেছি, ও তোকে ডিভোর্স দিবে। তারপর কবিরের সাথে তোকে বিয়ে দেব। ফিরে আয় তোরা।" অনুরোধের সুরে বলে শিরিন।
স্নিগ্ধা কি জবাব দিবে বুঝতে পারছিল না।
"কথা বলছিস না কেন মা? তোর সাথে কবির আছে? ওকে একটু দে। কত দিন দেখি না ওকে!"
স্নিগ্ধা ফোনটি কবিরকে দেয়।
"হ্যালো, কবির, কেমন আছো বাবা?"
"জি ভাল, মা।"
"তুমি তো আমার ছেলেই, হঠাত করে যে হারিয়ে গেলে আমাদের কি একটুও মনে পড়েনি। তোমাকে আমরা কতো খুঁজেছি, কত কেঁদেছি তোমার জন্য।"
"আমাকে ক্ষমা করে দিন মা, আমি আপনাদের মনে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমি কথা দিচ্ছি, শীঘ্রই আমরা ফিরে আসব।" বলে কবির ফোন কেটে দেয়।

কবির লেকটির ধারে দাড়িয়ে ওর জালটা ছুঁড়ে দেয় যতদুর সম্ভব, এক মুহুর্ত অপেক্ষা করে জালটা গুটিয়ে আনে। স্নিগ্ধা কাছেই গাছের নিচে বসে ছিল, কবিরকে জাল গুটিয়ে আনতে দেখে স্নিগ্ধা এগিয়ে যায়, জালটা পরিষ্কার করতে সাহায্য করে কবিরকে। দুটো পুঁটি আর একটা টাকি মাছ উঠেছে তাতে।
কবির একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে "তুই এখানেই থাক। আমি একটু ঐদিকে জাল ফেলে দেখি কিছু পাই কিনা।"
"তুই একটু ছায়ায় বস না, আমি এবার জাল ফেলি। একেবারে ঘেমে গেছিস।" স্নিগ্ধা বলে।
"এখন না, একটু পরে।" বলে কবির ওর জালটি নিয়ে লেকের ধার ঘেঁষে এগিয়ে যায়। কবির জানে যে পাশের গ্রাম থেকেই স্নিগ্ধার মার সাথে কথা বলার পর ওদের ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। কবির যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে চায়, কিন্তু তার জন্য টাকার প্রয়োজন। গত তিনদিন ধরে ওরা লেকে মাছ ধরে পাশের গ্রামে এক মাছ বিক্রেতার কাছে বিক্রি করছে। প্রথম দিন দুইশত টাকা, পরের দিন চারশ পঞ্চাশ টাকা, পরের দিন চারশ টাকা, এ কয়দিনের মাছ বিক্রির টাকা ওদের। অন্য কোথাও গিয়ে সেটেল হতে চাইলে ওদের অনেক টাকার প্রয়োজন, কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা না হলে কবির সে রিস্ক নেবে না।
কবির লেকের চারিদিকে ঘুরে ঘুরে জাল ফেলে, কিন্তু একটি আধা কেজি ওজনের মৃগেল ছাড়া উল্লেখ করার মতো কিছু পায় না। কবির ভাবে যে তার ডিঙ্গি নৌকাটা যদি থাকতো তবে নৌকা বেয়ে লেকের মাঝামাঝিতে জাল ফেলতে পারতো সে। কবির এবার কোমর পর্যন্ত পানিতে নেমে জাল ফেলতে শুরু করে। এবার দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই ওর জালে একটি বড় কাতল মাছ ওঠে। জালটাকে লেকের ধারে তুলেই স্নিগ্ধাকে ডাকে কবির, স্নিগ্ধা সাথে সাথে ছুটে আসে।
"ওয়াও! কত্তবড় কাতল মাছ! এটা কতো ওজন হবে?" স্নিগ্ধা উচ্ছসিত কন্ঠে বলে।
"দশ বারো কেজি তো হবেই।" কবির বলে। তারপর ওদের শিকার করা মাছগুলোকে নিয়ে ওরা ঘরে ফিরে যায়। দুজন মিলে ছোট মাছগুলোকে কেটে ধুয়ে আলু দিয়ে চচ্চড়ি করে। তা দিয়েই দুপুরের খাবার সেরে নেয়। কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে ওরা ওদের মাছগুলোকে নিয়ে রওনা দেয় পাশের গ্রামের উদ্দেশ্য। ওদের সংগ্রহে বড় কাতল মাছটি ছাড়াও একটি মাঝারি কালবাউশ ও দুটি মাঝারি মৃগেল আছে। কবির যখন প্রথম বান্দরবানে এসেছিল তখন অংসুন গ্রামে ছিল কয়েক মাস। অংসুন নামক একটি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত গ্রামটি বেশ সুন্দর। এখানে কবিরের বেশ কিছু পরিচিত লোক আছে, যাদের মাঝে রশিদ একজন। রশিদ মাছের ব্যবসা করে, গ্রামের বাজারে তার মাছের দোকান আছে।
"ও রশিদ চাচা। বাড়ি আছ নাকি।" রশিদের ছুপরির সামনে এসে ডাকে কবির।
"কে?" রশিদের কন্ঠ শুনতে পায় ওরা।
"আমি করিম।" কবির বলে।
"ও ভাইস্তা, ভেতরে আস।" ভেতর থেকেই বলে রশিদ।
দরজাটা ভেজানো ছিল, ওরা খুলে ভেতরে ঢোকে।
 
"আরে, বউমাকেও আনছ দেখি! আস মা বস।" বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বলে।
"চাচা, শরীর কি খারাপ নাকি? অবেলায় শুয়ে আছেন?" মাছের ডালাটা নামিয়ে রাখতে রাখতে কবির বলে।
"অল্প জ্বর আছে, ও তেমন কিছু না। দেখি তোমরা কি আনছ?" বলে উঠে মাছের ডালাটা দেখে।
"ওরে বাবা, এ দেখি বিশাল মাছ। কই পাইলা? ঐ ভুতের জলায়?" রশিদ বলে।
"ভুতের জলা?" স্নিগ্ধা অবাক হয়ে বলে।
"করিম তোমাক বলে নাই? ঐ জলায় আর ঐ বাড়িতে কাল্লা কাটা ভুত থাকে, অনেক মানুষ দেখছে। ঐখানে তো দিনের বেলায়ও মানুষ যাইতে ভয় পায়। তয় করিম মানতে চায় না।"
"আমাকে বলিসনি কেন?" ফিসফিস করে বলে স্নিগ্ধা।
"ফিজিক্সের ছাত্রী হয়ে তুই এসব বিশ্বাস করিস?" কবির বলে।
স্নিগ্ধা কিছু বলে না।
"আমি বলি কি, তোমরা ঐখানে আর থাইকো না। এই গেরামেও থাইকো না, দুরে কোথাও চইলা যাও।" রশিদ বলে।
"সেই চেষ্টাই করছি চাচা। সেই জন্যই তো এসব।" বলে মাছের ডালাটার দিকে ইশারা করে কবির।
"কিন্তু এই মাছ কেনার মুরুদ তো আমার নাই। আর এই গেরামে কেউ কিনতেও পারব না। তাও তুমি যখন আনছ, ব্যাটাকে শহরে পাঠাইয়া বেচমু নি। কিন্তু কত নিবা?" রশিদ বলে।
"আপনিই বলেন চাচা।"
"টাকা পয়সা বেশি নাই, ব্যাবসা ভাল চলে না। আমি পনেরশ দিমু।"
"দশ কেজি ওজনের কাতলা, কমপক্ষে ছয় হাজার টাকায় তো বেচতেই পারবেন। অন্তত তিন হাজার মিল কইরা দেন।" কবির বলে।
"অতো টাকা তো নাই ভাইস্তা। গেরামে তো বেচতে পারমু না, শহরে নিয়া যাইতে হইব, খরচা আছে না? আচ্ছা, দুই হাজার দেই।" রশিদ বলে।
"চাচা, আর পাঁচশটা টাকা দেন। এই সব মাছ আপনার।" কবির বলে।
"ঠিক আছে ভাইস্তা, আমি আর তিনশ দিব।" রশিদ বলে।
কবির আর আপত্তি করে না। রশিদকে বিদায় জানিয়ে ওরা ফিরে আসে।
গ্রামটা পেরোতেই কবির মানিব্যাগ বের করে টাকা গোনে, ওর কাছে মোট ছয় হাজার টাকা আছে।
"আমরা কালকেই এই এলাকা ছেড়ে চলে যাব।" কবির বলে।
"কিন্তু, কোথায় যাব আমরা?"
"আজ রাতেই ডিসিশন নিব আমরা।" কবির বলে।

ওরা যখন বাসায় ফেরে তখন বিকেল হয়ে গেছে। ওরা ওদের ঘরে ঢুকতেই ভীষণ ভাবে চমকে যায়। ঘরের মাঝামাঝিতে চেয়ার পেতে পায়ে পা তুলে বসে আছে সাইমন্ড। সাইমন্ড ছাড়াও ঘরে আরো তিনজন যুবক রয়েছে।

"কতোক্ষন ধরে অপেক্ষা করছি তোদের জন্য, কই ছিলি তোরা?" পকেট থেকে পিস্তলটা বের করতে করতে বলে সাইমন্ড।
কবির কোন জবাব দেয়না, ও আড় চোখে ওদেরকে মাপতে থাকে। শুধু সাইমন্ডের কাছেই পিস্তল রয়েছে, বাকিদের দুজনের হাতে একটি করে ছুরি, আর একজনের হাতে চাপাতি।
স্নিগ্ধা কবিরের একটি হাত বুকে জড়িয়ে নিয়ে আছে, ভীষন ভয় করছে ওর, বুকটা দুরুদুরু করে কাঁপছে।
সাইমন্ড একটু থেমে আবার বলে "এমন যায়গায় থাকিস যে নেটওয়ার্কটাও নেই, একটু যে ফেসবুক ঘাঁটব তারও উপায় নেই। বসে থাকতে থাকতে বোর হয়ে গেছি।"
"কি চাই তোর? সাঙ্গোপাঙ্গো নিয়ে কেন এসেছিস?" কবির বলে।
কবিরের কথা শুনে খিক খিক করে হাসতে থাকে সাইমন্ড, হাসতে হাসতে ওদের দিকে এগিয়ে আসে। কবির ওর গতিবিধি মনযোগ দিয়ে লক্ষ করতে থাকে। এধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বিশেষ ট্রেইনিং পেয়েছে কবির, মনির চাচার কাছে। মনির চাচা বলতেন আত্মরক্ষার মুলমন্ত্র হল মাথা ঠান্ডা রাখা এবং সজাগ থাকা। বিশেষ করে যখন আক্রমনকারী যখন সশস্ত্র তখন ভয়কে গ্রাস করে ফেলতে দেয়া যাবে না, আবার ওভার কনফিডেন্ট বা অতি উত্তেজিত হওয়া যাবে না। আক্রমণকারীর প্রতিটি পদক্ষেপ মনোযোগ দিয়ে লক্ষ রেখে সুযোগ খুঁজতে হবে।
"বেশি কিছু না, মাত্র দুটো জিনিস চাই। তোর কাটা মাথাটা চাই, আমার ড্রয়িংরুমের দেয়ালে সাজিয়ে রাখব। আর এই খানকি মাগিটাকে চাই, আমার হোটেলে বেশ্যা খাটাবো।" বলে সাইমন্ড এক হাতে পিস্তল ধরে রেখে অন্য হাত বাড়িয়ে দেয় স্নিগ্ধার চুলের মুঠি ধরে টেনে আনতে। সেই সুযোগে কবির ওর ডান হাতটি মুচড়ে ধরে পিস্তলটি ফেলে দেয়, তারপর ঘুরে গিয়ে সাইমন্ডের মুখে কনুই দিয়ে সজোরে আঘাত করে। তারপর সাইমন্ডের সাঙ্গপাঙ্গদের ছুটে আসতে দেখে মেঝে থেকে পিস্তলটা তুলে তাক করে সাইমন্ডের দিকে। কিন্তু ঠিক তখনই সাইমন্ডের সাঙ্গপাঙ্গদের একজন স্নিগ্ধাকে টেনে নিয়ে ওর গলায় ছুরি ধরে বলে "পিস্তলটা ফেলে দে, নাহলে এই মেয়েটা মরবে।"
কবির পিস্তলটা ফেলে দেয়, সাথে সাথে সাইমন্ড তা তুলে নেয়।
"সাব্বাস রকি। একটা কাজের মতো কাজ করেছিস।" বলে ছেলেটার পিঠ চাপড়ে দেয় সাইমন্ড তারপর অন্যদের উদ্দেশ্যে বলে "তোরা হা করে কি দেখছিস? যা ধর শুওরটাকে, মার ওকে।"
একজন কবিরের হাত দুটিকে পিছমোড়া করে ধরে থাকে অন্যজন ওর মুখে আর পেটে ঘুষি মারতে থাকে।
"প্লীজ, তোমরা ওকে মেরো না, ওর কোন দোষ নেই।" স্নিগ্ধা আকুতিভরা কন্ঠে বলে। স্নিগ্ধা তখনও রকি নামের গুন্ডাটির বাহুতে। পেছন থেকে জড়িয়ে নিয়ে রকি ওর গলাতে চাকু ধরে আছে, তার একটা হাত স্নিগ্ধার বগলের তলা দিয়ে গলিয়ে দিয়ে জামার ওপর দিয়ে ওর স্তন মুঠো পাকিয়ে টিপছিল।
স্নিগ্ধার আকুতি ওদের কানে পৌঁছায় না। সাইমন্ড নিজে কয়েকটা ঘুষি বসায় কবিরের মুখে। তারপর আদেশ দেয় "ঐ চেয়ারটাতে বসিয়ে বাঁধ কুত্তাটাকে।"
সাইমন্ডের কথামত কবিরকে চেয়ারটাতে বসিয়ে হাতদুটো চেয়ারের হাতলের সাথে বেঁধে দেয়, ওর ঠোঁটের কোনে রক্ত ঝরছিল, সারা মুখে জখম।
"ধুর! কি কাটারি এনেছিস পল্টু? একেবারে ধার নেই।" কাটারীটার ধার পরীক্ষা করতে করতে বলে সাইমন্ড।
"এই রকি, তোর ছুরিটা দে তো।"
রকি স্নিগ্ধাকে ছেড়ে দিয়ে সাইমন্ডের কাছে এসে ছুরিটা দেয়।
"এইটা দিয়েই হবে।" ছুরির ধার পরীক্ষা করে বলে সাইমন্ড তারপর পকেট থেকে আইফোন বের করে একটি ভিডিও ছেড়ে দেয়, যেখানে মুখোশ পরিহিত তিন চারজন একটা লোককে হাত পা বেঁধে জবাই করে।
"দেখ, এই ভাবে পল্টু আর মুহিত তোরা হাত পা চেপে ধরবি, আমি ছুরি চালাবো, আর রকি ভিডিও করবি। মুখোশগুলো এনেছিস তো মুহিত?" সাইমন্ড বলে। ঠিক তখনই স্নিগ্ধা ওর পা চেপে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে বলতে থাকে "প্লিজ ওকে মেরো না। ওর কোন দোষ নেই। দোষ আমার, আমি স্বেচ্ছায় ওর সাথে পালিয়েছি। আমাকে যা খুশি শাস্তি দাও, কিন্তু ওকে ছেড়ে দাও। প্লীজ।"
সাইমন্ড এক ঝটকা দিয়ে পা ছাড়িয়ে নেয় তারপর বলে "এই মাগিটার বাই অনেক বেশী, স্বামীকে দিয়ে মেটে না, স্বামীর বন্ধুকে দিয়েও মেটে না, পুরনো নাগরকে চাই, তাকে দিয়ে মেটে কিনা কে জানে। দেখি তোরা মেটাতে পারিস কিনা। এই নে রকি, তোর পুরস্কার, তুই আগে করবি, তারপর বাকিরা। মাগি যদি বাধা দেয় তো জোরাজুরি করিস না।"
"থ্যাংকস বস।" বলে রকি টান দিয়ে স্নিগ্ধাকে টেনে তোলে, জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে থাকে।
কবিরের হৃদয়টা যেন দুমড়ে মুচড়ে যেতে থাকে, অনেক নির্যাতন সয়েছে স্নিগ্ধা আর নয়। যদিও জানে যে অনুরোধ করে লাভ নেই, তবু একবার চেষ্টা করে কবির।
"তোর গায়ে হাত আমি তুলেছি, আমাকে মেরে ফেল। কিন্তু স্নিগ্ধাকে ছেড়ে দিতে বল, ও না তোর বন্ধুর স্ত্রী?" কবির বলে।
কবিরের কথা শুনে সাইমন্ড খিক খিক করে বিশ্রীভাবে হাসতে শুরু করে, হাসি থামিয়ে বলে "তুই তো মরবিই, কিন্তু আমার অত তাড়া নাই। তুই কি ভেবেছিস, তোর মতো এক থার্ড ক্লাস লেবারের এঁটো করা মেয়েকে আমি পাতে নেব ভেবেছিস? বেশ্যা বানাবো ওকে। মরার আগে দেখে যা তোর প্রেমিকার ভবিষ্যত পেশা।" হিসহিস করে বলে সাইমন্ড।
কবির তার হাত বাঁধার সময় মাংসপেশী যতোটা সম্ভব শক্ত করে রেখেছিল যাতে সহজে খোলা যায়, কিন্তু সাইমন্ড সামনা সামনি থাকাকালীন সেই চেষ্টা করা যাবেনা। এর মধ্যে হায়নারা যেভাবে হরিনের ওপর হামলে পড়ে ঠিক সেভাবে বিছানায় স্নিগ্ধার ওপর হামলে পড়েছে তিনজন। সাইমন্ড তা দেখে এগিয়ে যায় ওদের দিকে।
"এই শালা বাইনচোদরা, বলেছি না যে রকি আগে চুদবে?" সাইমন্ড বলে।
"বস, আমিই ডেকেছি ওদের।" ধবধবে একটি স্তন চোষা ছেড়ে মাথা তুলে বলে রকি তারপর আবারো মুখ ডুবিয়ে দেয় ফর্সা ভরাট স্তনে।
"তাহলে ঠিক আছে।" বলে দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখতে থাকে নিজের চেলাদের কান্ড, নিজেও যোগ দেবে কিনা ভাবে।
অন্য দিকে কবির তার বাঁ হাতটা বের করে আনে দড়ির বাঁধন থেকে, কিন্তু ডান হাতের বাঁধন ততোটা ঢিলে হয়নি, তা খোলার ধৈর্য দেখাতে পারল না কবির।
"খানকির ছেলে, মাদারচোদ, দলবল নিয়ে গিয়ে তোর মাকে চোদাতে পারিস না।" হঠাত খেঁকিয়ে ওঠে কবির।
"কি বললি শুয়োরের বাচ্চা?" বলে কবিরের দিকে ধেয়ে গিয়ে পিস্তল তাক করে সাইমন্ড। কবির এই সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিল, সে দুই হাত দিয়ে চেয়ারের হাতলে ভর দিয়ে সজোরে লাত্থি দেয় সাইমন্ডের হাতে, এতে হাত ফস্কে পিস্তলটা উড়ে যায়। সাইমন্ডকে সামলে উঠতে না দিয়ে দ্রুতবেগে দাঁড়িয়েই চেয়ারটা দু' হাতে ধরে সজোরে আঘাত করে ওর বুকে। বাড়ি খেয়ে ধপাস করে পড়ে যায় সাইমন্ড, পুরনো ঘুনে ধরা চেয়ার ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। চেয়ারের ভাঙা পায়া তুলে পড়ে থাকা সাইমন্ডের পিঠে সপাটে বাড়ি দেয় বার কয়েক। সাইমন্ডের চেলাদের এগিয়ে আসতে দেখে চেয়ারের পায়াটাকে দুই হাতে ধরে প্রস্তুত হয় কবির। রাগে গজরাতে গজরাতে গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে সপাটে বাড়ি দিতে থাকে আসে পাশে যাকে পায় তাকেই। মুহুর্তের মাঝে আগন্তুক চারজন মেঝেতে লুটিয়ে কাতরাতে থাকে, যাদের মধ্যে একজন মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে গেছে।
কবির তখনও রাগে গর্জাচ্ছিল "মাদারচোদ, শুওরের বাচ্চারা ওঠ! উঠছিস না কেন?"
সাইমন্ড টলতে টলতে উঠে দাড়ায়, ওর হাতে চেয়ারের আরেকটি পায়া। কবির এগিয়ে আসতে ইসারা করে। সাইমন্ড কাঠ দিয়ে কবিরের মাথায় বাড়ি দিতে চাইলে কবির মাথা সরিয়ে নেয়, তারপর সজোরে গুঁতো দেয় সাইমনের পেটে। পেটে গুঁতো খেয়ে সাইমন চোখে অন্ধকার দেখছিল, হাত থেকে কাঠটা পড়ে যায়। সেই মুহুর্তে কবির আড় চোখে লক্ষ্য করে রকি হামাগুড়ি দিয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা পিস্তলটার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কবির সেই দিকেই ছুটে যায়, তার পৌঁছানোর আগেই রকি পিস্তলটা নিয়ে নেয় এবং তড়িঘড়ি করে গুলিও চালিয়ে দেয়। গুলিটা কবিরের গা ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়ে সাইমনের বুকে বিঁধে যায়, লুটিয়ে পড়ে সে। কবির ছুটে গিয়ে কাঠ দিয়ে আঘাত করে অজ্ঞান করে দেয়। আরেকজনকে টলতে টলতে উঠতে দেখে বাড়ি লাগায় তার মাথাতেও। তারপর সাইমনের দিকে লক্ষ্য করে, গুলিটা লেগেছে বুকের মাঝামাঝিতে, ফুসফুসে গেঁথে গেছে হয়তো। এতো সহজে মরায় বরং আফসোস হয় কবিরের, কাঠ দিয়ে পিটিয়ে মারতে চেয়েছিল। এরপর ও স্নিগ্ধার দিকে এগোয়। স্নিগ্ধা বিছানার এক কোনায় নগ্ন দেহে গুটিশুটি মেরে বসে ছিল। কবির এসে বলে "তুই ঠিক আছিস তো?"
স্নিগ্ধা কোন জবাব না দিয়ে ওকে জড়িয়ে ওর বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে হুহু করে কেঁদে ওঠে।
"কাঁদিস না স্নিগ্ধা, আমাদের শক্ত হতে হবে। কাপড় পরে নে, এই এলাকা ছেড়ে অনেক দুর চলে যাব আমরা।" কবির বলে। ওর চোখ থেকেও অশ্রুধারা বইছে।
"আর কতো পালিয়ে থাকব আমরা। আমরা কি এমন অপরাধ করেছি?" স্নিগ্ধা বলে। এই প্রশ্নটির জবাব কবিরের কাছে নেই।
 
মেঝেতে নিথর হয়ে পড়ে থাকা সাইমন্ডের পকেটগুলো চেক করে কবির, একটি ওয়ালেট খুঁজে পায়, তাতে ক্রেডিট কার্ড আর কিছু খুচরা টাকা আছে। না, ক্রেডিট কার্ড নেয়া যাবেনা, ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এরপর সে রকির দিকে এগিয়ে যায়, পকেটে খুঁজতেই পাঁচশ টাকার একটি বান্ডিল খুঁজে পায়, সাথে সাথে নিজের পকেটে নিয়ে নেয়। কিন্তু লক্ষ্য করে রকির মাথা চুঁইয়ে রক্ত ঝরছে, আঘাতটা হয়তো একটু বেশী জোরেই লেগেছে। নিশ্বাস ও হার্টবিট চেক করে বুঝতে পারে মৃত।
ততোক্ষনে স্নিগ্ধা ওর জামাটা পরে নিয়েছে, কবিরকে নিশ্চল বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করে "কবির, চল। কি হল, কি ভাবছিস? "
"মরে গেছে। আমি খুন করেছি, নিজ হাতে।" রকির দেহটা দেখিয়ে কবির বলে।
"বেশ করেছিস। তাছাড়া তুই তো ইচ্ছা করে খুন করিস নি।" স্নিগ্ধা বলে।
"তারপরও, আমি কখনো চিন্তাও করতে পারিনি যে আমি কাউকে খুন করতে পারি।" বলে তারপর বাকি দুজনকে চেক করে কবির, দুজনই বেঁচে আছে। হঠাত ওর মাথায় এক আজগুবি খেয়াল আসে, কেন এ দুটোকেও খুন করে চারটাকে আসেপাশে কোথাও পুঁতে ফেলতে পারে না? কেউ খুঁজেও পাবে না। পর মুহুর্তে কবির চিন্তাটা মাথা থেকে সরিয়ে ফেলে।
"কি হল আবার, কি ভাবছিস?" স্নিগ্ধা বলে।
"কিছু না, চল বেরিয়ে যাই।" বলে স্নিগ্ধার হাত ধরে ও বেরিয়ে যায়। ততোক্ষনে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। ওরা পাহাড়ি পথে হাঁটতে থাকে, যতোক্ষনে ওরা পাশের গ্রামে পৌঁছায় ততোক্ষনে রাত হয়ে গেছে। পাহাড়ি রাস্তায় রাতের বেলা কোন বাস চলে না, তাই ওদের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ওরা আবারও রশিদের বাসায় ফিরে যায়। রসিদের ঝুপড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ডাকতেই দরজা খুলে দেয় ষোল সতেরো বছরের এক কিশোর, রফিক রশিদের ছেলে।
"আরে করিম ভাই! সাথে ভাবিও আছে, আইসেন আইসেন।" রফিক বলে।
কবির ও স্নিগ্ধা ভেতরে ঢোকে।
"আরে করিম, আবার আইছ যে?" রসিদ বলে।
"আইজকাই এই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি।" কবির বলে।
"তো, তোমার চেহারার এই অবস্থা কিভাবে হইল?"
"আর বইলেন না চাচা, আসার সময় পা ফসকে পাহাড় থেকে গড়াইয়া পড়ে গেছি। ঢাল বেশি খাড়া ছিল না বইলা বাঁইচা গেছি।" কবির বলে।
"কি সাংঘাতিক! তোমার লাগেনি তো বাবা। রফিক যা তো দেখ, নিমাই কবিরাজকে পাস কি না, সাথে নিয়া আয়" রসিদ উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলে।
"না চাচা, তেমন একটা লাগেনি, এমনিই ঠিক হয়ে যাবে, কবিরাজ ডাকার দরকার নাই।" কবির বলে।
কিন্তু ততোক্ষনে রফিক বেরিয়ে গেছে কবিরাজ আনতে।
"তা রাইতে রওনা দিলা কেন? কাল সকালে রওনা দিতে পারতা।"
"আসলে চাচা, আপনার এখান থেকে যাবার পর বাসায় ফিরে দেখি চারটা মুন্ডুকাটা ভুত। আমরা একটুর জন্য ধরা পড়িনি, পালিয়ে এসেছি।" কবির বলে।
"এবার বিশ্বাস হইল তো? বলছি না, ওইখানে থাইকো না? তবে তোমাদের ভাগ্য খুব ভাল, খুব কম মানুষ ঐখান থেইকা বাঁইচা ফিরতে পারছে।" রসিদ বলে। ততোক্ষনে রফিক কবিরাজ নিয়ে এসেছে। কবিরাজ কবিরের দেহের জখমগুলো দেখে এক শিশি ওষুধ দেয় এবং তা জখমের যায়গায় লাগাতে বলে। স্নিগ্ধা ও রফিক মিলে কবিরের জখমগুলোতে ওষুধ লাগিয়ে দেয়। তারপর ওরা একসাথে খেয়েদেয়ে শুয়ে পড়ে। একটিমাত্র ঘর, রশিদ ও তার ছেলে খাটে শোয়, স্নিগ্ধা ও কবির মেঝেতে শীতলপাটি পেড়ে শুয়ে পড়ে।
কিছুক্ষনের মাঝে কবির রসিদের নাক ডাকার শব্দ শুনতে পায়, কবির উঁকি দিয়ে দেখে রফিকও ঘুমিয়েছে।
স্নিগ্ধা অন্যপাশ হয়ে শুয়েছিল। কবির ওকে ফিসফিস করে ডাকে "জান, ঘুমিয়েছিস?"
স্নিগ্ধা ওর দিকে ফিরে বলে "না জান, ঘুম আসছে না, খুব চিন্তা হচ্ছে। ওর বাবা খুব ক্ষমতাবান লোক। আমাদের ওরা ছাড়বে না।"
"চিন্তা করিস না, ওরা আমাদের কিচ্ছু করতে পারবে না।" স্নিগ্ধাকে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে বলে কবির।
"তোর কামিজটা খোল তো।" কবির বলে।
"আমার এখন সেক্স করতে ইচ্ছা করছে না, দুষ্টমি করবি না।" স্নিগ্ধা বলে।
কবির নিজেও ওর কামিজটা গলা পর্যন্ত গুটিয়ে নেয়, ব্রাটিও ওপর দিকে তুলে দেয়। ওর সারা বুক জুড়ে খামচানোর দাগ ও কামড়ের জখম। বালিশের নিচে রাখা ওষুধের শিশি নিয়ে ওর বুকের জখমগুলোতে ওষুধ লাগাতে থাকে। ওষুধ লাগানো হয়ে গেলে ওর ব্রা ও কামিজ নামিয়ে দেয়। স্নিগ্ধা ওকে বাহুডোরে জড়িয়ে নেয়, একে অপরে মুখে চুমু দেয় কিছুক্ষন, তারপর ঘুমানোর চেষ্টা করে।
পরের দিন ওরা খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠে ও রওনা দেয়। কিন্তু বাস পেতে ওদের প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়।
ওরা বাসে করে প্রথমে বান্দরবান শহরে যাবে সেখান থেকে বরিশাল যাবে বলে ঠিক করেছে ওরা। বান্দরবান যাবার মাঝপথে একটি পুলিশ চেকপোস্টে আটকা পড়ে বাস। পুলিশরা বাস ট্রাক থামিয়ে চেক করছে। এ ধরনের চেকপোস্ট নতুন কিছু নয়, চোরাচালান ও পার্বত্য বিদ্রোহ রোধে মাঝে মাঝেই এ ধরনের চেকপোস্ট খোলা হয়। কিন্তু এতে ওদের ধরা পড়ার ভয়ও রয়েছে। কবির চারিদিকে চোখ বুলায়, পালানো প্রায় অসম্ভব, চারিদিকে সসস্ত্র পুলিশ ঘিরে রয়েছে।
"পুলিশের কাছে ধরা পড়লে কি করতে হবে বলেছিলাম, মনে আছে?" কবির ফিসফিস করে বলে।
"আমরা কি ধরা পড়ে যাচ্ছি, কবির?" স্নিগ্ধা ফিসফিস করে বলে।
"মনে হচ্ছে।" দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে কবির। তারপর আবার বলে "আমাকে ছুঁয়ে কথা দে, এরপর যতো কিছুই হোক, পরিস্থিতি যতো খারাপই হোক, যদি আমি মরেও যাই, তুই কখনোই আত্মহত্যার কথা ভাববি না।"
স্নিগ্ধার চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরে পড়ছে, ও বলে "তোকে ছাড়া কি করে বেঁচে থাকবো? সে আমি পারব না।" বলতে বলতে ওর গলা ধরে আসে। ও কবিরকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট চেপে চুমু দেয়। আশেপাশের প্যাসেঞ্জাররা ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে। কিন্তু ওদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই, একে অন্যের ঠোঁট প্রাণপন চুষে চলেছে, যেন মিটিয়ে নিতে চায় হাজার বছরের তৃষা।
"কথা দে স্নিগ্ধা।" ঘণ ঘন নিশ্বাস ফেলতে ফেলতে হাত বাড়িয়ে বলে কবির।
স্নিগ্ধা ওর হাতে হাত স্পর্শ করে বলে "কথা দিলাম।"
ততক্ষনে একজন পুরুষ ও একজন নারী পুলিশ বাসে ঢুকে তল্লাশি শুরু করেছে।
"ওদের দিকে তাকাস না, স্বাভাবিক থাকার অভিনয় কর।" কবির ফিসফিস করে বলে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয় না, কবিরের জখম ভরা মুখ ওদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়না। মেয়ে পুলিশটি সোজা ওদের সামনে এসে দাঁড়ায়, পকেট থেকে একটি ছবি বের করে নিজে মিলিয়ে দেখে তারপর সহকর্মীকে দেখায়।

রাত এগারোটা বাজে, সজল তার ফ্ল্যাটের ব্যালকনিতে বসে একের পর এক সিগারেট ফুঁকছিল। পরিস্থিতিটা ভীষণ গোলমেলে লাগছে ওর কাছে। সে কখনো চিন্তাও করতে পারেনি যে সাইমন্ড এভাবে মারা পড়বে। পরের সপ্তাহেই সজলের সিইও হিসাবে রোয়ান কন্সট্রাকশনে যোগ দেয়ার কথা ছিল, এর মধ্যে এ কেমন অঘটন ঘটে গেল। শুনেছে ছেলের মৃত্যুশোকে জিল্লুর রহমান মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে কবির ও স্নিগ্ধা পুলিশের কাছে ধরা পড়েছে, ওদেরকে আপাতত বান্দরবন সদর থানায় রাখা হয়েছে। ভাবছে কাল গিয়ে স্নিগ্ধাকে নিয়ে আসবে, ওকে ছাড়া এই একটা মাস খুব কষ্টে কেটেছে সজলের। কিন্তু নিজের দুর্বলতাকে প্রকাশ হতে দিবে না, ওকে কি শাস্তি দিবে সেই বিষয়ে ভাবছিল সজল। হঠাত সজলের মোবাইলে রিংটোন বেজে ওঠে, জিল্লুর রহমানের ফোন। সজলের গলাটা শুকিয়ে যায়, ও এক মুহুর্ত ভেবে ফোনটা রিসিভ করে।
"সজল, তুমি এক্ষুনি আমার ধানমন্ডির বাড়িটাতে এসো।" জিল্লুর রহমানের থমথমে কণ্ঠ শুনতে পায়। সজলের জবাবের অপেক্ষা না করেই ফোন কেটে দেয় জিল্লুর।
এতো রাতে জিল্লুর রহমানের বাড়িতে যাওয়া কি উচিত হবে? পাগল ছাগল মানুষ কি করে বসে ঠিক নাই। কিন্তু বিগ বসের ডাক উপেক্ষাও করা যায় না। সজল তার মোটরসাইকেলটা নিয়ে রওনা দেয়, আধাঘন্টার মাঝে ধানমন্ডির ঐশ্বর্য প্যালেসে পৌঁছে যায়। চারতলা একটি আলিসান বাড়ি, দেখেই বোঝা যায় যে জিল্লুর রহমান খুব সখ করে বানিয়েছেন। সজল এর আগেও সাইমন্ডের সাথে এসেছিল এই বাড়িতে, তাই সিকিউরিটি বিনা বাক্য ব্যয়ে ঢুকতে দেয়।
জিল্লুর রহমান চারতলায় বারান্দায় বসে ছিল, হাতে মদের গ্লাস। সজলকে ইশারায় বসতে বলে। জিল্লুর রহমান আপন মনেই বলতে থাকে "আমার ওয়াইফ চৈতি যখন মারা যায় তখন সাইমনের বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আমি আর বিয়ে করিনি, নিজের হাতে মানুষ করেছি ওকে। শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও ওর স্কুলের প্যারেন্টস ডে মিস করিনি কখনোই। যুবক বয়সে হয়তো একটু বখে গেছে কিন্তু ভেবেছিলাম বিয়ের পর ম্যাচুরিটি আসবে। মেয়েও পছন্দ করে ফেলেছিলাম, ওরও আপত্তি ছিলনা। সামনের সপ্তাহে এনগেজমেন্ট ডে-ও ফিক্সড ছিল, কিন্তু আজ ওর জানাজা পড়ে আসতে হল।"
চোখ মুছে আবার বলতে শুরু করে জিল্লুর, এবার কন্ঠটা বেশ গম্ভীর, "ঐদিন আমার ছেলের বান্দরবানে যাওয়ার কথা ছিলনা, নিজের হবু স্ত্রীর জন্য উপহার কেনার কথা ছিল। ঐদিন ও ওখানে গিয়েছে তোমার জন্য। যদি ওর মৃত্যুর জন্য আমি তোমাকে দায়ী মনে করি তবে কি খুব বেশী ভুল হবে?"
সজল লক্ষ্য করে জিল্লুর রহমানের এক হাতে একটি রিভলবার। ভয়ে ওর গলা শুকিয়ে যায়। কন্ঠ যতোটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে সজল বলে "আপনি যদি সাইমনের মৃত্যুর জন্য আমাকে দায়ী মনে করেন, যদি আমাকে হত্যা করে যদি আপনি শান্তি পান তবে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আপনাকে আমি বোঝাতে পারব না যে সাইমন্ডের মৃত্যুতে কতোটা ব্যাথিত আমি। ও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।"
"ভয় পেয়ো না, আমি তোমাকে খুন করবো না। কিন্তু যদি তুমি আমার কথা মতো না চলো তবে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবে।" জিল্লুর বলে।

"স্যার, এই রিভলবারটা আমাকে এক দিনের জন্য দিন। আমি কালকেই থানায় ঢুকে ঐ শুয়োরটাকে খুন করব। তারপর যদি আমার ফাঁসিও হয় তাতেও কষ্ট থাকবেনা।" সজল বলে।

"তোমার নাটক বন্ধ করো সজল। তুমি কি ভেবেছো, তুমি কতোবড় সাধু পুরুষ তা আমি জানিনা? তোমার হিস্ট্রি আমার জানা আছে। তাই কোনরকম চালাকি করার চেষ্টা করবে না। তবে হ্যাঁ, সাইমনের হত্যাকারী নিশ্চয়ই মরবে, তুমি কি ভেবেছো আমি ওকে এমনিতেই ছেড়ে দিব? ওর মৃত্যুতে পুরো দুনিয়া উল্লাস করবে, মানুষ থুতু ফেলবে ওর লাশের ওপর।" জিল্লুর বলে, ওর চোখে যেন প্রতিহিংসার আগুন জ্বলছে।
 
পঞ্চম পর্বঃ চোরাবালি

সোয়েব তার বাংলোর সামনে বাগানে পাতা চেয়ারে বসে ছিল, পাশে তার স্ত্রী। পড়ন্ত বিকেলে ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে তার সাথে আসছে গোলাপের মিষ্টি মধুর গন্ধ, সাথে আছে ঘরে ফিরে আসা পাখিদের কিচিরমিচির ডাক। এমন একটি সময় যেকোন নবদম্পতির জন্য রোমান্টিক হতে বাধ্য। কিন্তু পাশে স্ত্রীকে পেয়েও সোয়েব মগ্ন আছে একটি ইংরেজি থ্রিলার উপন্যাস নিয়ে। সুমির খুব বিরক্ত লাগছিল, সপ্তাহে এই একটি দিনই তো একটু কাছে পায় স্বামীকে, সেই দিনও কিনা সোয়েব বসে যায় তার বইপত্র নিয়ে। পত্রিকার বিনোদন পাতায় চোখ বুলাতে বুলাতে স্বামীকে আড়চোখে দেখে সুমি। সুমি কথা বলার একটি স্কোপ খুঁজতে থাকে, ও মনে করে সোয়েব খুন খারাপি, রক্তারক্তি ছাড়া কোন টপিকেই ইন্টারেস্ট পায়না। অবশ্য সোয়েবের পেশাটাও তেমনই, সে পুলিশে কাজ করে, এসিসট্যান্ট সুপারিন্টেনডেন্ট অব পুলিশ।
"এই তুমি আজকের পত্রিকা পড়েছ?" সুমি বলে।
"হুম" বই থেকে চোখ না সরিয়েই জবাব দেয় সোয়েব।
"এই খবরটা পড়েছ? এইযে, 'অপহরণের উনচল্লিশ দিন পর অপহৃতা তরুণী উদ্ধার, অপহরণকারী পার্বত্য অঞ্চলের ত্রাস ডাকু কিবরিয়া গ্রেফতার।' একই ঘটনা প্রথম পাতায় আরেকটি কলামে এসেছে।
'কয়েকজন যুবকের বীরত্বপুর্ণ অভিযান ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে তরুণী উদ্ধার।' এই খবরটা নিয়ে অনলাইনে খুব তোলপাড় হচ্ছে" সুমি বলে।
"এরকম খবর তো হরহামেশাই আসে পত্রিকায়, এখানে ইন্টারেস্টিং কি পেলে?" সোয়েব বলে।
"তুমি আসলে খবরটা পড়োই নি, তাই এরকম বলছে। আমি পড়ছি তুমি শোন।" বলে সুমি খবরটা পড়তে শুরু করে।
"গত শনিবার বান্দরবন জেলার রুমা উপজেলা থেকে সাদিয়া আক্তার নামে এক তরুণী গৃহবধূ উদ্ধার এবং অপহরনকারী কুখ্যাত ডাকু কিবরিয়া পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়। এর আগে নয়ই জুলাই কক্সবাজারে সী সেল হোটেলে হামলা চালিয়ে সাদিয়াকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ডাকু কিবরিয়া। তবে ঘটনাটির সুত্রপাত হয় প্রায় দশ বছর আগে, যখন সাদিয়ার বাবা আমিনুজ্জামান শাহরিয়ার কবির খান নামের পনেরো বছর বয়সী এক এতিম ছেলেকে আশ্রয় দেন। কবিরের বাবা মাসুদ খান ছিলেন আমিনুজ্জামানের বন্ধু। এক কার এক্সিডেন্টে কবির তার পরিবার হারিয়েছিল। আমিনুজ্জামান ও তার স্ত্রী শিরিন বেগম কবিরকে তাদের সন্তানের সমান আদর দিয়েই লালন পালন করেন। কবির মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্টে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তো, তখন সে সাদিয়াকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সাদিয়া তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং সজল আহমেদকে বিয়ে করেন। এতে কবির রাগে ক্ষোভে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রামে গিয়ে সে একটি ডাকাত দলে যোগ দেয় কিবরিয়া নামে, এবং এক বছরের মধ্যেই সে ডাকাত দলের দলপতিতে পরিণত হয়। কথিত আছে কবির ওরফে কিবরিয়া তার দলের দলপতি কাদেরকে একবার মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচিয়েছিল। সেই থেকে কিবরিয়া তার স্নেহভাজন ছিল এবং পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে মারা যাবার আগে কাদের কিবরিয়াকে দলপতি ঘোষনা করে। এরপর আরো চারটি বছর কেটে যায়, এর মধ্যে কিবরিয়া ও তার ডাকু দল পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাসে পরিণত হয়। গ্রামকে গ্রাম লুটপাট, হত্যা ধর্ষণ চালায় তারা অথচ পুলিশ তাদের নাগালই পায় না। কিবরিয়া যখন জানতে পারে যে সাদিয়া তার স্বামীর সাথে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছে তখন সে তার দলবল নিয়ে হামলা চালায় তাদের হোটেলে, সজল ও তার বন্ধু সাইমন্ড রহমানকে মারধর করে গুরুতর আঘাত করে সাদিয়াকে অপহরন করে নিয়ে যায়।
স্ত্রীকে হারিয়ে সজল মানসিকভাবে বিদ্ধস্ত হয়ে পড়ে। শুধু পুলিশের ওপর নির্ভর না থেকে সাইমন তার কিছু বন্ধুদের নিয়ে খুঁজতে থাকে, এবং এক মাসের নিরন্তর চেষ্টার পর খুঁজে পায় তারা কিবরিয়ার আস্তানা। কিন্তু তারা ধরা পড়ে যায় কিবরিয়ার লোকদের কাছে। পলাশ হাসান ও মুহিত তালুকদার আহত অবস্থায় পালিয়ে আসতে পারলেও সাইমন ও রকিবকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে কিবরিয়া ও তার লোকেরা। এরপর ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যাবার সময় কিবরিয়া পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। তার কাছে থেকে পুলিশ দুটি রাইফেল ও দশ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। সাদিয়া আক্তার ওরফে স্নিগ্ধা এখন এইড হসপিটালে চিকিৎসারত আছেন, বিগত একটি মাস তিনি ধর্ষণ এবং তুমুল শারিরীক ও মানষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ডক্টর শাহনাজ আক্তার বলেন ভিক্টিমের দেহে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে এবং তিনি অন্তঃসত্ত্বা। তবে ভিক্টিমের শারিরীক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক আঘাতটি অনেক বেশী গুরুতর।"
এই পর্যন্ত পরে সুমি থেমে যায়। তারপর বলে "আরে এই ধর্ষক ডাকাতটাকে না মিরপুর থানায় চালান করে দিয়েছে। এটা তো তোমার আওতাধীন।"
"হুম। তবে এখন পর্যন্ত ওর ফাইলটা দেখা হয়নি।" সোয়েব বলে।

"কি হল, কি ভাবছো?" সোয়েবকে চুপ মেরে থাকতে দেখে সুমি বলে।
"ভাবছি, আমাদের দেশের সাংবাদিকরা আজকাল হিন্দি সিনেমা খুব বেশি দেখছে। একেবারে হিন্দি সিনেমার প্লট, "শোলে টু" নাম দেয়া যায়।" সোয়েব বলে।
"তুমি কি বলতে চাইছো? এ সবই মিথ্যা, বানোয়াট?" তীক্ষ্ণ কন্ঠে বলে সুমি।
"আমি তা বলছি না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, মিডিয়া সবসময় যেকোন ঘটনাকে রংচং মাখিয়ে প্রচার করে। এই যেমন বলেছে যে কবির ডাকাত দলে যোগ দিল আর দলপতিকে বাঁচিয়ে হুট করে নিজে দলপতি হয়ে গেল। এরকমটা শুধু সিনেমাতেই সম্ভব, বাস্তবে নয়। এ কি নিজেই ডাকু কিবরিয়া নাকি কিবরিয়া বাহিনীর নবীন কোন সদস্য সে ব্যাপারে এখনো আমরা নিশ্চিত নই। ডাকু কিবরিয়ার কোন ফোটো পুলিশের কাছে নেই, একটা স্কেচ আছে, কিন্তু তা থেকেও নিশ্চিত হওয়া যায় না। আর সাইমন্ড রহমান, শিল্পপতি জিল্লুর রহমান ছেলে, যাকে তোমরা হিরো বানিয়ে ফেলেছো। খুব ভাল করে চিনি ওকে। বড়লোকের বখে যাওয়া ছেলে, সারাদিন নারী, মদ আর ইয়াবা নিয়ে থাকে। একবার তো মাতাল হয়ে গাড়ি চালাতে গিয়ে এক রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে দিয়েছিল, উল্টে রিকশাচালককে বন্ধুরা মিলে মারধোর করেছিল । আমি ওদেরকে এরেস্ট করেছিলাম, অবশ্য সাথে সাথেই ছেড়ে দিতে হয়েছে।" সোয়েব বলে।
"কেউ মাতাল হয়ে গাড়ি চালায় বলে সে যে কোন ভাল কাজ করতে পারে না তা জানলে কিভাবে তুমি? আর সে কিবরিয়া হোক বা না হোক, নিজের শৈশব কৈশোরের সাথিকে যে এমন নিষ্ঠুরভাব রেপ করতে পারে সে আর যাই হোক মানুষ নয়, নরপিশাচ সে।" সুমি বলে।
"হুম। এমন কেস আমি বহু দেখেছি। আসলে মানুষের ভালবাসা যত দৃঢ় হয়, সেই ভালবাসা যখন ঘৃণা বা ক্রোধে রুপান্তরিত হয় তখন সেই ঘৃণা বা ক্রোধও ততোটাই ভয়ংকর হয়।" সোয়েব বলে।
"যাও! ভালবাসা কখনো ঘৃণায় বা ক্রোধে রুপান্তরিত হয় নাকি!" উড়িয়ে দেবার ভঙ্গিতে বলে সুমি।
"আমি এমন কতো কেস দেখেছি! সিলেটে এক গৃহবধু পরকিয়া প্রেমে মজে প্রেমিকের সাথে মিলে তার স্বামী ও সন্তানকে হত্যা করে। অথচ সেই মহিলা প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেছিল। কেসটা আমি সলভ করেছিলাম।" সোয়েব বলে।
"ওটা ভালবাসা ছিলোই না। শুধু মোহ ছিল, মোহ উড়ে গেলেই ঘৃণা শুরু হয়ে যায়।" সুমি বলে।
"তাহলে ভালবাসা কি? আমাকে একটু শিখিয়ে দাওনা।" বলে সুমির হাত ধরে টেনে কোলে বসিয়ে জড়িয়ে নেয় সোয়েব।
"আচ্ছা ঠিক আছে। লিসন ওয়ান- ভালবাসা মানেই সেক্স নয়। লিসন টু - কাউকে ভালোবাসতে শেখানো যায়না, নিজে নিজের মতো করে ভালবাসতে হয়।" স্বামীর কোলে বসে ফিসফিস করে বলে সুমি।

"তাহলে সেক্সের কি কোন প্রয়োজন নেই?" সোয়েব বলে।
"প্রয়োজন আছে, তবে ততোটা নয়। ভালবাসা হল ভাত তরকারির মতো, যা নাহলে চলেই না, সেক্স হল চাটনির মতো, যা না হলেও চলে, কিন্তু থাকলে তা ভালবাসাকে আরো মধুর করে তোলে।" সুমি বলে।
"আমার খুব চাটনি খেতে ইচ্ছা করছে যে?" বলে সোয়েব সুমিকে আরো নিবিড়ভাবে জড়িয়ে নেয়, ফর্সা নিটোল গালে চুমু দিতে থাকে।
"এই কি করছো ছাড়ো, কেউ দেখে ফেলবে উম..." কথা শেষ করতে না দিয়ে সোয়েব ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরে চুমু দিতে থাকে।
"কে দেখবে? কেউ নেই এখানে।" বলে সোয়েব ওর সালোয়ার কামিজটা দু হাতে টেনে খুলে ফেলে ব্রার কাপগুলো নামিয়ে এনে বের করে আনে কদবেল আকৃতির দুটি ফর্সা স্তন, ওর ছিপছিপে দেহের সাথে খুবই সামঞ্জস্যপুর্ন। সোয়েব হামলে পড়ে ওর বুকে, একটি স্তনের খয়েরি বোঁটা বৃন্তসহ চুষতে থাকে। অন্য স্তনটি মুঠোর মাঝে নিয়ে টিপতে থাকে। হঠাত দীপার ভরাট স্তনগুলোর কথা মনে পরে যায় সোয়েবের, সেই স্তনগুলোতে মুখ ডুবিয়ে দেয়ার মাঝে একরকম সুখ ছিল, আবার সুমির ছোট ছোট গোলাকার স্তনগুলোকে মুখে পুরে নিয়ে কামড়ে দেয়ার মাঝে অন্যরকম সুখ।
সোয়েব যতোটা সম্ভব বড় হা করে স্তনটির প্রায় পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে নেয়, মাড়ি দিয়ে হালকা হালকা কামড়ে দিতে থাকে সোয়েব। মুখ ভর্তি নরম তুলতুলে মাংস কখনো হালকা কামড় দিতে দিতে ভাবছিল দিপার কথা। দিপা সোয়েবের কলেজ জীবনের প্রেমিকা। খুব ভালবাসতো ওকে, চেয়েছিল বিয়ে করতে। কিন্ত সেই বহুল প্রচলিত সমস্য, ষোল পেরোতে না পেরোতেই মেয়েদের বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়, আর ত্রিশের আগে ছেলেরা বিয়ের কথা চিন্তাও করতে পারে না। অবশ্য দীপা পালিয়েই বিয়ে করতে চেয়েছিল, সোয়েবেরই সাহস হয়নি।
"সেসব ভেবে আর লাভ নেই," মনে মনে বলে সোয়েব। সুমির স্তন ভক্ষনের দিকেই মন দেয় সোয়েব, পালা করে দুটো স্তনই চুষে কামড়ে একাকার করে দিতে থাকে। নিজের বুকে স্বামীর এমন উগ্র আক্রমণ খুব ভাল লাগে সুমির, ওর মাথাটা দুহাতে খামচে ধরে থাকে ও মুখে শিতকার দিতে থাকে।
হঠাত সোয়েব স্ত্রীকে কোলে নিয়ে উঠে দাড়ায় ও হেঁটে যেতে থাকে ঘরের দিকে। সুমি দুহাতে ওর স্বামীর ঘাড় জড়িয়ে ধরে ঝুলে ঝুলে যেতে থাকে। ছয় ফুট দুই ইঞ্চি লম্বা সুঠাম দেহের অধিকারী সোয়েবের পক্ষে সুমির পাতলা ছিপছিপে দেহটিকে তুলে নিয়ে সারাদিন হেঁটে বেড়ানোও সম্ভব।
সোয়েব বেডরুমে না গিয়ে বরং ডাইনিংরুমে গিয়ে টেবিলের ওপর বসিয়ে দেয় সুমিকে। পেন্টি সমেত টেনে খুলে ফেলে সুমির পরনের পায়জামা, হালকা রেশমি বালে ভরা যো উপত্যকা নজরে আসে। সোয়েব ওর দু পা দুদিকে সরিয়ে দিয়ে উন্মোচন করে লাল টুকটুকে যোনী চেরা। সোয়েব ওর একটি আঙুল যোনির ছোট্ট সংকীর্ন ফুটোয় ঢুকিয়ে দিয়ে বুঝতে পারে যে ওর লিঙ্গটা ঢোকানোর জন্য যথেষ্ট ভিজে যায়নি। সোয়েব ওর মুখ ডুবে দেয় যোনী চেরায়, ক্লিটটাকে দু' আঙুলে ডলতে ডলতে চুষতে থাকে যোনীছিদ্র অনবরত। সুমি শিতকার দিতে দিতে সোয়েবের মাথাটা খামছে চেপে ধরে।
কিছুক্ষন পর সোয়েব উঠে দাড়ায়, নিজের শার্টটা খুলে, প্যান্টটা খুলতে যেতেই ওর মোবাইলটা বেজে ওঠে। মিরপুর থানার ওসির ফোন, সোয়েব রিসিভ করে।
"হ্যালো স্যার, আমি মইনুল।"
"হ্যাঁ চিনতে পেরেছি। বলুন।" সোয়েব বলে।
"ডিসিপি স্যার আসছেন থানায়।"
"কোন ডিসিপি? আর কখন আসছেন?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"ডিসিপি নুরুল হুদা। এখনি আসছেন, আমাকে একটু আগেই কল করে জানিয়েছেন।" মইনুল বলে।
"কেন আসছেন সে ব্যাপারে কিছু জানিয়েছেন?"
"না স্যার।"
"ঠিক আছে। আমি আসছি।" বলে সোয়েব ফোন কেটে দেয়।
"কি গো যেতে হবে?" সুমি দীর্ঘশ্বাস লুকিয়ে বলে।
"যাও, তাড়াতাড়ি ফিরবে কিন্তু।" সোয়েবকে চুপ থাকতে দেখে বলে সুমি।
সোয়েব চটপট ইউনিফর্ম পরে নিয়ে সার্ভিস জিপটা নিয়ে বেরিয়ে যায়। রাস্তায় প্রচুর জ্যাম থাকায় দশ মিনিটের রাস্তা এক ঘন্টা লেগে যায়। ছুটির দিন এতো জ্যাম থাকার কথা ছিলনা, কিন্তু রাস্তা মেরামতের কাজ চলায় হঠাত এমন জ্যাম লেগে গেছে। সোয়েব মিরপুর থানার সামনে এসে দুটি প্রাইভেট কার দেখতে পায়, সোয়েব একটিকে চেনে, ডিসিপি সাহেবের। থানায় ঢুকে কনস্টেবলদের জিজ্ঞাসা করে সোয়েব, তারা জানায় যে ডিসিপি সাহেব আধা ঘন্টা আগেই এসেছেন। তিনি এবং সাথে একজন গেস্ট ভেতরে স্পেশাল সেলে গেছে যেখানে নতুন আসামীকে রাখা হয়েছে। সোয়েব সেলটিতে গিয়ে দেখে সাদা সুট পরা একজন মধ্যবয়সী মোটাসোটা লোক হাতে লাঠি নিয়ে বেঁধে রাখা আসামী কবির ওরফে কিবরিয়াকে জোরে জোরে পেটাচ্ছে আর গালাগালি দিচ্ছে। সারা ঘর লাঠির বাড়ির ধুপধাপ শব্দ, আর্তনাদ আর গালাগালিতে ভরে উঠছে। ওসি মইনুল আর ডিসিপি নুরুল হুদা খানিকটা তফাতে দাড়িয়ে তামাশা দেখছে। আসামীদের টরচার করার জন্য পুলিশদের বিশেষ ট্রেনিং দেয়া হয়, পুলিশরা সাধারনত এমন যায়গায় আঘাত করেনা যাতে আসামীর মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু এই লোকটির তেমন কোন ট্রেনিং নেই, বিশেষ করে যেভাবে সে লাঠি দিয়ে বুকে আঘাত করছে তাতে যেকোন সময় বুকের হাড় ভেঙে আসামী মারা যেতে পারে।
সোয়েব এগিয়ে গিয়ে সেলুট দেয় ডিসিপিকে। তারপর ফিসফিস করে বলে "এভাবে চলতে থাকলে আসামী মারা যেতে পারে। আসামী মারা গেলে এর দায়ভার কে নেবে স্যার?"
নুরুল হুদা অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সোয়েবের দিকে। অধীনস্ত কেউ যে এভাবে কথা বলতে পারে তার সাথে তা বিশ্বাস হতে চায় না, কিন্তু মুখে কিছু বলে না। এগিয়ে যায় লোকটার দিকে।
"আরে বদরুল সাহেব, আপনি তো ঘেমে ধুয়ে যাচ্ছেন। চলুন একটু রিল্যাক্স করি।" নুরুল হুদা বলে।
"না, ডিসিপি সাহেব। এই বাস্টার্ডটাকে যমের বাড়ি না পাঠিয়ে আমি দম নিব না।" বলে আবার লাঠি দিয়ে সপাটে বাড়ি দিতে থাকে কবিরের বুকে আর পিঠে।
"রিল্যাক্স বদরুল সাহেব। আপনার ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাবে তো। আমার অফিসাররা আছে কি করতে?" বলে হাত বাড়িয়ে লাঠিটা নেয় তারপর মইনুলের হাতে লাঠিটা দেয়। মইনুল ওদেরকে দেখিয়ে দেখিয়ে পেটাতে থাকে কবিরকে। ডিসিপি আর বদরুল সেল থেকে বেরিয়ে যেতেই সোয়েব খেঁকিয়ে ওঠে "স্টপ ইট মইনুল। আসামী মরে গেলে তার দায়ভার কে নেবে? না ডিসিপি সাহেব, না আমি। দায় পড়বে তোমার ওপর। তারপর পোস্টিং খাগড়াছরি কিংবা সুন্দরবন। যেতে চাও?"
"সরি স্যার।" মইনুল বলে।
"খোল ওকে।"
একটি নলাকার পিলারের সাথে বাঁধা ছিল কবির। সে অবস্থাতেই অজ্ঞান হয়ে গেছে সে।
 
কবিরকে চেয়ারে বসিয়ে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনে মইনুল।
"পানি..." অস্ফুট স্বরে বলে কবির।
সোয়েব গ্লাসে পানি ভরে কবিরের হাতে দেয়। কবির এক ঢোঁকে পুরোটা খেয়ে নেয়।
"রিমান্ড পাশ করিয়েছো মইনুল?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে ময়নুলকে।
"জি স্যার। দশ দিনের চেয়েছিলাম, কোর্ট সাত দিনের দিয়েছে।" মইনুল বলে।
"বাইরের লোককে কখনই আসামীদের ওপর হাত ওঠাতে দিবে না।"
"জি স্যার, কিন্তু যদি ওপরওয়ালারা বলেন তো আমি কি করতে পারি স্যার?"
"ওপরওয়ালাদের বলবে তারা যেন লিখিত নির্দেশ দেন।" সোয়েব বলে।
"জি স্যার।"
"এখন যেতে পারো। আমি একটু পর যাবো।" সোয়েব বলে।
"জি স্যার" বলে সেলুট দিয়ে মইনুল চলে যায়।
সোয়েব এবার কবিরের দিকে লক্ষ করে, উস্কোখুস্কো চুল, মুখভর্তি খোঁচাখোঁচা দাড়ি। ওর দিকেই তাকিয়ে আছে, কিন্তু দৃষ্টিতে শুন্যতা। বয়স কতোই বা হবে, পঁচিশ কিংবা ছাব্বিশ হবে। এই ছেলেটাই সেই পার্বত্য চট্টগ্রামের ত্রাস কিবরিয়া ডাকাত, বিশ্বাস হতে চায় না। কিন্তু সোয়েব তার অভিজ্ঞতা থেকে জানে অনেক ঘাঘু অপরাধীদেরও নিষ্পাপ চেহারা থাকতে পারে।

"কি নাম তোর?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"কবির।"
"পুরো নাম বল।"
"শাহরিয়ার কবির খান।" বলতে গিয়ে ব্যাথায় কাতরিয়া ওঠে কবির।
"বয়স কতো?"
"পঁচিশ বছর সাত মাস ছাব্বিশ দিন।" একমুহর্ত থেমে বলে কবির।
"এই বয়সেই ত্রিশ পাহাড়ি গ্রাম আর পঞ্চাশ বাস লুট, ষাটজন অপহরণ, চল্লিশ রেপ আর পঁয়ত্রিশ খুন। চমতকার ট্র্যাক রেকর্ড তোর।" ঠোঁটের কোনায় ধুর্ত হাসি রেখে বলে সোয়েব।
"সবকিছু যদি জেনেই গিয়ে থাকেন তখন কেন অযথা জিজ্ঞাসাবাদ করছেন স্যার? আপনিও কি ওসি সাহেবের মতো দোষ স্বীকার করে নেয়ার জন্য মারধোর করবেন?"
"চুপ শালা কুকুরের বাচ্চা, আমাকে রাগাবি না। আমি সহজে কাওকে মারি না, কিন্তু যে আমাকে লাঠি ধরতে বাধ্য করে সে যতদিন বেঁচে থাকে দিনে দুইবার আমার নাম জপে, রাতে শোয়ার সময় আর সকাল ঘুম থেকে ওঠার সময়।" সোয়েব রেগে বলে।
"আমি এমনিতেও আপনার কথা চিরদিন স্মরণ রাখব স্যার। রাস্তায় পড়ে থেকে ধুঁকে ধুঁকে মরতে থাকা কোন কুকুর যদি পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া কোন পথচারীর চোখে ঘৃণার বদলে করুণা দেখতে পায় তবে হয়তো সেই পথচারীকে মৃত্যুর আগের মুহুর্ত অব্দি মনে রাখে।"
"তোর জন্য আমার কোন সহানুভুতি নেই। আমি শুধু আমার কর্তব্য করেছি।" শীতল কন্ঠে বলে সোয়েব।
"নিজের কর্তব্যটাই বা কতোজন করে স্যার?" কবির বলে।
সোয়েব কিছুক্ষণ নিরব থাকে, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখতে থাকে কবিরকে।
"আচ্ছা ঠিক আছে, তুইই বল। হঠাত করে কেন উধাও হয়ে গেলি? কোথায় গেলি, কোথায় কোথায় ছিলি এতোদিন।" সোয়েব বলে।
কবির চেয়ারে হেলান দিয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে বলতে থাকে সেই সময়ের পরিস্থিতি, ওর হারিয়ে যাওয়া, এরপর কবিরের ভবঘুরে জীবন। আচানক স্নিগ্ধার সাথে দেখা হওয়া, স্নিগ্ধাকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়া ও স্বপ্নময় দিনগুলো তারপর হঠাত দুঃস্বপ্নের সেই দিনটি অতঃপর ওদের ধরা পড়ে যাওয়া। সোয়েব শুনতে শুনতে নোট করতে থাকে।
"তার মানে তুই ধোয়া তুলসী পাতা, তোর কোন দোষ নেই। সবই তোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র?" সোয়েব বলে।
"আমি তা বলছি না। আমি দুটি খুনের সাথে জড়িত, যার একটি আমার নিজ হাতে হয়েছে যদিও তা আত্মরক্ষার্থে।" কবির বলে।
"আমি নিজে তোর দেয়া তথ্যগুলো যাচাই করব। যদি সত্যিই নির্দোষ হয়ে থাকিস তবে তোর ভয় নেই।" সোয়েব বলে।
সোয়েবের বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত এগারোটা বেজে যায়। বাসায় ফিরে সোয়েব আবারো ডায়েরিটা খুলে দেখে, এতে কবিরের উল্লেখ করা বিভিন্ন ব্যাক্তির নাম আর ঠিকানা রয়েছে। হতে পারে কবির যা বলেছে তার পুরোটাই বানানো, কিন্তু যদি সত্য হয়ে থাকে তবে এক বিশাল অনর্থ ঘটতে যাচ্ছে, এমন কিছু ঘটতে কিছুতেই দেয়া যায় না। সোয়েব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলল কালকেই তদন্তে বেরিয়ে পড়বে।
"এই, কি গো খাবে না? কতো দেরি করে ফিরলে, এখন আবার কাজ নিয়ে বসে পড়লে যে?" সুমি বলে।
"না গো, খেতে ইচ্ছা করছে না। তুমি খেয়ে নাও না লক্ষিটি?" সোয়েব বলে।
"তোমাকে ছাড়া খেয়েছি কখনো?" বলে সুমি অন্য ঘরে চলে যায়।
সোয়েব তখন এসপি গৌতম রায়কে কল করে।
"হ্যালো স্যার, ঘুমিয়ে পড়েছিলেন নাকি? ডিস্টার্ব করলাম?" সোয়েব বলে।
"না সোয়েব। বলো।" গৌতম বলে।
"আসলে স্যার, আমার সপ্তাহ খানেকের ছুটি প্রয়োজন।"
"বউকে নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাবে নাকি?"
"জি স্যার, শশুর বাড়ি থেকে একটু ঘুরে আসতাম।" সোয়েব বলে।
"বেশ, বেশ, যাও তাহলে, চিন্তা কোরোনা আমি এ দিকটা সামলে নেব।"
"থ্যাংক ইউ স্যার।" বলে ফোন কেটে দেয় সোয়েব।
এবার স্ত্রীর মান ভাঙানোর পালা, সোয়েব প্লেটে ভাত তরকারি বেড়ে নিয়ে বেড রুমে যায়। সুমি বিছানার একপাশে বসে একটি বই নাড়াচাড়া করছিল। সোয়েব ওকে হাতে তুলে খাওয়াতে চায়। সুমি মানা করে বলে "আমার খিদে নেই।"
"এই যে দেখ আমিও খাচ্ছি।" বলে নিজে খায় সোয়েব। তারপর স্ত্রীকে খাওয়ায়।
রাতের খাবার শেষ করে ওরা শুয়ে পড়ে। সোয়েব ফিসফিস করে বলে "মাকে দেখতে ইচ্ছা করে না?"
"হুম, খুব করে। তুমি যাবে?" সুমি বলে।
"আসলে একটা জরুরি কাজে এক সপ্তাহের জন্য আমাকে শহরের বাইরে যেতে হবে। ভাবছিলাম তোমাকে মার কাছে রেখে আসি।" সোয়েব বলে।
সুমির কিছুটা আশাভঙ্গ হলেও সেটা বুঝতে না দিয়ে বলে "ঠিক আছে।"
"একটু চাটনি খেতে দাও না।" সোয়েব বলে।
"না, এখন হবে না।"
"এক সপ্তাহ তো আর চাটনি পাব না, তাই আজ রাত মন ভরে চাটনি খাব।" বলে সোয়েব সুমির নরম দেহটি জড়িয়ে নেয়।

রাত আটটা বাজে, সজল তার প্রাইভেট কারটি স্নিগ্ধাদের বাড়ির সামনে দাঁড় করায়। নিসান ভার্সাটি কোম্পানি থেকে দিয়েছে। তবে সজল নিশ্চিত কিছু দিনের মাঝে তার নিজের টাকায় এর চেয়ে দামি গাড়ি কিনতে পারবে। তিন দিন আগেই সে রোয়ান কন্স্ট্রাকশন লিমিটেডের সিইও হিসাবে জয়েন করেছে। এতো দ্রুত গতিতে এতো উন্নতি কেউ কখনো ভাবতেই পারে না, আর সজল সেখানে প্রায় পৌঁছে গেছে। এখন শুধু একটা কাজ বাকি, তাহলেই চাকরী পরিপক্ক হয়ে যাবে। আজ সকালেই স্নিগ্ধার বাবা কল করে আসতে বলেছে, কেন তা সজল ভাল করেই জানতো। আজকের সকল প্রধান পত্রিকায় স্নিগ্ধার উদ্ধার ও কবিরের ধরা পড়ার খবরটি ছেপেছে। সজল গতকাল রাতেই বগুড়ায় এসেছে, লোকও ঠিক করে রেখেছে স্নিগ্ধার বাবা মার ওপর নজর রাখার জন্য। ইচ্ছা করেই সে দেরি করে এসেছে।
কলিংবেল বাজতেই জামান দরজা খুলে দেয়। সজল সালাম দিয়ে বলে "কেমন আছেন বাবা?"
"ভাল। ভেতরে এসো।"
সজল ড্রয়িংরুমে সোফায় বসতেই শিরিন ছুটে আসে। "এটা কি সজল? পত্রিকা এসব কি আবোল তাবোল লিখেছে? স্নিগ্ধা, কবির কোথায়?" শিরিন চেঁচিয়ে বলে।
"আসলে হয়েছেটা কি, ইয়ে মানে..." শিরিনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টির সামনে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে অসহায় লাগে সজলের, থতমত খেয়ে যায়।
"কি হল? বল এসব কি?" আবারো চেঁচিয়ে বলে শিরিন।
"একটু শান্ত হোন মা, বসুন এখানে। আমি সবকিছু বুঝিয়ে বলছি।" সজল বলে।
একটু থেমে সজল বলতে শুরু করে, ততক্ষনে জামানও এসে এক পাশে বসেছে। "আসলে পরিস্থিতি এমন দিকে যে মোড় নিতে পারে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমিই আমার বন্ধু সাইমন্ডকে বলেছিলাম ও যেন স্নিগ্ধার খোঁজ করে। ওরা একমাস খোঁজাখুজির পর খুঁজেও পায়, বান্দরবনে এক পাহাড়ে পরিত্যক্ত বাড়ীতে ওরা ছিল। সেদিন সেখানে কি হয়েছিল আমি জানিনা, কিন্তু পরের দিন ঐ বাড়ি থেকে সাইমন্ড আর তার বন্ধুর লাশ উদ্ধার হয়। আর পালিয়ে যাওয়ার পথে স্নিগ্ধা আর কবির পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।"
"কিন্তু পত্রিকায় এসব কি লিখেছে? কিবরিয়া ডাকাত, স্নিগ্ধার অপহরণ, এসব কি? আমার কবির কাউকে খুন করতে পারে না, ও ডাকাত হতে পারে না। আর স্নিগ্ধা নিজের ইচ্ছাতে ওর সাথে পালিয়েছে, ও ফোনে আমাকে বলেছে।" শিরিন বলে।
"এসবই সাজানো। সাইমন্ডের বাবা ছেলের মৃত্যুশোকে পাগল হয়ে গেছে। এই পাগলামোটা ওনারই সাজানো। উনি সাইমন্ডের মৃত্যুর জন্য কবিরকে দায়ী মনে করেন।" সজল বলে।
"কবির কাউকে খুন করতে পারে না। ওকে কোন থানায় রেখেছে? আমি এক্ষুনি যাব, পুলিশকে সব সত্যি সত্যি জানাব।" শিরিন বলে।
"ঐ ভুল করবেন না মা। আপনি জিল্লুর রহমানকে চেনেন না, দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধরদের মাঝে তিনি একজন। আপনি যদি পুলিশকে সবকিছু বলেনও, ওনার তা ধামাচাপা দিতে সময় লাগবে না। আর আমাকে হুমকি দিয়েছেন তিনি, আমি বা আপনারা যদি পুলিশকে সত্যিটা বলে দেয়ার চেষ্টা করি তবে উনি স্নিগ্ধাকে খুন করবেন। এমন কিছু নেই যা তার পক্ষে করা সম্ভব না।" সজল বলে।
শিরিন কিছুক্ষন স্তব্ধ হয়ে থাকে তারপর উঠে গিয়ে নিজের ব্যাগ গোছাতে শুরু করে।
"কি করছো তুমি?" জামান বলে।
"রাতের বাসেই রওনা দিব ঢাকার উদ্দেশ্যে। কোন থানা যেন? মিরপুর থানা?" শিরিন বলে।
"তুমি কি পাগল হয়ে গেছো? শুনলে না কি বলল? ওরা স্নিগ্ধাকে মেরে ফেলবে। " জামান বলে।
হঠাত হুহু করে কেঁদে ফেলে শিরিন। জামান ওকে জড়িয়ে নেয়।
"এভাবে চুপ থাকলে তো কবিরের ফাঁসি হয়ে যাবে সেটা কিভাবে সইব বলো?" কাঁদতে কাঁদতে বলে শিরিন।
 
সেই সপ্তাহটি সোয়েবের বেশ ছোটাছুটির মাঝে কেটে গেল। প্রথমে সুমিকে রেখে আসে মুন্সিগঞ্জে, ওদের গ্রামের বাড়িতে। সেখান থেকে সিলেটে যায় সে, কবিরের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী মনিরুজ্জামানের সাথে দেখা করে সে। সোয়েব নিজের পরিচয় দেয় একজন প্রাইভেট ডিটেক্টিভ হিসেবে এবং মনিরুজ্জামান ও তার মেয়ে ঐশিকে কবিরের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তাদেরকে কবিরের গ্রেফতার হওয়ার বিষয়ে কিছু জানায় না বরং হারিয়ে যাওয়া কবিরকে খোঁজার জন্য কবিরের আত্মীয়রা তাকে কন্টাক্ট করেছে বলে জানায় সে। সে রাতটি সোয়েব সেখানেই কাটিয়ে দেয়, পরের দিন সকাল বেলা সে রওনা দেয় রংপুরের উদ্দেশ্যে। রংপুরে পল্লিবিদ্যুত সমিতির শাখায় কবির লাইনম্যান হিসাবে কাজ করেছে ছয় মাস। সেখানে গিয়ে সোয়েব শ্রমিক ও অফিসারদের কবিরের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে, কবিরের ছবি দেখে কয়েকজন শ্রমিক ও অফিসার চিনতে পারে। তবে তারা করিম নামে চেনে কবিরকে। রংপুর থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় সোয়েব। যশোর বেনাপোল বর্ডার এলাকায় বিজিবি ক্যাম্পে বাবুর্চির কাজ করেছে কবির। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোয়েব রওনা দেয় কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে। কক্সবাজারে হোটেল সীসেলে যখন পৌঁছে ততোক্ষণে রাত হয়ে গেছে। সোয়েব একটি রুম নিয়ে নেয়। লাগেজ নিয়ে আসা কমবয়সী ওয়েটারের হাতে এক হাজার টাকার একটি নোট তুলে দেয় সে।
"থ্যাংক ইউ স্যার", চোখে মুখে কৃতজ্ঞতা ফুটিয়ে তুলে বলে ওয়েটারটি।
"তোমার নাম কি?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"মাহমুদ, স্যার।"
"দুই মাস আগে যখন এই হোটেলে এসেছিলাম তখন এক ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছিল, সেও ওয়েটার। কি যেন নাম ছেলেটার? কবির নাকি করিম? ও হ্যাঁ করিম উদ্দিন। ওকে একটু পাঠিয়ে দাও তো মাহমুদ।" সোয়েব বলে।
"ক.. করিম ভাই তো নাই।" থতমত খেয়ে বলে মাহমুদ।
"নাই মানে? চাকরি ছেড়ে দিয়েছে?"
"না স্যার, ইয়ে মানে, করিম নামে কেউ নাই, আমার জানা মতে এই নামে কেউ ছিলও না।" মাহমুদ বলে।
সোয়েব এক মুহুর্ত চুপ থাকে তারপর বলে "আচ্ছা, যাও।"
ওয়েটার ফিরে যায়। সোয়েব স্পষ্ট বুঝতে পারে যে সে মিথা কথা বলছে। এটাও বুঝতে পারে যে কবিরের বিষয়ে মুখ খুলতে কড়া নিষেধ আছে হোটেল ম্যানেজমেন্টের। সেই রাতটি সোয়েব হোটেলেই কাটিয়ে দেয়, পরের দিন হোটেলটির আসেপাশে ঘুরে দেখে সোয়েব। হোটেলটার পেছন দিকে একটি চায়ের দোকান খুঁজে পায় সোয়েব। সে লক্ষ্য করে হোটেলের ওয়েটারের পোশাক পরিহিত কয়েকজন সে দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছে। সোয়েব চায়ের দোকানটিতে গিয়ে এক কাপ চায়ের অর্ডার দেয়, একটি চেয়ারে বসে পত্রিকায় চোখ বুলাতে বুলাতে আড়চোখে সবার দিকে লক্ষ্য করে। কিছুক্ষনের মাঝে ওয়েটারের পোশাক পরা লোকগুলো চলে গেল এবং স্টলটি ফাঁকা হয়ে গেল। সোয়েব উঠে চায়ের দোকানদারের সামনে গিয়ে কবিরের ছবিটা ধরে জিজ্ঞাসা করে "দেখেন তো একে চিনতে পারেন কিনা?"
মধ্যবয়সী লোকটি সোয়েবকে ওপর থেকে নিচ অব্দি একবার দেখে নিয়ে বলে "স্যার আপনে কি পুলিশের লোক?"
"কেন? পুলিশকে কি কোন ইনফরমেশন দেয়া যায় না?"
"না মানে আসলে আমি গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। কোন ঝামেলায় জড়াতে চাই না।" লোকটা বলে।
"সত্যি সত্যি না বললেই ঝামেলায় পড়বে।" সোয়েব বলে।
লোকটা এবার ছবিটার দিকে লক্ষ্য করে বলে "মনসুরের ভাইস্তার মতোই তো মনে হচ্ছে।"
"ভাল ভাবে দেখে বলেন।" সোয়েব বলে।
"হ্যাঁ, এইটা মনসুরের ভাইস্তা। তিন মাস কাজ করেছে এই হোটেলে। তারপর হঠাত গায়েব হয়ে গেছে।"
"গায়েব হয়ে গেছে?"
"কেউ বলে চুরি করে পালিয়েছে, কেউ বলে ছোট সাহেব মেরে তাড়িয়েছে।"
"ছোট সাহেবটা কে?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"হোটেলের মালিকের ছেলে।" দোকানদার বলে।
"আর মনসুর কি এখনো আছে?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"না, নাই। ভাইস্তা গায়েব হওয়ার কয়েকদিন পর চাকরি ছাইড়া মনসুর মিয়াও চইলা যায়।"
"মনসুরকে কোথায় পাওয়া যাবে বলতে পারেন?"
"না স্যার। ওর বাড়ি কুমিল্লায়, এর বেশি কইতে পারি না।"
"ধন্যবাদ, আমি যে এইসব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি তা যেন কেউ না জানে। জানলে আপনি বিপদে পড়বেন।" বলে সোয়েব বিল মিটিয়ে চলে যায়।

হোটেল ছেড়ে সোয়েব বান্দরবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বাসে উঠে তার ডায়েরিটা একবার খুলে দেখে সে। এপর্যন্ত কবিরের প্রত্যেকটি তথ্য সত্য বলেই প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু তা তাকে পুরোপুরি নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। সোয়েব নিশ্চিত যে কবির কিবরিয়া ডাকাত নয়, ডাকাত দলের সদস্যও নয়। কিন্তু আরেকটি গুরুতর অভিযোগ হল সাদিয়াকে কিডন্যাপ এবং রেপ। শেষের কয়েকটি সাক্ষ্য গুরুত্বপুর্ন।
সোয়েব যতক্ষনে অনসুং গ্রামটিতে পৌঁছালো ততক্ষনে দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। ছোট্ট একটি গ্রাম, সেখানে রশিদ শেখকে খুঁজে পেতে সোয়েবের কোন সমস্যা হল না। রসিদের ঝুপড়ির দরজায় নক করে, ভেতর থেকে আওয়াজ আসে "কে?"
সোয়েব কোন জবাব না দিয়ে আবার নক করে। কয়েক সেকেন্ড পর দরজাটা খুলে যায়, ভেতরে রুগ্ন জীর্ন একজন বৃদ্ধ।
"তুমি কে বাবা?" রশিদ শেখ জিজ্ঞাসা করে।
"আমাকে আপনি চিনবেন না, দেখেন তো একে চেনেন কিনা?" বলে সোয়েব কবিরের ছবিটা দেখায়।
রশিদ শেখ এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে আশে পাশে কেউ আছে কিনা তারপর সোয়েব ভেতরে আসার জন্য ইসারা করে।
"আপনে কি পুলিশের লোক?" রশিদ চেয়ার এগিয়ে দিতে দিতে জিজ্ঞাসা করে।
"না চাচা।" সোয়েব মিথ্যা বলে।
"তাহলে কি মেয়ের আত্মীয়?" রশিদ বলে।
সোয়েব একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়, কিন্তু মুখে তা প্রকাশ করে না। সাদিয়ারও একটি ফোটো ছিল ওর কাছে সেটা বের করে দেখিয়ে বলে "ও আমার ছোট বোন।"
"হ বুঝছি তো। অরা একজন আরেকজনকে ভালবাসে, বিয়া করছে। আর তাছাড়া কার বিয়া কার সাথে হইব তা তো ওপরওয়ালা ঠিক করে, তোমরা কেন এর মইধ্যে বাগড়া দিতে উইঠা পইরা লাগছ বাপু?" রশিদ বলে।
"ওরা বিয়ে করেছে? আমি তো শুনেছিলাম আমার বোনকে অপহরণ করেছে।" সোয়েব বলে।
"কি সব আজগুবি কথা কও?" অবাক হয়ে বলে রশিদ।
"ওরা কি আপনার এখানেই ছিল?" সোয়েব বলে।
"না, ওরা পাহাড়ে থাকতো, এখান থেইকা দুই মাইল দুরে। মাঝে মাঝে আমার কাছে আসতো মাছ বেচতে।"
"করিম কি সবসময় একাই আসতো?" সোয়েব জিজ্ঞাসা করে।
"নাহ, সবসময় আপনের বইন সাথে আসতো।"
"এখন ওরা কোথায়?" কন্ঠে গাম্ভীর্য ফুটিয়ে তুলে জিজ্ঞাসা করে সোয়েব।
"কিছুদিন আগে এই এলাকা ছাইড়া চইলা গেছে। কোথায় গেছে কিছু বলেনি আমারে।" রশিদ বলে। সেই মুহুর্তে একজন পনেরো ষোল বছরের কিশোর ঢোকে ঘরে।
"ও আমার পোলা রফিক।"
"ও আচ্ছা। কোন ক্লাসে পড় রফিক?" সোয়েব বলে।
রফিক কোন জবাব দেয় না, শুধু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
"এইবার দাখিল দিব ও।" রশিদ বলে।
"পত্রিকায় পড়েছিলাম এই এলাকায় নাকি দুইটা খুন হয়েছে কিছু দিন আগে।" সোয়েব বলে।
"হ, ঐ ভুতের পাহাড়ে। করিম তার বউ নিয়া ঐ পাহাড়েই থাকতো। তয় ভুতেরা ভাল মানুষদের কিছু বলে না, কেউ কুমতলবে গেলে খতম কইরা দেয়।" রশিদ বলে।
"ভুতের পাহাড়!" অবাক হয়ে বলে সোয়েব।
"সবাই তাই বলে, কেউ দিনের বেলায়ও ঐ পাহাড়ের আসেপাশে যায় না।"
"রফিক, তুমি চেনো পাহাড়টা?"
রফিক হ্যাঁ বোধক ভাবে মাথা নাড়ে।
"আমাকে নিয়ে যাবে?"
"আমার ডর লাগে।" রফিক এইই প্রথম মুখ খোলে।
"কাছে যেতে হবে না দুর থেকেই দেখিয়ে দিবে।"
রফিক সম্মতির ভঙ্গিতে মাথা নাড়ে।
"বেশি কাছে যাইসনা রফিক।" রশিদ বলে। "আর আপনেও বেশি কাছে যাইয়েন না।" সোহরাবকে বলে রশিদ।
সোয়েব রফিকের সাথে রওনা দেয় উঁচু নিচু, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তায়। প্রায় দেড় ঘন্টা হাঁটার পর রফিক দুরে একটি পাহাড় দেখিয়ে দেয়। সোয়েব ওখানেই একটু জিরিয়ে নেয়, আরো বেশ খানেকটা হাঁটতে হবে।
সোয়েব রফিকের হাতে এক হাজার টাকার একটি নোট তুলে দিয়ে ফিরে যেতে বলে, তারপর রওনা দেয়।
সোয়েব পাহাড়টিতে উঠে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চারিদিক দেখে, এতো সুন্দর একটি জায়গার নামে ভৌতিক এমন তকমা লেগে আছে কেন কে জানে। পাহাড়টির চুড়ায় খানিকটা সমতল যায়গা, তার মাঝামাঝিতে ছোট একটা কাঠের বাড়ী। সোয়েব বাড়িটার দরজার সামনে এসে দেখে পুলিশের সীল সহ তালা মারা, ঢোকার উপায় নেই। বাড়িটির চারিদিকে ঘুরে ফিরে দেখে সোয়েব, পেছন দিকে আরেকটি দরজা খুঁজে পায় সে, যা খোলাই ছিল। ঘরে ঢুকতে পচা একটা দুর্গন্ধ পায়, রান্নাঘরে হাঁড়িতে ভাত তরকারি ছিল যা পচে গন্ধ বের হচ্ছে। রান্নাঘর পেরিয়ে অন্য ঘরটাতে যায় সোয়েব, অন্ধকার গুমোট পরিবেশ সেখানে। সোয়েব একটি জানালা খুলে দেয় ও ঘরটা পর্যবেক্ষন করতে থাকে। পুলিশ ঘরটা খুব একটা তোলপাড় করেনি মনে হয় সোয়েবের। লাশ পড়ে থাকার যায়গাটা চকপাউডার দিয়ে মার্ক করা, রক্তের দাগও এখনো স্পষ্ট। বিছানার চাদর এলোমেলো, এক কোনে একটি ছেঁড়া কামিজ খুঁজে পায় সোয়েব, তাতে ধর্ষণের আলামত স্পষ্ট। ঘরটি পর্যবেক্ষণ শেষে সোয়েব ফিরে আসে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top