What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (2 Viewers)

কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#5)

মনিদিপা শুধু মাত্র প্যান্টি পরা, দেবেশের দিকে দুই হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রইলো, “আমার সামনে এসে দাঁড়া, আজ তোর কুমারত্ব তুই আমাকে দে আর আমি আমার অক্ষতযোনি তোকে দেব।”

অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো দেবেশ, নিজের কানকেও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না যে সাধের মনিদি এখনো কুমারী। “তুমি ভারজিন?”

ঠোঁটে মিষ্টি হাসি লেগে আছে, দু চোখে কামনার ঝলসানো আগুন। মাথা নাড়ালো মনিদিপা, “হ্যাঁ রে আমি ভার্জিন। সো ডিয়ার হ্যান্ডেল উইথ কেয়ার। সেইজন্য তো তোকে এত পরিশ্রম করালাম যাতে আমার প্রথম সুখটা চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। আয় আমার কাছে আয় আর যা করতে চাস তাই কর।”

দেবেশ মনিদিপার দিকে এগিয়ে গিয়ে হাঁটু গেঁড়ে ওর সামনে বসে গেল। চোখের সামনে ছোটো লাল প্যান্টি আর তার পেছনে রয়েছে স্বর্গ সুখের দ্বার। লাল প্যান্টি যোনি রসে ভিজে কালচে হয়ে গেছে আর যোনির ফোলা ফোলা পাপড়ির মাঝের চেরাটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। দুই হাত নিয়ে গেল প্যান্টির এলাস্টিকে, আস্তে আস্তে করে নামিয়ে আনলো পাতলা পরিধান। চোখের সামনে, নরম রেশমের মতন ছোটো ছোটো চুলে ঢাকা, ফোলা গোলাপি যোনি। কুঞ্চিত রোম ভিজে রয়েছে যোনির রসে। একরকম মন ধাঁধানো সুগন্ধ আসছে সিক্ত যোনি দেশ থেকে। দেবেশ মুখ তুলে তাকালো মনিদিপার মুখের দিকে, হাসছে মনিদিপা ওর চোখের দিকে তাকিয়ে।

“কিরে কি করবি ভেবে পাচ্ছিস না...” জিজ্ঞেস করলো মনিদিপা।

মাথা নাড়লো “না... তুমি বলে দাও আমাকে আমার সুন্দরী দেবী প্রতিমা, যেমনটি করে এই পর্যন্ত শিখিয়েছো এর আগেও, তুমি আমাকে শিখিয়ে দাও...”

দেবেশের হাত চলে গেল মনিদিপার সুডোল পাছার ওপরে, আলতো করে চাপ দিচ্ছে দেবেশ নরম তুলতুলে নারী মাংসে। যোনির রস যেন আরও বেশি করে নির্যাস হতে শুরু করে দিয়েছে। মনিদিপার পা কাঁপতে শুরু করলো। দেবেশের গরম নিঃশ্বাস সোজা মনিদিপার যোনীর ওপরে পড়ছে।

“মুখ নিয়ে যা আমার ওখানে... হ্যাঁ... হ্যাঁ... আস্তে আস্তে চাট... হ্যাঁ রে সোনা, ঠিক হচ্ছে... জিব বের কর... ঊফফ মাগো হ্যাঁ... আর একটু ওপরে চাট...” বিছানায় হেলান দিয়ে পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে মনিদিপা, দুই হাতে দেবেশের চুলের মুঠি খামচে ধরলো, “হ্যাঁ... রে সোনা, আমি আর পারছিনা... হ্যাঁ চাট চাট.. উফফফ... ওই ওপরটা একটু বেশি করে চাট... হ্যাঁ রে... এবারে জিব ঢুকিয়ে দে ভেতরে... উফফফ কি করছিস... আস্তে আস্তে ...পাছার ওপরে ওইরকম ভাবে খামচি মারিস না দেব সোনা আমার... হ্যাঁ জিব ঢুকিয়ে নাড়া, একবার বের কর একবার ঢোকা... উফফ কি যে আরাম তোর জিবের ছোঁয়ায় বলে বুঝাতে পারবনা রে... দেব তুই আমাকে পাগল করে দিচ্ছিস... জোরে চাট আরও জোরে চাট... আআআআআআ...... মমমমম...... আমার সারা গায়ে পোকা কিলবিল করছে রে দেব... আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিনা... আমি মরে গেলাম... আআআআআ...... তুই আমাকে শেষ করে দিলি সোনা...” মনিদিপার সারা শরীর কাঠ হয়ে গেল, দুই হাতে দেবেশের চুলের মুঠি ধরে যোনীর ওপরে ওর মুখ ঘষতে শুরু করে দিল। দেবেশ খামচে ধরলো মনিদিপার পাছার নরম তুলতুলে মাংস। “হ্যাঁ সোনা দেব আমার... আরও চাট চাট... নিচে একটু নিচে যা... উফফফফ মাগো...” মনিদিপা শীৎকার করে দেবেশের চুল ছেড়ে দিয়ে নেতিয়ে পড়লো বিছানার ওপরে। বুকে যেন কামারের হাঁপর টানছে, শ্বাসে যেন আগুন বয়ে চলেছে, বিশাল সুগোল স্তন দুটি যেন ঢেউয়ের মতন উপর নিচে দোল খাচ্ছে।

দেবেশ আস্তে করে বিছানার ওপর উঠে পরে মনিদিপার পাশে শুয়ে পড়লো। কতক্ষণ চোখ বন্ধ করেছিল মনিদিপা তার টের নেই, চোখ খুললো যখন দেবেশের জিব ওর স্তনের বোঁটা নিয়ে খেলছে। আধখোলা চোখে তাকিয়ে রইলো মনিদিপা দেবেশের দিকে, “তুই ভারী দুষ্টু ছেলে, আমাকে পাগল করে ছেড়ে দিলি শুধু মাত্র তোর জিব দিয়েই তাহলে তোর ওটা যখন আমার ভেতরে যাবে তাহলে আমার কি হবে আমি জানিনা। হয়তো আমি সুখের আনন্দে মারা যাবো রে...”

হাত দিয়ে ঠোঁট চেপে ধরলো দেবেশ, “মনিদি মরে যাবার কথা বোলো না যেন...” তারপরে নাকে নাক ঘষে বললো, “এখনো অনেক রাত বাকি... তুমি আমাকে আরও কিছু শিখাবে না...”

মনিদিপা হাত বাড়িয়ে আলতো করে ছুঁয়ে দেখলো দেবেশের লৌহ কঠিন লিঙ্গ, “বাপ রে অনেক শক্ত আর গরম হয়ে আছেরে তোরটা। এবারে তো বাবাজিকে শান্ত করতে হয়...”
মনিদিপার নরম হাতের ছোঁয়া পেয়ে দেবেশের লিঙ্গ আরও টানটান হয়ে উঠলো, কেঁপে উঠলো সারা শরীর। কাঁপা গলায় বললো, “তুমি আমাকে বলে দেবে আর আমি তোমাকে নিয়ে যাবো সুখের দোরগোড়ায়...”

“আয় আগে আমার ওপরে উঠে আয়...” দু পা ফাঁক করে মনিদিপার পেলব থাইয়ের মাঝে শুয়ে পড়লো দেবেশ। লিঙ্গ একদম যোনীর মুখের কাছে, থেকে থেকে ধাক্কা মারছে যোনীর দ্বারে। মনিদিপা ওর সুগোল পেলব থাই আরও ফাঁক করে দিল যাতে দেবেশের কোন অসুবিধা না হয়, তারপরে বললো, “এই বারে হাতে নে তো ওটাকে... হ্যাঁ... আলতো করে তোর পাছা উঁচু কর... তাহলে দেখবি একটু জায়গা পাবি... হ্যাঁ এইতো... এইবারে ওটা দিয়ে আমার ওখানে আলতো করে ঘষতে শুরু কর... উফফফফ... কি যে হচ্ছে না আমার... দেএএএবেএএএএএএশ...... হ্যাঁ হ্যাঁ... আরও একটু জোরে ঘষ বড় আরাম লাগছে রে... এই প্রথম কারুর ঘষা খাচ্ছি আমি... আমার সবকিছু নিয়ে নে তুই... আহ... আহ... আহ... এই বারে আস্তে করে শুধু মাত্র ডগাটা ঢোকা... উফফফ মাগো... কি গরম তোরটা রে... জ্বালিয়ে দিল মনে হচ্ছে... আমারটা যেন ফাঁকা... আআআআআআআ... হ্যাঁ সোনা একটু আস্তে আস্তে ঢোকা দেবু... আমি ভার্জিন সোনা... উফফফ কি হচ্ছে..... আঃআঃআঃআঃআঃ... ঢোকা আস্তে আস্তে... হ্যাঁ উফফফ মাগো এত গরম আর এত শক্ত কেন হতে গেলিরে... জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিবি মনে হচ্ছে আজ আমাকে... আর একটু ঢোকা... আস্তে ঢোকাস কিন্তু...... না আর পারছিনা...” ঠোঁট কামড়ে ধরলো মনিদিপা। দেবেশের শক্ত গরম লিঙ্গ আমুল গেঁথে গেছে মনিদিপার কুমারী যোনীর গর্ভে। ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠলো মনিদিপা, “না... দেবেশ... নাড়াস না রে... আমি মরে যাচ্ছি... পেট ফেটে বেরিয়ে গেল মনে হচ্ছে যে...”

লিঙ্গ আমুলে গেঁথে গিয়ে যেন মনিদিপার মাথায় ধাক্কা মারছে। ব্যাথার চোটে চোখের কোনে জল চলে এলো। দাঁতে দাঁত পিষে ব্যাথা সহ্য করে নিলো মনিদিপা। মাথা বেঁকিয়ে গেছে পেছন দিকে। বুক জোড়া আকাশের দিকে উঠে গেছে। ধনুকের মতন বেঁকে উঠেছে মনিদিপার শরীর।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#6)

দেবেশ সাধের মনিদির চোখে জল দেখে ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে তোমার, তোমার কি খুব লাগছে... আমি বের করে নেব... বলো না...”

দু হাতে পুরো শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরলো দেবেশকে, মাথা নাড়ালো মনিদিপা, “না রে... ব্যাথা তো লাগছে কিন্তু কি যে আনন্দ, কি যে সুখ তোকে বলে বুঝাতে পারবো না...” একটুখানি থেমে মনিদিপা নির্দেশ দিল, “এই বারে পুরোটা বের কর, হ্যাঁ হ্যাঁ... এবারে আবার আস্তে আস্তে ঢোকা... পুরোটা ঢুকাস না, শুধু মাত্র অর্ধেকটা ঢুকাস... আবার বের করে নে... আবার ঢুকা... হ্যাঁ করতে থাক... ব্যাস ব্যাস... এবারে আস্তে করে পুরোটা বের কর... শুধু মাত্র যেন তোর শক্ত গোল মাথাটা আমার চেরায় থাকে... হ্যাঁ এই তো... ব্যাস... এবারে পুরোটা ঢুকিয়ে দে... উফফফ... আস্তে ঢোকা রে ছেলে... একরাতে মেরে ফেলবি নাকি আমাকে... হ্যাঁ একটু দাঁড়িয়ে থাক... হ্যাঁ রে ... আবারে আবার পুরোটা বের করে নে... করে নে... হ্যাঁ উফফফ... ঢুকিয়ে দেরে দেরি করিস না... এবারে জোরে জোরে ঢুকিয়ে দে আর বের কর... উফ মাগো... উম্মম্মম্মম্মম্মম্ম...... আঃ আঃআঃআঃআঃআঃআঃ দেএএএএএএবেএএএএএএএশ... আমার কিছু হচ্ছে সোনা আমার... আমাকে জড়িয়ে ধর... পিষে নিংড়ে ফেল... উম্মম...”

দেবেশ একটা স্তন হাতে নিয়ে টিপছে, মুচড়ে দিচ্ছে স্তনের বোঁটা, আরেক স্তনে জিব দিয়ে আদর করছে আর বোঁটা নিয়ে চুষছে। দেবেশের বীর্য নাভি থেকে উপরে উঠতে শুরু করলো... হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, “মনিদি আমারও আসছে... কি করবো বের করে নেব?”

শীৎকার করে উঠলো মনিদিপা, “না রে দেবু... তুই আমাকে আরও জোরে কর... পুরোটা ঢুকিয়ে গেঁথে দে আমাকে বিছানার সাথে... হ্যাঁ আমার ভেতরে ছেড়ে দে তুই... উফফফফ” দুই পা দিয়ে দেবেশের কোমর জড়িয়ে ধরলো মনিদিপা, বিছানার চাদর খামচে মেরে শক্ত করে ধরলো, সারা শরীরে যেন বিদ্যুৎ খেলে বেড়াচ্ছে। দেবেশ লিঙ্গটা পুরো বের করে এক সজোর ধাক্কা মেরে মনিদিপার যোনি গর্ভে ঢুকিয়ে দিল, ঝলকে ঝলকে বীর্য বেরিয়ে মনিদিপার যোনি ভরে দিল। মনিদিপা দুই হাতে দেবেশকে জড়িয়ে ধরে কাঠ হয়ে গেল। মিলিত রসে সিক্ত হয়ে গেল বিছানার চাদর।

অনেকক্ষণ পরে মনিদিপা চোখ খুলে তাকালো, দেবেশ ওর বুকের ওপরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে আর যোনীর ভেতরে ছোট্ট নেতানো লিঙ্গ। মনিদিপা আদর করে দেবেশের মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে থাকে আর ভাবতে থাকে, “আমার শরীরের সব সুধা আজ তোর হয়ে গেল... তবে আমি জানিনা... আমি কি করেছি... তোকে এই আগুনের খেলায় নিয়ে আসা উচিত ছিলোনা আমার। আমার যে এত ক্ষিধে থাকতে পারে আমি বুঝিনি রে সোনা...”

ভোরের আলো ফোটার আগেই দেবেশকে তুলে দিল মনিদিপা, “এই ছেলে ওঠ, আজ রাতে আবার দেখা হবে...”

ঘুম ঘুম চোখ মেলে তাকিয়ে রইলো দেবেশ, আরও নিবিড় করে জড়িয়ে ধরলো মনিদিপাকে, “মনি... তুমি আমাকে তোমার সবকিছু দিয়ে দিলে... আমি আজ থেকে তোমার গোলাম হয়ে থাকব...”

একটা বাঁকা হাসি হেসে উত্তর দিল মনিদিপা, “বাপ রে, একরাতে আমি মনিদি থেকে সোজা মনিতে নেমে এলাম... অনেক আদিখ্যেতা হয়েছে তোর... এবারে উঠে পড়...”
আরও জোরে জড়িয়ে ধরলো দেবেশ, মনিদিপার উদ্ধত স্তনের ওপরে মুখ ঘষে বললো, “উম্মম্মম্মম্মম.... আরেকটু শুয়ে থাকতে দাওনা মনিদি...”

মনিদিপা ওর চুলের মুঠি আলগা করে ধরে মাথা উঠিয়ে দিয়ে বললো, “আমার সবকিছু তো নিয়ে নিয়েছিস আর কি নিবি। আবার রাতের বেলা দেখা হবে...”

শুরু হলো মনিদিপার আর দেবেশের প্রতিরাতের খেলা, রোজ রাতে এক নতুন নতুন আসনে খেলায় মত্ত হয় দুই কামনার আগুনে ঝলসানো নর নারী। কখনো মনিদিপা নিচে আর দেবেশ ওপরে, কখনো দেবেশ নিচে মনিদিপা ওপরে, কখনো দেবেশ চেয়ারে বসে মনিদিপাকে কোলে নিয়ে নেয়, কখনো মনিদিপা ওর দিকে মুখ করে দেবেশের কোলে বসে কখনো ওর দিকে পিঠ করে বসে, কখনো দাঁড়িয়ে পা ফাঁক করে থাকে মনিদিপা আর দেবেশ ওর সামনে দাঁড়িয়ে যোনি গর্ভের আমুলে লিঙ্গ গেঁথে দেয়। এযেন এক আগুন নিয়ে প্রতি রাতের খেলা, এ খেলার যেন আর শেষ নেই।

একদিন বিকেল বেলা দেবেশ কলেজ থেকে বাড়ি ফিরে দেখে যে জেঠিমা আর মনিদি ওদের বাড়িতে বসে মায়ের সাথে গল্প করছে। মনিদিপা ওকে ঢুকতে দেখে বলে উঠলো, “কিরে তোর কলেজ কেমন গেল?”

মিচকি হেসে জবাব দিল দেবেশ, “সবই রাতের মোহ মায়া মনিদি...”

মনিদিপার মুখ লাল হয়ে গেল, চোখ ঝলসে উঠলো সবার সামনে ওইরকম কথা শুনে, তাও নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো “আচ্ছা তাহলে কলেজে কাউকে পেয়ে গেছিস মনে হয়।”

“পরে উত্তর দেব মনিদি, এখন আমি যাচ্ছি...” দেবেশ উত্তর দিয়ে ছাদের ঘরে চলে গেল।

ওর মা ওকে ডাক দিল, “কিরে ছেলে চা খাবি না নাকি, এই কলেজ থেকে এলি আর ওপরে উঠে গেলি।”

মনিদিপা দেবেশের মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো, “কাকিমা, ওর চাটা আমাকে দাও আমি ওকে দিয়ে আসছি।”

চা নিয়ে মনিদিপা দেবেশের ছাদের ঘরে ঢুকলো। ঢুকেই দেখে যে খালি গায়ে একটা বারমুডা পরে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে দেবেশ। পা টিপে টিপে ওর পেছনে দাঁড়িয়ে হটাত করে মাথার পেছনে এক চাঁটি মারলো। চমকে উঠলো দেবেশ, এই রকম তো শুধু মনিদি করতে পারে তা ছাড়া ওর সাথে ওই রকম ইয়ার্কি কেউ করবে না। হাসতে হাসতে ঘুরে দাঁড়িয়ে, মনিদিপাকে জড়িয়ে ধরলো।

মনিদিপা চেঁচিয়ে উঠলো, “ছাড় ছাড়, নিচে মা কাকিমা বসে আছে, দেখে ফেললে একাকার কান্ড হয়ে যাবে।”

নরম তুলতলে গালে গাল ঘষে দিল দেবেশ, কানে ফিস ফিস করে বললো, “এখন কেউ আসবে না, একবারের জন্য একটা ছোট্ট করে খেলে নেই না।”

চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো মনিদিপা, “মানে?”

কাঁধে হাত রেখে মনিদিপাকে ঘুরিয়ে দিল দেয়ালের দিকে। ঠেলে দেয়ালের সাথে দাঁড় করিয়ে দিল দেবেশ। মনিদিপা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেবেশের হাত চলে গেছে ওর নরম পাছার ওপরে, এক টানে কোমর থেকে নামিয়ে দিল স্কার্ট। বাঁ হাত সামনে নিয়ে গিয়ে মনিদিপার সুগোল নরম তুলতুলে স্তন টিপতে শুরু করে দিল দেবেশ। একবার বোঁটা আঙুলের ফাঁকে নিয়ে দুমড়ে পিষে দিল।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#7)

মনিদিপা বাধা দিয়ে বলে উঠলো, “ছাড় ছাড় আমাকে... আমি কিন্তু চিৎকার করবো...”

দেবেশের রক্তে আগুন লেগে গেছে তখন। ডান হাত দিয়ে নরম ফর্সা পাছার ওপরে বার কয়েক চাপড় মারলো তারপরে পাছার ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে প্যান্টি সরিয়ে দিল। যোনীর ভেতরে এক এক করে দুটি আঙুল ঢুকিয়ে দিল দেবেশ।

একটা স্তন দেবেশের হাতের মুঠিতে নিষ্পেষিত, স্তনের বোঁটা আঙুলের মাঝে পিষ্ট। সিক্ত যোনীর ভেতরে দেবেশের অনামিকা আর মধ্যমা নিয়ে খেলা। চারদিকে তখন বিকেলের আলো, বুকের মধ্যে ধরে পড়ে যাবার ভয়, এক অদ্ভুত শিহরণ খেলে যায় মনিদিপার সারা শরীরে, থামাতে চাইলেও যেন থামাতে পারছে না দেবেশকে।

“আঃ দেবু, প্লিস আমাকে ছেড়ে দে না... ওই রকমভাবে আমার বুকগুলো টিপিস না প্লিস... উফফফ কি করছিস তুই আঙুল দিয়ে... উমমমমম...... পাগল করে দিলি যে আমায়... তোর আঙুল গুলো যে বড় বদমাশ রে... আআআআআ......... দেবু প্লিস আর না... থাম এবারে... অনেক হলো...... দেবু... সোনা আমার...”

নরম গলায় আদর করে বললো দেবেশ, “প্লিস একটু পা খোলো মনিদি, একটু ঝুঁকে যাও সামনের দিকে...”

দেবেশ প্যান্টের চেন খুলে, শক্ত হয়ে থাকা লিঙ্গটা এক ধাক্কায় আমুল গেঁথে দিল মনিদিপার সিক্ত যোনীরে ভেতরে।

মনিদিপা দেয়ালে দুই হাত রেখে একটু ঝুঁকে কামনার শীৎকার করে উঠলো, “ছাড় ছাড়, উফফফ কি করিস তুই... উউম্মম... একটু আস্তে ঢুকা রে... আহহহ... না না না না... আমার যে হয়ে গেল... উফফফ... পাগল ছেলে... ফাটিয়ে দিবি নাকি আমাকে... ছেড়ে দে... না... একটু জোরে হ্যাঁ ব্যাস... দেবু... প্লিস উম্মম না... আআআআ... মমমমম... কি যে আরাম লাগছে... উফফফ সোনা আমার... ফাটিয়ে দিলি যে...”

দেবেশ এক হাতে মনিদিপার মাথার চুল পেঁচিয়ে ধরেছে, আরেক হাত নরম ফর্সা পাছার ওপরে রেখে সজোরে ধাক্কা মেরে চলেছে। খান পাঁচ ছয়েক মন্থনের পরেই মনিদিপার শরীর জবাব দিয়ে দিল আর তার সাথে দেবেশ ওর যোনি গর্ভে বীর্যপাত ঘটিয়ে দিল। রতি খেলার পরে, দুজন দুজনাকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকলো অনেকক্ষণ, নড়াচড়া করার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছে এই সল্প সময়ের মধ্যে।

বেশ কিছুক্ষণ পরে দেবেশের মা নিচ থেকে ডাক দিল, “এই তোরা কি করছিস, এত দেরি কেন তোদের?”

চমকে উঠলো দুজনেই, থতমত খেয়ে দেবেশ মনিদিপাকে ছেড়ে দিল। মনিদিপা ওর দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো। তাড়াতাড়ি নিজেকে ঠিকঠাক করে নিলো মনিদিপা, পায়ের ফাঁকে দেবেশের আর ওর মিলিত প্রেম রস গড়াচ্ছে, কোনরকমে প্যান্টি খুলে থাই আর যোনি মুছে নিচে নেমে গেল। যাবার আগে দেবেশের গালে একটা চুমু খেয়ে আর হাতের মধ্যে ভিজে প্যান্টি গুঁজে চলে গেল।

দেবেশ প্যান্টি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ, তারপরে নাকে মুখে ঘষে আলতো করে ভিজে জায়গাটায় চুমু খেয়ে সযত্নে বালিশের নিচে প্যান্টিটা রেখে নিচে নেমে এল।
নিচে নেমে দেখে, মনিদিপার সারা মুখে এক অদ্ভুত আলোর ছটা, সেই ছটা দেখে মন খুশীতে ভরে উঠলো দেবেশের। যাক তাহলে মনিদি ওর ওপরে বিশেষ রাগ করেনি এই অহেতুক খেলার জন্য। ওর দিকে তাকিয়ে মিচকি হাসছে মনিদিপা, চোখে যেন বলতে চাইছে যে, আজ রাতে তোর খবর নেব, সব শোধ নেব আমি।

দেবেশের মা ওর দিকে তাকিয়ে বললো, “জানিস রে মনি একটা চাকরি পেয়েছে। কলকাতায় একটা বড় বাংলা খবরের কাগজে জার্নালিস্ট হিসাবে।”

দেবেশ হাঁ করে মনিদিপার দিকে তাকিয়ে, কই এই কথাটা তো আমাকে ছাদের ঘরে বললো না মনিদি। মনিদিপা ওর মুখ দেখে বুঝতে পেরে গেছিলো যে দেবেশ কি ভাবছে তাই ওর প্রশ্নের আগে নিজেই উত্তর দিল, “তুই তো চা খেতে ব্যাস্ত ছিলিস তাই ভাবলাম নিচে এসে তোকে জানাব।” মনিদিপার চোখে মুখে দুষ্টুমির হাসি।

রাতের বেলায় দুজন দুজনাকে উলঙ্গ হয়ে জড়িয়ে শুয়ে ছিল। দেবেশ জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় চাকরি হয়েছে তোমার?”

মাথার চুলে বিলি কাটতে কাটতে উত্তর দিল মনিদিপা, “একটা বড় বাংলা খবরের কাগজের অফিসে। আমি এখন শুধু মাত্র ট্রেনি। আমার কাজ দেখে তবে আমাকে পার্মানেন্ট করবে।”

“উম্ম তাহলে তো ট্রিট দিতে হবে..” দেবেশ ওর বুকে একটা চুমু খেয়ে বললো।

মনিদিপা আলতো করে দেবেশের মাথায় থাপ্পড় মারলো “তুই আর কত ট্রিট নিবি রে কুকুর। আমার কাছ থেকেতো যখন পারিস তখন ট্রিট নিস আবার কি চাই।”

দেবেশ ওর দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে বললো, “উম মনিদি, ও তো শুধু শরীরের খিদে পেটের খিদে বলেও তো একটা কিছু আছে নাকি।”

কথাটা শুনে মনিদিপার চোখ দিয়ে জল চলে এল, শরীরের খিদে মেটাতে গিয়ে ও যে কখন দেবেশকে ভালবেসে ফেলেছে সেটা ও নিজেও জানে না, আর দেবেশ কিনা শুধু ওর কাছে শরীরের খিদে মেটানোর জন্য আসে।

কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, “ঠিক আছে দেবু, এর পরের মাসে মাইনে পেলে আমি তোকে জানাব। তুই আমাকে অফিস থেকে পিক করে নিস তারপরে আমরা কোন ভাল রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাব।”

“উম্মম্ম... এই না হলো আমার সাধের কামনার সুন্দরী...” স্তনের বোঁটার ওপরে ঠোঁট ঘষে বললো দেবেশ।

আর থাকতে পারলো না মনিদিপা, ধমকে উঠলো দেবেশের দিকে, “আমি কি তোর কাছে শুধু মাত্র একটা খেলার পুতুল? আমার কি হৃদয় মন বলে কিছু নেই?”

কাঁপা গলার আওয়াজ শুনে থমকে গেল দেবেশ, মনিদিপার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো যে চোখে জল টলটল করছে। মাথা নাড়িয়ে শান্ত করলো দেবেশ, “না গো মনিদি, তুমি আমার কাছে অনেক অনেক বেশি, তুমি আমার কাছে সব কিছু।”

কথা শুনে আস্বস্ত হলো মনিদিপা। চোখের জল মুছে নাকটা টেনে হেসে বললো, “রাগাতেও জানিস যেমন তেমনি মানীর মান ভাঙাতেও জানিস দেখছি।”

উত্তর দিল দেবেশ, “বাঃ রে আমার সাধের মানুষের চোখে জল দেখলে আমি কি আর থাকতে পারি।”

উত্তর দিল মনিদিপা, “যাক আর বেশি কিছু দেখাতে হবে না তোকে, তবে যা বললাম, পরের মাসে আমি আর তুই একটা রেস্টুরেন্টে যাবো।”
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#8)

দিন যায়, খেলার নিবিড়তা আরও বেড়ে চলে, সময়ের বাঁধন ছাড়িয়ে ছাপিয়ে কোনদিন না ঘুমিয়ে সকাল পর্যন্ত খেলা চলে ওদের দুজনার। সারাদিন কলেজে দেবেশের মাথায় থাকে শুধু মনিদি আর মনিদি। আজকাল কলেজ থেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে দেবেশ, সেটা দেখেও মায়ের মনে শান্তি। দেবেশের বাবা ভাবলেন যে ছেলের মতিগতি ফিরেছে, এদিকে ছেলের মতিগতি যে কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তার ঠিকানা শুধু মাত্র মনিদিপার কাছে।

প্রায় দিন বিকেলে মনিদিপা চলে আসে ওদের বাড়িতে। নিচে কাকিমার সাথে অনেকক্ষণ গল্প করে, রান্নার কাজে সাহায্য করে দেয়। কোনদিন পায়েস বা মাংস রান্নাও করে দেয় মনিদিপা। মাঝে মাঝে রাতের খাবারের সময় দেবেশের মা ওর বাবাকে বলে, “জানো আজ মাংসটা মনি রান্না করেছে।” দেবেশের বাবা মাংস খেয়ে বেশ তৃপ্তির সুরে বলে, “মেয়েটা বেশ ভাল রান্না করতে জানে গো।”

কোনদিন বিকেলে কলেজ থেকে ফেরার পরে দেবেশ যখন ছাদের ঘরে পড়তে বসে, তখন মনিদিপা ওর জন্য মাঝে মাঝে চা নিয়ে যায় বা মাঝে মাঝে গিয়ে জিজ্ঞেস করে আসে কিছু চায় কিনা। মনিদিপার একটা ছুতো চাই একটু দেবেশের পাশে থাকার। দেবেশের সে সব দিকে কোন খেয়াল নেই যে মনিদিপার মন অন্য কিছু চায়, শুধু মাত্র শরীরের ক্ষিধে নয় আরও কিছু জেগে উঠেছে মনিদিপার মনের গহিন কোনে।

দেবেশ জিজ্ঞেস করে মনিদিপাকে, “কি গো মনিদি, আজকের মাংসটা তুমি রান্না করলে?”

মনিদিপা উলটে জিজ্ঞেস করে দেবেশকে, “কেন তোর ভাল লাগেনি?” অবচেতন মনের মধ্যে এক শুরু হয় এক তোলপাড়।

গালে, ঠোঁটে চুমু খেয়ে উত্তর দিল দেবেশ, “তুমি করবে রান্না আর সেটা খারাপ হবে? হতেই পারেনা মনিদি। তোমার হাতে জাদু, চোখে জাদু, শরীরের সারা অঙ্গ প্রত্যঙ্গে জাদু।”

মনিদিপা ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে চেষ্টা করলো, “নারে দেবেশ, আমি জাদু দেখাতে চাইনা তোকে শুধু চাই...” কি চাই মনিদিপার, কি করে পূরণ করবে সেই আকাঙ্ক্ষা।

এক রাতে মনিদিপা ওকে প্রশ্ন করে, “কিরে তোর পড়াশুনা কেমন চলছে? তুই আজকাল ঠিক ঠাক পড়াশুনা করছিস তো? সামনের বছর জয়েন্ট আই আই টি দিতে হবে, সেটা যেন ভুল না হয়।”

হাত জোড় করে মাথা নত করে উত্তর দিল দেবেশ, “ওকে মা দুর্গা দুর্গতিনাশিনী, আমি ঠিক ঠাক পড়াশুনা করছি, চিন্তা নেই।”

একদিন একদিন করে মাস শেষ হলো, এগিয়ে এল মনিদিপার ট্রিট দেবার দিন। বাড়ির লোকেরা জানতো যে মনিদিপা দেবেশকে ট্রীট দেবে আর তা নিয়ে কোন আপত্তি ছিলনা। হবেই বা কেন, দুই বাড়ির মধ্যে খুব নিবিড় সম্পর্ক। বাবার সাথে মানব জেঠুর আর মায়ের সাথে জেঠিমার। কিন্তু বাড়ির কেউই জানতো না যে রাতের অন্ধকারে ওই দুজনের মাঝে কি খেলা চলছে। হয়তো জানতে পারলে দেবেশকে ওর বাবা মেরে ফেলে দেবে বা মনিদিপাকে ওর বাবা।

কলেজ থেকে সোজা মনিদিপার অফিসে চলে যায় দেবেশ। বেশ কিছুক্ষণ নিচে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করার পরে দেখে মনিদিপা ওর দিকে হাঁটতে হাঁটতে আসছে। আজ মনিদিকে দেখতে আরও সুন্দরী লাগছে, এর আগে ওকে ওইরকম সুন্দরী দেখেনি দেবেশ। একটা ধবধবে সাদা রঙের জিন্স যা ওর পাছা, থাই পায়ের গুলির সাথে এঁটে আছে আর ওপরে একটা গাড় নীল রঙের ঢিলে টপ। গলায় জড়িয়ে একটা ঘিয়ে রঙের স্টোল। মাথার চুল খোলা পিঠ পর্যন্ত নেমে এসেছে। সাক্ষাৎ যেন উর্বশী ওর সামনে দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে।

গোলাপি ঠোঁটে মধু ঢেলে জিজ্ঞেস করলো মনিদিপা, “কিরে কেমন গেল তোর কলেজ?”

“আমার কলেজ তো ভাল গেল” পাশে গিয়ে কোমরে হাত রাখল দেবেশ, “তোমাকে আজ ভারী সুন্দরী দেখাচ্ছে, জানো কি মনে হচ্ছে...”

ওর বুকে আলতো করে কিল মেরে জিজ্ঞেস করলো, “কি মনে হচ্ছে তোর?”

দেবেশ কোমরটা আরও নিবিড় করে জড়িয়ে ধরে কানেকানে বললো, “এই রাস্তার মধ্যে তোমার ওই সুন্দর ঠোঁট দুটি নিয়ে খেলা করি আর তোমাকে নিয়ে চুটিয়ে প্রেম করি।”
একটু ঠেলে দিল ওকে, “যাঃ বদমাশ ছেলে, এটা রাস্তা রে, ছাড় আমাকে।”

দেবেশ মনিদিপার হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলো, “আমি তো আজ খাব না, চলো না একটা সিনেমা দেখি বা কোথাও গিয়ে বসি।”

মনিদিপা ওর বাঁ হাত নিজের দুই হাতে জড়িয়ে ওর সাথে সাথে হাঁটতে হাঁটতে জিজ্ঞেস করলো, “কোথায় যেতে চাস বল?”

দেবেশ উত্তর দিল, “চলো না, আউট্রাম ঘাটে গিয়ে গঙ্গার পাড়ে বসি।”

“উম্ম... মনের কোণে প্রেমের ফুল ফুটেছে মনে হচ্ছে”, দুষ্টু মিষ্টি হাসি হাসি মুখে উত্তর দিল মনিদিপা, “চল তাহলে গঙ্গার পাড়ে গিয়ে বসি।”

একটা ট্যাক্সি নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা দুজনে গঙ্গার পাড়ে পৌঁছে গেল। হাতে হাত রেখে গঙ্গার পাড় দিয়ে হাঁটতে শুরু করলো ওরা। সারা টাক্সিতে দেবেশের কাঁধে মাথা রেখে চুপ করে ওর হাতের আঙুল নিয়ে খেলা করছিল মনিদিপা। কখন ওর হাত নিজের ঠোঁটের কাছে এনে চুমু খেলো কখন ওর হাত নিজের গালে ছোঁয়ালো মনিদিপা। ওর মনের ঈশান কোনে আজ প্রেমের পূর্ণিমা, আজ যেন ওর দোল আজ যেন ওর মহা অষ্টমীর পুজা।

মনিদিপার মনের ভেতরে প্রেমের বন্যা বইছে, ও যে সত্যি সত্যি ভালবেসে ফেলেছে দেবেশকে, কিন্তু এই সমাজ কি করে সেটা মেনে নেবে। মা, কাকিমা, বাবা, কাকা কেউই হয়তো মেনে নেবেনা। কেননা ও বড় আর দেবেশ ছোটো। কোনোদিন কি বউ বড় হয়, বউ সবসময়ে বরের চেয়ে ছোট হয় এই তো নাকি নিয়ম। কে জানি কে লিখে গেছে এই নিয়ম।

মনিদিপাকে অনেকক্ষণ চুপ করে থাকতে দেখে দেবেশ জিজ্ঞেস করলো, “কি ভাবছো মনি?”

এতদিন শুধু মনিদি বলে ডেকেছে দেবেশ, হটাত ওর মুখে মনি নাম শুনে মন কেমন করে উঠলো মনিদিপার। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে মনিদিপার চোখের কোণে একটুখানি জল চলে এসেছিল। মুখ না উঠিয়ে হাল্কা হেসে উত্তর দিল, “না রে কিছু না।” তারপরে অকাঠ একটা মিথ্যে কথা বলে দিল দেবেশকে, “আজ এত দিন পরে নিজের আয় করা পয়সা পেলাম তাই মনটা খুশীতে ভরে উঠেছিল আর চোখে জল এসে গেছিলো।” মেয়েদের মিথ্যে কথা ধরা বড় কঠিন ব্যাপার, দেবেশ বুঝতেও পারলো না যে মনিদিপার চোখে জল কেন, আসল কারনটা কি।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#9)

পশ্চিম আকাশে সূর্য ডোবার আভাস। লাল হয়ে উঠেছে আকাশ আর তার সাথে লাল হয়ে উঠেছে গঙ্গার জল। ধিরে ধিরে চারদিকে আঁধার নেমে এসেছে। মাথার ওপরে পাখিরা এক এক করে বাসায় ফিরে চলেছে। গঙ্গার পাড়ে বসে দুজনে আইসক্রিম কিনে খেতে শুরু করলো।

আইসক্রিম খেতে খেতে দেবেশ জিজ্ঞেস করলো, “মনি নৌকায় চাপবে?”

মনিদিপা জিজ্ঞেস করলো, “কেন রে, এখন আবার নৌকায় কেন? অন্ধকার হয়ে আসছে, বাড়ি ফিরতে হবে না।” মনিদিপা জানতো না ঠিক ভাবে দেবেশের মতলবটা কি।

বাঁ হাতে মনিদিপার পাতলা কোমর জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ এনে বললো, “নৌকায় শুধু আমি আর তুমি, ব্যাস আর কেউ নয়। গঙ্গার ওপরে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা হাওয়া খেতে খেতে বেশ একটা প্রেম প্রেম খেলা যাবে।”

কথাটা শুনে থমকে গেল মনিদিপা, “কি যে বলিস না তুই। না আমি যাব না।”
আরও নিবিড় করে টেনে নিলো দেবেশ। মনিদিপার মনে একটা প্রেমের আভাস জেগে উঠলো। দেবেশ আস্তে করে মনিদিপার বুকে হাত দিল। কেঁপে উঠলো মনিদিপা।
ওর দিকে ভ্রূকুটি চোখে তাকালো, “এই যাঃ কি করছিস লোকজন আছে যে।”

দেবেশ ওর কথার দিকে কোন কান দিল না, টপের ওপর দিয়েই মনিদিপার সুগোল স্তন নিয়ে হাল্কা টেপাটিপি শুরু করে দিল। মনিদিপার গা গরম হয়ে উঠলো দেবেশের হাতের ছোঁয়ায়, চোখ পাতা যেন হাতের চাপে ভারী হয়ে উঠেছে।

ফিসফিস করে বলে উঠলো মনিদিপা “প্লিস ছেড়ে দে আমাকে, এ যে দিনের আলো আর সবাই আছে, সবাই দেখতে পাবে যে... প্লিস দেবেশ করিস না... আমার লক্ষ্মী ছেলে... দেবু প্লিস...” মনিদিপা একটু ঠেলে সরিয়ে দেয় দেবেশের হাত।

দেবেশ ওর কানে কানে বললো, “কেউ দেখবে না মনি, অন্ধকার হয়ে আসছে আর সব কাপল করে এই রকম। প্লিস হাত সরিয়ে দিও না।”

নিজের অজান্তেই মনিদিপার শরীর ঢিলে হয়ে গেল, হাত চলে গেছে দেবেশের কোলে। দেবেশের সাহস যেন আরও বেড়ে গেল। মনিদিপার পেলব থাইয়ের মাঝে হাত ঢুকিয়ে দিল দেবেশ। চেপে ধরলো জিন্সের ওপরে দিয়ে মনিদিপার যোনীদেশ। উত্তপ্ত মনিদিপা যোনীর ওপরে দেবেশের হাতের ছোঁয়া পেয়ে যেন আরও পাগল হয়ে উঠলো। কিন্তু এখন অন্ধকার হয়নি, তার ওপরে চারদিকে লোকজন তো আছেই। দুহাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরলো দেবেশের হাত, যাতে আর বেশি কিছু করতে না পারে। কিন্তু দেবেশের অনেক শক্তি, ধরা হাত নিয়েই জিন্সের ওপর দিয়ে মনিদিপার যোনীর ওপরে চাপ দিতে থাকলো।

“উম্মম কি মস্ত মাগি রে... মাই নয়তো যেন ডাব ঝুলছে... এই রকম ডাঁসা মাল পেলে একবার নৌকায় চড়া যায়” হটাত করে ওদের কানে এইরকম একটা আওয়াজ এল। ধড়মড়িয়ে দুজন দুজনকে ছেড়ে দিল, পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো কয়েটা ছেলে ওদের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দাঁত কেলাচ্ছে।

কান মাথা গরম হয়ে গেল মনিদিপার। বুকের মধ্যে যেন ঝড় শুরু হয়ে গেল মনিদিপার। সব রাগ গিয়ে পড়লো দেবেশের ওপরে, “কেন ছেলেটা একটু সবুর করতে পারেনা, আমি কি শুধু মাত্র একটা ভোগের পুতুল?” রেগে মেগে ওখান থেকে উঠে হাঁটা দিল। মনিদিপার রাগ দেখে প্রথমে একটু থমকে গেছিলো দেবেশ। তারপর যখন দেখলো যে সত্যি মনিদিপা ওকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে তখন ওর পেছনে দৌড়াতে শুরু করলো।

দৌড়ে ওর কাছে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞেস করলো, “কি হলো মনি?”

মনিদিপার চোখ ফেটে জল এসে গেছে। ওর সামনে দাঁড়িয়ে সজোরে এক থাপ্পড় লাগিয়ে দিল দেবেশের গালে। চিৎকার করে উঠলো, “তুই শুধু আমাকে ভোগের জিনিস পেয়েছিস তাই না। সময় নেই, জায়গা নেই, শুধু আমার শরীরটাকে নিয়ে খেলতে পারলে যেন তোর শান্তি হয়। আমার পোড়া কপাল, কেন যে আমি মরতে তোকে রাতে আমার বাড়িতে ডেকেছিলাম। তুই তো আজ আমাকে বাজারে নামিয়ে আনলি দেবেশ।”

গাল লাল হয়ে গেছে মনিদিপার চড় খেয়ে। উত্তর দেবার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে দেবেশ, সত্যি ওর কামনার আগুন অনেক বেশি বেড়ে গেছে, মনিদিপা ওর কাছে এখন শুধু মাত্র একটা কামনার বাসনার শরীর। কি বলবে দেবেশ, ও যে মনিদিপাকে এখনো ভালবাসেনি। শুধু ওর যৌবন রস পান করার জন্য ওর দিকে এগিয়ে গিয়েছে।

“তোর কাছে কোন উত্তর নেই তো? তুই একটা কুকুর। আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না তুই।” কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলো মনিদিপা তারপরে ওকে ছেড়ে রাস্তার দিকে দৌড়ে চলে গেল।

দেবেশ কিছুক্ষণ স্থানুর মতন দাঁড়িয়ে রইলো, কি করবে কি বলবে ভেবে পেলনা। কিছুক্ষণ বাদে দৌড়ে গেল মনিদিপাকে ধরার জন্য। রাস্তায় গিয়ে দেখলো যে, মনিদিপা ওর সামনে দিয়ে একটা টাক্সি চেপে চলে গেল। রাতের অন্ধকারে আকাশের দিকে মুখ তুলে তাকিয়ে রইলো দেবেশ। কি করতে কি করে ফেললো ও, সাধের রমণীর সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে এই রকম ভাবে সবার সামনে খুলে দিল। কি করলো, এই ভুলের শাস্তি মনে হয় নেই, এর মনে হয় ক্ষমাও নেই। রাগে দুঃখে কাঁপতে কাঁপতে বাড়ির পথ ধরলো। নিজের চুল ছিঁড়তে বাকি, বাড়ি গিয়ে মনিদিপার পায়ে পড়ে যাবে, কাকুতি মিনতি করবে যে, “মনি ফিরে এসো আমার কাছে।” মেয়েদের মন বোঝা বড় কঠিন, তাও একবার যাবে ও মনিদিপার কাছে।

অনেক রাত করে বাড়ি ফিরলো দেবেশ, বাড়ি গিয়ে কি অবস্থা হবে সেই নিয়ে মনের মধ্যে একটা ঝড় বয়ে চলেছে। মনিদিপাদি যদি বাবা মাকে বলে দেয় তাহলে ওর বাড়িতে থাকা বন্ধ হয়ে যাবে, বাবা মা ওকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবে নিশ্চয়। বাড়ি ফিরে দেখলো মা এক মনে টি ভি দেখছে, কারুর মুখে কোন বিকার নেই।

মা ওকে দেখে জিজ্ঞেস করলো, “কিরে মনি তোকে কোথায় ট্রিট দিল?”

মায়ের গলার আওয়াজ শুনে ধড়ে প্রান ফিরে এল দেবেশের, না তাহলে এখন কিছু অঘটন ঘটে যায়নি। মাথা নিচু করে উত্তর দিল, “না মানে এই এখানে সেখানে ঘুরে কাটালাম।”

মা জিজ্ঞেস করলো ওকে, “কই মনি তো এলোনা তোর সাথে?”

“না ওর একটু মাথা ব্যাথা করছিল তাই বাড়ি চলে গেছে।” অকাট মিথ্যে কথা বলে নিজের ঘরে চলে গেল দেবেশ।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#10)

একা একা বিছানার ওপরে শুয়ে রইলো, কিছুই আর ভাল লাগছে না ওর। কামনার আগুনে পুড়ে একি করে ফেললো দেবেশ। মনিদিপাকে অনেক হেনস্থা করেছে ও সবার সামনে, আজ ওর পায়ে পড়ে ক্ষমা চেয়ে নেবে আর কোন দিন ওর সামনে যাবে না।
রাতের আঁধারে চুপি চুপি মই লাগিয়ে মানব জেঠুর ছাদে উঠলো দেবেশ। সিঁড়ির দরজা বন্ধ দেখে, পাইপ বেয়ে দুতলায় নামলো। চোরের মতন বারান্দা দিয়ে পা টিপে টিপে, মনিদিপার ঘরের দিকে এগোল। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। আস্তে করে কড়া নাড়লো দেবেশ। কোন আওয়াজ নেই, আবার কিছুক্ষণ পরে কড়া নাড়লো দেবেশ। এবারে যেন পায়ের আওয়াজ শুনতে পেল।

দরজা খুলে হাঁ করে তাকিয়ে রইলো মনিদিপা, সামনে কাকুতি ভরা চোখে নিয়ে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে দেবেশ।

ওই মুখ দেখে আরও রেগে গেল মনিদিপা, চোখ ফেটে জল চলে এল, বুকের পাঁজর একটা একটা করে যেন কেউ ভেঙে দিচ্ছে। চাপা স্বরে কেঁদে উঠলো মনিদিপা, “তুই একটা স্বার্থপর, নিজের খিদে ছাড়া আর কিছু জানিস না তুই। তুই আমাকে নিয়ে অনেক খেলা করেছিস। আমি তোকে মন দিয়ে...” আর কথা শেষ করতে পারলো না... হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললো মনিদিপা। দেবেশের মুখের সামনে দরজা বন্ধ করে দিল, ওকে উত্তর দেবার সময় দিলনা পর্যন্ত। চিৎকার করে উঠলো মনিদিপা, বন্ধ দরজার পেছন থেকে, “চলে যা তুই আমার সামনে থেকে, আর কোনোদিন আমার সামনে আসবি না তুই... তুই আমার মান সন্মান সব নিলাম করে দিয়েছিস আজ। আমি আয়নার সামনে দাঁড়াতে পারছিনা, নিজেকে এত ছোটো মনে হচ্ছে।”

বন্ধ দরজার সামনে কিছুক্ষণ হাঁ করে জড় ভরতের মতন দাঁড়িয়ে রইলো দেবেশ। ওর শরীরের সব রক্ত যেন কেউ শুষে নিয়েছে। হাঁটার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছে। বন্ধ দরজার সামনে হাত জোড় করে নিচু স্বরে বললো দেবেশ, “মনিদি আমাকে পারলে ক্ষমা করে দিও আমি তোমার জীবনের সব থেকে বড় পাপী। আমি আর তোমার সামনে কোন দিন আসবো না মনিদি।”

মনিদিপা দরজার ওপার থেকে দেবেশের কান্নার সুর শুনে, মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো, “একি করেছে ও, শেষ পর্যন্ত একটা লম্পট ছেলেকে মন দিয়ে ফেলছে, তাও আবার নিজের থেকে ছোটো। একি ভুল করে ফেলেছে। একি ভালবাসা না যৌন ক্ষুধা।” কঁকিয়ে কঁকিয়ে কেঁদে উঠলো মনিদিপা, “আমি তোকে ভালবাসি রে দেবেশ... আমার মতন পাপী আর এই পৃথিবীতে কেউ নেই। আমি যে তোকে প্রান দিয়ে ভালবাসি।”

এই নিশুতি রাতে, দূর থেকে ভেসে এল একটা গান....

জড়িয়ে ধরেছি যারে সে আমার নয়
কখনো বুঝিনি আমি কে আমার নয়
কখনো বুঝিনি আমি কে আমার নয়

মন তার নেমে এল চোখের পাতায়
ভালবাসা এসে বুকে দাগ দিয়ে যায়
ভুল দিয়ে মালা গেঁথে
ভুল দিয়ে মালা গেঁথে পরালো আমায়
তবু বোঝা গেল না তো সে আমার নয়
কখনো বুঝিনি আমি কে আমার নয়...


বন্ধ দরজার পেছনের সেই আওয়াজ কোনদিন দেবেশের কানে পৌঁছালো না। যেরকম ভাবে পাইপ বেয়ে এসেছিল, ঠিক সেই রকম ভাবে আবার নিজের ঘরে চলে গেল দেবেশ। সারা রাত ঘুমতে পারলো না, বিছানায় পড়ে ছটফট করতে থাকলো।

সারাদিন দেবেশের মনের মধ্যে শুধু মনিদিপাদির কথা ঘুরে বেড়ালো, মন আর কিছুতে টিঁকতে চাইছেনা। আগে মনিদিপাদির কাছে যাবার জন্য মন আকুলি বিকুলি করতো এখন মনিদিপাকে ছেড়ে মন আকুলি বিকুলি করছে। বিকেল বেলা কলেজ থেকে ফিরে দেখে বাড়িতে মনিদিপার মা, মানে জেঠিমা বসে মায়ের সাথে গল্প করছে।

জেঠিমা ওকে দেখে জিজ্ঞেস করলো, “কি রে কাল তোদের কি কোন ঝগড়া হয়েছিল?”

দেবেশের মনে হলো যেন কেউ পেরেক দিয়ে ওর পা মেঝের সাথে গেঁথে দিয়েছে। মাথা নিচু করে উত্তর দিল, “কই নাতো।”

জেঠিমা উত্তর দিল, “ও বাবা, কি জানি মেয়ের কি হলো, কাল রাতে একদম মন মরা ছিল। রাতে কিছু খায়নি আবার সকাল বেলাও না খেয়ে বেরিয়ে গেছে। আজ বলছিল দেরি হবে। এই বারাসাত থেকে কলকাতা, রোজ রোজ যাওয়া, তাই নাকি ও আরও কয়েক জন মিলে ওর অফিসের কাছে একটা ফ্লাট ভাড়া করে থাকবে।”

মা জেঠিমাকে জিজ্ঞেস করলো, “মনি বললো আর তুমি ওকে ছেড়ে দিলে? কি যে করো তুমি দিদি।”

জেঠিমা উত্তর দিল, “তুই তো আর জানিস না ওকে, ওর যা জিদ।”

মা হেসে উত্তর দিল, “মনি আমার সোনার টুকরো মেয়ে, সাত রাজার এক মানিক। আমার যদি কোন বড় ছেলে থাকত তাহলে তোমার মনিকে আমি আমার বাড়ির বউমা করে নিতাম।”

মায়ের কথা শুনে দেবেশের বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেল, চোখ জ্বালা করতে শুরু করে দিল। তাহলে ওর মনিদিপাদি আর ওর হাতের নাগালের কাছে থাকবে না। চিরদিনের মতন হারিয়ে যাবে, আর মায়ের মনে যে এত সাধ ছিল তা কি আর ও জানতো। এখন আর কি হবে।

দিন দুই এই রকম ভাবে কেটে গেল দেবেশের, জীবনটা কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে গেল ওর। একদিন খবর এল যে মানব জেঠুর বড় ছেলে প্রদিপ কোন পাঞ্জাবি মেয়েকে বিয়ে করে চণ্ডীগড়ে ঘর জামাই হয়ে চলে গেছে। দেবেশের মনে সেই ঘটনাটা তেমন কিছু দাগ কাটলো না কেননা প্রদিপকে ও কোনদিন দেখতে পারতো না।

ব্যাথা লাগলো সেদিন, যেদিন কলেজ থেকে ফিরে শুনলো যে মানব জেঠু বাড়ি বিক্রি করে কলকাতায় মনিদিপাদির সাথে ভাড়া বাড়িতে থাকবে। সারারাত ধরে দেবেশ কেঁদে বালিশ ভাসিয়ে দিল, দেয়ালে মাথা ঠুকেও কোন কিছুর উপায় করতে পারলো না। আর তিন মাস পরে ওর জয়েন্ট আই আই টি পরীক্ষা, কিন্তু সব ছেড়েছুড়ে ওর মন বৈরাগী হয়ে গেছে। মন বলছে শেষ পর্যন্ত ও বাবার দোকানে গিয়ে বসবে। মনিদিপাদিকে কথা দিয়েছিল যে ও আই আই টি পড়বে, কিন্তু যখন ওর জীবন থেকে প্রান প্রেয়সী মনিদিপা চলেই গেছে তাহলে আর কার জন্য ও জয়েন্ট আই আই টি দেবে।

এই ভাবে আরও দেড় মাস কেটে গেল। একদিন কলেজ থেকে ফিরে বাবার মুখে শোনে যে মানব জেঠুর নাকি খুব শরীর খারাপ। মাকে জিজ্ঞেস করাতে জানতে পারলো যে মানব জেঠুর হার্ট এটাক হয়েছে। তার ওপরে নাকি বুকে পেস মেকার বসাতে হবে। বাবা দৌড় দিয়েছে কলকাতায়। দেবেশের যাবার ইচ্ছে থাকলেও উপায় ছিল না, কি মুখ নিয়ে দাঁড়াবে ও মনিদিপার সামনে।

কিছুদিন পরে খবর এল যে, পেস মেকার বসানোর পরেও মানব জেঠু দেহ রক্ষা করেছেন। সেই কথা শুনে দেবেশের পায়ের তলায় ভুমিকম্প হয়েছিল। না মানব জেঠুর জন্য নয়, মনিদিপাদির কথা ভেবে, দেবেশ আর থাকতে পারেনি। বাবাকে নিয়ে দৌড়ে গেল গরিয়াহাটায় মনিদিপার বাড়িতে।

চৌকাঠে পা রেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো দেবেশ। চোখের সামনে, সাধের মূর্তি মনিদিপাদি যেন কালি মেখে বসে আছে। সেই ফর্সা গোলগাল চেহারার মনিদিপাদি আর নেই, এক কাঠের পুতুল ভাসা ভাসা চোখে নিয়ে বাবার মৃতদেহের পাশে বসে। আস্তে করে হাঁটু গেড়ে মনিদিপাদির পেছনে গিয়ে বসলো দেবেশ। আলতো করে কাঁধে হাত ছোঁয়ালো। পুরনো হাতের পরশ পেয়ে মনিদিপার হৃদয় কেঁদে উঠলো।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#11)

অনেকক্ষণ পরে পেছনে তাকিয়ে দেবেশকে দেখে, হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললো মনিদিপা, “আমার সব শেষ হয়ে গেল রে দেবু।”

ওর চোখের জল দেখে বুক ফেটে চৌচির হয়ে গেল। দুহাতে মনিদিপাকে জড়িয়ে ধরলো দেবেশ। কিন্তু কি সান্ত্বনা দেবে, যে যাবার তিনি তো চলে গেছেন ওদের ছেড়ে, চিরকালের জন্য। তাকে তো আর দেবেশ ফিরিয়ে আনতে পারবে না। মনিদিপাকেই বাবার মুখে আগুন দিতে হয়েছিল, ওর মা ওর দাদাকে আসতে বারন করে দিয়েছিল। যে ছেলে বাবার অসময়ে দেখতে আসতে পারেনি সে ছেলে বাবার মুখে কি আগুন দেবে। বাবার মুখে আগুন দেবার পরে মনিদিপা অজ্ঞান হয়ে গেছিলো। দেবেশ ওকে কোলে তুলে মুখে চোখে জল ছিটিয়ে আবার সুস্থ করে তুলেছিল।

তিনদিনের কাজের পরে দেবেশ বাড়ি ফিরে আসে। বাড়ি ফিরে আসার আগে দেবেশ মনিদিপাকে বলেছিল, “আমাকে ডাক দিও মনি, আমি তোমার জন্য পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকব।”

তার উত্তরে মনিদিপা মাথা নেড়ে বললো, “না, আমার জীবনে কারুর দরকার নেই। আমি আমার জীবন নিজে থেকে তৈরি করে নিতে পারবো। তুই ভাল থাকিস আর ভাল করে পড়াশুনা করে বড় হস। আমার কথা আর চিন্তা করিস না তুই। তোর সামনে এক বিশাল পৃথিবী পড়ে আছে, দু হাতে তাকে জড়িয়ে ধরিস আর আমাকে মন থেকে ভুলে যাস।” তারপরে কানে কানে বলেছিল, “আমরা খেলার ছলে অনেক দূর এগিয়ে গেছিলাম, সেগুলো সব একটা ভয়ানক স্বপ্ন ভেবে আমাকে মাফ করে দিস, যদি পারিস।”

হাত ধরে কেঁদে উঠেছিল দেবেশ, “তুমি আমাকে পর করে দিচ্ছ মনি। আমি কি নিয়ে থাকব জীবনে। আমি তোমাকে সত্যি ভালবাসি যে।”

মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিল, “তুই আমাকে না আমার শরীরকে ভালবেসেছিলিস। আজতো তুই আমাকে দেখবিও না আর কেউ দেখবে না। তুই চলে যা রে, বেশিক্ষণ আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলে আমি আত্মহত্যা করবো।”

চোখের জল ফেলতে ফেলতে ফিরে এল দেবেশ। প্রানের মনিদিপাদিকে ফিরিয়ে আনতে পারলো না আর।

নতুন করে জীবন শুরু করার চেষ্টা করলো, ভাবল সুকন্যার প্রেমে পড়ে ও মনিদিপাদিকে ভুলে যাবে। কিন্তু বাধ সাধলো সেই পুরনো স্মৃতি। যাই করতে যায় না কেন, সবসময়ে চোখের সামনে ভেসে বেড়ায় মনিদিপাদির কান্না ভেজা দু চোখ। সুকন্যার সাথে আর ওর ভালবাসা হলো না, হলোনা কিছুই করা। পড়াশুনা এক রকম গতানুগতিক ভাবে এগিয়ে চলছে। রোজ সকালে উঠে কলেজ যাওয়া, বিকেল বেলা কলেজ থেকে বাড়ি ফেরা। রাতের বেলা পাশের বাড়ি দেখা। মানব জেঠু বাড়ি বিক্রি করে দেবার পরে সেইখানে এক প্রমোটার এক পাঁচ তলা ফ্লাট বাড়ি বানাচ্ছে। বাড়ির সাথে সাথে মনিদিপাদির স্মৃতি জড়িয়ে ছিল, সেটাও ভেঙে মাটির সাথে মিশে গেল একদিন।

কিছুদিন পরে বেশ রাত করে বন্ধুদের সাথে আড্ডা মেরে বাড়ি ফিরে দেখে বসার ঘরে মা জেঠিমা আরও অনেকে বসে, সবার চোখে জল। দুজনে যেন অনেকক্ষণ ধরে হাউ হাউ করে কেঁদেছে। জেঠিমা দেবেশকে ঢুকতে দেখে আরও জোরে কেঁদে উঠলো।
কাঁপা গলায় বললো, “বাবারে... আমার মনি আর নেই...”

কথাটা ঠিক কানে যায়নি দেবেশের। মাথা ঘুরে পড়ে গেল দেবেশ, কি হয়েছে, জেঠিমা কি বলছে, মনিদিপাদি নেই মানে? কি হয়েছে মনিদিপাদির। বাড়ির চাকর ওর চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে জ্ঞান ফেরালো।

মায়ের পাশে বসে মাকে জিজ্ঞেস করলো, “ও মা, কি হয়েছে মনিদিপাদির?”

মায়ের দুটি লাল চোখে জল, টলমল করছে, “হ্যাঁ রে বাবা, আমার সাধের মনিদিপা আর এই পৃথিবীতে নেই। আমাদের ছেড়ে চলে গেছে মেয়েটা। আমার মেয়েটা কত ভাল ছিল রে....”

বাবার দিকে তাকালো দেবেশ, “কি হয়েছে মনিদিপাদির?”

ওর বাবা উত্তর দিল, “মনিদিপা আত্মহত্যা করেছে।”

দেবেশের মনে হলো যেন ওর কানের ওপরে কেউ সজোরে এক থাপ্পড় মেরেছে। মাথা ভোঁভোঁ করে উঠলো, “কেন কি হয়েছে? কেন করলো আত্মহত্যা, তোমরা কি করে জানলে?”

ওর বাবা উত্তর দিল, “মনিদিপা অনেক ভাল মেয়েরে। ওর মতন তো মেয়েই হয় না মনে হয়। মানবদার শরীর খারাপের জন্য ওর অনেক টাকার দরকার ছিল, আমাকে একবারের জন্যও বললো না ও। এই একটা চিঠি পাওয়া গেছে ওর ব্যাগ থেকে।”

“মানে?” জিজ্ঞেস করলো দেবেশ।

উত্তরে ওর বাবা ওকে জানালো, “আজ খুব সকালে মনিদিপা বলে বেরিয়ে ছিল যে অফিসের কাজে বম্বে যাচ্ছে। তারপরে ন’টা নাগাদ কেউ গঙ্গার ঘাটে একটা ব্যাগ কেউ কুড়িয়ে পায়, আর তার সাথে মনিদিপার পরনের জামাকাপড়ের কিছু অংশ। লাশ পাওয়া যায়নি, হয়তো গঙ্গার জলে ভেসে গিয়েছে কোথাও। ওর ব্যাগ আর জামা কাপড় দেখে পুলিস ওর অফিসে খবর দেয়। তারপরে অফিসের লোকেরা তোর জেঠিমাকে খবর দেয়। ব্যাগের ভেতরে একটা সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে।”

দেবেশ জিজ্ঞেস করলো বাবাকে, “কি লেখা ছিল তাতে?”

**********
ও মা, মা গো,
বাবার শরীর খারাপের সময়ে অনেক টাকার দরকার হয়েছিল, তার জন্য আমি অনেকের কাছে হাত পেতে টাকা ধার করেছি। সেই টাকা শোধ করার মতন আমার আর শক্তি নেই। বাবাই যখন রইলেন না তো সেই টাকা শোধ করে কি করবো। এদিকে পাওনাদারদের তাগাদা, আর আমি একা একটা মেয়ে। এই বিশাল পৃথিবীতে কাউকে ভরসা করে কিছু বলতে পারলাম না, কাউকে ঠিক ভাবে ভালবাসতে পারলাম না। ও মা, তুমি কেঁদো না যেন, মা গো। তোমার পাগলি মেয়ে তোমাকে আর মুখ দেখাতে পারবে না বলে এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছে মা। মা গো তুমি কেঁদো না, নরেশ কাকুর কাছে চলে যেও মা, নরেশ কাকু তোমাকে ফেলবে না।
আর আমার বিয়ের জন্য যে হারটা বানিয়ে ছিলে সেটা দেবেশকে দিও, বোলো ও যখন বিয়ে করবে তখন যেন ওর বউকে দেয়। আর ওকে বোলো যে ও যেন পড়া শুনা করে, আই আই টি যেন পায়। আমার ভালবাসা ওর সাথে সবসময়ে থাকবে।
কাকিমাকে বোলো, পরের জন্মে আমি ঠিক কাকিমার বাড়ির বউ হয়ে আসবো। মা গো, আমাকে ক্ষমা করে দিও, আমি বড় পাপী অভাগী মেয়ে মা। পরের বারে ভাল মেয়ে হয়ে তোমার কোলে ঠিক ফিরে আসবো। মা গঙ্গা যেন আমাকে নিজের করে নেয় মা।
ইতি তোমার অভাগী কলঙ্কিনী মেয়ে, মনিদিপা।

**********
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#12)

চিঠির কথা শোনার পরে দেবেশের দিগবিদিক জ্ঞান হারিয়ে গেল। কি করবে আর, যার প্রেমে শেষ পর্যন্ত পড়লো সেই ওকে ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। সারা রাত কাঁদার পরে সকাল বেলা চোখ মুছে মনিদিপাদির গলার হার হাতে নিয়ে প্রতিজ্ঞা করলো যে আই আই টি ও পাবেই। কারুর সাধ্যি নেই ওর আই আই টি রুখে দেবে। ওর সাথে আছে জেঠিমার দেওয়া মনিদিপার সোনার হার।

এক মাস বাকি আর পরীক্ষা দেবার। পুরপুরি বদলে গেল দেবেশ ঘোষাল। লোহার মূর্তি হয়ে গেছে দেবেশ। কোন ঝড় ঝঞ্ঝা ওকে ওর পথ থেকে নাড়াতে পারছে না। এই রকম মনোভাব নিয়ে জোর কদমে শুরু করে দিল পড়াশুনা। রোজ রাতে একবার করে ওই সোনার হারটা দেখে আর পড়তে বসে দেবেশ। পরীক্ষা দিল দেবেশ এবং দিল্লি আই আই টি তে ইলেক্ট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং পেয়ে গেল।

কিছু দিনের মধ্যে ওকে বারাসাতের গলি ছেড়ে, তিলোত্তমা কোলকাতা ছেড়ে পাড়ি দিতে হলো দিল্লি। সব সময়ের সাথী মনিদিপার গলার হার। মনিদিপা আর নেই, তবে যদি কাউকে পায় কোনদিন তাকে পরিয়ে দেবে দেবেশ। এই ভেবে সবসময়ে নিজের কাছে রেখে দিল ওই হার। ওই সোনার হার হয়ে গেল ওর রুদ্রাক্ষ মালা, ওর জীবনের সঙ্গী।

দিল্লীতে পড়ার সময়ে অনেক মেয়ের সান্নিধ্যে এসেছে দেবেশ, কিন্তু কাউকে ঠিক মনে ধরাতে পারেনি। সবার মধ্যে যেন মনিদিপাকে খুঁজে বেড়ায় ও।

বছর ঘুরে গেল, দেখতে দেখতে তিনটে বছর কেটে গেলে। পুরানো স্মৃতির ওপরে অনেক ধুলো জমে গেল। মনিদিপা এখন শুধু মাত্র একটি সোনার হার ছাড়া আর কিছু না। ও এখন আর মনিদিপাকে খোঁজে না, খোঁজে এক ভালবাসার পাত্রীকে।

কলকাতার বাড়িতে এখন বাবা, মা আর জেঠিমা থাকেন। গরমের ছুটির পরে কলকাতা থেকে ফিরছে দেবেশ। স্টেশান থেকে অটো নিয়ে হস্টেলের দিকে যাচ্ছে। ঠিক আই আই টি গেটের সামনে অটো একটা মেয়েকে ধাক্কা মেরে দিল। বিশেষ কিছু যদিও হয়নি মেয়েটার, তবুও ভদ্রতার খাতিরে নেমে গিয়ে সাহায্য করতে চাইলো মেয়েটাকে। মেয়েটার মুখ দেখে দেবেশ থ। রিতিকা উপাধ্যায়, ওদের অঙ্কের প্রফেসার শ্যামল উপাধ্যায়ের মেয়ে, এল এস আরে পড়ে। সারা আই আই টি মেয়েটার সৌন্দর্যের পেছনে পড়ে আছে।

দেবেশ জিজ্ঞেস করলো রিতিকাকে “বেশি লাগেনি তো?”

মুখ তুলে তাকালো রিতিকা, “কি যে বলো না, অটো ওয়ালাগুলো একদম দেখে চালায় না।”

দেবেশ বললো, “রিতিকা, তোমার কিন্তু দোষ ছিল। তুমি রাস্তা না দেখে পার হচ্ছিলে আর অটো ধাক্কা মেরেছে। যাইহোক বেশি লাগেনি মনে হয়, চলো তোমাকে আমি বাড়িতে ছেড়ে দিচ্ছি।”

রিতিকা একজন অচেনা ছেলের মুখে নিজের নাম শুনে ঘাবড়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি আমাকে চেন?”

হেসে উত্তর দিল দেবেশ, “হ্যাঁ তোমাকে কে না চেনে। তুমি উপাধ্যায় স্যারের ছোটো কন্যে আর এল এস আর এ সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী। আই আই টির সবাই তোমাকে চেনে আর আমি তো ইলেক্ট্রিক্যালের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র, তাই আমিও তোমাকে চিনি।”

ওর যা দেমাক তার সামনে কোন ছেলে আজ পর্যন্ত এত সাহস করে কিছু বলতে পারেনি। দেবেশের এত সাহস দেখে রিতিকা হেসে ফেললো, “ওকে চলো তাহলে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দাও। আজ আমার ক্লাস মিস হলো আরকি।”

অটোতে বসে দেবেশ রিতিকাকে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি তো ইংলিশ নিয়ে পড়ছো তাই না?”

“বাঃবা, আমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জানো দেখছি।” রিতিকা ওর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো।

হেসে উত্তর দিল দেবেশ, “তুমি সুন্দরী আর ফেমাস তাই তোমার ব্যাপারে তো সবাই রিসার্চ করে। সেইখান থেকে আমিও কিছু শুনে ফেলেছি।”

হেসে জিজ্ঞেস করে রিতিকা, “তুমি আমার ওপরে রিসার্চ করোনি?”

মাথা নাড়ায় দেবেশ, “না আমি করিনি, করার দরকার পড়েনি তাই করিনি।”

প্রশ্ন করলো রিতিকা, “সবাই করে রিসার্চ, তুমি কেন করোনি?”

একদম অকাঠ সত্যি কথা বলে ফেললো দেবেশ, “তুমি তো ধরা ছোঁয়ার বাইরে তাই করিনি।”

এইরকম ভাবে কেউ যে কথা বলতে পারে সেটা রিতিকার ধারনা ছিলোনা। হাঁ করে তাকিয়ে রইলো দেবেশের মুখের দিকে।

“মুখটা বন্ধ করো নাহলে মাছি ঢুকে যাবে...” আলতো করে চিবুকে আঙুল ছুঁইয়ে মুখ বন্ধ করে দিল।

রিতিকা তো আরো থ বনে গেল, কি সাহস ছেলের বাবা, প্রথম দেখায় চিবুকে হাত।
প্রফেসার কোয়ার্টার এসে গেল। রিতিকা অটো দাঁড় করিয়ে নেমে গেল, সাথে দেবেশও নামলো।

মিষ্টি হেসে দেবেশের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল রিতিকা, “থ্যাঙ্ক ইউ ফর হেল্প। আমি মনে রাখবো।”

একটু থেমে তারপরে হ্যান্ড সেক করলো দেবেশ, “ওকে বাই।”

পেছন ফিরে চলে যাচ্ছিল দেবেশ, এমন সময়ে পেছন থেকে রিতিকার ডাক, “হ্যালো তোমার নামটা তো জানা হলো না। বাবাকে জিজ্ঞেস করতে হবে যে তুমি সত্যি আই আই টিতে পড়।”

হেসে উত্তর দিল দেবেশ, “সন্দেহ থাকলে কাল ইলেক্ট্রিক্যালের প্র্যাক্টিকাল ক্লাসে চলে এসো যখন খুশি, আমাকে পেয়ে যাবে। পেয়ে গেলে তবে আমি আমার নাম বলবো তার আগে নয়।”

রিতিকার সামনে কোন ছেলে নিজের নাম না জানিয়ে ওই রকম ভাবে চলে যাবে সেটা রিতিকার ঠিক হজম হলো না, “ছেলেটা তো বড় বেয়াদপ। আমাকে অমান্য করা, আমার মতন সুন্দরীকে অমান্য করা। ঠিক আছে দেখে নেব আমি।”

দেবেশ হাসতে হাসতে হোস্টেলের দিকে হাঁটা লাগালো আর মনে মনে রিতিকার সুন্দর ফর্সা গোল মুখখানির ছবি এঁকে নিলো। উফ কি একটা মেয়ে, যেমন দেখতে তেমন যেন দেমাক। হবে নাই বা কেন, বাবা আই আই টির প্রোফেসর, মা জে এন ইউতে পড়ায়, দিদি সুইজারল্যান্ডে থাকে, এই রকম মেয়ে কি আর বারাসাতের দেবেশকে ঘাস দেবে।
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#13)

সকাল বেলা প্রাক্টিক্যাল ক্লাস শুরু হলো। এমন সময়ে দরজার কাছ থেকে রিতিকার মুখ উঁকি মারতে দেখে দেবেশ থ। ক্লাসের সব ছেলের চোখ চলে গেল দরজার দিকে। উফ আহ সবার মুখ থেকে আওয়াজ বের হচ্ছে, কেউ টিটকিরি দিচ্ছে, কি মাল মাইরি, উপাধ্যায় স্যার কি খেয়েছিলেন কে জানে কিন্তু ওর মা নিশ্চয়ই দুধ খেয়েছিল তাই মেয়ে এত ফর্সা আর সুন্দরী।

ওই সব কথা শুনে দেবেশের হাসি পেয়ে গেছিলো। রিতিকা দরজা দিয়ে ভেতরে তাকিয়ে, শর্মা স্যার বেরিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস কিছু করলো রিতিকাকে। রিতিকার চোখ তখন কাউকে খুঁজে চলেছে। এমন সময়ে দেবেশের চোখের ওপরে রিতিকার চোখ পড়ে। রিতিকার ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে ওকে দেখে। শর্মা স্যারকে কানে কানে কিছু বলে রিতিকা চলে গেল।
শর্মা স্যার দেবেশের দিকে হেঁটে এসে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার প্রাক্টিক্যাল কত দূর?”

“স্যার এইতো সবে শুরু করলাম।” দেবেশ উত্তর দিল।

“আচ্ছা, সে তো দেখছি, তা যাও আজ তোমার ডাক পড়েছে”, মিচকি হেসে দেবেশকে বললো শর্মা স্যার।

ক্লাসের বাকি ছেলেদের মাথায় বাজ পড়েছে যেন, হাঁ করে তাকিয়ে দেবেশের দিকে। এর মাঝে ভিশাল এসে কানে কানে জিজ্ঞেস করলো, “আবে শালে, কত মাল ফেলেছিস তুই ওর ওপরে যে ও তোকে বাইরে ডাকছে। সারা আই আই টি যার দিবানা সে কিনা তোর সাথে! তুই শালা ডুবে ডুবে জল খাস তো মাইরি।”

ভিশালের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিল দেবেশ, “কামিনা, তোর মতন আমি নই, দেখ রিতিকা আমাকে জুতো মারে কিনা।”

ওদিকে স্নেহা আওয়াজ দিল, “জান, যদি রিতিকা ধোঁকা দেয় তাহলে আমার দিল হাজির আছেরে।”

স্নেহার কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো আর দেবেশের কান লাল হয়ে গেল। সেই ফার্স্ট ইয়ার থেকে স্নেহা ওর পেছন ছাড়েনি, তবে হ্যাঁ শুধু মাত্র ইয়ার্কি ঠাট্টা করতো ওরা, কোনদিন কোন সিরিয়াস হয়নি দেবেশ বা স্নেহা।

ক্লাস থেকে বেরিয়ে এসে দেখে সামনে দাঁড়িয়ে রিতিকা। আজ যেন আরও সুন্দরী দেখাচ্ছে ওকে। গাড় নীল রঙের জিন্সের ক্যাপ্রি আর ওপরে ছোটো হাতার সাদা টপ। কচি বয়সের ছাপ মুখে তবে সারা অঙ্গে যৌবনের মাদকতার প্রলেপ লাগানো। তাই যে কোন ছেলে ওকে দেখলে পিছলে পড়ে যায়। বুকের কাছে কলেজের ব্যাগ ধরে রেখেছে, যেন ওর বুক নিয়ে দেবেশ খেলবে তাই সেটাকে আড়াল করে রেখেছে।

রিতিকা যেন আদেশ করলো দেবেশকে, “হ্যাঁ কি হলো, এবারে তোমার নাম বলো।”

হেসে উত্তর দিল দেবেশ, “আমার নাম জানার জন্য একদম ক্লাসে এসে হাজির, তাহলে তো নামটা আরও বলবো না।”

চোখে সেই এক রকমের ভ্রুকুটির চাহনি, “না আমি আসতে চাইনি। মাম্মা আমাকে বললো যে, যে তোকে গাড়ি করে বাড়ি দিয়ে গেল তার নামটা পর্যন্ত জানলি না, তাই আমি তোমার নাম জানতে এসেছি।”

মাথা নাড়লো দেবেশ, “হুম তার মানে ম্যাডাম আমার নাম শুধু মাত্র মায়ের আদেশ মানার জন্য জানতে এসেছে।”

“হ্যাঁ” রিতিকা এবারে বেশ জোর করে উত্তর দিল, “বলবে, না আমি চলে যাবো।”

“তুমি চলে গেলে আমার তো কিছু ক্ষতি হবেনা...” দেবেশ সেই একই সুরে উত্তর দিল। মেয়েটার তাবড় তো বড় বেশি।

রিতিকা দেখলো দেবেশ কিছুতেই দমছে না, তাই একটু নম্র হয়ে প্রশ্ন করলো, “প্লিস তোমার নামটা বলো না, ড্যাড না হলে মন খারাপ করবে।”

হেসে দিল দেবেশ, “আগে ছিল মাম্মা এখন ড্যাড, ব্যাপারটা কি বলতো।”

ইস... ধরা পড়ে গেছে রিতিকা, মিচকি হেসে বললো, “ছাড়ো মিস্টার আননেমড, কালকের হেল্পের জন্য থ্যাংকস।”

“ক’বার ধন্যবাদ জানাবে আমাকে, কাল জানিয়েছো আজ আবার।” দেবেশ মুচকি হেসে রিতিকাকে জিজ্ঞেস করলো।

“বাপ রে, ধন্যবাদ জানাতেও তোমার পারমিশান নিতে হবে নাকি।” খিলখিল করে হেসে উঠলো রিতিকা। হাসি দেখে দেবেশের হৃদয় ধক করে উঠলো। ডান দিকে একটা গজ দাঁত হাসিটাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে।

রিতিকা ডান হাত দেবেশের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো, “ওকে বাবা, নো সরি নো থ্যাঙ্ক ইউ। সো ফ্রেন্ডস।”

দেবেশ হাত মেলালো রিতিকার সাথে, “ওকে ডান... ফাস্ট ফ্রেন্ডস... আমি দেবেশ ঘোষাল। ইলেক্ট্রিক্যাল ফাইনাল ইয়ার।”

“বেশ নাম, আমার মনে থাকবে।” রিতিকা হেসে জবাব দিল। মাথা নাড়ালো দেবেশ। রিতিকা হাত নাড়িয়ে বললো, “বাই আমি যাচ্ছি আজ, কলেজের দেরি হয়ে যাবে। কাল দেখা করবো আমার কলেজের বাইরে।”

দেবেশ উত্তর দিল, “বাঃ রে, আমার ক্লাসটা মাটি করে এখন যাওয়া হচ্ছে। বেশ যাও তবে কাল হবে না পরশু হবে।”

প্রশ্ন করলো রিতিকা, “কেন কাল কি হয়েছে?”

হেসে জবাব দিল দেবেশ, “আরে না, কাল উপাধ্যায় স্যারের ক্লাস আছে, মিস করা যাবেনা।”

রিতিকা একটু লজ্জায় পড়ে গেল, “ড্যাড খুব কড়া তাই না?”

মজা করে বললো দেবেশ, “সেটা তার মেয়েকে দেখলেই বোঝা যায়।”

লাজুক হাসি হেসে রিতিকা বললো, “ওকে বাই।” এবারে রিতিকা আর দাঁড়িয়ে না থেকে হাত নাড়িয়ে চলে গেল।

দেবেশের মনের মধ্যে আবার একবার প্রেমের ভাব জেগে উঠলো। প্রেম করা তো ভুলে গেছিলো দেবেশ, রিতিকার হাসি আর দুষ্টু মিষ্টি ভাব আবার করে দেবেশের মরু হৃদয়ে ফুল ফোটালো। আর ক্লাস করলো না দেবেশ। বিছানার ওপরে সারা রাত ধরে শুয়ে শুয়ে হাতে সোনার হার নিয়ে ভাবতে লাগলো, রিতিকা কি সেই মেয়ে যার গলায় এই হার পরাবে। এখন ঠিক করে জানে না দেবেশ।

দু’দিন পরে রিতিকার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে দেবেশ সিগারেটে টান দিচ্ছিল। এমন সময়ে পেছন থেকে হাতের ছোঁয়া, “কতক্ষণ ওয়েট করছো?”

ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো রিতিকাকে। “বেশি না এই মিনিট দশেক হবে।” জবাব দিল দেবেশ।

“তো এখন কি?” জিজ্ঞেস করলো রিতিকা।

দেবেশ মিচকি হেসে বললো, “আমি ডেকেছি নাকি তোমাকে? তুমি তো আমার সাথে দেখা করার জন্য বললে।”

অভিমান হয়ে গেল রিতিকার, “ও তাই বুঝি, আমি ডেকেছি। ঠিক আছে আমি আর যাবোনা।” হাত নাড়িয়ে একটা অটো দাঁড় করালো রিতিকা। “এখন সময় আছে মিস্টার ঘোষাল। নিয়ে না গেলে আমি অটোতে করে সোজা বাড়ি। তাড়াতাড়ি বল।”
 
কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী (#14)

রিতিকাকে অটোর মধ্যে ঠেলে দিয়ে নিজে উঠে গেল দেবেশ। অটো ওয়ালাকে বললো, “সাউথ এক্স চলো।”

মিচকি হেসে জিজ্ঞেস করলো রিতিকা, “এতক্ষণ বুঝি খেলা চলছিল আমার সাথে।”

“না রে আমি কারুর সাথে খেলি না, যা করি সোজাসুজি করি।” দেবেশ রিতিকার প্রশ্নের জবাবে বললো।

সি সি ডিতে পাশাপাশি বসে কফি খেতে খেতে রিতিকা জিজ্ঞেস করলো, “তো এর পরে কি?”

উত্তর দিল দেবেশ, “এর পরে চাকরি। নেক্সট সেমেস্টারে ক্যাম্পাস হবে, সেখান থেকে কিছু একটা পেয়ে যাব। যদি পারি তো ফিরে যাব কলকাতা।”

অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো রিতিকা, “দিল্লী এলে আই আই টি পড়লে, এর পরেও ফিরে যাবে কলকাতায়?”

“কেন বলতো?” প্রশ্ন করলো দেবেশ।

“না মানে এমনি জিজ্ঞেস করছিলাম” রিতিকা একমনে কফিতে চুমুক দিতে দিতে উত্তর দিল, “এই ধর কাউকে দিল্লীতে পেয়ে গেলে মানে কোন গার্ল ফ্রেন্ড তাও তাকে ছেড়ে দিয়ে কলকাতা চলে যাবে তুমি?”

দেবেশ বেশ বুঝতে পারলো যে রিতিকা একটু ঝুঁকেছে ওর দিকে, আর দেবেশ তো আগে থেকে হাত বাড়িয়ে তৈরি, পড়লেই লুফে নেবে যেন। চোখে চোখ রেখে উত্তর দিল দেবেশ, “মনের মতন সাথি পেলে আমি তার সাথে যেখানে খুশি যেতে পারি।”

উত্তরটা শুনে রিতিকার মন খুশিতে ভরে উঠলো, “সত্যি?”

মাথা নাড়ালো দেবেশ, “হ্যাঁ সত্যি।”

শুরু হয়ে গেল, দেবেশ আর রিতিকার প্রেম। সারা কলেজ ক্যাম্পাস জেনে গেল যে, উপাধ্যায় স্যারের মেয়ে রিতিকা দেবেশের প্রেমে পড়েছে। শুধু জানেনা উপাধ্যায় স্যার আর তার স্ত্রী। সন্ধ্যে বেলায় পার্টি, কখন সাউথ এক্সের বারে বসে একসাথে ড্রিঙ্কস করা বা কোন ডিস্কোথেকে গিয়ে জড়াজড়ি করে নাচা; সব শুরু হয়ে গেল রিতিকা আর দেবেশের মধ্যে।

একদিন বিকেল বেলায় দুজনে হাত ধরে একটা নামি মলের ভেতর ঘুরছিল। রিতিকা ওকে বলে, “পরের সপ্তাহে ড্যাড আর মাম্মা দিদির কাছে স্বুইজারল্যান্ড যাচ্ছে এক সপ্তাহের জন্য।”

দেবেশ জিজ্ঞেস করলো রিতিকাকে, “হুম স্বুইজারল্যান্ড বেশ সুন্দর জায়গা, তো আমাকে কেন জানাচ্ছো?”

রিতিকা ফিসফিস করে কানে কানে বললো, “তার মানে আমি একা বাড়িতে, বুঝলে বুদ্ধু। শুধু চাকর থাকবে আর ড্রাইভার আর কেউ না।”

রিতিকার মতলবটা বুঝে ফেললো দেবেশ, রিতিকাকে একা পাবার জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছিল, নাগালের সামনে চলে এল সেই সুদিন। তাও রিতিকাকে রাগানোর জন্য বললো, “ওকে আমি ড্রাইভারকে বলে দেব রাতে যেন তোমার রুমের মেঝেতে শোয়।”

দুমদুম করে দেবেশের বুকে কিল মারতে শুরু করলো রিতিকা, “আই হেট ইউ, আই হেট ইউ... শেষ পর্যন্ত কিনা আমার কপালে জুটবে একটা ড্রাইভার। তুমি ভাবলে কি করে।”

দেবেশ রিতিকার কোমরে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো, “আরে না বেবি, বলো কোথায় যাবে।”

“তুমি আমাকে নিয়ে যাবে?” অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো রিতিকা। ও ভাবতে পারেনি যে দেবেশ ওকে নিয়ে বেড়াতে যাবার পরিকল্পনা পর্যন্ত করতে পারে।

“তেরে লিয়ে তো জান ভি হাজির হ্যায় জানাম, ব্যাস একবার তো বোল।” কপালে ছোট্ট চুমু খেয়ে বললো দেবেশ।

রিতিকা দেবেশকে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে জিজ্ঞেস কর, “হানি তুমি ড্রাইভ করতে জানো?” মাথা নেড়ে জবাব দিল দেবেশ “হ্যাঁ”, “তাহলে চলো সারিস্কা, এই পাশেই আছে বেশি দুরে নয়, শুধু আমি আর তুমি, আমি ড্রাইভারকে পটিয়ে গাড়ি চেয়ে নেব।”
“ওকে বেবি ডান। নেক্সট সানডে তাহলে আমরা সারিস্কা যাচ্ছি।” দেবেশ রিতিকার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে জবাব দিল।

একদিকে রিতিকার মন ছটফট করছে যে কবে রবিবার আসবে আর একদিকে দেবেশের মন ছটফট করছে যে কবে রবিবার আসবে। দু’জন দু’জনার আলিঙ্গনে একে অপরকে সমর্পণ করে দেবে। একা থাকলে দেবেশ কি করবে সেই উত্তেজনায় রিতিকার রাতের ঘুম চলে গেল। বারে বারে নিজেকে আয়নায় দেখতে থাকে, কোথাও যেন মোটা হয়ে যায় না বা কিছুতে যেন কিছু কাটেনা। বাবা মা শনিবার রাতে প্লেনে চাপলেই, রবিবার সকাল বেলায় ও চলে যাবে দেবেশের বাহু পাশে। দেবেশ তো পাক্কা যে রিতিকা নিজেকে উজাড় করার জন্য যাচ্ছে, আর দেবেশ কেন থেমে থাকবে, ওর হাতেখড়ি তো অনেক আগেই হয়ে গেছে।

রবিবার দুপুরে রিতিকাকে নিয়ে দেবেশ রওনা দিল সারিস্কা উপাধ্যায় স্যারের গাড়ি চেপে। রিতিকা ঘুরতে যাবে তাই অনেক খোলা মেলা পোশাক পরেছে। একটা বাদামি জিন্সের ক্যাপ্রি আর সাদা ট্যাঙ্কটপ। ক্যাপ্রি তো রিতিকার কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত চামড়ার সাথে লেপটে গেছে, আর উপরের ট্যাঙ্কটপটা রিতিকার স্তনের আয়তন আর কোমল পেটের সাথে লেপটে রয়েছে। দেবেশ একবার রাস্তার দিকে তাকায় একবার জুলু জুলু চোখে পাশে বসা যৌবনে ভরপুর রিতিকাকে দেখে। ওই রকম এক কচি মেয়েকে দেখে দেবেশের তো গাড়ি চালাতে চালাতে অবস্থা খারাপ হয়ে যাবার যোগাড়।

পাশে বসে রিতিকা বেশ বুঝতে পারে দেবেশের মনের ভাব, মিচকি হেসে জিজ্ঞেস করে, “আমাকে দেখছো? ওই রকম ভাবে না দেখে গাড়ি চালাও ঠিক করে নাহলে আমাকে তো আর দেখতে পাবে না তার বদলে যমের ষাঁড় আসবে আমাদের নিতে।”

প্রেম ঘন স্বরে দেবেশ রিতিকাকে বললো, “বেবি আই লাভ ইউ...”

রিতিকা দেবেশের গলা জড়িয়ে ধরে উত্তর দিল, “হানি আই লাভ ইউ টু মাচ।”

সন্ধ্যে হয়ে গেল সারিস্কা পৌঁছতে। আই আই টি পেয়েছে বলে দেবেশের বাবা ওকে অনেক টাকা দেয় হাত খরচের জন্য। পয়সার বিশেষ অভাব নেই দেবেশের। রিসোর্ট আগে থেকে বুক করা ছিল তাই বিশেষ বেগ পেতে হলো না।

রাতের খাবারের পরে একা কামরায় দেবেশ আর রিতিকা। দুজনে যেন প্রহর গুনছে কে আগে কার ওপরে ঝাঁপাবে। দেবেশ দিল্লী থেকেই কনডমের প্যাকেট নিয়ে এসেছিল, জানতো যে কাজে লেগে যাবে হয়তো কম পড়তে পারে। ঘরের মধ্যে একটা নীলচে আলো জ্বলছে। দেবেশ স্নান সেরে কোমরে একটা তোয়ালে পেঁচিয়ে বিছানায় বসে একটা সিগারেটে টান দিচ্ছে। রিতিকা, বাথরুমে স্নান করছে আর গান গাইছে।

দেবেশ ডাক দিল রিতিকাকে, “বেবি আর কত দেরি তোমার, আমি খুব টায়ার্ড, এবারে ঘুমিয়ে পড়বো কিন্তু।”
 

Users who are viewing this thread

Back
Top