পায়েলের বাবা ডক্টর কমলেশ সান্যাল খুব বদরাগী প্রকৃতির লোক। পায়েলের মা সুজাতা, সেই তুলনায় অনেক নিরীহ আর রক্ষণশীল মহিলা। পায়েল অনেক বড় বয়স পর্যন্ত বাবা মাকে ঝগড়া করতে দেখেছে, এমনকি ওর বাবা ওর মায়ের গায়ে হাত তোলে, সেও দেখেছে। বাবাকে বাধা দিতে গেলে পায়েল অনেক বার মার খেয়েছে। কোন কারন ছাড়াই ওর বাবা ওর মাকে মারতো, তরকারিতে নুন হলেও মারতো, নুন না হলেও মারতো। টাকা পয়সা সব কিছুই ছিল, কিন্তু কেন ওর মাকে ওর বাবা প্রায়দিন মারধোর করতো সেই কারন ওর অজানা। একদিন পায়েল ওর মাকে জিজ্ঞেস করেছিল, ওর মা বলেছিল যে ওর বাবা বদরাগী, বাইরের কারুর কথা বলা, মেলা মেশা পছন্দ করে না, কোন কিছুতেই ভালো দেখে না। পায়েল স্কুলে পড়ার সময় থেকেই আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখতো, বাড়ির চার দেয়ালের বাইরে উন্মুক্ত পৃথিবীতে বিচরন করার স্বপ্ন দেখতো। কিন্তু ওর বাবার ভয়ে স্কুলে থাকতে কোনদিন সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পারেনি। কোন ছেলের সাথে কথা বলা দুরের কথা, কারুর দিকে তাকালেই ওর বাবা যেন ওকে গিলে ফেলবে এমন করতো। তাও পায়েল সেই সময়ে লুকিয়ে চুরিয়ে প্রেম করেছে। অচেনা ছোঁয়ার কিছু স্বাদ নিয়েছে। পায়েল ছোটবেলা থেকে মেয়েদের স্কুল, মহাদেবী বিড়লাতে দিদির সাথে পড়াশুনা করেছে। সেই সময় থেকেই দিদির আর পায়েলের চেনাজানা। কলেজে পড়ার সময়ে থেকে দিদি, অনুপমার সাথে পায়েলের বন্ধুত্ব প্রগাড় হয়ে ওঠে। দিদির খোলামেলা পোশাক আশাক দেখে পায়েল উন্মুক্ত আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখে। দিদির সাহায্যে পায়েল প্রথম স্বাধীনতার স্বাদ পায়, প্রথম ডিস্কোথেকে যাওয়া, প্রথম কোন বড় রেস্টুরেন্টে খাওয়া, মন খুলে কেনাকাটা করা সব দিদির জন্য করে। পায়েলের এই খোলামেলা পোশাক, নধর গঠনের জন্য অনেক ছেলেরা ওকে কাছে পেতে চেয়েছে। পায়েল সেই সময়ে উড়তে উড়তে অনেকের কাছে ধরা দিয়েছে। পায়েল জানতো ওর বাবা যদি এই স্বভাবের কথা জানতে পারে তাহলে ওকে আস্ত রাখবে না, তাই পায়েলের বেশির ভাগ পোশাক দিদির আলমারিতে রেখে দিতো। কলেজে যাবার আগে ওদের বাড়িতে এসে পোশাক পালটে তবে দিদির সাথে কলেজ যেতো। বাধা অবস্থায় থাকতে থাকতে পায়েল হটাত করে মুক্তির স্বাদ পায় দিদির হাত ধরে, তাই পায়েল একটু বেশি রকমের উশৃঙ্খল হয়ে যায়। যদিও অঙ্কন ওর সব উশৃঙ্খলতার কথা জানে না, তবে জানে যে পায়েল মাঝে মাঝে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে বাড়িতে ফিরতো দিদির সাথে। সেদিন আর পায়েল নিজের বাড়িতে যেতো না, দিদি ওকে নিজের কাছে রেখে দিতো। এক পাড়ায় বাড়ি, তাই দিদির সাথে মেলামেশা করাতে ওর বাবা ওকে বিশেষ কিছু বলতো না। পায়েল বলেছিল যে কোনদিন যদি কাউকে ওর মনে ধরে তাহলে তার সাথে বাড়ি থেকে পালিয়ে চলে যাবে আর ওর মাকে সাথে নিয়ে যাবে। বাড়ির ওই লোহার খাঁচা থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিল কিন্তু ওর অদৃষ্টে মনের মতন মানুষ জুটল না। সবাই ওকে শুধু ভোগের বস্তু হিসাবে ব্যবহার করে গেছে।
দেবায়ন চুপ করে অঙ্কনের কথা শুনে যায়। পায়েলের এই কাহিনী অনুপমা ওকে আগেই বলেছিল। অঙ্কনের মুখে সব শুনে একটু দমে যায়, অঙ্কন কি জানে যে ওর দিদির সাথে আর দেবায়নের সাথে পায়েলের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে? অঙ্কনের কথা শুনে মনে হলো, পায়েল এই ঘটনা লুকিয়ে রেখেছে অঙ্কনের কাছ থেকে। দেবায়ন অগ্নিহোত্রীর কথা জিজ্ঞেস করে।
অঙ্কন অগ্নিহোত্রীর কথা বলতে শুরু করে। পায়েল যত বড় হয়েছে, ওর দেহের গঠন তত সুন্দর আর লাস্যময়ী হয়ে উঠেছে। ওর পিসির বাড়ি নৈহাটি, পায়েলের যেতে ইচ্ছে করে না ওর পিসতুতো দাদার জন্য কিন্তু বাবার জন্য যেতে হয় পিসির বাড়িতে। ওর পিসতুতো দাদার কুনজর ছিল পায়েলের উপরে। পিসির বাড়িতে গেলে ওর পিসতুতো দাদা, বিনয়, কোন অছিলায় পায়েলের গায়ে হাত দিতো, মাঝে মাঝে ওর বুকে পাছায় হাত দিতো। আগে পায়েল কিছু বলতো না, কিন্তু পরের দিকে পায়েলের এই সব ভালো লাগতো না। পায়েল এই সব কথা কাউকে জানায়নি। এমনকি ওর পিসতুতো দাদা ওকে একদিন একা বাড়িতে পেয়ে চুমু খেয়ে, স্তন টিপে পাছা টিপে আদর করেছিল। রাগে দুঃখে পায়েল কেঁদেছিল সারারাত, কিন্তু কাউকে বলতে পারেনি।
দিদি আর দেবায়ন গরমের ছুটিতে মুসৌরি ভ্রমনে যায়। পায়েলের বাবা, ওকে কয়েক দিনের জন্য ওর পিসির বাড়ি নৈহাটিতে রেখে আসে। পায়েল প্রমাদ গোনে, বুঝতে পারে যে ওর দাদার হাতে ওর ধর্ষণ হওয়া ছাড়া আর কোন গতি নেই। পায়েল এক মতলব আঁটে তখন, বিনয়ের বন্ধু অগ্নিহোত্রীর সাথে প্রেমের নাটক করে। পায়েল ভেবেছিল যে দুই বন্ধুর ভেতরে দ্বন্দ লাগিয়ে দেবে আর এইভাবে ও বিনয়ের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যাবে আর যদি অগ্নিহোত্রীকে ভালো লেগে যায় তাহলে অগ্নিহোত্রীর সাথে পালিয়ে যাবে। নারীর লাস্যময়ী রুপ সব কিছু করতে পারে, সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক হয়েছিল। অগ্নিহোত্রীর সাথে বিনয়ের মনোমালিন্য ঘটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল পায়েল। পায়েল অগ্নিহোত্রীকে নিজের প্রেমের জালে জড়িয়ে নিয়েছিল। কোলকাতা ফিরে আসার পরে, অগ্নিহোত্রীর সাথে বেশ কয়েকবার দেখা হয়।
দেবায়ন মন দিয়ে অঙ্কনের কাছে এই কাহিনী শুনতে শুনতে জিজ্ঞেস করে পায়েলের ব্যাপারে এতো কিছু জানলো কি করে? অঙ্কন বলে যে পরে এই সব ঘটনা এক এক করে পায়েল ওকে জানিয়েছে। অগ্নিহোত্রীর সাথে প্রেমের কথা পায়েল ওর দিদিকে কিছুটা বলেছিল কিন্তু সম্পূর্ণ বলেনি। পায়েল আর অঙ্কনের মাঝে আগে থেকেই একটু হৃদ্যতা ছিল কিন্তু প্রেম প্রীতি পর্যায় ছিল না। মাঝে মাঝেই দুইজনে ফোনে বেশ গল্প করতো। সেই গল্পের আওয়াজ একদিন ওর দিদি শুনে ফেলেছিল আর সেই নিয়ে প্রশ্ন করেছিল। তখন সেই কথা ঢাকার জন্য গরিমার নাম নেয় অঙ্কন। দেবায়নের কাছে এবারে চিত্র বেশ পরিষ্কার হতে শুরু করে।
প্রথম যেদিন অঙ্কন পায়েলকে ফোন করেছিল তখন পায়েলের সাথে অগ্নিহোত্রীর দেখা হয়নি। একদিন রাতে সাহস জুগিয়ে দিদির ফোন থেকে পায়েলের ফোন নাম্বার নিয়ে পায়েলকে ফোন করেছিল। কাঁপা গলার আওয়াজ শুনে পায়েল রেগে নাম জিজ্ঞেস করেছিল। অঙ্কন ভয় পেয়ে ফোন কেটে দিয়েছিল। কিছু পরে আবার ফোন করেছিল অঙ্কন, তখন কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করেছিল কেমন আছে পায়েল। পায়েল দ্বিতীয় বার ফোন পেয়ে আরও রেগে যায়, অঙ্কন নিজের পরিচয় দিতে দ্বিধা বোধ করে আবার ফোন কেটে দেয়। রাতে ঘুমাতে পারেনা অঙ্কন, বারে বারে শুধু পায়েলের মুখ ভেসে ওঠে ওর চোখের সামনে। অনেক রাতে ওর ফোনে ফোন আসে পায়েলের। এবারে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে অঙ্কন উত্তর দেয়, “আমি মানে তোমার সাথে একটু কথা বলতে চাইছিলাম, পায়েলদি।”
“পায়েল দি” শুনে পায়েল হেসে ফেলে, “হি হি, তুই? আমি ভাবছিলাম কে না কে আমাকে এতো রাতে ফোন করে জ্বালাতন করছে। হটাত করে ফোন করলি? ঘুম আসছে না তোর?”
অঙ্কন পায়েলের হাসির কলতান শুনে খুশি হয়ে বলে, “না গো পায়েলদি, একদম ঘুম আসছে না।”
পায়েলঃ “কেন আসছে না? গার্ল ফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ছে?”
অঙ্কনঃ “হ্যাঁ বটে আবার না বটে। ঠিক জানিনা কেন ঘুম আসছে না, তবে মনে হলো তোমার সাথে একটু কথা বলি।”
পায়েলঃ “বাঃবা এতো রাতে ছেলের প্রেম জেগেছে নাকি? তোর দিদি জানতে পারলে কিন্তু ছাল ছাড়িয়ে দেবে।”
অঙ্কনঃ “আমার ঘরের দরজা সবসময়ে বন্ধ থাকে। দিদি এতো রাতে দেবায়নদার সাথে হয়তো আড্ডা মারছে, আমার কথা শুনতেই পাবে না।”
পায়েলঃ “তোর স্কুল কেমন চলছে? সামনে পরীক্ষা, পড়াশুনা করছিস ঠিক ভাবে?”
অঙ্কনঃ“যা বাবা, তুমি দেখি আমার পড়াশুনা নিয়ে বসে গেলে। দিদির মতন কথা বলতে শুরু করে দিলে দেখি। আমি ভাবলাম একটু গল্প করবো।”
পায়েল হেসে বলেছিল, “আচ্ছা বাবা, বল কি বলতে চাস।”
অঙ্কন তোতলায় একটু, কি বলবে ঠিক ভেবে পায় না। ওর মনের মাধুরী যাকে দূর থেকে দেখে এসেছে, ফোনে তার গলার আওয়াজ বড় মধুর শোনায়। অঙ্কনকে চুপ থাকতে দেখে পায়েল নিজেই বলে, “তোর স্কুলের বান্ধবীদের কথা বল না হয়।”
অঙ্কনঃ “না গো পায়েলদি, সেইরকম কোন মনের মতন গার্ল ফ্রেন্ড খুঁজে পেলাম না।”
পায়েল খেলায় অঙ্কনকে, “কেমন গার্ল ফ্রেন্ড পছন্দ তোর?”
অঙ্কন মন বলতে শুরু করে “তোমার মতন সুন্দরী আর সেক্সি গার্ল ফ্রেন্ড পছন্দ আমার। তোমাকে আমার চাই।” সেই কথা গলা পর্যন্ত এসেছিল কিন্তু ঠোঁটে আনতে পারেনি অঙ্কন। তার বদলে বলে, “এই একটু বেশ সুন্দরী হবে। স্কুলে সবাই যেন আমার উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সবার নজর আমার টাকা উড়ানো আর দামী দামী গিফট পাওয়ার প্রতি। ঠিক মনের মতন কাউকে পাচ্ছি না।”
পায়েলঃ “আচ্ছা বাবা, একদিন দেখিস তোর মনের মতন কাউকে পেয়ে যাবি।”
অঙ্কন মনমরা হয়ে বলে, “জানিনা, তার সাথে দেখা হলে মুখ ফুটে বলতে পারবো কি না?”
পায়েলঃ “কেন, কেন? এমন কে সে যে তাকে তুই মুখ ফুটে বলতে পারবি না?”
অঙ্কনঃ “না মানে, এখন দেখা পাইনি সেই রকম কাউকে তবে জানি না। ছাড়ো ওই সব, তোমার কথা বল।”
পায়েল হেসে দেয় অঙ্কনের আব্দার শুনে, “আমার কথা কি বলবো তোকে? তুই কি আমার বন্ধু নাকি?”
অঙ্কন একটু আহত হয় পায়েলের কথায়, “তা যখন বলতে চাইছো না তাহলে ফোন রাখছি।”
পায়েল হেসে বলে, “বাপ রে ছেলের অভিমান কত। ফোন রাখলে কিন্তু কালকে বাড়ি গিয়ে নাক ফাটিয়ে দেবো।”
অঙ্কনঃ “তাহলে শুনি তোমার বয় ফ্রেন্ডের কথা।”
দেবায়ন চুপ করে অঙ্কনের কথা শুনে যায়। পায়েলের এই কাহিনী অনুপমা ওকে আগেই বলেছিল। অঙ্কনের মুখে সব শুনে একটু দমে যায়, অঙ্কন কি জানে যে ওর দিদির সাথে আর দেবায়নের সাথে পায়েলের শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে? অঙ্কনের কথা শুনে মনে হলো, পায়েল এই ঘটনা লুকিয়ে রেখেছে অঙ্কনের কাছ থেকে। দেবায়ন অগ্নিহোত্রীর কথা জিজ্ঞেস করে।
অঙ্কন অগ্নিহোত্রীর কথা বলতে শুরু করে। পায়েল যত বড় হয়েছে, ওর দেহের গঠন তত সুন্দর আর লাস্যময়ী হয়ে উঠেছে। ওর পিসির বাড়ি নৈহাটি, পায়েলের যেতে ইচ্ছে করে না ওর পিসতুতো দাদার জন্য কিন্তু বাবার জন্য যেতে হয় পিসির বাড়িতে। ওর পিসতুতো দাদার কুনজর ছিল পায়েলের উপরে। পিসির বাড়িতে গেলে ওর পিসতুতো দাদা, বিনয়, কোন অছিলায় পায়েলের গায়ে হাত দিতো, মাঝে মাঝে ওর বুকে পাছায় হাত দিতো। আগে পায়েল কিছু বলতো না, কিন্তু পরের দিকে পায়েলের এই সব ভালো লাগতো না। পায়েল এই সব কথা কাউকে জানায়নি। এমনকি ওর পিসতুতো দাদা ওকে একদিন একা বাড়িতে পেয়ে চুমু খেয়ে, স্তন টিপে পাছা টিপে আদর করেছিল। রাগে দুঃখে পায়েল কেঁদেছিল সারারাত, কিন্তু কাউকে বলতে পারেনি।
দিদি আর দেবায়ন গরমের ছুটিতে মুসৌরি ভ্রমনে যায়। পায়েলের বাবা, ওকে কয়েক দিনের জন্য ওর পিসির বাড়ি নৈহাটিতে রেখে আসে। পায়েল প্রমাদ গোনে, বুঝতে পারে যে ওর দাদার হাতে ওর ধর্ষণ হওয়া ছাড়া আর কোন গতি নেই। পায়েল এক মতলব আঁটে তখন, বিনয়ের বন্ধু অগ্নিহোত্রীর সাথে প্রেমের নাটক করে। পায়েল ভেবেছিল যে দুই বন্ধুর ভেতরে দ্বন্দ লাগিয়ে দেবে আর এইভাবে ও বিনয়ের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যাবে আর যদি অগ্নিহোত্রীকে ভালো লেগে যায় তাহলে অগ্নিহোত্রীর সাথে পালিয়ে যাবে। নারীর লাস্যময়ী রুপ সব কিছু করতে পারে, সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক হয়েছিল। অগ্নিহোত্রীর সাথে বিনয়ের মনোমালিন্য ঘটিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল পায়েল। পায়েল অগ্নিহোত্রীকে নিজের প্রেমের জালে জড়িয়ে নিয়েছিল। কোলকাতা ফিরে আসার পরে, অগ্নিহোত্রীর সাথে বেশ কয়েকবার দেখা হয়।
দেবায়ন মন দিয়ে অঙ্কনের কাছে এই কাহিনী শুনতে শুনতে জিজ্ঞেস করে পায়েলের ব্যাপারে এতো কিছু জানলো কি করে? অঙ্কন বলে যে পরে এই সব ঘটনা এক এক করে পায়েল ওকে জানিয়েছে। অগ্নিহোত্রীর সাথে প্রেমের কথা পায়েল ওর দিদিকে কিছুটা বলেছিল কিন্তু সম্পূর্ণ বলেনি। পায়েল আর অঙ্কনের মাঝে আগে থেকেই একটু হৃদ্যতা ছিল কিন্তু প্রেম প্রীতি পর্যায় ছিল না। মাঝে মাঝেই দুইজনে ফোনে বেশ গল্প করতো। সেই গল্পের আওয়াজ একদিন ওর দিদি শুনে ফেলেছিল আর সেই নিয়ে প্রশ্ন করেছিল। তখন সেই কথা ঢাকার জন্য গরিমার নাম নেয় অঙ্কন। দেবায়নের কাছে এবারে চিত্র বেশ পরিষ্কার হতে শুরু করে।
প্রথম যেদিন অঙ্কন পায়েলকে ফোন করেছিল তখন পায়েলের সাথে অগ্নিহোত্রীর দেখা হয়নি। একদিন রাতে সাহস জুগিয়ে দিদির ফোন থেকে পায়েলের ফোন নাম্বার নিয়ে পায়েলকে ফোন করেছিল। কাঁপা গলার আওয়াজ শুনে পায়েল রেগে নাম জিজ্ঞেস করেছিল। অঙ্কন ভয় পেয়ে ফোন কেটে দিয়েছিল। কিছু পরে আবার ফোন করেছিল অঙ্কন, তখন কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করেছিল কেমন আছে পায়েল। পায়েল দ্বিতীয় বার ফোন পেয়ে আরও রেগে যায়, অঙ্কন নিজের পরিচয় দিতে দ্বিধা বোধ করে আবার ফোন কেটে দেয়। রাতে ঘুমাতে পারেনা অঙ্কন, বারে বারে শুধু পায়েলের মুখ ভেসে ওঠে ওর চোখের সামনে। অনেক রাতে ওর ফোনে ফোন আসে পায়েলের। এবারে বুক ভরে শ্বাস নিয়ে অঙ্কন উত্তর দেয়, “আমি মানে তোমার সাথে একটু কথা বলতে চাইছিলাম, পায়েলদি।”
“পায়েল দি” শুনে পায়েল হেসে ফেলে, “হি হি, তুই? আমি ভাবছিলাম কে না কে আমাকে এতো রাতে ফোন করে জ্বালাতন করছে। হটাত করে ফোন করলি? ঘুম আসছে না তোর?”
অঙ্কন পায়েলের হাসির কলতান শুনে খুশি হয়ে বলে, “না গো পায়েলদি, একদম ঘুম আসছে না।”
পায়েলঃ “কেন আসছে না? গার্ল ফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ছে?”
অঙ্কনঃ “হ্যাঁ বটে আবার না বটে। ঠিক জানিনা কেন ঘুম আসছে না, তবে মনে হলো তোমার সাথে একটু কথা বলি।”
পায়েলঃ “বাঃবা এতো রাতে ছেলের প্রেম জেগেছে নাকি? তোর দিদি জানতে পারলে কিন্তু ছাল ছাড়িয়ে দেবে।”
অঙ্কনঃ “আমার ঘরের দরজা সবসময়ে বন্ধ থাকে। দিদি এতো রাতে দেবায়নদার সাথে হয়তো আড্ডা মারছে, আমার কথা শুনতেই পাবে না।”
পায়েলঃ “তোর স্কুল কেমন চলছে? সামনে পরীক্ষা, পড়াশুনা করছিস ঠিক ভাবে?”
অঙ্কনঃ“যা বাবা, তুমি দেখি আমার পড়াশুনা নিয়ে বসে গেলে। দিদির মতন কথা বলতে শুরু করে দিলে দেখি। আমি ভাবলাম একটু গল্প করবো।”
পায়েল হেসে বলেছিল, “আচ্ছা বাবা, বল কি বলতে চাস।”
অঙ্কন তোতলায় একটু, কি বলবে ঠিক ভেবে পায় না। ওর মনের মাধুরী যাকে দূর থেকে দেখে এসেছে, ফোনে তার গলার আওয়াজ বড় মধুর শোনায়। অঙ্কনকে চুপ থাকতে দেখে পায়েল নিজেই বলে, “তোর স্কুলের বান্ধবীদের কথা বল না হয়।”
অঙ্কনঃ “না গো পায়েলদি, সেইরকম কোন মনের মতন গার্ল ফ্রেন্ড খুঁজে পেলাম না।”
পায়েল খেলায় অঙ্কনকে, “কেমন গার্ল ফ্রেন্ড পছন্দ তোর?”
অঙ্কন মন বলতে শুরু করে “তোমার মতন সুন্দরী আর সেক্সি গার্ল ফ্রেন্ড পছন্দ আমার। তোমাকে আমার চাই।” সেই কথা গলা পর্যন্ত এসেছিল কিন্তু ঠোঁটে আনতে পারেনি অঙ্কন। তার বদলে বলে, “এই একটু বেশ সুন্দরী হবে। স্কুলে সবাই যেন আমার উপরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। সবার নজর আমার টাকা উড়ানো আর দামী দামী গিফট পাওয়ার প্রতি। ঠিক মনের মতন কাউকে পাচ্ছি না।”
পায়েলঃ “আচ্ছা বাবা, একদিন দেখিস তোর মনের মতন কাউকে পেয়ে যাবি।”
অঙ্কন মনমরা হয়ে বলে, “জানিনা, তার সাথে দেখা হলে মুখ ফুটে বলতে পারবো কি না?”
পায়েলঃ “কেন, কেন? এমন কে সে যে তাকে তুই মুখ ফুটে বলতে পারবি না?”
অঙ্কনঃ “না মানে, এখন দেখা পাইনি সেই রকম কাউকে তবে জানি না। ছাড়ো ওই সব, তোমার কথা বল।”
পায়েল হেসে দেয় অঙ্কনের আব্দার শুনে, “আমার কথা কি বলবো তোকে? তুই কি আমার বন্ধু নাকি?”
অঙ্কন একটু আহত হয় পায়েলের কথায়, “তা যখন বলতে চাইছো না তাহলে ফোন রাখছি।”
পায়েল হেসে বলে, “বাপ রে ছেলের অভিমান কত। ফোন রাখলে কিন্তু কালকে বাড়ি গিয়ে নাক ফাটিয়ে দেবো।”
অঙ্কনঃ “তাহলে শুনি তোমার বয় ফ্রেন্ডের কথা।”