What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

pinuram রচনাসমগ্র (8 Viewers)

পথে যেতে যেতে মিস্টার সেন বলেন, “কি ব্যাপার, টেন্সান নিচ্ছো কেন? এবারে একটু ফ্রাংক হও আমার সাথে। তুমি আমার উত্তরাধিকারী, আমার হবু জামাই। সবসময়ে আমার এক হাতের মধ্যে থাকবে তার বাইরে একদম যাবে না। সবসময়ে চোখ কান খোলা রেখে দেবে, এই রকম বিজনেস পার্টিতে খুব জরুরি। যদিও খুব কম সংখ্যক লোক আসবে।”

দেবায়নঃ “কে কে আসছে?”

মিস্টার সেনঃ “জার্মানিতে আমার এক বন্ধু থাকে অনিমেশ সাহা, সে আসছে। আসলে এই ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট সেই যোগাড় করে দিয়েছে। মিস্টার ড্যানিয়েল হারজোগ আর তার সি.এফ.ও মিস্টার হেলমুট মেরকেল। নিবেদিতা থাকবে আমার তরফ থেকে। আসল প্রেসেন্টেসান আর বেশির ভাগ আলোচনা আগেই হয়ে গেছে। শুধু একবার কোম্পানি দেখতে চায় আর ভবিষ্যতের রোডম্যাপ জানতে চায় এই আর কি। আমার চাহিদা পাঁচশো মিলিয়ন ইউরো, চারশো কোটি টাকার ভেঞ্চার দেখা যাক কোথায় গিয়ে ঠেকে।”

দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “কিন্তু কোম্পানি তো আড়াইশো কোটি টাকার?”

মিস্টার সেনঃ “হ্যাঁ জানি, তবে ওই সেদিন তোমাকে বলেছিলাম না, তিন ধরনের অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। যাই হোক, ভদ্রলোক বেশ ঘাঘু, মনে হয়না দেবে। ওদের ফাইনাল অফার সাড়ে তিনশো মিলিয়ন ইউরো, আজকের পার্টি তার জন্য, দেখা যাক কতদুর কি হয়।”

দেবায়নঃ “আমি এখানে কি করবো, বলতে পারেন?”

মিস্টার সেনঃ “তুমি কিছু করবে না, তোমাকে নিয়ে যাচ্ছি শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য। এরপরে মানুষকে কি করে সামলাতে হয় সেটা এখন থেকেই জানা উচিত তোমার। কার সাথে কি ভাবে কথা বলবে, সামনের মানুষকে কি হিসাবে চিনবে। বুঝলে দেবায়ন, ব্যাবসায় মানুষ চার প্রকারের হয়। গরু, কুকুর, বাঘ আর শেয়াল। এই গরু প্রকৃতির মানুষ হচ্ছে নিরীহ, বুদ্ধিমান এবং আসল শিক্ষিত যাকে বলে। এই সব মানুষের সাথে ভালো ভাবে কথা বলবে, ভালো কাজ দেখাবে, ওদের মন জুগিয়ে চলবে দেখবে ওরা তোমার কাজ করে দেবে অথবা তোমাকে কাজ দিয়ে দেবে। তোমার কর্ম দক্ষতাকে ওরা সন্মান দেবে। দ্বিতীয় প্রকৃতির মানুষ হচ্ছে, কুকুর। ওরা সব সময়ে একটু কিছু চায়, কাজের চেয়ে বেশি চায় একটু তোষামোদি একটু উপহার। ওদের সামনে হাড্ডি রাখলেই ওরা লেজ নাড়াতে নাড়াতে তোমার কাছে চলে আসবে। মানে ওদেরকে শুধু টাকা দেখিয়ে বশে আনতে পারবে। এদের চেনা বেশ সহজ, কেউ যদি তোমাকে বেশি স্যার স্যার করে, তাহলে বুঝবে সে কুকুর। তাকে টাকা দিয়ে, উপহার দিয়ে সহজে কাজ হাসিল করতে পারবে। সব থেকে কঠিন হচ্ছে এই বাঘ প্রকৃতির মানুষ। এরা শিক্ষিত, এরা পয়সাওয়ালা এরা আদব কায়দা জানা লোক। এরা সহজে গলে না, এদের সাথে মেপে কথা বলতে হয়, ডিপ্লোমেটিক হতে হয়, মন জুগিয়ে চলতে হয় আর ভালো সঙ্গ দিতে হয়। এরা প্রতিপত্তি সম্পন্ন ব্যক্তি। মডেল অথবা হাই ক্লাসের মেয়েদের দিকে এদের নজর নয়, এদের নজর অন্য দিকে। যেটা সহজে পাওয়া যায় না তার দিকে এদের নজর থাকে, সেটাই তারা চায়। বুঝলে কিছু?”

দেবায়ন বুঝতে পারে, কেন মিস্টার সেন পারমিতাকে কাজে লাগিয়েছিল। মনের ভেতরে হাসে দেবায়ন, পাশে বসার মানুষটার মুখোশ অনেকদিন আগেই খুলে গেছে, তাও স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করে কিঞ্চিত ঘৃণা বোধ জন্মায়। এই মানুষকে দিয়েই ওর কাজ হাসিল হবে, তাই মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়, “হ্যাঁ, কিছু বুঝতে পেরেছি। সম্পন্ন বাড়ির ঘরোয়া মহিলা অথবা কোন নামি অভিনেত্রী চাই এদের।”

মিস্টার সেন বাঁকা হেসে বলেন, “খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পেরে গেছো তুমি। শেষে শেয়াল প্রকৃতির মানুষ। এরা হটাত করে বিত্ত আর শক্তি হাতে পেয়ে যায়। এরা খুব ধূর্ত কুটিল নেতা গোচরের মানুষ। এরা আগে ঠিকভাবে খেতেই পেতো না, কথাবার্তা ঠিক মতন বলতে জানে না, কিন্তু ওই শক্তি হাতে পাওয়ার পরে নিজেদের খুব বড় মনে করে। এদের যা দেবে তাই খাবে, এরা টাকা পয়সা খাবেই তাঁর সাথে মেয়ে দিতেও হয়। যে রকম মেয়ে দাও এদের চলে যায়। শুধু একটু গা গরম করা চাই এদের।”

দেবায়ন বাঁকা হেসে বলে, “হুম বুঝলাম। বেশ প্যাঁচ আছে এই ব্যাবসায় নামতে।”

মিস্টার সেন একটু চিন্তিত হয়ে বললেন, “জানো, নিবেদিতাকে নিয়ে একটু চিন্তায় পড়ে গেছি।”

দেবায়নঃ “আপনি বলেছিলেন যে পরমিতকে সরিয়ে দেবেন, নিবেদিতাকেও তাহলে সরিয়ে দেওয়া যায়।”

মিস্টার সেনের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় দেবায়নের কথা শুনে, “না ব্যাপারটা সেরকম নয়। ঠিক তোমাকে বুঝিয়ে উঠাতে পারছি না। পরমিত দিল্লীতে থাকে, বোর্ড মিটিংয়ের সময়ে মাঝে মাঝে আসে কিন্তু প্রফিট নেবার সময়ে একদম ঠিক। নিবেদিতা কিছুতেই পরমিতকে দেখতে পারে না। নিবেদিতা কোম্পানির সব দেখা শুনা করে আর পঁচিশ পারসেন্ট। বেশ কয়েক বছর ধরে বলে আসছে ওর শেয়ার বাড়ানোর জন্য, কিন্তু তখন আমার কাছে অত টাকা ছিল না যে পরমিতের শেয়ার কিনে ফেলি। নিজের শেয়ার দিতে রাজি নয় মিতা। মিতার সাথেও বনে না নিবেদিতার। মিতা, কোম্পানির জন্য প্রচুর ক্লায়েন্ট যোগাড় করেছে, কিন্তু অফিসে যায় না, অফিসের গণ্ডগোলে মাথা ঘামায় না। সেই বুদ্ধি মিতার নেই। মিতা হচ্ছে গরু, ওকে একটু ভালোবেসে কথা বললে, একটু আদর দিলেই গলে যায়। তুমি সেদিন বলার পরে আমি ফিরে পেলাম ওকে। তাই এইসব থেকে ওকে দুরে সরিয়ে রাখার জন্য এবারের বিজনেস মিটিংয়ে ওকে আনিনি। ওইদিকে নিবেদিতা একটু রেগেই আছে। ও যে ফাইন্যান্সিয়ার এনেছিল তাকে আমি ইচ্ছে করেই নাকচ করে দিয়েছিলাম। ওকে পরমিতের শেয়ার দিলেও ওর মন একটু কেমন কেমন করে থাকবে। দেখা যাক আজকে কিছু বুঝিয়ে উঠতে পারি কিনা। নিবেদিতা একা ছোটো ছেলেকে নিয়ে থাকে, ওকে কোম্পানি থেকে সরিয়ে দেবার কোন প্রশ্ন ওঠে না।”

দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “আচ্ছা, এই জার্মান ভদ্রলোক কেন, মানে বিদেশি ফাইন্যান্সিয়ার কেন?”

মিস্টার সেন হেসে বলেন, “অনেক দুরের চিন্তা করেই আমি অনিমেশকে একটা ক্যাপিটালিস্ট খুঁজতে বলি। তোমার সফটওয়্যার কোম্পানিতে কাজে দেবে। বাইরের বড় বড় প্রোজেক্ট আসবে ওর হাত ধরে, তুমি একটু মিস্টার হারজোগকে হাতে করার চেষ্টা কর। দেশে যে সব প্রোজেক্ট পাবে তাতে মাসের খরচ, দৈনন্দিন খরচ উঠে আসবে। যতক্ষণ না কোন বড় প্রোজেক্ট হাতে পাবে ততক্ষণ তোমার কোম্পানির নাম হবে না। বড় প্রোজেক্ট মানে বেশি লাভ, বেশি টাকা। বাইরের বড় প্রোজেক্ট পাওয়ার জন্য একজন বাইরের মানুষের দরকার। ইউরোপে আমার বিশেষ জানাশোনা নেই আমার। অনুর মেসো ডাক্তার, ছেলে ডাক্তার ওদের দিয়ে এইসব কাজ হবে না। অনিমেশ ফ্রাংকফারটে বেশ বড় একটা ইউরোপিয়ান ব্যাঙ্কে চাকরি করে, বেশ বড় পোস্টে। অনেক চেনা জানা আছে, সেই সুত্রে বেরিয়ে গেল এই হারজোগের কথা। আর এই হারজোগ হচ্ছে ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার। অনেক কিছুতে হাত ডুবিয়ে টাকা কামিয়েছে। ওর অনেক চেনাজানা আছে ইউরোপে।”

দেবায়নঃ “আপনি এতো কিছু এতো আগে থেকে ভেবে রেখেছেন?”

মিস্টার সেনঃ “ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে রাখতে হয় না হলে কি করে হবে। যদি আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন না দেখি তাহলে উড়তে পারবো কি করে, মিস্টার বসাক।”

শীত কাল, তাড়াতাড়ি সন্ধ্যে নেমে আসে গঙ্গাবক্ষে। মিস্টার সেন, নিবেদিতা আর বেশ কয়েক জনকে ফোন করে জেনে নিলেন তারা কোথায়। নিবেদিতা জানাল তিনি পৌঁছে গেছেন, অনিমেশ রাস্তায়, বাকিদের নিয়ে আসছে। বাকিরা পরে রওনা দেবে কোলকাতা থেকে। সন্ধ্যের একটু পরেই মিস্টার সেন আর দেবায়ন রায়চক, গঙ্গার ধারে র‍্যাডিসন ফোর্ট রিসোর্টে পৌঁছে যায়। ওদের নামে ছয় খানা রুম বুক করাছিল আগে থেকে। ম্যানেজার নিজে এসে, ডাইনিং আর মিটিংয়ের জায়গা দেখিয়ে দেয়। গঙ্গার পাশেই বেশ বড় হোটেল, উঁচু দেয়ালের পাশে সবুজ ঘাসে ঢাকা লন। তার একপাশে খোলা আকাশের নিচে মিটিংয়ের ব্যাবস্থা আর ডিনার। মিস্টার সেন, দেবায়নকে বলে একবার ম্যানেজারের সাথে গিয়ে রুমগুলো দেখে আসতে আর মিটিংয়ের জায়গা দেখে আসতে।

দেবায়ন এগিয়ে যেতেই এক মহিলা হাসি হাসি মুখে মিস্টার সেনের দিকে এগিয়ে আসে। ফর্সা সুন্দরী, আকর্ষণীয়, চোখে মুখে বুদ্ধিদিপ্তের ছটা। বয়স পঁয়ত্রিশের ওপারে নয়, দেহের গঠন বেশ আকর্ষণীয়। ঘিয়ে রঙের বিজনেস সুট আর খোঁপাতে দারুন দেখাচ্ছে মহিলাকে। মহিলার আদব কায়দা দেখে দেবায়ন বুঝতে পারে এই নিবেদিতা।
নিবেদিতা মিস্টার সেনকে দেখে মিষ্টি হেসে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এতো দেরি করে দিলে? শরীর কেমন আছে তোমার?”

মিস্টার সেন হেসে বলেন, “হ্যাঁ শরীর ঠিক আছে। দুই দিনে আর নতুন কি হবে। অঙ্কুশ আসতে চায়নি?”

নিবেদিতা একগাল হেসে বলে, “হ্যাঁ, বায়না ধরেছিল। বাবার মাথার বাকি চুল ছিঁড়ে ফেলেছে আর কি। আমি বাবাকে আর চাকরকে বলে এসেছি যে বেশি কান্নাকাটি করলে টিভি চালিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে।”
 
মিস্টার সেনঃ “নিয়ে আসলে পারতে। একদম ছোটবেলা থেকেই বিজনেস করা শিখে যেতো আর কি।” কথাটা বলেই হেসে ফেলেন মিস্টার সেন।

নিবেদিতা মিস্টার সেনের বাজুতে ছোটো একটা চাঁটি মেরে বলে, “তুমি না যা তা। এখন অনেক ছোটো আছে।”

মিস্টার সেন দেবায়নের সাথে পরিচয় করিয়ে বলে হেসে বলে, “অনুর ফিয়ন্সে, বাকিটা নিজেই পরিচয় সেরে ফেলো।”

নিবেদিতা দেবায়নেকে আপাদমস্তক জরিপ করে হেসে বলে, “আচ্ছা এই দেবায়ন। সোমেশের মুখে তোমার নাম শোনার পর খুব দেখার ইচ্ছে ছিল তোমাকে।” মিস্টার সেনকে বলে, “চলো কফি শপে গিয়ে বসি। অনিমেশদা একটু পরেই চলে আসবে। তোমাদের পেছনেই মনে হয় ওদের গাড়ি ছিল।”

মিস্টার সেন আর নিবেদিতার মেলা মেশার মধ্যে দেবায়ন বেশ একটা আন্তরিকতা খুঁজে পায়। এই আন্তরিকতা কি শুধু ব্যবসা সংক্রান্ত না তাঁর চেয়ে কিছু বেশি, এই প্রশ্ন জাগে দেবায়নের মাথায়। এর উত্তর এখন নয়, শুধু পর্যবেক্ষণ করে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নিবেদিতা মিস্টার সেনের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বেশ হাত মুখ নেড়ে হেসে হেসে কথা বলে। দেবায়ন কফি শপে না গিয়ে, সিগারেট ধরানোর অছিলায় বাইরে যায়। লনে দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে অনুপমাকে আর মাকে ফোনে জানিয়ে দেয় যে ঠিক মতন রায়চকে পৌঁছে গেছে। অনুপমা হেসে বলে যে বেশি যেন মদ না খায় আর নিজের চোখ কান যেন সর্বদা খোলা রাখে। সময় মতন পেছনে সরতে যেন পিছপা হয় না। দেবায়ন জানিয়ে দেয় যে বেশ সতর্ক থাকবে সব বিষয়ে।

কিছু পরে মিস্টার সেন বাকিদের নিয়ে লনে আসেন। মিস্টার সেন দেবায়নকে ডেকে মিস্টার ড্যানিয়েল হারজোগ, মিস্টার হেলমুট মেরকেল আর পুরানো বন্ধু, মিস্টার অনিমেশ সাহার সাথে আলাপ করিয়ে দেয়। অনিমেশ দেবায়নের সাথে হাত মেলানোর সময়ে একটু বাঁকা হেসে মিস্টার সেনের দিকে তাকায়। মিস্টার সেন মৃদু মাথা নাড়িয়ে কিছু একটা ইশারা করে, সেই ইশারা দেবায়নের চোখ এড়াতে পারে না।

কিছুক্ষণের মধ্যে ড্রিঙ্কের আর স্টার্টারের সাথে ওদের আলোচনা সভা শুরু হয়। মিস্টার হারজোগ বলেন কোম্পানির ব্যালেন্স সিট, কোম্পানি প্রোফাইল ইত্যাদি আগেই দেখে নিয়েছেন আর সেই সাথে এই কয়দিনে কোম্পানি দেখা আর বিভিন্ন কাজের সাইটে গিয়ে তদারকি করে দেখা হয়ে গেছে। সব ব্যাপারে বেশ সন্তুষ্ট তিনি, তবে ভবিষ্যতের রোডম্যাপ একবার জানতে চায় মিস্টার হারজোগ। মিস্টার সেন নিবেদিতাকে বলে ওদের রোডম্যাপের প্রেসেন্টেশান দিতে। নিবেদিতা ল্যাপটপ খুলে সব প্রেসেন্টেশান দেয়। সেই মতন জানায় যে আগামী দিনে ওরা চায় নতুন ভারটিকাল তৈরি করতে। এতকাল শুধুমাত্র হাউস বিল্ডিং কন্সট্রাক্সানে ছিল ওদের কোম্পানি, এবারে দুটি নতুন ভারটিকাল তৈরি করতে চায়। এক, রাস্তার কাজ, সেই জন্য বেশ কয়েকটা হাইওয়ের টেন্ডার ওরা পেয়েছে এবং ওভার ব্রিজের কাজ, তার টেন্ডার ওরা পেয়েছে। অন্য একটা ভারটিকালে ওরা বড় বিল্ডিং কন্সট্রাক্সানে হাত দিতে চায় যেমন বড় বড় হোটেল, বড় বড় মল। মিস্টার হারজোগ আর মিস্টার মেরকেল মন দিয়ে সব শোনার পরে বলেন, সব ঠিক আছে কিন্তু সাড়ে তিনশো মিলিয়নের উপরে ইনভেস্ট করা এখুনি সম্ভব নয়। দেবায়ন সব কথা মন দিয়ে শোনে। নিবেদিতা বলে যে দুটি নতুন ভারটিকাল তৈরি করতে অনেক খরচ আছে আর সরকারি কাজে একটু খরচ করে লাভের মাপ অনেক বেশি। সুতরাং বিনিয়োগের যে রিটার্ন তিনি পাবেন সেটা মোটা অঙ্কের হবে। মিস্টার মেরকেল, ইনভেস্টমেন্টের রিটার্নের ব্যাপারে কিঞ্চিত দ্বিমত প্রকাশ করে। তিনি বলেন, যে কুড়ি, পঁচিশ, তিরিশ এই ছকে রিটার্নে রাজি নন। রিটার্ন পারসেন্ট খুব কম। আগামী দশ বছরের জন্য টাকা ইনভেস্ট করবেন কিন্তু সেই তুলনায় রিটার্ন একটু বেশি দেওয়া উচিত। মিস্টার সেন বলেন, সাড়ে তিনশোর জায়গায় যদি চারশো মিলিয়ন ইউরো হয় তাহলে তিনি কুড়ি, সাতাশ, বত্রিশ হিসাবে রিটার্ন দিতে রাজি আছেন। সেই কথা শুনে, নিবেদিতা একটু দমে যায় কিন্তু মিস্টার সেনের কথার উপরে কথা বলতে পারে না। ওদের সামনে বচসা করা ঠিক নয়। মিস্টার মেরকেল বলেন যে অন্তিম অফার, তিনশো সত্তর মিলিয়ন ইউরো এবং রিটার্ন পারসেন্ট কুড়ি তিরিশ পঁয়ত্রিশ হিসাবে দিতে হবে। এই ডিলে রাজি থাকলে ডিল ফাইনাল করতে রাজি। মিস্টার সেন আর নিবেদিতা বিষণ্ণ হয়েও মানতে রাজি হয়ে যায়। ওদের টাকার খুব দরকার, কিন্তু লাভের অনেক অংশ মিস্টার হেরজোগ নিয়ে চলে যাবেন। মিস্টার সেন চান এই টাকায় হোটেল কেনার আর নিবেদিতা চায় পরমিতের শেয়ার কেনার। রায়চকে আসার সময়ে মিস্টার সেন দেবায়নকে সব ফাইল দেখিয়েছিল, সেই মতন লাভের কথা ওর মাথার মধ্যে আঁকা আছে। দেবায়ন চুপচাপ বসে একটা কাগজে কিছু একটা অঙ্ক কষে।

হটাত সবাইকে অবাক করে দিয়ে দেবায়ন বলে, “আই হ্যাভ অ্যা প্রপোসাল। আমার একটা বক্তব্য আছে, মনে হয় সবার ভালো লাগবে এবং সবাই খুশি হবে।” মিস্টার মেরকেলের দিকে তাকিয়ে বলে, “আমি যদি ফ্লাট পঁয়তাল্লিশ পারসেন্ট দেই আপনাকে তাহলে আপনি চারশো মিলিয়ন ইউরো ইনভেস্ট করবেন?”

মিস্টার সেন আর নিবেদিতা, অবাক হয়ে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে। মিস্টার সেন চাপা গলায় বাংলায় ওকে কথা বলতে বারন করে। দেবায়ন মিস্টার সেনকে আস্বস্ত করে বলে সব ঠিক করে দেবে।

মিস্টার মেরকেল আর মিস্টার হেরজোগ একটু ভেবে জিজ্ঞেস করে, “হয়াট ইজ দা ক্যাচ। এখানে কিছু লুকানো শর্ত আছে মনে হচ্ছে, সেটা কি?”

দেবায়ন বলে, “পঁয়তাল্লিশ পারসেন্ট, প্রফিট শেয়ারিং আগামী দশ বছর। এটা একমাত্র প্রযোজ্য যদি আপনি চারশো মিলিয়ন ইউরো ইনভেস্ট করেন তবেই। রাজি তাহলে ডিল... ভেবে দেখুন একবার।”

টেবিলে বসে পাঁচ জনেই দেবায়নের দিকে তাকিয়ে থাকে, সবাই বুঝতে চেষ্টা করে কি বলতে চাইছে এই কালকের ছেলেটা।

মিস্টার সেন চাপা ধমক দিয়ে দেবায়নকে বলে, “তোমাকে মুখ খুলতে বারন করেছিলাম। তুমি কি জানো তুমি কি প্রপোসাল দিয়েছো?”

নিবেদিতা রেগে গিয়ে মিস্টার সেনকে জিজ্ঞেস করে, “এই রকম একটা মানুষকে সত্যি তোমাকে আনতে হতো?”

দেবায়ন চাপা হেসে মিস্টার হারজোগের দিকে তাকায়। মিস্টার হারজোগ বলেন, “প্রপোসাল ভেরি গুড, কিন্তু একটু সময় দিতে হবে। কাল সকালে ডিল ফাইনাল করলে কেমন হয়।”

দেবায়ন হেসে ফেলে, “মিস্টার হারজোগ, কালকের সকাল কে দেখেছে। আপনি সময় নিন তবে বেশি সময় নিলে কিন্তু হাত থেকে প্রফিট বেরিয়ে যাবে।”

মিস্টার সেন আর থাকতে না পেরে দেবায়নকে বলে, “তুমি একটু আমার সাথে বাইরে এসো।”

মিস্টার মেরকেল হেসে বলেন, “ওকে, তুমি আমাদের একটু সময় দাও। একটু পরে জানাচ্ছি।”

মিস্টার সেন দেবায়নকে লনের একদিকে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তুমি কি ভেবে ওই প্রোপোসাল দিলে? একবার আমাকে জিজ্ঞেস করার দরকার মনে করলে না? এটা খুব বড় ঔদ্ধত্য দেবায়ন। তুমি কি ভাবো নিজেকে? আমি তোমাকে ছাড় দিয়েছি বলে তুমি যা ইচ্ছে তাই করবে?”

দেবায়ন মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ তারপরে বলে, “সরি কাকু, খুব সরি। আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করতাম ঠিক, কিন্তু সময়ের অভাবে নিজেই বলে ফেলেছি। জানি আপনাকে আঘাত করেছি তবে একবার আমার পরিকল্পনা শুনুন। রিস্ক না নিলে প্রফিট করা যায় না, এটা আপনি আসার সময়ে শিখিয়েছেন। আর নিবেদিতা যা হ্যান্ডেল করতো সেটা নিজের জন্যেই করতো।”

মিস্টার সেন কিছুক্ষণ চুপ থাকার পরে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি ঠিক কি ভাবছো? আমি যা ভাবছি তুমি কি সেটাই ভাবছো?”
 
দেবায়নঃ “আপনি কি ভাবছেন সেটা জানা নেই তবে আমার পরিকল্পনা আপনাকে জানাই। আপনি দুশো টাকা আয় করলেন, নব্বুই চলে গেলে পড়ে থাকে একশো দশ। সেখানে দুই জায়গায় একশো একশো টাকা রোজগার করুন। মিস্টার হারজোগ পাবে শুধু পঁয়তাল্লিশ, আপনার কাছে পড়ে থাকবে একশো পঞ্চান্ন।”

মিস্টার সেন খুশি হয়ে বলে, “সত্যি শুনে বড় খুশি হয়েছি। এতদিন পরে মনে হলো একদম মনের মতন মানুষ পেলাম যে আমার মতন করে ভাবে।”

দেবায়নঃ “একটা নতুন সিস্টার কন্সট্রাক্সান কোম্পানি খোলা হবে। বর্তমান কোম্পানির লাভের থেকে পঁয়তাল্লিশ পারসেন্ট পেলে মিস্টার হারজোগ খুশি। নতুন কোম্পানির সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিবেদিতা ম্যাডামকে দিয়ে দিন, সেও খুশি। দ্বিতীয় কোম্পানির লাভের টাকা পুরোটাই আপনার আর এই কোম্পানির লাভের টাকার পঞ্চান্ন শতাংশ আপনার থাকল। কেমন লাগলো আমার পরিকল্পনা?”

মিস্টার সেন দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তুমি একজন বাঘ, তুমি পারবে সব সামলাতে। আমার আর চিন্তা নেই।”

দেবায়ন বলে, “এটা শুধু আপনার আর আমার মধ্যে। পরে ভালো ভাবে এই নিয়ে বিচার আলোচনা করা যাবে।”

মিস্টার সেন দেবায়নকে জড়িয়ে ধরে বলে, “নিবেদিতাকে আমি বুঝিয়ে বলে দেবো। তোমার পরিকল্পনা শুনে খুব খুশি হবে। অনেক করেছে নিবেদিতা, অনেক খেটেছে এই কোম্পানির জন্য। ওর অনেকদিনের স্বপ্ন পূরণ হয়ে যাবে।”

মিস্টার সেন আর দেবায়ন টেবিলে ফিরে আসে। নিবেদিতা মিস্টার সেনকে কিছু একটা জিজ্ঞেস করে। মিস্টার সেন দেবায়নকে দেখিয়ে বলে, বাকি কথা পরে জানিয়ে দেবে, তবে ওর এই প্রোপোসালে মত আছে। মিস্টার হেরজোগ বলেন ওদের মত আছে এই ডিলে। বাকি ব্যবস্থার কথা জিজ্ঞেস করে মিস্টার মেরকেল। নিবেদিতা হেসে বলে, সব ব্যাবস্থা একদম ঠিকঠাক। ব্যাবসার কথা শেষে সবার হাতে উঠে আসে শ্যাম্পেনের গ্লাস। নিবেদিতা বলে, মিস্টার হারজোগের জন্য বিশেষ ব্যাবস্থা, দামী ক্যাভিয়ার আনা হয়েছে কোলকাতা থেকে। মিস্টার মেরকেল হেসে বলেন একবার জ্যান্ত ক্যাভিয়ারের দর্শন করতে চান। নিবেদিতা ফোনে কারুর সাথে কথা বলে জানিয়ে দেয়, জ্যান্ত ক্যাভিয়ার ঠিক সময় মতন পৌঁছে যাবে। আলোচনা ছেড়ে সবাই বিভিন্ন গল্পে মেতে ওঠে। শ্যাম্পেন শেষে সবার হাতে স্কচের গ্লাস, একমাত্র দেবায়ন এক ছোটো বোতল বিয়ার নিয়ে একদিকে দাঁড়িয়ে থাকে। কিছু পরে মিস্টার হেরজোগ ওকে কাছে ডাকে। দেবায়নের ভারতীয় ইংরাজি আর মিস্টার হেরজোগের বিদেশি ইংরাজিতে দুইজনে কথা বলে।

মিস্টার হেরজোগ দেবায়নকে ডেকে বলে, “তুমি ফ্রাংকফারটে এসো, ওখানে তোমার দরকার।”

দেবায়ন হেসে ফেলে মিস্টার হেরজোগের কথা শুনে, উত্তর বলে, “না, মিস্টার হেরজোগ। আমি কোলকাতা ছেড়ে দিল্লী যেতে চাই না, ফ্রাংকফারট কখনই নয়।”

মিস্টার হেরজোগ বলেন, “তাও আমার নিমন্ত্রন রইলো। ঘুরতে এসো কোনদিন, জার্মানি বেশ ভালো দেশ। অনেক সুন্দর সুন্দর শহর আছে ঘুরে দেখার। তোমার এখানে গঙ্গা আমার ওখানে রাইন নদী, এক রকম সুন্দর। কখনো কোন সাহায্য চাইলে দ্বিধা করো না।”

দেবায়নঃ “হ্যাঁ নিশ্চয় আপনাকে মনে রাখবো। এবারে তো আসা যাওয়া হবেই। কোলকাতা আর ফ্রাংকফারট বেশি দূর মনে হবে না।”

নিবেদিতা কিছু পরে বেরিয়ে গিয়ে মেয়েদের নিয়ে লনে আসে। দেবায়ন আড় চোখে অনন্যা আর তনুজাকে দেখে। ওদের সাথে আরও দুটো মেয়ে, তাদের দেবায়ন দেখেছে কোন বিজ্ঞাপনে। তনুজা আর বাকি মেয়েদের পরনে চাপা ইভিনিং পার্টি পোশাক। অনন্যা একটু অন্য সাজে সজ্জিত, গোলাপি রঙের পাতলা ফিনফিনে শাড়ি। হাতকাটা ব্লাউস, পিঠের দিকে শুধুমাত্র একটা গিঁট দিয়ে বাধা। নাভির বেশ কিছু নিচে শাড়ির গিঁট। নাভির চারপাশে ঈষৎ ফুলে থাকায় তীব্র যৌন আবেদনের ছটা নির্গত হচ্ছে ওর শরীর থেকে। নিবেদিতা, মেয়েদের সাথে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। সবাই বুফে ডাইনিংয়ে মেতে ওঠে। খাবার সাথে গল্প, হাসি কথা বার্তা। মাঝে মাঝে নিবেদিতা আড় চোখে দেবায়নকে জরিপ করে আর মিস্টার সেনের সাথে কিছু নিয়ে কথা বলে। দেবায়ন একপাশে চুপচাপ নিজের থালা নিয়ে একটু খেতে ব্যস্ত আর নিজের খেয়ালে ব্যস্ত।


এই নিবেদিতার পরিচয় কি? মিস্টার সেনের সাথে এতো হৃদ্যতা কেন? নিবেদিতা আর মিস্টার সেনের কথা বার্তায় বেশ একটা নিবিড় ভাব। অনন্যা আর তনুজা একদিকে খেতে খেতে গল্প করে। বাকি দুই মেয়ের এক জন মিস্টার অনিমেশের সাথে একজন মিস্টার মেরকেলের সাথে। দেবায়ন বুঝে যায় যে নিজেদের রাতের সঙ্গিনী বাছাই করা হয়ে গেছে।

খাবার পরে নিবেদিতা দেবায়নের কাছে এসে ওর রুমের কার্ড দেয়। রুমের কার্ড দেবার সময়ে নিবেদিতার হাত দেবায়নের হাতের উপরে বেশ কিছুক্ষণ থাকে। নরম হাতের স্পর্শে দেবায়ন নিবেদিতার দিকে তাকায়। নিবেদিতা মিষ্টি হেসে বলে ঠিক সময়ে রুমে চলে যেতে। গঙ্গার কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়ায় সবাই কাঁপতে শুরু করে খাওয়ার পরে। কিছু পরে সবাই নিজের নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়। মিস্টার সেন ওকে বলেন তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়তে। দেবায়ন হেসে জানিয়ে দেয় একটা ফোন করে রুমে চলে যাবে।

সবে এগারোটা বাজে কিন্তু চারদিকে নেমে আসে ঘন কালো আঁধার। শীতের কারনে হোটেলের লোকজন সবাই হোটেলের মধ্যে। সবাই চলে যাবার পরে, দেবায়ন ওয়েটারকে ডেকে একটা স্কচের অর্ডার দেয়। স্কচ আর একটা সিগারেট জ্বালিয়ে অনুপমাকে ফোন করে দেবায়ন। ওর মন বেশ খুশি, মিস্টার সেনকে অভিভূত করে দিয়েছে ওর এই পরিকল্পনা। কি করে এই কথা ওর মাথায় এসেছিল সেটা নিজেই জানে না।

অনুপমাকে সব কথা বলতেই প্রেয়সী ওকে বলে, “তুমি ঠিক আছো? খাওয়া দাওয়া হয়েছে? মামনিকে পারলে একটা ফোন করে দিও। আর হ্যাঁ বেশি স্কচ মারাতে হবে না। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বে। কাল মনে হয় না তুমি কলেজ যেতে পারবে। আমি কালকে তোমার জন্য ওয়েট করবো বাড়িতে। শ্রেয়া এসেছে, সঙ্গীতা এসেছে, রাতে থাকবে। ওদের দেখে পায়েল বেশ খুশি আজকে।”

দেবায়নঃ “দাও একটু ডারলিংয়ের সাথে একটু কথা বলি।”

অনুপমা পায়েলকে ফোন দেয়। দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “কি রে তোর কি খবর? ঠাণ্ডায় জমে গেছিস নাকি?”

পায়েলের কণ্ঠস্বরে সেই পুরানো তেজ, পুরানো উচ্ছলতা আর নেই, মৃদু হেসে জিজ্ঞেস করে, “তুই নাকি আজকে সুট পরেছিস?”

দেবায়ন বলে, “হ্যাঁ, ছাই রঙের সুট। তুই তো উঠে একবার দেখলি না। হ্যাঁরে, আমার শালা কোথায়?”

পায়েলঃ “পাশেই আছে। তোরা কেউ কি আমাকে একবিন্দুর জন্য চোখের আড়াল করিস? অনুকে, কাকিমাকে যত বলি আমি ঠিক আছি, কিন্তু কেউ শুনতে চায় না। শুধু অঙ্কনের সাথে ঘুরতে বের হলে একটু মনে হয় বাঁধন থেকে ছাড়া পেলাম।”
 
দেবায়ন বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বলে, “অনুর আর কাকিমার ব্যাপারে আমি নাক গলাবো না।”

পায়েল হেসে বলে, “তুই না বুঝালে কে বুঝাবে? আমার কথা শোনে না কেউ। দিদির সামনে অঙ্কনের মুখ ফোটে না। একা একদম ছাড়তে চায় না দেখে। আজকে আবার শ্রেয়া আর সঙ্গীতাকে ডেকেছে। প্লিস একটু কাকিমা আর তোর বউকে বুঝিয়ে বলিস।”

দেবায়নঃ “এই ব্যাপারে আমি দুঃখিত ডারলিং। অনুর সেদিনের কাতর ডাক আজও আমার কানে বাজে আর ঋতুর কথাগুলো। আমি দুঃখিত পায়েল।”

পায়েল ম্লান হেসে বলে, “ঠিক আছে, তুই সাবধানে থাকিস। গুড নাইট।”

ফোন রেখে দিয়ে অনুপমার কথা চিন্তা করছিল দেবায়ন। সত্যি কথা না বললে একসময়ে প্রেয়সীর কাছে ধরা পড়ে যেতো, আবার বলে দিলে মিস্টার সেনের কাছে অসুবিধেতে পড়তে হতো। কিন্তু ওর প্রেয়সী ওর চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধি রাখে।

“হ্যালো, একা একা দাঁড়িয়ে এখানে? আমি ওপরে তোমাকে খুঁজতে গেছিলাম।” মিষ্টি একটা কণ্ঠস্বর শুনে দেবায়ন ঘুরে দাঁড়ায়। পেছনে হাসি হাসি মুখে, গায়ে একটা শাল জড়িয়ে অনন্যা দাঁড়িয়ে।

দেবায়নের হাতের গ্লাস হাতে থেকে যায়। অনন্যার মুখের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে, এতো কাছে এতো সুন্দরী একজনকে দেখতে পাবে ঠিক মানতে পারে না। এতদিন টি.ভি স্ক্রিনে দেখেছে ওকে। কোন সময়ে নায়িকার বোন, কোথাও নায়িকার বান্ধবী। ছোটো বাজেটের কয়েকটা সিনেমা করেছে, তবে সেইগুলো দেখেনি দেবায়ন। তাও দেবায়নের অনন্যাকে ভালো লাগতো ওর বড় বড় চোখের জন্য আর একটু উজ্জ্বল শ্যামলা ত্বকের জন্য।

দেবায়নের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে, “তোমার সাথে আবার দেখা হয়ে বড় ভালো লাগলো।”

অনন্যার কথা শুনে দেবায়ন আকাশ থেকে পড়ল, বলে কি মেয়েটা। এই অসামান্য লাস্যময়ী তরুণী, নামকরা এক অভিনেত্রী আর মডেল। দেবায়ন, সিগারেটে বড় একটা টান মেরে মাথা ঝাঁকিয়ে বলে, “পাগল হলে নাকি? আমি ধন্য তোমার সাথে কথা বলতে পারছি। তুমি কি জানো, তুমি যদি একটা রুমাল ফেলো সেটা তুলে ধরার জন্য হাজার লোক দৌড়ে আসবে।”

অনন্যা হেসে ওঠে খিলখিল করে, ওর মিষ্টি হাসির কলতানে হারিয়ে যায় দেবায়ন। অনন্যা দেবায়নের গায়ে ঢলে পড়ে বলে, “ধুর বাবা। যে লোক আমার রুমাল তুলে দেবে সে তো চিরকাল আমার রুমাল তুলতে ব্যস্ত থাকবে, আমার দিকে দেখার সময় তাঁর কাছে কখন হবে তাহলে? আমি চাই আমার রুমাল না তুলে যে অদুরে দাঁড়িয়ে আমার দিকে দেখবে সে।”

দেবায়নের নাকে ভেসে আসে অনন্যার শরীরের মাদকতাময় মিষ্টি গন্ধ। শীতের রাতে অনন্যার শরীরের ছোঁয়ায় দেবায়নের শরীর উত্তপ্ত হতে শুরু করে। দেবায়ন ওকে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এখন জেগে কেন?”

অনন্যা হাতের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলে, “একটা সিগারেট দাও তো আগে। একা একা টান মেরে যাচ্ছো একটু দাও।”

দেবায়ন প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ওর হাতে দেয়। গাড় বাদামি রঙ মাখা ঠোঁটের মাঝে সাদা সিগারেট চেপে দেবায়নের দিকে ঝুঁকে পড়ে। দেবায়ন, লাইটার দিয়ে ওর সিগারেট জ্বালিয়ে বলে, “বেশ জমে ঠাণ্ডা পড়বে এবারে।”

অনন্যাঃ “সেন স্যার কেন যে র‍্যাডিসন চুজ করলো বুঝে পেলাম না। এই সময়ে কেউ গঙ্গার ধারে আসে? এখানে আসতে হয় গ্রীষ্মকালে গঙ্গার ঠাণ্ডা হাওয়া খেতে। এখন হাড় কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়া বইছে, শুধু রুমে বসে গরম হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।” অনন্যা কথাটা বলেই হেসে ফেলে।

দেবায়ন হেসে বলে, “তাহলে যাও এখানে দাঁড়িয়ে কেন?”

অনন্যা হেসে বলে, “যাঃ বাবা। আমি তনুজাকে ওই জার্মান ভদ্রলোকের সাথে পাঠিয়ে দিলাম ইচ্ছে করে আর তুমি জিজ্ঞেস করছো আমি এখানে কেন? দাও দাও, তোমার রুমের কার্ডটা দাও। আর তাড়াতাড়ি সিগারেট শেষ করে চলে এসো।” দেবায়ন যেন হাতে চাঁদ পায়। স্বপ্নে ভাবেনি অনন্যার মতন এক অভিনেত্রী ওর এতো কাছে এসে কোনদিন এই সব কথা বলবে। অনন্যা দেবায়নের অবাক চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি ভাবছো এতো? নিবেদিতা ম্যাডাম নিজে বলল আমাকে যে তোমাকে একটু দেখতে। তুমি সামান্য বিজনেস পার্টনার নয়। তোমার পরিচয় তার থেকে বেশি কিছু। যাই হোক অত শত আমার জেনে কি লাভ।”

দেবায়ন পকেট থেকে রুমের কার্ড বের করে অনন্যার হাতে দেয়। কার্ড দেবার সময়ে ইচ্ছে করেই দেবায়ন অনন্যার হাতখানা নিজের হাতের মধ্যে ধরে রাখে। অনন্যা হাত ছাড়িয়ে দুষ্টুমি হাসি দিয়ে চলে যায়। হাতের গ্লাসের বাকি স্কচ এক ঢোঁকে গলায় ঢেলে নেয়। মাথা একটু ঝিম ঝিম করে ওঠে, সেই সাথে বাকি বেঁচে থাকা সিগারেটে লম্বা এক টান দিয়ে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় দেবায়ন। কি হবে রাতে, একা নিভৃতে একটা রুমের মধ্যে এক সুন্দরী অভিনেত্রীর সাথে রাত কাটাবে। হাঁটতে হাঁটতে নিজের হাতে চিমটি কাটে দেবায়ন। না, ব্যাথা লাগলো, সত্যি ব্যাথা লাগলো, স্বপ্ন দেখছে না তাহলে। একবার অনুপমাকে জানালে হয়। কি বলবে প্রেয়সীকে? পায়েলের সাথে সেই রাতের পরে অনুর অঙ্ক ছাড়া অন্য কারুর কোলে মাথা রাখেনি। অনেকদিন পরে এক অন্য তরুণীর রুপ সুধা আকণ্ঠ পান করবে, ভাবতে পারছে না। বলা কি উচিত? না থাক, আগামী কাল সকালে বলবে। আগে দেখা যাক, অনন্যা কি করে।

দেবায়ন কলিং বেল বাজিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ভেতর থেকে কোন আওয়াজ আসে না। একটু ভাবনায় পড়ে যায়, কি হলো। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরে আরেকবার কলিং বেল বাজায়। কিছু পরে দরজা খোলে অনন্যা। পোশাক বদলে একটা পাতলা স্লিপের উপরে একটা ড্রেসিং গাউন পরে। অনন্যা দরজা খুলে ইশারায় ওকে চুপ থাকতে বলে। দেবায়নের চোখ যায়, বিছানার সাইড টেবিলে। ওখানে একটা গ্লাসে মদ রাখা, একটা এশট্রেতে একটা সিগারেট জ্বলে জ্বলে অর্ধেক হয়ে গেছে। হয়তো দুটো কি তিনটে টান মারা হয়েছে তার বেশি নয়।

অনন্যা কণ্ঠস্বর বেশ চিন্তিত শোনায়, “এটা কি করে হলো? কথা ছিল দশটা এপিসোডের সেটা কি করে কমিয়ে ছটা এপিসোড হয়? ম্যানেজার তুমি না আমি?.... কি? মোটে একুশ দিন শুটিং?.... ওই এডের কি হলো? সেই মার্চে? থাক এখন আর ডিস্টার্ব কোরো না আমি একটু ব্যস্ত। কালকে ফিরে আমি নিজেই দেখবো একবার।”

দেবায়ন রুমে ঢুকে সোফার উপরে বসে অনন্যাকে দেখে। অনন্যা, ফোন ছেড়ে চুপচাপ বিছানায় বসে সাইড টেবিলের গ্লাস উঠিয়ে পুরো মদ গলায় ঢেলে দেয়। ফোনের উপরে সব রাগ ঢেলে বিছানার একপাশে ফোন ছুঁড়ে দেয়। দেবায়ন গলা খ্যাঁকরে উঠতেই অনন্যা ওর দিকে তাকিয়ে ঠোঁটে হাসি টেনে মনের ভাব বদলে ফেলে।

অনন্যা হেসে ওর সোফার হাতলে বসে বলে, “সরি। কিছু মনে কোরো না।”

দেবায়ন বড় নিঃশ্বাস নিয়ে বলে, “তোমার মুড মনে হয় ভালো নেই? কি হয়েছে, আপত্তি না থাকলে জানতে পারি কি?”
 
অনন্যাঃ “ছাড়ো ওইসব। নিত্যদিনের ব্যাপার আর নিত্যদিনের কাজকারবার। তুমি ড্রেস চেঞ্জ করবে না?”

দেবায়নঃ “একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি কি?”

অনন্যা দুম করে হেসে বলে, “না জিজ্ঞেস করতে পারো না।” তারপরে দেবায়নের গায়ের ওপরে ঢলে পড়ে বলে, “কি কথা?”

দেবায়নঃ “কি নিয়ে কথা হচ্ছিল? তোমার প্রোফেশানাল কিছু মনে হলো। না জানাতে চাইলে আমি জানতে চাইবো না।”

অনন্যাঃ “এই মাসে শুধু একুশ দিন কাজ আছে। পরের তিন মাসে কিছু নেই, সেই একটা এডের কথা ছিল সেটা মার্চে, তাই একটু চিন্তায় আছি। যাই হোক সে সব নিয়ে মাথা ঘামিও না।”

দেবায়নঃ, “তুমি মিস্টার সেনকে আগে থেকে চেনো।”

অনন্যাঃ “হ্যাঁ, পারমিতা ম্যামের দৌলতে আগে থেকে চিনি। পারমিতা ম্যাম আমার জন্য করেছে।”

দেবায়ন ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে, “মানে?”

অনন্যা দেবায়নের গায়ে ঢলে বলে, “ছাড়ো না ওই সব কথা। এতো ব্যক্তিগত কথাবার্তা জানতে নেই। বিজনেস আগেই শেষ হয়ে গেছে, নাউ জাস্ট প্লেসার, বেবি। শুধু তুমি আর আমি।”

দেবায়ন একটা সিগারেট জ্বালিয়ে বলে, “এতটাই কৃত্রিম যখন ব্যাপার স্যাপার তাহলে তুমি লাইট বন্ধ করে শুয়ে পড়।”

অনন্যার চোয়াল শক্ত হয়ে যায় দেবায়নের কথা শুনে, “দেমাক দেখাচ্ছো আমাকে? আমি তোমার কেনা বাঁদি নই মিস্টার বসাক।”

দেবায়নের কিছু যায় আসে না। ওর যেটা পাওয়ার সেটা ও পেয়ে গেছে, এই নারী মাংসের প্রতি একটু দুর্বলতা ছিল কিন্তু একদম কৃত্রিম সম্বন্ধে যেতে নারাজ। জানে যে অনন্যা ওর রুমে পয়সার বিনিময়ে এসেছে, চাইলে ওকে সামনের বিছানায় ফেলে যেমন ইচ্ছে তেমন করে সম্ভোগ করতে পারে। কিন্তু দেবায়নের মনে বাধা পায়। এর চেয়ে সুখকর ওর বান্ধবীরা, যার সাথে মনের মিল থাকে। যেখানে ব্যাবসা নয় পরস্পরের খুশির জন্য, আনন্দের জন্য মেতে ওঠে শরীরের খেলায়। দেবায়ন সোফা থেকে উঠে কোট খুলে আলমারিতে রাখে, জামা আর টাই খুলে হ্যাঙারে ঝুলিয়ে একটা তোয়ালে নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। অনন্যা চুপচাপ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। দেবায়ন বাথরুমে ঢুকে, ঘাড়ে মুখে হাতে জেল লাগিয়ে পরিষ্কার হয়ে বেরিয়ে আসে।

রুমের লাইট নিভিয়ে, অনন্যা ততক্ষণে ছোটো আলো জ্বালিয়ে বিছানায় বসে। নাইট গাউন খুলে শুধুমাত্র স্লিপ পরে। পাতলা স্লিপের ভেতর দিয়ে গাড় রঙের ব্রা দেখা যায়, সেই সাথে হাল্কা রঙের প্যান্টির দাগ স্পষ্ট। পা মুড়ে বসে থাকার ফলে সুগোল পাছার আকার অবয়ব স্পষ্ট বোঝা যায়। মসৃণ দুই সুগোল থাইয়ের শেষে বক্র পায়ের গুলির মসৃণ ত্বকে আবছা রুমের আলো পিচ্ছিল খেয়ে পড়ে। মাথার চুল ঘাড়ের উপরে দিয়ে সামনে এলিয়ে দিয়েছে। বুকের দিকে চোখ যেতেই শরীরের রক্ত চঞ্চল হয়ে যায়। সুগোল স্তন জোড়া, ছোটো আঁটো ব্রার মধ্যে বাঁধা পড়ে যেন ছটফট করছে ছাড়া পাবার জন্য। দেবায়ন অনন্যাকে একবার আপাদমস্তক দেখে। প্যান্টের ভেতরে শিথিল লিঙ্গ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। দেবায়ন তোয়ালেটা সোফার উপরে ছুঁড়ে দিয়ে, বিছানার এক পাশে বসে পড়ে। অনন্যা পেছন থেকে ওর গলা জড়িয়ে কানের লতির উপরে ছোটো একটা কামড় লাগিয়ে দেয়। চমকে ওঠে দেবায়ন, পিঠের উপরে অনন্যার নরম তুলতুলে স্তন জোড়া পিষে সমতল হয়ে যায়। অনন্যার হাত দুটি সামনের দিকে এসে দেবায়নের বুকের উপরে নেচে বেড়ায়। নরম আঙুলগুলো গেঞ্জি ভেদ করে ওর চওড়া বুকের রক্তে ঝড় তুলে দেয়।

অনন্যা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করে, “তুমি এতো ঠাণ্ডা কেন? এসো না কাছে।”

দেবায়ন ওর ডান হাত মুখের কাছে ধরে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “তোমার খুব তাড়া আছে বলে মনে হচ্ছে, কি ব্যাপার?”

অনন্যাঃ “ধুর, তুমি না। তোমার কি আমাকে ভালো লাগেনি?”

দেবায়ন হাসিতে ফেটে পড়ে, “তুমি পাগল হলে নাকি? তুমি ভারী সুন্দরী, নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুমি আমার কাছে। জানো, লনে দাঁড়িয়ে নিজেকে চিমটি কেটে ছিলাম, বড় ব্যাথা লাগলো, বুঝলাম যে জেগে আছি।”

অনন্যাঃ “কি যে বলো না তুমি। বড্ড বেশি মেয়েদের মন নিয়ে খেলতে পারো দেখছি।”

দেবায়নঃ “না, সত্যি বলছি।”

অনন্যা ওর কাঁধে মাথা রেখে গায়ের উপরে ঢলে পড়ে মিষ্টি কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে, “এমন ঠাণ্ডা মানুষ দেখিনি বাবা। কি চলছে বলতো তোমার মনের মধ্যে? গার্লফ্রেন্ডের কথা মনে পড়ছে, তাই তুমি টেন্সড নাকি?”

দেবায়ন হেসে বলে, “না সে চিন্তা আমার নেই।”

অনন্যাঃ “সত্যি কথা একটা বলবে আমাকে? জানি যে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা আমাদের উচিত নয়, তাও একটু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছে।”

দেবায়নঃ “কতটা ব্যক্তিগত সেটা না জেনে কি করে বলি যে প্রশ্নের উত্তর দেবো কি দেবো না। আচ্ছা জিজ্ঞেস কর।”
 
অনন্যাঃ “তুমি কে? নিবেদিতা ম্যাম আমাকে আর তনুজাকে বলছিল তোমাকে একটু নজরে রাখতে। আমি ইচ্ছে করে তনুজাকে ওই জার্মান ভদ্রলোকের কাছে পাঠিয়ে দিলাম। ডিনারের সময় থেকে দেখছি, তুমি একটু ছাড়া ছাড়া ছিলে, বিশেষ কারুর সাথে মেশোনি। তোমার কথাবার্তা শুনে মনে হয় না তুমি এন.আর.আই, তুমি খোদ এই বাংলার ছেলে তাও তোমাকে খুশি করতে নিবেদিতা ম্যাম যেন একটু তৎপর। কি ব্যাপার?”

হাজার প্রশ্নের সম্মুখীন দেবায়ন, সঠিক উত্তর দেবার আগে প্রশ্ন করে অনন্যাকে, “নিবেদিতা ম্যাম তোমাকে এতো সব বলেছে?”

অনন্যাঃ “হ্যাঁ বাবা। তুমি কি মানুষ না? অন্য কেউ হলে এতক্ষণে একটা সট হয়ে যেতো।”

দেবায়ন হেসে বলে, “আমি তাহলে সাধারন মানুষ নই, আমি ভুত।”

অনন্যা অভিমান করে দেবায়নের বাজুতে কিল মেরে বলে, “ধুর ব্যাঙ, তুমি বসে বসে নাড়াও আমি ঘুমাতে যাই। কালকে ম্যাম কিছু জিজ্ঞেস করলে বলে দেবো যে একদম ঠাণ্ডা মানুষের কাছে পাঠিয়েছে।”

দেবায়নঃ “বেশ তো ঘুমিয়ে পড়ো তুমি, কে বারন করেছে তোমাকে?”

অনন্যা কাতর কণ্ঠে দ্বিতীয় বার জিজ্ঞেস করে, “এই প্লিস বলো না, তুমি আসলে কে? তোমার মাথায় কি চলছে?”

অনন্যার কথা শুনে দেবায়ন বুঝে যায় নিবেদিতা জানতে চায় দেবায়নের আসল অভিপ্রায়, তাই শিখিয়ে পাঠিয়েছে অনন্যাকে। দেবায়ন মুখ খুলতে নারাজ, যা বলার সেটা সরাসরি নিবেদিতাকে পরে জানাবে। উলটে অনন্যাকে প্রশ্ন করে, “তোমার কথা একটু শুনি। তোমার অভিনেত্রী হওয়া, এই আলোর চমকানি আর তুমি পারমিতা কাকিমাকে কি করে জানো?”

অনন্যা ম্লান হেসে বলে, “সে অনেক বড় গল্প। আমার কথা জেনে কি করবে? গল্প লিখবে নাকি?”

দেবায়নঃ “বড্ড মেকানিকাল উত্তর। তুমি যেমন জানাতে চাও না তেমনি আমিও জানাতে চাই না। শুধু এইটুকু জেনে রাখো, আমি মিস্টার সেনের বিজনেস পার্টনার নই। আমি সামান্য একজন ছেলে।”

অনন্যা ঠোঁট বেঁকিয়ে বলে, “হু, তুমি বললে আর আমি মেনে নিলাম। সেদিন সেন স্যারের সাথে হিন্দুস্তানে বসে ডিনার করছিলে। আজকে এই বিজনেস মিটিংয়ে উপস্থিত। আবার নিবেদিতার ম্যামের নেক নজর তোমার উপরে। তুমি সামান্য বটে।” অনন্যা অনুনয়ের সুরে বলে, “এই প্লিস এই রকম কোরো না। মিবেদিতা ম্যাম জানলে খুব খারাপ হবে।” দেবায়ন বুঝতে পারেনা হটাত অনন্যার সুর বদলে কেন গেল। ও জিজ্ঞাসু চোখে অনন্যার দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা ওর কোল ঘেঁষে হাতের উপরে হাত রেখে আব্দার জড়ানো কণ্ঠে ডাকে, “প্লিস এসো না।”

দেবায়ন চেপে ধরে অনন্যাকে, “মাদামোয়েজেল, এটা বড় কৃত্রিম ব্যাপার স্যাপার হয়ে যাচ্ছে। এই রকম সম্পর্কে শুধু পেট ভরে মন ভরে না।”

অনন্যা ওর কাছ থেকে একটু সরে বসে, “ভালোবাসা করতে আসিনি এখানে মিস্টার।”

দেবায়নঃ “জানি, কিন্তু শুধু তোমাকে জড়িয়ে শুয়ে থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। এতটা মেকানিকাল আমি হতে পারিনি এখন। তার চেয়ে ভালো দুই জনে সারা রাত গল্প করে কাটিয়ে দেই। তুমি এক সুন্দরী অভিনেত্রী, আমি কোলকাতার এক সামান্য নগন্য ছেলে। তোমার এই চকমকে জীবনের কথা জানতে বড় ইচ্ছে করছে।”

অনন্যার গলা একটু আহত হয় উত্তর দেবার সময়ে, “হু, এই চকমকে জীবন। এই আলোর পেছনে অনেক অন্ধকার বুঝলে দেবায়ন।” দেবায়ন ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। অনন্যা একটু দুরে সরে বুকের উপরে বালিশ চেপে বলতে শুরু করে, “আমি বিগত পাঁচ বছর ধরে পারমিতা ম্যামকে চিনি। আমি জামশেদপুরের মেয়ে। আমার আসল নাম অনন্যা নয়, এই আলোর জগতে, এই চকমকির জগতে এসে আমার নাম অনন্যা হয়। আমি ছিলাম সুলেখা বোস। এখানে এসে হয়ে গেলাম অনন্যা বাসু। স্কুলে থাকতেই মডেলিং করার খুব শখ ছিল। গায়ের রঙ একটু চাপা হলেও সবাই আমাকে সুন্দরী বলতো। সবাই বলতো আমাকে নাকি মালাইকা আরোরার মতন দেখতে। স্কুলে থাকতে কয়েকটা মডেলিং করেছিলাম। রঙ একটু চাপা কিন্তু ছোটোখাটো স্থানিয় বিজ্ঞাপন পেয়ে যেতাম। ওইখানে একটা স্থানিয় বিজ্ঞাপন শুট করার সময়ে এক ফটোগ্রাফার, সুমন নাম, আমাকে দেখে। আমার অঙ্গ ভঙ্গি দেখে তাঁর পছন্দ হয়, সে আমার মাথায় বড় মডেল হওয়ার ভুত ঢুকিয়ে দেয়। বাবা মাকে বলতে বাবা আমাকে মেরে বকে চুপ করিয়ে দিল। মায়ের খুব শখ, মেয়ের নাম হবে, মেয়েকে সবাই দেখবে। আমি নেচে উঠলাম মায়ের সম্মতি পেয়ে। পাঁচ বছর আগে, সবে উনিশে পা দিয়েছি। সুমন আমাকে আর মাকে নিয়ে কোলকাতা চলে এল। কলেজের গন্ডি পারও হতে পারলাম না আর, চলে এলাম কোলকাতায় মডেল হবো বলে।”

অনন্যা চোখের কোল মোছে আঙুল দিয়ে। দেবায়ন বলে, “ছাড়ো আর জানতে চাই না। তোমার চোখে জল সেটা ঠিক মানতে পারছি না।”

অনন্যা বলে, “একটু শুনবে না? সবাই আমার রুপ দেখে, আলোর চমকানি দেখে। আমাকে ছুঁতে চায়, ধরতে চায়, কোলে পেতে চায়। একটু সেই আলোর নিচের অন্ধকার দেখতে চাইবে না?”

দেবায়নঃ “তোমাকে আঘাত করতে চাই না, অনন্যা।”

অনন্যাঃ “শোনো না একটু। এই যে সুমনের কথা বলছিলাম। সুমন, প্রথমে আমাকে বলল যে একটা মডেলিং এজেন্সিতে ঢুকতে হবে, তাঁর জন্য প্রোফাইল বানাতে হবে। মা জিজ্ঞেস করলো এই সব কি। সুমন মাকে বুঝিয়ে বলল যে, ছোটো ছোটো পোশাক পড়ে এদিক ফিরে ওদিক ফিরে ছবি তুলে একটা প্রোফাইল বানাতে হবে। মেয়ের মুখ দেখে তো আর মডেলিং হয় না, শরীরের প্রতি অঙ্গ, প্রতি ভাঁজ, আকার সব দেখিয়ে বড় মডেল হয়। প্রোফাইলের ছবি তলার জন্য সুমন আমাকে একটা ছোটো লাল রঙের ব্রা আর ছোটো লাল রঙের প্যান্টি হাতে ধরিয়ে দিল। আমার খুব লজ্জা করছিল। সুমন বলল যে এই সব লজ্জা করলে মডেল হওয়া যায় না। মডেল একটা নগ্ন দেহ, যারা র‍্যাম্পে হাঁটে তারা ব্রা পরে না। তাড়াতাড়ি ব্যাক স্টেজে গিয়ে কাপড় বদলাতে হয়। আমি অগত্যা দেখলাম যে সত্যি কথা। কত মডেল শুধু ব্রা প্যান্টির বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ চাদরের কেউ সাবানের। ওদের গায়ে কি কাপড় থাকে। লজ্জা বিসর্জন দিয়ে পাশের ঘরে গিয়ে পোশাক পালটে এলাম। সুমন মাকে বলল যে ফটোসুটের সময় থাকতে চায় না বাইরে বসতে চায়। সাথে থাকলে একটু জড়তা আসতে পারে মেয়ের মধ্যে, এই বুঝিয়ে মাকে বাইরে বসিয়ে দিল।”

কথা শুনতে শুনতে দেবায়নের চোয়াল শক্ত হয়ে যায় সুমনের উপরে। অনন্যা বলে, “সুমন আমাকে ওর স্টুডিওতে নিয়ে গিয়ে ছবি তুলতে শুরু করে দিল। সুলেখা এদিকে ঘুরে দাঁড়াও, সুলেখা একটু পাছা উঁচু করে দাঁড়াও, সুলেখা একটু কোমরে হাত দিয়ে পা দুটো ফাঁক করে দাঁড়াও, সুলেখা ব্রার হুক খুলে শুধু কাপ দুটো বুকের কাছে আলতো করে ধরে পা ছড়িয়ে বসে যাও। এই রকম ভাবে অনেক কটা ছবি তুলল আমার। আমি লজ্জার মাথা খেয়ে সুমনের সামনে এই দেহ ছড়িয়ে দিলাম। মাঝে মাঝে এসে আমার বুকে পাছায় হাত দিয়ে আমাকে দেখিয়ে দিল কি ভাবে দাঁড়াতে হবে, কি ভাবে বসতে হবে। প্রথম প্রথম আড়ষ্ট হয়ে গেছিলাম। সুমন বলল, এই রকম আড়ষ্ট হলে কাজে দেবে না। আমি বললাম, প্রথম প্রথম একটু হবেই। সুমন বলল, ধিরে ধিরে ঠিক হয়ে যাবে। আমাকে জামা কাপড় পড়তে বলে দিয়ে বাইরে চলে গেল মায়ের সাথে কথা বলতে। মাকে বলল যে একটু সময় লাগবে। আমার প্রোফাইল নিয়ে গিয়ে বেশ কয়েকটা এজেন্সিকে দেখাবে, তাদের সাথে কথা বলবে। মা বলল, ঠিক আছে। সুমন মাকে বলল যে আমাকে কোলকাতায় থাকতে হবে। আমার এক কাকার বাড়ি হেদুয়াতে। সুমন বলল এইসব কাজে বাড়িতে না থেকে যদি পেয়িং গেস্ট থাকা যায় তাহলে ভালো। কারন সবাই এই মডেলিং ভালো চোখে নাও দেখতে পারে। আর কাজের জন্য হয়তো কখন অনেক রাতে বাড়ি ফিরতে হবে হয়তো কোন কোন দিন রাতে ফিরল না। তখন বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে পারে। মা আমাকে ভাবতে বলল। আমি বললাম, এখানে কারুর সাথে পেয়িং গেস্ট থেকে যাবো।”
 
দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “তুমি সুমনের কথা মেনে নিলে?”

অনন্যাঃ “আমি তখন উড়ছিলাম। চোখের সামনে মডেলিং করার স্বপ্ন, নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন। সুমন আমাকে ওর এক বান্ধবী, রাখীর সাথে আলাপ করিয়ে দিল কয়েক দিন পরে। নাগেরবাজারে থাকতো রাখী, আমি ওর বাড়িতে উঠলাম। সেও মডেলিং করে, সুমন ওকে মডেলিংয়ে ঢুকিয়েছে। দিন যায়, সপ্তাহ চলে যায়। কোন মডেলিং এজেন্সির কাছ থেকে আমি ডাক পাই না। রোজ দিন আমি সুমনকে জিজ্ঞেস করি, কি কারুর কাছে গেছিলে আমার প্রোফাইল নিয়ে। সুমন আমাকে বলে, হ্যাঁ বেশ কয়েকটা এঞ্জেন্সিকে দিয়েছি। একটু অপেক্ষা কর ঠিক সময়ে ডাক আসবে। কিন্তু ডাক আর আসে না। রাখী একদিন রাতে আমাকে বলল, দ্যাখ সুলেখা, এই লাইনে শুধু সুন্দরী মুখ হলে চলবে না অথবা তোর দেহ কত সুন্দর সেটা হলে চলবে না। তুই কতটা সেক্সি আর তোর ভেতরে কতটা সেক্স আছে সেটাই কাজে লাগে। এই যে মডেলিং এজেন্সিগুলো, এদের ম্যানেজারদের খুশি করতে হবে। তুই যদি ওদের বিছানা গরম করতে পারিস, তাহলে ওরা তোকে ওদের এজেন্সিতে নেবে। তারপরে আছে প্রবল কম্পিটিশান। নাম আর কাজ টিঁকিয়ে রাখতে হলে তোকে বিভিন্ন লোকেদের হাতে রাখতে হবে। এখানে সবাই দেহ খোঁজে, সবাই তোকে ছুঁতে চাইবে, আদর করতে চাইবে। আমি বুঝে গেলাম, মডেলিং করতে হলে আমাকে ওদের বিছানা গরম করতে হবে।”

“একদিন সুমন আর রাখী সেক্সে মজেছিল, আমি হটাত এসে যাওয়াতে ওদের বাধা পড়ে। রাখী আমাকে ডাকে ওদের সাথে সেক্স করার জন্য। আমি অবাক হয়ে যাই ওর কথা শুনে। স্কুলে আমার সেই রকম কোন বয় ফ্রেন্ড ছিল না। আমি সেদিন পর্যন্ত ভারজিন ছিলাম। রাখী আমাকে বলল, একদিন না একদিন তোকে করতেই হবে তাহলে সুমনের কাছে বাধা কোথায়? ওই তোকে এই জগতে নিয়ে এসেছে। তখন পর্যন্ত একটাও এজেন্সিতে কাজ পাইনি। আমি চুপচাপ সুমনের দিকে দেখলাম। সুমন বলল, এতো কেন ভাবছো সুলেখা চলে এসো আমাদের সাথে। তোমাকে অনেক বড় মডেল বানিয়ে দেবো। রাখী আমাকে নিয়ে সুমনের কোলে বসিয়ে দিল। প্রথম সেক্সের অভিজ্ঞতা, না ভালো ছিল না। কিছুতেই যেন ভিজছিল না, আমি মন থেকে উত্তেজিত হতে পারছিলাম না। এতো নিচে নামতে হবে ভাবিনি। সুমন ওর শক্ত, গরম নুনু যখন আমার ভেতরে ঢুকালো আমি ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠলাম। রাখী আমাকে চেপে ধরেছিল আর সুমন সমানে জোরে জোরে আমাকে করে যাচ্ছিল। রেপ বলে মনে হয়নি আমার। ইচ্ছায় বলো আর অনিচ্ছায় বলো, আমার ভারজিনিটি দিয়ে দিলাম সুমনকে। সব শেষে রাখী আমার কানে কানে বলল, উপরে উঠতে হলে আগে নিচের দিকে নামতে হবে। আমি ওইখানের রক্ত মুছে বাঁকা হেসে বললাম, আর কি করতে হবে। সেদিন রাতে বাবার কথা খুব মনে পড়েছিল, কিন্তু পিছিয়ে যাবার আর রাস্তা খোলা ছিল না। আমি তখন উড়তে ব্যস্ত।”

অনন্যা একটা সিগারেট ধরায়, দুটো টান মেরে এস্ট্রেতে সিগারেট রেখে আবার বলতে শুরু করে, “তারপরে কি হলো, বলি শোনো। ঠিক তাঁর দুই দিন পরেই আমার ডাক এল একটা মডেলিং এজেন্সি থেকে। একে একে ম্যানেজারদের বিছানা গরম করলাম আর বিভিন্ন কাজ পেলাম। ওরা আমাকে হাঁটতে চলতে, দাঁড়াতে বসতে সব শেখাল সেই সাথে আমি শিখলাম কি ভাবে পুরুষ মানুষকে বিছানায় খুশি করতে হয়। প্রতি মাসে এসাইন্মেন্ট থাকতো না, টাকা কমে আসতো। কিন্তু পার্টি, বন্ধু বান্ধবী কম ছিলোনা, খরচ খরচা কম হতো না। কি করি, রাখীর কাছ থেকে ধার নিতাম। রাখী আমাকে বলল, তুই এক কাজ কর, এতদিন তুই এর তার সাথে রাত কাটিয়ে শুধু কয়েক হাজার টাকার এসাইন্মেন্ট পেতিস। তোকে আমি বাইরের ক্লায়েন্ট দিতে পারি, হোটেলে যাবি, রাত কাটাবি। বেশ ভালো পয়সা পাবি। এক ঘন্টা একটা শটে পাঁচ থেকে সাত হাজার পেয়ে যাবি। দুই হাজার আমাকে দিয়ে দিস। পুরো রাতের জন্য পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা, মাক্সিমাম চারটে শট দিবি। টাকা আগে নিয়ে নিবি, তারপরে সেক্স। পৌঁছে গেলে আমাকে জানিয়ে দিবি। বড় হোটেল ছাড়া যাবি না। অবশ্য নিজে থেকে কিছু চেষ্টা করতে যাস না, এই র‍্যাকেট কিন্তু খুব নোংরা আর সাবধানে চলতে হয়। আমি বললাম, ঠিক আছে তুই যোগাড় করে দে। সেই শুরু হলো এই মডেলিং আর এস্করট জীবন।”

“একদিন আমাকে রাখী বলল, এক ম্যাডামের সাথে বম্বে যেতে হবে, ম্যাডাম অনেক টাকা দেবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কত টাকা। রাখী বলল, তোকে না দেখে ম্যাডাম ঠিক টাকার কথা বলবে না। আমাকে রাখী নিয়ে গেল, হোটেল পার্কের কফি শপে। সেখানে পারমিতা ম্যামের সাথে দেখা। জানি না কেন, পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মন কেমন হয়ে গেল। পারমিতা ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোমার গায়ের রঙ চাপা, তোমাকে আমার ক্লায়েন্ট পছন্দ করবে না। আমার খুব খারাপ লাগলো, চোখে জল চলে এল। রাখী, পারমিতা ম্যামের উপরে রেগে গেল। আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এল কফিশপ থেকে। পারমিতা ম্যাম আমার দিকে তাকিয়ে ছিল, আমি দরজা দিয়ে বের হতে যাবো, এমন সময়ে ম্যাম আমাকে হাত নাড়িয়ে চুপচাপ ভেতরে আসতে ইঙ্গিত করে। আমি রাখীকে বাইরে দাঁড় করিয়ে ম্যামের কাছে এলাম। ম্যাম আমার নাম্বার নিয়ে বলল পরে আমার সাথে কথা বলবে। সেদিন অনেক রাতে ম্যামের ফোন এল আমার কাছে। আমাকে বলল, পার্ক হোটেলে বিকেলে দেখা করতে। আমি দেখা করলাম ম্যামের সাথে। ম্যাম আমাকে দেখে বলল, তোকে দেখে বড় মায়া লেগেছিল তাই কালকে ওইরকম আচরন করেছিলাম যাতে তুই রাখীকে ছেড়ে কিছু করে আমার কাছে আসিস। তোকে আমি অন্য একটা এজেন্সিতে কাজে লাগাব। ম্যাম আমাকে এই নাম দিল, তুই সুলেখা নয় তুই আজ থেকে অনন্যা বাসু। আমি ম্যামের হাত ধরে কেঁদে ফেলেছিলাম। পারমিতা ম্যামকে দেখে আমার মায়ের কথা মনে পড়ে গেছিল। আগের আমার সব ডিল রাখী করতো, আমার হাতে আসতো কোনবার দশ হাজার, কোনবার পনেরো হাজার। ম্যাম আমাকে বলল, তোকে আমি অভিনয়ে নামাব। তারপরে তুই যা ভালো বুঝিস সেটা করিস। পারমিতা ম্যামের এক চেনা ডাইরেক্টর ছিল টালিগঞ্জে। তাঁর কাছে আমাকে একদিন নিয়ে গেল। আমাকে সে বেশ কয়েকদিন প্রশিক্ষণ দিল। আমি মডেলিং ছেড়ে দিলাম এক প্রকার। সিনেমাতে এক্সট্রা রোল পেতাম। কিছু কথা থাকতো কোন সময়ে, কোন সময়ে থাকতো না।”

“একদিন এক ড্যান্স ডাইরেক্টর বলল একটা টিভিতে ছোটো রোল আছে, এক নায়িকার বোন। বেশ কয়েক এপিসোড হবে। ওই রোল আমার চাই, যেমন করে হোক। সব মেয়েরা তৎপর। সবাই আমরা দাঁড়িয়ে, সামনে প্রইউসার, ডাইরেক্টর আর ড্যান্স ডাইরেক্টর। আমাদের নাচতে বলল, হেঁটে চলে দেখাতে বলল। এমন সময়ে ডাইরেক্টর আমাদের বলল, টপ খুলে ফেলো। সেই শুনে অনেক মেয়ের মাথায় হাত। ডাইরেক্টর বলল, কি হলো? অভিনয় করতে হলে তোমার শরীর তোমার নয়, সেই চরিত্রের বলে ভাবতে হবে। সেই চরিত্র যদি বেশ্যা হয় তাহলে তোমাকে সেই রকম অভিনয় করতে হবে। অনেক মেয়েরা বেরিয়ে গেল, আমি প্রস্তুত ছিলাম, দাঁড়িয়ে রইলাম। আমার সাথে আরো দুইজনে দাঁড়িয়ে ছিল। তিনজনে টপ খুলে, শুধু ব্রা পরে দাঁড়িয়ে রইলাম। ডাইরেক্টর আর প্রডিউসার নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করে কি সব কথা বলল আর আমাদের শরীর গিলে খেল। আমাদের তিনজনকে দাঁড় করিয়ে কিছু পরে বলে, নিচেরটা খুলে ফেলো। আমার পরনে একটা হট প্যান্ট ছিল। একজন একটা ছোটো স্কারট পরেছিল অন্যজন একটা স্লাক্স। নিচের পোশাক খোলার কথা শুনে বাকি দুজনে রেগে বেরিয়ে গেল সেখান থেকে। আমার সেদিন মেন্স হয়েছিল, মেন্সের দ্বিতীয় দিন। আমি জানতাম, ওই নাচানাচির জন্য আমার প্যান্টি আমার প্যাড রক্তে ভিজে গেছে। হাতে টাকা নেই অনেকদিন হাত খালি। নায়িকা হতেই হবে আমাকে। আমি হটপ্যান্ট খুলে ব্রা আর প্যান্টি পরে ওদের সামনে দাঁড়িয়ে রইলাম। পায়ের ফাঁকে দেখলাম। আমার প্যাড ভিজে জবজবে, ওইখান থেকে রক্ত চুঁইয়ে কিছুটা পড়ছে। ডাইরেক্টর আর প্রোডিউসার আমাকে গিলে খেল। আমার ওইখানের রক্ত দেখে ওদের শরীর যেন আরো গরম হয়ে গেল। প্রডিউসার তো মনে হয় চেয়ারে বসে মাল ফেলে দিয়েছিল আমার ওইখানে মেন্সের রক্ত দেখে। সেই শুরু, আমি ওই সিরিয়ালে রোল পেয়ে গেলাম। রাখীর বাড়ি ছেড়ে, সল্টলেকে একটা ফ্লাট ভাড়া নিলাম, একা থাকতাম। তারপরে টিভিতে ছোটো ছোটো রোল পেলাম। আমার কাজ দেখার জন্য একটা ম্যানেজার রাখলাম, সুকান্ত। সেই আমার সব ডিল করে দিতো।”

“টি.ভি সিরিয়ালে টাকা প্রতিদিনের হিসাবে দেয়। আমার রেট প্রথমে প্রতিদিন হিসাবে তিন হাজার ছিল। যাও স্টুডিওতে, মেকআপ করে ঘন্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকো। নায়িকার ভুলে অথবা অন্য কারুর ভুলের জন্য আবার শট দাও। ফটো সুটে কোন সময়ে, কাপড় পরে দাঁড়িয়ে আছি। সামনে স্পট বয় থেকে শুরু করে সবাই, তাদের সামনে ধরো একটা ব্রা আর সারঙ্গে দাঁড়িয়ে। আগে বন্ধ ঘরের মধ্যে কাপড় খুলতাম, সেটা পর্দার জন্য খুলছি। কোন ড্যান্স ডাইরেক্টর এসে পাছা ধরে একটু বেঁকিয়ে দিয়ে বলল, এইরকম ভাবে দাঁড়াও। কখন পিঠের উপরে হাত বুলিয়ে বুক উঁচিয়ে বলে যায়, এইরকম করে শট দাও, সেই সময়ে হয়তো একটু স্তন টিপে দিল। আমাকে বলল, বিজ্ঞাপনের জিনিস দেখে কেউ জিনিস কেনে না। কেনে যে মেয়েটা বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, তাকে দেখে। এখানে তোমার সেক্সুয়ালিটি বিক্রি হবে। খালি অভিনয়ে মাসের খরচ পুরো হয় না। প্রতি মাসে এসাইন্মেন্ট থাকে না। কিন্তু খরচ সেই এক রকমের হয়, গাড়ি আছে, ড্রাইভার আছে, ইনকাম ট্যাক্স আছে, বাড়ি ভাড়া আছে। এই কাজ তাই আর ছাড়া গেল না। ছোটো পর্দায় আসতেই আমি রেট বাড়িয়ে দিলাম। ত্রিশ হাজার থেকে এক লাফে আমার দাম বেড়ে হয়ে গেল পঞ্চাশ ষাট হাজার। এক ঘণ্টার এক শটের ক্লায়েন্ট আর নিতাম না। ডিল হতো পুরো রাতের, রাত দশটা থেকে সকাল ছ’টা।”

“একদিন পারমিতা ম্যাম আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলো, কি রে কাজ পেয়ে আমাকে ভুলে গেলি নাকি। আমি সত্যি ভুলতে বসেছিলাম ম্যামকে। আমি বললাম, না আপনাকে কি করে ভুলি। আপনি যা বলবেন করতে রাজি আছি। আমাকে বলল, আমার সাথে একবার পুনে যাবি, ওইখানে একটা বিজনেস পার্টিতে বাঙালি মেয়ে চাই ক্লায়েন্টের। আমি তখন এইসব আর গায়ে মাখতাম না। আমি বললাম, আমি রাজি। ম্যাম আমাকে বলল, কাজ যদি হাসিল হয় তাহলে তোকে এক লাখ দেবো আর না হলে তোর যা রেট সেই দেবো। মাঝে মাঝেই ডাক পড়তো ম্যামের। ম্যাম প্রতি পুজোতে আমাকে গিফট দিতো, প্রতি পার্টিতে আমাকে ডাকতো। আমার বাড়িতে বেশ কয়েক বার এসেছে ম্যাম। কাজ না থাকলেও ডাকতো, আমার টাকা ফুরিয়ে গেলে ম্যাম আমাকে টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে কতবার। তারপরে একদিন ম্যাম আমাকে নিয়ে গেল এক বড় প্রডিউসারের কাছে। সে আমাকে একটা ছোটো ভুতের সিরিয়ালে নায়িকার কাজ দিল। তারপরে বড় বড় ব্যানারের বড় বড় সিরিয়ালে কাজ পেতে শুরু করলাম। এখন পারো ডে আমি পনেরো হাজার চার্জ করি। তবে বড় কোন সিনেমা থেকে ডাক এখন আসেনি। এই নায়িকা হওয়ার পরে আমার রেট বেড়ে হয়ে গেল এক রাতের এক লাখ। ম্যাম নিজেই আমাকে একদিন বলল, তোর কিছু হলে আমি আছি। কোন অসুবিধে হলে আমাকে মনে করিস আমি সাহায্য করবো তোকে। অন্যরা যা দেয়, ম্যাম বরাবর আমাকে তার চেয়ে বেশি দেয়। আমার মা মাঝে মাঝেই আমার কাছে এসে থাকেন।” নিজের গল্প বলতে বলতে কেঁদে ফেলে অনন্যা, “মেয়ের টাকা হয়েছে, নাম হয়েছে বাবাও আজকাল কিছু বলেন না। তবে বিশেষ আসেন না কোলকাতায়। দুই বছর আগে, আমার নাম ভাঙিয়ে বেশ বড়লোকের মেয়েকে বিয়ে করেছে আমার দাদা। দাদা বৌদি এখানে আসে, এলেই এটা চাই ওটা চাই। আমি কি চাই সেটা দেখার লোক আমার পাশে নেই।”

দেবায়ন অনন্যার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখে, চোখের কোলে জল টলমল করছে। অনন্যা ধরা গলায় বলে, “কত সুন্দর মুড নিয়ে এসেছিলাম। তোমাকে দেখে ইচ্ছে করেই তনুজাকে ওই জার্মানের রুমে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। সব মুডের বারোটা বাজিয়ে দিলে তো? সত্যি বলছি বড় কান্না পাচ্ছে আমার। পুরো রাত মাটি করে দিলে তুমি। কি লাভ হলো আমার বস্তাপচা গল্প শুনে?” সিগারেট প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে কাঁপা হাতে জ্বালাতে যায়।

দেবায়ন ওর হাত থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে বলে, “অনন্যা...” কিছু বলার আগেই অনন্যা মুখ চাপা দিয়ে দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। দেবায়ন ঘাবড়ে যায় অনন্যার আচরনে। বাথরুমের দরজায় ধাক্কা মেরে দরজা খুলতে অনুরোধ করে।

দরজার ওপাশ থেকে ধরা গলায় চেঁচিয়ে ওঠে অনন্যা, “মরতে আমি তোমার কাছে এসেছিলাম। পুরো রাতের বারোটা বাজিয়ে দিল, যাও চলে যাও।”

দেবায়ন বুক ভরে এক নিঃশ্বাস নেয়। ঘড়িতে সকাল চারটে বাজে, চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। শীতকালে সকাল হতে এখন অনেক দেরি, আরও তিন ঘণ্টা পরে সূর্য উঠবে। দেবায়ন বাথরুমের দরজায় ধাক্কা মেরে বলে, “সরি অনন্যা। আমি এতো শত কথা জানতে চাইনি। সত্যি বলছি। আমি শুধু তোমার সাথে একটু গল্প করতে চেয়েছিলাম। তুমি যে তোমার এই কাহিনী আমাকে শুনাবে সেটা ভাবিনি।”

অনন্যা চেঁচিয়ে ওঠে, “তোমার গলার আওয়াজ শুনতে আমার একদম ভালো লাগছে না।”

দেবায়নঃ “শীত কাল আর তুমি শুধু একটা পাতলা স্লিপ গায়ে। তোমার ঠাণ্ডা লেগে যাবে, বেরিয়ে এসো বাথরুম থেকে।”

অনন্যা চেঁচিয়ে ওঠে আবার, “আমাকে একা থাকতে দাও। তুমি রুমে থাকলে আমি কিন্তু সকাল পর্যন্ত বাথরুম থেকে বের হবো না।”

অগত্যা দেবায়ন শার্ট আর সুট গায়ে চড়িয়ে, রুমের কার্ড নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। সারা হোটেল নিস্তব্ধ, পাশের রুমগুলোতে কোন আওয়াজ নেই। কোন রুমে কার সাথে কে শুয়ে আছে তাও জানে না দেবায়ন। এখানে কেউ ওর বন্ধু নয় যে রাতে তাকে জাগিয়ে তাঁর রুমে রাত কাটাবে। নিচে লবিতে নামতেই রিসেপ্সনিস্ট জিজ্ঞেস করে, কি স্যার রুমে কোন প্রবলেম? দেবায়ন মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দেয়, না রুমে কোন প্রবলেম নেই। এমনি রাতে ঘুম আসছে না তাই একটু লনের দিকে যাবে। গঙ্গার দিকের লনে হাঁটা দেয় দেবায়ন। হাঁটতে হাঁটতে ভাবতে থাকে, এক অনন্যা সুন্দরীর সাথে রাতে দেখা, সেই সুন্দরীর সাথে রাত কাটানোর বদলে এই ঠাণ্ডায় খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে। যৌনতার হাতছানিতে সারা দিয়ে অনন্যাকে জড়িয়ে আরামে রাত কাটাতে পারতো। সেটা না করে, জিজ্ঞেস করতে গেল ওর গল্প। সেই গল্পে অনন্যা বলে ফেলল ওর অতীত আর নেমে এল দুই চোখে কান্না। একটা সিগারেট শেষ হতেই আরও একটা সিগারেট জ্বালায়। কি করছে অনন্যা এখন? বাথরুম থেকে না বের হলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে মেয়েটার। এমন এক সুন্দরীর সান্নিধ্য পাওয়া ওর মতন মানুষের পক্ষে দুষ্কর। তাও কত হাতের কাছে ছিল ওর নধর আকর্ষণীয় দেহ। অনন্যা নিজে থেকে ওর কোলে এসে মেলে ধরেছিল। হ্যাঁ, টাকার বিনিময়ে এসেছিল। কত টাকা দিয়েছে মিস্টার সেন? এক লাখের বেশি বলেছে অনন্যা। এক লাখ, দেবায়নের কাছে অনেক টাকা, অনন্যার কাছেও অনেক টাকা নিশ্চয়, না হলে কেন আসবে এইখানে।

পকেটের পেন দুই তিন বার চালিয়েছে দেবায়ন। মিটিংয়ের কথা সব রেকর্ড করা আছে, সেই সাথে গাড়িতে আসার সময়ে মিস্টার সেনের কথা রেকর্ড আছে। কিন্তু অনন্যার সাথে কথা বলার সময়ে ওর গল্প রেকর্ড করা হয়নি। মনের মধ্যে গেঁথে গেছে ওর অতীতের ছবি। অনুপমাকে বলবে কি যে ও রাত কাটিয়েছে অনন্যার সাথে? মিস্টার সেন কি জানেন এই কথা? যদি নিবেদিতা জানিয়ে দেয় তাহলে মিস্টার সেন কি ভাববেন? অনুপমাকে জানিয়ে দেওয়া ভালো। অন্য কারুর মুখ থেকে শোনার আগে নিজেই বলে দেবে। অন্তত একটা এস.এম.এস করতে দোষ কি এখন। এতো রাতে ঘুমিয়ে আছে কিন্তু সকাল হলে নিশ্চয় পেয়ে যাবে ওর সংবাদ। পকেটে হাত দিতেই টের পায় যে ফোন রুমেই ফেলে এসেছে। কি করা যায়, যাবে কি যাবে না। যা ঠাণ্ডা হাওয়া তাতে রক্ত বরফ হয়ে যেতে পারে কিছুক্ষণের মধ্যেই। বড় দোটানার মধ্যে পড়ে গেছে, অনন্যার সাবধান বানী, বেরিয়ে যাও না হলে আমি বাথরুম থেকে বের হবো না। মেয়েটা যদি বাথরুমে থাকে তাহলে শরীর খারাপ হতে বাধ্য, তাই দেবায়ন রুম ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। পাঁচটা বাজে, একবার রুমে গিয়ে দেখা যাক মেয়েটা কি করছে।

রুমের স্মার্ট কার্ড পকেটেই ছিল। কার্ড দিয়ে রুমের দরজা খুলে ভেতরে ঢুকল। অনন্যা লেপ মুড়ি দিয়ে চোখ বন্ধ করে বিছানার এক পাশে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। গায়ের সুট জামা খুলে, আলমারিতে রেখে দেয়। কোন আওয়াজ না করে এক বালিশ উঠিয়ে নেয়। ধবধবে সাদা বিছানার উপরে ঢেউয়ের মতন শরীর পড়ে আছে। অনন্যার ঘুমন্ত চেহারা দেখার প্রবল ইচ্ছে জাগে। দেবায়ন বিছানার অন্য পাশে এসে শায়িত অনন্যাকে দেখে। এলো কালো রেশমি চুলের এক গোছা ওর মুখের উপরে মেঘের মতন ঢেকে। আলতো করে চুলের গুচ্ছ গালের উপর থেকে সরিয়ে দেয়। অনন্যার চোখের পাতা নড়ে ওঠে। চোখের কোল থেকে নাকের ডগা পর্যন্ত জলের দাগ। পিঠ নড়ে ওঠে, কেঁপে ওঠে শরীর। দেবায়ন ঝুঁকে পড়ে অনন্যার রসালো মিষ্টি ঠোঁটের উপরে।

অনন্যা চোখ মেলে একটা চড় কষিয়ে দেয় দেবায়নের গালে, “শয়তান ছেলে, দূর হ এখান থেকে।” কিন্তু ঠেলে দেবার বদলে, দেবায়নের চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে দেবায়নের পুরু ঠোঁটের উপরে ঠোঁট বসিয়ে গভীর এক চুম্বন এঁকে দেয়।

দেবায়ন লেপ সরিয়ে, দুই হাতে অনন্যার কোমল শরীর জড়িয়ে ধরে। ওর হাত চলে যায় অনন্যার খোলা পিঠে। অনন্যার নরম আঙুল দেবায়নের চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে ঠোঁটের উপরে টেনে আনে ওর মাথা। নিচের ঠোঁট চিবিয়ে জিব ঢুকিয়ে দেয় দেবায়নের মুখের ভেতরে। গোলাপি ভেলভেটের মতন নরম জিবের খেলা খেলতে খেলতে দেবায়নের হাত নেমে আসে অনন্যার সুগোল নরম পাছার ওপরে। স্লিপ সরিয়ে দিয়ে প্যান্টির উপর দিয়ে নরম পাছা, দুই হাতের থাবায় চেপে ধরে। সারা শরীর যেন মাখনের তাল। চটকে পিষে একাকার করে দেয় পাছা। অনন্যা, দেবায়নের ঠোঁট ছেড়ে পাগলিনির মতন কপালে গালে ঘাড়ে চুমু খায়। দেবায়ন বিছানার উপরে উঠে বসে আর অনন্যাকে টেনে বিছানায় বসিয়ে দেয়। অনন্যা ওর মেলে ধরা পায়ের মাঝে হাঁটু গেড়ে বসে। দেবায়ন ওর মুখখানি দুই হাতে আঁজলা করে ধরে চোখের মাঝ গভীর ভাবে তাকিয়ে থাকে।
 
অনন্যা ওর চোখের চাহনি দেখে লজ্জা পেয়ে চোখের উপরে হাত রেখে দেয়, “ইসসস প্লিস এই রকম ভাবে দেখবে না। সত্যি আজকে বড় লজ্জা করছে।” কামিনীর প্রেমে ভরা আচরনে দেবায়ন উন্মাদ হয়ে যায়।

দেবায়ন নাকের উপরে নাক ঘষে বলে, “চোখের এই লজ্জা দেখতে বড় ভালো লাগে, না হলে সব মেকি মনে হয়।”

দেবায়ন ওর কাঁধে হাত দিয়ে স্লিপের দড়ি কাঁধের থেকে নামিয়ে দেয়। কাঁধ ঝাঁকিয়ে স্লিপ খুলে দেয়। উন্মুক্ত হয়ে যায় কালো ব্রা ঢাকা দুটি বড় বড় নরম স্তন। দেবায়ন দুই হাতে জড়িয়ে ধরে অনন্যার কোমর জড়িয়ে কাছে টেনে আনে। ওর প্রশস্ত চওড়া ছাতির উপরে পিষে সমতল হয়ে যায় অনন্যার নরম তুলতুলে ব্রা ঢাকা স্তন জোড়া। দেবায়নের কোমরের দুপাশে পা দিয়ে কোলের উপরে বসে ওর মাথা নিজের বুকের কাছে চেপে ধরে। কামঘন গরম শ্বাসে ভরিয়ে দেয় দেবায়নের মুখ। দেবায়ন, ওর নরম পাছার উপরে হাত দিয়ে নিজের লিঙ্গের উপরে টেনে ধরে ওর জানুসন্ধি। শক্ত কঠিন লিঙ্গের পরশে অনন্যার যোনি গহ্বর কুলুকুলু করে ভিজে ওঠে। কঠিন লিঙ্গের ছোঁয়া পেতেই অনন্যা, “উম্মম্ম বেবি... তুমি আজকে পাগল করে দেবে মনে হচ্ছে” বলে মিহি এক শীৎকার করে। অনন্যা দেবায়নের গা থেকে গেঞ্জি খুলে একপাশে ফেলে দেয়। গালের উপরে আলতো করে চাঁটি মেরে অভিমানী কণ্ঠে বলে, “পাগল ছেলে রাত শেষ হতে চললো এখন তোমার প্রেম জেগেছে?”

দেবায়ন ওর শরীর পেঁচিয়ে ধরে চোখে চোখ রেখে বলে, “আমি তোমাকে আঘাত করতে চাইনি অনন্যা।”

অনন্যা ওর গালে চুমু খেতে খেতে বলে, “কথা না বলে আমাকে একটু ভালবাসবে, প্লিস? আজকে একদম অন্যরকম লাগছে। আমি যেন আর আমার মধ্যে নেই। হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে।”

অনন্যার পিঠে হাত দিয়ে ব্রার হুক খুলে দেয় দেবায়ন। সুগোল স্তন জোড়া বক্ষ বন্ধনি থেকে ছাড়া পেয়ে লাফিয়ে ওঠে দেবায়নের দিকে। দেবায়ন দুই হাতে ওর নরম উদ্ধত স্তন জোড়া আলতো পিষে ধরে। অনন্যা, চোখ বন্ধ করে মাথা পেছনে হেলিয়ে দেয়। স্তন জোড়া সামনে ঠেলে দেয়। দেবায়ন একটা স্তন মুখের মধ্যে পুরে চুষতে শুরু করে সেই সাথে অন্য স্তন মুঠি করে ধরে টিপে পিষে একাকার করে দেয়। দেবায়ন জিব, স্তন বৃন্তের চারপাশে জিবের ডগা বুলিয়ে দেয় কিছুক্ষণ তারপরে স্তনের বোঁটা দুই ঠোঁটের মাঝে নিয়ে চুষে দেয়। একবার ডান স্তন চুষে চেটে দেবার পরে বাম স্তনে মনোযোগ দেয়। বারেবারে এই কামক্রীড়া করার পরে স্তনের বোঁটা জোড়া ফুলে ফেঁপে ওঠে। দেবায়নের ঠোঁটের পেষণে দুই বোঁটা নুড়ি পাথরের মতন শক্ত আর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অনন্যা কাম বেদনায় কঁকিয়ে বলে, “হ্যাঁ হ্যাঁ, খেয়ে ফেলো আমার বুক... প্লিস একটু বোঁটা খাও হানি। আমার সারা শরীর আজ জ্বলছে... বুক দুটো খেয়ে ফেলো সোনা... বোঁটাতে প্লিস একটু কামড় দাও...”

দেবায়ন একবার ডান স্তন টেপে আর বাম স্তন চোষে, কিছুপরে স্তন বদলে অন্য স্তন মুখে পুরে চোষে। কামোন্মাদ হয়ে ওঠে অনন্যা। দুইজনের শরীরের মাঝে হাত গলিয়ে প্যান্টের উপর দিয়ে দেবায়নের লিঙ্গ মুঠি করে ধরে। নরম আঙ্গুলের চাপে দেবায়নের শরীর শিহরিত হয়। দেবায়নের মনে হয় যেন ওর লিঙ্গে এক পাপড়ির দস্তানা এসে পড়েছে। সারা শরীরে কিলবিল করতে শুরু করে সহস্র পোকা। দেবায়নের এক হাত নেমে আসে অনন্যার পাছার উপরে আর অন্য হাতে স্তন পিষে ডলে একাকার করে দেয়। কিছু পরে দেবায়ন ওকে বিছানায় শুইয়ে দেয়। অনন্যা বিছানায় শুয়ে দুই হাত বাড়িয়ে দেয় দেবায়নের দিকে। দেবায়ন ওর দেহের উপরে ঝুঁকে ওর গালে চুমু খায়। তারপরে নাকের ডগায়, কানের লতিতে চুমু খায়। কানের দুল সমেত লতি ঠোঁটের মাঝে নিয়ে লালা দিয়ে ভিজিয়ে চুষে দেয়। ভেজা জিবের স্পর্শে অনন্যা পাগল হয়ে যায়।

খিলখিল করে হেসে বলে, “এই পাগল কাতুকুতু লাগছে ছাড়ো।” অনন্যার সারা শরীরে সব রোমকুপ একসাথে জেগে ওঠে।

অনন্যা ওর চুলের মুঠি ধরে কান থেকে মাথা উঠাতে চেষ্টা করে। অনন্যার ছটফটানিতে বেশ মজা পায় দেবায়ন। ওর হাত শক্ত করে ধরে আরও বেশি কানের লতি চুষে আদর করে দেয়। ভারী দেহের নিচে হাসতে হাসতে ছটফট করে ওঠে ললনা। কোনোরকমে হাত ছাড়িয়ে দেবায়নের পিঠে দুমদুম কিল বর্ষণ করে, “এই প্লিস আর দুষ্টুমি করো না, খুব সুড়সুড়ি লাগছে আমার। এবারে কিন্তু মেরে ফেলে দেবো।”

দেবায়ন কানের লতি ছেড়ে বলে, “মেরে দিলে বাকি মজা কি করে পাবে? দাঁড়াও সবে শুরু হলো।”

দেবায়ন অনন্যার হাত ধরে মাথার উপরে করে দিয়ে মুখ নামিয়ে আনে ওর মসৃণ বগলে। জিব বের করে নীচ থেকে উপর চেটে দেয়। কামোদ্দীপক আচরনে শীৎকার করে ওঠে কামার্ত রমণী। দেবায়নের শরীর ওর শরীরের উপরে। দুই পা ভাঁজ করে দেবায়নের কোমরের দুপাশে ছড়িয়ে দেয় অনন্যা। প্যান্টি ঢাকা যোনির উত্তাপ তলপেটে অনুভব করে দেবায়ন। এক বগল চাটার পরে অন্য বগল চেটে অনন্যাকে পাগল করে তোলে। অনন্যা হাঁফিয়ে ওঠে দেবায়নের কামোদ্দীপক আচরনে। চোখ বন্ধ করে বিছানার চাদর খামচে ধরে কোমর উঁচিয়ে দেবায়নের তলপেটের সাথে চেপে ধরে উরুসন্ধি। ভেজা প্যান্টির রস লাগে দেবায়নের পেটে। দেবায়ন বুঝতে পারে যে অনন্যা পাগল হয়ে উঠেছে সম্ভোগের জন্য। দেবায়ন ইচ্ছে করে অনন্যাকে আরও খেলাতে চায়। বগল ছেড়ে দুই হাতে দুই স্তন চেপে স্তনের মাঝ ঠোঁট চেপে ধরে। ঠোঁট গোল করে স্তনের বোঁটার উপরে গরম হাওয়া দেয়। অনন্যা দেবায়নের মাথা চেপে নামিয়ে আনে স্তনের উপরে।

মিহি শীৎকারে অনুরোধ করে কামুকী, “প্লিস আর পাগল কোরো না দেবায়ন।”

দেবায়ন ওর কথায় কান না দিয়ে ছোটো ছোটো চুমু দিতে দিতে নিচের দিকে নামতে শুরু করে। পেটের মাঝে মধ্যচ্ছদা বরাবর ঠোঁট চেপে নাভির কাছে ঠোঁট নামিয়ে আনে। ঠোঁট নাভির চারপাশে বুলিয়ে দেয়। অনন্যা কাটা মাছের মতন ছটফট করতে করতে ওর মাথা চেপে ধরে পেটের উপরে। চুম্বনের শব্দে আর মিহি শীৎকারে রুম ভরে ওঠে। নাভির ভেতরে জিব দিয়ে গোল গভীর নাভি চেটে দেয়। অনন্যার শরীর বেঁকে দুমড়ে যায় ওই কামোদ্দীপক স্পর্শে। চোখ বন্ধ করে “উম্মম্ম... আহা... উম্মম্ম...” শীৎকার করে সমানে। নাভি ছেড়ে দেবায়নের ঠোঁট আরও নিচে নামে। উরু মেলে ধরে অনন্যা, গোলাপি প্যান্টি ভিজে যোনির সাথে লেপটে গেছে। কামানো মসৃণ যোনি দেখে দেবায়নের মনে হয় ওই গহবরে ঢুকে যায়। যোনির চেরা, যোনির আকার অবয়ব পরিষ্কার ফুটে উঠেছে ভেজা প্যান্টির নীচ থেকে। দেবায়নের নাকে ভেসে আসে, অনন্যার তীব্র কামনার ঘ্রান। সেই ঘ্রানে নাক ডুবিয়ে চুমু খেতে ইচ্ছে করে। সেই ইচ্ছে দমন করে মেলে ধরা পায়ের মাঝে হাঁটু গেড়ে বসে দেবায়ন।

অনন্যা থাকতে না পেরে চোখ মেলে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করে কি করতে চলেছে। দেবায়ন, হেসে ওর দুই পা ধরে উলটে দেয়, উপুড় হয়ে শুইয়ে দেয় অনন্যাকে। উপুড় হয়ে শুতেই, ওর নরম তুলতুলে স্তন জোড়া বিছানার সাথে লেপটে গিয়ে বুকের দুপাশ থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসে। অনন্যা দেবায়নের খেলার পুতুলের মতন বালিশে মাথা গুঁজে দুই হাতে বালিস চেপে ধরে। দেবায়ন ওর বাঁকা পিঠের উপরে ঠোঁট নিয়ে যায়। অনন্যা চোখ বন্ধ করে মাথা উঠিয়ে নেয়। খোলা ঠোঁটের ভেতর থেকে আগুনের হল্কা থেকে থেকে নির্গত হয়, সেই সাথে “উহহহ আআআআআআহহহহহহ” মিহি শীৎকার করতে থাকে। দেবায়ন জিব দিয়ে অনন্যার সারা পিঠে ছোটো ছোটো আঁকি বুকি একে দেয়। অনন্যার সারা শরীরে শত সহস্র রোম কুপ একসাথে দাঁড়িয়ে যায়। এই ভাবে ওর শরীর কেউ কোনদিন স্পর্শ করেনি এর আগে। অনন্যার সারা পিঠে ছোটো ছোটো চুমু আঁকতে আঁকতে নিচে নামে দেবায়ন। জিবের ডগায় অনন্যার রোমকূপ অনুভব করে দেবায়ন উত্তেজিত হয়ে ওঠে। ঠিক কোমর পর্যন্ত চুমু খেতে খেতে এসে থেমে যায়। দুই হাতের থাবায় নরম পাছা চটকে ধরে। পাছার উত্তপ্ত ত্বকের উপরে জিব দিয়ে ছোটো ছোটো গোলাকার ভিজে দাগ কেটে দেয়। অনন্যা সুখের সাগরে গা ভাসিয়ে চোখ বন্ধ করে দেবায়নের আদর সোহাগ উপভোগ করে। দেবায়ন ওর কোমরে হাত দিয়ে ওর প্যান্টি খুলে দেয়। ভিজে ছোটো প্যান্টি ধিরে ধিরে, পাছা ছাড়িয়ে নিচের দিকে নামতে শুরু করে। কোমর উঠিয়ে প্যান্টি খুলতে সাহায্য করে। গোলাপি প্যান্টি খুলে ফেলে নাকের কাছে ধরে দেবায়ন। যোনি রসে ভিজে থাকা প্যান্টি থেকে কামনার ঘ্রানে বুক মাথা ভরিয়ে নেয়।

অনন্যা আর থাকতে না পেরে চিত হয়ে শুয়ে পড়ে। দেবায়ন ওর প্যান্ট জাঙ্গিয়া খুলে উলঙ্গ হয়ে যায়। বড় কালো কঠিন লিঙ্গ দেখে অনন্যার ঠোঁটে এক বিজয়ীর হাসি ফুটে ওঠে। এই পরাজয় এক অন্য ধরনের জয়ের আনন্দ দেয় অনন্যাকে। অনন্যা বলে, “তুমি মারবে নাকি আমাকে?”

দেবায়ন হেসে বলে, “ভনিতা করো না... সত্যি বলো...”

অনন্যা নিচের ঠোঁট কামড়ে হেসে নিজের যোনির চেরায় আঙুল বুলিয়ে ইশারা করে যোনি চাটতে। অনন্যার কোমরের দুপাশ ধরে মাথা নামিয়ে নিয়ে আসে মেলে ধরা পায়ের ফাঁকে। কালচে গোলাপি যোনির পাপড়ি যোনি চেরা ভেদ করে কিছুটা বেরিয়ে। রাগরসে ভিজে সেই দুটি পাপড়ি চকচক করে। দেবায়ন ওর থাইয়ের ভেতরে হাতের তালু চেপে ধরে মেলে দেয় থাই জোড়া। মুখ নামিয়ে ছোটো চুমু খায় যোনি বেদির উপরে।

অনন্যা ওর মাথা চেপে ধরে যোনির উপরে, “পাগল করে দাও আমাকে... চুষে চেটে খেয়ে ফেলো... প্লিস মেরে ফেলো আমাকে। আজ রাতে তোমার হাতে মরে যেতে ইচ্ছে করছে। সকাল দেখতে আর ইচ্ছে করছে না আমার... প্লিস আমাকে শেষ করে দাও...”

দেবায়ন জিব দিয়ে ওর যোনি নীচ থেকে উপর দিকে বারেবারে চেটে দেয়। অনন্যা এক পা দেবায়নের কাঁধে তুলে দেয়, অন্য পা ছড়িয়ে দেয় বিছানার উপরে। দুই হাতে দুই স্তন নিয়ে টিপে ধরে অনন্যা। দেবায়ন যোনির ভেতরে জুব ঢুকিয়ে নাড়াতে শুরু ওরে সেই সাথে পাছার তলা দিয়ে হাত গলিয়ে পেটের উপর দিয়ে নিয়ে এসে ভগাঙ্কুর ডলে দেয়। আচমকা, ভগাঙ্কুরে আঙ্গুলের দলা পেয়ে অনন্যার শরীর কেঁপে ওঠে। দেবায়নের জিব ক্রমাগত যোনির চেরায় মত্ত কুকুরে মতন নড়তে থাকে আর আঙুল ওর ভগাঙ্কুর ডলে পিষে একাকার করে দেয়। অনন্যা তীব্র কামানুভুতিতে পাগল হয়ে শীৎকার করে বারেবারে “হ্যাঁ সোনা করো করো... চাটো আরও চাটো ... উফফফ মাগো একটু উপরে চাটো গো... হ্যাঁ সোনা...” কোমর ঠেলে দেবায়নের মুখের উপরে চেপে ধরে যোনি। দেবায়ন, মুখ চেপে ধরে অনন্যার সিক্ত যোনির উপরে। অনন্যার শরীর বেঁকে যায়, দুই হাতে বিছানার চাদর খামচে ধরে কিছু পরে। অনন্যা চোখ বন্ধ করে মাথা দুলাতে শুরু করে আর উঁচিয়ে উঠিয়ে দেয় ওর নিম্নাঙ্গ। দেবায়ন দুই হাত দিয়ে অনন্যার স্তন চেপে বিছানার সাথে চেপে ধরে থাকে। ঠোঁট গোল করে চোঁ চোঁ করে যোনির রস চুষে নেয়। দেবায়নের ঠোঁট ভিজে যায় অনন্যার রাগ রসে।
 
রাগরস ঝরিয়ে অনন্যা এলিয়ে পড়ে যায় বিছানায়। দেবায়ন, অনন্যার ঘর্মাক্ত দেহের উপরে নিজেকে টেনে ধরে। অনন্যা দুই থাই মেলে দেবায়নের লিঙ্গ নিজের যোনির কাছে আহ্বান জানায়। দেবায়নের কঠিন লিঙ্গ খোলা সিক্ত যোনির চেরায় আঘাত করে।

অনন্যা চোখ মেলে দেবায়নের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হেসে বলে, “তুমি বেশ অভিজ্ঞ বলে মনে হচ্ছে?”

দেবায়ন ওর কপালে চুমু খেয়ে বলে, “অভিজ্ঞতা দেখানোর সময় এখন বাকি আছে, বেবি...”

অনন্যা ওকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় চিত করে শুইয়ে বলে, “এবারে তুমি শুয়ে থাকবে আমি তোমাকে খুশি করবো...”

দেবায়ন অনন্যার চুল ধরে মাথা টেনে নিচে নামিয়ে বলে, “এই রকম ভাবে বলবে না একদম যে তুমি আমাকে খুশি করবে... দুইজনে আনন্দ পেলে আমি খুশি...”

অনন্যার চোখের ভাষা ঈষৎ বদলে যায়, “সরি... আর বলবো না... এবারে তোমারটা এবারে একটু আদর করি...”

অনন্যা দেবায়নের মেলে ধরা পায়ের মাঝে হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে। অনন্যার মুখ নেমে আসে দেবায়নের লিঙ্গের মাথায়। লাল মাথা রসে চকচক করে। অনন্যা জিবের ডগা দিয়ে একফোঁটা রস চেটে নেয়। লিঙ্গের মাথা ঠোঁটের মাঝে নিয়ে ললিপপের মতন চুষে দেয়। দেবায়নের শরীরের সব শিরা উপশিরা একসাথে দুমড়ে মুচড়ে ওঠে নরম ঠোঁটের স্পর্শে। ধমনিতে রক্তের বদলে যেন লাভা বইতে শুরু করে দিয়েছে। দেবায়নের অণ্ডকোষ হাতের তালুর মধ্যে নিয়ে আলতো চটকে দেয় আর সেই সাথে লিঙ্গের দীর্ঘ বরাবর গোলাপি জিব দিয়ে চাটতে শুরু করে অনন্যা। বেশ কিছুক্ষণ আইস্ক্রিম কোনের মতন চাটার পরে, লাল মাথা ঠোঁটের মাঝে নিয়ে চুষে দেয়। অনন্যা তারপরে দেবায়নের লিঙ্গ মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে মুখ মন্থন শুরু করে। দেবায়ন দাঁত পিষে চরম উত্তেজনার ক্ষণ প্রশমিত করে নেয়। অনন্যার মাথার পেছনে হাত দিয়ে মুখের তালে তালে কোমর উঁচিয়ে নরম মুখমন্থন উপভোগ করে। বেশ কিছুক্ষণ মুখমন্থন করার পরে দেবায়ন চুলের মুঠি ধরে অনন্যার মুখ ওর লিঙ্গ থেকে ছাড়িয়ে নেয়।

দেবায়নের শ্বাসের গতি বেড়ে ওঠে। ওকে বলে, “উফফফ যা একটা খেল দেখালে... একটু হলে ঝরে যেতাম বেবি...”

অনন্যা কঠিন লিঙ্গ হাতের মুঠির মধ্যে নিয়ে, লিঙ্গের গোড়ায় আঙুল চেপে উত্তেজনা কিঞ্চিত কমিয়ে বলে, “তোমাকে এতো তাড়াতাড়ি ঝরতে দিতাম নাকি?”

বালিশের নীচ থেকে একটা কন্ডম বের করে কঠিন দাঁড়িয়ে থাকা লিঙ্গে পরিয়ে দেয়। অনন্যার নরম আঙ্গুলের চাপে দেবায়নের কঠিন লিঙ্গ ছটফট করতে শুরু করে দেয়। অনন্যা ওর লিঙ্গ নরম মুঠির মধ্যে নিয়ে কিছুক্ষণ মৈথুন করে। দেবায়নের অগ্নি গর্ভ থেকে লাভা উঠতে শুরু করে দেয়। লিঙ্গের কাঁপুনি দেখে অনন্যা বুঝে যায় যে দেবায়নের চরম সময় আসন্ন। দেবায়ন দাঁতে দাঁত পিষে নিজের চরম উত্তেজনা কমিয়ে নিয়ে আসে।
অনন্যাকে বলে, “অনন্যা, এবারে তোমাকে নিচে ফেলে করতে চাই আমি...”

অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে বিছানায় চিত করে শুইয়ে দেয় দেবায়ন। অনন্যা পা মেলে যোনি মেলে ওকে বলে, “হ্যাঁ এবারে করো আমাকে... তোমাকে ভেতরে নেবার জন্য ছটফট করছি আমি...”

দেবায়ন, ডান হাতে বিছানায় ভর দিয়ে অনন্যার শরীরের উপরে ঝুঁকে পড়ে। অনন্যা দেবায়নের বুকে হাতের পাতা মেলে ধরে আদর করে আঁচড় কেটে দেয়। বাম মুঠিতে লিঙ্গ ধরে অনন্যার ভেজা পিচ্ছিল যোনির চেরায়, লিঙ্গের মাথা বুলিয়ে উত্যক্ত করে। অনন্যা, কোমর ঠেলে দেবায়নের কঠিন লিঙ্গ যোনির ভেতরে ঢুকাতে চেষ্টা করে। দেবায়ন উত্তপ্ত কামিনীকে আরও উত্যক্ত করার জন্য ভগাঙ্কুরে লিঙ্গের মাথা ডলে দেয়। দুই শরীরের মাঝে হাত দিয়ে, দেবায়নের লিঙ্গ মুঠিতে খপ করে ধরে ফেলে হেসে দেয় অনন্যা। হাসতে হাসতে বলে, “এবারে ধরে ফেলেছি... প্লিস সোনা আর আমাকে পাগল কোরো না এবারে ঢুকিয়ে দিয়ে শেষ করে দাও... তোমারটা ভেতরে নেবার জন্য কতক্ষণ ধরে ছটফট করছি হানি...”

দেবায়ন লিঙ্গের মাথা যোনির চেরায় ঠেলে বলে, “এইরকম ভাবে আব্দার করলে কি আর না করে থাকা যায় বেবি...”

দেবায়ন একটু ধাক্কা মারতেই, অর্ধেক লিঙ্গ সিক্ত পিচ্ছিল যোনির ভেতরে ঢুকে যায়। অনন্যা দেবায়নের বুকে হাত দিয়ে একটু উপরের দিকে ঠেলে হিসহিস করে ওঠে, “এই একটু আস্তে ঢোকাও...”

দেবায়ন একটুখানি দাঁড়িয়ে যায়। কঠিন লিঙ্গের অর্ধেক অনন্যার পিচ্ছিল যোনির ভেতরে ঢুকে। কঠিন লিঙ্গের চারপাশে পিচ্ছিল নরম যোনির কামড় অনুভব করে দেবায়ন। অনন্যা চোখ খুলে দেবায়নের মাথা টেনে নামিয়ে ঠোঁটের উপরে ঠোঁট বসিয়ে দেয়। ওর শরীরের উপরে ঝুঁকে পড়তেই, দেবায়নের কঠিন লিঙ্গ গেঁথে যায় অনন্যার যোনির ভেতরে। অনন্যার শরীর ক্ষণিকের জন্য দুমড়ে যায়, মনে হয় যে ওর শরীরে এবারে ফেটে পড়বে। এতদিন অনেকের লিঙ্গ নিজের যোনির ভেতরে নিয়েছে, অনেকেই ওর শরীর ইচ্ছে মতন ভোগ করেছে। কিন্তু আজকের এই রাতে, দেবায়নের কাছে নিজের শরীর সঁপে এক অন্য জগতে চলে গেছে অনন্যা। দেবায়নের লিঙ্গের মাথা যোনির শেষ প্রান্তে গিয়ে ঠেকে যায়। অনন্যা চোখ বন্ধ করে দেবায়নের ঠোঁট কামড়ে ধরে। দেবায়ন, অনন্যার মাথার পেছনে হাত দিয়ে নিজের শরীরের ভার কোমল দেহের উপরে ছেড়ে দিয়ে কোমর নাচাতে শুরু করে দেয়। ধিরে ধিরে যোনি মন্থন শুরু করে দেবায়ন। পিচ্ছিল সিক্ত যোনি ওর কঠিন লিঙ্গ বারেবারে কামড়ে ধরে। প্রতি ধাক্কায় কেঁপে ওঠে কামিনীর শরীর। দুই নর নারী মেতে ওঠে আদিম খেলায়। মন্থন করতে করতে দেবায়ন ঘেমে যায়, নাকের ডগা দিয়ে ঘামের ফোঁটা অনন্যার মুখের উপরে এসে পড়ে। প্রতি মন্থনে অনন্যা চোখ কুঁচকে, নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে, “উফফফ উফফফ... জোরে আরও জোরে... হ্যাঁ হ্যাঁ ফাক মি হার্ড... আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি... সারা শরীর কেমন একটা করছে বেবি... থেমো না...”

অনন্যা দুই পা ভাঁজ করে উঠিয়ে দেয়, পায়ের পাতা বেঁকে যায়। হাঁটুর পেছনে হাত দিয়ে দুই থাই মেলে ধরে অনন্যা। দেবায়ন মন্থনের গতি বাড়িয়ে দেয়, সেই সাথে অনন্যার নরম স্তন জোড়া টিপতে শুরু করে। টেপার সাথে, স্তনের বোঁটা আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে ঘুরিয়ে দেয় মাঝে মাঝে টেনে ধরে স্তনের বোঁটা। কামাতুরা দুই নর নারী উন্মাদ হয়ে ওঠে সম্ভোগের খেলায়।

বেশ কিছুক্ষণ মন্থন করার পরে অনন্যা দুই পায়ে দেবায়নের কোমর জড়িয়ে ধরে। ওর পিঠে হাত দিয়ে টেনে ধরে দেবায়নের কঠিন শরীর নিজের কোমল দেহের উপরে। মন্থনের তালে তালে দুলে ওঠে লেপটে থাকা দুই দেহ। অনন্যা ফিসফিস করে দেবায়নের কানে বলে, “বেবি আমার কিছু একটা হচ্ছে... আমি শেষ হয়ে যাবো... আমার আসছে ... হানি আমাকে চেপে ধরো...”

দেবায়নের লাভা অণ্ডকোষে ফুটতে শুরু করে দেয়। দেবায়ন অনন্যার শরীর বিছানার সাথে চেপে ধরে, গালে ঠোঁট চেপে মন্থনের গতি বাড়িয়ে দিয়ে বলে, “আমার হয়ে যাবে অনন্যা...”

অনন্যা বলে, “দাও আমাকে দাও... চলে এসো... আমি আর পারছি না... এবারে শেষ হয়ে যাও...”

বাঁধ ভেঙে যায় অনুন্যার, সেই সাথে ঝড় শুরু হয় দেবায়নের শরীরে। দেবায়নের কাঁধের পেশিতে নখ বসিয়ে দেয় কামার্ত ললনা, ঢেউ আছড়ে পড়ে অনন্যার শরীরে। শীৎকার করে ওঠে... ইসসসসসস...... দেবায়ন বার কয়েক জোর মন্থন করে চেপে ধরে কঠিন লিঙ্গ যোনির ভেতরে। ফুটন্ত বীর্য ঝলকে বেরিয়ে আসে। দেবায়ন আর অনন্যা পরস্পরকে শেষ শক্তিটুকু সঞ্চয় করে জড়িয়ে ধরে চরম উত্তেজনার ক্ষণে।
 
দুইজনে জড়াজড়ি করে বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে থাকে। দেবায়নের প্রশস্ত বুকের উপরে মাথা রেখে শুয়ে থাকে অনন্যা। বাম হাতের তর্জনী দিয়ে দেবায়নের বুকে আঁচড় কেটে দেয়। দেবায়ন ওর মাথার উপরে বিলি কেটে জিজ্ঞেস করে, “তোমার কেমন লাগলো?”

অনন্যা ওর বুকের উপরে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “যেটা আমার প্রশ্ন সেটা তুমি করলে কেন? তোমার কেমন লাগলো সেটা বলো।”

দেবায়ন হেসে বলে, “সত্যি বলতে এখন বিশ্বাস হচ্ছে না যে তুমি আমার বুকের উপরে মাথা রেখে শুয়ে আছো।”
অনন্যা মিহি আদুরে কণ্ঠে বলে, “একটু ভালো করে জড়িয়ে ধরবে আমাকে।”

দেবায়ন ওকে নিবিড় করে জড়িয়ে বুকের কাছে ধরে জিজ্ঞেস করে, “কি হলো হটাত?”

অনন্যা বলে, “কিছু না এমনি তুমি সত্যি অন্য ধরনের।”

দেবায়নঃ “অন্যদের কথা না উঠালেই নয় কি? এখানে এখন শুধু তুমি আর আমি।”

অনন্যা জিজ্ঞেস করে, “একটু দেখে বলবে কটা বাজে?”

দেবায়ন জিজ্ঞেস করে, “কেন?”

অনন্যাঃ “সাতটা সাড়ে সাতটার মধ্যে আমাকে রওনা দিতে হবে। আজ বিকেলে একটা শুট আছে।”

দেবায়ন ওর বাহু বন্ধন আলগা করে বলে, “ব্রেকফাস্ট পর্যন্ত করবে না?”

অনন্যা ওর চোখের দিকে না তাকিয়ে বুকে ছোটো চুমু খেয়ে বলে, “একদিন বিকেলে আমার বাড়িতে এসো, দুইজনে একসাথে ব্রেকফাস্ট করবো।”

দেবায়ন অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে, “তুমি সত্যি বলছো।”

অনন্যা বিছানা ছেড়ে উঠে স্লিপ পরতে পরতে বলে, “কেন? আমার অতীত জানার পরে আর ইচ্ছে করছে না আমার সাথে মিশতে? অভিনেত্রী হলে কি হবে সেই তো এক বাজারের মেয়ে, এই মনে হচ্ছে না তোমার?”

দেবায়ন উঠে বসে অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “এই রকম করে কেন বলছো? আমি এখন বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুমি আর আমি এক রুমে।”

মিষ্টি হেসে অনন্যা বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ে। আলমারি থেকে নিজের জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমের দিকে পা বাড়ায়। বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়ে হেসে জিজ্ঞেস করে, “আমার সাথে স্নান করবে নাকি?”

দেবায়ন হেসে ফেলে, “না, তুমি শান্তিতে স্নান সেরে নাও।” অনন্যা ঢুকে পড়ে বাথরুমে।

দেবায়ন প্যান্ট পরে একটা সিগারেট জ্বালিয়ে জানালার ধারে বসে। পুব আকাশে নবীন ঊষার আলো দেখা দেয়। বড় কাঁচের জানালা দিয়ে সুদুর বিস্তৃত গঙ্গা দেখা যায়। নিজের খেয়ালে ডুবে যায় দেবায়ন, সত্যি না স্বপ্ন বিশ্বাস করতে পারে না। অনন্যার মতন এক সুন্দরী অভিনেত্রী ওর শয্যা সঙ্গিনী ছিল কিছু আগে। এই বিছানায় অনন্যার নধর কোমল কমনীয় শরীর নিয়ে খেলা করে গেল। কত মানুষের স্বপ্নের পরী ওই অনন্যা, ধরা পড়ে গেল ওর হাতে। হ্যাঁ, কিছু অর্থের বিনিময়ে ধরা পড়েছে, কিন্তু সেই সত্য দুরে সরিয়ে এক অন্য অনন্যাকে পেয়েছে দেবায়ন।

“এই এতো কি ভাবছো?” অনন্যা শাড়ি পরে যাবার জন্য তৈরি। পেছন থেকে দেবায়নের গলা জড়িয়ে বলে, “যাবার আগে কিছু বলবে না? অন্তত একটা চুমু দেবে না?”

বুক ভরে শ্বাস নিয়ে দেবায়ন উঠে দাঁড়িয়ে অনন্যাকে জড়িয়ে ধরে বলে, “তুমি বড্ড সুন্দরী।” অনন্যার দুই চোখ চকচক করে ওঠে দেবায়নের কথা শুনে। দেবায়ন ওর কপালে গালে চুমু খেয়ে বলে, “একটা অনুরোধ আছে, রাখবে?”

অনন্যা জিজ্ঞেস করে, “কি?”

দেবায়নঃ “একটা ফটো তুলতে পারি? তোমার আর আমার?”
 

Users who are viewing this thread

Back
Top