What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ইখলাছ মুক্তির পাথেয় (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,618
Messages
122,368
Credits
312,018
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
ইখলাছ মুক্তির পাথেয়

ভূমিকা :

অল্প আমলও ইখলাছের সাথে করা হ'লে তা কবুল হবে আর বেশী আমলে যদি ইখলাছ না থাকে তাহ'লে কোন লাভ নেই। মোটকথা আমল যতই কম হোক তা ইখলাছের সাথে করতে হবে।
ইখলাছ অবলম্বন বড় কঠিন কাজ। অনেক ক্ষেত্রে ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ ও জিহাদের চেয়ে ইখলাছ অবলম্বন খুব কঠিন। কোন কাজের শুরুতে ইখলাছের উপর থাকার দৃঢ় সংকল্প করেও ইখলাছের উপর অটল থাকা যায় না।
এমনও দেখা গেছে যে, কোন ব্যক্তি ইখলাছ অবলম্বনের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করলেন। পরে নিজেকে প্রশ্ন করলেন তুমি যে এত সুন্দর করে এতক্ষণ ইখলাছ সম্পর্কে বক্তব্য রাখলে তা কি ইখলাছের সাথে করেছ? না অন্য কোন নিয়ত ছিল? আমানতদারির সাথে এ প্রশ্নের উত্তর দিলে দেখা যাবে আসলে ইখলাছের এ আলোচনা ইখলাছের সাথে হয়নি। অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল; লোকেরা কমপক্ষে তাকে মুখলিছ ভাববে অথবা অন্য কাউকে জব্দ করা যাবে কিংবা উপস্থিত সুধীজন জানবে আমি এ বিষয়ে বেশ পন্ডিত ইত্যাদি ভাবনা তার ভিতর ক্রিয়াশীল ছিল।
কোন কাজের শুরুতে ইখলাছ অবলম্বন একটা কঠিন কাজ। আবার ইখলাছের মাধ্যমে নিয়তটা ঠিক করে নিলে এর উপর অটল থাকা আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এ কারণে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বার বার এ ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। একবার তিনি বললেন,
أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِمَا هُوَ أَخْوَفُ عَلَيْكُمْ عِنْدِىْ مِنَ الْمَسِيْمِ الدَّجَّالِ؟ فَقُلْنَا بَلَى يَا رَسُوْلَ اللهِ! قَالَ: اَلشَّرْكُ الْخَضُّ أَنْ يَّقُوْمَ الرَّجُلُ فَيُصَلَّىَ فَيَزِيْدَ صَلاَتَهُ لِمَا يَرَى مِنْ نَظْرِ رَجُلٍ.
'আমি কি তোমাদের এমন বিষয় সম্পর্কে অবহিত করব না যাকে আমি দাজ্জালের চেয়ে বেশী ভয় করি? আমরা বললাম, অবশ্যই আপনি আমাদের বলে দিবেন। তিনি বললেন, তা হ'ল সূক্ষ্ম শিরক, যা এমন যে, কোন ব্যক্তি ছালাত আদায় করতে দাঁড়িয়ে যায় আর খুব সুন্দর করে ছালাত আদায় করে কিন্তু মনে মনে অন্যকে দেখানোর ভাবনা লালন করে'। (ইবনু মাজাহ; মিশকাত হা/৫৩৩৩, সনদ হাসান। ) দাজ্জালের ধোঁকা থেকে বেঁচে থাকা কত কঠিন! রিয়া বা লোক দেখানো ভাবনা থেকে মুক্ত থেকে ইখলাছের উপর অটল থাকা এর চেয়েও কঠিন।
 
ইখলাছের পরিচয় :

আভিধানিক অর্থে ইখলাছ হ'ল কোন বস্তুকে খালি করা বা পরিস্কার করা। শরী'আতের পরিভাষায় ইখলাছ দ্বারা উদ্দেশ্য কি তা নির্ণয়ে বিজ্ঞ আলেমদের মত ও মন্তব্য ভিন্ন ভিন্ন। কেউ বলেছেন, ইখলাছ হ'ল ইবাদতের ক্ষেত্রে আল্লাহ্কে একক বলে গ্রহণ করা। যেমন আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেছেন, وَلاَ يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا- 'সে যেন তার প্রতিপালকের ইবাদতে কাউকে শরীক না করে' (কাহফ ১৮/১১০ )।
কারো মত হ'ল অন্তরকে পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত করে, এমন যাবতীয় নোংরামী ও অসুস্থতা হ'তে অন্তরকে পবিত্র করা। কারো মতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আল্লাহর আনুগত্যে আত্মনিবেদন। আবার কারো মত এই যে, ইখলাছ হ'ল আল্লাহ যা নির্দেশ দিয়েছেন, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে তা পালন করা। আর যা নিষেধ করেছেন তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে তা থেকে বিরত থাকা।
ভাষার পার্থক্য থাকলেও সংজ্ঞাগুলোর মূল বক্তব্য একটাই। যে মৌলিক নীতিমালাকে কেন্দ্র করে আলেমগণ ইখলাছের সংজ্ঞা নিরূপণ করেছেন, তা হ'ল- ইবাদত-বন্দেগী, সৎকর্ম বলতে যা কিছু আছে, সবই একমাত্র আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার জন্য সম্পাদন করার নাম ইখলাছ। আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্য নিয়ে ইবাদত করলে তাকে ইখলাছ বলে গণ্য করা হবে না। এমনিভাবে সকল পাপাচার থেকে মুক্ত থাকার উদ্দেশ্য হবে কেবল তাঁরই সন্তুষ্টি অর্জন করা।
ইবাদত ও কর্মসম্পাদন একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিবেদন ও ইখলাছ আনয়নের বিভিন্ন রূপ হ'তে পারে। কেউ কেউ আল্লাহর ইবাদত করেন তাঁর প্রতি সম্মান ও মর্যাদা জ্ঞাপনার্থে। অপর কেউ ইখলাছকে ভাবেন আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতের প্রবেশিকা হিসাবে। কারো উদ্দেশ্য থাকে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি লাভ। অপর কেউ ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সুনিবীড় সম্পর্ক ও পরম আস্বাদ লাভে প্রয়াসী, কিংবা পরকাল দিবসে মহান আল্লাহর সাক্ষাত লাভে প্রত্যাশী, যেদিন আল্লাহর সাক্ষাতে সারিবদ্ধ হবে বান্দাগণ। কারো কারো ইবাদতের লক্ষ্য থাকে যে কোন প্রকার পুরস্কার প্রাপ্তি। আবার কারো ইবাদতের লক্ষ্য নির্দিষ্ট কোন ছওয়াব লাভ। কেউ কেউ আল্লাহর ভয়ে ভীত হন নির্দিষ্ট কোন আযাবের কথা স্মরণ করে, অপর কেউ নির্দিষ্ট কোন আযাবের কথা স্মরণ করে নয়, আললাহ্কে ভয় করেন তার যে কোন আযাবের ভয়াবহ পরিণতির কথা চিন্তা করে।
 
ইবাদতে মানুষের ইচ্ছাবৃত্তির বৈচিত্র্য এক বিশাল অধ্যায়, একেক সময় তার মাঝে ক্রিয়াশীল থাকে একেক ধরনের ইচ্ছা। কখনো সে প্রণোদনা লাভ করে একাধিক ইচ্ছার দ্বারা। কিন্তু ইচ্ছার এ বৈচিত্র্যও একক এক লক্ষ্যের প্রতি সতত ধাবিত। বান্দা তার কাজ-কর্ম ও যাবতীয় মনোবৃত্তির দ্বারা একমাত্র আল্লাহ্কে পাওয়ার আকাঙ্খাকে তীব্র করে তোলে, অন্য কাউকে নয়। এ সবই ইখলাছেরই সত্যায়ন। এসব ইচ্ছা যার মাঝে ক্রিয়াশীল, সে-ই ছিরাতে মুস্তাকীমের অধিকারী, হেদায়াত ও বিশুদ্ধ লক্ষ্যপানে ধাবিত। তবে বান্দার উচিৎ তার ইবাদতকে আল্লাহপ্রেম, ভীতি ও আশা থেকে কখনো বিযুক্ত করবে না। কারণ ইবাদতের প্রতিষ্ঠাই এই ত্রিমাত্রিক লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে।

ইখলাছের মর্যাদা

প্রকৃতপক্ষে ইখলাছই হ'ল ইসলাম ধর্মের মূল বিষয়। আল্লাহ রাববুল আলামীন বলেন,
وَمَا أُمِرُوْا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَآءَ وَيُقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذَلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ-
'তাদেরকে এছাড়া কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে (ইখলাছের সাথে) একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, ছালাত কায়েম করবে এবং যাকাত প্রদান করবে। এটিই সঠিক দ্বীন' (বাইয়িনাহ ৯৮/৫ )।
 
আল্লাহ আরো বলেন,
قُلْ إِنِّيْ أُمِرْتُ أَنْ أَعْبُدَ اللَّهَ مُخْلِصاً لَّهُ الدِّيْنَ-
'বলুন, আমি ইখলাছের সাথে আল্লাহর ইবাদত করতে আদিষ্ট হয়েছি' (যুমার ৩৯/১১ )।
فَاعْبُدِ اللَّهَ مُخْلِصاً لَّهُ الدِّيْنَ- أَلَا لِلَّهِ الدِّيْنُ الْخَالِصُ-
'আপনি ইখলাছের সাথে আল্লাহর ইবাদত করুন। জেনে রাখুন, ইখলাছপূর্ণ ইবাদতই আল্লাহর জন্য' (যুমার ৩৯/২-৩ )।
উক্ত আয়াতগুলোতে আল্লাহ তা'আলা ইখলাছপূর্ণ ইবাদতকেই তার জন্য স্বীকৃতি প্রদান করেছেন। অল্প হোক কিংবা বেশী, বৃহৎ কিংবা ক্ষুদ্র, যে কোন ধরনের শিরক হ'তে মুক্ত হ'তে আয়াতগুলো স্পষ্ট ঘোষণা করে যে, ইসলাম ধর্মে ইখলাছ এক গুরুত্বপূর্ণ শর্তের নাম। তাবৎ আম্বিয়া এ প্রক্রিয়ারই স্বীকৃতি বহন করেন। দ্বীনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, শরী'আতের প্রতিটি অনুঘটনায় ইখলাছের অনুসন্ধান প্রমাণ করে ইখলাছের মর্যাদা ও গুরুত্ব।
ইখলাছ নবী-রাসূলদের দাওয়াতের কুঞ্জিকা, যে নীতিমালা নিয়ে তারা আগমন করেছেন তা মহোত্তম স্থানের অধিকারী। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِيْ كُلِّ أُمَّةٍ رَّسُوْلاً أَنِ اعْبُدُوا اللّهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ-
'আল্লাহর ইবাদত করার ও তাগূতকে বর্জন করার নির্দেশ দেয়ার জন্য আমি প্রত্যেক জাতির মধ্যে রাসূল প্রেরণ করেছি' (নাহল ১৬/৩ )।
 
ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, এ আদেশ নিয়ে রাসূলগণ পৃথিবীতে আগমন করেন। নূহ (আঃ) যে জাতির প্রতি প্রেরিত হয়েছিলেন, সে জাতির মাঝেই সর্বপ্রথম যখন শিরকের উৎপত্তি হয়, তখন তাকে মানবজাতির জন্য প্রথম রাসূল হিসাবে প্রেরণ করা হয়। সে ধারাবাহিকতার সমাপ্তি ঘটে নবী মুহাম্মদ (ছাঃ)-এর মাধ্যমে। যার দাওয়াত বিস্তৃত ছিল জিন-ইনসান ও পৃথিবীর সকল জাতির জন্য। পৃথিবীতে রাসূলরূপে আগত সকলের দায়িত্ব ছিল আল-কুরআনের ভাষায়-
وَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِن رَّسُوْلٍ إِلَّا نُوْحِيْ إِلَيْهِ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنَا فَاعْبُدُوْنِ-
'আমি তোমার পূর্বে এ আদেশ ব্যতীত কোন রাসূল প্রেরণ করিনি যে, আমি ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। সুতরাং আমারই ইবাদত কর' (আম্বিয়া ২১/২৫ )।
এ তাওহীদ ও ইখলাছ হ'ল ক্বলব বা হৃদয়ের মাঝে সর্বোচ্চ স্তরের। এটাই বান্দার কর্মের উদ্দেশ্য ও পরিমাণে মর্যাদায় সর্ববৃহৎ।
ইবনুল ক্বাইয়িম (রহঃ) বক্তব্যটির ব্যাখ্যায় বলেন, যদি অঙ্গ-প্রতঙ্গের দ্বারা দাসত্ব করা হয় কিন্তু অন্তর ইখলাছ ও তাওহীদ থেকে শূন্য থাকে তবে সে যেন একটি মৃতদেহ, যার কোন রূহ নেই। নিয়ত হ'ল অন্তরের আমল (ইবনুল কাইয়িম, বাদাইয়ুল ফাওয়ায়েদ )।
ইখলাছ হ'ল ইবাদত কবুলের দু' শর্তের একটি। ইখলাছ ব্যতীত কোন ইবাদত কবুল হবে না।
 
আচ্ছা ইবাদতের দ্বিতীয় শর্ত কি? ওটা সম্পর্কে ও লিখেন।
 
আচ্ছা ইবাদতের দ্বিতীয় শর্ত কি? ওটা সম্পর্কে ও লিখেন।

রিপ্লাইয়ের জন্য ধন্যবাদ।
পড়তে থাকুন, আশা করি সব কিছুই জেনে যাবেন।
 
নবী করীম (ছাঃ) বলেন,
إِنَّ اللهَ لاَ يَقْبَلُ مِنَ الْعَمَلِ إِلاَّ مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا وَابْتُغِى بِهِ وَجْهُهُ-
'আল্লাহ তা'আলা শুধু সে আমলই গ্রহণ করেন, যা ইখলাছের সাথে এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে করা হয়'। (নাসাঈ হা/৩১৪০, হাদীছ ছহীহ )
যারা আল্লাহর ব্যাপারে ইখলাছ অবলম্বন করেছে আল্লাহ তাঁর কালামে প্রশংসার সাথে তাদের কথা আলোচনা করেছেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা মূসা (আঃ)-এর প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেন,
وَاذْكُرْ فِي الْكِتَابِ مُوسَى إِنَّهُ كَانَ مُخْلِصاً وَكَانَ رَسُوْلاً نَّبِيّاً-
'স্মরণ কর, এ কিতাবে মূসার কথা, সে ছিল একনিষ্ঠ এবং সে ছিল রাসূল' (মারইয়াম ১৯/৫১ )।
এমনিভাবে তিনি ইউসুফ (আঃ) সম্পর্কে বলেছেন,
كَذَلِكَ لِنَصْرِفَ عَنْهُ السُّوْءَ وَالْفَحْشَآءَ إِنَّهُ مِنْ عِبَادِنَا الْمُخْلَصِيْنَ-
'আমি তাকে মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা হ'তে বিরত রাখার জন্য এভাবেই নিদর্শন দিয়েছিলাম। সে ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত (ইখলাছ অবলম্বনকারী) বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত (ইউসুফ ১২/২৪ )।
এমনিভাবে মুহাম্মাদ (ছাঃ) সম্পর্কে বলেছেন,
قُلْ أَتُحَآجُّوْنَنَا فِي اللّهِ وَهُوَ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ وَلَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُخْلِصُوْنَ-
'বল, আল্লাহ সম্পর্কে তোমরা কি আমাদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হ'তে চাও? যখন তিনি আমাদের ও তোমাদের প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের ও তোমাদের কর্ম তোমাদের এবং আমরা তার প্রতি একনিষ্ঠ' (ইখলাছ অবলম্বনকারী ) (বাক্বারাহ ২/১৩৯ )।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top