সুদীপ অবাক হয়ে ঘুরে দাঁড়াল। যদিও সে কোন শব্দ উচ্চারণ করল না কিন্তু মুখচোখে প্রশ্নটা স্পষ্ট। কল্যাণ অন্যদিকে তাকিয়ে বলল, আমরা চারজনেই একসঙ্গে এই ঘরে থাকব।
বাট হোয়াই? সুদীপ অবাক শুধু কল্যাণের কথায় নয়, তার বলার ধরনেও।
তাই কথা ছিল। কল্যাণ চোখে চোখ রাখতে চাইছিল না।
আমি বুঝতে পারছি না তুই কি বলতে চাইছিস! আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি?
আমি জানি না। কিন্তু পুলিশ অ্যাটাক করলে তুই সেটা পারিস বাইরে গেলে, আমরা পারব না। একসঙ্গে মুখোমুখি হওয়া ভাল। কল্যাণ ধীরে ধীরে উচ্চারণ করল। হঠাৎ মনে হল সান্দাকফুর শীতল অপরাহে যে ঠাণ্ডা বাতাস সমস্ত উপত্যকায় বয়ে যাচ্ছে তার থেকে বহুগুণ শীতলতম অনুভূতি ওই শব্দগুলো থেকে ছিটকে এল।
ওঃ গড! ইউ ডোন্ট বিলিভ মি কল্যাণ। সুদীপের গলা থেকে একটা কাতর শব্দ বেরিয়ে এল। কল্যাণ কোন উত্তর দিল না। চুপচাপ ভাল হাতটায় গ্রেনেড নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগল। তোরা? তোদেরও কি একই ধারণা? সুদীপ আনন্দর দিকে তাকাল। আনন্দ হাসল। তার চোখ কল্যাণের ওপর ঘোরাফেরা করছিল। তারপর ধীরে ধীরে সে ওর কাছে এগিয়ে গেল, আমি বুঝতে পারছি না তুই এত নার্ভাস হয়ে পড়েছিস কেন?
নার্ভাস! কল্যাণ কাঁধ ঝাঁকাল।
অবশ্যই নার্ভাস। খুব ভয় পেলে মানুষ অনেক সময় নিজেকেও অবিশ্বাস করে। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই তুই সুদীপের সঙ্গে এই ধরনের—! দ্যাখ কল্যাণ, কেউ যদি পালাতে চায় তো তাকে আমরা ধরে রাখতে পারব না। আমি এখনও বলছি, ওয়েলকাম! সে স্বচ্ছন্দে চলে যেতে পারে। আমরা ধরে নেব যে-কটা বাধা আমরা পেরিয়েছি সে-কটাই তার নার্ভের পক্ষে যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সান্দাকফু ছাড়াবার পর আর কোন সুযোগ কেউ পাবে না। কল্যাণ, তুই যদি ফিরে যেতে চাস তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। কথাটা শেষ করে আনন্দ ইঙ্গিত করল জয়িতাকে জানলা দিয়ে বাইরে তাকাতে।
কল্যাণের মুখ অন্যরকম হয়ে গেল, আমাকে চলে যেতে বলছিস কেন? হাসল কল্যাণ, চলে আমি যাবই বা কোথায়! সবকটা দরজা তো জেলখানার দিকেই শেষ হয়েছে। আমি ভয় পাই না নিজের জনন্য আনন্দ, কিন্তু ওদের ওই ক্লাসটাকে আমি বিশ্বাস করি না। এবার সোজাসুজি সুদীপের দিকে তাকাল কল্যাণ।
আমাকে তুই বিশ্বাস করিস না? সুদীপ তখনও স্বাভাবিক হতে পারছিল না।
তোকে নয়, যে ক্লাস থেকে তুই এসেছিস সেই ক্লাসটাকে।
সুদীপ এগিয়ে এল কল্যাণের সামনে, এখানে আমি একাই আছি। অ্যান্ড লিন, আমি কোন ক্লাসের প্রতিনিধি হয়ে এখানে আসিনি। আর তাই যদি বলিস, বিখ্যাত সব মানুষ চিরকাল বলে গেছেন মধ্য বা নিম্নবিত্তরাই চিরকাল সুবিধেবাদী। তুই নিজে যে ক্লাস থেকে এসেছিস সেই ক্লাসটার কথা আগে চিন্তা কর। তুই সুবিধেবাদী নস?
আমি? হ্যাঁ, সুবিধে পেলে কে না ছাড়ে বল।
সুদীপ ঝুঁকে কল্যাণের প্লাস্টার করা হাতটা খপ করে ধরল, আমাকে বিশ্বাস করার দরকার নেই, আনন্দকে করতে হবে। সেটাই ঠিক হয়েছিল কলকাতায়। নইলে আমি তোকে বিব্রত করব। ও কে। সুদীপ সোজা হয়ে দাঁড়াল। কল্যাণের প্লাস্টারের রঙ এর মধ্যে বেশ নোংরা হয়ে গেছে। সুদীপ সেদিকে তাকিয়ে হেসে বলল, ওটাকে আর বয়ে বেড়িয়ে কি লাভ! আনন্দ, আমি ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিরছি। অবশ্য ততক্ষণ যদি বাইরে থাকা যায়। আমার মনে হয় ওরা জিপ নিয়ে আসবে না। সাবধানে থাকবি।
গ্লাভস দুটো হাতে গলিয়ে ও পেছনের দরজা খুলে হাঁটতে হাঁটতে দেখল ওয়াংদে তখনও পড়ে আছে। লোকটার নেশা না ভাঙানোই ভাল। সে দ্বিতীয় দরজাটা খুলতেই সোঁ সোঁ হাওয়ার অস্তিত্ব টের পেল। একটু সময় নিল সে। ঠাণ্ডাটা সইবার অবস্থায় এলে সে চটপট বাইরে বেরিয়ে এল। এই দিকটা সান্দাকফুর বাংলোগুলোর উলটো দিকে। ওপাশ থেকে কারও নজরে আসবে না। সুদীপ দৌড়ে যেতে গিয়ে পিছলে পড়তে পড়তে কোনরকমে সামলে নিল। জুতোর তলায় চকচকে বরফ ঝরা কাচের মত ছড়ানো। শ্যাওলা পড়া উঠোনের চেয়েও পিছল। একটু ঝুঁকে সে এক টুকরো বরফ তুলে নিল। এখনও পাতলা, ফিনফিনে। সে চারপাশে তাকাল। একটা পায়ে চলা পথ রয়েছে নিচে যাওয়ার। ওপাশে আর একটা চলে গেছে যেটা দিয়ে গেলেই সবার সামনে প্রকাশিত হতে হবে। প্রকাশিত শব্দটা নিয়ে খেলল সে মনে মনে। এখন হিমালয়ের সব মুখ ঘোমটার আড়ালে। এমন কি কাছাকাছি পাহাড়গুলোতেও গাঢ় কুয়াশা নেমে পড়েছে। হয়তো আরও কিছুক্ষণ পরে পায়ের তলার সব ঘাস বরফের আড়ালে চলে যাবে। এরকম একটা অপ্রকাশিত প্রকৃতিতে কল্যাণ প্রকাশিত হয়ে পড়ল এমন ভাবে যে বুকের মধ্যে এখনও পাথরটা চেপে রয়েছে। জয়িতা ভাঙতে চায়নি, কিন্তু যেটুকু ইঙ্গিত পেয়েছিল তাতে সুদীপের মনে হয়েছে কল্যাণের হাতে মারাত্মক কিছু হয়নি। যা হয়েছে তা ভাল করে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধলেই চলে যেত। হাড়ে একটু চাপ আর কয়েকটা লিগামেন্ট ছেড়ার জন্যে যদি কল্যাণ জোর করে ডাক্তারকে দিয়ে প্লাস্টার করিয়ে নেয় তাহলে অনেক সুবিধে। ডাক্তার কি বলেছিল তা রামানন্দ রায় এবং কল্যাণ ছাড়া কেউ জানে না। রামানন্দ মেয়েকে কতটা কি বলেছেন সেটা জয়িতা হয়তো ভদ্রতায় বলবে না। কিন্তু অত তাড়াতাড়ি সব হয়ে গেল, কল্যাণও আর হাতের ব্যথার কথা বলল না, ব্যাপারটায় খটকা লাগে। তখন তো যে কোন মুহূর্তে পুলিশের খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। হাতে প্লাস্টার থাকায় নিশ্চয়ই কল্যাণ খানিকটা সুবিধে পেত। তাছাড়া তারপর থেকে তো ওকে কোন ঝুঁকিতে যেতে হচ্ছে না। সুদীপ চোখ বন্ধ করল। সে কি খুব ছোট হয়ে যাচ্ছে? হিমালয়ের এত ওপরে এসে এইরকম চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়ার মধ্যে কি এক ধরনের নীচতা কাজ করে না?
যেন ব্যাপারটাকে ঝেড়ে ফেলার জন্যেই সুদীপ একটা সিগারেট ধরাল। কল্যাণ যতক্ষণ সরাসরি বিপদ না ডেকে আনছে ততক্ষণ ওকে বন্ধু ভাবাই ভাল। কিন্তু এদিকে সময় বেশী নেই। বড় জোর মিনিট তিরিশের মধ্যেই অন্ধকার নেমে আসবে। সুদীপ হাঁটা শুরু করল। যতটা পারে ঝোপঝাড়ের আড়াল ব্যবহার করতে লাগল সে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর পি ডর ডি বাংলোটা নজরে পড়ল। এখন অদ্ভুত মায়াবী এক আলো নেমেছে পৃথিবীতে। বিষণ্ণ শব্দটার শুরুতেও যদিও বিষ তবু তাতে জ্বালা থাকে না। এই আলোয় মন আরও বিষণ্ণ হয়ে যায়।
বাট হোয়াই? সুদীপ অবাক শুধু কল্যাণের কথায় নয়, তার বলার ধরনেও।
তাই কথা ছিল। কল্যাণ চোখে চোখ রাখতে চাইছিল না।
আমি বুঝতে পারছি না তুই কি বলতে চাইছিস! আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি?
আমি জানি না। কিন্তু পুলিশ অ্যাটাক করলে তুই সেটা পারিস বাইরে গেলে, আমরা পারব না। একসঙ্গে মুখোমুখি হওয়া ভাল। কল্যাণ ধীরে ধীরে উচ্চারণ করল। হঠাৎ মনে হল সান্দাকফুর শীতল অপরাহে যে ঠাণ্ডা বাতাস সমস্ত উপত্যকায় বয়ে যাচ্ছে তার থেকে বহুগুণ শীতলতম অনুভূতি ওই শব্দগুলো থেকে ছিটকে এল।
ওঃ গড! ইউ ডোন্ট বিলিভ মি কল্যাণ। সুদীপের গলা থেকে একটা কাতর শব্দ বেরিয়ে এল। কল্যাণ কোন উত্তর দিল না। চুপচাপ ভাল হাতটায় গ্রেনেড নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগল। তোরা? তোদেরও কি একই ধারণা? সুদীপ আনন্দর দিকে তাকাল। আনন্দ হাসল। তার চোখ কল্যাণের ওপর ঘোরাফেরা করছিল। তারপর ধীরে ধীরে সে ওর কাছে এগিয়ে গেল, আমি বুঝতে পারছি না তুই এত নার্ভাস হয়ে পড়েছিস কেন?
নার্ভাস! কল্যাণ কাঁধ ঝাঁকাল।
অবশ্যই নার্ভাস। খুব ভয় পেলে মানুষ অনেক সময় নিজেকেও অবিশ্বাস করে। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই তুই সুদীপের সঙ্গে এই ধরনের—! দ্যাখ কল্যাণ, কেউ যদি পালাতে চায় তো তাকে আমরা ধরে রাখতে পারব না। আমি এখনও বলছি, ওয়েলকাম! সে স্বচ্ছন্দে চলে যেতে পারে। আমরা ধরে নেব যে-কটা বাধা আমরা পেরিয়েছি সে-কটাই তার নার্ভের পক্ষে যথেষ্ট ছিল। কিন্তু সান্দাকফু ছাড়াবার পর আর কোন সুযোগ কেউ পাবে না। কল্যাণ, তুই যদি ফিরে যেতে চাস তাহলে আমার কোন আপত্তি নেই। কথাটা শেষ করে আনন্দ ইঙ্গিত করল জয়িতাকে জানলা দিয়ে বাইরে তাকাতে।
কল্যাণের মুখ অন্যরকম হয়ে গেল, আমাকে চলে যেতে বলছিস কেন? হাসল কল্যাণ, চলে আমি যাবই বা কোথায়! সবকটা দরজা তো জেলখানার দিকেই শেষ হয়েছে। আমি ভয় পাই না নিজের জনন্য আনন্দ, কিন্তু ওদের ওই ক্লাসটাকে আমি বিশ্বাস করি না। এবার সোজাসুজি সুদীপের দিকে তাকাল কল্যাণ।
আমাকে তুই বিশ্বাস করিস না? সুদীপ তখনও স্বাভাবিক হতে পারছিল না।
তোকে নয়, যে ক্লাস থেকে তুই এসেছিস সেই ক্লাসটাকে।
সুদীপ এগিয়ে এল কল্যাণের সামনে, এখানে আমি একাই আছি। অ্যান্ড লিন, আমি কোন ক্লাসের প্রতিনিধি হয়ে এখানে আসিনি। আর তাই যদি বলিস, বিখ্যাত সব মানুষ চিরকাল বলে গেছেন মধ্য বা নিম্নবিত্তরাই চিরকাল সুবিধেবাদী। তুই নিজে যে ক্লাস থেকে এসেছিস সেই ক্লাসটার কথা আগে চিন্তা কর। তুই সুবিধেবাদী নস?
আমি? হ্যাঁ, সুবিধে পেলে কে না ছাড়ে বল।
সুদীপ ঝুঁকে কল্যাণের প্লাস্টার করা হাতটা খপ করে ধরল, আমাকে বিশ্বাস করার দরকার নেই, আনন্দকে করতে হবে। সেটাই ঠিক হয়েছিল কলকাতায়। নইলে আমি তোকে বিব্রত করব। ও কে। সুদীপ সোজা হয়ে দাঁড়াল। কল্যাণের প্লাস্টারের রঙ এর মধ্যে বেশ নোংরা হয়ে গেছে। সুদীপ সেদিকে তাকিয়ে হেসে বলল, ওটাকে আর বয়ে বেড়িয়ে কি লাভ! আনন্দ, আমি ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিরছি। অবশ্য ততক্ষণ যদি বাইরে থাকা যায়। আমার মনে হয় ওরা জিপ নিয়ে আসবে না। সাবধানে থাকবি।
গ্লাভস দুটো হাতে গলিয়ে ও পেছনের দরজা খুলে হাঁটতে হাঁটতে দেখল ওয়াংদে তখনও পড়ে আছে। লোকটার নেশা না ভাঙানোই ভাল। সে দ্বিতীয় দরজাটা খুলতেই সোঁ সোঁ হাওয়ার অস্তিত্ব টের পেল। একটু সময় নিল সে। ঠাণ্ডাটা সইবার অবস্থায় এলে সে চটপট বাইরে বেরিয়ে এল। এই দিকটা সান্দাকফুর বাংলোগুলোর উলটো দিকে। ওপাশ থেকে কারও নজরে আসবে না। সুদীপ দৌড়ে যেতে গিয়ে পিছলে পড়তে পড়তে কোনরকমে সামলে নিল। জুতোর তলায় চকচকে বরফ ঝরা কাচের মত ছড়ানো। শ্যাওলা পড়া উঠোনের চেয়েও পিছল। একটু ঝুঁকে সে এক টুকরো বরফ তুলে নিল। এখনও পাতলা, ফিনফিনে। সে চারপাশে তাকাল। একটা পায়ে চলা পথ রয়েছে নিচে যাওয়ার। ওপাশে আর একটা চলে গেছে যেটা দিয়ে গেলেই সবার সামনে প্রকাশিত হতে হবে। প্রকাশিত শব্দটা নিয়ে খেলল সে মনে মনে। এখন হিমালয়ের সব মুখ ঘোমটার আড়ালে। এমন কি কাছাকাছি পাহাড়গুলোতেও গাঢ় কুয়াশা নেমে পড়েছে। হয়তো আরও কিছুক্ষণ পরে পায়ের তলার সব ঘাস বরফের আড়ালে চলে যাবে। এরকম একটা অপ্রকাশিত প্রকৃতিতে কল্যাণ প্রকাশিত হয়ে পড়ল এমন ভাবে যে বুকের মধ্যে এখনও পাথরটা চেপে রয়েছে। জয়িতা ভাঙতে চায়নি, কিন্তু যেটুকু ইঙ্গিত পেয়েছিল তাতে সুদীপের মনে হয়েছে কল্যাণের হাতে মারাত্মক কিছু হয়নি। যা হয়েছে তা ভাল করে ক্রেপ ব্যান্ডেজ বাঁধলেই চলে যেত। হাড়ে একটু চাপ আর কয়েকটা লিগামেন্ট ছেড়ার জন্যে যদি কল্যাণ জোর করে ডাক্তারকে দিয়ে প্লাস্টার করিয়ে নেয় তাহলে অনেক সুবিধে। ডাক্তার কি বলেছিল তা রামানন্দ রায় এবং কল্যাণ ছাড়া কেউ জানে না। রামানন্দ মেয়েকে কতটা কি বলেছেন সেটা জয়িতা হয়তো ভদ্রতায় বলবে না। কিন্তু অত তাড়াতাড়ি সব হয়ে গেল, কল্যাণও আর হাতের ব্যথার কথা বলল না, ব্যাপারটায় খটকা লাগে। তখন তো যে কোন মুহূর্তে পুলিশের খপ্পরে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। হাতে প্লাস্টার থাকায় নিশ্চয়ই কল্যাণ খানিকটা সুবিধে পেত। তাছাড়া তারপর থেকে তো ওকে কোন ঝুঁকিতে যেতে হচ্ছে না। সুদীপ চোখ বন্ধ করল। সে কি খুব ছোট হয়ে যাচ্ছে? হিমালয়ের এত ওপরে এসে এইরকম চিন্তাকে প্রশ্রয় দেওয়ার মধ্যে কি এক ধরনের নীচতা কাজ করে না?
যেন ব্যাপারটাকে ঝেড়ে ফেলার জন্যেই সুদীপ একটা সিগারেট ধরাল। কল্যাণ যতক্ষণ সরাসরি বিপদ না ডেকে আনছে ততক্ষণ ওকে বন্ধু ভাবাই ভাল। কিন্তু এদিকে সময় বেশী নেই। বড় জোর মিনিট তিরিশের মধ্যেই অন্ধকার নেমে আসবে। সুদীপ হাঁটা শুরু করল। যতটা পারে ঝোপঝাড়ের আড়াল ব্যবহার করতে লাগল সে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর পি ডর ডি বাংলোটা নজরে পড়ল। এখন অদ্ভুত মায়াবী এক আলো নেমেছে পৃথিবীতে। বিষণ্ণ শব্দটার শুরুতেও যদিও বিষ তবু তাতে জ্বালা থাকে না। এই আলোয় মন আরও বিষণ্ণ হয়ে যায়।