দমদমের কাছে বাগডোগরাকে এয়ার পোর্ট বলে মনে হয় না। এমন কি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও খুব হালকা। জয়িতাকে লক্ষ্য রেখে কল্যাণ প্লেন থেকে নেমে ছোট্ট বিল্ডিংটায় চলে এল। তার একটা হাত এখনও অকেজো, অন্যটায় মাল বইতে হবে। এখান থেকে শিলিগুড়ি কত দূর? এসব অঞ্চলে সে কখনও আসেনি। ঘড়িতে দুটো পনেরো। আনন্দদের ট্রেন নিউ জলপাইগুড়িতে পৌঁছবে চারটের পর। ওদের ওপর নির্দেশ আছে সোজা সিনক্লেয়ার নামের একটা হোটেলে গিয়ে উঠতে। কিন্তু ওদের বলতে আর যাকে বোঝাচ্ছে তিনি তো এখনও চেনার ভান করছেন না। মালপত্র খালাস করে কাঁধে স্ট্র্যাপ ঝোলানো যেহেতু এক হাতে সম্ভব নয় তাই ভারী হলেও হাতেই নিল কল্যাণ। তারপরেই জানল এখান থেকে একটা বাস সোজা ওই হোটেলটাতেই নিয়ে যায়। অনুসরণ করে সেই বাসটায় উঠে বসল সে। মোটামুটি ভরতি হলে বাসটা যখন ছাড়ল তখন জয়িতা নেই। এবার উদ্বিগ্ন হল কল্যাণ। সে শুনেছে রাগ করলে মেয়েরা নাকি অন্ধ হয়ে যায়। তখন কোন যুক্তি বা সম্পর্কের কথা খেয়ালেই রাখে না। সে জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে যতটা দেখতে পেল তার মধ্যে জয়িতার অস্তিত্ব নেই। গুম হয়ে বসে রইল সে। সুন্দর পিচের রাস্তা দিয়ে বাস ছুটছে। দুপাশে এয়ারফোর্সের ক্যান্টনমেন্ট। সাইকেলে সৈনিকরা আসা যাওয়া করছে। হঠাৎ জয়িতাকে ছাপিয়ে কল্যাণের মাথায় অন্য চিন্তা প্রবল হল। এইসব তরুণ যারা এখানে য়ুনিফর্ম পরে সাইকেলে কর্তব্য করতে যাচ্ছে তারা কি শুধুই পেটের জন্য চাকরি করতে এসেছে না দেশের প্রতি ভালবাসাও কাজ করছে?
শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার আগেই বাঁ দিকে হোটেলটা। সুন্দর সাজানো। দেখলেই বোঝা যায় দক্ষিণা কম হবে না। আনন্দরা যে টাকা দিয়েছিল তা ওরা ভাগ করে নিয়েছিল কিন্তু ভি. আই. পি. রোডের গেস্ট হাউসের টাকা কল্যাণই মিটিয়েছিল। এখন পকেটে পড়ে রয়েছে সামান্য এবং এখানকার ভাড়াটাও অজানা। বাস থেকে নেমে ইতস্তত করল কল্যাণ। তারপর ব্যাগটাকে বয়ে রিসেপশনের দিকে এগোতেই জয়িতাকে দেখতে পেল। খুব সহজ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে কাউন্টারের পাশে। ওকে দেখে যে কায়দায় হাই বলে হাত তুলল তাতে ঘাবড়ে না গিয়ে পারল না। যেন কতকাল পরে দেখা হয়েছে, সেই ভঙ্গিতে এগিয়ে এসে বলল, ওঃ, শেষ পর্যন্ত তোমাকে দেখলাম। আমি ভাবছিলাম যদি তুমি না আসো ওই ফ্লাইটে। তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে রিসেপশনের লোকটিকে বলল, ওয়েল! হি ইজ হিয়ার।
লোকটি তার শেখা হাসিটি হাসল। নিজেরা নয়, বেয়ারা তাদের ঘরে মালপত্র পৌঁছে দিলে জয়িতা বলল, বাঃ, তুই বেশ সাবালক হয়ে গেছিস তো!
বেয়ারা চলে গিয়েছিল। কল্যাণ বলল, এভরিথিং হ্যাজ লিমিট জয়িতা। তুই আমাকে অকারণে এভাবে অপমান করতে পারিস না। আমি ওদের কাছে সমস্ত ব্যাপারটা বলব।
জয়িতা হাসল, কি বলবি? কলকাতা থেকে পালাতে হচ্ছে বলে তোর আফসোস হচ্ছিল! কেন এই অ্যাকশনে জড়িয়ে পড়লি! তাই নিয়ে আমি তোকে ঠাট্টা করেছিলাম। তুই এত জোরে চেঁচিয়েছিলি যে পুলিশ আসতে পারত। তারপর তোর সঙ্গে আমি কথা বন্ধ করেছিলাম, এই তো?
শিলিগুড়ি শহরে ঢোকার আগেই বাঁ দিকে হোটেলটা। সুন্দর সাজানো। দেখলেই বোঝা যায় দক্ষিণা কম হবে না। আনন্দরা যে টাকা দিয়েছিল তা ওরা ভাগ করে নিয়েছিল কিন্তু ভি. আই. পি. রোডের গেস্ট হাউসের টাকা কল্যাণই মিটিয়েছিল। এখন পকেটে পড়ে রয়েছে সামান্য এবং এখানকার ভাড়াটাও অজানা। বাস থেকে নেমে ইতস্তত করল কল্যাণ। তারপর ব্যাগটাকে বয়ে রিসেপশনের দিকে এগোতেই জয়িতাকে দেখতে পেল। খুব সহজ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে কাউন্টারের পাশে। ওকে দেখে যে কায়দায় হাই বলে হাত তুলল তাতে ঘাবড়ে না গিয়ে পারল না। যেন কতকাল পরে দেখা হয়েছে, সেই ভঙ্গিতে এগিয়ে এসে বলল, ওঃ, শেষ পর্যন্ত তোমাকে দেখলাম। আমি ভাবছিলাম যদি তুমি না আসো ওই ফ্লাইটে। তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে রিসেপশনের লোকটিকে বলল, ওয়েল! হি ইজ হিয়ার।
লোকটি তার শেখা হাসিটি হাসল। নিজেরা নয়, বেয়ারা তাদের ঘরে মালপত্র পৌঁছে দিলে জয়িতা বলল, বাঃ, তুই বেশ সাবালক হয়ে গেছিস তো!
বেয়ারা চলে গিয়েছিল। কল্যাণ বলল, এভরিথিং হ্যাজ লিমিট জয়িতা। তুই আমাকে অকারণে এভাবে অপমান করতে পারিস না। আমি ওদের কাছে সমস্ত ব্যাপারটা বলব।
জয়িতা হাসল, কি বলবি? কলকাতা থেকে পালাতে হচ্ছে বলে তোর আফসোস হচ্ছিল! কেন এই অ্যাকশনে জড়িয়ে পড়লি! তাই নিয়ে আমি তোকে ঠাট্টা করেছিলাম। তুই এত জোরে চেঁচিয়েছিলি যে পুলিশ আসতে পারত। তারপর তোর সঙ্গে আমি কথা বন্ধ করেছিলাম, এই তো?