[HIDE]
আচ্ছা এই যে কিছুদিন ধরে ও বাসায় ফিরেছে। একটি বারও তো রাজকে সে ফোন করলো না। মোহিতকেও না। উচিত ছিল ফোন করা। একটা সৌজন্যতাও তো আছে। তবে ফোন করেনি কারণ রাজকে যদি ফোন করতো তবে রাজ হয়তো ভাবতো পদ্মিণী তার প্রতি দুর্বল! আর পদ্মিণী এটা কোনভাবেই প্রকাশ করতে চায় না! আর মোহিতকে ফোন করেনি কারণ সে তার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। মদ গিলতে চলে গেলে সেদিন রাতে। ফোন করেও তাকে পাওয়া গেলনা! আর পূজার পিছনে হ্যাংলার মতো লেগে আছে। এসব হ্যাংলামো দেখলে পদ্মিনীর গা জ্বালা করে। এজন্য আর মোহিতকেও ফোন করেনি।
তবে এখন মনে হচ্ছে, ওদের ফোন করে খোঁজ খবর নেয়া উচিত। কারণ ওরা আর যাই করুক এতগুলো দিন তারা ওকে আগলে রাখলো। একটু খোঁজ খবর নেয়া আসলেই উচিত। তবে মোহিতকে যদিও বা ফোন করে সহজভাবে তার কুশল জিজ্ঞাসা করা যায়। কিন্তু রাজকে ফোন করলে সে যদি তাকে আবার প্রায়ই ফোন করতে থাকে! ও যে পদ্মিনীর প্রতি দুর্বল তা পদ্মিনী বুঝতে অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে। তার কথা ও কাজে ফুটে উঠতো! তবে এখন পর্যন্ত তো একদিনও ওরা কেউ ফোন করেনি। রাজও না। আচ্ছা রাজ কেনো ফোন করলো না? সে কি তার সাথে কোন দূরত্ব বজায় রাখতে চাচ্ছে? সে কি ভাবছে যে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা তার বৃথা? সে কি নিজের মনকে বুঝিয়ে রেখেছে নাকি তাকে বাসায় পৌছে দিয়ে তার দায়িত্ব শেষ। তাই এখন বোঝা সরে গেছে দেখে সে ভারমুক্ত হয়ে গেছে? এখন আর তার কোন পরোয়া নেই? পদ্মিণী বুঝতে পারে না। সে এলোমেলো হয়ে যায় ভাবনায়! সে চিন্তার গহবর থেকে উঠে আসে যখন সে শুনতে পায় তার মা ডাকছে।
কি রে মা! আর কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখবি? চল এবার নাস্তা করে নে।
না মা! এখন খাবো না! তুমি তো জানোই, বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে! আমি আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো।
ঠিক আছে… তোর ইচ্ছা। ছোটবেলা থেকেই পাগল হয়ে যাস বৃষ্টি দেখলে!
পদ্মিনীর মা চলে গেলো ওর রুম থেকে। বাইরে তখনও অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়েই চলেছে। পদ্মিনী এবার অন্য চিন্তায় মগ্ন হয়।
আর কতদিন এভাবে বাসায় বসে থাকবো? অফিসেও যাওয়া দরকার। বসের সাথে কথা হয়েছে আগেই। তিনি বলেছেন আসার জন্য।
এভাবে ভয়ে আর কতদিন ঘরে বসে কাটাবো। পদ্মিনীর ভাবনাটা সঠিক ছিল। ওর বস খুব রাগী কিন্তু ভালো মানুষ তাই তিনি এখনও ওকে আসতে বলেছেন। ভালো বস আর ভালো চাকুরী কি আর সবসময় পাওয়া সম্ভব? আর তাছাড়া চাকুরীটা করার কারণে ও কাজের মধ্যে ডুবে থাকতো, এতে ওর কষ্ট কম অনুভূত হতো, আর বাবা মায়ের কাছে বোঝা হিসেবেও নিজেকে মনে হতো না। আসলে বাবা মায়ের কাছে সন্তান কখনও বোঝা নয়, কিন্তু শিক্ষিতা হবার পরেও বৃদ্ধ বাবা মায়ের ঘাড়ে বসে খেতে ওর আত্নসম্মানে বাঁধে! তাই অফিসে গিয়ে নতুনভাবে সে শুরু করবে সবকিছু।
তবে মোহিতের চাকুরীতে পুনর্বহালের ব্যাপারটা অফিসে যাবার পরেই বসকে বলবে। তবে তার আগে ইন্সপেক্টর চৌহান কিংবা রাজের সাথে কথা বলতে হবে। রাজ যদি তারপর ফোন করতে থাকে সেটা পড়ে দেখা যাবে। আপাতত তার সাথে কথা বলাটা জরুরী।
এদিকে মোহিতের অবস্থা আগের চেয়ে বেশ ভালো। সে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছিল কখন পূজা তাকে দেখতে আসবে। রাজ পূজাকে আসতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু সে আসেনি। সে সাফ জানিয়ে দেয় মোহিতের কি হল বা না হল তাতে তার কিচ্ছু আসে যায় না। পূজার কথাটা কিছু ক্ষেত্রে সঠিকও ছিল। আসলে রাজ ও মোহিতের এলাকায় ভালো কাজের জন্য জনপ্রিয়তা থাকলেও পূজা ওদের মেয়োবাজি স্বভাবের কারণে ওদের পছন্দ করতো না। অনেক মেয়ে তাদের পছন্দ করে। কিন্তু পূজা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এমন ধরনের পুরুষ দিয়ে ঘর সংসার হয় না। আর সত্যি তো মোহিতের তো সংসার হয়নি।
রাজ আর চৌহান কে কে নামের সে ব্যক্তিকে খোঁজা শুরু করে। কিন্তু তাদের হাতে কোন তথ্য প্রমাণ আসে না। টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত ওরা ফোর্স নিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে। যখনই কোন ক্লু পায় তখনই তারা সেখানে ছুটে যায়। তবে এ কয়দিনে একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বিষয় ছিল, আর তা হল এ ৭ দিনে কোন হত্যাকান্ড হয়নি। হতে পারে এটা মোহিতের সাহসীকতার জন্য। ও যেভাবে চাকু মেরে সিরিয়াল কিলারের পেট ফেড়ে দিয়েছে তাতে দুর্বল কোন মানুষ কবেই পগারপাড় হয়ে যেতো। হয়তো সে বেঁচে থাকলেও তার অবস্থা এখনও ভালো হয়নি। যাই হোক, এই একটি সপ্তাহ মানুষ একটি ঝুকিমুক্ত ছিল। তবে এক সপ্তাহ খুব যথেষ্ট সময় নয় দীর্ঘদিনের আতংক থেকে বেরিয়ে আসার। মানুষ এখনও সে রকমই ভয় পাচ্ছে আগে যেরকম ভয় পেতো।
মোহিত অবশেষে হাসপাতালের সেবা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। তবে ওর জখমগুলো এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি।
দেখতে দেখতে আরও ৩ সপ্তাহ কেটে গেল। অর্থাত এক মাস হয়ে গেছে। কিন্তু সাইকো খুনির কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি! ব্যাপারটা অনেক হতাশাব্যঞ্জক। কিন্তু এক্ষেত্রেও এই একমাসে
শহরে কোন মর্মান্তিক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়নি। কিন্তু পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এখনও তৎপর। এছাড়া ডিপার্টমেন্ট থেকে তাদের উপর চাপ অব্যহত ছিল।
সকাল ১০ টা। চেহারায় হতাশার ছাপ নিয়ে রঞ্জিত চৌহান পায়চারি করছে। এর মধ্যে রাজ উপস্থিত হয়।
কি ব্যাপার স্যার? আপনাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে?
আর বলো না রাজ! শালিনী কেয়ামত আসছে আজকে। সকালে ম্যাডাম ফোন করে বলেছেন, মিটিং করবেন আজকে। কে জানে? মনে হয় খুব ঝাড়ি শুনতে হবে আমাদের!
স্যার! আমরা তো আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিন্তু খুনি অনেক চালাক স্যার। সে কোন চিহ্নই রাখে নি।
রাজ! আমাকে বলেছো, কিন্তু ভুলেও এসব কথা শালিনী ম্যাডামের সামনে বলো না। নইলে উনি খুব রাগ করবেন।
আমি ওনার সামনে এসব বলবো না। নইলে উনি মনে করবেন আমরা বোধহয় চেষ্টাই করিনি। তবে আমার মনে হয় সেই সাইকো কিলার এখন আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে গেছে। আমি বিদেশী চলচ্চিত্রে দেখেছি, এ ধরনের সাইকো কিলার বিপদ দেখলে হঠাত গা ঢাকা দেয় আবার কোন সুবর্ণ সুযোগ পেলে আতংক সৃষ্টি করে ফিরে আসে।
এসব ছবি আমিও দেখেছি। কিন্তু এটা বাস্তবতা। কে জানে সে হারামীর বাচ্চাটা কি করছে, আর এই কে কে নামের বদমাইশটারও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
স্যার আরেকটা ব্যাপার হতে পারে!
কি? চৌহান মাথা ঘুরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে।
আমার বন্ধু মোহিত যখন ওকে চাকু মারলো তখন আমরা শহরের সমস্ত হাসপাতাল আর ক্লিনিকে খোঁজ নিলাম। কিন্তু তাকে পাওয়া গেলো না। হতে পারে ও ট্রিটমেন্ট বাসার মধ্যেই করার চেষ্টা করেছে। আর হতে পারে ওর কোন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ওর ট্রিটমেন্ট করেছে।
হুম হতে পারে।
তবে সেটা যদি না হয় তবে কিন্তু ওর অবস্থা খুব সিরিয়াস হবার কথা।
কি বলতে চাচ্ছ তুমি?
হতে পারে ও মারা গেছে?
উমম.. হতে পারে। কিন্তু সে মরে গেছে এটা মনে করে কেইস সলভ করা যাবে না।
তখনই সাব ইন্সপেক্টর বিজয় উপস্থিত হয়।
কি ব্যাপার স্যার? কোন জটিল বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে মনে হচ্ছে?
কি খবর বলো।
স্যার মিটিং এর সময় হয়ে গেছে।
ওহ হ্যা চল। চল রাজ। দেরী করা যাবে না এখন। নইলে এই শালিনী কেয়ামত আরও আগেই ঘনিয়ে আসবে।
তিনজন মিটিং রুমের দিকে অগ্রসর হয়। এএসপি শালিনী রুমে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। ওনাকে দেখে পৌরুষদীপ্ত চৌহানের গলা শুকিয়ে যায়।
মিস্টার চৌহান! সাইকো কিলারের কেইসটার সর্বশেষ আপডেট বলুন।
শালিন কমান্ডিং সুরে বললেন।
চৌহান একটু গুছিয়ে নিতে সময় নেয়।
আমরা সর্বাত্নক চেষ্টা করছি ম্যাডাম। আমাদের মনে হচ্ছে সেই সাইকো কিলার এখন গা ঢাকা দিয়েছে। চৌহান কিছু বলার আগে রাজ বলে ওঠে।
[/HIDE]
আচ্ছা এই যে কিছুদিন ধরে ও বাসায় ফিরেছে। একটি বারও তো রাজকে সে ফোন করলো না। মোহিতকেও না। উচিত ছিল ফোন করা। একটা সৌজন্যতাও তো আছে। তবে ফোন করেনি কারণ রাজকে যদি ফোন করতো তবে রাজ হয়তো ভাবতো পদ্মিণী তার প্রতি দুর্বল! আর পদ্মিণী এটা কোনভাবেই প্রকাশ করতে চায় না! আর মোহিতকে ফোন করেনি কারণ সে তার জীবন নিয়ে ব্যস্ত। মদ গিলতে চলে গেলে সেদিন রাতে। ফোন করেও তাকে পাওয়া গেলনা! আর পূজার পিছনে হ্যাংলার মতো লেগে আছে। এসব হ্যাংলামো দেখলে পদ্মিনীর গা জ্বালা করে। এজন্য আর মোহিতকেও ফোন করেনি।
তবে এখন মনে হচ্ছে, ওদের ফোন করে খোঁজ খবর নেয়া উচিত। কারণ ওরা আর যাই করুক এতগুলো দিন তারা ওকে আগলে রাখলো। একটু খোঁজ খবর নেয়া আসলেই উচিত। তবে মোহিতকে যদিও বা ফোন করে সহজভাবে তার কুশল জিজ্ঞাসা করা যায়। কিন্তু রাজকে ফোন করলে সে যদি তাকে আবার প্রায়ই ফোন করতে থাকে! ও যে পদ্মিনীর প্রতি দুর্বল তা পদ্মিনী বুঝতে অনেক আগেই বুঝতে পেরেছে। তার কথা ও কাজে ফুটে উঠতো! তবে এখন পর্যন্ত তো একদিনও ওরা কেউ ফোন করেনি। রাজও না। আচ্ছা রাজ কেনো ফোন করলো না? সে কি তার সাথে কোন দূরত্ব বজায় রাখতে চাচ্ছে? সে কি ভাবছে যে আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা তার বৃথা? সে কি নিজের মনকে বুঝিয়ে রেখেছে নাকি তাকে বাসায় পৌছে দিয়ে তার দায়িত্ব শেষ। তাই এখন বোঝা সরে গেছে দেখে সে ভারমুক্ত হয়ে গেছে? এখন আর তার কোন পরোয়া নেই? পদ্মিণী বুঝতে পারে না। সে এলোমেলো হয়ে যায় ভাবনায়! সে চিন্তার গহবর থেকে উঠে আসে যখন সে শুনতে পায় তার মা ডাকছে।
কি রে মা! আর কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখবি? চল এবার নাস্তা করে নে।
না মা! এখন খাবো না! তুমি তো জানোই, বৃষ্টি আমার খুব ভালো লাগে! আমি আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবো।
ঠিক আছে… তোর ইচ্ছা। ছোটবেলা থেকেই পাগল হয়ে যাস বৃষ্টি দেখলে!
পদ্মিনীর মা চলে গেলো ওর রুম থেকে। বাইরে তখনও অঝোর ধারায় বৃষ্টি পড়েই চলেছে। পদ্মিনী এবার অন্য চিন্তায় মগ্ন হয়।
আর কতদিন এভাবে বাসায় বসে থাকবো? অফিসেও যাওয়া দরকার। বসের সাথে কথা হয়েছে আগেই। তিনি বলেছেন আসার জন্য।
এভাবে ভয়ে আর কতদিন ঘরে বসে কাটাবো। পদ্মিনীর ভাবনাটা সঠিক ছিল। ওর বস খুব রাগী কিন্তু ভালো মানুষ তাই তিনি এখনও ওকে আসতে বলেছেন। ভালো বস আর ভালো চাকুরী কি আর সবসময় পাওয়া সম্ভব? আর তাছাড়া চাকুরীটা করার কারণে ও কাজের মধ্যে ডুবে থাকতো, এতে ওর কষ্ট কম অনুভূত হতো, আর বাবা মায়ের কাছে বোঝা হিসেবেও নিজেকে মনে হতো না। আসলে বাবা মায়ের কাছে সন্তান কখনও বোঝা নয়, কিন্তু শিক্ষিতা হবার পরেও বৃদ্ধ বাবা মায়ের ঘাড়ে বসে খেতে ওর আত্নসম্মানে বাঁধে! তাই অফিসে গিয়ে নতুনভাবে সে শুরু করবে সবকিছু।
তবে মোহিতের চাকুরীতে পুনর্বহালের ব্যাপারটা অফিসে যাবার পরেই বসকে বলবে। তবে তার আগে ইন্সপেক্টর চৌহান কিংবা রাজের সাথে কথা বলতে হবে। রাজ যদি তারপর ফোন করতে থাকে সেটা পড়ে দেখা যাবে। আপাতত তার সাথে কথা বলাটা জরুরী।
এদিকে মোহিতের অবস্থা আগের চেয়ে বেশ ভালো। সে অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছিল কখন পূজা তাকে দেখতে আসবে। রাজ পূজাকে আসতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু সে আসেনি। সে সাফ জানিয়ে দেয় মোহিতের কি হল বা না হল তাতে তার কিচ্ছু আসে যায় না। পূজার কথাটা কিছু ক্ষেত্রে সঠিকও ছিল। আসলে রাজ ও মোহিতের এলাকায় ভালো কাজের জন্য জনপ্রিয়তা থাকলেও পূজা ওদের মেয়োবাজি স্বভাবের কারণে ওদের পছন্দ করতো না। অনেক মেয়ে তাদের পছন্দ করে। কিন্তু পূজা মনে প্রাণে বিশ্বাস করে এমন ধরনের পুরুষ দিয়ে ঘর সংসার হয় না। আর সত্যি তো মোহিতের তো সংসার হয়নি।
রাজ আর চৌহান কে কে নামের সে ব্যক্তিকে খোঁজা শুরু করে। কিন্তু তাদের হাতে কোন তথ্য প্রমাণ আসে না। টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত ওরা ফোর্স নিয়ে তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকে। যখনই কোন ক্লু পায় তখনই তারা সেখানে ছুটে যায়। তবে এ কয়দিনে একটা গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বিষয় ছিল, আর তা হল এ ৭ দিনে কোন হত্যাকান্ড হয়নি। হতে পারে এটা মোহিতের সাহসীকতার জন্য। ও যেভাবে চাকু মেরে সিরিয়াল কিলারের পেট ফেড়ে দিয়েছে তাতে দুর্বল কোন মানুষ কবেই পগারপাড় হয়ে যেতো। হয়তো সে বেঁচে থাকলেও তার অবস্থা এখনও ভালো হয়নি। যাই হোক, এই একটি সপ্তাহ মানুষ একটি ঝুকিমুক্ত ছিল। তবে এক সপ্তাহ খুব যথেষ্ট সময় নয় দীর্ঘদিনের আতংক থেকে বেরিয়ে আসার। মানুষ এখনও সে রকমই ভয় পাচ্ছে আগে যেরকম ভয় পেতো।
মোহিত অবশেষে হাসপাতালের সেবা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। তবে ওর জখমগুলো এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেনি।
দেখতে দেখতে আরও ৩ সপ্তাহ কেটে গেল। অর্থাত এক মাস হয়ে গেছে। কিন্তু সাইকো খুনির কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি! ব্যাপারটা অনেক হতাশাব্যঞ্জক। কিন্তু এক্ষেত্রেও এই একমাসে
শহরে কোন মর্মান্তিক হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়নি। কিন্তু পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এখনও তৎপর। এছাড়া ডিপার্টমেন্ট থেকে তাদের উপর চাপ অব্যহত ছিল।
সকাল ১০ টা। চেহারায় হতাশার ছাপ নিয়ে রঞ্জিত চৌহান পায়চারি করছে। এর মধ্যে রাজ উপস্থিত হয়।
কি ব্যাপার স্যার? আপনাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে?
আর বলো না রাজ! শালিনী কেয়ামত আসছে আজকে। সকালে ম্যাডাম ফোন করে বলেছেন, মিটিং করবেন আজকে। কে জানে? মনে হয় খুব ঝাড়ি শুনতে হবে আমাদের!
স্যার! আমরা তো আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। কিন্তু খুনি অনেক চালাক স্যার। সে কোন চিহ্নই রাখে নি।
রাজ! আমাকে বলেছো, কিন্তু ভুলেও এসব কথা শালিনী ম্যাডামের সামনে বলো না। নইলে উনি খুব রাগ করবেন।
আমি ওনার সামনে এসব বলবো না। নইলে উনি মনে করবেন আমরা বোধহয় চেষ্টাই করিনি। তবে আমার মনে হয় সেই সাইকো কিলার এখন আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে গেছে। আমি বিদেশী চলচ্চিত্রে দেখেছি, এ ধরনের সাইকো কিলার বিপদ দেখলে হঠাত গা ঢাকা দেয় আবার কোন সুবর্ণ সুযোগ পেলে আতংক সৃষ্টি করে ফিরে আসে।
এসব ছবি আমিও দেখেছি। কিন্তু এটা বাস্তবতা। কে জানে সে হারামীর বাচ্চাটা কি করছে, আর এই কে কে নামের বদমাইশটারও কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
স্যার আরেকটা ব্যাপার হতে পারে!
কি? চৌহান মাথা ঘুরে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করে।
আমার বন্ধু মোহিত যখন ওকে চাকু মারলো তখন আমরা শহরের সমস্ত হাসপাতাল আর ক্লিনিকে খোঁজ নিলাম। কিন্তু তাকে পাওয়া গেলো না। হতে পারে ও ট্রিটমেন্ট বাসার মধ্যেই করার চেষ্টা করেছে। আর হতে পারে ওর কোন ব্যক্তিগত চিকিৎসক ওর ট্রিটমেন্ট করেছে।
হুম হতে পারে।
তবে সেটা যদি না হয় তবে কিন্তু ওর অবস্থা খুব সিরিয়াস হবার কথা।
কি বলতে চাচ্ছ তুমি?
হতে পারে ও মারা গেছে?
উমম.. হতে পারে। কিন্তু সে মরে গেছে এটা মনে করে কেইস সলভ করা যাবে না।
তখনই সাব ইন্সপেক্টর বিজয় উপস্থিত হয়।
কি ব্যাপার স্যার? কোন জটিল বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে মনে হচ্ছে?
কি খবর বলো।
স্যার মিটিং এর সময় হয়ে গেছে।
ওহ হ্যা চল। চল রাজ। দেরী করা যাবে না এখন। নইলে এই শালিনী কেয়ামত আরও আগেই ঘনিয়ে আসবে।
তিনজন মিটিং রুমের দিকে অগ্রসর হয়। এএসপি শালিনী রুমে আগে থেকে উপস্থিত ছিলেন। ওনাকে দেখে পৌরুষদীপ্ত চৌহানের গলা শুকিয়ে যায়।
মিস্টার চৌহান! সাইকো কিলারের কেইসটার সর্বশেষ আপডেট বলুন।
শালিন কমান্ডিং সুরে বললেন।
চৌহান একটু গুছিয়ে নিতে সময় নেয়।
আমরা সর্বাত্নক চেষ্টা করছি ম্যাডাম। আমাদের মনে হচ্ছে সেই সাইকো কিলার এখন গা ঢাকা দিয়েছে। চৌহান কিছু বলার আগে রাজ বলে ওঠে।
[/HIDE]