What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

দেখি নাই ফিরে (উপন্যাস) (1 Viewer)

পরদিন সকালে নীপা এসে যখন ডাকলো, তখন সাড়ে নটা বেজে গেছে, আমি হুড় মুড় করে উঠে বসলাম, নীপা মিত্রার দেওয়া সেই লং-স্কার্ট আর গেঞ্জিটা পরেছে, গোল গলার গেঞ্জিটা নীপাকে দারুন মানিয়েছে, মাই দুটো উঁচু উঁচু লাগছে, এই মুহূর্তে, ওর বুক ওর্নাতে ঢাকা নেই। আমি ওর বুকের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
কি দেখছো।
তোমাকে । দারুন মানিয়েছে।
মিত্রাদির চয়েস আছে, কি মোলায়েম।
আমি খাটে বসে আছি, নীপার স্নান হয়ে গেছে, মাথায় শেম্পু করেছে, চুলটা কালো মেঘের মতো ফুলে আছে।
মিত্রাদি ফোন করেছিলো।
তোমায়।
হ্যাঁ।
কি বললো।
তোমার কথা জিজ্ঞাসা করলো, আর বললো ওকে গুঁতিয়ে তোল, না হলে ওর ঘুম ভাঙবে না।
হাসলাম।
হাসলে যে।
শেষের কথাটা বারিয়ে বললে।
ঠিক আছে, তুমি ফোন করে জেনে নাও।
ঠিক আছে।
ওঠো বিছানাটা গুছিয়ে দিই, তুমি দাঁত মেজে নাও।
ঘুটের ছাই আছে।
কেনো।
অনেক দিন ঘুটের ছাইএ দাঁত মাজিনি।
তুমি সত্যিই গাঁইয়া।
আমি শাঁইয়া কে বলেছে।
কি বললে।
শাঁইয়া। গ্রামের লোকেরা যদি গাঁইয়া হয়, শহরের লোকেরা শাঁইয়া।
সত্যি তোমার মাথা বটে।
হাসলাম।
তুমি কেবলার মতো হেসো নাতে।
আমি কেবলা।
তা নয় তো কি।
কাল রাতের কথা মনে আছে।
নীপার চোখ মুখ চক চক করে উঠলো। উঠবো দেখবে।
না না প্লিজ প্লিজ সবে স্নান করে এসেছি।
ঠিক আছে ছেরে দিলাম।
তোমার সারপ্রাইজের কথা বললে নাতো।
কি করে জানলে।
কাল রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে তোমাদের সমস্ত কথা শুনেছি।
আমি মাথা নীচু করলাম।
দিবাকরদা তোমায় একেবারে সহ্য করতে পারে না।
এটা ওর স্বভাব। সেই ছোট থেকে।
কেনো।
ও স্কুলে ফাস্ট হতো আর আমি সেকেন্ড, কিন্তু ফাইন্যালে গিয়ে, ওকে বিট করলাম।
মসাই বলেছে, তুমি স্টার পেয়েছিলে, সাতটা বিষয় লেটার, আচ্চা অনিদা তুমি বাংলায় লেটার পেলে কি করে।
কি করে জানবো, হয়তো ভালো লিখেছিলাম।
জানো তোমার পর কেউ এখনো পর্যন্ত বাংলায় লেটার পায় নি। উনা মাস্টার পদে পদে সবাইকে শোনায়।
স্যার আমাকে খুব ভালবাসতেন।
তোমার মাথাটা আমার ফাঁক করে দেখতে ইচ্ছে করে।
ঠিক আছে একদিন দেখাবো।
আমি বিছানা থেকে উঠে, নীপার কোমরে একটা খোঁচা মারলাম।
আ।
কি হলো।
আমার হাত ধরে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বললো যাও মুখ ধুয়ে এসো।
আমি বেরিয়ে এলাম।
পুকুর ধারে একটা কচি বাঁশের ডগা নিয়ে দাঁতন বানালাম, বেশ কিছুক্ষণ ভাল করে রগড়ে পুকুরে মুখ ধুয়ে চলে এলাম।
নীপা চা বিস্কুট নিয়ে হাজির।
চা খেতে খেতে নীপাকে বললাম তুমি কখন বেরোবে।
একটা নাগাদ।
তাহলে তোমার সঙ্গে আমার সেই বিকেলে দেখা হবে।
আজকে না গিয়ে যদি কালকে যাও।
কেনো।
তাহলে তুমি আমার সঙ্গে যেতে।
তাহলে কি হতো।
আমার বুকটা ফুলে যেতো।
তোমার বুকটা তো এমনি ফোলা ফোলা দেখছি, আর ফুলিয়ো না, খারাপ দেখাবে।
নীপা ছুটে এসে, আমার মাথাটা ধরে বললে, একেবারে মাথাটা ভেঙে দেবো। খালি মাথায় কু বুদ্ধি।
নীপার বুক আমার মুখের কাছে। নীপাকে আজ ভীষণ মিষ্টি লাগছে।
সকাল বেলা চিকনাদা এসে একবার তোমার খোঁজ করে গেছে। আমাকে বললো এককাপ চা দে, চা খেয়ে চলে গেলো। তুমি আজ না গেলে নয়।
আরে বাবা যেতে আস্তে যতটুকু টাইম লাগে।
ঠিক আছে, যাও।
নীপা মিট সেফের কাছে চলে গেলো, কি যেনো খোঁজা খুঁছি করছে, মিটসেপের ওপরে। আমি ডাকলাম, নীপা।, নীপা ফিরে তাকালো। আমার মানি পার্টসটা নিয়ে এসো।
নীপা আমার মানি পার্টসটা হাতে করে নিয়ে এলো। আমি ওখান থেকে তিনটে একশো টাকার নোট বার করে ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। রাখো।
কি হবে।
রাখো না।
না।
আমি একদিন মেলায় গিয়ে কষ্ট পেয়েছি এটার জন্য, আমি চাই না তুমি কষ্ট পাও।
নীপার চোখ দুটো ছল ছল করে উঠলো। নাও। নীপা টাকাটা হাতে নিয়ে আমার গলা জড়িয়ে ধরলো, তুমি এতো ভাব।
ভাবি না ফিল করি।
নীপা গলা জরিয়ে আমার কোলে বসলো।
কাঁদে না। কান্না দুর্বলের প্রতীক, দাঁতে দাঁত চেপে লড়বে সব সময়, কাউকে এক তিলার্ধ মাটি বিনা যুদ্ধে ছেড়ে দেবে না।
নীপা আমার দিকে তাকালো, আমার চোখের আগুনে ও পরিশুদ্ধ হলো, আমার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে বললো আমি পারবো অনিদা।

নিশ্চই পারবে, আমি তো আছি।
 
নীচ থেকে কাকার গলা পেলাম, আমার নাম করে ডাকছে, আমি জানলা দিয়ে মুখ বার করে বললাম, কি হয়েছে।
তোর কাকীমা জিজ্ঞাসা করলো কখন বেরোবি।
এই তো স্নান করেই বেরিয়ে যাব।
খাবি না।
না । এসে খাবো।
সে কি হয় নাকি।
ঠিক আছে তুমি যাও আমি যাচ্ছি।
নীপা আমার দিকে তাকালো। কাছে এসে আমায় প্রণাম করলো।
এটা কিসের জন্য।
তোমার সম্মানটা যেন আজ রাখতে পারি।
নিশ্চই পারবে। যাও।

আমি উঠে পড়ে স্নান করে রেডি হলাম, কাকীমা খাওয়ার কথা বললো, আমি বললাম, তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো, তুমি চিন্তা করো না, পারলে একটু মুড়ি আর চা দাও।
সুরমাসি মুড়ি আর চা নিয়ে এলো, আমি সুরমাসিকে জিজ্ঞাসা করলাম, হ্যাঁগো চিংড়িমাছের টক আছে।
সুরমাসি হাসলো। কেনো।
এসে চিংড়িমাছের টক দিয়ে পান্তা খাবো।
আছে।
বাসু ঠিক সময় এলো, মোবাইলের ঘড়ির দিকে তাকালাম, ১১.৩৫ বাজে। বাসুকে বললাম, চা খাবি।
বানাতে হবে নাকি।
তা তো বলতে পারবো না। ঠিক আছে সুরমাসিকে জিজ্ঞাসা করি দাঁড়া। সুরমাসিকে ডাকলাম।
সুরমাসি বললো, আছে, নিয়ে আসছি।
বাসু আমার দিকে তাকিয়ে মিটি মিটি হেসে বললো, অতো বেলা পর্যন্ত ঘুমোচ্ছিলি কেনো।
তোকে আবার কে বললো।
চিকনা।
ও। হ্যাঁনীপা বলছিলো, চিকনা আমায় খোঁজ করতে এসেছিলো। কেনো বলতো।
একটা চিঠি লিখে দিতে হবে।
কিসের জন্য।
কোথায় একটা ইন্টারভিউ দিতে যাবে।
তার মানে বায়োডাটা।
হ্যাঁ, হ্যাঁ মনে পরেছে।
ওর কি চাকরির খুব দরকার।
মাঠে খেটে আর কত দিন চালাবে বলতো। অত গুলো পেট। কতই বা ধান হয়।
হুঁ। ঠিক আছে। তোর কাছে গেছিলো নাকি।
হ্যাঁ। আমি বললাম অনাদির কাছ থেকে লিখে নে। দিল গালাগালি, তোকে আমাকে দুজনকে। তোকে একটু কম আমাকে বেশি।
হাসলাম।
বাসু বললো, চল এবার বেরোনো যাক।
আমি বললাম হ্যাঁ চল।
নীপাকে দেখছি না।
বাবাঃ সে তো আজ পৃথিবীর ব্যস্ততম মানুষ।
বাসু হাসলো। আমি ভেতরের ঘরে গিয়ে কাকাকে বলে বেরিয়ে এলাম।
মোরাম রাস্তায় উঠতেই পচার সঙ্গে দেখা। মাঠে কাজ করছে। দেখা হতে, মাঠ থেকে উঠে এলো, বললো, আর ঘন্টাখানেক কাজ করে চলে যাবে। আমায় জিজ্ঞাসা করলো, নার্সিংহোমে যাচ্ছি কিনা। আমি বললাম হ্যাঁ।
বেরিয়ে এলাম, আসার সময় বাসুকে সমস্ত ব্যাপারটা বললাম।
সর্বনাশ, তুই ম্যাডামকে কোথায় রাখবি।
কেনো, আমার ঘরে।
ওরে, থাকবে তো, না পালিয়ে যাবে।
আমি দশ বছর ধরে ওর সঙ্গে মিশছি, মনে হয় না ওর কোন অসুবিধে হবে। তোকে একটা কাজ করতে হবে।
কি।
গাড়িটা রাখার একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
সেতো বাজারেই রাখা যাবে আমার দোকানের সামনে।
বাজার পর্যন্ত রাস্তা হয়ে গেছে।
হ্যাঁ।
তাহলেতো কোনো চিন্তা নেই। তুই কি যেখানে থাকতিস সেখানেই আছিস।
হ্যাঁ, তবে বাজারের শেষ প্রান্তে একটা ঘর করেছি। বাড়িতে সমস্যা, তাই বউ ছেলে নিয়ে এখানে চলে এসেছি।
বাবা-মা।
বাড়িতেই আছেন। প্রত্যেক দিন সকাল বিকেল যাই।
বাড়িতে বাবা-মা ছাড়া কে আছেন।
মেজ ভাই ছোট ভাই আর ওদের বউ, মেজ ভায়ের বউটা শুবিধার নয়।
কি করে।
জমি জমা সব ভাগ হয়ে গেছে, চাষ করছে আর খাচ্ছে।
তোর কি খালি দোকান।
হ্যাঁ। শ্বশুরের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে ছিলাম, আর জমি বেচেছি। তাই দিয়ে দোকান। কিছুটা জমি চিকনা চাষ করে।
ব্যবসা কেমন চলছে।
চলে যায় আর কি। এখানকার পরিস্থিতি তো জানিষ। সব ধারে বিজনেস, মাসে মাসে টাকা।
আমার ব্যালেন্সটা তোর বলার কথা ছিলো।
তোর কাছ থেকে আর কিছু পাবো না।
সে কি করে হয়। কাকার পাওনা, আমার পাওনা।
সব মিলিয়ে......
আর দু একশো টাকা হয়তো পাবো।
সেটাও তো টাকা নাকি টাকা নয়।
তুই এতো হিসেব করিস না।
ঠিক আছে।
ফোনটা বেজে উঠলো।
বাসু বাইক থামালো, পকেট থেকে বার করে দেখলাম, মিত্রার ফোন।
কোথায় এখন।
আমি পৌঁছে গেছি।
এতো তাড়াতাড়ি।
তুই আয় বলবো। তুই কোথায়।
আমার যেতে আরো মিনিট পনেরো লাগবে।
ঠিক আছে।
কি ম্যাডাম পৌঁছে গেছেন। বাসু বললো।
আর বলিস না, আমার অনেক জ্বালা, সংসার নেই তবু ভরা সংসার।

সত্যি তুই ছিলি, না হলে স্যারের যে কি হতো।
 
দুর ওই সব নিয়ে ভাবি না।
নারে অনি, ললিতাকে তোর কথা বলতেই, ও বিস্ময়ে আমার দিকে তাকায়।
তোর বউকে এর মধ্যে একদিন দেখতে যাব।
কবে যাবি।
কথা দেবো না। হুট করে চলে যাবো।
তুই বাইক চালাতে জানিস না।
না।
সাইকেল চালাতে পারিস তো।
পারতাম তো, এখন পারবো না। অভ্যাস নেই।
দাঁড়া তোকে বাইকটা শিখিয়ে দেবো।
না, তার আর দরকার পরবে না।
কেনো।
কলকাতায় অফিসের গাড়ি চড়ি , কোথাও গেলে প্লেন, কিংবা ট্রেনের ফাস্টক্লাস। বাইক চালাবো কখন।
তাও ঠিক।
কথা বলতে বলতে পৌঁছে গেলাম। নার্সিং হোমের দোরগোড়ায় মিত্রার গাড়িটা রাখা আছে। বাসু বাইকটা একটা সাইড করে রাখলো। আমরা দুজনে ভেতরে এলাম, সেই রিসেপসনিস্ট ভদ্রমহিলা ছিলেন , আমাদের দেখে বললেন, দাঁড়ান ম্যাডামকে ডেকে দিই।
আমার চশমা।
ওটাতো রেডি আছে, ম্যাডাম বলেছেন, আপনি এলেই খবর দিতে।
মেয়েটি ভেতরে চলে গেলো।
কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে বললো, আপনাকে একবার ভেতরে ডাকছেন।
আমি ভেতরে গেলাম, বাসুও আমার সঙ্গে এলো। বুঝলাম এটা মালিকের বসার ঘর। আরও দুতিনজন বসে আছেন, আমি কাউকে চিন্তে পারলাম না, তবে ডঃ বাসুকে চিন্তে পারলাম। আমাকে দেখে মুচকি হেসে মিত্রা বললো, বোস।
আমরা বাইরে আছি। মনে হচ্ছে মিটিং চলছে।
উঃ তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না। মিটিং নয় একটু কথা বলছি।
ঠিক আছে তুই বল না, আমাকে নিয়ে এনাদেরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে।
তোর সঙ্গে আলাপ করাবার জন্য এদের ডেকেছি।
বাধ্য হয়ে বসলাম।
মিত্রা একে একে সবার সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিলো। বুঝলাম এরা সবাই ডাক্তার। এও জানাতে ভুললো না আমি কোম্পানীর ওয়ান অফ দেম মালিক। বাসু আমার দিকে একবার তাকাল, বিস্ময় ওর চোখে ঝোরে পরছে, সত্যিতো আমি এই কথাটা ওদের গোপন করেছি। বাসুই প্রথম জানলো। বাসুর চোখে যেমন বিস্ময়, ঠিক তেমনি যারা এখানে বসে আছেন তাদের চোখেও বিস্ময়, ওরা যেনো ভুত দেখছে, এরা নিশ্চই ভেবেছিলো, আমি এদের খুব পরিচিত তাই সব ফ্রি করে দিয়েছে। ডাক্তাররা সবাই এবার আমাকে চেপে ধরলেন, আমি খালি একটা কথাই বললাম, মিত্রা আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু তাই এই কথা বলছে। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে একবার হাসলো, বুবুন তুই এতবড় মিথ্যে কথাটা বলতে পারলি। আমি ওকে ফোন করবো।
না এই উপকার তোকে করতে হবে না। ফেরার দিন সময় নিয়ে আসবো জমিয়ে গল্প করা যাবে।
একটু কফি খা।

এখানে এসে , এই ঘরে বসে কফি খেতে ভালো লাগবে না। তার থেকে বরং বাইরে কোথাও খেয়ে নেবো।
আসর ভাঙলো, আমি সবার আগে বেরোলাম, কাউন্টারে এসে চশমাটা চাইতেই মেয়েটি দিয়ে দিলো, আমি ডঃ বাসুর চেম্বারে একবার গেলাম, উনি বসেছিলেন, আমি দরজাটা ফাঁক করে বললাম, আসতে পারি। দেখলাম ডঃ বাসু চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, এ কি বলছেন স্যার,ভাবটা এরকম পারলে আমার চেয়ারে আপনি বসুন। আমি চশমার ব্যাপারে ওনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, উনি সব বলে দিলেন, বললেন কোন অসুবিধে হবে না, দিন সাতেক রেসট্রিকসন-এ থাকতে বলুন, আর ওষুধ গুলো পনেরোদিন কনটিনিউ চলবে। পনেরো দিন পর একবার দেখাতে হবে।
ঠিক আছে।
উনি একবার দেঁতো হাসি হাসলেন। বাইরে বেরিয়ে এসে দেখি, মিত্রা কাউন্টারের কাছে দাঁরিয়ে। আমি বললাম চল।
দাঁড়া রবিন একটু বাইরে গেছে।
ইসমাইল আসে নি।
ওর বাচ্চাটার একটু শরীর খারাপ। রবিন এই এলাকার ছেলে, বললো সব চিনি।
কিছুক্ষণ পর রবিন এলো, ধোপদুরস্ত পোষাক , অফিসের ড্রেস কোড, মাথায় টুপি কোমরে বেল্ট আমায় দেখে হেসে ফেললো, স্যার।
ও তুমি।
হ্যাঁ স্যার।
তুই চিনিস।
চিনবো মানে, ওকে সারাজীবন মনে রাখবো।
কেনো।
তোর বাড়িতে প্রথম দিন ওই ঢুকতে দেয় নি।
রবীন মাথা চুলকোচ্ছে।
না স্যার মানে তখন......
চিনতে না। এখন চিনে ফেলেছো।
হ্যাঁ স্যার।
বাসু আমার কীর্তিকলাপ দেখে হাসছে, মিত্রা হাসতে গিয়েও গম্ভীর হতে চাইছে, ওর মুখটা অদ্ভূত লাগছে।
চল তাহলে।
তুই ওকে বলে দে।
গাড়িতে উঠি আগে।
আমরা বেরিয়ে এলাম , দুচারজন ডাক্তার পেছন পেছন এসেছিলো গাড়ির কাছ পর্যন্ত, আফটার অল মালকিন বলে কথা।
মিত্রাকে বললাম, তুই তো গাড়ি চালাতে পারিস, এই টুকু রাস্তা তুই চালিয়ে নিয়ে চল।
মিত্রা আমার দিকে একবার কট কট করে তাকালো।
পেছন দিকে বসার জায়গা রেখেছিস।
মিত্রা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো।
রবীন বাসুর বাইকে বসুক আমি সামনের সিটে বসি, তুই ড্রাইভ কর।
মিত্রার চোখে দুষ্টুমির হাসি খেলে গেলো। বাসু আমার দিকে একবার চাইল।
আগে গাড়িটা ঠিক ঠাক রাখতে হবে, তারপর সব , বুঝলি বাসু। আর একটা কথা আনাড়ি ড্রাইভার, একটু আস্তে চালাস।
বাসু হাসলো।
মিত্রা গাড়ি স্টার্ট দিলো। বাসু সামনে সামনে যাচ্ছে আমরা পেছনে।
মিত্রা আজ একটা ঢাকাই জামদানী পরেছে, লাইট তুঁতে কালারের, তারসঙ্গে ম্যাচিং করে তুঁতে কালারের ব্লাউজ ওকে দারুন লাগছে, অনেক দিন পর ওকে শাড়ি পরা অবস্থায় দেখলাম, মিত্রার চোখ সামনের দিকে, সব জানলার কাঁচ বন্ধ, ভেতরটা বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা।
এসিটা চালাবো।
চালা।
মিত্রা সুইচ অন করলো।
টেঙ্কি ভরে এনেছিস তো।
কেনো।
এখানে ২৫ কিমির আগে কোন পেট্রল পাম্প পাবি না।

সে কি রে।
 
গ্রাম দেখার সখ এবার মিটে যাবে, আর আসতে চাইবি না।
তোকে বলেছে। রবীন আছে, ঠিক ব্যবস্থা করবে।
পেছনে এত কি নিয়ে এসেছিস।
একটা আমার জামা কাপড়ের ব্যাগ, আর একটায় ক্যামেরা, আর তোর বাজি।
এতো কি বাজি নিয়ে এসেছিস, বাজার শুদ্ধু তুলে এনেছিস নাকি।
আমি জানি না যা, ইসমাইলকে বললাম, ওর কোন পরিচিত দোকান থেকে নিয়ে এসেছে।
কত টাকার নিয়ে এসেছিস।
পয়সাই দিই নি।
তার মানে।
ইসমাইল বললো, ম্যাডাম ফিরে এসে দেবেন। ওরা এখন দোকান বন্ধ করছে।
আমি সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। গাড়িটা যে চলছে বুঝতেই পারছিনা, কোন জার্কিং নেই, খুব স্মুথ চলছে, মিত্রার হাতটাও ভালো। বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। বাইরে রোদ ঝলমল করছে, কটা বাজে, রোদ দেখে মনে হচ্ছে দুটো কিংবা আড়াইটে।
কিরে বললিনাতো আমায় কেমন লাগছে।
মিত্রার দিকে তাকালাম, ফিচলেমি করার খুব ইচ্ছে হচ্ছে, কিন্তু ও গাড়ি চালাচ্ছে, ওর তলপেটের অনেকটা অংশ নিরাভরণ আমার চোখ ওদিকে চলে গেলো, সুপার্ব, কামরে খেতে ইচ্ছে করছে।
ধ্যাত।
মিত্রা ব্রেক কষলো। যেখানে ব্রেক কষলো গাড়ি সেখানেই থামলো। আমার কপাল সামনের বোনেটে ধাক্কা খেলো। মাথায় হাত দিয়ে মুখ তুললাম, দেখলাম বাসু বাইক থামিয়ে নেমে আসছে, রবীন ওর পেছন পেছন। মিত্রা আমার হাত চেপে ধরেছে। কানে এলো।
কি হলো।
আরে ওই ছাগলের বাচ্চাটা।
ম্যাডাম খুব সাবধানে, এখানে গাড়ি চাপা দিলে কেশ খাবেন না, তবে ছাগল চাপা দিলে আপনার জরিমানা হবে। তোর আবার কি হলো।
আর বলিশ না প্রাণ হাতে নিয়ে এই সিটে বসেছি।
আমি এমন ভাবে বললাম, সবাই হেসে ফেললো, চালা , পরেছি যবনের হাতে খানা খেতে হবে সাথে।
কি বললি।
না কিছু নয়।
খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু।
ওরা বাইক স্টার্ট দিলো। মিত্রা গাড়ি চালাচ্ছে।
খুব লেগেছে।
একটুও না, বোনেটটা আমার কপালে চুমু দিলো।
ঠিক আছে চল গিয়ে বরফ লাগিয়ে দেবো।
বরফ ! কোথায় পাবি।
কেনো, ফ্রিজ নেই।
ফ্রিজ, এমন ভাবে বললাম মিত্রা হেসে ফললো।
সত্যি বল না।

এখানে ফ্রিজ বলতে পানাপুকুরের পচা পাঁক।
তুই সত্যি.....
নিজের চোখে দেখবি চল না। অনি সত্যি না মিথ্যে।
কি করবো বল ছাগল বাচ্চাটা লাফাতে লাফাতে.....
দেখ এখনো আমি বিয়ে করি নি, বাবা হই নি.....
বিয়ে করার অত শখ কিসের, পরের বউকে নিয়ে রয়েছো, তাতেও শখ মিটছে না।
যতই হোক পরের বউতো।
মিত্রার গলাটা গম্ভীর হয়ে গেলো, নিজের বউ করে নে।
চুপ চাপ থাকলাম, মিত্রার চোখ সামনের দিকে, চোখে জল টল টল করছে। আমি ওর সিটে হাত রাখলাম, এরকম করলে এনজয়টাই নষ্ট হয়ে যাবে।
মিত্রার হাত স্টিয়ারিংয়ে একবার ডান দিক একবার বাঁদিক করছে।
তুই ওরকম বললি কেনো।
আচ্ছা বাবা আর বলবো না।
চকে এসে বাসু দাঁড়ালো, আমরাও দাঁড়ালাম। চা খাওয়া হলো, মিত্রা তাকিয়ে তাকিয়ে চারিদিক দেখছে, বিস্ময়ে ওর চোখ বিচ্চুরিত, বাঁশের তৈরি বেঞ্চে বসে চা খেলাম, মিত্রা এক চুমুক দিয়ে আমার দিকে তাকালো, সত্যি অনি তোর কথা অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। আমি ওর দিকে চেয়ে হাসলাম, রবীন একটু দূরে দূরে, বাসু বললো, ম্যাডাম এবার রবিন চালাক, আর মিনিট পনেরোর পথ। মিত্রা বললো কেনো আমি পারবো না। পারবেন , তবে রবিন চালাক। তাই হোক। মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তুই কোথায় বসবি।
আমি বাসুর পেছনে বসছি।
ওর মন পসন্দ হলো না। মুখ দেখেই বুঝতে পারছি, কিন্তু মুখে কিছু বললো না। রবীন স্টিয়ারিংয়ে বসলো। আমরা আধাঘন্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম। বাসু মনে হয় ফোন করে সব ঠিক করে রেখেছিলো। গাড়ি থামতেই সবাই ঘিরে ধরলো। আমি বললাম বাসু ব্যাগগুলো পৌঁছোবার ব্যবস্থা করতে হবে।
ও তোকে ভাবতে হবে না। বরং চল তোদের পৌঁছে দিয়ে আসি।
তোর বাইকে তিনজন। মিত্রার দিকে তাকালাম। মিত্রা ঘার নাড়ছে। যাবে না। রবীন বললো ম্যাডাম আমাকে যদি ছুটি দেন কালকেই চলে আসবো, মিত্রা বললো, ছুটি মানে, তুমি কোথায় যাবে, রবীন বললো, পাশের গ্রামেই আমার আত্মীয়ের বাড়ি, তাছাড়া এখান থেকে গাড়ি আর কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না, আপনাকে পায়ে হেঁটেই....
আমি হাসলাম, ঠিক আছে যাও, কালকে সকালে চলে আসবে কিন্তু। মিত্রা আমার দিকে তাকালো।
এখান থেকে মিনিট কুড়ি হাঁটতে হবে।
তাই চল।
রাসপূর্নিমার মেলা বলে আজ এই জায়গাটা ফাঁকা ফাঁকা। না হলে এতোক্ষণ ভির হয়ে যেতো।
আমরা হাঁটতে আরম্ভ করলাম, সত্যি মিনিট কুড়ি লাগলো। বাসু তার আগেই বাড়িতে সব পৌঁছে দিয়েছে, কাকা ওকে জিজ্ঞাসা করেছে, এত ব্যাগ বাগিচা কার, বাসু কোন জবাব দেয় নি, চলে এসেছে, রাস্তায় আমার সাথে দেখা হতে খালি বললো, সারা পারা মনে হয় রাষ্ট্র হয়ে গেছে। তোর সারপ্রাইজ রসাতালে যাবে।
তুই তাড়াতাড়ি খেয়ে দেয়ে আয়।
ঠিক আছে।
দুজনে মিলে খামারে এসে দাঁড়াতেই কাকা, কাকীমা, সুরমাসি ছুটে এলেন। সবাই অবাক মিত্রাকে দেখে, মিত্রা সবাইকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলো। কাকা চেঁচামিচি আরম্ভ করে দিয়েছে, আমি বললাম, তুমি থামো, ওর জন্য তোমায় ব্যস্ত হতে হবে না, কাকীমা ছুটে গিয়ে সরবত নিয়ে এলেন, এক হুলুস্থূলুস ব্যাপার। মিত্রা আরাম করে বেঞ্চিতে বসেছে, পায়ে ধুলো জড়িয়ে আছে। আমি বললাম, দেরি করিস না, বেলা গড়িয়ে গেছে, হাত-মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিই, মেলায় যেতে হবে তো। মিত্রা চোখের ইশারায় বাথরুমের খোঁজ করছে, বাধ্য হয়ে বললাম, চল আমার ঘরে।
আমি ওর ক্যামেরার ব্যাগ আর জামাকাপরের ব্যাগ হাতে নিয়ে, ও বাড়িতে গেলাম, মিত্রা আমার পেছন পেছন। আমি ওপরের ঘরে এলাম, লাইট জালালাম, মিত্রা ঘরে ঢুকেই, বললো আগে বাথরুম কোথায় বল।
বাথরুম!
ন্যাকা আমার তলপেট ফেটে যাচ্ছে।
এই গ্রামের গোটাটাই বাথরুম। তুই যেখানে খুশি বসে ব্যবহার করতে পারিস।
সত্যি বল না, অনি।
সত্যি বলছি।
আমি কষ্ট পাচ্ছি , তুই মজা করছিস।
আচ্ছা আয়, আমার সঙ্গে, নিচে নেমে এসে পেছনের খিড়কি দিয়ে পুকুর ধারে এলাম, এখানে কর।
ধ্যাত।
তোকে তো কালকে বলেছিলাম।
তুই মিথ্যে বলেছিলি। ওদিক দিয়ে যদি কেউ দেখে ফেলে, ওদিকটা জনমানব শূন্য, পুকুরের ধারেই খাল, যার পাশ দিয়ে বাঁধে বাঁধে এতোক্ষণ এলি।
আচ্ছা তুই ভেতরে যা।
কেনো।
যা না।
মিত্রা আমাকে ঠেলে ভেতরে ঢুকিয়ে দিলো, খিড়কি দরজা ভেজিয়ে দিল। আমি ওপরে চলে এলাম, ব্যাগ গুলো ঠিক ঠাক ভাবে গুছিয়ে রাখলাম।
অনি ।
কি হলো।
কোথায় তুই।
এই তো ওপরে।
তুই শিগগির নীচে আয়।
দৌড়ে নীচে এলাম, মিত্রা খিড়কি দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে কাঠ।
কি হয়েছে।
ওই দেখ। আঙুল দিয়ে নিচটা দেখাল, দেখলাম একটা গিরগিটি ওর দিকে জুল জুল করে তাকিয়ে আছে। আমি হেট করতেই গিরগিটিটা দৌড় লাগালো, মিত্রা পরি কি মরি করে আমার বুকে এসে ঝাঁপিয়ে পরলো। থর থর কাঁপছে। আমি হাসছি।
তুই হাসছিস।
কি করবো কাঁদবো।
ধ্যাত।
সিনেমায় গ্রাম দেখো, এবার অরিজিন্যাল গ্রাম দেখো।
অনি ও অনি। কাকীমার গলা।
চল কাকীমা ডাকছেন। হ্যাঁ যাই কাকীমা।
সাবানটা নিয়ে নে , হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেয়ে নিই।
কি খাওয়াবি।
পান্তা আর চিংড়িমাছের টক। খাবি তো।
হ্যাঁ। কোন দিন খাই নি তো।
খাস নি । খাবি।
কেমন খেতে।
খলেই জানতে পারবি।

ওপরে এলাম, ও ব্যাগ খুলে, ওর লিকুইড সোপ বার করলো। কাপর খুলবো না।
 
এখন নয় খাওয়া দাওয়ার পর।
পেন্টিটা ভিজে গেছে।
উঃ , তোকে নিয়ে আর পারা যাবে না।
তুই আসতে বললি কেনো।
আমি বললাম কোথায় , তুই তো নাচলি।
খুলে ফেলি।
খোল।
তুই ওদিকে তাকা।
কেনো, দেখে ফেলবো।
উঃ , তাকা না।
আমি পেছন ফিরলাম, মিত্রা কাপর তুলে পেন্টি খুললো, রাখবো কোথায়?
ওই তো আলনাটায়।
কেউ দেখে ফেলে যদি।
দেখলে কি হবে।
তুই না কিছু বুঝিস না।
বোঝার দরকার নেই। চল।
মিত্রা কাপরটা একবার ঠিক ঠাক করে নিলো। ওকে নিয়ে এ বাড়িতে এলাম, কারা যেনো এসেছে, আমাদের দেখলো, কাকা চেয়ারে বসে আছেন, আমরা ভেতর বাইর (বাড়ির ভেতরের উঠান) দিয়ে পুকুর ঘাটে এলাম, সুরমাসি, কাকীমা পেছন পেছন এলেন।
পুকুরে নামবি , না জল তুলে এনে দেবো।
পুকুরে নামবো।
সুরমাসি বললেন, ওকে বালতি করে জল তুলে এনে দে অনি, হরকা আছে কোথায় পরে যাবে। লাগবে এখন।
লাগুক।
তুই রাগ করছিস কেনো।
সুরমাসি হাসছেন।
সখ হয়েছে যখন, নামুক। কিরে নামবি।
হ্যাঁ, তুই হাতটা ধর।
ওই নিচের ধাপিটায় উবু হয়ে বসতে পারবি তো।
পারবো।
দেখ ওইটুকু জায়গা, খুব স্লিপারি।
আমি সাঁতার জানি।
আমি মিত্রার হাত ধোরলাম, মিত্রা আস্তে আস্তে নামছে।
জুতোটা খুলিস নি।
কেনো।
ওটা কি জলে ভেঁজাবি।
খুলে আসি তাহলে।
যা।
তুই আয়।
আমি কি তোর সঙ্গে ওপর নিচ করবো।
আচ্ছা বাবা আমি যাচ্ছি।
ওপরে উঠতে গিয়ে মিত্রা পা হরকালো, কাকীমা ওপর থেকে ধর ধর ধর করে চেঁচিয়ে উঠলেন, আমি কোন প্রকারে ওকে জাপ্টে ধরে টাল খেয়ে পুকুরে পরলাম, আমার হাঁটু পর্যন্ত জলে ভিজলো। ও চোখে হাত ঢেকে আছে। নীপা ওপর থেকে তার স্বরে চেঁচাচ্ছে, বুদ্ধি দেখো, নিজে পুকুরে ঠিক মতো নামতে পারে না, মিত্রা দিকে সঙ্গে করে নেমেছে। সম্বিত ফিরতে পুকুর পারে তাকিয়ে দেখলাম, অনাদি, বাসু, চিকনা, পচা, পাঁচু, সঞ্জয়। নিপা ঘাটে নেমে এসেছে। ওরা সবাই হো হো করে হাসছে, নীপা প্রথমে একচোট আমায় নিলো, তারপর মিত্রাকে আমার কাছ থেক ছিনিয়ে নিয়ে বললো, সত্যি অনিদা তোমার কোন বুদ্ধি নেই। মিত্রাদিকে নিয়ে কখনো এই পিছল ঘাটে নামে। আমি চুপচাপ । মিত্রার দিকে তাকালাম, ও চোখ মেরে হাসছে। মাথা নীচু করে, মুখ-হাত-পা ধুয়ে ঘাট থেকে উঠে এলাম।
অনাদির দিকে তাকিয়ে বললাম, কখন এলি।

অনাদি হাসছে।
 
চিকনা বললো, তোর সারপ্রাইজটা জব্বর দিয়েছিস, বলে চোখ মারলো।
ঘাটের দিকে তাকালাম, নীপা মিত্রাকে নিয়ে শেষ ধাপিতে দাঁড়িয়ে । আমি বাড়ির ভেতরে এলাম, আমার পেছন পেছন ওরাও চলে এলো।
বাইরের বারান্দায় এসে সবাই বসলাম, অনাদি বললো, তোর পেটে পেটে এতো কিছু ছিলো আগে জানাস নি কেনো।
জানালে মজাটাই নষ্ট হয়ে যেতো।
তা যা বলেছিস। তুই ম্যাডামকে পুকুরে নামাতে গেলি কেনো।
আমি নামাতে গেছি, কাকীমা বারন কোরলো, আমি বারন কোরলাম, বোললাম বালতি করে জল তুলে দিচ্ছি, না আমি নামবো, নাম। মাঝখান থেকে.......
চিকনা চোখ মেরে হো হো করে হেসে ফেললো।
তোরা সবাই চলে এলি ওখানটা সামলাচ্ছে কে।
লোক আছে।
তোরা খবর পেলি কি করে বলতো।
চিকনা প্রথমে খবর পেয়েছে।
চিকনা।
হ্যাঁ।
বাসুর দোকানের ছেলেটা ফোন করেছিলো, চিকনাকে।
তোরা।
চিকনা নীপাকে নিয়ে রুদ্ধশ্বাসে বাইক নিয়ে বেরোল দেখে, বাসুকে ফোন করলাম, কি হয়েছে রে। ও সব বললো। সবাই চলে এলাম।
গান্ডু। বাসুর দিকে তাকিয়ে বললাম। বাসু হাসছে।
চিকনা আমার পা ধরে ফেললো, গুরু আর একবার বলো।
কি।
ওই যে যেটা বললে।
কি বলবি তো।
ওই যে বাসুকে বললে না।
ধ্যাত।
আর একটাতো এখনো বলি নি। বাসু বললো।
বাসুর দিকে কট কট করে তাকালাম। বাসু হাসছে।
অনাদি বললো, কি রে বাসু।
ওটা এখন বলা যাবে না।
বলতেই হবে।
না।
চিকনা বাসুকে দুহাতে জাপ্টে ধরলো, পাঁচু পচা ওর পেন্টের বোতাম খুলতে আরম্ভ করছে, সঞ্জয় বাসুকে কাতাকুতু দিচ্ছে, বাসু মাটিতে পরে গিয়ে ছট ফট করছে, ওর প্রাণ যায়, বুঝলাম বাসু আটকে রাখতে পারবে না, সে এক হুলুস্থূলুস কান্ড। বাধ্য হয়ে বাসু অনাদিকে কানে কানে বলে দিলো। অনি ওই কোম্পানীর একজন মালিক। অনাদি ছুটে এসে, আমাকে কোলে তুলে নাচতে শুরু করেছে, ওদের পাগল প্রায় অবস্থা দেখে, কাকা ওদিক থেকে চেঁচিয়ে উঠলেন , ওরে তোরা করছিসটা কি বলতো, তোদের বয়স দিনে দিনে বারছে না কমছে। অনাদি আমাকে মাটিতে নামিয়ে রেখে, কাকার কাছে ছুটে গেলো, কানে কানে কাকাকে বলতেই, কাকা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন, আবার বসে পরলেন। নীপা ভেতর থেকে ছুটে এসেছে, কি হয়েছে গো চিকনা দা। মিত্রাও নীপার পেছন পেছন এসেছে, তার পেছনে কাকীমা, সুরমাসি। চিকনা নীপার কানে কানে বললো খবরটা। নীপা ছুটে এসে আমাকে জরিয়ে ধরলো। কানে কানে বললো তোলা থাকলো। আমি হাসলাম, তারপর ছুটে গিয়ে মিত্রাকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে চুমু খেতে আরম্ভ করলো। কাকা উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ওরে ও হচ্ছে নীলকন্ঠ।
আমি কাকার কাছে গিয়ে প্রণাম করলাম, তোমার অপারেশনের দিন হয়েছে।
আমি জানি রে জানি। নাহলে তুই ওই সময় আমাকে ছেরে যেতিস না।
মিত্রা এবার ব্যাপারটা ধরতে পেরেছে, ওর চোখে খুশির হাওয়া। ও আমার পাশে এসে দাঁড়ালো, কাকাকে প্রণাম করলো। কাকা আমাদের দুজনকে বুকে জরিয়ে ধরলেন।
কাকীমা, সুরমাসি ব্যাপারটা ধরতে পারেন নি। তবে কিছু একটা ঘটেছে, সেটা জানতে পারলেন।
অনাদি মিত্রার কাছে গিয়ে বললো, এর জন্য আমরা কালকে একটা পার্টি দেবো।
মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।

পান্তা খাওয়া নিয়ে নীপার সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বাক বিতন্ডার পর মিত্রা হাসতে হাসতে বললো, নীপা আমি অনিকে বলেছিলাম, ওটা খাবো। নীপা মিত্রার কথা শুনে ব্যাপরটায় ইতি টানলো, তবু বলতে ছাড়লো না, তুমি আমাদের বাড়িতে প্রথম এলে, তোমায় গরম ভাত না খাইয়ে পান্তা খাওয়াবো। মিত্রা হাসলো, আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি নাকি। এখন তো থাকবো কয়েক দিন।
তাই।
হ্যাঁ। এসেছি ওর ইচ্ছেয়, যাবো আমার ইচ্ছেয়।
পান্তা খেতে বসলাম। মিত্রা বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে খেলো, তারপর সুরমাসির দিকে তাকিয়ে বললো, আর নেই। সুরমাসি লজ্জা পেয়ে গেলো, অভ্যাস নেই মা, বেশি খেলে শরীর খারপ করবে। মিত্রা হেসে ফেললো।

খাওয়া শেষে আমি উঠে বাইরের বারান্দায় চলে এলাম, অনাদিরা বসে চা খাচ্ছে, কোন ফাঁকে মিত্রা চা করে দিয়ে গেছে, বারান্দার ঘরিতে দেখলাম, চারটে দশ। আনাদির পাশে বসে বললাম, মিত্রা এক পেটি বাজি নিয়ে এসেছে। তুই সব ষঢ়যন্ত্র করেই ব্যাপারটা ঘটিয়েছিস।
বিশ্বাস কর, কাল শ্মশানে বসে মিত্রার সঙ্গে কথা হলো, ও আসতে চাইলো, বললাম আমি তো চশমা আনতে যাবোই তুই চলে আয়। বাজির ব্যাপারটা আমি আনতে বলেছি। কেনো? ছোট বেলায় এই মেলাতেই বাজি ফাটানোর জন্য কত কথা শুনেছি, তাই মিত্রাকে আনতে বলেছিলাম, এখানকার জন্য কিছু রেখে দে, বাকিটা মেলায় নিয়ে গিয়ে বাচ্চাদের দিয়ে ফাটা।
সকলে চুপ করে গেলো।
অনাদি চুপ করে আছে। না জেনে তোকে হার্ট করে ফেলেছি।
দূর পাগল। আমি এক সহজে হার্ট হই না। তবে বাঁচতে পারতাম না।
ঠিক আছে ঠিক আছে তুই যা বলবি তাই হবে। চিকনা।

চিকনা কাছে এলো। অনাদি ওকে সব বুঝিয়ে দিলো।
 
হ্যাঁরে যেতে হবে তো।
মিত্রা, নীপা গেলো কোথায়।
ও বাড়িতে। পচা বললো।
কোনদিক দিয়ে গেলো।
পেছন দিক দিয়ে।
হ্যাঁরে নীপা নাচছে না কি করছে যেন।
চিকনা বললো হ্যাঁ।
কটায় আরম্ভ।
বাঙালীর কথা ৬টা বলেছে, সাতটায় শুরু হবে।
শেষ হবে কখন।
রাত একটা ধরে রাখ।
শোব কখন।
শুতেই হবে তোকে।
আমি চিকনার কথা শুনে হেসে ফেললাম। নীপা বারান্দা থেকে আমার নাম ধরে তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। আমি পচার দিকে তাকিয়ে বললাম, দেখতো, কেনো চেঁচাচ্ছে। পচা গুম হয়ে ফিরে এলো। আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, কি হলো। তোর জন্য ঝার খেলুম।
আচ্ছা তোরা কিছু বলতে পারিস না।
আমরা।
কেনো।
চিকনা হাসছে।
হাসছিস কেনো।
এখানে যে কটাকে দেখছিস, সেগুলো ছাড়া, সবাই কম বেশি ওর কাছে ঝাড় খায়, দিবাকরকেতো একদিন ত্থাপরই কষিয়েছিলো।
কেনো।
সে অনেক ব্যাপর।
অনাদি গ্রামসভা ডেকে মিটমাট করে। নাহলে তো দিবাকরকে ও গ্রামছাড়া করে দিতো।
আনাদি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, এখনি এই সব কথা আলোচনা করতে হবে। থাক না।
আচ্ছা দাঁড়া আমি ঘুরে আসছি।

আমি ওপরে গেলাম। নীপা , মিত্রা দুজনে শাড়ি পরেছে, এত সুন্দর লাগছে, চোখ ফেরাতে পারছি না। আমাকে দেখেই নীপা বললো, এই পেন্ট জামাটা পরে ফেলো। আমি একটু আসছি। নীপা বেরিয়ে গেলো। আমি আজ কোন কথা বললাম না। মিত্রার দিকে তাকালাম, দারুন মাঞ্জা দিয়েছিস, আজ রাতে তোকে চটকাবো।
এখন চটকাস না, প্লিজ সাজগোজটা নষ্ট হয়ে যাবে।
দে কোনটা পরতে হবে।
খাটের ওপর আছে।
হঠাত হৈ হৈ শব্দ।
কি হলো বলতো।
ও তুই বুঝবি না।
আমি কোন কথা না বলে পেন্টটা খুললাম, মিত্রা এগিয়ে এলো,
একদম হাত দিবি না, নীপা এখুনি চলে আসবে,
আসুক আমার জিনিসে আমি হাত দেবো।
খাটে বসে , জিনসের পেন্টটা পরলাম, সেদিন মিত্রা যেটা কিনেছিলো, গেঞ্জিটাও লাগালাম। খারাপ লাগছে না, আসতে পারি। নীপার গলা।
আসুন।
ঢুকেই ফস করে আমার গায়ে কি ছিটিয়ে দিলো।
ইস এটাও সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিস। কে দেখবে বলতো।
দেখার অনেক লোক আছে। চলোনা মেলায়। নীপা বললো।
তাড়াতাড়ি করো। ওরা বেচারা আমাদের জন্য বসে আছে। মেলায় ওদের অনেক কাজ।
তুই যা পাঁচ মিনিটের মধ্যে যাচ্ছি।
মিত্রা ভুরুতে শেষ টান দিচ্ছে।
আমি নিচে চলে এলাম, চারিদিকে সেন্টের গন্ধ ম ম করছে। ওই জন্য তোরা তখন চেঁচাচ্ছিলি।
তুই জানিস অনি, মেয়েটা আজ আমাদের মারবে। একটু ভালো করে কান পাত, শুনতে পারবি, নাম ধরে ধরে কেমন ডাকছে।
কে আছে ওখানে।
তুই চিনতে পারবি না, শান্তনু বলে একটা ছেলে আছে।
রথ কখন বেরোবে।
এই সাতটা নাগাদ।
অনেক দিন রথের দড়িতে হাত দিই নি, চিকনা ঠাকুরকে একটু মিষ্টি কিনে দিস।
কেনো তুই যাবি না।
আমি হেসে ফেললাম।
মিত্রা , নীপা নীচে নেমে এলো। ওদের চোখের পাতা আর নড়ছে না। সবাই অবাক হয়ে ওদের দেখছে। চিকনা আমার হাত ধরে দাঁতে দাঁত চিপে বললো, অনি , আমি ম্যাডামের বডি গার্ড হবো।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি কোথায় থাকবো।
নীপা দেখে ফেলেছে।
চিকনাদা কি বলছে গো অনিদা।
তোমরা দারুন মাঞ্জা দিয়েছো তাই।
নীপা একবার কট কট করে চিকনার দিকে তাকালো। চিকনা ইশারা করে দেখালো, মেলায় গিয়ে গলাটা কাট। নীপা হেসে ফললো।
মিত্রা আমার পাসে এসে বল। ঠিক আছে তো।
আমি হাসলাম।
চল। আমরা তো রেডি। আমার ব্যাগ দুটো নিয়ে যেতে হবে।
কিসের ব্যাগ।
ক্যামেরা আর , সাজগোজের।
কেনো।
আমি সিডি বানাবো।
ব্যাটারি শেষ হয়ে গেলে।
কেনো কারেন্ট নেই।
মেলায় হ্যাচাক পাবি। কারেন্ট পাবি না।
ও অনি থাক না। অনাদি বললো।
দেখেছো অনাদি ও আমাকে কেমন করে।
ঠিক আছে চলুন ম্যাডাম আপনার কোন অসুবিধে হবে না, সব ব্যবস্থা করে দেবো।
চিকনা , মিত্রা আর নীপাকে নিয়ে তুই যা।
আমি! চিকনা বললো।
হ্যাঁ।
না।
তুই যা। আমি বরং ব্যাগ বই।
ওরা আবার গেলো কোথায়।
ভেতরে গেলো।
সত্যি অনি তোর ধৈর্য আছে। বাসু বললো।
আরো নিদর্শন পাবি , চল একবার মেলায় , দেখতে পাবি।
অনিদা কি বলছে গো আনাদিদা। নীপা বললো।
কিচ্ছু না।
আমি মিত্রাকে বললাম, তুই অনাদির বাইকের পেছনে নীপাকে সঙ্গে করে চলে যা।
মিত্রা কিছুতেই বাইকে উঠবে না।
অগত্যা অনাদিকে বললাম, তোরা এগিয়ে যা।
হ্যাঁরে ট্রলি পাঠাবো।
যাবে।
আমার বাড়ির সামনে থেকে যাবে।
দূর না থাক, তোরা যা, আমি হেঁটে যাচ্ছি।
অগত্যা ওরা বেরিয়ে গেলো।
আমি বাসু আর মিত্রা হাঁটতে আরম্ভ করলাম।
বাসুর বাইক পাঁচু চালিয়ে নিয়ে গেছে।
সন্ধ্যে হয় নি, তবে বেশি দেরি নেই, ঘরির দিকে তাকালাম, পাঁচটা পাঁচ। প্রায় আধ ঘন্টার পথ। তার মান মেলায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। মিত্রাকে দেখাতে দেখাতে নিয়ে যাচ্ছি, এইটা বড়মতলা, ওই যে সেই পেয়ারা গাছ। ওটা তাঁতী পারা, ওটা চন্দ্রের পারা, ওই দিকটা হাঁড়ি পারা, ওই যে দূরে বোনটা দেখছিস, ওইটা দীঘা আড়ি। মিত্রা আমার হাতটা শক্ত করে ধরলো।
কাল আমায় নিয়ে আসবি।
আসবো।
তোর মুখ থেকে গল্প শুনেছি এতদিন , এবার চাক্ষুষ দেখবো। হ্যাঁরে কতোক্ষণ লাগবে যেতে।
বাসুর দিকে তাকালাম, হ্যাঁরে বাসু, এভাবে হাঁটলে কতোক্ষণ লাগবে।
আধঘন্টা।
আমি বললে বিশ্বাস করতিস না।
তুই সব সময় হেঁয়ালি করিস তাই বিশ্বাস করতাম না।
বাসু হাসলো।

হ্যাঁগো বাসু , জানোনা তোমার বন্ধু টিকে। আমি দশ বছর ওর সঙ্গে মিশছি আমি জানি।
 
দীঘা আড়ির কাছে আসতে একটা হৈ হল্লা শুনতে পেলাম, মিত্রাকে বললাম, ওই দূরে আলোর রোশনাই দেখতে পাচ্ছিস।
হ্যাঁ।
ওইটা মেলা।
এতোটা যেতে হবে এখনো।
হ্যাঁ।
মেলায় গিয়ে একটা ঠান্ডা খাওয়াস।
ঠান্ডা!
বল সেটাও পাওয়া যাবে না। কঁত কঁত করে খালি জল গিলতে হবে।
ঠিক আছে আপনি চলুন ব্যবস্থা করে দেবো। বাসু বললো।
দেখ, তোর মতো ঢেপসা নয়।
বাসু হাসলো।
আমি ওর হাতটা একটু চিপে দিলাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো।
মেলার কাছাকাছি এসে, সন্ধ্যে হয়ে গেলো। আমি টর্চ জাললাম, মিত্রা আমার হাত শক্ত করে ধরলো।
উঃ।
কি হলো।
পায়ে কি জড়িয়ে গেছে।
মিত্রা তারস্বরে চেঁচাচ্ছে, আমাকে জরিয়ে ধরে, আমি ওর পায়ে টর্চের আলো ফেললাম, দেখি একটা খরের টুকরো, নীচু হয়ে জুতোর ফাঁক দিয়ে খড়ের টুকরো বার করলাম। বাসু হাসছে। তোকে নিয়ে আমর বড় জ্বালা।
কি করবো, আমি ইচ্ছে করে জড়িয়েছি।
ঠিক আছে চল। মিত্রা আমার বাম হাতটা চেপে ধরে আছে, ওর সুডৌল বুকের স্পর্শ পাচ্ছি। আস্তে করে বললাম, সামনে বাসু আছে।
থাক।
কি ভাবছে।
ভাবুক। এরকম অন্ধকার রাস্তায় এলি কেনো।
তোর জন্য লাইট পাবো কোথায়।
অনাদিকে বল, ও তো পঞ্চায়েত।
শেষের কথাটা বাসুর কানে গেলো। বাসু ঘুরে একবার হাসলো। ম্যাডাম দেখছেন তো আমরা কি ভাবে বেঁচে আছি।
এই অন্ধকারে অনি কালকে একা শ্মশানে ছিলো।
ওরে বাবা।
কি হলো।
বাসু আবার থমকে দাঁড়ালো।
দেখ পায়ে কি ঢুকেছে।
আমি আবার ওর পায়ের কাছে বোসলাম, চোর কাঁটা। শাড়ির পারটা চোর কাঁটায় ভরে গেছে। ওকে কিছু বললাম না, চল এসে গেছি, মেলায় গিয়ে ব্যবস্থা করছি।
কি বলবি তো।
উঃ পা ঝারিস না। এ গুলো বার করতে সময় লাগবে।
বলনা কি আছে।
চোর কাঁটা।

বাসু ফিক করে হাসলো। এই অন্ধকারেও মিত্রার মুখটা দেখতে পেলাম, পাকা আপেলের মতো রং।
মেলার মুখে ওরা সবাই দাঁড়িয়েছিলো। আমরা যেতেই চিকনা বললো, নীপার হুকুম, ম্যাডামকে গ্রিন রুমে নিয়ে যেতে হবে।
আমি বললাম, তুই নিয়ে চলে যা।
তুইও চল। মিত্রা বললো।
আমি ওই মহিলা মহলে গিয়ে কি করবো। তুই সেলিব্রেটি, দেখনা ওখানে গিয়ে মালুম পাবি।
মিত্রা এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো, বাসু চিকনা পর্যন্ত হেসে ফেললো।
ঠিক আছে চল, হ্যাঁরে চিকনা আর কে কে আছে।
ওই সব মিউজিসিয়ান মেকআপ ম্যান এই সব।
মিত্রার ক্যামেরার ব্যাগ কোথায়।
ওখানে , নীপার জিম্মায়।
কয়েকটা পাঁপড় আর জিলিপি নিয়ে আয় না।
চল সব ব্যবস্থা আছে।
তুই কি রাক্ষস। মিত্রা বললো।
কেনো।
এই তো এক পেট ভাত গিলে এলি।
ভাত নয় পান্তা। এতোটা যে হাঁটালি।
আমি হাঁটালাম কোথায়, তুইতো হাঁটালি।
তুই চিকনার বাইকের পেছনে বসলেই হাঁটতে হতো না। তার ওপর উপরি বোনাস, দুবার পা ধরালি।
অনি খুব খারপ হয়ে যাবে বলছি, তুই যা নয় তাই বলছিস।
আমাদের দুজনের কথা বার্তায় চিকনা বাসু হাঁসতে হাঁসতে প্রায় মাটিতে গড়িয়ে পরে।
স্টেজের পাশে, গ্রিনরুম, চিকনা পর্দা সরিয়ে নীপা বলে চেঁচাতেই নীপা ছুটে এলো। মিত্রাকে হিড় হিড় করে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলো।আরে থাম থাম, শাড়িতে পা জড়িয়ে উল্টে পরে যাবো, কে কার কথা শোনে, নীপা আজ হাতের চাঁদ পেয়েছে। আমি আমের আঁটি, আমে দুধে মিশে গেছে। আঁটি গড়াগড়ি খাচ্ছে। কি আর কোরবো, পকেট থেকে সিগারেট প্যাকেট বার করে চিকনাকে একটা দিলাম, বাসুকে একটা দিলাম, নিজে একটা ধরালাম। একটা ছেলে একটা স্প্রাইটের বোতল নিয়ে এসে হাজির, বাসুর দিকে তাকালাম, এটা কি।
ম্যাডামের জন্য।
তোর কি মাথা খারাপ।
কেনো।
ও কি একা খাবে নাকি।
তাহলে ।
এখুনি হুকুম করবে। আর নেই , ওদের জন্য নিয়ে আয়।
তাহলে।
আগে স্টক দেখ কত আছে। তারপর পাঠাবি।
ম্যাডাম বললো ঠান্ডা খাবে।
এমনি সাদা জল নিয়ে আয়।
তুই শালা একদম....... বাসু বললো।
চিকনা খিল খিল করে হেসে ফেললো। বেশ জমেছে মাইরি।
বাসু অগত্যা ছেলেটিকে বললো, কটা বোতল আছে।
বড় বোতল গোটা কুড়ি হবে।
ঠান্ডা হবে তো।
বরফ দেওয়া আছে।
ছোট বোতল কি আছে রে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
থামসআপ , স্প্রাইট , পেপসি......

একটা স্প্রাইটের ছোট বোতল নিয়ে আয়।
 
ছেলেটি চলে গেলো।
এখান থেকেই বুঝতে পারছি মিত্রার প্রাণ ওষ্ঠাগত। সত্যি কথা বলতে গেলে আজ ও-ই এই মেলার সেলিব্রিটি। অনেক বড় বড় আর্টিস্ট আমাদের কাগজে স্থান পাওয়ার জন্য সম্পাদককে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যায়। আর আজ ও যেচে এই অজ পাড়াগাঁয়ের একটা মেলায় এসেছে। একটা ফোন করলেই কালকের কাগজের ফ্রন্ট পেজে একটা কলম লেখা হয়ে যাবে। কিন্ত কেউ জানেই না ও এখন এখানে। আমি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিলাম, ও বেশ সামলাচ্ছে, কেউ হাত মেলাচ্ছে ওর সঙ্গে , কেউ পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছে, কেউ জড়িয়ে ধরছে। নীপা খুশিতে ডগমগ, ওর মাইলেজ আজ অনেক বেরেগেছে।
বাসু দা নিয়ে এসেছি। দেখলাম আর একটা ছেলে।
তুই।
ও গিয়ে বললো, অনেক লাগবে তাই।
ভাল করেছিস।
যা, ওই ভদ্রমহিলাকে গিয়ে দিয়ে আয়। বাসু দেখিয়ে দিল।
ছেলেটি ভির ঠেলে ওর কাছে পৌঁছতেই মিত্রা গেটের দিকে তাকালো। বুঝলাম ও কিছু বলছে ওদের , তারপর এগিয়ে এলো।
বাসু ঠেলাটা বোঝ এবার।
বাসু আমার দিকে তাকিয়ে হসলো।
মিত্রা এদিকেই এগিয়ে আসছে, আমি মিটি মিটি হাসছি। কেছে এসেই, ওর প্রথম কথা, তোর মতো বেআক্কেলে ছেলে আর দেখি নি।
কেনো , আমি কি দোষ করলাম।
আমি কি একা একা খাবো।
এখানে তোর জন্য অনেক কষ্টে একটা বোতল জোগাড় করা হয়েছে।
সবার জন্য পারলে আন নাহলে আমার চাই না।
কি বাসু বাবু , পালস বিটটা দেখেছো।
মিত্রা আমার দিকে কট কট করে তাকিয়ে আছে।
ঠিক আছে তুই খা , ওদের জন্য আনছে।
না সবার জন্য আনুক তারপর খাবো।
তাহলে আমি খাই, বলে ছেলেটির হাত থেক বোতলটা নিলাম, মিত্রা ছোঁ মেরে আমার কাছ থেকে বোতলটা ছিনিয়ে নিল, তুইও খাবি না। এটা চিকনাকে দে।
চিকনা তুই খা। তোর ভাগ্য ভালো। আমার কোমরে চিমটি পরলো, আমি উ করে উঠলাম।
ছেলেটিকে বললাম, কটা বোতল আছে রে।
গোটা পঞ্চাশ হবে।
সব গুলো নিয়ে আয়। ঠান্ডা তো।
হ্যাঁ, বরফের পেটিতে আছে।
যা বাবা , বাঁচা।
চিকনা , বোতলটা শেষ করে আমাদের টিমটাকে একটু খবর দে।
চিকনা হাসছে।
তারপর ম্যাডাম, বলুন কেমন বুঝছেন।
জানিস বুবুন সত্যি এখানে না এলে খুব মিশ করতাম।
একটা ছোট্ট থ্যাঙ্কস যদি এ পোরা কপালে পোরতো।
একটি থাপ্পর। দেখছো বাসু তোমার বন্ধুকে, খালি টিজ করবে।
এটা টিজ হলো।
তাহলে কি হলো, প্রেম হলো।
চিকনা হাসতে গিয়ে বিষম খেলো, মিত্রা ওর দিকে এগিয়ে গেলো, বাসু হাসছে, চিকনা মিত্রাকে খক খক করে কাশতে কাশতে কাছে আসতে বাধা দিচ্ছে, ইশারায় বলছে কিছু হয় নি। মিত্রা আমার দিকে তাকালো, ব্যাপারটা এরকম , তোর জন্য দেখ কি হচ্ছে।
চিকনার বিষম থামলো। ছেলেটি একটা আইস্ক্রীমের গাড়ি নিয়ে এসে হাজির।
এটা কি রে।
এর মধ্যেই তো আছে।
ভাল করেছিস। আমি খাবো না, চিকনা আমার জন্য পাঁপড় আর জিলিপির ব্যবস্থা কর।

আমিও খাবো। মিত্রা বললো।
এটাও কি সবার জন্য।
হলে ভালো হয়।
ঠিক আছে আগে জল খা।
ওদের ডাকি।
ডাক।
মিত্রা নীপা বলে ডাকতেই নীপা ছুটে এলো।
মিত্রা বললো, ওদের ডাক, কোলড্রিংকস খাবে।
নীপা আমার দিকে তাকালো, সেতো অনেক লোক।
তোরা যারা পার্টিসিপেন্ট তাদের ডাক।
সেওতো তিরিশ জনের ওপর।
তোমায় পাকামো করতে হবে না, মিত্রাদি স্পনসর করছেন, পারলে মেলার সবাইকে খাওয়াতে পারেন।
অনিদা খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি।
তুই ওর কথায় কান দিস না, ও ওই রকম।
নীপা ছুটে ভেতরে চলে গেলো।
ফোনটা বেজে উঠলো।
পকেট থেকে বার করতেই দেখি সন্দীপের ফোন। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি আসছি দাঁড়া। ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম। বাসুও আমার পেছন পেছন বেরিয়ে এলো। তুই রাখ আমি তোকে রিংব্যাক করছি।
মেলা থেকে একটু দূরে চলে এলাম, একটা কলোরোল কানে ভেসে আসছে, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ , চারিদিকে আলোর চাদর বিছিয়ে রেখেছে, কে বলে অন্ধকার, খেতের আল ধরে সোজা চলে এলাম টেস্ট রিলিফের ছোটো বাঁধে, বাসু আছে, জায়গাটা মেলা থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে, এখানে মেলার আওয়াজ ম্রিয়মান, বাসু কে বললাম, দেখতো আমার ফোনে রেকর্ডিংটা কোথায় আছে, বাসু বুঝতে পারলো, কিছু একটা হয়েছে, বললো দে দেখিয়ে দিচ্ছি। আমি ভয়েস মুড আর রেকর্ডিং মুড দেখে নিলাম। সন্দীপকে ফোন করলাম।
হ্যাঁ বল ।
তুই এখন কোথায়।
আমার বাড়িতে।
মেলায় ঘুরে মজমা নিচ্ছ।
তুই জানলি কি করে।
এখানে ব্রড কাস্টিং হচ্ছে।
তাই নাকি।
তাহলে বলছি কি করে তোকে। ম্যাডাম তোর সঙ্গে আছে। তুই একটা প্লেবয় ওদের ফ্যামিলির দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছিস।
ওদের ফ্যামিলিতে প্রবলেম আছে এ খবর জানাজানি হল কি করে।
সুনীতদা রটাচ্ছে।
বাঃ , ইনফর্মারটা বেশ গুছিয়ে খবর পাঠাচ্ছে বল।
হ্যাঁ। করিতকর্মা ছেলে, ওকে নাকি চিফ রিফোর্টার বানাবে সুনীতদা।
তাই।
অফিসের খবর বল।
আজ সনাতন বাবুর ঘরে তুমুল হট্টোগোল হয়েছে।

কারা করেছে।
 
চম্পকদা লিড করেছে, সুনীতদা আর ওর চেলুয়া গুলো ছিল।
পুরোনো কারা কারা আছে।
এখন বোঝা মুস্কিল। সমুদ্রের ঢেউ-এর মতো সকলে সুনীতদার শিবিরে ভিরে গেছে।
তাই।
হ্যাঁ। তুই গেলি গেলি ম্যাডামকে সঙ্গে নিলি কেনো।
কি হয়েছে বলবি তো।
ম্যাডামের সঙ্গে তোকে জড়িয়ে হুইসপারিং ক্যাম্প চলছে, তোকে ফোটাবার ধান্দা। তুই হচ্ছিস চম্পকদা আর সুনীতদার পথের কাঁটা।
হ্যাঁ সেতো সেই দিন থেকে যেদিন মিত্রার ডাকা মিটিংয়ে ওদের ঝেরেছিলাম।
ম্যাডামের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কিরে অনি।
তোর জেনে লাভ।
বলনা। জানতে ইচ্ছে করছে, আমার চাকরি যায় যায়, কালকে আমাকে শোকজের নোটিস ধরাবে শুনতে পাচ্ছি।
কোনো।
এখনো জানি না। তবে পর্শুদিনের এডিটোরিয়াল পেজে একটা ভুল খবর ছাপা হয়েছিল।
ওই পেজের দায়িত্বে কে আছে।
অশোক।
তাহলে তোকে কেনো শোকজ করবে।
নিউজটা আমি করেছিলাম।
ভুল নিউজ করলি কি করে। কপি কোথায়।
খুঁজে পাচ্ছি না। নিউজটা ভুল নয়, অনেক পুরোনো।
ছাপা হলো কি করে।
সেটাইতো আমি বুঝতে পারছি না।
ইনফর্মার ছেলেটি কে , নাম জানতে পেরেছিস।
আমাদের পরিচিত কেউ নয়।
থাকে কোথায়।
তোদের গ্রামেই থাকে মনে হচ্ছে।
নাম বল।
তুই আমাদের প্রেসে অতীশবাবুকে চিনিস।
না। কোনদিন প্রেসে আমাকে যেতে দেখেছিস।
ঠিক। অতীশবাবু ছেলেটির পিসেমশাই।
ও।
কি বলেছে।
সব কি জানতে পারছি। তবে তোরা ওখানে আছিস, ঘোরা ঘুরি করছিস সেই নিয়ে একটা কেচ্ছা।
ম্যাডামের খতি হচ্ছে এতে। আমি বললাম।
ছারতো ওরা বড়লোক, তোর মতো দুচারটে ছেলেকে ওরা কেপ্ট হিসাবে রাখে, তারপর প্রয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে, কোটি কোটি টাকার মালিক ওরা।
ঠিক বলেছিস। আমি এতটা বুঝি নি। ম্যাডাম আস্তে চাইলো তাই নিয়ে এলাম।
বোকাচোদা।
সত্যি আমি বোকাচোদা।
গান্ডু।
আমার ভীষণ ভয় করছে রে সন্দীপ চাকরি গেলে খাবো কি।
দাঁড়া তুই ধরে রাখ। আমার একটা ফোন এসেছে, কিছু নতুন নিউজ পাবো।
ঠিক আছে।
আমি ধরে রইলাম, বাসু আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে, ও কিছুই বুঝতে পারছে না, তবে সমথিংস রং এটা বুঝে নিতে ওর অসুবিধে হচ্ছে না। যতই হোক ও একজন ব্যবসায়ী। থট রিডিংটা ও জানে।
হ্যাঁ। শোন।
বল।
ছেলেটার নাম দিবাকার মন্ডল। ও অতীশবাবুর শালার ছেলে, পড়াশুনায় বেশ ভালো রেজাল্টও ভাল। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলায় এমএ করেছে।
তোর ইনফর্মার কে।
সুনীতদার ঘরেই কাজ করে।
ঠিক ঠিক দিচ্ছে তো না এডিটোরিয়াল পেজের মতো হবে।
তুই এ ভাবে বলিস না, তোর কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালনা করছি।
বল।
সুনীতদা ওর বায়োডাটা নিয়ে আজ সনাতন বাবুর সঙ্গে ঝামেলা করেছে, ওকে আজই এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে।
সনাতন বাবু কি বলছে।
ম্যাডাম এলে সব হবে, বলে এড়িয়ে গেছেন।
কাগজ বেরোচ্ছে।
গত সাতদিনে এক লাখ সার্কুলেশন পরেছে।
কেনো।
ডিউটাইমে বেরোয় নি।
সনাতন বাবু কি করছে।
সনাতনবাবুকে মানলে তো।
ও।
আর দুজন নতুন এসেছে কিংশুক আর অরিন্দম বলে যেহেতু ম্যাডামের এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ওদের কাছে আছে, তাই কেউ কিছু বলে ওঠার সাহস পাচ্ছে না, তবে ওরা এক সাইড হয়ে গেছে।
পার্টিগত দিক থেকে কোনো ফর্মেসন।
হ্যাঁ একটা হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশ্যে নয়।
তোকে যেখানে যেতে বলেছিলাম, গেছিলি।
গেছিলাম, কিছু কাজ হয়েছে। সেই জন্য তো এখনো পার্টি ইনভলভ হয় নি ফর্মেসনও হয় নি। তুই এলে তোর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা ঠিক হবে।
তুই আজকের লেটেস্ট নিউজ আমায় দে যত রাতেই হোক। তোর আজ কি ডিউটি।
নাইট।
গুড। তুই এখন কোথায়।
ময়দানে প্রেস ক্লাবের লনে।
প্রেস ক্লাবে ব্যাপারটা চাউর হয়েচে নাকি।
আমার হাউসের বোকাচোদা গুলো আছে না। কম পয়সায় মাল খেয়ে বাওল করেছে।
ঠিক আছে। ছেলেটার নাম কি বললি, দিবাকর মন্ডল।
হ্যাঁ তুই মালটাকে খুঁজে বার কর। শুয়োরের বাচ্চা এক নম্বরের খানকির ছেলে।
খিস্তি করিস না।
খিস্তি করছি সাধে, একটা ছেলের জন্য হাউসটার আজ সর্ব্বনাশ হতে বসেছে।
ঠিক আছে ঠিক আছে। রাখি, রাত একটার পর তোকে ফোন করবো।
না। আজ কাগজ ছাড়তে ছাড়তে দেরি হবে।
ট্রেন ধরাবি কি করে।
এই কদিন ফার্স্ট ট্রেন ধরছে না।
ঠিক আছে।

রেকর্ডিংটা সেভ করলাম। বাঁধের ওপর ঘাসের ওপর বসে পরলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। বাসুর দিকে তাকালাম।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top