আচ্ছা মিত্রা যাকে আমি এতো ভালবাসি যার দায় অদায় সম্পূর্ণ আমার তাকে যদি একটা জিনিষ চাই, সে যদি সন্দেহ প্রকাশ করে, আমি তার কাছ থেকে সেই জিনিষটা হাত পেতে নিই কি করে বল। আমি কি তখন বিশ্বাস করতে পারি, সে আমাকে ঠিক ঠিক ভাবে বিশ্বাস করতে পারছে না। যার জন্য এতো কৌতূহল।
জানিষ মিত্রা, সে আমার যতো আপনজন হোক। হয়তো ক্ষণিকের জন্য তার কাছ থেকে নিই। তারপর তাকে ফেরত দিয়ে দিই। সে যদি আমার ঔরসজাত সন্তান হয় সেও আমার এই মানসিকতার থেকে দূরে থাকবে না।
সেই জন্য তখন তুই বললি আমি তোকে ফেরতে দিয়ে দেব।
আমি মিত্রার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
তুই জানিষ সেই কথাটা শুনে আমার মনটা কতোটা খারাপ হয়েছিল। যার জন্য তোকে এতো কথা বললাম, সারাদিন কষ্ট পেলাম।
তুই যতোটা কষ্ট পেয়েছিস তার থেকেও বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি। তার থেকে কিছুটা দেবাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি।
টিনা নিচে আমাকে আলাদা ভাবে সব বলেছে।
একটা উপকার হয়েছে। কাকতালীয় হলেও সুজিতদার কাছ থেকে একটা কাজ পাওয়া গেছে। অনেক টাকা পাওয়া গেছে। তোর সঙ্গে কিছুক্ষণ মান অভিমানের পালা চলেছে। দু’জনে কিছুটা হলেও মানসিক দিক থেকে পরিশোধিত হয়েছি।
তুই একটা তুচ্ছ কথায় এতটা ভেবে বসে থাকতে পারিস, এটা আমি কল্পনাও করতে পারি নি।
তুই আমাকে ভালবেসেছিস ঠিক, আমার মনের গহনে ডুব মারতে পারিস নি। আমি তোর মনের গভীরে কতটা ডুব মারতে পেরেছি, বলতে পারব না। এটা তোর অপরাধ নয়। আমার অপরাধ। আমি তোকে হয়তো আমার মনের অন্দরে ঢুকতে দিই নি।
যখন তুই ফাইলটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললি, যেখানেই থাকিস নটার মধ্যে আসবি, না হলে আজ থেকে তোর সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক থাকবে না, তখন আমার ভেতরটা আরও দুমরে মুচরেএকাকার হয়ে গেল। একবার ভাবলাম না আমি ফিরবো না।
দাদা আজ পর্যন্ত আমাকে এই ভাবে কথা বলতে পারে নি। মিত্রা কে ? তারপর ভাবলাম, না আমি যেখানেই থাকি আজকের দিনটা আমি ডিউ টাইমে ফিরে আসব, মিত্রাকে আমি জেতাবই, মিত্রাকে আমি কখনো কোনদিন হারতে দেব না। তুই বিশ্বাস কর আমি আটটার সময় ফিরে এসেছি। আর কোথাও বেরই নি।
মিত্রার চোখ দুটো চক চক করে উঠলো। আমার পাঞ্জাবীর বোতামটা খুলে আমার খোলা বুকে ঠোঁট ছোঁয়াল।
একফোঁটাও চোখ দিয়ে জল বার করবি না। এটা তোর সঙ্গে, আমার বোঝা পড়া।
তুই বিশ্বাস কর বুবুন এটা আমার দুঃখের অশ্রু নয়, এটা আমার অনন্দের অশ্রু। আমি আমার বুবুনকে যেভাবে পেতে চাই, বুবুনকে আমি সেই ভাবেই পাচ্ছি।
জানিস মিত্র ভালবাসাটা শুধু শরীরী নয়, মনটাও অনেকখানি জুড়ে থাকে, তাই দেখবি প্রাচ্যের মেয়েদের খুব একটা ডিভোর্স হয় না। যেটা পাশ্চাত্যে আকছাড় হয়ে থাকে।
তুই কতো গভীরে গিয়ে ভাবিস। আমি যে সব গুলিয়ে ফেলি।
গুলিয়ে ফেললে কষ্ট পেতে হবে। তার দায় আমার নয়। সম্পূর্ণ তোর।
আজ মায়ের ফটোটার দিকে তাকিয়ে একটা কথা বার বার মনে হচ্ছিল। আমার রক্তের সম্পর্কের কোন আত্মীয় নেই। খুঁজলে তোর দু’একটা পাওয়া যাবে। আমার পাওয়া যাবে না। আমি যেন কলম করা গাছ। বহু চেষ্টা করেছি খুঁজে পাই নি। এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানিনা আমার ভাগ্যে কি লেখা আছে। তবু তুই আমাকে আশ্রয় দিয়েছিস। কাছে টেনে নিয়েছিস।
এভাবে বলিস না।
যা সত্যি তাই বললাম।
চল এবার শুই। চাদরটা কেমন হয়েছে কিছু বললিনা।
জানিস মিত্রা দারিদ্রতা এতো কাছ থেকে দেখেছি,….তারপর যখন এগুলো পাই ঠিক ঠিক উপভোগ করতে পারিনা। মনের মধ্যে বার বার খচ খচ করে, অনি তুই এটা কি করছিস ? এটা তোর পথ নয়, তুই গা ভাসিয়ে দিচ্ছিস।
মিত্রা আমার হাতটা ধরে খাটের কাছে দাঁড়িয়ে।
তখন তুই প্যান্ট জামার কথা বললি, বিশ্বাস কর হাতের সামনে থাকতেও ইচ্ছে করে ওটা পরে গেছিলাম। মনের মধ্যে একটা আলাদা স্পিরিট অনুভব করলাম। মিঃ নেওটিয়াকে তো কাত করলাম। আজ প্রতিজ্ঞা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। আমাকে দেড় কোটি টাকা যেখান থেকে হোক আনতে হবেই।
সেই জায়গায় তুই মিত্রাকে জিততে দিবি না।
হেসে ফেললাম।
এই হেরে যাওয়াতে কোন দুঃখ নেই জানিস বুবুন, এই হেরে যাওয়াটা সবচেয়ে বেশি আনন্দের। আমি এইরকম ক্ষেত্রে বার বার তোর কাছে হারতে চাই।
মিত্রা আমার অনেক কাছে।
তুই তখন বললি আলবাৎ পারব। সেই সময় তোর চোখের আগুনে আমি নিজেকে পুরে যেতে দেখেছি। তুই বললি পৃথিবীটাকে তুই হাতের মুঠোয় দুমরে মুচরে একাকার করে দিবি। আমি তোর চোখের আগুনে নিজেকে পুরিয়ে শুদ্ধ করেছি। আমি যে এই বুবুনকে চাই।
আমি মিত্রার চোখে চোখ রেখেছি।
বুবুনরে ভেতরের এই স্পিরিটটা আমাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছে। তাই জন্য তোর কোন কাজে আমি বাধা দিই নি। কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু মনকে বলেছি বুবুন যে কাজে হাত দেবে ও জিতবে। ও কোনদিন হারতে জানে না।
না আমি ভগবান নই। তবে অন্যায় যে করবে মন থেকে যদি বুঝি সে সত্যি অন্যায় করেছে। তোকে বলে রাখি তার শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমার হাত থেকে তার নিস্তার নেই।
এবার শুই চল।
তুই ওঠ আমি আসছি।
না তুই আগে উঠবি। আমি তোর হাত ধরে বিছানায় উঠবো।
কোন সংস্কার।
না।
তাহলে।
এখানে তোর অনুভূতি কাজ করবে না।
বুঝেছি। তাহলে দুজনে একসঙ্গে উঠবো।
তাই হবে।
কোন দুষ্টুমি একেবারে নয়।
একটু, বেশি নয়।
ঠিক আছে।
কিগো তোমার বিয়ে আর তুমি পরে পরে ঘুমচ্ছ।
এক ঠেলায় ঘুমের বারটা বেজে গেল।
কইরে অনি, যার বিয়ে তার হুঁশ নেই পাড়াপড়শির ঘুম নেই। দে ওর গায়ে জল ঢেলে।
বুঝলাম বৌদি আর সুরো এসে হামলা শুরু করেছে।
বৌদিগো ঘুম থেকে ওঠা বড়ো কষ্ট।
দাঁড়া তোকে কষ্ট দেখাচ্ছি। চাদর মুড়ি দিয়ে ভোঁস ভোঁস। কটা বাজে খেয়াল আছে।
কেন মিত্রাতো আছে।
মিত্রা তোকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তোর সঙ্গে কে থাকবে।
আমি চোখ মেলে তাকালাম। চাদরটা মুখ থেকে সরাতেই দেখলাম বৌদি, বড়মা, ছোটমা, সুরো।
ওমা দেখেছো বড়দি যেই মিত্রার কথা বলেছি, ড্যাব ড্যাব করে কেমন তাকাচ্ছে। ওরে শয়তান।
আমি হাসছি।
ওঠ আগে।
উঠছি, তাড়াহুড় করছো কেন। তুমি কি এখুনি এলে ?
আবার কথা। আজ যা বলবো চোখ কান বন্ধ করে শুনে যাবি।
আমি হাসছি।
একবারে দাঁত বার করবি না।
আমি উঠে বসলাম। সুরোর দিকে তাকালাম।
কিরে সাজিস নি।
এখন সাজবো কেন, সে তো বিকেলে।
দুর এখন থেকে সেজেগুজে বসে থাক। অনেকে আসবে পছন্দ হলে তোরটাও সেরে ফেলবো।
তোমাকে আর ঘটকালি করতে হবে না।
বড়মা, ছোটমা মিটি মিটি হাসছে।
মুখ ধুয়ে ওই পাজামা পাঞ্জাবীটা পর। এখুনি বেরোব।
কোথায় ?
বলেছি না কোন কথা বলবি না।
আমি ভ্যাবলার মতো কিছুক্ষণ তাকালাম তারপর উঠে বাথরুমে গেলাম। ওরা সবাই চলে গেল।
আমি বাথরুম থেকে বেড়িয়ে পাজামা পাঞ্জাবীটা পরলাম। গেড়ুয়া কালারের একটা পাঞ্জাবী আর চোস্তা। মনকে বোঝালাম, এখন কোন বিদ্রোহ নয়। এই তিনটে দিন তুমি ওদের আনন্দের সঙ্গী।
আলমাড়ির আয়নটার সামনে এসে দাঁড়ালাম। খারাপ লাগছে না। চুলটা আঁচড়ে নিচে এলাম। দেখলাম বাগানে রবীন দাঁড়িয়ে আছে। মিত্রার বড়ো গাড়িটা আছে।
বসার ঘরে আসতেই দেখলাম চারজনে ফিট ফাট হয়ে বসে আছে।
আমি সবাইকে নমস্কার করলাম।
কিগো সব কোথায়!
বললামনা, তোকে ছেড়ে সব পালিয়ে গেছে। বৌদি বললো।
কিগো বড়মা, মিত্রা কোথায় ?
বড়মা মুখ টিপে হাসছে।
ছোটমা একটু চা খাওয়াবে না।
এখানে হাঁড়ি বন্ধ।
তারমানে!
ও সব জানি না, আমার চা চাই।
চল গিয়ে খাবি।
কোথায় যাব ?
সুরো মুচকি মুচকি হাসছে।
কিরে সুরো ?
কেমন মজা বলো।
চল চল ওঠ।
বড়মার দিকে তাকিয়ে।
দিদি ওই ব্যাগ দুটো নিলেই হবে।
হ্যাঁ।
ছোট তোরগুলো।
রবীনকে বলেছি গাড়িতে তুলে নিতে।
মনে হচ্ছে তোমরা কিছু একটা ঘোটালা পাকাচ্ছ।
একবারে কথা বলবি না।
বাবাঃ সেই ঘুমথেকে ওঠা ইস্তক ধমকে যাচ্ছ।
আমার কথায় ছোটমা মুখ টিপে হাসছে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। চা না খাইয়ে বার করছো, এটা মনে থাকে যেন।
সব মনে আছে এখন চল।
আমি বড়মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। বলোনা কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছ। এই বাড়ি শুনসান সকলে কোথায় ? মিত্রাকে দেখছি না, দাদা, মল্লিকদা, টিনা, মিলি, নীপা, সব গেল কোথায়!
এত বুঝিস এটা বুঝতে পারিস না।
ঠিক তা নয় তোমরা প্রোগ্রাম চেঞ্জ করে থাকলে আলাদা ব্যাপার। বাড়ি মাত্র দুটো, নয় এ বাড়ি, নয় ও বাড়ি।
তাহলে।
বাঃ দারুণ লাগছে এবার, সুরো বড় বিয়ে করতে যাচ্ছে বুঝলি। তুই নিধ কনে। বড়কর্তা বৌদি। বড়মা, ছোটমা বড়যাত্রী।
ছোটমা তেরে এলো, দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি।
আমি ছুটে বারান্দায় চলে এলাম।
আগে বলতে হয় তাহলে জলটাও খেতাম না।
ওতে কোন দোষ হয়না। বড়মা বললো।
ছেলের বাড়ির ব্রাহ্মণ কে ছোটমা ?
হ্যাঁরে গাঢ়ল। ছোটমা বড়মার ঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো।
তাহলে।
সব দেখতে পাবি গেলে।
আমার বেশ ভয় ভয় করছে বড়মা।
ছোটমা এসে কানটা ধরলো।
ভয় ভয় করছে বড়মা।
সুরো খিল খিল করে হাসছে।
জানিষ মিত্রা, সে আমার যতো আপনজন হোক। হয়তো ক্ষণিকের জন্য তার কাছ থেকে নিই। তারপর তাকে ফেরত দিয়ে দিই। সে যদি আমার ঔরসজাত সন্তান হয় সেও আমার এই মানসিকতার থেকে দূরে থাকবে না।
সেই জন্য তখন তুই বললি আমি তোকে ফেরতে দিয়ে দেব।
আমি মিত্রার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।
তুই জানিষ সেই কথাটা শুনে আমার মনটা কতোটা খারাপ হয়েছিল। যার জন্য তোকে এতো কথা বললাম, সারাদিন কষ্ট পেলাম।
তুই যতোটা কষ্ট পেয়েছিস তার থেকেও বেশি কষ্ট আমি পেয়েছি। তার থেকে কিছুটা দেবাদের সঙ্গে শেয়ার করেছি।
টিনা নিচে আমাকে আলাদা ভাবে সব বলেছে।
একটা উপকার হয়েছে। কাকতালীয় হলেও সুজিতদার কাছ থেকে একটা কাজ পাওয়া গেছে। অনেক টাকা পাওয়া গেছে। তোর সঙ্গে কিছুক্ষণ মান অভিমানের পালা চলেছে। দু’জনে কিছুটা হলেও মানসিক দিক থেকে পরিশোধিত হয়েছি।
তুই একটা তুচ্ছ কথায় এতটা ভেবে বসে থাকতে পারিস, এটা আমি কল্পনাও করতে পারি নি।
তুই আমাকে ভালবেসেছিস ঠিক, আমার মনের গহনে ডুব মারতে পারিস নি। আমি তোর মনের গভীরে কতটা ডুব মারতে পেরেছি, বলতে পারব না। এটা তোর অপরাধ নয়। আমার অপরাধ। আমি তোকে হয়তো আমার মনের অন্দরে ঢুকতে দিই নি।
যখন তুই ফাইলটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললি, যেখানেই থাকিস নটার মধ্যে আসবি, না হলে আজ থেকে তোর সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক থাকবে না, তখন আমার ভেতরটা আরও দুমরে মুচরেএকাকার হয়ে গেল। একবার ভাবলাম না আমি ফিরবো না।
দাদা আজ পর্যন্ত আমাকে এই ভাবে কথা বলতে পারে নি। মিত্রা কে ? তারপর ভাবলাম, না আমি যেখানেই থাকি আজকের দিনটা আমি ডিউ টাইমে ফিরে আসব, মিত্রাকে আমি জেতাবই, মিত্রাকে আমি কখনো কোনদিন হারতে দেব না। তুই বিশ্বাস কর আমি আটটার সময় ফিরে এসেছি। আর কোথাও বেরই নি।
মিত্রার চোখ দুটো চক চক করে উঠলো। আমার পাঞ্জাবীর বোতামটা খুলে আমার খোলা বুকে ঠোঁট ছোঁয়াল।
একফোঁটাও চোখ দিয়ে জল বার করবি না। এটা তোর সঙ্গে, আমার বোঝা পড়া।
তুই বিশ্বাস কর বুবুন এটা আমার দুঃখের অশ্রু নয়, এটা আমার অনন্দের অশ্রু। আমি আমার বুবুনকে যেভাবে পেতে চাই, বুবুনকে আমি সেই ভাবেই পাচ্ছি।
জানিস মিত্র ভালবাসাটা শুধু শরীরী নয়, মনটাও অনেকখানি জুড়ে থাকে, তাই দেখবি প্রাচ্যের মেয়েদের খুব একটা ডিভোর্স হয় না। যেটা পাশ্চাত্যে আকছাড় হয়ে থাকে।
তুই কতো গভীরে গিয়ে ভাবিস। আমি যে সব গুলিয়ে ফেলি।
গুলিয়ে ফেললে কষ্ট পেতে হবে। তার দায় আমার নয়। সম্পূর্ণ তোর।
আজ মায়ের ফটোটার দিকে তাকিয়ে একটা কথা বার বার মনে হচ্ছিল। আমার রক্তের সম্পর্কের কোন আত্মীয় নেই। খুঁজলে তোর দু’একটা পাওয়া যাবে। আমার পাওয়া যাবে না। আমি যেন কলম করা গাছ। বহু চেষ্টা করেছি খুঁজে পাই নি। এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি। জানিনা আমার ভাগ্যে কি লেখা আছে। তবু তুই আমাকে আশ্রয় দিয়েছিস। কাছে টেনে নিয়েছিস।
এভাবে বলিস না।
যা সত্যি তাই বললাম।
চল এবার শুই। চাদরটা কেমন হয়েছে কিছু বললিনা।
জানিস মিত্রা দারিদ্রতা এতো কাছ থেকে দেখেছি,….তারপর যখন এগুলো পাই ঠিক ঠিক উপভোগ করতে পারিনা। মনের মধ্যে বার বার খচ খচ করে, অনি তুই এটা কি করছিস ? এটা তোর পথ নয়, তুই গা ভাসিয়ে দিচ্ছিস।
মিত্রা আমার হাতটা ধরে খাটের কাছে দাঁড়িয়ে।
তখন তুই প্যান্ট জামার কথা বললি, বিশ্বাস কর হাতের সামনে থাকতেও ইচ্ছে করে ওটা পরে গেছিলাম। মনের মধ্যে একটা আলাদা স্পিরিট অনুভব করলাম। মিঃ নেওটিয়াকে তো কাত করলাম। আজ প্রতিজ্ঞা করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। আমাকে দেড় কোটি টাকা যেখান থেকে হোক আনতে হবেই।
সেই জায়গায় তুই মিত্রাকে জিততে দিবি না।
হেসে ফেললাম।
এই হেরে যাওয়াতে কোন দুঃখ নেই জানিস বুবুন, এই হেরে যাওয়াটা সবচেয়ে বেশি আনন্দের। আমি এইরকম ক্ষেত্রে বার বার তোর কাছে হারতে চাই।
মিত্রা আমার অনেক কাছে।
তুই তখন বললি আলবাৎ পারব। সেই সময় তোর চোখের আগুনে আমি নিজেকে পুরে যেতে দেখেছি। তুই বললি পৃথিবীটাকে তুই হাতের মুঠোয় দুমরে মুচরে একাকার করে দিবি। আমি তোর চোখের আগুনে নিজেকে পুরিয়ে শুদ্ধ করেছি। আমি যে এই বুবুনকে চাই।
আমি মিত্রার চোখে চোখ রেখেছি।
বুবুনরে ভেতরের এই স্পিরিটটা আমাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছে। তাই জন্য তোর কোন কাজে আমি বাধা দিই নি। কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু মনকে বলেছি বুবুন যে কাজে হাত দেবে ও জিতবে। ও কোনদিন হারতে জানে না।
না আমি ভগবান নই। তবে অন্যায় যে করবে মন থেকে যদি বুঝি সে সত্যি অন্যায় করেছে। তোকে বলে রাখি তার শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমার হাত থেকে তার নিস্তার নেই।
এবার শুই চল।
তুই ওঠ আমি আসছি।
না তুই আগে উঠবি। আমি তোর হাত ধরে বিছানায় উঠবো।
কোন সংস্কার।
না।
তাহলে।
এখানে তোর অনুভূতি কাজ করবে না।
বুঝেছি। তাহলে দুজনে একসঙ্গে উঠবো।
তাই হবে।
কোন দুষ্টুমি একেবারে নয়।
একটু, বেশি নয়।
ঠিক আছে।
কিগো তোমার বিয়ে আর তুমি পরে পরে ঘুমচ্ছ।
এক ঠেলায় ঘুমের বারটা বেজে গেল।
কইরে অনি, যার বিয়ে তার হুঁশ নেই পাড়াপড়শির ঘুম নেই। দে ওর গায়ে জল ঢেলে।
বুঝলাম বৌদি আর সুরো এসে হামলা শুরু করেছে।
বৌদিগো ঘুম থেকে ওঠা বড়ো কষ্ট।
দাঁড়া তোকে কষ্ট দেখাচ্ছি। চাদর মুড়ি দিয়ে ভোঁস ভোঁস। কটা বাজে খেয়াল আছে।
কেন মিত্রাতো আছে।
মিত্রা তোকে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তোর সঙ্গে কে থাকবে।
আমি চোখ মেলে তাকালাম। চাদরটা মুখ থেকে সরাতেই দেখলাম বৌদি, বড়মা, ছোটমা, সুরো।
ওমা দেখেছো বড়দি যেই মিত্রার কথা বলেছি, ড্যাব ড্যাব করে কেমন তাকাচ্ছে। ওরে শয়তান।
আমি হাসছি।
ওঠ আগে।
উঠছি, তাড়াহুড় করছো কেন। তুমি কি এখুনি এলে ?
আবার কথা। আজ যা বলবো চোখ কান বন্ধ করে শুনে যাবি।
আমি হাসছি।
একবারে দাঁত বার করবি না।
আমি উঠে বসলাম। সুরোর দিকে তাকালাম।
কিরে সাজিস নি।
এখন সাজবো কেন, সে তো বিকেলে।
দুর এখন থেকে সেজেগুজে বসে থাক। অনেকে আসবে পছন্দ হলে তোরটাও সেরে ফেলবো।
তোমাকে আর ঘটকালি করতে হবে না।
বড়মা, ছোটমা মিটি মিটি হাসছে।
মুখ ধুয়ে ওই পাজামা পাঞ্জাবীটা পর। এখুনি বেরোব।
কোথায় ?
বলেছি না কোন কথা বলবি না।
আমি ভ্যাবলার মতো কিছুক্ষণ তাকালাম তারপর উঠে বাথরুমে গেলাম। ওরা সবাই চলে গেল।
আমি বাথরুম থেকে বেড়িয়ে পাজামা পাঞ্জাবীটা পরলাম। গেড়ুয়া কালারের একটা পাঞ্জাবী আর চোস্তা। মনকে বোঝালাম, এখন কোন বিদ্রোহ নয়। এই তিনটে দিন তুমি ওদের আনন্দের সঙ্গী।
আলমাড়ির আয়নটার সামনে এসে দাঁড়ালাম। খারাপ লাগছে না। চুলটা আঁচড়ে নিচে এলাম। দেখলাম বাগানে রবীন দাঁড়িয়ে আছে। মিত্রার বড়ো গাড়িটা আছে।
বসার ঘরে আসতেই দেখলাম চারজনে ফিট ফাট হয়ে বসে আছে।
আমি সবাইকে নমস্কার করলাম।
কিগো সব কোথায়!
বললামনা, তোকে ছেড়ে সব পালিয়ে গেছে। বৌদি বললো।
কিগো বড়মা, মিত্রা কোথায় ?
বড়মা মুখ টিপে হাসছে।
ছোটমা একটু চা খাওয়াবে না।
এখানে হাঁড়ি বন্ধ।
তারমানে!
ও সব জানি না, আমার চা চাই।
চল গিয়ে খাবি।
কোথায় যাব ?
সুরো মুচকি মুচকি হাসছে।
কিরে সুরো ?
কেমন মজা বলো।
চল চল ওঠ।
বড়মার দিকে তাকিয়ে।
দিদি ওই ব্যাগ দুটো নিলেই হবে।
হ্যাঁ।
ছোট তোরগুলো।
রবীনকে বলেছি গাড়িতে তুলে নিতে।
মনে হচ্ছে তোমরা কিছু একটা ঘোটালা পাকাচ্ছ।
একবারে কথা বলবি না।
বাবাঃ সেই ঘুমথেকে ওঠা ইস্তক ধমকে যাচ্ছ।
আমার কথায় ছোটমা মুখ টিপে হাসছে।
আমি উঠে দাঁড়ালাম। চা না খাইয়ে বার করছো, এটা মনে থাকে যেন।
সব মনে আছে এখন চল।
আমি বড়মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম। বলোনা কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছ। এই বাড়ি শুনসান সকলে কোথায় ? মিত্রাকে দেখছি না, দাদা, মল্লিকদা, টিনা, মিলি, নীপা, সব গেল কোথায়!
এত বুঝিস এটা বুঝতে পারিস না।
ঠিক তা নয় তোমরা প্রোগ্রাম চেঞ্জ করে থাকলে আলাদা ব্যাপার। বাড়ি মাত্র দুটো, নয় এ বাড়ি, নয় ও বাড়ি।
তাহলে।
বাঃ দারুণ লাগছে এবার, সুরো বড় বিয়ে করতে যাচ্ছে বুঝলি। তুই নিধ কনে। বড়কর্তা বৌদি। বড়মা, ছোটমা বড়যাত্রী।
ছোটমা তেরে এলো, দাঁড়া তোকে দেখাচ্ছি।
আমি ছুটে বারান্দায় চলে এলাম।
আগে বলতে হয় তাহলে জলটাও খেতাম না।
ওতে কোন দোষ হয়না। বড়মা বললো।
ছেলের বাড়ির ব্রাহ্মণ কে ছোটমা ?
হ্যাঁরে গাঢ়ল। ছোটমা বড়মার ঘর থেকে চেঁচিয়ে উঠলো।
তাহলে।
সব দেখতে পাবি গেলে।
আমার বেশ ভয় ভয় করছে বড়মা।
ছোটমা এসে কানটা ধরলো।
ভয় ভয় করছে বড়মা।
সুরো খিল খিল করে হাসছে।