What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অঘটনঘটন পটিয়সী by কাদের (7 Viewers)

[HIDE]


তবে সোলায়মান জানে তাকে এখন কোন খবর বের করতে হলে সাবধান হতে হবে। কোন ভাবেই কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না যে সে এখানকার কোন গ্রাহকের খবর বের করতে চাইছে। এর আগে যখন কেস তদন্ত করছিল তখন তাকে ঢাকা পুলিশের এক বড় কর্তা ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেছিল কোন ভাবে যেন মামলার তদন্ত রিপোর্টে উত্তরা রেস্ট হাউজের নাম না আসে। না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যের কোন পুলিশ ফাড়িতে তার পোস্টিং হবে। সোলায়মান সে দিন বুঝে গিয়েছিল যারা এটা চালায় তাদের ক্ষমতার দৌড় কতটুকু। পরে বিভিন্ন সময় অল্প বিস্তর কিছু খবর জেনেছে অন্যদের সূত্রে, কখনো গুজবে। রেস্টহাউজের ভিতরের খবর বাইরে যাওয়া একদম পছন্দ করে না এর মালিক পক্ষ। তার মত ইন্সপেক্টর স্রেফ একটা মশা এই মালিক পক্ষের কাছে। তার খবর নেওয়ার কথা শুনলে স্রেফ পিষে ফেলবে তাকে। তবে সোলায়মান শেখ এত বছর ডিবিতে টিকে আছে ঘাস খেয়ে নয়। একটা কাজের দ্বায়িত্ব নিলে সেটা মাঝপথে ছেড়ে আসাও তার স্টাইল না। সোলায়মান তাই মোটরসাইকেল একটু দূরে পার্ক করে। নিজের মোবাইলের ফোন বুকে নাম গুলোতে একটা পরিচিত নাম খুজতে থাকে। আকবর। অনেক আগে এই ছেলেটা এই ক্যাসিনোতে ব্ল্যাকজ্যাকের টেবিলে কার্ড সার্ভার হিসেবে কাজ করত। এখনো কাজ করে কি না দেখতে হবে। ফোন বুকে নামটা খুজে পায়। আকবর, উত্তরা। সোলায়মান অবশ্য কল দেয় না সংগে সংগে। সে জানে ভিতরে যারা কাজ করে তাদের ফোন একটা লকারে রেখে যেতে হয় কাজের আগে, তাই এখন ফোন দিলেও লাভ নেই। মটরসাইকেল ঘুরিয়ে বাসার দিকে তাই রওনা দেয় সোলায়মান শেখ। আরশাদ সাহেব একটা ইন্টারেস্টিং কেস হিসেবে দাড়াচ্ছে। সোলায়মান একটু হাসে, ইন্টারেস্টিং সাবেজেক্ট পেলে কেসে মজাই আলাদা।



সাবরিনা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। মাহফুজ মেসেজে পাঠিয়েছে আজকে বিকালের প্রোগ্রামের জন্য কয়টার দিকে আসবে। সাবরিনা ভুলেই গিয়েছিল। পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আজকে বিকালে কথা বলার কথা। আর এক মাস আগে প্ল্যান করা। আসলে আজকে ইসলামপুর বাজার মালিক সমিতির মিটিং আছে। সেখানে অনেকেই আসবে ব্যবসায়ীরা তাই এই দিন ঠিক করা ছিল, যাতে একসাথে অনেক কে পাওয়া যায়। ইসলামপুর হল পুরান ঢাকার সবচেয়ে কাপড় আর বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিসের মার্কেট। সারাদেশ থেকে লোক আসে এখানে তাদের দোকানের জন্য খুচরা ক্রয় করতে। ফলে মার্কেটের ট্রেন্ড এই ব্যবসায়ীদের থেকে ভাল কেউ বুঝে না। সাবরিনার প্ল্যান ছিল এখান থেকে ফিডব্যাক নিয়ে এমন কোন সিস্টেম দাড় করানো যায় কিনা যেটা দিয়ে আগেই বাজারের ডিমান্ড সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়মিত পাওয়া যায়। মাঝখানে এই কয়দিন সাবরিনা এত অনমন্যস্ক ছিল যে ভুলেই গিয়েছিল এই মিটিং এর কথা। মাহফুজের মেসেজ দেখে মনে পড়ল।

সাবরিনার একবার মনে হল মিটিংটা বাতিল করি। কিন্তু আবার সাবরিনা জানে ওর রিপোর্ট ফাইনাল করার আগে এই মিটিং টা করা জরুরী। কারণ অফিসে ও যখন প্ল্যান অফ একশন দিয়েছিল সেখানে এই মিটিং এর কথা ছিল এবং ওর বস এই মিটিং এর ধারণা টা কে প্রশংসা করেছিল। অতএব এই মিটিং ছাড়া রিপোর্ট দিলে সেটা বসের চোখে পড়বে এবং এটা নিয়ে ঝাড়ি খেতে হবে। নরমালি এইসব মিটিং এ যাবার সময় অফিসের গাড়ি নিয়ে যায় সাবরিনা। এই জন্য আগে থেকে গাড়ির রিকুইজিশন এর অর্ডার দিতে হয়। সেটাও করা হয় নি। সব মিলিয়ে হঠাত করে সাবরিনা একটা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গেল। ট্রান্সপোর্টেশন সেকশনে ফোন করে আর্জেন্ট ভিত্তিতে গাড়ি হবে কিনা জানতে চাইল। ভাগ্য খারাপ, গাড়ি পুলে কোন গাড়ি আজকে খালি নাই। মিটিং বিকাল তিনটা থেকে। ওর অফিস থেকে বের হয়ে দুপুরের জ্যাম ঠেলে পৌছাতে দেড় দুই ঘন্টা লাগবে। তার মানে তিনটার মিটিং ধরতে গেলে মিনিমাম দুপুর একটায় বের হওয়া উচিত যাতে সময় মত পৌছানো যায়। ট্রান্সপোর্টেশন ডিপার্টমেন্ট কোন ভাবেই বিকালের আগে কোন গাড়ি দিতে পারবে না। পুরান ঢাকার এই অলিগলিতে একা একা নিজে যেতে ওর একটা ভয় হয় বিশেষ করে সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে, পুরান ঢাকা কে নিয়ে। তাই গাড়ি ছাড়া একা যেতে এক ধরণের অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। এর সলুউশন একটা। মাহফুজ কে অনুরোধ করা ওকে অফিস থেকে নিয়ে যাবার জন্য। আবার এতেও অস্বস্তি হচ্ছে। মাহফুজের সাথে মাঝখানের দু’টো ঘটনা এক ধরণের সংশয় তৈরি করেছে সাবরিনার মনে। আবার এটাও ঠিক সোয়ারিঘাটের সেই রাতে মাহফুজ না বাচালে সাবরিনার কি হত সাবরিনা নিজেও জানে না। শেষ পর্যন্ত এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে মাহফুজ জয়ী হল। সাবরিনার মনে হল একা একা পুরান ঢাকার গলি ঘুপচি তে ঠিকানা খুজে বের করার চাইতে মাহফুজের কাছে সাহায্য চাওয়া ভাল।

মেসেজ পাঠানোর দশ মিনিট পর মোবাইলের স্ক্রিনে সাবরিনার নাম ভেসে উঠতে দেখে মাহফুজ একটু অবাক হল। মাহফুজের ধারণা ছিল সাবরিনা উত্তর মেসেজে দিবে। মাহফুজ জানে এই মিটিং টা সাবরিনার ওভারওল রিপোর্টের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাইলেও সাবরিনা এই মিটিং ক্যান্সেল করবে না। আসলে আজকে মেসেজ টা পাঠিয়েছে সাবরিনা কে খানিকটা জ্বালানোর জন্য। মাহফুজ জানে সাবরিনা এখনো সরাসরি মিট করতে চাইছে না কিন্তু আবার এই মিটিং ক্যান্সেল করতে পারবে না। সাবরিনা বড় বেশি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে, নিয়ম মানে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও মিটিং এ আসতে হবে, মাহফুজের সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে। সাবরিনা কে সুক্ষ ভাবে জ্বালানোর জন্য তাই মেসেজ পাঠানো। তবে সাবরিনা সরাসরি ফোন দিবে এটা ভাবে নি। তাই একটু বিস্ময়ের সাথে ফোন রিসিভ করে মাহফুজ বলল, হ্যালো।
হ্যালো, মাহফুজ সাহেব। আমি গাড়ি রিকুইজিশন দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি কি আমার অফিস থেকে আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন।
হ্যা, সাবরিনা কোন সমস্যা নেই। আমি বারটার দিকে অফিসে আসব।
(মাহফুজ ভাবছে সাবরিনা কে তুমি বলে ভুল করল কিনা কারণ সাবরিনা আপনি আপনি বলে যাচ্ছে)
থ্যাংকিউ, তাহলে বারটার সময় দেখা হবে।
মাহফুজ উত্তর দিল
আমার কিন্তু কোন গাড়ি নেই
আমরা নাহয় সিএনজি নিয়ে চলে যাব
মাহফুজ এখানে অকস্মাৎ একটা সুযোগ দেখল। সুযোগের স্দব্যবহার করাই ডেভিলের কাজ।
আসলে আমি এখন বাইরে বের হয়ে গেছি আর আমার বাইকটা সাথে আছে। বাইক কোথায় রেখে আসতে পারব না আসলে। তাই আসতে হলে বাইক নিয়ে আসতে হবে।
মাহফুজের উত্তর সাবরিনা কে কনফিউজ করে দিল। মাহফুজের সাথে বাইকে যাওয়া মানে বাইকে উঠতে হবে। সাবরিনা ভার্সিটি লাইফে ফ্রেন্ডদের বাইকে দুইএকবার উঠেছে। তবে মাহফুজের সাথে বাইকে উঠা ঠিক হবে কিনা সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। এদিকে মাহফুজ আবার তাড়া দয়েয়।
বাইকে উঠতে ভয় পাচ্ছ নাকি
না, না ভয় কিসের। আমি বাইকে আগেও উঠেছি।
তাহলে তো হয়েই গেল। আমি বারটার দিকে আসছি। তুমি রেডি থেকে। আমি কল দিলে নিচে নেমে এস।
মাহফুজের এই তুমি তুমি সাবরিনার গায়ে রাগ ধরিয়ে দিচ্ছে। কি ভাবছে লোকটা। কিন্তু লাস্ট দুইটা এনকাউন্টারের পর মনের ভিতর যে অস্বস্তি সেটা সরাসরি কনফ্রন্টেশনে যেতে বাধা দিচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে লোকটা কে ধরতে হবে।
ঠিক আছে। দেখা হবে বারটায়
ওকে, বাই।


[/HIDE]
 
[HIDE]

মাহফুজ বারটার একটু আগে সাবরিনার অফিসের আসল, বাইক নিচে পার্ক করে উপরে উঠে আসল সাবরিনার ফ্লোরে। ইচ্ছা করেই মাহফুজ আজকে সেজেগুজে এসেছে। জিন্স, নতুন পোলো শার্ট আর কেডস। সাবরিনার ফ্লোরে ঢুকতেই সামিরার সাথে দেখা হয়ে গেল। সামিরা বলল কি মাহফুজ ভাই বেশ কিছুদিন দেখা নায়। মাহফুজ উত্তর দিল, একটু বিজি ছিলাম। সামিরা প্রশ্ন করল, সাবরিনার কাছে এসেছেন নিশ্চয়। মাহফুজ একটা হাসি দিল। সামিরা বলল মাঝে মধ্যে আমার টেবিলেও একটু আসবেন। মাহফুজ হেসে বলল আসব নিশ্চয়। সামিরা বলল আজকে একদম সেজেগুজে এসেছেন দেখি। মাহফুজ বলল আমি যতই সাজি আপনার ধারে কাছে কি আর পাত্তা পাব। শুনেই সামিরা হাসতে থাকলে। মাহফুজের গায়ে হালকা করে একটা ধাক্কা দিয়ে বলল, আপনি ভাল ফ্লার্ট আছেন। সুযোগ পেলেই মেয়েদের প্রশংসা। মাহফুজ উত্তর দিল, কই সবাই কে তো করি না। মাঝে মধ্যে আপনাকে করি। সামিরা আবার হাসতে হাসতে মাহফুজ কে একটা ধাক্কা দিল। বলল, ইউ ফ্লার্ট।
সাবরিনা ওর টেবিল থেকেই মাহফুজ কে আসতে দেখল ওর দিকে। সাবরিনা দ্রুত কাজে ব্যস্ত এমন ভংগিতে ল্যাপটপের দিকে তাকিয়ে থাকল। এক মিনিট পরেও যখন মাহফুজ টেবিলের সামনে দাড়াল না তখন মাথা তুলে তাকিয়ে দেখে দূরে সামিরা মাহফুজের সাথে কথা বলছে। মাহফুজ কে দেখলেই সামিরা দৌড়ে আসবে, কথা বলার চেষ্টা করবে না হয় চোখ দিয়ে গিলে ফেলতে চাইবে। যদিও অফিসে ওর একমাত্র ফ্রেন্ডলি পার্সন তবু সামিরার এত ছোক ছোক ভাল লাগে না। কিছু একটা নিয়ে সামিরা মাহফুজ হাসছে। সাবরিনার বিরক্ত লাগে। কি এত কথা সামিরার সাথে। সাবরিনা আড় চোখে সামিরা মাহফুজ কে দেখে আর ল্যাপটপে কাজের ভান করে। একটু পরে মাহফুজ আসে। হাই হ্যালো করে। সাবরিনা সংক্ষেপে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে। মাহফুজ বলে এখন আমাদের বের হয়ে পড়া ভাল, রাস্তায় জ্যাম আছে। সাবরিনা বলে একটু অপেক্ষা করুন আমি একটু ওয়াশরুম হয়ে আসি। মাহফুজ মুচকি হাসে। মাহফুজ বলে হ্যা, হ্যা যান ঘুরে আসুন। ঢাকার রাস্তায় খুব বেশি ওয়াশরুম নেই দরকার হলেও যেতে পারবেন না। লজ্জায় লাল হয়ে সাবরিনা। কনসার্টের রাতের কথা মনে হয়। পেটের কাছে আবার একটা সুরসুরি অনুভূতি কাজ করতে থাকে। কিছু না বলে সাবরিনা ওয়াশরুমের দিকে যায়।

ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে হাত ধোয়ার সময় সাবরিনা দেখে সামিরা এসে হাজির হয়েছে। সাবরিনা কে দেখে বলে আজকে তো দিনটা ভাল যাবে তোর। সাবরিনা জিজ্ঞাসু ভংগীতে তাকায়। সামিরা উত্তর দেয় মাহফুজ সাহেব কে দেখছিস আজকে। কি হ্যান্ডসাম লাগছিল। মনে হচ্ছিল ধরে খেয়ে ফেলি। হাফ হাতা পোলো শার্টে কেমন একটা ড্যাশিং লুক। সাবরিনা সামিরার কথার উত্তর না দিয়ে হাত ধুতে থাকে। সামিরা বলে আজকে যে ড্যাশিং লাগছে আমার মনে হচ্ছিল জড়িয়ে ধরি। শোন, আমার সাথে ফ্লার্টিং ও করছিল। লোকটা কথাও জানে। সাবরিনা মনে মনে একমত হয় কথা জানে বটে মাহফুজ। এত হ্যান্ডসাম কাউকে দেখলেই আমার ওয়াশরুমে আসতে ইচ্ছা করে। সামিরার কথার ইংগিতে সাবরিনার চোখ কপালে উঠে। সামিরা ওর মুখ ভংগী দেখে বলে সত্যি। এমন হ্যান্ডসাম কেউ আমার সাথে একটু হেসে কথা বললে তুই জানিস আমার কি হয়, আমার বুক কাপে, পেটে শিরশির হয় আর নিচের টা ভিজে যায়। একটা হাস্কি ভয়েজে বলে সাবরিনা। তুই কিভাবে এই লোকের সাথে থাকিস এত। আমি থাকলে তো কবেই জোর করে লোকটাকে আদর করে ফেলতাম। সাবরিনা বলে, সামিরা তুই কি সব বলিস। খালি বাজে কথা। সামিরা বলে আরে বাজে কথা কি, সত্যি কথা। কয়দিন রাতে আমি মাহফুজের কথা ভেবে নিচে হাত দিয়েছি জানিস। সাবরিনা জানে এইসব ব্যাপারে কথা বলে লাভ নেই তাতে সামিরা আর বলবে। সামিরা বলে তুই যে কিভাবে নিজেকে কন্ট্রোল করিস জানি না। আমি হলে কবেই কোলে উঠে বসে থাকতাম। তোর মত সতী সাধ্যি নারী বলেই মাহফুজের মত এমন হ্যান্ডসাম হাংক কে অগ্রাহ্য করতে পারছিস। সাবরিনা কথা বাড়ায় না, ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসে। খালি মাথায় ঘুরে আসলেই কি অগ্রাহ্য করতে পারছে নাকি এক পা এক পা করে মাহফুজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

মোটরসাইকেলে উঠার সময় মাহফুজ সাবরিনা কে বলল দুই সাইডে পা দিয়ে বসতে কারণ সেটাই সেফ। সাবরিনার তখন ভাবছে মাহফুজ বুঝি ওকে পিছনে বসিয়ে ব্রেক মেরে ফিল নিতে চাইছে তাই দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসতে বলছে। সাবরিনা না করে দিল। বলল আগেও আমি বাইকে চড়েছি, সব সময় এক সাইডে পা রেখে বসেছি সমস্যা হয় নি, আজকেও হবে না। মাহফুজ বুঝল তর্ক করে লাভ নেই। খালি বলল, ওড়না টা সাবধানে যাতে আবার চাকার সাথে প্যাচিয়ে না যায়। সাবরিনা কাধের ওড়না তাই সতর্ক হয়ে পড়ল যাতে বিপদ না হয়। রাস্তায় সেদিন অসহ্য গরম। একটু পর পর জ্যাম। বাইক জ্যাম ঠেলে কষ্টে এগুচ্ছে। সাবরিনা ওড়না মাথার উপর দিল এই রোদ থেকে বাচতে। ঘামে গা ভিজে যাচ্ছে। কপালে জমা ঘাম চোখের পাশ দিয়ে আস্তে করে গাল বেয়ে নিচে নামছে। পিঠে ঘাম জমে কুট কুট করছে কিন্তু পিঠ চুলকানোর উপায় নেই। এক হাত মাহফুজের কাধে দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করছে অন্য হাত এভাবে এক সাইড হয়ে বসার কারণে পিঠে দেওয়ার উপায় নেই, তাহলে উলটে পড়ে যাবে। মাহফুজ হেলমেট পড়ে আছে, হেলমেটের ফাক দিয়ে দর দর করে ঘাম ঘাড় বেয়ে নামছে। মাহফুজের জামাও ঘামে ভিজে উঠছে সাবরিনা লক্ষ্য করছে। লোকটা আসলে অত খারাপ না। এই যে ওকে এই জ্যামের মধ্যে নিতে আসল। কোন দরকার ছিল না। না করলে সাবরিনার কিছু করার ছিল না। এই জ্যামে পুরান ঢাকার অপরিচিত গলিতে ঠিকানা খুজতে হত একাই। এইসব ভাবতে ভাবতে একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে সাবরিনা।

মাহফুজ রাস্তার জ্যাম দেখে ফুটপাত মটরসাইকেল তুলে দেয়। ফুটপাথ দিয়ে কয়েকশ গজ সামনে যেতে পারলে হাতের বামে একটা গলি আছে, সেই গলি দিয়ে ঢুকে পড়তে পারলে মেইন রাস্তার জ্যাম এড়িয়ে অনেকটা পথ যাওয়া যাবে। ফুটপাথে সামনে একটা লোক এসে পড়ায় ব্রেক কষে মাহফুজ, তেমন জোরে না, নরমাল ব্রেক। অন্যমনস্ক সাবরিনা তাল সামলাতে পারে না। এমনিতেই একসাইডে পা দিয়ে বসে থাকলে বাইকে তাল সামলানো কঠিন তার উপর অন্যমনস্ক ছিল। তাই কোনরকমে পড়তে পড়তে দাঁড়িয়ে যায়, ভাগ্যিস ফুটপাথে খুব স্লো যাচ্ছিল বাইক। তবে হঠাত করে এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাবাচ্যাকা খায় একটু সাবরিনা। বাইক স্লো থাকায় কোন মতে দাঁড়িয়ে পড়তে পেরেছে, মাটিতে পড়ে যায় নি। তবে সাধারণত চমকে গেলে মানুষের প্রতিক্রিয়া একেক সময় একেক রকম হয়। কখনো কান্না, কখনো রাগ, কখনো একদম চুপ। সাবরিনার প্রতিক্রিয়াটা বের হয়ে আসল রাগে।

[/HIDE]
 
[HIDE]


মাহফুজ যখন টের পেল সাবরিনা বাইক থেকে তাল সামলাতে না পেরে নেমে যাচ্ছে তখন বাইক থামিয়ে দিল। মাহফুজ ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে সাবরিনা ঠিক মাটিতে পরে যায় নি, ফুটপাথ ঘেষা এক দেয়াল ধরে তাল সামলিয়েছে। সাবরিনা কে যেই জিজ্ঞেস করল, ঠিক আছে কিনা ঠিক তখন শুরু হল অগ্নি বর্ষণ। সাবরিনা শুরু করল, বাইক চালাত না পারলে বাইক চালায় কেন, কোন সভ্য মানুষ কি রাস্তা ছেড়ে ফুটপাতে গাড়ি চালায়, কি ভাবে ব্রেক করতে হয় সেটা জানে কিনা। একের পর অগ্নি বর্ষণ করে যেতে থাকে সাবরিনা। আমাদের দেশে লোকের অভাব নাই আর রাস্তায় ফ্রিতে মজা দেখার সুযোগ পেলে আর বেশি লোক এসে হাজির হয়। মাহফুজ পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য বলে স্যরি। ফুটপাতে না উঠলে আজকে সারাদিন লেগে যাবে আমাদের যেতে। আর আগেই তো বলেছিলাম দুই দিকে পা দিয়ে বসতে তাহলে আর বাইকে ব্যালেন্স রাখতে প্রব্লেম হয় না। সাবরিনা আবার রেগে অগ্নি বর্ষণ শুরু করে। এই সময় পাশ থেকে একজন বলে আপা ঝগড়া বাসায় গিয়ে করেন। বাসার লোকের সাথে রাস্তায় ঝগড়া করলে ভাল দেখায় না। সাবরিনা চোখ পাকিয়ে তাকায়। উপদেশ দেবার সুযোগ পেলে রাস্তায় মানুষ ছাড়ে না বিশেষ করে মেয়েদের। তাই এবার আরেকজন বলে আপু ভাইয়ার উপর রাগ কইরেন না, আজকাল সবাই জ্যামে পড়লে বাইক ফুটপাথে তুলে। অন্য আরেকজন বলে, আপু ভাইয়া তো ঠিক বলছে, আপনি ঠিক করে দুই সাইডে পা দিয়ে বসলে এমন হইত না। এক সাইডে পা দিয়ে বসা তো ডেঞ্জারাস। মাহফুজ দেখল এভাবে চললে কথা বাড়তে থাকবে আর মানুষ নাটক দেখে মজা নিবে। তাই মাহফুজ এক প্রকার ঝাড়ি দিল, যাবা? নাকি রাস্তায় দাড়ায়ে নাটক করবা? বেশিক্ষণ সময় নায়। প্রাথমিক এন্ড্রোলিন রাশ কমার পর সাবরিনা হালকা শান্ত হয়েছে। চারপাশে লোকজনের ভীড় দেখে টের পায় মানুষ মজা নিচ্ছে। তাই বাইকে উঠে বসতে যায়। মাহফুজ বলে এবার দুই সাইডে পা দিয়ে না বসলে বাইক চালাবে না কারণ এবার অল্প স্পিডে ফুটপাথে থাকায় কিছু হয় নি যদি এটা মেইন রাস্তায় হত তাহলে ভংয়কর একটা একসিডেন্ট হতে পারত। কয়েক সেকেন্ড দ্বিধা দ্বন্দ্বে থেকে সাবরিনা মেনে নেয়। নিরাপত্তার থেকে বড় কিছু নেই।

পিছনে দুই পা দুই দিকে দিয়ে বসে সাবরিনা প্রথমে একটু দূরুত্ব বজায় রাখতে চায়। তবে বাইকে এভাবে বসার অভিজ্ঞতা না থাকায় অস্বস্তি হতে থাকে। এর মাঝে রাস্তার জ্যাম ভীড় তাই মাহফুজ গাড়ির ফাকে ফাকে একে বেকে বাইক নিয়ে এগুচ্ছে। এই সময় ঠিক ভাবে না বসলে অস্বস্তি হয় আর বেশি, বাইক এক দিকে বাক নিলে মনে হয় বুঝি সে দিকে পড়ে যাবে। মাহফুজেরও চালাতে অস্বস্তি হয় কারণ খেয়াল করে দেখবেন আপনার পিছনে রাইডার থাকলে সে যদি বাইকের সাথে সাথে ডানে বামে শরীর হেলায় তবে যে দিকে শরীর হেলায় সে দিকে বাইকের ওজন বেশি হয়ে যায় ফলে কন্ট্রোল ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। মাহফুজ তাই রাস্তার এক জায়গায় যখন জ্যামে বাইক দাড় করাতে হয় তখন ঘাড় ঘুরিয়ে সাবরিনা কে বলে একটু সামনে এগিয়ে বস প্লিজ। নাহলে বইকের কন্ট্রোল রাখা কঠিন। এভাবে হলে পরে কোন জায়গায় কন্ট্রোল হারিয়ে দুইজনেই গাড়ির তলে পড়তে হবে। রাস্তার এই কড়া রোদে এমনিতে ঘামতে ঘামতে সাবরিনা শেষ তার উপর প্রতি মূহুর্তে ভারসাম্য রাখার চিন্তায় আর অস্থির। তাই মাহফুজের কথায় আর বাধা দেয় না, হালকা সামনে এগিয়ে বসে। তবে পুরো শরীর মাহফুজের পিঠে মিশিয়ে দেয় না। মাহফুজ বলে একটা হাত আমার কাধে আরেকটা হাত আমার পেটে রাখ আর যখন বাইক ডানে বামে বাকবে তখন শরীর হেলাবে না। সাবরিনা মাথা নাড়ে। কাধে আর পেটে হাত দিয়ে বসার পর মাহফুজের একদম কাছে ঘেষে আসতে হয়। দুই শরীরের মাঝে পার্থক্য তখন মাত্র দুই ইঞ্চি। বাইক তখন হাইকোর্টের পাশ দিয়ে হাজার হাজার রিক্সা আর বাসের ফাকে ফাকে অতন্ত্য ধীর গতিতে এগুচ্ছে। সাবরিনা হঠাত টের পায় এত কাছে ঘেষে বসার জন্য মাহফুজের শরীরের গন্ধ ওর নাকে আসছে। একটা পুরুষালী শক্ত গন্ধ। ঘামের গন্ধ কখনো সাবরিনার ভাল লাগে না। মাহফুজ আজকে এত ঘামার পড়েও এটা খারাপ লাগছে না। এর আগে দুই দিন মাহফুজের খুব কাছে আসলেও কোনবার আলাদা করে মাহফুজের গায়ের ঘ্রাণ খেয়াল করা হয় নি। কৌতুহলে তাই সাবরিনার নাক আরেকটি এগিয়ে যায়, প্রায় মাহফুজের পিঠ স্পর্শ করে একটা ঘ্রাণ নেয়। শক্ত একটা পুরুষালী গন্ধ। কেমন কেমন যেন করে উঠে শরীর। লোকটা কে রাস্তায় বেশি বকা হয়ে গেছে। ওকে তো বলেছিল দুই পা দুই দিকে দিয়ে উঠে বসতে, ও নিজে শুনে নি। আর জ্যামে পড়লে ফুটপাতে বাইক চলে এটা তো সারাজীবন দেখে এসেছে। মিটিং শেষে স্যরি বলে দিতে হবে। আবার নাক ভরে ঘ্রাণ নেয়। ঘ্রাণটা যেন একেবারে বুকের ভিতর গিয়ে লাগে। হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়। সাবরিনার একটু লজ্জা লাগে। এভাবে আর কখনো কার ঘ্রাণ নেয় নি ও। এমন পুরুষালী একটা গন্ধ যেন মনে হচ্ছে নির্ভরতার প্রতীক। ওর এক বান্ধবি বয়ফ্রেন্ডের ঘামে ভেজা টিশার্ট বাসায় নিয়ে যেত পড়ার জন্য। এটা নিয়ে হাসিঠাট্টা করলে উত্তর দিত, মানুষ তো আদতে একটা পশু। আমাদের আদিম প্রবৃত্তি গুলো এখনো রয়ে গেছে। প্রতিটা প্রাণী তাদের ঘামের মাধ্যমে ফেরোমেনেন ছড়ায়, বিপরীত লিংগ কে আকর্ষণ করার জন্য। একদিন সাবরিনা সেই টিশার্ট শুকে দেখেছিল, ঘামের একটা বোটকা গন্ধ। সেটা বলার পর ঐ বান্ধবীর উত্তর ছিল সবার ফেরোমেনন সবাই কে এট্রাক্ট করে না। যে যার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে তার ঘামের গন্ধ তার ভাল লাগে। হঠাত করে এত বছর পর সেই কথা মনে পড়ে যায়। ঘামে লাল হয়ে থাকা সাবরিনা আর লাল হয়। তবু বুক ভরে আরেকবার ঘ্রাণ নেয়। বুক কাপতে থাকে, হাত ঘামে আর তলপেটে পরিচিত সেই শিরশির অনুভূতি। ভাগ্যিস লোকটা ওকে দেখতে পাচ্ছে না।

সেই দিন রাস্তার জ্যাম আর ভীড় ঠেলে প্রায় আড়াই ঘন্টার মত রাস্তায় থেকে শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌছায় সাবরিনারা। তিনটা থেকে চারটা মিটিং হবার কথা। আগে থেকে ব্যবস্থা করা ছিল তাই সাবরিনা আর মাহফুজ মিটিং এর পিছনে বসে মিটিং পর্যবেক্ষণ করে। চারটায় মিটিং শেষ হবার পর একটা ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন হওয়ার কথা আট জন ব্যবসায়ীর সাথে। মাহফুজ আগেই বাজার কমিটির সাথে কথা বলে একটা রুমের ব্যবস্থা করে রেখেছিল। প্রায় দেড় ঘন্টা পর ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন যখন শেষ হল তখন মাহফুজ আর সাবরিনা দুই জনেই ক্ষুধার্ত এবং ক্লান্ত। রাস্তায় জ্যামের কারণে আসতে দেরি হওয়ায় দুপুরের খাবার খাওয়া হয় নি। তবে টাইম মত শেষ পর্যন্ত পৌছাতে পারায় এবং ফোকাস গ্রুপটা ভাল ভাবে শেষ করতে পারায় সাবরিনা খুশি। ওর প্রজেক্টের এটাই শেষ বড় হার্ডল ছিল। এখন সব ডাটা দিয়ে মেইন স্ট্যাটিজিক্যাল পেপার টা দাড় করাতে হবে। সাবরিনার মনে হয় এই গত কয় মাসের ধকল বুঝি এবার কমল। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কিছু খাবে কিনা কারণ মাহফুজ প্রচন্ড ক্ষুধার্ত। সাবরিনাও এখন খুশি কাজ শেষ হবার জন্য সাথে সাথে ক্ষুধার্ত তাই বলে কোথায় খাবেন। মাহফুজ বলে কাছেই একটা ভাল কাবাবের দোকান আছে, সেখানে ভাল বসার ব্যবস্থা আছে। সাবরিনা বলে এই গরমে কাবাব খাওয়া ঠিক হবে কিনা। মাহফুজ বলে ম্যাডাম পুরান ঢাকায় গত দুই মাস ধরে আসছেন, একটু আমাদের কালচারে পরখ করে দেখুন। গরমে কাবাব কেমন শান্তি দেয় দিলে। মাহফুজের কথা বলার ধরণে সাবরিনা একটু মুচকি হাসে। সাবরিনার হাসি দেখে মাহফুজের ভাল লাগে। মনে মনে ভাবে সাবরিনা আবার খানিকটা নরমাল হয়েছে।



[/HIDE]
 
[HIDE]


মোস্তফা কাবাব হাউজ। পুরান ঢাকার অন্যতম নামী কাবাবের দোকান। প্রায় আশি বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। আদি মালিক মোস্তফা ঢাকার নবাবদের রসুই ঘরে হেড বাবুর্চি ছিলেন। পরে ১৯৪০ এর দশকে নবাবদের যৌলুস কমে আসলে একসময় নিজেই একটা দোকান খুলে বসেন। নানা রকম কাবাব আর খাসির পায়ার সুপের জন্য বিখ্যাত দোকানটা। এখন মোস্তফার নাতিরা চালায় দোকান। মাহফুজ ছোট থাকতে যেমন দেখেছিল তার থেকে বড় হয়েছে দোকানটা এখন। পুরান ঢাকার বেশির ভাগ ঐতিহ্যবাহী দোকান তাদের শত বছরের পুরান লুক ধরে রাখে। খানিকটা ঘিঞ্জি, পুরান আসবাবপ্ত্র। মোস্তফারা দোকানে ঠিক পুরান লুকটা রাখে নি। পাশের দুইটা দোকান কিনে নিয়ে দোকানের জায়গা বাড়িয়েছে। দোকানে এখান দুইটা সেকশন। ফ্যামিলি সেকশন আর নরমাল সেকশন। নরমাল সেকশনে বেঞ্চ আর টিবিল পাতা। লোক এসে যার যার মত বসে খেয়ে যাচ্ছে। সকাল এগারটা থেকে রাত একটা পর্যন্ত। আর ফ্যামিলি সেকশনে বসার ব্যবস্থা ভাল। পুরান ঢাকায় লোকজন সন্ধ্যার পর পরিবারের মেয়েদের নিয়ে খেতে বের হয়। কাস্টমারদের এই গ্রুপ কে ধরার জন্য ফ্যামিলি ্সেকশন কয়েক বছর আগে ডেকোরেট করে সুন্দর করা হয়েছে। পুরান দিনের মত কেবিন কেবিন ভাগ করা। একটা ভারী পর্দা দেওয়া প্রতি কেবিনে।

সাবরিনা গত দুইমাসে কাজের খাতিরে বেশ অনেকবার পুরান ঢাকায় এসেছে। মাহফুজ ওকে বেশ কয়েকবার পুরান ঢাকার কয়েকটা ঐতিহ্যবাহী দোকানে খাইয়েছে। এই দোকানটা অন্য দোকানগুলোর তুলনায় বেশ পরিষ্কার এবং পরিপাটি। একটা কেবিনে এসে বসল দুইজন। ওয়েটার এসে পানি দিয়ে গেল। সন্ধ্যার ঠিক আগে এই সময়টা দোকানে ভীড় কম, বিশেষ করে ফ্যামিলি সেকশনে। আর এক ঘন্টা পর লোক বাড়তে থাকবে। মেনু দেখছ দুইজনে। সাবরিনা বলে আজকে কিন্তু আমি পেমেন্ট করব। মাহফুজ বলে আপনি আমাদের গেস্ট পুরান ঢাকার। তাই আমার পে করা উচিত। সাবরিনা বলে আসলে আপনি একদিনও পেমেন্ট করতে দেন নি আমাকে। তাছাড়া আজকের পর এই প্রজেক্টের ফিল্ডের কাজ মোটামুটি শেষ তাই আপনাকে ট্রিট দেবার এটাই আমার চান্স। সাবরিনার কথায় মাহফুজের মনে একটা ধাক্কা দেয়। প্রজেক্টের কাজ তাহলে প্রায় শেষ। কথাটা বলার পর সাবরিনাও টের পায় মাহফুজের সাথে ওর এখন থেকে নিয়মিত দেখা স্বাক্ষাত কমে যাবে। হয়ত মাহফুজ অফিসে অন্য কোন কাজে আসলে দেখা হবে। এই বোধদয়ে দুইজনেই অনমনস্ক হয়ে মেন্যুর দিকে তাকিয়ে থাকে।


দুই জনেই শিক কাবাব আর নান রুটি অর্ডার দেয়। কেবিনের ভিতর একটা নীরবতা। দুইজনের মাথায় তখন চিন্তার ঝড় চলছে। সাবরিনা ভাবছে মাথার ভিতর প্রশ্ন গুলোর কি হবে। আর মাহফুজ ভবে অনেক কথাই তো বলা বাকি থেকে গেল। একটা অস্বস্তিকর নীরবতা রুমে ভর করে। একটু পরে খাবার এসে হাজির হয়। দুইজন প্রায় নিঃশব্দে খেয়ে চলে। পেটের ক্ষুধা মোচন হচ্ছে তবে মনের ক্ষুধার কি হবে। এত প্রশ্ন, অনেক কথাই তো বাকি রয়ে গেল। খাওয়া শেষ হবার পর দুই জনে চুপ করে বসে থাকে। যেন সময় কে আরকেটু দীর্ঘায়িত করার উপায় খুজছে দুইজনে কিন্তু উপায় জানা নেই কার। মাহফুজ বুঝে আজকে ওকে কথা বলতে হবে। সাবরিনা কে প্রশ্ন করে লালবাগ কেল্লা দেখেছেন কখনো? সাবরিনা না সূচক মাথা নাড়ায়। মাহফুজ বলে সারাজীবন ঢাকায় বড় হয়ে লালবাগ কেল্লা দেখেন নি। আপনাকে এটা না দেখিয়ে প্রজেক্ট শেষ করলে তো আমি ব্যর্থ হয়ে যাব। মাহফুজের স্বভাবসুলভ প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা কথায় রুম যেন আবার প্রাণ ফিরে পায়। সাবরিনা বলে হ্যা দেখা হয় নি কিন্তু আজকে তো দেরি হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে যাবে না। মাহফুজ ঘড়ি দেখে। বলে, ভিতরের মিউজিয়াম বন্ধ হয়ে গেছে তবে ভিতরের চত্ত্বর দেখতে পারেন, ভিতরে একটা সুন্দর বাগান আছে সেটা দেখতে পারেন। সাবরিনা বলে গেট বন্ধ থাকবে না? মাহফুজ বলে আমি লোকাল ছেলে, পলিটিক্স করি। হাজারটা মানুষ আমার পরিচিত। দেখেন ঢুকতে পারি কিনা। সাবরিনা ভাবে লোকটা কনফিডেন্ট আর করিতকর্মা। যেভাবে কনফিডেন্স শো করে সেটায় একটা চার্ম আছে ঠিক এরোগেন্স না। সাবরিনা তাই বলে, ঠিকাছে চলুন। আপনার বদৌলতে না হয় এত বছর পর লালবাগ কেল্লা টা দেখা হয়ে যাবে।


গরমকালে সন্ধ্যা ছয়টার পর দর্শনার্থীদের জন্য কেল্লা বন্ধ হয়ে যায়। একমাত্র কোন বিশেষ অকেশন থাকলে যেমন স্বাধীনতা দিবস বা বিজয় দিবস সেদিন রাত দশটা পর্যন্ত কেল্লা খোলা থাকে দর্শনার্থীদের জন্য। এখন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা বাজে তাই কেল্লায় নরমালি ঢোকার উপায় নেই। তবে পিছন দিকে কেল্লার রক্ষণাবেক্ষণ এর জন্য নিয়জিত প্রত্নতাত্ত্বিক ডিপার্টমেন্টের কর্মচারীদের একটা টিনশেডের কোয়ার্টার আছে। সেই কোয়ার্টারে ঢোকার ছোট একটা গেট আছে আর সেই গেট দিয়ে কেল্লার ভিতরে অনায়াসে ঢুকা যায়। মাহফুজ ছোটকাল থেকে এই এলাকায় বড় হয়েছে তাই এখানকার অনেকেই তার পরিচিত। আর প্রত্নতাত্ত্বিক ডিপার্টমেন্টের কর্মচারী পর্যায়ে অনেক চাকরি বংশপরষ্পরায় চাকরি। মানে বাবা চাকরিতে ছিল তাই পোষ্য কোটায় ছেলে বা মেয়ে সেই চাকরি পায়। তাই এখন চাকরিতে থাকা কম বয়েসি অনেকে মাহফুজের ছোটবেলার খেলার সাথী। মাহফুজ আজিম বলে ওর এক বন্ধু কে ফোন দেয়। ওর চাকরির জন্য মাহফুজের বাবা হেল্প করেছে যাতে পোষ্য কোটায় চাকরিটা পায়। রাজশাহী ভার্সিটিতে ম্যানেজমেন্টে পড়ে এখন এখানে এসিসেটেন্ট সিকিউরিটি অফিসার। মাহফুজ ফোন দিয়ে বলে তোর বাসার সামনে আয়। আজিম আসতেই মাহফুজ কে সাবরিনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। বলে উনার কোম্পানির সাথে আমি একটা প্রজেক্টে কাজ করছি। এই ম্যাডাম কখনো লালবাগ কেল্লার ভেতরে ঢুকে নি। আজকে প্রজেক্টের শেষ দিন। তাই উনাকে দেখাতে নিয়ে আসছি। আজিম বলে ঠিকাছে চল তোদের কে সামনের গেট দিয়েই ঢুকাই। মেহমান মানুষ কে পিছনের গেট দিয়ে ঢুকাতে কেমন লাগে। তবে ম্যাডাম আপনি কোন ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েন না। কারণ রাতের বেলা কেউ কেল্লায় ঢুকতে পারছে এটা ফেসবুকে প্রচার হলে পরে আমার চাকরি থাকবে না। সাবরিনা বলে শিওর শিওর। আজিম সামনের গেটে নিয়ে আসে। মেইন ফটক বন্ধ। একটা ছোট গেট আছে। নক করতেই দ্বায়িত্বে থাকা গার্ড দরজা খুলল। এই গার্ডকেও মাহফুজ চিনে। মাহফুজ কে একটা সালাম দিল। আজিম হচ্ছে এসিসেটেন্ট সিকিউরিটি অফিসার তাই পদবীতে গার্ডদের সরাসরি বস। আজিম বলল আমার মেহমান একটু ভিতরে যাবে। গার্ড নিজেও মাহফুজের বাবা কে চিনে আর মাহফুজের কথা জানে। ইনফ্যাক্ট গার্ডের ছেলে একটা মারামারি করে মামলা খেয়েছিল, সেই মামলার জন্য প্রথমে মাহফুজের কাছে আসলে, মাহফুজ গার্ড কে তার বাবার কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তাই গার্ড বলে আরে মাহফুজ ভাই কে আমি চিনি। উনার মেহমান মানে আমাদের মেহমান। আর আপনি বলে দিছেন মানে আর কোন চিন্তা নাই। মাহফুজ, আজিম আর সাবরিনা একসাথে ভিতরে ঢুকে। আজিম বলে আমি কি ঘুরে দেখাব তোদের? মাহফুজ বলে নারে দোস্ত। আমি এত হাজার বার আসছি আমি চিনি ভাল করে। আজিম হাসে, বলে হ্যা কত দিন তো আসিস না। মাহফুজ বলে আমি চিনব সমস্যা নাই। তোর কাজ থাকলে তুই যেতে পারিস। আজিম ঘড়ি দেখে। বলে হ্যা আজকে শ্বশুড়বাড়ির লোকজন আসার কথা বাসায় দাওয়াতে। তোর সমস্যা না হলে আমি যাব। তবে কোন প্রব্লেম হলেই কল দিস। দশ মিনিটে চলে আসব। মাহফুজ মাথা নাড়ায়। আজিম বলে তুই শালা আগের মত রয়ে গেছিস। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কিভাবে। আজিম সাবরিনার দিকে তাকায়। সাবরিনা একটু সামনে এগিয়ে ঘুরে ঘুরে চারপাশটা দেখছে। এখনো পুরো অন্ধকার নামে নি। সাবরিনা একটু দূরে আছে বুঝে আজিম বলে শালা আমরা যখন শ্বশুড় বাড়ির লোকের মেহমানদারি করে পারছি না তুই তখন মেয়ে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিস। মাহফুজ জোরে জোরে হাসতে থাকে। মনে মনে ভাবে আজিম কে তো আর বলা যাচ্ছে না সাবরিনা তার শ্বশুড়বাড়ির লোক। আজিম বলে, আমি আসলেই সিরিয়াস। তোর মেয়ে ভাগ্য দেখ। তুই যখন একের পর এক মেয়ের সাথে ডেটিং করতি আমরা তখন একটা মেয়ের ফোন নাম্বার যোগাড় করতে গিয়ে হয়রান হয়ে যেতাম। তুই একটু কথা বললেই মেয়ে গুলা কেমনে যে পটে যেত শালা। মাহফুজ বলে এমন কঠিন কিছু না, একটু ভালভাবে কথা বললেই হয়। সামনে গিয়ে কাচুমাচু না করলেই হয়। আজিম বলে শালা বলা সহজ করা কঠিন। বউ পর্যন্ত কথায় পটে না আর অন্য মেয়ে মানুষ। সত্যি করে বল তো এই মেয়ে কে পটাস নি? মাহফুজ কিছু না বলে হাসে। আজিম বলে শালা কুত্তা তুই। আর তোর ভাগ্য বটে একটা।





[/HIDE]
 
[HIDE]
ঠিক এই সময় ফোন বাজতে থাকে আজিমের। আজিম বলে যেতে হবে রে দোস্ত, বউ কল দিচ্ছে। তবে এই নে তুই আমার চাকরির সময় এত উপকার করছিস। অন্য যার কাছে গেছি চার পাচ লাখের নিচে কথা বলে নায়। তুই আর চাচা মিলে কাজটা যেভাবে টাকা ছাড়া করে দিছিস সেটা আমি কখনো ভুলব না। এই বলে মাহফুজের হাতে একটা চাবি ধরিয়ে দেয়। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে এটা কিসের চাবি? আজিম বলে আমার অফিসটা চিনিস? মাহফুজ বলে একবার আসছিলাম তো। উত্তর সাইডে একটা টিনশেড আছে সেখানে না? আজিম বলে তোর স্মৃতিশক্তিও মাশাল্লাহ। সব মনে রাখিস। হ্যা, ঐখানে আমার অফিস। টিনশেডে চারটা রুম আছে পাশাপাশি। দুই এসিস্টেন্ট কিউরেটর, একজন ট্যুরিজম ডিপার্টমেন্টের অফিসার আর আরেকটা রুম আমার। রুমের বাইরে নেম প্লেট আছে দেখলেই চিনবি। মাহফুজ তাও জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আজিম বলে যদি তোদের ওয়াশরুমে যাবার দরকার হয় তাহলে ঐখানে যেতে পারবি। আর যাবার সময় চাবিটা গেটে দিয়ে আমার নাম বলে যাস। আমি রাতের দিকে সিগারেট খেতে বাসার বাইরে বের হই একবার, তখন গেট থেকে নিয়ে যাব। আবার ফোন বাজতে থাকে আজিমের। যাওয়ার জন্য উলটা ঘুরে আবার ফিরে আসে, মাহফুজ কে বলে ভিতরে একটা বড় সোফা আছে কিন্তু কাজে লাগাতে পারিস। মাহফুজ হাসতে হাসতে বলে তুই শালা পাভার্ট রয়ে গেলি তাই আর মেয়েদের পাত্তা পেলি না। আজিম হাসতে হাসতে বলে সে দেখা যাবে। পরে কথা হবে দোস্ত। আপাতত যাই, দরকার হলে ফোন দিস। আর জোরে সাবরিনা কে বলে ম্যাডাম ভাল করে ঘুরে দেখুন, তাড়াহুড়ার কিছু নাই। মাহফুজ আমার বন্ধু আর আমি এখানকার সিকিউরিটি অফিসার। সাবরিনা বলে থ্যাংক্স।

মাহফুজ আর সাবরিনা ভিতরে হাটতে থাকে। একদম কেন্দ্রে কেল্লার মূল ভবন। চারপাশে মোঘল আমলের ছোট ছোট কিছু স্থাপনা। ভিতরে একদম মোঘল আমলের মত করে চৌকনা ইটের রাস্তা রাস্তা আর ভিতরে ভিতরে বাগান। হাটার জন্য খুব উপযুক্ত জায়গা। অন্য সময় দর্শনার্থীদের ভিড়ে জনাকীর্ন হয়ে থাকে। মানুষ, শব্দ। কেল্লার চারপাশে শক্ত উচু প্রাচীর মোঘল আমলের। বাইরের শব্দ খুব একটা ভিতরে আসে না। ভিতরে এখন কোন দর্শনার্থী নাই নাই। কেল্লার মূল ফটকে খালি একজন গার্ড। তাই একদম নীরব কোলাহল মুক্ত একটা জায়গা। সাবরিনা বলে থ্যাংক্স। মাহফুজ বলে কেন? সাবরিনা বলে এই জায়গাটায় আনার জন্য। আজকের দিনটা বেশি হেক্টিক ছিল। সকালে অফিসে যখন একগাদা কাজে ব্যস্ত তখন আপনি মেসেজ না পাঠালে আমার মনে পড়ত না আমাদের আজকে এই মিটিং এ আসার কথা আর একটা ফোকাস গ্রুপ ডিসকাসন করার কথা। তারপর এই জ্যাম রোদের মধ্যে আমাকে বাইকে করে এত দূর নিইয়ে এলেন। আর সন্ধ্যার সময় এই সুন্দর জায়গাটাতে নিয়ে এলেন। বাইরে কত হইহল্লা আর এর থেকে অল্প একটু দূরে এই ভিতরে একদম শান্ত সব। আপনার ফ্রেন্ড না থাকলে তো এমন নিরব পরিবেশে দেখা হত না লালবাগ কেল্লা। অন্য সময় আসলে তো বাকি দর্শনার্থীদের মত দেখতে হত। ভিতরে একটু দূরে দূরে কারুকার্য করা ল্যাম্পপোস্ট বসানো। ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় বাগান তখন উদ্ভাসিত।

হাটতে হাটতে মাহফুজ দেখাতে থাকে এটা মূল কেল্লা, এটা সৈনিকদের থাকার ব্যারাক ছিল এখন প্রত্নতত্ব বিভাগের অফিস, এটা ভিতরের মসজিদ এখন আর ব্যবহার হয় না। এটা মূল কূপ। সিপাহি বিপ্লবের সময় ইংরেজ অফিসারদের এই ঘরে বন্দী করে রেখেছিল সিপাহীরা। এখন আর চিহ্ন নেই তবে একটা জায়গা নির্দেশ করে বলল ইংরেজরা পরে যখন কেল্লা আবার দখল করল তখন এখানে ফাসির ব্যবস্থা করেছিল সিপাহীদের। অনেক সিপাহী কে কেল্লার ভিতরে এই জায়গাটায় আবার অনেক কে একটু দূরে বাহদুর শাহ পার্কে ফাসি দিয়েছিল। তখন ঐটা অবশ্য একটা বাগান মত ছিল পরে স্বাধীনতার পর পার্ক করে বাহদুর শাহ পার্ক নাম দেওয়া হয়েছিল। সাবরিনা জিজ্ঞেস করে আপনি বুঝি এখানে চাকরি করতেন গাইড হিসেবে? সাবরিনার সিরিয়াস মুখ দেখে প্রশ্নটাতে একটু থতমত খায় মাহফুজ। বলে, না, তা কেন হবে। সাবরিনা বলে এই যে এত কিছু জানেন। মাহফুজ খেয়াল করে দেখে সাবরিনার চোখের কোণা হাসছে। মাহফুজ এবার একটু হালকা হয়ে বলে আরে আগে অনেক খেলতে আসতাম। পিছের দেয়ালের সাথে লাগোয়া একটা কর্মচারীদের কোয়ার্টার আছে। কর্মচারীদের অনেকের ছেলেমেয়ে আমার সাথে এক স্কুলে পড়ত। তাই ওদের সাথে আসতাম। আর পিছন দিক দিয়ে ঢুকার একটা দরজা আছে, কর্মচারীরা সাধারণত ব্যবহার করে। বন্ধুদের সাথে আসতাম তখন। সামনের গেট দিয়ে ঢুকলে টাকা দেওয়া লাগে তাই বন্ধুদের সাথে পিছনের কোয়ার্টারের গেট দিয়ে ঢুকতাম। পুরান ঢাকায় এমনিতে খেলার ফাকা জায়গা কম। আমরা তাই এখানে খেলতাম। এই জায়গায় আমার অনেক স্মৃতি। জায়গাটা পুরো হাতের তালুর মত চেনা আমার।

হাটতে হাটতে একটা জায়গায় ইটে বাধানো রাস্তার পাশে ঘাসে বসে পড়ে সাবরিনা। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে টায়ার্ড? সাবরিনা বলে একটু টায়ার্ড তবে অনেকদিন ঘাসে বসা হয় না তাই বসে পড়লাম। মাহফুজ এসে সামনে বসে। সাবরিনা একটা কলাপাতা সবুজ রঙের কামিজ পড়ে আছে সাথে ম্যাচিং কালারের সালোয়ার। সুন্দর লাগছে ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় সাবরিনা কে। যদিও সারাদিনের ক্লান্তি মুখে ভর করে আছে। চুল গুলো খানিকটা এলোমেলো। এর মাঝেও এই সাদা আলোয় দেখে মনে হয় সাবরিনার এই ক্লান্তি মাখা মুখটা যেন আলোয় ঝলমল করছে। এরকম আলোয় দীপ্ত কার মুখ দেখলে যে কেউ মায়ায় পড়ে যাবে। সাবরিনা পা থেকে স্যান্ডেল খুলে ঘাসে পা বুলায়, হাত দিয়ে ঘাস ধরে। সব সময় সাবরিনা কে অফিসিয়াল সেটিং এ দেখা মাহফুজের মনে হয় সাবরিনার ভিতর যে অন্য একটা মানুষ থাকে ধানমন্ডির ঐবিকাল বেলা আর আজকের এই সন্ধ্যা প্রমাণ করে দিচ্ছে। অফিসিয়াল সেটিং এ অনেক রিজিড মানুষটাকে এখন দেখে মনে হয় অনেক স্বতস্ফূর্ত। মাহফুজ কিছু না বলে খালি দেখে যায়। সাবরিনার ঘাসে হাত পা বোলাতে বোলাতে মনে হয় এই কয় মাসের প্রজেক্টের ক্লান্তি, গত কিছুদিনের মনের ভিতর সংশয় সব যেন শুষে নিচ্ছে এই ঘাস। ঠিক চারপাশের কোলাহল যেমন এই কেল্লার দেয়ালের ভিতর এসে চুপ করে যায় ঠিক তেমন করে মনের ভিতর ক্লান্তি, সংশয় সব যেন চুপ হয়ে গেছে এখানে ঘাসের স্পর্শে। মেডিটেশন করলে মন যেমন শান্ত হয়ে আসে, মনের ভিতর থাকা সব কঠিন প্রশ্ন কে সহজে মোকাবেলা করা যায় সাবরিনার মনে হয় ঠিক তেমন একটা অবস্থা বুঝি ওর মনের ভিতর এখন।






[/HIDE]
 
[HIDE]

সাবরিনা বলে সোয়ারিঘাটের রাতের বেলার জন্য আপনাকে কখনো প্রপারলি ধন্যবাদ দেওয়া হয় নি। ঐ রাতে আপনি না আসলে আমাকে খুন করে ফেলে গেলেও কেউ জানতে পারত না। মাহফুজ কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারে না। সাবরিনা নিজে থেকে বলে চলছে। এরপরে আপনি যেভাবে আপনি ঘটনা সামলালেন তাতে আমি আর বেশি অবাক হয়েছিলাম। আমাদের দেশে এরকম একটা ঘটনা ঘটলে যাই হোক দিন শেষে মেয়েকে সবচেয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়। হাজারটা গসিপ তৈরি হয়। সংসারে অশান্তি। আপনি যেভাবে পুরো ঘটনাটা হাওয়া করে দিলেন, যেন ঘটনা টা ঘটেই নি। আমিও তখন সেই ঘটনা টা একটা দূর্ঘটনা ভেবে ভুলে থাকতে চেয়েছি। আমি ভুলে থাকতে পেরেছি কেননা আপনি পুরো ঘটনা হাওয়া করে দিয়েছিলেন। আমি জানি ঐ পশু গুলো আমার ছবি তুলেছিল সেই অবস্থায়। আপনার কাছে সেই মোবাইল আছে আমি জানি। অন্য কেউ হলে হয়ত পরে সেই ছবি দিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করত কিন্তু আপনি ভুলেও কোনদিন সেই প্রসংগ তুলেন নি। সেই কারণে আপনার প্রতি আমার একটা মুগ্ধতা তৈরি হয়েছে। আপনার সাথে যেদিন দৃক গ্যালারিতে প্রদর্শনী দেখতে গেলাম সেদিন আপনার ব্যবহার যেন আমাকে একটু অপ্রস্তুত করে ফেলেছিল। এক সাথে কনফিডেন্ট, চার্মিং কিন্তু ফানি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষের দিক থেকে এক ধরণের শূণ্যতা তৈরি হয়েছিল আমাদের বন্ধু মহলে। বিয়ে, বিদেশে পড়তে যাওয়া, চাকরি সব মিলিয়ে সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছি একেকখানে। চাকরিতে সেভাবে বন্ধু তৈরি হয় নি যার সাথে আমার গল্প করার টপিক মিলবে। আপনি সেদিন আমাকে এতটাই নির্ভার করে দিয়েছিলেন যে আমি আমার মনের দরজা খুলে দিয়েছিলাম। গড়গড় করে জমানো অনেক কথা বলে ফেলেছিলাম। আমার ফ্যামিলি, হাজবেন্ড, চাকরি সব নিয়ে। কোন ছেলের সাথে এত কিছু আগে কখনো শেয়ার করি নি। এমনকি আমার হাজব্যান্ডের সাথেও না। মনে হচ্ছিল মানুষের আত্মার যে একটা সংগী দরকার আপনি সেই বন্ধু। এরপর? এরপর আসলে যা ঘটছে আমি শিওর না সেটা কে আমি কীভাবে দেখব। লালমাটিয়ার মাঠে আপনি যখন প্রথম আমাকে স্পর্শ করলেন আমি তখন অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সারা জীবন মেনে চলা নীতি নৈতিকতার কতটা বিরোধী এই স্পর্শ। সংগে সংগে আমার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল আমি করতে পারি নি। আপনার প্রতিটা স্পর্শ যেন আমাকে আর অসাড় করে দিচ্ছিল। আবার একসাথে ভিতরে ঘুমন্ত কিছু কে জাগিয়ে তুলছিল। পরে আমি অনেক ভেবেছি আমার ঐ রকম প্রতিক্রিয়ার কারণ কি? কেন আমি কিছু না বলে দেখে গেলাম। কিভাবে আপনি আমার ভিতরের অন্য কিছু জাগিয়ে তুললেন। ভেবে ভেবে আমি দুইটা কারণ বের করেছি। আমি সারাজীবন আমার চারপাশে একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে রেখেছি। অন্তত ছেলেদের জন্য। বাংলাদেশে আমাদের মেয়েদের সামাজিক বাস্তবতায় খুব কার্যকরী একটা জিনিস। অনেকে আমাকে মুডি, বিচ অনেক কিছু বলে আড়ালে কিন্তু অযথা অহেতুক ছেলেদের ছ্যাবলামি শুরুতে থামিয়ে দেওয়ার এর থেকে ভাল কোন উপায় নেই। খালি দুই জনের জন্য আমি এই দেয়াল নামিয়ে নিয়েছি। এক আমার হাজব্যান্ড সাদমান আর দুই আপনি। আবার আমি আপনার সাথে এমন কথা শেয়ার করেছি যেটা আমার করা উচিত হয় নি। আমি আমার জীবনের অপূর্নণতা, প্রাপ্তি সব নিয়ে গল্প করেছি। বিবাহিত জীবনে বিপরীত লিংগের কাউকে এই ধরণের তথ্য দেওয়া ভুল।

আমার ভুল। আপনি এটার স্বদব্যবহার করেছেন। আপনাকে আমি বলে ফেলেছি আমার স্বপ্ন ছিল আমার হাজব্যান্ড কেয়ারিং সাথে সাথে ডেয়ারিং হবে। কনফিডেন্ট বাট নট এরোগেন্ট। আপনি জাস্ট এই তথ্য গুলো ইউজ করেছেন। আমার ভিতরে চাপা থাকা আবেগ সেই আগুনে জ্বলেছে। একটা মানুষের গোপন তথ্য নিয়ে সেটা ইউজ করলে তাকে কি বলা যায়? আপনাকে আমি কি বলব? যখন মনে হয়েছে আপনি ট্রাস্টে ভেংগেছেন তখন আমার আবার মনে হয়েছে আপনি আগুন জ্বালালেও আমি নিভাই নি। আবার চাইলে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করতে পারতেন তাও করেন নি। আপনি আসলে গত কিছুদিন আমার সব লজিক গুলিয়ে দিয়েছেন। আর কনসার্টের দিন? আমার মনে হয়েছে আপনি কীভাবে আমার সব ভার্নারেবল মূহুর্তে উপস্থিত থাকেন? সব কি আপনার প্ল্যান করা? কিন্তু কনসার্টে আমার ঐ অবস্থা তো কোন ভাবেই আপনার প্ল্যান করতে পারার কথা না। আপনি যেভাবে সর্বশক্তি দিয়ে আমাকে সেদিন হেল্প করার চেষ্টা করলেন সেটা তো মিথ্যা না। আবার ঠিক পরের মূহুর্তে যেভাবে আমার দূর্বল মূহুর্তে আমার ভিতর আগুন জ্বালালেন সেটা কী ঠিক হল? আমার মনে হয়েছে আপনি বুঝি জানেন ঠিক কোন মূহুর্তে কি বলতে হবে, কোথায় স্পর্শ করতে হবে। আমি যেন নিজে কে নিজেই সিনেমার ক্যারেক্টারের মত দেখছিলাম। আপনি জানেন গত কয়েকদিন ধরে আপনি আমাকে তুমি করে সম্বোধন করছেন সেটা আমি খেয়াল করেছি। এর আগে আমার পারমিশন ছাড়া সরাসরি আমাকে তুমি কে বলেছে আমি মনে করতে পারছি না। কিন্তু তারপরেও আমি কিছু বলি নি। কারণ আমি জানতাম এই বিষয়ে কথা বললে আর সব উঠে আসবে। আমি নিজেই সে সব মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। আপনি আসলে আমার কাছে একটা রহস্যময় ক্যারেকটার। সারাজীবন পলিটিক্স করা লোকদের আমি যেরকম ভেবে এসেছি আপনি সেরকম নন মোটেই। আপনার ভিতর একটা সফট দিক আছে আবার একটা টাফ, ডেয়ারিং সাইড আছে আমি যেটা প্রশংসা করি। আবার আপনি আমার সব দূর্বল জায়গা জানেন। কোন কোন বার সবার কাছ থেকে সে দূর্বল জায়গা লুকাচ্ছেন আবার কোন কোন বার নিজেই সে দূর্বল জায়গায় হাত দিয়ে আগুন জ্বলাচ্ছেন। যে আগুন অনৈতিক। আমি আসলেই জানি না আপনাকে আমার কীভাবে দেখা উচিত। তবে আজকে আমাদের প্রজেক্টের ফিল্ডের শেষ দিন। হয়ত আপনার সাথে এরপর এভাবে আর কথা হবে না। এই কথা গুলো না বলতে পারলে আমি ভিতরে ভিতরে গুমড়ে গুমড়ে কষ্ট পেতাম। আজকের এই কোলাহলের মাঝে নীরব এই চত্ত্বর আমার ভিতরের সব কথা বের করে এনেছে।

মাহফুজ চুপচাপ সাবরিনার কথা শুনে কিছু বলে না। সাবরিনা কথা শেষ করে চুপ করে থাকে। কেউ কোন কথা বলে না। ঝি ঝি পোকা ডাকে পাশের কোন ঝোপ থেকে। কোটি মানুষের শহরে নীরব চত্বরে ঝি ঝি পোকার ডাক যেন অলৌকিক। ল্যাম্পপোস্টের সাদা আলোয় দুইটা মানুষ মুখোমুখি। অনেক কথা তাদের মনে তবে মাঝখানে শুধু অদ্ভুত নীরবতা। সারাদিনের গুমোট গরমের পর সন্ধ্যা থেকে হালকা বাতাস। একটু দূরেই বুড়িগংগা নদী। সময়ের সাথে সাথে সেই বাতাস বাড়ছে আর নদী থেকে শীতল পরশ বয়ে আনছে। দূর আকাশে হঠাত হঠাত আলোকিত হচ্ছে। দূরে কোথাও বজ্রপাত হচ্চে তবে এখানে কোন শব্দ নেই। খালি হঠাত হঠাত চমকে উঠা আলো আকাশ আলোকিত করে দূরাগত ঝড়ের সংকেত দিচ্ছে। কালবৈশাখির মৌসুম এটা। তবে সামনা সামনি বসে থাকা এই দুই মানব মানবীর সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। মাহফুজ কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না, মনের ভিতর কথা গোছাচ্ছে। সাবরিনার খোলা চুল হাওয়ায় উড়ছে। সাবরিনা মাহফুজের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর মনের ভিতর একটা ঝড় বইছে। ভেবেছিল জমে থাকা কথা গুলো বলে ফেললে সেই ঝড় থেমে যাবে কিন্তু উলটো এখন সেই ঝড় আর বড় হয়ে মাহফুজের উত্তরের প্রতীক্ষা করছে।





[/HIDE]
 
[HIDE]

মাহফুজ জানে এইটা মেক ইট অর ব্রেক ইট মোমেন্ট। প্রতিটা খেলায় একটা খেলা ঘোরানোর সুযোগ পাওয়া যায়, সেই সুযোগ মিস করলে খেলায় অবধারিত হারতে হয়। সাবরিনার এই মন খুলে কথা বলা সেই সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কাজে না লাগাতে পারলে আর এই চান্স পাওয়া যাবে না। কিন্তু সাবরিনা কে কতটুকু বলবে? সবটুকু? কেন আসলে সাবরিনার কাছে এসেছিল প্রথমে? সিনথিয়ার কথা বলবে? মাহফুজের ভিতর প্রতিদ্বন্দ্বী সত্তা জেগে উঠে, যে কোন মূল্যে জয়ী হবার ইচ্ছা। সিনথিয়া, প্রথম কেন এসেছিল সেই কথা গুলো না বলার সিদ্ধান্ত নেয় দ্রুত। মাহফুজ নিজে কে নিজেই যুক্তি দেয় ও কোন মিথ্যা বলছে না খালি ওর পুরো গল্পের একটা অংশ আপাতত বলছে না। মাহফুজ বলতে থাকে আসলে তোমাকে প্রথম আমি যখন দেখি তখন আমার মনের ভিতর তোমার কে নিয়ে কোন অনুভূতি ছিল না। আমি খালি আমার কাজে এসেছিলাম। প্রথম প্রথম যখন তোমার অফিসে আসতাম তখন অনেকেই আমাকে আড়ালে আবডালে বলেছিল তোমার সম্পর্কে তুমি খুব মুডি, কোল্ড বিচ। সহজে কার সাথে মিশ না। খুব নাকি দেমাগ তোমার। ফ্যামিলি স্ট্যাটাস, তোমার এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড এসব নিয়ে। আমি নিজেও সেসব সত্যি ভেবেছি। কিন্তু তোমার সাথে যত মিশেছি তত কিভাবে কিভাবে যেন একটা মায়ায় পড়ে গেছি। আমার মনে হয়েছে মানুষ গুলো তোমাকে হয় বুঝতে পারে নি নাহয় ওরা জেলাস। তোমার ভিতর আরেকটা মানুষ আছে যেটা কেয়ারিং, হাসিখুশি, বুদ্ধিমান। আমি জানতাম তোমার কাছে আমার কোন পাত্তা পাবার জো নেই। কিন্তু মনে তো লজিক মেনে চলে না। আমি সময়ের সাথে সাথে খালি ডুবেছি, উঠার উপায় নেই জেনেও ডুবেছি। মাঝখানে তুমি আমার সাথে কথা কমিয়ে দিয়েছিলে। হয়ত তোমার কোন লজিক ছিল কিন্তু সেই সময় টা আমার ভেতরে একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল অন্যদের কাছে সব শোনা কথা বুঝি সত্যি। রাগ হয়েছিল তখন খুব। তবে সোয়ারিঘাটের দিন তোমার অফিসের ড্রাইভার যখন আমাকে ফোন দিয়েছিল তখন আমি আসলে আমার অনুভূতির গভীরতাটা বুঝতে পেরেছিলাম। সব কাজ ফেলে বাতাসের বেগে ঢাকার জ্যাম, ভীড় ঠেলে ছুটে এসেছিলাম। তোমাকে ঐভাবে বাধা দেখে আমার ভিতর কি রাগটা হয়েছিল বলে বুঝাতে পারব না, যদি লাশ গুম করে ফেলার উপায় থাকত আমার কাছে তাহলে সেই খানেই মেরে পুতে ফেলতাম ঐ বদমাশ দুইটাকে। তুমি জিজ্ঞেস করেছিলে আমি কেন ব্লাকমেইল করি নি তোমায় কারণ আমি তোমাকে চেয়েছি তবে যতটুকু তুমি দিতে চাও ততটুকু জোর করে না। মাহফুজের এই স্বীকারোক্তিতে কেপে উঠে সাবরিনার বুক। মাহফুজ বলে চলে আজকে যেহেতু সত্য বলার রাত তাই কোন কিছু গোপন করব না তোমার কাছে। সেই রাতে তোমাকে ঐরকম বাধা দেখার ছবিটা আমার মাথার ভিতর গেথে গেছে। কতবার আমি সেই মোবাইল দুইটা নষ্ট করার কথা ভেবেছি কিন্তু করতে পারে নি। মোবাইল গুলো নষ্ট করিনি তোমাকে ব্লাকমেইল করবার জন্য না। আমি জানি তোমাকে পাওয়ার সুযোগ আমার খুব সামান্য। তাই সেই মোবাইলে উঠানো তোমার ছবি গুলো আমি প্রতিরাতে দেখি। আমার বুকে যখন অসহ্য জ্বালা হয় ঐ ছবি গুলা তখন আমাকে মুক্তি দেয়। তোমার হাত বাধা, মুখের উপর কাপড়। তাই তোমাকে চেনা যায় না কিন্তু আমি জানি ঐ ছবিতে ওটা তুমি। একসাথে ভার্নারেবল আর সৌন্দর্যের এক মিশ্রণ। ঐ ছবি থেকে আমার মুক্তি নেই। কত রাত আমি খালি ঐ ছবি দেখে কাটিয়েছি। সাবরিনার গলার কাছে শ্বাস আটকে আসে মাহফুজের কথায়। বুকের খাচা ভেঙ্গে যেন হৃদপিন্ড বের হয়ে আসবে। মাহফুজ বলে তোমার প্যান্টি সেই রাতে আমি উদ্ধার করেছিলাম তোমার মুখ থেকে। তোমার ঘাম, তোমার লালা আর তোমার গায়ের গন্ধ সব লেগে আছে সেই প্যান্টিতে। আমি ফেলে দেই নি। বরং প্রতিরাতে তোমার সেই ছবি আর প্যান্টি আমাকে মুক্তি দিয়েছে। কতবার আমি মাস্টারবেশন করেছি সেই ছবি দেখে তোমার গন্ধ শুকে এর ঠিক নেই। এটা খালি কাম না ভালবাসা। এক প্রেমিকের অপূর্ণ ভালবাস। প্রেমিকার রঙ, রূপ, গন্ধ সব যেন আমার ভিতরে সব দরজা খুলে দিয়েছে। কাম ছাড়া কি প্রেম হয় নাকি প্রেম ছাড়া কাম শুধু একটা শারীরিক ক্রিয়া। তাই প্রতিরাতে প্রতিটা মাস্টারবেশন সেশন তোমার প্রতি আমার ভালবাসার অর্ঘ্য।

সাবরিনা যেন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিয়েছে। কত ইজিলি কনফিডেন্টলি মাস্টারবেশনের কথা বলল মাহফুজ, যেন এটাই স্বাভাবিক এটাই নিয়ম। সাবরিনার মনে থাকা গোপন সেই পুরুষ যে কনফিডেন্টলি তার ভালবাসা প্রকাশ করবে মাহফুজ যেন সেই পুরুষ। সাবরিনা যেন বুঝতে পারে ঠিক এই কারণে ও বুঝি একবারো মাহফুজের সামনে কোন প্রতিরোধের দেয়াল তুলতে পারে না। বাতাস বাড়ছে চারপাশে। আকাশে আলোর ঝলকানি বেড়েছে। এতক্ষণ দূর আকাশে নিঃশব্দ আলোর ঝলকানি যেন একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। হালকা হালকা বাজ পড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছে। বৃষ্টি আসার আগে বাতাস যেমন ঠান্ডা হয়ে যায় সেই ঠান্ডা বাতাস আশেপাশে। তবে সেদিকে মাহফুজ সাবরিনার কার খেয়াল নেই। মাহফুজ ওর মনের কথা বলতে ব্যস্ত আর সাবরিনা শুনতে। এত সাহস নিয়ে কেউ সাবরিনা কে আগে মনের কথা বলে নি। মাস্টারবেশনের মত নোংরা শব্দটা দিয়ে যে ভালবাসা বুঝানো যায় সেটা সেটা মাহফুজ বলার আগে সাবরিনার জানা ছিল না। মাহফুজ বলে চলে, তুমি প্রশ্ন করেছিলে না লালমাটিয়ার সেই সন্ধ্যায় আমি তোমার বিশ্বাস ভংগ করেছিলাম কিনা? না, আমি কোন বিশ্বাস ভংগ করি নি। সেই রাতে আমি নিজেই ছিলাম ভংগুর। তুমি যেভাবে তোমাকে আমার কাছে মেলে দিয়েছিলে তখন আমি ছিলাম সবচেয়ে ভংগুর। নিজের উপর আমার কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এত দিনের ভালবাসার মানুষ এত কাছে পেয়ে আমি এড়াতে পারি নি নিজেকে। তোমাকে প্রথম স্পর্শ করার পর তাই আমার নিজের উপর কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। আমি খালি যন্ত্রের মত কাজ করে গেছি। তোমাকে দেখাতে চেয়েছি আমার ভালবাসায় কি আছে, তোমার মন আর শরীর দুইয়ের সাথে আমার মন আর শরীর এক করতে চেয়েছি। আর কনসার্টের দিন? সেদিনে ঘটনার পর আমার বিশ্বাস জন্মেছে আসলে তোমার আমার মিলন ঘটানোর জন্য কাজ করছে অদৃশ্য শক্তি। নাহলে তোমার টয়লেটে যাবার তাড়া, ঠিক সেই মূহুর্তে ভিআইপি টয়লেটের গেট বন্ধ হওয়া এছাড়া এর কি ব্যাখ্যা হতে পারে। আর সেই তাবুর ভিতর যখন তোমাকে আমি দেখি এরপর থেকে আমার নিজের উপর নিজের যেন কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তোমার সেই ভংগুর অবস্থায় তোমার সৌন্দর্যের কোন তুলনা ছিল না। আমার মনে হয়েছিল তোমাকে আমার জয় করতে হবেই। মন, দেহ সব। এরপর আমি খালি দম দেওয়া পুতুলের মত কাজ করে গেছি। আর তোমাকে আমি কেন তুমি করে বলি? আমাদের মাঝে এত কিছু ঘটে যাবার পর আর তুমি করে বলা টা কি একটা প্রহসন না? আমি যতবার তোমার শরীর স্পর্শ করেছি ততবার তোমার শরীর সাড়া দিয়েছে। তোমার ভিতরের এতদিনের সংস্কার তোমাকে বাধা দিচ্ছে কিন্তু আমার মত করে কেউ তোমাকে চাইবে না। এত প্রবল ভাবে, এত ভংকর ভাবে কেউ ভালবাসবে না। সাবরিনার ঠান্ডা বাতাসের মাঝেও গরম লাগছে যেন। আকাশে ঘন ঘন আলোর ঝলকানি যেন ওর মনের কথা বলছে। এত ভালবাস, এত প্রবল ভালবাসা আগে কখনো পায় নি সাবরিনা। কীভাবে একে পায়ে ঠেলে দেয়? আবার সাদমানের কি হবে? সাদমান কে ও অস্বীকার করত পারে না, ফেলে দিতে পারে না। তাহলে ওর এত বছরের সব তো মিথ্যা হয়ে যাবে। মাহফুজ যেন ওর মনের কথা পড়তে পারে। বলে আমি খালি তোমার ভালবাসা চাইছি প্রতিদানে তোমাকে ভালবাস দিব। তোমার জীবন তছনছ করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। সাদমান তোমার জীবনে যে জায়গায় আছে সে জায়গায় থাকবে। আমি খালি তোমার শূণ্যস্থানটা পূরণ করতে চাই। আমি খালি তোমার জীবনে স্থান চাই। দ্বিতীয় পুরুষ হলেও। আমি নাহয় তোমার গোপন প্রেমিক হয়ে থাকব, কোন স্বীকৃতি ছাড়া। আমার খালি তোমার ভালবাসা চাই।




[/HIDE]
 
[HIDE]


সাবরিনা কি বলবে বুঝে উঠতে পারছে না। ওর মনের ভিতর হাজার হাজার স্বর বলছে হ্যা বলতে কিন্তু একটা জোরালো স্বর বলছে এটা করো না সাবরিনা। এক ফোটা দুই ফোটা করে বৃষ্টির ফোটা পড়ছে। বাতাস বইছে জোরে। প্রকৃতি যেন ওদের মনের ঝড় নিয়ে এসেছে এই ঢাকা শহরে। মাহফুজ বলে সাবরিনা কিছু বল। সাবরিনা উত্তর দিতে গিয়েও কিছু বলে উঠতে পারে না। হঠাত করেই ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি শুরু হয় সাথে ছোট ছোট শিলা। কালবৈশাখি। মাহফুজ আর সাবরিনা উঠে দাঁড়ায়। হাটতে হাটতে ওরা কেল্লার চত্বরের উত্তর সাইডে চলে এসেছিল। এখান থেকে প্রধান ফটক দূরে। যেতে যেতে একদম ভিজে যাবে। আবার বের হতে পারলেও বাইকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা নেই। তাই মাহফুজ সাবরিনার হাত ধরে টান দিয়ে বলে আমার সাথে আস। মাহফুজ দৌড় দেয়। সাবরিনা এক হাতে স্যান্ডেল আর মাথার উপর হ্যান্ডব্যাগটা ধরে দৌড়াতে থাকে। একদম যেন ছোটবেলার বৃষ্টির সময় ছাদে ভেজার অনুভূতি। টিনশেডের সামনে এসে ওরা দাঁড়ায়। বাতাসের প্রকোপ বাড়ছে। বৃষ্টির ছিটায় জামা কাপড় ভিজে যাচ্ছে। সাবরিনা হালকা হালকা কাপছে। বৃষ্টিতে জামা ভিজে যাচ্ছে আর ঠান্ডা হাওয়ায় শরীরে তাই ভেজা কাপড় কাপুনি ধরাচ্ছে। মাহফুজ সাবরিনা কে জড়িয়ে ধরে, বাতাসে ভেসে আসা বৃষ্টির কণা থেকে সাবরিনার শরীর কে আড়াল করতে চেষ্টা করে। সাবরিনার মনে তখন অনেক গুলো প্রশ্ন কিন্তু সঠিক উত্তর কোনটা। সাবরিনা হঠাত করেই বলে আমার ভয় করছে। মাহফুজ বলে ভয় নেই। এখানে আমাদের কেউ কিছু বলবে না। এই বৃষ্টি বাতাস যেন সাবরিনার মনের কথা বলার সুযোগ করে দেয়। মাহফুজ কে বলে আমি সেটা নিয়ে ভয় পাচ্ছি না। আমার মনে হচ্ছে এরপর কী হবে? আমার মনের একটা অংশ বলছে হ্যা বলতে আরেকটা অংশ ভয় দেখাচ্ছে তাহলে এরপর কি হবে। মাহফুজ সাবরিনার কপালে একটা চুমু খায়। সাবরিনা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বলে ভয় নেই সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আছি। সাবরিনার শরীরে এক উষ্ণ স্রোত বয়ে যায়। সাবরিনা একটু উচু হয়ে মাহফুজের গলায় একটা চুমু খায়। মাহফুজের মনে হয় অর্ধেক যুদ্ধ জয় হয়ে গেছে। জোরে একটা বাজ পরে। বাতাস আর বৃষ্টি যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। দুইজনে প্রায় ভিজে গেছে। এই সময় মাহফুজের মনে পড়ে ওর পকেটে আজিমের অফিসের চাবি আছে। মাহফুজ সাবরিনা কে বলে একটু সরে দাড়াও। সাবরিনা অবাক হয়ে তাকায়। মাহফুজ চোখের ইশারায় আসস্ত করে। পকেট হাতড়ে চাবি বের করে। ওরা যে দরজার সামনে দাঁড়ানো ছিল তার পাশের দরজাটা আজিমের অফিসের।

অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে চাবি লাগায়। দরজা খুলে। সাবরিনা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। মাহফুজ ভিতরে ঢুকে মোবাইলের লাইটে সুইচবোর্ড খুজে বের করে। সুইচ টিপতেই টিউব লাইটের সাদা আলোয় রুমটা ভরে যায়। সব সরকারি অফিসের একটা ধরণ থাকে আজিমের অফিস এর ব্যতিক্রম না। একটা বড় টেবিল যার উপর গ্লাস দেওয়া। চেয়ারের উপর একটা বড় তোয়ালে দিয়ে ঢাকা। একবার কে জানি বলেছিল সরকারি অফিসাররা চেয়ারে তোয়ালে দেওয়াকে স্ট্যাটাসের সিম্বল মনে করে। যত বড় অফিসার তত দামী তোয়ালে। সেই তোয়ালে দিয়ে কোন কাজ হয় না খালি চেয়ার ঢাকা থাকে। মাহফুজ হাসে। টের পায় ওর পিছন পিছন দরজায় সাবরিনা এসে দাড়িয়েছে। টিনশেডের অফিস। উপরে টিনশেড আর চারপাশে দেয়াল। উপরে টিনে গম গম করে জোরে বৃষ্টির শব্দ। বাতাসে বাইরে থেকে বৃষ্টির ছিটা এসে ভিতরে পানি ঢুকাচ্ছে তাই মাহফুজ দরজা টা বন্ধ করে দেয়। আজিমের টেবিলের সামনে ভিজিটরদের জন্য দুইটা কাঠের চেয়ার। একটু দূরে একটা তিন সিটের সোফা সেট। সেটার সামনে একটা টি টেবিল রাখা। আরেক প্রান্তে এক আলমিরা। অফিসিয়াল ফাইল দেখা যাচ্ছে কাচের বাইরে থেকে। আরেকটা দরজা মাহফুজ আন্দাজ করে টয়লেট। রুমে দুইটা টেবিল ফ্যান। একটা আজিমের চেয়ারের পাশে। আরেকটা সোফার পাশে। স্ট্যান্ডার্ড সরকারি অফিসারের রুম। মাহফুজ এবার ঘুরে সাবরিনা কে দেখে। বৃষ্টিতে একদম ভিজে গেছে। কাপছে। গায়ের কাপড় একদম লেপটে আছে শরীরে। সাবরিনার ভরাট বুক ভেজা কাপড়ে বুঝা যাচ্ছে। চুল একদম লেপ্টে আছে মাথায়। কাপছে রীতিমত। মাহফুজ বলল ভিজে গেছ একদম, ঠান্ডা লেগে যাবে। সাবরিনা আমার দিকে ইংগিত করে বলল আপনিও ভিজে গেছেন একদম। নিজের দিকে খেয়াল করে দেখে মাহফুজ ওর সেইম অবস্থা। সারা গা ভিজে গেছে। কেডসে পানি ঢুকেছে। কেডস খুলে দেয়ালের গায়ে ৪৫ ডিগ্রি এংগেলে দাড় করিয়ে রাখে যাতে পানি বের হয়ে যেতে পারে। সাবরিনাও ওর জুতা খুলে রাখে। মাহফুজ নিজের গেঞ্জিটা খুলে ফেলে। সাবরিনা তাকিয়ে দেখে। মাহফুজ সাবরিনা কে দেখলেও, সাবরিনা মাহফুজ কে কাপড় ছাড়া দেখে নি। মাহফুজের শরীর জিম করা বডি না কিন্তু সারা শরীরে এক ধরণের টাফনেস। ছোটবেলা থেকেই খেলাধূলায় ব্যস্ত থাকত। এখনো সুযোগ পেলে খেলে। সারাদিন দৌড়াদৌড়িতে ব্যস্ত থাকে তাই মেদ জমে নি শরীরে। সাদমান ২৮ বছর বয়সেই হালকা একটা ভুড়ি জমিয়েছে পেটে। সেখানে ৩২ এ একদম টানা জমাট শরীর। হেটে গিয়ে চেয়ার থেকে টাওয়াল টা নেয় মাহফুজ। নিজের মাথা আর শরীরটা মুছে। মুছতে মুছতে সাবরিনার দিকে এগিয়ে যায়। ঠান্ডায় সাবরিনা কাপছে কিন্তু সাবরিনার চোখ মাহফুজের শরীরে। সামিরার বলা সকাল বেলার কথা গুলো মনে পড়ে। মাহফুজ কাছে এসে সাবরিনার মাথা মুছে দিতে থাকে। যেন কতদিনের পরিচিত।

মাথা মুছতে মুছতে মাহফুজ সাবরিনার মাথায় চুমু খায়, কপালে চুমু খায়। সাবরিনার পেটের কাছে শিরশরি করতে থাকে। ওর মনে হয় মুখ ফুটে বলে প্লিজ মাহফুজ আমাকে জড়িয়ে ধর কিন্তু এতদিনের সংস্কার, লজ্জা কিছু বলতে দেয় না। মাহফুজ মাথা মুছতে মুছতে সাবরিনার চোখে এবার চুমু খায়। সাবরিনা এবার আর পারে না। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মাহফুজ কে। মাহফুজের মনে হয় বাকি অর্ধেক বুঝি জয় হয়ে গেল, এবার ধীরে ধীরে খুটি গাড়ার পালা। মাহফুজ বলে তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে জামা খুল। সাবরিনা অস্ফুট স্বরে বলে এখানে? মাহফুজ বুজে এখন আর এক্টিভ রোল নেবার পালা ওর। বলে, তোমার শরীরের প্রতিটা জায়গা আমার দেখা হয়ে গেছে সাবরিনা। নতুন করে লুকানোর কিছু নেই। সাবরিনা মাহফুজের কথায় কেপে উঠে। মাহফুজ বুঝে অন্য উপায় নিতে হবে। মাহফুজ ওর বেল্ট খুলতে থাকে। সাবরিনা আতকে উঠে জিজ্ঞেস করে কি করছেন। মাহফুজ বলে এই প্যান্টে বেশিক্ষণ থাকলে ঠান্ডায় জ্বর আসবে। আর যতক্ষণ অপেক্ষা করছি ততক্ষণ শুকাতে দেই। এই বলে প্যান্টটা খুলে ফেলে। কাল বক্সার আন্ডারওয়ার পড়া মাহফুজ। মাঝ বরাবর বড় হয়ে ফুলে আছে। সাবরিনা জানে ঐ ফোলা জায়গাটায় কি আছে তবু যেন এক রহস্যময় জিনিস দেখছে সেভাবে তাকিয়ে থাকে।

[/HIDE]
 
[HIDE]
মাহফুজের পায়ে লোমে ভরা। আন্ডারওয়ারটা এমন ভাবে টাইট হয়ে আছে যেন ভিতরের জিনিস ফেটে বের হয়ে আসবে। এখন পর্যন্ত একটা পেনিস দেখেছে সাবরিনা। সাদমানের টা। এতদিন ঐটাকেই অনেক বড় মনে হত কিন্তু এখন আন্ডারওয়ারে ঢাকা জিনিসটা কে মনে হচ্ছে এক বুনো জন্তু। আর সাদমানের টা যেন এক পোষা পশু। মাহফুজ আন্ডারওয়ার পড়েই ওর গেঞ্জি আর জিন্স নিয়ে একটা কাঠের চেয়ারে রাখল, চেয়ার টা টেনে আজিমের টেবিলের পাশের ফ্যানের কাছে নিয়ে গিয়ে ফ্যানটা ছেড়ে দিল। সাবরিনার দিকে তাকিয়ে বলল কাপড় গুলো একটু শুকানো দরকার। এদিকে টিনের চালে ঝম ঝম বৃষ্টি পড়েই চলছে। মাহফুজ জানে কিভাবে সাবরিনার লজ্জা ভাংগতে হবে, সেজন্য ওকে খানিকটা নির্লজ্জ হতে হতে হবে। মাহফুজ বলে আমার খুব হিসু ধরেছে তোমার ধরে নি এই বলে আন্ডারওয়ারের উপর দিয়ে ভিতরে বাড়াটা ফিট করার চেষ্টা করে। সাবরিনা কোন কথা না বলে মাহফুজের কাজ দেখতে থাকে। মাহফুজ খালি পায়ে হেটে হেটে টয়লেটের দরজা খুলে লাইট জ্বালায়। ভিতরে একটা স্যান্ডেল। সেটা পড়ে টয়লেটের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। দরজা লাগায় না, খোলা দরজা দিয়ে অবাক বিস্ময়ে সাবরিনা দেখতে থাকে। দেশি স্টাইলের টয়লেট অর্থাৎ প্যান। গিয়ে সাবরিনার দিকে উলটা ঘুরে আন্ডারওয়ারটা হাটু পর্যন্ত নামিয়ে বসে পড়ে। সাবরিনা অবাক হয়ে দূর থেকে দেখতে থাকে। মাহফুজের পাছা ওর চোখে পড়ে। শক্ত পেশিবহুল এক পাছা। ওর বান্ধবীরা ভার্সিটিতে থাকতে ছেলেদের পাছার উপর রেটিং দিত। ওদের ভাষ্যমত যে ছেলের পাছা যত বড় তার কোমড়ের জোর তত বেশি আর কোমড়ের জোর যত বেশি ততবেশি শক্তিতে পিস্টন চালাতে পারবে। লজ্জায় লাল হতে থাকে সাবরিনা। মাহফুজ পেট খালি করতে থাকে। খোলা দরজা দিয়ে মাহফুজের হিসুর ছড় ছড় শব্দ সাবরিনার কানে পৌছায়। মানুষের সাইকোলজির একটা জিনিস হল আপনি যদি দেখেন কাউকে টয়লেট করতে তাহলে আপনারো টয়লেটের বেগ পাবে বিশেষ করে পানির শব্দ শুনলে। সাবরিনার তাই তলপেটে চাপ অনুভব হয়। মাহফুজ কাজ শেষ করে পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়। আন্ডারওয়ার তুলে পড়ে নেয়। সাবরিনা একটু হতাশ হয়। এমন শক্তিশালী পাছা সাবরিনা আগে দেখে নি অবশ্য ওর খালি চোখে দেখা পাছা একটাই সাদমানের টা। মাহফুজ হেটে সাবরিনার সামনে আসে, গলার কাছে কামিজ ধরে একটু ঝাকিয়ে বলে এভাবে ভিজা কাপড়ে থাকলে জ্বর আসবে কিন্তু। সাবরিনা কিছু বলে না। মাহফুজ যেন সাবরিনার ধৈর্য্য পরীক্ষা নিতে চাইছে। সরে গিয়ে সোফার কাছে থাকা স্ট্যান্ড ফ্যানটা ছেড়ে দেয় আর সাবরিনার দিকে মুখ ঘুরিয়ে স্থির করে দেয়। হঠাত আসা ফ্যানের প্রবল বাতাসে গায়ের ঠান্ডা জামা একদম কাপুনি ধরিয়ে দেয়, দাতে দাত যেন টক্কর দিচ্ছে। সাবরিনা দুই হাত দিয়ে নিজেকে নিজেই জড়িয়ে যেন উত্তাপ নেবার চেষ্টা করে। মাহফুজ আর একটু সাহসী হয়। ফ্যানটা আরেকটু সামনে এনে রাখে। সাবরিনা এবার রীতিমত কাপছে। মাহফুজ জানে এবার আসল সময়। এগিয়ে গিয়ে বলে দেখ তো কিভাবে ঠান্ডায় কাপছে। এই বলে কামিজের নিচে ধরে উপরে তুলতে থাকে। সাবরিনার হাত নিজের হাত দিয়ে উপরে তুলে ধরে। অন্যহাতে কামিজ টেনে খুলে আনে। ভেজা কামিজ শরীরে জড়িয়ে থাকতে চায় কিন্তু মাহফুজ শেষ পর্যন্ত টেনে সাবরিনার শরীর থেকে বের করে আনে। সবুজ ম্যাচিং ব্রায়ে সাবরিনার দুধ যেন পাহাড় হয়ে আছে। সাবরিনার পাজামার দড়িতে একটা টান দিতেই ভেজা ভারী পাজামা পাছা গলিয়ে হাটু পর্যন্ত নেমে আসে। মাহফুজ বলে আরে তাড়াতাড়ি বের হও এই ভেজা কাপড় থেকে ঠান্ডা লাগবে। সাবরিনা হাটু তুলে মাহফুজ কে সাহায্য করে পাজামা খুলতে। মাহফুজ এবার কামিজ আর পাজামা নিয়ে আরেকটা চেয়ারের উপর রাখে। সেই চেয়ারটা সোফার সামনের ফ্যানের দিকে নিয়ে যায়। ফ্যানটা কে তখন একটু ঘুরিয়ে দেয়ালের দিকে মুখ করে দিয়েছে আর চেয়ার দেয়ালের গায়ে হেলান দেওয়া।

মাহফুজ সাবরিনা কে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসে। সাবরিনা তখনো ঠান্ডায় কাপছে। মাহফুজ ওর বাহুতে, পায়ের রানে হাত ডলে ডলে শরীর গরম করার চেষ্টা করতে থাকে। সাবরিনা তখনো কাপছে। মাহফুজ বুজে ফ্যান সাবরিনার দিকে তাক করে ফুল স্পিডে দেওয়া একটু বেশি বেশি হয়ে গেছে। তাই বলে বেশি ঠান্ডা লাগছে? সাবরিনা মাথা নাড়ায় হ্যা। মাহফুজ বলে স্যরি। এই বলে মাথা নামিয়ে সাবরিনার ঠোটে চুমু খায়। সাবরিনা ঠান্ডায় না মাহফুজের চুমুতে কেপে উঠে মাহফুজ বুঝে উঠতে পারে না। মাহফুজ আস্তে আস্তে চুমু খায় নিচের ঠোটে। প্রথম কয়েকবার সাবরিনা কোন সাড়া দেয় না। এদিকে মাহফুজের হাত সাবরিনার সারা শরীর ঘুরে বেড়াচ্ছে। সাবরিনা যেন আস্তে আস্তে শরীরে উত্তাপ টের পায়। সাবরিনা ধীরে ধীরে চুমুতে সাড়া দিতে থাকে। মাহফুজের হাত ব্রায়ের উপর দিয়ে সাবরিনার দুধ গুলো টিপটে থাকে। বিড়ালের বাচ্চার মত উম্মম উম্মম করে শব্দ করতে থাকে সাবরিনা। মাহফুজ চুমু খেতে খেতে নিচে নামে। ওর গলা, ঘাড়ে চুমু খেতে থাকে। সাবরিনার শরীরে সব শীতলতা দূর হয়ে যেন এক উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ছে। মাহফুজ ওর দুধ এড়িয়ে চুমুর লাইন নিয়ে নিচে নামে। গত দুইবারের অভিজ্ঞতা থেকে মাহফুজ টের পেয়েছে নাভি সাবরিনার উইক পয়েন্ট। তাই নাভির কাছে গিয়ে চুমু খেতে থাকে, নাভীতে আংগুল দিয়ে খেলতে থাকে। সাবরিনা যেন আস্তে আস্তে এবার গরম হচ্ছে। মাহফুজ ওর দূর্বল জায়গা চিনে গেছে সাবরিনা টের পায়। সাবরিনা যত সরে যেতে চায় মাহফুজ তত জোর কর ধরে রাখে ওকে। এক হাত দিয়ে কোমড় শক্ত করে ধরে সাবরিনা কে এক জায়গায় স্থির রাখে। আরেক হাতে নাভিতে খেলা করে। মুখটা ব্রায়ের উপর দিয়ে চুমু দিতে থাকে। এমনিতে সাবরিনার দুধ বড় তার উপর পুশ আপ ব্রায়ে সেটা আর বড় লাগে। পুশ আপ ব্রায়ের শক্ত কাপের উপর দিয়েই কামড় দেয় একটা। সাবরিনা উফফফ করে উঠে। মাহফুজ আবার কামড়ে দেয়। উফফফ। নাভীতে আঙ্গুল খেলা করে। উম্মম্ম। সাবরিনার মনে হয় ওর একটু ব্রেক দরকার, ঠান্ডা মাথায় একটু চিন্তা করা দরকার। কোন রকমে মাহফুজ কে বলে প্লিজ একটু ওয়াশরুমে যাব। মাহফুজ তখন সাবরিনার শরীর নিয়ে মগ্ন। তাই সাবরিনার কথা ভাল করে শুনে না। সাবরিনা আবার বলে প্লিজ একটু টয়লেটে যাব। মাহফুজ বলে কেন? সাবরিনা বলে টয়লেটে যাব। মাহফুজ বলে কি দরকার না বললে ছাড়ব না। এই বলে পেটের উপর মুখ রেখে জোরে জোরে চামড়ায় ফু দিয়ে শব্দ করতে থাকে। সাবরিনা যেন একদম পেটের ভিতর সুরসুরি টের পায়। সাবরিনা বুঝে না বললে ছাড়বে না, তাই বলে হিসু করব। মাহফুজ বলে এইতো গুড গার্ল। হিসু করে আস, নাহলে ঐদিনের মত হলে কি হবে। সাবরিনার মনে হয় লোকটার বুঝি লজ্জা নেই কিন্তু কেন জানি কথাটা শুনতে ভাল লাগে। সাবরিনা হেটে হেটে টয়লেটের দিকে যায়।





[/HIDE]
 
[HIDE]

পড়নে খালি ব্রা আর প্যান্টি। পেছন থেকে মাহফুজ দেখে। ম্যাচিং সবুজ কালারের ব্রা প্যান্টি। হাটার তালে তালে সাবরিনার পাছার দুলনি বুঝা যায়। সাদা ফর্সা, তুলতুলে এক বড় বল যেন। সাবরিনা যখন ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করতে যায় মাহফুজ এক পা দিয়ে দরজা আটকায়। বলে, দরজা আটকানো যাবে না, তুমি আমার সময় দেখেছ আমিও দেখব। মাহফুজের কথায় সাবরিনার তলপেটে যেন আর চাপ বেড়ে যায়। লজ্জা উত্তেজনায় বুক কাপে। ঠেলে আরেকবার দরজা বন্ধ করার চেষ্টা করে কিন্তু মাহফুজ বলে উহু, সে হবে না। আমার টা দেখলে আমিও দেখব। সাবরিনা বলে আমি তো আপনার টা দেখি নি, আপনি উলটা ঘুরে বসেছিলেন প্যানে। মাহফুজ বলে তাহলে তুমিও বস। তুমি আমার পাছা দেখেছ আমিও দেখব। মাহফুজের এরকম যুক্তিতে সাবরিনা কি বলবে বুঝে পায় না। সাবরিনা টয়লেটের সামনে দাঁড়ায়। ঘাড় ঘুরিয়ে মাহফুজ কে দেখে। মাহফুজের মুখে এক উত্তেজনা খেলা করছে। সে বলে, বসে পড় তাড়াতাড়ি করে করো নাহলে হিসু বের হয়ে প্যান্টি ভিজিয়ে দিবে। সাবরিনা এবার প্যান্টি হাটুর নিচে নামায়, বসে পড়ে। কেউ তাকিয়ে থাকলে এভাবে হিসু করা কঠিন। ছোটবেলার পর কেউ এভাবে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে নি। মাহফুজের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে বলে এভাবে তাকিয়ে থাকলে আমি পারব না। মাহফুজ বলে কেন সেদিন তাবুর ভিতর তো পারলে। সাবরিনা বলে সেদিন তো খুব খারপ অবস্থা ছিল। কন্ট্রোল করা কঠিন ছিল। মাহফুজ ওর গোল সাদা নরম নিতম্বের দিকে তাকিয়ে থাকে পিছন থেকে। বলে, তাহলে আমি হেল্প করছি। সাবরিনা কিছু বলার আগে দুই কদম দিয়ে সামনে এগিয়ে গিয়ে ঠিক সাবরিনার পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়। টের পেয়ে সাবরিনা উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করে। মাহফুজ সাবরিনার ঘাড়ে চাপ দিয়ে বসিয়ে দেয়, বলে উঠার দরকার নেই। আমি এসেছি হেল্প করতে। দাঁড়িয়ে হিসু করলে গা ভিজে যাবে। ঘাড়ে এক হাত দিয়ে সাবরিনা কে বসিয়ে রাখে মাহফুজ। আরেক হাত পিঠে বুলায় আর ছোট বাচ্চাদের যেমন হিসি করারনোর সময় মুখ দিয়ে মায়েরা শব্দ করে সেরকম শব্দ করে, হিস, হিসসসস,হিসসসসসসস। সাবরিনা অস্বস্তিতে কিছু করতে পারে না। মাহফুজ তাও বলতে থাকে হিস, হিসসসস, হিসসসসসসস। সাবরিনা বলে প্লিজ আপনি বাইরে যান না। মাহফুজ বলে ওয়েট, শান্ত হও, রিলাক্স। তাহলে হিসু হবে। হিস, হিসসসস, হিসসসস। সাবরিনা বসে থাকে। সাবরিনার পিঠে ঘুরে বেড়ানো হাত এবার ওর ব্রায়ের ইলাস্টিক ধরে টান দেয়। ঠাস করে জোরে একটা শব্দ হয়। সারা পিঠে একটা ঝিনঝিন অনুভূতি। আবার একটা টান দেয়, ঠাস। সাবরিনা টের পায় ওর হিসুর রাস্তায় পানি আসি আসি করছে। মাহফুজ এবার টানা তিনবার টান দেয় পরপর, ঠাস, ঠাস, ঠাস। সাবরিনা অবাক হয়ে টের পায় ওর হিসুর দরজা দিয়ে এক এক ফোটা করে হিসু বের হচ্ছে। ওর নিজের শরীরের উপর ওর থেকে যেন মাহফুজের নিয়ন্ত্রণ বেশি। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে বের হচ্ছে? সাবরিনা মাথা নাড়ায়। মাহফুজ বলে এইতো গুড গার্ল। এই বলে পিঠে থাকা হাতটা ধীরে ধীরে নেমে সাবরিনার পাছার উপর যায়। পাছার দাবনাটা জোরে জোরে টিপে দেয়। আউউউ করে সাবরিনা। আর দুই তিন ফোটা হিসু হয়। এবার আংগুল পোদের খাজে নিয়ে গিয়ে আলতো করে বুলাতে থাকে দুই তিন ফোটা থেকে সরু একটা ধারা বের হতে থাকে। ঠিক সেই সময় পোদের দাবনার উপর জোরে দুইটা থাপ্পড় মারে, ঠাস, ঠাস। মাহফুজের বিশাল হাতের জোরালো থাপ্পড়ে সাবরিনার ভিতর টা যেন কেপে যায়। সরু সেই জলের ধারা যেন এবার নদীর মত ছড় ছড় করে পড়তে থাকে। মাহফুজ ঘাড় থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে বলে এইবার ভাল করে হিসু করে নাও। দরজায় গিয়ে দাড়াতে দাড়াতে মাহফুজের মনে হয় সাবরিনার অনেক শারীরিক রিএকশন সিনথিয়ার সাথে বড় মিল।

সাবরিনা ওর কাজ শেষে পরিষ্কার হয়ে বের হয়ে আসে। মাহফুজ তখনো টয়লেটের দরজার কাছে দাঁড়ানো। দরজা অতিক্রম করার সময় মাহফুজ সাবরিনা কে পাজকোলা করে উপরে তুলে ফেলে আচমকা। পড়ে যাবার ভয়ে সাবরিনা মাহফুজের গলা ধরে। কি করছে লোকটা। মাহফুজ ওকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসায়। এরপর নিজে বসে পড়ে পাশে। মাহফুজ যেন এবার পাগল হয়ে গেছে। একের পর এক চুমু খেতে থাকে সাবরিনার ঘাড়ে, গলায়, গালে, নাকে, চোখে। আর ফিস ফিস করে বলতে থাকে তুমি আমার। বল তুমি আমার। সাবরিনা কিছু বলে না। আরাম করে চুমু খেতে থাকে। মাহফুজ এবার ওর হাত দিয়ে ব্রায়ের কাপ এক দিকে টেনে নামিয়ে দেয়। সাবরিনার সাদা দুধ আর বাদামী বোটা উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। সাবরিনা এবার নিজে থেকে মাহফুজের মাথা ঠেলে নিজের দুধের দিকে নিয়ে যায়। সাবরিনা যেন তার অব্যক্ত ভাষা হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দিতে চায়। মাহফুজ তাই সাবরিনার দুধের দিকে মনযোগ দেয়। বোটা টা মুখে পুরে চুষতে থাকে। উম্মম্ম। সাবরিনা মাহফুজের মাথায় হাত বুলায় আর মাহফুজ মনযোগ দিয়ে দুদ খেতে থাকে। সাবরিনা এবার অন্য দুধটাও উন্মুক্ত করে দেয় ব্রায়ের কাপ থেকে। মাহফুজের মাথা ঠেলে সেদিকে নিয়ে যায়। মাহফুজ এবার এক দুধে মুখ দিয়ে অন্য দুধ হাত দিয়ে দলাই মলাই করতে থাকে। সাবরিনার মনে হয় সারা শরীর বুঝি আগুনে জ্বলে যাচ্ছে। সাবরিনার মুখ দিয়ে তখন অস্ফুট সব শব্দ। উম্মম, আহহহ, উফফফ। মাহফুজ খেয়েই চলছে খেয়েই চলছে। সাবরিনা জোরে মাথা চেপে ধরে রেখেছে ওর বুকের উপর। মাহফুজ এবার মাথা উঠায়। সাবরিনার চোখে তাকায়। সেই চোখে আগুন। মাহফুজ বুঝে এবার ও সফল হতে যাচ্ছে। মাহফুজের চোখ পড়তেই সাবরিনা চোখ সরিয়ে নেয় যেন ওর ভিতরের সব পড়ে ফেলবে মাহফুজ। মাহফুজ এবার সাবরিনার প্যান্টিটা এক সাইডে সরিয়ে ভিতরে আংগুল দেয়। ভিজে জব জব করছে। মাহফুজ টের পায় এত দিনের প্রতীক্ষা সাবরিনার গুদে বন্যা হয়ে এসেছে। মাহফুজ সাবরিনার মটর দানার মত ফুলে উঠা ক্লিটেরাসে আংগুল দিয়ে ডলে দিতে থাকে। পাপড়ির মত খুলে যেতে থাকে গুদের দরজা। মাহফুজ এবার মাথা নামিয়ে আনে গুদে। জিহবা দিয়ে চেটে দিতে থাকে ক্লিটেরাস। আর দুই হাতে দুধের দুই বোটা ধরে মুচড়ে দিতে থাকে। ভূতগ্রস্ত নারীর মত গো গো করতে থাকে সাবরিনা। মাহফুজের জিহবা এবার ধারালো ছোড়ার মত সাবরিনার গুদ ফালাফালা করতে থাকে। সাবরিনা দুই পা দিয়ে মাহফুজের মাথা আকড়ে ধরে গুদের মুখে। বোটা মুচড়ে দেয় জোরে। সাবরিয়ান গো গো করেই যাচ্ছে। মাহফুজের মুখ ভেসে যাচ্ছে সাবরিনার রসে। উফফফফ, মাহহহহহ, আম্মুউউউউউউউ, উম্মম্মম, আহহহহহহহহহহ। এই বলে অর্গাজম হয় সাবরিনার। এই কয়দিনের ভিতরে জমিয়ে রাখা সব টেনশন যেন একবারে বের হয়ে এসেছে। সাবরিনার পা ঢিলা হয়ে আসে মাহফুজের মাথা থেকে সরে কাধের উপর এসে পড়ে। কয়েক সেকেন্ড পরে সাবরিনা মাহফুজের দিকে তাকায়। মাহফুজে চোখে তখন আগুন জ্বলছে। আর মাহফুজ সাবরিনার চোখে দেখে কাম আর শান্তির একটা মিশ্রণ। আধখোলা চোখ।



[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top