[HIDE]
তবে সোলায়মান জানে তাকে এখন কোন খবর বের করতে হলে সাবধান হতে হবে। কোন ভাবেই কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না যে সে এখানকার কোন গ্রাহকের খবর বের করতে চাইছে। এর আগে যখন কেস তদন্ত করছিল তখন তাকে ঢাকা পুলিশের এক বড় কর্তা ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেছিল কোন ভাবে যেন মামলার তদন্ত রিপোর্টে উত্তরা রেস্ট হাউজের নাম না আসে। না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যের কোন পুলিশ ফাড়িতে তার পোস্টিং হবে। সোলায়মান সে দিন বুঝে গিয়েছিল যারা এটা চালায় তাদের ক্ষমতার দৌড় কতটুকু। পরে বিভিন্ন সময় অল্প বিস্তর কিছু খবর জেনেছে অন্যদের সূত্রে, কখনো গুজবে। রেস্টহাউজের ভিতরের খবর বাইরে যাওয়া একদম পছন্দ করে না এর মালিক পক্ষ। তার মত ইন্সপেক্টর স্রেফ একটা মশা এই মালিক পক্ষের কাছে। তার খবর নেওয়ার কথা শুনলে স্রেফ পিষে ফেলবে তাকে। তবে সোলায়মান শেখ এত বছর ডিবিতে টিকে আছে ঘাস খেয়ে নয়। একটা কাজের দ্বায়িত্ব নিলে সেটা মাঝপথে ছেড়ে আসাও তার স্টাইল না। সোলায়মান তাই মোটরসাইকেল একটু দূরে পার্ক করে। নিজের মোবাইলের ফোন বুকে নাম গুলোতে একটা পরিচিত নাম খুজতে থাকে। আকবর। অনেক আগে এই ছেলেটা এই ক্যাসিনোতে ব্ল্যাকজ্যাকের টেবিলে কার্ড সার্ভার হিসেবে কাজ করত। এখনো কাজ করে কি না দেখতে হবে। ফোন বুকে নামটা খুজে পায়। আকবর, উত্তরা। সোলায়মান অবশ্য কল দেয় না সংগে সংগে। সে জানে ভিতরে যারা কাজ করে তাদের ফোন একটা লকারে রেখে যেতে হয় কাজের আগে, তাই এখন ফোন দিলেও লাভ নেই। মটরসাইকেল ঘুরিয়ে বাসার দিকে তাই রওনা দেয় সোলায়মান শেখ। আরশাদ সাহেব একটা ইন্টারেস্টিং কেস হিসেবে দাড়াচ্ছে। সোলায়মান একটু হাসে, ইন্টারেস্টিং সাবেজেক্ট পেলে কেসে মজাই আলাদা।
সাবরিনা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। মাহফুজ মেসেজে পাঠিয়েছে আজকে বিকালের প্রোগ্রামের জন্য কয়টার দিকে আসবে। সাবরিনা ভুলেই গিয়েছিল। পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আজকে বিকালে কথা বলার কথা। আর এক মাস আগে প্ল্যান করা। আসলে আজকে ইসলামপুর বাজার মালিক সমিতির মিটিং আছে। সেখানে অনেকেই আসবে ব্যবসায়ীরা তাই এই দিন ঠিক করা ছিল, যাতে একসাথে অনেক কে পাওয়া যায়। ইসলামপুর হল পুরান ঢাকার সবচেয়ে কাপড় আর বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিসের মার্কেট। সারাদেশ থেকে লোক আসে এখানে তাদের দোকানের জন্য খুচরা ক্রয় করতে। ফলে মার্কেটের ট্রেন্ড এই ব্যবসায়ীদের থেকে ভাল কেউ বুঝে না। সাবরিনার প্ল্যান ছিল এখান থেকে ফিডব্যাক নিয়ে এমন কোন সিস্টেম দাড় করানো যায় কিনা যেটা দিয়ে আগেই বাজারের ডিমান্ড সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়মিত পাওয়া যায়। মাঝখানে এই কয়দিন সাবরিনা এত অনমন্যস্ক ছিল যে ভুলেই গিয়েছিল এই মিটিং এর কথা। মাহফুজের মেসেজ দেখে মনে পড়ল।
সাবরিনার একবার মনে হল মিটিংটা বাতিল করি। কিন্তু আবার সাবরিনা জানে ওর রিপোর্ট ফাইনাল করার আগে এই মিটিং টা করা জরুরী। কারণ অফিসে ও যখন প্ল্যান অফ একশন দিয়েছিল সেখানে এই মিটিং এর কথা ছিল এবং ওর বস এই মিটিং এর ধারণা টা কে প্রশংসা করেছিল। অতএব এই মিটিং ছাড়া রিপোর্ট দিলে সেটা বসের চোখে পড়বে এবং এটা নিয়ে ঝাড়ি খেতে হবে। নরমালি এইসব মিটিং এ যাবার সময় অফিসের গাড়ি নিয়ে যায় সাবরিনা। এই জন্য আগে থেকে গাড়ির রিকুইজিশন এর অর্ডার দিতে হয়। সেটাও করা হয় নি। সব মিলিয়ে হঠাত করে সাবরিনা একটা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গেল। ট্রান্সপোর্টেশন সেকশনে ফোন করে আর্জেন্ট ভিত্তিতে গাড়ি হবে কিনা জানতে চাইল। ভাগ্য খারাপ, গাড়ি পুলে কোন গাড়ি আজকে খালি নাই। মিটিং বিকাল তিনটা থেকে। ওর অফিস থেকে বের হয়ে দুপুরের জ্যাম ঠেলে পৌছাতে দেড় দুই ঘন্টা লাগবে। তার মানে তিনটার মিটিং ধরতে গেলে মিনিমাম দুপুর একটায় বের হওয়া উচিত যাতে সময় মত পৌছানো যায়। ট্রান্সপোর্টেশন ডিপার্টমেন্ট কোন ভাবেই বিকালের আগে কোন গাড়ি দিতে পারবে না। পুরান ঢাকার এই অলিগলিতে একা একা নিজে যেতে ওর একটা ভয় হয় বিশেষ করে সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে, পুরান ঢাকা কে নিয়ে। তাই গাড়ি ছাড়া একা যেতে এক ধরণের অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। এর সলুউশন একটা। মাহফুজ কে অনুরোধ করা ওকে অফিস থেকে নিয়ে যাবার জন্য। আবার এতেও অস্বস্তি হচ্ছে। মাহফুজের সাথে মাঝখানের দু’টো ঘটনা এক ধরণের সংশয় তৈরি করেছে সাবরিনার মনে। আবার এটাও ঠিক সোয়ারিঘাটের সেই রাতে মাহফুজ না বাচালে সাবরিনার কি হত সাবরিনা নিজেও জানে না। শেষ পর্যন্ত এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে মাহফুজ জয়ী হল। সাবরিনার মনে হল একা একা পুরান ঢাকার গলি ঘুপচি তে ঠিকানা খুজে বের করার চাইতে মাহফুজের কাছে সাহায্য চাওয়া ভাল।
মেসেজ পাঠানোর দশ মিনিট পর মোবাইলের স্ক্রিনে সাবরিনার নাম ভেসে উঠতে দেখে মাহফুজ একটু অবাক হল। মাহফুজের ধারণা ছিল সাবরিনা উত্তর মেসেজে দিবে। মাহফুজ জানে এই মিটিং টা সাবরিনার ওভারওল রিপোর্টের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাইলেও সাবরিনা এই মিটিং ক্যান্সেল করবে না। আসলে আজকে মেসেজ টা পাঠিয়েছে সাবরিনা কে খানিকটা জ্বালানোর জন্য। মাহফুজ জানে সাবরিনা এখনো সরাসরি মিট করতে চাইছে না কিন্তু আবার এই মিটিং ক্যান্সেল করতে পারবে না। সাবরিনা বড় বেশি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে, নিয়ম মানে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও মিটিং এ আসতে হবে, মাহফুজের সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে। সাবরিনা কে সুক্ষ ভাবে জ্বালানোর জন্য তাই মেসেজ পাঠানো। তবে সাবরিনা সরাসরি ফোন দিবে এটা ভাবে নি। তাই একটু বিস্ময়ের সাথে ফোন রিসিভ করে মাহফুজ বলল, হ্যালো।
হ্যালো, মাহফুজ সাহেব। আমি গাড়ি রিকুইজিশন দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি কি আমার অফিস থেকে আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন।
হ্যা, সাবরিনা কোন সমস্যা নেই। আমি বারটার দিকে অফিসে আসব।
(মাহফুজ ভাবছে সাবরিনা কে তুমি বলে ভুল করল কিনা কারণ সাবরিনা আপনি আপনি বলে যাচ্ছে)
থ্যাংকিউ, তাহলে বারটার সময় দেখা হবে।
মাহফুজ উত্তর দিল
আমার কিন্তু কোন গাড়ি নেই
আমরা নাহয় সিএনজি নিয়ে চলে যাব
মাহফুজ এখানে অকস্মাৎ একটা সুযোগ দেখল। সুযোগের স্দব্যবহার করাই ডেভিলের কাজ।
আসলে আমি এখন বাইরে বের হয়ে গেছি আর আমার বাইকটা সাথে আছে। বাইক কোথায় রেখে আসতে পারব না আসলে। তাই আসতে হলে বাইক নিয়ে আসতে হবে।
মাহফুজের উত্তর সাবরিনা কে কনফিউজ করে দিল। মাহফুজের সাথে বাইকে যাওয়া মানে বাইকে উঠতে হবে। সাবরিনা ভার্সিটি লাইফে ফ্রেন্ডদের বাইকে দুইএকবার উঠেছে। তবে মাহফুজের সাথে বাইকে উঠা ঠিক হবে কিনা সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। এদিকে মাহফুজ আবার তাড়া দয়েয়।
বাইকে উঠতে ভয় পাচ্ছ নাকি
না, না ভয় কিসের। আমি বাইকে আগেও উঠেছি।
তাহলে তো হয়েই গেল। আমি বারটার দিকে আসছি। তুমি রেডি থেকে। আমি কল দিলে নিচে নেমে এস।
মাহফুজের এই তুমি তুমি সাবরিনার গায়ে রাগ ধরিয়ে দিচ্ছে। কি ভাবছে লোকটা। কিন্তু লাস্ট দুইটা এনকাউন্টারের পর মনের ভিতর যে অস্বস্তি সেটা সরাসরি কনফ্রন্টেশনে যেতে বাধা দিচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে লোকটা কে ধরতে হবে।
ঠিক আছে। দেখা হবে বারটায়
ওকে, বাই।
[/HIDE]
তবে সোলায়মান জানে তাকে এখন কোন খবর বের করতে হলে সাবধান হতে হবে। কোন ভাবেই কাউকে জানতে দেওয়া যাবে না যে সে এখানকার কোন গ্রাহকের খবর বের করতে চাইছে। এর আগে যখন কেস তদন্ত করছিল তখন তাকে ঢাকা পুলিশের এক বড় কর্তা ডেকে নিয়ে গিয়ে বলেছিল কোন ভাবে যেন মামলার তদন্ত রিপোর্টে উত্তরা রেস্ট হাউজের নাম না আসে। না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামের গহীন অরণ্যের কোন পুলিশ ফাড়িতে তার পোস্টিং হবে। সোলায়মান সে দিন বুঝে গিয়েছিল যারা এটা চালায় তাদের ক্ষমতার দৌড় কতটুকু। পরে বিভিন্ন সময় অল্প বিস্তর কিছু খবর জেনেছে অন্যদের সূত্রে, কখনো গুজবে। রেস্টহাউজের ভিতরের খবর বাইরে যাওয়া একদম পছন্দ করে না এর মালিক পক্ষ। তার মত ইন্সপেক্টর স্রেফ একটা মশা এই মালিক পক্ষের কাছে। তার খবর নেওয়ার কথা শুনলে স্রেফ পিষে ফেলবে তাকে। তবে সোলায়মান শেখ এত বছর ডিবিতে টিকে আছে ঘাস খেয়ে নয়। একটা কাজের দ্বায়িত্ব নিলে সেটা মাঝপথে ছেড়ে আসাও তার স্টাইল না। সোলায়মান তাই মোটরসাইকেল একটু দূরে পার্ক করে। নিজের মোবাইলের ফোন বুকে নাম গুলোতে একটা পরিচিত নাম খুজতে থাকে। আকবর। অনেক আগে এই ছেলেটা এই ক্যাসিনোতে ব্ল্যাকজ্যাকের টেবিলে কার্ড সার্ভার হিসেবে কাজ করত। এখনো কাজ করে কি না দেখতে হবে। ফোন বুকে নামটা খুজে পায়। আকবর, উত্তরা। সোলায়মান অবশ্য কল দেয় না সংগে সংগে। সে জানে ভিতরে যারা কাজ করে তাদের ফোন একটা লকারে রেখে যেতে হয় কাজের আগে, তাই এখন ফোন দিলেও লাভ নেই। মটরসাইকেল ঘুরিয়ে বাসার দিকে তাই রওনা দেয় সোলায়মান শেখ। আরশাদ সাহেব একটা ইন্টারেস্টিং কেস হিসেবে দাড়াচ্ছে। সোলায়মান একটু হাসে, ইন্টারেস্টিং সাবেজেক্ট পেলে কেসে মজাই আলাদা।
সাবরিনা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছে। কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারছে না। মাহফুজ মেসেজে পাঠিয়েছে আজকে বিকালের প্রোগ্রামের জন্য কয়টার দিকে আসবে। সাবরিনা ভুলেই গিয়েছিল। পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে আজকে বিকালে কথা বলার কথা। আর এক মাস আগে প্ল্যান করা। আসলে আজকে ইসলামপুর বাজার মালিক সমিতির মিটিং আছে। সেখানে অনেকেই আসবে ব্যবসায়ীরা তাই এই দিন ঠিক করা ছিল, যাতে একসাথে অনেক কে পাওয়া যায়। ইসলামপুর হল পুরান ঢাকার সবচেয়ে কাপড় আর বিভিন্ন প্রসাধনী জিনিসের মার্কেট। সারাদেশ থেকে লোক আসে এখানে তাদের দোকানের জন্য খুচরা ক্রয় করতে। ফলে মার্কেটের ট্রেন্ড এই ব্যবসায়ীদের থেকে ভাল কেউ বুঝে না। সাবরিনার প্ল্যান ছিল এখান থেকে ফিডব্যাক নিয়ে এমন কোন সিস্টেম দাড় করানো যায় কিনা যেটা দিয়ে আগেই বাজারের ডিমান্ড সম্পর্কে একটা ধারণা নিয়মিত পাওয়া যায়। মাঝখানে এই কয়দিন সাবরিনা এত অনমন্যস্ক ছিল যে ভুলেই গিয়েছিল এই মিটিং এর কথা। মাহফুজের মেসেজ দেখে মনে পড়ল।
সাবরিনার একবার মনে হল মিটিংটা বাতিল করি। কিন্তু আবার সাবরিনা জানে ওর রিপোর্ট ফাইনাল করার আগে এই মিটিং টা করা জরুরী। কারণ অফিসে ও যখন প্ল্যান অফ একশন দিয়েছিল সেখানে এই মিটিং এর কথা ছিল এবং ওর বস এই মিটিং এর ধারণা টা কে প্রশংসা করেছিল। অতএব এই মিটিং ছাড়া রিপোর্ট দিলে সেটা বসের চোখে পড়বে এবং এটা নিয়ে ঝাড়ি খেতে হবে। নরমালি এইসব মিটিং এ যাবার সময় অফিসের গাড়ি নিয়ে যায় সাবরিনা। এই জন্য আগে থেকে গাড়ির রিকুইজিশন এর অর্ডার দিতে হয়। সেটাও করা হয় নি। সব মিলিয়ে হঠাত করে সাবরিনা একটা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গেল। ট্রান্সপোর্টেশন সেকশনে ফোন করে আর্জেন্ট ভিত্তিতে গাড়ি হবে কিনা জানতে চাইল। ভাগ্য খারাপ, গাড়ি পুলে কোন গাড়ি আজকে খালি নাই। মিটিং বিকাল তিনটা থেকে। ওর অফিস থেকে বের হয়ে দুপুরের জ্যাম ঠেলে পৌছাতে দেড় দুই ঘন্টা লাগবে। তার মানে তিনটার মিটিং ধরতে গেলে মিনিমাম দুপুর একটায় বের হওয়া উচিত যাতে সময় মত পৌছানো যায়। ট্রান্সপোর্টেশন ডিপার্টমেন্ট কোন ভাবেই বিকালের আগে কোন গাড়ি দিতে পারবে না। পুরান ঢাকার এই অলিগলিতে একা একা নিজে যেতে ওর একটা ভয় হয় বিশেষ করে সোয়ারিঘাটের ঘটনার পর একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে, পুরান ঢাকা কে নিয়ে। তাই গাড়ি ছাড়া একা যেতে এক ধরণের অস্বস্তিবোধ হচ্ছে। এর সলুউশন একটা। মাহফুজ কে অনুরোধ করা ওকে অফিস থেকে নিয়ে যাবার জন্য। আবার এতেও অস্বস্তি হচ্ছে। মাহফুজের সাথে মাঝখানের দু’টো ঘটনা এক ধরণের সংশয় তৈরি করেছে সাবরিনার মনে। আবার এটাও ঠিক সোয়ারিঘাটের সেই রাতে মাহফুজ না বাচালে সাবরিনার কি হত সাবরিনা নিজেও জানে না। শেষ পর্যন্ত এই দুইয়ের দ্বন্দ্বে মাহফুজ জয়ী হল। সাবরিনার মনে হল একা একা পুরান ঢাকার গলি ঘুপচি তে ঠিকানা খুজে বের করার চাইতে মাহফুজের কাছে সাহায্য চাওয়া ভাল।
মেসেজ পাঠানোর দশ মিনিট পর মোবাইলের স্ক্রিনে সাবরিনার নাম ভেসে উঠতে দেখে মাহফুজ একটু অবাক হল। মাহফুজের ধারণা ছিল সাবরিনা উত্তর মেসেজে দিবে। মাহফুজ জানে এই মিটিং টা সাবরিনার ওভারওল রিপোর্টের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাই চাইলেও সাবরিনা এই মিটিং ক্যান্সেল করবে না। আসলে আজকে মেসেজ টা পাঠিয়েছে সাবরিনা কে খানিকটা জ্বালানোর জন্য। মাহফুজ জানে সাবরিনা এখনো সরাসরি মিট করতে চাইছে না কিন্তু আবার এই মিটিং ক্যান্সেল করতে পারবে না। সাবরিনা বড় বেশি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবে, নিয়ম মানে। তাই ইচ্ছা না থাকলেও মিটিং এ আসতে হবে, মাহফুজের সাথে সরাসরি কথা বলতে হবে। সাবরিনা কে সুক্ষ ভাবে জ্বালানোর জন্য তাই মেসেজ পাঠানো। তবে সাবরিনা সরাসরি ফোন দিবে এটা ভাবে নি। তাই একটু বিস্ময়ের সাথে ফোন রিসিভ করে মাহফুজ বলল, হ্যালো।
হ্যালো, মাহফুজ সাহেব। আমি গাড়ি রিকুইজিশন দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি কি আমার অফিস থেকে আমাকে নিয়ে যেতে পারবেন।
হ্যা, সাবরিনা কোন সমস্যা নেই। আমি বারটার দিকে অফিসে আসব।
(মাহফুজ ভাবছে সাবরিনা কে তুমি বলে ভুল করল কিনা কারণ সাবরিনা আপনি আপনি বলে যাচ্ছে)
থ্যাংকিউ, তাহলে বারটার সময় দেখা হবে।
মাহফুজ উত্তর দিল
আমার কিন্তু কোন গাড়ি নেই
আমরা নাহয় সিএনজি নিয়ে চলে যাব
মাহফুজ এখানে অকস্মাৎ একটা সুযোগ দেখল। সুযোগের স্দব্যবহার করাই ডেভিলের কাজ।
আসলে আমি এখন বাইরে বের হয়ে গেছি আর আমার বাইকটা সাথে আছে। বাইক কোথায় রেখে আসতে পারব না আসলে। তাই আসতে হলে বাইক নিয়ে আসতে হবে।
মাহফুজের উত্তর সাবরিনা কে কনফিউজ করে দিল। মাহফুজের সাথে বাইকে যাওয়া মানে বাইকে উঠতে হবে। সাবরিনা ভার্সিটি লাইফে ফ্রেন্ডদের বাইকে দুইএকবার উঠেছে। তবে মাহফুজের সাথে বাইকে উঠা ঠিক হবে কিনা সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। এদিকে মাহফুজ আবার তাড়া দয়েয়।
বাইকে উঠতে ভয় পাচ্ছ নাকি
না, না ভয় কিসের। আমি বাইকে আগেও উঠেছি।
তাহলে তো হয়েই গেল। আমি বারটার দিকে আসছি। তুমি রেডি থেকে। আমি কল দিলে নিচে নেমে এস।
মাহফুজের এই তুমি তুমি সাবরিনার গায়ে রাগ ধরিয়ে দিচ্ছে। কি ভাবছে লোকটা। কিন্তু লাস্ট দুইটা এনকাউন্টারের পর মনের ভিতর যে অস্বস্তি সেটা সরাসরি কনফ্রন্টেশনে যেতে বাধা দিচ্ছে। পরে সুযোগ বুঝে লোকটা কে ধরতে হবে।
ঠিক আছে। দেখা হবে বারটায়
ওকে, বাই।
[/HIDE]