What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আদর্শ মা-বাবার যোগ্য ছেলে (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,574
Messages
119,157
Credits
374,442
Computer
Glasses sunglasses
Compass
Compass
Camera photo
Logitech Mouse
আদর্শ মা-বাবার যোগ্য ছেলে



এক সৈনিক একবার তার স্ত্রীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যুদ্ধে গেল। তখন তার স্ত্রী গর্ভবতী। যাবার সময় সে স্ত্রীর কাছে ত্রিশ হাযার স্বর্ণমুদ্রা রেখে গেল। এরপর বহু বছর কেটে যায়। যোদ্ধার ফেরার নাম নেই। অবশেষে দীর্ঘ ঊনত্রিশ বছর পর সে বাড়ি ফিরে আসে। ঘোড়া থেকে নেমে সৈনিক বর্ষা নিয়ে ঘরের দরজায় আঘাত করলে এক টগবগে যুবক বেরিয়ে আসে। যুবক আগন্তুকের হাতে বর্ষা দেখে বলল, হে আল্লাহর দুশমন! তুমি আমার বাড়ি হামলা করতে এসেছ? লোকটি তো তাজ্জব, বলে কি এই যুবক! আমার বাড়ি এটা আর সে কিনা আমাকেই ডাকাত বলে অভিহিত করছে? বীর সৈনিক গর্জে উঠে বলল, কে তুমি? সাহস তো কম নয়? আমার বাড়ীর অন্দরে ঢুকে আমাকেই ডাকাত বলছ? এবার যুবকের আশ্চর্য হওয়ার পালা। এই অচেনা-অজানা বুড়ো দেখি উড়ে এসে জুড়ে বসার মত কথা বলছে। এভাবে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে একজন আরেকজনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। বেঁধে গেল তুমুল লড়াই। কেউ কাউকে ছাড়ার পাত্র নয়। তাদের লড়াই ও হুংকারে পাড়ার সব লোক এসে জড়ো হ'ল এবং কোনমতে তাদের থামাতে সক্ষম হ'ল। এবার সবাই যুবকের পক্ষ নিল। যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে বলল, একে কাযীর দরবারে সোর্পদ না করে কিছুতেই ছাড়ছি না। লোকটিও হুংকার ছেড়ে বলল, এই দুশ্চরিত্র ছেলেকে আমি বিচারালয়ে নিয়ে যাব। তখন যা হবার হবে। প্রতিবেশীরা লোকটির দৃঢ়তা দেখে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে গেল। তারা বলল, ভাই আপনি বোধ হয় বাড়ি চিনতে ভুল করেছেন। এই বাড়ি ওদেরই। ওরা বহুদিন ধরে এখানে আছে। লোকটি বলল, হ'তেই পারে না। আমি ঠিক চিনেছি, এ বাড়ি আমার। আমি তো অমুক গোত্রের সর্দার। তখন বাড়ি থেকে এক মহিলা বেরিয়ে এসে বলল, এই রাবী চুপ কর। তিনি তোর আববা, আমার স্বামী। মুহূর্তেই উত্তপ্ত ভাব পাল্টে গেল। রাবী পিতার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল। বলল, ক্ষমা করুন পিতা, আমি চিনতে পারিনি। লোকটিও ছেলেকে না চিনে নানা কথা বলায় লজ্জা পেল। ছেলে বলল, ঘরে চল বাবা, কিছু মনে কর না। ঘরে ঢুকে লোকটি স্ত্রীকে বলল, আমার ছেলে এত বড় হয়েছে? স্ত্রী বলল, হবে না। সেই কবে আপনি যুদ্ধে গিয়েছেন, ফিরলেন এতদিন পরে। লোকটি বলল, আমার সেই ত্রিশ হাযার স্বর্ণমুদ্রা কোথায় রেখেছ? এবার লোকটি একটি থলে এগিয়ে দিয়ে বলল, এখানে আরো চল্লিশ হাযার স্বর্ণমুদ্রা আছে, একসাথে রাখ। স্ত্রী বলল, সেগুলো আমি পুতে রেখেছি। কিছুদিন পর বের করব। যুবক মসজিদে গেলে স্ত্রী স্বামীকে ছালাত পড়তে মসজিদে পাঠিয়ে দিল। ছালাত শেষে লোকটি দেখল, মসজিদ চত্বরে বহুলোকের সমাগম, পাঠচক্র চলছে। কাছে গিয়ে দেখল, এক অল্প বয়সী যুবক জড়োসড়ো হয়ে নত মুখে দরস দিচ্ছে। আর বহু গণ্যমান্য আলেম-ওলামা একান্ত মনোযোগের সাথে দরস নিচ্ছেন। লোকটি আশ্চর্য হয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করল কে এই সৌভাগ্যবান ব্যক্তি? লোকটি বলল, তিনি হ'লেন মদীনা নগরীর সবচেয়ে বড় ফক্বীহ ইমাম রাবী বিন আব্দুর রহমান। বাবা ছেলের পরিচয় পেয়ে যার পর নাই খুশি হ'লেন। হৃদয়ের দুকুল বেয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে গেল। তিনি প্রাণভরে ছেলের জন্য দো'আ করেন ও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন। বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে বললেন, আজ আমি তোমার ছেলেকে এমন অবস্থায় দেখেছি, যে অবস্থায় কেউ তার ছেলেকে দেখেনি। সত্যিই আমি সৌভাগ্যবান। স্ত্রী তখন হেসে বলল, আপনি এই ত্রিশ হাযার মুদ্রা চান, না এই ছেলেকে চান? আপনার রেখে যাওয়া ত্রিশ হাযার স্বর্ণমুদ্রা দিয়ে আমি এই সোনার ছেলে গড়েছি। আপনি খুশী হয়েছেন? আজ আমার খুশির সীমা নেই। তোমার মত মহীয়সী মা যার আছে, তার এমনটি হওয়াইতো স্বাভাবিক। আমার কষ্টে অর্জিত অর্থ তুমি হকের পথেই ব্যয় করেছ। আল্লাহ তোমাকে এর বিনিময় দান করবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top